Ajker Patrika

মেট্রোরেল এ বছর কমলাপুর যাচ্ছে না

  • মতিঝিল-কমলাপুর অংশের কাজ ডিসেম্বরে শেষ হচ্ছে না।
  • ফেব্রুয়ারির প্রতিবেদন অনুযায়ী, কাজ হয়েছে ৫০ শতাংশ।
  • ইলেকট্রোমেকানিক্যাল কাজের ঠিকাদার নিয়োগে জটিলতা।
তৌফিকুল ইসলাম, ঢাকা 
ফাইল ছবি
ফাইল ছবি

মেট্রোরেলের মতিঝিল থেকে কমলাপুর পর্যন্ত বর্ধিত অংশের নির্মাণকাজ চলতি বছরে শেষ হচ্ছে না। ইলেকট্রোমেকানিক্যাল কাজের ঠিকাদার নিয়োগ নিয়ে জটিলতাই এর কারণ। ফলে বাড়ছে প্রকল্পের মেয়াদ।

বর্তমানে উত্তরা উত্তর স্টেশন থেকে মতিঝিল পর্যন্ত মেট্রোরেল চলছে। কাজ চলছে মতিঝিল থেকে কমলাপুর অংশের। চলতি বছরের ডিসেম্বরের মধ্যে এই অংশের কাজ শেষে কমলাপুর স্টেশন পর্যন্ত মেট্রোরেল চলার কথা থাকলেও তা হচ্ছে না। যাত্রীদের অপেক্ষা বাড়ছে।

মতিঝিল থেকে কমলাপুর পর্যন্ত অংশের কাজ হচ্ছে দুটি প্যাকেজে। একটি সিভিল ওয়ার্ক বা অবকাঠামো নির্মাণকাজ, অন্যটি ইলেকট্রোমেকানিক্যাল বা অপারেশনসংশ্লিষ্ট সংকেত ব্যবস্থাসহ অন্যান্য টেকনিক্যাল কাজ।

জানতে চাইলে মেট্রোরেল পরিচালনাকারী কর্তৃপক্ষ ঢাকা ম্যাস র‍্যাপিড ট্রানজিট ডেভেলপমেন্ট প্রজেক্টের (এমআরটি লাইন-৬) প্রকল্প পরিচালক (অতিরিক্ত সচিব) মো. জাকারিয়া বলেন, ‘এ বছর কাজ শেষ হওয়ার সুযোগ নেই। বেশ কিছু জটিলতা ছিল। এই অংশে ইউটিলিটি রিলোকেশন করতেই এক বছর চলে গেছে। এ ছাড়া ইলেকট্রোমেকানিক্যাল কাজের জন্য ঠিকাদারের সঙ্গে চুক্তি এখনো হয়নি। ফলে কাজ শেষ করতে আরও সময় লাগবে। আমরা ধারণা করছি, কাজ শেষ করতে ২০২৬ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত সময় লাগবে। সে অনুযায়ী মেয়াদ বাড়ানোর বিষয়ে মন্ত্রণালয়কে অবহিত করেছি।’

প্রকল্প এলাকা ঘুরে দেখা যায়, মতিঝিল থেকে কমলাপুর স্টেশন পর্যন্ত ১ দশমিক ১৬ কিলোমিটার বর্ধিত করার কাজ পুরোদমে চলছে। পিলার উঠে গেছে। তবে ভায়াডাক্ট বসানো এখনো শুরু হয়নি। কমলাপুর মেট্রোস্টেশনের নির্মাণকাজ অনেক এগিয়ে গেছে। সব মিলিয়ে এ প্রকল্পের নির্মাণকাজের অগ্রগতি প্রায় ৫০ শতাংশ।

গত ফেব্রুয়ারির অগ্রগতি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ১৭৭টি পাইলের মধ্যে সব পাইল, ৬১টি পাইলক্যাপের মধ্যে ৫৯টি, ৩৯টি পিয়ারের মধ্যে ৩৭টি এবং ৩০টি স্টেশন কলামের মধ্যে সব স্টেশন কলাম নির্মাণ শেষ হয়েছে। ২৭টি স্প্যানের মধ্যে পাঁচটি উত্তোলন শেষ হয়েছে। স্টেশনের ১৮০ মিটার দৈর্ঘ্যের কনকোর্স ছাদের মধ্যে ১৮০ মিটার এবং ১৮০ মিটার ট্র্যাক স্ল্যাবের মধ্যে ৪৫ মিটার ট্র্যাক স্ল্যাব ঢালাই শেষ হয়েছে। ৮২৪টি প্রিকাস্ট প্যারাপেট ওয়ালের মধ্যে ৭৩৯টি তৈরি হয়েছে।

উত্তরা থেকে মতিঝিল পর্যন্ত মেট্রোরেলের দৈর্ঘ্য প্রায় ২০ কিলোমিটার। কমলাপুর যুক্ত হওয়ায় দৈর্ঘ্য বেড়ে হয়েছে ২১ কিলোমিটারের কিছু বেশি। কমলাপুরসহ স্টেশন হবে ১৭টি। এসব বাড়তি কাজ বাস্তবায়নসহ নানা খাতের কারণে প্রকল্পের ব্যয় বেড়েছে ১১ হাজার ৪৮৬ কোটি ৯২ লাখ টাকা। উত্তরা থেকে মতিঝিল পর্যন্ত প্রকল্পটির মূল অনুমোদিত ব্যয় ছিল ২১ হাজার ৯৮৫ কোটি টাকা। কমলাপুর যুক্ত করায় বেড়ে যাওয়া ব্যয়ের মধ্যে সরকার দিচ্ছে ৮ হাজার ৪০৫ কোটি ৮১ লাখ টাকা এবং জাইকার ঋণ থেকে ব্যয় হচ্ছে ৩ হাজার ৮১ কোটি ১১ লাখ টাকা। সময়মতো কাজ শেষ না হওয়ায় এ ব্যয় বাড়ার আশঙ্কা রয়েছে।

এ দিকে কমলাপুর অংশের ইলেকট্রোমেকানিক্যাল কাজের জন্য বৈদ্যুতিক ব্যবস্থা, লিফট, এসকালেটর, ট্রেনের দরজার সঙ্গে মিলিয়ে দরজা খোলার গেট, মনিটর, সিসি ক্যামেরা, সিগন্যাল টেলিকমিউনিকেশনসহ টেকনিক্যাল কাজের ঠিকাদার নিয়োগ নিয়ে জটিলতা সৃষ্টি হয়েছে। প্রকল্পের কর্মকর্তারা জানান, এই প্রকল্পে অর্থায়ন করছে জাপান ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন এজেন্সি (জাইকা)। জাইকার সঙ্গে করা চুক্তি অনুযায়ী, তাদের ঠিকাদার দিয়েই এ কাজ করাতে হবে। কিন্তু ঠিকাদার এ কাজের জন্য যে দর প্রস্তাব দিয়েছেন তা ডিএমটিসিএলের প্রাক্কলিত দরের প্রায় দ্বিগুণ। সে ক্ষেত্রে সরকার এত টাকা দিয়ে কাজ করবে কি না, তা নিয়ে জটিলতা সৃষ্টি হয়েছে।

যোগাযোগ বিশেষজ্ঞ ও বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) পুরকৌশল বিভাগের অধ্যাপক মো. হাদিউজ্জামান বলেন, নির্ধারিত সময়ে কাজ শেষ না করা এবং মেয়াদ বাড়ানোর সংস্কৃতি থেকে বের হয়ে না আসতে পারলে প্রকল্পের যে সুফল পাওয়ার কথা ছিল, তা মানুষ পাবে না। এতে করে প্রকল্পের উপযোগিতা কমে যাবে।

মেট্রোরেলের উত্তরা উত্তর থেকে আগারগাঁও অংশ ২০২২ সালের ২৮ ডিসেম্বর এবং আগারগাঁও থেকে মতিঝিল পর্যন্ত অংশ ২০২৩ সালের ৪ নভেম্বর চালু হয়। ইতিমধ্যে মেট্রোরেল দিয়ে এক দিনে সর্বোচ্চ ৪ লক্ষাধিক যাত্রী যাতায়াত করেছেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

শেখ হাসিনাকে ফেরত পাঠানোর ব্যাপারে এখনো ইতিবাচক সাড়া দেয়নি ভারত: পররাষ্ট্র উপদেষ্টা

রংপুর প্রতিনিধি
রংপুরে সার্কিট হাউসে সাংবাদিকের সঙ্গে কথা বলেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন। ছবি: আজকের পত্রিকা
রংপুরে সার্কিট হাউসে সাংবাদিকের সঙ্গে কথা বলেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন। ছবি: আজকের পত্রিকা

পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন বলেছেন, শেখ হাসিনাকে দেশে ফেরত দেয়ার ব্যাপারে ভারত এখনও ইতিবাচক সাড়া দেয়নি। ট্রাইব্যুনালের রায় নিয়ে তারা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করছে, আমরাও তাদের প্রতিক্রিয়ার অপেক্ষায় আছি। আজ শুক্রবার (৫ ডিসেম্বর) সকালে রংপুর সার্কিট হাউসে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এসব কথা বলেন তিনি। রংপুর অঞ্চলে চার দিনের সফরে এসেছেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা।

পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ‘আমরা তো চেয়েছি যে তাকে (শেখ হাসিনাকে) ফেরত পাঠানো হোক। যেহেতু উনি একজন কনভিক্টেড, যেহেতু সর্বোচ্চ বিচারিক সংস্থা তাকে একটি শাস্তি দিয়েছে। কিন্তু আমরা ইতিবাচক কোনো সাড়া এখন পর্যন্ত পাইনি। এটা নিয়ে আমার মনে হয় স্পেকুলেট না করাই ভালো। দেখা যাক কী হয়। আমরা তো চেয়েছি খুব, এ ধরনের ঘটনায় তো ঝট করে একদিনে সাত দিনে কোনো পরিবর্তন ঘটে না। আমরা অপেক্ষা করব, দেখি, ভারতের পক্ষ থেকে কি আসছে রিঅ্যাকশন।’

তৌহিদ হোসেন বলেন, একটা রিঅ্যাকশন আমরা দেখেছি যেটা, সেটা হলো তারা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে দেখছে, এরকম একটা কথা আসছে আমাদের। দেখুক তারা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে।

বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের দেশে ফেরার বিষয়ে পররাষ্ট্র দপ্তরে কোনো তথ্য নেই বলে উল্লেখ করে উপদেষ্টা বলেন, "তারেক সাহেব কখন আসবেন এই সম্বন্ধে আমার কাছে কোনো তথ্য নেই। উনার স্ত্রী সম্ভবত আসছেন বা পৌঁছে গেছেন হয়তো ইতিমধ্যে। আজকে সকালে পৌঁছার কথা ছিল। বেগম জিয়াকে আজকে নেওয়া হচ্ছে না, আমি ঢাকা থেকে আজকে সকালে জানলাম যে, আজকে নেওয়া হচ্ছে না। একটু টেকনিক্যাল প্রবলেম দেখা দিয়েছে ওই এয়ারক্রাফট নিয়ে। সেক্ষেত্রে হয়তো এক-আধ দিন দেরি হতে পারে। "

আরাকান আর্মি বাংলাদেশিদের ধরে নিয়ে যাওয়া প্রসঙ্গে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, "আরাকান আর্মির সাথে আমাদের দ্বিপাক্ষিক আলোচনা সম্ভব নয়। তারা একটা নন-স্টেট অ্যাক্টর। আমরা স্টেট হিসেবে দ্বিপাক্ষিক আলোচনা যেমন মিয়ানমারের কর্তৃপক্ষ, থাইল্যান্ড বা ভারতের সাথে করতে পারি সেটা তাদের সাথে করতে পারি না। তবে আমাদের স্বার্থ যেহেতু আছে, আমাদের দেখতে হবে। এই ঘটনা যাতে কমে বা আদৌ না ঘটে, এটার জন্য পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে। "

এছাড়াও নীলফামারীতে প্রস্তাবিত চীনা হাসপাতালের কার্যক্রম অন্তর্বর্তী সরকার দ্রুত শুরু করে যেতে চায় বলেও জানান পররাষ্ট্র উপদেষ্টা। একই সঙ্গে নির্বাচিত সরকার এলে এই কাজ সমাপ্ত করবে বলেও আশা তার। এ সময় পিছিয়ে পড়া রংপুরের প্রত্নতাত্ত্বিকসহ সবক্ষেত্রে নেয়ার ব্যাপারে ইতিবাচক সরকারের সদিচ্ছার কথা জানান তৌহিদ হোসেন।

এরপর পররাষ্ট্র উপদেষ্টা সপরিবারে রংপুর জমিদার বাড়ি তাজহাটে পরিদর্শনে যান। এছাড়াও বিকেলে রংপুর সার্কিট হাউসে চা-চক্রের কথা রয়েছে তৌহিদ হোসেনের। আগামীকাল রংপুরের প্রশাসনিক কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময় এবং রংপুরের ঐতিহ্যবাহী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান জিলা স্কুল পরিদর্শন করার কথাও রয়েছে তার।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

হাতিয়ায় ৫৬০০ কেজি জাটকা ইলিশ জব্দ, এতিমখানায় বিতরণ

­হাতিয়া (নোয়াখালী) প্রতিনিধি
কোস্ট গার্ডের অভিযানে জব্দ জাটকা ইলিশ। ছবি: আজকের পত্রিকা
কোস্ট গার্ডের অভিযানে জব্দ জাটকা ইলিশ। ছবি: আজকের পত্রিকা

নোয়াখালীর হাতিয়ার জাগলার চর এলাকার মেঘনা নদীতে অভিযান চালিয়েছে কোস্ট গার্ড। এ সময় একটি নৌকা থেকে ৫ হাজার ৬০০ কেজি জাটকা ইলিশ জব্দ করা হয়। এই ঘটনায় আটক কয়েকজন মাঝিমাল্লার কাছ থেকে মুচলেকা নিয়ে তাঁদের ছেড়ে দেওয়া হয়।

গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে কোস্ট গার্ড হাতিয়ার একটি দল এই অভিযান চালায়। জব্দ করা জাটকাগুলোর মূল্য প্রায় ২৮ লাখ টাকা।

কোস্ট গার্ড মিডিয়া কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট মো. আবুল কাশেম জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে মেঘনা নদীর বিভিন্ন এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে কোস্ট গার্ড। অভিযানে মেঘনা নদীর জাগলার চর এলাকায় একটি কাঠের নৌকায় তল্লাশি করা হয়। ওই নৌকা থেকে ৫ হাজার ৬০০ কেজি জাটকা জব্দ করা হয়। এ সময় মাঝিদের মুচলেকা নিয়ে নৌকা ছেড়ে দেওয়া হয়। জব্দ মাছগুলো মৎস্য কর্মকর্তাসহ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের উপস্থিতিতে এতিমখানা ও দুস্থ ব্যক্তিদের মধ্যে বিতরণ করা হয়েছে। মৎস্য সম্পদ রক্ষায় কোস্ট গার্ডের এ ধরনের অভিযান অব্যাহত থাকবে বলে জানান এই কর্মকর্তা।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

মাঠে পড়ে ছিল মাছ ব্যবসায়ীর রক্তাক্ত লাশ

ফরিদপুর প্রতিনিধি
ঘটনাস্থলে স্থানীয় বাসিন্দারা জড়ো হন। ছবি: আজকের পত্রিকা
ঘটনাস্থলে স্থানীয় বাসিন্দারা জড়ো হন। ছবি: আজকের পত্রিকা

ফরিদপুরের সালথায় উৎপল সরকার (৩৫) নামের এক মাছ ব্যবসায়ীর রক্তাক্ত লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। আজ শুক্রবার সকালে উপজেলার আটঘর ইউনিয়নের গৌরদিয়া এলাকার কালীতলা ব্রিজ-সংলগ্ন মাঠ থেকে লাশটি উদ্ধার করে পুলিশ। এই ঘটনায় মাঠ-সংলগ্ন সেতু থেকে চোখ বাঁধা অবস্থায় থাকা ফিরোজ মোল্যা নামের এক ভ্যানচালককে জীবিত উদ্ধার করে স্থানীয় লোকজন।

নিহত উৎপল ফরিদপুর জেলা সদরের কানাইপুর ইউনিয়নের রনকাইল গ্রামের অজয় সরকারের ছেলে। তাঁর স্ত্রী ও আড়াই বছর বয়সী এক শিশুসন্তান রয়েছে।

থানা-পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, আজ ভোরে সড়কের পাশে ফাঁকা মাঠে রক্তাক্ত অবস্থায় একটি লাশ দেখতে পায় স্থানীয় লোকজন। পাশেই একটি সেতুর সঙ্গে একই গ্রামের ভ্যানচালক ফিরোজ মোল্যাকে চোখ বাঁধা অবস্থায় বেঁধে রাখা হয়েছিল। পরে স্থানীয় বাসিন্দাদের হত্যাকাণ্ডের বিষয়টি খুলে বলেন তিনি।

ভ্যানচালকের বরাত দিয়ে রনকাইল গ্রামের বাসিন্দা ও প্রতিবেশী কাজী শাহীন বলেন, উৎপল সরকার ব্যাটারিচালিত ভ্যানে করে গোপালগঞ্জের মুকসুদপুরে মাছ কিনতে যাচ্ছিলেন। পথে অজ্ঞাতপরিচয় তিন-চার ব্যক্তি দেশীয় অস্ত্রের মুখে ভ্যানচালক ফিরোজ মোল্যাকে গামছা দিয়ে চোখ বেঁধে ব্রিজের রেলিংয়ে বেঁধে ফেলে। তারা উৎপলের সঙ্গে থাকা টাকাপয়সা লুট করে তাঁকে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে হত্যা করে পালিয়ে যায়।

বিষয়টি নিশ্চিত করে সালথা থানার পরিদর্শক (তদন্ত) কে এম মারুফ হাসান রাসেল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘দুই থেকে তিনজন দুর্বৃত্ত ঘটনাটি ঘটিয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে জানা গেছে। তবে এটাকে ডাকাতি বলা যায় না। ঘটনাটি নিয়ে তদন্ত চলমান। তদন্ত শেষে মূল কারণ বলা যাবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

বাসার দরজা ভেঙে চবি শিক্ষার্থীর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার

চবি প্রতিনিধি 
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) ওমর ফারুক সুমন নামের এক শিক্ষার্থীর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার (৪ ডিসেম্বর) রাতে চট্টগ্রাম নগরীর খুলশী এলাকার একটি বাসা থেকে লাশটি উদ্ধার করে পুলিশ।

ওমর ফারুক বিশ্ববিদ্যালয়ের আরবি বিভাগের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন।

স্থানীয় ও পরিবারের সদস্যরা জানান, সুমন খুলশীতে তাঁর মামার বাসায় থাকতেন। তাঁর বড় ভাইও সেখানে থাকেন। দুই দিন আগে সুমনের মামা পুরো পরিবার নিয়ে তুরস্কে বেড়াতে যান। বাসায় সুমন ও তাঁর বড় ভাই ছিলেন। গতকাল বিকেল ৪টার দিকে ভাইয়ের সঙ্গে ফোনে কথা বলেন সুমন। ফোনে তাঁর বড় ভাই কখন বাসায় ফিরবেন জানতে চান সুমন। বড় ভাই জানান যে তাঁর আসতে একটু দেরি হবে। এর কিছুক্ষণ পর বড় ভাই সুমনকে ফোন করলে তিনি আর ফোন রিসিভ করেননি। পরে বাড়ি থেকে সুমনের মা ফোন দিয়ে যোগাযোগ করতে না পেরে বিষয়টি বড় ভাইকে জানান। এতে উদ্বেগ দেখা দিলে বড় ভাই বিল্ডিংয়ের দারোয়ানকে দিয়ে বাসা চেক করান।

দারোয়ান কলিংবেল বাজিয়েও কোনো সাড়া না পেয়ে বড় ভাইকে জানালে তিনি দ্রুত বাসায় এসে সুমনকে ঝুলন্ত অবস্থায় দেখতে পান। খবর পেয়ে পুলিশ এসে লাশ উদ্ধার করে। ঘটনাস্থলে চিরকুট মিলেছে। এতে লেখা রয়েছে, ‘আমি সুমন, ওমর ফারুক সুমন। আমার কোনো আশা-আকাঙ্ক্ষা নেই। আর আমার কারও প্রতি কোনো অভিযোগ নেই। সবাই ভালো থাকবেন।’ এর আগে ১ ডিসেম্বর লেখা আরেকটি চিরকুট পাওয়া যায়। সেখানে লেখা ছিল—‘আশাই জীবন, আশাই মরণ, ব্যর্থতা হতাশা-অন্ধকারে নিয়ে যায়।’

খুলশী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহীনুর জামান বলেন, ‘সুমন ও তাঁর বড় ভাই একসঙ্গে মামার বাসায় থাকতেন। মামা ও মামি বর্তমানে বিদেশে আছেন। বড় ভাই সন্ধ্যায় বাইরে যান। সে সময় সুমন বাসায় একা ছিলেন। বড় ভাই বাসায় ফিরে এসে বারবার ডাকলেও ফ্ল্যাটের ভেতর থেকে কোনো সাড়া পাননি। পরে দরজা ভেঙে ভেতরে ঢুকলে সুমনের মরদেহ ঝুলন্ত অবস্থায় পাওয়া যায়। প্রাথমিক তদন্তে এটি আত্মহত্যা মনে হলেও আমরা সব সম্ভাব্য কারণ খতিয়ে দেখছি। ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহটি চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত