আজকের পত্রিকা ডেস্ক

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প গত ২ এপ্রিল বিভিন্ন অঞ্চল ও দেশের পণ্যে পাল্টা শুল্ক ঘোষণা করেছেন। ৫ এপ্রিল থেকে ধাপে ধাপে এই শুল্ক কার্যকর করা হচ্ছে। এর ফলে বিভিন্ন দেশ প্রতিশোধমূলক শুল্ক থেকে কূটনৈতিক পদক্ষেপ এবং অর্থনৈতিক সমন্বয় পর্যন্ত বিভিন্নভাবে প্রতিক্রিয়া দেখাচ্ছে। এই প্রতিক্রিয়াগুলোর মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের নীতির বিরুদ্ধে প্রতিরোধ, দেশীয় শিল্প রক্ষা এবং ক্রমবর্ধমান বৈশ্বিক বাণিজ্য উত্তেজনা মোকাবিলার প্রচেষ্টার প্রতিফলন দেখা যাচ্ছে।
বাংলাদেশ, ভিয়েতনাম ও কম্বোডিয়ার মতো ছোট দেশগুলোকে অর্থনৈতিক সমন্বয়ে জোর দিতে দেখা যাচ্ছে। অর্থনৈতিক সমন্বয় বলতে যুক্তরাষ্ট্রের পাল্টা শুল্কের প্রভাব মোকাবিলায় অর্থনীতিতে পরিবর্তন বা সমন্বয় আনার চেষ্টাকে বোঝানো হচ্ছে। এটি সাধারণত প্রতিশোধমূলক শুল্ক আরোপ বা কূটনৈতিক পদক্ষেপের পরিবর্তে অভ্যন্তরীণ বা বৈদেশিক বাণিজ্য কৌশল পরিবর্তনের মাধ্যমে করা হয়। এর উদ্দেশ্য হলো শুল্কের কারণে সৃষ্ট ক্ষতি কমানো এবং অর্থনীতিকে স্থিতিশীল রাখা।
‘অর্থনৈতিক সমন্বয়’–এর পদক্ষেপের মধ্যে থাকতে পারে:
বাজার বৈচিত্র্যকরণ: যদি যুক্তরাষ্ট্রে রপ্তানি কমে যায়, তবে দেশটি অন্য দেশের সঙ্গে বাণিজ্য বাড়ানোর চেষ্টা করতে পারে। যেমন, ভিয়েতনাম বা কম্বোডিয়া এখন চীন, ইউরোপ বা এশিয়ার অন্যান্য বাজারে তাদের পণ্য বিক্রির দিকে মনোযোগ দিতে পারে।
দেশীয় উৎপাদন বৃদ্ধি: আমদানি ব্যয়বহুল হয়ে গেলে, কোনো দেশ অভ্যন্তরীণ উৎপাদন বাড়িয়ে আমদানির ওপর নির্ভরতা কমাতে পারে।
বিনিয়োগ আকর্ষণ: যুক্তরাষ্ট্রের বিনিয়োগ কমে গেলে তারা অন্য দেশ থেকে বিনিয়োগ আনার জন্য প্রণোদনা দিতে পারে। ভিয়েতনামের স্টারলিংক অনুমোদন এর একটি উদাহরণ।
মুদ্রা বা আর্থিক নীতি পরিবর্তন: কিছু দেশ তাদের মুদ্রার মান সামঞ্জস্য করে রপ্তানি কম ব্যয়বহুল করতে পারে, যদিও এটি সব সময় সম্ভব হয় না।
সরকারি সহায়তা: শুল্কের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত শিল্পগুলো টিকিয়ে রাখতে সরকার ভর্তুকি বা সহজ শর্তে ঋণ দিতে পারে।
নিচে কিছু দেশের পদক্ষেপের একটি সংক্ষিপ্ত বিবরণ দেওয়া হলো:
চীন
যুক্তরাষ্ট্রের শুল্ক নীতির বিরুদ্ধে সবচেয়ে আক্রমণাত্মক প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছে চীন। যুক্তরাষ্ট্র চীনের পণ্যের ওপর ২০ শতাংশ বিদ্যমান শুল্কের সঙ্গে ৩৪ শতাংশ পারস্পরিক শুল্ক যোগ করেছে, যার ফলে মোট শুল্ক দাঁড়িয়েছে ৫৪ শতাংশ। এর জবাবে ৪ এপ্রিল যুক্তরাষ্ট্রের সব পণ্যের ওপর ৩৪ শতাংশ শুল্ক আরোপের ঘোষণা দেয় চীন, যা ১০ এপ্রিল থেকে কার্যকর হবে। এ ছাড়া, চীন বিরল মৃত্তিকা (কম্পিউটার চিপ ও ইলেকট্রিক গাড়ির ব্যাটারির জন্য প্রয়োজনীয়) রপ্তানির ওপর কঠোর নিয়ন্ত্রণ আরোপ করেছে। চীনের বাণিজ্য মন্ত্রণালয় বলেছে, যুক্তরাষ্ট্রের এই পদক্ষেপ বৈশ্বিক অর্থনীতির জন্য ক্ষতিকর এবং তারা প্রয়োজনে আরও পদক্ষেপ নিতে প্রস্তুত।
বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, চীন তাদের মুদ্রা ইউয়ানের মান কমিয়ে বা আরও বেশি পণ্যের রপ্তানি সীমিত করে যুক্তরাষ্ট্রের ওপর চাপ সৃষ্টি করতে পারে। এ ছাড়া, ২৭টি মার্কিন কোম্পানিকে চীনের নিষেধাজ্ঞার তালিকায় যুক্ত করা হয়েছে। এটি সিনো–মার্কিন বাণিজ্য যুদ্ধকে আরও তীব্র করে তুলতে পারে।
ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ)
ইউরোপীয় ইউনিয়নের ওপর যুক্তরাষ্ট্র ২০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছে। ইইউ এর জবাবে দুটি পথ বেছে নিয়েছে: আলোচনা এবং প্রতিশোধ। ইইউ বাণিজ্য প্রধান মারোস সেফকোভিচ ১১ এপ্রিল যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করবেন, যেখানে তাঁরা এই শুল্ক থেকে ছাড় বা হ্রাস চাইবেন।
ইউরোপীয় কমিশনের প্রেসিডেন্ট উরসুলা ফন ডের লায়েন বলেছেন, তাঁরা আলোচনার মাধ্যমে সমাধান চান। তবে, একই সঙ্গে ইইউ প্রতিশোধমূলক শুল্কের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে। তারা যুক্তরাষ্ট্রের ইস্পাত, অ্যালুমিনিয়াম, বোরবন (মদ), মোটরসাইকেল এবং কৃষিপণ্যের ওপর শুল্ক আরোপের পরিকল্পনা করছে, যা ২৮ বিলিয়ন ডলার মূল্যের মার্কিন রপ্তানিকে প্রভাবিত করতে পারে। এই শুল্কগুলো এপ্রিলের মাঝামাঝি থেকে কার্যকর হতে পারে।
ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল মাখোঁ ইউরোপীয় কোম্পানিগুলোকে যুক্তরাষ্ট্রে বিনিয়োগ কমানোর পরামর্শ দিয়েছেন। এটি ইউরোপের দিকে থেকে প্রথম রাজনৈতিক প্রতিক্রিয়া। ইইউ যদি আরও চাপে পড়ে, তবে তারা ডিজিটাল ও আর্থিক সেবার ওপরও শুল্ক আরোপ করতে পারে।
কানাডা
কানাডা যুক্তরাষ্ট্র-মেক্সিকো-কানাডা চুক্তির (ইউএসএমসিএ) কারণে নতুন পাল্টা শুল্ক থেকে মুক্ত। তবে, ফেব্রুয়ারি থেকে ইউএসএমসিএ-বহির্ভূত পণ্যের ওপর ২৫ শতাংশ শুল্ক (জ্বালানি ও পটাশ বাদে ১০ শতাংশ) আরোপ করেছেন ট্রাম্প। এর আগে যুক্তরাষ্ট্রের শুল্ক হুমকির জবাবে কানাডা ২০ দশমিক ৭ বিলিয়ন ডলার মূল্যের মার্কিন আমদানির ওপর প্রতিশোধমূলক শুল্ক ঘোষণা করে, যা ১৩ মার্চ থেকে কার্যকর হওয়ার কথা। তবে, ২ এপ্রিলের পর এই পরিকল্পনার অবস্থা স্পষ্ট নয়। কানাডা বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থায় (ডব্লিউটিও) যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে আইনি অভিযোগও দায়ের করেছে।
মেক্সিকো
মেক্সিকোও ইউএসএমসিএতে থাকার কারণে নতুন শুল্ক থেকে মুক্ত, তবে ফেব্রুয়ারি থেকে ২৫ শতাংশ শুল্কের আওতায় রয়েছে। মেক্সিকোর প্রেসিডেন্ট ক্লদিয়া শেইনবাউম ৩ এপ্রিলের মধ্যে প্রতিশোধমূলক শুল্ক ঘোষণার কথা বলেছিলেন। তবে, আজ মঙ্গলবার (৮ এপ্রিল) পর্যন্ত কোনো হালনাগাদ গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়নি। মেক্সিকো আগে থেকেই যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আলোচনা করে ইউএসএমসিএ সুবিধা বজায় রাখার চেষ্টা করছে। তারা প্রতিশোধ ও সহযোগিতার মধ্যে ভারসাম্য রক্ষার চেষ্টা করছে।
জাপান
জাপানের ওপর যুক্তরাষ্ট্র ২৪ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছে। প্রধানমন্ত্রী শিগেরু ইশিবা ৪ এপ্রিল এটিকে ‘জাতীয় সংকট’ বলে ঘোষণা দিয়েছেন। এই শুল্ক যন্ত্রপাতি ও ইলেকট্রনিকস রপ্তানির ওপর বড় প্রভাব ফেলবে। জাপানি কর্মকর্তারা এর অর্থনৈতিক ক্ষতি বিশ্লেষণ করছেন, তবে এখনো নির্দিষ্ট প্রতিশোধমূলক শুল্ক ঘোষণা করা হয়নি। প্রধান সচিব ইয়োশিমাসা হায়াশি বলেছেন, তাঁরা সতর্কতার সঙ্গে সাহসী পদক্ষেপ নেওয়ার কথা ভাবছেন। বিভিন্ন মাধ্যমে এসেছে, জাপান চীন ও দক্ষিণ কোরিয়ার সঙ্গে মিলে একটি পূর্ব এশীয় জোট গঠনের সম্ভাবনা খুঁজছে।
দক্ষিণ কোরিয়া
দক্ষিণ কোরিয়ার ওপরও উচ্চ শুল্ক আরোপিত হয়েছে, যদিও সঠিক হার উল্লেখ করা হয়নি। তারা তাৎক্ষণিক প্রতিশোধ এড়িয়ে জাপান ও চীনের সঙ্গে সমন্বিত প্রতিক্রিয়ার পরিকল্পনা করছে। এটি যৌথ শুল্ক বা কূটনৈতিক চাপের আকারে হতে পারে, তবে এখন পর্যন্ত কোনো নির্দিষ্ট পদক্ষেপ ঘোষণা করা হয়নি।
ভিয়েতনাম
ভিয়েতনামের ওপর ৪৬ শতাংশ শুল্ক আরোপিত হয়েছে, যা এর উৎপাদন খাতের জন্য বড় ধাক্কা। শুল্ক ঘোষণার আগে ভিয়েতনাম যুক্তরাষ্ট্রের আমদানির ওপর শুল্ক কমিয়েছিল—এলএনজি-র শুল্ক ৫ শতাংশ থেকে ২ শতাংশ, গাড়ির শুল্ক ৪৫ শতাংশ-৬৪ শতাংশ থেকে ৩২ শতাংশ, এবং ইথানলের শুল্ক ১০ শতাংশ থেকে ৫ শতাংশ-এ নামিয়ে আনা হয়। তারা স্টারলিঙ্কের কার্যক্রমও অনুমোদন করেছে। তবুও, যুক্তরাষ্ট্র উচ্চ শুল্ক আরোপ করেছে। ভিয়েতনাম এখন প্রতিশোধের চেয়ে অর্থনৈতিক সমন্বয়ের দিকে মনোযোগ দিচ্ছে।
ব্রাজিল
ব্রাজিলের ওপর ১০ শতাংশ শুল্ক আরোপিত হয়েছে। ২ এপ্রিল ব্রাজিল একটি পাল্টাপাল্টি শুল্ক বিল পাস করে, যা যুক্তরাষ্ট্রের শুল্কের বিরুদ্ধে প্রতিশোধের অনুমতি দেয়। প্রেসিডেন্ট লুইজ ইনাসিও লুলা দা সিলভা ডব্লিউটিওতে আপিলের কথা ভাবছেন। ব্রাজিলের অভিযোগ, যুক্তরাষ্ট্র আন্তর্জাতিক বাণিজ্য প্রতিশ্রুতি লঙ্ঘন করেছে। ব্রাজিলের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্যের ভারসাম্য রক্ষার পরিকল্পনা করছে।
কম্বোডিয়া
কম্বোডিয়ার ওপর সর্বোচ্চ ৪৯ শতাংশ শুল্ক আরোপিত হয়েছে। দেশটির শ্রম ও বৃত্তিমূলক প্রশিক্ষণমন্ত্রী এই পরিণতি মোকাবিলায় আত্মবিশ্বাস দেখাচ্ছেন। তবে, অর্থনৈতিক সক্ষমতা কম থাকায় প্রতিশোধের চেয়ে অভ্যন্তরীণ অর্থনীতির শক্তি বাড়ানোর দিকে মনোযোগ দিচ্ছে, কারণ দেশটি যুক্তরাষ্ট্রের বাজারের ওপর অনেকাংশে নির্ভরশীল।
ভারত
ভারতের ওপর ২৬ শতাংশ শুল্ক আরোপিত হয়েছে। বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ইলেকট্রনিকস, রত্ন ও গয়নার মতো রপ্তানির ওপর প্রভাব বিশ্লেষণ করছে। কর্মকর্তারা এটিকে ‘মিশ্র ফল’ বলে বর্ণনা করেছেন। ভারত আগে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ৪৬ বিলিয়ন ডলারের বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর জন্য আলোচনা করেছে এবং ওষুধের জন্য ছাড় পেয়েছে। তাই তাৎক্ষণিক প্রতিশোধ ঘোষণার মতো পদক্ষেপে তারা যাচ্ছে না।
অন্যান্য উল্লেখযোগ্য প্রতিক্রিয়া:
তাইওয়ান: ৩২ শতাংশ শুল্কের সম্মুখীন। প্রেসিডেন্ট লাই চিং-তে এই পদক্ষেপকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র-তাইওয়ানের বাণিজ্য সম্পর্কের সঙ্গে অসামঞ্জস্যপূর্ণ বলে সমালোচনা করেছেন এবং তাইওয়ানের প্রযুক্তি রপ্তানি, বিশেষ করে সেমিকন্ডাক্টর (যা আপাতত অব্যাহতিপ্রাপ্ত) রক্ষার জন্য জোরালো আলোচনার আহ্বান জানিয়েছেন।
ইসরায়েল: ১৭ শতাংশ শুল্কের প্রতিক্রিয়ায় অর্থমন্ত্রী বেজালেল স্মোতরিচ সম্পর্ক জোরদার করার জন্য ১ এপ্রিল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের আমদানি পণ্যের ওপর ইসরায়েলের শুল্ক বাতিলের পর ঝুঁকি ও সুযোগগুলো মূল্যায়ন করার কথা ভাবছেন।
নরওয়ে: প্রধানমন্ত্রী জোনাস গার স্টোরে ১৫ শতাংশ শুল্কে আরোপের ফলে রপ্তানিনির্ভর শিল্পের ওপর প্রভাব পড়ায় ব্যবসায়ীদের কাছে দুঃখ প্রকাশ করেছেন। তাৎক্ষণিক প্রতিশোধ ছাড়াই সম্ভাব্য অর্থনৈতিক সমন্বয়ের ইঙ্গিত দিয়েছেন তিনি।
সাধারণ প্রবণতা
ট্রাম্পের পাল্টা শুল্ক মোকাবিলায় বিভিন্ন দেশের কৌশলে স্পষ্ট ভিন্নতা দেখা যাচ্ছে। স্পষ্টত কোনো সমন্বিত প্রতিক্রিয়া মুখে পড়বে না যুক্তরাষ্ট্র। অধিকাংশ দেশই যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাজেট ঘাটতি কমানোর দিকে নজর দিচ্ছে। এর মধ্যে বাংলাদেশ অন্যতম। বাংলাদেশ যুক্তরাষ্ট্র থেকে কৃষি ও প্রযুক্তি পণ্য কেনার প্রতিশ্রুতি দিয়ে সরাসরি প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পকে চিঠি দিয়েছে।
মোটা দাগে দেশগুলো প্রতিশোধ (চীন, ইইউ, কানাডা), আলোচনা (জাপান, তাইওয়ান, ভারত) এবং অর্থনৈতিক সমন্বয় (ভিয়েতনাম, কম্বোডিয়া, বাংলাদেশ)–এর মধ্যে বিভক্ত। অনেকে যুক্তরাষ্ট্রের শুল্ককে ডব্লিউটিও নীতির লঙ্ঘন হিসেবে সমালোচনা করছে।

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প গত ২ এপ্রিল বিভিন্ন অঞ্চল ও দেশের পণ্যে পাল্টা শুল্ক ঘোষণা করেছেন। ৫ এপ্রিল থেকে ধাপে ধাপে এই শুল্ক কার্যকর করা হচ্ছে। এর ফলে বিভিন্ন দেশ প্রতিশোধমূলক শুল্ক থেকে কূটনৈতিক পদক্ষেপ এবং অর্থনৈতিক সমন্বয় পর্যন্ত বিভিন্নভাবে প্রতিক্রিয়া দেখাচ্ছে। এই প্রতিক্রিয়াগুলোর মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের নীতির বিরুদ্ধে প্রতিরোধ, দেশীয় শিল্প রক্ষা এবং ক্রমবর্ধমান বৈশ্বিক বাণিজ্য উত্তেজনা মোকাবিলার প্রচেষ্টার প্রতিফলন দেখা যাচ্ছে।
বাংলাদেশ, ভিয়েতনাম ও কম্বোডিয়ার মতো ছোট দেশগুলোকে অর্থনৈতিক সমন্বয়ে জোর দিতে দেখা যাচ্ছে। অর্থনৈতিক সমন্বয় বলতে যুক্তরাষ্ট্রের পাল্টা শুল্কের প্রভাব মোকাবিলায় অর্থনীতিতে পরিবর্তন বা সমন্বয় আনার চেষ্টাকে বোঝানো হচ্ছে। এটি সাধারণত প্রতিশোধমূলক শুল্ক আরোপ বা কূটনৈতিক পদক্ষেপের পরিবর্তে অভ্যন্তরীণ বা বৈদেশিক বাণিজ্য কৌশল পরিবর্তনের মাধ্যমে করা হয়। এর উদ্দেশ্য হলো শুল্কের কারণে সৃষ্ট ক্ষতি কমানো এবং অর্থনীতিকে স্থিতিশীল রাখা।
‘অর্থনৈতিক সমন্বয়’–এর পদক্ষেপের মধ্যে থাকতে পারে:
বাজার বৈচিত্র্যকরণ: যদি যুক্তরাষ্ট্রে রপ্তানি কমে যায়, তবে দেশটি অন্য দেশের সঙ্গে বাণিজ্য বাড়ানোর চেষ্টা করতে পারে। যেমন, ভিয়েতনাম বা কম্বোডিয়া এখন চীন, ইউরোপ বা এশিয়ার অন্যান্য বাজারে তাদের পণ্য বিক্রির দিকে মনোযোগ দিতে পারে।
দেশীয় উৎপাদন বৃদ্ধি: আমদানি ব্যয়বহুল হয়ে গেলে, কোনো দেশ অভ্যন্তরীণ উৎপাদন বাড়িয়ে আমদানির ওপর নির্ভরতা কমাতে পারে।
বিনিয়োগ আকর্ষণ: যুক্তরাষ্ট্রের বিনিয়োগ কমে গেলে তারা অন্য দেশ থেকে বিনিয়োগ আনার জন্য প্রণোদনা দিতে পারে। ভিয়েতনামের স্টারলিংক অনুমোদন এর একটি উদাহরণ।
মুদ্রা বা আর্থিক নীতি পরিবর্তন: কিছু দেশ তাদের মুদ্রার মান সামঞ্জস্য করে রপ্তানি কম ব্যয়বহুল করতে পারে, যদিও এটি সব সময় সম্ভব হয় না।
সরকারি সহায়তা: শুল্কের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত শিল্পগুলো টিকিয়ে রাখতে সরকার ভর্তুকি বা সহজ শর্তে ঋণ দিতে পারে।
নিচে কিছু দেশের পদক্ষেপের একটি সংক্ষিপ্ত বিবরণ দেওয়া হলো:
চীন
যুক্তরাষ্ট্রের শুল্ক নীতির বিরুদ্ধে সবচেয়ে আক্রমণাত্মক প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছে চীন। যুক্তরাষ্ট্র চীনের পণ্যের ওপর ২০ শতাংশ বিদ্যমান শুল্কের সঙ্গে ৩৪ শতাংশ পারস্পরিক শুল্ক যোগ করেছে, যার ফলে মোট শুল্ক দাঁড়িয়েছে ৫৪ শতাংশ। এর জবাবে ৪ এপ্রিল যুক্তরাষ্ট্রের সব পণ্যের ওপর ৩৪ শতাংশ শুল্ক আরোপের ঘোষণা দেয় চীন, যা ১০ এপ্রিল থেকে কার্যকর হবে। এ ছাড়া, চীন বিরল মৃত্তিকা (কম্পিউটার চিপ ও ইলেকট্রিক গাড়ির ব্যাটারির জন্য প্রয়োজনীয়) রপ্তানির ওপর কঠোর নিয়ন্ত্রণ আরোপ করেছে। চীনের বাণিজ্য মন্ত্রণালয় বলেছে, যুক্তরাষ্ট্রের এই পদক্ষেপ বৈশ্বিক অর্থনীতির জন্য ক্ষতিকর এবং তারা প্রয়োজনে আরও পদক্ষেপ নিতে প্রস্তুত।
বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, চীন তাদের মুদ্রা ইউয়ানের মান কমিয়ে বা আরও বেশি পণ্যের রপ্তানি সীমিত করে যুক্তরাষ্ট্রের ওপর চাপ সৃষ্টি করতে পারে। এ ছাড়া, ২৭টি মার্কিন কোম্পানিকে চীনের নিষেধাজ্ঞার তালিকায় যুক্ত করা হয়েছে। এটি সিনো–মার্কিন বাণিজ্য যুদ্ধকে আরও তীব্র করে তুলতে পারে।
ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ)
ইউরোপীয় ইউনিয়নের ওপর যুক্তরাষ্ট্র ২০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছে। ইইউ এর জবাবে দুটি পথ বেছে নিয়েছে: আলোচনা এবং প্রতিশোধ। ইইউ বাণিজ্য প্রধান মারোস সেফকোভিচ ১১ এপ্রিল যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করবেন, যেখানে তাঁরা এই শুল্ক থেকে ছাড় বা হ্রাস চাইবেন।
ইউরোপীয় কমিশনের প্রেসিডেন্ট উরসুলা ফন ডের লায়েন বলেছেন, তাঁরা আলোচনার মাধ্যমে সমাধান চান। তবে, একই সঙ্গে ইইউ প্রতিশোধমূলক শুল্কের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে। তারা যুক্তরাষ্ট্রের ইস্পাত, অ্যালুমিনিয়াম, বোরবন (মদ), মোটরসাইকেল এবং কৃষিপণ্যের ওপর শুল্ক আরোপের পরিকল্পনা করছে, যা ২৮ বিলিয়ন ডলার মূল্যের মার্কিন রপ্তানিকে প্রভাবিত করতে পারে। এই শুল্কগুলো এপ্রিলের মাঝামাঝি থেকে কার্যকর হতে পারে।
ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল মাখোঁ ইউরোপীয় কোম্পানিগুলোকে যুক্তরাষ্ট্রে বিনিয়োগ কমানোর পরামর্শ দিয়েছেন। এটি ইউরোপের দিকে থেকে প্রথম রাজনৈতিক প্রতিক্রিয়া। ইইউ যদি আরও চাপে পড়ে, তবে তারা ডিজিটাল ও আর্থিক সেবার ওপরও শুল্ক আরোপ করতে পারে।
কানাডা
কানাডা যুক্তরাষ্ট্র-মেক্সিকো-কানাডা চুক্তির (ইউএসএমসিএ) কারণে নতুন পাল্টা শুল্ক থেকে মুক্ত। তবে, ফেব্রুয়ারি থেকে ইউএসএমসিএ-বহির্ভূত পণ্যের ওপর ২৫ শতাংশ শুল্ক (জ্বালানি ও পটাশ বাদে ১০ শতাংশ) আরোপ করেছেন ট্রাম্প। এর আগে যুক্তরাষ্ট্রের শুল্ক হুমকির জবাবে কানাডা ২০ দশমিক ৭ বিলিয়ন ডলার মূল্যের মার্কিন আমদানির ওপর প্রতিশোধমূলক শুল্ক ঘোষণা করে, যা ১৩ মার্চ থেকে কার্যকর হওয়ার কথা। তবে, ২ এপ্রিলের পর এই পরিকল্পনার অবস্থা স্পষ্ট নয়। কানাডা বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থায় (ডব্লিউটিও) যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে আইনি অভিযোগও দায়ের করেছে।
মেক্সিকো
মেক্সিকোও ইউএসএমসিএতে থাকার কারণে নতুন শুল্ক থেকে মুক্ত, তবে ফেব্রুয়ারি থেকে ২৫ শতাংশ শুল্কের আওতায় রয়েছে। মেক্সিকোর প্রেসিডেন্ট ক্লদিয়া শেইনবাউম ৩ এপ্রিলের মধ্যে প্রতিশোধমূলক শুল্ক ঘোষণার কথা বলেছিলেন। তবে, আজ মঙ্গলবার (৮ এপ্রিল) পর্যন্ত কোনো হালনাগাদ গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়নি। মেক্সিকো আগে থেকেই যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আলোচনা করে ইউএসএমসিএ সুবিধা বজায় রাখার চেষ্টা করছে। তারা প্রতিশোধ ও সহযোগিতার মধ্যে ভারসাম্য রক্ষার চেষ্টা করছে।
জাপান
জাপানের ওপর যুক্তরাষ্ট্র ২৪ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছে। প্রধানমন্ত্রী শিগেরু ইশিবা ৪ এপ্রিল এটিকে ‘জাতীয় সংকট’ বলে ঘোষণা দিয়েছেন। এই শুল্ক যন্ত্রপাতি ও ইলেকট্রনিকস রপ্তানির ওপর বড় প্রভাব ফেলবে। জাপানি কর্মকর্তারা এর অর্থনৈতিক ক্ষতি বিশ্লেষণ করছেন, তবে এখনো নির্দিষ্ট প্রতিশোধমূলক শুল্ক ঘোষণা করা হয়নি। প্রধান সচিব ইয়োশিমাসা হায়াশি বলেছেন, তাঁরা সতর্কতার সঙ্গে সাহসী পদক্ষেপ নেওয়ার কথা ভাবছেন। বিভিন্ন মাধ্যমে এসেছে, জাপান চীন ও দক্ষিণ কোরিয়ার সঙ্গে মিলে একটি পূর্ব এশীয় জোট গঠনের সম্ভাবনা খুঁজছে।
দক্ষিণ কোরিয়া
দক্ষিণ কোরিয়ার ওপরও উচ্চ শুল্ক আরোপিত হয়েছে, যদিও সঠিক হার উল্লেখ করা হয়নি। তারা তাৎক্ষণিক প্রতিশোধ এড়িয়ে জাপান ও চীনের সঙ্গে সমন্বিত প্রতিক্রিয়ার পরিকল্পনা করছে। এটি যৌথ শুল্ক বা কূটনৈতিক চাপের আকারে হতে পারে, তবে এখন পর্যন্ত কোনো নির্দিষ্ট পদক্ষেপ ঘোষণা করা হয়নি।
ভিয়েতনাম
ভিয়েতনামের ওপর ৪৬ শতাংশ শুল্ক আরোপিত হয়েছে, যা এর উৎপাদন খাতের জন্য বড় ধাক্কা। শুল্ক ঘোষণার আগে ভিয়েতনাম যুক্তরাষ্ট্রের আমদানির ওপর শুল্ক কমিয়েছিল—এলএনজি-র শুল্ক ৫ শতাংশ থেকে ২ শতাংশ, গাড়ির শুল্ক ৪৫ শতাংশ-৬৪ শতাংশ থেকে ৩২ শতাংশ, এবং ইথানলের শুল্ক ১০ শতাংশ থেকে ৫ শতাংশ-এ নামিয়ে আনা হয়। তারা স্টারলিঙ্কের কার্যক্রমও অনুমোদন করেছে। তবুও, যুক্তরাষ্ট্র উচ্চ শুল্ক আরোপ করেছে। ভিয়েতনাম এখন প্রতিশোধের চেয়ে অর্থনৈতিক সমন্বয়ের দিকে মনোযোগ দিচ্ছে।
ব্রাজিল
ব্রাজিলের ওপর ১০ শতাংশ শুল্ক আরোপিত হয়েছে। ২ এপ্রিল ব্রাজিল একটি পাল্টাপাল্টি শুল্ক বিল পাস করে, যা যুক্তরাষ্ট্রের শুল্কের বিরুদ্ধে প্রতিশোধের অনুমতি দেয়। প্রেসিডেন্ট লুইজ ইনাসিও লুলা দা সিলভা ডব্লিউটিওতে আপিলের কথা ভাবছেন। ব্রাজিলের অভিযোগ, যুক্তরাষ্ট্র আন্তর্জাতিক বাণিজ্য প্রতিশ্রুতি লঙ্ঘন করেছে। ব্রাজিলের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্যের ভারসাম্য রক্ষার পরিকল্পনা করছে।
কম্বোডিয়া
কম্বোডিয়ার ওপর সর্বোচ্চ ৪৯ শতাংশ শুল্ক আরোপিত হয়েছে। দেশটির শ্রম ও বৃত্তিমূলক প্রশিক্ষণমন্ত্রী এই পরিণতি মোকাবিলায় আত্মবিশ্বাস দেখাচ্ছেন। তবে, অর্থনৈতিক সক্ষমতা কম থাকায় প্রতিশোধের চেয়ে অভ্যন্তরীণ অর্থনীতির শক্তি বাড়ানোর দিকে মনোযোগ দিচ্ছে, কারণ দেশটি যুক্তরাষ্ট্রের বাজারের ওপর অনেকাংশে নির্ভরশীল।
ভারত
ভারতের ওপর ২৬ শতাংশ শুল্ক আরোপিত হয়েছে। বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ইলেকট্রনিকস, রত্ন ও গয়নার মতো রপ্তানির ওপর প্রভাব বিশ্লেষণ করছে। কর্মকর্তারা এটিকে ‘মিশ্র ফল’ বলে বর্ণনা করেছেন। ভারত আগে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ৪৬ বিলিয়ন ডলারের বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর জন্য আলোচনা করেছে এবং ওষুধের জন্য ছাড় পেয়েছে। তাই তাৎক্ষণিক প্রতিশোধ ঘোষণার মতো পদক্ষেপে তারা যাচ্ছে না।
অন্যান্য উল্লেখযোগ্য প্রতিক্রিয়া:
তাইওয়ান: ৩২ শতাংশ শুল্কের সম্মুখীন। প্রেসিডেন্ট লাই চিং-তে এই পদক্ষেপকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র-তাইওয়ানের বাণিজ্য সম্পর্কের সঙ্গে অসামঞ্জস্যপূর্ণ বলে সমালোচনা করেছেন এবং তাইওয়ানের প্রযুক্তি রপ্তানি, বিশেষ করে সেমিকন্ডাক্টর (যা আপাতত অব্যাহতিপ্রাপ্ত) রক্ষার জন্য জোরালো আলোচনার আহ্বান জানিয়েছেন।
ইসরায়েল: ১৭ শতাংশ শুল্কের প্রতিক্রিয়ায় অর্থমন্ত্রী বেজালেল স্মোতরিচ সম্পর্ক জোরদার করার জন্য ১ এপ্রিল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের আমদানি পণ্যের ওপর ইসরায়েলের শুল্ক বাতিলের পর ঝুঁকি ও সুযোগগুলো মূল্যায়ন করার কথা ভাবছেন।
নরওয়ে: প্রধানমন্ত্রী জোনাস গার স্টোরে ১৫ শতাংশ শুল্কে আরোপের ফলে রপ্তানিনির্ভর শিল্পের ওপর প্রভাব পড়ায় ব্যবসায়ীদের কাছে দুঃখ প্রকাশ করেছেন। তাৎক্ষণিক প্রতিশোধ ছাড়াই সম্ভাব্য অর্থনৈতিক সমন্বয়ের ইঙ্গিত দিয়েছেন তিনি।
সাধারণ প্রবণতা
ট্রাম্পের পাল্টা শুল্ক মোকাবিলায় বিভিন্ন দেশের কৌশলে স্পষ্ট ভিন্নতা দেখা যাচ্ছে। স্পষ্টত কোনো সমন্বিত প্রতিক্রিয়া মুখে পড়বে না যুক্তরাষ্ট্র। অধিকাংশ দেশই যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাজেট ঘাটতি কমানোর দিকে নজর দিচ্ছে। এর মধ্যে বাংলাদেশ অন্যতম। বাংলাদেশ যুক্তরাষ্ট্র থেকে কৃষি ও প্রযুক্তি পণ্য কেনার প্রতিশ্রুতি দিয়ে সরাসরি প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পকে চিঠি দিয়েছে।
মোটা দাগে দেশগুলো প্রতিশোধ (চীন, ইইউ, কানাডা), আলোচনা (জাপান, তাইওয়ান, ভারত) এবং অর্থনৈতিক সমন্বয় (ভিয়েতনাম, কম্বোডিয়া, বাংলাদেশ)–এর মধ্যে বিভক্ত। অনেকে যুক্তরাষ্ট্রের শুল্ককে ডব্লিউটিও নীতির লঙ্ঘন হিসেবে সমালোচনা করছে।

গত ২৬ ডিসেম্বর বিশ্বের প্রথম জাতিসংঘ সদস্য দেশ হিসেবে সোমালিল্যান্ডকে একটি সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি দিয়েছে ইসরায়েল। প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু এই সিদ্ধান্তকে ‘আব্রাহাম অ্যাকর্ডস’-এর একটি সাহসী সম্প্রসারণ হিসেবে বর্ণনা করেছেন।
২ দিন আগে
মধ্যপ্রাচ্যের মূল ভূখণ্ড হারানোর পর আইএস এখন মূলত স্বায়ত্তশাসিত বিভিন্ন সেলের মাধ্যমে কার্যক্রম পরিচালনা করছে। বর্তমানে নাইজেরিয়া, সোমালিয়া, কঙ্গো এবং সাহেল অঞ্চলে আইএস অত্যন্ত শক্তিশালী। নাইজেরিয়ার উত্তর-পূর্বাঞ্চলে ‘আইএসডব্লিউএপি’ এবং উত্তর-পশ্চিমে বিভিন্ন অনুসারী গোষ্ঠী সক্রিয় রয়েছে।
৩ দিন আগে
নাইজেরিয়া আনুষ্ঠানিকভাবে একটি ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্র। দেশটির জনসংখ্যার প্রায় ৫৩ শতাংশ মুসলমান, ৪৫ শতাংশ খ্রিষ্টান এবং অন্যরা আফ্রিকার ঐতিহ্যগত কিছু ধর্মে বিশ্বাসী। খ্রিষ্টানদের ওপর সহিংসতা আন্তর্জাতিক অঙ্গনে ব্যাপক মনোযোগ পেলেও বহু বিশ্লেষকের মতে, বিষয়টি কেবল ধর্মীয় নিপীড়নের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়, এর পেছন
৩ দিন আগে
ভেনেজুয়েলার চলমান রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক সংকট ধীরে ধীরে একটি আঞ্চলিক সমস্যা থেকে বৈশ্বিক ভূ-রাজনৈতিক উত্তেজনায় রূপ নিচ্ছে। সাম্প্রতিক সময়ে যুক্তরাষ্ট্রের কড়া অবস্থান এবং সম্ভাব্য সামরিক হস্তক্ষেপের ইঙ্গিত এই সংকটকে আরও গভীর করেছে।
৮ দিন আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

২৬ ডিসেম্বর বিশ্বের প্রথম জাতিসংঘ সদস্যদেশ হিসেবে সোমালিল্যান্ডকে একটি সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি দিয়েছে ইসরায়েল। প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু এই সিদ্ধান্তকে ‘আব্রাহাম অ্যাকর্ডস’-এর একটি সাহসী সম্প্রসারণ হিসেবে বর্ণনা করেছেন। হর্ন অব আফ্রিকার এই স্বঘোষিত স্বাধীন মুসলিমপ্রধান ভূখণ্ডটির প্রতি ইসরায়েলের এই গভীর আগ্রহ নিছক কোনো কূটনৈতিক সৌজন্য নয়; বরং এর পেছনে রয়েছে কয়েক দশকের সুদূরপ্রসারী কৌশলগত পরিকল্পনা, নিরাপত্তাঝুঁকি ব্যবস্থাপনা এবং বিশাল অর্থনৈতিক সম্ভাবনা।
সোমালিল্যান্ডের অবস্থান এডেন উপসাগরের তীরে, যা সরাসরি ইয়েমেনের উল্টো দিকে এবং বাব আল-মানদেব প্রণালির ঠিক পাশেই অবস্থিত। বিশ্বের প্রায় এক-তৃতীয়াংশ জলপথের বাণিজ্য এই পথেই পরিচালিত হয়।
২০২৩ সাল থেকে ইরান-সমর্থিত হুতি বিদ্রোহীরা লোহিত সাগরে ইসরায়েলি সংশ্লিষ্ট জাহাজগুলোতে নিয়মিত হামলা চালিয়ে আসছে। সোমালিল্যান্ডের উপকূলরেখা থেকে হুতিদের মূল ঘাঁটি হোদেইদাহর দূরত্ব ৩০০ থেকে ৫০০ কিলোমিটার। ইসরায়েলের জন্য সোমালিল্যান্ড একটি ‘ফরোয়ার্ড ডিফেন্স’ বা সম্মুখ প্রতিরক্ষা ঘাঁটি হিসেবে কাজ করবে।
ইসরায়েলি থিংকট্যাংক (আইএনএসএস)-এর মতে, সোমালিল্যান্ডে গোয়েন্দা ঘাঁটি স্থাপনের মাধ্যমে ইরান থেকে ইয়েমেনে আসা অস্ত্র চোরাচালান এবং হুতিদের গতিবিধির ওপর সার্বক্ষণিক নজর রাখা সম্ভব হবে। এমনকি সংযুক্ত আরব আমিরাতের অর্থায়নে নির্মিত বারবেরা বন্দর ইসরায়েলি নৌ টহল বা ড্রোন অপারেশনের কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠতে পারে।
হর্ন অব আফ্রিকায় ইসরায়েলের এই প্রবেশ মূলত তার আঞ্চলিক প্রতিদ্বন্দ্বীদের আধিপত্য কমানোর একটি পাল্টা কৌশল। তুরস্ক ইতিমধ্যে সোমালিয়ার মোগাদিশুতে বিশাল সামরিক ঘাঁটি এবং বন্দরগুলোর নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে। ইসরায়েল মনে করে, সোমালিল্যান্ডের সঙ্গে জোরালো মৈত্রী এই অঞ্চলে তুরস্কের একক আধিপত্যে ভারসাম্য বজায় রাখবে।
এ ছাড়া ইসরায়েল সব সময় নিজের সীমানার বাইরে মিত্র দেশগুলোতে নিজের উপস্থিতি নিশ্চিত করতে চায়। সোমালিল্যান্ডের মতো একটি স্থিতিশীল এবং পশ্চিমাপন্থী প্রশাসনের সঙ্গে বন্ধুত্ব ইসরায়েলকে লোহিত সাগরের নিরাপত্তা বলয়ে একক কর্তৃত্ব দেবে।
অর্থনৈতিক সম্ভাবনা ও প্রাকৃতিক সম্পদের ভান্ডারও আগ্রহের মূলে রয়েছে। বিশ্লেষকদের মতে, সোমালিল্যান্ড কেবল একটি কৌশলগত বন্দর নয়, বরং এটি সম্পদের একটি অব্যবহৃত খনি।
সোমালিল্যান্ডে বিপুল পরিমাণ অপরিশোধিত তেল, গ্যাস এবং বিরল মৃত্তিকা খনিজ মজুত থাকার জোরালো সম্ভাবনা রয়েছে। ইসরায়েলের উচ্চ প্রযুক্তি এবং অস্ত্র তৈরির কারখানায় এই কাঁচামালগুলো অত্যন্ত জরুরি।
ইসরায়েল ইতিমধ্যে কৃষি ক্ষেত্রে লবণাক্ত পানি পরিশোধন, উন্নত সেচব্যবস্থা এবং সাইবার নিরাপত্তা খাতে বড় বিনিয়োগের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। সোমালিল্যান্ডের জন্য এই অংশীদারত্ব হবে অর্থনৈতিক স্বাধীনতার চাবিকাঠি।
তবে এতে কূটনৈতিক চ্যালেঞ্জও রয়েছে। ইসরায়েলের এই স্বীকৃতি যেমন সোমালিল্যান্ডের জন্য বৈধতার দ্বার উন্মোচন করেছে, তেমনি এটি আঞ্চলিক উত্তেজনারও জন্ম দিয়েছে।
সোমালিয়া এই পদক্ষেপকে তাদের অখণ্ডতার ওপর ‘সরাসরি আক্রমণ’ হিসেবে আখ্যা দিয়েছে। আফ্রিকান ইউনিয়ন (এইউ) এবং আরব লিগ এই স্বীকৃতির তীব্র নিন্দা জানিয়েছে এবং সতর্ক করেছে যে এটি আফ্রিকা মহাদেশে নতুন করে অস্থিতিশীলতা তৈরি করতে পারে।
পশ্চিমা বিশ্বও ইসরায়েলের এই পদক্ষেপে দ্বিধাগ্রস্ত। মার্কিন সিনেটর টেড ক্রুজ সোমালিল্যান্ডকে একটি নির্ভরযোগ্য অংশীদার হিসেবে সমর্থন করলেও মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প জানিয়েছেন, যুক্তরাষ্ট্র এখনই এই পথে হাঁটবে না, বরং পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করবে।
সর্বোপরি ইসরায়েলের জন্য সোমালিল্যান্ড একটি স্থিতিশীল এবং দীর্ঘমেয়াদি মিত্র, যারা সন্ত্রাসবাদ দমনে ইসরায়েলের সমমনা বলেই মনে করা হয়। এই স্বীকৃতির মাধ্যমে ইসরায়েল লোহিত সাগরে নিজের নৌ-শক্তির নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে চায়। তবে এই পদক্ষেপ যদি ইথিওপিয়া বা সংযুক্ত আরব আমিরাতের মতো দেশগুলোকে সোমালিল্যান্ডকে স্বীকৃতি দিতে উৎসাহিত করবে। তবে এর ফলে হর্ন অব আফ্রিকার মানচিত্র এবং ভূরাজনীতি চিরতরে বদলে যেতে পারে। এটি যেমন একটি নতুন সামরিক ও অর্থনৈতিক অক্ষের সম্ভাবনা তৈরি করেছে, তেমনি আঞ্চলিক সংঘাতের ঝুঁকিও বাড়িয়ে দিয়েছে।
তথ্যসূত্র: সাউথ চায়না মর্নিং পোস্ট, রয়টার্স, আল জাজিরা এবং আটলান্টিক কাউন্সিল।

২৬ ডিসেম্বর বিশ্বের প্রথম জাতিসংঘ সদস্যদেশ হিসেবে সোমালিল্যান্ডকে একটি সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি দিয়েছে ইসরায়েল। প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু এই সিদ্ধান্তকে ‘আব্রাহাম অ্যাকর্ডস’-এর একটি সাহসী সম্প্রসারণ হিসেবে বর্ণনা করেছেন। হর্ন অব আফ্রিকার এই স্বঘোষিত স্বাধীন মুসলিমপ্রধান ভূখণ্ডটির প্রতি ইসরায়েলের এই গভীর আগ্রহ নিছক কোনো কূটনৈতিক সৌজন্য নয়; বরং এর পেছনে রয়েছে কয়েক দশকের সুদূরপ্রসারী কৌশলগত পরিকল্পনা, নিরাপত্তাঝুঁকি ব্যবস্থাপনা এবং বিশাল অর্থনৈতিক সম্ভাবনা।
সোমালিল্যান্ডের অবস্থান এডেন উপসাগরের তীরে, যা সরাসরি ইয়েমেনের উল্টো দিকে এবং বাব আল-মানদেব প্রণালির ঠিক পাশেই অবস্থিত। বিশ্বের প্রায় এক-তৃতীয়াংশ জলপথের বাণিজ্য এই পথেই পরিচালিত হয়।
২০২৩ সাল থেকে ইরান-সমর্থিত হুতি বিদ্রোহীরা লোহিত সাগরে ইসরায়েলি সংশ্লিষ্ট জাহাজগুলোতে নিয়মিত হামলা চালিয়ে আসছে। সোমালিল্যান্ডের উপকূলরেখা থেকে হুতিদের মূল ঘাঁটি হোদেইদাহর দূরত্ব ৩০০ থেকে ৫০০ কিলোমিটার। ইসরায়েলের জন্য সোমালিল্যান্ড একটি ‘ফরোয়ার্ড ডিফেন্স’ বা সম্মুখ প্রতিরক্ষা ঘাঁটি হিসেবে কাজ করবে।
ইসরায়েলি থিংকট্যাংক (আইএনএসএস)-এর মতে, সোমালিল্যান্ডে গোয়েন্দা ঘাঁটি স্থাপনের মাধ্যমে ইরান থেকে ইয়েমেনে আসা অস্ত্র চোরাচালান এবং হুতিদের গতিবিধির ওপর সার্বক্ষণিক নজর রাখা সম্ভব হবে। এমনকি সংযুক্ত আরব আমিরাতের অর্থায়নে নির্মিত বারবেরা বন্দর ইসরায়েলি নৌ টহল বা ড্রোন অপারেশনের কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠতে পারে।
হর্ন অব আফ্রিকায় ইসরায়েলের এই প্রবেশ মূলত তার আঞ্চলিক প্রতিদ্বন্দ্বীদের আধিপত্য কমানোর একটি পাল্টা কৌশল। তুরস্ক ইতিমধ্যে সোমালিয়ার মোগাদিশুতে বিশাল সামরিক ঘাঁটি এবং বন্দরগুলোর নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে। ইসরায়েল মনে করে, সোমালিল্যান্ডের সঙ্গে জোরালো মৈত্রী এই অঞ্চলে তুরস্কের একক আধিপত্যে ভারসাম্য বজায় রাখবে।
এ ছাড়া ইসরায়েল সব সময় নিজের সীমানার বাইরে মিত্র দেশগুলোতে নিজের উপস্থিতি নিশ্চিত করতে চায়। সোমালিল্যান্ডের মতো একটি স্থিতিশীল এবং পশ্চিমাপন্থী প্রশাসনের সঙ্গে বন্ধুত্ব ইসরায়েলকে লোহিত সাগরের নিরাপত্তা বলয়ে একক কর্তৃত্ব দেবে।
অর্থনৈতিক সম্ভাবনা ও প্রাকৃতিক সম্পদের ভান্ডারও আগ্রহের মূলে রয়েছে। বিশ্লেষকদের মতে, সোমালিল্যান্ড কেবল একটি কৌশলগত বন্দর নয়, বরং এটি সম্পদের একটি অব্যবহৃত খনি।
সোমালিল্যান্ডে বিপুল পরিমাণ অপরিশোধিত তেল, গ্যাস এবং বিরল মৃত্তিকা খনিজ মজুত থাকার জোরালো সম্ভাবনা রয়েছে। ইসরায়েলের উচ্চ প্রযুক্তি এবং অস্ত্র তৈরির কারখানায় এই কাঁচামালগুলো অত্যন্ত জরুরি।
ইসরায়েল ইতিমধ্যে কৃষি ক্ষেত্রে লবণাক্ত পানি পরিশোধন, উন্নত সেচব্যবস্থা এবং সাইবার নিরাপত্তা খাতে বড় বিনিয়োগের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। সোমালিল্যান্ডের জন্য এই অংশীদারত্ব হবে অর্থনৈতিক স্বাধীনতার চাবিকাঠি।
তবে এতে কূটনৈতিক চ্যালেঞ্জও রয়েছে। ইসরায়েলের এই স্বীকৃতি যেমন সোমালিল্যান্ডের জন্য বৈধতার দ্বার উন্মোচন করেছে, তেমনি এটি আঞ্চলিক উত্তেজনারও জন্ম দিয়েছে।
সোমালিয়া এই পদক্ষেপকে তাদের অখণ্ডতার ওপর ‘সরাসরি আক্রমণ’ হিসেবে আখ্যা দিয়েছে। আফ্রিকান ইউনিয়ন (এইউ) এবং আরব লিগ এই স্বীকৃতির তীব্র নিন্দা জানিয়েছে এবং সতর্ক করেছে যে এটি আফ্রিকা মহাদেশে নতুন করে অস্থিতিশীলতা তৈরি করতে পারে।
পশ্চিমা বিশ্বও ইসরায়েলের এই পদক্ষেপে দ্বিধাগ্রস্ত। মার্কিন সিনেটর টেড ক্রুজ সোমালিল্যান্ডকে একটি নির্ভরযোগ্য অংশীদার হিসেবে সমর্থন করলেও মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প জানিয়েছেন, যুক্তরাষ্ট্র এখনই এই পথে হাঁটবে না, বরং পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করবে।
সর্বোপরি ইসরায়েলের জন্য সোমালিল্যান্ড একটি স্থিতিশীল এবং দীর্ঘমেয়াদি মিত্র, যারা সন্ত্রাসবাদ দমনে ইসরায়েলের সমমনা বলেই মনে করা হয়। এই স্বীকৃতির মাধ্যমে ইসরায়েল লোহিত সাগরে নিজের নৌ-শক্তির নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে চায়। তবে এই পদক্ষেপ যদি ইথিওপিয়া বা সংযুক্ত আরব আমিরাতের মতো দেশগুলোকে সোমালিল্যান্ডকে স্বীকৃতি দিতে উৎসাহিত করবে। তবে এর ফলে হর্ন অব আফ্রিকার মানচিত্র এবং ভূরাজনীতি চিরতরে বদলে যেতে পারে। এটি যেমন একটি নতুন সামরিক ও অর্থনৈতিক অক্ষের সম্ভাবনা তৈরি করেছে, তেমনি আঞ্চলিক সংঘাতের ঝুঁকিও বাড়িয়ে দিয়েছে।
তথ্যসূত্র: সাউথ চায়না মর্নিং পোস্ট, রয়টার্স, আল জাজিরা এবং আটলান্টিক কাউন্সিল।

বাংলাদেশ, ভিয়েতনাম ও কম্বোডিয়ার মতো ছোট দেশগুলোকে অর্থনৈতিক সমন্বয়ে জোর দিতে দেখা যাচ্ছে। অর্থনৈতিক সমন্বয় বলতে যুক্তরাষ্ট্রের পাল্টা শুল্কের প্রভাব মোকাবিলায় অর্থনীতিতে পরিবর্তন বা সমন্বয় আনার চেষ্টাকে বোঝানো হচ্ছে।
০৮ এপ্রিল ২০২৫
মধ্যপ্রাচ্যের মূল ভূখণ্ড হারানোর পর আইএস এখন মূলত স্বায়ত্তশাসিত বিভিন্ন সেলের মাধ্যমে কার্যক্রম পরিচালনা করছে। বর্তমানে নাইজেরিয়া, সোমালিয়া, কঙ্গো এবং সাহেল অঞ্চলে আইএস অত্যন্ত শক্তিশালী। নাইজেরিয়ার উত্তর-পূর্বাঞ্চলে ‘আইএসডব্লিউএপি’ এবং উত্তর-পশ্চিমে বিভিন্ন অনুসারী গোষ্ঠী সক্রিয় রয়েছে।
৩ দিন আগে
নাইজেরিয়া আনুষ্ঠানিকভাবে একটি ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্র। দেশটির জনসংখ্যার প্রায় ৫৩ শতাংশ মুসলমান, ৪৫ শতাংশ খ্রিষ্টান এবং অন্যরা আফ্রিকার ঐতিহ্যগত কিছু ধর্মে বিশ্বাসী। খ্রিষ্টানদের ওপর সহিংসতা আন্তর্জাতিক অঙ্গনে ব্যাপক মনোযোগ পেলেও বহু বিশ্লেষকের মতে, বিষয়টি কেবল ধর্মীয় নিপীড়নের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়, এর পেছন
৩ দিন আগে
ভেনেজুয়েলার চলমান রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক সংকট ধীরে ধীরে একটি আঞ্চলিক সমস্যা থেকে বৈশ্বিক ভূ-রাজনৈতিক উত্তেজনায় রূপ নিচ্ছে। সাম্প্রতিক সময়ে যুক্তরাষ্ট্রের কড়া অবস্থান এবং সম্ভাব্য সামরিক হস্তক্ষেপের ইঙ্গিত এই সংকটকে আরও গভীর করেছে।
৮ দিন আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

বড়দিনের রাতে নাইজেরিয়ার উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় সোকোটো রাজ্যে মার্কিন বাহিনীর বিমান হামলা বিশ্বজুড়ে নতুন করে আলোচনায় নিয়ে এসেছে জঙ্গিগোষ্ঠী ‘ইসলামিক স্টেট’ বা আইএসকে। মধ্যপ্রাচ্যে পরাজয়ের পর গোষ্ঠীটি এখন আফ্রিকায় তাদের জাল বিস্তার করছে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প দাবি করেছেন, নাইজেরিয়ায় খ্রিষ্টানদের লক্ষ্য করে নৃশংস হত্যাযজ্ঞ চালানোর কারণে তিনি এ হামলার নির্দেশ দিয়েছেন।
ইসলামিক স্টেট কী
ইসলামিক স্টেট (যাকে আইএসআইএস বা দায়েশ নামেও ডাকা হয়) একটি সুন্নি চরমপন্থী গোষ্ঠী। ইরাক ও সিরিয়ায় উত্থান ঘটিয়ে তারা একসময় ‘খিলাফত’ ঘোষণা করেছিল। এরপর ২০১৪ থেকে ২০১৭ সালের মধ্যে ইরাক ও সিরিয়ার বিশাল অংশ তাদের দখলে ছিল। তখন তারা কঠোর শরিয়াহ আইন জারি করে এবং প্রকাশ্যে শিরশ্ছেদ ও নির্যাতনের মতো নৃশংসতা চালিয়ে বিশ্বকে স্তব্ধ করে দেয়।
পরে যুক্তরাষ্ট্র নেতৃত্বাধীন বহুজাতিক বাহিনীর ক্রমাগত অভিযানের মুখে ইরাকের মসুল ও সিরিয়ার রাক্কায় তাদের পতন ঘটে। তবে সংগঠনটি পুরোপুরি নির্মূল না হয়ে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে পড়ে।
বর্তমানে তারা কোথায় সক্রিয়
মধ্যপ্রাচ্যের মূল ভূখণ্ড হারানোর পর আইএস এখন মূলত স্বায়ত্তশাসিত বিভিন্ন সেলের মাধ্যমে কার্যক্রম পরিচালনা করছে। বর্তমানে নাইজেরিয়া, সোমালিয়া, কঙ্গো এবং সাহেল অঞ্চলে আইএস অত্যন্ত শক্তিশালী। নাইজেরিয়ার উত্তর-পূর্বাঞ্চলে ‘আইএসডব্লিউএপি’ এবং উত্তর-পশ্চিমে বিভিন্ন অনুসারী গোষ্ঠী সক্রিয় রয়েছে।
এশিয়া মহাদেশের মধ্যে আফগানিস্তান ও পাকিস্তানে ‘আইএস-খোরাসান’ নামে তারা সক্রিয়। এ ছাড়া ফিলিপাইনের মিন্দানাও অঞ্চলেও তাদের অনুসারী রয়েছে। জাতিসংঘ মনে করে, বর্তমানে তাদের অন্তত ১০ হাজার সক্রিয় সদস্য রয়েছে।
লক্ষ্য ও বর্তমান কৌশল
আইএসের মূল লক্ষ্য তাদের চরমপন্থী মতাদর্শ বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে দেওয়া। তবে সরাসরি যুদ্ধের বদলে তারা এখন কিছু নতুন কৌশল নিয়েছে। যেমন, অ্যাফিলিয়েট নেটওয়ার্ক—নিজেরা সরাসরি যুক্ত না হয়ে বিশ্বের বিভিন্ন স্থানীয় জঙ্গিগোষ্ঠীকে নিজেদের ‘শাখা’ হিসেবে স্বীকৃতি দিয়ে প্রভাব বিস্তার করা। লোন উলফ অ্যাটাক—সংঘবদ্ধ হামলার পরিবর্তে একজন বা দুই ব্যক্তির সমন্বয়ে বড় ধরনের হামলা। সম্প্রতি অস্ট্রেলিয়ার সিডনির বন্ডাই বিচে ইহুদিদের এক অনুষ্ঠানে বন্দুক হামলার পেছনে আইএসের এই কৌশল ছিল বলে সন্দেহ করা হচ্ছে। অনলাইন প্রচারণা—টেলিগ্রামের মতো প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করে আতঙ্ক ছড়ানো এবং নতুন সদস্য সংগ্রহ করা।
মার্কিন সামরিক বাহিনীর মতে, আইএসের বর্তমান বিশ্ব নেতা হলেন আবদুলকাদির মুমিন। তিনি বর্তমানে আইএসের সোমালিয়া শাখার প্রধান।
আইএসের সাম্প্রতিক কিছু বড় হামলা
কঙ্গোতে চলতি বছরের গত অক্টোবরে একটি গির্জায় নৈশকালীন প্রার্থনার সময় হামলায় ৪৩ জন নিহত হয়, যার দায় স্বীকার করে আইএস। গত ফেব্রুয়ারিতে সোমালিয়ায় একাধিক সামরিক ঘাঁটিতে আত্মঘাতী গাড়িবোমা হামলা চালায় আইএস। চলতি মাসে সিরিয়ায় দুই মার্কিন সেনা ও একজন দোভাষী নিহত হন, যার নেপথ্যে আইএসের হাত রয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এ ঘটনার পর চলতি সপ্তাহে সিরিয়ায় আইএসের ঘাঁটি লক্ষ্য করে ব্যাপক হামলা চালিয়েছে মার্কিন সামরিক বাহিনী।
নাইজেরিয়ায় মার্কিন হামলা এটাই প্রমাণ করে যে, আইএস এখন আর কেবল মধ্যপ্রাচ্যের সমস্যা নয়। বিশেষ করে, সাহেল ও পশ্চিম আফ্রিকায় তাদের ক্রমবর্ধমান শক্তি বিশ্ব নিরাপত্তার জন্য নতুন এক চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
রয়টার্স থেকে সংক্ষেপে অনূদিত

বড়দিনের রাতে নাইজেরিয়ার উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় সোকোটো রাজ্যে মার্কিন বাহিনীর বিমান হামলা বিশ্বজুড়ে নতুন করে আলোচনায় নিয়ে এসেছে জঙ্গিগোষ্ঠী ‘ইসলামিক স্টেট’ বা আইএসকে। মধ্যপ্রাচ্যে পরাজয়ের পর গোষ্ঠীটি এখন আফ্রিকায় তাদের জাল বিস্তার করছে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প দাবি করেছেন, নাইজেরিয়ায় খ্রিষ্টানদের লক্ষ্য করে নৃশংস হত্যাযজ্ঞ চালানোর কারণে তিনি এ হামলার নির্দেশ দিয়েছেন।
ইসলামিক স্টেট কী
ইসলামিক স্টেট (যাকে আইএসআইএস বা দায়েশ নামেও ডাকা হয়) একটি সুন্নি চরমপন্থী গোষ্ঠী। ইরাক ও সিরিয়ায় উত্থান ঘটিয়ে তারা একসময় ‘খিলাফত’ ঘোষণা করেছিল। এরপর ২০১৪ থেকে ২০১৭ সালের মধ্যে ইরাক ও সিরিয়ার বিশাল অংশ তাদের দখলে ছিল। তখন তারা কঠোর শরিয়াহ আইন জারি করে এবং প্রকাশ্যে শিরশ্ছেদ ও নির্যাতনের মতো নৃশংসতা চালিয়ে বিশ্বকে স্তব্ধ করে দেয়।
পরে যুক্তরাষ্ট্র নেতৃত্বাধীন বহুজাতিক বাহিনীর ক্রমাগত অভিযানের মুখে ইরাকের মসুল ও সিরিয়ার রাক্কায় তাদের পতন ঘটে। তবে সংগঠনটি পুরোপুরি নির্মূল না হয়ে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে পড়ে।
বর্তমানে তারা কোথায় সক্রিয়
মধ্যপ্রাচ্যের মূল ভূখণ্ড হারানোর পর আইএস এখন মূলত স্বায়ত্তশাসিত বিভিন্ন সেলের মাধ্যমে কার্যক্রম পরিচালনা করছে। বর্তমানে নাইজেরিয়া, সোমালিয়া, কঙ্গো এবং সাহেল অঞ্চলে আইএস অত্যন্ত শক্তিশালী। নাইজেরিয়ার উত্তর-পূর্বাঞ্চলে ‘আইএসডব্লিউএপি’ এবং উত্তর-পশ্চিমে বিভিন্ন অনুসারী গোষ্ঠী সক্রিয় রয়েছে।
এশিয়া মহাদেশের মধ্যে আফগানিস্তান ও পাকিস্তানে ‘আইএস-খোরাসান’ নামে তারা সক্রিয়। এ ছাড়া ফিলিপাইনের মিন্দানাও অঞ্চলেও তাদের অনুসারী রয়েছে। জাতিসংঘ মনে করে, বর্তমানে তাদের অন্তত ১০ হাজার সক্রিয় সদস্য রয়েছে।
লক্ষ্য ও বর্তমান কৌশল
আইএসের মূল লক্ষ্য তাদের চরমপন্থী মতাদর্শ বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে দেওয়া। তবে সরাসরি যুদ্ধের বদলে তারা এখন কিছু নতুন কৌশল নিয়েছে। যেমন, অ্যাফিলিয়েট নেটওয়ার্ক—নিজেরা সরাসরি যুক্ত না হয়ে বিশ্বের বিভিন্ন স্থানীয় জঙ্গিগোষ্ঠীকে নিজেদের ‘শাখা’ হিসেবে স্বীকৃতি দিয়ে প্রভাব বিস্তার করা। লোন উলফ অ্যাটাক—সংঘবদ্ধ হামলার পরিবর্তে একজন বা দুই ব্যক্তির সমন্বয়ে বড় ধরনের হামলা। সম্প্রতি অস্ট্রেলিয়ার সিডনির বন্ডাই বিচে ইহুদিদের এক অনুষ্ঠানে বন্দুক হামলার পেছনে আইএসের এই কৌশল ছিল বলে সন্দেহ করা হচ্ছে। অনলাইন প্রচারণা—টেলিগ্রামের মতো প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করে আতঙ্ক ছড়ানো এবং নতুন সদস্য সংগ্রহ করা।
মার্কিন সামরিক বাহিনীর মতে, আইএসের বর্তমান বিশ্ব নেতা হলেন আবদুলকাদির মুমিন। তিনি বর্তমানে আইএসের সোমালিয়া শাখার প্রধান।
আইএসের সাম্প্রতিক কিছু বড় হামলা
কঙ্গোতে চলতি বছরের গত অক্টোবরে একটি গির্জায় নৈশকালীন প্রার্থনার সময় হামলায় ৪৩ জন নিহত হয়, যার দায় স্বীকার করে আইএস। গত ফেব্রুয়ারিতে সোমালিয়ায় একাধিক সামরিক ঘাঁটিতে আত্মঘাতী গাড়িবোমা হামলা চালায় আইএস। চলতি মাসে সিরিয়ায় দুই মার্কিন সেনা ও একজন দোভাষী নিহত হন, যার নেপথ্যে আইএসের হাত রয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এ ঘটনার পর চলতি সপ্তাহে সিরিয়ায় আইএসের ঘাঁটি লক্ষ্য করে ব্যাপক হামলা চালিয়েছে মার্কিন সামরিক বাহিনী।
নাইজেরিয়ায় মার্কিন হামলা এটাই প্রমাণ করে যে, আইএস এখন আর কেবল মধ্যপ্রাচ্যের সমস্যা নয়। বিশেষ করে, সাহেল ও পশ্চিম আফ্রিকায় তাদের ক্রমবর্ধমান শক্তি বিশ্ব নিরাপত্তার জন্য নতুন এক চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
রয়টার্স থেকে সংক্ষেপে অনূদিত

বাংলাদেশ, ভিয়েতনাম ও কম্বোডিয়ার মতো ছোট দেশগুলোকে অর্থনৈতিক সমন্বয়ে জোর দিতে দেখা যাচ্ছে। অর্থনৈতিক সমন্বয় বলতে যুক্তরাষ্ট্রের পাল্টা শুল্কের প্রভাব মোকাবিলায় অর্থনীতিতে পরিবর্তন বা সমন্বয় আনার চেষ্টাকে বোঝানো হচ্ছে।
০৮ এপ্রিল ২০২৫
গত ২৬ ডিসেম্বর বিশ্বের প্রথম জাতিসংঘ সদস্য দেশ হিসেবে সোমালিল্যান্ডকে একটি সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি দিয়েছে ইসরায়েল। প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু এই সিদ্ধান্তকে ‘আব্রাহাম অ্যাকর্ডস’-এর একটি সাহসী সম্প্রসারণ হিসেবে বর্ণনা করেছেন।
২ দিন আগে
নাইজেরিয়া আনুষ্ঠানিকভাবে একটি ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্র। দেশটির জনসংখ্যার প্রায় ৫৩ শতাংশ মুসলমান, ৪৫ শতাংশ খ্রিষ্টান এবং অন্যরা আফ্রিকার ঐতিহ্যগত কিছু ধর্মে বিশ্বাসী। খ্রিষ্টানদের ওপর সহিংসতা আন্তর্জাতিক অঙ্গনে ব্যাপক মনোযোগ পেলেও বহু বিশ্লেষকের মতে, বিষয়টি কেবল ধর্মীয় নিপীড়নের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়, এর পেছন
৩ দিন আগে
ভেনেজুয়েলার চলমান রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক সংকট ধীরে ধীরে একটি আঞ্চলিক সমস্যা থেকে বৈশ্বিক ভূ-রাজনৈতিক উত্তেজনায় রূপ নিচ্ছে। সাম্প্রতিক সময়ে যুক্তরাষ্ট্রের কড়া অবস্থান এবং সম্ভাব্য সামরিক হস্তক্ষেপের ইঙ্গিত এই সংকটকে আরও গভীর করেছে।
৮ দিন আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

নাইজেরিয়ার সরকার খ্রিষ্টানদের ওপর নিপীড়ন ঠেকাতে ব্যর্থ—এমন অভিযোগে কয়েক সপ্তাহ ধরে সমালোচনার পর অবশেষে বড়দিনের রাতে (২৫ ডিসেম্বর) পশ্চিম আফ্রিকার দেশটিতে বিমান হামলা চালিয়েছে মার্কিন বাহিনী। সরাসরি প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নির্দেশে নাইজেরিয়ার উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় সোকোটো রাজ্যে এ হামলা চালানো হয়।
ব্রিটিশ দৈনিক দ্য গার্ডিয়ান বলছে, ট্রাম্প প্রশাসন আইএস জঙ্গিদের একাধিক আস্তানা লক্ষ্য করে এসব হামলা চালায়। হামলায় মার্কিন নৌবাহিনীর যুদ্ধজাহাজ থেকে টমাহক মিসাইল নিক্ষেপ করা হয়েছিল। এসব হামলায় একাধিক আইএস জঙ্গি নিহত ও তাঁদের আস্তানা ধ্বংস হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে, তবে সঠিক সংখ্যা এখনো জানানো হয়নি।
ট্রাম্প প্রশাসনের সাম্প্রতিক বিদেশি সামরিক হস্তক্ষেপগুলোর সর্বশেষ উদাহরণ নাইজেরিয়ায় হামলা। অথচ ২০২৪ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনী প্রচারণায় তিনি যুক্তরাষ্ট্রকে ‘অন্তহীন যুদ্ধ’ থেকে বের করে আনার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন।
প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প দাবি করেছেন, এই হামলার মূল উদ্দেশ্য ছিল নাইজেরিয়ায় বসবাসরত খ্রিষ্টানদের ওপর চলমান হত্যাযজ্ঞ বন্ধ করা। তাঁর মতে, আইএস জঙ্গিরা পরিকল্পিতভাবে খ্রিষ্টানদের লক্ষ্যবস্তু বানাচ্ছে। হামলার ঘোষণা দিয়ে ট্রাম্প তাঁর ট্রুথ সোশ্যাল প্ল্যাটফর্মে লিখেছিলেন, ‘আমি আগেই এই সন্ত্রাসীদের সতর্ক করেছিলাম, তারা যদি খ্রিষ্টানদের হত্যা বন্ধ না করে, তবে তাদের চড়ম মূল্য দিতে হবে। আজ রাতে (বড়দিন) ঠিক তা-ই ঘটেছে।’
গত অক্টোবর ও নভেম্বর মাসেও প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প নাইজেরিয়ার নিরাপত্তা পরিস্থিতিকে ‘খ্রিষ্টান গণহত্যার’ শামিল বলে অভিহিত করেছিলেন।
মার্কিন প্রতিরক্ষা দপ্তরের এক কর্মকর্তা বার্তা সংস্থা এপিকে জানান, নাইজেরিয়া সরকারের অনুমোদন নিয়ে দেশটির সঙ্গে সমন্বয় করেই এসব হামলা চালানো হয়েছে। নাইজেরিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায়, এই সহযোগিতার মধ্যে গোয়েন্দা তথ্য আদান-প্রদান ও কৌশলগত সমন্বয় ছিল।
কেন নাইজেরিয়ায় হামলা চালাল ট্রাম্প প্রশাসন
অনেক আগে থেকেই যুক্তরাষ্ট্রের ডানপন্থী রাজনীতিক গোষ্ঠীগুলো নাইজেরিয়ায় খ্রিষ্টানদের ওপর নিপীড়নের অভিযোগ তুলছে। গত সেপ্টেম্বরে রিপাবলিকান সিনেটর টেড ক্রুজ কিছু নাইজেরীয় কর্মকর্তার ওপর নিষেধাজ্ঞার আহ্বান জানান। তিনি দাবি করেন, যারা ‘ইসলামপন্থী সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর মাধ্যমে খ্রিষ্টান ও অন্য ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে সহিংসতা সহজতর করছে’, তাদের নিষিদ্ধ করা উচিত।
তবে বর্তমানে বিষয়টি মার্কিন ডানপন্থী ও ইভানজেলিক্যাল খ্রিষ্টান মহলে বড় ইস্যু হয়ে দাঁড়িয়েছে। আবার এই ডানপন্থী ও ইভানজেলিক্যাল খ্রিষ্টানরাই ট্রাম্পের বড় সমর্থক। বিশ্লেষকদের মতে, নিজের সমর্থকদের তুষ্ট করতে এবং বিশ্বজুড়ে ‘খ্রিষ্টানদের রক্ষাকর্তা’ হিসেবে নিজেকে জাহির করতেই ট্রাম্প এই ত্বরিত সামরিক পদক্ষেপ নিয়েছেন।
এর আগে যুক্তরাষ্ট্রের আন্তর্জাতিক ধর্মীয় স্বাধীনতা আইনের আওতায় নাইজেরিয়াকে ‘বিশেষ উদ্বেগের দেশ’ হিসেবে চিহ্নিত করেন ট্রাম্প। বেশ কিছু মার্কিন আইনপ্রণেতা ও রক্ষণশীল খ্রিষ্টান গোষ্ঠীর লাগাতার লবিংয়ের পর এই সিদ্ধান্ত আসে। এর কিছুদিন পরই তিনি নাইজেরিয়ায় সম্ভাব্য সামরিক অভিযানের পরিকল্পনা করতে পেন্টাগনকে নির্দেশ দেন। সে সময় ট্রাম্প বলেন, নাইজেরিয়া সরকার যদি খ্রিষ্টান হত্যাকাণ্ড বন্ধ না করে, তবে তিনি ‘গানস-এ-ব্লেজিং’ অর্থাৎ পূর্ণ শক্তি নিয়ে হস্তক্ষেপ করতে পারেন।
নাইজেরিয়ায় কি আসলেই খ্রিষ্টানদের ওপর নিপীড়ন চলছে
নাইজেরিয়া আনুষ্ঠানিকভাবে একটি ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্র। দেশটির জনসংখ্যার প্রায় ৫৩ শতাংশ মুসলমান, ৪৫ শতাংশ খ্রিষ্টান এবং অন্যরা আফ্রিকার ঐতিহ্যগত কিছু ধর্মে বিশ্বাসী। খ্রিষ্টানদের ওপর সহিংসতা আন্তর্জাতিক অঙ্গনে ব্যাপক মনোযোগ পেলেও বহু বিশ্লেষকের মতে, বিষয়টি কেবল ধর্মীয় নিপীড়নের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়; এর পেছনে নানা কারণ রয়েছে।
উদাহরণ হিসেবে, যাযাবর মুসলিম পশুপালক ও খ্রিষ্টান কৃষক সম্প্রদায়ের মধ্যে প্রাণঘাতী সংঘর্ষ মূলত চারণভূমি ও পানির নিয়ন্ত্রণ নিয়ে। তবে ধর্মীয় ও জাতিগত বিভাজন এটিকে আরও জটিল করে তুলেছে। আবার অনেক বিশ্লেষকের মতে, যাজকদের অপহরণের ঘটনা ধর্মীয় বিদ্বেষের চেয়ে অর্থনৈতিক লাভের উদ্দেশ্যেই বেশি ঘটে, কারণ, তাঁরা প্রভাবশালী ব্যক্তি এবং তাঁদের অনুসারী বা প্রতিষ্ঠান দ্রুত মুক্তিপণের টাকা জোগাড় করতে পারে।
নাইজেরিয়া সরকারের অবস্থান
ট্রাম্প প্রশাসনের হামলার পর নাইজেরিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আইএস-নিধনে যুক্তরাষ্ট্রের সহযোগিতার প্রশংসা করেছে। কিন্তু খ্রিষ্টান নিপীড়নের বিষয়টির সঙ্গে মার্কিন অভিযানের কোনো সম্পর্ক আছে কি না, এ বিষয়ে কিছু বলেনি।
এক বিবৃতিতে দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায়, খ্রিষ্টান, মুসলমান কিংবা অন্য কোনো সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে পরিচালিত সব ধরনের সহিংসতাই নাইজেরিয়ার মূল্যবোধ এবং আন্তর্জাতিক শান্তি ও নিরাপত্তার প্রতি অবমাননা।
নাইজেরিয়ার বাস্তবতাও আসলে এমন। দীর্ঘদিন ধরে দেশটি নিরাপত্তা পরিস্থিতি সামাল দিতে হিমশিম খাচ্ছে। গত কয়েক বছরে দেশটিতে হাজারো মানুষ নিহত এবং শত শত মানুষ অপহৃত হয়েছে।
উত্তর-পূর্বাঞ্চলে ২০০৯ সাল থেকে বোকো হারাম ও ইসলামিক স্টেট ওয়েস্ট আফ্রিকা প্রভিন্স (আইএসডব্লিউএপি) বিদ্রোহ চালিয়ে যাচ্ছে। এতে কয়েক দশক ধরে কয়েক হাজার মানুষ নিহত এবং লাখো মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে। উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে সশস্ত্র অপরাধী চক্র, যাদের সাধারণত ‘ডাকাত’ বলা হয়, তারাও গণ-অপহরণ ও হামলা চালাচ্ছে। এমন পরিস্থিতি মুসলমান ও খ্রিষ্টান উভয় সম্প্রদায়কেই প্রভাবিত করছে।
এর আগে ট্রাম্পের অভিযোগের জবাবে নাইজেরিয়ার সরকার বিষয়টি স্বীকার করে বলেছিল, দেশটিতে কেবল খ্রিষ্টান নয়—বিভিন্ন ধর্মের মানুষই চরমপন্থী গোষ্ঠীগুলোর হাতে নির্যাতনের শিকার হচ্ছে।
গত মাসে নাইজেরিয়ার প্রেসিডেন্ট বোলা আহমেদ তিনুবু বলেন, নাইজেরিয়াকে ধর্মীয়ভাবে অসহিষ্ণু দেশ হিসেবে চিত্রিত করা বাস্তবতার প্রতিফলন নয়। তিনি বলেন, ‘ধর্মীয় স্বাধীনতা ও সহনশীলতা আমাদের সম্মিলিত পরিচয়ের একটি মূল ভিত্তি এবং এটি সব সময়ই থাকবে। নাইজেরিয়া এমন একটি দেশ, যেখানে সংবিধান সব ধর্মের নাগরিকদের সুরক্ষা নিশ্চিত করে।’
এদিকে, ‘অন্তহীন যুদ্ধ’ বন্ধের প্রতিশ্রুতি দিয়ে ক্ষমতায় এলেও নাইজেরিয়ায় ট্রাম্পের নতুন সামরিক হস্তক্ষেপ আফ্রিকার ভূরাজনীতিতে বড় ধরনের পরিবর্তনের ইঙ্গিত দিচ্ছে। অনেকে বলছেন, ‘খ্রিষ্টান নিপীড়ন’ আসলে ট্রাম্পের অজুহাত; তাঁর লক্ষ্য নাইজেরিয়ার তেলের খনি।
দ্য গার্ডিয়ান থেকে অনুবাদ করেছেন জগতপতি বর্মা

নাইজেরিয়ার সরকার খ্রিষ্টানদের ওপর নিপীড়ন ঠেকাতে ব্যর্থ—এমন অভিযোগে কয়েক সপ্তাহ ধরে সমালোচনার পর অবশেষে বড়দিনের রাতে (২৫ ডিসেম্বর) পশ্চিম আফ্রিকার দেশটিতে বিমান হামলা চালিয়েছে মার্কিন বাহিনী। সরাসরি প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নির্দেশে নাইজেরিয়ার উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় সোকোটো রাজ্যে এ হামলা চালানো হয়।
ব্রিটিশ দৈনিক দ্য গার্ডিয়ান বলছে, ট্রাম্প প্রশাসন আইএস জঙ্গিদের একাধিক আস্তানা লক্ষ্য করে এসব হামলা চালায়। হামলায় মার্কিন নৌবাহিনীর যুদ্ধজাহাজ থেকে টমাহক মিসাইল নিক্ষেপ করা হয়েছিল। এসব হামলায় একাধিক আইএস জঙ্গি নিহত ও তাঁদের আস্তানা ধ্বংস হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে, তবে সঠিক সংখ্যা এখনো জানানো হয়নি।
ট্রাম্প প্রশাসনের সাম্প্রতিক বিদেশি সামরিক হস্তক্ষেপগুলোর সর্বশেষ উদাহরণ নাইজেরিয়ায় হামলা। অথচ ২০২৪ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনী প্রচারণায় তিনি যুক্তরাষ্ট্রকে ‘অন্তহীন যুদ্ধ’ থেকে বের করে আনার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন।
প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প দাবি করেছেন, এই হামলার মূল উদ্দেশ্য ছিল নাইজেরিয়ায় বসবাসরত খ্রিষ্টানদের ওপর চলমান হত্যাযজ্ঞ বন্ধ করা। তাঁর মতে, আইএস জঙ্গিরা পরিকল্পিতভাবে খ্রিষ্টানদের লক্ষ্যবস্তু বানাচ্ছে। হামলার ঘোষণা দিয়ে ট্রাম্প তাঁর ট্রুথ সোশ্যাল প্ল্যাটফর্মে লিখেছিলেন, ‘আমি আগেই এই সন্ত্রাসীদের সতর্ক করেছিলাম, তারা যদি খ্রিষ্টানদের হত্যা বন্ধ না করে, তবে তাদের চড়ম মূল্য দিতে হবে। আজ রাতে (বড়দিন) ঠিক তা-ই ঘটেছে।’
গত অক্টোবর ও নভেম্বর মাসেও প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প নাইজেরিয়ার নিরাপত্তা পরিস্থিতিকে ‘খ্রিষ্টান গণহত্যার’ শামিল বলে অভিহিত করেছিলেন।
মার্কিন প্রতিরক্ষা দপ্তরের এক কর্মকর্তা বার্তা সংস্থা এপিকে জানান, নাইজেরিয়া সরকারের অনুমোদন নিয়ে দেশটির সঙ্গে সমন্বয় করেই এসব হামলা চালানো হয়েছে। নাইজেরিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায়, এই সহযোগিতার মধ্যে গোয়েন্দা তথ্য আদান-প্রদান ও কৌশলগত সমন্বয় ছিল।
কেন নাইজেরিয়ায় হামলা চালাল ট্রাম্প প্রশাসন
অনেক আগে থেকেই যুক্তরাষ্ট্রের ডানপন্থী রাজনীতিক গোষ্ঠীগুলো নাইজেরিয়ায় খ্রিষ্টানদের ওপর নিপীড়নের অভিযোগ তুলছে। গত সেপ্টেম্বরে রিপাবলিকান সিনেটর টেড ক্রুজ কিছু নাইজেরীয় কর্মকর্তার ওপর নিষেধাজ্ঞার আহ্বান জানান। তিনি দাবি করেন, যারা ‘ইসলামপন্থী সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর মাধ্যমে খ্রিষ্টান ও অন্য ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে সহিংসতা সহজতর করছে’, তাদের নিষিদ্ধ করা উচিত।
তবে বর্তমানে বিষয়টি মার্কিন ডানপন্থী ও ইভানজেলিক্যাল খ্রিষ্টান মহলে বড় ইস্যু হয়ে দাঁড়িয়েছে। আবার এই ডানপন্থী ও ইভানজেলিক্যাল খ্রিষ্টানরাই ট্রাম্পের বড় সমর্থক। বিশ্লেষকদের মতে, নিজের সমর্থকদের তুষ্ট করতে এবং বিশ্বজুড়ে ‘খ্রিষ্টানদের রক্ষাকর্তা’ হিসেবে নিজেকে জাহির করতেই ট্রাম্প এই ত্বরিত সামরিক পদক্ষেপ নিয়েছেন।
এর আগে যুক্তরাষ্ট্রের আন্তর্জাতিক ধর্মীয় স্বাধীনতা আইনের আওতায় নাইজেরিয়াকে ‘বিশেষ উদ্বেগের দেশ’ হিসেবে চিহ্নিত করেন ট্রাম্প। বেশ কিছু মার্কিন আইনপ্রণেতা ও রক্ষণশীল খ্রিষ্টান গোষ্ঠীর লাগাতার লবিংয়ের পর এই সিদ্ধান্ত আসে। এর কিছুদিন পরই তিনি নাইজেরিয়ায় সম্ভাব্য সামরিক অভিযানের পরিকল্পনা করতে পেন্টাগনকে নির্দেশ দেন। সে সময় ট্রাম্প বলেন, নাইজেরিয়া সরকার যদি খ্রিষ্টান হত্যাকাণ্ড বন্ধ না করে, তবে তিনি ‘গানস-এ-ব্লেজিং’ অর্থাৎ পূর্ণ শক্তি নিয়ে হস্তক্ষেপ করতে পারেন।
নাইজেরিয়ায় কি আসলেই খ্রিষ্টানদের ওপর নিপীড়ন চলছে
নাইজেরিয়া আনুষ্ঠানিকভাবে একটি ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্র। দেশটির জনসংখ্যার প্রায় ৫৩ শতাংশ মুসলমান, ৪৫ শতাংশ খ্রিষ্টান এবং অন্যরা আফ্রিকার ঐতিহ্যগত কিছু ধর্মে বিশ্বাসী। খ্রিষ্টানদের ওপর সহিংসতা আন্তর্জাতিক অঙ্গনে ব্যাপক মনোযোগ পেলেও বহু বিশ্লেষকের মতে, বিষয়টি কেবল ধর্মীয় নিপীড়নের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়; এর পেছনে নানা কারণ রয়েছে।
উদাহরণ হিসেবে, যাযাবর মুসলিম পশুপালক ও খ্রিষ্টান কৃষক সম্প্রদায়ের মধ্যে প্রাণঘাতী সংঘর্ষ মূলত চারণভূমি ও পানির নিয়ন্ত্রণ নিয়ে। তবে ধর্মীয় ও জাতিগত বিভাজন এটিকে আরও জটিল করে তুলেছে। আবার অনেক বিশ্লেষকের মতে, যাজকদের অপহরণের ঘটনা ধর্মীয় বিদ্বেষের চেয়ে অর্থনৈতিক লাভের উদ্দেশ্যেই বেশি ঘটে, কারণ, তাঁরা প্রভাবশালী ব্যক্তি এবং তাঁদের অনুসারী বা প্রতিষ্ঠান দ্রুত মুক্তিপণের টাকা জোগাড় করতে পারে।
নাইজেরিয়া সরকারের অবস্থান
ট্রাম্প প্রশাসনের হামলার পর নাইজেরিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আইএস-নিধনে যুক্তরাষ্ট্রের সহযোগিতার প্রশংসা করেছে। কিন্তু খ্রিষ্টান নিপীড়নের বিষয়টির সঙ্গে মার্কিন অভিযানের কোনো সম্পর্ক আছে কি না, এ বিষয়ে কিছু বলেনি।
এক বিবৃতিতে দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায়, খ্রিষ্টান, মুসলমান কিংবা অন্য কোনো সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে পরিচালিত সব ধরনের সহিংসতাই নাইজেরিয়ার মূল্যবোধ এবং আন্তর্জাতিক শান্তি ও নিরাপত্তার প্রতি অবমাননা।
নাইজেরিয়ার বাস্তবতাও আসলে এমন। দীর্ঘদিন ধরে দেশটি নিরাপত্তা পরিস্থিতি সামাল দিতে হিমশিম খাচ্ছে। গত কয়েক বছরে দেশটিতে হাজারো মানুষ নিহত এবং শত শত মানুষ অপহৃত হয়েছে।
উত্তর-পূর্বাঞ্চলে ২০০৯ সাল থেকে বোকো হারাম ও ইসলামিক স্টেট ওয়েস্ট আফ্রিকা প্রভিন্স (আইএসডব্লিউএপি) বিদ্রোহ চালিয়ে যাচ্ছে। এতে কয়েক দশক ধরে কয়েক হাজার মানুষ নিহত এবং লাখো মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে। উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে সশস্ত্র অপরাধী চক্র, যাদের সাধারণত ‘ডাকাত’ বলা হয়, তারাও গণ-অপহরণ ও হামলা চালাচ্ছে। এমন পরিস্থিতি মুসলমান ও খ্রিষ্টান উভয় সম্প্রদায়কেই প্রভাবিত করছে।
এর আগে ট্রাম্পের অভিযোগের জবাবে নাইজেরিয়ার সরকার বিষয়টি স্বীকার করে বলেছিল, দেশটিতে কেবল খ্রিষ্টান নয়—বিভিন্ন ধর্মের মানুষই চরমপন্থী গোষ্ঠীগুলোর হাতে নির্যাতনের শিকার হচ্ছে।
গত মাসে নাইজেরিয়ার প্রেসিডেন্ট বোলা আহমেদ তিনুবু বলেন, নাইজেরিয়াকে ধর্মীয়ভাবে অসহিষ্ণু দেশ হিসেবে চিত্রিত করা বাস্তবতার প্রতিফলন নয়। তিনি বলেন, ‘ধর্মীয় স্বাধীনতা ও সহনশীলতা আমাদের সম্মিলিত পরিচয়ের একটি মূল ভিত্তি এবং এটি সব সময়ই থাকবে। নাইজেরিয়া এমন একটি দেশ, যেখানে সংবিধান সব ধর্মের নাগরিকদের সুরক্ষা নিশ্চিত করে।’
এদিকে, ‘অন্তহীন যুদ্ধ’ বন্ধের প্রতিশ্রুতি দিয়ে ক্ষমতায় এলেও নাইজেরিয়ায় ট্রাম্পের নতুন সামরিক হস্তক্ষেপ আফ্রিকার ভূরাজনীতিতে বড় ধরনের পরিবর্তনের ইঙ্গিত দিচ্ছে। অনেকে বলছেন, ‘খ্রিষ্টান নিপীড়ন’ আসলে ট্রাম্পের অজুহাত; তাঁর লক্ষ্য নাইজেরিয়ার তেলের খনি।
দ্য গার্ডিয়ান থেকে অনুবাদ করেছেন জগতপতি বর্মা

বাংলাদেশ, ভিয়েতনাম ও কম্বোডিয়ার মতো ছোট দেশগুলোকে অর্থনৈতিক সমন্বয়ে জোর দিতে দেখা যাচ্ছে। অর্থনৈতিক সমন্বয় বলতে যুক্তরাষ্ট্রের পাল্টা শুল্কের প্রভাব মোকাবিলায় অর্থনীতিতে পরিবর্তন বা সমন্বয় আনার চেষ্টাকে বোঝানো হচ্ছে।
০৮ এপ্রিল ২০২৫
গত ২৬ ডিসেম্বর বিশ্বের প্রথম জাতিসংঘ সদস্য দেশ হিসেবে সোমালিল্যান্ডকে একটি সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি দিয়েছে ইসরায়েল। প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু এই সিদ্ধান্তকে ‘আব্রাহাম অ্যাকর্ডস’-এর একটি সাহসী সম্প্রসারণ হিসেবে বর্ণনা করেছেন।
২ দিন আগে
মধ্যপ্রাচ্যের মূল ভূখণ্ড হারানোর পর আইএস এখন মূলত স্বায়ত্তশাসিত বিভিন্ন সেলের মাধ্যমে কার্যক্রম পরিচালনা করছে। বর্তমানে নাইজেরিয়া, সোমালিয়া, কঙ্গো এবং সাহেল অঞ্চলে আইএস অত্যন্ত শক্তিশালী। নাইজেরিয়ার উত্তর-পূর্বাঞ্চলে ‘আইএসডব্লিউএপি’ এবং উত্তর-পশ্চিমে বিভিন্ন অনুসারী গোষ্ঠী সক্রিয় রয়েছে।
৩ দিন আগে
ভেনেজুয়েলার চলমান রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক সংকট ধীরে ধীরে একটি আঞ্চলিক সমস্যা থেকে বৈশ্বিক ভূ-রাজনৈতিক উত্তেজনায় রূপ নিচ্ছে। সাম্প্রতিক সময়ে যুক্তরাষ্ট্রের কড়া অবস্থান এবং সম্ভাব্য সামরিক হস্তক্ষেপের ইঙ্গিত এই সংকটকে আরও গভীর করেছে।
৮ দিন আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

ভেনেজুয়েলার চলমান রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক সংকট ধীরে ধীরে একটি আঞ্চলিক সমস্যা থেকে বৈশ্বিক ভূ-রাজনৈতিক উত্তেজনায় রূপ নিচ্ছে। সাম্প্রতিক সময়ে যুক্তরাষ্ট্রের কড়া অবস্থান এবং সম্ভাব্য সামরিক হস্তক্ষেপের ইঙ্গিত এই সংকটকে আরও গভীর করেছে। এই প্রেক্ষাপটে ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট লুইজ ইনাসিয়ো লুলা দা সিলভা ভেনেজুয়েলায় মার্কিন সামরিক হস্তক্ষেপ মানবিক বিপর্যয় ডেকে আনবে বলে সতর্ক করেছেন। তাঁর মতে, এই সতর্কতা শুধু ভেনেজুয়েলাকে ঘিরে নয়—পুরো দক্ষিণ আমেরিকার ভবিষ্যৎ নিরাপত্তার প্রশ্নও তুলে ধরছে।
ভেনেজুয়েলার সংকটের মূল কারণ দেশটির দীর্ঘস্থায়ী রাজনৈতিক অস্থিরতা, বিতর্কিত নির্বাচন, অর্থনৈতিক অব্যবস্থাপনা এবং মানবাধিকার পরিস্থিতি। প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরোর সরকারকে যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপের একটি অংশ কর্তৃত্ববাদী ও অগণতান্ত্রিক বলে মনে করে। এর জবাবে ওয়াশিংটন একের পর এক নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে। এসব নিষেধাজ্ঞার মূল লক্ষ্য ভেনেজুয়েলার তেল রপ্তানি, যা দেশটির আয়ের প্রধান উৎস।
ভেনেজুয়েলা বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ তেল মজুতের অধিকারী। ফলে তাদের তেল শুধু অর্থনীতি নয়, কূটনীতিরও কেন্দ্রে অবস্থান করছে। যুক্তরাষ্ট্র মনে করে, ভেনেজুয়েলার তেল বিক্রির পথ বন্ধ করতে পারলে মাদুরো সরকার দুর্বল হবে। এই লক্ষ্যেই সাম্প্রতিক সময়ে দেশটির নিষেধাজ্ঞাভুক্ত তেল ট্যাংকারগুলোকে অবরোধের মতো কঠোর পদক্ষেপ নিয়েছে মার্কিন বাহিনী। তবে এই পদক্ষেপকে সরাসরি যুদ্ধের দিকে ঠেলে দেওয়ার ঝুঁকি হিসেবে দেখছেন দক্ষিণ আমেরিকার অনেক নেতা।
ব্রাজিল ও মেক্সিকোর মতো লাতিন শক্তিগুলো এই কারণেই যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক হস্তক্ষেপের সম্ভাবনার বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে। ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট লুলা স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন, দক্ষিণ আমেরিকার ইতিহাস বহিঃশক্তির সামরিক হস্তক্ষেপের তিক্ত অভিজ্ঞতায় ভরা। ফকল্যান্ড যুদ্ধের চার দশক পর আবারও কোনো অন্য মহাদেশীয় শক্তির সামরিক উপস্থিতি এই মহাদেশকে অস্থিতিশীল করে তুলতে পারে—এমন আশঙ্কাই তিনি প্রকাশ করেছেন।
এদিকে রাশিয়া ও চীন ভেনেজুয়েলার সরকারের প্রতি সমর্থন দিয়ে যাচ্ছে। রাশিয়ার ক্ষেত্রে এটি যুক্তরাষ্ট্রের প্রভাব মোকাবিলার কৌশল, আর চীনের জন্য এটি তেল ও ঋণনির্ভর অর্থনৈতিক স্বার্থের প্রশ্ন। ফলে ভেনেজুয়েলা ক্রমেই যুক্তরাষ্ট্র বনাম রাশিয়া–চীন প্রভাব বিস্তারের আরেকটি ময়দানে পরিণত হচ্ছে।
‘মার্কোসুর’ সম্মেলনে লাতিন আমেরিকার দেশগুলো যে যৌথ অবস্থান নিয়েছে, তা এই বাস্তবতাকেই প্রতিফলিত করে। তারা ভেনেজুয়েলায় গণতন্ত্র ও মানবাধিকার রক্ষার কথা বলেছে, তবে স্পষ্টভাবে সামরিক পথ প্রত্যাখ্যান করেছে। তাদের মতে, সংকটের সমাধান হতে পারে কেবল সংলাপ ও শান্তিপূর্ণ কূটনীতির মাধ্যমে।
সব মিলিয়ে ভেনেজুয়েলার সংকট এখন আর একটি দেশের অভ্যন্তরীণ সমস্যা নয়। তেল, আদর্শিক দ্বন্দ্ব, আঞ্চলিক নিরাপত্তা ও বৈশ্বিক ক্ষমতার লড়াই—সবকিছু মিলিয়ে এটি আন্তর্জাতিক রাজনীতির এক স্পর্শকাতর সংঘাতক্ষেত্রে পরিণত হয়েছে।

ভেনেজুয়েলার চলমান রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক সংকট ধীরে ধীরে একটি আঞ্চলিক সমস্যা থেকে বৈশ্বিক ভূ-রাজনৈতিক উত্তেজনায় রূপ নিচ্ছে। সাম্প্রতিক সময়ে যুক্তরাষ্ট্রের কড়া অবস্থান এবং সম্ভাব্য সামরিক হস্তক্ষেপের ইঙ্গিত এই সংকটকে আরও গভীর করেছে। এই প্রেক্ষাপটে ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট লুইজ ইনাসিয়ো লুলা দা সিলভা ভেনেজুয়েলায় মার্কিন সামরিক হস্তক্ষেপ মানবিক বিপর্যয় ডেকে আনবে বলে সতর্ক করেছেন। তাঁর মতে, এই সতর্কতা শুধু ভেনেজুয়েলাকে ঘিরে নয়—পুরো দক্ষিণ আমেরিকার ভবিষ্যৎ নিরাপত্তার প্রশ্নও তুলে ধরছে।
ভেনেজুয়েলার সংকটের মূল কারণ দেশটির দীর্ঘস্থায়ী রাজনৈতিক অস্থিরতা, বিতর্কিত নির্বাচন, অর্থনৈতিক অব্যবস্থাপনা এবং মানবাধিকার পরিস্থিতি। প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরোর সরকারকে যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপের একটি অংশ কর্তৃত্ববাদী ও অগণতান্ত্রিক বলে মনে করে। এর জবাবে ওয়াশিংটন একের পর এক নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে। এসব নিষেধাজ্ঞার মূল লক্ষ্য ভেনেজুয়েলার তেল রপ্তানি, যা দেশটির আয়ের প্রধান উৎস।
ভেনেজুয়েলা বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ তেল মজুতের অধিকারী। ফলে তাদের তেল শুধু অর্থনীতি নয়, কূটনীতিরও কেন্দ্রে অবস্থান করছে। যুক্তরাষ্ট্র মনে করে, ভেনেজুয়েলার তেল বিক্রির পথ বন্ধ করতে পারলে মাদুরো সরকার দুর্বল হবে। এই লক্ষ্যেই সাম্প্রতিক সময়ে দেশটির নিষেধাজ্ঞাভুক্ত তেল ট্যাংকারগুলোকে অবরোধের মতো কঠোর পদক্ষেপ নিয়েছে মার্কিন বাহিনী। তবে এই পদক্ষেপকে সরাসরি যুদ্ধের দিকে ঠেলে দেওয়ার ঝুঁকি হিসেবে দেখছেন দক্ষিণ আমেরিকার অনেক নেতা।
ব্রাজিল ও মেক্সিকোর মতো লাতিন শক্তিগুলো এই কারণেই যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক হস্তক্ষেপের সম্ভাবনার বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে। ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট লুলা স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন, দক্ষিণ আমেরিকার ইতিহাস বহিঃশক্তির সামরিক হস্তক্ষেপের তিক্ত অভিজ্ঞতায় ভরা। ফকল্যান্ড যুদ্ধের চার দশক পর আবারও কোনো অন্য মহাদেশীয় শক্তির সামরিক উপস্থিতি এই মহাদেশকে অস্থিতিশীল করে তুলতে পারে—এমন আশঙ্কাই তিনি প্রকাশ করেছেন।
এদিকে রাশিয়া ও চীন ভেনেজুয়েলার সরকারের প্রতি সমর্থন দিয়ে যাচ্ছে। রাশিয়ার ক্ষেত্রে এটি যুক্তরাষ্ট্রের প্রভাব মোকাবিলার কৌশল, আর চীনের জন্য এটি তেল ও ঋণনির্ভর অর্থনৈতিক স্বার্থের প্রশ্ন। ফলে ভেনেজুয়েলা ক্রমেই যুক্তরাষ্ট্র বনাম রাশিয়া–চীন প্রভাব বিস্তারের আরেকটি ময়দানে পরিণত হচ্ছে।
‘মার্কোসুর’ সম্মেলনে লাতিন আমেরিকার দেশগুলো যে যৌথ অবস্থান নিয়েছে, তা এই বাস্তবতাকেই প্রতিফলিত করে। তারা ভেনেজুয়েলায় গণতন্ত্র ও মানবাধিকার রক্ষার কথা বলেছে, তবে স্পষ্টভাবে সামরিক পথ প্রত্যাখ্যান করেছে। তাদের মতে, সংকটের সমাধান হতে পারে কেবল সংলাপ ও শান্তিপূর্ণ কূটনীতির মাধ্যমে।
সব মিলিয়ে ভেনেজুয়েলার সংকট এখন আর একটি দেশের অভ্যন্তরীণ সমস্যা নয়। তেল, আদর্শিক দ্বন্দ্ব, আঞ্চলিক নিরাপত্তা ও বৈশ্বিক ক্ষমতার লড়াই—সবকিছু মিলিয়ে এটি আন্তর্জাতিক রাজনীতির এক স্পর্শকাতর সংঘাতক্ষেত্রে পরিণত হয়েছে।

বাংলাদেশ, ভিয়েতনাম ও কম্বোডিয়ার মতো ছোট দেশগুলোকে অর্থনৈতিক সমন্বয়ে জোর দিতে দেখা যাচ্ছে। অর্থনৈতিক সমন্বয় বলতে যুক্তরাষ্ট্রের পাল্টা শুল্কের প্রভাব মোকাবিলায় অর্থনীতিতে পরিবর্তন বা সমন্বয় আনার চেষ্টাকে বোঝানো হচ্ছে।
০৮ এপ্রিল ২০২৫
গত ২৬ ডিসেম্বর বিশ্বের প্রথম জাতিসংঘ সদস্য দেশ হিসেবে সোমালিল্যান্ডকে একটি সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি দিয়েছে ইসরায়েল। প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু এই সিদ্ধান্তকে ‘আব্রাহাম অ্যাকর্ডস’-এর একটি সাহসী সম্প্রসারণ হিসেবে বর্ণনা করেছেন।
২ দিন আগে
মধ্যপ্রাচ্যের মূল ভূখণ্ড হারানোর পর আইএস এখন মূলত স্বায়ত্তশাসিত বিভিন্ন সেলের মাধ্যমে কার্যক্রম পরিচালনা করছে। বর্তমানে নাইজেরিয়া, সোমালিয়া, কঙ্গো এবং সাহেল অঞ্চলে আইএস অত্যন্ত শক্তিশালী। নাইজেরিয়ার উত্তর-পূর্বাঞ্চলে ‘আইএসডব্লিউএপি’ এবং উত্তর-পশ্চিমে বিভিন্ন অনুসারী গোষ্ঠী সক্রিয় রয়েছে।
৩ দিন আগে
নাইজেরিয়া আনুষ্ঠানিকভাবে একটি ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্র। দেশটির জনসংখ্যার প্রায় ৫৩ শতাংশ মুসলমান, ৪৫ শতাংশ খ্রিষ্টান এবং অন্যরা আফ্রিকার ঐতিহ্যগত কিছু ধর্মে বিশ্বাসী। খ্রিষ্টানদের ওপর সহিংসতা আন্তর্জাতিক অঙ্গনে ব্যাপক মনোযোগ পেলেও বহু বিশ্লেষকের মতে, বিষয়টি কেবল ধর্মীয় নিপীড়নের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়, এর পেছন
৩ দিন আগে