Ajker Patrika

ঈদের ছুটিতে জবির হলে ছাত্রীরা, ‘ডেকে শাসালেন’ প্রভোস্ট

জবি সংবাদদাতা 
আপডেট : ১৬ জুন ২০২৪, ১৬: ২৬
ঈদের ছুটিতে জবির হলে ছাত্রীরা, ‘ডেকে শাসালেন’ প্রভোস্ট

ঈদুল আজহার ছুটিতে বাড়িতে না গিয়ে হলে অবস্থান করায় হলে থাকা ছাত্রীদের ডেকে নিয়ে শাসানোর অভিযোগ উঠেছে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব ছাত্রী হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. দীপিকা রাণী সরকার ও সহকারী হাউস টিউটর দীপিকা মজুমদারের বিরুদ্ধে। এসব নিয়ে অভিযোগ দিলে বা কথা বললে ছাত্রীদের হলের সিট বাতিলের হুমকিও দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ তুলেছেন ছাত্রীরা। 

গতকাল শনিবার দুপুর ১২টার দিকে হলের অফিসরুমে এ ঘটনা ঘটে। ভুক্তভোগী ছাত্রীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ঈদের পর পরীক্ষা থাকায় এবং অনেক ছাত্রী হিন্দু ধর্মাবলম্বী হওয়ায় ঈদের ছুটিতে বাড়িতে না গিয়ে হলেই থেকে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। ঈদের ছুটিতে হল বন্ধ রাখার কোনো সিদ্ধান্ত না আসায় প্রায় ২০ জনের মতো ছাত্রী বাড়িতে না গিয়ে হলেই অবস্থান করেন। 

শনিবার দুপুর ১২টার দিকে হলে অবস্থান করা ছাত্রীদের হল প্রভোস্টের অফিসরুমে ডেকে নেন প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. দীপিকা রাণী সরকার ও সহকারী হাউস টিউটর দীপিকা মজুমদার। এ সময় দু-তিনজন ছাত্রী সেখানে গেলে তাঁদের বকাঝকা করেন তাঁরা। পরে আরও কয়েকজন ছাত্রী গেলে তাঁদেরও বকাঝকা করা হয়। এ সময় ছাত্রীরা ঈদের ছুটিতে বাড়ি না যাওয়ায় স্টাফরা ছুটি পাননি বলে বকাঝকা করেন এবং ছাত্রীদের শাসান হল প্রভোস্ট ও হাউস টিউটর। 

হলের ডিউটি করতে গিয়ে প্রভোস্ট তাঁর মায়ের মৃত্যুবার্ষিকীতে যেতে পারেননি এমন উদাহরণ টেনে ছাত্রীদের বকাঝকা করা হয়। এসব নিয়ে মুখ খুললে কিংবা আন্দোলন করলে ছাত্রীদের হলের সিট বাতিল করে দেওয়া হবে বলেও হুমকি দেন হল প্রভোস্ট। এ ঘটনার পর থেকে ভয়ে এবং বাধ্য হয়ে হলে অবস্থান করা অনেক ছাত্রীই হল ত্যাগ করছেন। অনেকেই হল ত্যাগ করে ঢাকায় আত্মীয়ের বাসায় উঠেছেন। আবার অনেকেই নিজেদের বাড়ির দিকে রওনা হয়েছেন। 

নাম প্রকাশ না করার শর্তে হলে অবস্থান করা এক ছাত্রী বলেন, ‘আমার ঈদের পর পরীক্ষা থাকায় ও হিন্দু হওয়ায় আমি এবার ঈদের ছুটিতে বাড়িতে যাইনি। গতকাল (শনিবার) দুপুরে প্রভোস্ট ম্যাম এবং সহকারী হাউস টিউটর দীপিকা মজুমদার ম্যাম আমাদের অফিসে ডাকেন। আমরা সেখানে গেলে, কেন ছুটিতেও এখানে আছি, তা নিয়ে বকাঝকা করেন। আমাদের কারণে স্টাফরা ছুটি পাননি, প্রভোস্ট ম্যাম তাঁর মায়ের মৃত্যুবার্ষিকীতে যেতে পারেননি—এসব উদাহরণ টেনে টেনে আমাদের বকাঝকা করেন। পরের সব ঈদেই হল বন্ধ রাখা হবে বলে তিনি আমাদের বলেন। এসব নিয়ে কথা বললে বা আন্দোলন করলে হলের সিট বাতিল করে দেওয়া হবে বলেও তিনি হুমকি দেন।’ 

হলে অবস্থানরত আরেক ছাত্রী নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ‘গতকালের এ ঘটনার পর থেকে অনেকেই ভয়ে হল ছেড়ে চলে যাচ্ছেন। যাঁদের বাসা দূরে, শুধু তাঁরাই যেতে পারছেন না। কেউ কেউ ঢাকার আত্মীয়স্বজনের বাসায় যাচ্ছেন। তাঁরা আমাদের অভিভাবক। আমাদের সুবিধা-অসুবিধা তাঁরা না বুঝলে আর কে বুঝবেন? অথচ এভাবে ডেকে আমাদের বকাঝকা করলেন। আমরা ভয়ে আছি, এসব কথা বলার কারণে আমাদের আবার ডেকে নিয়ে হলের সিট বাতিল করে দেয় কি না।’ 

এ বিষয়ে জানতে সহকারী হাউস টিউটর দীপিকা মজুমদারকে কল দেওয়া হলে তিনি অভিযোগের বিষয়ে কোনো বক্তব্য দিতে অস্বীকার করেন। 

হল প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. দীপিকা রাণী সরকার বলেন, ‘তাদের (শিক্ষার্থীদের) বকাঝকা করা হয়েছে এটা মিথ্যা কথা। আমি আরও তাদের ডেকে নিরাপদে থাকার জন্য পরামর্শ দিয়েছি। তাদের বলেছি, দেখো, আমার মায়ের মৃত্যুবার্ষিকী, সেখানে না গিয়ে তোমাদের দেখতে চলে এসেছি। তোমরা আমার মেয়ের মতো। সবাই সাবধানে থাকবে। তারা হয়তো সেটা ভুল বুঝে উল্টাপাল্টা কথা বলে অভিযোগ করেছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

আমতলীতে ধান কাটতে বাধা দেওয়ায় চার নারীসহ পাঁচজনকে কুপিয়ে জখম

আমতলী (বরগুনা) প্রতিনিধি 
আহতদের প্রথমে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়। ছবি: আজকের পত্রিকা
আহতদের প্রথমে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়। ছবি: আজকের পত্রিকা

বরগুনার আমতলীতে ধান কাটতে বাধা দেওয়ায় চার নারীসহ পাঁচজনকে কুপিয়ে জখম করা হয়েছে। শুক্রবার বিকেলে দক্ষিণ তক্তাবুনিয়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। গুরুতর আহতদের আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ (শেবাচিম) হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

স্থানীয় সূত্র ও ভুক্তভোগীদের বক্তব্যে জানা যায়, দক্ষিণ তক্তাবুনিয়া গ্রামের মন্নাফ হাওলাদার ও জামাল গাজীর মধ্যে ১৫ একর জমি নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলছে। গত ১১ নভেম্বর ঘাস কাটাকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের সংঘর্ষ হয়। এ ঘটনায় উভয় পক্ষ আদালতে মামলা করে। জামাল গাজীর করা একটি মামলায় মন্নাফ হাওলাদারসহ ১২ জন কারাগারে রয়েছেন।

এদিকে আজ শুক্রবার বিকেলে ওই জমির ধান কাটতে যান জামাল গাজীর ভাই ও হলদিয়া ইউনিয়ন যুবদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আরিফ গাজীর নেতৃত্বে কয়েকজন। এ সময় মন্নাফ হাওলাদারের বাড়ির নারীরা বাধা দিলে তাঁদের ওপর হামলা চালানো হয়। ধারালো অস্ত্রের কোপে গুরুতর আহত হন কদভানু (৪৫), শেফালী (৪০), নুর নাহার (৩৫), মমতাজ (৭০) ও সাদ্দাম হোসেন (৩০)। ভুক্তভোগীরা জানান, ৯৯৯-এ ফোন দিলে পুলিশ গিয়ে তাঁদের উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠায়। তাঁদের মধ্যে কদভানু ও নুর নাহারের অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন।

মন্নাফ হাওলাদারের জামাতা শহীদুল ইসলাম অভিযোগ করেন, আহতদের বহনকারী অ্যাম্বুলেন্স উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সামনে আসামাত্রই আরিফ গাজীর লোকজন তাঁদের বাধা দেয়। এ সময় তারা একজনকে মারধর করে। আহতদের আমতলী হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে উন্নত চিকিৎসার জন্য বরিশাল শেবাচিম হাসপাতালে পাঠান চিকিৎসকেরা। এ ঘটনায় জড়িত সন্দেহে পুলিশ শুক্রবার রাত ৮টার দিকে জাকারিয়া, সগির ও লিপি বেগম নামের তিনজনকে আটক করেছে।

তবে অভিযোগ অস্বীকার করে আরিফ গাজী বলেন, ‘ঘটনাস্থলে আমি ছিলাম না। আমার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ মিথ্যা।’

আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার রাশেদ মাহমুদ রোকনুজ্জামান জানান, গুরুতর আহত পাঁচজনকে বরিশালে পাঠানো হয়েছে। দুজনের অবস্থা গুরুতর।

আমতলী থানার ওসি দেওয়ান জগলুল হাসান জানান, ঘটনার সঙ্গে জড়িত সন্দেহে তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। অন্যদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

পর্যটক বাড়ছে স্টিমার পিএস মাহসুদে, আশাবাদী বিআইডব্লিউটিসি

নিজস্ব প্রতিবেদক, বরিশাল
দ্বিতীয় ট্রিপে স্টিমার পিএস মাহসুদ বরিশাল পৌঁছার পর নামছেন পর্যটকেরা। ছবি: আজকের পত্রিকা
দ্বিতীয় ট্রিপে স্টিমার পিএস মাহসুদ বরিশাল পৌঁছার পর নামছেন পর্যটকেরা। ছবি: আজকের পত্রিকা

দ্বিতীয় ট্রিপে পর্যটক বেড়েছে স্টিমার পিএস মাহসুদের। আজ শুক্রবার সকালে ৭৩ জন পর্যটক নিয়ে বরিশালে পৌঁছায় মাহসুদ। এতে আশাবাদী হয়ে উঠছে বিআইডব্লিউটিসি কর্তৃপক্ষ। স্টিমার সার্ভিসে ঘুরে দাঁড়াতে চায় তারা।

গত ২৮ নভেম্বর থেকে ঢাকা-বরিশাল রুটে সপ্তাহে এক দিন করে ট্যুরিস্ট সার্ভিস দিচ্ছে ঐতিহ্যের প্যাডেলচালিত স্টিমার পিএস মাহসুদ। প্রথম যাত্রায় ২৩ জন পর্যটক হওয়ায় এই সার্ভিস টিকিয়ে রাখা নিয়ে হতাশা দেখা দিয়েছিল।

স্টিমার মাহসুদের ক্লার্ক নিপু জানান, আজ ঢাকা থেকে বরিশাল ৭৩ জন যাত্রী নিয়ে রওনা করেছেন তাঁরা। এর মধ্যে চাঁদপুরে কিছু যাত্রী নেমেছেন। এই ট্রিপে প্রথম শ্রেণির কেবিনে ২০ জন, দ্বিতীয় শ্রেণির কেবিনে ১৬ জন এবং চেয়ার সিটে ৩৭ জন এসেছেন।

আজ ঢাকা থেকে আসা পর্যটক আব্দুর রহমান বলেন, ভ্রমণের জন্য নিঃসন্দেহে মাহসুদের সার্ভিস ভালো।

স্টিমার মাহসুদের মাস্টার সালাউদ্দিন আহমেদ জানান, আগের তুলনায় পর্যটক বাড়া শুরু করেছে। তাঁরা আজ সকাল সাড়ে ৮টায় ঢাকা থেকে ছেড়ে সন্ধ্যার পর বরিশালে পৌঁছেছেন।

বিআইডব্লিউটিসি সূত্রে জানা গেছে, গত ২১ নভেম্বর ঢাকা থেকে বরিশালে আসার কথা ছিল স্টিমার মাহসুদের। কিন্তু পর্যটক না হওয়ায় তা বাতিল করা হয়। এরপর ২৮ নভেম্বর মাত্র ২৩ জন পর্যটক নিয়ে বরিশালে পৌঁছায় মাহসুদ। ওই যাত্রায় বরিশাল কিংবা চাঁদপুর থেকে কোনো পর্যটক ওঠেননি। এতে এই ট্যুরিস্ট সার্ভিস নিয়ে হতাশ ছিল বিআইডব্লিউটিসি।

স্টিমার পিএস মাহসুদের ড্রাইভার মো. সোহাগ বলেন, প্রতিটি ট্রিপে বরিশাল থেকে ঢাকা ১০ ঘণ্টা এবং ঢাকা থেকে বরিশাল ৯ ঘণ্টা সময় লেগেছে। তিনি বলেন, আপডাউনে (আসা ও যাওয়া) পিএস মাহসুদের জন্য জ্বালানি তেল দরকার হয়েছে প্রায় ২ হাজার ২০০ লিটার। এতে জেনারেটর, মেইন ইঞ্জিনসহ সব কার্যক্রম সচল ছিল। প্রতি লিটার ডিজেল ১০০ টাকা দরে আপডাউনে মাহসুদের তেল খরচ হয়েছে ২ লাখ ২০ হাজার টাকার। তাঁর মতে, প্রথম ট্রিপে ১ লাখ টাকার কম ভাড়া পেয়েছে স্টিমার মাহসুদ। বাকিটা ভর্তুকি দিতে হয়েছে।

বিআইডব্লিউটিসির বরিশালের ব্যবস্থাপক মো. জসীম উদ্দিন জানান, দ্বিতীয় ট্রিপে পিএস মাহসুদ ঢাকা থেকে বরিশালে ৭৩ পর্যটক নিয়ে আসে। প্রথমবার মাত্র ২৩ পর্যটক হয়েছিল। তিনি বলেন, ‘আমরা আশাবাদী যে স্টিমারে পর্যটক বাড়বে।’

প্রসঙ্গত, ২০২২ সালের সেপ্টেম্বরে ঢাকা-বরিশাল রুটে বিআইডব্লিউটিসির প্যাডেলচালিত স্টিমার সার্ভিস বন্ধ হয়ে যায়। তিন বছর পর সেই স্টিমার যাত্রী পরিবহনে ফেরাতে কয়েক মাস ধরে তৎপরতা চলে। শত বছরের পুরোনো জাহাজটি মেরামতে ব্যয় করা হয় প্রায় ৭০ লাখ টাকা।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

সীতাকুণ্ডে বালু উত্তোলনে ব্যবহৃত ড্রেজার ও বাল্কহেড পুড়িয়ে দিল বিক্ষুব্ধ এলাকাবাসী

প্রতিনিধি (চট্টগ্রাম) সীতাকুণ্ড
কুমিরা ফেরিঘাটসংলগ্ন সাগর উপকূলে বালু উত্তোলনে বসানো সরঞ্জাম আজ দুপুরে পুড়িয়ে দেন এলাকাবাসী। ছবি: আজকের পত্রিকা
কুমিরা ফেরিঘাটসংলগ্ন সাগর উপকূলে বালু উত্তোলনে বসানো সরঞ্জাম আজ দুপুরে পুড়িয়ে দেন এলাকাবাসী। ছবি: আজকের পত্রিকা

চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনে ব্যবহৃত খননযন্ত্র ও বালুবহনকারী জাহাজ পুড়িয়ে দিয়েছেন বিক্ষুব্ধ এলাকাবাসী। আজ শুক্রবার জুমার নামাজের পর (দুপুরে) কুমিরা ফেরিঘাটসংলগ্ন সাগর উপকূলে বালু উত্তোলনে বসানো এসব সরঞ্জাম পুড়িয়ে দেন তাঁরা।

এলাকাবাসী জানান, দীর্ঘদিন ধরে একটি চক্র বঙ্গোপসাগরের সন্দ্বীপ চ্যানেল থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করে বিক্রি করছিল। ফলে উপকূল সুরক্ষায় নির্মিত বেড়িবাঁধ ও চাষাবাদের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হচ্ছে। শুক্রবার দুপুরে এলাকাবাসী একত্র হয়ে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনে ব্যবহৃত খননযন্ত্রসহ সব সরঞ্জাম আগুনে পুড়িয়ে দেয়। তবে এ সময় বালু উত্তোলনে জড়িত কাউকে পাওয়া যায়নি বলে জানিয়েছেন তাঁরা।

স্থানীয় বাসিন্দা মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম বলেন, সাগর থেকে একটি চক্র অবৈধভাবে খননযন্ত্র ও বালুবহনকারী জাহাজ দিয়ে বালু উত্তোলন করে বাইরে বিক্রি করছে। অপরিকল্পিতভাবে বালু উত্তোলনের ফলে ভাঙছে উপকূলীয় বেড়িবাঁধ। ধ্বংস হচ্ছে পরিবেশ।

স্থানীয় জেলে সন্তোষ কুমার জলদাস বলেন, বালু উত্তোলনের ফলে সাগরের গতিপথ পরিবর্তন হচ্ছে। ফলে মাছ ধরার নৌকা রাখার জায়গাগুলো বিলীন হচ্ছে।

কুমিরা নৌ পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ (পরিদর্শক) ওয়ালী উদ্দিন আকবর বলেন, খননযন্ত্র ও বালুবহনকারী জাহাজ পুড়িয়ে দেওয়ার খবর জানার পর ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। তবে বালু উত্তোলনে জড়িত কাউকে পাওয়া যায়নি। তদন্ত সাপেক্ষে বালু উত্তোলনে জড়িত ব্যক্তিদের চিহ্নিত করে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

এর আগে গত বুধবার উপজেলার ভাটিয়ারী এলাকায় একটি শিপইয়ার্ডে অবৈধভাবে সাগর থেকে বালু উত্তোলনকারীদের ধাওয়া দেয় এলাকাবাসী।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

শুধু সরকারি খাতের ভর্তুকি দিয়ে কারখানা চলতে পারে না: শিল্প উপদেষ্টা

চুয়াডাঙ্গা প্রতিনিধি­
কেরু অ্যান্ড কোম্পানির ২০২৫-২৬ আখমাড়াই মৌসুমের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে কথা বলেন শিল্প উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান। ছবি: আজকের পত্রিকা
কেরু অ্যান্ড কোম্পানির ২০২৫-২৬ আখমাড়াই মৌসুমের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে কথা বলেন শিল্প উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান। ছবি: আজকের পত্রিকা

ফ্যাসিবাদী সরকারের সময় বন্ধ করে দেওয়া কলকারখানাগুলো পুনরায় চালুর উদ্যোগ নিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার। তবে এ ক্ষেত্রে বিনিয়োগ দরকার। শুধু সরকারি খাতের ভর্তুকি দিয়ে কারখানা চলতে পারে না। এ জন্য বিনিয়োগ আনার চেষ্টা চলছে। আজ শুক্রবার (৫ ডিসেম্বর) বিকেলে চুয়াডাঙ্গায় কেরু অ্যান্ড কোম্পানির কেইন ক্যারিয়ারে আখ নিক্ষেপের মাধ্যমে ২০২৫-২৬ মৌসুমের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন শিল্প উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান। উদ্বোধন উপলক্ষে মিলের কেইন ক্যারিয়ার প্রাঙ্গণে আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন শিল্প উপদেষ্টা আদিলুর।

শিল্প উপদেষ্টা আরও বলেন, ‘গত ১৫ বছরে ফ্যাসিবাদী সরকার দেশের যে অবস্থা করে গেছে, তা থেকে স্বাভাবিক অবস্থায় আনতে অনেকটা সময় লেগেছে। নতুন করে শিল্পকারখানা প্রতিষ্ঠার জন্য বিডা ও শিল্প মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে দেশি ও বিদেশি উদ্যোক্তাদের সঙ্গে যোগাযোগ চলছে। হয়তো আমরা থাকব না, কিন্তু আমাদের কাজের ফলাফলে আপনারা নিশ্চয়ই খুশি হবেন।’

আদিলুর রহমান খান সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে আরও বলেন, ‘চিনিকলটির আধুনিকায়ন এবং আখমাড়াই ও চিনি উৎপাদন যন্ত্রপাতি প্রতিস্থাপনের বিএমআরআই প্রকল্পটি (আধুনিকায়ন) অচিরেই কার্যক্রম শুরু করবে। আমি আশা করেছিলাম, আজই বিএমআরআই চালু হবে। পরে জানলাম, কিছু কাজ বাকি আছে। তবে কর্তৃপক্ষ আমাকে আশ্বস্ত করেছে, অচিরেই এটি কার্যক্রমে ফিরিয়ে আনা হবে। খুব দ্রুত আমরা প্রকল্পটি চালু করব।’

কেরু অ্যান্ড কোম্পানির ২০২৫-২৬ আখমাড়াই মৌসুমের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে কথা বলেন শিল্প উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান। ছবি: আজকের পত্রিকা
কেরু অ্যান্ড কোম্পানির ২০২৫-২৬ আখমাড়াই মৌসুমের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে কথা বলেন শিল্প উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান। ছবি: আজকের পত্রিকা

উপদেষ্টা উল্লেখ করেন, আখচাষি, কৃষক ও অস্থায়ী শ্রমিকদের সমস্যা সমাধান এবং উৎপাদন বাড়ানোর লক্ষ্যে সরকার ইতিমধ্যে বাস্তবসম্মত পাঁচ বছরের রোডম্যাপ হাতে নিয়েছে।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ চিনি ও খাদ্যশিল্প করপোরেশনের চেয়ারম্যান এবং শিল্প মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব রশিদুল হাসান। বিশেষ অতিথি ছিলেন খুলনা রেঞ্জের ডিআইজি রেজাউল হক। উপস্থিত ছিলেন চুয়াডাঙ্গার জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ কামাল হোসেন, পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মনিরুল ইসলাম এবং সার্বিক ব্যবস্থাপনায় ছিলেন মিলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক রাব্বিক হাসান।

২০২৫-২৬ মৌসুমে মাড়াই দিবস ধরা হয়েছে ৬৯ দিন। এই মৌসুমে ৭৬ হাজার টন আখ মাড়াই করার মাধ্যমে ৪ হাজার ২৫৬ টন চিনি উৎপাদন করার লক্ষ্য নির্ধারণ করেছে মিল কর্তৃপক্ষ। চিনি আহরণের হার ধরা হয়েছে ৫.০৬ শতাংশ।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত