Ajker Patrika

ভয়ংকর শালবন পাহাড়

শাহরিয়ার হাসান, টেকনাফ (কক্সবাজার) থেকে
আপডেট : ১৯ জুলাই ২০২১, ১০: ১২
ভয়ংকর শালবন পাহাড়

দূর থেকে দেখলে মনে হয় পাহাড়টা আকাশ ছুঁয়েছে। পাহাড়ের চূড়ায় ভেসে বেড়াচ্ছে সাদা-কালো মেঘ। লোকালয়ের ভেতর দিয়ে পাহাড় বেয়ে নেমে এসেছে সরু রাস্তা। কক্সবাজারের টেকনাফ শহর থেকে ৮ কিলোমিটার দূরের দৃষ্টিনন্দন এই পাহাড়ের নাম শালবাগান। মানুষ চেনে শালবন নামে। এই পাহাড়ের চারপাশ ঘিরে নয়াপাড়া ২৬-২৭ নম্বর রোহিঙ্গা ক্যাম্প। অপরাধীদের দৌরাত্ম্যে প্রতিনিয়ত আতঙ্কে থাকতে হয় ক্যাম্পের বাসিন্দাদের।

পুলিশ বলছে, ৩৫ কিলোমিটার দীর্ঘ পাহাড়টির একেক অংশের একেক নাম। শালবন অংশটুকুই রোহিঙ্গা সন্ত্রাসীদের অভয়ারণ্য হয়ে উঠেছে। অন্তত ১০টি রোহিঙ্গা সন্ত্রাসী গ্রুপ এখানে সক্রিয়। খুন, অপহরণ, ধর্ষণ, মাদক ও মানব পাচার—সব অপকর্মই হয়। অপরাধীরা নিচে নেমে কাজ সেরে আবার পাহাড়ে চলে যায়। রোহিঙ্গাদের ওপর আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী নিয়ন্ত্রণ থাকলেও গহিন এই পাহাড়ের পুরোটাই তাদের অজানা।

সাধারণ রোহিঙ্গারা বলছেন, সন্ত্রাসীরা জনবল ও অস্ত্রশস্ত্রে অনেক শক্তিশালী। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী একাধিকবার অভিযানে গিয়েও সন্ত্রাসীদের দমনে ব্যর্থ হয়েছে। 
টেকনাফ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হাফিজুর রহমান আজকের পত্রিকাকে বলেন, শালবনে অন্তত ১০টি রোহিঙ্গা সন্ত্রাসী গ্রুপ সক্রিয়। প্রতিটি গ্রুপের ৮০-৯০ জন সদস্য। তাদের আছে দেশি-বিদেশি অস্ত্র। ক্যাম্পের দায়িত্বে থাকা ১৬ আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক তারিকুল ইসলামও বিষয়টি অস্বীকার করেননি।

গোয়েন্দা তথ্য বলছে, পাহাড়ে সন্ত্রাসী গ্রুপগুলোর মধ্যে সবচেয়ে শক্তিশালী আদ্দু বাহিনী, গিয়াস বাহিনী ও সালমান শাহ বাহিনী। এ ছাড়া আছে জাকির বাহিনী, পুতিয়া বাহিনী, খালেক বাহিনী, জাকারিয়া গ্রুপ ও মুন্না গ্রুপ। জাকির বাহিনীর জাকির ‘বন্দুকযুদ্ধে’ নিহত হলে এই বাহিনীর হাল ধরে তাঁর বড় ভাই দিল মোহাম্মাদ আর জামিল।
র‍্যাবের কর্মকর্তা উইং কমান্ডার আজিম আহমেদ বলেন, কক্সবাজারে সব মিলিয়ে ৩৪টি রোহিঙ্গা শিবিরে প্রায় ১১ লাখ মানুষের বাস। শালবন পাহাড়কেন্দ্রিক নয়াপাড়া ক্যাম্পে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড চলে সবচেয়ে বেশি।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্র জানায়, গত ৩০ জুন রোহিঙ্গা সন্ত্রাসী হাসিমউল্লাহ ও আজিম উল্লাহ গ্রুপ চাঁদার দাবিতে বাংলাদেশি হাবিব উল্লাহর পরিবারে হামলা চালায়। তাদের এলোপাতাড়ি গুলিতে হাবিবের তিন সন্তান আহত হয়। গত শুক্রবার র‍্যাবের সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ হাসিমউল্লাহ নিহত হন। 

মুক্তিপণ না পেলে খুন
২৬ নম্বর শালবাগান ক্যাম্পের আই-৯-এর বাসিন্দা সত্তর ছুঁইছুঁই রোহিঙ্গা সৈয়দ আলম। ৭ জুলাই রাত ১০টার দিকে হঠাৎ তাঁর ঘরের দরজার কড়া নাড়ার আওয়াজ। খুলতেই জাকারিয়া বাহিনীর কয়েকজন সন্ত্রাসী পিস্তলের বাঁট দিয়ে মাথায় আঘাত করে তাঁকে রক্তাক্ত করে। তাঁকে তুলে নিয়ে যায় তারা। পরিবারকে বলে যায়, তাঁকে ফেরত পেতে হলে ৩ লাখ টাকা দিতে হবে।

গত শুক্রবার ক্যাম্পের মসজিদের সামনে আলমের ছেলে আজিজুল অভিযোগ করেন, এপিবিএনের কাছে সহায়তা চাইতে গেলে তারা মুক্তিপণ দিয়ে ছাড়িয়ে আনার পরামর্শ দেয়। পরে ৫০ হাজার টাকায় বাবাকে ছাড়িয়ে আনেন তিনি।

নয়াপাড়া ক্যাম্পের ব্লক–আইয়ের ২৪,২৫, ২৬,২৭–এর সমন্বয়ক মো. জাফরও অভিযোগ করেন, ক্যাম্পে প্রতিদিন এমন চার–পাঁচটি ঘটনা ঘটে। পুলিশের সাহায্য পাওয়া যায় না। তিনি নিজেও অপহরণের শিকার হয়েছিলেন। তিনি এখনো সে ভয় কাটিয়ে উঠতে পারেননি।

টেকনাফ থানার ওসি হাফিজুর বলেন, ‘ক্যাম্পে অপহরণ, ধর্ষণ, মারামারি, ছিনতাই লেগেই আছে। অনেক সময় আমরা খোঁজ পাই। কিন্তু ভুক্তভোগীরা অভিযোগ করে না। তাই অনেক ঘটনা অজানা থেকে যায়।’ 

কোনো কৌশল কাজে আসছে না
শালবন পাহাড়ে সন্ত্রাসী গ্রুপগুলোর সাত-আট শ সদস্য আছে। পাহাড়ে আস্তানা গেড়ে বসেছে তারা। ঘন জঙ্গলে সেটি বোঝার উপায় নেই। খাবারের জন্য তারা মাঝেমধ্যে সমতলে নামে। কাকে অপহরণ করা হবে, ক্যাম্পে থাকা অন্য সদস্যরা সেটি ঠিক করে। ২৬ নম্বর এই ক্যাম্পের ৫ ব্লকে ৪১ হাজার ৭৭২ রোহিঙ্গার বসবাস।

আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কর্মকর্তারা বলছেন, গত দুই বছরে ক্যাম্পে অন্তত ৭০টি হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। এই দুই বছরে রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে করা ৪৯৩টি মামলা হয়েছে, যাতে ১ হাজার ৪৫৮ জন আসামি। সবচেয়ে বেশি, প্রায় দুই শ হলো মাদক মামলা। রয়েছে মানব পাচার, অস্ত্র, ধর্ষণ, ধর্ষণচেষ্টা, নারী নির্যাতন, অপহরণ ও পুলিশের ওপর হামলার মামলা।

র‍্যাবের উইং কমান্ডার আজিম আহমেদ বলছেন, ‘হেলিকপ্টার আর ড্রোন উড়িয়ে আমরা সন্ত্রাসীদের আস্তানা খুঁজে বের করার চেষ্টা করেছি। ডিসেম্বর থেকে এ পর্যন্ত ‘বন্দুকযুদ্ধে’ ১২ জন রোহিঙ্গা সন্ত্রাসী নিহত হয়েছে।’

মানব পাচার, মাদক, স্বর্ণ চোরাচালান থেকে আসে অর্থ।  র‍্যাব-পুলিশের তথ্য বলছে, এসব বাহিনীর অর্থের বড় একটি উৎস ইয়াবা, মানব পাচার ও স্বর্ণ চোরাচালান। বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের যেসব সিন্ডিকেট ইয়াবা, মানব পাচার ও স্বর্ণ চোরাচালান করছে, তাদের কাছ থেকে নিয়মিত মাসোহারা নেয় তারা। এমনকি সাগরপথে পাচারের শিকার ব্যক্তিদের শুরুতে এই পাহাড়ে রাখা হয়।

বিজিবি, র‍্যাব ও পুলিশ বলছে, গত ১০ মাসে এসব এলাকায় অনন্ত ১০৫টি আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার হয়েছে। প্রশ্ন উঠেছে, রোহিঙ্গাদের পাহাড়ি ক্যাম্পে এত অস্ত্র-গোলাবারুদের উৎস কী?

আর্মড পুলিশের পদস্থ এক কর্মকর্তা বলেন, রোহিঙ্গা সন্ত্রাসীদের অস্ত্রের মূল উৎস মিয়ানমার। সে দেশ থেকে মাদকের সঙ্গে আসছে অস্ত্র। বান্দরবানের চাকঢালা, আশারতলী, তুমব্রু, ঘুমধুম সীমান্ত দিয়ে আসছে এসব অস্ত্র। পাহাড়ে সন্ত্রাসীদের অস্ত্রের গুদামও রয়েছে।

র‍্যাব ও বিজিবির তথ্যমতে, রোহিঙ্গা অধ্যুষিত এলাকায় গত ছয় মাসে অভিযান চালিয়ে ১৫১টি গোলাবারুদ, ৩৩টি দেশীয় বন্দুক, দুটি নাইন এমএম পিস্তল, তিনটি রিভলবার, দুটি থ্রি কোয়ার্টার গান, তিনটি এলজি, পাঁচটি এসবিবিএল, একটি রাইফেল উদ্ধার করা হয়।

ক্যাম্পে কাজ করা নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সেফ দ্য চিলড্রেনের এক নারী কর্মী বলেন, ‘নয়াপাড়া ক্যাম্পের পেছনের পাহাড়ে রোহিঙ্গা ডাকাতদের আস্তানা। দিনে পাহাড় আর রাতে ক্যাম্প চষে বেড়ায় তারা। আমরা নিজেরাও অনিরাপদ বোধ করছি।’

কক্সবাজারের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘জেলা পুলিশ ক্যাম্পের অপরাধ নিয়ন্ত্রণে এপিবিএনের সঙ্গে কাজ করছে। আমরা একাধিক অভিযান চালিয়েছি। সন্ত্রাসীদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে।’ 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ভোলায় ট্রাকচাপায় প্রাণ গেল তরুণীসহ ৩ অটোযাত্রীর

বোরহানউদ্দিন (ভোলা) প্রতিনিধি 
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

ভোলার বোরহানউদ্দিনে ট্রাকচাপায় সিএনজিচালিত অটোরিকশার তিন যাত্রী নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় গুরুতর আহত হয়েছেন আরও তিনজন। আজ রোববার উপজেলার মানিকার হাটবাজারসংলগ্ন এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে।

নিহত ব্যক্তিরা হলেন মো. মিজান (৩৬), রিয়াজ উদ্দিন ও আজমিরী আমরিন (২০)। এর মধ্যে মো. মিজান ও রিয়াজ উদ্দিন ঘটনাস্থলেই মারা যান। গুরুতর আহত অবস্থায় আজমিরী আমরিনকে ভোলার ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাঁর মৃত্যু হয়।

স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, দুপুরে লালমোহন থেকে চালকসহ পাঁচ যাত্রী নিয়ে একটি সিএনজিচালিত অটোরিকশা ভোলার দিকে যাচ্ছিল। পথে মানিকার হাটবাজার এলাকায় পৌঁছালে দ্রুতগতির একটি ট্রাক অটোরিকশাটিকে চাপা দেয়। এতে সেটি দুমড়েমুচড়ে যায় এবং ঘটনাস্থলেই দুই যাত্রীর মৃত্যু হয়।

দুর্ঘটনায় গুরুতর আহত অটোরিকশাচালকসহ তিন যাত্রীকে উদ্ধার করে স্থানীয় বাসিন্দারা হাসপাতালে ভর্তি করেন। পরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আরও একজনের মৃত্যু হয়।

এ বিষয়ে জেলা পুলিশ সুপার শহীদুল্লাহ কাওসার জানান, পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে দুজনের মরদেহ উদ্ধার করেছে। এ ছাড়া গুরুতর আহত অবস্থায় চারজনকে হাসপাতালে পাঠানো হয়। পরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আরও একজনের মৃত্যু হয়। দুর্ঘটনার বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

নওগাঁ-৫: নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ালেন এনসিপি নেত্রী মনিরা শারমীন

নওগাঁ সংবাদদাতা
এনসিপি নেত্রী মনিরা শারমীন। ছবি: সংগৃহীত
এনসিপি নেত্রী মনিরা শারমীন। ছবি: সংগৃহীত

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন থেকে নিজেকে প্রত্যাহার করেছেন নওগাঁ-৫ আসনে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) মনোনীত প্রার্থী মনিরা শারমীন। আজ রোববার বিকেল ৫টা ৪৫ মিনিটে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক অ্যাকাউন্টে দীর্ঘ এক পোস্ট দিয়ে তিনি এই ঘোষণা দেন।

মনিরা শারমীন লিখেছেন, ‘নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্তের আকাঙ্ক্ষায় গড়া দল জাতীয় নাগরিক পার্টি গণ-অভ্যুত্থান পরবর্তী একমাত্র মধ্যপন্থী রাজনীতির ভরসাস্থল ছিল। এই দল থেকে ত্রয়োদশ জাতীয় নির্বাচনে নওগাঁ-৫ থেকে আমি মনোনীত প্রার্থী। তবে মনোনয়ন পাওয়ার আগে আমি জানতাম না, এই দল জামায়াতের সঙ্গে ৩০ সিটের আসন সমঝোতা করবে। আমি জানতাম, ৩০০ আসনে প্রার্থী দিয়ে একক নির্বাচনের সিদ্ধান্ত ছিল। যেহেতু এখন দলের পজিশন পরিবর্তন হয়েছে, তাই আমি নিজেকে নির্বাচন থেকে প্রত্যাহার করছি। নির্বাচনে আমি অংশগ্রহণ করছি না।’

মনিরা শারমীন আরও বলেছেন, ‘আমি এনসিপির স্বতন্ত্র শক্তিতে বিশ্বাসী। দলের প্রতি আমার কমিটমেন্ট আমি ভাঙি নাই। কিন্তু এই মুহূর্তে দলের প্রতি কমিটমেন্টের চেয়ে আমার গণ অভ্যুত্থানের প্রতি কমিটমেন্ট ও দেশের মানুষের প্রতি কমিটমেন্ট বড় হয়ে দাঁড়িয়েছে।’

মনিরা শারমীন আরও লেখেন, ‘আমি দল থেকে পদত্যাগ করার ব্যাপারে কোন সিদ্ধান্ত নিই নাই। এনসিপি কারও একার সম্পত্তি না। এনসিপি যতখানি শীর্ষ নেতৃত্বের, তার থেকে অনেক বেশি আমার। আজ পর্যন্ত এমন কিছু বলি নাই বা করি নাই যাতে দল বিতর্কিত হয়। তবে নিজের নৈতিকতা বিক্রি করে রাজনীতি করতে চাই না, ক্ষমতায় যেতে চাই না।’

উল্লেখ্য, ১০ ডিসেম্বর নওগাঁ-৫ (সদর) আসনে দলটির কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক মনিরা শারমীনকে মনোনয়ন দেওয়া হয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

‎হাদি হত্যার বিচারের দাবিতে টঙ্গীতে মহাসড়ক অবরোধ, বিক্ষোভ

টঙ্গী (গাজীপুর) প্রতিনিধি
ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদির হত্যাকারীদের গ্রেপ্তার ও বিচারের দাবিতে আজ রোববার গাজীপুরের টঙ্গীতে মহাসড়ক অবরোধ। ছবি: আজকের পত্রিকা
ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদির হত্যাকারীদের গ্রেপ্তার ও বিচারের দাবিতে আজ রোববার গাজীপুরের টঙ্গীতে মহাসড়ক অবরোধ। ছবি: আজকের পত্রিকা

ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদির হত্যাকারীদের গ্রেপ্তার ও বিচারের দাবিতে গাজীপুরের টঙ্গীতে মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছে ছাত্র-জনতা।

অবরোধের কারণে প্রায় দুই ঘণ্টা ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের যান চলাচল বন্ধ থাকে। ভোগান্তিতে পড়ে এই মহাসড়কে চলাচলকারী যাত্রীরা। ‎

আজ রোববার (২৮ ডিসেম্বর) বিকেল পৌনে ৪টা থেকে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের টঙ্গী কলেজ গেট এলাকায় এই অবরোধ কর্মসূচি পালন করা হয়।

সন্ধ্যা পৌনে ৬টার দিকে মহাসড়কে মাগরিবের নামাজ আদায় শেষে পুলিশের অনুরোধে বিক্ষুব্ধরা মহাসড়ক ছেড়ে চলে যান। ‎ছাত্র-জনতার ব্যানারে পালিত কর্মসূচিতে বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরাও অংশ নেয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

‘তোর পুরস্কার গুলিতে মৃত্যু, দাফন-কাফনের জন্য তৈরি হ’

বাগেরহাট প্রতিনিধি
সায়মন শমিত জিয়ন । ছবি: সংগৃহীত
সায়মন শমিত জিয়ন । ছবি: সংগৃহীত

জাতীয় ছাত্রশক্তি বাগেরহাট জেলার আহ্বায়ক সায়মন শমিত জিয়নকে গুলি করে হত্যার হুমকি দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। গত মঙ্গলবার গভীর রাতে জেলার মোরেলগঞ্জ পৌরসভার ১ নম্বর ওয়ার্ডে জিয়নের বাড়ির গেটে রেখা যাওয়া একটি চিরকুটে এই হুমকি দেওয়া হয়।

এ ঘটনায় পরদিন থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছেন ভুক্তভোগী।

এদিকে আজ রোববার হুমকির চিরকুটটি জেলা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মুখ্য সংগঠক শেখ বাদশা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পোস্ট দিলে বিষয়টি জানাজানি হয়।

জানতে চাইলে সায়মন শমিত জিয়ন বলেন, ২৩ ডিসেম্বর রাত আনুমানিক ১১টা ২৫ মিনিটে প্রতিদিনের মতো বাড়িতে ফেরার সময় তিনি বাড়ির মূল গেটের সঙ্গে ঝুলিয়ে রাখা একটি চিরকুট দেখতে পান। কাগজটি খুলে দেখতে পান, সেখানে লেখা ছিল—‘সায়মন জিয়ন। তোর পুরস্কার গুলিতে মৃত্যু। দাফন-কাফনের জন্য তৈরি হ। জুলাই... জয় বাংলা জয় বঙ্গবন্ধু।’

চিরকুটের ভাষা ও হুমকির ধরন দেখে তাঁর ধারণা, তাঁকে পরিকল্পিতভাবে হত্যার হুমকি দেওয়া হয়েছে।

সায়মন শমিত জিয়ন বলেন, ‘আমরা জুলাইয়ে রাজপথে ছিলাম, গুলির মুখোমুখি হয়েই স্বৈরাচার পতনের আন্দোলন করেছি। এসব হুমকি-ধমকিতে আমরা ভয় পাই না। মৃত্যুর ভয় দেখিয়ে আমাদের থামানো যাবে না। দেশের জন্য আমরা যে কাজ করেছি এবং ভবিষ্যতেও যে কাজ করব, তা অব্যাহত থাকবে।

‘কিছুদিন আগে জুলাই আন্দোলনের সম্মুখসারির যোদ্ধা শরিফ ওসমান হাদি ভাইকে মাথায় গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। তিনি আজ জাতির কাছে একজন শহীদ। তিনি জুলাইকে ধারণ করেই শহীদ হয়েছেন, জুলাইকে বিক্রি করেননি। আমরাও সেই পথেই হাঁটতে চাই।’

সায়মন শমিত জিয়ন আরও বলেন, ‘হুমকির বিষয়টি আমি কিছু মনে না করলেও পরিবারের সবাই খুবই আতঙ্কে আছে।’

এ বিষয়ে মোরেলগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মাহমুদুর রহমান আজকের পত্রিকাকে বলেন, চিরকুটের মাধ্যমে হত্যার হুমকি দেওয়ার ঘটনায় একটি সাধারণ ডায়েরি করা হয়েছে। তার ভিত্তিতে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে এবং ছাত্রদের নিরাপত্তার বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে দেখা হচ্ছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত