Ajker Patrika

‘লাভের’ তামাকে বড় ক্ষতি শিশু ও বৃদ্ধদের

  • প্রান্তিক চাষিরা ব্যাপকভাবে ঝুঁকেছেন তামাক আবাদে
  • বেশি ফলনের আশায় অতিমাত্রায় সার ও কীটনাশক ব্যবহার
মো. লুৎফর রহমান, সাটুরিয়া (মানিকগঞ্জ)
আপডেট : ২৮ মার্চ ২০২৫, ১০: ০৬
মানিকগঞ্জের সাটুরিয়ায় বসতবাড়ির পাশেই শুকানো হচ্ছে তামাকপাতা। সম্প্রতি তোলা। ছবি: আজকের পত্রিকা
মানিকগঞ্জের সাটুরিয়ায় বসতবাড়ির পাশেই শুকানো হচ্ছে তামাকপাতা। সম্প্রতি তোলা। ছবি: আজকের পত্রিকা

মানিকগঞ্জের সাটুরিয়ার প্রান্তিক চাষিরা ব্যাপকভাবে ঝুঁকে পড়েছেন সবুজ বিষবৃক্ষ তামাক আবাদে। বেশি ফলনের আশায় অতিমাত্রায় সার ও কীটনাশক ব্যবহার করছেন তাঁরা। ফলে মাটির উর্বরতা শক্তি নষ্ট হচ্ছে। অন্যদিকে যত্রতত্র তামাক রোদে শুকানোর ফলে এর বিষাক্ত দুর্গন্ধে নষ্ট হচ্ছে পরিবেশ। অন্যদিকে সংশ্লিষ্ট কাজে জড়িত না থেকেও শিশু থেকে বৃদ্ধ বয়সের সব শ্রেণির মানুষের স্বাস্থ্যঝুঁকি বাড়ছে।

এদিকে উপজেলা কৃষি অফিস থেকে তামাক চাষে চাষিদের নিরুৎসাহিত করলেও চাষিরা কোনো তোয়াক্কা করছেন না। ফলে প্রতিবছরই তামাক চাষিসহ আশপাশের বাড়ির লোকজনদের মধ্যে দেখা যাচ্ছে নানা ধরনের রোগব্যাধি। কেউ কেউ হৃদ্রোগ, অ্যালার্জি, শ্বাসতন্ত্রের সমস্যার মতো দীর্ঘমেয়াদি বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন।

সরেজমিনে সম্প্রতি উপজেলার বরাইদ, উত্তর ছনকা, ফাজিলাবাড়ি, মহেরা, তিল্লি, শিমুলিয়া, সাভার, আগ সাভার, হামজা, জালশুকা, শালুয়াকান্দি, কৌড়ি, গোপালপুরসহ বিভিন্ন এলাকায় দেখা যায় বেশির ভাগ তামাকচাষি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, মসজিদের আশপাশের রাস্তা ও বাড়ির পাশে বাঁশের মাচা ও রশি বেঁধে শুকাচ্ছেন তামাক পাতা। সড়ক দিয়ে হাঁটতেই ঝাঁঝালো গন্ধে অসুস্থ পরিবেশ অনুভূত হয়। আবার এসব তামাক শুকিয়ে নিজ বসতঘরে গুদামজাত করছেন চাষিরা। জনবহুল এলাকা ও রাস্তার দুই পাশে ঘনবসতি থাকার পরও লম্বা লম্বা সারিবদ্ধ মাচা করে তামাক শুকাতে ব্যস্ত সময় পার করছেন চাষিরা। ফলে তাঁদের স্বাস্থ্য ও পরিবেশ দুটোই হুমকির মুখে রয়েছে বলে জানান ভুক্তভোগী ও পথচারীরা।

বরাইদ ইউনিয়নের উত্তর ছনকা এলাকার ষাটোর্ধ্ব মো. নূরুল ইসলাম ও তাঁর স্ত্রী বলেন, ‘এবার চার বিঘা জমিতে তামাক চাষ করতে গিয়ে ঠান্ডা, জ্বর ও শ্বাসকষ্টের নানা রোগে আক্রান্ত হয়ে ১৫ দিন ধরে অসুস্থ আছি। মাঝেমধ্যে তামাকের গন্ধে মাথা ঘোরে। অতি লাভের কারণে তামাক চাষ না করে থাকতে পারি না। বাড়িতে তামাক রাখায় অসুস্থ হয়ে পড়েছি।’

একই ইউনিয়নের উত্তর ছনকার বাসিন্দা মিজানুর রহমান বলেন, ‘আমার বাড়ির সামনেই বিশাল বিশাল মাচা করে তামাক শুকানো হচ্ছে। তামাকের ঝাঁঝালো গন্ধে পরিবার নিয়ে নানাবিধ সমস্যায় পড়তে হচ্ছে।’

স্থানীয় ফার্মাসিস্ট মো. আমিনুর রহমান বলেন, ‘এ বছর তামাক চাষ করতে গিয়ে প্রতিদিনই চাষিরা দোকানে আসছেন ঠান্ডা জ্বর ও শ্বাসকষ্টের নানা রকম রোগ নিয়ে। তাঁদের উন্নত চিকিৎসার জন্য সদর হাসপাতালে চিকিৎসা নেওয়ার জন্য পরামর্শ দিয়ে থাকি। পাশাপাশি তামাক যাতে যত্রতত্র না শুকিয়ে লোকালয় থেকে দূরে রাখার জন্য পরামর্শ দিয়ে থাকি।’

উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা মামুন উর রশিদ বলেন, তামাক মানবদেহের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর। শ্বাসকষ্টসহ বিভিন্ন রকম স্বাস্থ্যঝুঁকি রয়েছে। তামাক শুকানোর ফলে যে উৎকট দুর্গন্ধ ছড়ায়, তা পরিবেশ ও জনস্বাস্থ্য দুটোর ওপরেই এর ক্ষতিকর প্রভাব পড়ে, যা থেকে মানুষ গুরুতর অসুস্থতার সম্মুখীন হতে পারে।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, তামাক চাষে নিরুৎসাহিত করার জন্য বিভিন্ন প্রণোদনার আওতায় চাষিদের নিয়ে আসা হয়েছে। তারপরও কিছু চাষি নগদ লাভের আশায় ক্ষতিকর তামাক চাষ করছেন। তবে যত্রতত্র তামাক শুকানোর বিষয়ে চাষিদের সতর্ক হতে হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

সিরাজগঞ্জে ৯২৩ ভোটকেন্দ্রের ১৭৮টি ‘অধিক ঝুঁকিপূর্ণ’

সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি  
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সিরাজগঞ্জ জেলায় ছয়টি আসনে ৯২৩টি ভোটকেন্দ্র রয়েছে। এর মধ্যে ১৭৮টি কেন্দ্রকে ‘অধিক ঝুঁকিপূর্ণ’, ২৮১টিকে ‘ঝুঁকিপূর্ণ’ ও ৪৬৪টিকে ‘সাধারণ’ হিসেবে শ্রেণিবদ্ধ করেছে পুলিশ।

পুলিশ ও জেলা নির্বাচন কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, ঝুঁকিপূর্ণ ভোটকেন্দ্রগুলো জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে সরেজমিন পরিদর্শন করা হচ্ছে। ইতিমধ্যে জেলার বিভিন্ন উপজেলার ভোটকেন্দ্র পরিদর্শনের ছবি পুলিশ প্রশাসনের ফেসবুক পেজে প্রকাশ করা হয়েছে।

জেলায় মোট ভোটারসংখ্যা ২৬ লাখ ৮৬ হাজার ৮৫৮ জন। জেলার ছয়টি আসনের মধ্যে সবচেয়ে বেশি ভোটার রয়েছেন সিরাজগঞ্জ-৬ আসনে (শাহজাদপুর উপজেলা)। এই আসনে ভোটার ৪ লাখ ৮৫ হাজার ৩৮৭ জন। এর মধ্যে পুরুষ ২ লাখ ৪৬ হাজার ৪১২ জন ও নারী ২ লাখ ৩৮ হাজার ৯৭২ জন এবং তৃতীয় লিঙ্গের তিনজন।

সবচেয়ে কম ভোটার রয়েছেন সিরাজগঞ্জ-১ আসনে (কাজীপুর ও সদর উপজেলার একাংশ)। এখানে ভোটারসংখ্যা ৩ লাখ ৮৫ হাজার ২৪ জন। এখানে পুরুষ ভোটার ১ লাখ ৮৯ হাজার ৬৭৬ জন ও নারী ভোটার ১ লাখ ৯৫ হাজার ৩৪৪ জন এবং তৃতীয় লিঙ্গের রয়েছেন চারজন।

সিরাজগঞ্জ সদর ও কামারখন্দ উপজেলা নিয়ে গঠিত সিরাজগঞ্জ-২ আসনে ভোটার রয়েছেন ৪ লাখ ৬৯ হাজার ৮৭৮ জন। এর মধ্যে পুরুষ ২ লাখ ৩৫ হাজার ২৪৮ ও নারী ২ লাখ ৩৪ হাজার ৬২৬ এবং তৃতীয় লিঙ্গের চারজন।

রায়গঞ্জ ও তাড়াশ উপজেলা নিয়ে গঠিত সিরাজগঞ্জ-৩ আসনে ভোটারসংখ্যা ৪ লাখ ৪৪ হাজার ৪২৭ জন। এর মধ্যে পুরুষ ২ লাখ ২২ হাজার ৭৩৭ ও নারী ২ লাখ ২১ হাজার ৬৮৩ এবং তৃতীয় লিঙ্গের সাতজন।

উল্লাপাড়া উপজেলা নিয়ে গঠিত সিরাজগঞ্জ-৪ আসনে ভোটারসংখ্যা ৪ লাখ ৭৫ হাজার ৮২১ জন। এর মধ্যে পুরুষ ২ লাখ ৪৩ হাজার ৬৮০ ও নারী ২ লাখ ৩২ হাজার ১২৫ এবং তৃতীয় লিঙ্গের ১৬ জন।

বেলকুচি ও চৌহালী উপজেলা নিয়ে গঠিত সিরাজগঞ্জ-৫ আসনে ভোটারসংখ্যা ৪ লাখ ২৬ হাজার ৩২১ জন। এর মধ্যে পুরুষ ২ লাখ ১৮ হাজার ৬৬৪ ও নারী ২ লাখ ৭ হাজার ৬৫৫ এবং তৃতীয় লিঙ্গের দুজন।

ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্রের বিষয়ে জানতে চাইলে জেলা পুলিশ সুপার (এসপি) মো. সাইফুল ইসলাম সানতু আজ বুধবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘কেন্দ্রগুলো আমরা পরিদর্শন করছি। সব কেন্দ্র পরিদর্শন শেষ হলে বিস্তারিত জানানো হবে।’

ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্রে কী ধরনের নিরাপত্তাব্যবস্থা নেওয়া হবে—এ প্রশ্নের জবাবে এসপি বলেন, এ বিষয়েও পরে জানানো হবে।

সিরাজগঞ্জ অতিরিক্ত জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মোহাম্মদ মশিউর রহমান বলেন, ‘জেলার ছয়টি আসনে মোট ভোটার ২৬ লাখ ৮৬ হাজার ৮৫৮ জন। ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্রের তালিকা আমরা করি না। এটা করে পুলিশের ডিএসবি শাখা। তবে আমাদের কাছে সব কেন্দ্রই গুরুত্বপূর্ণ।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

ইটভাটায় ডেকে নিয়ে হত্যা, প্রধান আসামি গ্রেপ্তার

শ্রীপুর (গাজীপুর) প্রতিনিধি  
আবু তাহের। ছবি: সংগৃহীত
আবু তাহের। ছবি: সংগৃহীত

গাজীপুরের শ্রীপুরে জাসাস নেতা ফরিদ সরকারকে ইটভাটায় ডেকে নিয়ে কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় মামলার প্রধান আসামি আবু তাহেরকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

গতকাল মঙ্গলবার রাতে গাজীপুরের টঙ্গী এলাকায় অভিযান চালিয়ে শ্রীপুর থানা-পুলিশ তাঁকে গ্রেপ্তার করে।

নিহত মো. ফরিদ সরকার (৩৫) উপজেলার গোসিঙ্গা ইউনিয়নের নারায়ণপুর গ্রামের মো. জামাল উদ্দিন সরকারের ছেলে। তিনি গোসিঙ্গা ইউনিয়ন জাসাসের সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক।

গ্রেপ্তার আবু তাহের ওরফে তারা ডাকাত (৪০) গাজীপুরের কাপাসিয়া উপজেলার সূর্য নারায়ণপুর গ্রামের মৃত বিল্লাল হোসেনের ছেলে। তাঁর বিরুদ্ধে একাধিক ডাকাতি মামলা রয়েছে।

শ্রীপুর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মতিউর রহমান বলেন, ২৩ ডিসেম্বর রাতে খুনিরা ফরিদ সরকারকে মোবাইল ফোনে লতিফপুর গ্রামের কেবিএম ইটভাটায় ডেকে নেন। ডেকে নিয়ে গভীর রাতে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে-পিটিয়ে হত্যা নিশ্চিত করে ফেলে যান।

এ ঘটনায় নিহত ফরিদের বড় ভাই ফারুক হোসেন বাদী হয়ে ছয়জনের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন। মামলার প্রধান আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। পরে আজ বুধবার দুপুরে তাঁকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

দীপু দাস হত্যা: নিথর দেহ গাছে ঝোলানোর ‘মূল হোতা’ গ্রেপ্তার

ময়মনসিংহ প্রতিনিধি
গ্রেপ্তার নিবির ইসলাম অনিক। ছবি: আজকের পত্রিকা
গ্রেপ্তার নিবির ইসলাম অনিক। ছবি: আজকের পত্রিকা

ময়মনসিংহের ভালুকায় চাঞ্চল্যকর পোশাকশ্রমিক দীপু চন্দ্র দাস হত্যায় আরও একজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গতকাল মঙ্গলবার (৩০ ডিসেম্বর) বিকেলে গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের টঙ্গী পশ্চিম থানার চেরাগআলী এলাকা থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়।

গ্রেপ্তার যুবক হলেন নিবির ইসলাম অনিক (২০)। তিনি ময়মনসিংহের ত্রিশাল উপজেলার ধানীখোলা (মধ্য ভাটিবাড়ি) গ্রামের মো. কালিমুল্লাহর ছেলে।

তিনি ভালুকার একটি ফ্যাক্টরিতে নিটিং অপারেটর হিসেবে কাজ করেন।

১৮ ডিসেম্বর দীপুকে হত্যার পর রশি দিয়ে গাছে ঝুলিয়ে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। এই ভয়াবহ ঘটনার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে।

জানা গেছে, ভিডিও ফুটেজ বিশ্লেষণ করে পুলিশ দেখতে পায়, সাদা শার্ট পরিহিত এক যুবক দীপুর নিথর দেহ রশি দিয়ে টেনে গাছের ওপর তুলছেন। প্রযুক্তির সহায়তায় সেই যুবককে অনিক হিসেবে শনাক্ত করে পুলিশ। হত্যাকাণ্ডের পর থেকে অনিক পলাতক ছিলেন। তাঁকে ধরতে ময়মনসিংহ ও নেত্রকোনা জেলার বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালানো হয়। সর্বশেষ ঢাকার বনানী ও গাজীপুরের চেরাগআলী এলাকায় অভিযান চালিয়ে গতকাল বিকেল সাড়ে ৫টায় তাঁকে গ্রেপ্তার করে তদন্তকারী দল।

ময়মনসিংহ জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আব্দুল্লাহ আল মামুন জানান, অনিক যে ফ্যাক্টরিতে কাজ করতেন, ঘটনার পর থেকে তিনি সেখানে অনুপস্থিত ছিলেন। এই মামলায় এখন পর্যন্ত গ্রেপ্তার আসামিদের মধ্যে পাঁচজন আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। অন্যদেরও গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

নাগরিকত্ব ছেড়ে যুক্তরাজ্যপ্রবাসীর মনোনয়নপত্র দাখিল, হলফনামায় নেই স্বাক্ষর

নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহী
আপডেট : ৩১ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৮: ৩৫
রাজশাহীতে নাগরিকত্ব ছেড়ে যুক্তরাজ্যপ্রবাসীর মনোনয়নপত্র দাখিল। ছবি: আজকের পত্রিকা
রাজশাহীতে নাগরিকত্ব ছেড়ে যুক্তরাজ্যপ্রবাসীর মনোনয়নপত্র দাখিল। ছবি: আজকের পত্রিকা

জাতীয় সংসদ নির্বাচনে রাজশাহী-৫ (পুঠিয়া-দুর্গাপুর) আসনে প্রার্থী হতে যুক্তরাজ্যের নাগরিকত্ব প্রত্যাহারের আবেদন করেছেন ব্যারিস্টার রেজাউল করিম। স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্রও দাখিল করেছেন। তাঁর জমা দেওয়া হলফনামায় দেখা গেছে, তিনি স্বাক্ষর দেননি, এমনকি নির্ধারিত ছকে টিপসইও নেই।

তবে তিনি একা নন, রাজশাহীর ছয়টি সংসদীয় আসনে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়া ৩৮ প্রার্থীর মধ্যে পাঁচজন হলফনামায় স্বাক্ষর কিংবা টিপসই দেননি।

রেজাউল করিম লন্ডন জিয়া পরিষদের নেতা। তাঁর বাড়ি রাজশাহীর দুর্গাপুরে। তিনি ওই আসনে বিএনপির মনোনয়ন চেয়েছিলেন। মনোনয়ন না পেয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হতে মনোনয়নপত্র দাখিল করেন।

হলফনামার তথ্যমতে, তিনি যুক্তরাজ্যের নাগরিক ছিলেন। নাগরিকত্ব প্রত্যাহারের আবেদন করেন ২২ ডিসেম্বর। তারিখটিকে তিনি নাগরিকত্ব প্রত্যাহারের দিন হিসেবে উল্লেখ করেছেন। তাঁর হাতে আছে নগদ ৮০ লাখ ৩৭ হাজার ৩৯৫ টাকা।

হলফনামায় স্বাক্ষর না দেওয়ার বিষয়ে কথা বলতে রেজাউল করিমের মোবাইল ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করেও সংযোগ না পাওয়ায় তাঁর বক্তব্য জানা যায়নি।

অপর দিকে আরও যে চার প্রার্থী হলফনামায় স্বাক্ষর কিংবা টিপসই দেননি, তাঁরা হলেন রাজশাহী-৩ (পবা-মোহনপুর) আসনের আমজনতার দল মনোনীত প্রার্থী সাঈদ পারভেজ, একই আসনের ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের প্রার্থী ফজলুর রহমান, রাজশাহী-৪ (বাগমারা) আসনে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ মনোনীত প্রার্থী তাজুল ইসলাম খান ও রাজশাহী-৫ (পুঠিয়া-দুর্গাপুর) আসনের বাংলাদেশ সুপ্রিম পার্টি (বিএসপি) মনোনীত প্রার্থী আলতাফ হোসেন মোল্লা।

হলফনামায় স্বাক্ষর না দেওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে সাঈদ পারভেজ বলেন, ‘তড়িঘড়ি করে বিষয়টা এ রকম হয়ে গেছে। এখন কী হবে, বুঝতে পারছি না। মনোনয়নপত্র বাতিল হলে আপিল করব।’

এ বিষয়ে রাজশাহীর রিটার্নিং কর্মকর্তা আফিয়া আখতার আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘হলফনামায় যদি স্বাক্ষর কিংবা টিপসই দেওয়ার স্থান থাকে, তাহলে সেটি না দিলে তো অনিয়ম। তবে আমি এখনো সবগুলো হলফনামা দেখিনি। তাই এ বিষয়ে এখনো কোনো মন্তব্য করছি না।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত