Ajker Patrika

শাবিপ্রবির পিএমই বিভাগ

নিয়োগে অনিয়ম প্রমাণিত, তবু শিক্ষককে যোগদানের চিঠি

  • সিন্ডিকেটের সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে শিক্ষককে যোগদানের চিঠি ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রারের।
  • শৃঙ্খলা বজায় রাখার স্বার্থে সিন্ডিকেটের সিদ্ধান্ত দ্রুত বাস্তবায়নের দাবি শিক্ষকদের।
ইয়াহ্ইয়া মারুফ, সিলেট 
আপডেট : ১৭ মে ২০২৫, ০৭: ১৬
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (শাবিপ্রবি) কম যোগ্য প্রার্থীকে অনিয়মের মাধ্যমে প্রভাষক পদে নিয়োগ দেওয়ার বিষয়টি তদন্তে প্রমাণিত হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় সিন্ডিকেট পেট্রোলিয়াম অ্যান্ড মাইনিং ইঞ্জিনিয়ারিং (পিএমই) বিভাগের ওই প্রভাষকের বেতনসহ আর্থিক সুবিধা বন্ধ করে তাঁকে কেন চাকরিচ্যুত করা হবে না, সে ব্যাপারে কারণ দর্শানোর চিঠি দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে। বিভাগের একাডেমিক পরিবেশ ও সার্বিক শৃঙ্খলা বজায় রাখার স্বার্থে সিন্ডিকেটে গৃহীত সিদ্ধান্তগুলো দ্রুত বাস্তবায়নের দাবি সংশ্লিষ্ট বিভাগের শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের। এসব উপেক্ষা করে গত বুধবার (১৪ মে) বিশ্ববিদ্যালয় ওই শিক্ষককে কর্মস্থলে যোগদানের জন্য অনুরোধ জানিয়েছে। এ নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়জুড়ে তীব্র আলোচনা-সমালোচনার সৃষ্টি হয়েছে।

গত বছরের ১১ জুন ‘কম যোগ্য প্রার্থীকেও ডাকা হলো শাবির ভাইভায়’ এবং ২২ আগস্ট ‘আবেদনের যোগ্যতা না থাকা সেই প্রার্থী এখন শাবির শিক্ষক’ শিরোনামে আজকের পত্রিকায় দুটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়।

গত বছরের ২০ ফেব্রুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার দপ্তর থেকে পিএমই বিভাগে প্রভাষকের একটি পদে নিয়োগের জন্য পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। এতে পাঁচজন আবেদন করেন। ভাইভা দেন চারজন। তাঁদের মধ্যে মো. তাজবিউল ইসলাম নামের এক প্রার্থী ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অব ইঞ্জিনিয়ারিং সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি (আইআইইএসটি), শিবপুর থেকে স্নাতক ডিগ্রিধারী। স্নাতকে তিনি সিজিপিএ-৭.৩৫ অর্জন করেন। ভারতের ওই বিশ্ববিদ্যালয়ে মোট সিজিপিএ-১০ পয়েন্টে হিসাব করা হলেও শাবিপ্রবিসহ দেশের অধিকাংশ বিশ্ববিদ্যালয়ে তা ৪ পয়েন্টের।

বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী, আবেদনকারীর যোগ্যতা চাওয়া হয় স্নাতক (সম্মান/ইঞ্জিনিয়ারিং) এবং স্নাতকোত্তরে সিজিপিএ কমপক্ষে ৩.৫০। কিন্তু তাজবিউলের স্নাতকের সিজিপিএ-৭.৩৫ কে সিজিপিএ ৪-এ পরিবর্তন করলে তা ৩.৫০-এর চেয়ে কম হয়। তবে নিয়মনীতি তোয়াক্কা না করেই পিএমই বিভাগের প্রভাষক পদে নিয়োগ দেওয়া হয় মো. তাজবিউল ইসলামকে।

গত ১৫ মার্চ অনুষ্ঠিত বিশ্ববিদ্যালয়ের ২৩৫তম সিন্ডিকেট সভায় বলা হয়, পিএমই বিভাগে প্রভাষক পদে তাজবিউল ইসলামকে নিয়োগের অভিযোগ তদন্তে প্রমাণিত হওয়ায় তাঁর বেতন ও আর্থিক সুবিধা বন্ধ করে কেন তাঁকে চাকরিচ্যুত করা হবে না, সে ব্যাপারে কারণ দর্শানোর নোটিশ পাঠানোর নির্দেশ দেওয়া হলো। পাশাপাশি লিখিত জবাব প্রাপ্তির পর সে বিষয়ে আইন উপদেষ্টার মতামত নিয়ে পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

এরই মধ্যে গত বুধবার কর্মস্থলে অননুমোদিত অনুপস্থিতি প্রসঙ্গে তাজবিউলকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার সৈয়দ ছলিম মো. আব্দুল কাদির স্বাক্ষরিত চিঠিতে বলা হয়, ‘আপনি দীর্ঘদিন যাবৎ অর্থাৎ ২৭-১১-২০২৪ তারিখ থেকে কর্মস্থলে অননুমোদিত অনুপস্থিত রয়েছেন মর্মে বিভাগীয় প্রধান জানিয়েছেন। কর্মস্থলে আপনার দীর্ঘ অনুপস্থিতির বিষয়ে ব্যাখ্যাসহ কর্মস্থলে যোগদানের জন্য আপনাকে কর্তৃপক্ষের নির্দেশক্রমে অনুরোধ করা যাচ্ছে। অন্যথায় আপনার অননুমোদিত অনুপস্থিতির বিষয়ে বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

বিশ্ববিদ্যালয় এবং পিএমই বিভাগসংশ্লিষ্টরা জানান, রেজিস্ট্রারের পক্ষ থেকে এমন চিঠি ইস্যুর খবর পেয়ে বিষয়টি নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের সঙ্গে সাক্ষাতের চেষ্টা করেন পিএমই বিভাগের শিক্ষকেরা। বিষয়টি নিয়ে একাধিকবার লিখিত দেওয়ার পরও কেন এমন সিদ্ধান্ত, সেটা জানতে চান তাঁরা। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা পৌনে ৭টায় শাবিপ্রবির উপাচার্যের (ভিসি) অফিসে বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে পিএমই বিভাগের ১১ শিক্ষক, ভিসি, প্রো-ভিসি, রেজিস্ট্রার ছাড়াও একজন সাবেক ভিসি এবং আরেকটি বিজ্ঞান প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান ভিসি উপস্থিত ছিলেন।

বৈঠকের সত্যতা নিশ্চিত করে পিএমই বিভাগের প্রধান অধ্যাপক মো. শফিকুল ইসলাম আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট যেটা সিদ্ধান্ত নিয়েছে, আমরাও সব শিক্ষক সেটার বাস্তবায়ন দেখতে চাই। এখন এটা আসতে যদি ঢিলেমি হয়, এর সাথে জড়িত বিশেষ দুষ্টচক্রের বিচার চাই আমরা। আমরা সিন্ডিকেটের রেজল্যুশন পাওয়ার আগেই বা বিশ্ববিদ্যালয় কোনো পদক্ষেপ নেওয়ার আগেই মন্ত্রণালয় থেকে বিশ্ববিদ্যালয়কে চিঠি দিয়ে বিষয়টা খতিয়ে দেখতেছে। এই জিনিসগুলো খুব সন্দেহজনক এবং এটাকে আমরা আশ্চর্যজনক মনে করছি। কারণ হলো, এখানে কেন মন্ত্রণালয় বা অন্যদের এত আগ্রহ। এটা নিয়ে আমরা আসলে খুব শঙ্কিত ও আতঙ্কিত। এটা নিয়ে আসলে এক অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতির সৃষ্টি হবে। কারণ, এখনো ডিপার্টমেন্টের ছাত্রছাত্রীদের অবস্থান এর বিরুদ্ধে।’

বৈঠকে ভিসি কী বললেন জানতে চাইলে পিএমইর প্রধান বলেন, ‘তিনি আমাদের বললেন বিষয়টি একটু আস্তে (ধীরে) চাচ্ছি, আপনাদের সহযোগিতা চাচ্ছি। আমরা তাঁকে বলে এসেছি, যদি তাঁকে মিনিস্ট্রির চাপে রাখতে হয়, তাহলে রাখেন। বাট তাকে নিয়ে আমরা আমাদের ডিপার্টমেন্টের শিক্ষা কার্যক্রম চালাইতে পারব না। তাকে আমি ডিপার্টমেন্টে জয়েন করিয়ে ক্লাসে দিলে, আমি একেবারেই নিশ্চিত, একটা ঝামেলার সৃষ্টি হবে। এই ঝামেলায় আমি যেতে চাচ্ছি না।’

এ বিষয়ে তাজবিউল ইসলামের বক্তব্য জানতে একাধিকবার কল করলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি। খুদে বার্তা পাঠানো হলেও সাড়া দেননি। একইভাবে শিক্ষা উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. চৌধুরী রফিকুল আবরারও কল রিসিভ করেননি। খুদে বার্তা পাঠানো হলেও সাড়া দেননি।

সার্বিক বিষয়ে জানতে চাইলে শাবিপ্রবির উপাচার্য এ এম সরওয়ারউদ্দিন চৌধুরী আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘ও তো জয়েন অবস্থায় আছে আওয়ামী লীগের সময়কাল থেকে। এটা নতুন করে জয়েন করার কিছু নাই। আমরা নিয়মের মধ্যেই আছি। সে তো বেতন নিচ্ছে, আমরাও বেতন বন্ধ করি নাই। কেন সে আসতেছে না, ক্লাস নিতেছে না। ও তো দীর্ঘদিন ধরে কোনো না কোনো কারণে অনুপস্থিত। বেতন নিলে থাকবে না? তো তুমি কেন থাকবে না, এটা জানাইতে বলছে। যেসব ত্রুটি আছে, কমিটি দেখতেছে। আমরা জয়েন করার কথা বলছি না। মন্ত্রণালয় থেকে চিঠি দিছে, তার ব্যাপারটা মন্ত্রণালয়কে জানাইতে বলছে। তো আমরাও জানাইছি আরকি।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

শেখ হাসিনাকে ফেরত পাঠানোর ব্যাপারে এখনো ইতিবাচক সাড়া দেয়নি ভারত: পররাষ্ট্র উপদেষ্টা

রংপুর প্রতিনিধি
রংপুরে সার্কিট হাউসে সাংবাদিকের সঙ্গে কথা বলেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন। ছবি: আজকের পত্রিকা
রংপুরে সার্কিট হাউসে সাংবাদিকের সঙ্গে কথা বলেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন। ছবি: আজকের পত্রিকা

পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন বলেছেন, শেখ হাসিনাকে দেশে ফেরত দেয়ার ব্যাপারে ভারত এখনও ইতিবাচক সাড়া দেয়নি। ট্রাইব্যুনালের রায় নিয়ে তারা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করছে, আমরাও তাদের প্রতিক্রিয়ার অপেক্ষায় আছি। আজ শুক্রবার (৫ ডিসেম্বর) সকালে রংপুর সার্কিট হাউসে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এসব কথা বলেন তিনি। রংপুর অঞ্চলে চার দিনের সফরে এসেছেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা।

পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ‘আমরা তো চেয়েছি যে তাকে (শেখ হাসিনাকে) ফেরত পাঠানো হোক। যেহেতু উনি একজন কনভিক্টেড, যেহেতু সর্বোচ্চ বিচারিক সংস্থা তাকে একটি শাস্তি দিয়েছে। কিন্তু আমরা ইতিবাচক কোনো সাড়া এখন পর্যন্ত পাইনি। এটা নিয়ে আমার মনে হয় স্পেকুলেট না করাই ভালো। দেখা যাক কী হয়। আমরা তো চেয়েছি খুব, এ ধরনের ঘটনায় তো ঝট করে একদিনে সাত দিনে কোনো পরিবর্তন ঘটে না। আমরা অপেক্ষা করব, দেখি, ভারতের পক্ষ থেকে কি আসছে রিঅ্যাকশন।’

তৌহিদ হোসেন বলেন, একটা রিঅ্যাকশন আমরা দেখেছি যেটা, সেটা হলো তারা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে দেখছে, এরকম একটা কথা আসছে আমাদের। দেখুক তারা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে।

বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের দেশে ফেরার বিষয়ে পররাষ্ট্র দপ্তরে কোনো তথ্য নেই বলে উল্লেখ করে উপদেষ্টা বলেন, "তারেক সাহেব কখন আসবেন এই সম্বন্ধে আমার কাছে কোনো তথ্য নেই। উনার স্ত্রী সম্ভবত আসছেন বা পৌঁছে গেছেন হয়তো ইতিমধ্যে। আজকে সকালে পৌঁছার কথা ছিল। বেগম জিয়াকে আজকে নেওয়া হচ্ছে না, আমি ঢাকা থেকে আজকে সকালে জানলাম যে, আজকে নেওয়া হচ্ছে না। একটু টেকনিক্যাল প্রবলেম দেখা দিয়েছে ওই এয়ারক্রাফট নিয়ে। সেক্ষেত্রে হয়তো এক-আধ দিন দেরি হতে পারে। "

আরাকান আর্মি বাংলাদেশিদের ধরে নিয়ে যাওয়া প্রসঙ্গে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, "আরাকান আর্মির সাথে আমাদের দ্বিপাক্ষিক আলোচনা সম্ভব নয়। তারা একটা নন-স্টেট অ্যাক্টর। আমরা স্টেট হিসেবে দ্বিপাক্ষিক আলোচনা যেমন মিয়ানমারের কর্তৃপক্ষ, থাইল্যান্ড বা ভারতের সাথে করতে পারি সেটা তাদের সাথে করতে পারি না। তবে আমাদের স্বার্থ যেহেতু আছে, আমাদের দেখতে হবে। এই ঘটনা যাতে কমে বা আদৌ না ঘটে, এটার জন্য পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে। "

এছাড়াও নীলফামারীতে প্রস্তাবিত চীনা হাসপাতালের কার্যক্রম অন্তর্বর্তী সরকার দ্রুত শুরু করে যেতে চায় বলেও জানান পররাষ্ট্র উপদেষ্টা। একই সঙ্গে নির্বাচিত সরকার এলে এই কাজ সমাপ্ত করবে বলেও আশা তার। এ সময় পিছিয়ে পড়া রংপুরের প্রত্নতাত্ত্বিকসহ সবক্ষেত্রে নেয়ার ব্যাপারে ইতিবাচক সরকারের সদিচ্ছার কথা জানান তৌহিদ হোসেন।

এরপর পররাষ্ট্র উপদেষ্টা সপরিবারে রংপুর জমিদার বাড়ি তাজহাটে পরিদর্শনে যান। এছাড়াও বিকেলে রংপুর সার্কিট হাউসে চা-চক্রের কথা রয়েছে তৌহিদ হোসেনের। আগামীকাল রংপুরের প্রশাসনিক কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময় এবং রংপুরের ঐতিহ্যবাহী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান জিলা স্কুল পরিদর্শন করার কথাও রয়েছে তার।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

হাতিয়ায় ৫৬০০ কেজি জাটকা ইলিশ জব্দ, এতিমখানায় বিতরণ

­হাতিয়া (নোয়াখালী) প্রতিনিধি
কোস্ট গার্ডের অভিযানে জব্দ জাটকা ইলিশ। ছবি: আজকের পত্রিকা
কোস্ট গার্ডের অভিযানে জব্দ জাটকা ইলিশ। ছবি: আজকের পত্রিকা

নোয়াখালীর হাতিয়ার জাগলার চর এলাকার মেঘনা নদীতে অভিযান চালিয়েছে কোস্ট গার্ড। এ সময় একটি নৌকা থেকে ৫ হাজার ৬০০ কেজি জাটকা ইলিশ জব্দ করা হয়। এই ঘটনায় আটক কয়েকজন মাঝিমাল্লার কাছ থেকে মুচলেকা নিয়ে তাঁদের ছেড়ে দেওয়া হয়।

গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে কোস্ট গার্ড হাতিয়ার একটি দল এই অভিযান চালায়। জব্দ করা জাটকাগুলোর মূল্য প্রায় ২৮ লাখ টাকা।

কোস্ট গার্ড মিডিয়া কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট মো. আবুল কাশেম জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে মেঘনা নদীর বিভিন্ন এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে কোস্ট গার্ড। অভিযানে মেঘনা নদীর জাগলার চর এলাকায় একটি কাঠের নৌকায় তল্লাশি করা হয়। ওই নৌকা থেকে ৫ হাজার ৬০০ কেজি জাটকা জব্দ করা হয়। এ সময় মাঝিদের মুচলেকা নিয়ে নৌকা ছেড়ে দেওয়া হয়। জব্দ মাছগুলো মৎস্য কর্মকর্তাসহ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের উপস্থিতিতে এতিমখানা ও দুস্থ ব্যক্তিদের মধ্যে বিতরণ করা হয়েছে। মৎস্য সম্পদ রক্ষায় কোস্ট গার্ডের এ ধরনের অভিযান অব্যাহত থাকবে বলে জানান এই কর্মকর্তা।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

মাঠে পড়ে ছিল মাছ ব্যবসায়ীর রক্তাক্ত লাশ

ফরিদপুর প্রতিনিধি
ঘটনাস্থলে স্থানীয় বাসিন্দারা জড়ো হন। ছবি: আজকের পত্রিকা
ঘটনাস্থলে স্থানীয় বাসিন্দারা জড়ো হন। ছবি: আজকের পত্রিকা

ফরিদপুরের সালথায় উৎপল সরকার (৩৫) নামের এক মাছ ব্যবসায়ীর রক্তাক্ত লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। আজ শুক্রবার সকালে উপজেলার আটঘর ইউনিয়নের গৌরদিয়া এলাকার কালীতলা ব্রিজ-সংলগ্ন মাঠ থেকে লাশটি উদ্ধার করে পুলিশ। এই ঘটনায় মাঠ-সংলগ্ন সেতু থেকে চোখ বাঁধা অবস্থায় থাকা ফিরোজ মোল্যা নামের এক ভ্যানচালককে জীবিত উদ্ধার করে স্থানীয় লোকজন।

নিহত উৎপল ফরিদপুর জেলা সদরের কানাইপুর ইউনিয়নের রনকাইল গ্রামের অজয় সরকারের ছেলে। তাঁর স্ত্রী ও আড়াই বছর বয়সী এক শিশুসন্তান রয়েছে।

থানা-পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, আজ ভোরে সড়কের পাশে ফাঁকা মাঠে রক্তাক্ত অবস্থায় একটি লাশ দেখতে পায় স্থানীয় লোকজন। পাশেই একটি সেতুর সঙ্গে একই গ্রামের ভ্যানচালক ফিরোজ মোল্যাকে চোখ বাঁধা অবস্থায় বেঁধে রাখা হয়েছিল। পরে স্থানীয় বাসিন্দাদের হত্যাকাণ্ডের বিষয়টি খুলে বলেন তিনি।

ভ্যানচালকের বরাত দিয়ে রনকাইল গ্রামের বাসিন্দা ও প্রতিবেশী কাজী শাহীন বলেন, উৎপল সরকার ব্যাটারিচালিত ভ্যানে করে গোপালগঞ্জের মুকসুদপুরে মাছ কিনতে যাচ্ছিলেন। পথে অজ্ঞাতপরিচয় তিন-চার ব্যক্তি দেশীয় অস্ত্রের মুখে ভ্যানচালক ফিরোজ মোল্যাকে গামছা দিয়ে চোখ বেঁধে ব্রিজের রেলিংয়ে বেঁধে ফেলে। তারা উৎপলের সঙ্গে থাকা টাকাপয়সা লুট করে তাঁকে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে হত্যা করে পালিয়ে যায়।

বিষয়টি নিশ্চিত করে সালথা থানার পরিদর্শক (তদন্ত) কে এম মারুফ হাসান রাসেল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘দুই থেকে তিনজন দুর্বৃত্ত ঘটনাটি ঘটিয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে জানা গেছে। তবে এটাকে ডাকাতি বলা যায় না। ঘটনাটি নিয়ে তদন্ত চলমান। তদন্ত শেষে মূল কারণ বলা যাবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

বাসার দরজা ভেঙে চবি শিক্ষার্থীর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার

চবি প্রতিনিধি 
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) ওমর ফারুক সুমন নামের এক শিক্ষার্থীর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার (৪ ডিসেম্বর) রাতে চট্টগ্রাম নগরীর খুলশী এলাকার একটি বাসা থেকে লাশটি উদ্ধার করে পুলিশ।

ওমর ফারুক বিশ্ববিদ্যালয়ের আরবি বিভাগের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন।

স্থানীয় ও পরিবারের সদস্যরা জানান, সুমন খুলশীতে তাঁর মামার বাসায় থাকতেন। তাঁর বড় ভাইও সেখানে থাকেন। দুই দিন আগে সুমনের মামা পুরো পরিবার নিয়ে তুরস্কে বেড়াতে যান। বাসায় সুমন ও তাঁর বড় ভাই ছিলেন। গতকাল বিকেল ৪টার দিকে ভাইয়ের সঙ্গে ফোনে কথা বলেন সুমন। ফোনে তাঁর বড় ভাই কখন বাসায় ফিরবেন জানতে চান সুমন। বড় ভাই জানান যে তাঁর আসতে একটু দেরি হবে। এর কিছুক্ষণ পর বড় ভাই সুমনকে ফোন করলে তিনি আর ফোন রিসিভ করেননি। পরে বাড়ি থেকে সুমনের মা ফোন দিয়ে যোগাযোগ করতে না পেরে বিষয়টি বড় ভাইকে জানান। এতে উদ্বেগ দেখা দিলে বড় ভাই বিল্ডিংয়ের দারোয়ানকে দিয়ে বাসা চেক করান।

দারোয়ান কলিংবেল বাজিয়েও কোনো সাড়া না পেয়ে বড় ভাইকে জানালে তিনি দ্রুত বাসায় এসে সুমনকে ঝুলন্ত অবস্থায় দেখতে পান। খবর পেয়ে পুলিশ এসে লাশ উদ্ধার করে। ঘটনাস্থলে চিরকুট মিলেছে। এতে লেখা রয়েছে, ‘আমি সুমন, ওমর ফারুক সুমন। আমার কোনো আশা-আকাঙ্ক্ষা নেই। আর আমার কারও প্রতি কোনো অভিযোগ নেই। সবাই ভালো থাকবেন।’ এর আগে ১ ডিসেম্বর লেখা আরেকটি চিরকুট পাওয়া যায়। সেখানে লেখা ছিল—‘আশাই জীবন, আশাই মরণ, ব্যর্থতা হতাশা-অন্ধকারে নিয়ে যায়।’

খুলশী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহীনুর জামান বলেন, ‘সুমন ও তাঁর বড় ভাই একসঙ্গে মামার বাসায় থাকতেন। মামা ও মামি বর্তমানে বিদেশে আছেন। বড় ভাই সন্ধ্যায় বাইরে যান। সে সময় সুমন বাসায় একা ছিলেন। বড় ভাই বাসায় ফিরে এসে বারবার ডাকলেও ফ্ল্যাটের ভেতর থেকে কোনো সাড়া পাননি। পরে দরজা ভেঙে ভেতরে ঢুকলে সুমনের মরদেহ ঝুলন্ত অবস্থায় পাওয়া যায়। প্রাথমিক তদন্তে এটি আত্মহত্যা মনে হলেও আমরা সব সম্ভাব্য কারণ খতিয়ে দেখছি। ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহটি চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত