Ajker Patrika

সাড়ে ১০ হাজার কোটির টানেল হলো, কিন্তু চট্টগ্রাম–কক্সবাজার দূরত্ব ৫৫ কিমি কমল না

  • চট্টগ্রাম-কক্সবাজার সড়কের দূরত্ব কমল না ৫৫ কিমি
  • টানেল জংশন উন্নয়নে সিডিএর ৬৪৮ কোটি টাকার প্রকল্প
সবুর শুভ, চট্টগ্রাম 
কর্ণফুলী নদীর তলদেশে নির্মিত বঙ্গবন্ধু টানেলের আনোয়ারা প্রান্তে নির্মাণাধীন সংযোগ সড়ক। সম্প্রতি আনোয়ারার কালা বিবি দিঘির মোড় এলাকায়। ছবি: আজকের পত্রিকা
কর্ণফুলী নদীর তলদেশে নির্মিত বঙ্গবন্ধু টানেলের আনোয়ারা প্রান্তে নির্মাণাধীন সংযোগ সড়ক। সম্প্রতি আনোয়ারার কালা বিবি দিঘির মোড় এলাকায়। ছবি: আজকের পত্রিকা

অনেক সম্ভাবনা নিয়ে চট্টগ্রামের কর্ণফুলী নদীর তলদেশে ১০ হাজার ৬৯০ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মাণ করা হয় টানেল। নির্মাণের এক বছর পার হলেও দুই পাড়ে এখনো রয়ে গেছে অনেক ‘অপূর্ণতা’। কিন্তু আয় কম হওয়ায় সেই অপূর্ণতাগুলো পূরণে আগ্রহ হারাচ্ছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষও।

অপূর্ণতার মধ্যে রয়েছে পতেঙ্গা প্রান্তে যানবাহন চলাচল নির্বিঘ্ন ও গতিশীল করতে নতুন প্রকল্প বাস্তবায়নে তোড়জোড় এবং ফায়ার স্টেশন চালু না হওয়া। এ ছাড়া আনোয়ারা প্রান্তে অসম্পূর্ণ সংযোগ সড়কের কাজ, ফায়ার স্টেশন চালু, প্রস্তাবিত থানা নির্মাণ এবং বাঁশখালী উপজেলার মূল সড়ক সম্প্রসারণের মাধ্যমে চট্টগ্রাম থেকে কক্সবাজারের দূরত্ব ৫৫ কিলোমিটার কমিয়ে আনার প্রকল্পগুলো অসম্পূর্ণ।

এ বিষয়ে নির্বাহী প্রকৌশলী (টানেল, অ্যাপ্রোচ রোড ও সার্ভিস এরিয়া) মো. নাছির উদ্দিন জানান, আনোয়ারা প্রান্তে অ্যাপ্রোচ রোডসহ দুই প্রান্তের আরও কিছু কাজ বাকি রয়েছে। তবে বর্তমানে টানেলের সার্বিক ব্যবস্থাপনায় কোনো ধরনের সমস্যা হচ্ছে না।

এদিকে চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (সিডিএ) থেকে প্রাপ্ত তথ্যে দেখা যায়, পতেঙ্গা প্রান্তে টানেলের মুখে যান চলাচল নির্বিঘ্ন ও গতিশীল রাখতে ৬৪৮ কোটি টাকার একটি প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে সিডিএ। সিডিএর অধীনে ইতিমধ্যে বাস্তবায়িত হওয়া চিটাগং সিটি আউটার রিং রোড প্রকল্পের সঙ্গে সংযুক্ত হওয়া নতুন প্রকল্পটি অনুমোদিত হয় গত বছরের ৬ জুন।

এ বিষয়ে প্রকল্প পরিচালকের দায়িত্বে থাকা সিডিএর প্রধান প্রকৌশলী কাজী হাসান বিন শামস বলেন, টানেলের প্রবেশমুখে যানবাহন ঢোকা ও বের হওয়ার সময় যাতে কোনো ধরনের বিপত্তি না ঘটে, সে জন্যই এ প্রকল্প। এর মেয়াদ ২০২৬ সালের জুন পর্যন্ত।

টানেলের এক প্রান্তে (চট্টগ্রাম শহর) পতেঙ্গা ও আরেক প্রান্তে (আনোয়ারা উপজেলা) রয়েছে কর্ণফুলী থানা এলাকা। টানেলকেন্দ্রিক পুলিশি নিরাপত্তাব্যবস্থা নিশ্চিত করার জন্য দুই প্রান্তে দুটি থানার প্রস্তাব প্রথম দিকে থাকলেও দুই প্রান্তে ফাঁড়ি স্থাপন করে নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হয়েছিল এত দিন। জনবল হিসেবে ছিল ছয়জন এএসআই, দুজন নায়েক ও ৩৫ কনস্টেবল। সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, পতেঙ্গা প্রান্তের ফাঁড়িটি থানায় রূপান্তর হলেও আনোয়ারা প্রান্তে এখনো হয়নি।

এ বিষয়ে সিএমপির বন্দর জোনের ডিসি শাকিলা সোলতানা বলেন, টানেলের দুই প্রান্তে প্রস্তাবিত দুই থানার মধ্যে পতেঙ্গা প্রান্তের ফাঁড়িটিকে থানা করা হয়েছে।

আনোয়ারা প্রান্তে ফাঁড়ি দিয়েই কাজ চলছে। অগ্নি নিরাপত্তার অংশ হিসেবে টানেলের দুই প্রান্তে দুটি ফায়ার স্টেশন নির্মাণ করা হয়েছে। ছোটখাটো আগুনের ঘটনা ঘটলে প্রথমে সিসিসিসি কর্তৃপক্ষ নিজেরা কন্ট্রোল করবে। আগুন যদি বড় হয় তাহলে ফায়ার স্টেশনকে ডাকা হবে। দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছার বিষয়টি মাথায় রেখে টানেলের একেবারে কাছাকাছি স্থানে স্থাপন করা এসব ফায়ার স্টেশনে এখনো জনবল নিয়োগ হয়নি বলে জানান চট্টগ্রাম ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের উপপরিচালক দিনমনি শর্মা।

এদিকে মূল টানেলের সঙ্গে পতেঙ্গা প্রান্তে দশমিক ৫৫০ কিলোমিটার এবং আনোয়ারা প্রান্তে ৪ দশমিক ৮ কিলোমিটার সংযোগ সড়ক রয়েছে। এর মধ্যে আনোয়ারা প্রান্তের সংযোগ সড়ক ছয় লেন হলেও দুই পাশের দুই লেনের কাজ এখনো বাকি। ক্রমাগত লোকসান গুনতে থাকায় এ কাজ সম্পন্ন করতে খুব একটা আগ্রহ দেখাচ্ছে না সড়ক ও জনপথ বিভাগ।

এ বিষয়ে সংযোগ সড়ক নির্মাণ প্রকল্পের সঙ্গে সম্পৃক্ত নির্বাহী প্রকৌশলী পিন্টু চাকমা জানান, সংযোগ সড়ক নির্মাণকাজের ২০ শতাংশ এখনো বাকি রয়েছে। পুরো কাজ সম্পন্ন হলে যানবাহন চলাচল আরও গতি পাবে।

অন্যদিকে কক্সবাজারের মহেশখালী গভীর সমুদ্রবন্দরকে চট্টগ্রাম বন্দর ও চট্টগ্রামের সঙ্গে জুড়ে দিয়ে অর্থনীতি ও যোগাযোগের দুয়ার উন্মোচন করতে বাঁশখালী উপজেলার মূল সড়ক কমপক্ষে চার লেন করে গড়ে তোলার গুরুত্বের কথা জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। এতে করে চট্টগ্রামের সঙ্গে কক্সবাজারের দূরত্ব ৫৫ কিলোমিটার কমে যেত। টানেল প্রকল্প বাস্তবায়নে সেদিকে যাওয়া হয়নি। ফলে আয় বাড়াতে পারছে না টানেলটি। বাস্তবায়নের আগে করা সমীক্ষা অনুযায়ী, টানেল চালুর পর প্রথম বছরে যেখানে প্রতিদিন সাড়ে ১৮ হাজার গাড়ি চলাচল করার কথা ছিল, সেখানে চলছে ৪ হাজারের কম। এ হিসাবে প্রতিদিন টোল থেকে ১০ লাখ ৩৭ হাজার টাকা আয় হলেও রক্ষণাবেক্ষণ ও পরিচালন খরচ হচ্ছে ৩৭ লাখ ৪৬ লাখ টাকা। এক বছরে (২৯ অক্টোবর পর্যন্ত) আয়-ব্যয়ের ব্যবধান দাঁড়িয়েছে প্রায় ১০০ কোটি টাকা।

সুশাসনের জন্য নাগরিক চট্টগ্রামের সম্পাদক আখতার কবির চৌধুরী বলেন, দক্ষিণ চট্টগ্রামের বাঁশখালীর মূল সড়ক সম্প্রসারণ করলে চট্টগ্রাম-কক্সবাজারের মধ্যে ৫৫ কিলোমিটার দূরত্ব কমে যেত। পণ্য পরিবহন ও যাতায়াতে সময় এবং অর্থ দুটোই সাশ্রয় হবে। কিন্তু পরিপাটি পরিকল্পনা ও অংশীজনের সঙ্গে আলোচনা না করে টানেল প্রকল্প বাস্তবায়নের ফলে এটি কাজে আসছে না।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

সখীপুরে নিখোঁজের ৭ ঘণ্টা পর বন থেকে উদ্ধার শিশুটি মারা গেছে

সখীপুর (টাঙ্গাইল) প্রতিনিধি 
নিহত শিশু শামীম। ছবি: সংগৃহীত
নিহত শিশু শামীম। ছবি: সংগৃহীত

টাঙ্গাইলের সখীপুরে নিখোঁজের ৭ ঘণ্টা পর বন থেকে রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার হওয়া শিশু শামীম (১০) মারা গেছে। উদ্ধারের তিন দিন পর গতকাল বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে ঢাকার একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সে মারা যায়। আজ শুক্রবার সকালে লাশটি ময়নাতদন্তের জন্য টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।

নিহত ব্যক্তির মামা সাব্বির হোসেন ও সখীপুর থানা-পুলিশ মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। নিহত শামীম উপজেলার কালিয়ানপাড়া গ্রামের শাহিন আলমের ছেলে ও স্থানীয় কীর্তনখোলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের তৃতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থী ছিল।

নিহত শিশুর পরিবার ও স্থানীয় বাসিন্দা সূত্রে জানা গেছে, গত সোমবার দুপুর ১২টার দিকে শামীম বাড়ি থেকে বের হয়। দীর্ঘ সময় পেরিয়ে গেলেও ফিরে না আসায় পরিবারের সদস্যরা সম্ভাব্য বিভিন্ন স্থানে খোঁজাখুঁজি করেন। একপর্যায়ে তাঁরা বাড়ির আশপাশের বনাঞ্চলে অনুসন্ধান চালান। পরে রাত ৮টার দিকে বাড়ি থেকে প্রায় আধা কিলোমিটার দূরে একটি বন থেকে শামীমকে রক্তাক্ত ও অচেতন অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। রাত ৯টার দিকে তাকে সখীপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়। সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকার ধানমন্ডিতে একটি বেসরকারি হাসপাতালে নেওয়া হয়েছিল।

নিহত শামীমের মামা সাব্বির হোসেন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমরা প্রাথমিকভাবে ধারণা করেছিলাম শিয়ালের আক্রমণে এমন হয়েছে। কিন্তু হাসপাতালে নেওয়ার পর চিকিৎসকেরা জানান, এটি শেয়াল-কুকুরের আক্রমণের চিহ্ন নয়, শিশুটির মাথা ও শরীরের আঘাত করা হয়েছে।’

সখীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. হেলাল উদ্দিন বলেন, নিহত শামীমের লাশ ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছে। তদন্ত রিপোর্ট পেলে মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানা যাবে। এ বিষয়ে পরিবারের পক্ষ থেকে মামলার প্রস্তুতি চলছে বলেও জানান এই কর্মকর্তা।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

দুমকীতে অটো-টমটম সংঘর্ষে নিহত ২, আহত ২

দুমকী (পটুয়াখালী) প্রতিনিধি
দুমড়েমুচড়ে যাওয়া গাড়ি। ছবি: আজকের পত্রিকা
দুমড়েমুচড়ে যাওয়া গাড়ি। ছবি: আজকের পত্রিকা

পটুয়াখালীর দুমকীতে অটোরিকশা ও সিমেন্টবাহী টমটমের সংঘর্ষে দুজন নিহত ও দুজন আহত হয়েছে। আজ শুক্রবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে লেবুখালী-বাউফল মহাসড়কের রাজাখালী (স্থানীয় নাম পিছাখালী ব্রিজ) এলাকায় এই দুর্ঘটনা ঘটে।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বগা থেকে আসা যাত্রীবাহী অটোরিকশা বিপরীত দিক থেকে আসা সিমেন্টবাহী টমটমের সঙ্গে মুখোমুখি সংঘর্ষে দুমড়েমুচড়ে যায়। এতে ঘটনাস্থলে ছয় বছরের রবিউল নিহত হন। আহত ব্যক্তিদের উদ্ধার করে হাসপাতালে নেওয়া হলে ৬০ বছর বয়সী ইব্রাহিম খানকে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। গুরুতর আহত সুমন সরদার (২৫) ও আব্দুল কাদেরকে (৫০) বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, আহত আব্দুল কাদেরের অবস্থা আশঙ্কাজনক। সুমনের একটি হাত সম্পূর্ণ ভেঙে গেছে। নিহত ও আহত ব্যক্তিদের বাড়ি বাউফল উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে।

দুমকী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সেলিম উদ্দীন জানান, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। ঘটনাস্থল থেকে দুর্ঘটনাকবলিত অটোরিকশা ও টমটমটিকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসা হয়েছে। নিহত ব্যক্তির পরিবার অভিযোগ করলে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

দৌলতপুর সীমান্তে ভারতীয় নাগরিক পুশ ইনের চেষ্টা: ব্যর্থ হয়ে ১৪ জনকে ফেরত নিল বিএসএফ

দৌলতপুর (কুষ্টিয়া) প্রতিনিধি 
১৪ জন ভারতীয় নাগরিককে বাংলাদেশে পুশ ইনের চেষ্টা করে বিএসএফ। শূন্য লাইন থেকে গতকাল দুপুরে তোলা। ছবি: আজকের পত্রিকা
১৪ জন ভারতীয় নাগরিককে বাংলাদেশে পুশ ইনের চেষ্টা করে বিএসএফ। শূন্য লাইন থেকে গতকাল দুপুরে তোলা। ছবি: আজকের পত্রিকা

আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে সারা দেশে যখন আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে প্রশাসনের কঠোর নজরদারি চলছে, ঠিক সেই সময় কুষ্টিয়ার দৌলতপুর সীমান্ত দিয়ে ১৪ জন ভারতীয় নাগরিককে বাংলাদেশে পুশ ইনের চেষ্টা চালিয়েছে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ)। তবে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) তৎপরতায় ওই চেষ্টা ব্যর্থ হয় এবং পতাকা বৈঠকের মাধ্যমে ১৪ ভারতীয় নাগরিককে জিরো লাইন থেকে ফেরত নিয়ে যায় বিএসএফ।

গতকাল বৃহস্পতিবার (২৫ ডিসেম্বর) দিবাগত গভীর রাতে দৌলতপুর উপজেলার রামকৃষ্ণপুর ইউনিয়নের রামকৃষ্ণপুর বিওপির সীমান্ত দিয়ে ভারতীয় নাগরিকদের বাংলাদেশে প্রবেশ করানোর চেষ্টা করা হয়।

বিজিবি সূত্র জানায়, বিএসএফের আহ্বানে কোম্পানি কমান্ডার পর্যায়ে একটি পতাকা বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। কুষ্টিয়া ব্যাটালিয়নের (৪৭ বিজিবি) অধীন মহিষকুন্ডি বিওপিতে কর্মরত সুবেদার আসাদুজ্জামানের নেতৃত্বে ছয় সদস্যের বিজিবি প্রতিনিধিদল এবং ১৪৬ বিএসএফ ব্যাটালিয়নের নিউ উদয় কোম্পানি কমান্ডার এসি অনিল কুমারের নেতৃত্বে ছয় সদস্যের বিএসএফ প্রতিনিধিদল বৈঠকে অংশ নেয়।

বৃহস্পতিবার বেলা ১টা ৪০ মিনিট থেকে ২টা ২০ মিনিট পর্যন্ত সীমান্তের মেইন পিলার ১৫৪/০৭ এস-সংলগ্ন ভারতের অভ্যন্তরে চাইডোবা মাঠে এই পতাকা বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে বিজিবির পক্ষ থেকে বাংলাদেশে ভারতীয় নাগরিক পুশ ইনের ঘটনায় তীব্র প্রতিবাদ জানানো হয় এবং অবিলম্বে তাদের ফেরত নেওয়ার দাবি জানানো হয়।

পরে শূন্য লাইনে অবস্থানরত ব্যক্তিদের পরিচয় ও ঠিকানা যাচাই করে তারা সবাই ভারতের ওডিশা প্রদেশের জগতসিংপুর সদর উপজেলার তারিকুন্ডা এলাকার বাসিন্দা বলে নিশ্চিত হওয়া যায়। যাচাই শেষে বিএসএফ তাদেরকে ভারতের অভ্যন্তরে ফিরিয়ে নিয়ে যায়।

পুশ ইনের চেষ্টা করা ব্যক্তিদের মধ্যে রয়েছেন মৃত হারুন শেখের ছেলে শেখ জব্বার (৭০), তাঁর চার ছেলে শেখ হাকিম (৪৫), শেখ ওকিল (৪০), শেখ রাজা (৩০) ও শেখ বান্টি (২৮); শেখ ওকিলের স্ত্রী শাবেরা বিবি (৩০); শেখ হাকিমের স্ত্রী শমশেরি বিবি (৪০); শেখ রাজার স্ত্রী মাইনু বিবি (২৫); শেখ জব্বারের স্ত্রী আলকনি বিবি (৬০); মৃত শেখ হোসেনের স্ত্রী গুলশান বিবি (৯০); শিশুদের মধ্যে রয়েছে শাকিলা খাতুন (১১), নাছরিন আক্তার (১২), শেখ তাওহিদ (১১) ও আড়াই বছর বয়সী শেখ রহিত।

এই ঘটনায় সীমান্তবাসীর মধ্যে উদ্বেগ দেখা দিয়েছে। নির্বাচনকালীন স্পর্শকাতর সময়ে ভারতের এমন পুশ ইন চেষ্টাকে কেন্দ্র করে সীমান্ত এলাকায় নানা আলোচনা ও প্রশ্ন উঠেছে।

এ বিষয়ে কুষ্টিয়া ৪৭ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল রাশেদ কামাল রনি বলেন, ‘বাংলাদেশের সীমান্ত দিয়ে কোনোভাবেই অবৈধ অনুপ্রবেশ বা পুশ ইন মেনে নেওয়া হবে না। সীমান্ত নিরাপত্তা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষায় বিজিবি সব সময় কঠোর অবস্থানে রয়েছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

সিরাজগঞ্জে দুটি ট্রাকের মুখোমুখি সংঘর্ষ, আহত ২

সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি  
উল্লাপাড়া উপজেলার সলঙ্গা তালতলা এলাকায় ঢাকা-রাজশাহী মহাসড়কে দুটি ট্রাকের মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। ছবি: আজকের পত্রিকা
উল্লাপাড়া উপজেলার সলঙ্গা তালতলা এলাকায় ঢাকা-রাজশাহী মহাসড়কে দুটি ট্রাকের মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। ছবি: আজকের পত্রিকা

সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়ায় মালবাহী দুটি ট্রাকের মুখোমুখি সংঘর্ষে এক ট্রাকের চালক ও হেলপার গুরুতর আহত হয়েছেন। আহত ব্যক্তিদের স্থানীয় বাসিন্দারা উদ্ধার করে সিরাজগঞ্জ শহীদ এম মনসুর আলী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠিয়েছেন। তাৎক্ষণিকভাবে তাঁদের পরিচয় পাওয়া যায়নি।

শুক্রবার সকালে উল্লাপাড়া উপজেলার সলঙ্গা তালতলা এলাকায় ঢাকা-রাজশাহী মহাসড়কে দুর্ঘটনাটি ঘটে।

হাটিকুমরুল হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইসমাইল হোসেন আজকের পত্রিকাকে জানান, ঢাকা থেকে ছেড়ে আসা গবাদিপশুর খাবার (ভুসি) বহনকারী একটি ট্রাকের সঙ্গে চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে ছেড়ে আসা পাথরবোঝাই আরেকটি ট্রাকের সংঘর্ষ হয়। এতে একটি ট্রাক নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে রাস্তার পাশে ছিটকে পড়ে এবং অপরটি মহাসড়কের ওপর দাঁড়িয়ে যায়।

দুর্ঘটনার পর রেকার দিয়ে ট্রাক সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। আহত চালক ও হেলপারের পরিচয় এখনো জানা যায়নি বলে জানান ওসি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত