Ajker Patrika

পুলিশের অনুষ্ঠানে জবি ছাত্রশিবিরের সেক্রেটারিকে ‘ছাত্রলীগ’ বলল সোহরাওয়ার্দী কলেজ ছাত্রদল

জবি প্রতিনিধি 
আপডেট : ২৬ জানুয়ারি ২০২৫, ২১: ১৪
জবি ছাত্রশিবিরের সাধারণ সম্পাদক রিয়াজুল ইসলামকে (বাঁমে) ছাত্রলীগের সঙ্গে জড়িত বলে অভিযোগ করেছেন সোহরাওয়ার্দী কলেজ ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক জসিম উদ্দিন। ছবি: আজকের পত্রিকা
জবি ছাত্রশিবিরের সাধারণ সম্পাদক রিয়াজুল ইসলামকে (বাঁমে) ছাত্রলীগের সঙ্গে জড়িত বলে অভিযোগ করেছেন সোহরাওয়ার্দী কলেজ ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক জসিম উদ্দিন। ছবি: আজকের পত্রিকা

রাজধানীর সূত্রাপুর থানায় এক অনুষ্ঠানে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় (জবি) ছাত্রশিবিরের সাধারণ সম্পাদক রিয়াজুল ইসলামকে নিষিদ্ধ ছাত্র সংগঠন ছাত্রলীগের সঙ্গে জড়িত অভিযোগে জেরা করেছে সোহরাওয়ার্দী কলেজ ছাত্রদলের নেতা-কর্মীরা। এ সময় সেখানে হট্টগোল সৃষ্টি হয়। পরবর্তীতে পুলিশের মধ্যস্থতায় বিষয়টির মীমাংসা হয়।

আজ শনিবার সূত্রাপুর থানায় স্থানীয় নাগরিকদের নিয়ে পুলিশের আয়োজিত এক সভায় এ ঘটনা ঘটে।

জানা যায়, পুলিশ আয়োজিত নাগরিক সভায় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রশিবিরের সেক্রেটারি রিয়াজুল ইসলাম ও সোহরাওয়ার্দী কলেজ ছাত্রদলের সভাপতি জসিম উদ্দিন উপস্থিত ছিলেন। সভায় রিয়াজুলের একটি ছবি দেখিয়ে তাঁকে ছাত্রলীগ করে দাবি করা হয়। এক পর্যায়ে হট্টগোল সৃষ্টি হলে পুলিশ রিয়াজুলকে ওসির অফিসে বসতে বলে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করার চেষ্টা করেন। পরবর্তীতে ছাত্রশিবির ও কলেজ ছাত্রদলের নেতা-কর্মীরা থানায় আসতে শুরু করলে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়। তবে শেষ পর্যন্ত পুলিশ তাঁদের মীমাংসা করে দেয়।

মীমাংসা শেষে সাংবাদিকদের সামনে জবি শিবিরের সাধারণ সম্পাদক ঘটনার বর্ণনা দিয়ে বলেন, ‘সূত্রাপুর কমিউনিটি সেন্টারে আমরা সোহরাওয়ার্দী কলেজ ছাত্রদলের নেতাদের সঙ্গে মিটিং করেছি। তাঁদের সঙ্গে আমার পরিচয় আগে থেকেই ছিল। আজ মিটিংয়ের শেষের দিকে ৫টা ২০ মিনিটের দিকে জসিমসহ ৩ জন আমার দিকে হামলার উদ্দেশ্যে এগিয়ে আসে। আর পেছনে ১৫-২০ জন চেয়ার ভাঙা শুরু করে। সে সময় আমাকে পুলিশের একটি টিম ব্যারিকেড দিয়ে রক্ষা করে।

জবি শিবির নেতা আরও বলেন, ‘হামলার চেষ্টা উদ্দেশ্যপ্রণোদিত হতে পারে। কারণ তাদের সঙ্গে আমার আগেও মিটিংয়ে সাক্ষাৎ ছিল। আমি জবি ছাত্রদলের নেতাদের সঙ্গে কথা বলেছি, কিন্তু জবি ছাত্রদলের সঙ্গে কথা না বলেই আমার ওপর হামলার চেষ্টা করে। এই সমস্যার পর আমরা এখানে থানায় মিটমাট করার চেষ্টা করেছি। যখন তারা এই সিচুয়েশন তৈরি করেছিল তখন আমরা পিনপতন নীরবতা পালন করেছি। কারণ তখন আমরা কথা-কাটাকাটি করলে পরিস্থিতি খারাপ হতে পারত।’

তিনি বলেন, ‘যদিও এটা উদ্দেশ্যপ্রণোদিত হতে পারে, তবে আমরা এটাকে ভুল বোঝাবুঝি হিসেবে দেখছি।’

হট্টগোলের সূত্রপাত হওয়া ছবির বিষয়ে রিয়াজুল ইসলাম বলেন, ‘আমি জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় আবৃত্তি সংসদের সাধারণ সম্পাদক ছিলাম এবং বিভিন্ন সংগঠনের দায়িত্ব পালন করেছি। ফেব্রুয়ারিতে ‘একুশের চেতনা’ আয়োজনে ছাত্রলীগের নাম না থাকায় আমাদের গণিত বিভাগের একটি রুমে ৩ ঘণ্টা আটকিয়ে রাখে। পরবর্তীতে মার্চ মাসের আরেকটি বড় প্রোগ্রামে ছাত্রলীগকে দাওয়াত না দিয়ে প্রোগ্রাম করতে পারছিলাম না। ফলে আমরা বাধ্য হয়ে তাঁদের দাওয়াত দিয়েছিলাম এবং সে সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের রুমে সভাপতি ও সেক্রেটারির সঙ্গে একটা ছবি তোলা হয়। সেই ছবি ফেসবুকে প্রচার করা হয় যেন অনুষ্ঠান সফল হয়।’

ঘটনা মীমাংসার সময় সোহরাওয়ার্দী কলেজ ছাত্রদলের সভাপতি জসিম উদ্দিন বলেন, ‘আমরা তাঁর (রিয়াজুল) শিবির সংশ্লিষ্টতার বিষয়টি জানতাম না। তাঁর একটা ছবি আমাদের কাছে ছিল, যেটাতে সে জবি ছাত্রলীগের সভাপতি ও সেক্রেটারির সঙ্গে দাঁড়িয়ে ছিল। আমরা যাচাই না করেই তাঁকে এ বিষয়ে প্রশ্ন করি। পরবর্তীতে বাগ্‌বিতণ্ডা হয়। তবে তাঁকে আটকে রাখার অভিযোগটি মিথ্যা। জবি ছাত্রদলের নেতৃবৃন্দের সঙ্গে কথা না বলে এমনটি হওয়া ঠিক হয়নি।’

সূত্রাপুর থানায় জবি ছাত্রশিবিরের সেক্রেটারিকে (মাঝে) ‘ছাত্রলীগ’ বলা নিয়ে হট্টগোল বাঁধে। ছবি: আজকের পত্রিকা
সূত্রাপুর থানায় জবি ছাত্রশিবিরের সেক্রেটারিকে (মাঝে) ‘ছাত্রলীগ’ বলা নিয়ে হট্টগোল বাঁধে। ছবি: আজকের পত্রিকা

এদিকে মীমাংসার পর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে নিজের আইডি থেকে একটি পোস্ট দেন জসিম উদ্দিন। সেই পোস্টে তিনি বলেন, ‘ক্ষমা চাওয়ার নিউজটা মিথ্যা ও বানোয়াট। ছাত্রদল কখনো অন্যায় ও অসত্যের কাছে মাথা নত করে না।’

এ বিষয়ে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদ ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দীন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘সোহরাওয়ার্দী কলেজ ছাত্রদলের সভাপতি ক্ষমা চায়নি বলে ফেসবুকে পোস্টও দিয়েছে। আর ক্ষমা কেনই চাইবে, এটা আমার বোধগম্য নয়। আমরা বিভিন্ন মাধ্যমে জানতে পেরেছি জগন্নাথ শাখা ছাত্র শিবিরের সাধারণ সম্পাদক রিয়াজুল ইসলাম ছাত্রলীগের সঙ্গে জড়িত ছিল। আর এখানে ক্ষমাপ্রকাশের কোনো ঘটনা ঘটেনি, সূত্রাপুর থানায় শুধু একটি আলোচনা হয়েছে দুই পক্ষের মধ্যে।’

এ বিষয়ে সূত্রাপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘ওই ছবি দেখানোর পরেই ওখানে একটা হট্টগোলের সৃষ্টি হয়। সে সময় যেন অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে যার কারণে শিবিরের সেক্রেটারিকে আমার অফিসে বসতে বলি। পরে বিষয়টি মীমাংসা করা হয়েছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত