Ajker Patrika

ঢাকার খাল উদ্ধার: ক্ষমতার দাপটে থেমে যায় উচ্ছেদ অভিযান

সাইফুল মাসুম, ঢাকা
ঢাকার খাল উদ্ধার: ক্ষমতার দাপটে থেমে যায় উচ্ছেদ অভিযান

দখলে অস্তিত্বহীন ঢাকা শহরের বেশির ভাগ খাল। যা আছে, তা-ও দূষণে অস্তিত্বের সংকটে পড়েছে। এই পরিস্থিতিতে তিন বছর ধরে খাল উদ্ধারে উচ্ছেদ অভিযানসহ নানা কার্যক্রম পরিচালনা করছে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি)। বেশ ঘটা করে খাল উদ্ধারের আয়োজন করা হলেও বড় অংশ থেকে যাচ্ছে দখলদারদের কবজায়। অভিযোগ রয়েছে, অপেক্ষাকৃত দুর্বল দখলদারদের স্থাপনা উচ্ছেদ হলেও ধরাছোঁয়ার বাইরে থাকে ক্ষমতাধরেরা।

সম্প্রতি রাজধানীর মোহাম্মদপুরে সাতমসজিদ হাউজিংয়ে রামচন্দ্রপুর খাল দখল করে গড়ে ওঠা গবাদিপশুর খামার সাদিক অ্যাগ্রোসহ কয়েকটি স্থাপনা উচ্ছেদ করেছে ডিএনসিসি। উদ্ধার করা খালের জায়গায় পানিপ্রবাহ নিশ্চিত করতে খননকাজও শুরু করা হয়েছে। সিটি করপোরেশন থেকে জানানো হয়, সিএস দাগ ধরে দখল হওয়া খাল পুনরদ্ধার করা হবে। দখলদার যতই ক্ষমতাধর হোক, কোনো ছাড় পাবে না।

কিন্তু সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে উল্টো চিত্র। সাদিক অ্যাগ্রোর পেছনে খাল উদ্ধার থেমে গেছে। সেখানে খালের ওপর অনেক অবৈধ স্থাপনা গড়ে উঠলেও তা নিয়ে ভ্রুক্ষেপ নেই ডিএনসিসির কর্তাব্যক্তিদের। খাল খননেরও কোনো তোড়জোড় নেই।

নগর-পরিকল্পনাবিদ অধ্যাপক আদিল মুহাম্মদ খান আজকের পত্রিকাকে বলেন, খাল উদ্ধারে দুর্বল দখলদারেরা উচ্ছেদের শিকার হয়। সম্প্রতি সাদিক অ্যাগ্রোর সঙ্গে নিম্ন আয়ের লোকজনের বসতিও উচ্ছেদ হয়েছে। অথচ আশপাশের বড় বড় ভবন স্পর্শ করা হয়নি। পাশে গড়ে ওঠা একটি প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ে আঁচড় লাগেনি। দেশের আইন সবার জন্য সমান, অথচ সামাজিক, রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিকভাবে যারা শক্তিশালী, তাদের জন্য বেঁকে যায়। বেঁকে যাওয়া আইনের শাসন দেশের জন্য প্রধান সমস্যা।

 আইনের শাসন নিশ্চিত হলে খাল উদ্ধারের মাধ্যমে ঢাকার জলাবদ্ধতা নিরসন সহজ হবে। সিএস ম্যাপ অনুযায়ী রামচন্দ্রপুর খালের মোট দৈর্ঘ্য ৩ দশমিক ৬৫ কিলোমিটার। খালটি তুরাগ থেকে উৎপন্ন হয়ে রামচন্দ্রপুর মৌজার রামচন্দ্রপুর, রায়েরবাজার বধ্যভূমি ও সামরিক কবরস্থানের ভেতর দিয়ে গিয়ে পড়েছে বুড়িগঙ্গায়। বছিলা গার্ডেন সিটি থেকে খালের আরেকটি শাখা সাতমসজিদ হাউজিং, মোহাম্মদপুর-গাবতলী বেড়িবাঁধ ও খ্রিষ্টান কবরস্থান হয়ে মোহাম্মদপুর এলাকায় প্রবেশ করেছে। সাদিক অ্যাগ্রো-সংলগ্ন রামচন্দ্রপুর খালের খালের ওই শাখা ছিল প্রায় ১০০ ফুট চওড়া। এখন সিএস দাগে দেখানো প্রবহমান খালের ঠিক ওপরে সম্প্রতি ‘সুরের ধারা’ গানের স্কুলের নামে একতলা স্থাপনা করা হয়েছে। প্রতিষ্ঠানটি তৈরি করেছেন রবীন্দ্রসংগীতশিল্পী রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যা। সুরের ধারা থেকে জানানো হয়েছে, তারা জেলা প্রশাসন থেকে জায়গাটি বন্দোবস্ত নিয়েছে। অথচ জলাধার রক্ষা আইন অনুসারে খালের জায়গায় বন্দোবস্ত দেওয়ার কোনো সুযোগ নেই। অভিযোগ রয়েছে, সদ্য ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের ক্ষমতাশালী ব্যক্তিদের সঙ্গে বন্যার সম্পর্ক থাকায় খালের মধ্যে স্থায়ী স্থাপনা তৈরির সুযোগ পেয়েছেন তিনি।

সুরের ধারার উত্তর পাশে রয়েছে ইউল্যাবের (ইউনিভার্সিটি অব লিবারেল আর্টস) ক্যাম্পাস। দক্ষিণ পাশে রয়েছে কয়েকটি ছোট-বড় স্থাপনা। এর মধ্যে ‘দারোগা বাড়ি’ নামে একটি আটতলা ভবন রয়েছে। প্রায় চার বছর আগে ভবনটি নির্মাণ করা হয়েছে। সিএস নকশা যাচাই করে দেখা গেছে, সাতমসজিদ হাউজিংয়ের ডি ব্লকের ৪/বি, রোড নম্বর ১/এ, ঠিকানার ভবনটির বড় একটি অংশ খালের জায়গায় পড়েছে। তা ছাড়া ভবনটি তৈরিতে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) কোনো অনুমোদনও নেওয়া হয়নি। 
জানা গেছে, গত বছর সেনাবাহিনীর সহযোগিতায় সিটি করপোরেশন খালের সীমানা পিলার বসানোর সময় দারোগা বাড়ি ভবনের একটি অংশ ভেঙে দেওয়া হয়। তবে ভবনমালিকেরা পুনরায় তা মেরামত করে নিয়েছেন। আটতলা ভবনের ১০ জন মালিকের মধ্যে দুজন পুলিশ সদস্য রয়েছেন। তাঁরা হলেন এসআই মো. ময়নুল ইসলাম (মনিরুল) ও পুলিশ পরিদর্শক মো. হাফিজুর রহমান। ভবন তৈরির সময় এই দুই পুলিশ সদস্য মোহাম্মদপুর থানায় কর্মরত ছিলেন।

জানতে চাইলে এসআই মো. ময়নুল ইসলাম আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের ভবন থেকে ডিসি পিলার অনেক দূরে রয়েছে। ভবনের যে অংশ বাইরে ছিল, সেটা আমরা ভেঙে দিয়েছি। বন্যা চৌধুরী খালের মাঝখানে কীভাবে বিল্ডিং করে রেখেছেন। তিনি বেড়িবাঁধের ওপর পাতের বেড়া করে রেখেছেন, ওটা তো সরকারি জায়গা। ওটা সিটি করপোরেশন ভাঙে না কেন?’

ডিএনসিসির তথ্য অনুসারে, সেনাবাহিনীর সহযোগিতায় ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন এলাকার ২৯টি খালের মধ্যে ২৪ খালের বেশির ভাগ অংশে সীমানা নির্ধারণ করে ৯৮০টি পিলার বসানো হয়েছে। প্রস্তাবনা রয়েছে আরও ৭৭৭টির। এগুলোর মধ্যে রামচন্দ্রপুর খালে ২০১টি পিলার বসানো হয়েছে। এই খালে আরও ৪২টি পিলার বসানোর প্রস্তাবনা রয়েছে। তবে সাদিক অ্যাগ্রো, সুরের ধারা ও দারোগা বাড়ির আশপাশে সেনাবাহিনীর বসানো সীমানা পিলারের কোনো অস্তিত্ব পাওয়া যায়নি।

স্থানীয় কাউন্সিলর (ডিএনসিসি-৩৩ নম্বর ওয়ার্ড) আসিফ আহমেদ বলেন, ‘খালকে সবাই বাপের পৈতৃক সম্পত্তি মনে করে। ডানে-বামে সব দিকে দখল করে। অনেকে দেড় কাঠা জমির মালিক, কিন্তু দখল করে আছে তিন কাঠা। এত দিন ধরে খাল ভরাট করে দখল করা হয়েছে।’ খালের অনেক জায়গা উদ্ধার করা হয়েছে বলেও জানান তিনি।

স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, নব্বই দশকের আগে খালটি ১০০ ফুটের বেশি চওড়া ছিল। তখন এই খালে নৌকা ও মালবাহী জাহাজ চলাচল করত। ওই সময় মোহাম্মদপুর-গাবতলী বেড়িবাঁধ তৈরি করা হলে খালটির পানিপ্রবাহ থেমে যায়। এই তথ্যের সত্যতা মেলে বেড়িবাঁধের ভেতরে খ্রিষ্টান কবরস্থানের ঠিক মাঝখানে সেনাবাহিনীর বসানো একটি সীমানা পিলার দেখে। খ্রিষ্টান কবরস্থানের ইনচার্জ ভুট্টো মারিন্দা জানান, ৪০ বছর আগে যখন কবরস্থান তৈরি করা হয়, তখন এক পাশে খাল সচল ছিল।

বেড়িবাঁধ হওয়ার পর খালের বাকি অংশও কবরস্থান হিসেবে ব্যবহার শুরু হয়। এক বছর আগে সেনাবাহিনীর লোকজন কবরস্থানের মধ্যে সীমানা পিলার বসিয়ে গেছেন।
তবে সাদিক অ্যাগ্রোর পাশ থেকে বেড়িবাঁধ পর্যন্ত প্রায় আধা কিলোমিটারজুড়ে কোনো খালের অস্তিত্ব নেই। চলতি বছরের জানুয়ারিতে সুরের ধারার সামনে বেড়িবাঁধের পাশে জাকের ডেইরি নামে একটি গরুর ফার্মসহ কিছু স্থাপনা খালের জায়গায় থাকায় উচ্ছেদ করেছে ডিএনসিসি। এখন সেসব জায়গায় খেলার মাঠের নির্ধারিত জায়গা চিহ্নিত করে সাইনবোর্ড বসিয়েছে সিটি করপোরেশন। খালের আরও কিছু খালি জায়গায় মোহাম্মদপুর নতুন থানার নির্ধারিত স্থান লেখা সাইনবোর্ড রয়েছে।

জানতে চাইলে ডিএনসিসির অঞ্চল-৫-এর আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা মোতাকাব্বীর আহমেদ বলেন, ‘সাদিক অ্যাগ্রোর পেছনে কিছু জায়গা আছে, সেখানে আমরা পার্ক করব। আর সুরের ধারা আমার জানামতে সরকারের (জেলা প্রশাসক) কাছ থেকে স্থায়ী বন্দোবস্ত নিয়েছে। তাই ওটা নিয়ে আমাদের কিছু বলার নেই।’

এদিকে কয়েক মাস আগে রামচন্দ্রপুরের বছিলা গার্ডেন সিটির কিছু অংশে উচ্ছেদ অভিযান হলেও অন্য প্রায় এক কিলোমিটার খালের মধ্যে দেয়াল তুলে প্লট বানানো রয়েছে। আবাসন কোম্পানি বছিলা গার্ডেন সিটি প্লটের ভেতর বালু ভরাট করেছে। ঘেরাও করা প্লটের মধ্যে সেনাবাহিনীর বসানো খালের সীমানা পিলার দেখা গেছে। জানতে চাইলে বছিলা গার্ডেন সিটির এমডি শামীম আহমেদ বলেন, ‘আমাকে বলেন কেন? সিটি করপোরেশন তো মাপজোখ করে দিছে।’

বুড়িগঙ্গা থেকে রায়েরবাজার বধ্যভূমি স্মৃতিসৌধসংলগ্ন কবরস্থানের মধ্য দিয়ে লাউতলা খাল ও রামচন্দ্রপুর খালের সঙ্গে ১৫ বছর আগেও যুক্ত ছিল হাইক্কার খাল। কবরস্থানের উন্নয়ন প্রকল্প ও দখলদারদের কবলে পড়ে একসময়ের প্রবহমান খালটি এখন মৃতপ্রায়। খালের মধ্যে ৫ থেকে ১০ তলা অনেক অবৈধ ভবন তৈরি করা হয়েছে। গত এপ্রিল মাসে ডিএনসিসির দ্বিতীয় পরিষদের ২৬তম করপোরেশন সভায় হাইক্কার খাল থেকে অবৈধ দখল উচ্ছেদ করে নৌকা চলাচলের ব্যবস্থা করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। কিন্তু সিদ্ধান্তের চার মাসেও প্রভাবশালী দখলদারদের চাপে দৃশ্যমান কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

বিদেশে নেওয়ার অবস্থায় নেই খালেদা জিয়া

‘আলেম-ওলামাদের গ্রেপ্তার করলে ডিসি-এসপিদের খোলা মাঠে বিচার করা হবে’

বিশ্বকাপে কার খেলা কবে দেখে নিন

আজকের রাশিফল: সন্ধ্যায় অচেনা নম্বর থেকে ‘দারুণ অফার’ আসবে, ইগনোর করুন

পাকিস্তানি স্ত্রীকে করাচিতে ফেলে ভারতে দ্বিতীয় বিয়ের প্রস্তুতি, স্বামীর বিচার চেয়ে মোদির কাছে আবেদন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় শেষ সাক্ষীর জেরা চলছে

বাসস, ঢাকা  
সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ফাইল ছবি
সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ফাইল ছবি

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।

আজ সোমবার বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১-এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) মো. আলমগীরের জেরা শুরু করেন রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী আমীর হোসেন। আইনজীবী আমীর হোসেন পলাতক আসামি শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে শুনানি করছেন। এর আগে গত মঙ্গলবার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. আলমগীরের সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন হয়।

এই মামলার শুনানিতে এর আগে গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম প্রতীক শহীদ আবু সাঈদের বাবাসহ স্বজনহারা পরিবারের একাধিক সদস্য সাক্ষ্য দিয়েছেন। এ ছাড়া মামলার গুরুত্বপূর্ণ ‘স্টার উইটনেস’ হিসেবে সাক্ষ্য দেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক এবং জুলাই আন্দোলনের অন্যতম নেতৃত্বদানকারী নাহিদ ইসলাম এবং দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান।

গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে আওয়ামী লীগ সরকার, তাদের দলীয় ক্যাডার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করে বলে অভিযোগ ওঠে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে শেখ হাসিনা, তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং তৎকালীন আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে গত ১০ জুলাই অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল-১।

পরবর্তীকালে, এই মামলার অন্যতম আসামি সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন দোষ স্বীকার করে ঘটনার সত্যতা উদ্‌ঘাটনে রাজসাক্ষী (অ্যাপ্রোভার) হওয়ার জন্য ট্রাইব্যুনালে আবেদন করেন। ট্রাইব্যুনাল তাঁর আবেদন মঞ্জুর করলে তিনি রাজসাক্ষী হিসেবে এই মামলায় সাক্ষ্য দেন।

মামলার প্রসিকিউশন পক্ষে শুনানি করছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম এবং গাজী এসএইচ তামিম। শুনানিতে তাঁদের সঙ্গে অপর প্রসিকিউটররাও উপস্থিত ছিলেন।

অন্যদিকে, এই মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের পক্ষে আছেন আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ।

মানবতাবিরোধী অপরাধের এই মামলা ছাড়াও ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আরও দুটি মামলা বিচারাধীন। এর মধ্যে একটি মামলায় আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে সংঘটিত গুম-খুনের ঘটনায় তাঁকে আসামি করা হয়েছে। অন্য মামলাটি হলো রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে হত্যাকাণ্ড নিয়ে। এই তিনটি মামলার বিচারকাজই বর্তমানে দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে চলমান।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

বিদেশে নেওয়ার অবস্থায় নেই খালেদা জিয়া

‘আলেম-ওলামাদের গ্রেপ্তার করলে ডিসি-এসপিদের খোলা মাঠে বিচার করা হবে’

বিশ্বকাপে কার খেলা কবে দেখে নিন

আজকের রাশিফল: সন্ধ্যায় অচেনা নম্বর থেকে ‘দারুণ অফার’ আসবে, ইগনোর করুন

পাকিস্তানি স্ত্রীকে করাচিতে ফেলে ভারতে দ্বিতীয় বিয়ের প্রস্তুতি, স্বামীর বিচার চেয়ে মোদির কাছে আবেদন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ পাওয়ার আশায় সাগরে জেলেরা

  • এবার ভারতের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে নিষেধাজ্ঞা দেয় সরকার।
  • গতকাল দিনভর ছিল উপকূলের জেলে পল্লিগুলোতে ব্যস্ততা।
মাছ শিকারের নিষেধাজ্ঞা শেষ হয়েছে বুধবার রাতে। এর আগে দিনভর সাগরে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন জেলেরা। অনেকে দেখে নেন ট্রলার ঠিকঠাক আছে কি না। কেউ আবার জালের ছেঁড়া অংশ সেলাই করেন। ছবিটি কক্সবাজার-টেকনাফ মেরিন ড্রাইভের খুরেরমুখ এলাকার। ছবি: আজকের পত্রিকা
মাছ শিকারের নিষেধাজ্ঞা শেষ হয়েছে বুধবার রাতে। এর আগে দিনভর সাগরে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন জেলেরা। অনেকে দেখে নেন ট্রলার ঠিকঠাক আছে কি না। কেউ আবার জালের ছেঁড়া অংশ সেলাই করেন। ছবিটি কক্সবাজার-টেকনাফ মেরিন ড্রাইভের খুরেরমুখ এলাকার। ছবি: আজকের পত্রিকা

‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর সঙ্গে।

মাছের সুষ্ঠু প্রজনন, উৎপাদন, মৎস্যসম্পদ সংরক্ষণ ও টেকসই মৎস্য আহরণের জন্য সমুদ্রে সব ধরনের মাছ শিকার ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা গতকাল বুধবার দিবাগত মধ্যরাতে শেষ হয়েছে। তাই গতকাল দিনভর ছিল উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে ব্যস্ততা। অনেকে দেখে নিচ্ছিলেন ট্রলার ঠিকঠাক আছে কি না, কেউ জালের ছেঁড়া অংশ সেলাই করছিলেন, কেউ আবার প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রীসহ অন্য সরঞ্জাম গুছিয়ে নিচ্ছিলেন।

বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র এবং ফকিরহাট উপ-মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ঘাটে গতকাল শত শত ট্রলার নোঙর করে রাখা ছিল। জেলেদের উপস্থিতিতে ঘাট এলাকা সরগরম হয়ে ওঠে। ফকিরহাটের মুদি-মনিহারি দোকানগুলোতে জেলেরা কেনাকাটা করতে ভিড় জমান। ফকিরহাট এলাকার বিসমিল্লাহ ট্রলারের মাঝি রহিম মিয়া বলেন, ‘সাগরে মাছ শিকারে যেতে সকল প্রস্তুতি নিয়েছি। নিষেধাজ্ঞার সময় শেষ হওয়ামাত্রই সাগরে নামব।’

জেলে নুরসাইদ ও ফোরকান মিয়া বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞার সময় পরিবার-পরিজন নিয়ে বেশ কষ্টে কেটেছে। ওই সময়ে বেশ টাকা ঋণ করেছি। এখন সাগরে যাব। দেখি আল্লাহ ঋণ পরিশোধ করতে দেন কি না।’

নোয়াখালীর হাতিয়ার সূর্যমুখী, বাংলাবাজার, কাজিরবাজার, পাইতান মার্কেট চেয়ারম্যান ঘাটসহ বেশ কয়েকটি ঘাটে গতকাল জেলেদের ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা গেছে। অনেকে নৌকায় জাল তুলছিলেন, আবার অনেকে জ্বালানি তেল মজুতসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী ট্রলারে নিয়ে যান। সূর্যমুখী ঘাটের এমভি মায়ের দোয়া ট্রলারের মাঝি জাফর উল্যা বলেন, ‘সাগরে ৮-১০ দিন থাকার প্রস্তুতি নিচ্ছি। সন্ধ্যায় সাগরের উদ্দেশে রওনা দেব।’

সূর্যমুখী ঘাট জেলে সমিতির সভাপতি জবিয়ল হক বলেন, ‘সাগরে নামতে প্রস্তুত নোয়াখালীর হাতিয়ার ২০টি ঘাটের লক্ষাধিক জেলে। এসব ঘাটে প্রায় ১০ হাজার ছোট-বড় ফিশিং ট্রলার রয়েছে। প্রতি ট্রলারে ১০ জন হলেও লক্ষাধিক জেলে এই মাছ ধরার সঙ্গে জড়িত। তাঁদের সবাই গত ৫৮ দিন তীরে বেকার ছিলেন।’

পিরোজপুরের ইন্দুরকানি উপজেলার পাড়েরহাট মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের পার্শ্ববর্তী এলাকার জেলেরা গতকাল দিনভর সাগরে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন। এ ছাড়া মঠবাড়িয়া উপজেলার সাপলেজা, খেতাচিড়া, বড়মাছুয়া, ছোটমাছুয়া, ভান্ডারিয়া উপজেলার চরখালী, হেতালিয়া, কাউখালী উপজেলার সোনাকুর এলাকার জেলেরা, সদর উপজেলা এবং নেছারাবাদ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার জেলেরা প্রস্তুতি শেষে গত রাতে বঙ্গোপসাগরে রওনা হন।

কয়েক দিন ধরে কক্সবাজার উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে নৌকা, জাল মেরামতসহ বিভিন্ন প্রস্তুতি সেরেছেন জেলেরা। গতকাল মেরিন ড্রাইভের টেকনাফের খুরেরমুখ, সাবরাং ও বাহারছড়া এলাকায় দেখা গেছে, সড়কে দাঁড় করিয়ে রাখা সারি সারি ট্রলারে জাল ও রসদ তোলেন জেলেরা।

একটি ট্রলারের মাঝি আবু তাহের জানান, এবার ভারতের সঙ্গে মিল রেখে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় কেউ সাগরে মাছ শিকারে নামেনি। এতে উপকূলের কাছাকাছি সাগরে জাল ফেললেই ইলিশসহ অন্য মাছ পাওয়া যাবে বলে আশাবাদী তিনি।

কক্সবাজার শহরের ফিশারি ঘাটের মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির পরিচালক জুলফিকার আলী জানান, কক্সবাজার উপকূলে ছোট-বড় ৭ হাজারের মতো যান্ত্রিক ট্রলার রয়েছে। এসব ট্রলারে প্রায় এক লাখ জেলে ও শ্রমিক নিয়োজিত রয়েছেন। অধিকাংশ ট্রলার নিষেধাজ্ঞা ওঠার সঙ্গে সঙ্গে সাগরে রওনা হবে।

[প্রতিবেদন তৈরিতে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছেন বরগুনা ও আমতলী, পিরোজপুর, কক্সবাজার এবং হাতিয়া প্রতিনিধি]

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

বিদেশে নেওয়ার অবস্থায় নেই খালেদা জিয়া

‘আলেম-ওলামাদের গ্রেপ্তার করলে ডিসি-এসপিদের খোলা মাঠে বিচার করা হবে’

বিশ্বকাপে কার খেলা কবে দেখে নিন

আজকের রাশিফল: সন্ধ্যায় অচেনা নম্বর থেকে ‘দারুণ অফার’ আসবে, ইগনোর করুন

পাকিস্তানি স্ত্রীকে করাচিতে ফেলে ভারতে দ্বিতীয় বিয়ের প্রস্তুতি, স্বামীর বিচার চেয়ে মোদির কাছে আবেদন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

ভারতের নিষেধাজ্ঞা: স্থলবন্দর থেকে ফেরত আসছে রপ্তানি পণ্য

  • ক্রয়াদেশের চালান নিয়ে বাড়ছে দুশ্চিন্তা
  • সরকারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষা
  • আজ বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ডেকেছে জরুরি বৈঠক
নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ২০ মে ২০২৫, ০২: ৪৪
ফাইল ছবি
ফাইল ছবি

ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।

ভারতের নিষেধাজ্ঞার এক দিন পরই গত রোববার লালমনিরহাটের বুড়িমারী ও যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দরসহ বিভিন্ন বন্দরে পণ্যের ট্রাক আটকে দেয় ভারত। সংশ্লিষ্টদের সূত্রে জানা যায়, রোববার ভারতের আমদানি বিধিনিষেধের কারণে বুড়িমারী সীমান্তে প্রাণের ১৭ ট্রাক খাদ্যপণ্য আটকে যায়। এ ছাড়া বেনাপোলে ৩৬টি পোশাক বোঝাই ট্রাকসহ অন্যান্য পণ্যের শতাধিক ট্রাক ঢুকতে পারেনি।

গতকাল সোমবার পর্যন্ত বুড়িমারী থেকে প্রাণের পণ্যবোঝাই ট্রাকগুলোর অর্ধেকের বেশি ফেরত নিয়ে আসে প্রতিষ্ঠানটি। এ ছাড়া বেনাপোলে পোর্টের ভেতরে ২৪টি ট্রাক ছাড়া বাকিগুলো ফেরত চলে যায়।

বেনাপোল বন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. সাজেদুর রহমান গতকাল সোমবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, গতকাল পোর্টের ভেতর ও বাইরে শতাধিক ট্রাক দাঁড়িয়ে ছিল। আজ পোর্টের ভেতরের ২৪টি ছাড়া বাকিগুলো ফেরত নিয়ে গেছেন মালিকেরা। এখন পর্যন্ত মনে হচ্ছে, পোর্টের ভেতরের ট্রাকগুলোও ফেরত নিতে হবে।

জানতে চাইলে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পরিচালক (বিপণন) কামরুজ্জামান কামাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের হাতে ৬ মিলিয়ন ডলারের ক্রয় আদেশ রয়েছে। তার মধ্য থেকে রোববার বুড়িমারী দিয়ে ১৭ ট্রাকবোঝাই পণ্য পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু সেগুলো ঢুকতে পারেনি। ট্রাকগুলো ফেরত আনা হচ্ছে। নতুন করে কাগজপত্র তৈরি করে অন্য পথ দিয়ে পণ্য পাঠাতে হবে।’

বেনাপোল স্থলবন্দর সূত্রে জানা যায়, ওই ২৪টি ট্রাক পোর্টের ভেতরে থাকায় এখনো তারা ভারতে প্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে। তাদের আশা, যেহেতু নিষেধাজ্ঞার আগে এই পণ্যগুলোর এলসি করা হয়েছিল, তাই এগুলো প্রবেশে অনুমতি পাবে। তবে এটি নির্ভর করবে বাংলাদেশ সরকারের আলোচনার ওপর।

এমন পরিস্থিতিতে সরকারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ইতিমধ্যে অনেক রপ্তানিকারক রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সঙ্গে আলোচনা করে সরকারের সহযোগিতা চেয়েছে।

স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে আজ মঙ্গলবার আন্তমন্ত্রণালয়ের সভা ডেকেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।

বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে বিকেল ৪টায় আন্তমন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এই সভা অনুষ্ঠিত হবে।

সভায় নৌপরিবহন ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো, জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের প্রতিনিধিদের উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া ব্যবসায়ী প্রতিনিধি হিসেবে এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ, ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রতিনিধিদের উপস্থিতির জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।

ভারতের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গত শনিবার হঠাৎ এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি নিষিদ্ধ করে। শুধু ভারতের নবসেবা ও কলকাতা সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করে দেশটির আমদানিকারকেরা বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি করতে পারবেন বলে ওই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। এ ছাড়া বাংলাদেশ থেকে ভারতের আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা ও মিজোরাম, পশ্চিমবঙ্গের চ্যাংড়াবান্দা ও ফুলবাড়ী শুল্ক স্টেশন দিয়ে ফল, ফলের স্বাদযুক্ত পানীয়, কোমল পানীয়, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, প্লাস্টিক পণ্য, সুতা, সুতার উপজাত, আসবাব রপ্তানিও নিষিদ্ধ করা হয় ওই বিজ্ঞপ্তিতে।

আমদানি ও রপ্তানিসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা জানান, দেশের ২৪টি বন্দরের মধ্যে ১৬টি বন্দর দিয়ে ভারতের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়ে থাকে। তবে যোগাযোগব্যবস্থা সহজ হওয়ায় বেনাপোল ও ভারতের পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে সবচেয়ে বেশি আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়। এর পরিমাণ ৮০ শতাংশ। বেনাপোল বন্দর দিয়ে প্রতিদিন ভারতে ২৫০ থেকে ৩০০ ট্রাকে বিভিন্ন ধরনের পণ্য রপ্তানি হয়। এর মধ্যে শতাধিক ট্রাক পণ্য থাকে তৈরি পোশাক।

এর আগে গত ৮ এপ্রিল বাংলাদেশের জন্য ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করে ভারত। ফলে ভারতের বিমানবন্দর ব্যবহার করে তৃতীয় কোনো দেশে তৈরি পোশাক রপ্তানি করতে পারছে না বাংলাদেশ। অন্যদিকে প্রায় এক মাস আগে ভারত থেকে বেনাপোল, ভোমরা, সোনামসজিদ, বাংলাবান্ধা, বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানির সুযোগ বন্ধ করে দেয় বাংলাদেশের জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।

সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমানের মতে, এই পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপে তুলনামূলকভাবে বেশি নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বাংলাদেশের ওপর। তাই ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর চেষ্টা অব্যাহত রাখাই সরকারের উচিত বলে মনে করছেন তিনি।

মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আলোচনার মাধ্যমে বাংলাদেশ এবং ভারতের বিরোধপূর্ণ বিষয়সমূহ মিটিয়ে ফেলতে হবে এবং দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এটাই হবে উভয় দেশের জন্য কল্যাণকর।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

বিদেশে নেওয়ার অবস্থায় নেই খালেদা জিয়া

‘আলেম-ওলামাদের গ্রেপ্তার করলে ডিসি-এসপিদের খোলা মাঠে বিচার করা হবে’

বিশ্বকাপে কার খেলা কবে দেখে নিন

আজকের রাশিফল: সন্ধ্যায় অচেনা নম্বর থেকে ‘দারুণ অফার’ আসবে, ইগনোর করুন

পাকিস্তানি স্ত্রীকে করাচিতে ফেলে ভারতে দ্বিতীয় বিয়ের প্রস্তুতি, স্বামীর বিচার চেয়ে মোদির কাছে আবেদন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

নিলামে গৌতম বুদ্ধের রত্নসম্ভার

নিলামে গৌতম বুদ্ধের রত্নসম্ভার

আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।

১৮৯৮ সালে ভারতের উত্তর প্রদেশের একটি ধূলিধূসর টিলা খুঁড়ে পাওয়া মূল্যবান এই রত্নগুলো এক শতাব্দীর বেশি সময় ধরে একটি বেসরকারি ব্রিটিশ সংগ্রহাগারে প্রায় দৃষ্টিচক্ষুর আড়ালে ছিল। এখন যেহেতু রত্নগুলোর হাতবদলের সময় এসেছে, তাই নতুন সংগ্রাহকেরা আগ্রহ নিয়ে এগুলো সংগ্রহের জন্য অপেক্ষা করছেন। কিন্তু এখানে একটা অস্বস্তিও তৈরি হয়েছে।

গৌতম বুদ্ধের জন্মস্থান লুম্বিনীর কাছাকাছি, বর্তমানে ভারতের উত্তর প্রদেশে একটি ইটের ঘরের ভেতর থেকে প্রায় ১ হাজার ৮০০টি মুক্তা, রুবি, টোপাজ, নীলা ও নকশা করা সোনার পাত সংগ্রহ করা হয়েছিল। তবে এই রত্নগুলোর সঙ্গে সঙ্গে একটি খোদাই করা পাত্রে হাড়ের টুকরাও পাওয়া যায়, যেগুলোকে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষ বলে শনাক্ত করা হয়। এই আবিষ্কার তখন প্রত্নতত্ত্বের জগতে ব্যাপক আলোড়ন তোলে।

সাদাবি’স এশিয়ার চেয়ারম্যান নিকোলাস চাউ মনে করেন, স্মরণকালের বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর মাঝে এই রত্নসম্ভার অন্যতম। তবে এগুলো নিলামে তোলার কারণে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। আর তা হচ্ছে—ভারতের ইতিহাসের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িয়ে থাকা এবং বৌদ্ধদের কাছে পবিত্র এই সম্পদ বিক্রি করা কি নৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য?

১৮৯৮ সালে ব্রিটিশ এস্টেট ম্যানেজার উইলিয়াম ক্ল্যাক্সটন পেপ্পে লুম্বিনির ঠিক দক্ষিণে পিপ্রাওয়ায় অবস্থিত একটি ঢিবি খনন করেন। সেখান থেকেই প্রায় ২ হাজার বছর আগের ওই নির্দশনগুলো খুঁজে পাওয়া যায়।

ইতিহাসবিদদের মতে, প্রাপ্ত রত্নসম্ভার ও দেহাবশেষ, যা তখনো পর্যন্ত অক্ষত ছিল, সেগুলো গৌতম বুদ্ধের শাক্য বংশের এবং বিশ্বব্যাপী বৌদ্ধদের ঐতিহ্য। হাড়ের নিদর্শনগুলো থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা ও মিয়ানমারের মতো দেশগুলোতে বিতরণ করা হয়েছে। এসব দেশে এখনো সেগুলোর পূজা করা হয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

বিদেশে নেওয়ার অবস্থায় নেই খালেদা জিয়া

‘আলেম-ওলামাদের গ্রেপ্তার করলে ডিসি-এসপিদের খোলা মাঠে বিচার করা হবে’

বিশ্বকাপে কার খেলা কবে দেখে নিন

আজকের রাশিফল: সন্ধ্যায় অচেনা নম্বর থেকে ‘দারুণ অফার’ আসবে, ইগনোর করুন

পাকিস্তানি স্ত্রীকে করাচিতে ফেলে ভারতে দ্বিতীয় বিয়ের প্রস্তুতি, স্বামীর বিচার চেয়ে মোদির কাছে আবেদন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত