Ajker Patrika

ইউআইইউ শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে ঢাকা ব্লকেডের হুঁশিয়ারি

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ২১ জুন ২০২৫, ১৮: ৩৩
নতুনবাজার সড়কে ইউআইইউ শিক্ষার্থীদের অবস্থান। ছবি: আজকের পত্রিকা
নতুনবাজার সড়কে ইউআইইউ শিক্ষার্থীদের অবস্থান। ছবি: আজকের পত্রিকা

বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহারসহ পাঁচ দফা দাবিতে ইউনাইটেড ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির (ইউআইইউ) শিক্ষার্থীদের আন্দোলন থেকে ঢাকা ব্লকেডের হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়েছে। তাঁরা বলেন, যৌক্তিক দাবিগুলো মানা না হলে আগামীকাল রোববার (২২ জুন) ঢাকায় ব্লকেড কর্মসূচি পালন করা হবে।

এর আগে আজ শনিবার সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত ভাটারার নতুন বাজার এলাকায় সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন তাঁরা। এ সময় পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে সাত শিক্ষার্থী আহত হন। বিকেল সোয়া ৪টা পর্যন্ত শিক্ষার্থীরা সড়কে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছিলেন। এ সময় সড়কে যান চলাচল বন্ধ ছিল।

আন্দোলনের বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, শিক্ষার্থীদের সব দাবি মেনে নেওয়ার পরও কিছু শিক্ষার্থী ক্যাম্পাসে অস্থিরতা তৈরির চেষ্টা করছেন, তাঁরা সাধারণ শিক্ষার্থীদের ক্ষতি করছেন। যাঁদের বহিষ্কার করা হয়েছিল, তাঁদের শাস্তি পুনর্বিবেচনা করা হয়েছে, বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার করা হয়েছে।

শনিবার (২১ জুন) সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত রাজধানীর নতুন বাজার এলাকায় সড়ক অবরোধ করে তাঁরা বিক্ষোভ করেন। সকাল ৯টা থেকে শুরু হওয়া শিক্ষার্থীদের অবস্থানে দীর্ঘ সময় সড়কে যান চলাচল ব্যাহত হয়, চরম ভোগান্তিতে পড়েন সাধারণ যাত্রীরা। পরে শিক্ষার্থীদের সড়ক থেকে সরিয়ে দিতে পুলিশ উদ্যোগ নিলে সংঘর্ষ শুরু হয়।

গতকাল শুক্রবার থেকে ইউআইইউর শিক্ষার্থীরা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের বিভিন্ন গ্রুপে আন্দোলনের প্রচারণা চালান। আজ বিশ্ববিদ্যালয় পূর্বঘোষণা অনুযায়ী খোলা হলে শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসের সামনে জড়ো হতে শুরু করেন। এরপর সকাল ৯টার দিকে তাঁরা নতুন বাজার সড়ক অবরোধ করেন। তাঁরা বহিষ্কৃত শিক্ষার্থীদের বহিষ্কারাদেশ তুলে নেওয়ার দাবিতে স্লোগান দিতে থাকেন।

আন্দোলনে ইউআইউ শিক্ষার্থী ছাড়াও আরও কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা তাঁদের সঙ্গে একাত্মতা জানিয়ে সেখানে অবস্থান নেন। আন্দোলনের কারণে কুড়িল ও বাড্ডা সড়কে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়। সেখানে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়। বেলা ১১টার দিকে আন্দোলনকারীদের রাস্তা থেকে সরাতে চেষ্টা করে ভাটারা থানা-পুলিশ। কয়েক দফা তাঁদের সঙ্গে আলোচনায় ব্যর্থ হয়ে পুলিশ তাঁদের সড়ক থেকে সরিয়ে দিতে বল প্রয়োগ করে। তাঁদের ঠেলে ও ধাক্কা দিয়ে সড়ক থেকে সরানোর চেষ্টা করা হয়।

এ সময় শিক্ষার্থীরা সড়কে বসে পড়ার চেষ্টা করেন। তখন পুলিশ তাঁদের লাঠিপেটা করে। কয়েকজনকে ধরে পুলিশের গাড়িতে তোলার চেষ্টা করা হলে এ সময় ছাত্রদের প্রতিবাদের মুখে পড়ে তারা। পুলিশ পুনরায় লাঠিপেটা করলে শিক্ষার্থীরা কিছুক্ষণের জন্য ছত্রভঙ্গ হয়ে পড়েন।

৭ শিক্ষার্থী আহত

পুলিশের লাঠিপেটায় বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের সাতজন আহত হন। আহতরা হলেন ইউআইইউর শিক্ষার্থী সাগর আহমেদ, তাকি আহমেদ ও সালমান; ওয়াল্ড ইউনিভার্সিটির অপি হাসান; এশিয়ান ইউনিভার্সিটির হাবিবুল্লাহ মাছরুন; ঢাকা ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির জান্নাতুন নাহার এবং প্রেসিডেন্সি ইউনিভার্সিটির মেহেদী হাসান। তাঁরা স্থানীয় হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা নেন।

পুলিশের লাঠিপেটার পর শরীরে কাফনের কাপড় জড়িয়ে সড়কে শুয়ে পড়েন তিন শিক্ষার্থী। এরপর সেখানে আরও কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা তাঁদের সঙ্গে যোগ দেন। বেলা ৩টার দিকে সেখানে আসেন বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের সংগঠন প্রাইভেট ইউনিভার্সিটি স্টুডেন্ট অ্যালায়েন্স অব বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠাতা ও স্থায়ী সদস্য আব্দুল্লাহ আল মাহফুজ জাকারিয়া।

ভাটারা থানার সামনের সড়কে দাঁড়িয়ে তিনি বক্তব্য দেন। তিনি বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের ওপর যে পুলিশ নগ্ন হামলা করেছে, তাদের অবশ্যই বিচার করতে হবে। যতক্ষণ পর্যন্ত এই আওয়ামী লীগের দালাল পুলিশের বিচার না হবে, ততক্ষণ পর্যন্ত শিক্ষার্থীরা সড়ক ছাড়বেন না।’

তিনি বলেন, শিক্ষার্থীদের যৌক্তিক দাবিগুলোর প্রতিকারে কার্যকর পদক্ষেপ না নেওয়া হলে রোববার থেকে ঢাকাজুড়ে ব্লকেড কর্মসূচি পালন করা হবে।

আন্দোলন থেকে শিক্ষার্থীদের পাঁচ দফা দাবি

অন্যায়ভাবে বহিষ্কৃত শিক্ষার্থীদের নিঃশর্ত প্রত্যাহার ও ক্ষতিপূরণ প্রদান। বহিষ্কারের সঙ্গে জড়িত শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বিরুদ্ধে তদন্ত ও শাস্তিমূলক ব্যবস্থা। ইউআইইউতে চলমান অনিয়ম-স্বেচ্ছাচারিতার সংস্কারের বাস্তবায়ন। বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর জন্য একটি স্বাধীন সংস্কার কমিশন গঠন। বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ওপর আরোপিত ১৫ শতাংশ কর বাতিল।

বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্তৃপক্ষের বক্তব্য

শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের বিষয়ে জানতে চাইলে জনসংযোগ বিভাগের পরিচালক আবু সাদাত মো. মোস্তাসির বিল্লাহ আজকের পত্রিকাকে বলেন, পূর্বঘোষণা অনুযায়ী আজ থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ে সশরীরে ক্লাস শুরু হয়েছে। গুটি কয়েক শিক্ষার্থী অসৎ উদ্দেশ্যে এই আন্দোলনে অংশগ্রহণ করেছেন। আন্দোলনে অংশ নেওয়া বেশির ভাগ শিক্ষার্থী ইউআইইউর নন। তিনি আরও বলেন, সব পক্ষের সঙ্গে বসে আলোচনার মাধ্যমে বিষয়টি সমাধানের চেষ্টা চলছে।

পুলিশের লাঠিপেটার পর শরীরে কাফনের কাপড় জড়িয়ে সড়কে শুয়ে পড়েন তিন শিক্ষার্থী। ছবি: আজকের পত্রিকা
পুলিশের লাঠিপেটার পর শরীরে কাফনের কাপড় জড়িয়ে সড়কে শুয়ে পড়েন তিন শিক্ষার্থী। ছবি: আজকের পত্রিকা

এর আগে ২৬ এপ্রিল সকাল থেকে শিক্ষার্থীরা ইউআইইউ ক্যাম্পাসে অবস্থান নিয়ে কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের প্রধান মোহাম্মদ নুরুল হুদার পদত্যাগ, মিডটার্মের সময় আবার পৌনে দুই ঘণ্টা করা এবং ক্রেডিট প্রতি ইমপ্রুভমেন্ট ফি নিয়ে আন্দোলন শুরু করেন। পরে তাঁরা উপাচার্যের পদত্যাগের দাবি তোলেন। এরই পরিপ্রেক্ষিতে পরদিন উপাচার্য আবুল কাসেম মিয়া ও ১১ বিভাগীয় প্রধান পদত্যাগ করেন। পরে আরও কয়েকজন শিক্ষক, বিভাগীয় প্রধান, পরিচালক পদত্যাগ করেন। এরপর গত ২৮ এপ্রিল অনির্দিষ্টকালের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণা করা হয়।

যদিও ২০ মে থেকে অনলাইন ক্লাস শুরু হয়। তবে শিক্ষার্থীদের একটি অংশ তা প্রত্যাখ্যান করে ক্যাম্পাসে সরাসরি ক্লাস ও প্রশাসনিক স্বচ্ছতা নিশ্চিতের দাবি করে আসছেন। এর মধ্যে ২ জুন ৪১ শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়। তাঁদের মধ্যে ২৪ জনকে স্থায়ী বহিষ্কার করা হয়।

বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ অফিস জানায়, ৩ জুন চিঠি প্রাপ্তির পর বহিষ্কার হওয়া ২৪ শিক্ষার্থীর মধ্যে ২২ জনই শাস্তি পুনর্বিবেচনার আবেদন জানান। এর পরিপ্রেক্ষিতে ১৯ জুন (বৃহস্পতিবার) প্রথম দফায় পাঁচজন শিক্ষার্থীকে অভিভাবকসহ ডাকা হয়েছে এবং তাঁদের স্থায়ী বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার হয়েছে।

প্রথম দফায় শাস্তি প্রত্যাহার হওয়ার শিক্ষার্থীরা হলেন মেহেদী হাসান মামুন, হাসান মাহমুদ, আনিক আনজুম মনা, ফায়াজ কবির ও সাদিয়া রহমান। বহিষ্কৃত হওয়া বাকি শিক্ষার্থীদের ২১ ও ২২ জুন অভিভাবকসহ ডাকা হয়েছে বলে জানায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

সখীপুরে অবৈধভাবে মাটি কাটায় এক মাসের কারাদণ্ড, ২ লাখ টাকা জরিমানা

সখীপুর (টাঙ্গাইল) প্রতিনিধি
গতকাল রাত সাড়ে ১০টার দিকে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট শামসুন নাহার শিলা ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেন। ছবি: আজকের পত্রিকা
গতকাল রাত সাড়ে ১০টার দিকে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট শামসুন নাহার শিলা ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেন। ছবি: আজকের পত্রিকা

টাঙ্গাইলের সখীপুরে অবৈধভাবে মাটি কাটায় আতোয়ার রহমান (৩৮) নামের এক ব্যবসায়ীকে দুই লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। একই সঙ্গে এক মাসের কারাদণ্ড দিয়েছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। গতকাল বুধবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট শামসুন নাহার শিলা উপজেলার দাড়িয়াপুর গ্রামে ভ্রাম্যমাণ আদালত বসিয়ে এ দণ্ডাদেশ দেন। আজ বৃহস্পতিবার সকালে তাঁকে টাঙ্গাইল কারাগারে পাঠানো হয়েছে। দণ্ডপ্রাপ্ত আতোয়ার ওই গ্রামের আব্দুস সামাদ মিয়ার ছেলে।

ভ্রাম্যমাণ আদালত সূত্রে জানা গেছে, আতোয়ার রহমান নামের ওই ব্যবসায়ী দীর্ঘদিন ধরে অবৈধভাবে মাটি বিক্রি করে আসছিলেন। খবর পেয়ে গতকাল রাতে দাড়িয়াপুর গ্রামে খননযন্ত্র দিয়ে মাটি কাটার সময় তাঁকে আটক করা হয়। পরে ঘটনাস্থলেই ভ্রাম্যমাণ আদালত বসিয়ে আতোয়ারকে দুই লাখ টাকা জরিমানা ও এক মাসের কারাদণ্ডের আদেশ দেওয়া হয়। এ সময় একটি মাটি খননযন্ত্রও জব্দ করা হয়েছে।

সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট শামসুন নাহার শিলা আজকের পত্রিকাকে জানান, ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে বালুমহাল ও মাটি ব্যবস্থাপনা আইন অনুযায়ী এক ব্যবসায়ীকে অর্থদণ্ড ও এক মাসের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

বাবা-মায়ের মাঝখানে ঘুমিয়ে থাকা শিশুর মৃত্যু নিয়ে ধূম্রজাল

 দুর্গাপুর (রাজশাহী) প্রতিনিধি
দুর্গাপুর উপজেলার শ্যামপুর গ্রামে ভুক্তভোগীর বাড়িতে প্রতিবেশীদের ভিড়। ছবি: আজকের পত্রিকা
দুর্গাপুর উপজেলার শ্যামপুর গ্রামে ভুক্তভোগীর বাড়িতে প্রতিবেশীদের ভিড়। ছবি: আজকের পত্রিকা

রাজশাহীর দুর্গাপুরে বাবা-মায়ের মাঝখানে ঘুমিয়ে থাকা শাকিল খান (৪ মাস) নামের এক শিশুর রহস্যজনক মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে এলাকায় ধূম্রজালের সৃষ্টি হয়েছে। তবে মারা যাওয়া শিশুর বাবা-মা দুজনই বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী বলে জানা গেছে। গতকাল বুধবার রাতে উপজেলার নওপাড়া ইউনিয়নের শ্যামপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। শিশু শাকিল ওই গ্রামের শুকুর আলীর ছেলে।

আজ বৃহস্পতিবার সকালে উপজেলার শ্যামপুর গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, একটি টংঘরের বারান্দায় শিশু শাকিলের মরদেহ রাখা আছে। তার পাশেই তার মা কাঁদছেন। আর মানুষেরা তাকে ঘিরে রেখেছে। এ সময় কথা হয় মৃত শাকিলের মা শাকিলা খাতুনের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘বাচ্চা কীভাবে মইরা গেল বলতে পারব না। রাতে আমার আর ওর বাবার মাঝখানে শাকিল ঘুমিয়েছিল। রাত ৪টার দিকে দেখি শাকিলের কোনো সাড়াশব্দ নেই। শাকিল মারা গেছে।’

এদিকে শাকিলের বাবা শুকুর আলী দেন ভিন্ন তথ্য। শুকুর আলী বলেন, ‘আমি কিছু বলতে পারব না। রাত ৩টার দিকে দেখি ছেলের লিকেশ (নিশ্বাস) বন্ধ হয়ে গেছে। হাত-পা ঠান্ডা।’

স্থানীয় প্রতিবেশী কয়েকজন নারী-পুরুষ জানালেন, ভোররাতে শাকিল মারা যাওয়ার পর শাকিলের মা তার বাবাকে বলেন, ‘তুই আমার ছেলেকে মেরে ফেলছু।’ এ সময় শাকিলের বাবা উল্টো তার মাকে বলেন, ‘তুই আমার ছেলেকে মেরে ফেলছু।’ এ নিয়ে ওই রাতে দুজনের মধ্যে বাগ্‌বিতণ্ডা বাধে। পরে স্থানীয় লোকজন ছুটে আসেন। এলাকায় এ নিয়ে ধূম্রজালের সৃষ্টি হয়।

ওই মহল্লার বাসিন্দা বিএনপি নেতা দেলোয়ার হোসেন বলেন, ‘দুজনেরই (বাবা-মা) বুদ্ধিসুদ্ধি কম। পাড়ার সবাই তাদের পাগল বলে ডাকে। কখন কী বলে ঠিক নাই। খুবই দরিদ্র তারা। এলাকার সাহায্য-সহযোগিতায় খেয়ে-পরে বাঁচে। একটি টংঘরে থাকে। চার মাসের বাচ্চার যাতে ময়নাতদন্ত না হয়, এ বিষয়ে পরিবার ও আমরা এলাকাবাসী আবেদন করেছি।’

এ বিষয়ে ঘটনাস্থলে উপস্থিত দুর্গাপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (তদন্ত) রফিকুল ইসলাম বলেন, মৃত শিশুটির শরীরে আঘাতের কোনো চিহ্ন নেই। কীভাবে মারা গেছে, এ বিষয়ে তাঁদের কোনো ধারণা নেই। পরিবার বা এলাকাবাসীর কোনো অভিযোগ নেই। কোনো অভিযোগ না থাকায় ময়নাতদন্ত ছাড়া লাশ দাফনের বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা হচ্ছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ডিজির সঙ্গে তর্কে জড়ানো সেই চিকিৎসককে আগের পদে বহাল

ময়মনসিংহ প্রতিনিধি
ফাইল ছবি
ফাইল ছবি

ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল পরিদর্শনে আসা স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (ডিজি) মো. আবু জাফরের সঙ্গে তর্কে জড়ানো চিকিৎসক ধনদেব চন্দ্র বর্মণ শোকজের সন্তোষজনক জবাব দেওয়ায় তাঁকে ক্ষমা করে আগের পদে বহাল করা হয়েছে। গতকাল বুধবার ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ (মমেক) হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল গোলাম ফেরদৌস স্বাক্ষরিত একটি আদেশ জারির মাধ্যমে তাঁকে বহাল করা হয়।

আদেশে বলা হয়, ৬ ডিসেম্বর স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল পরিদর্শনকালে হাসপাতালের আবাসিক সার্জন (ক্যাজুয়ালটি) ও সহকারী অধ্যাপক (সার্জারি) ইনসিটু ধনদেব চন্দ্র বর্মণ মহাপরিচালকের সঙ্গে ঔদ্ধত্যপূর্ণ ও অসৌজন্যমূলক আচরণ করেন। পরে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়, সেই সঙ্গে ক্যাজুয়ালটি ওটি ইনচার্জের দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। তিনি তাঁর অনাকাঙ্ক্ষিত আচরণের কারণে ক্ষমা চেয়ে এবং ভবিষ্যতে এরূপ অনাকাঙ্ক্ষিত আচরণ করবেন না বলে অঙ্গীকার করে যথাযথ কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে লিখিত জবাব দাখিল করেছেন। পরে তাঁর দাখিল করা জবাব স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে পাঠানো হয়।

এতে আরও বলা হয়, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মহোদয় বরাবর পাঠানো প্রতিবেদন সন্তোষজনক হওয়ায় মহাপরিচালক ধনদেব চন্দ্র বর্মণকে ক্ষমা প্রদর্শন করেন এবং তাঁকে আগের কর্মস্থল ক্যাজুয়ালটি ওটি ইনচার্জ পদে পুনর্বহাল রাখার জন্য নির্দেশ দেন। সে মোতাবেক তাঁকে ক্যাজুয়ালটি ওটি ইনচার্জের দায়িত্বে পুনর্বহাল করা হলো।

চিঠি জারির বিষয়টি নিশ্চিত করে মমেক হাসপাতালের সহকারী পরিচালক (প্রশাসন) মুহাম্মদ মাইনউদ্দিন খান বলেন, এই আদেশ গতকাল থেকে কার্যকর হয়েছে।

ধনদেব চন্দ্র বর্মণ বলেন, ‘কর্তৃপক্ষ আমাকে আগের পদে বহাল করেছে। আমি কাজ শুরু করেছি।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

হাতিয়ায় বিপুল খাদ্যদ্রব্যে ভরা বোটসহ ১২ পাচারকারী আটক

হাতিয়া (নোয়াখালী) প্রতিনিধি
আটক ১২ জন পাচারকারী। ছবি: আজকের পত্রিকা
আটক ১২ জন পাচারকারী। ছবি: আজকের পত্রিকা

মিয়ানমারে পাচারকালে ৩১ লাখ টাকার বেশি মূল্যের খাদ্যদ্রব্যসহ একটি বোট জব্দ করেছে কোস্ট গার্ড। এ সময় এ ঘটনায় জড়িত থাকায় ১২ পাচারকারীকে আটক করা হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার সকালে কোস্ট গার্ড মিডিয়া কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট কমান্ডার সিয়াম-উল-হক এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

কোস্ট গার্ড জানায়, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে গতকাল বুধবার বিকেল থেকে রাত ২টা পর্যন্ত কোস্ট গার্ডের একটি দল হাতিয়ার চেয়ারম্যান ঘাটসংলগ্ন মেঘনা নদীতে বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে। অভিযানে সন্দেহজনক একটি ফিশিং বোটে তল্লাশি চালিয়ে অবৈধভাবে শুল্ক-কর ফাঁকি দিয়ে মিয়ানমারে পাচারের উদ্দেশ্যে বহন করা ২৪৭ বস্তা হলুদ, ২৩৩ বস্তা মাসকলাই ডাল ও ৩২ বস্তা কাঠবাদাম জব্দ করা হয়। যার বাজারমূল্য ৩১ লাখ ৩৪ হাজার টাকা। এ সময় আটক করা হয় ১২ জন পাচারকারীকে।

মিডিয়া কর্মকর্তা বলেন, জব্দ করা বোট, আলামত ও আটক পাচারকারীদের বিরুদ্ধে পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। চোরাচালান রোধে কোস্ট গার্ড ভবিষ্যতেও এ ধরনের অভিযান অব্যাহত রাখবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত