Ajker Patrika

জাল সনদে বিদ্যালয়ের সভাপতি হয়ে ধরা পড়লেন বিএনপি নেতা

নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহী
আপডেট : ১২ আগস্ট ২০২৫, ১৪: ২৮
বিএনপি নেতা তফিকুল ইসলাম। ছবি: সংগৃহীত
বিএনপি নেতা তফিকুল ইসলাম। ছবি: সংগৃহীত

শিক্ষাগত যোগ্যতার জাল সনদ দিয়ে বিদ্যালয়ের সভাপতি হয়েছিলেন রাজশাহীর বাঘা পৌর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক তফিকুল ইসলাম ওরফে তফি। পরে শিক্ষা বোর্ডের তদন্তে তাঁর জাল সনদের বিষয়টি ধরা পড়েছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে তাঁর সভাপতির পদ বাতিল করতে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষককে চিঠি দিয়েছে রাজশাহী শিক্ষা বোর্ড কর্তৃপক্ষ।

বিএনপি নেতা তফিকুল ইসলাম বাঘা পৌরসভার সাবেক কাউন্সিলর। তিনি পৌরসভার প্যানেল মেয়রও ছিলেন। সরকারি প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী, বিদ্যালয়ের গভর্নিং বডির সভাপতি হতে গেলে এখন শিক্ষাগত যোগ্যতা থাকতে হবে স্নাতক বা সমমান। তফিকুলের সেই যোগ্যতা নেই। তার পরও তিনি বাঘা উচ্চবিদ্যালয়ের অ্যাডহক কমিটির সভাপতি হয়ে গিয়েছিলেন।

সভাপতি হওয়ার সময় তিনি বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষককে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি সনদ জমা দেন। ১৯৯৯ সালে তিনি বিএ পাস করেছিলেন দাবি করে সনদটি দেন। সনদটির রোল নম্বর ২৬০৫১২ ও রেজিস্ট্রেশন নম্বর ৬৫২২৬১। তদন্তে প্রমাণিত হয়েছে, সনদটি জাল।

নথিপত্রে দেখা গেছে, চলতি বছরের ২০ ফেব্রুয়ারি রাজশাহী শিক্ষা বোর্ড কর্তৃপক্ষ বাঘা উচ্চবিদ্যালয়ের চার সদস্যের অ্যাডহক কমিটি অনুমোদন করে। এই কমিটিতে শিক্ষা বোর্ড কর্তৃক মনোনীত হিসেবে সভাপতি হন বাঘা পৌর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক তফিকুল ইসলাম।

সম্প্রতি তফিকুল ইসলামের বিরুদ্ধে শিক্ষা বোর্ডে লিখিত অভিযোগ হয় যে তিনি শিক্ষাগত যোগ্যতার জাল সনদ দিয়ে সভাপতি হয়েছেন। অভিযোগ পেয়ে শিক্ষা বোর্ড কর্তৃপক্ষ বিষয়টি জেলা শিক্ষা কর্মকর্তাকে তদন্তের দায়িত্ব দেয়। জেলার ভারপ্রাপ্ত শিক্ষা কর্মকর্তা আব্দুল ওয়াহাব গত ৯ জুলাই শিক্ষা বোর্ডের বিদ্যালয় পরিদর্শকের কাছে তদন্ত প্রতিবেদন পাঠান। তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়, তফিকুলের সনদটির সঠিকতা পাওয়া যায়নি।

এর পরিপ্রেক্ষিতে ৭ আগস্ট শিক্ষা বোর্ডের বিদ্যালয় পরিদর্শক শামীম হাসান বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষককে একটি চিঠি দেন। চিঠিতে বলা হয়, অ্যাডহক কমিটির সভাপতি তফিকুল ইসলামের সনদ জাল প্রমাণিত হয়েছে। তাই তাঁর সভাপতির পদ বাতিল করে শিক্ষা বোর্ডে নতুন সভাপতির নাম প্রস্তাব করার জন্য প্রধান শিক্ষককে নির্দেশনা দেওয়া হয়।

জানতে চাইলে বাঘা উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোহাম্মদ আলী দেওয়ান বলেন, ‘তফিকুল ইসলাম যেভাবে আমাদের তাঁর শিক্ষাগত যোগ্যতার সনদ দিয়েছেন, সেভাবেই আমরা রাজশাহী শিক্ষা বোর্ডে জমা দিয়েছি। এই সনদ জাল কি না, সেটা তখন জানতাম না। আজ (সোমবার) ওয়েবসাইট থেকে চিঠি ডাউনলোড করে দেখছি যে তাঁর সনদটি জাল ছিল।’

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, বিদ্যালয়ের ছয় মাসের জন্য অ্যাডহক কমিটি গঠন করা হয়েছিল। যোগ্যতা না থাকলেও তফিকুল ইসলাম ইতিমধ্যে প্রায় পাঁচ মাস সভাপতির দায়িত্ব পালন করেছেন। এ সময়ের মধ্যে তিনি বিদ্যালয়ের দোকান বরাদ্দের জন্য টাকা তুলেছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

সম্প্রতি একটি ট্রাক বিদ্যালয়ের সীমানাপ্রাচীরে ধাক্কা দিলে প্রাচীরটি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। তফিকুল ইসলাম ট্রাকমালিকের কাছ থেকে এ জন্য ক্ষতিপূরণের টাকা নিলেও তা বিদ্যালয়কে না দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে। আওয়ামী সরকারের পতনের পর তাঁর নেতৃত্বে বাঘায় দখলদারত্ব চলছে বলেও অভিযোগ পাওয়া গেছে। শুধু তা-ই নয়, তাঁর জাল সনদের বিষয়ে শিক্ষা বোর্ডে নালিশ করার অভিযোগ তুলে স্থানীয় যুবদলের এক নেতাকে হুমকি দেওয়ারও অভিযোগ পাওয়া গেছে বিএনপি নেতা তফিকুল ইসলামের বিরুদ্ধে।

বাঘা পৌরসভার ৫ নম্বর ওয়ার্ড যুবদলের সভাপতি জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘তফিকুল ইসলাম আমার নেতা। আমি তাঁদের বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ করিনি। শুনেছি জাহাঙ্গীর নামে কোনো এক ব্যক্তি তাঁর বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ করেছেন। আমাকে সেই জাহাঙ্গীর মনে করে গতকাল (রোববার) সন্ধ্যায় ফোন করে তফি ভাই হাত-পা কেটে নেওয়ার হুমকি দিয়েছেন। অশ্লীল ভাষায় গালাগাল করেছেন। এখন আমি নিরাপত্তা নিয়ে উৎকণ্ঠায় আছি।’

জাল সনদে সভাপতি হওয়ার অভিযোগের বিষয়ে কথা বলতে আজ দুপুরে বিএনপি নেতা তফিকুল ইসলামের সঙ্গে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হয়। তবে তিনি ফোন রিসিভ করেননি। এরপর তাঁর হোয়াটসঅ্যাপে জাল সনদের সমস্ত প্রমাণ পাঠানো হয়। হোয়াটসঅ্যাপে প্রশ্ন জানিয়েও তাঁর মন্তব্য চাওয়া হয়। তবে তিনি সাড়া দেননি। এর আগে গতকাল রাতে তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেছিলেন, ‘এ বিষয়ে পরে কথা বলব।’

এ বিষয়ে রাজশাহী মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের বিদ্যালয় পরিদর্শক শামীম হাসান বলেন, ‘জাল সনদের ব্যাপারে অভিযোগ করতে হলে বোর্ডের অনুকূলে সাত হাজার টাকার ব্যাংক ড্রাফট করতে হয়। এ রকম ব্যাংক ড্রাফটসহ লিখিত অভিযোগ তফিকুলের সনদের ব্যাপারে এসেছিল। আমরা সেটা শিক্ষা কর্মকর্তাকে দিয়ে তদন্ত করিয়েছি। এতে সনদটি জাল প্রমাণিত হয়েছে। এরপর প্রধান শিক্ষককে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে বলা হয়েছে।’

আরও খবর পড়ুন:

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

পানিতে ডুবে প্রাণ গেল মামা-ভাগনের

কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

কুড়িগ্রামের রৌমারীতে পুকুরে ডুবে শাহবাব মন্ডল (আড়াই বছর) ও আবু তোহা মন্ডল (৩) নামের দুই শিশুর মৃত্যু হয়েছে। বুধবার (১০ ডিসেম্বর) সকাল সাড়ে ৭টার দিকে উপজেলার যাদুরচর ইউনিয়নের যাদুরচর নতুন গ্রাম এলাকায় এই দুর্ঘটনা ঘটে।

শাহবাব মন্ডল উপজেলার যাদুরচর ইউনিয়নের ধনারচর নতুন গ্রামের শাহজাহান মন্ডলের ছেলে এবং আবু তোহা মন্ডল একই গ্রা‌মের আবু তালেবের ছেলে। এই দুই শিশু সম্পর্কে মামা-ভাগনে।

পরিবারের বরাত দিয়ে যাদুরচর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সরবেশ আলী জানান, বুধবার সকালে ওই দুই শিশু তালেব মন্ডলের বাড়িতে খেলা করছিল। এ সময় সবার অজান্তে তারা বাড়ির পা‌শে পুকুরের পানিতে পড়ে যায়। স্বজনেরা পুকুর থে‌কে দুই শিশু‌কে উদ্ধার করে হাসপাতালে নি‌য়ে যান। দা‌য়িত্বরত চিকিৎসক তাঁদের মৃত ঘোষণা করেন।

খবর পেয়ে তাৎক্ষণিক একই এলাকার বাসিন্দা ও কুড়িগ্রাম-৪ আসনের বিএনপির মনোনীত সংসদ সদস‌্য প্রার্থী আজিজুর রহমান ঘটনাস্থলে ছুটে যান। তি‌নি শোকাহত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানান।

রৌমারী থানার উপপ‌রিদর্শক শাহ‌নেওয়াজ হো‌সেন ব‌লেন, খবর পে‌য়ে ঘটনাস্থ‌লে পু‌লিশ পাঠা‌নো হ‌য়ে‌ছে। সহকারী ক‌মিশনার (ভূ‌মি) ঘটনাস্থ‌লে গি‌য়ে‌ছেন। দুই শিশুর মৃত‌্যুর ঘটনায় প্রয়োজনীয় আইনি ব‌্যবস্থা নেওয়া হ‌বে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

মোহাম্মদপুরে মা-মেয়ে হত্যা: গৃহকর্মী আয়েশা ঝালকাঠিতে গ্রেপ্তার

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ১০ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৪: ০৪
নিহত লায়লা আফরোজ ও নাফিসা লাওয়াল বিনতে আজিজ। ছবি: সংগৃহীত
নিহত লায়লা আফরোজ ও নাফিসা লাওয়াল বিনতে আজিজ। ছবি: সংগৃহীত

‎রাজধানীর মোহাম্মদপুরে মা-মেয়ে হত্যার ঘটনায় গৃহকর্মী আয়েশাকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। আজ বুধবার দুপুরে ঝালকাঠি থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

‎গ্রেপ্তারের বিষয়টি আজকের পত্রিকাকে নিশ্চিত করেছেন তেজগাঁও বিভাগের সহকারী পুলিশ কমিশনার আব্দুল্লাহ আল মামুন।

‎মামুন বলেন, গৃহকর্মী আয়েশাকে দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে ঝালকাঠি থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

গত সোমবার সকালে শাহজাহান রোডের ১৪ তলা একটি আবাসিক ভবনের সপ্তম তলায় লায়লা আফরোজ (৪৮) ও তাঁর মেয়ে নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী নাফিসা লাওয়াল বিনতে আজিজকে (১৫) ছুরিকাঘাতে হত্যা করা হয়।

মা-মেয়ে হত্যায় অভিযুক্ত গৃহকর্মী আয়েশা। ছবি: আজকের পত্রিকা
মা-মেয়ে হত্যায় অভিযুক্ত গৃহকর্মী আয়েশা। ছবি: আজকের পত্রিকা

গতকাল তাঁদের মরদেহ নাটোরে দাফন করা হয়েছে। মামলার এজাহারে বাসা থেকে মোবাইল ফোন, একটি ল্যাপটপ, স্বর্ণালংকার, নগদ টাকাসহ মূল্যবান জিনিস খোয়া যাওয়ার কথা বলা হয়েছে।

ভবনের ভেতরের সিসিটিভি ফুটেজে দেখা গেছে, হত্যাকাণ্ডের পর এক নারী স্কুলড্রেস পরে কাঁধে ব্যাগ নিয়ে বেরিয়ে যাচ্ছেন। চার দিন আগে আয়েশা পরিচয় দিয়ে ওই বাসায় গৃহকর্মীর কাজ নেওয়া তরুণী (২০) এই জোড়া খুনে জড়িত বলে সন্দেহ স্বজনদের। ঘটনার পর থেকে ওই তরুণী পলাতক।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

৫০ বছর ধরে কবর খুঁড়ছেন মজিরুল, নিঃস্বার্থ সেবায় গাংনীর গোরখোদকেরা

গাংনী (মেহেরপুর) প্রতিনিধি 
গাংনী উপজেলার দেবীপুর গ্রামে মজিরুলের নেতৃত্বে কবর খোঁড়া হচ্ছে। ছবি: আজকের পত্রিকা
গাংনী উপজেলার দেবীপুর গ্রামে মজিরুলের নেতৃত্বে কবর খোঁড়া হচ্ছে। ছবি: আজকের পত্রিকা

জীবন আছে যার, তার মৃত্যু অনিবার্য। মৃত্যুর পর মানুষের শেষ ঠিকানা কবর। মৃতদেহ গোসল করিয়ে কাফন পরানো হয়, জানাজা শেষে তাকে শায়িত করা হয় চিরনিদ্রার ঘরে। এই কবর খোঁড়ার দায়িত্বটি গ্রামের কিছু মানুষ বহু বছর ধরে স্বেচ্ছায়, বিনা পারিশ্রমিকে পালন করে আসছেন, যাঁরা সবার কাছে ‘গোরখোদক’ নামে পরিচিত। আল্লাহর সন্তুষ্টির আশায় তাঁরা করে থাকেন এই কাজ।

স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, গোরখোদকেরা কোনো পারিশ্রমিক নেন না। গ্রামের যে কেউ মারা যাক, নিজেদের ব্যস্ততা ফেলে তাঁরা ছুটে আসেন কবর খুঁড়তে। তাঁদের এই মানবিক কাজের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে গ্রামের লোকেরা দোয়া করেন—আল্লাহ যেন তাদের সুস্থ ও ভালো রাখেন।

দেবীপুর গ্রামের বাসিন্দা গোরখোদক মজিরুল ইসলাম বলেন, ‘আমি ৫৫ বছর ধরে কবর খুঁড়ছি। যত দিন সুস্থ থাকব, এই কাজ চালিয়ে যাব। আমাদের গ্রাম ছাড়াও অন্য গ্রাম থেকে কেউ ডাকলে সেখানেও যাই। ছোটবেলায় ওস্তাদের কাছে ডালি ধরেই শিখেছি। গরিব মানুষ, মাঠে কাজ করি; কিন্তু কেউ মারা গেলে দ্বিধা করি না—এই কাজ আমার নেশায় পরিণত হয়েছে।’

মজিরুল আরও জানান, এখন তিনি তরুণদেরও এই কাজ শেখাচ্ছেন।

গাংনী উপজেলার দেবীপুর গ্রামে কবর খোঁড়া হচ্ছে। ছবি: আজকের পত্রিকা
গাংনী উপজেলার দেবীপুর গ্রামে কবর খোঁড়া হচ্ছে। ছবি: আজকের পত্রিকা

গোরখোদক শাকের আলী বলেন, ‘আমরা নিঃস্বার্থভাবে কাজ করি। কখনো কোনো টাকা নিই না। যেখানেই থাকি, গ্রামের কারও মৃত্যুর সংবাদ শুনলে দ্রুত কবর খুঁড়তে চলে আসি।’

গোরখোদক ফুয়াদ হোসেন বলেন, ‘অন্য গ্রাম থেকে ডাক এলেও আমরা যাই। আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্যই করি এই কাজ। সবাই আমাদের জন্য দোয়া করবেন।’

স্থানীয় বাসিন্দা শাজাহান আলী বলেন, ‘কবর খোঁড়া বড় দায়িত্বের কাজ। গ্রামের এসব মানুষ খবর পেলেই দৌড়ে আসে। আমরা তাদের জন্য দোয়া করি।’

মাওলানা মো. মাহবুবুর রহমান বলেন, ‘মৃত ব্যক্তির জন্য কবর খোঁড়া নিঃসন্দেহে সওয়াবের কাজ। হাদিসে এসেছে—যাঁরা কবর খোঁড়েন, আল্লাহ তাদের জন্য জান্নাতে ঘর নির্মাণ করবেন।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

শ্রীপুরে বকেয়া বেতনের দাবিতে শ্রমিকদের বিক্ষোভ, ফটকে তালা ঝুলিয়ে পালিয়েছে কারখানা কর্তৃপক্ষ

শ্রীপুর (গাজীপুর) প্রতিনিধি
আজ সকালে ক্যাটেক্স ফ্যাশন ক্লোথিং লিমিটেড কারখানার শ্রমিকেরা বিক্ষোভ করেন। ছবি: আজকের পত্রিকা
আজ সকালে ক্যাটেক্স ফ্যাশন ক্লোথিং লিমিটেড কারখানার শ্রমিকেরা বিক্ষোভ করেন। ছবি: আজকের পত্রিকা

গাজীপুরের শ্রীপুরে বকেয়া বেতনের দাবিতে কারখানার ফটকের সামনে বিক্ষোভ করছেন শ্রমিকেরা। আন্দোলনের মুখে কারখানা কর্তৃপক্ষ প্রধান ফটক তালাবদ্ধ করে সটকে পড়েছে। পরিস্থিতি সামাল দিতে শিল্প ও থানা-পুলিশের সদস্যরা ঘটনাস্থলে এসেছেন। আজ বুধবার (১০ ডিসেম্বর) সকালে উপজেলার তেলিহাটি ইউনিয়নের সাইটালিয়া গ্রামে ক্যাটেক্স ফ্যাশন ক্লোথিং লিমিটেড কারখানায় এই ঘটনা ঘটে।

কারখানার নারী শ্রমিক মিনারা আক্তার বলেন, ‘অক্টোবর ও নভেম্বর মাসের বেতন পরিশোধ করে নাই। এক মাসের বেতন না পেলে আমাদের চলা খুবই কঠিন হয়। আমাদের নাওয়া-খাওয়া বন্ধ হয়। আর সেখানে কারখানা কর্তৃপক্ষ দুই মাসের বেতনভাতা বকেয়া রেখেছে। আজ সকালে শ্রমিকেরা জড়ো হলে তারা পালিয়ে যায়।’

মিন্টু নামের এক শ্রমিক বলেন, ‘এই কারখানায় আমরা তিন বছর ধরে চাকরি করছি। আমাদের বেতনের বাইরে কোনো সুযোগ-সুবিধা দিচ্ছে না। তবু পেটের দায়ে চাকরি করি। দুই মাসের বেতন বকেয়া। আমাদের তো পেট আছে, সন্তান-সংসার আছে। এক মাস দোকান বাকি পরিশোধ করতে না পারলে পরের মাসে আর দোকানি বাকি দেয় না। আমরা কী অবস্থায় আছি, একবার ভাবুন। বেতন পরিশোধ না করে তারা পালিয়ে গেছে।’

আজ সকালে ক্যাটেক্স ফ্যাশন ক্লোথিং লিমিটেড কারখানার শ্রমিকেরা বিক্ষোভ করেন। ছবি: আজকের পত্রিকা
আজ সকালে ক্যাটেক্স ফ্যাশন ক্লোথিং লিমিটেড কারখানার শ্রমিকেরা বিক্ষোভ করেন। ছবি: আজকের পত্রিকা

মেহেদী হাসান বলেন, ‘এত দিন ধরে ঋণ করে বলে-কয়ে দোকান থেকে বাকি নিয়ে চলছি। আর পারছি না। এখন দোকান বাকি দেওয়া বন্ধ করে দিয়েছে। অক্টোবর মাসের বকেয়া বেতন নিয়ে কমপক্ষে ১০টি তারিখ দিছে। কিন্তু কারখানা কর্তৃপক্ষ বেতন পরিশোধ করেনি। শেষে আজ বেতন পরিশোধের কথা ছিল। কিন্তু তারা কারখানা ফটকে তালা ঝুলিয়ে পালিয়ে গেছে।’

কারখানার হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা মো. বুলবুল হাসান বলেন, ‘ব্যাংকের সমস্যার কারণে বেতন-ভাতা পরিশোধ করা যাচ্ছে না। আশা করি, আজকের মধ্যে নভেম্বর মাসের বেতন পরিশোধ করতে পারব।’ বিনা নোটিশে কারখানার ফটক কেন তালাবদ্ধ? এই প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘বিষয়টি আমি বলতে পারব না।’

শ্রীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ নাছির আহমদ বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত