Ajker Patrika

মধ্যরাতে পল্লবী থানায় ঢুকে তরুণের কিলঘুষি, ওসিসহ আহত ৩

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ১১ মার্চ ২০২৫, ১৪: ১৭
পল্লবী থানা। ছবি: সংগৃহীত
পল্লবী থানা। ছবি: সংগৃহীত

ঢাকার পল্লবী থানায় গভীর রাতে প্রবেশ করে এক তরুণের এলোপাতাড়ি কিল-ঘুষিতে ওসিসহ অন্তত তিনজন আহত হয়েছেন। আহতরা কুর্মিটোলা হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন।

গতকাল সোমবার দিবাগত রাত পৌনে ২টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। হামলায় আহতরা হলেন—পল্লবী থানার ওসি নজরুল ইসলাম, সেকেন্ড অফিসার শরিফুল ইসলাম ও এএসআই (সশস্ত্র) মো. নাসির।
হামলাকারী তরুণের নাম আব্দুর রাজ্জাক ফাহিম।

বিষয়টি নিশ্চিত করে পল্লবী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নজরুল ইসলাম বলেন, ‘সোমবার রাতে ২২-২৩ বছরের ওই তরুণ আমার রুমে ঢুকে “আইনশৃঙ্খলার অবনতি হয়েছে, খুন হয়েছে—আপনারা কী করছেন” ইত্যাদি জানতে চায়। পরে তাকে বলি, আমরা চেষ্টা করছি, আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণ করতে। তখন ওই তরুণ ক্ষুব্ধ কণ্ঠে বলেন, “আপনারা কিছুই করছেন না; খুন হয়েছে জানেন না।”

ওসি বলেন, ‘কোথায় খুন হয়েছে, আমি জানি না, বলার পর তরুণটি বলেন, “আপনার ডিউটি অফিসার জানে, আর আপনি জানেন না? ”। এই বলে আরও উত্তেজিত হয়ে ওঠেন। পরে তাঁকে নিয়ে ডিউটি অফিসারের কক্ষে গিয়ে এ ব্যাপারে তাঁকে জিজ্ঞাসা করা হলে, তিনিও বলেন, এ বিষয়ে কিছু জানেন না। তখন ডিউটি অফিসারের কক্ষে সেবা নিতে আসা দুই ব্যক্তিকে দেখিয়ে ওই তরুণ বলেন, “তারা খুনের কথা জানে”। ওই দুই ব্যক্তিকে জিজ্ঞাসা করা হলে তাঁরাও বিষয়টি জানেন না বলেন। পরে তরুণটির হাত ধরে এ ধরনের কথা বলার কারণ জানতে চাইতেই, তরুণটি এলোপাতাড়ি ঘুষি মারে। এ সময় তাঁকে নিবৃত্ত করতে কয়েকজন পুলিশ কর্মকর্তা এগিয়ে এলে তাঁদেরও মারধর করেন ওই তরুণ। এতে এক কর্মকর্তার আঙুল ভেঙে যায় এবং একজনের মুখ ফুলে ওঠে।’

ওই পরিস্থিতিতে তরুণকে হাতকড়া পরিয়ে পরিস্থিতি সামাল দেওয়া হয় বলে জানান ওসি

এরপর তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয় জানিয়ে পরিদর্শক নজরুল বলেন, ‘আটকের পর ওই তরুণ জানান, তাঁরা কয়েকজন গাজীপুর থেকে একটি মাইক্রোবাসে এই থানা এলাকায় ঘুরতে এসেছেন। মাইক্রোবাসসহ তিনজন থানার বাইরে আছেন। পরে থানার বাইরে গিয়ে মাইক্রোবাসে থাকা তিনজনকে থানার ভেতরে আনা হয় এবং মাইক্রোবাসটি জব্দ করা হয়।’

ওই মাইক্রোবাসে একটি বেসরকারি টিভি চ্যানেলের লোগো সংবলিত স্টিকার লাগানো ছিল বলে জানান তিনি।

ওসি বলেন, ‘ওই তিনজন পুলিশকে বলেছে, ফাহিম তাঁদের বন্ধু। তাঁরা ঘুরতে বেরিয়েছেন; তবে থানার ভেতরে গিয়ে এ রকম আচরণের বিষয়ে তাঁদের ধারণা ছিল না।’

ফাহিম একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী জানিয়ে পুলিশ কর্মকর্তা নজরুল বলেন, ‘ফাহিমসহ এসব তরুণদের থানায় রেখে তাঁদের ব্যাপারে এবং তাঁদের উদ্দেশ্য কী ছিল—সেসব ব্যাপারে খোঁজ নেওয়া হচ্ছে। ফাহিমের বাবার সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি কিছুক্ষণ কথা বলে ফোনটি রেখে দেন।’

ওসি বলেন, ‘আমার ধারণা, ফাহিম নামের তরুণটি মানসিক ভারসাম্যহীন অথবা মাদকসেবী।’

এই ঘটনায় একটি মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে বলেও জানান তিনি।

আরও খবর পড়ুন:

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

বাসার বাথরুমে পড়ে ছিল নারী প্রভাষকের লাশ, মাথায় আঘাতের চিহ্ন

বগুড়া প্রতিনিধি
ফাবিয়া তাসনিম সিধি। ছবি: সংগৃহীত
ফাবিয়া তাসনিম সিধি। ছবি: সংগৃহীত

বগুড়ার এক বাসা থেকে ফাবিয়া তাসনিম সিধি (২৯) নামের এক প্রভাষকের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত ১২টার দিকে বগুড়া শহরের চক ফরিদ এলাকায় ভাড়া বাসা থেকে লাশটি উদ্ধার করে পুলিশ।

মৃত ফাবিয়া বগুড়ার সরকারি শাহ সুলতান কলেজের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের প্রভাষক। বছর দেড়েক আগে তিনি কলেজটিতে যোগদান করেন।

এই তথ্য নিশ্চিত করে বগুড়া সদর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মাহফুজার রহমান জানান, ফাবিয়া অবিবাহিত। তিনি বগুড়া শহরের চক ফরিদ এলাকায় ডা. রাশেদুল হাসানের বাড়ির তিনতলায় ভাড়া বাসায় তাঁর মায়ের সঙ্গে থাকতেন। কয়েক দিন আগে তাঁর মা গ্রামের বাড়ি ময়মনসিংহে যান। গতকাল দুপুরের পর থেকে মেয়েকে ফোনে না পাওয়ায় তাঁর মা রাত ১০টার দিকে বগুড়া আসেন। অনেক ডাকাডাকি করে দরজা না খোলায় পুলিশে খবর দেওয়া হয়। পরে পুলিশ সেখানে গিয়ে স্থানীয় বাসিন্দাদের উপস্থিতিতে দরজা ভেঙে ঘরে ঢুকে বাসার বাথরুমে ফাবিয়ার লাশ দেখতে পায়।

পুলিশ জানায়, মৃত ব্যক্তির নাক দিয়ে রক্ত ঝরছিল এবং মাথার পেছনে আঘাতের চিহ্ন ছাড়াও জিবে দাঁত দিয়ে কামড় দেওয়া ছিল। লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজের মর্গে পাঠানো হয়েছে।

সদর থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মাহফুজার রহমান বলেন, ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন পাওয়া গেলে মৃত্যুর সঠিক কারণ নিশ্চিত হওয়া যাবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

অটোরিকশাকে চাপা দিল বাস, প্রাণ গেল তিনজনের

ফরিদপুর প্রতিনিধি
বাসচাপায় অটোরিকশাটি ভেঙেচুরে গেছে। ছবি: আজকের পত্রিকা
বাসচাপায় অটোরিকশাটি ভেঙেচুরে গেছে। ছবি: আজকের পত্রিকা

ফরিদপুরের ভাঙ্গায় বাসের চাপায় একটি ব্যাটারিচালিত অটোরিকশার তিন যাত্রী নিহত হয়েছেন। এই ঘটনায় শিশুসহ আরও চারজন আহত হয়। আজ শুক্রবার বেলা পৌনে ১২টার দিকে ফরিদপুর-ভাঙ্গা-বরিশাল মহাসড়কের কৈডুবী সদরদি রেলক্রসিং এলাকায় এই দুর্ঘটনা ঘটে। ভাঙ্গা হাইওয়ে থানার উপপরিদর্শক (এসআই) সোহেল মিয়া এই তথ্য নিশ্চিত করেন।

নিহত ব্যক্তিদের মধ্যে দুজন নারী ও একজন পুরুষ। তাৎক্ষণিকভাবে তাঁদের পরিচয় শনাক্ত করা যায়নি।

খবর পেয়ে পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা ঘটনাস্থলে গিয়ে উদ্ধার অভিযান চালান। আহত ব্যক্তিদের উদ্ধার করে ভাঙ্গা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পাঠানো হয়েছে।  

হাইওয়ে থানার এসআই সোহেল মিয়া বলেন, অটোরিকশাটি ভাঙ্গা থেকে টেকেরহাটের উদ্দেশে যাচ্ছিল। কৈডুবী সদরদি রেলক্রসিং এলাকায় পৌঁছালে বিপরীত দিক থেকে আসা নিউ মডার্ন পরিবহনের একটি বাস অটোরিকশাটিকে চাপা দেয়। এই ঘটনায় বাসটি আটক করা হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

হাতিয়ায় ৫৬০০ কেজি জাটকা ইলিশ জব্দ, এতিমখানায় বিতরণ

­হাতিয়া (নোয়াখালী) প্রতিনিধি
কোস্ট গার্ডের অভিযানে জব্দ জাটকা ইলিশ। ছবি: আজকের পত্রিকা
কোস্ট গার্ডের অভিযানে জব্দ জাটকা ইলিশ। ছবি: আজকের পত্রিকা

নোয়াখালীর হাতিয়ার জাগলার চর এলাকার মেঘনা নদীতে অভিযান চালিয়েছে কোস্ট গার্ড। এ সময় একটি নৌকা থেকে ৫ হাজার ৬০০ কেজি জাটকা ইলিশ জব্দ করা হয়। এই ঘটনায় আটক কয়েকজন মাঝিমাল্লার কাছ থেকে মুচলেকা নিয়ে তাঁদের ছেড়ে দেওয়া হয়।

গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে কোস্ট গার্ড হাতিয়ার একটি দল এই অভিযান চালায়। জব্দ করা জাটকাগুলোর মূল্য প্রায় ২৮ লাখ টাকা।

কোস্ট গার্ড মিডিয়া কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট মো. আবুল কাশেম জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে মেঘনা নদীর বিভিন্ন এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে কোস্ট গার্ড। অভিযানে মেঘনা নদীর জাগলার চর এলাকায় একটি কাঠের নৌকায় তল্লাশি করা হয়। ওই নৌকা থেকে ৫ হাজার ৬০০ কেজি জাটকা জব্দ করা হয়। এ সময় মাঝিদের মুচলেকা নিয়ে নৌকা ছেড়ে দেওয়া হয়। জব্দ মাছগুলো মৎস্য কর্মকর্তাসহ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের উপস্থিতিতে এতিমখানা ও দুস্থ ব্যক্তিদের মধ্যে বিতরণ করা হয়েছে। মৎস্য সম্পদ রক্ষায় কোস্ট গার্ডের এ ধরনের অভিযান অব্যাহত থাকবে বলে জানান এই কর্মকর্তা।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

মাঠে পড়ে ছিল মাছ ব্যবসায়ীর রক্তাক্ত লাশ

ফরিদপুর প্রতিনিধি
ঘটনাস্থলে স্থানীয় বাসিন্দারা জড়ো হন। ছবি: আজকের পত্রিকা
ঘটনাস্থলে স্থানীয় বাসিন্দারা জড়ো হন। ছবি: আজকের পত্রিকা

ফরিদপুরের সালথায় উৎপল সরকার (৩৫) নামের এক মাছ ব্যবসায়ীর রক্তাক্ত লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। আজ শুক্রবার সকালে উপজেলার আটঘর ইউনিয়নের গৌরদিয়া এলাকার কালীতলা ব্রিজ-সংলগ্ন মাঠ থেকে লাশটি উদ্ধার করে পুলিশ। এই ঘটনায় মাঠ-সংলগ্ন সেতু থেকে চোখ বাঁধা অবস্থায় থাকা ফিরোজ মোল্যা নামের এক ভ্যানচালককে জীবিত উদ্ধার করে স্থানীয় লোকজন।

নিহত উৎপল ফরিদপুর জেলা সদরের কানাইপুর ইউনিয়নের রনকাইল গ্রামের অজয় সরকারের ছেলে। তাঁর স্ত্রী ও আড়াই বছর বয়সী এক শিশুসন্তান রয়েছে।

থানা-পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, আজ ভোরে সড়কের পাশে ফাঁকা মাঠে রক্তাক্ত অবস্থায় একটি লাশ দেখতে পায় স্থানীয় লোকজন। পাশেই একটি সেতুর সঙ্গে একই গ্রামের ভ্যানচালক ফিরোজ মোল্যাকে চোখ বাঁধা অবস্থায় বেঁধে রাখা হয়েছিল। পরে স্থানীয় বাসিন্দাদের হত্যাকাণ্ডের বিষয়টি খুলে বলেন তিনি।

ভ্যানচালকের বরাত দিয়ে রনকাইল গ্রামের বাসিন্দা ও প্রতিবেশী কাজী শাহীন বলেন, উৎপল সরকার ব্যাটারিচালিত ভ্যানে করে গোপালগঞ্জের মুকসুদপুরে মাছ কিনতে যাচ্ছিলেন। পথে অজ্ঞাতপরিচয় তিন-চার ব্যক্তি দেশীয় অস্ত্রের মুখে ভ্যানচালক ফিরোজ মোল্যাকে গামছা দিয়ে চোখ বেঁধে ব্রিজের রেলিংয়ে বেঁধে ফেলে। তারা উৎপলের সঙ্গে থাকা টাকাপয়সা লুট করে তাঁকে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে হত্যা করে পালিয়ে যায়।

বিষয়টি নিশ্চিত করে সালথা থানার পরিদর্শক (তদন্ত) কে এম মারুফ হাসান রাসেল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘দুই থেকে তিনজন দুর্বৃত্ত ঘটনাটি ঘটিয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে জানা গেছে। তবে এটাকে ডাকাতি বলা যায় না। ঘটনাটি নিয়ে তদন্ত চলমান। তদন্ত শেষে মূল কারণ বলা যাবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত