Ajker Patrika

বিমানবন্দর-গাজীপুর রুটে বিআরটির ৭ ফ্লাইওভার চালু, ঈদযাত্রায় স্বস্তির আশা

গাজীপুর প্রতিনিধি
আপডেট : ২৪ মার্চ ২০২৪, ১৪: ৪৪
বিমানবন্দর-গাজীপুর রুটে বিআরটির ৭ ফ্লাইওভার চালু, ঈদযাত্রায় স্বস্তির আশা

আসন্ন ঈদ সামনে রেখে যানজট এড়াতে গাজীপুর-এয়ারপোর্ট রুটের বাস র‍্যাপিড ট্রানজিট (বিআরটি) প্রকল্পের সাতটি ফ্লাইওভার যানবাহন চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করা হয়েছে। আজ রোববার সকালে বাংলাদেশ সচিবালয়ে নিজ মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষ থেকে প্রধান অতিথি হিসেবে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের ফ্লাইওভার সাতটি উন্মুক্ত করেন। 

ফ্লাইওভারগুলো হলো—রাজধানীর শাহজালাল বিমানবন্দরের বাম ও ডান পাশের ৩২৩ মিটার দৈর্ঘ্যবিশিষ্ট দুটি, জসিম উদ্দিন রোডের ১৮০ মিটার দৈর্ঘ্য, গাজীপুরা এলাকার ১৬৫ মিটার দৈর্ঘ্যের ইউটার্ন-১ ফ্লাইওভার, বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় ১৬৫ মিটার দৈর্ঘ্যের ইউটার্ন-২ ফ্লাইওভার, ভোগড়া এলাকায় ২৪০ মিটার দৈর্ঘ্যের ফ্লাইওভার এবং জয়দেবপুর চান্দনা চৌরাস্তা এলাকায় ৫৬৮ মিটার দৈর্ঘ্যের ফ্লাইওভার। 

ফ্লাইওভারগুলো উন্মুক্ত করার সময় সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, আজকে সাতটি ফ্লাইওভার উদ্বোধন নয়, উন্মুক্ত করা হলো। তিনি আশা প্রকাশ করে বলেন, প্রধানমন্ত্রীর ঈদ উপহার হিসেবে এসব ফ্লাইওভার উন্মুক্ত করায় বিশেষ করে বৃহত্তর ময়মনসিংহ অঞ্চলে যাত্রা আরও সহজ ও স্বস্তিদায়ক হবে। বিগত দিনে ঈদের সময় গাজীপুরে যে ভোগান্তি হয়, এবার আর তা হবে না। 

তিনি আরও বলেন, ইতিমধ্যে বিআরটি প্রকল্পের ৯১ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে। আশা করা হচ্ছে, এ বছরের ডিসেম্বরের মধ্যেই বিআরটি প্রকল্পের বাস চলাচল করবে। 

ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘এই প্রকল্পের কারণে বছরের পর বছর ভোগান্তি হয়েছে। আশা করি আর ভোগান্তি হবে না। আমি নিজেও অন্তত ৫০ বার এই প্রকল্প দেখতে এসেছি।’ এ সময় তিনি বলেন, ‘সরকারের উন্নয়ন নেতিবাচকভাবে না নিয়ে একটু ভাবুন। দেখুন এতগুলা প্রজেক্ট হয়েছে, এর মধ্যে একটি প্রজেক্টে একটু সমস্যা হয়েছে। এটি আমরা স্বীকারও করেছি এবং সমস্যা কোথায় সেটিও বলেছি।’ 

গাজীপুর মহানগরীর ভোগড়া বাইপাস প্রান্তে আয়োজিত অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন সড়ক ও জনপথ বিভাগের প্রধান প্রকৌশলী সৈয়দ মইনুল হাসান, বিআরটি প্রকল্পের পরিচালক (সড়ক) এ এস এম ইলিয়াস শাহ্, বিআরটি প্রকল্পের পরিচালক (সেতু) মো. মনিরুল ইসলাম খান, ঢাকা সড়ক সার্কেলের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মো. সাইফুদ্দিন, বিআরটি প্রকল্পের ব্যবস্থাপক ড. মো. মনিরুজ্জামান, মো. জাকির হোসেন ও আব্দুর রহমান, গাজীপুর মহানগর পুলিশের উপ-পুলিশ কমিশনার (ট্রাফিক) মো. আলমগীর হোসেন প্রমুখ।

বাংলাদেশ সচিবালয়ে নিজ মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষ থেকে প্রধান অতিথি হিসেবে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের ফ্লাইওভার সাতটি উন্মুক্ত করেনপ্রসঙ্গত, রাজধানী থেকে সড়ক পথে গাজীপুরের দূরত্ব ২৩ কিলোমিটার। যানজট না থাকলে খুব সহজেই গাজীপুরে আসা যায়। দেশের অন্যান্য স্থানের সঙ্গেও গাজীপুরের যোগাযোগ ভালো। গাজীপুরকে উত্তরবঙ্গের প্রবেশদ্বার বলা হয়। এ পথ দিয়ে প্রতিদিন লাখ লাখ পণ্য ও যাত্রীবাহী যানবাহন চলে। বৃহত্তর ময়মনসিংহের সাতটি এবং উত্তরবঙ্গের ২৩ জেলার মানুষ এ পথ ধরেই রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে যাতায়াত করেন। যোগাযোগের ক্ষেত্রে গাজীপুরের গুরুত্ব অপরিসীম। 

রাজধানীর সঙ্গে দেশের ওই অঞ্চলের যোগাযোগ সহজ করতে ২০১২ সাল রাজধানীর বিমান বন্দর থেকে গাজীপুর ২০.৫ কিলোমিটার সড়ক ও ফ্লাইওভার নির্মাণের জন্য বিআরটি প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়। প্রকল্পের শুরুতে ব্যয় ধরা হয় ২ হাজার ৩৯ কোটি ৮৪ লাখ ৮৯ হাজার টাকা। কাজ শেষ হওয়ার কথা ছিল ২০১৬ সালের ডিসেম্বরে। কয়েক দফা সময় বাড়িয়ে ২০২২ সালের জুন নির্ধারণ করা হয়। আর সময় বৃদ্ধির সঙ্গে পাল্লা দিয়ে ব্যয়ও বেড়েছে। সবশেষ ব্যয় ধরা হয়েছে ৪ হাজার ২৬৮ কোটি ৩২ লাখ টাকা। কিন্তু প্রকল্প চালু হওয়ার পর এক যুগ পেরিয়ে গেলেও নির্ধারিত সময়ে শেষ হয়নি প্রকল্পের কাজ। এখন আশা করা হচ্ছে, আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে কাজ শেষ করে পুরো প্রকল্প যান চলাচলের জন্য উদ্বোধন করা যাবে। 

বিআরটি প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে সরকারের চারটি বিভাগ। প্রকল্পে অর্থায়ন করছে বাংলাদেশ সরকারের পাশাপাশি এডিবি, এএফডি এবং ডিইএফ। প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে চায়না গেজহুবা গ্রুপ, জিয়াংশু প্রভিন্সিয়াল ট্রান্সপোর্টেশন ইঞ্জিনিয়ারিং গ্রুপ এবং ওয়েহেই ইন্টারন্যাশনাল ইকোনমিক অ্যান্ড টেকনিক্যাল কো-পারেটিভ। 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

নরসিংদীতে তিন চোখ ও দুই মুখের বাছুরের জন্ম, এলাকায় চাঞ্চল্য

নরসিংদী প্রতিনিধি
পুবেরগাঁও গ্রামের একটি খামারে বাছুরটির জন্ম। ছবি: আজকের পত্রিকা
পুবেরগাঁও গ্রামের একটি খামারে বাছুরটির জন্ম। ছবি: আজকের পত্রিকা

নরসিংদীতে অদ্ভুত আকৃতির বাছুরের জন্ম হয়েছে। বাছুরটির রয়েছে দুটি মুখ, দুটি জিহ্বা, দুটি কান ও তিনটি চোখ। এর মধ্যে একটি চোখ বাছুরের কপালের মাঝখানে। এ ঘটনায় এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।

২৩ ডিসেম্বর রাতে শিবপুর উপজেলার চক্রধা ইউনিয়নের পুবেরগাঁও গ্রামে স্থানীয় ইউপি সদস্য কাশেম খানের খামারে বাছুরটির জন্ম।

খামারমালিক কাশেম খান বলেন, বাছুরটি জন্মের পর থেকেই অসুস্থ। স্বাভাবিকভাবে দুধ পান করতে না পারায় ফিডারের মাধ্যমে দুধ খাওয়াতে হচ্ছে।

তিনি জানান, তাঁর খামারের একটি গাভি বাছুরটির জন্ম দিয়েছে। তিনি বলেন, এর আগেও গাভিটির বাছুর হয়েছে। কিন্তু এবারের মতো এমন অদ্ভুদ বাছুর আগে কখনো হয়নি।

ঘটনাটি জানাজানির পর থেকেই বাছুরটিকে একনজর দেখতে আশপাশের কৌতূহলী মানুষ খামারে আসছেন।

স্থানীয় বাসিন্দা আবদুল জলিল বলেন, ‘আমরা ছোটবেলা থেকে গরু-ছাগল দেখছি। কিন্তু তিন চোখ আর দুই মুখের বাছুর এই প্রথম দেখলাম। খবর পেয়ে দূর থেকে এসেছি।’

আরেক স্থানীয় নারী জরিনা বেগম বলেন, ‘বাছুরটা দেখতে অদ্ভুত লাগলেও মায়া হচ্ছে। বাছুরটির স্বাস্থ্য নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন স্থানীয়রা। অনেকেই দ্রুত প্রাণিসম্পদ বিভাগের চিকিৎসকের পরামর্শ ও চিকিৎসা নিশ্চিত করার পরামর্শ দিচ্ছেন।’

এর আগে এ ধরনের বাছুর জন্মের বিষয়ে প্রাণী বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, সাধারণত জেনেটিকস ডিফেক্টের কারণে গাভির এমন ত্রুটিপূর্ণ বাচ্চার জন্ম হয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

গাজীপুরে ট্রেনে কাটা পড়ে নানি-নাতনিসহ নিহত ৩

গাজীপুর প্রতিনিধি
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

গাজীপুরের কালীগঞ্জে রেললাইন দিয়ে হাঁটার সময় ট্রেনে কাটা পড়ে নানি-নাতনিসহ তিন নারী নিহত হয়েছেন। বৃহস্পতিবার (২৫ ডিসেম্বর) বিকেলে টঙ্গী-ভৈরব রেলপথের আড়িখোলা রেলস্টেশনসংলগ্ন টেকপাড়া এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে।

নিহত নারীরা হলেন কালীগঞ্জ পৌরসভার দেওয়ালেরটেক গ্রামের মোবারক হোসেনের স্ত্রী সাদিয়া বেগম (২৪), একই এলাকার বাবু মিয়ার মেয়ে অনাদি আক্তার (১৩) এবং নরসিংদীর শিবপুর উপজেলার মরজাল এলাকার বাসিন্দা কমলা বেগম (৫৫)। নিহত কমলা বেগম ও অনাদি আক্তার সম্পর্কে নানি-নাতনি এবং সাদিয়া বেগম তাঁদের প্রতিবেশী ছিলেন।

স্থানীয়রা ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে আড়িখোলা রেলব্রিজ এলাকায় রেললাইনের ওপর দিয়ে তিনজন হেঁটে যাচ্ছিলেন। এ সময় ঢাকা থেকে ছেড়ে আসা নোয়াখালীগামী ‘উপকূল এক্সপ্রেস’ ট্রেনটি চলে আসে। এ সময় তাঁরা রেলব্রিজের ওপর থাকায় সেখান থেকে দ্রুত সরে যাওয়ার সুযোগ পাননি। পরে ট্রেনটি তাঁদের ওপর দিয়ে চলে যায়। এতে ট্রেনে কাটা পড়ে ঘটনাস্থলেই কমলা বেগম ও সাদিয়া বেগমের মৃত্যু হয়। গুরুতর আহত অবস্থায় অনাদি আক্তারকে উদ্ধার করে কালীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

কালীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক জিয়াউর রহমান জানান, অনাদি আক্তারকে মৃত অবস্থায় হাসপাতালে আনা হয়েছিল।

ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে কালীগঞ্জ থানার উপপরিদর্শক (এসআই) ওবায়দুল হক জানান, এটি রেলওয়ের আওতাধীন দুর্ঘটনা হওয়ায় রেলওয়ে পুলিশের সঙ্গে সমন্বয় করে লাশগুলো উদ্ধার করা হয়েছে।

রেলওয়ে নরসিংদী পুলিশ ফাঁড়ির উপপরিদর্শক (এসআই) দিলীপ চন্দ্র সরকার বলেন, ‘খবর পেয়ে আমরা ঘটনাস্থলে গিয়ে লাশের সুরতহাল সম্পন্ন করেছি। নিহত নারীদের পরিচয় নিশ্চিত হওয়া গেছে। পরিবারের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে এবং ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের অনুমতি নিয়ে বিনা ময়নাতদন্তে লাশগুলো স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

আরাকান আর্মিদের জন্য নেওয়া হচ্ছিল ১৫০০ মশারি, আটক ৫

থানচি (বান্দরবান) প্রতিনিধি  
মশারিসহ জব্দ করা মালপত্র। ছবি: আজকের পত্রিকা
মশারিসহ জব্দ করা মালপত্র। ছবি: আজকের পত্রিকা

বান্দরবানের থানচি উপজেলায় দুটি ইঞ্জিনচালিত নৌকা তল্লাশি করে ১ হাজার ৫০০টি মশারি, ১২০টি নৌকার ইঞ্জিনের পাখা উদ্ধার করা হয়েছে। গতকাল বুধবার (২৪ ডিসেম্বর) বিকেলে তিন্দুমুখ বিজিবি চেকপোস্ট পার হওয়ার সময় নৌকাগুলো তল্লাশি করে এসব জিনিস জব্দ করে বিজিবি। এসব মশারি ও ইঞ্জিনের পাখা বান্দরবানের থানচির বড় মদক সীমান্ত দিয়ে মিয়ানমারে সশস্ত্র গোষ্ঠী আরাকান আর্মির জন্য নেওয়া হচ্ছিল বলে জানিয়েছে বিজিবি। এ ঘটনায় নৌকা দুটি থেকে পাঁচজনকে আটক করা হয়। আজ বৃহস্পতিবার তাঁদের থানচি থানায় সোপর্দ করা হয়েছে।

এ ঘটনায় আটক ব্যক্তিরা হলেন থোয়াই হ্লা চিং মারমা, উমং সাইং মারমা, হ্লাচিংথোয়াই মারমা, উক্যছাইন মারমা ও মো. ইউনুস।

এসব তথ্য নিশ্চিত করে বিজিবি বলিপাড়া ৩৮ ব্যাটালিয়ানের সহকারী পরিচালক মো. জাকির হোসেনের জানান, নিজস্ব গোয়েন্দা সূত্রে তাঁরা জেনেছেন, দীর্ঘদিন থেকে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে ওষুধ, কাপড়, জুতা, মোজা, মশারি, নৌকা ইঞ্জিনের পাখা ও বিভিন্ন যন্ত্রাংশ মিয়ানমারের আরাকান আর্মির কাছে সরবরাহ করছে একটি সিন্ডিকেট চক্র। পাচারকারীদের ধরতে সীমান্তের বিজিবি চৌকিগুলোতে বিজিবি সদস্যরা সতর্ক রয়েছেন।

জাকির হোসেন বলেন, গতকাল বুধবার তিন্দুমুখ বিজিবি চেকপোস্ট অতিক্রম করার সময় মালবাহী তিনটি ইঞ্জিন নৌকা দেখে বিজিবির সদস্যদের সন্দেহ হয়। এ সময় নৌকা থামাতে বললে একটি নৌকা দ্রুত চলে যায়। বাকি দুটি নৌকা তল্লাশি করে ১ হাজার ৫০০টি মশারি, ১২০টি ইঞ্জিন বোটসহ অন্যান্য পণ্য পাওয়া যায়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

নলছিটি লঞ্চঘাট ওসমান হাদির নামে নামকরণ

ঝালকাঠি প্রতিনিধি  
নলছিটি লঞ্চঘাট ।  ছবি: আজকের পত্রিকা
নলছিটি লঞ্চঘাট । ছবি: আজকের পত্রিকা

নলছিটি উপজেলার লঞ্চঘাট এখন থেকে শহীদ শরিফ ওসমান হাদির নামে পরিচিত হবে। জন্মস্থান ও শৈশবের স্মৃতিতে গাথা এই লঞ্চঘাট তাঁর নামের সঙ্গে চিরস্থায়ীভাবে যুক্ত হলো।

বরিশাল বিআইডব্লিউটিএর নির্বাহী প্রকৌশলী আমজাদ হোসেন বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় (২৫ ডিসেম্বর) জানান, শহীদ ওসমান হাদির জন্মস্থান নলছিটি। শৈশব, বেড়ে ওঠা এবং জীবনসংগ্রামের সঙ্গে লঞ্চঘাট এলাকার নিবিড় সম্পর্ক থাকার কারণে এটি তাঁর নামে নামকরণ করা হয়েছে। বর্তমানে টার্মিনালের সংস্কার ও রঙের কাজ চলমান রয়েছে।

আগামী শনিবার নৌপরিবহন উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) এম সাখাওয়াত হোসেন ঘাটটি পরিদর্শন করবেন বলেও জানান তিনি।

নলছিটি লঞ্চঘাট শহীদ ওসমান হাদির জীবনের একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ। ঘাট থেকে মাত্র ৫০০ মিটার দূরে তার পৈতৃক বাড়ি। নদীর ধারে দাঁড়িয়ে মানুষের আসা-যাওয়া দেখা এবং লঞ্চের ভিড়ে সময় কাটানো—এই ঘাট ছিল তার বেড়ে ওঠার নীরব সাক্ষী।

ঘাট এলাকার ব্যবসায়ী রব হাওলাদার বলেন, ‘আমরা চাইছিলাম হাদির স্মরণে এমন কিছু হোক, যা প্রজন্মের পর প্রজন্ম মনে রাখবে। তার শৈশবের স্মৃতিবিজড়িত লঞ্চঘাটের নাম তার নামে হওয়া নিঃসন্দেহে স্মরণীয় সিদ্ধান্ত।’

ব্যবসায়ী শাহাদত আলম ফকির যোগ করেন, ‘এই ঘাটে আমরা হাদিকে ছোটবেলা থেকে দেখেছি। সে এখানকারই ছেলে ছিল। আজ তার নামে ঘাটের নামকরণ হওয়ায় আমরা গর্বিত।’

ওসমান হাদির প্রতিবেশী বেলায়েত হোসেন নান্নু বলেন, ‘হাদি এই এলাকার সন্তান। এই ঘাট, এই নদী, এই মানুষ—সবকিছুতেই তার স্মৃতি ছড়িয়ে আছে। লঞ্চঘাটের নাম তার নামে হওয়া মানে, সে এখানেই চিরদিন বেঁচে থাকবে।’

উল্লেখ্য, ১২ ডিসেম্বর হত্যার উদ্দেশ্যে ওসমান হাদিকে গুলি করা হয়। তাঁকে প্রথমে ঢাকায় ভর্তি করা হয় এবং পরে সিঙ্গাপুরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ১৮ ডিসেম্বর মারা যান ওসমান হাদি। পরবর্তীকালে তাঁর মরদেহ দেশে আনা হয় এবং সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজায় জানাজা শেষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদের পাশে (জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের কবরের পাশে) সমাহিত করা হয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত