বিধান রিবেরু

হরিচরণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের বঙ্গীয় শব্দকোষে বিপ্লবের অর্থ দেওয়া রয়েছে প্লবন, ভাসা, নাশ, উপদ্রব, অরাজকতা, উচ্ছেদ প্রভৃতি।বাংলাদেশে জুলাই-আগস্টে যা ঘটে গেল তা এই সব অর্থেই বিপ্লব। চাকরির ক্ষেত্রে বৈষম্যকে প্লাবিত করার প্রত্যয়ে তরুণেরা সব অন্যায় ও দুর্নীতির নাশ করতে চাইলেন। সেখানে বিপ্লব দমনের নামে হত্যাযজ্ঞ হলো। সমাজের রন্ধ্রে রন্ধ্রে যে বারুদ জমা ছিল, তাতে গিয়ে পড়ল অগ্নিস্ফুলিঙ্গ। বিস্ফোরিত হলো গোটা সমাজ। শেষ পর্যন্ত টিকতে না পেরে উচ্ছেদ হলো স্বৈরশাসক।
কিন্তু এখানেই বিপ্লবের কাজ শেষ হয় না। মূল প্রতিপক্ষ নতি স্বীকারের পর আবির্ভূত হয় তৃতীয় পক্ষের, তারা ঘোলা পানিতে মাছ শিকারের চেষ্টা করে, সাম্প্রদায়িক হামলা চালায়, ভাস্কর্য ও ঐতিহাসিক ভবন বিনষ্ট করে, অরাজক পরিস্থিতি সৃষ্টি করে। আগস্টের ৫ তারিখ শেখ হাসিনার বিদায়ের পর থেকেই আমরা দেখলাম আইনশৃঙ্খলার চরম অবনতি ঘটল দেশে। রাতে ডাকাত-ডাকাত রব, সাধারণ মানুষ শান্তিতে ঘুমাতে পারছে না।
জনগণের বন্ধু দাবি করা পুলিশ, যারা কখনোই বৃহত্তর অর্থে জনগণের বন্ধু হয়ে ওঠেনি; বরং দিনে দিনে ক্ষমতার দ্বারা ব্যবহৃত হতে হতে নিজেরাই রক্তখেকোদের মতো হয়ে উঠেছিল, তারাও বিপ্লবের ভয়ে পলাতক, সেই সুযোগে সমাজের যারা ‘লুম্পেন প্রলেতারিয়েত’, তারা নেমে পড়ে ছিনতাই-রাহাজানি-চুরিতে। এসব রুখতেও তরুণসমাজের এগিয়ে আসতে হলো। রাতে মন্দির ও পাড়া-মহল্লা পাহারা, আর দিনে রাস্তায় ট্রাফিকের কাজ।
লুট হয়ে যাওয়া সংসদ ভবন ও আগুনে ক্ষতিগ্রস্ত বঙ্গবন্ধুর বাড়ির সাফাই করার কাজ। অতএব, বিপ্লবকে তাই দীর্ঘজীবী হতেই হয়। নয়তো এক মন্দকে বিদায় করার পর হাজারো মন্দ অপেক্ষা করে সেই শূন্যস্থান পূরণের। বিপ্লবের দায়িত্ব—যতটুকু পারা যায়, সেই স্থানটিকে সুরক্ষিত করে, সুনীতি, সুশৃঙ্খলা ও সুকুমারবৃত্তি দিয়ে তাকে পূরণ করা। কাজটি সহজ নয়, একে মাঝপথে ছেড়ে দিলে এত আত্মোৎসর্গ বিফলে যাবে। কাজেই হালটা একটা সময় পর্যন্ত ধরে রাখতেই হয়।
কিন্তু তরুণ এই শিক্ষার্থীরা কত দিন ট্রাফিক সামলাবে, কত দিন বুড়োদের নিয়মকানুন শেখাবে, দুর্নীতিকে দূরে ঠেলে রাখবে? এটা তো তাদের কাজ নয়। যেহেতু আমাদের বড়রা দেশটাকে যাচ্ছেতাই করে নরকে পরিণত করেছে, তাই তারা বাধ্য হয়ে বিপ্লবটা করেছে।
ওদিকে তো লেখাপড়াটা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। একদিকে বিপ্লব সফল করার তাগিদ, অন্যদিকে লেখাপড়া সম্পন্ন করার তাড়া। এই দুটো বিষয়কে সমন্বয় করা যায় শিক্ষার্থীদের যদি রাষ্ট্র পরিচালনার কাজে সম্পৃক্ত করা যায়। এতে করে বিপ্লবের পথ থেকে তারা সরে গেল না। আবার দেশ গঠনের কাজটাও হলো।
কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বয়স অনুপাতে তিন মাস মেয়াদে শিক্ষার্থীদের রাষ্ট্রের বিভিন্ন ক্ষেত্রে কাজ করার জন্য পাঠানো যেতে পারে। সেমিস্টারপদ্ধতিতে এটি করলে তারা শিক্ষা কার্যক্রমের অংশ হিসেবেই রাষ্ট্র সংস্কারের কাজ জারি রাখতে পারবে।
পুরো প্রক্রিয়া সমন্বয় করে ট্রাফিক, সচিবালয়, মন্ত্রণালয়, সিটি করপোরেশন, সংসদসহ বিভিন্ন জায়গায় শিক্ষার্থীরা নিয়োগপ্রাপ্ত হবেন এবং তিন মাস কাজের পর মতামতসহ সুপারিশপত্র জমা দিয়ে আসবেন। সেটা যদি যৌক্তিক হয়, তবে তা সর্বসম্মতিক্রমে প্রয়োগ করতে হবে। কাজের ক্ষেত্রে অসংগতি পেলে সেটা তাঁরা সর্বোচ্চ পর্যায়ে ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করে জানাতে পারবেন এবং অভিযোগের ভিত্তিতে সঙ্গে সঙ্গে ব্যবস্থা গ্রহণ ও প্রতিকার নিশ্চিত করতে হবে। এতে করে জবাবদিহিমূলক প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠবে এবং স্বচ্ছ উপায়ে রাষ্ট্র পরিচালনা সম্ভব হবে। দুর্নীতি কমে যাবে। নাগরিকেরা হয়রানির শিকার কম হবেন। সর্বোপরি গণতান্ত্রিক পরিবেশ ফিরে আসবে।
অনেকেই বলতে পারেন, এই কর্মসূচিকে খণ্ডকালীন কাজ হিসেবে ঘোষণা করলেই তো হয়। আমি মনে করি সেটি আত্মঘাতী হবে।বিপ্লবোত্তর দেশ গড়ার কাজ কোনো বেতনভুক্ত কর্মচারীর হাতে ছেড়ে দেওয়া যায় না। সেটি বিপ্লবীদেরই করতে হয়। তারা কাজটি করবে নিজেদের আত্মার ও নৈতিকতার তাগিদে, বিপ্লবকে সফল করার লক্ষ্যে—সবচেয়ে বড় কথা, আগামীর প্রজন্মকে একটি সত্যিকারের সোনার বাংলা উপহার দেওয়ার অঙ্গীকার থেকে।
এত দিন যে ‘সোনার বাংলা’র গল্প বলা হতো, সেটি পুরাকল্পীয়, মিথিক। দেশে ভোটাধিকার বলি, আর কথা বলার অধিকার, কোনোটাই ছিল না। মানুষ সামান্য কার্টুনও আঁকতে পারত না। তুলে নিয়ে গিয়ে অত্যাচার, এমনকি মেরেও ফেলা হয়েছে। আমরা কার্টুনিস্ট কিশোর ও লেখক মুশতাকের কথা ভুলে যাইনি। এমন আরও বহু উদাহরণ দেওয়া সম্ভব। বাংলাদেশের আবু গারিব হিসেবে পরিচিতি পাওয়া, কুখ্যাত ‘আয়নাঘরে’র কাহিনি তো কেবল প্রকাশ্যে আসতে শুরু করেছে। সারা দেশে কতশত ‘আয়নাঘর’ যে আছে!
পুরোনো রাজনৈতিক ধ্যানধারণা ও দুর্নীতিগ্রস্ত রাষ্ট্রব্যবস্থাকে পাল্টে দিতে আমূল সংস্কারে হাত দিয়েছে তরুণ সমাজ। তাদের হাতে রয়েছে আধুনিক প্রযুক্তি। রয়েছে সারা বিশ্বের সঙ্গে যোগাযোগ। এই যোগাযোগ ও প্রযুক্তি কাজে লাগিয়ে সত্যিকারের ডিজিটাল বাংলাদেশ তারাই গড়ে তুলতে পারবে। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মতো পীড়নমূলক কালাকানুন চালু করা হয়েছিল, নির্দোষ মানুষকে গ্রেপ্তার ও বিরুদ্ধমতকে দমন করার অভিপ্রায়ে, সেটির অবসান ঘটবে। আশা করি, বাংলাদেশে এত দিন যে উদার গণতান্ত্রিক আবহের অভাব ছিল, মানুষ মুক্তভাবে নিশ্বাস নিতে পারছিল না, নিজের মত ফেসবুকে লিখতেও ভয় ও আতঙ্কে থাকত, সেটি কেটে যাবে।
মানুষ নিঃসংকোচে যেন নিজের মত প্রকাশ করতে পারে। বিরুদ্ধমতের পাল্টা জবাব যেন প্রাণনাশ, হামলা ও মামলার দিকে না যায়।বিরোধীকেও বলতে দিতে হবে। যুক্তি দিয়ে তাকে মোকাবিলা করতে হবে। ‘যুক্তিকে বাঁচতে দাও, যুক্তিকে বাঁচতে দাও যুক্তির স্বচ্ছ আলোয় শাণিয়ে নিচ্ছি আমার চোখ বিরোধীর যুক্তিটাও বন্ধুরা আমল দাও,বিরোধীর স্বাধীনতাটাই স্বাধীনতা সাব্যস্ত হোক।’
হিংসা ও বিদ্বেষ দিয়ে দেশ গড়া যাবে না। এ কথা অস্বীকারের উপায় নেই, দেড় দশকে শেখ হাসিনা সরকার গোটা দেশকে যে জায়গায় নিয়ে গিয়েছিল: প্রতিটি প্রতিষ্ঠান স্বেচ্ছাচারী হয়ে উঠেছিল, সব ক্ষমতা হয়ে গিয়েছিল এককেন্দ্রিক, ব্যাংক থেকে শুরু করে সরকারি সব প্রকল্প হয়ে উঠেছিল লুটেরাদের উর্বরভূমি, বিদেশে অর্থ পাচারের উৎসব শুরু হয়ে গিয়েছিল, আর সব ক্ষেত্রে পেশাদারির পরোয়া না করে দলীয়করণ করা হয়েছিল। এসব ছাড়াও যেভাবে বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড ও গুমের ঘটনা হয়েছে, তা নজিরবিহীন।
তো এই দেড় দশকের ক্ষোভ থাকবে। স্বাভাবিক। কিন্তু আন্দোলনকারী সব শিক্ষার্থী ও পরিবর্তনকামী সব নাগরিককে এটাও বুঝতে হবে, শেখ হাসিনার আওয়ামী লীগ ও শেখ মুজিবুর রহমানের আওয়ামী লীগ এক নয়। স্বাধীনতা-উত্তর বাকশাল আর এই একবিংশ শতাব্দীর একনায়কতন্ত্র এক নয়। সম্পর্ক থাকলেও দুটির প্রেক্ষাপট একেবারেই ভিন্ন। এ ছাড়া মুক্তিযুদ্ধ ও এর চেতনার সঙ্গেও শেখ হাসিনার সরকারের কোনো সম্পর্ক নেই। তাই ক্ষোভের আগুন যেন ভুল দিকে না ছড়ায়।
ফ্যাসিবাদী সরকার রাষ্ট্র পরিচালনার ক্ষেত্রে যেভাবে পিতৃতন্ত্রকে ব্যবহার করে, ঠিক সেভাবেই এ দেশে জাতির পিতার ধারণা ব্যবহৃত হয়েছে। আর এর অতিরঞ্জনের কারণে শেখ হাসিনা নিজেই নিজের পিতার অসম্মান করেছেন সবচেয়ে বেশি। আওয়ামী লীগের ওপর সাধারণ মানুষের যে আস্থা ছিল, সেটাও একার হাতেই গুঁড়িয়ে দিয়েছেন শেখ হাসিনা।
ফ্যাসিবাদী সরকার যেভাবে পুরাকল্পীয় বয়ান নির্মাণ করে, হাসিনা সরকারও সেভাবে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসকে বিনির্মাণের চেষ্টা করেছে।মুক্তিযুদ্ধ মানে আওয়ামী লীগ নয়, আর শেখ হাসিনার আওয়ামী লীগ তো আরও নয়। এসব বিষয় তরুণসমাজকে বুঝতে হবে।
মুক্তিযুদ্ধের নাম ভাঙিয়ে ফ্যাসিস্ট কায়দায় আর কেউ যেন ক্ষমতার অপব্যবহার করতে না পারে, সেদিকে তরুণদের সজাগ দৃষ্টি রাখতে হবে। আরও একটি বিষয়ে তরুণ তুর্কিদের অটল থাকতে হবে, সেটি হলো দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের প্রশ্নে। যে জামায়াতে ইসলামী বাংলাদেশ রাষ্ট্র জন্মের বিরোধিতা করেছিল, সেই দল ও মতের কেউ যেন এ দেশে চক্রান্ত ও ফায়দা লোটার সুযোগ না পায়, সেদিকে সদাসতর্ক দৃষ্টি রাখতে হবে। প্রত্যয়ে থাকতে হবে দেশে যেন সাম্য, মানবিক মর্যাদা ও সামাজিক সুবিচার প্রতিষ্ঠা পায়। বিপ্লব দীর্ঘজীবী হোক।
লেখক: প্রাবন্ধিক ও চলচ্চিত্রশিক্ষক

হরিচরণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের বঙ্গীয় শব্দকোষে বিপ্লবের অর্থ দেওয়া রয়েছে প্লবন, ভাসা, নাশ, উপদ্রব, অরাজকতা, উচ্ছেদ প্রভৃতি।বাংলাদেশে জুলাই-আগস্টে যা ঘটে গেল তা এই সব অর্থেই বিপ্লব। চাকরির ক্ষেত্রে বৈষম্যকে প্লাবিত করার প্রত্যয়ে তরুণেরা সব অন্যায় ও দুর্নীতির নাশ করতে চাইলেন। সেখানে বিপ্লব দমনের নামে হত্যাযজ্ঞ হলো। সমাজের রন্ধ্রে রন্ধ্রে যে বারুদ জমা ছিল, তাতে গিয়ে পড়ল অগ্নিস্ফুলিঙ্গ। বিস্ফোরিত হলো গোটা সমাজ। শেষ পর্যন্ত টিকতে না পেরে উচ্ছেদ হলো স্বৈরশাসক।
কিন্তু এখানেই বিপ্লবের কাজ শেষ হয় না। মূল প্রতিপক্ষ নতি স্বীকারের পর আবির্ভূত হয় তৃতীয় পক্ষের, তারা ঘোলা পানিতে মাছ শিকারের চেষ্টা করে, সাম্প্রদায়িক হামলা চালায়, ভাস্কর্য ও ঐতিহাসিক ভবন বিনষ্ট করে, অরাজক পরিস্থিতি সৃষ্টি করে। আগস্টের ৫ তারিখ শেখ হাসিনার বিদায়ের পর থেকেই আমরা দেখলাম আইনশৃঙ্খলার চরম অবনতি ঘটল দেশে। রাতে ডাকাত-ডাকাত রব, সাধারণ মানুষ শান্তিতে ঘুমাতে পারছে না।
জনগণের বন্ধু দাবি করা পুলিশ, যারা কখনোই বৃহত্তর অর্থে জনগণের বন্ধু হয়ে ওঠেনি; বরং দিনে দিনে ক্ষমতার দ্বারা ব্যবহৃত হতে হতে নিজেরাই রক্তখেকোদের মতো হয়ে উঠেছিল, তারাও বিপ্লবের ভয়ে পলাতক, সেই সুযোগে সমাজের যারা ‘লুম্পেন প্রলেতারিয়েত’, তারা নেমে পড়ে ছিনতাই-রাহাজানি-চুরিতে। এসব রুখতেও তরুণসমাজের এগিয়ে আসতে হলো। রাতে মন্দির ও পাড়া-মহল্লা পাহারা, আর দিনে রাস্তায় ট্রাফিকের কাজ।
লুট হয়ে যাওয়া সংসদ ভবন ও আগুনে ক্ষতিগ্রস্ত বঙ্গবন্ধুর বাড়ির সাফাই করার কাজ। অতএব, বিপ্লবকে তাই দীর্ঘজীবী হতেই হয়। নয়তো এক মন্দকে বিদায় করার পর হাজারো মন্দ অপেক্ষা করে সেই শূন্যস্থান পূরণের। বিপ্লবের দায়িত্ব—যতটুকু পারা যায়, সেই স্থানটিকে সুরক্ষিত করে, সুনীতি, সুশৃঙ্খলা ও সুকুমারবৃত্তি দিয়ে তাকে পূরণ করা। কাজটি সহজ নয়, একে মাঝপথে ছেড়ে দিলে এত আত্মোৎসর্গ বিফলে যাবে। কাজেই হালটা একটা সময় পর্যন্ত ধরে রাখতেই হয়।
কিন্তু তরুণ এই শিক্ষার্থীরা কত দিন ট্রাফিক সামলাবে, কত দিন বুড়োদের নিয়মকানুন শেখাবে, দুর্নীতিকে দূরে ঠেলে রাখবে? এটা তো তাদের কাজ নয়। যেহেতু আমাদের বড়রা দেশটাকে যাচ্ছেতাই করে নরকে পরিণত করেছে, তাই তারা বাধ্য হয়ে বিপ্লবটা করেছে।
ওদিকে তো লেখাপড়াটা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। একদিকে বিপ্লব সফল করার তাগিদ, অন্যদিকে লেখাপড়া সম্পন্ন করার তাড়া। এই দুটো বিষয়কে সমন্বয় করা যায় শিক্ষার্থীদের যদি রাষ্ট্র পরিচালনার কাজে সম্পৃক্ত করা যায়। এতে করে বিপ্লবের পথ থেকে তারা সরে গেল না। আবার দেশ গঠনের কাজটাও হলো।
কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বয়স অনুপাতে তিন মাস মেয়াদে শিক্ষার্থীদের রাষ্ট্রের বিভিন্ন ক্ষেত্রে কাজ করার জন্য পাঠানো যেতে পারে। সেমিস্টারপদ্ধতিতে এটি করলে তারা শিক্ষা কার্যক্রমের অংশ হিসেবেই রাষ্ট্র সংস্কারের কাজ জারি রাখতে পারবে।
পুরো প্রক্রিয়া সমন্বয় করে ট্রাফিক, সচিবালয়, মন্ত্রণালয়, সিটি করপোরেশন, সংসদসহ বিভিন্ন জায়গায় শিক্ষার্থীরা নিয়োগপ্রাপ্ত হবেন এবং তিন মাস কাজের পর মতামতসহ সুপারিশপত্র জমা দিয়ে আসবেন। সেটা যদি যৌক্তিক হয়, তবে তা সর্বসম্মতিক্রমে প্রয়োগ করতে হবে। কাজের ক্ষেত্রে অসংগতি পেলে সেটা তাঁরা সর্বোচ্চ পর্যায়ে ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করে জানাতে পারবেন এবং অভিযোগের ভিত্তিতে সঙ্গে সঙ্গে ব্যবস্থা গ্রহণ ও প্রতিকার নিশ্চিত করতে হবে। এতে করে জবাবদিহিমূলক প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠবে এবং স্বচ্ছ উপায়ে রাষ্ট্র পরিচালনা সম্ভব হবে। দুর্নীতি কমে যাবে। নাগরিকেরা হয়রানির শিকার কম হবেন। সর্বোপরি গণতান্ত্রিক পরিবেশ ফিরে আসবে।
অনেকেই বলতে পারেন, এই কর্মসূচিকে খণ্ডকালীন কাজ হিসেবে ঘোষণা করলেই তো হয়। আমি মনে করি সেটি আত্মঘাতী হবে।বিপ্লবোত্তর দেশ গড়ার কাজ কোনো বেতনভুক্ত কর্মচারীর হাতে ছেড়ে দেওয়া যায় না। সেটি বিপ্লবীদেরই করতে হয়। তারা কাজটি করবে নিজেদের আত্মার ও নৈতিকতার তাগিদে, বিপ্লবকে সফল করার লক্ষ্যে—সবচেয়ে বড় কথা, আগামীর প্রজন্মকে একটি সত্যিকারের সোনার বাংলা উপহার দেওয়ার অঙ্গীকার থেকে।
এত দিন যে ‘সোনার বাংলা’র গল্প বলা হতো, সেটি পুরাকল্পীয়, মিথিক। দেশে ভোটাধিকার বলি, আর কথা বলার অধিকার, কোনোটাই ছিল না। মানুষ সামান্য কার্টুনও আঁকতে পারত না। তুলে নিয়ে গিয়ে অত্যাচার, এমনকি মেরেও ফেলা হয়েছে। আমরা কার্টুনিস্ট কিশোর ও লেখক মুশতাকের কথা ভুলে যাইনি। এমন আরও বহু উদাহরণ দেওয়া সম্ভব। বাংলাদেশের আবু গারিব হিসেবে পরিচিতি পাওয়া, কুখ্যাত ‘আয়নাঘরে’র কাহিনি তো কেবল প্রকাশ্যে আসতে শুরু করেছে। সারা দেশে কতশত ‘আয়নাঘর’ যে আছে!
পুরোনো রাজনৈতিক ধ্যানধারণা ও দুর্নীতিগ্রস্ত রাষ্ট্রব্যবস্থাকে পাল্টে দিতে আমূল সংস্কারে হাত দিয়েছে তরুণ সমাজ। তাদের হাতে রয়েছে আধুনিক প্রযুক্তি। রয়েছে সারা বিশ্বের সঙ্গে যোগাযোগ। এই যোগাযোগ ও প্রযুক্তি কাজে লাগিয়ে সত্যিকারের ডিজিটাল বাংলাদেশ তারাই গড়ে তুলতে পারবে। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মতো পীড়নমূলক কালাকানুন চালু করা হয়েছিল, নির্দোষ মানুষকে গ্রেপ্তার ও বিরুদ্ধমতকে দমন করার অভিপ্রায়ে, সেটির অবসান ঘটবে। আশা করি, বাংলাদেশে এত দিন যে উদার গণতান্ত্রিক আবহের অভাব ছিল, মানুষ মুক্তভাবে নিশ্বাস নিতে পারছিল না, নিজের মত ফেসবুকে লিখতেও ভয় ও আতঙ্কে থাকত, সেটি কেটে যাবে।
মানুষ নিঃসংকোচে যেন নিজের মত প্রকাশ করতে পারে। বিরুদ্ধমতের পাল্টা জবাব যেন প্রাণনাশ, হামলা ও মামলার দিকে না যায়।বিরোধীকেও বলতে দিতে হবে। যুক্তি দিয়ে তাকে মোকাবিলা করতে হবে। ‘যুক্তিকে বাঁচতে দাও, যুক্তিকে বাঁচতে দাও যুক্তির স্বচ্ছ আলোয় শাণিয়ে নিচ্ছি আমার চোখ বিরোধীর যুক্তিটাও বন্ধুরা আমল দাও,বিরোধীর স্বাধীনতাটাই স্বাধীনতা সাব্যস্ত হোক।’
হিংসা ও বিদ্বেষ দিয়ে দেশ গড়া যাবে না। এ কথা অস্বীকারের উপায় নেই, দেড় দশকে শেখ হাসিনা সরকার গোটা দেশকে যে জায়গায় নিয়ে গিয়েছিল: প্রতিটি প্রতিষ্ঠান স্বেচ্ছাচারী হয়ে উঠেছিল, সব ক্ষমতা হয়ে গিয়েছিল এককেন্দ্রিক, ব্যাংক থেকে শুরু করে সরকারি সব প্রকল্প হয়ে উঠেছিল লুটেরাদের উর্বরভূমি, বিদেশে অর্থ পাচারের উৎসব শুরু হয়ে গিয়েছিল, আর সব ক্ষেত্রে পেশাদারির পরোয়া না করে দলীয়করণ করা হয়েছিল। এসব ছাড়াও যেভাবে বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড ও গুমের ঘটনা হয়েছে, তা নজিরবিহীন।
তো এই দেড় দশকের ক্ষোভ থাকবে। স্বাভাবিক। কিন্তু আন্দোলনকারী সব শিক্ষার্থী ও পরিবর্তনকামী সব নাগরিককে এটাও বুঝতে হবে, শেখ হাসিনার আওয়ামী লীগ ও শেখ মুজিবুর রহমানের আওয়ামী লীগ এক নয়। স্বাধীনতা-উত্তর বাকশাল আর এই একবিংশ শতাব্দীর একনায়কতন্ত্র এক নয়। সম্পর্ক থাকলেও দুটির প্রেক্ষাপট একেবারেই ভিন্ন। এ ছাড়া মুক্তিযুদ্ধ ও এর চেতনার সঙ্গেও শেখ হাসিনার সরকারের কোনো সম্পর্ক নেই। তাই ক্ষোভের আগুন যেন ভুল দিকে না ছড়ায়।
ফ্যাসিবাদী সরকার রাষ্ট্র পরিচালনার ক্ষেত্রে যেভাবে পিতৃতন্ত্রকে ব্যবহার করে, ঠিক সেভাবেই এ দেশে জাতির পিতার ধারণা ব্যবহৃত হয়েছে। আর এর অতিরঞ্জনের কারণে শেখ হাসিনা নিজেই নিজের পিতার অসম্মান করেছেন সবচেয়ে বেশি। আওয়ামী লীগের ওপর সাধারণ মানুষের যে আস্থা ছিল, সেটাও একার হাতেই গুঁড়িয়ে দিয়েছেন শেখ হাসিনা।
ফ্যাসিবাদী সরকার যেভাবে পুরাকল্পীয় বয়ান নির্মাণ করে, হাসিনা সরকারও সেভাবে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসকে বিনির্মাণের চেষ্টা করেছে।মুক্তিযুদ্ধ মানে আওয়ামী লীগ নয়, আর শেখ হাসিনার আওয়ামী লীগ তো আরও নয়। এসব বিষয় তরুণসমাজকে বুঝতে হবে।
মুক্তিযুদ্ধের নাম ভাঙিয়ে ফ্যাসিস্ট কায়দায় আর কেউ যেন ক্ষমতার অপব্যবহার করতে না পারে, সেদিকে তরুণদের সজাগ দৃষ্টি রাখতে হবে। আরও একটি বিষয়ে তরুণ তুর্কিদের অটল থাকতে হবে, সেটি হলো দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের প্রশ্নে। যে জামায়াতে ইসলামী বাংলাদেশ রাষ্ট্র জন্মের বিরোধিতা করেছিল, সেই দল ও মতের কেউ যেন এ দেশে চক্রান্ত ও ফায়দা লোটার সুযোগ না পায়, সেদিকে সদাসতর্ক দৃষ্টি রাখতে হবে। প্রত্যয়ে থাকতে হবে দেশে যেন সাম্য, মানবিক মর্যাদা ও সামাজিক সুবিচার প্রতিষ্ঠা পায়। বিপ্লব দীর্ঘজীবী হোক।
লেখক: প্রাবন্ধিক ও চলচ্চিত্রশিক্ষক

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
০৬ অক্টোবর ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫বাসস, ঢাকা

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
আজ সোমবার বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১-এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) মো. আলমগীরের জেরা শুরু করেন রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী আমীর হোসেন। আইনজীবী আমীর হোসেন পলাতক আসামি শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে শুনানি করছেন। এর আগে গত মঙ্গলবার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. আলমগীরের সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন হয়।
এই মামলার শুনানিতে এর আগে গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম প্রতীক শহীদ আবু সাঈদের বাবাসহ স্বজনহারা পরিবারের একাধিক সদস্য সাক্ষ্য দিয়েছেন। এ ছাড়া মামলার গুরুত্বপূর্ণ ‘স্টার উইটনেস’ হিসেবে সাক্ষ্য দেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক এবং জুলাই আন্দোলনের অন্যতম নেতৃত্বদানকারী নাহিদ ইসলাম এবং দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান।
গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে আওয়ামী লীগ সরকার, তাদের দলীয় ক্যাডার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করে বলে অভিযোগ ওঠে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে শেখ হাসিনা, তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং তৎকালীন আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে গত ১০ জুলাই অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল-১।
পরবর্তীকালে, এই মামলার অন্যতম আসামি সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন দোষ স্বীকার করে ঘটনার সত্যতা উদ্ঘাটনে রাজসাক্ষী (অ্যাপ্রোভার) হওয়ার জন্য ট্রাইব্যুনালে আবেদন করেন। ট্রাইব্যুনাল তাঁর আবেদন মঞ্জুর করলে তিনি রাজসাক্ষী হিসেবে এই মামলায় সাক্ষ্য দেন।
মামলার প্রসিকিউশন পক্ষে শুনানি করছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম এবং গাজী এসএইচ তামিম। শুনানিতে তাঁদের সঙ্গে অপর প্রসিকিউটররাও উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদিকে, এই মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের পক্ষে আছেন আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ।
মানবতাবিরোধী অপরাধের এই মামলা ছাড়াও ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আরও দুটি মামলা বিচারাধীন। এর মধ্যে একটি মামলায় আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে সংঘটিত গুম-খুনের ঘটনায় তাঁকে আসামি করা হয়েছে। অন্য মামলাটি হলো রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে হত্যাকাণ্ড নিয়ে। এই তিনটি মামলার বিচারকাজই বর্তমানে দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে চলমান।

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
আজ সোমবার বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১-এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) মো. আলমগীরের জেরা শুরু করেন রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী আমীর হোসেন। আইনজীবী আমীর হোসেন পলাতক আসামি শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে শুনানি করছেন। এর আগে গত মঙ্গলবার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. আলমগীরের সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন হয়।
এই মামলার শুনানিতে এর আগে গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম প্রতীক শহীদ আবু সাঈদের বাবাসহ স্বজনহারা পরিবারের একাধিক সদস্য সাক্ষ্য দিয়েছেন। এ ছাড়া মামলার গুরুত্বপূর্ণ ‘স্টার উইটনেস’ হিসেবে সাক্ষ্য দেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক এবং জুলাই আন্দোলনের অন্যতম নেতৃত্বদানকারী নাহিদ ইসলাম এবং দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান।
গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে আওয়ামী লীগ সরকার, তাদের দলীয় ক্যাডার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করে বলে অভিযোগ ওঠে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে শেখ হাসিনা, তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং তৎকালীন আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে গত ১০ জুলাই অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল-১।
পরবর্তীকালে, এই মামলার অন্যতম আসামি সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন দোষ স্বীকার করে ঘটনার সত্যতা উদ্ঘাটনে রাজসাক্ষী (অ্যাপ্রোভার) হওয়ার জন্য ট্রাইব্যুনালে আবেদন করেন। ট্রাইব্যুনাল তাঁর আবেদন মঞ্জুর করলে তিনি রাজসাক্ষী হিসেবে এই মামলায় সাক্ষ্য দেন।
মামলার প্রসিকিউশন পক্ষে শুনানি করছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম এবং গাজী এসএইচ তামিম। শুনানিতে তাঁদের সঙ্গে অপর প্রসিকিউটররাও উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদিকে, এই মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের পক্ষে আছেন আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ।
মানবতাবিরোধী অপরাধের এই মামলা ছাড়াও ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আরও দুটি মামলা বিচারাধীন। এর মধ্যে একটি মামলায় আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে সংঘটিত গুম-খুনের ঘটনায় তাঁকে আসামি করা হয়েছে। অন্য মামলাটি হলো রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে হত্যাকাণ্ড নিয়ে। এই তিনটি মামলার বিচারকাজই বর্তমানে দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে চলমান।

হরিচরণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের বঙ্গীয় শব্দকোষে বিপ্লবের অর্থ দেওয়া রয়েছে প্লবন, ভাসা, নাশ, উপদ্রব, অরাজকতা, উচ্ছেদ প্রভৃতি।বাংলাদেশে জুলাই-আগস্টে যা ঘটে গেল তা এই সব অর্থেই বিপ্লব।
১৩ আগস্ট ২০২৪
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর সঙ্গে।
মাছের সুষ্ঠু প্রজনন, উৎপাদন, মৎস্যসম্পদ সংরক্ষণ ও টেকসই মৎস্য আহরণের জন্য সমুদ্রে সব ধরনের মাছ শিকার ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা গতকাল বুধবার দিবাগত মধ্যরাতে শেষ হয়েছে। তাই গতকাল দিনভর ছিল উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে ব্যস্ততা। অনেকে দেখে নিচ্ছিলেন ট্রলার ঠিকঠাক আছে কি না, কেউ জালের ছেঁড়া অংশ সেলাই করছিলেন, কেউ আবার প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রীসহ অন্য সরঞ্জাম গুছিয়ে নিচ্ছিলেন।
বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র এবং ফকিরহাট উপ-মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ঘাটে গতকাল শত শত ট্রলার নোঙর করে রাখা ছিল। জেলেদের উপস্থিতিতে ঘাট এলাকা সরগরম হয়ে ওঠে। ফকিরহাটের মুদি-মনিহারি দোকানগুলোতে জেলেরা কেনাকাটা করতে ভিড় জমান। ফকিরহাট এলাকার বিসমিল্লাহ ট্রলারের মাঝি রহিম মিয়া বলেন, ‘সাগরে মাছ শিকারে যেতে সকল প্রস্তুতি নিয়েছি। নিষেধাজ্ঞার সময় শেষ হওয়ামাত্রই সাগরে নামব।’
জেলে নুরসাইদ ও ফোরকান মিয়া বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞার সময় পরিবার-পরিজন নিয়ে বেশ কষ্টে কেটেছে। ওই সময়ে বেশ টাকা ঋণ করেছি। এখন সাগরে যাব। দেখি আল্লাহ ঋণ পরিশোধ করতে দেন কি না।’
নোয়াখালীর হাতিয়ার সূর্যমুখী, বাংলাবাজার, কাজিরবাজার, পাইতান মার্কেট চেয়ারম্যান ঘাটসহ বেশ কয়েকটি ঘাটে গতকাল জেলেদের ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা গেছে। অনেকে নৌকায় জাল তুলছিলেন, আবার অনেকে জ্বালানি তেল মজুতসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী ট্রলারে নিয়ে যান। সূর্যমুখী ঘাটের এমভি মায়ের দোয়া ট্রলারের মাঝি জাফর উল্যা বলেন, ‘সাগরে ৮-১০ দিন থাকার প্রস্তুতি নিচ্ছি। সন্ধ্যায় সাগরের উদ্দেশে রওনা দেব।’
সূর্যমুখী ঘাট জেলে সমিতির সভাপতি জবিয়ল হক বলেন, ‘সাগরে নামতে প্রস্তুত নোয়াখালীর হাতিয়ার ২০টি ঘাটের লক্ষাধিক জেলে। এসব ঘাটে প্রায় ১০ হাজার ছোট-বড় ফিশিং ট্রলার রয়েছে। প্রতি ট্রলারে ১০ জন হলেও লক্ষাধিক জেলে এই মাছ ধরার সঙ্গে জড়িত। তাঁদের সবাই গত ৫৮ দিন তীরে বেকার ছিলেন।’
পিরোজপুরের ইন্দুরকানি উপজেলার পাড়েরহাট মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের পার্শ্ববর্তী এলাকার জেলেরা গতকাল দিনভর সাগরে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন। এ ছাড়া মঠবাড়িয়া উপজেলার সাপলেজা, খেতাচিড়া, বড়মাছুয়া, ছোটমাছুয়া, ভান্ডারিয়া উপজেলার চরখালী, হেতালিয়া, কাউখালী উপজেলার সোনাকুর এলাকার জেলেরা, সদর উপজেলা এবং নেছারাবাদ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার জেলেরা প্রস্তুতি শেষে গত রাতে বঙ্গোপসাগরে রওনা হন।
কয়েক দিন ধরে কক্সবাজার উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে নৌকা, জাল মেরামতসহ বিভিন্ন প্রস্তুতি সেরেছেন জেলেরা। গতকাল মেরিন ড্রাইভের টেকনাফের খুরেরমুখ, সাবরাং ও বাহারছড়া এলাকায় দেখা গেছে, সড়কে দাঁড় করিয়ে রাখা সারি সারি ট্রলারে জাল ও রসদ তোলেন জেলেরা।
একটি ট্রলারের মাঝি আবু তাহের জানান, এবার ভারতের সঙ্গে মিল রেখে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় কেউ সাগরে মাছ শিকারে নামেনি। এতে উপকূলের কাছাকাছি সাগরে জাল ফেললেই ইলিশসহ অন্য মাছ পাওয়া যাবে বলে আশাবাদী তিনি।
কক্সবাজার শহরের ফিশারি ঘাটের মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির পরিচালক জুলফিকার আলী জানান, কক্সবাজার উপকূলে ছোট-বড় ৭ হাজারের মতো যান্ত্রিক ট্রলার রয়েছে। এসব ট্রলারে প্রায় এক লাখ জেলে ও শ্রমিক নিয়োজিত রয়েছেন। অধিকাংশ ট্রলার নিষেধাজ্ঞা ওঠার সঙ্গে সঙ্গে সাগরে রওনা হবে।
[প্রতিবেদন তৈরিতে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছেন বরগুনা ও আমতলী, পিরোজপুর, কক্সবাজার এবং হাতিয়া প্রতিনিধি]

‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর সঙ্গে।
মাছের সুষ্ঠু প্রজনন, উৎপাদন, মৎস্যসম্পদ সংরক্ষণ ও টেকসই মৎস্য আহরণের জন্য সমুদ্রে সব ধরনের মাছ শিকার ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা গতকাল বুধবার দিবাগত মধ্যরাতে শেষ হয়েছে। তাই গতকাল দিনভর ছিল উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে ব্যস্ততা। অনেকে দেখে নিচ্ছিলেন ট্রলার ঠিকঠাক আছে কি না, কেউ জালের ছেঁড়া অংশ সেলাই করছিলেন, কেউ আবার প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রীসহ অন্য সরঞ্জাম গুছিয়ে নিচ্ছিলেন।
বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র এবং ফকিরহাট উপ-মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ঘাটে গতকাল শত শত ট্রলার নোঙর করে রাখা ছিল। জেলেদের উপস্থিতিতে ঘাট এলাকা সরগরম হয়ে ওঠে। ফকিরহাটের মুদি-মনিহারি দোকানগুলোতে জেলেরা কেনাকাটা করতে ভিড় জমান। ফকিরহাট এলাকার বিসমিল্লাহ ট্রলারের মাঝি রহিম মিয়া বলেন, ‘সাগরে মাছ শিকারে যেতে সকল প্রস্তুতি নিয়েছি। নিষেধাজ্ঞার সময় শেষ হওয়ামাত্রই সাগরে নামব।’
জেলে নুরসাইদ ও ফোরকান মিয়া বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞার সময় পরিবার-পরিজন নিয়ে বেশ কষ্টে কেটেছে। ওই সময়ে বেশ টাকা ঋণ করেছি। এখন সাগরে যাব। দেখি আল্লাহ ঋণ পরিশোধ করতে দেন কি না।’
নোয়াখালীর হাতিয়ার সূর্যমুখী, বাংলাবাজার, কাজিরবাজার, পাইতান মার্কেট চেয়ারম্যান ঘাটসহ বেশ কয়েকটি ঘাটে গতকাল জেলেদের ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা গেছে। অনেকে নৌকায় জাল তুলছিলেন, আবার অনেকে জ্বালানি তেল মজুতসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী ট্রলারে নিয়ে যান। সূর্যমুখী ঘাটের এমভি মায়ের দোয়া ট্রলারের মাঝি জাফর উল্যা বলেন, ‘সাগরে ৮-১০ দিন থাকার প্রস্তুতি নিচ্ছি। সন্ধ্যায় সাগরের উদ্দেশে রওনা দেব।’
সূর্যমুখী ঘাট জেলে সমিতির সভাপতি জবিয়ল হক বলেন, ‘সাগরে নামতে প্রস্তুত নোয়াখালীর হাতিয়ার ২০টি ঘাটের লক্ষাধিক জেলে। এসব ঘাটে প্রায় ১০ হাজার ছোট-বড় ফিশিং ট্রলার রয়েছে। প্রতি ট্রলারে ১০ জন হলেও লক্ষাধিক জেলে এই মাছ ধরার সঙ্গে জড়িত। তাঁদের সবাই গত ৫৮ দিন তীরে বেকার ছিলেন।’
পিরোজপুরের ইন্দুরকানি উপজেলার পাড়েরহাট মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের পার্শ্ববর্তী এলাকার জেলেরা গতকাল দিনভর সাগরে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন। এ ছাড়া মঠবাড়িয়া উপজেলার সাপলেজা, খেতাচিড়া, বড়মাছুয়া, ছোটমাছুয়া, ভান্ডারিয়া উপজেলার চরখালী, হেতালিয়া, কাউখালী উপজেলার সোনাকুর এলাকার জেলেরা, সদর উপজেলা এবং নেছারাবাদ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার জেলেরা প্রস্তুতি শেষে গত রাতে বঙ্গোপসাগরে রওনা হন।
কয়েক দিন ধরে কক্সবাজার উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে নৌকা, জাল মেরামতসহ বিভিন্ন প্রস্তুতি সেরেছেন জেলেরা। গতকাল মেরিন ড্রাইভের টেকনাফের খুরেরমুখ, সাবরাং ও বাহারছড়া এলাকায় দেখা গেছে, সড়কে দাঁড় করিয়ে রাখা সারি সারি ট্রলারে জাল ও রসদ তোলেন জেলেরা।
একটি ট্রলারের মাঝি আবু তাহের জানান, এবার ভারতের সঙ্গে মিল রেখে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় কেউ সাগরে মাছ শিকারে নামেনি। এতে উপকূলের কাছাকাছি সাগরে জাল ফেললেই ইলিশসহ অন্য মাছ পাওয়া যাবে বলে আশাবাদী তিনি।
কক্সবাজার শহরের ফিশারি ঘাটের মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির পরিচালক জুলফিকার আলী জানান, কক্সবাজার উপকূলে ছোট-বড় ৭ হাজারের মতো যান্ত্রিক ট্রলার রয়েছে। এসব ট্রলারে প্রায় এক লাখ জেলে ও শ্রমিক নিয়োজিত রয়েছেন। অধিকাংশ ট্রলার নিষেধাজ্ঞা ওঠার সঙ্গে সঙ্গে সাগরে রওনা হবে।
[প্রতিবেদন তৈরিতে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছেন বরগুনা ও আমতলী, পিরোজপুর, কক্সবাজার এবং হাতিয়া প্রতিনিধি]

হরিচরণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের বঙ্গীয় শব্দকোষে বিপ্লবের অর্থ দেওয়া রয়েছে প্লবন, ভাসা, নাশ, উপদ্রব, অরাজকতা, উচ্ছেদ প্রভৃতি।বাংলাদেশে জুলাই-আগস্টে যা ঘটে গেল তা এই সব অর্থেই বিপ্লব।
১৩ আগস্ট ২০২৪
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
০৬ অক্টোবর ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
ভারতের নিষেধাজ্ঞার এক দিন পরই গত রোববার লালমনিরহাটের বুড়িমারী ও যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দরসহ বিভিন্ন বন্দরে পণ্যের ট্রাক আটকে দেয় ভারত। সংশ্লিষ্টদের সূত্রে জানা যায়, রোববার ভারতের আমদানি বিধিনিষেধের কারণে বুড়িমারী সীমান্তে প্রাণের ১৭ ট্রাক খাদ্যপণ্য আটকে যায়। এ ছাড়া বেনাপোলে ৩৬টি পোশাক বোঝাই ট্রাকসহ অন্যান্য পণ্যের শতাধিক ট্রাক ঢুকতে পারেনি।
গতকাল সোমবার পর্যন্ত বুড়িমারী থেকে প্রাণের পণ্যবোঝাই ট্রাকগুলোর অর্ধেকের বেশি ফেরত নিয়ে আসে প্রতিষ্ঠানটি। এ ছাড়া বেনাপোলে পোর্টের ভেতরে ২৪টি ট্রাক ছাড়া বাকিগুলো ফেরত চলে যায়।
বেনাপোল বন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. সাজেদুর রহমান গতকাল সোমবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, গতকাল পোর্টের ভেতর ও বাইরে শতাধিক ট্রাক দাঁড়িয়ে ছিল। আজ পোর্টের ভেতরের ২৪টি ছাড়া বাকিগুলো ফেরত নিয়ে গেছেন মালিকেরা। এখন পর্যন্ত মনে হচ্ছে, পোর্টের ভেতরের ট্রাকগুলোও ফেরত নিতে হবে।
জানতে চাইলে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পরিচালক (বিপণন) কামরুজ্জামান কামাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের হাতে ৬ মিলিয়ন ডলারের ক্রয় আদেশ রয়েছে। তার মধ্য থেকে রোববার বুড়িমারী দিয়ে ১৭ ট্রাকবোঝাই পণ্য পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু সেগুলো ঢুকতে পারেনি। ট্রাকগুলো ফেরত আনা হচ্ছে। নতুন করে কাগজপত্র তৈরি করে অন্য পথ দিয়ে পণ্য পাঠাতে হবে।’
বেনাপোল স্থলবন্দর সূত্রে জানা যায়, ওই ২৪টি ট্রাক পোর্টের ভেতরে থাকায় এখনো তারা ভারতে প্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে। তাদের আশা, যেহেতু নিষেধাজ্ঞার আগে এই পণ্যগুলোর এলসি করা হয়েছিল, তাই এগুলো প্রবেশে অনুমতি পাবে। তবে এটি নির্ভর করবে বাংলাদেশ সরকারের আলোচনার ওপর।
এমন পরিস্থিতিতে সরকারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ইতিমধ্যে অনেক রপ্তানিকারক রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সঙ্গে আলোচনা করে সরকারের সহযোগিতা চেয়েছে।
স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে আজ মঙ্গলবার আন্তমন্ত্রণালয়ের সভা ডেকেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে বিকেল ৪টায় আন্তমন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এই সভা অনুষ্ঠিত হবে।
সভায় নৌপরিবহন ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো, জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের প্রতিনিধিদের উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া ব্যবসায়ী প্রতিনিধি হিসেবে এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ, ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রতিনিধিদের উপস্থিতির জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
ভারতের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গত শনিবার হঠাৎ এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি নিষিদ্ধ করে। শুধু ভারতের নবসেবা ও কলকাতা সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করে দেশটির আমদানিকারকেরা বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি করতে পারবেন বলে ওই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। এ ছাড়া বাংলাদেশ থেকে ভারতের আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা ও মিজোরাম, পশ্চিমবঙ্গের চ্যাংড়াবান্দা ও ফুলবাড়ী শুল্ক স্টেশন দিয়ে ফল, ফলের স্বাদযুক্ত পানীয়, কোমল পানীয়, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, প্লাস্টিক পণ্য, সুতা, সুতার উপজাত, আসবাব রপ্তানিও নিষিদ্ধ করা হয় ওই বিজ্ঞপ্তিতে।
আমদানি ও রপ্তানিসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা জানান, দেশের ২৪টি বন্দরের মধ্যে ১৬টি বন্দর দিয়ে ভারতের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়ে থাকে। তবে যোগাযোগব্যবস্থা সহজ হওয়ায় বেনাপোল ও ভারতের পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে সবচেয়ে বেশি আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়। এর পরিমাণ ৮০ শতাংশ। বেনাপোল বন্দর দিয়ে প্রতিদিন ভারতে ২৫০ থেকে ৩০০ ট্রাকে বিভিন্ন ধরনের পণ্য রপ্তানি হয়। এর মধ্যে শতাধিক ট্রাক পণ্য থাকে তৈরি পোশাক।
এর আগে গত ৮ এপ্রিল বাংলাদেশের জন্য ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করে ভারত। ফলে ভারতের বিমানবন্দর ব্যবহার করে তৃতীয় কোনো দেশে তৈরি পোশাক রপ্তানি করতে পারছে না বাংলাদেশ। অন্যদিকে প্রায় এক মাস আগে ভারত থেকে বেনাপোল, ভোমরা, সোনামসজিদ, বাংলাবান্ধা, বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানির সুযোগ বন্ধ করে দেয় বাংলাদেশের জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমানের মতে, এই পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপে তুলনামূলকভাবে বেশি নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বাংলাদেশের ওপর। তাই ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর চেষ্টা অব্যাহত রাখাই সরকারের উচিত বলে মনে করছেন তিনি।
মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আলোচনার মাধ্যমে বাংলাদেশ এবং ভারতের বিরোধপূর্ণ বিষয়সমূহ মিটিয়ে ফেলতে হবে এবং দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এটাই হবে উভয় দেশের জন্য কল্যাণকর।

ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
ভারতের নিষেধাজ্ঞার এক দিন পরই গত রোববার লালমনিরহাটের বুড়িমারী ও যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দরসহ বিভিন্ন বন্দরে পণ্যের ট্রাক আটকে দেয় ভারত। সংশ্লিষ্টদের সূত্রে জানা যায়, রোববার ভারতের আমদানি বিধিনিষেধের কারণে বুড়িমারী সীমান্তে প্রাণের ১৭ ট্রাক খাদ্যপণ্য আটকে যায়। এ ছাড়া বেনাপোলে ৩৬টি পোশাক বোঝাই ট্রাকসহ অন্যান্য পণ্যের শতাধিক ট্রাক ঢুকতে পারেনি।
গতকাল সোমবার পর্যন্ত বুড়িমারী থেকে প্রাণের পণ্যবোঝাই ট্রাকগুলোর অর্ধেকের বেশি ফেরত নিয়ে আসে প্রতিষ্ঠানটি। এ ছাড়া বেনাপোলে পোর্টের ভেতরে ২৪টি ট্রাক ছাড়া বাকিগুলো ফেরত চলে যায়।
বেনাপোল বন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. সাজেদুর রহমান গতকাল সোমবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, গতকাল পোর্টের ভেতর ও বাইরে শতাধিক ট্রাক দাঁড়িয়ে ছিল। আজ পোর্টের ভেতরের ২৪টি ছাড়া বাকিগুলো ফেরত নিয়ে গেছেন মালিকেরা। এখন পর্যন্ত মনে হচ্ছে, পোর্টের ভেতরের ট্রাকগুলোও ফেরত নিতে হবে।
জানতে চাইলে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পরিচালক (বিপণন) কামরুজ্জামান কামাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের হাতে ৬ মিলিয়ন ডলারের ক্রয় আদেশ রয়েছে। তার মধ্য থেকে রোববার বুড়িমারী দিয়ে ১৭ ট্রাকবোঝাই পণ্য পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু সেগুলো ঢুকতে পারেনি। ট্রাকগুলো ফেরত আনা হচ্ছে। নতুন করে কাগজপত্র তৈরি করে অন্য পথ দিয়ে পণ্য পাঠাতে হবে।’
বেনাপোল স্থলবন্দর সূত্রে জানা যায়, ওই ২৪টি ট্রাক পোর্টের ভেতরে থাকায় এখনো তারা ভারতে প্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে। তাদের আশা, যেহেতু নিষেধাজ্ঞার আগে এই পণ্যগুলোর এলসি করা হয়েছিল, তাই এগুলো প্রবেশে অনুমতি পাবে। তবে এটি নির্ভর করবে বাংলাদেশ সরকারের আলোচনার ওপর।
এমন পরিস্থিতিতে সরকারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ইতিমধ্যে অনেক রপ্তানিকারক রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সঙ্গে আলোচনা করে সরকারের সহযোগিতা চেয়েছে।
স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে আজ মঙ্গলবার আন্তমন্ত্রণালয়ের সভা ডেকেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে বিকেল ৪টায় আন্তমন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এই সভা অনুষ্ঠিত হবে।
সভায় নৌপরিবহন ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো, জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের প্রতিনিধিদের উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া ব্যবসায়ী প্রতিনিধি হিসেবে এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ, ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রতিনিধিদের উপস্থিতির জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
ভারতের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গত শনিবার হঠাৎ এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি নিষিদ্ধ করে। শুধু ভারতের নবসেবা ও কলকাতা সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করে দেশটির আমদানিকারকেরা বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি করতে পারবেন বলে ওই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। এ ছাড়া বাংলাদেশ থেকে ভারতের আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা ও মিজোরাম, পশ্চিমবঙ্গের চ্যাংড়াবান্দা ও ফুলবাড়ী শুল্ক স্টেশন দিয়ে ফল, ফলের স্বাদযুক্ত পানীয়, কোমল পানীয়, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, প্লাস্টিক পণ্য, সুতা, সুতার উপজাত, আসবাব রপ্তানিও নিষিদ্ধ করা হয় ওই বিজ্ঞপ্তিতে।
আমদানি ও রপ্তানিসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা জানান, দেশের ২৪টি বন্দরের মধ্যে ১৬টি বন্দর দিয়ে ভারতের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়ে থাকে। তবে যোগাযোগব্যবস্থা সহজ হওয়ায় বেনাপোল ও ভারতের পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে সবচেয়ে বেশি আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়। এর পরিমাণ ৮০ শতাংশ। বেনাপোল বন্দর দিয়ে প্রতিদিন ভারতে ২৫০ থেকে ৩০০ ট্রাকে বিভিন্ন ধরনের পণ্য রপ্তানি হয়। এর মধ্যে শতাধিক ট্রাক পণ্য থাকে তৈরি পোশাক।
এর আগে গত ৮ এপ্রিল বাংলাদেশের জন্য ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করে ভারত। ফলে ভারতের বিমানবন্দর ব্যবহার করে তৃতীয় কোনো দেশে তৈরি পোশাক রপ্তানি করতে পারছে না বাংলাদেশ। অন্যদিকে প্রায় এক মাস আগে ভারত থেকে বেনাপোল, ভোমরা, সোনামসজিদ, বাংলাবান্ধা, বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানির সুযোগ বন্ধ করে দেয় বাংলাদেশের জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমানের মতে, এই পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপে তুলনামূলকভাবে বেশি নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বাংলাদেশের ওপর। তাই ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর চেষ্টা অব্যাহত রাখাই সরকারের উচিত বলে মনে করছেন তিনি।
মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আলোচনার মাধ্যমে বাংলাদেশ এবং ভারতের বিরোধপূর্ণ বিষয়সমূহ মিটিয়ে ফেলতে হবে এবং দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এটাই হবে উভয় দেশের জন্য কল্যাণকর।

হরিচরণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের বঙ্গীয় শব্দকোষে বিপ্লবের অর্থ দেওয়া রয়েছে প্লবন, ভাসা, নাশ, উপদ্রব, অরাজকতা, উচ্ছেদ প্রভৃতি।বাংলাদেশে জুলাই-আগস্টে যা ঘটে গেল তা এই সব অর্থেই বিপ্লব।
১৩ আগস্ট ২০২৪
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
০৬ অক্টোবর ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
১৮৯৮ সালে ভারতের উত্তর প্রদেশের একটি ধূলিধূসর টিলা খুঁড়ে পাওয়া মূল্যবান এই রত্নগুলো এক শতাব্দীর বেশি সময় ধরে একটি বেসরকারি ব্রিটিশ সংগ্রহাগারে প্রায় দৃষ্টিচক্ষুর আড়ালে ছিল। এখন যেহেতু রত্নগুলোর হাতবদলের সময় এসেছে, তাই নতুন সংগ্রাহকেরা আগ্রহ নিয়ে এগুলো সংগ্রহের জন্য অপেক্ষা করছেন। কিন্তু এখানে একটা অস্বস্তিও তৈরি হয়েছে।
গৌতম বুদ্ধের জন্মস্থান লুম্বিনীর কাছাকাছি, বর্তমানে ভারতের উত্তর প্রদেশে একটি ইটের ঘরের ভেতর থেকে প্রায় ১ হাজার ৮০০টি মুক্তা, রুবি, টোপাজ, নীলা ও নকশা করা সোনার পাত সংগ্রহ করা হয়েছিল। তবে এই রত্নগুলোর সঙ্গে সঙ্গে একটি খোদাই করা পাত্রে হাড়ের টুকরাও পাওয়া যায়, যেগুলোকে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষ বলে শনাক্ত করা হয়। এই আবিষ্কার তখন প্রত্নতত্ত্বের জগতে ব্যাপক আলোড়ন তোলে।
সাদাবি’স এশিয়ার চেয়ারম্যান নিকোলাস চাউ মনে করেন, স্মরণকালের বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর মাঝে এই রত্নসম্ভার অন্যতম। তবে এগুলো নিলামে তোলার কারণে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। আর তা হচ্ছে—ভারতের ইতিহাসের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িয়ে থাকা এবং বৌদ্ধদের কাছে পবিত্র এই সম্পদ বিক্রি করা কি নৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য?
১৮৯৮ সালে ব্রিটিশ এস্টেট ম্যানেজার উইলিয়াম ক্ল্যাক্সটন পেপ্পে লুম্বিনির ঠিক দক্ষিণে পিপ্রাওয়ায় অবস্থিত একটি ঢিবি খনন করেন। সেখান থেকেই প্রায় ২ হাজার বছর আগের ওই নির্দশনগুলো খুঁজে পাওয়া যায়।
ইতিহাসবিদদের মতে, প্রাপ্ত রত্নসম্ভার ও দেহাবশেষ, যা তখনো পর্যন্ত অক্ষত ছিল, সেগুলো গৌতম বুদ্ধের শাক্য বংশের এবং বিশ্বব্যাপী বৌদ্ধদের ঐতিহ্য। হাড়ের নিদর্শনগুলো থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা ও মিয়ানমারের মতো দেশগুলোতে বিতরণ করা হয়েছে। এসব দেশে এখনো সেগুলোর পূজা করা হয়।

আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
১৮৯৮ সালে ভারতের উত্তর প্রদেশের একটি ধূলিধূসর টিলা খুঁড়ে পাওয়া মূল্যবান এই রত্নগুলো এক শতাব্দীর বেশি সময় ধরে একটি বেসরকারি ব্রিটিশ সংগ্রহাগারে প্রায় দৃষ্টিচক্ষুর আড়ালে ছিল। এখন যেহেতু রত্নগুলোর হাতবদলের সময় এসেছে, তাই নতুন সংগ্রাহকেরা আগ্রহ নিয়ে এগুলো সংগ্রহের জন্য অপেক্ষা করছেন। কিন্তু এখানে একটা অস্বস্তিও তৈরি হয়েছে।
গৌতম বুদ্ধের জন্মস্থান লুম্বিনীর কাছাকাছি, বর্তমানে ভারতের উত্তর প্রদেশে একটি ইটের ঘরের ভেতর থেকে প্রায় ১ হাজার ৮০০টি মুক্তা, রুবি, টোপাজ, নীলা ও নকশা করা সোনার পাত সংগ্রহ করা হয়েছিল। তবে এই রত্নগুলোর সঙ্গে সঙ্গে একটি খোদাই করা পাত্রে হাড়ের টুকরাও পাওয়া যায়, যেগুলোকে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষ বলে শনাক্ত করা হয়। এই আবিষ্কার তখন প্রত্নতত্ত্বের জগতে ব্যাপক আলোড়ন তোলে।
সাদাবি’স এশিয়ার চেয়ারম্যান নিকোলাস চাউ মনে করেন, স্মরণকালের বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর মাঝে এই রত্নসম্ভার অন্যতম। তবে এগুলো নিলামে তোলার কারণে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। আর তা হচ্ছে—ভারতের ইতিহাসের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িয়ে থাকা এবং বৌদ্ধদের কাছে পবিত্র এই সম্পদ বিক্রি করা কি নৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য?
১৮৯৮ সালে ব্রিটিশ এস্টেট ম্যানেজার উইলিয়াম ক্ল্যাক্সটন পেপ্পে লুম্বিনির ঠিক দক্ষিণে পিপ্রাওয়ায় অবস্থিত একটি ঢিবি খনন করেন। সেখান থেকেই প্রায় ২ হাজার বছর আগের ওই নির্দশনগুলো খুঁজে পাওয়া যায়।
ইতিহাসবিদদের মতে, প্রাপ্ত রত্নসম্ভার ও দেহাবশেষ, যা তখনো পর্যন্ত অক্ষত ছিল, সেগুলো গৌতম বুদ্ধের শাক্য বংশের এবং বিশ্বব্যাপী বৌদ্ধদের ঐতিহ্য। হাড়ের নিদর্শনগুলো থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা ও মিয়ানমারের মতো দেশগুলোতে বিতরণ করা হয়েছে। এসব দেশে এখনো সেগুলোর পূজা করা হয়।

হরিচরণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের বঙ্গীয় শব্দকোষে বিপ্লবের অর্থ দেওয়া রয়েছে প্লবন, ভাসা, নাশ, উপদ্রব, অরাজকতা, উচ্ছেদ প্রভৃতি।বাংলাদেশে জুলাই-আগস্টে যা ঘটে গেল তা এই সব অর্থেই বিপ্লব।
১৩ আগস্ট ২০২৪
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
০৬ অক্টোবর ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫