Ajker Patrika

দখল করে বাড়িবিলাস বেয়াই মোশাররফের

  • খাসজমি, এমনকি সংখ্যালঘুদের জমিও দখল করেছেন মোশাররফ
  • এত দিন ভয়ে কথা না বললেও এখন মুখ খুলছেন ভুক্তভোগীরা
ফরিদপুর প্রতিনিধি
আপডেট : ০৮ ডিসেম্বর ২০২৪, ১২: ১৩
এই ‘আফসানা মঞ্জিল’ গড়তে জমি দখলের অভিযোগ উঠেছে খন্দকার মোশাররফ হোসেনের বিরুদ্ধে। বাড়িটি ঢাকা-খুলনা মহাসড়কে ফরিদপুর শহরের প্রবেশমুখে বদরপুরে। ছবি: আজকের পত্রিকা
এই ‘আফসানা মঞ্জিল’ গড়তে জমি দখলের অভিযোগ উঠেছে খন্দকার মোশাররফ হোসেনের বিরুদ্ধে। বাড়িটি ঢাকা-খুলনা মহাসড়কে ফরিদপুর শহরের প্রবেশমুখে বদরপুরে। ছবি: আজকের পত্রিকা

ঢাকা-খুলনা মহাসড়কে ফরিদপুর শহরের প্রবেশমুখে বদরপুরের বাড়িটির নাম ‘আফসানা মঞ্জিল’। পাশাপাশি বাংলো প্যাটার্নের তিনটি বাড়ি নিয়ে আফসানা মঞ্জিল। ইতালিয়ান মার্বেল পাথরে তৈরি এই বাড়িতে এখন কেউ নেই। এখানে একটি সমাধিও আছে। যদিও এটিতে এ পর্যন্ত কাউকে সমাহিত করা হয়নি। বাড়িটি সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার বেয়াই খন্দকার মোশাররফ হোসেনের।

অভিযোগ রয়েছে, বিলাসবহুল এ বাড়ি নির্মাণে খাসজমি, এমনকি সংখ্যালঘুদের জমিও দখল করেছেন খন্দকার মোশাররফ। আওয়ামী লীগের আমলে এসব দখল নিয়ে ভয়ে কেউ কথা না বললেও এখন অনেকে মুখ খুলছেন।

২০০৯ থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত আওয়ামী লীগ সরকারের তিন মেয়াদে সংসদ সদস্য ছিলেন খন্দকার মোশাররফ। প্রথমবার শ্রমমন্ত্রী, পরেরবার প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থানমন্ত্রী এবং সর্বশেষ স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে ছিলেন। তিনি ও তাঁর অনুসারীদের বিরুদ্ধে রয়েছে হাজার হাজার কোটি টাকা দুর্নীতি আর লুটপাটের অভিযোগ। বহুল আলোচিত দুই হাজার কোটি টাকার মানি লন্ডারিংয়ের মামলায় তাঁর সহযোগীদের অনেকে এখনো কারাগারে। গত ৫ আগস্ট সরকার পতনের পর খন্দকার মোশাররফ হোসেনের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত নিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

সম্প্রতি বদরপুরে সরেজমিনে দেখা যায়, গাছগাছালিতে ঢেকে থাকা আফসানা মঞ্জিলের প্রকৃত রূপ আসলে বাইরে থেকে বোঝার উপায় নেই। বড় গেট মাড়িয়ে পিচ ঢালা পথ পেরিয়ে তবেই দেখা মেলে বাংলো প্যাটার্নের এই দৃষ্টিনন্দন বাড়ির। বাড়ির সামনের উঠোনে সরকারি প্রটোকলের গার্ড অব অর্নার নেওয়ার জন্য পতাকার স্ট্যান্ড-সংবলিত বেদি রয়েছে। রয়েছে ছোট্ট একটি চিড়িয়াখানা। এর এক পাশে এই সমাধিসৌধ। উত্তর-পূর্বে গরুর খামার। এর পেছনে ফসলি খেত। অভিযোগ রয়েছে, খন্দকার মোশাররফ হোসেনের সেখানে মাত্র দুই বিঘা জমি ছিল, এখন রয়েছে প্রায় ৪০ বিঘা। এসব জমি তিনি জোর করে কবজায় নিয়েছেন।

খন্দকার মোশাররফ হোসেন। ছবি: সংগৃহীত
খন্দকার মোশাররফ হোসেন। ছবি: সংগৃহীত

সম্প্রতি আফসানা মঞ্জিলের পেছনের অংশে বাউন্ডারি তুলে জমি ঘেরাওয়ের কাজ শুরু হলে স্থানীয়দের সঙ্গে বিরোধ বাধে। সেখানে লাইট হাইজ এজি চার্চ নামের একটি প্রতিষ্ঠানসহ অন্যান্য বাড়ির মালিকদের যাতায়াতের রাস্তা আটকে দেওয়ার অভিযোগও উঠেছে খন্দকার মোশাররফের বিরুদ্ধে।

বদরপুরের বাসিন্দা স্যামুয়েল বাড়ৈ নামের একজন ভুক্তভোগী জানান, জমি দখলের জন্য একটি বিশেষ বাহিনী গড়ে তুলেছিলেন তিনি। এরা অতিশয় নিরীহ প্রতিবেশীদের ওপর নির্মম নির্যাতনের পর জোর করে জায়গাজমি লিখে নিত। জমির মালিকদের বাড়ি ছেড়ে দিতে দিনরাত হুমকি দিত। কখনো হামলা চালিয়ে বাড়িঘর এমনকি মানুষদের কুপিয়ে যেত। যারা লিখে দিতে চাইত না, তাদেরটা জোর করেই লিখে নিতেন তিনি। আবার না লিখে দিলে জোর করেই জমি অবৈধভাবে দখল করতেন।

জেলা খ্রিষ্টান অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক উজ্জ্বল ঘোষ বলেন, ‘বাড়ির পুকুরের ঘাটলায় ডেকে নিয়ে জমি লিখে দিতে হতো মোশাররফকে। আমাদের একটি চার্চের জমিও তিনি লিখে নিতে অনেক চাপ দিয়েছিলেন। কিন্তু ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ রাখায় জমিটি রক্ষা করতে পেরেছি। অনেকে তা পারেননি। রুস্তম শেখ নামের এক ব্যক্তির প্রায় দেড় একর জমি লিখে নেওয়ার পর সেই শোকে লোকটি একপর্যায়ে মারা যান।’

বদরপুরের জেমস বৈদ্য নামের আরেক ব্যক্তি বলেন, তাঁদের ৪২টি পরিবারের দেড় একর জমি লিখে নিতে রামদা নিয়ে হামলা করে মোশাররফের সন্ত্রাসী বাহিনী। তিনি ও তাঁর স্ত্রী এ ঘটনার পর স্ট্রোকে অসুস্থ হয়ে পড়েছেন।

এটি ‘নুরুল ভিলা’। ফরিদপুর শহরের দক্ষিণ কালীবাড়িতে রাজেন্দ্র কলেজসংলগ্ন এই বাড়ি করতে জায়গা দখল করেছেন মোশাররফ। ছবি: আজকের পত্রিকা
এটি ‘নুরুল ভিলা’। ফরিদপুর শহরের দক্ষিণ কালীবাড়িতে রাজেন্দ্র কলেজসংলগ্ন এই বাড়ি করতে জায়গা দখল করেছেন মোশাররফ। ছবি: আজকের পত্রিকা

প্রশান্ত কুমার রায় নামের এক ব্যক্তি বলেন, তাঁর ৩ শতাংশ জমি জোর করে দখলের পর গরুর খামার বানিয়ে রেখেছেন সাবেক এই মন্ত্রী। আরেকজনের ৫ শতাংশ জমিও জোর করে দখল করে রেখেছেন। এখনো তাঁর লোকজন ওই সব জমির প্রকৃত মালিকদের হুমকি দিয়ে যাচ্ছে।

আছে রংমহল ও অন্যান্য

সদর উপজেলার ডিক্রিরচরে নামে-বেনামে কয়েক শ বিঘা জমির ওপর রয়েছে মোশাররফের আরেকটি বাংলো বাড়ি। যেটি স্থানীয়দের কাছে ‘রংমহল’ হিসেবে পরিচিত। দেশ-বিদেশ থেকে শিল্পী এনে বিভিন্ন উৎসব অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হতো সেখানে। বাড়িটিতে যাওয়ার জন্য চরের বুকে সরকারি টাকায় করা হয়েছে রাস্তা।

এদিকে ফরিদপুর শহরের দক্ষিণ কালীবাড়িতে রাজেন্দ্র কলেজসংলগ্ন পৈতৃক বাড়ির পাশেও জায়গা দখল করেছেন। অভিযোগ রয়েছে, ক্ষমতার প্রভাব খাটিয়ে তিনি অরুণ কুমার গুহ নামের এক হিন্দু ব্যক্তির দ্বিতল ভবনসহ তিন একর জমি দখল করেন। ‘দয়াময় ভবন’ নামের বাড়িটি নতুন করে সংস্কারের পর নাম রাখা হয়েছে তাঁর বাবা খন্দকার নুরুল হোসেন নুরু মিয়ার নামে ‘নুরুল ভিলা’। উল্লেখ্য, এই নুরু মিয়া মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় শান্তি কমিটির সদস্য ছিলেন। তাই রাজাকার বলে ডাকা হয় তাঁকে। এই বাংলোবাড়ির বর্তমান মূল্য ৮০ কোটি টাকার বেশি বলে জানা গেছে।

এসব ব্যাপারে খন্দকার মোশাররফ হোসেন বা তাঁর পরিবারের বক্তব্য জানতে তাঁদের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাঁরা কেউ দেশে না থাকায় বক্তব্য জানা যায়নি। পরে খন্দকার মোশাররফ হোসেনের আস্থাভাজন একজন নারী প্রতিনিধির সঙ্গে কথা হলে তিনি তাঁর মোবাইল থেকে কথা বলিয়ে দেন খন্দকার মোশাররফের জামাতা সাবেক সংসদ সদস্য কায়েদ-ই-মিল্লাতের সঙ্গে। তিনি এই প্রতিবেদকের কাছে দাবি করেন, ফরিদপুরে তাঁর শ্বশুর খন্দকার মোশাররফ হোসেনের এসব সম্পত্তির সব বৈধ কাগজপত্র রয়েছে। কারও জায়গাজমি দখল করে নেননি তাঁরা। আর যে রাস্তা দেয়াল তুলে আটকে দেওয়া হয়েছে, সেটিও তাঁর শ্বশুরের মালিকানাধীন।

কায়েদ-ই-মিল্লাত আক্ষেপ করে বলেন, ‘এখন আমাদের ক্ষমতা নেই, তাই ওরা ক্ষমতা দেখাচ্ছে। যদি কোনো দিন সময় আসে, আমরাও জবাব দিব।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ঘন কুয়াশা ও তীব্র শীতে বিপর্যস্ত মেহেরপুরের জনজীবন, তাপমাত্রা ৮ ডিগ্রি

গাংনী (মেহেরপুর) প্রতিনিধি
গাংনীতে ঘন কুয়াশায় ঢেকে গেছে সড়ক ও আশপাশের এলাকা। হেডলাইট জ্বালিয়ে চলছে গাড়ি। ছবি: আজকের পত্রিকা
গাংনীতে ঘন কুয়াশায় ঢেকে গেছে সড়ক ও আশপাশের এলাকা। হেডলাইট জ্বালিয়ে চলছে গাড়ি। ছবি: আজকের পত্রিকা

মেহেরপুর জেলায় ঘন কুয়াশা ও তীব্র শীতে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে জনজীবন। এর সঙ্গে বইছে ঝিরি ঝিরি বাতাস। সকাল থেকে সূর্যের দেখা নেই। ঘন কুয়াশায় ঢেকে গেছে সড়ক ও আশপাশের এলাকা। কনকনে ঠান্ডায় জবুথবু অবস্থায় পড়েছে মানুষ।

কুয়াশা উপেক্ষা করেই মানুষ নিজ নিজ কাজে বের হচ্ছে। যানবাহনগুলো ধীরগতিতে কুয়াশা ভেদ করে চলাচল করছে। দিনমজুর ও খেটে খাওয়া মানুষ জীবিকার তাগিদে কাজে ছুটছেন। তবে ঘন কুয়াশার কারণে সড়ক দুর্ঘটনার আশঙ্কা করছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। আজ সকালে তাপমাত্রা নেমে এসেছে ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াসে।

স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, চারদিক এত কুয়াশায় ঢাকা যে অনেক সময় রাস্তা স্পষ্ট দেখা যায় না। এমন পরিস্থিতিতে রাস্তায় বের হতে ভয় লাগছে। এর সঙ্গে তীব্র শীত ও ঠান্ডা বাতাসে হাত-পা ঝিনঝিন করছে।

মাঠে কাজ করতে আসা শফিকুল ইসলাম বলেন, চরম শীত আর কুয়াশার মধ্যেই কাজ করতে হচ্ছে। সঙ্গে ঠান্ডা বাতাস বইছে। সবচেয়ে বেশি কষ্ট হচ্ছে শিশু ও বয়স্কদের।

আরেক শ্রমিক শিপন আলী বলেন, ‘আমরা দিনমজুর। কাজ না করলে পরিবার নিয়ে চলা কঠিন। আজ শীত খুব বেশি। হাত-পা অবশ হয়ে যাচ্ছে, কাজ করতে কষ্ট হচ্ছে।’

অটোচালক বকুল হোসেন জানান, ভোর থেকেই ঘন কুয়াশায় মাঠ ও রাস্তা ঢেকে গেছে। পেটের তাগিদে বের হতে হলেও ধীরে গাড়ি চালাতে হচ্ছে। দুই দিন ধরে সূর্যের দেখা মেলেনি।

ঝিরি ঝিরি বাতাস আর ঘন কুয়াশার মধ্যেই জমিতে কাজ করছেন এক কৃষক। ছবি: আজকের পত্রিকা
ঝিরি ঝিরি বাতাস আর ঘন কুয়াশার মধ্যেই জমিতে কাজ করছেন এক কৃষক। ছবি: আজকের পত্রিকা

নছিমনচালক হিরোক ইসলাম বলেন, ‘ভোরে মাছ আনতে বের হতে হয়। কুয়াশার কারণে দুর্ঘটনার ভয় বেশি। ধীরে চালালেও ভয় কাটে না। শীত আর বাতাসে হাত-পা অবশ হয়ে যাচ্ছে।’

চুয়াডাঙ্গা আবহাওয়া অফিসের পর্যবেক্ষণাগারের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. জামিনুর রহমান জানান, আজ সকাল ৯টায় তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং বাতাসের আর্দ্রতা ছিল ৯৬ শতাংশ। এমন আবহাওয়া আরও দু-এক দিন থাকতে পারে। তবে দুপুরের পর আকাশ কিছুটা পরিষ্কার হতে পারে।

গাংনী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. ইমরান হোসেন বলেন, ঘন কুয়াশা ও শীত থাকলেও এখন পর্যন্ত মাঠের ফসলে বড় ধরনের ক্ষতির আশঙ্কা নেই। কৃষকদের সঙ্গে যোগাযোগ রেখে প্রয়োজনীয় পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।

উল্লেখ্য, মেহেরপুর জেলায় আবহাওয়া অফিস না থাকায় পাশের জেলা চুয়াডাঙ্গার আবহাওয়া অফিসের তথ্যই মেহেরপুর জেলার তাপমাত্রা হিসেবে ধরা হয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

শৈত্যপ্রবাহে কাঁপছে গোপালগঞ্জ

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ৩১ ডিসেম্বর ২০২৫, ১২: ১১
ফাইল ছবি
ফাইল ছবি

রাজধানী ঢাকা আজ বুধবার সকালে সূর্য উঁকি দিলেও সারা দেশে শীতের দাপট চলছেই। তাপমাত্রাও গতকালের তুলনায় বেশ কমেছে। এর মধ্যে আজ সকালে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ৭ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস ছিল গোপালগঞ্জ জেলায়।

আবহাওয়া অধিদপ্তর আজ সকাল ৯টার পূর্বাভাসে জানিয়েছে, মাদারীপুর, গোপালগঞ্জ, রাজশাহী, পাবনা ও সিরাজগঞ্জ জেলাসহ খুলনা, বরিশাল বিভাগের ওপর দিয়ে মৃদু থেকে মাঝারি ধানের শৈত্য প্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। এই শৈত্যপ্রবাহ কোথাও কোথাও অব্যাহত থাকতে পারে।

পূর্বাভাসে আরও বলা হয়েছে, আজ অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ সারা দেশের আবহাওয়া শুষ্ক থাকতে পারে। মধ্যরাত থেকে সকাল পর্যন্ত সারা দেশের অনেক জায়গায় মাঝারি থেকে ঘন কুয়াশা পড়তে পারে। কোথাও কোথাও দুপুর পর্যন্ত তা অব্যাহত থাকতে পারে। ঘন কুয়াশার কারণে বিমান চলাচল, অভ্যন্তরীণ নৌ পরিবহন এবং সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা সাময়িকভাবে ব্যাহত হতে পারে।

পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, সারা দেশে রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে এবং দিনের তাপমাত্রা সামান্য বাড়তে পারে। সারা দেশে কুয়াশাচ্ছন্ন আবহাওয়ার কারণে শীতের অনুভূতি বেশি হতে পারে।

আবহাওয়া অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, আজ সকাল ৬টায় রাজধানী ঢাকার তাপমাত্রা ছিল ১৩ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। বিভাগীয় শহরগুলোর মধ্যে রাজশাহীতে ৮ দশমিক ৪, রংপুর ও ময়মনসিংহ, সিলেটে ১২ দশমিক ৫, চট্টগ্রামে ১৩ দশমিক ২, খুলনায় ৮ দশমিক ৫ এবং বরিশালে ৯ দশমিক ১ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের ফার্মগেট নামার র‍্যাম্প বন্ধ

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ৩১ ডিসেম্বর ২০২৫, ১১: ৪৯
ফাইল ছবি
ফাইল ছবি

সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার জানাজা আজ বাদ জোহর রাজধানীর মানিক মিয়া অ্যাভিনিউয়ে অনুষ্ঠিত হবে। জানাজাকে কেন্দ্র করে ওই এলাকায় বিপুলসংখ্যক মানুষের সমাগম হওয়ায় ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের ইন্দিরা রোডের ফার্মগেট নামার র‍্যাম্প সাময়িকভাবে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, আজ বুধবার সকাল থেকে র‍্যাম্পটি বন্ধ রাখা হয়েছে এবং বেলা আনুমানিক ২টা থেকে ৩টা পর্যন্ত বন্ধ থাকতে পারে। জানাজা উপলক্ষে ওই এলাকায় যানবাহন ও মানুষের চাপ বাড়বে; তাই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের নির্মাণ ও পরিচালনাকারী প্রতিষ্ঠান ফার্স্ট ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে (এফডিইই) কোম্পানি লিমিটেডের অপারেশন অ্যান্ড মেইনটেন্যান্স বিভাগের ব্যবস্থাপক ক্যাপ্টেন (অব.) হাসিব হাসান খান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘খালেদা জিয়ার জানাজায় অংশ নিতে সকাল থেকেই এই এলাকায় ভিড় বেড়েছে। র‍্যাম্পের নিচে যানবাহন চলাচলের পর্যাপ্ত জায়গা না থাকায় এবং তীব্র যানজট সৃষ্টি হওয়ায় আমরা সকাল থেকেই ফার্মগেট নামার র‍্যাম্পটি বন্ধ করে দিয়েছি।’

হাসিব হাসান আরও বলেন, বিকল্প হিসেবে যাত্রীদের এফডিসি নামার র‍্যাম্প ব্যবহারের পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। একই সঙ্গে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের ওপরেও চালকদের জন্য প্রয়োজনীয় দিকনির্দেশনা দেওয়া হচ্ছে।

এর আগে গতকাল ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) এক বিশেষ গণবিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে ফার্মগেট নামার র‍্যাম্প বন্ধ থাকার তথ্য জানিয়েছিল।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

সারজিসের নগদ টাকা আছে ৩ লাখ ১১ হাজার, পেশায় ব্যবসায়ী

পঞ্চগড় প্রতিনিধি 
আপডেট : ৩১ ডিসেম্বর ২০২৫, ১১: ২৮
জাতীয় নাগরিক পার্টির উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম। ছবি: ফেসবুক
জাতীয় নাগরিক পার্টির উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম। ছবি: ফেসবুক

আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পঞ্চগড়-১ আসন থেকে মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম। গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে তিনি রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয়ে তাঁর মনোনয়নপত্র জমা দেন।

নির্বাচন কমিশনে জমা দেওয়া হলফনামা অনুযায়ী, সারজিস আলমের হাতে নগদ অর্থ রয়েছে ৩ লাখ ১১ হাজার ১২৮ টাকা। পাশাপাশি তাঁর একটি ব্যাংক হিসাবে জমা আছে ১ লাখ টাকা। হলফনামায় তিনি তাঁর বর্তমান পেশা হিসেবে ব্যবসা এবং পূর্বতন পেশা হিসেবে ছাত্র উল্লেখ করেছেন। তাঁর নামে দানকৃত কৃষিজমির পরিমাণ ১৬ দশমিক ৫০ শতক। অর্জনকালে ওই জমির আর্থিক মূল্য ছিল ৭ হাজার ৫০০ টাকা, যা বর্তমানে আনুমানিক ৫ লাখ টাকা বলে উল্লেখ করা হয়েছে। ব্যবসা থেকে বছরে তাঁর আয় ৯ লাখ টাকা। সর্বোচ্চ শিক্ষাগত যোগ্যতা হিসেবে তিনি স্নাতকোত্তর (মাস্টার্স) উল্লেখ করেছেন।

হলফনামার তথ্যে আরও দেখা যায়, সারজিস আলমের নামে একটি মামলা রয়েছে, যা বর্তমানে তদন্তাধীন। তাঁর নামে কোনো বন্ড, ঋণপত্র বা স্টক এক্সচেঞ্জভুক্ত শেয়ার নেই। আসবাবপত্রের মূল্য দেখানো হয়েছে ৭৫ হাজার টাকা এবং ইলেকট্রনিক সামগ্রীর মূল্য ৭৫ হাজার টাকা। তাঁর কোনো আগ্নেয়াস্ত্র নেই। এ ছাড়া তাঁর নামে কোনো বাড়ি, অ্যাপার্টমেন্ট বা ভবনও নেই।

২০২৫-২৬ অর্থবছরের আয়কর রিটার্নে সারজিস আলম তাঁর মোট আয় দেখিয়েছেন ২৮ লাখ ৫ হাজার টাকা। আয়কর রিটার্ন অনুযায়ী তাঁর মোট সম্পদের মূল্য ৩৩ লাখ ৭৩ হাজার ৬২৮ টাকা। এই খাতে তিনি ৫২ হাজার ৫০০ টাকা আয়কর পরিশোধ করেছেন।

এদিকে পঞ্চগড়-১ আসনে মনোনয়ন দাখিলের শেষ দিনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা আরও জমে উঠেছে। এই আসনে সারজিস আলম ছাড়াও আরও সাত প্রার্থী মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন।

অন্য প্রার্থীরা হলেন বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক ব্যারিস্টার মুহাম্মদ নওশাদ জমির, বাংলাদেশ জাসদের নাজমুল হক প্রধান, জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টির (জাগপা) মুখপাত্র আল রাশেদ প্রধান, গণঅধিকার পরিষদের মো. মাহাফুজুর রহমান, বাংলাদেশ লেবার পার্টির মো. ফেরদৌস আলম, বাংলাদেশ ন্যাশনালিস্ট ফ্রন্টের মো. সিরাজুল ইসলাম এবং বাংলাদেশ সুপ্রিম পার্টির মো. আব্দুল ওয়াদুদ বাদশা।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত