Ajker Patrika

ত্রাণকর্মীদের ওপর ইসরায়েলি সেনাদের হামলা ভুলবশত, নেতানিয়াহুর দাবি

ত্রাণকর্মীদের ওপর ইসরায়েলি সেনাদের হামলা ভুলবশত, নেতানিয়াহুর দাবি

গাজায় ত্রাণ সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান ওয়ার্ল্ড সেন্ট্রাল কিচেনের কর্মীদের উপর হামলার ঘটনা ‘ভুলবশত ঘটেছে’ বলে দাবি করেছেন ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। গতকাল মঙ্গলবার সাত ত্রাণ কর্মী নিহতের ঘটনায় ‘আন্তরিক দুঃখ’ প্রকাশ করে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী। এক ভিডিও বার্তায় যুদ্ধের মধ্যে এধরনের ঘটনা স্বাভাবিক বলে মন্তব্য করেন নেতানিয়াহু।

বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদন অনুসারে, ত্রাণ কর্মীদের হত্যার ব্যাপক নিন্দার মধ্যে যুক্তরাষ্ট্র ও অন্যান্য মিত্ররা ইসরায়েলের কাছে এ ঘটনার ব্যাখ্যা জানতে চেয়েছে। 

গাজায় ইসরায়েলের অবরোধ ও আগ্রাসনের প্রায় ছয়মাস হতে চলেছে। অঞ্চলটিতে বিপর্যয়কর মানবিক পরিস্থিতি কমিয়ে আনতে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনীর ওপর ক্রমেই আন্তর্জাতিক চাপ বাড়ছে। এ ঘটনার পর আরও বেশি চাপের মুখে পড়তে পারে ইসরায়েল। 

গত সোমবার ওয়ার্ল্ড সেন্ট্রাল কিচেনের ত্রাণের গাড়িতে হামলায় নিহত সাত কর্মীরা হলেন—   যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডার দ্বৈত নাগরিকসহ অস্ট্রেলিয়া, পোল্যান্ড, যুক্তরাজ্য ও ফিলিস্তিনের নাগরিক। তারকা শেফ হোসে আন্দ্রেসের প্রতিষ্ঠিত ডব্লিউসিকে এর কর্মীরা সংস্থার লোগোযুক্ত গাড়িতে করে একটি বিচ্ছিন্ন অঞ্চল দিয়ে যাওয়ার সময় হামলার শিকার হয়েছে। ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর সঙ্গে সমন্বয় করা সত্ত্বেও দেইর আল বালাহর একটি গুদাম থেকে বের হওয়ার সময় দলটি এই হামলার শিকার হয়। 
 
এক ভিডিও বার্তায় নেতানিয়াহু বলেন, ‘দুর্ভাগ্যবশত, গতকাল (১ এপ্রিল) একটি দুঃখজনক ঘটনা ঘটেছে, যেখানে আমাদের বাহিনী অনিচ্ছাকৃতভাবে গাজা উপত্যকায় বেসামরিকদের ক্ষতি করেছে। যুদ্ধে এমনই হয়। আমরা একটি পুঙ্খানুপুঙ্খ তদন্ত করছি এবং সরকারের সঙ্গে যোগাযোগ করছি। এমন ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধে আমরা সবকিছু করব।’

ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী এ ঘটনায় ‘একটি স্বাধীন, পেশাদার ও বিশেষজ্ঞ সংস্থার’ মাধ্যমে তদন্তের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। 

গত অক্টোবর থেকে গাজায় অন্তত ১৯৬ জন মানবাধিকার কর্মীর মৃত্যু হয়েছে বলে জানিয়েছে জাতিসংঘ। এ ছাড়াও ইসরায়েলের বিরুদ্ধে ত্রাণ বিতরণ কেন্দ্রগুলোতে হামলা চালানোর অভিযোগ করেছে ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস। 

গতকাল মঙ্গলবার ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাক এক ফোনালাপে নেতানিয়াহুকে বলেন, ব্রিটেন এই মৃত্যুতে হতবাক হয়েছে। নিহতদের মধ্যে তিনজন ব্রিটিশ ছিলেন। ব্রিটেন এ ঘটনায় একটি পুঙ্খানুপুঙ্খ ও স্বচ্ছ স্বাধীন তদন্তের দাবি করছে। 

অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী অ্যান্থনি অ্যালবানিজ বলেন, পৃথক এক ফোনালাপে নেতানিয়াহুর প্রতি ‘ক্ষোভ ও উদ্বেগ’ প্রকাশ করেছেন তিনি।

ইসরায়েলের ঘনিষ্ঠতম মিত্র যুক্তরাষ্ট্র বলেছে, ইসরায়েল ইচ্ছাকৃতভাবে ত্রাণকর্মীদের ওপার হামলা চালিয়েছে—এমন কোনো প্রমাণ নেই। তবে যুক্তরাষ্ট্র এ মৃত্যুতে ক্ষুব্ধ এবং গাজায় ত্রাণ কর্মীদের নিরাপত্তা দাবি করে। এমনকি ডব্লিউসিকে এর প্রতিষ্ঠাতা আন্দ্রেসকে ফোন করে সমবেদনাও জানিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

কাজের চাপে মাঠকর্মীদের মৃত্যুতে ভ্রুক্ষেপ নেই ভারতীয় নির্বাচন কমিশনের

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ০৮ ডিসেম্বর ২০২৫, ১২: ৩২
ভারতে ভোটার তালিকা সংশোধের কাজে যুক্ত ডজনখানেক নির্বাচন কর্মীর মৃত্যু হয়েছে। ছবি: এএফপি
ভারতে ভোটার তালিকা সংশোধের কাজে যুক্ত ডজনখানেক নির্বাচন কর্মীর মৃত্যু হয়েছে। ছবি: এএফপি

কয়েক দিন আগে ভারতের উত্তর প্রদেশের স্কুলশিক্ষক সর্বেশ কুমারকে তাঁর বাড়িতে মৃত অবস্থায় পাওয়া যায়। মৃত্যুর আগে তিনি নাকি একটি ভিডিও বানিয়েছিলেন, যেখানে তাঁকে কাঁদতে দেখা যায়। সেখানে তিনি নির্বাচনী কাজের চাপের কথা বলেছিলেন এবং সময়মতো কাজটি শেষ করতে না পারায় খুবই হতাশ ছিলেন।

ভিডিওতে তিনি বলেছিলেন, ‘বিশ দিন ধরে আমি এক ফোঁটা ঘুমাতে পারিনি। হাতে যদি একটু সময় থাকত, তা হলে এই কাজটা শেষ করে দিতে পারতাম।’ সর্বেশ ছিলেন সেই সব হাজার হাজার সরকারি কর্মীর একজন, যাদের গত ৪ নভেম্বর থেকে ১২টি রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের ৫০ কোটিরও বেশি ভোটারের তালিকা তৈরির কাজে নামানো হয়েছিল।

ভারত সরকার পরিচালিত স্পেশাল ইনটেনসিভ রিভিশন বা বিশেষ নিবিড় সংশোধনী—এসআইআর নামে পরিচিত এই কর্মসূচির মাধ্যমে নির্বাচন কমিশন (ইসি) চাইছে, প্রত্যেক যোগ্য ভোটারের নাম তালিকায় তোলা হোক এবং অযোগ্য নামগুলো বাতিল করা হোক।

সাধারণত সরকারি স্কুলশিক্ষক, কর্মচারী ও চুক্তিভিত্তিক কর্মীরা বুথ লেভেল অফিসার বা বিএলও হিসেবে ইসির তৃণমূল পর্যায়ের কর্মী হিসেবে কাজ করেন। তাঁরা বাড়ি বাড়ি গিয়ে ফরম বিতরণ করেন, কাগজপত্র যাচাই করেন, নানা প্রশ্নের জবাব দেন ও নির্ভুল তথ্য আপলোড করেন। এই পুরো কাজের সময়সীমা মাত্র এক মাস।

তবে শুধু এটুকুই নয়। অনেক নির্বাচনী কর্মী—যাদের অনেকেই আবার প্রাথমিক স্কুলের শিক্ষক বা অঙ্গনওয়াড়ি (সরকার পরিচালিত শিশু পরিচর্যা কেন্দ্র) কর্মী—বলেন, অনেক সময় তাঁদের নিজের নিয়মিত কাজের পাশাপাশি নির্বাচনী দায়িত্বও সামলাতে হয়।

বিবিসি রাজনৈতিক দিক থেকে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ রাজ্য উত্তর প্রদেশ ও পশ্চিমবঙ্গে দশ জন বিএলও’র সঙ্গে কথা বলেছে। তাঁরা জানিয়েছেন, সামান্য বিশ্রাম, কম ঘুম ও নগণ্য পারিশ্রমিক নিয়ে তাঁদের দিনে ১৪-১৫ ঘণ্টা কাজ করতে হচ্ছে। এই দুই রাজ্যেই এসআইআর কাজ নিয়ে বিতর্ক তৈরি হয়েছে।

এই শ্রমসাধ্য সময়সূচির কারণে বিএলওদের মধ্যে ক্ষোভ দেখা দিয়েছে। বিশেষত কুমারসহ এক ডজনেরও বেশি কর্মীর মৃত্যুর পর এই ক্ষোভ আরও বেশি বেড়েছে। তাঁদের পরিবার এই মৃত্যুগুলোকে—যার মধ্যে কথিত আত্মহত্যা বা হার্ট অ্যাটাক রয়েছে—নির্বাচনী কাজসংক্রান্ত মানসিক চাপের ফল বলে মনে করছেন। তবে বিবিসির পক্ষে মৃত্যুর কারণগুলো স্বাধীনভাবে যাচাই করা সম্ভব হয়নি। বিবিসির পাঠানো বিস্তারিত প্রশ্নের তালিকার কোনো জবাব ভারতের নির্বাচন কমিশন দেয়নি।

গুজরাটে অরবিন্দভাই ভাধের নামে এক প্রাথমিক স্কুলশিক্ষক নাকি গত মাসেই ‘বিএলও–এর কাজের অত্যাচারের কারণে’ আত্মহত্যা করেছেন বলে তাঁর পরিবার বিবিসিকে জানিয়েছে। মৃত্যুর আগে তাঁর লেখা একটি নোট বিবিসি দেখেছে। সেখানে ভাধের বলেছিলেন, বেশ কিছু দিন ধরেই তিনি ‘অবিরাম ক্লান্তি ও মানসিক চাপে’ ভুগছিলেন।

অন্য এক ঘটনায় গুজরাটের এক স্কুলের প্রধান রমেশভাই পারমার এসআইআর-এর কাজের চাপ নেওয়ার পর রাতে ঘুমন্ত অবস্থাতেই মারা যান বলে তাঁর পরিবার অভিযোগ করেছে। পারমারের মেয়ে শিল্পাবেন বলেন, তাঁর বাবা প্রায়ই অনেক লম্বা সময় ধরে বা রাত অবধি কাজ করতেন। যেদিন তিনি মারা যান, সেদিনও তিনি এসআইআর-এর কাজে অনেক বার বাইরে গিয়েছিলেন এবং না খেয়েই শুতে গিয়েছিলেন।

এতগুলো মৃত্যুর পর এখন পোল কর্মীদের কাজের পরিস্থিতি নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। বিরোধী দলের নেতারা ইসির ও সরকারের সমালোচনা করেছেন, এত দ্রুত এসআইআর কাজ শেষ করতে চাওয়ার জন্য। (এর আগে ২০০২-২০০৩ সালে এসআইআর-এর কাজ ছয় মাস ধরে করা হয়েছিল।)

আদালতে পেশ করা একটি হলফনামার সূত্রে সংবাদমাধ্যমের খবরে জানা গেছে, এসআইআর-এর কাজের সঙ্গে বিএলওদের মৃত্যুর যোগ থাকার বিরোধীদের দাবি নির্বাচন কমিশন অস্বীকার করেছে। তারা এই সব দাবিকে ‘মিথ্যা, অত্যুক্তিপূর্ণ ও রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত’ বলে অভিহিত করেছে। গত সপ্তাহে ইসি জানিয়েছে, এসআইআর-এর সময়সীমা ৪ ডিসেম্বর থেকে বাড়িয়ে ১১ ডিসেম্বর করা হবে। তবে এর কারণ তারা জানায়নি।

কিন্তু উত্তর প্রদেশের নয়ডায় একটি আবাসিক কমপ্লেক্সে এসআইআর-এর নেতৃত্ব দেওয়া এক স্কুলশিক্ষিকা মনীষা কুমারী (ছদ্মনাম) বলছেন, এই বাড়তি সময়ের মধ্যেও তিনি কাজ শেষ করতে পারবেন কি না, সে ব্যাপারে নিশ্চিত নন। গত এক মাস ধরে কুমারী ভোর পাঁচটায় উঠে বাড়ির কাজ সারেন ও ছেলেমেয়েদের স্কুলে যাওয়ার জন্য তৈরি করেন। তারপর সকাল নয়টা থেকে বিকেল পাঁচটা-ছয়টা অবধি এসআইআর-এর কাজ করেন।

তিনি বিবিসিকে বলেন, ‘যেটুকু অল্প বিরতি পাই, সেটা খরচ হয় সেই সব লোকদের খুঁজে বের করার জন্য, যাঁরা প্রথমবার যখন গিয়েছিলাম, তখন বাড়িতে ছিলেন না।’ সন্ধ্যায়ও তাঁর নিস্তার নেই। বাড়ি ফিরে ছেলেমেয়েদের দেখাশোনা করার পর তিনি এসআইআর অ্যাপে লগইন করে যাচাই করা ফরমগুলো আপলোড করেন। কিন্তু অ্যাপটি প্রায়ই ‘ক্র্যাশ’ করে, তাই কাজ শেষ করতে তাঁকে আবার মাঝরাতের পর চেষ্টা করতে হয়। তিনি বলেন, ‘৪ নভেম্বর থেকে আজ অবধি আমার একটিও ছুটি নেই।’ তিনি আরও জানান, ক্লাসে তাঁর অনুপস্থিতির কারণে ছাত্রছাত্রীদের অনেক ক্ষতি হচ্ছে।

ভারতের বহু সরকারি স্কুলে কর্মীর অভাব রয়েছে। শিক্ষকেরা বলছেন, এই ধরনের কাজের জন্য তাঁদের ক্লাস থেকে তুলে নিলে ছাত্রছাত্রীদের ক্ষতি হয়। কিছু বিএলও বিবিসিকে জানিয়েছেন, স্বাস্থ্যের ওপর এর খারাপ প্রভাব থাকা সত্ত্বেও তাঁরা এই কঠিন কাজ করতে বাধ্য হচ্ছেন, কারণ তাঁরা আইনি পদক্ষেপের ভয় পান।

সম্প্রতি উত্তর প্রদেশের কর্মকর্তারা এসআইআর-এর কাজে অবহেলার অভিযোগে পোল কর্মীদের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন। আর অন্য রাজ্যগুলোতেও কাজ করতে না চাইলে জেল বা চাকরি হারানোর হুমকির খবর পাওয়া গেছে। উত্তর প্রদেশের হিসাবরক্ষক সুধীর কুমার কোরি নাকি তাঁর বিয়ের জন্য এক দিনের ছুটি নেওয়ায় তাঁর ঊর্ধ্বতন তাঁকে বকাবকি করেছিলেন। এরপরই তিনি আত্মহত্যা করেছেন বলে তাঁর পরিবার বিবিসি হিন্দিকে জানিয়েছে।

গাজিয়াবাদের এক পোল কর্মী সুনীল সিং (ছদ্মনাম) বলেছেন, গত কয়েক দিনে তাঁর ‘প্লেটলেট সংখ্যা মারাত্মকভাবে কমে গেছে’ কিন্তু এসআইআর-এর কাজের জন্য তাঁকে ছুটি নিতে দেওয়া হচ্ছে না। তিনি বলেন, ‘আমাকে ডাক্তার বিশ্রাম নিতে বলেছেন, কিন্তু এই কর্মকর্তারা কানেও নিচ্ছেন না। ছুটি পাওয়ার একমাত্র উপায় হলো হাসপাতালে ভর্তি হওয়া।’ তিনি আরও জানান, তিনি রাজ্যের বিদ্যুৎ বিভাগের তাঁর চাকরিটি ছেড়ে দেওয়ার কথা ভাবছেন।

বিএলওদের তাঁদের কাজের চাপ নিয়ে আবেদন জানানোর কোনো নির্দিষ্ট পদ্ধতি নেই। কিন্তু তাঁরা বিক্ষোভ করেছেন এবং সময়সীমা বাড়ানোর ও ভালো কাজের পরিবেশের জন্য ইসি ও জাতীয় মানবাধিকার কমিশনে চিঠিও লিখেছেন। কিছু রাজ্য এই কাজের জন্য ছাত্র স্বেচ্ছাসেবকদের কাজে লাগাচ্ছে, আবার উত্তর প্রদেশের কিছু জেলায় সেরা কাজ করা বিএলওদের নগদ অর্থ, উপহার ও অন্য পুরস্কার দেওয়া হচ্ছে।

ভারতের সুপ্রিম কোর্ট রাজ্যগুলোকে নির্দেশ দিয়েছে যে, বিএলওদের দীর্ঘ কাজের সময় কমাতে এসআইআর কাজের জন্য যেন অতিরিক্ত কর্মী নিয়োগ করা হয়। এখন ইসি বিএলওদের পারিশ্রমিক ছয় হাজার রুপি থেকে বাড়িয়ে বারো হাজার রুপি করেছে এবং সুপারভাইজারদের পারিশ্রমিক বারো হাজার রুপি থেকে আঠারো হাজার রুপি করেছে। এর পাশাপাশি বিএলওদের জন্য ছয় হাজার রুপির এসআইআর উৎসাহ-ভাতা যোগ করেছে। কিন্তু অনেক বিএলও বিবিসিকে জানিয়েছেন যে, তাঁরা এখনো কোনো টাকাই পাননি, আর তাঁদের প্রাপ্য কত টাকা, তা-ও অনেকে জানেন না।

এর আগে এক ক্ষেত্রে, ইসি পশ্চিমবঙ্গে বিএলওদের টাকা দিতে দেরি হওয়ার জন্য রাজ্যকে দায়ী করেছিল, আবার রাজ্য কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে তহবিল আটকে রাখার অভিযোগ তুলেছিল। অনেক বিএলও বিবিসিকে বলেন, তাঁরা এসআইআর-এর কাজের জন্য নিজেদের টাকাপয়সা ও মোবাইল ফোন ব্যবহার করছেন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক নয়ডার এক পোল কর্মী বলেন, ‘টাকা পাই কি না, দেখি। আশা খুবই কম।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

ভারতে ডোনাল্ড ট্রাম্পের নামে সড়ক হচ্ছে, খেপেছে বিজেপি

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ০৮ ডিসেম্বর ২০২৫, ১১: ২৬
রেভান্থ রেড্ডি ও ডোনাল্ড ট্রাম্প। ছবি: এক্স
রেভান্থ রেড্ডি ও ডোনাল্ড ট্রাম্প। ছবি: এক্স

বিশ্বব্যাপী মনোযোগ আকর্ষণ এবং আসন্ন ‘তেলেঙ্গানা রাইজিং গ্লোবাল সামিট’-এর আগে রাজ্যের ভাবমূর্তি তুলে ধরতে এক অভিনব উদ্যোগ নিলেন তেলেঙ্গানার মুখ্যমন্ত্রী এ রেভান্থ রেড্ডি। তিনি হায়দরাবাদের একটি প্রধান সড়কের নামকরণ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নামে করার প্রস্তাব দিয়েছেন।

মার্কিন কনস্যুলেট জেনারেলের পাশ দিয়ে যাওয়া এই গুরুত্বপূর্ণ সড়কটি খুব শিগগিরই ‘ডোনাল্ড ট্রাম্প অ্যাভিনিউ’ হিসেবে পরিচিত হতে চলেছে। প্রশাসনিক কর্মকর্তারা মনে করছেন, কোনো ক্ষমতাসীন বা সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্টের নামে যুক্তরাষ্ট্রের বাইরে কোনো প্রধান সড়কের নামকরণ এটাই প্রথম।

তবে এই নামকরণের স্রোত কেবল রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বদের মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকেনি। হায়দরাবাদকে দেশের অন্যতম টেক হাব হিসেবে গড়ে তোলার ক্ষেত্রে যে সমস্ত বৈশ্বিক ব্যবসায়িক এবং প্রযুক্তি সংস্থাগুলোর অবদান রয়েছে, তাদেরও সম্মান জানাতে চাচ্ছে রাজ্য সরকার। এই তালিকায় রয়েছে একাধিক প্রধান সড়কের নামকরণ:

এই অঞ্চলে অ্যালফাবেটের প্রযুক্তি সংস্থাটির বিপুল বিনিয়োগ ও উপস্থিতিকে স্বীকৃতি দিতে একটি প্রধান রাস্তার নামকরণ করা হচ্ছে ‘গুগল স্ট্রিট’। এ ছাড়া, ‘মাইক্রোসফট রোড’ এবং ‘উইপ্রো জংশন’-এর মতো অন্যান্য বিশ্বখ্যাত নামগুলোও বিবেচনাধীন।

রাজ্য সরকার রাভিরালাতে নেহরু আউটার রিং রোডকে প্রস্তাবিত ফিউচার সিটির সঙ্গে সংযোগকারী ১০০ মিটার গ্রিনফিল্ড রেডিয়াল রোডটির নামকরণ পদ্মভূষণ রতন টাটার নামে করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। রাভিরালার ইন্টারচেঞ্জ ইতিমধ্যেই ‘টাটা ইন্টারচেঞ্জ’ হিসাবে মনোনীত হয়েছে।

মুখ্যমন্ত্রী রেড্ডি এই উদ্যোগের পক্ষে যুক্তি দিয়ে বলেন, বিশ্বজুড়ে প্রভাবশালী ব্যক্তিত্ব এবং বৃহৎ করপোরেশনগুলোর নামে রাস্তার নামকরণ দ্বৈত উদ্দেশ্য সাধন করবে। এটি একদিকে যেমন তাদের প্রতি উপযুক্ত শ্রদ্ধা জানানো হবে, তেমনই সাধারণ মানুষের কাছে অনুপ্রেরণার উৎস হবে। একই সঙ্গে, এটি হায়দরাবাদকে বিশ্ব দরবারে এক উচ্চতর স্থানে পৌঁছে দেবে।

তবে মুখ্যমন্ত্রীর এই সিদ্ধান্তে তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী এবং বিজেপি নেতা বন্ডি সঞ্জয় কুমার। তিনি রেড্ডির সমালোচনা করে বলেন, হায়দরাবাদের নাম পরিবর্তন করে ‘ভাগ্যনগর’-এ ফিরিয়ে আনা উচিত।

এক্স হ্যান্ডলে তিনি লেখেন, ‘কংগ্রেস সরকার যদি নাম পরিবর্তনে এতই আগ্রহী হয়, তবে তাদের এমন কিছু দিয়ে শুরু করা উচিত যার ঐতিহাসিক তাৎপর্য এবং অর্থ আছে।’ তিনি অভিযোগ করেন, রেভান্থ রেড্ডি ‘যারা ট্রেন্ডিং’-শুধু তাদের নামেই জায়গার নামকরণ করছেন। সঞ্জয় কুমার আরও দাবি করেন, শুধু বিজেপিই সরকারের মধ্যে এ নিয়ে প্রশ্ন তুলছে এবং মহাধর্ণা-এর মাধ্যমে সাধারণ মানুষের প্রকৃত সমস্যা নিয়ে লড়ছে।

বিজেপি সরকার অবশ্য উত্তর প্রদেশ, আসামসহ বিভিন্ন রাজ্যে বেশ কয়েকটি শহর ও গ্রামের নাম পরিবর্তন করেছে। বিশেষ করে মুসলিম শাসনামলে দেওয়া নামগুলো পরিবর্তন করে তারা হিন্দুধর্ম সংশ্লিষ্ট নাম দিচ্ছে।

আবার অপারেশন সিঁদুর ও ট্যারিফ ইস্যুতে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে বিজেপি সরকারের টানাপোড়েন চলছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

দুটি সমস্যা সমাধান হলেই ইউক্রেন যুদ্ধ শেষের চুক্তি

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
ট্রাম্প গাজায় যুদ্ধবিরতি কার্যকর করতে পারলেও ইউক্রেনে ব্যর্থ হচ্ছেন মূলত অঞ্চলটিতে তাঁর প্রভাব বলয়ের ব্যর্থতার কারণে। ছবি: সংগৃহীত
ট্রাম্প গাজায় যুদ্ধবিরতি কার্যকর করতে পারলেও ইউক্রেনে ব্যর্থ হচ্ছেন মূলত অঞ্চলটিতে তাঁর প্রভাব বলয়ের ব্যর্থতার কারণে। ছবি: সংগৃহীত

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইউক্রেন বিষয়ক দূত জানিয়েছেন, ইউক্রেন যুদ্ধ শেষ করার জন্য একটি চুক্তি ‘সত্যিই খুব কাছাকাছি।’ শুধু দুটি প্রধান সমস্যার সমাধান বাকি। তবে ক্রেমলিন বলেছে, যুক্তরাষ্ট্রের কিছু প্রস্তাবে আমূল পরিবর্তন আনতে হবে। বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।

নিজেকে ‘শান্তির দূত’ হিসেবে স্মরণীয় করে রাখতে চাওয়া মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর ইউরোপের এই মারাত্মক সংঘাত থামানো তাঁর প্রেসিডেন্সির সময়কালের অন্যতম অধরা বিদেশনীতির লক্ষ্য হয়ে রয়েছে।

রাশিয়ার মদতপুষ্ট বিচ্ছিন্নতাবাদী আর ইউক্রেনীয় বাহিনীর মধ্যে দনবাস (দোনেৎস্ক ও লুহানস্ক অঞ্চল নিয়ে গঠিত) অঞ্চলে আট বছর ধরে চলা লড়াইয়ের পর ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে রাশিয়া ইউক্রেন আক্রমণ করে। ট্রাম্পের ইউক্রেন বিষয়ক বিশেষ দূত কিথ কেলগ আগামী জানুয়ারিতে পদত্যাগ করতে চলেছেন। তিনি গতকাল রোববার রিগান ন্যাশনাল ডিফেন্স ফোরামে বলেছেন, সংঘাত মেটানোর প্রচেষ্টা ‘শেষ ১০ মিটারের’ মধ্যে আছে, যা সব সময়ই সবচেয়ে কঠিন।

কেলগ জানিয়েছেন, যে দুটি প্রধান সমস্যা এখনও অমীমাংসিত রয়েছে—তার মধ্যে একটি হলো ভূখণ্ড। মূলত দনবাসের ভবিষ্যৎ। অন্যটি হলো—ইউরোপের বৃহত্তম জাপোরিঝিয়া পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের ভবিষ্যৎ, যা এখন রাশিয়ার দখলে।

ক্যালিফোর্নিয়ার সিমি ভ্যালিতে রোনাল্ড রেগান প্রেসিডেনশিয়াল লাইব্রেরি ও জাদুঘরে কেলগ বলেন, ‘আমরা যদি এই দুটি সমস্যার সমাধান করতে পারি, তবে আমার মনে হয় বাকি সবকিছুই বেশ ভালোভাবে মিটে যাবে।’ তিনি আরও বলেন, ‘আমরা প্রায় পৌঁছে গেছি।’ কেলগ জোর দিয়ে বলেন, ‘আমরা সত্যি, সত্যি খুব কাছাকাছি।’

রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন গত সপ্তাহে ট্রাম্পের বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফ এবং ট্রাম্পের জামাতা জ্যারেড কুশনারের সঙ্গে ক্রেমলিনে প্রায় পাঁচ ঘণ্টা বৈঠকের পুতিনের প্রধান বিদেশনীতি বিষয়ক সহকারী ইউরি উশাকভ জানিয়েছিলেন যে ‘ভূখণ্ডগত সমস্যা’ নিয়ে আলোচনা হয়েছে।

ক্রেমলিনের ভাষায় এর মানে হলো, রাশিয়া পুরো দনবাসের ওপর তাদের দাবি জানাচ্ছে। যদিও ইউক্রেন এখনও ওই অঞ্চলের অন্তত ৫ হাজার বর্গকিলোমিটার নিয়ন্ত্রণ করছে। প্রায় সব দেশই দনবাসকে ইউক্রেনের অংশ হিসেবে স্বীকৃতি দেয়। ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি বলেছেন, গণভোট ছাড়া দোনেৎস্কের বাকি অংশ রাশিয়ার হাতে তুলে দেওয়াটা বেআইনি হবে এবং এর ফলে রাশিয়া ভবিষ্যতে ইউক্রেনের গভীরে আক্রমণ করার জন্য একটি প্ল্যাটফর্ম পেয়ে যাবে।

রুশ সংবাদমাধ্যম রোববার উশাকভের উদ্ধৃতি দিয়ে জানিয়েছে, ইউক্রেন সংক্রান্ত ‘নথিপত্রগুলোতে আমেরিকাকে গুরুতর, আমি বলব, মৌল পরিবর্তন’ আনতে হবে। মস্কো ঠিক কী ধরনের পরিবর্তন চাইছে, সে ব্যাপারে তিনি স্পষ্ট করে কিছু বলেননি। জেলেনস্কি শনিবার জানিয়েছেন, উইটকফ এবং কুশনারের সঙ্গে তার দীর্ঘ ও ফোনালাপ হয়েছে। ক্রেমলিন বলেছে, তারা আশা করছে সম্ভাব্য চুক্তিটির খসড়া তৈরির প্রধান কাজটি কুশনার করবেন।

ভিয়েতনাম, পানামা ও ইরাকে দায়িত্ব পালন করা সাবেক লেফটেন্যান্ট জেনারেল কেলগ বলেন, ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে প্রাণহানি ও আহতের মাত্রা ‘ভয়াবহ’ এবং আঞ্চলিক যুদ্ধের দিক থেকে দেখলে এটি নজিরবিহীন। কেলগ বলেন, যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে রাশিয়া এবং ইউক্রেন উভয় পক্ষে সম্মিলিতভাবে ২০ লাখের বেশি হতাহত হয়েছে। রাশিয়া বা ইউক্রেন কেউই তাদের ক্ষতির বিশ্বাসযোগ্য হিসাব প্রকাশ করে না।

রাশিয়া বর্তমানে ইউক্রেনের ১৯ দশমিক ২ শতাংশ এলাকা নিয়ন্ত্রণ করছে। এর মধ্যে আছে ২০১৪ সালে দখল করা ক্রিমিয়া, সমগ্র লুহানস্ক, দোনেৎস্কের ৮০ শতাংশের বেশি, খেরসন ও জাপোরিঝিয়ার প্রায় ৭৫ শতাংশ এবং খারকিভ, সুমি, মিকোলাইভ ও নিপ্রোপেত্রোভস্ক অঞ্চলের কিছু অংশ।

গত মাসে ফাঁস হওয়া ২৮টি মার্কিন শান্তি প্রস্তাবের একটি খসড়া ইউক্রেনীয় ও ইউরোপীয় কর্মকর্তাদের মধ্যে উদ্বেগ সৃষ্টি করেছিল। তাদের দাবি—ন্যাটো, ইউক্রেনের এক-পঞ্চমাংশ এলাকার ওপর রাশিয়ার নিয়ন্ত্রণ এবং ইউক্রেনীয় সেনাবাহিনীর ওপর বিধিনিষেধের মতো মস্কোর প্রধান দাবিগুলোর কাছে এটি নতি স্বীকার করেছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

ভয়াবহ সংঘাতের পর কম্বোডিয়া সীমান্তে থাইল্যান্ডের বিমান হামলা

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ০৮ ডিসেম্বর ২০২৫, ১১: ০৮
থাইল্যান্ড সীমান্তে পাহার দিচ্ছে দুই কম্বোডিয়ান সেনা। ছবি: এএফপি
থাইল্যান্ড সীমান্তে পাহার দিচ্ছে দুই কম্বোডিয়ান সেনা। ছবি: এএফপি

কম্বোডিয়ার সঙ্গে বিতর্কিত সীমান্তে রয়্যাল থাই আর্মি বিমান হামলা শুরুর ঘোষণা দিয়েছে। থাই সামরিক বাহিনী কম্বোডিয়ার সেনাদের বিরুদ্ধে তাদের সৈন্যদের ওপর গুলি চালানো এবং অন্তত একজনকে হত্যার অভিযোগ এনেছে। কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল–জাজিরার প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।

আজ সোমবার এক বিবৃতিতে থাই সেনাবাহিনীর মুখপাত্র মেজর জেনারেল উইন্থাই সুভারি জানিয়েছেন, উবোন রাতচাথানি প্রদেশের নাম ইয়েন জেলার চং বক এলাকায় প্রাণঘাতী সংঘর্ষের পর থাই সেনাবাহিনী বিমান মোতায়েন করেছে। সুভারি আরও বলেছেন, থাই আর্মি ‘সীমান্ত এলাকার বেসামরিক নাগরিকদের সরিয়ে নিতে দ্রুত সমর্থন জোগাচ্ছে।’

কম্বোডিয়াও এই হামলার খবর নিশ্চিত করেছে। কম্বোডিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মালি সোচেতা বার্তা সংস্থা এএফপিকে জানিয়েছেন, সোমবার ভোরে থাই বাহিনী প্রিয়া বিহার ও ওদ্দার মিয়ানচে সীমান্তবর্তী প্রদেশগুলোতে কম্বোডিয়ার সৈন্যদের ওপর হামলা চালায়। তবে তিনি এ-ও যোগ করেছেন যে, কম্বোডিয়া পাল্টা কোনো আঘাত হানেনি।

জুলাই মাসে পাঁচ দিনের এক রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের পর যুদ্ধবিরতি ঘোষিত হয়েছিল, কিন্তু এই হামলা হলো দুই প্রতিবেশীর মধ্যে সহিংসতার সর্বশেষ উত্তেজনা। ওই সংঘর্ষের সময়ে কমপক্ষে ৪৮ জন নিহত হয়েছিলেন এবং আনুমানিক ৩ লাখ মানুষ সাময়িকভাবে স্থানচ্যুত হন; এই সময় দুই প্রতিবেশী রকেট এবং ভারী আর্টিলারি বিনিময় করেছিল।

যে যুদ্ধবিরতির ফলে সংঘাতের অবসান হয়েছিল, সেটি সম্পন্ন করেছিলেন মালয়েশিয়ার সাবেক প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিম এবং মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প। গত অক্টোবরে কুয়ালালামপুরে দুই দেশের মধ্যে এক সম্প্রসারিত শান্তিচুক্তি স্বাক্ষর প্রত্যক্ষ করেছিলেন। তবে উত্তেজনা এখনো বজায় আছে।

গত মাসে এক ভূমি মাইন বিস্ফোরণে থাই আর্মির এক সৈন্য আহত হওয়ার পর, থাইল্যান্ড জানিয়েছিল যে—তারা কম্বোডিয়ার সঙ্গে স্বাক্ষরিত যুদ্ধবিরতি চুক্তি বাস্তবায়ন বন্ধ করছে। যদিও নম পেন স্থলমাইন বিস্ফোরণের দায় অস্বীকার করে বলেছে, ডিভাইসটি ছিল পুরোনো সংঘাতের ধ্বংসাবশেষ।

থাইল্যান্ড ও কম্বোডিয়া এক শতাব্দীরও বেশি সময় ধরে তাদের ৮১৭ কিলোমিটার (৫০৮ মাইল) স্থল সীমান্তের অচিহ্নিত স্থানগুলোতে সার্বভৌমত্ব নিয়ে বিবাদে জড়িয়ে আছে। এই সীমান্তের প্রথম মানচিত্র ১৯০৭ সালে তৈরি করেছিল ফ্রান্স, যখন কম্বোডিয়া তাদের উপনিবেশ ছিল।

শান্তিপূর্ণভাবে নিজেদের দাবিগুলো মীমাংসা করার চেষ্টা সত্ত্বেও, মাঝে মাঝে চাপা উত্তেজনা স্ফুলিঙ্গের মতো ছিটকে বের হয় এবং তা সংঘর্ষে রূপান্তরিত হয়, যেমন ২০১১ সালের এক সপ্তাহব্যাপী আর্টিলারি বিনিময়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত