Ajker Patrika

‘জীবনটা যানজটে শেষ, রোববার থেকে একটু শান্তি পাব’

সৌগত বসু, ঢাকা
আপডেট : ০৪ নভেম্বর ২০২৩, ১২: ৩৯
‘জীবনটা যানজটে শেষ, রোববার থেকে একটু শান্তি পাব’

দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর আজ শনিবার উদ্বোধন হতে যাচ্ছে মেট্রোরেলের আগারগাঁও থেকে মতিঝিল অংশ। এর ফলে আগামীকাল রোববার থেকে মাত্র ৩১ মিনিটে উত্তরা থেকে মতিঝিল যাতায়াত করা যাবে। এ নিয়ে মানুষের আগ্রহ ও উচ্ছ্বাসের কমতি নেই।

আজ দুপুরে মেট্রোরেলের আগারগাঁও থেকে মতিঝিল অংশের উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এর আগে গত বছরের ২৭ ডিসেম্বর তিনি এই প্রকল্পের প্রথম অংশ (উত্তরা থেকে আগারগাঁও) উদ্বোধন করেছিলেন। 

উত্তরা থেকে মতিঝিল রুটে যাতায়াত করা অনেক যাত্রীই আজকের পত্রিকার কাছে মেট্রোরেল নিয়ে তাঁদের উচ্ছ্বাস ব্যক্ত করেছেন। বাংলাদেশ ব্যাংকে কর্মরত অ্যাকাউন্টস অ্যান্ড বাজেটিং বিভাগের উপপরিচালক ইমতিয়াজুর রহমান বলেন, ‘পারিবারিক কারণে উত্তরা থাকতে হচ্ছে অনেক বছর ধরে। কিন্তু অফিস মতিঝিলে। প্রতিদিন প্রায় চার ঘণ্টার বেশি সময় রাস্তায় পার হয়। রোববার থেকে যেন একটু মুক্তি মিলবে।’ 

ইমতিয়াজুর বলেন, তিনি অনেক দিন ধরেই মেট্রোরেল মতিঝিল পর্যন্ত চলাচলের জন্য অপেক্ষা করছিলেন। এখন স্টেশনের কাছাকাছি ওই এলাকায় বাসা নিয়েছেন বলে জানান।

মেট্রোরেলের এই অংশের (আগারগাঁও থেকে মতিঝিল) চালু হওয়া নিয়ে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেন সংবাদকর্মী সামছুর রহমান আদিল। তিনি বলেন, ‘জীবনটা যানজটে শেষ হয়ে যায়। রোববার থেকে একটু শান্তি পাব।’ 

আদিল বলেন, মাঝে মাঝে গুলিস্তান ও জাতীয় প্রেসক্লাবের আশপাশে তাঁর অ্যাসাইনমেন্ট থাকে। প্রতিদিন এসব জায়গায় আসতে তাঁর বাসা মিরপুর থেকে দেড় ঘণ্টার বেশি সময় লাগে। তবে এখন থেকে সকালে সেই সময়টা বাঁচবে। তাঁর বাসা থেকে শেওড়াপাড়া স্টেশন ১০ মিনিটের পথ। এরপর মেট্রোরেলে উঠলে ২৫ মিনিটের মধ্যে তিনি মতিঝিল এলাকায় পৌঁছাতে পারবেন। এর চেয়ে বড় চাওয়া ঢাকায় আর কী হতে পারে। 

আদিলের মতো ধীরগতির শহর ঢাকায় বেশির ভাগ মানুষ বিরক্ত থাকে যানজট নিয়ে। এক গবেষণায় দেখা গেছে, প্রতিদিন একজন যাত্রী দুই ঘণ্টার মধ্যে ৪৬ মিনিট যানজটে রাস্তায় পার করেন। 

প্রতিদিন কারওয়ান বাজার যাতায়াত করেন ফারদিন সারোয়ার দিগন্ত। একটি সিএ ফার্মে ইন্টার্ন করা এই শিক্ষার্থী বলেন, যুদ্ধ করে ঢাকায় গন্তব্যে পৌঁছাতে হয়। এখন মাত্র ২৫ মিনিটে চলে আসা যাবে। 

তবে বাসে যাতায়াতে শিক্ষার্থী হিসেবে অর্ধেক ভাড়া দিলেও মেট্রোরেলে এখন পর্যন্ত এমন কোনো পদ্ধতি চালু হয়নি। তাই ভাড়া কমানোর দাবি করেন তিনি।

সংবাদকর্মী আবু মোহাম্মদ মাছানী বলেন, তিনি প্রতিদিন প্রেসক্লাবে আসেন। উত্তরা বা মিরপুর থেকে প্রেসক্লাবে বাসে যেতে সময় লাগে গড়ে ১ ঘণ্টা ৪০ মিনিট, সিএনজিতেও একই রকম। আর মোটরসাইকেলে ৪৫ মিনিটের মতো, তবে ভাড়া অনেক। এখন আর সেই সমস্যা থাকবে না।

ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেডের (ডিটিএমসিএল) ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম এ এন ছিদ্দিক বলেন, শুক্রবার ব্যতীত প্রতিদিন মেট্রোরেল মতিঝিল থেকে উত্তরার মধ্যে সকাল সাড়ে ৭টা থেকে বেলা সাড়ে ১১টা পর্যন্ত চলবে ১০ মিনিট পর পর। মতিঝিল থেকে আগারগাঁওয়ের মধ্যে বাংলাদেশ সচিবালয় এবং ফার্মগেট স্টেশনে ট্রেন থামবে। বেলা সাড়ে ১১টার পর থেকে মতিঝিল পর্যন্ত ট্রেন চলাচল বন্ধ থাকবে। তবে উত্তরা থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত চলবে রাত সাড়ে ৮টা পর্যন্ত। 

মেট্রোরেলের ভাড়া
উত্তরা উত্তর থেকে মতিঝিল পর্যন্ত সর্বোচ্চ ভাড়া ১০০ টাকা। আর আগারগাঁও থেকে মতিঝিল পর্যন্ত ৪০ টাকা। মতিঝিল থেকে উত্তরা সেন্টার ও দক্ষিণ ৯০ টাকা, পল্লবী ৮০ টাকা, মিরপুর-১১ ৭০ টাকা, মিরপুর ১০ ও কাজীপাড়া ৬০ টাকা, শেওড়াপাড়া ও আগারগাঁও ৫০ টাকা, বিজয় সরণি ৪০ টাকা, ফার্মগেট ও কারওয়ান বাজার ৩০ টাকা, শাহবাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও সচিবালয় ২০ টাকা।

অন্যদিকে ফার্মগেট থেকে মতিঝিলের ভাড়া ৩০ টাকা। মিরপুর ১০ নম্বর থেকে ফার্মগেট ৩০ টাকা ও কারওয়ান বাজার স্টেশনে ভাড়া লাগবে ৪০ টাকা। মিরপুর–১০ স্টেশন থেকে শাহবাগ ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাড়া ৫০ টাকা। মিরপুর-১০ থেকে সচিবালয় ও মতিঝিল স্টেশনে যেতে ৬০ টাকা লাগবে। ফার্মগেট স্টেশন থেকে উঠে কারওয়ান বাজারে নামলেও এক স্টেশন থেকে আরেক স্টেশনের সর্বনিম্ন ২০ টাকা ভাড়া দিতে হবে। তবে একই ভাড়া দিয়ে যাওয়া যাবে শাহবাগ ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় স্টেশন পর্যন্ত। আর ফার্মগেট থেকে সচিবালয় ও মতিঝিল স্টেশনের ভাড়া ৩০ টাকা। 

২০১৩ সালে জাইকার সঙ্গে এই প্রকল্পের ঋণচুক্তি করে সরকার। ২০১৬ সালের ২৬ জুন এমআরটি লাইন-৬-এর নির্মাণকাজ উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ২০১৭ সালের ২ আগস্ট উত্তরা থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত ১২ কিলোমিটারের উড়ালপথ ও স্টেশন নির্মাণের আনুষ্ঠানিক শুরু হয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

খালেদা জিয়ার জানাজায় এসে মারা যাওয়া নিরব জনকণ্ঠের সাবেক কর্মী

বাউফল (পটুয়াখালী) প্রতিনিধি 
মো. নিরব হোসেন। ছবি: সংগৃহীত
মো. নিরব হোসেন। ছবি: সংগৃহীত

সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার জানাজায় অংশ নিতে এসে মারা যাওয়া মো. নিরব হোসেন (৫৬) দৈনিক জনকণ্ঠের সাবেক প্রশাসনিক কর্মকর্তা। তাঁর বাড়ি পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলার নাজিরপুর ইউনিয়নের বড় ডালিমা গ্রামে। রাজধানীর বড় মগবাজারে তিনি পরিবারসহ বসবাস করতেন। মৃতের বড় ভাই মো. বাহাদুর হোসেন আজকের পত্রিকাকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

বাহাদুর হোসেন জানান, খালেদা জিয়ার জানাজায় শরিক হতে নিরব হোসেন তাঁর এক বন্ধুকে নিয়ে রাজধানীর জাতীয় সংসদ ভবন এলাকায় যান। জানাজার সময় অতিরিক্ত মানুষের ভিড়ের চাপে তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন। তাৎক্ষণিকভাবে তাঁকে বাঁচানোর চেষ্টা করা হলেও ঘটনাস্থলেই তাঁর মৃত্যু হয়।

জানা গেছে, কর্মজীবনে মো. নিরব হোসেন ১৯৯৮ সাল থেকে পাঁচ বছরের বেশি সময় দৈনিক জনকণ্ঠে প্রশাসনিক কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।

চব্বিশের জুলাইয়ের গণ-অভ্যুত্থানে নিরব হোসেন গুলিবিদ্ধ হয়ে গুরুতর আহত হয়েছিলেন। পরে সরকারিভাবে চিকিৎসার জন্য তাঁকে থাইল্যান্ড পাঠানো হয় এবং চিকিৎসা শেষে সম্প্রতি তিনি দেশে ফিরে এসেছিলেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

‘আমি সই না করলে ইউএনও সই করবে না’—এলজিইডি প্রকৌশলীর ভিডিও ভাইরাল

ফরিদপুর প্রতিনিধি
আপডেট : ৩১ ডিসেম্বর ২০২৫, ২৩: ১১
প্রকৌশলী আব্দুল খালেক । ছবি: সংগৃহীত
প্রকৌশলী আব্দুল খালেক । ছবি: সংগৃহীত

‘আমি সই না করলে ইউএনও (ফাইলে) সই করবে না’—ফরিদপুরের নগরকান্দা উপজেলা স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগের (এলজিইডি) প্রকৌশলী আব্দুল খালেকের কথোপকথনের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। ভিডিওতে চাহিদামতো ঘুষের টাকা না পেয়ে ওই প্রকৌশলীকে অজ্ঞাতনামা ব্যক্তির (ঠিকাদার প্রতিনিধি) সঙ্গে এমন কথা বলতে শোনা গেছে।

৩১ সেকেন্ডের ভিডিওটি গোপনে তাঁর কার্যালয় থেকে ধারণ করা। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ভিডিওটি প্রথম পোস্ট করা হয় স্থানীয় সাংবাদিক নিজাম নকিবের ‘নগদ খবর’ নামের ফেসবুক আইডি থেকে।

জানতে চাইলে নিজাম নকিব জানান, গত মঙ্গলবার এক ব্যক্তি তাঁকে ভিডিওটি পাঠিয়েছেন এবং এটি আজকে ধারণ করা বলে জানান তিনি। তবে ওই ব্যক্তি নিজের নাম ইমতিয়াজ আসিফ বললেও অন্য পরিচয় গোপন রাখেন।

ভিডিওতে অজ্ঞাতনামা ব্যক্তির (ঠিকাদার প্রতিনিধি) সঙ্গে কথা বলার আগে কাজের বিলের ফাইল স্বাক্ষর করার সময় ৪৫ হাজার টাকা নেওয়ার বিষয়টিও উঠে আসে। এ ছাড়া নতুন করে আরও পাঁচ হাজার টাকা না দেওয়ায় গড়িমসি করতে থাকেন ওই প্রকৌশলী। একপর্যায়ে তাঁকে অজ্ঞাতনামা ব্যক্তির কাছ থেকে টাকা নিয়ে পকেটে রাখতে দেখা যায়।

নগরকান্দা এলজিইডি প্রকৌশলী। ছবি: ভিডিও থেকে নেওয়া
নগরকান্দা এলজিইডি প্রকৌশলী। ছবি: ভিডিও থেকে নেওয়া

এ সময় অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিকে বলতে শোনা যায়, ‘স্যার, রাখেন এইটা স্যার, বিলের ফাইল ছাড়ার সময় ৪৫ হাজার টাকা নিলেনই আপনি আমার কাছ থেকে। রাখেন স্যার, তিন হাজার টাকা রাখেন, পাঁচ হাজার টাকা নাই।’

পরে প্রকৌশলী আব্দুল খালেক বলেন, ‘আমি সই করব, তারপর ইউএনও সই করবে। আমি সই না করলে ইউএনও (ফাইলে) সই করবে না।’

ভিডিওটির বিষয়ে জানতে চাইলে প্রকৌশলী আব্দুল খালেক মোবাইল ফোনে আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘এক বদমাশ ভিডিওটি করেছে। আমি তাকে চিনিও না, জানিও না। আন্দাজে কী কয় কী হয়, যা পারে করুক। এগুলো নিয়ে এখন আর কিছু বলার নেই।’

এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মেহরাজ শারবীন বলেন, ‘ভিডিওটি পূর্বের, আমি দেখেছি। এ ছাড়া আমি নতুন এসেছি। এসব বিষয়ে তাদের ডিপার্টমেন্ট (এলজিইডি) থেকে লিখিত অভিযোগ দিলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

আনোয়ারায় সড়কের পাশ থেকে উদ্ধার দুই শিশুর পরিচয় মিলেছে, বাবা-মায়ের বিরুদ্ধে মামলা

কর্ণফুলী (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি 
আনোয়ারায় দুই শিশুকে উদ্ধার করা হয়। ছবি: আজকের পত্রিকা
আনোয়ারায় দুই শিশুকে উদ্ধার করা হয়। ছবি: আজকের পত্রিকা

চট্টগ্রামের আনোয়ারায় কনকনে শীতের মধ্যে সড়কের পাশ থেকে উদ্ধার হওয়া দুই শিশুর পরিচয় শনাক্ত হয়েছে। তাদের বাড়ি খাগড়াছড়ি জেলার মানিকছড়ি উপজেলায়। আজ বুধবার দুপুরে খোরশেদ আলম নামের এক ব্যক্তি নিজেকে ওই শিশুদের বাবা দাবি করে আনোয়ারার ইউএনও ও থানার ওসির সঙ্গে দেখা করেন। এ ছাড়া আদালতের নির্দেশে দুই শিশুর বাবা ও মায়ের বিরুদ্ধে মামলা করেছে প্রশাসন।

এর আগে গত রোববার সন্ধ্যায় আনোয়ারা উপজেলার বারখাইন ইউনিয়নের মাজারগেট এলাকা থেকে আয়শা (৪) ও মোরশেদ (২) নামের শিশু দুটিকে উদ্ধার করে নিজের হেফাজতে রাখেন সিএনজিচালিত অটোরিকশাচালক মহিম উদ্দিন। গত সোমবার সারা দিন আনোয়ারা থানা ও উপজেলা প্রশাসন ওই শিশুদের পরিবার ও অভিভাবকদের তথ্য পেতে চেষ্টা করে। গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে ওই দুই শিশুকে নিয়ে চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসকের কাছে যান আনোয়ারা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) তাহমিনা আক্তার। জেলা প্রশাসক তাদের চিকিৎসা ও যাবতীয় খরচের দায়িত্ব নেন। পরে দুই শিশুর মধ্যে আয়শাকে সিএনজিচালিত অটোরিকশাচালকের জিম্মায় তুলে দেওয়া হয়। গুরুতর অসুস্থ মোরশেদকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

আজ দুপুরে প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগ করেন শিশুদের বাবা খোরশেদ। বর্তমানে তিনি পুলিশের হেফাজতে আছেন বলে নিশ্চিত করেছেন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জুনায়েদ চৌধুরী।

পুলিশের হেফাজতে থাকা খোরশেদ আলমের বরাতে পুলিশ জানায়, খোরশেদ পেশায় একজন অটোরিকশাচালক। পাশাপাশি বাঁশখালীর একটি ভাঙারির দোকানেও কাজ করেন। খাগড়াছড়ি জেলার মানিকছড়ি উপজেলার মহামনি এলাকায় তাঁর বাড়ি। স্ত্রী-সন্তান নিয়ে বাঁশখালীর মিয়ার বাজার লস্করপাড়া এলাকায় ভাড়া বাসায় থাকেন। তাঁর স্ত্রীর বাড়ি সাতকানিয়া। ৫-৬ মাস আগে তাঁর স্ত্রী দুই সন্তানকে নিয়ে ঘর থেকে পালিয়ে যান। স্ত্রী তাঁর ছোট প্রতিবন্ধী শিশুটিকে দিয়ে ভিক্ষা করাতেন। এটা নিয়েও স্বামী-স্ত্রীর একাধিকবার ঝগড়া হয়েছিল।

এদিকে বিভিন্ন গণমাধ্যমে শিশু দুটিকে নিয়ে সংবাদ প্রকাশিত হলে বিষয়টি আমলে নিয়ে আজ চট্টগ্রামের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. শাখাওয়াত হোসেন আনোয়ারা থানাকে মামলা নেওয়ার নির্দেশ দেন। একই সঙ্গে আনোয়ারা থানার শিশুবিষয়ক পুলিশ কর্মকর্তা শিশু আইন-২০১৩-এর বিধান অনুযায়ী কী ব্যবস্থা নিয়েছেন, সে সম্পর্কে ৫ জানুয়ারির মধ্যে লিখিত প্রতিবেদন দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়।

আদালতের আদেশ পাওয়ার কথা স্বীকার করে আনোয়ারা থানার ওসি মো. জুনায়েত চৌধুরী বলেন, ‘আমরা শিশুদের বাবার খোঁজ পেয়েছি। বিস্তারিত জানার পর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’ তিনি বলেন, ‘আদালত জানতে চেয়েছেন শিশুদের ব্যাপারে আমরা কী কী পদক্ষেপ নিয়েছি।’

ইউএনও তাহমিনা আক্তার বলেন, সড়কের পাশে পাওয়া দুই শিশুর দায়িত্ব নিয়েছেন জেলা প্রশাসক। তাদের একজনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয় এবং বড় শিশুকে আশ্রয়দানকারী মহিম উদ্দিনের হেফাজতে রাখা হয়। তিনি বলেন, আদালতের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মামলা নেওয়ার নির্দেশ দেন এবং প্রশাসন স্বামী-স্ত্রী দুজনের বিরুদ্ধে মামলা করছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

জামায়াত প্রার্থী মাসুদের বাড়ি নেই, পেশা ব্যবসা ও পরামর্শক

পটুয়াখালী প্রতিনিধি
ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদ। ছবি: সংগৃহীত
ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদ। ছবি: সংগৃহীত

পটুয়াখালী-২ (বাউফল) আসনে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দাঁড়িপাল্লা প্রতীকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করা জামায়াতে ইসলামী বাংলাদেশের প্রার্থী ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সেক্রেটারি জেনারেল ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদের কোনো বাড়ি বা অ্যাপার্টমেন্ট নেই। পেশায় তিনি একজন ব্যবসায়ী ও পরামর্শক। বছরে আয় ১০ লাখ ১২ হাজার ৮৩০ টাকা।

নির্বাচনী হলফনামা বিশ্লেষণ করে এ তথ্য পাওয়া গেছে।

হলফনামা অনুযায়ী, ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদের মোট সম্পদের পরিমাণ ৪৪ লাখ ৭৭ হাজার ৯৬৪ টাকা। তাঁর বার্ষিক আয় ১০ লাখ ১২ হাজার ৮৩০ টাকা। এর বিপরীতে তিনি ৪৫ হাজার ৪২৫ টাকা আয়কর পরিশোধ করেছেন।

হলফনামায় উল্লেখ করা হয়েছে, তাঁর হাতে নগদ রয়েছে ৪৩ হাজার ২৫০ টাকা। ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেডে তাঁর জমা রয়েছে ১৬ লাখ ২৫ হাজার ২৯৩ টাকা। পেশা হিসেবে তিনি নিজেকে পরামর্শক উল্লেখ করেছেন।

এ ছাড়া বন্ড, ঋণপত্র এবং শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত ও তালিকাভুক্ত নয় এমন বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে তাঁর ৩ লাখ ৫ হাজার টাকার শেয়ার রয়েছে।

হলফনামায় আরও বলা হয়েছে, ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদের নামে কোনো জমি, বাড়ি কিংবা অ্যাপার্টমেন্ট নেই। তবে তাঁর পরিবারের মোট ঋণের পরিমাণ ৪ লাখ ৫০ হাজার টাকা।

তাঁর স্ত্রী পেশায় একজন চিকিৎসক। সর্বশেষ আয়কর বিবরণী অনুযায়ী, তাঁর স্ত্রীর বার্ষিক আয় ৬ লাখ ৪১ হাজার ৮৭৫ টাকা এবং মোট সম্পদের পরিমাণ ১২ লাখ ২৩ হাজার ৪৪৩ টাকা।

ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদের মালিকানায় রয়েছে ১ লাখ ৩৮ হাজার টাকার বৈদ্যুতিকসামগ্রী এবং ১ লাখ ৪৫ হাজার টাকার আসবাবপত্র। তবে তাঁর বা তাঁর পরিবারের নামে কোনো যানবাহন বা ব্যক্তিগত গাড়ি নেই।

হলফনামা অনুযায়ী, তাঁর আয়ের প্রধান উৎস ব্যবসা ও পরামর্শক পেশা। ব্যবসা থেকে তাঁর বার্ষিক আয় ৫ লাখ ২ হাজার ৮৩০ টাকা এবং পরামর্শক পেশা থেকে আয় ৪ লাখ ৮০ হাজার টাকা। এ ছাড়া অন্যান্য খাত থেকে তাঁর আয় রয়েছে ৩০ হাজার টাকা।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত