Ajker Patrika

এক বছরে বিশ্বে হামে আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে প্রায় দ্বিগুণ, বলছে গবেষণা

আপডেট : ২৮ এপ্রিল ২০২৪, ১৬: ১৪
এক বছরে বিশ্বে হামে আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে প্রায় দ্বিগুণ, বলছে গবেষণা

এক বছরের মধ্যে বিশ্বজুড়ে হামে আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে দ্বিগুণ হয়েছে বলে নতুন এক গবেষণায় উঠে এসেছে। গবেষণা অনুসারে, ২০২২ থেকে ২০২৩ সালের মধ্যে এই রোগে আক্রান্তের সংখ্যা প্রায় দ্বিগুণ হয়েছে। হাম নির্মূল করার চেষ্টায় চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছে বহু দেশ। 

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ড. প্যাট্রিক ও’কনোর গতকাল শনিবার বার্সেলোনায় ইএসসিএমআইডি গ্লোবাল কংগ্রেসে গবেষণা প্রতিবেদনটি উপস্থাপন করেন। তিনি বলেন, ২০২২ সালে বিশ্বজুড়ে ১ লাখ ৭১ হাজার ১৫৩ জন হামে আক্রান্ত ছিল। সাময়িক তথ্য বলছে, ২০২৩ সালে হামে আক্রান্ত ছিল ৩ লাখ ২১ হাজার ৫৮২ জন এবং ২০২৪ সালে এখন পর্যন্ত ৯৪ হাজারের বেশি রোগী শনাক্ত হয়েছে। যদিও এই সংখ্যা সম্ভবত আরও অনেক বেশি। 

সংবাদমাধ্যম সিএনএনের প্রতিবেদন অনুসারে, এ বছর আক্রান্তদের প্রায় অর্ধেক ঘটনাই ঘটেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ইউরোপীয় অঞ্চলে। এর মধ্যে আজারবাইজান, কিরগিজস্তান ও ইয়েমেনে সংক্রমণের ঘটনা সবচেয়ে বেশি।

যুক্তরাষ্ট্রের সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশনের তথ্য অনুযায়ী, গত শুক্রবার পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রের ২০টি এলাকায় ১২৮ জনের হামে আক্রান্ত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। ২০১৯ সালের পর এই সংখ্যা সর্বোচ্চ। 

২০০০ সালে যুক্তরাষ্ট্রে হামকে নির্মূল ঘোষণা করা হয়েছিল বলে জানায় সিডিসি। এর মানে হলো, যুক্তরাষ্ট্রে কেউ হামে আক্রান্ত হয় না এবং নতুন আক্রান্ত কেবল তখনই পাওয়া যায়, যখন কেউ বিদেশে হামে আক্রান্ত হয়ে আসে। তবে এ বছর আক্রান্তের সংখ্যা দ্রুত বৃদ্ধি পাওয়ায় সেই রোগ নির্মূল স্থিতি হুমকির মুখে পড়েছে। 

হাম একটি অত্যন্ত সংক্রামক বায়ুবাহিত রোগ। এই রোগে গুরুতর স্বাস্থ্য বিপর্যয় ঘটতে পারে, এমনকি মৃত্যুও হতে পারে। বিশেষত অল্প বয়স্ক এবং টিকা না দেওয়া শিশুদের জন্য এটি ঝুঁকিপূর্ণ। 

এই রোগের সাধারণ লক্ষণগুলোর মধ্যে জ্বর, কাশি, সর্দি, চোখ দিয়ে পানি পড়া এবং লাল ফুসকুড়ি দেখা দিতে পারে। সিডিসির মতে, যুক্তরাষ্ট্রে হামে আক্রান্ত টিকা না নেওয়া প্রতি পাঁচজনের মধ্যে প্রায় একজনকে হাসপাতালে ভর্তি করতে হবে। হামে আক্রান্ত প্রতি ২০ শিশুর মধ্যে প্রায় একজন নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হবে এবং অন্য শিশুদের মস্তিষ্কে বিপজ্জনক ফোলাভাব দেখা দিতে পারে। হামে আক্রান্ত প্রতি এক হাজার শিশুর মধ্যে তিনজন শ্বাসকষ্ট ও স্নায়বিক জটিলতায় মারা যেতে পারে। 

হাম থেকে ‘ইমিউন অ্যামনেসিয়া’ হতে পারে। এটি এমন একটি অবস্থা, যা কয়েক সপ্তাহ থেকে কয়েক বছর ধরে মানুষের মধ্যে অন্যান্য সংক্রমণের ঝুঁকি বাড়ায়। 

গতকাল শনিবার ও’কনোর বলেন, হামের টিকা ২০০০ থেকে ২০২২ সালের মধ্যে আনুমানিক ৫ কোটি ৭০ লাখ মৃত্যু রোধ করেছে। যুক্তরাষ্ট্রে শিশুরা ১২ থেকে ১৫ মাস বয়সের মধ্যে হাম, মাম্পস এবং রুবেলা (এমএমআর) থেকে রক্ষা করে এমন ভ্যাকসিনের প্রথম ডোজ পায়। শিশুর ৪ থেকে ৬ বছর বয়সের মধ্যে দ্বিতীয় টিকা দেওয়া হয়। ভ্যাকসিনটি অত্যন্ত কার্যকর বলে মনে করা হয়। হামের বিরুদ্ধে এক ডোজ ৯৩ শতাংশ কার্যকর এবং দুই ডোজ ৯৭ শতাংশ কার্যকর। হামের টিকা নেওয়ার পরও মানুষ অসুস্থ হতে পারে। তবে এটি সাধারণত ঘটে না এবং এ ক্ষেত্রে সংক্রমণ হালকা হয়। 

যুক্তরাষ্ট্র ৯৫ শতাংশ টিকাদানের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে, তবে সাম্প্রতিক কয়েক বছরে কিন্ডারগার্টেনগুলোতে টিকার আওতা কম ছিল। ২০২২–২৩ শিক্ষাবর্ষে যুক্তরাষ্ট্রে মাত্র ৯৩ দশমিক ১ শতাংশ কিন্ডারগার্টেনগামী শিশুদের এমএমআর ভ্যাকসিন সিরিজ সম্পন্ন হয়েছে এবং প্রায় ২ লাখ ৫০ হাজারই ঝুঁকিতে রয়েছে। 

গতকাল শনিবার ও’কনোর তাঁর উপস্থাপনায় বলেন, অনেক সংকটের মধ্যে হাম একটি। যুদ্ধে জর্জরিত ও ঝুঁকিপূর্ণ দেশগুলোতেই এর ৪৫ শতাংশ প্রাদুর্ভাব দেখা যায়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

২০৯৮ পর্যন্ত কবে কোন দেশ বিশ্বকাপ নেবে—ভবিষ্যদ্বাণী করল গ্রোক এআই

খালেদা জিয়ার রিপোর্ট ভালো, চেষ্টা করছেন কথা বলার: চিকিৎসক

সেই এনায়েত করিমের মামলায় সাংবাদিক শওকত মাহমুদকে গ্রেপ্তার দেখাল ডিবি

সেনাবাহিনীতে সৈনিক পদে যোগদানের বয়সসীমা বাড়ল

১০ ঘণ্টা পর বিটিআরসির অবরোধ তুলে নিলেন মোবাইল ফোন ব্যবসায়ীরা

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

ওষুধ খাতে এপিআই নীতি দ্রুত বাস্তবায়নে প্রধান উপদেষ্টার প্রতি আহ্বান

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
রাজধানীর তেজগাঁওয়ে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে আজ বৃহস্পতিবার আয়োজিত মতবিনিময় সভায় বক্তব্য দেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। ছবি: প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং
রাজধানীর তেজগাঁওয়ে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে আজ বৃহস্পতিবার আয়োজিত মতবিনিময় সভায় বক্তব্য দেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। ছবি: প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং

অ্যালায়েন্স ফর হেলথ রিফর্মস বাংলাদেশ (এএইচআরবি) ওষুধশিল্পকে কৌশলগতভাবে শক্তিশালী ও জাতীয় স্বাস্থ্যনিরাপত্তা জোরদার করতে অ্যাকটিভ ফার্মাসিউটিক্যাল ইনগ্রেডিয়েন্ট (এপিআই) নীতি দ্রুত বাস্তবায়নের আহ্বান জানিয়েছে।

আজ রোববার প্রধান উপদেষ্টার কাছে পাঠানো খোলাচিঠিতে এই নীতিকে ‘জাতীয় স্বার্থে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার’ হিসেবে বিবেচনার অনুরোধ জানানো হয়।

চিঠিতে স্বাক্ষর করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাস্থ্য অর্থনীতি ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক ও এএইচআরবির আহ্বায়ক ড. সৈয়দ আব্দুল হামিদ এবং স্বাস্থ্য খাত সংস্কার কমিশনের সদস্য ও বাংলাদেশ মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লিনিক্যাল অনকোলজি বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. সৈয়দ মো. আকরাম হোসেন।

চিঠিতে বলা হয়, দেশে এখন প্রায় সব ধরনের ওষুধ উৎপাদন সম্ভব হলেও এপিআইয়ের বড় অংশই আমদানির ওপর নির্ভরশীল। আন্তর্জাতিক বাজারে অস্থিরতা দেখা দিলেই উৎপাদনব্যবস্থা ও জাতীয় স্বাস্থ্য নিরাপত্তাঝুঁকিতে পড়ে। করোনাকালে এই দুর্বলতা বিশেষভাবে প্রকাশ পেয়েছিল। স্বাস্থ্য সংস্কার কমিশনের পর্যবেক্ষণ অনুযায়ী, এপিআই, ভ্যাকসিন, আইভিডি ও চিকিৎসা সরঞ্জাম উৎপাদনে দ্রুত দেশীয় সক্ষমতা বাড়ানো প্রয়োজন। এ জন্য গবেষণা–উন্নয়নে বিনিয়োগ, প্রণোদনা ও উৎপাদনক্ষমতা বাড়ানোর মাধ্যমে ধাপে ধাপে আমদানি সীমিত করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।

১৯৮২ সালের জাতীয় ওষুধনীতির সফল বাস্তবায়ন উদাহরণ হিসেবে উল্লেখ করে চিঠিতে বলা হয়, কঠোর তদারকি ও দৃঢ় রাজনৈতিক নেতৃত্বে বড় নীতি বাস্তবায়ন সম্ভব হয়।

বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, জ্ঞানভিত্তিক শিল্পে রূপান্তর না ঘটলে দেশের ট্যাক্স–জিডিপি অনুপাত ৭ শতাংশের নিচে থাকবে। ফার্মাসিউটিক্যাল খাত এই রূপান্তরের বড় সুযোগ তৈরি করতে পারে। ভারতে মোট রপ্তানির ৫ শতাংশ আসে ওষুধশিল্প থেকে, যেখানে বাংলাদেশে তা মাত্র ০.৫ শতাংশ। নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ জোয়েল মকিয়ের উদ্ধৃত করে চিঠিতে বলা হয়, ‘জ্ঞানই আধুনিক অর্থনীতির প্রধান চালক।’ তাই খাতটিকে টেকসই জ্ঞানভিত্তিক শিল্পে রূপান্তরিত করা জরুরি।

এপিআই নীতি কার্যকর করতে পাঁচটি জরুরি পদক্ষেপ উল্লেখ করা হয়েছে—প্রশাসনিক ও অবকাঠামোগত বাধা দূর করা, আকর্ষণীয় প্রোডাকশন লিংকড ইনসেনটিভ (পিএলআই) স্কিম চালু করা, আর অ্যান্ড ডি-তে ধারাবাহিক সরকারি অনুদান, একাডেমিয়া–ইন্ডাস্ট্রি সহযোগিতা জোরদার এবং নির্দিষ্ট সময়সীমায় বাস্তবায়নের জন্য ক্ষমতাপ্রাপ্ত স্থায়ী টাস্কফোর্স গঠন।

চিঠিতে বলা হয়, এ নীতি স্বতঃস্ফূর্তভাবে আমলাতান্ত্রিক কাঠামোর মধ্যে এগোবে না। সরকারের সর্বোচ্চ পর্যায়ের সুনির্দিষ্ট দিকনির্দেশনা ও দ্রুত তদারকি নিশ্চিত করলে এপিআই নীতি কাগুজে অবস্থায় আটকে থাকবে না। আমদানিনির্ভরতা কমবে, বৈদেশিক মুদ্রা সাশ্রয় হবে, রপ্তানি বাড়বে, দক্ষ কর্মসংস্থান বাড়বে এবং ট্যাক্স–জিডিপি অনুপাত উন্নত হবে।

চিঠিতে আরও বলা হয়, এটি কেবল প্রশাসনিক সিদ্ধান্ত নয়, বরং দেশের ভবিষ্যৎ প্রতিযোগিতা, সক্ষমতা ও জনস্বাস্থ্য নিরাপত্তার সঙ্গে জড়িত কৌশলগত রাষ্ট্রীয় অঙ্গীকার।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

২০৯৮ পর্যন্ত কবে কোন দেশ বিশ্বকাপ নেবে—ভবিষ্যদ্বাণী করল গ্রোক এআই

খালেদা জিয়ার রিপোর্ট ভালো, চেষ্টা করছেন কথা বলার: চিকিৎসক

সেই এনায়েত করিমের মামলায় সাংবাদিক শওকত মাহমুদকে গ্রেপ্তার দেখাল ডিবি

সেনাবাহিনীতে সৈনিক পদে যোগদানের বয়সসীমা বাড়ল

১০ ঘণ্টা পর বিটিআরসির অবরোধ তুলে নিলেন মোবাইল ফোন ব্যবসায়ীরা

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

দেশে এ বছর ৪ কোটি ২৫ লাখ শিশু টাইফয়েড টিকা পেয়েছে

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

বাংলাদেশ ইউনিসেফের প্রতিনিধি রানা ফ্লাওয়ার্স জানিয়েছেন, দেশে টাইফয়েড কনজুগেট ভ্যাকসিন (টিসিভি) ক্যাম্পেইন ২০২৫ উল্লেখযোগ্য সফলতা অর্জন করেছে। এই ক্যাম্পেইনের মাধ্যমে ৪ কোটি ২৫ লাখের বেশি শিশুকে টিকা দেওয়া হয়েছে, যা মোট লক্ষ্য শিশুর ৯৭ শতাংশের বেশি।

আজ রোববার (৭ নভেম্বর) এক বিবৃতিতে রানা ফ্লাওয়ার্স এ তথ্য জানান।

বিবৃতিতে রানা ফ্লাওয়ার্স বলেন, এই অর্জন প্রমাণ করে যে, বাংলাদেশ সরকার শিশুদের প্রতিরোধযোগ্য রোগ থেকে সুরক্ষা এবং পরিবারগুলোর অর্থনৈতিক ও মানসিক চাপ কমাতে দৃঢ়ভাবে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। তিনি উল্লেখ করেন, টিসিভি চালুর মাধ্যমে বাংলাদেশ টাইফয়েড প্রতিরোধে বিশ্বের অষ্টম দেশ হিসেবে অগ্রগামী অবস্থানে এসেছে।

এই টিকা কার্যক্রমের সফল বাস্তবায়ন শিশুস্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ইউনিসেফের সহযোগিতায় বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) করা সর্বশেষ মাল্টিপল ইনডিকেটর ক্লাস্টার সার্ভেতে (এমআইসিএস) দেখা গেছে, বাংলাদেশে মাত্র ৩৯ দশমিক ৩ শতাংশ মানুষের নিরাপদ ব্যবস্থাপনার আওতায় পানি পাওয়ার সুযোগ রয়েছে। আরও উদ্বেগজনক বিষয় হচ্ছে, পানির সব ধরনের উৎসের প্রায় অর্ধেক (৪৭ দশমিক ২ শতাংশ) এবং প্রতি ১০টির মধ্যে আটটি পরিবারে ব্যবহৃত পানির নমুনায় (৮৪ দশমিক ৯ শতাংশ) ই. কোলাই ব্যাকটেরিয়া দূষণ রয়েছে। এসব সংখ্যা এটাই বোঝায় যে, লাখ লাখ শিশুর জন্য টাইফয়েডের মতো অসুখে আক্রান্ত হওয়া খুবই সহজ। তারা প্রতিটি দিন এই ঝুঁকির মুখোমুখি হচ্ছে এবং সাধারণ এক গ্লাস পানিই তাদের জন্য ভয়ানক বিপদ নিয়ে আসতে পারে।

রানা ফ্লাওয়ার্স আরও বলেন, ‘এ কারণে ইউনিসেফ এ ক্যাম্পেইন শুরু করার জন্য বাংলাদেশ সরকারকে জরুরিভাবে সহায়তা করে। প্রতিটি পরিবারের জন্য পরিষ্কার ও নিরাপদ পানির সরবরাহ নিশ্চিত করার আগপর্যন্ত শিশুদের গুরুতর অসুস্থতা থেকে সুরক্ষা দেওয়া, তাদের ভবিষ্যতের সুরক্ষা এবং বাবা-মায়েদের দুশ্চিন্তামুক্ত রাখার জন্য আমরা সবচেয়ে শক্তিশালী যেসব সুরক্ষামূলক ব্যবস্থা দিতে পারি, তার মধ্যে টিসিভি টিকা অন্যতম।’

রানা ফ্লাওয়ার্স জানান, ক্যাম্পেইন সফল করতে ইউনিসেফ ৫ কোটি ৪০ লাখ ডোজ টিসিভি সরবরাহ করেছে, নতুন কোল্ড রুম স্থাপন ও ভ্যাক্সইপিআই (VaxEPI) প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে ডিজিটাল ব্যবস্থাপনা উন্নত করেছে। পাশাপাশি দেশের স্বাস্থ্যকর্মীদের প্রশিক্ষণ ও সক্ষমতা বাড়াতেও সহায়তা করেছে সংস্থাটি।

রানা ফ্লাওয়ার্স অভিভাবক ও স্থানীয় কমিউনিটির সহযোগিতার জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে বলেন, জনসম্পৃক্ততা ও সচেতনতা তৈরিতে ইউনিসেফ ইসলামিক ফাউন্ডেশনসহ বিভিন্ন সহযোগীকে নিয়ে ১২ কোটির বেশি মানুষের কাছে পৌঁছেছে। তিনি বিশেষভাবে উল্লেখ করেন, দেশের সব অঞ্চলের শিশুকে—জলাভূমি, পাহাড়ি এলাকা, উপকূলীয় অঞ্চল, ভ্রাম্যমাণ জনগোষ্ঠী, আদিবাসী সম্প্রদায়, কওমি মাদ্রাসার শিক্ষার্থী, চা-বাগানের শ্রমিকদের সন্তান এবং রোহিঙ্গা শিবিরে থাকা ৪ লাখ ২৪ হাজার শিশুকে—এই ক্যাম্পেইনের আওতায় আনা হয়েছে।

রানা ফ্লাওয়ার্স বলেন, ‘বাংলাদেশের জনগণ, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় এবং সম্প্রসারিত টিকাদান কর্মসূচিকে (ইপিআই) তাদের নেতৃত্ব ও নিরলস প্রচেষ্টার জন্য আমার আন্তরিক কৃতজ্ঞতা জানাই। অর্থনৈতিক সহায়তা প্রদানের জন্য আমরা গ্যাভি, দ্য ভ্যাকসিন অ্যালায়েন্সের প্রতি গভীর কৃতজ্ঞতা জানাই। তাদের সহায়তার কারণেই একসময় দেশের সব শিশুকে টিকা দেওয়ার এই কর্মসূচি নেওয়া সম্ভব হয়েছে। এই ক্যাম্পেইন সফল করার জন্য আমাদের পাশে থাকা বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) ও অন্য অংশীজনদের ভূমিকাও আমরা স্মরণ করছি।’

রানা ফ্লাওয়ার্স গণমাধ্যমের দায়িত্বশীল ভূমিকার প্রশংসা করে বলেন, ভুল তথ্যের যুগে গণমাধ্যম পরিবারগুলোকে আস্থাপূর্ণ তথ্য দিয়ে টিকা নিতে উদ্বুদ্ধ করেছে।

বাংলাদেশ ইউনিসেফের প্রতিনিধি আরও বলেন, ‘আমাদের শিশুদের জন্য ভালো কিছু করার যেসব প্রতিশ্রুতি আমরা করতে পারি, তার মধ্যে টিকা প্রদান সবচেয়ে শক্তিশালী—এটি কেবল টিকার নয়, বরং স্বাস্থ্য, সুরক্ষা ও আশার প্রতিশ্রুতি। এই ক্যাম্পেইনের মাধ্যমে বাংলাদেশ প্রতিটি শিশুর জন্য টাইফয়েডমুক্ত ভবিষ্যতের দিকে একটি শক্তিশালী পদক্ষেপ নিয়েছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

২০৯৮ পর্যন্ত কবে কোন দেশ বিশ্বকাপ নেবে—ভবিষ্যদ্বাণী করল গ্রোক এআই

খালেদা জিয়ার রিপোর্ট ভালো, চেষ্টা করছেন কথা বলার: চিকিৎসক

সেই এনায়েত করিমের মামলায় সাংবাদিক শওকত মাহমুদকে গ্রেপ্তার দেখাল ডিবি

সেনাবাহিনীতে সৈনিক পদে যোগদানের বয়সসীমা বাড়ল

১০ ঘণ্টা পর বিটিআরসির অবরোধ তুলে নিলেন মোবাইল ফোন ব্যবসায়ীরা

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

স্বাস্থ্যের ডিজির সঙ্গে তর্কের পর সেই চিকিৎসককে অব্যাহতি ও শোকজ নোটিশ

নিজস্ব প্রতিবেদক, ময়মনসিংহ থেকে 
আপডেট : ০৭ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৯: ৩৮
ক্যাজুয়ালটির ইনচার্জ ডা. ধনদেব বর্মন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের সঙ্গে তর্কে জড়ান। ছবি: আজকের পত্রিকা
ক্যাজুয়ালটির ইনচার্জ ডা. ধনদেব বর্মন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের সঙ্গে তর্কে জড়ান। ছবি: আজকের পত্রিকা

ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল পরিদর্শনে আসা স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (ডিজি) মো. আবু জাফরের সঙ্গে তর্কাতর্কির ঘটনার পর সেই চিকিৎসককে দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। ‘ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে অসদাচরণ করায়’ তাঁকে শোকজ নোটিশও দেওয়া হয়েছে। তাঁকে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে লিখিত জবাব দিতে হবে।

আজ শনিবার বিকেলে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল প্রশাসন এ সিদ্ধান্ত নেয়। বিকেল ৪টার দিকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেন ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. গোলাম ফেরদৌস।

ওই চিকিৎসককে জরুরি বিভাগের ক্যাজুয়ালটি ইনচার্জের দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি ও কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সহকারী পরিচালক (প্রশাসন) মাইনউদ্দিন খান। তিনি বলেন, ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণ করা সরকারি চাকরি বিধিমালার পরিপন্থী।

উল্লেখ্য, ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজের শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান মিলনায়তনে আয়োজিত একটি সেমিনারে প্রধান অতিথি হিসেবে যোগ দিতে আসেন স্বাস্থ্যের ডিজি মো. আবু জাফর। সেমিনারে যোগ দেওয়ার আগে তিনি হাসপাতাল পরিদর্শন করেন।

প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে, হাসপাতালের ক্যাজুয়ালটি অপারেশন থিয়েটার পরিদর্শনে গিয়ে ডিজি কক্ষের ভেতরে টেবিল থাকার কারণ জানতে চান চিকিৎসকদের কাছে। এ সময় জরুরি বিভাগের ক্যাজুয়ালটি ইনচার্জ ধনদেব চন্দ্র বর্মণ উত্তর দিতে গেলে দুজনের মধ্যে তর্কাতর্কি হয়।

প্রসঙ্গত, ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ওয়ান–স্টপ সার্ভিসের ইনচার্জ হিসেবে ২০২৩ সালের ৮ আগস্ট থেকে দায়িত্ব পালন করছেন ধনদেব চন্দ্র বর্মণ। চলতি বছরের জুলাই মাসে আবাসিক সার্জন থেকে সহকারী অধ্যাপক পদে পদোন্নতি পান তিনি।

মমেক হাসপাতালের ক্যাজুয়ালটি বিভাগের ইনচার্জ ও সহকারী অধ্যাপক ডা. ধনদেব বর্মণ ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘আমি চাকরির শেষ বয়সে চলে এসেছি। আমার বন্ধুবান্ধব সবাই অধ্যাপক পদে রয়েছেন। আমাকে সারাজীবন লেকচারার হিসেবেই থাকতে হয়েছে। স্বাস্থ্যের ডিজি আমার সমবয়সী হবেন। আমি হাসপাতালের বিভিন্ন সীমাবদ্ধতার কথা বলেছি তাঁকে। এটি শুনে তিনি রেগে গেছেন। রোগী ও ডাক্তারদের সামনে আমার সঙ্গে যাচ্ছেতাই ব্যবহার করা হয়েছে। তিনি ডিজি তাই আমার সঙ্গে ক্ষমতার অপব্যবহার করেছেন।’

ধনদেব বর্মণ আরও বলেন, ‘আমাকে নাকি শোকজ করা হয়েছে। আমি আর চাকরি করব না। নিজে থেকেই চলে যাব দু-এক দিনের মধ্যে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

২০৯৮ পর্যন্ত কবে কোন দেশ বিশ্বকাপ নেবে—ভবিষ্যদ্বাণী করল গ্রোক এআই

খালেদা জিয়ার রিপোর্ট ভালো, চেষ্টা করছেন কথা বলার: চিকিৎসক

সেই এনায়েত করিমের মামলায় সাংবাদিক শওকত মাহমুদকে গ্রেপ্তার দেখাল ডিবি

সেনাবাহিনীতে সৈনিক পদে যোগদানের বয়সসীমা বাড়ল

১০ ঘণ্টা পর বিটিআরসির অবরোধ তুলে নিলেন মোবাইল ফোন ব্যবসায়ীরা

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

নাক ডাকা: কারণ, ঝুঁকি এবং প্রতিকার

ফিচার ডেস্ক
আপডেট : ০৬ ডিসেম্বর ২০২৫, ১১: ১১
নাক ডাকা: কারণ, ঝুঁকি এবং প্রতিকার

ঘুমিয়ে পড়া কি আপনাকে লোকের সামনে হাসির পাত্র বানিয়ে তুলছে? এ জন্য কি কারও সঙ্গে ঘুমাতে সংকোচ বোধ করছেন? সোজাভাবে জিজ্ঞাসা করি, ঘুমালে কি আপনি নাক ডাকেন? নাক ডাকা একটি সাধারণ সমস্যা। কিন্তু এটি শুধু আপনার সঙ্গীর ঘুমের ব্যাঘাত ঘটায় না, বরং অনেক সময় গুরুতর স্বাস্থ্য সমস্যার লক্ষণ হতে পারে। যেমন অবস্ট্রাকটিভ স্লিপ অ্যাপনিয়া। গবেষণায় দেখা গেছে, যুক্তরাজ্যে প্রায় ৪০ শতাংশ প্রাপ্তবয়স্ক মানুষ এই সমস্যায় ভোগেন।

পুরুষের মধ্যে এর প্রবণতা বেশি। পুরুষ ও নারী নাক ডাকার অনুপাত ২.৩: ১। নাক ডাকার প্রধান কারণ স্থূলতা হলেও এক-তৃতীয়াংশ হালকা-পাতলা মানুষও নাক ডাকেন। শ্বাস-প্রশ্বাসের সময় বাতাসের প্রবাহ বাধাগ্রস্ত হলে গলার শিথিল টিস্যুগুলো কেঁপে ওঠে এবং জোরে শব্দ সৃষ্টি হয়। শিশুবিশেষজ্ঞ আমিনুল ইসলাম শেখ বলেন, শরীরের অতিরিক্ত ওজন নাক ডাকার সঙ্গে সরাসরি সম্পৃক্ত। বাড়তি ওজন নাকের ভেতরে বাতাস চলাচলের জায়গা সংকীর্ণ করে দেয়। এতে শ্বাসপ্রশ্বাস চলাচলের সময় শব্দের সৃষ্টি হয়। তাই ওজন কমালে এই সমস্যা থেকে অনেকটা রেহাই পাওয়া সম্ভব।

জীবনযাত্রার পরিবর্তন ও ঘরোয়া সমাধান

নাক ডাকার প্রধান কারণগুলোর মধ্যে রয়েছে ঘুমের অভ্যাস এবং জীবনধারা।

  1. এক পাশে কাত হয়ে ঘুমানো উচিত। চিত হয়ে ঘুমালে অনেক সময় জিহ্বা পেছনের দিকে চলে যায় এবং আংশিকভাবে শ্বাস পথ বন্ধ করে দেয়। এক পাশে কাত হয়ে ঘুমালে বাতাস সহজে চলাচল করতে পারে, যা নাক ডাকা কমাতে অথবা থামাতে সাহায্য করে।
  2. পর্যাপ্ত ঘুম নিশ্চিত করতে হবে। প্রাপ্তবয়স্ক একজন ব্যক্তির প্রতিদিন ৭ থেকে ৯ ঘণ্টা ঘুম প্রয়োজন। ঘুমের ঘাটতি হলে গলার পেশি শিথিল হয়ে যায়, যা শ্বাস পথকে সংকুচিত করে এবং নাক ডাকার ঝুঁকি বাড়ায়। আমিনুল ইসলাম শেখ বলেন, দৈনিক ৬ থেকে ৮ ঘণ্টা যদি ঘুম না হয়, তাহলে নাক ডাকা বেড়ে যেতে পারে।
  3. বিছানার মাথার দিকটি কয়েক ইঞ্চি উঁচু করে ঘুমালে শ্বাস পথ খোলা রাখতে সাহায্য করে। এর জন্য বিশেষভাবে তৈরি পিলো বা বেড রাইজার ব্যবহার করতে পারেন।
  4. নাকের ওপর স্টিক-অন নেজাল স্ট্রিপ অথবা নাসারন্ধ্রের ওপর এক্সটারনাল নেজাল ডাইলেটর ব্যবহার করলে নাসারন্ধ্রের জায়গা বাড়ে, যা শ্বাস-প্রশ্বাসকে আরও কার্যকর করে তোলে এবং নাক ডাকা কমায়। ইন্টারনাল নেজাল ডাইলেটরও ব্যবহার করা যেতে পারে।
  5. অ্যালকোহলের অভ্যাস থাকলে তা পরিহার করা ভালো। তবে ঘুমানোর অন্তত ৩ ঘণ্টা আগে অ্যালকোহল পান থেকে বিরত থাকুন। অ্যালকোহল গলার পেশিগুলো শিথিল করে দেয়, যা নাক ডাকার সৃষ্টি করে।
  6. ঘুমের ওষুধ বা উপশমকারী এড়িয়ে চলতে হবে। যদি আপনি ঘুমের ওষুধ বা সেডেটিভ গ্রহণ করেন, তবে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। অ্যালকোহলের মতো এই ওষুধগুলোও গলার পেশিকে শিথিল করে নাক ডাকার সমস্যা বাড়াতে পারে।
  7. ধূমপানের অভ্যাস নাক ডাকার সমস্যাকে আরও বাড়িয়ে তুলতে পারে এবং অবস্ট্রাকটিভ স্লিপ অ্যাপনিয়ার ঝুঁকি বাড়ায়। ধূমপান ত্যাগ করার জন্য চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
  8. অতিরিক্ত ওজন থাকলে গলার চারপাশে চর্বি জমতে পারে, যা শ্বাস পথকে সংকুচিত করে। সুষম খাদ্য গ্রহণ, ক্যালরি বা কার্বোহাইড্রেট কমিয়ে এবং প্রতিদিন অন্তত ৩০ মিনিট ব্যায়ামের মাধ্যমে ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখলে তা নাক ডাকা কমাতে সহায়ক হতে পারে।
Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

২০৯৮ পর্যন্ত কবে কোন দেশ বিশ্বকাপ নেবে—ভবিষ্যদ্বাণী করল গ্রোক এআই

খালেদা জিয়ার রিপোর্ট ভালো, চেষ্টা করছেন কথা বলার: চিকিৎসক

সেই এনায়েত করিমের মামলায় সাংবাদিক শওকত মাহমুদকে গ্রেপ্তার দেখাল ডিবি

সেনাবাহিনীতে সৈনিক পদে যোগদানের বয়সসীমা বাড়ল

১০ ঘণ্টা পর বিটিআরসির অবরোধ তুলে নিলেন মোবাইল ফোন ব্যবসায়ীরা

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত