Ajker Patrika

২৩ বছরে গাজীপুরের দুই তৃতীয়াংশ জলাশয় ও বন দখল: জরিপ

গাজীপুর প্রতিনিধি
২৩ বছরে গাজীপুরের দুই তৃতীয়াংশ জলাশয় ও বন দখল: জরিপ

গাজীপুর জেলায় গত ২৩ বছরে বনভূমি ও জলাশয় কমেছে দুই তৃতীয়াংশ। উল্টো দিকে বেড়েছে বন দখল, জলাশয় ভরাট ও গাছ কর্তন। অর্থনৈতিকভাবে দেশের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ জেলা গাজীপুরে নিয়ে এক গবেষণায় এমন তথ্য ওঠে এসেছে। 

আজ মঙ্গলবার গাজীপুর পিটিআই অডিটরিয়ামে পরিবেশ দূষণে বিপর্যস্ত গাজীপুর: উত্তরণ উপায় শীর্ষক আলোচনা সভায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপনকালে গবেষণা জরিপের ফলাফলে এ তথ্য প্রকাশ করা হয়। 

গবেষণা জরিপ পরিচালনা করেছে, রিভার অ্যান্ড ডেলটা রিসার্চ সেন্টার (আরডিআরসি)। এতে সহায়তা করেছে, বাংলাদেশ রিভার ফাউন্ডেশন (বিআরএফ), বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতি (বেলা) এবং প্রকৃতি ও জীবন ফাউন্ডেশন। 

২০২৩ সালে গবেষণা জরিপ পরিচালিত হয়। এই গবেষণার প্রধান কেন্দ্রবিন্দু নদী হলেও সংগত কারণেই এতে পরিবেশের অন্যান্য উপাদানগুলোর বর্তমান অবস্থা, ক্রম বিবর্তনের চিত্র উঠে এসেছে। 

অনুষ্ঠানে বেলার ভারপ্রাপ্ত প্রধান নির্বাহী তাসলিমা ইসলাম সভাপতিত্ব করেন। বাংলাদেশ রিভার ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান মো. মনির হোসেন সঞ্চালনা করেন। 

প্রধান অতিথি ছিলেন জেলা প্রশাসক নাফিসা আরেফিন। জরিপ তথ্য উপস্থাপন করেন, রিভার অ্যান্ড ডেল্টা রিসার্চ সেন্টারে চেয়ারম্যান মোহাম্মদ এজাজ। 

এতে প্যানেল আলোচক হিসেবে বক্তব্য দেন—গাজীপুর পরিবেশ অধিদপ্তরের উপপরিচালক আরেফিন বাদল, ভাওয়াল বদরে আলম সরকারি কলেজের অধ্যাপক অসীম বিভাকর, গাজীপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক রফিকুল ইসলাম, গাজীপুর পেশাজীবী সমন্বয় পরিষদের সভাপতি অধ্যাপক নজরুল ইসলাম। 

গবেষণা বলা আছে, ২০০০ সাল থেকে ২৩ বছরে এক সময়কার সবুজ শ্যামল গাজীপুরের পরিবেশের বিরাট পরিবর্তন ঘটে গেছে। উল্লেখযোগ্য হারে কমেছে বনাঞ্চল, জলাশয়, উন্মুক্ত জায়গা। উল্টো দিকে, বেড়েছে অপরিকল্পিত শিল্পায়ন ও শহরায়ণ। ঘটেছে, বন দখল, জলাশয় ভরাট ও গাছ কর্তন। 

জেলায় ২০১১ সালে মোট জনসংখ্যা ছিল সাড়ে ৩০ লাখের কাছাকাছি। ২০২২ সালে তা এসে ঠেকেছে ৫০ লাখের বেশি। দেশের অন্যতম ঘনবসতিপূর্ণ গাজীপুর সিটি করপোরেশন এলাকায় প্রতি বর্গ কিলোমিটারে ৮ হাজার ১২৬ জন বাস করছে। 

পরিবেশগত সমীক্ষা বলছে, ২০০০ সালে জেলায় মোট জলাভূমির পরিমাণ ছিল ১১ হাজার ৪৬২ হেক্টর, যা মোট আয়তনের ৬ দশমিক ৭৩ শতাংশ। ২০২৩ সালে এসে তা কমে দাঁড়িয়েছে ৫ হাজার ৫৬৮ হেক্টর, যা মোট আয়তনের ৩ দশমিক ২৭ শতাংশ। 

একটি জেলার মোট আয়তন অনুযায়ী অন্তত ৭ থেকে ১৪ শতাংশ জলাভূমি থাকতে হয়। অথচ গাজীপুর আদর্শ মান থেকে অনেক পিছিয়ে আছে। তার ওপর জেলায় তুরাগ, বালু, বংশী, শীতলক্ষ্যা, চিলাইসহ নদ-নদীগুলো শিল্পবর্জ্যসহ নানামুখী মারাত্মক দূষণের শিকার। যার প্রভাব পড়ছে জেলার সার্বিক পরিবেশ ও জনস্বাস্থ্যে। 
 
একটি জেলার মোট আয়তন অনুযায়ী ২০-২৫ শতাংশ বনভূমি থাকতে হয়। ২০০০ সালে গাজীপুরে বনভূমির পরিমাণ ছিল ৩৯ হাজার ৯৪৩ হেক্টর বা ২৩ দশমিক ৪৪ শতাংশ। ২০২৩ সালে জেলায় বনভূমির পরিমাণ এসে ঠেকেছে ১৬ হাজার ১৭৪ হেক্টর বা ৯ দশমিক ৪৯ শতাংশে। অথচ এই জেলাতেই অবস্থিত ভাওয়াল জাতীয় উদ্যানের মতো গুরুত্বপূর্ণ বনভূমি। 

গাজীপুরে ২০০০ সালে আবাদকৃত মোট কৃষিজমির পরিমাণ ছিল ১৮ হাজার ২৭০ হেক্টর। ২০২৩ সালে এসে আবাদকৃত কৃষি জমির পরিমাণ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২০ হাজার ৩০৭ হেক্টরে। জেলায় ২০০০ সালে মানব বসতি ছিল ৮৫ হাজার ৫৭৩ হেক্টর এলাকায়, যা মোট আয়তনের ৫০ দশমিক ২১ শতাংশ। ২০২৩ সালে এসে বসতিকৃত এলাকা বেড়ে হয়েছে এক লাখ ১২ হাজার ১৭৯ হেক্টর; যা মোট আয়তনের ৬৫ দশমিক ৮৩ শতাংশ। 

 ২০০০ সালে শিল্প এলাকা বিস্তৃত ছিল ৯ হাজার ৭৩৬ হেক্টর জমিতে। ২০২৩ সালে তা বেড়ে হয়েছে ১৪ হাজার ৮৭৭ হেক্টরে। ২০০০ সালে জেলায় খোলা জায়গার পরিমাণ ছিল ৫ হাজার ৪৩৬ হেক্টর। ২০২৩ সালে যা এসে দাঁড়িয়েছে মাত্র ১ হাজার ৩১৬ হেক্টরে। 

গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দেশে প্রাকৃতিক বাস্তুতন্ত্র বিনষ্ট করে অনিয়ন্ত্রিত শিল্পায়ন এবং নগরায়ণের বিধ্বংসী প্রভাবের কারণে গাজীপুর এখন দেশের পরিবেশগত বিপর্যয়ের প্রতীক হয়ে উঠেছে। এই জেলার পরিবেশগত অবস্থা বেশ উদ্বেগজনক। এখানে উল্লেখযোগ্য হারে বনভূমি জলাভূমি দখল করা হচ্ছে। বায়ু ও পানি উভয়েরই দূষণের মাত্রা অতি উচ্চ। যা ব্যাপকভাবে প্রভাব ফেলছে জনস্বাস্থ্যে। 

এমন পরিস্থিতিতে বেলা, বিআরএফ, আরডিআরসি এবং প্রকৃতি ও জীবন ফাউন্ডেশন বেশ কিছু সুপারিশ তুলে ধরে। এরপর আগত বিভিন্ন দপ্তরের ও পেশার মানুষ তাদের মতামত দেন। 

গাজীপুর জেলা প্রশাসক নাফিসা আরেফিন বলেন, ‘বন দখলের অভিযোগ প্রতিদিনই আমরা পাচ্ছি। আলোচনা ও সালিসও করতে হচ্ছে। তবে এসব দখলের বিরুদ্ধে আমাদের প্রত্যেকের প্রতিবাদ ও প্রতিরোধ করতে হবে। এ বিষয়ে আমার সরকারি যে দায়িত্ব রয়েছে তার সর্বোচ্চ ব্যবহার করব।’ 

বেলার ভারপ্রাপ্ত প্রধান নির্বাহী তাসলিমা ইসলাম বলেন, ‘সমস্যা দেখে আমরা আশাহত না হই। আমাদের সবাইকে সচেতন হতে হবে। দখল দূষণ চাইলেও সরকার বা বেলা একা সমাধান করতে পারবে না। আমরা নগরায়ণ চাই, উন্নয়ন চাই, কিন্তু সেই উন্নয়ন চাই না যে উন্নয়ন আমাদের পরিবেশকে দেখে না।’ 

আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য দেন—বাপার গাজীপুর জেলা সাধারণ সম্পাদক হাসান খান, ভাষা শহীদ কলেজের অধ্যক্ষ মুকুল কুমার মল্লিক, গাজীপুর বিএম কলেজের অধ্যক্ষ হুমায়ুন কবির, গাজীপুর নদী পরিব্রাজক দলের সাধারণ সম্পাদক এম. আসাদুজ্জামান সাদ, আবু সাঈদ চৌধুরী, অধ্যাপক আসাদুজ্জামান আকাশ প্রমুখ।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ঘন কুয়াশায় দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌরুটে ফেরি চলাচল বন্ধ

রাজবাড়ী প্রতিনিধি
ঘন কুয়াশায় দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌরুটে ফেরি চলাচল বন্ধ। ছবি: সংগৃহীত
ঘন কুয়াশায় দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌরুটে ফেরি চলাচল বন্ধ। ছবি: সংগৃহীত

রাজবাড়ীর দৌলতদিয়া ও মানিকগঞ্জের পাটুরিয়া নৌ-রুটে ফেরি চলাচল ঘন কুয়াশার কারণে বন্ধ করেছে বিআইডব্লিউটিসি কর্তৃপক্ষ। বুধবার (২৪ ডিসেম্বর) দিবাগত রাত সাড়ে ১০টা থেকে নৌ দুর্ঘটনা এড়াতে এই রুটে ফেরি চলাচল বন্ধ রাখা হয় বলে জানান বিআইডব্লিউটিসি দৌলতদিয়া ঘাট শাখার ব্যবস্থাপক মো. সালাহউদ্দিন।

সালাহউদ্দিন বলেন, সন্ধ্যার পর থেকেই কুয়াশা পড়তে থাকে। রাত সাড়ে ১০টার সময় নদীপথ অস্পষ্ট হয়ে যায়। সে সময় নৌ দুর্ঘটনা এড়াতে এই নৌ-রুটে ফেরি চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়। ফেরি চলাচল বন্ধ থাকায় ঘাট এলাকায় কিছু যানবাহন আটকা পড়েছে।

বিআইডব্লিউটিসি দৌলতদিয়া ঘাট শাখার ব্যবস্থাপক মো. সালাহউদ্দিন আরও বলেন, কুয়াশা কেটে গেলে ফেরি চলাচল শুরু হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

কক্সবাজারের রোহিঙ্গা আশ্রয়শিবিরের ৯ শতাংশ নারী ধর্ষণের শিকার: বিএনপিএস

কক্সবাজার প্রতিনিধি
কক্সবাজার শহরের একটি হোটেলের সম্মেলনকক্ষে আজ বুধবার বাংলাদেশ নারী প্রগতি সংঘ আয়োজিত গোল টেবিল বৈঠক। ছবি: আজকের পত্রিকা
কক্সবাজার শহরের একটি হোটেলের সম্মেলনকক্ষে আজ বুধবার বাংলাদেশ নারী প্রগতি সংঘ আয়োজিত গোল টেবিল বৈঠক। ছবি: আজকের পত্রিকা

কক্সবাজারের উখিয়া ও টেকনাফের রোহিঙ্গা আশ্রয়শিবিরে বসবাস করা ৫৫ শতাংশ নারী ও কন্যা শিশু প্রতিনিয়ত সুরক্ষা, শিক্ষা, পুষ্টি ও লিঙ্গভিত্তিক সহিংসতার উচ্চ ঝুঁকিতে রয়েছে। শুধু তা-ই নয়, সাম্প্রতিক তথ্য অনুযায়ী, আশ্রয়শিবিরগুলোয় ৯ শতাংশ নারী ধর্ষণের শিকার হয়েছেন।

আজ বুধবার (২৪ ডিসেম্বর) কক্সবাজার শহরের একটি হোটেলের সম্মেলনকক্ষে বাংলাদেশ নারী প্রগতি সংঘ (বিএনপিএস) আয়োজিত গোল টেবিল বৈঠকে এ তথ্য তুলে ধরে সংস্থাটি।

বিএনপিএসের প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০১৭ সাল থেকে ১১ লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী মিয়ানমারে নির্যাতনের শিকার হয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে। বর্তমানে তারা কক্সবাজারের ৩৩টি শিবিরে বসবাস করছে, যা বিশ্বে বৃহত্তম শরণার্থী আশ্রয়স্থলগুলোর একটি। এই জনগোষ্ঠীর ৫২ শতাংশের বেশি নারী ও কন্যা।

সংস্থাটির প্রতিবেদনে বলা হয়, রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীকে আশ্রয় দিয়ে আট বছরেরও বেশি সময়ে কক্সবাজারের প্রায় ৫ লাখ মানুষ নানাভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। এই দীর্ঘস্থায়ী সংকটের প্রভাবে স্থানীয় জনগোষ্ঠী জীবিকা, মজুরি, বন ও জলসম্পদ, স্বাস্থ্যসেবা এবং সামাজিক সংহতির ওপর ক্রমবর্ধমান চাপের মুখে পড়েছে। ফলে এটি শুধু শরণার্থী সংকট নয়; এটি মানবিকতা, উন্নয়ন এবং শান্তির এক যৌথ চ্যালেঞ্জ।

‘শান্তি ও নিরাপত্তার জন্য রোহিঙ্গা শরণার্থী এবং স্থানীয় জনগোষ্ঠীর অধিকার ও দায়িত্ব’ শীর্ষক এ গোল টেবিল বৈঠক সঞ্চালনা করেন বিএনপিএসের উপপরিচালক নাসরিন বেগম। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন কক্সবাজারের অতিরিক্ত শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার (যুগ্ম সচিব) মোহাম্মদ শামসুদ্দৌজা নয়ন। এ ছাড়া শরণার্থী ত্রান ও প্রত্যাবাসন কার্যালয়ের সিনিয়র সহকারী সচিব এম এ সানোয়ার হোসেন, বাংলাদেশ পরিবশে আন্দোলন (বাপা) কক্সবাজারের সাধারণ সম্পাদক কলিম উল্লাহ, জেলা পরিষদের সাবেক সদস্য হুমায়রা বেগমসহ সংশ্লিষ্টরা বক্তব্য রাখেন।

প্রধান অতিথির বক্তৃতায় শামসুদ্দৌজা নয়ন বলেন, বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গা শরণার্থীদের আন্তর্জাতিক অর্থ সহায়তা কমে এসেছে। এর ফলে সামাজিক নিরাপত্তা সংকট তৈরি হচ্ছে। এতে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন নারীরা।

গোলটেবিল বৈঠকে বক্তারা বলেন, রোহিঙ্গা শরণার্থীদের নিরাপত্তা, খাদ্য, আশ্রয়, স্বাস্থ্যসেবা, শিক্ষা এবং ও সহিংসতা থেকে সুরক্ষার অধিকার আন্তর্জাতিক মানবাধিকার কাঠামোর অধীনে নিশ্চিত করা নৈতিক ও আইনগত দায়িত্ব। একইভাবে, আশ্রয়দাতা সম্প্রদায়েরও টেকসই উন্নয়ন, পরিবেশ সুরক্ষা, সম্মানজনক কাজ এবং জনসেবায় ন্যায্য প্রবেশাধিকারের জরুরি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

যবিপ্রবির প্রথম উপাচার্য রফিকুল ইসলাম মারা গেছেন

­যশোর প্রতিনিধি
মো. রফিকুল ইসলাম সরকার। ছবি: সংগৃহীত
মো. রফিকুল ইসলাম সরকার। ছবি: সংগৃহীত

যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (যবিপ্রবি) সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. রফিকুল ইসলাম সরকার মারা গেছেন (ইন্না...রাজিউন)। আজ বুধবার সকালে ঢাকার নিজ বাসা থেকে বের হয়ে তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন। এরপর তাঁকে একটি বেসরকারি বিশেষায়িত হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

ড. মো. রফিকুল ইসলাম সরকার যবিপ্রবি স্থাপন প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক। পরবর্তীতে তিনি বিশ্ববিদ্যালয়টির প্রতিষ্ঠাতা উপাচার্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তিনি বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃষি শক্তি ও যন্ত্র বিভাগের অধ্যাপক ছিলেন। সেখানে তিনি কৃষি প্রকৌশল ও প্রযুক্তি অনুষদের ডিন হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। বর্তমানে তিনি কৃষিবিদ গ্রুপের চেয়ারম্যান ও যবিপ্রবির রিজেন্ট বোর্ডের সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।

এ ছাড়া তিনি একজন কৃষি বিজ্ঞানী এবং প্রকৌশলী হিসেবে দেশের কৃষি খাতের যান্ত্রিকীকরণ ও আধুনিকায়নে দীর্ঘ পাঁচ দশকেরও বেশি সময় ধরে কৃতিত্বের সঙ্গে অবদান রেখেছেন।

এদিকে, ড. মো. রফিকুল ইসলাম সরকারের মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আব্দুল মজিদ ও কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. হোসেন আল মামুন, রিজেন্টবোর্ড সদস্যবৃন্দসহ বিশ্ববিদ্যালয় পরিবার।

এক শোক বার্তায় যবিপ্রবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আব্দুল মজিদ বলেন, রফিকুল ইসলাম সরকার ছিলেন একজন সৎ, মানবিক, ধর্মভীরু ও দায়িত্বশীল মানুষ। যবিপ্রবির প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে আজ অবধি তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নতিতে নিরলস পরিশ্রম করেছেন।

তিনি ছিলেন একজন দক্ষ প্রশাসক এবং বরেণ্য কৃষি বিজ্ঞানী। যবিপ্রবির সূচনালগ্নে তার বলিষ্ঠ নেতৃত্ব ও দূরদর্শী পরিকল্পনা বিশ্ববিদ্যালয়টিকে আজকের এই অবস্থানে পৌঁছাতে ভিত গড়ে দিয়েছে। প্রতিষ্ঠাতা উপাচার্য হিসেবে তিনি শূন্য থেকে একটি বিশ্ববিদ্যালয় গড়ে তোলার যে চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করেছিলেন, তা যবিপ্রবি কৃতজ্ঞচিত্তে স্মরণ করবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে ১০ কিলোমিটার যানজট

সোনারগাঁ (নারায়ণগঞ্জ) প্রতিনিধি
আপডেট : ২৪ ডিসেম্বর ২০২৫, ২২: ২৪
ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে যানজট। ছবি: আজকের পত্রিকা
ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে যানজট। ছবি: আজকের পত্রিকা

ঢাকা–চট্টগ্রাম মহাসড়কে নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ে কাঁচপুর সেতু থেকে লাঙ্গলবন্দ পর্যন্ত ১০ কিলোমাটার যানজটের সৃষ্টি হয়েছে। বুধবার (২৪ ডিসেম্বর) সকালে একটি ট্রাক দুর্ঘটনার পর দীর্ঘ সময় সড়কে যান চলাচল ব্যাহত হওয়ায় এ যানজট তৈরি হয়।

এতে ঘণ্টার পর ঘণ্টা সড়কে আটকে থেকে যাত্রীবাহী বাস, পণ্যবাহী ট্রাক, ব্যক্তিগত যানবাহনের চালক ও যাত্রীদের দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। রাত সাড়ে ৯টায় এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত মহাসড়কে যানজট দেখা গেছে।

কাঁচপুর হাইওয়ে থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল কাদের জিলানী জানান, বুধবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে লাঙ্গলবন্দ ব্রিজ এলাকায় একটি ট্রাক নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে সেতুর রেলিংয়ে সজোরে আঘাত করে। ট্রাকটিতে প্রায় ২৭ টন মালামাল বোঝাই ছিল। দুর্ঘটনায় সেতুর রেলিং ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়।

তিনি আরও জানান, ট্রাকটিতে অতিরিক্ত মালামাল থাকায় রেকার দিয়ে সরানো সম্ভব হয়নি। ফলে প্রথমে অন্য একটি ট্রাকে মালামাল স্থানান্তরের কাজ শুরু করা হয়। এই প্রক্রিয়ায় দীর্ঘ সময় লাগায় দুর্ঘটনাকবলিত ট্রাকটি বিকেলের আগে সরানো যায়নি। এর ফলে ঢাকা–চট্টগ্রাম মহাসড়কের চট্টগ্রামমুখী লেনে দীর্ঘ যানজট তৈরি হয়েছে।

ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে যানজট। ছবি: আজকের পত্রিকা
ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে যানজট। ছবি: আজকের পত্রিকা

পণ্যবাহী ট্রাকচালক শাহ আলম জানান, দুর্ঘটনার কারণে রাস্তা বন্ধ ছিল বুঝতে পারছি। কিন্তু এত সময় লাগবে ভাবিনি। মালামাল নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকতে হচ্ছে। এতে আর্থিক ক্ষতিও হচ্ছে।

আরেক যাত্রী আক্তার হোসেন বলেন, আমি চট্টগ্রামে যাচ্ছি। নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে পৌঁছানোর কথা ছিল। কিন্তু তিন ঘণ্টা ধরে একই জায়গায় আটকে আছি। ছোট বাচ্চা নিয়ে খুব বিপদে পড়েছি।

কাঁচপুর হাইওয়ে পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, দুর্ঘটনার পরপরই ঘটনাস্থলে পুলিশের একাধিক টিম কাজ শুরু করে। বিকেল নাগাদ মালামাল সরিয়ে ট্রাকটি সড়ক থেকে অপসারণ করা হলে ধীরে ধীরে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়।

কাঁচপুর হাইওয়ে থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল কাদের জিলানী বলেন, পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে আমাদের একাধিক টিম কাজ করছে। টানা তিন দিনের ছুটি থাকায় মহাসড়কে গাড়ির চাপ বেশি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত