লেটিসিয়া ভ্যান ডেন অসসাম

বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার রোহিঙ্গা বিষয়ে আন্তর্জাতিক সম্মেলনের আয়োজনের জন্য সফলভাবেই লবিং করেছে। তবে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া এগিয়ে নিতে হলে বাংলাদেশকে আরাকান আর্মির উত্থান বিবেচনায় নিতে হবে।
গত আগস্টের গণঅভ্যুত্থানে পূর্বতন সরকার ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর থেকে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে আন্তর্জাতিক সমর্থন সংগ্রহের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। নতুন প্রশাসনের প্রধান হিসেবে এক বক্তৃতায় ড. মুহাম্মদ ইউনূস রোহিঙ্গা শরণার্থীদের সহায়তা এবং তাদের মিয়ানমারে ফিরে যাওয়ার বিষয়ে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে ‘টেকসই প্রচেষ্টা’ চালানোর আহ্বান জানান।
নভেম্বরে তাঁর সরকারের দৃঢ় লবিংয়ের ফলে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদ একটি প্রস্তাব গ্রহণ করে, যেখানে আগামী বছর (২০২৫ সালে) একটি ‘উচ্চপর্যায়ের সম্মেলন’ আয়োজনের আহ্বান জানানো হয়।
প্রস্তাবে বলা হয়, সম্মেলনটি ‘সমস্যাটির টেকসই সমাধানে বিস্তৃত, উদ্ভাবনী, নির্দিষ্ট ও সময়সীমাবদ্ধ পরিকল্পনা প্রণয়ন করবে, যাতে রোহিঙ্গা মুসলিমদের স্বেচ্ছায়, নিরাপদে ও মর্যাদাপূর্ণভাবে মিয়ানমারে প্রত্যাবর্তন অন্তর্ভুক্ত থাকে।’
বাংলাদেশ ও কাতারকে সম্ভাব্য ভেন্যু হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে এবং বাংলাদেশ সরকার বলেছে, তারা আশা করে— এই সম্মেলন সেপ্টেম্বর বা অক্টোবর মাসে অনুষ্ঠিত হবে এবং এপ্রিলের মধ্যে সব প্রস্তুতি চূড়ান্ত করা হবে।
বাংলাদেশ ১৯৭০-এর দশক থেকে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের যে বোঝা বহন করছে, তার প্রেক্ষিতে দ্রুত এবং কার্যকর প্রত্যাবাসনের দাবি খুবই বোধগম্য। জাতিসংঘের প্রস্তাবটি রোহিঙ্গা সংকটকে বৈশ্বিক অগ্রাধিকারের মধ্যে রাখার জন্য দারুণ উদ্যোগ। এটি আরও উল্লেখযোগ্য এই কারণে যে, বর্তমানে সংকট নিয়ে কোনো বিশ্বাসযোগ্য আন্তর্জাতিক সংলাপ নেই। তবে, মিয়ানমারের পরিবর্তনশীল রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে সংলাপ আয়োজন সহজ কাজ হবে না। ২০২৩ সালের নভেম্বর থেকে আরাকান আর্মি রাখাইন রাজ্যের—যা আরাকান নামেও পরিচিত—একটি বড় অংশ মিয়ানমারের সামরিক জান্তার কাছ থেকে দখলে নিয়েছে। এই অঞ্চলেরই বেশিরভাগ রোহিঙ্গা বাংলাদেশে পালিয়ে এসেছে।
গত এক দশকে আরাকান আর্মির উত্থান শেখ হাসিনার নেতৃত্বে পূর্ববর্তী বাংলাদেশ সরকার অনেকটাই উপেক্ষা করেছিল। তবে এক ইতিবাচক পদক্ষেপ হিসেবে, বাংলাদেশের জনসমক্ষে এই বিষয়ে ক্রমশ আলোচনা শুরু হয়েছে, যা হাসিনার শাসনামলে প্রায় নিষিদ্ধ ছিল। বিশেষ করে আরাকান আর্মির সঙ্গে সংলাপের সম্ভাবনা এখন বেশ জোরেশোরেই আলোচিত হচ্ছে। অন্তর্বর্তী সরকার নাকি এই গ্রুপের সঙ্গে আধা-আনুষ্ঠানিক যোগাযোগ স্থাপনের উপায় বিবেচনা করছে। আরেকটি উদাহরণ হলো— দুই অভিজ্ঞ কূটনীতিক বাংলাদেশের সাবেক পররাষ্ট্রসচিব শাহিদুল হক এবং মিয়ানমারের সাবেক রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ সুফিউর রহমান বাংলাদেশের রোহিঙ্গা নীতির পুনর্বিবেচনা এবং নির্দিষ্ট পরামর্শ প্রস্তাব করেছেন।
আগামী বছরের রোহিঙ্গা সম্মেলনের আয়োজকদের তাৎক্ষণিকভাবে দুটি প্রশ্নের মুখোমুখি হতে হবে। প্রথমত, কীভাবে সম্মেলনের পরিধি নির্ধারণ করা হবে? দ্বিতীয়ত, কীভাবে রোহিঙ্গা পরিস্থিতির প্রকৃত কর্তৃপক্ষের দৃষ্টিভঙ্গি প্রতিফলিত হবে?
রোহিঙ্গা সংকটে অতিরিক্ত আন্তর্জাতিক সমর্থন পেতে হলে এর বিস্তৃত গুরুত্ব তুলে ধরতে হবে। অনেক সময় রোহিঙ্গা সংকটকে মিয়ানমার ও বাংলাদেশের একটি দ্বিপক্ষীয় সমস্যা হিসেবে দেখা হয়।
‘বিহাইন্ড দ্য ওয়্যার’— শিরোনামে ডক্টরস উইদাউট বর্ডারসের সাম্প্রতিক এক প্রতিবেদনে, বিশ্বব্যাপী ২৮ লাখ রোহিঙ্গা আছে, যার মধ্যে মাত্র ২৩ শতাংশ মিয়ানমারে অবস্থান করছে। এই বিষয়টি নির্যাতন ও বৈষম্যের কারণে দীর্ঘদিন ধরে চলে আসা নির্মম বাস্তবতার এক উজ্জ্বল উদাহরণ। মিয়ানমার ছাড়াও যেসব দেশে রোহিঙ্গাদের বৃহৎ জনগোষ্ঠী রয়েছে—তার মধ্যে বাংলাদেশে আছে প্রায় ১১ লাখ, পাকিস্তানে ৪ লাখ, সৌদি আরবে ৩ লাখ ৪০ হাজার এবং মালয়েশিয়ায় ২ লাখ ১০ হাজার।
রোহিঙ্গাদের পরিস্থিতি বিভিন্ন দেশে বিভিন্ন রকম। উদাহরণস্বরূপ—সৌদি আরব এবং পাকিস্তানে বেশির ভাগ রোহিঙ্গা কয়েক দশক আগে পাড়ি জমিয়েছে এবং তাদের সন্তানেরা কখনোই নিজভূমি দেখেনি। ডক্টরস উইদাউট বর্ডারস দেখেছে যে, গত পাঁচ বছরে পালিয়ে আসা ৭৬ শতাংশ রোহিঙ্গা মিয়ানমারে ফিরে যেতে চেয়েছে। কিন্তু যারা ২০ বছরের বেশি সময় ধরে প্রবাসে রয়েছে তাদের মধ্যে এই ইচ্ছা মাত্র ২৮ শতাংশ। এটি ইঙ্গিত দেয় যে, সমাধানগুলো বাস্তবতার প্রেক্ষাপটে হওয়া উচিত এবং ২০১৮ সালের গ্লোবাল কমপ্যাক্ট অন রিফিউজির যেসব লক্ষ্য আছে সেগুলোর আলোকে পরিচালিত হওয়া উচিত।
এর মধ্যে রয়েছে— আশ্রয়দাতা দেশগুলোর ওপর চাপ কমানো, শরণার্থীদের স্বনির্ভরতা বৃদ্ধি, তৃতীয় দেশের সমাধানের সুযোগ সম্প্রসারণ এবং নিরাপত্তা ও মর্যাদার সঙ্গে প্রত্যাবাসনের জন্য মাতৃভূমিতে অবস্থার উন্নয়ন।
বাংলাদেশে রোহিঙ্গাদের সংখ্যা এবং ২০১৬-১৭ সালে তাদের মিয়ানমার ছাড়ার বাস্তবতা বিবেচনায় নিয়ে রোহিঙ্গা সংকটের প্রাথমিক সমাধান হিসেবে ঢাকা রাখাইনে প্রত্যাবাসনের ওপর ফোকাস করাটাই যুক্তিযুক্ত। শরণার্থী প্রত্যাবাসন শুরু করার জন্য ঢাকার নতুন করে উদ্যোগ নেওয়াও বোধগম্য। কিন্তু অভিজ্ঞতা বলছে, দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার চাপ ১৯৭০ এর দশক থেকে দেখা ‘রিভলভিং ডোর’ ঘটনার পুনরাবৃত্তি করতে পারে। যেখানে মিয়ানমার থেকে পালিয়ে আসার পর বাংলাদেশ থেকে ফিরে গেলেও আবার একই চক্র শুরু হয়েছে। যদি রোহিঙ্গা সংকটের মূলে থাকা কারণগুলো সমাধান করা না হয়, তাহলে প্রয়োজনীয় অগ্রগতি ও স্থিতিশীলতা অধরাই থেকে যাবে এবং পুরো অঞ্চলের জন্য এর প্রভাব বাড়তে থাকবে।
জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের রেজুলেশন এবং বিতর্ক রাষ্ট্রকেন্দ্রিক ঐতিহ্যবাহী দৃষ্টিভঙ্গি প্রতিফলিত করে। এই দৃষ্টিভঙ্গিতে ধরেই নেওয়া হয় যে, মিয়ানমারে একটি কেন্দ্রীয় সরকার তার সব রাষ্ট্রের সব উপাদানেই রাজনৈতিক নিয়ন্ত্রণ বজায় রাখতে ও পরিচালনা করতে পারে। ‘মিয়ানমার’ শব্দটি একাধিকবার উল্লেখ করা হলেও এটি কেবল সামরিক সরকারের প্রতি ইঙ্গিত করে। তবে জান্তা সরকার দেশের অনেকাংশেরই নিয়ন্ত্রণ হারিয়েছে। রাখাইনে তাদের কর্তৃত্ব প্রায় নেই বললেই চলে। সাম্প্রতিক বড় পরাজয়ের পর, তাদের ক্ষমতা সীমিত হয়ে রয়েছে কেবল রাজ্যের রাজধানী সিতওয়ে, মুনাউং দ্বীপ এবং কায়াকপায়ু ও গওয়া টাউনশিপের কিছু ছোট অংশে এবং এসব এলাকাতেও নিয়ন্ত্রণ হারানোর আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
তবে, আরাকান আর্মি বড় শক্তি হিসেবে আবির্ভূত হওয়ার আগেই এই রাষ্ট্রকেন্দ্রিক দৃষ্টিভঙ্গি ব্যর্থ হয়েছিল। ২০১৭ সালের পর থেকে চীন মিয়ানমারের কর্তৃপক্ষ এবং বাংলাদেশের মধ্যে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন শুরুর জন্য কয়েকবার মধ্যস্থতা করার চেষ্টা করেছিল, কিন্তু তা ব্যর্থ হয় মূলত রোহিঙ্গা এবং রাখাইন— যারা রাজ্যের সংখ্যাগরিষ্ঠ জনগোষ্ঠী— তাদের বাদ দেওয়ার কারণে।
২০২১ সালের সামরিক অভ্যুত্থানের পর প্রত্যাবাসন পুনরায় শুরুর চেষ্টা আরও কম সফল হয়। যদি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় আরাকান আর্মির বাস্তবিক অঞ্চল নিয়ন্ত্রণ স্বীকার না করে, তাহলে প্রত্যাবাসন এবং রোহিঙ্গাদের সঙ্গে সম্পর্কিত অন্যান্য জরুরি বিষয়ে অগ্রগতি কল্পনাতীত থেকে যাবে।
রোহিঙ্গা সম্মেলন আয়োজকদের জন্য এর অর্থ হচ্ছে আরাকান আর্মির সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপন করা। তবে বাংলাদেশ এখনো স্পষ্টতই একটি অ-রাষ্ট্রীয় সংগঠনের সঙ্গে সম্পৃক্ত হওয়া নিয়ে কিছুটা দ্বিধাগ্রস্ত, এমনকি আরাকান আর্মি বাস্তবিকভাবে রাখাইনের নিয়ন্ত্রক হওয়ার পরও।
একটি পক্ষ হিসেবে আরাকান আর্মিকে পূর্ণ স্বীকৃতি দেওয়ার বিষয়টা কিছুটা দূরের হলেও উভয় পক্ষের জন্য পারস্পরিক স্বার্থসংশ্লিষ্ট ক্ষেত্রে সহযোগিতা করা লাভজনক। এর মধ্যে অন্তর্ভুক্ত হতে পারে—রাখাইনে মানবিক সাহায্য পৌঁছানোর জন্য একটি মানবিক করিডর প্রতিষ্ঠা, সীমান্ত অপরাধ মোকাবিলা এবং দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য পুনরায় শুরু করা। এ ক্ষেত্রে ঢাকা মিয়ানমারের অন্যান্য প্রতিবেশী বিশেষত চীন এবং থাইল্যান্ডের অ-রাষ্ট্রীয় গোষ্ঠীগুলো তাদের নিজ নিজ সীমান্তসংলগ্ন এলাকায় স্থানীয় বিদ্রোহীদের সঙ্গে কীভাবে যোগাযোগ করে তা থেকে শিক্ষা নিতে পারে।
রাখাইনে পুরোনো জান্তা শাসনব্যবস্থার জায়গায় কী ধরনের রাষ্ট্রব্যবস্থা গড়ে উঠবে— তা এখনো পরিষ্কার নয়। আরাকান আর্মির নেতৃত্ব স্পষ্টভাবে জানিয়ে দিয়েছে, তারা মিয়ানমারের রাজধানী নেপিদোতে ক্ষমতার কেন্দ্রীকরণের সাম্প্রতিক রাজনৈতিক অবস্থানকে মানে না। মাঝে মাঝে তারা একটি ফেডারেল বা সংযুক্ত রাষ্ট্র কাঠামোর প্রস্তাব দিয়েছে, তবে অন্যান্য বিকল্পগুলোকেও বাদ দেয়নি। গত কয়েক বছর ধরে রাখাইনের কিছু অংশে প্রশাসনিক ও বিচারিক সেবা চালিয়ে আসছে আরাকান আর্মির বেসামরিক শাখা ইউনাইটেড লীগ অব আরাকান এবং আরও বেসামরিক কর্মীকে প্রশিক্ষণ দেওয়া শুরু করেছে। তবে এটি বৃহত্তর স্বায়ত্তশাসন গড়ে তোলার জন্য কেবল যাত্রা মাত্র।
গত বছরটি রাখাইনের জন্য উদ্বেগজনক ছিল। যদিও আরাকান আর্মি প্রায় পুরো রাজ্যকে জান্তা সরকারের হাত থেকে মুক্ত করেছে। কিন্তু দুটি ঘটনা তাদের সামরিক সাফল্যে কালিমা লেপন করেছে। ২০২৩ সালের নভেম্বর থেকে শুরু হওয়া সর্বশেষ সংঘর্ষ রাখাইনকে মানবিক ও অর্থনৈতিক বিপর্যয়ের কিনারায় ঠেলে দিয়েছে। মিয়ানমারের সেনাবাহিনী রাজ্যটিতে অবরোধ কঠোর করেছে। ফলে প্রয়োজনীয় পণ্য প্রবেশে বাধা সৃষ্টি হয়েছে। মৌলিক পণ্যের দাম আকাশচুম্বী হয়ে উঠেছে। এমনকি আরাকান আর্মি নিয়ন্ত্রিত এলাকায় এমনকি মুদ্রা সংকট দেখা দিয়েছে। জাতিসংঘ উন্নয়ন কর্মসূচি (ইউএনডিপি) ও অন্যান্য সংস্থাগুলো গুরুতর খাদ্য সংকট এবং এমনকি দুর্ভিক্ষের মতো পরিস্থিতির আশঙ্কা প্রকাশ করেছে।
এছাড়া এই সংঘাত সাম্প্রদায়িক সম্পর্ককে ক্ষতিগ্রস্ত করেছে। জান্তাবাহিনী যুদ্ধে পরাজিত হতে থাকলেও তারা ‘ডিভাইড অ্যান্ড রুল’ তথা বিভাজনের মাধ্যমে শাসনের কৌশল ব্যবহার করে রোহিঙ্গাদের বড় অংশকে আরাকান আর্মির বিরুদ্ধে উসকে দিয়ে বড় সাফল্য অর্জন করেছে। তাঁরা সরাসরি রোহিঙ্গাদের যোদ্ধা নিয়োগ দিয়েছে এবং রোহিঙ্গা সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোর সঙ্গে সহযোগিতা করেছে। এসব গোষ্ঠীর মধ্যে রোহিঙ্গা সলিডারিটি অর্গানাইজেশন (আরএসও) এবং আরাকান রোহিঙ্গা স্যালভেশন আর্মি (এআরএসএ) অন্যতম। ২০২৪ সালের এপ্রিলে থেকে সব পক্ষই বেসামরিক নাগরিকদের বিরুদ্ধে মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগে অভিযুক্ত হয়েছে, যা উত্তেজনাকে আরও বাড়িয়ে তুলেছে।
সাম্প্রদায়িক সম্পর্কের এই অবনতি ২০২২ এবং ২০২৩ সালের পরিস্থিতির যে উন্নয়ন হয়েছিল, সেটির ওপর একটি বড় ধাক্কা। সে সময় রাখাইনে বিশেষ করে মধ্য রাখাইন অঞ্চলে রাখাইন ও রোহিঙ্গাদের পাশাপাশি বসবাসের জন্য আরও বেশি প্রস্তুত বলে মনে হয়েছিল। অপ্রাতিষ্ঠানিক বাণিজ্য ধীরে ধীরে শুরু হচ্ছিল এবং সেবার সুযোগও বাড়ছিল। ২০২২ সালে রোহিঙ্গা শিক্ষার্থীরা ২০১২ সালের পর প্রথমবারের মতো সিতওয়ে ইউনিভার্সিটিতে ভর্তি হওয়ার সুযোগ পায়।
বাংলাদেশে অবস্থানরত রোহিঙ্গারাও সাম্প্রতিক সংঘর্ষ থেকে রেহাই পায়নি। কক্সবাজারে অবস্থিত আশ্রয়শিবিরগুলোতে রোহিঙ্গা সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলো অনেক তরুণকে জোরপূর্বক নিয়োগ দিয়েছে। বিভিন্ন প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, তাঁদের মিয়ানমারের ভেতরে নিয়ে যাওয়া হয়েছে এবং জান্তাবাহিনীর পক্ষে যুদ্ধে লড়তে বাধ্য করা হয়েছে।
সম্প্রতি রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ৩ থেকে ৫ হাজার রোহিঙ্গা যোদ্ধাকে অপহরণ বা মিথ্যা প্রতিশ্রুতির মাধ্যমে নিয়োগ করা হয়েছে। এ ক্ষেত্রে রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারের নাগরিকত্বের নথি দেওয়ার মিথ্যা আশ্বাস দেওয়া হয়।
২০২৪ সালের ডিসেম্বরে কয়েক মাসের তীব্র সংঘর্ষের পর আরাকান আর্মি বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী মংডু টাউনশিপে জান্তাবাহিনীর সর্বশেষ আউটপোস্ট দখল করে। এতে শত শত যুদ্ধবন্দি— যার মধ্যে অনেক রোহিঙ্গা যোদ্ধাও অন্তর্ভুক্ত— তাদের হাতে পড়ে। আরাকান আর্মি বলছে, তারা ভবিষ্যতে সব সম্প্রদায়কে অন্তর্ভুক্ত করতে চায়। তবে তারা জান্তাবাহিনীর পক্ষে লড়াই করা রোহিঙ্গাদের প্রতি নিন্দা জানিয়েছে।
আরাকান আর্মিকে রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের সঙ্গে সম্পর্ক কীভাবে পুনরায় স্থাপন করা যায়— তা সতর্কতার সঙ্গে বিবেচনা করতে হবে। পদক্ষেপ হিসেবে তারা হয়তো এপ্রিল-মে মাসে বুথিডং টাউনশিপে সংঘটিত গণ-সহিংসতার বিতর্কিত পরিস্থিতি নিয়ে স্বাধীন তদন্ত কমিশন গঠনের কথা ভাবতে পারে। এছাড়া সহিংসতায় ক্ষতিগ্রস্ত রোহিঙ্গাদের তাঁদের বাড়িতে ফিরে যাওয়ার অনুমতি দিতে পারে। তাঁদের বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত বা ধ্বংস হয়ে থাকলে তা মেরামত বা পুনর্নির্মাণে সহায়তা প্রদান করতে পারে এবং আস্থা পুনরুদ্ধারের বাস্তবসম্মত উপায় হতে পারে।
আরাকান আর্মিকে বাংলাদেশর সঙ্গে সম্পর্ক উন্নত করার উপায় নিয়েও ভাবতে হবে। কক্সবাজারে আশ্রয়শিবির থেকে কয়েক হাজার রোহিঙ্গাকে যোদ্ধা হিসেবে নিয়োগ এবং তাদের মিয়ানমারে সীমান্ত পার করে রণক্ষেত্রে পাঠানোর বিষয়টি আরাকান আর্মিকে ক্ষুব্ধ করেছে। বাংলাদেশিসহ অনেক পর্যবেক্ষকই বিশ্বাস করতে চান না যে, এটি উচ্চপদস্থ বাংলাদেশি কর্মকর্তাদের অজ্ঞাতে ঘটেছে।
রাখাইনকে যুদ্ধের ধ্বংসাবশেষ থেকে পুনর্গঠন করা বড় চ্যালেঞ্জ। এটি এমন এক চ্যালেঞ্জ, যার দ্রুত কোনো সমাধান নেই। এটি আগে থেকেই মিয়ানমারের সবচেয়ে দরিদ্র রাজ্যগুলোর একটি ছিল। উন্নয়নবঞ্চিত, আন্তঃসম্প্রদায়িক সংঘর্ষ এবং বঞ্চনার শিকার এই রাজ্যে দারিদ্র্য, সুযোগের অভাব এবং বাস্তুচ্যুতির কারণে এখানকার সব সম্প্রদায়কেই আঘাত করেছে। ২০১৮ সালের শেষের দিকে যখন জান্তাবাহিনী এবং আরাকান আর্মির মধ্যে সহিংসতা তীব্রতর হয়, তখন পরিস্থিতি আরও খারাপ হয়। রাখাইনে একটি ব্যাপক দীর্ঘমেয়াদি পুনরুদ্ধার পরিকল্পনা এবং রোডম্যাপের প্রয়োজন, যাতে সামনে থাকা ব্যাপক কর্মযজ্ঞ— যার মধ্যে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের স্বেচ্ছায়, নিরাপদ ও মর্যাদাপূর্ণ প্রত্যাবর্তন অন্তর্ভুক্ত— ভালোভাবে সম্পন্ন করা যায়।
সবচেয়ে জটিল চ্যালেঞ্জগুলোর একটি হলো রাজ্যের বৈচিত্র্যময় জাতিগত এবং ধর্মীয় সম্প্রদায়গুলোর একীকরণ শক্তিশালী করা। বিশেষ করে রাখাইন ও রোহিঙ্গাদের আস্থায় আনার বিষয়টি সবচেয়ে কঠিন কাজ। দুই পক্ষই একে অপরের প্রতি গভীর ভয় ও বিদ্বেষ পোষণ করেছে। কিছু রাখাইনের মতে, রোহিঙ্গাদের বড় একটি অংশ— যারা জান্তাবাহিনীর সঙ্গে মিলে আরাকান আর্মির বিরুদ্ধে যুদ্ধ করছে— তাঁদের এই ভয়কে আরও গভীর করেছে।
আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কেও ভূমিকা পালন করতে হবে। রাখাইনের বিভিন্ন সম্প্রদায় কী ধরনের সমস্যা বা জটিলতার মুখোমুখি হচ্ছে— এটি স্বীকার করতে হবে আগে। গত কয়েক দশকে রোহিঙ্গাদের ভোগান্তির খবর ব্যাপকভাবে ছড়িয়েছে। গত পাঁচ বছরে মিয়ানমারের জান্তাবাহিনী সব সম্প্রদায়কেই আরও বেশি অত্যাচার করতে শুরু করেছে— পেটানো, হত্যা করা এবং নির্যাতন করা, জীবন-জীবিকা ধ্বংস করা, ঘর, হাসপাতাল, স্কুল, বাজার ও উপাসনালয় পোড়ানো, মৌলিক পণ্যের পরিবহন বন্ধ করা এবং অত্যাবশ্যকীয় সেবা— যেমন বিদ্যুৎ, ব্যাংকিং এবং যোগাযোগ বন্ধ করা। এখন রাখাইন রাজ্যের সব মানুষই অবরুদ্ধ অবস্থার শিকার।
তাহলে, বিশ্ব সম্প্রদায় সংকটের জন্য অর্থপূর্ণ অবদান রাখতে চাইলে তবে তাঁদের কেবল রোহিঙ্গাদের দুর্দশা মোকাবিলা করেই নয়, রাখাইনের সব মানুষের জন্য একত্রে রাজ্য পুনর্গঠনেও সাহায্য করতে হবে। এই দৃষ্টিভঙ্গি ‘ট্রানজিশনাল জাস্টিস প্রোগ্রামের’ বা অন্তর্বর্তীকালীন ন্যায্যতা নিশ্চিত কর্মসূচির কেন্দ্রবিন্দু হওয়া উচিত। এর আওতায় প্রতিষ্ঠানিক সংস্কার, সত্য, ন্যায়, ক্ষতিপূরণ ও স্মৃতি সংরক্ষণকে গুরুত্ব দিতে হবে।
এতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় রাখাইন রাজ্য বিষয়ক পরামর্শক কমিশনের সুপারিশগুলোর সঙ্গে নিজেদের সংগতি রাখতে পারবে। ২০১৭ সালের আগস্টে জাতিসংঘ সাবেক মহাসচিব কফি আনানের সভাপতিত্বে রাখাইন রাজ্য বিষয়ক পরামর্শক কমিশন রাখাইনের উন্নয়ন, মানবাধিকার এবং নিরাপত্তা চ্যালেঞ্জগুলোর জন্য সমাধান প্রস্তাব করেছিল। এই প্রস্তাব সবার জন্য শান্তি, সমৃদ্ধি, নিরাপত্তা এবং মানবাধিকারের পথে একটি দিশা ছিল। তারপর যা কিছু ঘটেছে, তা সত্ত্বেও, অনেক সুপারিশ আজও প্রাসঙ্গিক। এখন রাখাইনের জনগণ ও তাঁদের নেতাদের ওপরই নির্ভর করছে যে, তারা কীভাবে এগুলোকে নতুন রাখাইন পরিকল্পনায় অন্তর্ভুক্ত করতে পারে।
লেখক: থাইল্যান্ডে নিযুক্ত ডাচ রাষ্ট্রদূত। তিনি ২০১৬ সাল থেকে রাখাইন রাজ্য বিষয়ক জাতিসংঘের পরামর্শক কমিশনের সদস্য হিসেবে কাজ করেছেন।
(মিয়ানমারের সংবাদমাধ্যম ফ্রন্টিয়ার মিয়ানমার থেকে অনুবাদ করেছেন আব্দুর রহমান)

বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার রোহিঙ্গা বিষয়ে আন্তর্জাতিক সম্মেলনের আয়োজনের জন্য সফলভাবেই লবিং করেছে। তবে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া এগিয়ে নিতে হলে বাংলাদেশকে আরাকান আর্মির উত্থান বিবেচনায় নিতে হবে।
গত আগস্টের গণঅভ্যুত্থানে পূর্বতন সরকার ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর থেকে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে আন্তর্জাতিক সমর্থন সংগ্রহের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। নতুন প্রশাসনের প্রধান হিসেবে এক বক্তৃতায় ড. মুহাম্মদ ইউনূস রোহিঙ্গা শরণার্থীদের সহায়তা এবং তাদের মিয়ানমারে ফিরে যাওয়ার বিষয়ে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে ‘টেকসই প্রচেষ্টা’ চালানোর আহ্বান জানান।
নভেম্বরে তাঁর সরকারের দৃঢ় লবিংয়ের ফলে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদ একটি প্রস্তাব গ্রহণ করে, যেখানে আগামী বছর (২০২৫ সালে) একটি ‘উচ্চপর্যায়ের সম্মেলন’ আয়োজনের আহ্বান জানানো হয়।
প্রস্তাবে বলা হয়, সম্মেলনটি ‘সমস্যাটির টেকসই সমাধানে বিস্তৃত, উদ্ভাবনী, নির্দিষ্ট ও সময়সীমাবদ্ধ পরিকল্পনা প্রণয়ন করবে, যাতে রোহিঙ্গা মুসলিমদের স্বেচ্ছায়, নিরাপদে ও মর্যাদাপূর্ণভাবে মিয়ানমারে প্রত্যাবর্তন অন্তর্ভুক্ত থাকে।’
বাংলাদেশ ও কাতারকে সম্ভাব্য ভেন্যু হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে এবং বাংলাদেশ সরকার বলেছে, তারা আশা করে— এই সম্মেলন সেপ্টেম্বর বা অক্টোবর মাসে অনুষ্ঠিত হবে এবং এপ্রিলের মধ্যে সব প্রস্তুতি চূড়ান্ত করা হবে।
বাংলাদেশ ১৯৭০-এর দশক থেকে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের যে বোঝা বহন করছে, তার প্রেক্ষিতে দ্রুত এবং কার্যকর প্রত্যাবাসনের দাবি খুবই বোধগম্য। জাতিসংঘের প্রস্তাবটি রোহিঙ্গা সংকটকে বৈশ্বিক অগ্রাধিকারের মধ্যে রাখার জন্য দারুণ উদ্যোগ। এটি আরও উল্লেখযোগ্য এই কারণে যে, বর্তমানে সংকট নিয়ে কোনো বিশ্বাসযোগ্য আন্তর্জাতিক সংলাপ নেই। তবে, মিয়ানমারের পরিবর্তনশীল রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে সংলাপ আয়োজন সহজ কাজ হবে না। ২০২৩ সালের নভেম্বর থেকে আরাকান আর্মি রাখাইন রাজ্যের—যা আরাকান নামেও পরিচিত—একটি বড় অংশ মিয়ানমারের সামরিক জান্তার কাছ থেকে দখলে নিয়েছে। এই অঞ্চলেরই বেশিরভাগ রোহিঙ্গা বাংলাদেশে পালিয়ে এসেছে।
গত এক দশকে আরাকান আর্মির উত্থান শেখ হাসিনার নেতৃত্বে পূর্ববর্তী বাংলাদেশ সরকার অনেকটাই উপেক্ষা করেছিল। তবে এক ইতিবাচক পদক্ষেপ হিসেবে, বাংলাদেশের জনসমক্ষে এই বিষয়ে ক্রমশ আলোচনা শুরু হয়েছে, যা হাসিনার শাসনামলে প্রায় নিষিদ্ধ ছিল। বিশেষ করে আরাকান আর্মির সঙ্গে সংলাপের সম্ভাবনা এখন বেশ জোরেশোরেই আলোচিত হচ্ছে। অন্তর্বর্তী সরকার নাকি এই গ্রুপের সঙ্গে আধা-আনুষ্ঠানিক যোগাযোগ স্থাপনের উপায় বিবেচনা করছে। আরেকটি উদাহরণ হলো— দুই অভিজ্ঞ কূটনীতিক বাংলাদেশের সাবেক পররাষ্ট্রসচিব শাহিদুল হক এবং মিয়ানমারের সাবেক রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ সুফিউর রহমান বাংলাদেশের রোহিঙ্গা নীতির পুনর্বিবেচনা এবং নির্দিষ্ট পরামর্শ প্রস্তাব করেছেন।
আগামী বছরের রোহিঙ্গা সম্মেলনের আয়োজকদের তাৎক্ষণিকভাবে দুটি প্রশ্নের মুখোমুখি হতে হবে। প্রথমত, কীভাবে সম্মেলনের পরিধি নির্ধারণ করা হবে? দ্বিতীয়ত, কীভাবে রোহিঙ্গা পরিস্থিতির প্রকৃত কর্তৃপক্ষের দৃষ্টিভঙ্গি প্রতিফলিত হবে?
রোহিঙ্গা সংকটে অতিরিক্ত আন্তর্জাতিক সমর্থন পেতে হলে এর বিস্তৃত গুরুত্ব তুলে ধরতে হবে। অনেক সময় রোহিঙ্গা সংকটকে মিয়ানমার ও বাংলাদেশের একটি দ্বিপক্ষীয় সমস্যা হিসেবে দেখা হয়।
‘বিহাইন্ড দ্য ওয়্যার’— শিরোনামে ডক্টরস উইদাউট বর্ডারসের সাম্প্রতিক এক প্রতিবেদনে, বিশ্বব্যাপী ২৮ লাখ রোহিঙ্গা আছে, যার মধ্যে মাত্র ২৩ শতাংশ মিয়ানমারে অবস্থান করছে। এই বিষয়টি নির্যাতন ও বৈষম্যের কারণে দীর্ঘদিন ধরে চলে আসা নির্মম বাস্তবতার এক উজ্জ্বল উদাহরণ। মিয়ানমার ছাড়াও যেসব দেশে রোহিঙ্গাদের বৃহৎ জনগোষ্ঠী রয়েছে—তার মধ্যে বাংলাদেশে আছে প্রায় ১১ লাখ, পাকিস্তানে ৪ লাখ, সৌদি আরবে ৩ লাখ ৪০ হাজার এবং মালয়েশিয়ায় ২ লাখ ১০ হাজার।
রোহিঙ্গাদের পরিস্থিতি বিভিন্ন দেশে বিভিন্ন রকম। উদাহরণস্বরূপ—সৌদি আরব এবং পাকিস্তানে বেশির ভাগ রোহিঙ্গা কয়েক দশক আগে পাড়ি জমিয়েছে এবং তাদের সন্তানেরা কখনোই নিজভূমি দেখেনি। ডক্টরস উইদাউট বর্ডারস দেখেছে যে, গত পাঁচ বছরে পালিয়ে আসা ৭৬ শতাংশ রোহিঙ্গা মিয়ানমারে ফিরে যেতে চেয়েছে। কিন্তু যারা ২০ বছরের বেশি সময় ধরে প্রবাসে রয়েছে তাদের মধ্যে এই ইচ্ছা মাত্র ২৮ শতাংশ। এটি ইঙ্গিত দেয় যে, সমাধানগুলো বাস্তবতার প্রেক্ষাপটে হওয়া উচিত এবং ২০১৮ সালের গ্লোবাল কমপ্যাক্ট অন রিফিউজির যেসব লক্ষ্য আছে সেগুলোর আলোকে পরিচালিত হওয়া উচিত।
এর মধ্যে রয়েছে— আশ্রয়দাতা দেশগুলোর ওপর চাপ কমানো, শরণার্থীদের স্বনির্ভরতা বৃদ্ধি, তৃতীয় দেশের সমাধানের সুযোগ সম্প্রসারণ এবং নিরাপত্তা ও মর্যাদার সঙ্গে প্রত্যাবাসনের জন্য মাতৃভূমিতে অবস্থার উন্নয়ন।
বাংলাদেশে রোহিঙ্গাদের সংখ্যা এবং ২০১৬-১৭ সালে তাদের মিয়ানমার ছাড়ার বাস্তবতা বিবেচনায় নিয়ে রোহিঙ্গা সংকটের প্রাথমিক সমাধান হিসেবে ঢাকা রাখাইনে প্রত্যাবাসনের ওপর ফোকাস করাটাই যুক্তিযুক্ত। শরণার্থী প্রত্যাবাসন শুরু করার জন্য ঢাকার নতুন করে উদ্যোগ নেওয়াও বোধগম্য। কিন্তু অভিজ্ঞতা বলছে, দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার চাপ ১৯৭০ এর দশক থেকে দেখা ‘রিভলভিং ডোর’ ঘটনার পুনরাবৃত্তি করতে পারে। যেখানে মিয়ানমার থেকে পালিয়ে আসার পর বাংলাদেশ থেকে ফিরে গেলেও আবার একই চক্র শুরু হয়েছে। যদি রোহিঙ্গা সংকটের মূলে থাকা কারণগুলো সমাধান করা না হয়, তাহলে প্রয়োজনীয় অগ্রগতি ও স্থিতিশীলতা অধরাই থেকে যাবে এবং পুরো অঞ্চলের জন্য এর প্রভাব বাড়তে থাকবে।
জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের রেজুলেশন এবং বিতর্ক রাষ্ট্রকেন্দ্রিক ঐতিহ্যবাহী দৃষ্টিভঙ্গি প্রতিফলিত করে। এই দৃষ্টিভঙ্গিতে ধরেই নেওয়া হয় যে, মিয়ানমারে একটি কেন্দ্রীয় সরকার তার সব রাষ্ট্রের সব উপাদানেই রাজনৈতিক নিয়ন্ত্রণ বজায় রাখতে ও পরিচালনা করতে পারে। ‘মিয়ানমার’ শব্দটি একাধিকবার উল্লেখ করা হলেও এটি কেবল সামরিক সরকারের প্রতি ইঙ্গিত করে। তবে জান্তা সরকার দেশের অনেকাংশেরই নিয়ন্ত্রণ হারিয়েছে। রাখাইনে তাদের কর্তৃত্ব প্রায় নেই বললেই চলে। সাম্প্রতিক বড় পরাজয়ের পর, তাদের ক্ষমতা সীমিত হয়ে রয়েছে কেবল রাজ্যের রাজধানী সিতওয়ে, মুনাউং দ্বীপ এবং কায়াকপায়ু ও গওয়া টাউনশিপের কিছু ছোট অংশে এবং এসব এলাকাতেও নিয়ন্ত্রণ হারানোর আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
তবে, আরাকান আর্মি বড় শক্তি হিসেবে আবির্ভূত হওয়ার আগেই এই রাষ্ট্রকেন্দ্রিক দৃষ্টিভঙ্গি ব্যর্থ হয়েছিল। ২০১৭ সালের পর থেকে চীন মিয়ানমারের কর্তৃপক্ষ এবং বাংলাদেশের মধ্যে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন শুরুর জন্য কয়েকবার মধ্যস্থতা করার চেষ্টা করেছিল, কিন্তু তা ব্যর্থ হয় মূলত রোহিঙ্গা এবং রাখাইন— যারা রাজ্যের সংখ্যাগরিষ্ঠ জনগোষ্ঠী— তাদের বাদ দেওয়ার কারণে।
২০২১ সালের সামরিক অভ্যুত্থানের পর প্রত্যাবাসন পুনরায় শুরুর চেষ্টা আরও কম সফল হয়। যদি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় আরাকান আর্মির বাস্তবিক অঞ্চল নিয়ন্ত্রণ স্বীকার না করে, তাহলে প্রত্যাবাসন এবং রোহিঙ্গাদের সঙ্গে সম্পর্কিত অন্যান্য জরুরি বিষয়ে অগ্রগতি কল্পনাতীত থেকে যাবে।
রোহিঙ্গা সম্মেলন আয়োজকদের জন্য এর অর্থ হচ্ছে আরাকান আর্মির সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপন করা। তবে বাংলাদেশ এখনো স্পষ্টতই একটি অ-রাষ্ট্রীয় সংগঠনের সঙ্গে সম্পৃক্ত হওয়া নিয়ে কিছুটা দ্বিধাগ্রস্ত, এমনকি আরাকান আর্মি বাস্তবিকভাবে রাখাইনের নিয়ন্ত্রক হওয়ার পরও।
একটি পক্ষ হিসেবে আরাকান আর্মিকে পূর্ণ স্বীকৃতি দেওয়ার বিষয়টা কিছুটা দূরের হলেও উভয় পক্ষের জন্য পারস্পরিক স্বার্থসংশ্লিষ্ট ক্ষেত্রে সহযোগিতা করা লাভজনক। এর মধ্যে অন্তর্ভুক্ত হতে পারে—রাখাইনে মানবিক সাহায্য পৌঁছানোর জন্য একটি মানবিক করিডর প্রতিষ্ঠা, সীমান্ত অপরাধ মোকাবিলা এবং দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য পুনরায় শুরু করা। এ ক্ষেত্রে ঢাকা মিয়ানমারের অন্যান্য প্রতিবেশী বিশেষত চীন এবং থাইল্যান্ডের অ-রাষ্ট্রীয় গোষ্ঠীগুলো তাদের নিজ নিজ সীমান্তসংলগ্ন এলাকায় স্থানীয় বিদ্রোহীদের সঙ্গে কীভাবে যোগাযোগ করে তা থেকে শিক্ষা নিতে পারে।
রাখাইনে পুরোনো জান্তা শাসনব্যবস্থার জায়গায় কী ধরনের রাষ্ট্রব্যবস্থা গড়ে উঠবে— তা এখনো পরিষ্কার নয়। আরাকান আর্মির নেতৃত্ব স্পষ্টভাবে জানিয়ে দিয়েছে, তারা মিয়ানমারের রাজধানী নেপিদোতে ক্ষমতার কেন্দ্রীকরণের সাম্প্রতিক রাজনৈতিক অবস্থানকে মানে না। মাঝে মাঝে তারা একটি ফেডারেল বা সংযুক্ত রাষ্ট্র কাঠামোর প্রস্তাব দিয়েছে, তবে অন্যান্য বিকল্পগুলোকেও বাদ দেয়নি। গত কয়েক বছর ধরে রাখাইনের কিছু অংশে প্রশাসনিক ও বিচারিক সেবা চালিয়ে আসছে আরাকান আর্মির বেসামরিক শাখা ইউনাইটেড লীগ অব আরাকান এবং আরও বেসামরিক কর্মীকে প্রশিক্ষণ দেওয়া শুরু করেছে। তবে এটি বৃহত্তর স্বায়ত্তশাসন গড়ে তোলার জন্য কেবল যাত্রা মাত্র।
গত বছরটি রাখাইনের জন্য উদ্বেগজনক ছিল। যদিও আরাকান আর্মি প্রায় পুরো রাজ্যকে জান্তা সরকারের হাত থেকে মুক্ত করেছে। কিন্তু দুটি ঘটনা তাদের সামরিক সাফল্যে কালিমা লেপন করেছে। ২০২৩ সালের নভেম্বর থেকে শুরু হওয়া সর্বশেষ সংঘর্ষ রাখাইনকে মানবিক ও অর্থনৈতিক বিপর্যয়ের কিনারায় ঠেলে দিয়েছে। মিয়ানমারের সেনাবাহিনী রাজ্যটিতে অবরোধ কঠোর করেছে। ফলে প্রয়োজনীয় পণ্য প্রবেশে বাধা সৃষ্টি হয়েছে। মৌলিক পণ্যের দাম আকাশচুম্বী হয়ে উঠেছে। এমনকি আরাকান আর্মি নিয়ন্ত্রিত এলাকায় এমনকি মুদ্রা সংকট দেখা দিয়েছে। জাতিসংঘ উন্নয়ন কর্মসূচি (ইউএনডিপি) ও অন্যান্য সংস্থাগুলো গুরুতর খাদ্য সংকট এবং এমনকি দুর্ভিক্ষের মতো পরিস্থিতির আশঙ্কা প্রকাশ করেছে।
এছাড়া এই সংঘাত সাম্প্রদায়িক সম্পর্ককে ক্ষতিগ্রস্ত করেছে। জান্তাবাহিনী যুদ্ধে পরাজিত হতে থাকলেও তারা ‘ডিভাইড অ্যান্ড রুল’ তথা বিভাজনের মাধ্যমে শাসনের কৌশল ব্যবহার করে রোহিঙ্গাদের বড় অংশকে আরাকান আর্মির বিরুদ্ধে উসকে দিয়ে বড় সাফল্য অর্জন করেছে। তাঁরা সরাসরি রোহিঙ্গাদের যোদ্ধা নিয়োগ দিয়েছে এবং রোহিঙ্গা সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোর সঙ্গে সহযোগিতা করেছে। এসব গোষ্ঠীর মধ্যে রোহিঙ্গা সলিডারিটি অর্গানাইজেশন (আরএসও) এবং আরাকান রোহিঙ্গা স্যালভেশন আর্মি (এআরএসএ) অন্যতম। ২০২৪ সালের এপ্রিলে থেকে সব পক্ষই বেসামরিক নাগরিকদের বিরুদ্ধে মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগে অভিযুক্ত হয়েছে, যা উত্তেজনাকে আরও বাড়িয়ে তুলেছে।
সাম্প্রদায়িক সম্পর্কের এই অবনতি ২০২২ এবং ২০২৩ সালের পরিস্থিতির যে উন্নয়ন হয়েছিল, সেটির ওপর একটি বড় ধাক্কা। সে সময় রাখাইনে বিশেষ করে মধ্য রাখাইন অঞ্চলে রাখাইন ও রোহিঙ্গাদের পাশাপাশি বসবাসের জন্য আরও বেশি প্রস্তুত বলে মনে হয়েছিল। অপ্রাতিষ্ঠানিক বাণিজ্য ধীরে ধীরে শুরু হচ্ছিল এবং সেবার সুযোগও বাড়ছিল। ২০২২ সালে রোহিঙ্গা শিক্ষার্থীরা ২০১২ সালের পর প্রথমবারের মতো সিতওয়ে ইউনিভার্সিটিতে ভর্তি হওয়ার সুযোগ পায়।
বাংলাদেশে অবস্থানরত রোহিঙ্গারাও সাম্প্রতিক সংঘর্ষ থেকে রেহাই পায়নি। কক্সবাজারে অবস্থিত আশ্রয়শিবিরগুলোতে রোহিঙ্গা সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলো অনেক তরুণকে জোরপূর্বক নিয়োগ দিয়েছে। বিভিন্ন প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, তাঁদের মিয়ানমারের ভেতরে নিয়ে যাওয়া হয়েছে এবং জান্তাবাহিনীর পক্ষে যুদ্ধে লড়তে বাধ্য করা হয়েছে।
সম্প্রতি রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ৩ থেকে ৫ হাজার রোহিঙ্গা যোদ্ধাকে অপহরণ বা মিথ্যা প্রতিশ্রুতির মাধ্যমে নিয়োগ করা হয়েছে। এ ক্ষেত্রে রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারের নাগরিকত্বের নথি দেওয়ার মিথ্যা আশ্বাস দেওয়া হয়।
২০২৪ সালের ডিসেম্বরে কয়েক মাসের তীব্র সংঘর্ষের পর আরাকান আর্মি বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী মংডু টাউনশিপে জান্তাবাহিনীর সর্বশেষ আউটপোস্ট দখল করে। এতে শত শত যুদ্ধবন্দি— যার মধ্যে অনেক রোহিঙ্গা যোদ্ধাও অন্তর্ভুক্ত— তাদের হাতে পড়ে। আরাকান আর্মি বলছে, তারা ভবিষ্যতে সব সম্প্রদায়কে অন্তর্ভুক্ত করতে চায়। তবে তারা জান্তাবাহিনীর পক্ষে লড়াই করা রোহিঙ্গাদের প্রতি নিন্দা জানিয়েছে।
আরাকান আর্মিকে রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের সঙ্গে সম্পর্ক কীভাবে পুনরায় স্থাপন করা যায়— তা সতর্কতার সঙ্গে বিবেচনা করতে হবে। পদক্ষেপ হিসেবে তারা হয়তো এপ্রিল-মে মাসে বুথিডং টাউনশিপে সংঘটিত গণ-সহিংসতার বিতর্কিত পরিস্থিতি নিয়ে স্বাধীন তদন্ত কমিশন গঠনের কথা ভাবতে পারে। এছাড়া সহিংসতায় ক্ষতিগ্রস্ত রোহিঙ্গাদের তাঁদের বাড়িতে ফিরে যাওয়ার অনুমতি দিতে পারে। তাঁদের বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত বা ধ্বংস হয়ে থাকলে তা মেরামত বা পুনর্নির্মাণে সহায়তা প্রদান করতে পারে এবং আস্থা পুনরুদ্ধারের বাস্তবসম্মত উপায় হতে পারে।
আরাকান আর্মিকে বাংলাদেশর সঙ্গে সম্পর্ক উন্নত করার উপায় নিয়েও ভাবতে হবে। কক্সবাজারে আশ্রয়শিবির থেকে কয়েক হাজার রোহিঙ্গাকে যোদ্ধা হিসেবে নিয়োগ এবং তাদের মিয়ানমারে সীমান্ত পার করে রণক্ষেত্রে পাঠানোর বিষয়টি আরাকান আর্মিকে ক্ষুব্ধ করেছে। বাংলাদেশিসহ অনেক পর্যবেক্ষকই বিশ্বাস করতে চান না যে, এটি উচ্চপদস্থ বাংলাদেশি কর্মকর্তাদের অজ্ঞাতে ঘটেছে।
রাখাইনকে যুদ্ধের ধ্বংসাবশেষ থেকে পুনর্গঠন করা বড় চ্যালেঞ্জ। এটি এমন এক চ্যালেঞ্জ, যার দ্রুত কোনো সমাধান নেই। এটি আগে থেকেই মিয়ানমারের সবচেয়ে দরিদ্র রাজ্যগুলোর একটি ছিল। উন্নয়নবঞ্চিত, আন্তঃসম্প্রদায়িক সংঘর্ষ এবং বঞ্চনার শিকার এই রাজ্যে দারিদ্র্য, সুযোগের অভাব এবং বাস্তুচ্যুতির কারণে এখানকার সব সম্প্রদায়কেই আঘাত করেছে। ২০১৮ সালের শেষের দিকে যখন জান্তাবাহিনী এবং আরাকান আর্মির মধ্যে সহিংসতা তীব্রতর হয়, তখন পরিস্থিতি আরও খারাপ হয়। রাখাইনে একটি ব্যাপক দীর্ঘমেয়াদি পুনরুদ্ধার পরিকল্পনা এবং রোডম্যাপের প্রয়োজন, যাতে সামনে থাকা ব্যাপক কর্মযজ্ঞ— যার মধ্যে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের স্বেচ্ছায়, নিরাপদ ও মর্যাদাপূর্ণ প্রত্যাবর্তন অন্তর্ভুক্ত— ভালোভাবে সম্পন্ন করা যায়।
সবচেয়ে জটিল চ্যালেঞ্জগুলোর একটি হলো রাজ্যের বৈচিত্র্যময় জাতিগত এবং ধর্মীয় সম্প্রদায়গুলোর একীকরণ শক্তিশালী করা। বিশেষ করে রাখাইন ও রোহিঙ্গাদের আস্থায় আনার বিষয়টি সবচেয়ে কঠিন কাজ। দুই পক্ষই একে অপরের প্রতি গভীর ভয় ও বিদ্বেষ পোষণ করেছে। কিছু রাখাইনের মতে, রোহিঙ্গাদের বড় একটি অংশ— যারা জান্তাবাহিনীর সঙ্গে মিলে আরাকান আর্মির বিরুদ্ধে যুদ্ধ করছে— তাঁদের এই ভয়কে আরও গভীর করেছে।
আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কেও ভূমিকা পালন করতে হবে। রাখাইনের বিভিন্ন সম্প্রদায় কী ধরনের সমস্যা বা জটিলতার মুখোমুখি হচ্ছে— এটি স্বীকার করতে হবে আগে। গত কয়েক দশকে রোহিঙ্গাদের ভোগান্তির খবর ব্যাপকভাবে ছড়িয়েছে। গত পাঁচ বছরে মিয়ানমারের জান্তাবাহিনী সব সম্প্রদায়কেই আরও বেশি অত্যাচার করতে শুরু করেছে— পেটানো, হত্যা করা এবং নির্যাতন করা, জীবন-জীবিকা ধ্বংস করা, ঘর, হাসপাতাল, স্কুল, বাজার ও উপাসনালয় পোড়ানো, মৌলিক পণ্যের পরিবহন বন্ধ করা এবং অত্যাবশ্যকীয় সেবা— যেমন বিদ্যুৎ, ব্যাংকিং এবং যোগাযোগ বন্ধ করা। এখন রাখাইন রাজ্যের সব মানুষই অবরুদ্ধ অবস্থার শিকার।
তাহলে, বিশ্ব সম্প্রদায় সংকটের জন্য অর্থপূর্ণ অবদান রাখতে চাইলে তবে তাঁদের কেবল রোহিঙ্গাদের দুর্দশা মোকাবিলা করেই নয়, রাখাইনের সব মানুষের জন্য একত্রে রাজ্য পুনর্গঠনেও সাহায্য করতে হবে। এই দৃষ্টিভঙ্গি ‘ট্রানজিশনাল জাস্টিস প্রোগ্রামের’ বা অন্তর্বর্তীকালীন ন্যায্যতা নিশ্চিত কর্মসূচির কেন্দ্রবিন্দু হওয়া উচিত। এর আওতায় প্রতিষ্ঠানিক সংস্কার, সত্য, ন্যায়, ক্ষতিপূরণ ও স্মৃতি সংরক্ষণকে গুরুত্ব দিতে হবে।
এতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় রাখাইন রাজ্য বিষয়ক পরামর্শক কমিশনের সুপারিশগুলোর সঙ্গে নিজেদের সংগতি রাখতে পারবে। ২০১৭ সালের আগস্টে জাতিসংঘ সাবেক মহাসচিব কফি আনানের সভাপতিত্বে রাখাইন রাজ্য বিষয়ক পরামর্শক কমিশন রাখাইনের উন্নয়ন, মানবাধিকার এবং নিরাপত্তা চ্যালেঞ্জগুলোর জন্য সমাধান প্রস্তাব করেছিল। এই প্রস্তাব সবার জন্য শান্তি, সমৃদ্ধি, নিরাপত্তা এবং মানবাধিকারের পথে একটি দিশা ছিল। তারপর যা কিছু ঘটেছে, তা সত্ত্বেও, অনেক সুপারিশ আজও প্রাসঙ্গিক। এখন রাখাইনের জনগণ ও তাঁদের নেতাদের ওপরই নির্ভর করছে যে, তারা কীভাবে এগুলোকে নতুন রাখাইন পরিকল্পনায় অন্তর্ভুক্ত করতে পারে।
লেখক: থাইল্যান্ডে নিযুক্ত ডাচ রাষ্ট্রদূত। তিনি ২০১৬ সাল থেকে রাখাইন রাজ্য বিষয়ক জাতিসংঘের পরামর্শক কমিশনের সদস্য হিসেবে কাজ করেছেন।
(মিয়ানমারের সংবাদমাধ্যম ফ্রন্টিয়ার মিয়ানমার থেকে অনুবাদ করেছেন আব্দুর রহমান)

গত ২৬ ডিসেম্বর বিশ্বের প্রথম জাতিসংঘ সদস্য দেশ হিসেবে সোমালিল্যান্ডকে একটি সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি দিয়েছে ইসরায়েল। প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু এই সিদ্ধান্তকে ‘আব্রাহাম অ্যাকর্ডস’-এর একটি সাহসী সম্প্রসারণ হিসেবে বর্ণনা করেছেন।
৪ ঘণ্টা আগে
মধ্যপ্রাচ্যের মূল ভূখণ্ড হারানোর পর আইএস এখন মূলত স্বায়ত্তশাসিত বিভিন্ন সেলের মাধ্যমে কার্যক্রম পরিচালনা করছে। বর্তমানে নাইজেরিয়া, সোমালিয়া, কঙ্গো এবং সাহেল অঞ্চলে আইএস অত্যন্ত শক্তিশালী। নাইজেরিয়ার উত্তর-পূর্বাঞ্চলে ‘আইএসডব্লিউএপি’ এবং উত্তর-পশ্চিমে বিভিন্ন অনুসারী গোষ্ঠী সক্রিয় রয়েছে।
১৯ ঘণ্টা আগে
নাইজেরিয়া আনুষ্ঠানিকভাবে একটি ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্র। দেশটির জনসংখ্যার প্রায় ৫৩ শতাংশ মুসলমান, ৪৫ শতাংশ খ্রিষ্টান এবং অন্যরা আফ্রিকার ঐতিহ্যগত কিছু ধর্মে বিশ্বাসী। খ্রিষ্টানদের ওপর সহিংসতা আন্তর্জাতিক অঙ্গনে ব্যাপক মনোযোগ পেলেও বহু বিশ্লেষকের মতে, বিষয়টি কেবল ধর্মীয় নিপীড়নের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়, এর পেছন
১ দিন আগে
ভেনেজুয়েলার চলমান রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক সংকট ধীরে ধীরে একটি আঞ্চলিক সমস্যা থেকে বৈশ্বিক ভূ-রাজনৈতিক উত্তেজনায় রূপ নিচ্ছে। সাম্প্রতিক সময়ে যুক্তরাষ্ট্রের কড়া অবস্থান এবং সম্ভাব্য সামরিক হস্তক্ষেপের ইঙ্গিত এই সংকটকে আরও গভীর করেছে।
৬ দিন আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

২৬ ডিসেম্বর বিশ্বের প্রথম জাতিসংঘ সদস্যদেশ হিসেবে সোমালিল্যান্ডকে একটি সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি দিয়েছে ইসরায়েল। প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু এই সিদ্ধান্তকে ‘আব্রাহাম অ্যাকর্ডস’-এর একটি সাহসী সম্প্রসারণ হিসেবে বর্ণনা করেছেন। হর্ন অব আফ্রিকার এই স্বঘোষিত স্বাধীন মুসলিমপ্রধান ভূখণ্ডটির প্রতি ইসরায়েলের এই গভীর আগ্রহ নিছক কোনো কূটনৈতিক সৌজন্য নয়; বরং এর পেছনে রয়েছে কয়েক দশকের সুদূরপ্রসারী কৌশলগত পরিকল্পনা, নিরাপত্তাঝুঁকি ব্যবস্থাপনা এবং বিশাল অর্থনৈতিক সম্ভাবনা।
সোমালিল্যান্ডের অবস্থান এডেন উপসাগরের তীরে, যা সরাসরি ইয়েমেনের উল্টো দিকে এবং বাব আল-মানদেব প্রণালির ঠিক পাশেই অবস্থিত। বিশ্বের প্রায় এক-তৃতীয়াংশ জলপথের বাণিজ্য এই পথেই পরিচালিত হয়।
২০২৩ সাল থেকে ইরান-সমর্থিত হুতি বিদ্রোহীরা লোহিত সাগরে ইসরায়েলি সংশ্লিষ্ট জাহাজগুলোতে নিয়মিত হামলা চালিয়ে আসছে। সোমালিল্যান্ডের উপকূলরেখা থেকে হুতিদের মূল ঘাঁটি হোদেইদাহর দূরত্ব ৩০০ থেকে ৫০০ কিলোমিটার। ইসরায়েলের জন্য সোমালিল্যান্ড একটি ‘ফরোয়ার্ড ডিফেন্স’ বা সম্মুখ প্রতিরক্ষা ঘাঁটি হিসেবে কাজ করবে।
ইসরায়েলি থিংকট্যাংক (আইএনএসএস)-এর মতে, সোমালিল্যান্ডে গোয়েন্দা ঘাঁটি স্থাপনের মাধ্যমে ইরান থেকে ইয়েমেনে আসা অস্ত্র চোরাচালান এবং হুতিদের গতিবিধির ওপর সার্বক্ষণিক নজর রাখা সম্ভব হবে। এমনকি সংযুক্ত আরব আমিরাতের অর্থায়নে নির্মিত বারবেরা বন্দর ইসরায়েলি নৌ টহল বা ড্রোন অপারেশনের কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠতে পারে।
হর্ন অব আফ্রিকায় ইসরায়েলের এই প্রবেশ মূলত তার আঞ্চলিক প্রতিদ্বন্দ্বীদের আধিপত্য কমানোর একটি পাল্টা কৌশল। তুরস্ক ইতিমধ্যে সোমালিয়ার মোগাদিশুতে বিশাল সামরিক ঘাঁটি এবং বন্দরগুলোর নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে। ইসরায়েল মনে করে, সোমালিল্যান্ডের সঙ্গে জোরালো মৈত্রী এই অঞ্চলে তুরস্কের একক আধিপত্যে ভারসাম্য বজায় রাখবে।
এ ছাড়া ইসরায়েল সব সময় নিজের সীমানার বাইরে মিত্র দেশগুলোতে নিজের উপস্থিতি নিশ্চিত করতে চায়। সোমালিল্যান্ডের মতো একটি স্থিতিশীল এবং পশ্চিমাপন্থী প্রশাসনের সঙ্গে বন্ধুত্ব ইসরায়েলকে লোহিত সাগরের নিরাপত্তা বলয়ে একক কর্তৃত্ব দেবে।
অর্থনৈতিক সম্ভাবনা ও প্রাকৃতিক সম্পদের ভান্ডারও আগ্রহের মূলে রয়েছে। বিশ্লেষকদের মতে, সোমালিল্যান্ড কেবল একটি কৌশলগত বন্দর নয়, বরং এটি সম্পদের একটি অব্যবহৃত খনি।
সোমালিল্যান্ডে বিপুল পরিমাণ অপরিশোধিত তেল, গ্যাস এবং বিরল মৃত্তিকা খনিজ মজুত থাকার জোরালো সম্ভাবনা রয়েছে। ইসরায়েলের উচ্চ প্রযুক্তি এবং অস্ত্র তৈরির কারখানায় এই কাঁচামালগুলো অত্যন্ত জরুরি।
ইসরায়েল ইতিমধ্যে কৃষি ক্ষেত্রে লবণাক্ত পানি পরিশোধন, উন্নত সেচব্যবস্থা এবং সাইবার নিরাপত্তা খাতে বড় বিনিয়োগের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। সোমালিল্যান্ডের জন্য এই অংশীদারত্ব হবে অর্থনৈতিক স্বাধীনতার চাবিকাঠি।
তবে এতে কূটনৈতিক চ্যালেঞ্জও রয়েছে। ইসরায়েলের এই স্বীকৃতি যেমন সোমালিল্যান্ডের জন্য বৈধতার দ্বার উন্মোচন করেছে, তেমনি এটি আঞ্চলিক উত্তেজনারও জন্ম দিয়েছে।
সোমালিয়া এই পদক্ষেপকে তাদের অখণ্ডতার ওপর ‘সরাসরি আক্রমণ’ হিসেবে আখ্যা দিয়েছে। আফ্রিকান ইউনিয়ন (এইউ) এবং আরব লিগ এই স্বীকৃতির তীব্র নিন্দা জানিয়েছে এবং সতর্ক করেছে যে এটি আফ্রিকা মহাদেশে নতুন করে অস্থিতিশীলতা তৈরি করতে পারে।
পশ্চিমা বিশ্বও ইসরায়েলের এই পদক্ষেপে দ্বিধাগ্রস্ত। মার্কিন সিনেটর টেড ক্রুজ সোমালিল্যান্ডকে একটি নির্ভরযোগ্য অংশীদার হিসেবে সমর্থন করলেও মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প জানিয়েছেন, যুক্তরাষ্ট্র এখনই এই পথে হাঁটবে না, বরং পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করবে।
সর্বোপরি ইসরায়েলের জন্য সোমালিল্যান্ড একটি স্থিতিশীল এবং দীর্ঘমেয়াদি মিত্র, যারা সন্ত্রাসবাদ দমনে ইসরায়েলের সমমনা বলেই মনে করা হয়। এই স্বীকৃতির মাধ্যমে ইসরায়েল লোহিত সাগরে নিজের নৌ-শক্তির নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে চায়। তবে এই পদক্ষেপ যদি ইথিওপিয়া বা সংযুক্ত আরব আমিরাতের মতো দেশগুলোকে সোমালিল্যান্ডকে স্বীকৃতি দিতে উৎসাহিত করবে। তবে এর ফলে হর্ন অব আফ্রিকার মানচিত্র এবং ভূরাজনীতি চিরতরে বদলে যেতে পারে। এটি যেমন একটি নতুন সামরিক ও অর্থনৈতিক অক্ষের সম্ভাবনা তৈরি করেছে, তেমনি আঞ্চলিক সংঘাতের ঝুঁকিও বাড়িয়ে দিয়েছে।
তথ্যসূত্র: সাউথ চায়না মর্নিং পোস্ট, রয়টার্স, আল জাজিরা এবং আটলান্টিক কাউন্সিল।

২৬ ডিসেম্বর বিশ্বের প্রথম জাতিসংঘ সদস্যদেশ হিসেবে সোমালিল্যান্ডকে একটি সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি দিয়েছে ইসরায়েল। প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু এই সিদ্ধান্তকে ‘আব্রাহাম অ্যাকর্ডস’-এর একটি সাহসী সম্প্রসারণ হিসেবে বর্ণনা করেছেন। হর্ন অব আফ্রিকার এই স্বঘোষিত স্বাধীন মুসলিমপ্রধান ভূখণ্ডটির প্রতি ইসরায়েলের এই গভীর আগ্রহ নিছক কোনো কূটনৈতিক সৌজন্য নয়; বরং এর পেছনে রয়েছে কয়েক দশকের সুদূরপ্রসারী কৌশলগত পরিকল্পনা, নিরাপত্তাঝুঁকি ব্যবস্থাপনা এবং বিশাল অর্থনৈতিক সম্ভাবনা।
সোমালিল্যান্ডের অবস্থান এডেন উপসাগরের তীরে, যা সরাসরি ইয়েমেনের উল্টো দিকে এবং বাব আল-মানদেব প্রণালির ঠিক পাশেই অবস্থিত। বিশ্বের প্রায় এক-তৃতীয়াংশ জলপথের বাণিজ্য এই পথেই পরিচালিত হয়।
২০২৩ সাল থেকে ইরান-সমর্থিত হুতি বিদ্রোহীরা লোহিত সাগরে ইসরায়েলি সংশ্লিষ্ট জাহাজগুলোতে নিয়মিত হামলা চালিয়ে আসছে। সোমালিল্যান্ডের উপকূলরেখা থেকে হুতিদের মূল ঘাঁটি হোদেইদাহর দূরত্ব ৩০০ থেকে ৫০০ কিলোমিটার। ইসরায়েলের জন্য সোমালিল্যান্ড একটি ‘ফরোয়ার্ড ডিফেন্স’ বা সম্মুখ প্রতিরক্ষা ঘাঁটি হিসেবে কাজ করবে।
ইসরায়েলি থিংকট্যাংক (আইএনএসএস)-এর মতে, সোমালিল্যান্ডে গোয়েন্দা ঘাঁটি স্থাপনের মাধ্যমে ইরান থেকে ইয়েমেনে আসা অস্ত্র চোরাচালান এবং হুতিদের গতিবিধির ওপর সার্বক্ষণিক নজর রাখা সম্ভব হবে। এমনকি সংযুক্ত আরব আমিরাতের অর্থায়নে নির্মিত বারবেরা বন্দর ইসরায়েলি নৌ টহল বা ড্রোন অপারেশনের কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠতে পারে।
হর্ন অব আফ্রিকায় ইসরায়েলের এই প্রবেশ মূলত তার আঞ্চলিক প্রতিদ্বন্দ্বীদের আধিপত্য কমানোর একটি পাল্টা কৌশল। তুরস্ক ইতিমধ্যে সোমালিয়ার মোগাদিশুতে বিশাল সামরিক ঘাঁটি এবং বন্দরগুলোর নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে। ইসরায়েল মনে করে, সোমালিল্যান্ডের সঙ্গে জোরালো মৈত্রী এই অঞ্চলে তুরস্কের একক আধিপত্যে ভারসাম্য বজায় রাখবে।
এ ছাড়া ইসরায়েল সব সময় নিজের সীমানার বাইরে মিত্র দেশগুলোতে নিজের উপস্থিতি নিশ্চিত করতে চায়। সোমালিল্যান্ডের মতো একটি স্থিতিশীল এবং পশ্চিমাপন্থী প্রশাসনের সঙ্গে বন্ধুত্ব ইসরায়েলকে লোহিত সাগরের নিরাপত্তা বলয়ে একক কর্তৃত্ব দেবে।
অর্থনৈতিক সম্ভাবনা ও প্রাকৃতিক সম্পদের ভান্ডারও আগ্রহের মূলে রয়েছে। বিশ্লেষকদের মতে, সোমালিল্যান্ড কেবল একটি কৌশলগত বন্দর নয়, বরং এটি সম্পদের একটি অব্যবহৃত খনি।
সোমালিল্যান্ডে বিপুল পরিমাণ অপরিশোধিত তেল, গ্যাস এবং বিরল মৃত্তিকা খনিজ মজুত থাকার জোরালো সম্ভাবনা রয়েছে। ইসরায়েলের উচ্চ প্রযুক্তি এবং অস্ত্র তৈরির কারখানায় এই কাঁচামালগুলো অত্যন্ত জরুরি।
ইসরায়েল ইতিমধ্যে কৃষি ক্ষেত্রে লবণাক্ত পানি পরিশোধন, উন্নত সেচব্যবস্থা এবং সাইবার নিরাপত্তা খাতে বড় বিনিয়োগের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। সোমালিল্যান্ডের জন্য এই অংশীদারত্ব হবে অর্থনৈতিক স্বাধীনতার চাবিকাঠি।
তবে এতে কূটনৈতিক চ্যালেঞ্জও রয়েছে। ইসরায়েলের এই স্বীকৃতি যেমন সোমালিল্যান্ডের জন্য বৈধতার দ্বার উন্মোচন করেছে, তেমনি এটি আঞ্চলিক উত্তেজনারও জন্ম দিয়েছে।
সোমালিয়া এই পদক্ষেপকে তাদের অখণ্ডতার ওপর ‘সরাসরি আক্রমণ’ হিসেবে আখ্যা দিয়েছে। আফ্রিকান ইউনিয়ন (এইউ) এবং আরব লিগ এই স্বীকৃতির তীব্র নিন্দা জানিয়েছে এবং সতর্ক করেছে যে এটি আফ্রিকা মহাদেশে নতুন করে অস্থিতিশীলতা তৈরি করতে পারে।
পশ্চিমা বিশ্বও ইসরায়েলের এই পদক্ষেপে দ্বিধাগ্রস্ত। মার্কিন সিনেটর টেড ক্রুজ সোমালিল্যান্ডকে একটি নির্ভরযোগ্য অংশীদার হিসেবে সমর্থন করলেও মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প জানিয়েছেন, যুক্তরাষ্ট্র এখনই এই পথে হাঁটবে না, বরং পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করবে।
সর্বোপরি ইসরায়েলের জন্য সোমালিল্যান্ড একটি স্থিতিশীল এবং দীর্ঘমেয়াদি মিত্র, যারা সন্ত্রাসবাদ দমনে ইসরায়েলের সমমনা বলেই মনে করা হয়। এই স্বীকৃতির মাধ্যমে ইসরায়েল লোহিত সাগরে নিজের নৌ-শক্তির নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে চায়। তবে এই পদক্ষেপ যদি ইথিওপিয়া বা সংযুক্ত আরব আমিরাতের মতো দেশগুলোকে সোমালিল্যান্ডকে স্বীকৃতি দিতে উৎসাহিত করবে। তবে এর ফলে হর্ন অব আফ্রিকার মানচিত্র এবং ভূরাজনীতি চিরতরে বদলে যেতে পারে। এটি যেমন একটি নতুন সামরিক ও অর্থনৈতিক অক্ষের সম্ভাবনা তৈরি করেছে, তেমনি আঞ্চলিক সংঘাতের ঝুঁকিও বাড়িয়ে দিয়েছে।
তথ্যসূত্র: সাউথ চায়না মর্নিং পোস্ট, রয়টার্স, আল জাজিরা এবং আটলান্টিক কাউন্সিল।

ডাচ রাষ্ট্রদূতের নিবন্ধে রোহিঙ্গা সংকটের নতুন বাস্তবতা তুলে ধরা হয়েছে, যেখানে বাংলাদেশের উদ্যোগে ২০২৫ সালে একটি উচ্চপর্যায়ের আন্তর্জাতিক সম্মেলনের পরিকল্পনা করা হচ্ছে। নিবন্ধে আরাকান আর্মির উত্থান, রাখাইন রাজ্যের রাজনৈতিক পরিবর্তন এবং রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের চ্যালেঞ্জসহ বাংলাদেশ-মিয়ানমার দ্বিপক্ষীয় স
০১ জানুয়ারি ২০২৫
মধ্যপ্রাচ্যের মূল ভূখণ্ড হারানোর পর আইএস এখন মূলত স্বায়ত্তশাসিত বিভিন্ন সেলের মাধ্যমে কার্যক্রম পরিচালনা করছে। বর্তমানে নাইজেরিয়া, সোমালিয়া, কঙ্গো এবং সাহেল অঞ্চলে আইএস অত্যন্ত শক্তিশালী। নাইজেরিয়ার উত্তর-পূর্বাঞ্চলে ‘আইএসডব্লিউএপি’ এবং উত্তর-পশ্চিমে বিভিন্ন অনুসারী গোষ্ঠী সক্রিয় রয়েছে।
১৯ ঘণ্টা আগে
নাইজেরিয়া আনুষ্ঠানিকভাবে একটি ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্র। দেশটির জনসংখ্যার প্রায় ৫৩ শতাংশ মুসলমান, ৪৫ শতাংশ খ্রিষ্টান এবং অন্যরা আফ্রিকার ঐতিহ্যগত কিছু ধর্মে বিশ্বাসী। খ্রিষ্টানদের ওপর সহিংসতা আন্তর্জাতিক অঙ্গনে ব্যাপক মনোযোগ পেলেও বহু বিশ্লেষকের মতে, বিষয়টি কেবল ধর্মীয় নিপীড়নের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়, এর পেছন
১ দিন আগে
ভেনেজুয়েলার চলমান রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক সংকট ধীরে ধীরে একটি আঞ্চলিক সমস্যা থেকে বৈশ্বিক ভূ-রাজনৈতিক উত্তেজনায় রূপ নিচ্ছে। সাম্প্রতিক সময়ে যুক্তরাষ্ট্রের কড়া অবস্থান এবং সম্ভাব্য সামরিক হস্তক্ষেপের ইঙ্গিত এই সংকটকে আরও গভীর করেছে।
৬ দিন আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

বড়দিনের রাতে নাইজেরিয়ার উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় সোকোটো রাজ্যে মার্কিন বাহিনীর বিমান হামলা বিশ্বজুড়ে নতুন করে আলোচনায় নিয়ে এসেছে জঙ্গিগোষ্ঠী ‘ইসলামিক স্টেট’ বা আইএসকে। মধ্যপ্রাচ্যে পরাজয়ের পর গোষ্ঠীটি এখন আফ্রিকায় তাদের জাল বিস্তার করছে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প দাবি করেছেন, নাইজেরিয়ায় খ্রিষ্টানদের লক্ষ্য করে নৃশংস হত্যাযজ্ঞ চালানোর কারণে তিনি এ হামলার নির্দেশ দিয়েছেন।
ইসলামিক স্টেট কী
ইসলামিক স্টেট (যাকে আইএসআইএস বা দায়েশ নামেও ডাকা হয়) একটি সুন্নি চরমপন্থী গোষ্ঠী। ইরাক ও সিরিয়ায় উত্থান ঘটিয়ে তারা একসময় ‘খিলাফত’ ঘোষণা করেছিল। এরপর ২০১৪ থেকে ২০১৭ সালের মধ্যে ইরাক ও সিরিয়ার বিশাল অংশ তাদের দখলে ছিল। তখন তারা কঠোর শরিয়াহ আইন জারি করে এবং প্রকাশ্যে শিরশ্ছেদ ও নির্যাতনের মতো নৃশংসতা চালিয়ে বিশ্বকে স্তব্ধ করে দেয়।
পরে যুক্তরাষ্ট্র নেতৃত্বাধীন বহুজাতিক বাহিনীর ক্রমাগত অভিযানের মুখে ইরাকের মসুল ও সিরিয়ার রাক্কায় তাদের পতন ঘটে। তবে সংগঠনটি পুরোপুরি নির্মূল না হয়ে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে পড়ে।
বর্তমানে তারা কোথায় সক্রিয়
মধ্যপ্রাচ্যের মূল ভূখণ্ড হারানোর পর আইএস এখন মূলত স্বায়ত্তশাসিত বিভিন্ন সেলের মাধ্যমে কার্যক্রম পরিচালনা করছে। বর্তমানে নাইজেরিয়া, সোমালিয়া, কঙ্গো এবং সাহেল অঞ্চলে আইএস অত্যন্ত শক্তিশালী। নাইজেরিয়ার উত্তর-পূর্বাঞ্চলে ‘আইএসডব্লিউএপি’ এবং উত্তর-পশ্চিমে বিভিন্ন অনুসারী গোষ্ঠী সক্রিয় রয়েছে।
এশিয়া মহাদেশের মধ্যে আফগানিস্তান ও পাকিস্তানে ‘আইএস-খোরাসান’ নামে তারা সক্রিয়। এ ছাড়া ফিলিপাইনের মিন্দানাও অঞ্চলেও তাদের অনুসারী রয়েছে। জাতিসংঘ মনে করে, বর্তমানে তাদের অন্তত ১০ হাজার সক্রিয় সদস্য রয়েছে।
লক্ষ্য ও বর্তমান কৌশল
আইএসের মূল লক্ষ্য তাদের চরমপন্থী মতাদর্শ বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে দেওয়া। তবে সরাসরি যুদ্ধের বদলে তারা এখন কিছু নতুন কৌশল নিয়েছে। যেমন, অ্যাফিলিয়েট নেটওয়ার্ক—নিজেরা সরাসরি যুক্ত না হয়ে বিশ্বের বিভিন্ন স্থানীয় জঙ্গিগোষ্ঠীকে নিজেদের ‘শাখা’ হিসেবে স্বীকৃতি দিয়ে প্রভাব বিস্তার করা। লোন উলফ অ্যাটাক—সংঘবদ্ধ হামলার পরিবর্তে একজন বা দুই ব্যক্তির সমন্বয়ে বড় ধরনের হামলা। সম্প্রতি অস্ট্রেলিয়ার সিডনির বন্ডাই বিচে ইহুদিদের এক অনুষ্ঠানে বন্দুক হামলার পেছনে আইএসের এই কৌশল ছিল বলে সন্দেহ করা হচ্ছে। অনলাইন প্রচারণা—টেলিগ্রামের মতো প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করে আতঙ্ক ছড়ানো এবং নতুন সদস্য সংগ্রহ করা।
মার্কিন সামরিক বাহিনীর মতে, আইএসের বর্তমান বিশ্ব নেতা হলেন আবদুলকাদির মুমিন। তিনি বর্তমানে আইএসের সোমালিয়া শাখার প্রধান।
আইএসের সাম্প্রতিক কিছু বড় হামলা
কঙ্গোতে চলতি বছরের গত অক্টোবরে একটি গির্জায় নৈশকালীন প্রার্থনার সময় হামলায় ৪৩ জন নিহত হয়, যার দায় স্বীকার করে আইএস। গত ফেব্রুয়ারিতে সোমালিয়ায় একাধিক সামরিক ঘাঁটিতে আত্মঘাতী গাড়িবোমা হামলা চালায় আইএস। চলতি মাসে সিরিয়ায় দুই মার্কিন সেনা ও একজন দোভাষী নিহত হন, যার নেপথ্যে আইএসের হাত রয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এ ঘটনার পর চলতি সপ্তাহে সিরিয়ায় আইএসের ঘাঁটি লক্ষ্য করে ব্যাপক হামলা চালিয়েছে মার্কিন সামরিক বাহিনী।
নাইজেরিয়ায় মার্কিন হামলা এটাই প্রমাণ করে যে, আইএস এখন আর কেবল মধ্যপ্রাচ্যের সমস্যা নয়। বিশেষ করে, সাহেল ও পশ্চিম আফ্রিকায় তাদের ক্রমবর্ধমান শক্তি বিশ্ব নিরাপত্তার জন্য নতুন এক চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
রয়টার্স থেকে সংক্ষেপে অনূদিত

বড়দিনের রাতে নাইজেরিয়ার উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় সোকোটো রাজ্যে মার্কিন বাহিনীর বিমান হামলা বিশ্বজুড়ে নতুন করে আলোচনায় নিয়ে এসেছে জঙ্গিগোষ্ঠী ‘ইসলামিক স্টেট’ বা আইএসকে। মধ্যপ্রাচ্যে পরাজয়ের পর গোষ্ঠীটি এখন আফ্রিকায় তাদের জাল বিস্তার করছে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প দাবি করেছেন, নাইজেরিয়ায় খ্রিষ্টানদের লক্ষ্য করে নৃশংস হত্যাযজ্ঞ চালানোর কারণে তিনি এ হামলার নির্দেশ দিয়েছেন।
ইসলামিক স্টেট কী
ইসলামিক স্টেট (যাকে আইএসআইএস বা দায়েশ নামেও ডাকা হয়) একটি সুন্নি চরমপন্থী গোষ্ঠী। ইরাক ও সিরিয়ায় উত্থান ঘটিয়ে তারা একসময় ‘খিলাফত’ ঘোষণা করেছিল। এরপর ২০১৪ থেকে ২০১৭ সালের মধ্যে ইরাক ও সিরিয়ার বিশাল অংশ তাদের দখলে ছিল। তখন তারা কঠোর শরিয়াহ আইন জারি করে এবং প্রকাশ্যে শিরশ্ছেদ ও নির্যাতনের মতো নৃশংসতা চালিয়ে বিশ্বকে স্তব্ধ করে দেয়।
পরে যুক্তরাষ্ট্র নেতৃত্বাধীন বহুজাতিক বাহিনীর ক্রমাগত অভিযানের মুখে ইরাকের মসুল ও সিরিয়ার রাক্কায় তাদের পতন ঘটে। তবে সংগঠনটি পুরোপুরি নির্মূল না হয়ে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে পড়ে।
বর্তমানে তারা কোথায় সক্রিয়
মধ্যপ্রাচ্যের মূল ভূখণ্ড হারানোর পর আইএস এখন মূলত স্বায়ত্তশাসিত বিভিন্ন সেলের মাধ্যমে কার্যক্রম পরিচালনা করছে। বর্তমানে নাইজেরিয়া, সোমালিয়া, কঙ্গো এবং সাহেল অঞ্চলে আইএস অত্যন্ত শক্তিশালী। নাইজেরিয়ার উত্তর-পূর্বাঞ্চলে ‘আইএসডব্লিউএপি’ এবং উত্তর-পশ্চিমে বিভিন্ন অনুসারী গোষ্ঠী সক্রিয় রয়েছে।
এশিয়া মহাদেশের মধ্যে আফগানিস্তান ও পাকিস্তানে ‘আইএস-খোরাসান’ নামে তারা সক্রিয়। এ ছাড়া ফিলিপাইনের মিন্দানাও অঞ্চলেও তাদের অনুসারী রয়েছে। জাতিসংঘ মনে করে, বর্তমানে তাদের অন্তত ১০ হাজার সক্রিয় সদস্য রয়েছে।
লক্ষ্য ও বর্তমান কৌশল
আইএসের মূল লক্ষ্য তাদের চরমপন্থী মতাদর্শ বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে দেওয়া। তবে সরাসরি যুদ্ধের বদলে তারা এখন কিছু নতুন কৌশল নিয়েছে। যেমন, অ্যাফিলিয়েট নেটওয়ার্ক—নিজেরা সরাসরি যুক্ত না হয়ে বিশ্বের বিভিন্ন স্থানীয় জঙ্গিগোষ্ঠীকে নিজেদের ‘শাখা’ হিসেবে স্বীকৃতি দিয়ে প্রভাব বিস্তার করা। লোন উলফ অ্যাটাক—সংঘবদ্ধ হামলার পরিবর্তে একজন বা দুই ব্যক্তির সমন্বয়ে বড় ধরনের হামলা। সম্প্রতি অস্ট্রেলিয়ার সিডনির বন্ডাই বিচে ইহুদিদের এক অনুষ্ঠানে বন্দুক হামলার পেছনে আইএসের এই কৌশল ছিল বলে সন্দেহ করা হচ্ছে। অনলাইন প্রচারণা—টেলিগ্রামের মতো প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করে আতঙ্ক ছড়ানো এবং নতুন সদস্য সংগ্রহ করা।
মার্কিন সামরিক বাহিনীর মতে, আইএসের বর্তমান বিশ্ব নেতা হলেন আবদুলকাদির মুমিন। তিনি বর্তমানে আইএসের সোমালিয়া শাখার প্রধান।
আইএসের সাম্প্রতিক কিছু বড় হামলা
কঙ্গোতে চলতি বছরের গত অক্টোবরে একটি গির্জায় নৈশকালীন প্রার্থনার সময় হামলায় ৪৩ জন নিহত হয়, যার দায় স্বীকার করে আইএস। গত ফেব্রুয়ারিতে সোমালিয়ায় একাধিক সামরিক ঘাঁটিতে আত্মঘাতী গাড়িবোমা হামলা চালায় আইএস। চলতি মাসে সিরিয়ায় দুই মার্কিন সেনা ও একজন দোভাষী নিহত হন, যার নেপথ্যে আইএসের হাত রয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এ ঘটনার পর চলতি সপ্তাহে সিরিয়ায় আইএসের ঘাঁটি লক্ষ্য করে ব্যাপক হামলা চালিয়েছে মার্কিন সামরিক বাহিনী।
নাইজেরিয়ায় মার্কিন হামলা এটাই প্রমাণ করে যে, আইএস এখন আর কেবল মধ্যপ্রাচ্যের সমস্যা নয়। বিশেষ করে, সাহেল ও পশ্চিম আফ্রিকায় তাদের ক্রমবর্ধমান শক্তি বিশ্ব নিরাপত্তার জন্য নতুন এক চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
রয়টার্স থেকে সংক্ষেপে অনূদিত

ডাচ রাষ্ট্রদূতের নিবন্ধে রোহিঙ্গা সংকটের নতুন বাস্তবতা তুলে ধরা হয়েছে, যেখানে বাংলাদেশের উদ্যোগে ২০২৫ সালে একটি উচ্চপর্যায়ের আন্তর্জাতিক সম্মেলনের পরিকল্পনা করা হচ্ছে। নিবন্ধে আরাকান আর্মির উত্থান, রাখাইন রাজ্যের রাজনৈতিক পরিবর্তন এবং রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের চ্যালেঞ্জসহ বাংলাদেশ-মিয়ানমার দ্বিপক্ষীয় স
০১ জানুয়ারি ২০২৫
গত ২৬ ডিসেম্বর বিশ্বের প্রথম জাতিসংঘ সদস্য দেশ হিসেবে সোমালিল্যান্ডকে একটি সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি দিয়েছে ইসরায়েল। প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু এই সিদ্ধান্তকে ‘আব্রাহাম অ্যাকর্ডস’-এর একটি সাহসী সম্প্রসারণ হিসেবে বর্ণনা করেছেন।
৪ ঘণ্টা আগে
নাইজেরিয়া আনুষ্ঠানিকভাবে একটি ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্র। দেশটির জনসংখ্যার প্রায় ৫৩ শতাংশ মুসলমান, ৪৫ শতাংশ খ্রিষ্টান এবং অন্যরা আফ্রিকার ঐতিহ্যগত কিছু ধর্মে বিশ্বাসী। খ্রিষ্টানদের ওপর সহিংসতা আন্তর্জাতিক অঙ্গনে ব্যাপক মনোযোগ পেলেও বহু বিশ্লেষকের মতে, বিষয়টি কেবল ধর্মীয় নিপীড়নের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়, এর পেছন
১ দিন আগে
ভেনেজুয়েলার চলমান রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক সংকট ধীরে ধীরে একটি আঞ্চলিক সমস্যা থেকে বৈশ্বিক ভূ-রাজনৈতিক উত্তেজনায় রূপ নিচ্ছে। সাম্প্রতিক সময়ে যুক্তরাষ্ট্রের কড়া অবস্থান এবং সম্ভাব্য সামরিক হস্তক্ষেপের ইঙ্গিত এই সংকটকে আরও গভীর করেছে।
৬ দিন আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

নাইজেরিয়ার সরকার খ্রিষ্টানদের ওপর নিপীড়ন ঠেকাতে ব্যর্থ—এমন অভিযোগে কয়েক সপ্তাহ ধরে সমালোচনার পর অবশেষে বড়দিনের রাতে (২৫ ডিসেম্বর) পশ্চিম আফ্রিকার দেশটিতে বিমান হামলা চালিয়েছে মার্কিন বাহিনী। সরাসরি প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নির্দেশে নাইজেরিয়ার উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় সোকোটো রাজ্যে এ হামলা চালানো হয়।
ব্রিটিশ দৈনিক দ্য গার্ডিয়ান বলছে, ট্রাম্প প্রশাসন আইএস জঙ্গিদের একাধিক আস্তানা লক্ষ্য করে এসব হামলা চালায়। হামলায় মার্কিন নৌবাহিনীর যুদ্ধজাহাজ থেকে টমাহক মিসাইল নিক্ষেপ করা হয়েছিল। এসব হামলায় একাধিক আইএস জঙ্গি নিহত ও তাঁদের আস্তানা ধ্বংস হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে, তবে সঠিক সংখ্যা এখনো জানানো হয়নি।
ট্রাম্প প্রশাসনের সাম্প্রতিক বিদেশি সামরিক হস্তক্ষেপগুলোর সর্বশেষ উদাহরণ নাইজেরিয়ায় হামলা। অথচ ২০২৪ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনী প্রচারণায় তিনি যুক্তরাষ্ট্রকে ‘অন্তহীন যুদ্ধ’ থেকে বের করে আনার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন।
প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প দাবি করেছেন, এই হামলার মূল উদ্দেশ্য ছিল নাইজেরিয়ায় বসবাসরত খ্রিষ্টানদের ওপর চলমান হত্যাযজ্ঞ বন্ধ করা। তাঁর মতে, আইএস জঙ্গিরা পরিকল্পিতভাবে খ্রিষ্টানদের লক্ষ্যবস্তু বানাচ্ছে। হামলার ঘোষণা দিয়ে ট্রাম্প তাঁর ট্রুথ সোশ্যাল প্ল্যাটফর্মে লিখেছিলেন, ‘আমি আগেই এই সন্ত্রাসীদের সতর্ক করেছিলাম, তারা যদি খ্রিষ্টানদের হত্যা বন্ধ না করে, তবে তাদের চড়ম মূল্য দিতে হবে। আজ রাতে (বড়দিন) ঠিক তা-ই ঘটেছে।’
গত অক্টোবর ও নভেম্বর মাসেও প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প নাইজেরিয়ার নিরাপত্তা পরিস্থিতিকে ‘খ্রিষ্টান গণহত্যার’ শামিল বলে অভিহিত করেছিলেন।
মার্কিন প্রতিরক্ষা দপ্তরের এক কর্মকর্তা বার্তা সংস্থা এপিকে জানান, নাইজেরিয়া সরকারের অনুমোদন নিয়ে দেশটির সঙ্গে সমন্বয় করেই এসব হামলা চালানো হয়েছে। নাইজেরিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায়, এই সহযোগিতার মধ্যে গোয়েন্দা তথ্য আদান-প্রদান ও কৌশলগত সমন্বয় ছিল।
কেন নাইজেরিয়ায় হামলা চালাল ট্রাম্প প্রশাসন
অনেক আগে থেকেই যুক্তরাষ্ট্রের ডানপন্থী রাজনীতিক গোষ্ঠীগুলো নাইজেরিয়ায় খ্রিষ্টানদের ওপর নিপীড়নের অভিযোগ তুলছে। গত সেপ্টেম্বরে রিপাবলিকান সিনেটর টেড ক্রুজ কিছু নাইজেরীয় কর্মকর্তার ওপর নিষেধাজ্ঞার আহ্বান জানান। তিনি দাবি করেন, যারা ‘ইসলামপন্থী সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর মাধ্যমে খ্রিষ্টান ও অন্য ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে সহিংসতা সহজতর করছে’, তাদের নিষিদ্ধ করা উচিত।
তবে বর্তমানে বিষয়টি মার্কিন ডানপন্থী ও ইভানজেলিক্যাল খ্রিষ্টান মহলে বড় ইস্যু হয়ে দাঁড়িয়েছে। আবার এই ডানপন্থী ও ইভানজেলিক্যাল খ্রিষ্টানরাই ট্রাম্পের বড় সমর্থক। বিশ্লেষকদের মতে, নিজের সমর্থকদের তুষ্ট করতে এবং বিশ্বজুড়ে ‘খ্রিষ্টানদের রক্ষাকর্তা’ হিসেবে নিজেকে জাহির করতেই ট্রাম্প এই ত্বরিত সামরিক পদক্ষেপ নিয়েছেন।
এর আগে যুক্তরাষ্ট্রের আন্তর্জাতিক ধর্মীয় স্বাধীনতা আইনের আওতায় নাইজেরিয়াকে ‘বিশেষ উদ্বেগের দেশ’ হিসেবে চিহ্নিত করেন ট্রাম্প। বেশ কিছু মার্কিন আইনপ্রণেতা ও রক্ষণশীল খ্রিষ্টান গোষ্ঠীর লাগাতার লবিংয়ের পর এই সিদ্ধান্ত আসে। এর কিছুদিন পরই তিনি নাইজেরিয়ায় সম্ভাব্য সামরিক অভিযানের পরিকল্পনা করতে পেন্টাগনকে নির্দেশ দেন। সে সময় ট্রাম্প বলেন, নাইজেরিয়া সরকার যদি খ্রিষ্টান হত্যাকাণ্ড বন্ধ না করে, তবে তিনি ‘গানস-এ-ব্লেজিং’ অর্থাৎ পূর্ণ শক্তি নিয়ে হস্তক্ষেপ করতে পারেন।
নাইজেরিয়ায় কি আসলেই খ্রিষ্টানদের ওপর নিপীড়ন চলছে
নাইজেরিয়া আনুষ্ঠানিকভাবে একটি ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্র। দেশটির জনসংখ্যার প্রায় ৫৩ শতাংশ মুসলমান, ৪৫ শতাংশ খ্রিষ্টান এবং অন্যরা আফ্রিকার ঐতিহ্যগত কিছু ধর্মে বিশ্বাসী। খ্রিষ্টানদের ওপর সহিংসতা আন্তর্জাতিক অঙ্গনে ব্যাপক মনোযোগ পেলেও বহু বিশ্লেষকের মতে, বিষয়টি কেবল ধর্মীয় নিপীড়নের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়; এর পেছনে নানা কারণ রয়েছে।
উদাহরণ হিসেবে, যাযাবর মুসলিম পশুপালক ও খ্রিষ্টান কৃষক সম্প্রদায়ের মধ্যে প্রাণঘাতী সংঘর্ষ মূলত চারণভূমি ও পানির নিয়ন্ত্রণ নিয়ে। তবে ধর্মীয় ও জাতিগত বিভাজন এটিকে আরও জটিল করে তুলেছে। আবার অনেক বিশ্লেষকের মতে, যাজকদের অপহরণের ঘটনা ধর্মীয় বিদ্বেষের চেয়ে অর্থনৈতিক লাভের উদ্দেশ্যেই বেশি ঘটে, কারণ, তাঁরা প্রভাবশালী ব্যক্তি এবং তাঁদের অনুসারী বা প্রতিষ্ঠান দ্রুত মুক্তিপণের টাকা জোগাড় করতে পারে।
নাইজেরিয়া সরকারের অবস্থান
ট্রাম্প প্রশাসনের হামলার পর নাইজেরিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আইএস-নিধনে যুক্তরাষ্ট্রের সহযোগিতার প্রশংসা করেছে। কিন্তু খ্রিষ্টান নিপীড়নের বিষয়টির সঙ্গে মার্কিন অভিযানের কোনো সম্পর্ক আছে কি না, এ বিষয়ে কিছু বলেনি।
এক বিবৃতিতে দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায়, খ্রিষ্টান, মুসলমান কিংবা অন্য কোনো সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে পরিচালিত সব ধরনের সহিংসতাই নাইজেরিয়ার মূল্যবোধ এবং আন্তর্জাতিক শান্তি ও নিরাপত্তার প্রতি অবমাননা।
নাইজেরিয়ার বাস্তবতাও আসলে এমন। দীর্ঘদিন ধরে দেশটি নিরাপত্তা পরিস্থিতি সামাল দিতে হিমশিম খাচ্ছে। গত কয়েক বছরে দেশটিতে হাজারো মানুষ নিহত এবং শত শত মানুষ অপহৃত হয়েছে।
উত্তর-পূর্বাঞ্চলে ২০০৯ সাল থেকে বোকো হারাম ও ইসলামিক স্টেট ওয়েস্ট আফ্রিকা প্রভিন্স (আইএসডব্লিউএপি) বিদ্রোহ চালিয়ে যাচ্ছে। এতে কয়েক দশক ধরে কয়েক হাজার মানুষ নিহত এবং লাখো মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে। উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে সশস্ত্র অপরাধী চক্র, যাদের সাধারণত ‘ডাকাত’ বলা হয়, তারাও গণ-অপহরণ ও হামলা চালাচ্ছে। এমন পরিস্থিতি মুসলমান ও খ্রিষ্টান উভয় সম্প্রদায়কেই প্রভাবিত করছে।
এর আগে ট্রাম্পের অভিযোগের জবাবে নাইজেরিয়ার সরকার বিষয়টি স্বীকার করে বলেছিল, দেশটিতে কেবল খ্রিষ্টান নয়—বিভিন্ন ধর্মের মানুষই চরমপন্থী গোষ্ঠীগুলোর হাতে নির্যাতনের শিকার হচ্ছে।
গত মাসে নাইজেরিয়ার প্রেসিডেন্ট বোলা আহমেদ তিনুবু বলেন, নাইজেরিয়াকে ধর্মীয়ভাবে অসহিষ্ণু দেশ হিসেবে চিত্রিত করা বাস্তবতার প্রতিফলন নয়। তিনি বলেন, ‘ধর্মীয় স্বাধীনতা ও সহনশীলতা আমাদের সম্মিলিত পরিচয়ের একটি মূল ভিত্তি এবং এটি সব সময়ই থাকবে। নাইজেরিয়া এমন একটি দেশ, যেখানে সংবিধান সব ধর্মের নাগরিকদের সুরক্ষা নিশ্চিত করে।’
এদিকে, ‘অন্তহীন যুদ্ধ’ বন্ধের প্রতিশ্রুতি দিয়ে ক্ষমতায় এলেও নাইজেরিয়ায় ট্রাম্পের নতুন সামরিক হস্তক্ষেপ আফ্রিকার ভূরাজনীতিতে বড় ধরনের পরিবর্তনের ইঙ্গিত দিচ্ছে। অনেকে বলছেন, ‘খ্রিষ্টান নিপীড়ন’ আসলে ট্রাম্পের অজুহাত; তাঁর লক্ষ্য নাইজেরিয়ার তেলের খনি।
দ্য গার্ডিয়ান থেকে অনুবাদ করেছেন জগতপতি বর্মা

নাইজেরিয়ার সরকার খ্রিষ্টানদের ওপর নিপীড়ন ঠেকাতে ব্যর্থ—এমন অভিযোগে কয়েক সপ্তাহ ধরে সমালোচনার পর অবশেষে বড়দিনের রাতে (২৫ ডিসেম্বর) পশ্চিম আফ্রিকার দেশটিতে বিমান হামলা চালিয়েছে মার্কিন বাহিনী। সরাসরি প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নির্দেশে নাইজেরিয়ার উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় সোকোটো রাজ্যে এ হামলা চালানো হয়।
ব্রিটিশ দৈনিক দ্য গার্ডিয়ান বলছে, ট্রাম্প প্রশাসন আইএস জঙ্গিদের একাধিক আস্তানা লক্ষ্য করে এসব হামলা চালায়। হামলায় মার্কিন নৌবাহিনীর যুদ্ধজাহাজ থেকে টমাহক মিসাইল নিক্ষেপ করা হয়েছিল। এসব হামলায় একাধিক আইএস জঙ্গি নিহত ও তাঁদের আস্তানা ধ্বংস হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে, তবে সঠিক সংখ্যা এখনো জানানো হয়নি।
ট্রাম্প প্রশাসনের সাম্প্রতিক বিদেশি সামরিক হস্তক্ষেপগুলোর সর্বশেষ উদাহরণ নাইজেরিয়ায় হামলা। অথচ ২০২৪ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনী প্রচারণায় তিনি যুক্তরাষ্ট্রকে ‘অন্তহীন যুদ্ধ’ থেকে বের করে আনার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন।
প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প দাবি করেছেন, এই হামলার মূল উদ্দেশ্য ছিল নাইজেরিয়ায় বসবাসরত খ্রিষ্টানদের ওপর চলমান হত্যাযজ্ঞ বন্ধ করা। তাঁর মতে, আইএস জঙ্গিরা পরিকল্পিতভাবে খ্রিষ্টানদের লক্ষ্যবস্তু বানাচ্ছে। হামলার ঘোষণা দিয়ে ট্রাম্প তাঁর ট্রুথ সোশ্যাল প্ল্যাটফর্মে লিখেছিলেন, ‘আমি আগেই এই সন্ত্রাসীদের সতর্ক করেছিলাম, তারা যদি খ্রিষ্টানদের হত্যা বন্ধ না করে, তবে তাদের চড়ম মূল্য দিতে হবে। আজ রাতে (বড়দিন) ঠিক তা-ই ঘটেছে।’
গত অক্টোবর ও নভেম্বর মাসেও প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প নাইজেরিয়ার নিরাপত্তা পরিস্থিতিকে ‘খ্রিষ্টান গণহত্যার’ শামিল বলে অভিহিত করেছিলেন।
মার্কিন প্রতিরক্ষা দপ্তরের এক কর্মকর্তা বার্তা সংস্থা এপিকে জানান, নাইজেরিয়া সরকারের অনুমোদন নিয়ে দেশটির সঙ্গে সমন্বয় করেই এসব হামলা চালানো হয়েছে। নাইজেরিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায়, এই সহযোগিতার মধ্যে গোয়েন্দা তথ্য আদান-প্রদান ও কৌশলগত সমন্বয় ছিল।
কেন নাইজেরিয়ায় হামলা চালাল ট্রাম্প প্রশাসন
অনেক আগে থেকেই যুক্তরাষ্ট্রের ডানপন্থী রাজনীতিক গোষ্ঠীগুলো নাইজেরিয়ায় খ্রিষ্টানদের ওপর নিপীড়নের অভিযোগ তুলছে। গত সেপ্টেম্বরে রিপাবলিকান সিনেটর টেড ক্রুজ কিছু নাইজেরীয় কর্মকর্তার ওপর নিষেধাজ্ঞার আহ্বান জানান। তিনি দাবি করেন, যারা ‘ইসলামপন্থী সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর মাধ্যমে খ্রিষ্টান ও অন্য ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে সহিংসতা সহজতর করছে’, তাদের নিষিদ্ধ করা উচিত।
তবে বর্তমানে বিষয়টি মার্কিন ডানপন্থী ও ইভানজেলিক্যাল খ্রিষ্টান মহলে বড় ইস্যু হয়ে দাঁড়িয়েছে। আবার এই ডানপন্থী ও ইভানজেলিক্যাল খ্রিষ্টানরাই ট্রাম্পের বড় সমর্থক। বিশ্লেষকদের মতে, নিজের সমর্থকদের তুষ্ট করতে এবং বিশ্বজুড়ে ‘খ্রিষ্টানদের রক্ষাকর্তা’ হিসেবে নিজেকে জাহির করতেই ট্রাম্প এই ত্বরিত সামরিক পদক্ষেপ নিয়েছেন।
এর আগে যুক্তরাষ্ট্রের আন্তর্জাতিক ধর্মীয় স্বাধীনতা আইনের আওতায় নাইজেরিয়াকে ‘বিশেষ উদ্বেগের দেশ’ হিসেবে চিহ্নিত করেন ট্রাম্প। বেশ কিছু মার্কিন আইনপ্রণেতা ও রক্ষণশীল খ্রিষ্টান গোষ্ঠীর লাগাতার লবিংয়ের পর এই সিদ্ধান্ত আসে। এর কিছুদিন পরই তিনি নাইজেরিয়ায় সম্ভাব্য সামরিক অভিযানের পরিকল্পনা করতে পেন্টাগনকে নির্দেশ দেন। সে সময় ট্রাম্প বলেন, নাইজেরিয়া সরকার যদি খ্রিষ্টান হত্যাকাণ্ড বন্ধ না করে, তবে তিনি ‘গানস-এ-ব্লেজিং’ অর্থাৎ পূর্ণ শক্তি নিয়ে হস্তক্ষেপ করতে পারেন।
নাইজেরিয়ায় কি আসলেই খ্রিষ্টানদের ওপর নিপীড়ন চলছে
নাইজেরিয়া আনুষ্ঠানিকভাবে একটি ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্র। দেশটির জনসংখ্যার প্রায় ৫৩ শতাংশ মুসলমান, ৪৫ শতাংশ খ্রিষ্টান এবং অন্যরা আফ্রিকার ঐতিহ্যগত কিছু ধর্মে বিশ্বাসী। খ্রিষ্টানদের ওপর সহিংসতা আন্তর্জাতিক অঙ্গনে ব্যাপক মনোযোগ পেলেও বহু বিশ্লেষকের মতে, বিষয়টি কেবল ধর্মীয় নিপীড়নের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়; এর পেছনে নানা কারণ রয়েছে।
উদাহরণ হিসেবে, যাযাবর মুসলিম পশুপালক ও খ্রিষ্টান কৃষক সম্প্রদায়ের মধ্যে প্রাণঘাতী সংঘর্ষ মূলত চারণভূমি ও পানির নিয়ন্ত্রণ নিয়ে। তবে ধর্মীয় ও জাতিগত বিভাজন এটিকে আরও জটিল করে তুলেছে। আবার অনেক বিশ্লেষকের মতে, যাজকদের অপহরণের ঘটনা ধর্মীয় বিদ্বেষের চেয়ে অর্থনৈতিক লাভের উদ্দেশ্যেই বেশি ঘটে, কারণ, তাঁরা প্রভাবশালী ব্যক্তি এবং তাঁদের অনুসারী বা প্রতিষ্ঠান দ্রুত মুক্তিপণের টাকা জোগাড় করতে পারে।
নাইজেরিয়া সরকারের অবস্থান
ট্রাম্প প্রশাসনের হামলার পর নাইজেরিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আইএস-নিধনে যুক্তরাষ্ট্রের সহযোগিতার প্রশংসা করেছে। কিন্তু খ্রিষ্টান নিপীড়নের বিষয়টির সঙ্গে মার্কিন অভিযানের কোনো সম্পর্ক আছে কি না, এ বিষয়ে কিছু বলেনি।
এক বিবৃতিতে দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায়, খ্রিষ্টান, মুসলমান কিংবা অন্য কোনো সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে পরিচালিত সব ধরনের সহিংসতাই নাইজেরিয়ার মূল্যবোধ এবং আন্তর্জাতিক শান্তি ও নিরাপত্তার প্রতি অবমাননা।
নাইজেরিয়ার বাস্তবতাও আসলে এমন। দীর্ঘদিন ধরে দেশটি নিরাপত্তা পরিস্থিতি সামাল দিতে হিমশিম খাচ্ছে। গত কয়েক বছরে দেশটিতে হাজারো মানুষ নিহত এবং শত শত মানুষ অপহৃত হয়েছে।
উত্তর-পূর্বাঞ্চলে ২০০৯ সাল থেকে বোকো হারাম ও ইসলামিক স্টেট ওয়েস্ট আফ্রিকা প্রভিন্স (আইএসডব্লিউএপি) বিদ্রোহ চালিয়ে যাচ্ছে। এতে কয়েক দশক ধরে কয়েক হাজার মানুষ নিহত এবং লাখো মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে। উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে সশস্ত্র অপরাধী চক্র, যাদের সাধারণত ‘ডাকাত’ বলা হয়, তারাও গণ-অপহরণ ও হামলা চালাচ্ছে। এমন পরিস্থিতি মুসলমান ও খ্রিষ্টান উভয় সম্প্রদায়কেই প্রভাবিত করছে।
এর আগে ট্রাম্পের অভিযোগের জবাবে নাইজেরিয়ার সরকার বিষয়টি স্বীকার করে বলেছিল, দেশটিতে কেবল খ্রিষ্টান নয়—বিভিন্ন ধর্মের মানুষই চরমপন্থী গোষ্ঠীগুলোর হাতে নির্যাতনের শিকার হচ্ছে।
গত মাসে নাইজেরিয়ার প্রেসিডেন্ট বোলা আহমেদ তিনুবু বলেন, নাইজেরিয়াকে ধর্মীয়ভাবে অসহিষ্ণু দেশ হিসেবে চিত্রিত করা বাস্তবতার প্রতিফলন নয়। তিনি বলেন, ‘ধর্মীয় স্বাধীনতা ও সহনশীলতা আমাদের সম্মিলিত পরিচয়ের একটি মূল ভিত্তি এবং এটি সব সময়ই থাকবে। নাইজেরিয়া এমন একটি দেশ, যেখানে সংবিধান সব ধর্মের নাগরিকদের সুরক্ষা নিশ্চিত করে।’
এদিকে, ‘অন্তহীন যুদ্ধ’ বন্ধের প্রতিশ্রুতি দিয়ে ক্ষমতায় এলেও নাইজেরিয়ায় ট্রাম্পের নতুন সামরিক হস্তক্ষেপ আফ্রিকার ভূরাজনীতিতে বড় ধরনের পরিবর্তনের ইঙ্গিত দিচ্ছে। অনেকে বলছেন, ‘খ্রিষ্টান নিপীড়ন’ আসলে ট্রাম্পের অজুহাত; তাঁর লক্ষ্য নাইজেরিয়ার তেলের খনি।
দ্য গার্ডিয়ান থেকে অনুবাদ করেছেন জগতপতি বর্মা

ডাচ রাষ্ট্রদূতের নিবন্ধে রোহিঙ্গা সংকটের নতুন বাস্তবতা তুলে ধরা হয়েছে, যেখানে বাংলাদেশের উদ্যোগে ২০২৫ সালে একটি উচ্চপর্যায়ের আন্তর্জাতিক সম্মেলনের পরিকল্পনা করা হচ্ছে। নিবন্ধে আরাকান আর্মির উত্থান, রাখাইন রাজ্যের রাজনৈতিক পরিবর্তন এবং রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের চ্যালেঞ্জসহ বাংলাদেশ-মিয়ানমার দ্বিপক্ষীয় স
০১ জানুয়ারি ২০২৫
গত ২৬ ডিসেম্বর বিশ্বের প্রথম জাতিসংঘ সদস্য দেশ হিসেবে সোমালিল্যান্ডকে একটি সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি দিয়েছে ইসরায়েল। প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু এই সিদ্ধান্তকে ‘আব্রাহাম অ্যাকর্ডস’-এর একটি সাহসী সম্প্রসারণ হিসেবে বর্ণনা করেছেন।
৪ ঘণ্টা আগে
মধ্যপ্রাচ্যের মূল ভূখণ্ড হারানোর পর আইএস এখন মূলত স্বায়ত্তশাসিত বিভিন্ন সেলের মাধ্যমে কার্যক্রম পরিচালনা করছে। বর্তমানে নাইজেরিয়া, সোমালিয়া, কঙ্গো এবং সাহেল অঞ্চলে আইএস অত্যন্ত শক্তিশালী। নাইজেরিয়ার উত্তর-পূর্বাঞ্চলে ‘আইএসডব্লিউএপি’ এবং উত্তর-পশ্চিমে বিভিন্ন অনুসারী গোষ্ঠী সক্রিয় রয়েছে।
১৯ ঘণ্টা আগে
ভেনেজুয়েলার চলমান রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক সংকট ধীরে ধীরে একটি আঞ্চলিক সমস্যা থেকে বৈশ্বিক ভূ-রাজনৈতিক উত্তেজনায় রূপ নিচ্ছে। সাম্প্রতিক সময়ে যুক্তরাষ্ট্রের কড়া অবস্থান এবং সম্ভাব্য সামরিক হস্তক্ষেপের ইঙ্গিত এই সংকটকে আরও গভীর করেছে।
৬ দিন আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

ভেনেজুয়েলার চলমান রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক সংকট ধীরে ধীরে একটি আঞ্চলিক সমস্যা থেকে বৈশ্বিক ভূ-রাজনৈতিক উত্তেজনায় রূপ নিচ্ছে। সাম্প্রতিক সময়ে যুক্তরাষ্ট্রের কড়া অবস্থান এবং সম্ভাব্য সামরিক হস্তক্ষেপের ইঙ্গিত এই সংকটকে আরও গভীর করেছে। এই প্রেক্ষাপটে ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট লুইজ ইনাসিয়ো লুলা দা সিলভা ভেনেজুয়েলায় মার্কিন সামরিক হস্তক্ষেপ মানবিক বিপর্যয় ডেকে আনবে বলে সতর্ক করেছেন। তাঁর মতে, এই সতর্কতা শুধু ভেনেজুয়েলাকে ঘিরে নয়—পুরো দক্ষিণ আমেরিকার ভবিষ্যৎ নিরাপত্তার প্রশ্নও তুলে ধরছে।
ভেনেজুয়েলার সংকটের মূল কারণ দেশটির দীর্ঘস্থায়ী রাজনৈতিক অস্থিরতা, বিতর্কিত নির্বাচন, অর্থনৈতিক অব্যবস্থাপনা এবং মানবাধিকার পরিস্থিতি। প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরোর সরকারকে যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপের একটি অংশ কর্তৃত্ববাদী ও অগণতান্ত্রিক বলে মনে করে। এর জবাবে ওয়াশিংটন একের পর এক নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে। এসব নিষেধাজ্ঞার মূল লক্ষ্য ভেনেজুয়েলার তেল রপ্তানি, যা দেশটির আয়ের প্রধান উৎস।
ভেনেজুয়েলা বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ তেল মজুতের অধিকারী। ফলে তাদের তেল শুধু অর্থনীতি নয়, কূটনীতিরও কেন্দ্রে অবস্থান করছে। যুক্তরাষ্ট্র মনে করে, ভেনেজুয়েলার তেল বিক্রির পথ বন্ধ করতে পারলে মাদুরো সরকার দুর্বল হবে। এই লক্ষ্যেই সাম্প্রতিক সময়ে দেশটির নিষেধাজ্ঞাভুক্ত তেল ট্যাংকারগুলোকে অবরোধের মতো কঠোর পদক্ষেপ নিয়েছে মার্কিন বাহিনী। তবে এই পদক্ষেপকে সরাসরি যুদ্ধের দিকে ঠেলে দেওয়ার ঝুঁকি হিসেবে দেখছেন দক্ষিণ আমেরিকার অনেক নেতা।
ব্রাজিল ও মেক্সিকোর মতো লাতিন শক্তিগুলো এই কারণেই যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক হস্তক্ষেপের সম্ভাবনার বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে। ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট লুলা স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন, দক্ষিণ আমেরিকার ইতিহাস বহিঃশক্তির সামরিক হস্তক্ষেপের তিক্ত অভিজ্ঞতায় ভরা। ফকল্যান্ড যুদ্ধের চার দশক পর আবারও কোনো অন্য মহাদেশীয় শক্তির সামরিক উপস্থিতি এই মহাদেশকে অস্থিতিশীল করে তুলতে পারে—এমন আশঙ্কাই তিনি প্রকাশ করেছেন।
এদিকে রাশিয়া ও চীন ভেনেজুয়েলার সরকারের প্রতি সমর্থন দিয়ে যাচ্ছে। রাশিয়ার ক্ষেত্রে এটি যুক্তরাষ্ট্রের প্রভাব মোকাবিলার কৌশল, আর চীনের জন্য এটি তেল ও ঋণনির্ভর অর্থনৈতিক স্বার্থের প্রশ্ন। ফলে ভেনেজুয়েলা ক্রমেই যুক্তরাষ্ট্র বনাম রাশিয়া–চীন প্রভাব বিস্তারের আরেকটি ময়দানে পরিণত হচ্ছে।
‘মার্কোসুর’ সম্মেলনে লাতিন আমেরিকার দেশগুলো যে যৌথ অবস্থান নিয়েছে, তা এই বাস্তবতাকেই প্রতিফলিত করে। তারা ভেনেজুয়েলায় গণতন্ত্র ও মানবাধিকার রক্ষার কথা বলেছে, তবে স্পষ্টভাবে সামরিক পথ প্রত্যাখ্যান করেছে। তাদের মতে, সংকটের সমাধান হতে পারে কেবল সংলাপ ও শান্তিপূর্ণ কূটনীতির মাধ্যমে।
সব মিলিয়ে ভেনেজুয়েলার সংকট এখন আর একটি দেশের অভ্যন্তরীণ সমস্যা নয়। তেল, আদর্শিক দ্বন্দ্ব, আঞ্চলিক নিরাপত্তা ও বৈশ্বিক ক্ষমতার লড়াই—সবকিছু মিলিয়ে এটি আন্তর্জাতিক রাজনীতির এক স্পর্শকাতর সংঘাতক্ষেত্রে পরিণত হয়েছে।

ভেনেজুয়েলার চলমান রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক সংকট ধীরে ধীরে একটি আঞ্চলিক সমস্যা থেকে বৈশ্বিক ভূ-রাজনৈতিক উত্তেজনায় রূপ নিচ্ছে। সাম্প্রতিক সময়ে যুক্তরাষ্ট্রের কড়া অবস্থান এবং সম্ভাব্য সামরিক হস্তক্ষেপের ইঙ্গিত এই সংকটকে আরও গভীর করেছে। এই প্রেক্ষাপটে ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট লুইজ ইনাসিয়ো লুলা দা সিলভা ভেনেজুয়েলায় মার্কিন সামরিক হস্তক্ষেপ মানবিক বিপর্যয় ডেকে আনবে বলে সতর্ক করেছেন। তাঁর মতে, এই সতর্কতা শুধু ভেনেজুয়েলাকে ঘিরে নয়—পুরো দক্ষিণ আমেরিকার ভবিষ্যৎ নিরাপত্তার প্রশ্নও তুলে ধরছে।
ভেনেজুয়েলার সংকটের মূল কারণ দেশটির দীর্ঘস্থায়ী রাজনৈতিক অস্থিরতা, বিতর্কিত নির্বাচন, অর্থনৈতিক অব্যবস্থাপনা এবং মানবাধিকার পরিস্থিতি। প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরোর সরকারকে যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপের একটি অংশ কর্তৃত্ববাদী ও অগণতান্ত্রিক বলে মনে করে। এর জবাবে ওয়াশিংটন একের পর এক নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে। এসব নিষেধাজ্ঞার মূল লক্ষ্য ভেনেজুয়েলার তেল রপ্তানি, যা দেশটির আয়ের প্রধান উৎস।
ভেনেজুয়েলা বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ তেল মজুতের অধিকারী। ফলে তাদের তেল শুধু অর্থনীতি নয়, কূটনীতিরও কেন্দ্রে অবস্থান করছে। যুক্তরাষ্ট্র মনে করে, ভেনেজুয়েলার তেল বিক্রির পথ বন্ধ করতে পারলে মাদুরো সরকার দুর্বল হবে। এই লক্ষ্যেই সাম্প্রতিক সময়ে দেশটির নিষেধাজ্ঞাভুক্ত তেল ট্যাংকারগুলোকে অবরোধের মতো কঠোর পদক্ষেপ নিয়েছে মার্কিন বাহিনী। তবে এই পদক্ষেপকে সরাসরি যুদ্ধের দিকে ঠেলে দেওয়ার ঝুঁকি হিসেবে দেখছেন দক্ষিণ আমেরিকার অনেক নেতা।
ব্রাজিল ও মেক্সিকোর মতো লাতিন শক্তিগুলো এই কারণেই যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক হস্তক্ষেপের সম্ভাবনার বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে। ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট লুলা স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন, দক্ষিণ আমেরিকার ইতিহাস বহিঃশক্তির সামরিক হস্তক্ষেপের তিক্ত অভিজ্ঞতায় ভরা। ফকল্যান্ড যুদ্ধের চার দশক পর আবারও কোনো অন্য মহাদেশীয় শক্তির সামরিক উপস্থিতি এই মহাদেশকে অস্থিতিশীল করে তুলতে পারে—এমন আশঙ্কাই তিনি প্রকাশ করেছেন।
এদিকে রাশিয়া ও চীন ভেনেজুয়েলার সরকারের প্রতি সমর্থন দিয়ে যাচ্ছে। রাশিয়ার ক্ষেত্রে এটি যুক্তরাষ্ট্রের প্রভাব মোকাবিলার কৌশল, আর চীনের জন্য এটি তেল ও ঋণনির্ভর অর্থনৈতিক স্বার্থের প্রশ্ন। ফলে ভেনেজুয়েলা ক্রমেই যুক্তরাষ্ট্র বনাম রাশিয়া–চীন প্রভাব বিস্তারের আরেকটি ময়দানে পরিণত হচ্ছে।
‘মার্কোসুর’ সম্মেলনে লাতিন আমেরিকার দেশগুলো যে যৌথ অবস্থান নিয়েছে, তা এই বাস্তবতাকেই প্রতিফলিত করে। তারা ভেনেজুয়েলায় গণতন্ত্র ও মানবাধিকার রক্ষার কথা বলেছে, তবে স্পষ্টভাবে সামরিক পথ প্রত্যাখ্যান করেছে। তাদের মতে, সংকটের সমাধান হতে পারে কেবল সংলাপ ও শান্তিপূর্ণ কূটনীতির মাধ্যমে।
সব মিলিয়ে ভেনেজুয়েলার সংকট এখন আর একটি দেশের অভ্যন্তরীণ সমস্যা নয়। তেল, আদর্শিক দ্বন্দ্ব, আঞ্চলিক নিরাপত্তা ও বৈশ্বিক ক্ষমতার লড়াই—সবকিছু মিলিয়ে এটি আন্তর্জাতিক রাজনীতির এক স্পর্শকাতর সংঘাতক্ষেত্রে পরিণত হয়েছে।

ডাচ রাষ্ট্রদূতের নিবন্ধে রোহিঙ্গা সংকটের নতুন বাস্তবতা তুলে ধরা হয়েছে, যেখানে বাংলাদেশের উদ্যোগে ২০২৫ সালে একটি উচ্চপর্যায়ের আন্তর্জাতিক সম্মেলনের পরিকল্পনা করা হচ্ছে। নিবন্ধে আরাকান আর্মির উত্থান, রাখাইন রাজ্যের রাজনৈতিক পরিবর্তন এবং রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের চ্যালেঞ্জসহ বাংলাদেশ-মিয়ানমার দ্বিপক্ষীয় স
০১ জানুয়ারি ২০২৫
গত ২৬ ডিসেম্বর বিশ্বের প্রথম জাতিসংঘ সদস্য দেশ হিসেবে সোমালিল্যান্ডকে একটি সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি দিয়েছে ইসরায়েল। প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু এই সিদ্ধান্তকে ‘আব্রাহাম অ্যাকর্ডস’-এর একটি সাহসী সম্প্রসারণ হিসেবে বর্ণনা করেছেন।
৪ ঘণ্টা আগে
মধ্যপ্রাচ্যের মূল ভূখণ্ড হারানোর পর আইএস এখন মূলত স্বায়ত্তশাসিত বিভিন্ন সেলের মাধ্যমে কার্যক্রম পরিচালনা করছে। বর্তমানে নাইজেরিয়া, সোমালিয়া, কঙ্গো এবং সাহেল অঞ্চলে আইএস অত্যন্ত শক্তিশালী। নাইজেরিয়ার উত্তর-পূর্বাঞ্চলে ‘আইএসডব্লিউএপি’ এবং উত্তর-পশ্চিমে বিভিন্ন অনুসারী গোষ্ঠী সক্রিয় রয়েছে।
১৯ ঘণ্টা আগে
নাইজেরিয়া আনুষ্ঠানিকভাবে একটি ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্র। দেশটির জনসংখ্যার প্রায় ৫৩ শতাংশ মুসলমান, ৪৫ শতাংশ খ্রিষ্টান এবং অন্যরা আফ্রিকার ঐতিহ্যগত কিছু ধর্মে বিশ্বাসী। খ্রিষ্টানদের ওপর সহিংসতা আন্তর্জাতিক অঙ্গনে ব্যাপক মনোযোগ পেলেও বহু বিশ্লেষকের মতে, বিষয়টি কেবল ধর্মীয় নিপীড়নের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়, এর পেছন
১ দিন আগে