Ajker Patrika

টঙ্গীতে তাবলিগ জামাতের দুই পক্ষের সংঘর্ষে নিহত ৩

টঙ্গী (গাজীপুর) প্রতিনিধি 
টঙ্গীর শহীদ আহসান উল্লাহ মাস্টার জেনারেল হাসপাতালের সামনে তাবলিগ জামাতের সদস্যদের ভিড়। ছবি: আজকের পত্রিকা
টঙ্গীর শহীদ আহসান উল্লাহ মাস্টার জেনারেল হাসপাতালের সামনে তাবলিগ জামাতের সদস্যদের ভিড়। ছবি: আজকের পত্রিকা

গাজীপুরের টঙ্গীতে বিশ্ব ইজতেমা ময়দানে পাঁচ দিনের জোড় ইজতেমা পালনকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষে অন্তত ৩ জন নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় ৪০-৫০ জন ব্যক্তি আহত হয়েছেন। আজ বুধবার ভোর চারটার দিকে তাবলিগ জামাতের দুই পক্ষের মধ্যে এই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।

সংঘর্ষে নিহতরা হলেন—তাবলিগ জামাতের বাংলাদেশি নেতা মাওলানা জুবায়েরের অনুসারী কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়া থানার আমিনুল ইসলাম বাচ্চু (৫৫) ও ঢাকা জেলার দক্ষিণখান থানার বেরাইদ এলাকার বেলাল (৬০), ভারতের মাওলানা সাদ কান্ধলভির অনুসারী বগুড়া জেলার তাইজুল ইসলাম (৬৫) (সায়েম)।

ঢাকা মেডিকেল পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ মো. ফারুক আমিনুল ইসলাম বাচ্চুর মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। মাওলানা জুবায়ের পন্থী অংশের গণমাধ্যম সমন্বয়ক হাবিবুল্লাহ রায়হান বেলালের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। আর মাওলানা সাদপন্থী অংশের গণমাধ্যম সমন্বয়ক মো. সায়েম তাইজুল ইসলামের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

টঙ্গী ইজতেমা ময়দানের কয়েকটি প্রবেশ ফটকে দুই পক্ষের সংঘর্ষে আনুমানিক ৪০ থেকে ৫০ জন আহত হন। এর মধ্যে কয়েকজনের অবস্থা গুরুতর। আহতদের টঙ্গীর শহীদ আহসান উল্লাহ মাস্টার জেনারেল হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।

জানা গেছে, মাওলানা জুবায়ের অনুসারীদের তত্ত্বাবধানে আয়োজিত গত ২৯ নভেম্বর থেকে ৩ ডিসেম্বর পর্যন্ত জোড় ইজতেমা পালন করেন কয়েক হাজার মুসল্লি। এরপর দ্বিতীয় ধাপে আগামী ২০ ডিসেম্বর থেকে ২৪ ডিসেম্বরে জোড় ইজতেমায় আয়োজনের অনুমতি চায় ভারতের মাওলানা সাদ কান্ধলভির আয়োজক কমিটির (বাংলাদেশের) শীর্ষ মুরব্বিরা। তবে সরকারের উচ্চ পর্যায়ের সিদ্ধান্তে দ্বিতীয় দফায় জোড় ইজতেমার অনুমতি দেওয়া হয়নি মাওলানা সাদ অনুসারীদের।

গত কয়েক দিন যাবৎ সরকার ও মাওলানা জুবায়ের অনুসারী ইজতেমা আয়োজক কমিটির মুরুব্বিদের কাছে দফায় দফায় জোড় ইজতেমা করার অনুমতি চায় মাওলানা সাদ কান্ধলভির অনুসারী ইজতেমা আয়োজক কমিটির মুরব্বিরা।

গত বৃহস্পতিবার সকাল দশটার দিকে ভারতের মাওলানা সাদ কান্ধলভির ইজতেমা আয়োজক কমিটির কয়েকজন শীর্ষ মুরব্বি গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের উপপুলিশ কমিশনারের কার্যালয়ে যান। সেখানে আলোচনা শেষে দুপুরে ইজতেমা ময়দানের পশ্চিম পাশা বিশ্ব ইজতেমা মসজিদে ফেরার পথে টঙ্গীর মুন্নু গেট এলাকায় পৌঁছালে আগে থেকেই লাঠি-সোঁটা নিয়ে অবস্থান করা জুবায়ের অনুসারীরা ঢাকা ময়মনসিংহ মহাসড়কে সাদ অনুসারীদের একটি প্রাইভেট কারে ভাঙচুর চালায়। এ সময় প্রাইভেটকারে থাকা সাদ অনুসারীদের পাঁচজন আহত হন। এ ঘটনার পর থেকেই দুই পক্ষের মাঝে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে।

সরেজমিনে জানা গেছে, জোড় ইজতেমা আয়োজন অনিশ্চিত হয়ে পড়ায় গতকাল মঙ্গলবার বিকেল থেকেই তুরাগ নদীর পারে টঙ্গী বিশ্ব ইজতেমা জামে মসজিদে জড়ো হতে থাকেন কয়েক হাজার সাদ অনুসারী। বিষয়টি জানতে পেরে মঙ্গলবার রাত থেকেই ইজতেমা ময়দানের প্রায় সকল প্রবেশপথে জড়ো হয়ে কড়া পাহারা দিতে শুরু করে জুবায়ের পন্থীরা। পরে আজ ভোরে মাওলানা সাদ কান্ধলভির অনুসারীরা ইজতেমা ময়দানের কয়েকটি প্রবেশপথ দিয়ে ময়দানে ঢোকার চেষ্টা করে। এ সময় উভয় পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হলে অন্তত ৪০-৫০ জন আহত হন।

টঙ্গীর শহীদ আহসান উল্লাহ মাস্টার জেনারেল হাসপাতালের রেজিস্ট্রারের তথ্য অনুযায়ী, আজ বুধবার সকাল আটটা পর্যন্ত ৩৯ জন ব্যক্তি চিকিৎসা নিয়েছেন। এদের মধ্যে ১১ জনের শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে উন্নত চিকিৎসার জন্য চিকিৎসক তাদের ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠান।

হাসপাতালটির জরুরি বিভাগে দায়িত্বে থাকা জ্যেষ্ঠ সেবিকা হাফিজুর রহমান বলেন, ‘বুধবার ভোর সাড়ে চারটা থেকে আহতরা চিকিৎসা নিতে হাসপাতালে আসতে থাকেন। একজনের ব্যক্তির মরদেহ হাসপাতালে আছে।’ তবে কার মরদেহ হাসপাতালে আছে সেটি তিনি জানাতে পারেননি।

বাংলাদেশের মাওলানা জুবায়ের অনুসারী ইজতেমা আয়োজক কমিটির গণমাধ্যম সমন্বয়ক হাবিবুল্লাহ রায়হান বলেন, ‘ইজতেমা ময়দানে আমাদের ঘুমন্ত সাথিদের ওপর হামলা করে একজনকে হত্যা করা হয়েছে।’ ভারতের মাওলানা সাদ কান্ধলভির ইজতেমা আয়োজক কমিটির গণমাধ্যম সমন্বয় মুহাম্মদ সায়েমও তাইজুল ইসলামের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

এদিকে, ঢাকা মেডিকেল পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ মো. ফারুক বেলাল হোসেনের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, বুধবার ভোর ৪টার দিকে এই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এরপর তাদের ঢাকা মেডিকেলে নিয়ে আসা হলে চিকিৎসক বেলাল হোসেনকে মৃত ঘোষণা করেন।

গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার (অপরাধ-দক্ষিণ) এমএম নাসিরুদ্দিন জানান, গত মঙ্গলবার দিবাগত রাত থেকেই দুই পক্ষের অনুসারীরা পৃথকভাবে ইজতেমা ময়দানের ভেতরে ও বাইরে জড়ো হতে থাকে। ভোরে সংঘর্ষে জড়ান তারা। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ভৈরবে গ্যাসের লিকেজ থেকে আগুন, ১০ শিশুসহ দগ্ধ ১৫

কিশোরগঞ্জ প্রতিনিধি ও ভৈরব সংবাদদাতা
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

কিশোরগঞ্জের ভৈরবে গ্যাস সিলিন্ডারের লিকেজ থেকে বিস্ফোরণে ১০ শিশুসহ ১৫ জন দগ্ধ হয়েছে। এর মধ্যে ১২ জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানা গেছে।

বৃহস্পতিবার (৫ ডিসেম্বর) দুপুর ১টার দিকে উপজেলার আগানগর ইউনিয়নের লুন্দিয়া চরপাড়া বাজারে এ দুর্ঘটনা ঘটে।

স্বজন ও হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, দগ্ধদের উদ্ধার করে ভৈরব উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে কর্তব্যরত চিকিৎসক প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে ১২ জনকে ঢাকার জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে পাঠান। বাকি তিনজনকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে বাড়ি পাঠানো হয়েছে।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, দোকান মালিক, লুন্দিয়া টুকচানপুর গ্রামের বাসিন্দা জহির মিয়া পুরি ও রুটি ভাজি বিক্রি শেষে সকালে ১০টার দিকে প্রতিদিনের মতো দোকান বন্ধ করে বাড়ি যান। তিনি ভুলে গ্যাস সিলিন্ডারের রেগুলেটরের সুইচ বন্ধ করেননি। দীর্ঘ সময় ধরে দোকানের ভেতর গ্যাস ছড়িয়ে পড়ে। পরে এক পর্যায়ে গ্যাসের বিস্ফোরণে দোকানে আগুন ধরে যায়। এসময় দোকানের সামনে থাকা পথচারী এবং প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা দগ্ধ হন।

আহতরা হলেন—হারুন মিয়া (৪০), সোহাগ মিয়া (১০), ওয়াসিবুল (১০), সামিউল (৯), আল আমিন (৮), শুভ (৮), নিরব (১৫), রাহাত (১২), ফাহিম (১০), আমিন (১০), হেকিম মিয়া (৫৫), সেরাজুল (১০), ছিদ্দিক মিয়া (৫৮), মোর্শিদ মিয়া (৫০) ও নাছির মিয়া (৪০)।

চিকিৎসকদের বরাত দিয়ে স্বজনেরা জানান, আহতদের মধ্যে হারুন মিয়ার শরীরের প্রায় ৮০ শতাংশ দগ্ধ হওয়ায় তাঁর অবস্থা সংকটজনক।

প্রত্যক্ষদর্শী মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘হঠাৎ রাস্তার ওপর আগুন ছড়িয়ে পড়ে। চোখের সামনে কয়েকজন মানুষ আগুনে পুড়তে দেখি। পরে জানতে পারি গ্যাস সিলিন্ডার থেকেই আগুন ছড়িয়েছে।’

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের পরিবার ও পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. কিশোর কুমার ধর বলেন, ১৫ জন অগ্নিদগ্ধ রোগী হাসপাতালে আসে। একজনের শরীরের ৮০ শতাংশ এবং অন্যদের ২০–৩০ শতাংশ দগ্ধ হয়েছে। ১২ জনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় পাঠানো হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

স্কুলছাত্রীকে ধর্ষণের পর হত্যা, আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি যুবকের

নাসিরনগর (ব্রাহ্মণবাড়িয়া) প্রতিনিধি 
দুলাল মিয়া। ছবি: সংগৃহীত
দুলাল মিয়া। ছবি: সংগৃহীত

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগর উপজেলার একটি গ্রামে তৃতীয় শ্রেণির এক স্কুলছাত্রীকে ধর্ষণের পর হত্যার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় অভিযুক্ত যুবককে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তিনি আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।

গ্রেপ্তার আসামির নাম দুলাল মিয়া (২৮)। তিনি ধর্ষণ ও হত্যার কথা স্বীকার করে গতকাল বৃহস্পতিবার ব্রাহ্মণবাড়িয়া সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আমলি আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। বিচারক আশরাফুল আলম আসামির জবানবন্দি নথিভুক্ত করেন। পরে আসামিকে কারাগারে পাঠানো হয়।

নাসিরনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাকছুদ আহাম্মদ এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

আসামির জবানবন্দির বরাতে ওসি মাকছুদ আহাম্মদ জানান, গত মঙ্গলবার রাতে দুলাল মিয়া আট বছরের ওই শিশুকে ঘর থেকে ডেকে নেন। এরপর তাকে বাড়ির পাশের একটি পরিত্যক্ত ঘরে নিয়ে ধর্ষণ করেন। এ সময় শিশুটি চিৎকার করলে শ্বাস রোধ করে তাকে হত্যা করেন দুলাল।

মাকছুদ আহাম্মদ জানান, এদিকে ওই রাতেই শিশুকে না পেয়ে তার পরিবার খোঁজাখুঁজি শুরু করে। সে সময় সন্ধান চেয়ে মাইকে প্রচারও করা হয়। তখন দুলাল মিয়াও শিশুটির বাবার সঙ্গে খোঁজাখুঁজিতে যোগ দেন। পরদিন গত বুধবার সকালে বাড়ির পাশে পরিত্যক্ত একটি ঘর থেকে শিশুটির লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। এ সময় দুলাল মিয়া ভিন্ন ভিন্ন তথ্য দিয়ে পুলিশ সদস্যদের বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করেন।

জবানবন্দির বরাতে ওসি মাকছুদ আহাম্মদ বলেন, ‘লাশ উদ্ধারের সময় দুলাল মিয়ার আচরণে আমাদের সন্দেহ হয়। বিষয়টি নিয়ে পুলিশ সুপার মো. আব্দুর রউফ, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. জাহাঙ্গীর আল সরকারের সঙ্গে কথা হয়। পরে বুধবার রাতে শিশুটির বাবা অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের আসামি করে ধর্ষণ ও হত্যা মামলা করেন। মামলার পরই দ্রুত তদন্ত শুরু করে ঘটনাস্থলসংলগ্ন বিভিন্ন আলামত পর্যালোচনা শেষে ওই রাতেই দুলাল মিয়াকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। শিশুটির লাশের ময়নাতদন্ত শেষে তার পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

মামলা ষড়যন্ত্রমূলক দাবি করে ভুক্তভোগী পরিবারের সংবাদ সম্মেলন

চাটমোহর (পাবনা) প্রতিনিধি 
পাবনার চাটমোহরে অ্যাসিড অপরাধ দমন আইনের একটি মামলাকে মিথ্যা ও ষড়যন্ত্রমূলক বলে দাবি করে ভুক্তভোগী পরিবারের সংবাদ সম্মেলন। ছবি: আজকের পত্রিকা
পাবনার চাটমোহরে অ্যাসিড অপরাধ দমন আইনের একটি মামলাকে মিথ্যা ও ষড়যন্ত্রমূলক বলে দাবি করে ভুক্তভোগী পরিবারের সংবাদ সম্মেলন। ছবি: আজকের পত্রিকা

পাবনার চাটমোহর উপজেলায় অ্যাসিড অপরাধ দমন আইনের একটি মামলাকে মিথ্যা ও ষড়যন্ত্রমূলক বলে দাবি করেছে ভুক্তভোগী পরিবার। তাঁদের অভিযোগ, মামলায় নির্দোষ ব্যক্তিদের ফাঁসানো হয়েছে। পুনঃতদন্তের মাধ্যমে প্রকৃত ঘটনা উদ্‌ঘাটন ও অভিযুক্তদের খালাস দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন তাঁরা।

আজ শুক্রবার সকালে চাটমোহর প্রেসক্লাব মিলনায়তনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে পরিবারের পক্ষে লিখিত বক্তব্য উপস্থাপন করেন মামলার ১ নম্বর বিবাদী, ছাইকোলা ইউনিয়নের কুবড়াগাড়ি গ্রামের শফিকুল ইসলামের স্ত্রী সুমাইয়া খাতুন।

জানা গেছে, গত ৪ জুলাই রাত আড়াইটার দিকে কুবড়াগাড়ি গ্রামের আব্দুর রহিম (৬৫) নিজ ঘরে ঘুমিয়ে ছিলেন। ওই সময় দুর্বৃত্তরা তাঁকে ঘর থেকে বাইরে ডেকে শরীরে দাহ্য পদার্থ ঢেলে দেয়। এতে তিনি দগ্ধ হন। প্রথমে তাঁকে চাটমোহর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এবং পরে ঢাকায় চিকিৎসার জন্য নেওয়া হয়। এ ঘটনায় আব্দুর রহিমের ভাই আব্দুল আজিজ বাদী হয়ে প্রতিবেশী সাতজনকে বিবাদী করে অ্যাসিড অপরাধ দমন আইনে মামলা করেন। মামলার ছয়জন জামিন পেলেও ১ নম্বর বিবাদী শফিকুল ইসলাম এখনো কারাগারে।

সংবাদ সম্মেলনে সুমাইয়া খাতুন দাবি করেন, ঘটনার দিন ওই সময়ে তাঁর স্বামী চাটমোহরে ছিলেন না। তাঁরা দুজনই সেদিন চট্টগ্রামের হাটহাজারীতে ছিলেন, যেখানে তাঁরা ফুটপাতে বিরিয়ানি বিক্রি করেন। তা সত্ত্বেও তাঁর স্বামীকে মামলার ১ নম্বর বিবাদী করা হয়েছে। এ ছাড়া শফিকুলের পিতা শহিদ সরদারসহ আরও দুই ভাইকে মামলায় জড়ানো হয়েছে।

সুমাইয়ার ভাষ্য, ‘আমার স্বামী গ্রামে থাকেন না। আমরা তিন সন্তান নিয়ে হাটহাজারীতেই থাকি। প্রতিপক্ষ আমাদের ফাঁসানোর উদ্দেশ্যে মিথ্যা মামলা করেছে। প্রকৃত ঘটনা তদন্ত করা হয়নি। আমরা অন্যায়ের শিকার।’ তিনি অভিযোগ করেন, মামলার তদন্তে গাফিলতি থাকায় তাঁরা দীর্ঘদিন ধরে হয়রানির শিকার। তিন সন্তানসহ মানবেতর জীবন যাপন করছেন বলেও দাবি করেন তিনি।

সংবাদ সম্মেলনে মামলাটি পুনঃতদন্ত করে প্রকৃত দোষীদের খুঁজে বের করা এবং আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানান পরিবারের সদস্যরা। সেখানে শফিকুল ইসলামের পিতা শহিদ সরদার, তাঁর মা ও অন্যান্য স্বজন উপস্থিত ছিলেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

গুলশানে ৫৪০ বোতল বিদেশি মদ জব্দ, গ্রেপ্তার ১

উত্তরা-বিমানবন্দর (ঢাকা) প্রতিনিধি 
র‍্যাবের হাতে জব্দ হওয়া ৫৪০ বোতল বিদেশি মদ। ছবি: র‍্যাব
র‍্যাবের হাতে জব্দ হওয়া ৫৪০ বোতল বিদেশি মদ। ছবি: র‍্যাব

রাজধানীর গুলশানে মদের চালানসহ এক মাদক কারবারিকে গ্রেপ্তার করেছে র‍্যাব। এ সময় তাঁর কাছ থেকে ৫৪০ বোতল বিদেশি মদ ও মাদক পরিবহনে ব্যবহৃত একটি পিকআপ ভ্যান জব্দ করা হয়।

আজ শুক্রবার (৫ ডিসেম্বর) সকালে এ ঘটনা ঘটে।

গ্রেপ্তার রবিউল ইসলাম (২১) নওগাঁর রাণীনগর উপজেলার ভিটি গ্রামের ফারুক হোসেনের ছেলে।

এ বিষয়ে র‍্যাব-১-এর কর্মকর্তা মো. রাকিব হাসান বলেন, গোপন তথ্যের ভিত্তিতে গুলশানে অভিযান চালিয়ে ৫৪০ বোতল বিদেশি মদ, মাদক পরিবহনে ব্যবহৃত পিকআপ ভ্যানসহ রবিউল ইসলামকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাঁর বিরুদ্ধে গুলশান থানায় আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত