চিররঞ্জন সরকার

চলমান আন্দোলন ঘিরে সারা দেশে হিংসাত্মক ঘটনা বাড়ছে। মৃতের সংখ্যা বাড়ছে। ভীতি বাড়ছে। একই সঙ্গে বাড়ছে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম। দ্রব্যমূল্যের ক্রমাগত ঊর্ধ্বগতির প্রভাবে মধ্যবিত্ত শ্রেণির মানুষ যতটা না ভুগছে, তার চেয়েও খারাপ পরিস্থিতি স্বল্প আয়ের মানুষগুলোর। শুধু টিয়ার গ্যাসের ঝাঁজেই নয়, মানুষ বাজার করতে গিয়েও এখন কাঁদছে।
শহরগুলোতে বেড়েছে সব ধরনের সবজির দাম। বিক্রেতারা বলছেন, শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মধ্যে পাইকারি বাজারে পণ্যের সরবরাহ নেমেছে অর্ধেকে। এতে প্রতি কেজি সবজিতে দাম বেড়েছে ১০ থেকে ৩০ টাকা পর্যন্ত। অবশ্য শিক্ষার্থীদের আন্দোলন অজুহাত মাত্র। এমনিতেই জিনিসপত্রের দাম ক্রমবর্ধমান। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস) ও বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণাপ্রতিষ্ঠানের (বিআইডিএস) এক জরিপ থেকে জানা যায়, খাদ্য মূল্যস্ফীতি চলতি বছর রেকর্ড ১৫ শতাংশে পৌঁছেছে। অন্যদিকে, বেসরকারি গবেষণা সংস্থা সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) তথ্যমতে, দেশে গত পাঁচ বছরে শুধু ভোগ্যপণ্যের দাম ৩১০ শতাংশ পর্যন্ত বেড়েছে। চাল, চিনি, সয়াবিন তেল, গরুর মাংসের দাম বিশ্ববাজারের তুলনায় বাংলাদেশে বেশি।
অবশ্য আমাদের দেশে জীবনের দাম বাড়ে না, সৃজনশীলতা বা স্বপ্নের দাম বাড়ে না, এমনকি মানুষের দামও বাড়ে না। চারদিকে যে হারে মানুষ মারার ‘উৎসব’ চলছে, তাতে মনে হচ্ছে জীবন কত সস্তা! জীবনের দাম কমলেও বেঁচে থাকার জন্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম শুধুই বাড়ে। কারণে বাড়ে, অকারণে বাড়ে। বাড়তেই থাকে। দাম বাড়ার জন্য কোনো কারণও লাগে না। জিনিসপত্রের দাম বাজেটের আগে বাড়ে, পরেও বাড়ে। ঝড়, বৃষ্টি হলে বাড়ে, না হলেও বাড়ে। আন্তর্জাতিক পর্যায়ে দাম বাড়লেও বাড়ে। নির্বাচিত ‘ঢিলেঢালা’ সরকারের শাসনামলে বাড়ে, এমনকি অনির্বাচিত ‘শক্ত’ সরকারের আমলেও বাড়ে। রমজানের আগে বাড়ে, পরেও বাড়ে। আন্দোলনের আগে বাড়ে, আন্দোলনের মধ্যে বাড়ে, পরেও বাড়ে। দাম একবার বাড়লে তা আর কমে না। আরও বিস্ময়কর ব্যাপার হচ্ছে, আন্তর্জাতিক পর্যায়ে দাম কমলেও আমাদের দেশে দাম কমে না। এমনকি দেশে বাম্পার ফলন হলেও খাদ্যশস্যের দাম কমে না। মানুষের বয়সের মতো, আমাদের জীবনের সামগ্রিক হতাশার মতো জিনিসপত্রের দাম কেবল বাড়ে, বাড়তেই থাকে।
দাম আপনা-আপনি বাড়ে না, বাড়ানো হয়। বলা বাহুল্য, এ দাম বাড়ার ক্ষেত্রে আমদানিকারক, ব্যবসায়ী, আড়তদার, চাঁদাবাজ, আন্তর্জাতিক বাজার ইত্যাদির ভূমিকা থাকলেও সরকারি নীতির ভূমিকাও উপেক্ষণীয় নয়। তবে আশার কথা হচ্ছে, এসব নিয়ে মানুষের মধ্যে অসন্তোষ থাকলেও বড় বেশি ক্ষোভ নেই। এরও অবশ্য কারণ আছে। আমাদের দেশের শাসকেরা নানা কৌশলে মানুষের সহ্যশক্তি বাড়িয়ে দিয়েছে। দিনের পর দিন, মাসের পর মাস, বছরের পর বছর ধরে যদি একটু একটু করে নির্যাতন করা হয়, আঘাত করা হয়, তাহলে একসময় তা সয়ে যায়। এরপর আঘাতের মাত্রা বাড়ালেও খুব একটা ভাবান্তর হয় না। আমাদের দেশের মানুষকেও একটু একটু করে আঘাত ও নির্যাতন চালিয়ে সর্বংসহা বানিয়ে ফেলা হয়েছে।
তারপরও অবশ্য আমরা মূল্যবৃদ্ধি নিয়ে মাথা ঘামাই। এটা নিয়ে আমাদের মাথা ঘামাতেই হয়। কারণ, বাঁচার জন্য আমাদের খেতে হয়, জিনিসপত্র কিনতে হয়; কাজেই দাম যত বেশিই হোক প্রয়োজনীয় দ্রব্যাদি আমাদের সংগ্রহ করতেই হবে। কম হোক, বেশি হোক, ভাত
হোক আলু হোক, আমিষ হোক আর নিরামিষ হোক, সাপ-ব্যাঙ-কুকুরই হোক, আর মরা মুরগি, রাসায়নিকমিশ্রিত সবজিই হোক, খেতে হবেই। না খেয়ে মানুষ বাঁচে না। বাঁচতে পারে না।
জিনিসপত্রের দাম ক্রমাগত কেন বাড়ছে, কী পরিমাণ বাড়ছে, এতে সরকারের ভূমিকা কতটুকু, আন্তর্জাতিক বাজারে দাম বাড়ার প্রভাব কতটুকু আর ব্যবসায়ী বা মধ্যস্বত্বভোগীদের কারসাজি কতটুকু, এই দাম বাড়ার ফলে কারা ক্ষতিগ্রস্ত হলো, এর পরিণামই বা কী, এসব বিষয় নিয়ে অনেক আলোচনা ও গবেষণা হয়েছে, এখনো হচ্ছে, আশা করা যায় ভবিষ্যতে আরও অনেক হবে। কিন্তু তাতে পরিস্থিতি বদলায়নি; হয়তো বদলাবেও না। বাজারদর এখনো চড়া। চাল-ডাল, তরিতরকারি, চিনি-তেল, মাছ-মাংস, ডিম, দুধসহ প্রায় সব জিনিসপত্রের দামই বেশি।
এই দাম বেড়ে যাওয়া নিয়েও আছে পরস্পরবিরোধী মন্তব্য। সরকার দোষ দেয় ব্যবসায়ীদের। তাদের অতিমুনাফার লোভ আর মজুতদারি মানসিকতার কারণে দাম বাড়ে বলে সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়। পক্ষান্তরে ব্যবসায়ীরা বলেন নানা কথা। তাঁদের মতে, উৎপাদন কম হওয়া, পরিবহন ব্যয় বৃদ্ধি, চাঁদাবাজি, আমদানি ব্যয় বেড়ে যাওয়া ইত্যাদি কারণেই মূল্যবৃদ্ধি ঘটে। দাম বাড়ার জন্য ব্যবসায়ীরা ইদানীং ক্রেতাদের দোষ দেন। ক্রেতারা এক কেজি লাগলে পাঁচ কেজি কেনেন, তাতে দাম বাড়ে বলে মন্তব্য করেন কোনো কোনো ব্যবসায়ী! পক্ষান্তরে ক্রেতাদের অভিযোগ, ব্যবসায়ীরা সুযোগ পেলেই দাম বাড়িয়ে দেন। ডাকাতি করেন। দাম বাড়ার জন্য ব্যবসায়ী-সরকার-ক্রেতা একে অপরকে দায়ী করছেন। তাতে অবশ্য জিনিসের দাম কমছে না!
আসলে ব্যবসায়ীদের দোষ দিয়েও লাভ নেই। কারণ তাঁরা যেকোনো উপায়ে কীভাবে মুনাফা বাড়ানো যায়, সেই চেষ্টা সততার সঙ্গেই করেন। তাঁদের ধর্মের দোহাই দিয়ে, ভয় দেখিয়ে লাভ বা মুনাফার আকাঙ্ক্ষা থেকে সরিয়ে আনা যাবে না। আর তাই আন্দোলনে-বন্যা-খরা ও রমজানে দেশে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের মূল্যবৃদ্ধিও ‘নিয়তি’ হিসেবেই মেনে নিতে হবে!
আমাদের সমাজে ব্যবসায়ীদের ইমেজ খুব একটা ইতিবাচক নয়। সৎপথে থেকে সৎভাবে ব্যবসা করে বড় লাভের মুখ দেখা সম্ভব নয়, এমন একটা বদ্ধমূল ধারণা আমরা লালন করি। যাঁরা ব্যবসা করেন, তাঁরা চোরাপথে মাল কিনে, শ্রমিক-কর্মচারীদের ঠকিয়ে, ভেজাল বা নিম্নমানের জিনিস মিশিয়ে, ওজনে কম দিয়ে, মজুতদারি করে, দাম বাড়িয়ে, ট্যাক্স ফাঁকি দিয়ে বড়লোক হন বলে অনেকের বিশ্বাস।
তবে ব্যবসা-বাণিজ্যের মূল কথাই হচ্ছে লাভ। যেকোনো উপায়ে লাভ করাই একজন ব্যবসায়ীর প্রধান লক্ষ্য। শুধু লাভ নয়, মহা লাভ খোঁজেন তাঁরা। লাভ করতে গিয়ে কোনো ঝুটঝামেলা, ইনকাম ট্যাক্স, সেলস ট্যাক্স, কাস্টমস, পুলিশ, মামলা, অসন্তোষ, হরতাল, ধর্মঘটে জড়িয়ে না পড়েন, ব্যবসায়ীদের মনে এই আকাঙ্ক্ষাও প্রবলভাবে কাজ করে। ব্যবসা করা অবশ্য সহজ কাজ নয়। অনেক ঝানু ব্যক্তি ব্যবসা করতে গিয়ে ফতুর হয়েছেন, আবার অনেক হাঁদারামও ব্যবসায় সফল হয়ে কোটিপতি বনেছেন। উভয় প্রকার উদাহরণই আমাদের সমাজে ভূরি ভূরি আছে। প্রখর বুদ্ধি, কূট-কৌশল, কঠোর পরিশ্রম, অমিত আত্মবিশ্বাস, সেই সঙ্গে ভাগ্যদেবীর সুনজর—এসব না হলে ব্যবসায় সফল হওয়া যায় না।
হ্যাঁ, সেই সঙ্গে সততাও প্রয়োজন। আমরা ছোটবেলায় দেখতাম দোকানে কাচের ফ্রেমে বাঁধানো রয়েছে, ‘সততাই আমাদের একমাত্র মূলধন’। আজকাল অবশ্য এ রকম কোনো ঘোষণাপত্র কোনো দোকানে বা শোরুমের দেয়ালে দেখা যায় না। পুরো সমাজ থেকেই যেখানে সততা বিদায় হয়েছে, সেখানে দোকানে তা আর টিকে থাকবে কীভাবে? ব্যবসায় সততা বলতে যে কিছুই আর অবশিষ্ট নেই তেমন নয়, সততা এখনো আছে। তবে তা ভিন্ন সংজ্ঞায়, আলাদা মানে নিয়ে। এ প্রসঙ্গে একটি গল্প বলা যাক।
এক বৃদ্ধ ব্যবসায়ী তাঁর শিশু নাতিকে নিয়ে নিজের দোকানে এসেছেন। তিনি নাতিকে নিয়ে ক্যাশবাক্সের পেছনে গদিতে বসেছেন, পাশের দেয়ালেই ‘সততাই আমাদের মূলধন’ বিজ্ঞপ্তি ঝুলছে। নাতি পড়তে শিখেছে। সে ওটা দেখে পিতামহকে প্রশ্ন করল, ‘দাদু, সততা কী?’ দাদু বললেন, ‘সততা একটা খুব খাঁটি জিনিস। চট করে বোঝানো কঠিন। মনে করো আমি আর তুমি এ ব্যবসার অংশীদার। এখন একজন গ্রাহক এসে একটা জিনিস কিনে ১০ টাকা দিতে গিয়ে ভুল করে ২০ টাকার নোট তোমাকে দিয়ে চলে গেল। তুমিই ক্যাশবাক্সে বসেছ, তোমার অংশীদার আমি দোকানের অন্যদিকে রয়েছি। আমি দেখতে পাইনি গ্রাহক ভুল করে ১০ টাকা বেশি দিয়েছে। এখন তুমি যদি ওই ১০ টাকা থেকে আমাকে ৫ টাকা দাও, তাহলে সেটাই হলো তোমার সততা।’
নাতি বলল, ‘কিন্তু দাদু গ্রাহক...!’
দাদু বললেন, ‘গ্রাহকের কথা ভেব না, ওটা বাদ দাও।’
আগে মোটা অঙ্কের চাঁদার বিনিময়ে ব্যবসায়ীরা সরকারকে প্রভাবিত করার চেষ্টা করতেন। তাঁদের স্বার্থের পক্ষে নীতি ও আইন প্রণয়নের জন্য অনেক কাঠখড় পোড়াতে হতো। বর্তমানে ব্যবসায়ীরাই রাজনীতিবিদ, রাজনীতিবিদরাই ব্যবসায়ী। এখন আর তোয়াজ-তোষামোদের বালাই নেই। এখন তাঁরাই সর্বেসর্বা। তাঁরা নিজেদের স্বার্থে আইন প্রণয়ন যেমন করছেন, নিজেদের প্রয়োজনে সেই আইনকে বুড়ো আঙুলও দেখান। দেখারও কেউ নেই আর বলারও কিছু নেই। তাঁরাই এখন নীতিনির্ধারক। দণ্ডমুণ্ডের কর্তা।
প্রশ্ন হলো, এই অচলায়তন কবে ভাঙবে কবে? কবে?
লেখক: চিররঞ্জন সরকার, গবেষক ও কলামিস্ট

চলমান আন্দোলন ঘিরে সারা দেশে হিংসাত্মক ঘটনা বাড়ছে। মৃতের সংখ্যা বাড়ছে। ভীতি বাড়ছে। একই সঙ্গে বাড়ছে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম। দ্রব্যমূল্যের ক্রমাগত ঊর্ধ্বগতির প্রভাবে মধ্যবিত্ত শ্রেণির মানুষ যতটা না ভুগছে, তার চেয়েও খারাপ পরিস্থিতি স্বল্প আয়ের মানুষগুলোর। শুধু টিয়ার গ্যাসের ঝাঁজেই নয়, মানুষ বাজার করতে গিয়েও এখন কাঁদছে।
শহরগুলোতে বেড়েছে সব ধরনের সবজির দাম। বিক্রেতারা বলছেন, শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মধ্যে পাইকারি বাজারে পণ্যের সরবরাহ নেমেছে অর্ধেকে। এতে প্রতি কেজি সবজিতে দাম বেড়েছে ১০ থেকে ৩০ টাকা পর্যন্ত। অবশ্য শিক্ষার্থীদের আন্দোলন অজুহাত মাত্র। এমনিতেই জিনিসপত্রের দাম ক্রমবর্ধমান। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস) ও বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণাপ্রতিষ্ঠানের (বিআইডিএস) এক জরিপ থেকে জানা যায়, খাদ্য মূল্যস্ফীতি চলতি বছর রেকর্ড ১৫ শতাংশে পৌঁছেছে। অন্যদিকে, বেসরকারি গবেষণা সংস্থা সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) তথ্যমতে, দেশে গত পাঁচ বছরে শুধু ভোগ্যপণ্যের দাম ৩১০ শতাংশ পর্যন্ত বেড়েছে। চাল, চিনি, সয়াবিন তেল, গরুর মাংসের দাম বিশ্ববাজারের তুলনায় বাংলাদেশে বেশি।
অবশ্য আমাদের দেশে জীবনের দাম বাড়ে না, সৃজনশীলতা বা স্বপ্নের দাম বাড়ে না, এমনকি মানুষের দামও বাড়ে না। চারদিকে যে হারে মানুষ মারার ‘উৎসব’ চলছে, তাতে মনে হচ্ছে জীবন কত সস্তা! জীবনের দাম কমলেও বেঁচে থাকার জন্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম শুধুই বাড়ে। কারণে বাড়ে, অকারণে বাড়ে। বাড়তেই থাকে। দাম বাড়ার জন্য কোনো কারণও লাগে না। জিনিসপত্রের দাম বাজেটের আগে বাড়ে, পরেও বাড়ে। ঝড়, বৃষ্টি হলে বাড়ে, না হলেও বাড়ে। আন্তর্জাতিক পর্যায়ে দাম বাড়লেও বাড়ে। নির্বাচিত ‘ঢিলেঢালা’ সরকারের শাসনামলে বাড়ে, এমনকি অনির্বাচিত ‘শক্ত’ সরকারের আমলেও বাড়ে। রমজানের আগে বাড়ে, পরেও বাড়ে। আন্দোলনের আগে বাড়ে, আন্দোলনের মধ্যে বাড়ে, পরেও বাড়ে। দাম একবার বাড়লে তা আর কমে না। আরও বিস্ময়কর ব্যাপার হচ্ছে, আন্তর্জাতিক পর্যায়ে দাম কমলেও আমাদের দেশে দাম কমে না। এমনকি দেশে বাম্পার ফলন হলেও খাদ্যশস্যের দাম কমে না। মানুষের বয়সের মতো, আমাদের জীবনের সামগ্রিক হতাশার মতো জিনিসপত্রের দাম কেবল বাড়ে, বাড়তেই থাকে।
দাম আপনা-আপনি বাড়ে না, বাড়ানো হয়। বলা বাহুল্য, এ দাম বাড়ার ক্ষেত্রে আমদানিকারক, ব্যবসায়ী, আড়তদার, চাঁদাবাজ, আন্তর্জাতিক বাজার ইত্যাদির ভূমিকা থাকলেও সরকারি নীতির ভূমিকাও উপেক্ষণীয় নয়। তবে আশার কথা হচ্ছে, এসব নিয়ে মানুষের মধ্যে অসন্তোষ থাকলেও বড় বেশি ক্ষোভ নেই। এরও অবশ্য কারণ আছে। আমাদের দেশের শাসকেরা নানা কৌশলে মানুষের সহ্যশক্তি বাড়িয়ে দিয়েছে। দিনের পর দিন, মাসের পর মাস, বছরের পর বছর ধরে যদি একটু একটু করে নির্যাতন করা হয়, আঘাত করা হয়, তাহলে একসময় তা সয়ে যায়। এরপর আঘাতের মাত্রা বাড়ালেও খুব একটা ভাবান্তর হয় না। আমাদের দেশের মানুষকেও একটু একটু করে আঘাত ও নির্যাতন চালিয়ে সর্বংসহা বানিয়ে ফেলা হয়েছে।
তারপরও অবশ্য আমরা মূল্যবৃদ্ধি নিয়ে মাথা ঘামাই। এটা নিয়ে আমাদের মাথা ঘামাতেই হয়। কারণ, বাঁচার জন্য আমাদের খেতে হয়, জিনিসপত্র কিনতে হয়; কাজেই দাম যত বেশিই হোক প্রয়োজনীয় দ্রব্যাদি আমাদের সংগ্রহ করতেই হবে। কম হোক, বেশি হোক, ভাত
হোক আলু হোক, আমিষ হোক আর নিরামিষ হোক, সাপ-ব্যাঙ-কুকুরই হোক, আর মরা মুরগি, রাসায়নিকমিশ্রিত সবজিই হোক, খেতে হবেই। না খেয়ে মানুষ বাঁচে না। বাঁচতে পারে না।
জিনিসপত্রের দাম ক্রমাগত কেন বাড়ছে, কী পরিমাণ বাড়ছে, এতে সরকারের ভূমিকা কতটুকু, আন্তর্জাতিক বাজারে দাম বাড়ার প্রভাব কতটুকু আর ব্যবসায়ী বা মধ্যস্বত্বভোগীদের কারসাজি কতটুকু, এই দাম বাড়ার ফলে কারা ক্ষতিগ্রস্ত হলো, এর পরিণামই বা কী, এসব বিষয় নিয়ে অনেক আলোচনা ও গবেষণা হয়েছে, এখনো হচ্ছে, আশা করা যায় ভবিষ্যতে আরও অনেক হবে। কিন্তু তাতে পরিস্থিতি বদলায়নি; হয়তো বদলাবেও না। বাজারদর এখনো চড়া। চাল-ডাল, তরিতরকারি, চিনি-তেল, মাছ-মাংস, ডিম, দুধসহ প্রায় সব জিনিসপত্রের দামই বেশি।
এই দাম বেড়ে যাওয়া নিয়েও আছে পরস্পরবিরোধী মন্তব্য। সরকার দোষ দেয় ব্যবসায়ীদের। তাদের অতিমুনাফার লোভ আর মজুতদারি মানসিকতার কারণে দাম বাড়ে বলে সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়। পক্ষান্তরে ব্যবসায়ীরা বলেন নানা কথা। তাঁদের মতে, উৎপাদন কম হওয়া, পরিবহন ব্যয় বৃদ্ধি, চাঁদাবাজি, আমদানি ব্যয় বেড়ে যাওয়া ইত্যাদি কারণেই মূল্যবৃদ্ধি ঘটে। দাম বাড়ার জন্য ব্যবসায়ীরা ইদানীং ক্রেতাদের দোষ দেন। ক্রেতারা এক কেজি লাগলে পাঁচ কেজি কেনেন, তাতে দাম বাড়ে বলে মন্তব্য করেন কোনো কোনো ব্যবসায়ী! পক্ষান্তরে ক্রেতাদের অভিযোগ, ব্যবসায়ীরা সুযোগ পেলেই দাম বাড়িয়ে দেন। ডাকাতি করেন। দাম বাড়ার জন্য ব্যবসায়ী-সরকার-ক্রেতা একে অপরকে দায়ী করছেন। তাতে অবশ্য জিনিসের দাম কমছে না!
আসলে ব্যবসায়ীদের দোষ দিয়েও লাভ নেই। কারণ তাঁরা যেকোনো উপায়ে কীভাবে মুনাফা বাড়ানো যায়, সেই চেষ্টা সততার সঙ্গেই করেন। তাঁদের ধর্মের দোহাই দিয়ে, ভয় দেখিয়ে লাভ বা মুনাফার আকাঙ্ক্ষা থেকে সরিয়ে আনা যাবে না। আর তাই আন্দোলনে-বন্যা-খরা ও রমজানে দেশে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের মূল্যবৃদ্ধিও ‘নিয়তি’ হিসেবেই মেনে নিতে হবে!
আমাদের সমাজে ব্যবসায়ীদের ইমেজ খুব একটা ইতিবাচক নয়। সৎপথে থেকে সৎভাবে ব্যবসা করে বড় লাভের মুখ দেখা সম্ভব নয়, এমন একটা বদ্ধমূল ধারণা আমরা লালন করি। যাঁরা ব্যবসা করেন, তাঁরা চোরাপথে মাল কিনে, শ্রমিক-কর্মচারীদের ঠকিয়ে, ভেজাল বা নিম্নমানের জিনিস মিশিয়ে, ওজনে কম দিয়ে, মজুতদারি করে, দাম বাড়িয়ে, ট্যাক্স ফাঁকি দিয়ে বড়লোক হন বলে অনেকের বিশ্বাস।
তবে ব্যবসা-বাণিজ্যের মূল কথাই হচ্ছে লাভ। যেকোনো উপায়ে লাভ করাই একজন ব্যবসায়ীর প্রধান লক্ষ্য। শুধু লাভ নয়, মহা লাভ খোঁজেন তাঁরা। লাভ করতে গিয়ে কোনো ঝুটঝামেলা, ইনকাম ট্যাক্স, সেলস ট্যাক্স, কাস্টমস, পুলিশ, মামলা, অসন্তোষ, হরতাল, ধর্মঘটে জড়িয়ে না পড়েন, ব্যবসায়ীদের মনে এই আকাঙ্ক্ষাও প্রবলভাবে কাজ করে। ব্যবসা করা অবশ্য সহজ কাজ নয়। অনেক ঝানু ব্যক্তি ব্যবসা করতে গিয়ে ফতুর হয়েছেন, আবার অনেক হাঁদারামও ব্যবসায় সফল হয়ে কোটিপতি বনেছেন। উভয় প্রকার উদাহরণই আমাদের সমাজে ভূরি ভূরি আছে। প্রখর বুদ্ধি, কূট-কৌশল, কঠোর পরিশ্রম, অমিত আত্মবিশ্বাস, সেই সঙ্গে ভাগ্যদেবীর সুনজর—এসব না হলে ব্যবসায় সফল হওয়া যায় না।
হ্যাঁ, সেই সঙ্গে সততাও প্রয়োজন। আমরা ছোটবেলায় দেখতাম দোকানে কাচের ফ্রেমে বাঁধানো রয়েছে, ‘সততাই আমাদের একমাত্র মূলধন’। আজকাল অবশ্য এ রকম কোনো ঘোষণাপত্র কোনো দোকানে বা শোরুমের দেয়ালে দেখা যায় না। পুরো সমাজ থেকেই যেখানে সততা বিদায় হয়েছে, সেখানে দোকানে তা আর টিকে থাকবে কীভাবে? ব্যবসায় সততা বলতে যে কিছুই আর অবশিষ্ট নেই তেমন নয়, সততা এখনো আছে। তবে তা ভিন্ন সংজ্ঞায়, আলাদা মানে নিয়ে। এ প্রসঙ্গে একটি গল্প বলা যাক।
এক বৃদ্ধ ব্যবসায়ী তাঁর শিশু নাতিকে নিয়ে নিজের দোকানে এসেছেন। তিনি নাতিকে নিয়ে ক্যাশবাক্সের পেছনে গদিতে বসেছেন, পাশের দেয়ালেই ‘সততাই আমাদের মূলধন’ বিজ্ঞপ্তি ঝুলছে। নাতি পড়তে শিখেছে। সে ওটা দেখে পিতামহকে প্রশ্ন করল, ‘দাদু, সততা কী?’ দাদু বললেন, ‘সততা একটা খুব খাঁটি জিনিস। চট করে বোঝানো কঠিন। মনে করো আমি আর তুমি এ ব্যবসার অংশীদার। এখন একজন গ্রাহক এসে একটা জিনিস কিনে ১০ টাকা দিতে গিয়ে ভুল করে ২০ টাকার নোট তোমাকে দিয়ে চলে গেল। তুমিই ক্যাশবাক্সে বসেছ, তোমার অংশীদার আমি দোকানের অন্যদিকে রয়েছি। আমি দেখতে পাইনি গ্রাহক ভুল করে ১০ টাকা বেশি দিয়েছে। এখন তুমি যদি ওই ১০ টাকা থেকে আমাকে ৫ টাকা দাও, তাহলে সেটাই হলো তোমার সততা।’
নাতি বলল, ‘কিন্তু দাদু গ্রাহক...!’
দাদু বললেন, ‘গ্রাহকের কথা ভেব না, ওটা বাদ দাও।’
আগে মোটা অঙ্কের চাঁদার বিনিময়ে ব্যবসায়ীরা সরকারকে প্রভাবিত করার চেষ্টা করতেন। তাঁদের স্বার্থের পক্ষে নীতি ও আইন প্রণয়নের জন্য অনেক কাঠখড় পোড়াতে হতো। বর্তমানে ব্যবসায়ীরাই রাজনীতিবিদ, রাজনীতিবিদরাই ব্যবসায়ী। এখন আর তোয়াজ-তোষামোদের বালাই নেই। এখন তাঁরাই সর্বেসর্বা। তাঁরা নিজেদের স্বার্থে আইন প্রণয়ন যেমন করছেন, নিজেদের প্রয়োজনে সেই আইনকে বুড়ো আঙুলও দেখান। দেখারও কেউ নেই আর বলারও কিছু নেই। তাঁরাই এখন নীতিনির্ধারক। দণ্ডমুণ্ডের কর্তা।
প্রশ্ন হলো, এই অচলায়তন কবে ভাঙবে কবে? কবে?
লেখক: চিররঞ্জন সরকার, গবেষক ও কলামিস্ট

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
০৬ অক্টোবর ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫বাসস, ঢাকা

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
আজ সোমবার বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১-এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) মো. আলমগীরের জেরা শুরু করেন রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী আমীর হোসেন। আইনজীবী আমীর হোসেন পলাতক আসামি শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে শুনানি করছেন। এর আগে গত মঙ্গলবার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. আলমগীরের সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন হয়।
এই মামলার শুনানিতে এর আগে গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম প্রতীক শহীদ আবু সাঈদের বাবাসহ স্বজনহারা পরিবারের একাধিক সদস্য সাক্ষ্য দিয়েছেন। এ ছাড়া মামলার গুরুত্বপূর্ণ ‘স্টার উইটনেস’ হিসেবে সাক্ষ্য দেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক এবং জুলাই আন্দোলনের অন্যতম নেতৃত্বদানকারী নাহিদ ইসলাম এবং দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান।
গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে আওয়ামী লীগ সরকার, তাদের দলীয় ক্যাডার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করে বলে অভিযোগ ওঠে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে শেখ হাসিনা, তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং তৎকালীন আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে গত ১০ জুলাই অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল-১।
পরবর্তীকালে, এই মামলার অন্যতম আসামি সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন দোষ স্বীকার করে ঘটনার সত্যতা উদ্ঘাটনে রাজসাক্ষী (অ্যাপ্রোভার) হওয়ার জন্য ট্রাইব্যুনালে আবেদন করেন। ট্রাইব্যুনাল তাঁর আবেদন মঞ্জুর করলে তিনি রাজসাক্ষী হিসেবে এই মামলায় সাক্ষ্য দেন।
মামলার প্রসিকিউশন পক্ষে শুনানি করছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম এবং গাজী এসএইচ তামিম। শুনানিতে তাঁদের সঙ্গে অপর প্রসিকিউটররাও উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদিকে, এই মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের পক্ষে আছেন আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ।
মানবতাবিরোধী অপরাধের এই মামলা ছাড়াও ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আরও দুটি মামলা বিচারাধীন। এর মধ্যে একটি মামলায় আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে সংঘটিত গুম-খুনের ঘটনায় তাঁকে আসামি করা হয়েছে। অন্য মামলাটি হলো রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে হত্যাকাণ্ড নিয়ে। এই তিনটি মামলার বিচারকাজই বর্তমানে দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে চলমান।

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
আজ সোমবার বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১-এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) মো. আলমগীরের জেরা শুরু করেন রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী আমীর হোসেন। আইনজীবী আমীর হোসেন পলাতক আসামি শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে শুনানি করছেন। এর আগে গত মঙ্গলবার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. আলমগীরের সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন হয়।
এই মামলার শুনানিতে এর আগে গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম প্রতীক শহীদ আবু সাঈদের বাবাসহ স্বজনহারা পরিবারের একাধিক সদস্য সাক্ষ্য দিয়েছেন। এ ছাড়া মামলার গুরুত্বপূর্ণ ‘স্টার উইটনেস’ হিসেবে সাক্ষ্য দেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক এবং জুলাই আন্দোলনের অন্যতম নেতৃত্বদানকারী নাহিদ ইসলাম এবং দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান।
গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে আওয়ামী লীগ সরকার, তাদের দলীয় ক্যাডার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করে বলে অভিযোগ ওঠে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে শেখ হাসিনা, তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং তৎকালীন আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে গত ১০ জুলাই অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল-১।
পরবর্তীকালে, এই মামলার অন্যতম আসামি সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন দোষ স্বীকার করে ঘটনার সত্যতা উদ্ঘাটনে রাজসাক্ষী (অ্যাপ্রোভার) হওয়ার জন্য ট্রাইব্যুনালে আবেদন করেন। ট্রাইব্যুনাল তাঁর আবেদন মঞ্জুর করলে তিনি রাজসাক্ষী হিসেবে এই মামলায় সাক্ষ্য দেন।
মামলার প্রসিকিউশন পক্ষে শুনানি করছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম এবং গাজী এসএইচ তামিম। শুনানিতে তাঁদের সঙ্গে অপর প্রসিকিউটররাও উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদিকে, এই মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের পক্ষে আছেন আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ।
মানবতাবিরোধী অপরাধের এই মামলা ছাড়াও ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আরও দুটি মামলা বিচারাধীন। এর মধ্যে একটি মামলায় আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে সংঘটিত গুম-খুনের ঘটনায় তাঁকে আসামি করা হয়েছে। অন্য মামলাটি হলো রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে হত্যাকাণ্ড নিয়ে। এই তিনটি মামলার বিচারকাজই বর্তমানে দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে চলমান।

চলমান আন্দোলন ঘিরে সারা দেশে হিংসাত্মক ঘটনা বাড়ছে। মৃতের সংখ্যা বাড়ছে। ভীতি বাড়ছে। একই সঙ্গে বাড়ছে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম। দ্রব্যমূল্যের ক্রমাগত ঊর্ধ্বগতির প্রভাবে মধ্যবিত্ত শ্রেণির মানুষ যতটা না ভুগছে, তার চেয়েও খারাপ পরিস্থিতি স্বল্প আয়ের মানুষগুলোর। শুধু টিয়ার গ্যাসের ঝাঁজেই নয়, মানুষ বাজ
০৬ আগস্ট ২০২৪
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর সঙ্গে।
মাছের সুষ্ঠু প্রজনন, উৎপাদন, মৎস্যসম্পদ সংরক্ষণ ও টেকসই মৎস্য আহরণের জন্য সমুদ্রে সব ধরনের মাছ শিকার ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা গতকাল বুধবার দিবাগত মধ্যরাতে শেষ হয়েছে। তাই গতকাল দিনভর ছিল উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে ব্যস্ততা। অনেকে দেখে নিচ্ছিলেন ট্রলার ঠিকঠাক আছে কি না, কেউ জালের ছেঁড়া অংশ সেলাই করছিলেন, কেউ আবার প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রীসহ অন্য সরঞ্জাম গুছিয়ে নিচ্ছিলেন।
বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র এবং ফকিরহাট উপ-মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ঘাটে গতকাল শত শত ট্রলার নোঙর করে রাখা ছিল। জেলেদের উপস্থিতিতে ঘাট এলাকা সরগরম হয়ে ওঠে। ফকিরহাটের মুদি-মনিহারি দোকানগুলোতে জেলেরা কেনাকাটা করতে ভিড় জমান। ফকিরহাট এলাকার বিসমিল্লাহ ট্রলারের মাঝি রহিম মিয়া বলেন, ‘সাগরে মাছ শিকারে যেতে সকল প্রস্তুতি নিয়েছি। নিষেধাজ্ঞার সময় শেষ হওয়ামাত্রই সাগরে নামব।’
জেলে নুরসাইদ ও ফোরকান মিয়া বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞার সময় পরিবার-পরিজন নিয়ে বেশ কষ্টে কেটেছে। ওই সময়ে বেশ টাকা ঋণ করেছি। এখন সাগরে যাব। দেখি আল্লাহ ঋণ পরিশোধ করতে দেন কি না।’
নোয়াখালীর হাতিয়ার সূর্যমুখী, বাংলাবাজার, কাজিরবাজার, পাইতান মার্কেট চেয়ারম্যান ঘাটসহ বেশ কয়েকটি ঘাটে গতকাল জেলেদের ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা গেছে। অনেকে নৌকায় জাল তুলছিলেন, আবার অনেকে জ্বালানি তেল মজুতসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী ট্রলারে নিয়ে যান। সূর্যমুখী ঘাটের এমভি মায়ের দোয়া ট্রলারের মাঝি জাফর উল্যা বলেন, ‘সাগরে ৮-১০ দিন থাকার প্রস্তুতি নিচ্ছি। সন্ধ্যায় সাগরের উদ্দেশে রওনা দেব।’
সূর্যমুখী ঘাট জেলে সমিতির সভাপতি জবিয়ল হক বলেন, ‘সাগরে নামতে প্রস্তুত নোয়াখালীর হাতিয়ার ২০টি ঘাটের লক্ষাধিক জেলে। এসব ঘাটে প্রায় ১০ হাজার ছোট-বড় ফিশিং ট্রলার রয়েছে। প্রতি ট্রলারে ১০ জন হলেও লক্ষাধিক জেলে এই মাছ ধরার সঙ্গে জড়িত। তাঁদের সবাই গত ৫৮ দিন তীরে বেকার ছিলেন।’
পিরোজপুরের ইন্দুরকানি উপজেলার পাড়েরহাট মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের পার্শ্ববর্তী এলাকার জেলেরা গতকাল দিনভর সাগরে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন। এ ছাড়া মঠবাড়িয়া উপজেলার সাপলেজা, খেতাচিড়া, বড়মাছুয়া, ছোটমাছুয়া, ভান্ডারিয়া উপজেলার চরখালী, হেতালিয়া, কাউখালী উপজেলার সোনাকুর এলাকার জেলেরা, সদর উপজেলা এবং নেছারাবাদ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার জেলেরা প্রস্তুতি শেষে গত রাতে বঙ্গোপসাগরে রওনা হন।
কয়েক দিন ধরে কক্সবাজার উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে নৌকা, জাল মেরামতসহ বিভিন্ন প্রস্তুতি সেরেছেন জেলেরা। গতকাল মেরিন ড্রাইভের টেকনাফের খুরেরমুখ, সাবরাং ও বাহারছড়া এলাকায় দেখা গেছে, সড়কে দাঁড় করিয়ে রাখা সারি সারি ট্রলারে জাল ও রসদ তোলেন জেলেরা।
একটি ট্রলারের মাঝি আবু তাহের জানান, এবার ভারতের সঙ্গে মিল রেখে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় কেউ সাগরে মাছ শিকারে নামেনি। এতে উপকূলের কাছাকাছি সাগরে জাল ফেললেই ইলিশসহ অন্য মাছ পাওয়া যাবে বলে আশাবাদী তিনি।
কক্সবাজার শহরের ফিশারি ঘাটের মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির পরিচালক জুলফিকার আলী জানান, কক্সবাজার উপকূলে ছোট-বড় ৭ হাজারের মতো যান্ত্রিক ট্রলার রয়েছে। এসব ট্রলারে প্রায় এক লাখ জেলে ও শ্রমিক নিয়োজিত রয়েছেন। অধিকাংশ ট্রলার নিষেধাজ্ঞা ওঠার সঙ্গে সঙ্গে সাগরে রওনা হবে।
[প্রতিবেদন তৈরিতে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছেন বরগুনা ও আমতলী, পিরোজপুর, কক্সবাজার এবং হাতিয়া প্রতিনিধি]

‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর সঙ্গে।
মাছের সুষ্ঠু প্রজনন, উৎপাদন, মৎস্যসম্পদ সংরক্ষণ ও টেকসই মৎস্য আহরণের জন্য সমুদ্রে সব ধরনের মাছ শিকার ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা গতকাল বুধবার দিবাগত মধ্যরাতে শেষ হয়েছে। তাই গতকাল দিনভর ছিল উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে ব্যস্ততা। অনেকে দেখে নিচ্ছিলেন ট্রলার ঠিকঠাক আছে কি না, কেউ জালের ছেঁড়া অংশ সেলাই করছিলেন, কেউ আবার প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রীসহ অন্য সরঞ্জাম গুছিয়ে নিচ্ছিলেন।
বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র এবং ফকিরহাট উপ-মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ঘাটে গতকাল শত শত ট্রলার নোঙর করে রাখা ছিল। জেলেদের উপস্থিতিতে ঘাট এলাকা সরগরম হয়ে ওঠে। ফকিরহাটের মুদি-মনিহারি দোকানগুলোতে জেলেরা কেনাকাটা করতে ভিড় জমান। ফকিরহাট এলাকার বিসমিল্লাহ ট্রলারের মাঝি রহিম মিয়া বলেন, ‘সাগরে মাছ শিকারে যেতে সকল প্রস্তুতি নিয়েছি। নিষেধাজ্ঞার সময় শেষ হওয়ামাত্রই সাগরে নামব।’
জেলে নুরসাইদ ও ফোরকান মিয়া বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞার সময় পরিবার-পরিজন নিয়ে বেশ কষ্টে কেটেছে। ওই সময়ে বেশ টাকা ঋণ করেছি। এখন সাগরে যাব। দেখি আল্লাহ ঋণ পরিশোধ করতে দেন কি না।’
নোয়াখালীর হাতিয়ার সূর্যমুখী, বাংলাবাজার, কাজিরবাজার, পাইতান মার্কেট চেয়ারম্যান ঘাটসহ বেশ কয়েকটি ঘাটে গতকাল জেলেদের ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা গেছে। অনেকে নৌকায় জাল তুলছিলেন, আবার অনেকে জ্বালানি তেল মজুতসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী ট্রলারে নিয়ে যান। সূর্যমুখী ঘাটের এমভি মায়ের দোয়া ট্রলারের মাঝি জাফর উল্যা বলেন, ‘সাগরে ৮-১০ দিন থাকার প্রস্তুতি নিচ্ছি। সন্ধ্যায় সাগরের উদ্দেশে রওনা দেব।’
সূর্যমুখী ঘাট জেলে সমিতির সভাপতি জবিয়ল হক বলেন, ‘সাগরে নামতে প্রস্তুত নোয়াখালীর হাতিয়ার ২০টি ঘাটের লক্ষাধিক জেলে। এসব ঘাটে প্রায় ১০ হাজার ছোট-বড় ফিশিং ট্রলার রয়েছে। প্রতি ট্রলারে ১০ জন হলেও লক্ষাধিক জেলে এই মাছ ধরার সঙ্গে জড়িত। তাঁদের সবাই গত ৫৮ দিন তীরে বেকার ছিলেন।’
পিরোজপুরের ইন্দুরকানি উপজেলার পাড়েরহাট মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের পার্শ্ববর্তী এলাকার জেলেরা গতকাল দিনভর সাগরে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন। এ ছাড়া মঠবাড়িয়া উপজেলার সাপলেজা, খেতাচিড়া, বড়মাছুয়া, ছোটমাছুয়া, ভান্ডারিয়া উপজেলার চরখালী, হেতালিয়া, কাউখালী উপজেলার সোনাকুর এলাকার জেলেরা, সদর উপজেলা এবং নেছারাবাদ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার জেলেরা প্রস্তুতি শেষে গত রাতে বঙ্গোপসাগরে রওনা হন।
কয়েক দিন ধরে কক্সবাজার উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে নৌকা, জাল মেরামতসহ বিভিন্ন প্রস্তুতি সেরেছেন জেলেরা। গতকাল মেরিন ড্রাইভের টেকনাফের খুরেরমুখ, সাবরাং ও বাহারছড়া এলাকায় দেখা গেছে, সড়কে দাঁড় করিয়ে রাখা সারি সারি ট্রলারে জাল ও রসদ তোলেন জেলেরা।
একটি ট্রলারের মাঝি আবু তাহের জানান, এবার ভারতের সঙ্গে মিল রেখে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় কেউ সাগরে মাছ শিকারে নামেনি। এতে উপকূলের কাছাকাছি সাগরে জাল ফেললেই ইলিশসহ অন্য মাছ পাওয়া যাবে বলে আশাবাদী তিনি।
কক্সবাজার শহরের ফিশারি ঘাটের মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির পরিচালক জুলফিকার আলী জানান, কক্সবাজার উপকূলে ছোট-বড় ৭ হাজারের মতো যান্ত্রিক ট্রলার রয়েছে। এসব ট্রলারে প্রায় এক লাখ জেলে ও শ্রমিক নিয়োজিত রয়েছেন। অধিকাংশ ট্রলার নিষেধাজ্ঞা ওঠার সঙ্গে সঙ্গে সাগরে রওনা হবে।
[প্রতিবেদন তৈরিতে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছেন বরগুনা ও আমতলী, পিরোজপুর, কক্সবাজার এবং হাতিয়া প্রতিনিধি]

চলমান আন্দোলন ঘিরে সারা দেশে হিংসাত্মক ঘটনা বাড়ছে। মৃতের সংখ্যা বাড়ছে। ভীতি বাড়ছে। একই সঙ্গে বাড়ছে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম। দ্রব্যমূল্যের ক্রমাগত ঊর্ধ্বগতির প্রভাবে মধ্যবিত্ত শ্রেণির মানুষ যতটা না ভুগছে, তার চেয়েও খারাপ পরিস্থিতি স্বল্প আয়ের মানুষগুলোর। শুধু টিয়ার গ্যাসের ঝাঁজেই নয়, মানুষ বাজ
০৬ আগস্ট ২০২৪
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
০৬ অক্টোবর ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
ভারতের নিষেধাজ্ঞার এক দিন পরই গত রোববার লালমনিরহাটের বুড়িমারী ও যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দরসহ বিভিন্ন বন্দরে পণ্যের ট্রাক আটকে দেয় ভারত। সংশ্লিষ্টদের সূত্রে জানা যায়, রোববার ভারতের আমদানি বিধিনিষেধের কারণে বুড়িমারী সীমান্তে প্রাণের ১৭ ট্রাক খাদ্যপণ্য আটকে যায়। এ ছাড়া বেনাপোলে ৩৬টি পোশাক বোঝাই ট্রাকসহ অন্যান্য পণ্যের শতাধিক ট্রাক ঢুকতে পারেনি।
গতকাল সোমবার পর্যন্ত বুড়িমারী থেকে প্রাণের পণ্যবোঝাই ট্রাকগুলোর অর্ধেকের বেশি ফেরত নিয়ে আসে প্রতিষ্ঠানটি। এ ছাড়া বেনাপোলে পোর্টের ভেতরে ২৪টি ট্রাক ছাড়া বাকিগুলো ফেরত চলে যায়।
বেনাপোল বন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. সাজেদুর রহমান গতকাল সোমবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, গতকাল পোর্টের ভেতর ও বাইরে শতাধিক ট্রাক দাঁড়িয়ে ছিল। আজ পোর্টের ভেতরের ২৪টি ছাড়া বাকিগুলো ফেরত নিয়ে গেছেন মালিকেরা। এখন পর্যন্ত মনে হচ্ছে, পোর্টের ভেতরের ট্রাকগুলোও ফেরত নিতে হবে।
জানতে চাইলে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পরিচালক (বিপণন) কামরুজ্জামান কামাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের হাতে ৬ মিলিয়ন ডলারের ক্রয় আদেশ রয়েছে। তার মধ্য থেকে রোববার বুড়িমারী দিয়ে ১৭ ট্রাকবোঝাই পণ্য পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু সেগুলো ঢুকতে পারেনি। ট্রাকগুলো ফেরত আনা হচ্ছে। নতুন করে কাগজপত্র তৈরি করে অন্য পথ দিয়ে পণ্য পাঠাতে হবে।’
বেনাপোল স্থলবন্দর সূত্রে জানা যায়, ওই ২৪টি ট্রাক পোর্টের ভেতরে থাকায় এখনো তারা ভারতে প্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে। তাদের আশা, যেহেতু নিষেধাজ্ঞার আগে এই পণ্যগুলোর এলসি করা হয়েছিল, তাই এগুলো প্রবেশে অনুমতি পাবে। তবে এটি নির্ভর করবে বাংলাদেশ সরকারের আলোচনার ওপর।
এমন পরিস্থিতিতে সরকারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ইতিমধ্যে অনেক রপ্তানিকারক রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সঙ্গে আলোচনা করে সরকারের সহযোগিতা চেয়েছে।
স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে আজ মঙ্গলবার আন্তমন্ত্রণালয়ের সভা ডেকেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে বিকেল ৪টায় আন্তমন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এই সভা অনুষ্ঠিত হবে।
সভায় নৌপরিবহন ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো, জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের প্রতিনিধিদের উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া ব্যবসায়ী প্রতিনিধি হিসেবে এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ, ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রতিনিধিদের উপস্থিতির জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
ভারতের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গত শনিবার হঠাৎ এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি নিষিদ্ধ করে। শুধু ভারতের নবসেবা ও কলকাতা সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করে দেশটির আমদানিকারকেরা বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি করতে পারবেন বলে ওই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। এ ছাড়া বাংলাদেশ থেকে ভারতের আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা ও মিজোরাম, পশ্চিমবঙ্গের চ্যাংড়াবান্দা ও ফুলবাড়ী শুল্ক স্টেশন দিয়ে ফল, ফলের স্বাদযুক্ত পানীয়, কোমল পানীয়, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, প্লাস্টিক পণ্য, সুতা, সুতার উপজাত, আসবাব রপ্তানিও নিষিদ্ধ করা হয় ওই বিজ্ঞপ্তিতে।
আমদানি ও রপ্তানিসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা জানান, দেশের ২৪টি বন্দরের মধ্যে ১৬টি বন্দর দিয়ে ভারতের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়ে থাকে। তবে যোগাযোগব্যবস্থা সহজ হওয়ায় বেনাপোল ও ভারতের পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে সবচেয়ে বেশি আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়। এর পরিমাণ ৮০ শতাংশ। বেনাপোল বন্দর দিয়ে প্রতিদিন ভারতে ২৫০ থেকে ৩০০ ট্রাকে বিভিন্ন ধরনের পণ্য রপ্তানি হয়। এর মধ্যে শতাধিক ট্রাক পণ্য থাকে তৈরি পোশাক।
এর আগে গত ৮ এপ্রিল বাংলাদেশের জন্য ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করে ভারত। ফলে ভারতের বিমানবন্দর ব্যবহার করে তৃতীয় কোনো দেশে তৈরি পোশাক রপ্তানি করতে পারছে না বাংলাদেশ। অন্যদিকে প্রায় এক মাস আগে ভারত থেকে বেনাপোল, ভোমরা, সোনামসজিদ, বাংলাবান্ধা, বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানির সুযোগ বন্ধ করে দেয় বাংলাদেশের জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমানের মতে, এই পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপে তুলনামূলকভাবে বেশি নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বাংলাদেশের ওপর। তাই ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর চেষ্টা অব্যাহত রাখাই সরকারের উচিত বলে মনে করছেন তিনি।
মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আলোচনার মাধ্যমে বাংলাদেশ এবং ভারতের বিরোধপূর্ণ বিষয়সমূহ মিটিয়ে ফেলতে হবে এবং দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এটাই হবে উভয় দেশের জন্য কল্যাণকর।

ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
ভারতের নিষেধাজ্ঞার এক দিন পরই গত রোববার লালমনিরহাটের বুড়িমারী ও যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দরসহ বিভিন্ন বন্দরে পণ্যের ট্রাক আটকে দেয় ভারত। সংশ্লিষ্টদের সূত্রে জানা যায়, রোববার ভারতের আমদানি বিধিনিষেধের কারণে বুড়িমারী সীমান্তে প্রাণের ১৭ ট্রাক খাদ্যপণ্য আটকে যায়। এ ছাড়া বেনাপোলে ৩৬টি পোশাক বোঝাই ট্রাকসহ অন্যান্য পণ্যের শতাধিক ট্রাক ঢুকতে পারেনি।
গতকাল সোমবার পর্যন্ত বুড়িমারী থেকে প্রাণের পণ্যবোঝাই ট্রাকগুলোর অর্ধেকের বেশি ফেরত নিয়ে আসে প্রতিষ্ঠানটি। এ ছাড়া বেনাপোলে পোর্টের ভেতরে ২৪টি ট্রাক ছাড়া বাকিগুলো ফেরত চলে যায়।
বেনাপোল বন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. সাজেদুর রহমান গতকাল সোমবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, গতকাল পোর্টের ভেতর ও বাইরে শতাধিক ট্রাক দাঁড়িয়ে ছিল। আজ পোর্টের ভেতরের ২৪টি ছাড়া বাকিগুলো ফেরত নিয়ে গেছেন মালিকেরা। এখন পর্যন্ত মনে হচ্ছে, পোর্টের ভেতরের ট্রাকগুলোও ফেরত নিতে হবে।
জানতে চাইলে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পরিচালক (বিপণন) কামরুজ্জামান কামাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের হাতে ৬ মিলিয়ন ডলারের ক্রয় আদেশ রয়েছে। তার মধ্য থেকে রোববার বুড়িমারী দিয়ে ১৭ ট্রাকবোঝাই পণ্য পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু সেগুলো ঢুকতে পারেনি। ট্রাকগুলো ফেরত আনা হচ্ছে। নতুন করে কাগজপত্র তৈরি করে অন্য পথ দিয়ে পণ্য পাঠাতে হবে।’
বেনাপোল স্থলবন্দর সূত্রে জানা যায়, ওই ২৪টি ট্রাক পোর্টের ভেতরে থাকায় এখনো তারা ভারতে প্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে। তাদের আশা, যেহেতু নিষেধাজ্ঞার আগে এই পণ্যগুলোর এলসি করা হয়েছিল, তাই এগুলো প্রবেশে অনুমতি পাবে। তবে এটি নির্ভর করবে বাংলাদেশ সরকারের আলোচনার ওপর।
এমন পরিস্থিতিতে সরকারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ইতিমধ্যে অনেক রপ্তানিকারক রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সঙ্গে আলোচনা করে সরকারের সহযোগিতা চেয়েছে।
স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে আজ মঙ্গলবার আন্তমন্ত্রণালয়ের সভা ডেকেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে বিকেল ৪টায় আন্তমন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এই সভা অনুষ্ঠিত হবে।
সভায় নৌপরিবহন ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো, জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের প্রতিনিধিদের উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া ব্যবসায়ী প্রতিনিধি হিসেবে এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ, ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রতিনিধিদের উপস্থিতির জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
ভারতের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গত শনিবার হঠাৎ এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি নিষিদ্ধ করে। শুধু ভারতের নবসেবা ও কলকাতা সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করে দেশটির আমদানিকারকেরা বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি করতে পারবেন বলে ওই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। এ ছাড়া বাংলাদেশ থেকে ভারতের আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা ও মিজোরাম, পশ্চিমবঙ্গের চ্যাংড়াবান্দা ও ফুলবাড়ী শুল্ক স্টেশন দিয়ে ফল, ফলের স্বাদযুক্ত পানীয়, কোমল পানীয়, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, প্লাস্টিক পণ্য, সুতা, সুতার উপজাত, আসবাব রপ্তানিও নিষিদ্ধ করা হয় ওই বিজ্ঞপ্তিতে।
আমদানি ও রপ্তানিসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা জানান, দেশের ২৪টি বন্দরের মধ্যে ১৬টি বন্দর দিয়ে ভারতের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়ে থাকে। তবে যোগাযোগব্যবস্থা সহজ হওয়ায় বেনাপোল ও ভারতের পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে সবচেয়ে বেশি আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়। এর পরিমাণ ৮০ শতাংশ। বেনাপোল বন্দর দিয়ে প্রতিদিন ভারতে ২৫০ থেকে ৩০০ ট্রাকে বিভিন্ন ধরনের পণ্য রপ্তানি হয়। এর মধ্যে শতাধিক ট্রাক পণ্য থাকে তৈরি পোশাক।
এর আগে গত ৮ এপ্রিল বাংলাদেশের জন্য ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করে ভারত। ফলে ভারতের বিমানবন্দর ব্যবহার করে তৃতীয় কোনো দেশে তৈরি পোশাক রপ্তানি করতে পারছে না বাংলাদেশ। অন্যদিকে প্রায় এক মাস আগে ভারত থেকে বেনাপোল, ভোমরা, সোনামসজিদ, বাংলাবান্ধা, বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানির সুযোগ বন্ধ করে দেয় বাংলাদেশের জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমানের মতে, এই পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপে তুলনামূলকভাবে বেশি নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বাংলাদেশের ওপর। তাই ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর চেষ্টা অব্যাহত রাখাই সরকারের উচিত বলে মনে করছেন তিনি।
মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আলোচনার মাধ্যমে বাংলাদেশ এবং ভারতের বিরোধপূর্ণ বিষয়সমূহ মিটিয়ে ফেলতে হবে এবং দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এটাই হবে উভয় দেশের জন্য কল্যাণকর।

চলমান আন্দোলন ঘিরে সারা দেশে হিংসাত্মক ঘটনা বাড়ছে। মৃতের সংখ্যা বাড়ছে। ভীতি বাড়ছে। একই সঙ্গে বাড়ছে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম। দ্রব্যমূল্যের ক্রমাগত ঊর্ধ্বগতির প্রভাবে মধ্যবিত্ত শ্রেণির মানুষ যতটা না ভুগছে, তার চেয়েও খারাপ পরিস্থিতি স্বল্প আয়ের মানুষগুলোর। শুধু টিয়ার গ্যাসের ঝাঁজেই নয়, মানুষ বাজ
০৬ আগস্ট ২০২৪
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
০৬ অক্টোবর ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
১৮৯৮ সালে ভারতের উত্তর প্রদেশের একটি ধূলিধূসর টিলা খুঁড়ে পাওয়া মূল্যবান এই রত্নগুলো এক শতাব্দীর বেশি সময় ধরে একটি বেসরকারি ব্রিটিশ সংগ্রহাগারে প্রায় দৃষ্টিচক্ষুর আড়ালে ছিল। এখন যেহেতু রত্নগুলোর হাতবদলের সময় এসেছে, তাই নতুন সংগ্রাহকেরা আগ্রহ নিয়ে এগুলো সংগ্রহের জন্য অপেক্ষা করছেন। কিন্তু এখানে একটা অস্বস্তিও তৈরি হয়েছে।
গৌতম বুদ্ধের জন্মস্থান লুম্বিনীর কাছাকাছি, বর্তমানে ভারতের উত্তর প্রদেশে একটি ইটের ঘরের ভেতর থেকে প্রায় ১ হাজার ৮০০টি মুক্তা, রুবি, টোপাজ, নীলা ও নকশা করা সোনার পাত সংগ্রহ করা হয়েছিল। তবে এই রত্নগুলোর সঙ্গে সঙ্গে একটি খোদাই করা পাত্রে হাড়ের টুকরাও পাওয়া যায়, যেগুলোকে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষ বলে শনাক্ত করা হয়। এই আবিষ্কার তখন প্রত্নতত্ত্বের জগতে ব্যাপক আলোড়ন তোলে।
সাদাবি’স এশিয়ার চেয়ারম্যান নিকোলাস চাউ মনে করেন, স্মরণকালের বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর মাঝে এই রত্নসম্ভার অন্যতম। তবে এগুলো নিলামে তোলার কারণে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। আর তা হচ্ছে—ভারতের ইতিহাসের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িয়ে থাকা এবং বৌদ্ধদের কাছে পবিত্র এই সম্পদ বিক্রি করা কি নৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য?
১৮৯৮ সালে ব্রিটিশ এস্টেট ম্যানেজার উইলিয়াম ক্ল্যাক্সটন পেপ্পে লুম্বিনির ঠিক দক্ষিণে পিপ্রাওয়ায় অবস্থিত একটি ঢিবি খনন করেন। সেখান থেকেই প্রায় ২ হাজার বছর আগের ওই নির্দশনগুলো খুঁজে পাওয়া যায়।
ইতিহাসবিদদের মতে, প্রাপ্ত রত্নসম্ভার ও দেহাবশেষ, যা তখনো পর্যন্ত অক্ষত ছিল, সেগুলো গৌতম বুদ্ধের শাক্য বংশের এবং বিশ্বব্যাপী বৌদ্ধদের ঐতিহ্য। হাড়ের নিদর্শনগুলো থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা ও মিয়ানমারের মতো দেশগুলোতে বিতরণ করা হয়েছে। এসব দেশে এখনো সেগুলোর পূজা করা হয়।

আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
১৮৯৮ সালে ভারতের উত্তর প্রদেশের একটি ধূলিধূসর টিলা খুঁড়ে পাওয়া মূল্যবান এই রত্নগুলো এক শতাব্দীর বেশি সময় ধরে একটি বেসরকারি ব্রিটিশ সংগ্রহাগারে প্রায় দৃষ্টিচক্ষুর আড়ালে ছিল। এখন যেহেতু রত্নগুলোর হাতবদলের সময় এসেছে, তাই নতুন সংগ্রাহকেরা আগ্রহ নিয়ে এগুলো সংগ্রহের জন্য অপেক্ষা করছেন। কিন্তু এখানে একটা অস্বস্তিও তৈরি হয়েছে।
গৌতম বুদ্ধের জন্মস্থান লুম্বিনীর কাছাকাছি, বর্তমানে ভারতের উত্তর প্রদেশে একটি ইটের ঘরের ভেতর থেকে প্রায় ১ হাজার ৮০০টি মুক্তা, রুবি, টোপাজ, নীলা ও নকশা করা সোনার পাত সংগ্রহ করা হয়েছিল। তবে এই রত্নগুলোর সঙ্গে সঙ্গে একটি খোদাই করা পাত্রে হাড়ের টুকরাও পাওয়া যায়, যেগুলোকে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষ বলে শনাক্ত করা হয়। এই আবিষ্কার তখন প্রত্নতত্ত্বের জগতে ব্যাপক আলোড়ন তোলে।
সাদাবি’স এশিয়ার চেয়ারম্যান নিকোলাস চাউ মনে করেন, স্মরণকালের বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর মাঝে এই রত্নসম্ভার অন্যতম। তবে এগুলো নিলামে তোলার কারণে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। আর তা হচ্ছে—ভারতের ইতিহাসের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িয়ে থাকা এবং বৌদ্ধদের কাছে পবিত্র এই সম্পদ বিক্রি করা কি নৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য?
১৮৯৮ সালে ব্রিটিশ এস্টেট ম্যানেজার উইলিয়াম ক্ল্যাক্সটন পেপ্পে লুম্বিনির ঠিক দক্ষিণে পিপ্রাওয়ায় অবস্থিত একটি ঢিবি খনন করেন। সেখান থেকেই প্রায় ২ হাজার বছর আগের ওই নির্দশনগুলো খুঁজে পাওয়া যায়।
ইতিহাসবিদদের মতে, প্রাপ্ত রত্নসম্ভার ও দেহাবশেষ, যা তখনো পর্যন্ত অক্ষত ছিল, সেগুলো গৌতম বুদ্ধের শাক্য বংশের এবং বিশ্বব্যাপী বৌদ্ধদের ঐতিহ্য। হাড়ের নিদর্শনগুলো থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা ও মিয়ানমারের মতো দেশগুলোতে বিতরণ করা হয়েছে। এসব দেশে এখনো সেগুলোর পূজা করা হয়।

চলমান আন্দোলন ঘিরে সারা দেশে হিংসাত্মক ঘটনা বাড়ছে। মৃতের সংখ্যা বাড়ছে। ভীতি বাড়ছে। একই সঙ্গে বাড়ছে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম। দ্রব্যমূল্যের ক্রমাগত ঊর্ধ্বগতির প্রভাবে মধ্যবিত্ত শ্রেণির মানুষ যতটা না ভুগছে, তার চেয়েও খারাপ পরিস্থিতি স্বল্প আয়ের মানুষগুলোর। শুধু টিয়ার গ্যাসের ঝাঁজেই নয়, মানুষ বাজ
০৬ আগস্ট ২০২৪
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
০৬ অক্টোবর ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫