Ajker Patrika

ইতালি নেওয়ার স্বপ্ন দেখিয়ে লাপাত্তা দম্পতি

নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহী
আপডেট : ১৮ জুলাই ২০২৫, ১৫: ১৮
প্রতারণার অভিযোগে অভিযুক্ত দম্পতি। ফাইল ছবি
প্রতারণার অভিযোগে অভিযুক্ত দম্পতি। ফাইল ছবি

অনেক দিন পর গ্রামে বউ নিয়ে হাজির জোবায়েদ আহমেদ জয় (৩৭)। পশ্চিমা ধাঁচের পোশাক স্ত্রী কুলসুম খাতুনের (৩৫) পরনে। জয় সবাইকে জানালেন, তাঁর স্ত্রী থাকেন ইতালিতে। সেখানে দুই শ্যালকের কারখানা আছে। কেউ চাইলে তাকে ইতালি নিয়ে ভালো বেতনে কাজ দেওয়া হবে। ইতালি যাওয়ার আশায় সরল বিশ্বাসে গ্রামের অনেকেই জয় ও কুলসুমের হাতে তুলে দিয়েছেন মোটা টাকা। এরপর লাপাত্তা হয়ে গেছেন এই `প্রতারক’ দম্পতি।

প্রতারণার এমন ঘটনা ঘটেছে কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলায়। এলাকাটি রাজশাহীর বাঘা উপজেলার ঠিক বিপরীতে, পদ্মা নদীর ওপারে। প্রতারক কুলসুম খাতুন স্বামীর সঙ্গে ওই এলাকায় গিয়ে তাঁর নাম জানিয়েছিলেন ‘মুনিয়া’। তাঁর বাবার বাড়ি রাজশাহীর পবা উপজেলার তেবাড়িয়া গ্রামে। এই গ্রামে তিনি কুলসুম নামেই পরিচিত। তাঁর বাবার নাম আবদুস সালাম মিয়া ওরফে টেনু। কুলসুমের বহুবিবাহের অভ্যাস আছে। তাই পরিবারের সঙ্গে সম্পর্ক নেই।

দৌলতপুরে যাঁরা প্রতারিত হয়েছেন তাঁদের মধ্যে রয়েছেন শুভ বিশ্বাস মানিক (২৫) ও জাহিদ হাসান (২৩)। জাহিদ পেশায় কাঠমিস্ত্রি। আর শুভ পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট থেকে ইলেক্ট্রিক্যালে ডিপ্লোমা করেছেন। দুজনের বাড়িই দৌলতপুর উপজেলা সদরে। কুলসুমকে খুঁজতে বৃহস্পতিবার (১৭ জুলাই) জাহিদ, মানিক ও তাঁর বাবা রতন কুমার বিশ্বাস পবার তেবাড়িয়ায় আসেন।

তাঁরা জানান, ইতালি যাওয়ার জন্য গত বছরের ২৪ নভেম্বর কুলসুমের রূপালী ব্যাংকের একটি হিসাবে ৫ লাখ টাকা জমা দিয়েছিলেন জাহিদ হাসান। টাকা জমা দেওয়ার রশিদ তাঁদের হাতেই ছিল। সেখান থেকে ব্যাংক হিসাব নম্বরের সূত্র ধরে কুলসুমের জাতীয় পরিচয়পত্র বের করেছেন। জাতীয় পরিচয়পত্রে থাকা ঠিকানা নিয়ে তাঁরা রাজশাহী এসেছেন। কিন্তু এখানেও কুলসুমকে পাননি। বাড়ি গিয়ে কুলসুমের বাবা টেনুর সঙ্গে তাঁদের দেখা হয়েছে।

টেনু জানিয়েছেন, পাঁচ-ছয় বছর ধরে মেয়ের সঙ্গে তাঁদের সম্পর্ক নেই। তাঁকে পেলে যেন তাঁরা টাকা আদায় করে নেন। জাহিদ ও মানিক দাবি করেন, এলাকায় গিয়ে তাঁরা শুনেছেন কুলসুমের বহুবিবাহের অভ্যাস আছে। এ পর্যন্ত পাঁচ-ছয়টি বিয়ের কথা এলাকার লোকজন জানেন।

জাহিদ ব্যাংকের মাধ্যমে কুলসুমকে টাকা দিলেও মানিক দিয়েছিলেন নগদ। তিনিও খুইয়েছেন ৫ লাখ টাকা। মানিক জানান, কুলসুমের সর্বশেষ স্বামী জোবায়েদের বাড়ি দৌলতপুর গ্রামে। তবে গত বছরের শেষের দিকে তিনি স্ত্রীকে নিয়ে দৌলতপুর থানার পাশেই একটি বাসা ভাড়া নেন। সেখানে এসে দুজনে এলাকার লোকজনের সঙ্গে মিশে যান। কুলসুমের পোশাক-আশাক ছিল পশ্চিমা ধাঁচের। তাঁর নাম জানাতেন মুনিয়া। বলতেন, তিনি ইতালিতে থাকেন। সেখানে তাঁর দুই ভাইয়ের ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান ও কারখানা আছে। যাঁরা ইতালি যেতে চান, তিনি তাঁদের সবাইকেই ইতালি নিয়ে যাবেন। ভাল কাজ দেবেন। মোট ১৭ লাখ টাকা খরচ হবে। অর্ধেক বাংলাদেশেই দিতে হবে। বাকি অর্ধেক ইতালিতে বেতন থেকে কাটা হবে।

ইতালি যাওয়ার স্বপ্ন দেখে এলাকার অনেক যুবক জোবায়েদ ও কুলসুমের হাতে ৫-৭ লাখ টাকা করে তুলে দেন। জোবায়েদ ও কুলসুম এলাকায় চার মাস ছিলেন। ইতালি যেতে যাঁরা টাকা দেন, তাঁদের পাসপোর্ট নিয়ে ভিসা আনতে যাওয়ার কথা বলে গত ফেব্রুয়ারিতে তাঁরা এলাকা ছাড়েন। এরপর যোগাযোগ বন্ধ করে দেন। এখন এলাকার লোকজন তাঁদের খুঁজে পাচ্ছেন না।

মানিক ও জাহিদ আরও জানান, তাঁরা জোবায়েদের বাবার বাড়িও গিয়েছিলেন। সেখানে গিয়েও বাড়িতে কাউকে পাওয়া যায়নি। গোপনে জায়গা-জমি বিক্রি করে তাঁরা সপরিবারে পালিয়েছেন। তাঁরা নিজ আত্মীয়স্বজনেরও টাকা হাতিয়েছেন ইতালি নেওয়ার কথা বলে। এ ছাড়া দৌলতপুর বাজারের ব্যবসায়ী আরেজ উদ্দিনের জুয়েলার্সের দোকান থেকে ২ লাখ টাকার স্বর্ণালংকার নিয়ে টাকা না দিয়েই পালিয়েছেন কুলসুম। সব মিলিয়ে প্রায় কোটি টাকা হাতিয়ে তাঁরা লাপাত্তা।

মানিকের বাবা রতন কুমার বিশ্বাস বলেন, ‘দৌলতপুরে আমার ছোট একটা ব্যবসা ছিল। ছেলেটা পড়াশোনা করে চাকরি পায়নি। তাই ব্যবসার সব টাকা টেনে বিদেশ যাওয়ার জন্য দিয়েছিলাম। এখন ছেলে বিদেশও যেতে পারেনি, আমার ব্যবসাও বন্ধ হয়ে গেছে। আমরা গরিব মানুষ। এখন খুব কষ্টে পড়ে গেছি। আমরা চাই প্রশাসন যেন এদের খুঁজে বের করে।’

অভিযোগের বিষয়ে কথা বলার জন্য জোবায়েদ আহমেদ জয়ের ফেসবুক মেসেঞ্জারে বার্তা পাঠানো হলেও তিনি সাড়া দেননি। ভুক্তভোগী মানিক ও জাহিদের কাছে এই দম্পতির চারটি মোবাইল নম্বর পাওয়া যায়। সবগুলো নম্বরই বন্ধ পাওয়া গেছে। তবে একটি হোয়াটসঅ্যাপ নম্বরে কুলসুম খাতুন ওরফে মুনিয়াকে পাওয়া গেছে। হোয়াটসঅ্যাপের আইডিতে তখন ইতালির একটি লাল পাসপোর্টের ছবি দেখা যায়। পরপর দুবার ফোন করা হলে তিনি প্রথমে কেটে দেন। পরে তাঁর জাতীয় পরিচয়পত্র ও বাংলাদেশি পাসপোর্টের ডেলিভারি স্লিপের ছবি পাঠানো হলে সঙ্গে সঙ্গেই তিনি এই প্রতিবেদককে ফোন করেন।

তিনি ইতালি নিয়ে যাওয়ার নামে দৌলতপুরে প্রতারণার অভিযোগ অস্বীকার করেন। হোয়াটসঅ্যাপের আইডিতে ইতালির লাল পাসপোর্টের ছবি থাকার কারণ জানতে চাইলে কুলসুম খাতুন দাবি করেন, এই পাসপোর্ট তার। পাঁচ মাস আগে তিনি ইতালি চলে গেছেন। এখন আছেন রোমে। তিনি বাংলাদেশেই কি না, জানতে চাইলে বলেন, ‘বাংলাদেশে তো খুঁজে বের করেন।’

এর পরই তিনি ফোনের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেন। এরপর তিনি হোয়াটসঅ্যাপ আইডি থেকে ইতালির লাল পাসপোর্টের ছবিটি সরিয়ে দেন। পরে হোয়াটসঅ্যাপেও আর সংযোগ মেলেনি।

দৌলতপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নাজমুল হুদা আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘এ রকম প্রতারণার বিষয়টি আমার নলেজে নেই। হয়তো আমি আসার আগে ঘটেছে। এ রকম কোনো অভিযোগও আমি পাইনি। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে অবশ্যই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

সখীপুরে নিখোঁজের ৭ ঘণ্টা পর বন থেকে উদ্ধার শিশুটি মারা গেছে

সখীপুর (টাঙ্গাইল) প্রতিনিধি 
নিহত শিশু শামীম। ছবি: সংগৃহীত
নিহত শিশু শামীম। ছবি: সংগৃহীত

টাঙ্গাইলের সখীপুরে নিখোঁজের ৭ ঘণ্টা পর বন থেকে রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার হওয়া শিশু শামীম (১০) মারা গেছে। উদ্ধারের তিন দিন পর গতকাল বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে ঢাকার একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সে মারা যায়। আজ শুক্রবার সকালে লাশটি ময়নাতদন্তের জন্য টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।

নিহত ব্যক্তির মামা সাব্বির হোসেন ও সখীপুর থানা-পুলিশ মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। নিহত শামীম উপজেলার কালিয়ানপাড়া গ্রামের শাহিন আলমের ছেলে ও স্থানীয় কীর্তনখোলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের তৃতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থী ছিল।

নিহত শিশুর পরিবার ও স্থানীয় বাসিন্দা সূত্রে জানা গেছে, গত সোমবার দুপুর ১২টার দিকে শামীম বাড়ি থেকে বের হয়। দীর্ঘ সময় পেরিয়ে গেলেও ফিরে না আসায় পরিবারের সদস্যরা সম্ভাব্য বিভিন্ন স্থানে খোঁজাখুঁজি করেন। একপর্যায়ে তাঁরা বাড়ির আশপাশের বনাঞ্চলে অনুসন্ধান চালান। পরে রাত ৮টার দিকে বাড়ি থেকে প্রায় আধা কিলোমিটার দূরে একটি বন থেকে শামীমকে রক্তাক্ত ও অচেতন অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। রাত ৯টার দিকে তাকে সখীপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়। সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকার ধানমন্ডিতে একটি বেসরকারি হাসপাতালে নেওয়া হয়েছিল।

নিহত শামীমের মামা সাব্বির হোসেন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমরা প্রাথমিকভাবে ধারণা করেছিলাম শিয়ালের আক্রমণে এমন হয়েছে। কিন্তু হাসপাতালে নেওয়ার পর চিকিৎসকেরা জানান, এটি শেয়াল-কুকুরের আক্রমণের চিহ্ন নয়, শিশুটির মাথা ও শরীরের আঘাত করা হয়েছে।’

সখীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. হেলাল উদ্দিন বলেন, নিহত শামীমের লাশ ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছে। তদন্ত রিপোর্ট পেলে মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানা যাবে। এ বিষয়ে পরিবারের পক্ষ থেকে মামলার প্রস্তুতি চলছে বলেও জানান এই কর্মকর্তা।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

দুমকীতে অটো-টমটম সংঘর্ষে নিহত ২, আহত ২

দুমকী (পটুয়াখালী) প্রতিনিধি
দুমড়েমুচড়ে যাওয়া গাড়ি। ছবি: আজকের পত্রিকা
দুমড়েমুচড়ে যাওয়া গাড়ি। ছবি: আজকের পত্রিকা

পটুয়াখালীর দুমকীতে অটোরিকশা ও সিমেন্টবাহী টমটমের সংঘর্ষে দুজন নিহত ও দুজন আহত হয়েছে। আজ শুক্রবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে লেবুখালী-বাউফল মহাসড়কের রাজাখালী (স্থানীয় নাম পিছাখালী ব্রিজ) এলাকায় এই দুর্ঘটনা ঘটে।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বগা থেকে আসা যাত্রীবাহী অটোরিকশা বিপরীত দিক থেকে আসা সিমেন্টবাহী টমটমের সঙ্গে মুখোমুখি সংঘর্ষে দুমড়েমুচড়ে যায়। এতে ঘটনাস্থলে ছয় বছরের রবিউল নিহত হন। আহত ব্যক্তিদের উদ্ধার করে হাসপাতালে নেওয়া হলে ৬০ বছর বয়সী ইব্রাহিম খানকে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। গুরুতর আহত সুমন সরদার (২৫) ও আব্দুল কাদেরকে (৫০) বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, আহত আব্দুল কাদেরের অবস্থা আশঙ্কাজনক। সুমনের একটি হাত সম্পূর্ণ ভেঙে গেছে। নিহত ও আহত ব্যক্তিদের বাড়ি বাউফল উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে।

দুমকী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সেলিম উদ্দীন জানান, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। ঘটনাস্থল থেকে দুর্ঘটনাকবলিত অটোরিকশা ও টমটমটিকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসা হয়েছে। নিহত ব্যক্তির পরিবার অভিযোগ করলে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

দৌলতপুর সীমান্তে ভারতীয় নাগরিক পুশ ইনের চেষ্টা: ব্যর্থ হয়ে ১৪ জনকে ফেরত নিল বিএসএফ

দৌলতপুর (কুষ্টিয়া) প্রতিনিধি 
১৪ জন ভারতীয় নাগরিককে বাংলাদেশে পুশ ইনের চেষ্টা করে বিএসএফ। শূন্য লাইন থেকে গতকাল দুপুরে তোলা। ছবি: আজকের পত্রিকা
১৪ জন ভারতীয় নাগরিককে বাংলাদেশে পুশ ইনের চেষ্টা করে বিএসএফ। শূন্য লাইন থেকে গতকাল দুপুরে তোলা। ছবি: আজকের পত্রিকা

আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে সারা দেশে যখন আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে প্রশাসনের কঠোর নজরদারি চলছে, ঠিক সেই সময় কুষ্টিয়ার দৌলতপুর সীমান্ত দিয়ে ১৪ জন ভারতীয় নাগরিককে বাংলাদেশে পুশ ইনের চেষ্টা চালিয়েছে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ)। তবে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) তৎপরতায় ওই চেষ্টা ব্যর্থ হয় এবং পতাকা বৈঠকের মাধ্যমে ১৪ ভারতীয় নাগরিককে জিরো লাইন থেকে ফেরত নিয়ে যায় বিএসএফ।

গতকাল বৃহস্পতিবার (২৫ ডিসেম্বর) দিবাগত গভীর রাতে দৌলতপুর উপজেলার রামকৃষ্ণপুর ইউনিয়নের রামকৃষ্ণপুর বিওপির সীমান্ত দিয়ে ভারতীয় নাগরিকদের বাংলাদেশে প্রবেশ করানোর চেষ্টা করা হয়।

বিজিবি সূত্র জানায়, বিএসএফের আহ্বানে কোম্পানি কমান্ডার পর্যায়ে একটি পতাকা বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। কুষ্টিয়া ব্যাটালিয়নের (৪৭ বিজিবি) অধীন মহিষকুন্ডি বিওপিতে কর্মরত সুবেদার আসাদুজ্জামানের নেতৃত্বে ছয় সদস্যের বিজিবি প্রতিনিধিদল এবং ১৪৬ বিএসএফ ব্যাটালিয়নের নিউ উদয় কোম্পানি কমান্ডার এসি অনিল কুমারের নেতৃত্বে ছয় সদস্যের বিএসএফ প্রতিনিধিদল বৈঠকে অংশ নেয়।

বৃহস্পতিবার বেলা ১টা ৪০ মিনিট থেকে ২টা ২০ মিনিট পর্যন্ত সীমান্তের মেইন পিলার ১৫৪/০৭ এস-সংলগ্ন ভারতের অভ্যন্তরে চাইডোবা মাঠে এই পতাকা বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে বিজিবির পক্ষ থেকে বাংলাদেশে ভারতীয় নাগরিক পুশ ইনের ঘটনায় তীব্র প্রতিবাদ জানানো হয় এবং অবিলম্বে তাদের ফেরত নেওয়ার দাবি জানানো হয়।

পরে শূন্য লাইনে অবস্থানরত ব্যক্তিদের পরিচয় ও ঠিকানা যাচাই করে তারা সবাই ভারতের ওডিশা প্রদেশের জগতসিংপুর সদর উপজেলার তারিকুন্ডা এলাকার বাসিন্দা বলে নিশ্চিত হওয়া যায়। যাচাই শেষে বিএসএফ তাদেরকে ভারতের অভ্যন্তরে ফিরিয়ে নিয়ে যায়।

পুশ ইনের চেষ্টা করা ব্যক্তিদের মধ্যে রয়েছেন মৃত হারুন শেখের ছেলে শেখ জব্বার (৭০), তাঁর চার ছেলে শেখ হাকিম (৪৫), শেখ ওকিল (৪০), শেখ রাজা (৩০) ও শেখ বান্টি (২৮); শেখ ওকিলের স্ত্রী শাবেরা বিবি (৩০); শেখ হাকিমের স্ত্রী শমশেরি বিবি (৪০); শেখ রাজার স্ত্রী মাইনু বিবি (২৫); শেখ জব্বারের স্ত্রী আলকনি বিবি (৬০); মৃত শেখ হোসেনের স্ত্রী গুলশান বিবি (৯০); শিশুদের মধ্যে রয়েছে শাকিলা খাতুন (১১), নাছরিন আক্তার (১২), শেখ তাওহিদ (১১) ও আড়াই বছর বয়সী শেখ রহিত।

এই ঘটনায় সীমান্তবাসীর মধ্যে উদ্বেগ দেখা দিয়েছে। নির্বাচনকালীন স্পর্শকাতর সময়ে ভারতের এমন পুশ ইন চেষ্টাকে কেন্দ্র করে সীমান্ত এলাকায় নানা আলোচনা ও প্রশ্ন উঠেছে।

এ বিষয়ে কুষ্টিয়া ৪৭ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল রাশেদ কামাল রনি বলেন, ‘বাংলাদেশের সীমান্ত দিয়ে কোনোভাবেই অবৈধ অনুপ্রবেশ বা পুশ ইন মেনে নেওয়া হবে না। সীমান্ত নিরাপত্তা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষায় বিজিবি সব সময় কঠোর অবস্থানে রয়েছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

সিরাজগঞ্জে দুটি ট্রাকের মুখোমুখি সংঘর্ষ, আহত ২

সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি  
উল্লাপাড়া উপজেলার সলঙ্গা তালতলা এলাকায় ঢাকা-রাজশাহী মহাসড়কে দুটি ট্রাকের মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। ছবি: আজকের পত্রিকা
উল্লাপাড়া উপজেলার সলঙ্গা তালতলা এলাকায় ঢাকা-রাজশাহী মহাসড়কে দুটি ট্রাকের মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। ছবি: আজকের পত্রিকা

সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়ায় মালবাহী দুটি ট্রাকের মুখোমুখি সংঘর্ষে এক ট্রাকের চালক ও হেলপার গুরুতর আহত হয়েছেন। আহত ব্যক্তিদের স্থানীয় বাসিন্দারা উদ্ধার করে সিরাজগঞ্জ শহীদ এম মনসুর আলী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠিয়েছেন। তাৎক্ষণিকভাবে তাঁদের পরিচয় পাওয়া যায়নি।

শুক্রবার সকালে উল্লাপাড়া উপজেলার সলঙ্গা তালতলা এলাকায় ঢাকা-রাজশাহী মহাসড়কে দুর্ঘটনাটি ঘটে।

হাটিকুমরুল হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইসমাইল হোসেন আজকের পত্রিকাকে জানান, ঢাকা থেকে ছেড়ে আসা গবাদিপশুর খাবার (ভুসি) বহনকারী একটি ট্রাকের সঙ্গে চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে ছেড়ে আসা পাথরবোঝাই আরেকটি ট্রাকের সংঘর্ষ হয়। এতে একটি ট্রাক নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে রাস্তার পাশে ছিটকে পড়ে এবং অপরটি মহাসড়কের ওপর দাঁড়িয়ে যায়।

দুর্ঘটনার পর রেকার দিয়ে ট্রাক সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। আহত চালক ও হেলপারের পরিচয় এখনো জানা যায়নি বলে জানান ওসি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত