Ajker Patrika

মানসিক রোগী কনস্টেবল কাওছার উধাও হন চারবার, তবুও চাকরি টিকিয়েছেন যেভাবে

আমানুর রহমান রনি, ঢাকা
আপডেট : ১২ জুন ২০২৪, ১২: ১৬
মানসিক রোগী কনস্টেবল কাওছার উধাও হন চারবার, তবুও চাকরি টিকিয়েছেন যেভাবে

রাজধানীর কূটনীতিকপাড়ায় কনস্টেবল মনিরুল হক হত্যায় অভিযুক্ত পুলিশ সদস্য মো. কাওছার আলী একাধিকবার পুলিশের শৃঙ্খলাভঙ্গের অপরাধ করেছেন। তিনি অন্তত চারবার কর্মস্থল থেকে উধাও হয়ে গিয়েছিলেন। এর মধ্যে সর্বোচ্চ টানা ১৫ দিনও অনুপস্থিত ছিলেন। এসব ঘটনায় কাওছার লঘু ও গুরু দণ্ড ভোগ করেছেন। 

কর্মস্থল থেকে উধাও হয়ে যাওয়া পুলিশ বিধানে শৃঙ্খলা ভঙ্গের বড় অপরাধ হলেও কাওছারকে বিভিন্ন ধরনের শাস্তি দিয়ে চাকরিতে বহাল রাখা হয়েছে। কেবল একবার বেতন বৃদ্ধি অস্থায়ীভাবে বন্ধ ছিল। প্রতিবার কর্মস্থলে ফিরে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের অনুরোধ করে চাকরিতে বহাল থেকেছেন। 

তবে এ বিষয়ে পুলিশ কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, মানবিক কারণে তাঁকে চাকরিতে বহাল রাখা হয়েছিল। 

ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) একটি সূত্র জানিয়েছে, ২০০৫ সালের ১৪ ডিসেম্বর পুলিশে যোগ দেন কাওছার আলী। যোগদানের দুই বছর পর চাকরি স্থায়ী হয়। এ সময় তিনি রাজশাহী রেঞ্জের বগুড়া জেলায় কর্মরত ছিলেন। এই জেলায় আড়াই বছর চাকরি করেন। এর মধ্যে ২০০৮ সালের ডিসেম্বরে না বলে কর্মস্থলে অনুপস্থিত ছিলেন। এরপর ২০১৬ সালের নভেম্বরে একবার ৮ দিন, ২০১৭ সালের অক্টোবরে ৫ দিন এবং ২০১৯ সালের মে মাসে অন্তত ১৫ দিন বিনা অনুমতিতে কর্মস্থলে অনুপস্থিত ছিলেন। 

সর্বশেষ উধাও হওয়ার সময় পুলিশের বিশেষ শাখায় (এসবি) কর্মরত ছিলেন কাওছার। এ ঘটনায় তাঁকে গুরুদণ্ড দেওয়া হয়। তাঁর বেতন বৃদ্ধি অস্থায়ীভাবে বন্ধ রাখা হয়। 

দায়িত্বে ও কর্তব্যে অবহেলা, শৃঙ্খলা ভঙ্গের কারণে আগের তিনবার কাওছারকে পুলিশের প্যারেড ডিল (পিডি) শাস্তি দেওয়া হয়। প্রতিবারই ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের কাছে ক্ষমা চেয়ে চাকরি বাঁচিয়েছেন কাওছার। ভবিষ্যতে আর শৃঙ্খলা ভঙ্গের কাজ করবেন না বলে অঙ্গীকার করেছেন। 

তবে তাঁর সার্ভিস বুকে এসব শাস্তির বিষয় উল্লেখ থাকায় চাকরির ১৮ বছর ৫ মাস ২৭ দিনেও পদোন্নতি পাননি। শৃঙ্খলা ভঙ্গের কারণে তিনি পদোন্নতির জন্য বিবেচিত হননি। উল্টো তাঁর বেতন বৃদ্ধি বন্ধ ছিল দুই বছরের বেশি সময়। 

এসব ঘটনা কাওছারের পরিবারও জানত। তাঁর গ্রামের বাড়ি কুষ্টিয়ার দৌলতপুর। গত সোমবার রাতে কাওছারের মা মাবিয়া খাতুন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘চাকরিতে কয়েকবার ঝামেলা হয়েছিল। আমরা স্যারদের অনুরোধ করেছি। তারপর তাকে চাকরিতে বহাল করা হয়েছে।’ 

ডিএমপির সূত্রটি জানিয়েছে, কনস্টেবল কাওছার পুলিশের গুরুত্বপূর্ণ বেশ কয়েকটি ইউনিটে চাকরি করেছেন। ২০২২ সালের ২ আগস্ট কাওছার আলীকে ডিএমপির প্রোটেকশন বিভাগ থেকে ডিপ্লোম্যাটিক সিকিউরিটি বিভাগে বদলি করা হয়। এই বিভাগের সদস্য হিসেবে গত শনিবার (৮ জুন) রাতে বারিধারায় ফিলিস্তিন দূতাবাসের নিরাপত্তার দায়িত্বে ছিলেন কাওছার আলী ও মনিরুল হক। রাত পৌনে ১২টার দিকে সহকর্মী মনিরুলকে নিজের আগ্নেয়াস্ত্র দিয়ে গুলি করেন কাওছার। এতে ঘটনাস্থলেই মারা যান মনিরুল। 

ডিএমপির কর্মকর্তারা কাওছারের উধাও হয়ে যাওয়ার মতো ঘটনার পরও চাকরিতে বহাল রাখার বিষয়ে সরাসরি কোনো মন্তব্য করতে চাননি। ডিএমপির গুলশান বিভাগের উপকমিশনার (ডিসি) রিফাত রহমান শামীম আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘কনস্টেবল কাওছারের অতীত রেকর্ড আমাদের কাছে রয়েছে। তবে এ বিষয়ে এখনই আমরা মন্তব্য করতে চাই না। এখন মন্তব্য করলে কংক্রিট কোনো কিছু হবে না। তদন্ত শেষে এ বিষয়ে সবকিছু জানানো হবে।’ 

এদিকে কাওছার আলী ২০১০ সালের ৯ এপ্রিল থেকে ১৪ এপ্রিল পাবনার একটি মানসিক চিকিৎসা কেন্দ্রে ভর্তি ছিলেন। সুরমা মেন্টাল ক্লিনিক প্রাইভেট লিমিটেড নামে ওই চিকিৎসা কেন্দ্রে তিনি পাঁচ দিন ভর্তি থাকার পর ছাড়পত্র পান। ক্লিনিকের পরিচালক মাহমুদুল হিরক আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘কাওছার আলী সিজোফ্রেনিয়া (ভগ্নমনস্কতা) রোগে আক্রান্ত ছিলেন। তাঁকে চিকিৎসা দেওয়ার পর একটু সুস্থ হলে পরিবার নিয়ে যায়।’ 

এ ছাড়া তাঁর পরিবার জানিয়েছে, ২০২২ সালে ঢাকার জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালে ২২ দিন ভর্তি ছিলেন। তখন তিনি ডিএমপির রিজার্ভ ফোর্স ব্যারাকে ছিলেন। সেখান থেকেই সহকর্মীরা তাঁকে নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি করান।

কাওছারের ছোট ভাই আশিকুর রহমান, তিনিও ঢাকায় কনস্টেবল পদে কর্মরত। তিনি বলেন, ‘জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটে ভর্তির বিষয়টি ডিএমপির রিজার্ভ ব্যারাকের কর্মকর্তারা জানেন।’ 

তবে গত সোমবারের ঘটনার বিষয়ে কথা বলতে গেলে ওই ব্যারাকের কেউ মুখ খোলেননি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

প্রাথমিকের শতভাগ বই এলেও সংকট মাধ্যমিকে

  • জেলায় ষষ্ঠ থেকে নবম শ্রেণি পর্যন্ত পাঠ্যবইয়ের চাহিদা ২২ লাখ ৭ হাজার
  • সপ্তম ও অষ্টম শ্রেণির বই এখনো উপজেলা পর্যায়ে না পৌঁছানোয় বিতরণ শুরু হয়নি
  • মাধ্যমিকের সব বই না আসায় এ বছরও শিক্ষা কার্যক্রম ব্যাহত হওয়ার শঙ্কা শিক্ষকদের
নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহী
উপজেলার মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তার কার্যালয় থেকে বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের জন্য নতুন বই নিয়ে যান শিক্ষকেরা। গত বুধবার রাজশাহীর গোদাগাড়ীতে। ছবি: আজকের পত্রিকা
উপজেলার মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তার কার্যালয় থেকে বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের জন্য নতুন বই নিয়ে যান শিক্ষকেরা। গত বুধবার রাজশাহীর গোদাগাড়ীতে। ছবি: আজকের পত্রিকা

রাজশাহী জেলায় প্রাথমিক ও মাধ্যমিক বিদ্যালয়গুলোতে নতুন বই পৌঁছাতে শুরু করেছে। প্রাথমিক পর্যায়ের চাহিদার শতভাগ বই ইতিমধ্যে রাজশাহী এসেছে বলে জানিয়েছে জেলা শিক্ষা কার্যালয়। তবে মাধ্যমিক বিদ্যালয়গুলোর সব বই পৌঁছায়নি। প্রথম ধাপে ষষ্ঠ শ্রেণির সব বই এবং নবম শ্রেণির কিছু বই এসেছে। সপ্তম ও অষ্টম শ্রেণির বই এখনো উপজেলা পর্যায়ে না পৌঁছানোয় বিতরণ শুরু হয়নি।

জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, প্রাক-প্রাথমিক পর্যায়ে জেলায় বই দরকার ৪১ হাজার ৬৪০ সেট। আর প্রথম থেকে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত দরকার ১১ লাখ ১৯ হাজার ২০৪টি বই। এরই মধ্যে চাহিদার সব বই পাওয়া গেছে। ২১ ডিসেম্বর থেকে বইগুলো স্কুলে স্কুলে পাঠানো শুরু হয়েছে।

এদিকে জেলা শিক্ষা কার্যালয় জানিয়েছে, জেলায় ষষ্ঠ থেকে নবম শ্রেণি পর্যন্ত পাঠ্যবইয়ের চাহিদা প্রায় ২২ লাখ ৭ হাজার। সব বই এখনো পাওয়া যায়নি। যেগুলো এসেছে, সেগুলো উপজেলা শিক্ষা কার্যালয় থেকে স্কুলে স্কুলে বিতরণ করা হচ্ছে। বাকি বই আসার পরপরই বিতরণ করা হবে।

গত বুধবার রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলা শিক্ষা কার্যালয় থেকে মাধ্যমিক পর্যায়ের বই বিতরণ করতে দেখা যায়। বই সংগ্রহ করতে আসা শিক্ষকেরা জানান, গত শিক্ষাবর্ষে তিন-চার মাস দেরিতে সম্পূর্ণ বই হাতে পাওয়ায় পাঠদান কার্যক্রম চরমভাবে ব্যাহত হয়েছিল। এবার শিক্ষাবর্ষের শুরুতেই শিক্ষার্থীদের হাতে হাতে সব বই পৌঁছানোর প্রত্যাশা করছেন তাঁরা।

গোদাগাড়ী উপজেলা শিক্ষা অফিস জানিয়েছে, প্রথম ধাপে ষষ্ঠ শ্রেণির সব বই এবং নবম শ্রেণির কিছু বই সরবরাহ করা হয়েছে। তবে সপ্তম ও অষ্টম শ্রেণির বই এখনো উপজেলা পর্যায়ে না পৌঁছানোয় সেগুলো বিতরণ শুরু হয়নি। আগামী সপ্তাহের মধ্যে অবশিষ্ট বই পৌঁছানোর কথা রয়েছে।

জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা এ কে এম আনোয়ার হোসেন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘এবার প্রাথমিকের বই নিয়ে কোনো সংকট নেই। আমাদের চাহিদার শতভাগ বই আমরা পেয়েছি। এবার বছরের প্রথম দিনই শিক্ষার্থীরা হাতে নতুন বই পাবে।’

রাজশাহী জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা জায়েদুর রহমান বলেন, ‘নতুন শিক্ষাবর্ষ শুরুর আগেই শিক্ষার্থীরা সম্পূর্ণ পাঠ্যবই হাতে পাবে। তবে বই উৎসবের মাধ্যমে বিতরণ করা হবে কি না, সে বিষয়ে এখনো কোনো নির্দেশনা পাওয়া যায়নি।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

পর্যটকের বাড়তি চাপে ঠাঁই নেই হোটেল-মোটেলে

  • তিন দিনের ছুটিতে হোটেল-মোটেলের প্রায় সব কক্ষ বুকড
  • ২০২৫-কে বিদায় ও ২০২৬-কে স্বাগত জানাতে পর্যটকের চাপ আরও বাড়বে
  • বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই কক্সবাজারে যানজট
কক্সবাজার প্রতিনিধি
টানা তিন দিনের ছুটির কারণে কক্সবাজারে পর্যটকের উপচে পড়া ভিড়। গতকাল দুপুরে সমুদ্রসৈকতের সুগন্ধা পয়েন্টে। ছবি: আজকের পত্রিকা
টানা তিন দিনের ছুটির কারণে কক্সবাজারে পর্যটকের উপচে পড়া ভিড়। গতকাল দুপুরে সমুদ্রসৈকতের সুগন্ধা পয়েন্টে। ছবি: আজকের পত্রিকা

বড়দিন ও সাপ্তাহিক ছুটি মিলিয়ে আগামীকাল শনিবার পর্যন্ত টানা তিন দিন অফিস-আদালতে ছুটি চলছে। বার্ষিক পরীক্ষা শেষে কয়েক দিন ধরে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানও বন্ধ। এই লম্বা ছুটি কিংবা বিশেষ দিনে অনেকেই পরিবার-পরিজন নিয়ে বেড়াতে বের হয়েছেন। বরাবরের মতোই অবকাশযাপনে ভ্রমণপিপাসুরা এবারও দেশের প্রধান পর্যটনকেন্দ্র কক্সবাজারে ছুটে এসেছেন।

পর্যটনসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা বলছেন, শনিবার পর্যন্ত অন্তত ৫ লাখ পর্যটক কক্সবাজারে ভ্রমণ করবেন। তবে শনিবারেই চাপ কমবে না। পর্যটকের এই ঢল আগামী ১ জানুয়ারি পর্যন্ত থাকবে। এর মধ্যে ৩১ ডিসেম্বর কক্সবাজার সমুদ্রসৈকতে পুরোনো বছরকে বিদায় ও নতুন বছরকে স্বাগত জানাতে পর্যটকেরা ভিড় করবেন।

হোটেল, রিসোর্ট ও গেস্ট হাউসের মালিকেরা বলছেন, বুধবার বিকেল থেকেই দেশের নানা প্রান্ত থেকে পর্যটকেরা কক্সবাজারমুখী হয়েছেন। ইতিমধ্যে হোটেল-মোটেল, রিসোর্ট ও গেস্ট হাউসগুলোয় ৯০ থেকে ৯৫ শতাংশ কক্ষ বুকিং হয়ে গেছে।

কক্সবাজার হোটেল-মোটেল, রিসোর্ট ও গেস্ট হাউস অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক করিম উল্লাহ কলিম আজকের পত্রিকাকে বলেন, আগামী শনিবার পর্যন্ত শহরের তারকা মানের হোটেলগুলোয় শতভাগ কক্ষ বুকিং রয়েছে। মাঝারি মানের হোটেল ও রিসোর্টগুলোয় ৯০ থেকে ৯৫ শতাংশ কক্ষ বুকিং হয়ে গেছে।

সাগরপারের তারকা মানের হোটেল কক্স টুডেতে কক্ষ আছে ২৪৫টি। তাদের প্রায় সব কক্ষ শনিবার পর্যন্ত বুকিং আছে। হোটেলটির মহাব্যবস্থাপক (রিজার্ভেশন) আবু তালেব শাহ আজকের পত্রিকাকে বলেন, তিন দিনের ছুটিতে আশানুরূপ পর্যটক ভ্রমণে এসেছেন।

কক্সবাজার শহর, মেরিন ড্রাইভ, সেন্ট মার্টিন ও আশপাশের এলাকার ৬০০ হোটেল-মোটেল, রিসোর্ট, গেস্ট হাউসে প্রায় দুই লাখ পর্যটকের রাতযাপনের সুযোগ আছে। হোটেল-মোটেল, রিসোর্ট ও গেস্ট হাউস মালিক সমিতির সভাপতি আবুল কাশেম সিকদার বলেন, বছরের শেষ সময়ে আশানুরূপ পর্যটকের সাড়া পাওয়া যাচ্ছে। বিপুল পর্যটক সমাগমে যেন কেউ থাকা-খাওয়ায় বাড়তি অর্থ আদায় না করে তার জন্য পর্যটনসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীদের সতর্ক করা হয়েছে।

এদিকে গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেলে সমুদ্রসৈকতের কলাতলী, লাবণী ও সুগন্ধা পয়েন্ট ঘুরে দেখা গেছে, পর্যটকের আনাগোনায় তিন কিলোমিটার সৈকত মুখর। কোথাও তিল ধারণের ঠাঁই নেই। শান্ত সৈকতে কেউ গোসলে নেমেছেন, কেউ জেটস্কি করে দূর সাগরে ঘুরে বেড়াচ্ছেন। কেউ আবার চেয়ার-ছাতায় বসে প্রিয়জনদের সঙ্গে সমুদ্র দর্শনে সময় কাটাচ্ছেন। গোসলে নামা বিপুল পর্যটকদের নানাভাবে সতর্ক করছেন লাইফগার্ড ও বিচকর্মীরা। এ দিন সকাল থেকেই পর্যটকের বাড়তি চাপে কক্সবাজার বাস টার্মিনাল থেকে কলাতলী সড়ক, মেরিন ড্রাইভ ও শহরের প্রধান সড়কে যানজট সৃষ্টি হয়েছে।

পর্যটকেরা শহরের এই তিন পয়েন্টের পাশাপাশি মেরিন ড্রাইভ ধরে দরিয়ানগর, হিমছড়ি, ইনানী, পাটুয়ারটেক, টেকনাফ সৈকতে ভিড় করছেন বলে জানিয়েছেন জেলা প্রশাসনের বিচকর্মীদের সহকারী সুপারভাইজার বেলাল হোসেন।

কুমিল্লার হোমনা থেকে পরিবার নিয়ে বেড়াতে এসেছেন সরকারি কর্মকর্তা আবিদ হোসেন। তিনি বলেন, ‘শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ। এর মধ্যে বড়দিনের সঙ্গে সাপ্তাহিক ছুটি পড়েছে। ফলে বাচ্চাদের নিয়ে তিন দিনের জন্য ঘুরতে বেরিয়ে পড়লাম।’ তাঁর মতো পরিবার নিয়ে অনেকেই বেড়ানোর জন্য বের হয়েছেন।

ট্যুরিস্ট পুলিশ কক্সবাজার অঞ্চলের প্রধান ও অতিরিক্ত ডিআইজি আপেল মাহমুদ আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘ছুটিতে পর্যটকদের চাপ বাড়বে—বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে নিরাপত্তাব্যবস্থা গ্রহণ করেছে ট্যুরিস্ট পুলিশ। পাশাপাশি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা সার্বক্ষণিক টহলে রয়েছেন। কোথাও পর্যটক হয়রানির খবর পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

সিলেটে জুয়া খেলা অবস্থায় আটক ৭

সিলেট প্রতিনিধি
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

সিলেটে জুয়া খেলা অবস্থায় ৭ জনকে আটক করেছে পুলিশ। বৃহস্পতিবার (২৫ ডিসেম্বর) এক বিজ্ঞপ্তিতে বিষয়টি জানিয়েছেন সিলেট মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার (মিডিয়া) মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম।

পুলিশ জানায়, বুধবার বিকেলে সিলেটের কোতোয়ালি মডেল থানাধীন কানিশাইল ১ নম্বর রোডের মারুফ টি স্টল নামক দোকানে অভিযান পরিচালনা করে তির শিলং-জাতীয় জুয়া খেলা অবস্থায় তাঁদের আটক করা হয়।

আটক ব্যক্তিরা হলেন সিলেটের কোতোয়ালি মডেল থানাধীন কানিশাইলের সজীব মিয়ার কলোনির রমিজ আলীর ছেলে তাহের মিয়া (৩০), উসমান মিয়ার ছেলে শামীম (২০), ইমন মিয়ার কলোনির মো. আব্দুল করিম তালুকদারের ছেলে মো. স্বপন মিয়া (৫৫), রঙ্গ মিয়ার ছেলে জসিম (৪৫), জামাল উদ্দিনের ছেলে আল আমিন (২৭), আব্দুর রশিদের ছেলে মো. বাদল (৩৮) এবং আবুল কালামের ছেলে সুজাত মিয়া (৩৫)।

মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম জানান, তাঁদের আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

খুলনায় মা হত্যায় ছেলে গ্রেপ্তার

খুলনা প্রতিনিধি
মো. রিয়াদ খান।  ছবি: সংগৃহীত
মো. রিয়াদ খান। ছবি: সংগৃহীত

খুলনায় শিউলী বেগম হত্যা মামলায় ছেলে মো. রিয়াদ খানকে (২২) গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাব। বৃহস্পতিবার (২৫ ডিসেম্বর) বিকেল পৌনে ৪টার দিকে তাঁকে খুলনা র‌্যাব-৬ এবং ৭-এর যৌথ অভিযানে ফেনী জেলার সদর থানা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।

গ্রেপ্তার রিয়াদ শিউলী বেগমের একমাত্র ছেলে। এ সময় তাঁর কাছ থেকে ২ লাখ ৫ হাজার ৮০ টাকা, দুটি আইফোন, একটি স্মার্টফোন ও একটি এয়ারপড জব্দ করা হয়।

র‌্যাবের পাঠানো বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে জানা গেছে, নিহত শিউলি বেগম সৌদি আরবপ্রবাসী ছিলেন। গত ২৭ অক্টোবর দুই মাসের ছুটিতে বাংলাদেশে আসেন। পরে নগরীর ট্যাংক রোডের বাসিন্দা রবিউল ইসলামের বাড়ির নিচতলায় ছেলে রিয়াদ খান এবং দ্বিতীয় স্বামী সাগরকে নিয়ে বসবাস শুরু করেন।

দেশে আসার ১০-১২ দিন পরে উত্তরা ব্যাংক খুলনা শাখা থেকে পৌনে ৭ লাখ টাকা উত্তোলন করে আলমারিতে রেখে দেন।

৯ ডিসেম্বর রাতে শিউলী বেগমের বড় মেয়ে রুবিনা আক্তার এবং তাঁর স্বামী রাজিব রাতের খাবার খেয়ে বাড়িতে চলে যান। ১০ ডিসেম্বর সকাল থেকে শিউলী বেগমকে ফোনে না পেয়ে রুবিনা আক্তারকে খোঁজ নিতে বলেন তাঁর স্বামী।

কিন্তু খোঁজ নিয়ে তাঁর সন্ধান না পেয়ে ওই দিন রাতে স্থানীয়দের সহায়তায় তালা ভেঙে ঘর থেকে শিউলী বেগমের মরদেহ উদ্ধার করা হয়।

পরে তাঁর ঘর থেকে পৌনে ৭ লাখ টাকা উধাও হয়ে যায়। শিউলী বেগম হত্যার পর থেকে একমাত্র ছেলে রিয়াদ খানেরও কোনো সন্ধান পাওয়া যায়নি।

এ ঘটনায় নিহতের ভাই রায়হান গাজী বাদী হয়ে শিউলী বেগমের ছেলে রিয়াদ খানকে আসামি করে মামলা করেন। উন্নত প্রযুক্তির সহায়তায় র‌্যাব খুলনা-৬ ও ৭-এর একটি দল তাঁকে ফেনী সদর থেকে গ্রেপ্তার করে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত