
আজকের পত্রিকা: অবন্তিকার আত্মহত্যার নোট পড়ে মনে হয়েছে তাঁকে আত্মহত্যা করতে বাধ্য করা হয়েছে। আপনার কী মনে হয়?
রাশেদা রওনক খান: আসলে অবন্তিকাকে আত্মহত্যা করতে সমাজ এবং সমাজের মানুষগুলো প্ররোচিত করেছে। কখন একজন মানুষ আত্মহত্যা করে? যখন তার আর কোনো অবলম্বন, কোনো আশা, শেষ আশ্রয়টুকু থাকে না, সবকিছু হারিয়ে একাকিত্বে ভোগে, তখন একজন মানুষ আত্মহত্যা করে। অবন্তিকার ক্ষেত্রেও ভিন্ন কিছু ঘটেনি—সে যখন তার বন্ধু-সহপাঠীদের কাছ থেকে আশাহত হয়েছে, বন্ধু-সহপাঠীরা তার বিপদের সময় এগিয়ে আসেনি, আর তার বিভাগও তার পাশে দাঁড়ায়নি। প্রক্টর অফিসে আবেদন করেছিল বলে দাবি করা হয়; অর্থাৎ তার চারপাশে যেসব জায়গায় কথা বলা দরকার, সেটা করেও যখন কোনো সমাধান পায়নি, তখন কিন্তু একটা বদ্ধ ঘরে আত্মহত্যা করার সিদ্ধান্ত নিল। এর জন্য আসলে আমাদের পুরো সমাজব্যবস্থা দায়ী। আমাদের রাষ্ট্রব্যবস্থা ও তার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এবং আমাদের চারপাশ দায়ী।
রবীন্দ্রসংগীতশিল্পী সাদি মহম্মদের ক্ষেত্রে একই ব্যাপার লক্ষ করা গেছে। তিনিও একাকিত্বের কারণে আত্মহত্যা করেছেন। সেই জায়গা থেকে বলব, আসলে এই সময়ের স্বার্থপর, ব্যক্তিকেন্দ্রিক যে সমাজব্যবস্থা, তা দায়ী। আমরা, সমাজের মানুষ—সবাই ভান করছি একসঙ্গে থাকার। কিন্তু খুবই বিচ্ছিন্ন ও সংকীর্ণ গণ্ডিতে নিজেকে নিয়ে ব্যস্ত হয়ে আছি। এখানে না আছে সামষ্টিকতার চিন্তাভাবনা, না আছে মানবিকতার বিশুদ্ধ চর্চা।
আজকের পত্রিকা: সাদি মহম্মদের ব্যাপারটি আলাদা। আর অবন্তিকাকে তো মানসিক নিপীড়নের মধ্যে ফেলে দেওয়া হয়েছিল।
রাশেদা রওনক খান: ভিন্ন তো বটেই। তবে সমাজের প্রতি, কাঠামোর প্রতি হতাশা দুটো ক্ষেত্রেই ঘটেছে। অবন্তিকার ক্ষেত্রে হতাশার জায়গাটা হয়তো ভিন্ন ছিল। বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে নিপীড়নের শিকার সব নারী শিক্ষার্থী কিন্তু কর্তৃপক্ষকে অভিযোগ দেয় না। বলা যায় প্রায় ৯০ ভাগ শিক্ষার্থী পাবলিকলি অভিযোগ করে না। যে কয়েকজন জানায়, তারা কিন্তু তাদের জীবনের সব ধরনের ঝুঁকি নিয়ে—তার পরিচয় উন্মোচিত হয়ে যাবে, ভবিষ্যৎ অনেকটা অন্ধকারাচ্ছন্ন হয়ে যেতে পারে, জীবনে কালিমা লেপন হতে পারে, ইমেজ-সংকট তৈরি হতে পারে, নানান পারিবারিক-সামাজিক চাপ আসতে পারে—এ রকম বিভিন্ন ধরনের শঙ্কা ও ঝুঁকি মাথায় নিয়ে কিন্তু একটা মেয়ে আসে তার সমস্যার কথা বলার জন্য যে সে নিপীড়িত হচ্ছে। অবন্তিকা তাদের মধ্যে একজন।
যখন একজন মানুষ জীবনের ঝুঁকি নিয়ে এবং নিজের পরিচয় নিয়ে সহপাঠীর বিরুদ্ধে, শিক্ষকের বিরুদ্ধে, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থার বিরুদ্ধে দাঁড়ায় এবং বিচার চায়, তার মানে সে কিছু মোকাবিলা করার জন্য প্রস্তুত। রাষ্ট্র বা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ যখন বিচার করতে ব্যর্থ হয়, খুব স্বাভাবিকভাবেই তখন নিপীড়িত ছাত্রী ভাবে, তার বুঝি আর বেঁচে থাকার কোনো আশা বা উপায় নেই।
সেই আশাহতের জায়গা থেকেই হয়তো অবন্তিকা আত্মহত্যা করেছে। আজকাল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বুলিং একটি বড় ধরনের মানসিক সংকট তৈরি করছে শিক্ষার্থীদের মাঝে। এ বিষয়টি খুবই গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করা প্রয়োজন। আমরা এই মুহূর্তে বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে আত্মহত্যা করার প্রবণতা আছে—এমন শিক্ষার্থীদের ওপর একটি গবেষণার কাজ করছি; যেখানে দেখা যাচ্ছে, শিক্ষার্থীদের একটি বড় অংশ মানসিকভাবে ভেঙে পড়ছে শ্রেণিকক্ষে, বিভাগে, আবাসিক হলে এবং বড় পরিসরে ক্যাম্পাসে নানা ধরনের বুলিংয়ের শিকার হওয়ার কারণে।
আজকের পত্রিকা: দেশের আইনে আত্মহত্যার প্ররোচনা দেওয়া একটা অপরাধ। যদিও অভিযুক্তদের আটক করা হয়েছে। আপনি কী মনে করেন, এ ঘটনার সুষ্ঠু বিচার হবে?
রাশেদা রওনক খান: প্রথমত, এই মুহূর্তে ঘটনাটি তদন্তাধীন আছে। দ্বিতীয়ত, অবন্তিকার আত্মহত্যার ঘটনাকে কেন্দ্র করে তার ক্যাম্পাসে আন্দোলন চলছে। আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা ছয় দফা দাবি উত্থাপন করেছে। সেই ছয় দফার মধ্যে দুই নম্বর দাবিটি হচ্ছে, তার সহপাঠী আম্মান এবং সহকারী প্রক্টর দ্বীন ইসলামকে গ্রেপ্তার করতে হবে। হয়তোবা পরিস্থিতিকে শান্ত করার জন্য দুজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। কিন্তু পুরো বিষয়টা তো বিচারের মধ্য দিয়ে সমাপ্ত হবে। আর যারা অভিযুক্ত, তাদেরও কোনো বক্তব্য থাকতে পারে। আইনের দৃষ্টিতে অভিযুক্তদেরও কথা বলার অধিকার আছে। তাই বিচারকাজ শুরু না হওয়া পর্যন্ত এবং তদন্তের রিপোর্ট না পাওয়া পর্যন্ত কিছু বলা কঠিন।
আজকের পত্রিকা: পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে যৌন হয়রানি বা ছাত্রী নিপীড়নের ঘটনা নতুন নয়। এরপরও ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটছে?
রাশেদা রওনক খান: প্রথমত, বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে যখন নিপীড়কের বিরুদ্ধে অভিযোগ উত্থাপিত হয়, অনেক ক্ষেত্রে নিপীড়ক বিচার-প্রক্রিয়াকে প্রভাবিত করে তার প্রভাবশালী নেটওয়ার্ক দ্বারা কিংবা বিভিন্ন ধরনের কৌশল অবলম্বন করে। এই যে বিচার-প্রক্রিয়ার দীর্ঘসূত্রতা কিংবা বিচার না হওয়া—এগুলো হলো নতুন ঘটনা ঘটার পেছনে বড় কারণ। যেকোনো বিশ্ববিদ্যালয় যখন এ ধরনের ঘটনায় দৃষ্টান্তমূলক বিচার নিশ্চিত করে উদাহরণ সৃষ্টি করবে, তখন সেই ক্যাম্পাসে তো বটেই, অন্য বিশ্ববিদ্যালয়েও এর কার্যকর প্রভাব পড়বে; অর্থাৎ নিপীড়ক ভয় পাবে। কিন্তু যখন বিচারহীনতার মধ্য দিয়ে যাওয়া হবে, তখন পরপর অনেক ঘটনা ঘটতে পারে।
কারণ, বিচারহীনতার এই সংস্কৃতি নিপীড়ককে একধরনের নিপীড়ন করার সাহস ও সুযোগ দুটিই বাড়িয়ে দেয়। যেমন কেউ কেউ ধরেই নেন,তিনি তো বিচার-প্রক্রিয়াকে প্রভাবিত করতে পারেন বা এসবের ঊর্ধ্বে। এ ধরনের ঘটনায় অন্য নিপীড়কেরা কিন্তু উৎসাহিত হবেন।ফলে যত দিন পর্যন্ত নিপীড়নের অভিযোগ উত্থাপিত হওয়ার পর তাঁর সঠিক বিচার করা না যায়, এ ধরনের ঘটনা বন্ধ করা যাবে না। আর বিচারব্যবস্থায় আস্থা ও গ্রহণযোগ্যতা সৃষ্টি না করা গেলে শুধু শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান না, সমাজেও এর প্রভাব ছড়িয়ে পড়ে, পড়ছে এবং আরও পড়বে।
আজকের পত্রিকা: এ ক্ষেত্রে যথার্থ বিচার না হওয়া নিয়ে রাষ্ট্রের কি কোনো ব্যর্থতা নেই?
রাশেদা রওনক খান: এ ক্ষেত্রে অবশ্যই রাষ্ট্রের একটা বড় ভূমিকা রয়েছে। পৃথিবীতে কোনো
কিছুই তো বিচ্ছিন্ন নয়। আমার বা আপনার ঘরে যা ঘটছে, তারও প্রভাব আছে রাষ্ট্রের। আর উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠান তো পুরোপুরি রাষ্ট্র কর্তৃক নিয়ন্ত্রণাধীন। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কোনো শিক্ষার্থী নিপীড়নের শিকার হবে, সেই নিপীড়নের বিচার কেন হচ্ছে না, তা দেখার দায়িত্ব রাষ্ট্রের। আর পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালিত হয় রাষ্ট্র কর্তৃক এবং জনগণের টাকায়। এখানে যদি পাঁচ টাকাও খরচ করা হয়, সেটা জনগণের ট্যাক্স থেকে আসে। তাই রাষ্ট্রীয় ব্যবস্থার মধ্য থেকে যেকোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে এ ধরনের নিপীড়নের বিচার ভালোভাবে হবে—স্বাভাবিকভাবে আমরা রাষ্ট্রের কাছে তা আশা করব।
আজকের পত্রিকা: বিভিন্ন ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে, বিশেষ করে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে নারী নিপীড়নবিরোধী সেল গঠনের দাবি উঠেছিল। কিন্তু এখনো অনেক বিশ্ববিদ্যালয়ে তা গঠন করা হয়নি। আবার কোথাও এটা থাকলেও বাস্তবায়ন করা হয় না। না হওয়ার কারণটা কী?
রাশেদা রওনক খান: ২০০৯ সালে হাইকোর্ট কর্তৃক বিশ্ববিদ্যালয়ে নারী নিপীড়নবিরোধী সেল গঠনের নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়সহ অনেক বিশ্ববিদ্যালয়ে এ ধরনের সেল বা তদন্ত কমিটি গঠিত হলেও এখনো অনেক বিশ্ববিদ্যালয়ে এই সেল গঠিত হয়নি। প্রথমত, হাইকোর্ট কর্তৃক নির্দেশ দেওয়ার পর শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে এর মনিটরিং করার দরকার ছিল, বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে এ রকম সেল গঠন করা হয়েছে কি না। হাইকোর্ট যে নির্দেশ দিয়েছিল, সেই নির্দেশ মানা হচ্ছে কি না এবং মানলেও কতটুকু মানা হচ্ছে বা কোন পরিমাণ মানা হচ্ছে, সেটা মনিটরিং করা দরকার ছিল। কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ে এ ধরনের সেল গঠন করা হলে রিসোর্স পারসন আছে কি না, অথবা কমিটি গঠন করা হয়েছে কিন্তু কমিটির লোকজন দলীয়ভাবে মদদপুষ্ট ও প্রভাবশালী নিপীড়কদের কাছের লোক—এ রকম হলে সে ক্ষেত্রে কিন্তু শিক্ষার্থীরা যথার্থ বিচার পাবে না; অর্থাৎ যেভাবে নীতিমালা প্রণয়নের কথা বলা হয়েছিল, সেভাবে বিশ্ববিদ্যালয়গুলো সেল গঠন করছে কি না, তা নিশ্চিত করা জরুরি। তা না হলে এ ধরনের ঘটনা আরও খারাপের দিকে যাওয়ার আশঙ্কা থেকেই যায়।
আজকের পত্রিকা: এ ধরনের অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা রোধে আপনার পরামর্শ কী?
রাশেদা রওনক খান: প্রথমত, এটা বলা হয়ে থাকে যে যাঁকে শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হবে তাঁকে দেখে-শুনে, বিচার-বিবেচনা করে নিয়োগ দিতে হবে। কিন্তু একজন মানুষের মধ্যে কতটা পশুত্ব আছে, সেটা ওই ব্যক্তিই জানেন, যতক্ষণ পর্যন্ত সেটা অভিযোগ আকারে না আসে। এই জায়গাটা চিহ্নিত করাটা একটু কঠিন। তারপরও আমি বলব, তাঁর অতীত ইতিহাস কেমন, ক্যাম্পাসে ছাত্র অবস্থায় তিনি কেমন ছিলেন সার্বিকভাবে, এগুলো শিক্ষক নিয়োগের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণভাবে বিবেচনা করা দরকার। বিভিন্ন পেশায় দেখা যায়, চাকরিতে নিয়োগের পরে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হয়।
সে ক্ষেত্রে বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক নিয়োগের ক্ষেত্রে এ ধরনের কিছু করা যায় কি না, সেটা নিয়ে ভাবার ব্যাপার আছে। কারণ কিছুদিন আগে যিনি মাস্টার্স পাস করেছেন, তিনিই আগামীকাল শিক্ষক হিসেবে যোগদান করতে পারেন এবং কোনো রকম প্রশিক্ষণ ছাড়াই তিনি শ্রেণিকক্ষে চলে যাচ্ছেন লেকচার দিতে। আগে এসবের প্রয়োজন না থাকলেও বর্তমানে উদ্ভূত নানা পরিস্থিতিতে ‘ছাত্র-শিক্ষক সম্পর্ক’ কেমন হওয়া উচিত, এ ধরনের ধারণা দেওয়ার জন্য নিয়োগপ্রাপ্ত শিক্ষকদের ট্রেনিংয়ের ব্যবস্থা করা দরকার। তা না হলে একজন নতুন শিক্ষকের কোনো প্রশিক্ষণ হলো না, তিনি শ্রেণিকক্ষে ঢুকে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কী ধরনের ব্যবহার করবেন, ছাত্র-শিক্ষক সম্পর্কের মাঝে পারস্পরিক শ্রদ্ধা বোধ কতটুকু থাকা প্রয়োজন, সম্পর্কের বাউন্ডারি কেমন হতে হবে—এ ব্যাপারগুলো খুব গুরুত্বপূর্ণ।
দ্বিতীয়ত, সমাজে সামগ্রিকভাবে মূল্যবোধের অবক্ষয় হয়েছে। সেটা রোধ করার জন্য সবাইকে কাজ করতে হবে। পরিবার থেকে ছেলেসন্তানকে শেখানো উচিত, একজন নারীকে আসলে কোন দৃষ্টিতে দেখা উচিত, কার সঙ্গে কী ধরনের ব্যবহার করা উচিত—এগুলো খুব গুরুত্বপূর্ণ। পরিবার থেকে না শিখে এলে হঠাৎ করে একজন শিক্ষক যতই উচ্চ শিক্ষিত হোক না কেন, ছাত্র হিসেবে যত ভালোই হোক না কেন, তাকে পশুত্ব থেকে নিবারণ করা যাবে না। তাই বাবা-মায়ের দায়িত্ব হচ্ছে সন্তানকে কেবল লেখাপড়ার দিক দিয়ে নয়, একজন সৎ চরিত্রের অধিকারী এবং সুনাগরিক হিসেবে গড়ে তোলা।

আজকের পত্রিকা: অবন্তিকার আত্মহত্যার নোট পড়ে মনে হয়েছে তাঁকে আত্মহত্যা করতে বাধ্য করা হয়েছে। আপনার কী মনে হয়?
রাশেদা রওনক খান: আসলে অবন্তিকাকে আত্মহত্যা করতে সমাজ এবং সমাজের মানুষগুলো প্ররোচিত করেছে। কখন একজন মানুষ আত্মহত্যা করে? যখন তার আর কোনো অবলম্বন, কোনো আশা, শেষ আশ্রয়টুকু থাকে না, সবকিছু হারিয়ে একাকিত্বে ভোগে, তখন একজন মানুষ আত্মহত্যা করে। অবন্তিকার ক্ষেত্রেও ভিন্ন কিছু ঘটেনি—সে যখন তার বন্ধু-সহপাঠীদের কাছ থেকে আশাহত হয়েছে, বন্ধু-সহপাঠীরা তার বিপদের সময় এগিয়ে আসেনি, আর তার বিভাগও তার পাশে দাঁড়ায়নি। প্রক্টর অফিসে আবেদন করেছিল বলে দাবি করা হয়; অর্থাৎ তার চারপাশে যেসব জায়গায় কথা বলা দরকার, সেটা করেও যখন কোনো সমাধান পায়নি, তখন কিন্তু একটা বদ্ধ ঘরে আত্মহত্যা করার সিদ্ধান্ত নিল। এর জন্য আসলে আমাদের পুরো সমাজব্যবস্থা দায়ী। আমাদের রাষ্ট্রব্যবস্থা ও তার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এবং আমাদের চারপাশ দায়ী।
রবীন্দ্রসংগীতশিল্পী সাদি মহম্মদের ক্ষেত্রে একই ব্যাপার লক্ষ করা গেছে। তিনিও একাকিত্বের কারণে আত্মহত্যা করেছেন। সেই জায়গা থেকে বলব, আসলে এই সময়ের স্বার্থপর, ব্যক্তিকেন্দ্রিক যে সমাজব্যবস্থা, তা দায়ী। আমরা, সমাজের মানুষ—সবাই ভান করছি একসঙ্গে থাকার। কিন্তু খুবই বিচ্ছিন্ন ও সংকীর্ণ গণ্ডিতে নিজেকে নিয়ে ব্যস্ত হয়ে আছি। এখানে না আছে সামষ্টিকতার চিন্তাভাবনা, না আছে মানবিকতার বিশুদ্ধ চর্চা।
আজকের পত্রিকা: সাদি মহম্মদের ব্যাপারটি আলাদা। আর অবন্তিকাকে তো মানসিক নিপীড়নের মধ্যে ফেলে দেওয়া হয়েছিল।
রাশেদা রওনক খান: ভিন্ন তো বটেই। তবে সমাজের প্রতি, কাঠামোর প্রতি হতাশা দুটো ক্ষেত্রেই ঘটেছে। অবন্তিকার ক্ষেত্রে হতাশার জায়গাটা হয়তো ভিন্ন ছিল। বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে নিপীড়নের শিকার সব নারী শিক্ষার্থী কিন্তু কর্তৃপক্ষকে অভিযোগ দেয় না। বলা যায় প্রায় ৯০ ভাগ শিক্ষার্থী পাবলিকলি অভিযোগ করে না। যে কয়েকজন জানায়, তারা কিন্তু তাদের জীবনের সব ধরনের ঝুঁকি নিয়ে—তার পরিচয় উন্মোচিত হয়ে যাবে, ভবিষ্যৎ অনেকটা অন্ধকারাচ্ছন্ন হয়ে যেতে পারে, জীবনে কালিমা লেপন হতে পারে, ইমেজ-সংকট তৈরি হতে পারে, নানান পারিবারিক-সামাজিক চাপ আসতে পারে—এ রকম বিভিন্ন ধরনের শঙ্কা ও ঝুঁকি মাথায় নিয়ে কিন্তু একটা মেয়ে আসে তার সমস্যার কথা বলার জন্য যে সে নিপীড়িত হচ্ছে। অবন্তিকা তাদের মধ্যে একজন।
যখন একজন মানুষ জীবনের ঝুঁকি নিয়ে এবং নিজের পরিচয় নিয়ে সহপাঠীর বিরুদ্ধে, শিক্ষকের বিরুদ্ধে, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থার বিরুদ্ধে দাঁড়ায় এবং বিচার চায়, তার মানে সে কিছু মোকাবিলা করার জন্য প্রস্তুত। রাষ্ট্র বা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ যখন বিচার করতে ব্যর্থ হয়, খুব স্বাভাবিকভাবেই তখন নিপীড়িত ছাত্রী ভাবে, তার বুঝি আর বেঁচে থাকার কোনো আশা বা উপায় নেই।
সেই আশাহতের জায়গা থেকেই হয়তো অবন্তিকা আত্মহত্যা করেছে। আজকাল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বুলিং একটি বড় ধরনের মানসিক সংকট তৈরি করছে শিক্ষার্থীদের মাঝে। এ বিষয়টি খুবই গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করা প্রয়োজন। আমরা এই মুহূর্তে বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে আত্মহত্যা করার প্রবণতা আছে—এমন শিক্ষার্থীদের ওপর একটি গবেষণার কাজ করছি; যেখানে দেখা যাচ্ছে, শিক্ষার্থীদের একটি বড় অংশ মানসিকভাবে ভেঙে পড়ছে শ্রেণিকক্ষে, বিভাগে, আবাসিক হলে এবং বড় পরিসরে ক্যাম্পাসে নানা ধরনের বুলিংয়ের শিকার হওয়ার কারণে।
আজকের পত্রিকা: দেশের আইনে আত্মহত্যার প্ররোচনা দেওয়া একটা অপরাধ। যদিও অভিযুক্তদের আটক করা হয়েছে। আপনি কী মনে করেন, এ ঘটনার সুষ্ঠু বিচার হবে?
রাশেদা রওনক খান: প্রথমত, এই মুহূর্তে ঘটনাটি তদন্তাধীন আছে। দ্বিতীয়ত, অবন্তিকার আত্মহত্যার ঘটনাকে কেন্দ্র করে তার ক্যাম্পাসে আন্দোলন চলছে। আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা ছয় দফা দাবি উত্থাপন করেছে। সেই ছয় দফার মধ্যে দুই নম্বর দাবিটি হচ্ছে, তার সহপাঠী আম্মান এবং সহকারী প্রক্টর দ্বীন ইসলামকে গ্রেপ্তার করতে হবে। হয়তোবা পরিস্থিতিকে শান্ত করার জন্য দুজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। কিন্তু পুরো বিষয়টা তো বিচারের মধ্য দিয়ে সমাপ্ত হবে। আর যারা অভিযুক্ত, তাদেরও কোনো বক্তব্য থাকতে পারে। আইনের দৃষ্টিতে অভিযুক্তদেরও কথা বলার অধিকার আছে। তাই বিচারকাজ শুরু না হওয়া পর্যন্ত এবং তদন্তের রিপোর্ট না পাওয়া পর্যন্ত কিছু বলা কঠিন।
আজকের পত্রিকা: পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে যৌন হয়রানি বা ছাত্রী নিপীড়নের ঘটনা নতুন নয়। এরপরও ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটছে?
রাশেদা রওনক খান: প্রথমত, বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে যখন নিপীড়কের বিরুদ্ধে অভিযোগ উত্থাপিত হয়, অনেক ক্ষেত্রে নিপীড়ক বিচার-প্রক্রিয়াকে প্রভাবিত করে তার প্রভাবশালী নেটওয়ার্ক দ্বারা কিংবা বিভিন্ন ধরনের কৌশল অবলম্বন করে। এই যে বিচার-প্রক্রিয়ার দীর্ঘসূত্রতা কিংবা বিচার না হওয়া—এগুলো হলো নতুন ঘটনা ঘটার পেছনে বড় কারণ। যেকোনো বিশ্ববিদ্যালয় যখন এ ধরনের ঘটনায় দৃষ্টান্তমূলক বিচার নিশ্চিত করে উদাহরণ সৃষ্টি করবে, তখন সেই ক্যাম্পাসে তো বটেই, অন্য বিশ্ববিদ্যালয়েও এর কার্যকর প্রভাব পড়বে; অর্থাৎ নিপীড়ক ভয় পাবে। কিন্তু যখন বিচারহীনতার মধ্য দিয়ে যাওয়া হবে, তখন পরপর অনেক ঘটনা ঘটতে পারে।
কারণ, বিচারহীনতার এই সংস্কৃতি নিপীড়ককে একধরনের নিপীড়ন করার সাহস ও সুযোগ দুটিই বাড়িয়ে দেয়। যেমন কেউ কেউ ধরেই নেন,তিনি তো বিচার-প্রক্রিয়াকে প্রভাবিত করতে পারেন বা এসবের ঊর্ধ্বে। এ ধরনের ঘটনায় অন্য নিপীড়কেরা কিন্তু উৎসাহিত হবেন।ফলে যত দিন পর্যন্ত নিপীড়নের অভিযোগ উত্থাপিত হওয়ার পর তাঁর সঠিক বিচার করা না যায়, এ ধরনের ঘটনা বন্ধ করা যাবে না। আর বিচারব্যবস্থায় আস্থা ও গ্রহণযোগ্যতা সৃষ্টি না করা গেলে শুধু শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান না, সমাজেও এর প্রভাব ছড়িয়ে পড়ে, পড়ছে এবং আরও পড়বে।
আজকের পত্রিকা: এ ক্ষেত্রে যথার্থ বিচার না হওয়া নিয়ে রাষ্ট্রের কি কোনো ব্যর্থতা নেই?
রাশেদা রওনক খান: এ ক্ষেত্রে অবশ্যই রাষ্ট্রের একটা বড় ভূমিকা রয়েছে। পৃথিবীতে কোনো
কিছুই তো বিচ্ছিন্ন নয়। আমার বা আপনার ঘরে যা ঘটছে, তারও প্রভাব আছে রাষ্ট্রের। আর উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠান তো পুরোপুরি রাষ্ট্র কর্তৃক নিয়ন্ত্রণাধীন। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কোনো শিক্ষার্থী নিপীড়নের শিকার হবে, সেই নিপীড়নের বিচার কেন হচ্ছে না, তা দেখার দায়িত্ব রাষ্ট্রের। আর পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালিত হয় রাষ্ট্র কর্তৃক এবং জনগণের টাকায়। এখানে যদি পাঁচ টাকাও খরচ করা হয়, সেটা জনগণের ট্যাক্স থেকে আসে। তাই রাষ্ট্রীয় ব্যবস্থার মধ্য থেকে যেকোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে এ ধরনের নিপীড়নের বিচার ভালোভাবে হবে—স্বাভাবিকভাবে আমরা রাষ্ট্রের কাছে তা আশা করব।
আজকের পত্রিকা: বিভিন্ন ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে, বিশেষ করে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে নারী নিপীড়নবিরোধী সেল গঠনের দাবি উঠেছিল। কিন্তু এখনো অনেক বিশ্ববিদ্যালয়ে তা গঠন করা হয়নি। আবার কোথাও এটা থাকলেও বাস্তবায়ন করা হয় না। না হওয়ার কারণটা কী?
রাশেদা রওনক খান: ২০০৯ সালে হাইকোর্ট কর্তৃক বিশ্ববিদ্যালয়ে নারী নিপীড়নবিরোধী সেল গঠনের নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়সহ অনেক বিশ্ববিদ্যালয়ে এ ধরনের সেল বা তদন্ত কমিটি গঠিত হলেও এখনো অনেক বিশ্ববিদ্যালয়ে এই সেল গঠিত হয়নি। প্রথমত, হাইকোর্ট কর্তৃক নির্দেশ দেওয়ার পর শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে এর মনিটরিং করার দরকার ছিল, বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে এ রকম সেল গঠন করা হয়েছে কি না। হাইকোর্ট যে নির্দেশ দিয়েছিল, সেই নির্দেশ মানা হচ্ছে কি না এবং মানলেও কতটুকু মানা হচ্ছে বা কোন পরিমাণ মানা হচ্ছে, সেটা মনিটরিং করা দরকার ছিল। কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ে এ ধরনের সেল গঠন করা হলে রিসোর্স পারসন আছে কি না, অথবা কমিটি গঠন করা হয়েছে কিন্তু কমিটির লোকজন দলীয়ভাবে মদদপুষ্ট ও প্রভাবশালী নিপীড়কদের কাছের লোক—এ রকম হলে সে ক্ষেত্রে কিন্তু শিক্ষার্থীরা যথার্থ বিচার পাবে না; অর্থাৎ যেভাবে নীতিমালা প্রণয়নের কথা বলা হয়েছিল, সেভাবে বিশ্ববিদ্যালয়গুলো সেল গঠন করছে কি না, তা নিশ্চিত করা জরুরি। তা না হলে এ ধরনের ঘটনা আরও খারাপের দিকে যাওয়ার আশঙ্কা থেকেই যায়।
আজকের পত্রিকা: এ ধরনের অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা রোধে আপনার পরামর্শ কী?
রাশেদা রওনক খান: প্রথমত, এটা বলা হয়ে থাকে যে যাঁকে শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হবে তাঁকে দেখে-শুনে, বিচার-বিবেচনা করে নিয়োগ দিতে হবে। কিন্তু একজন মানুষের মধ্যে কতটা পশুত্ব আছে, সেটা ওই ব্যক্তিই জানেন, যতক্ষণ পর্যন্ত সেটা অভিযোগ আকারে না আসে। এই জায়গাটা চিহ্নিত করাটা একটু কঠিন। তারপরও আমি বলব, তাঁর অতীত ইতিহাস কেমন, ক্যাম্পাসে ছাত্র অবস্থায় তিনি কেমন ছিলেন সার্বিকভাবে, এগুলো শিক্ষক নিয়োগের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণভাবে বিবেচনা করা দরকার। বিভিন্ন পেশায় দেখা যায়, চাকরিতে নিয়োগের পরে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হয়।
সে ক্ষেত্রে বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক নিয়োগের ক্ষেত্রে এ ধরনের কিছু করা যায় কি না, সেটা নিয়ে ভাবার ব্যাপার আছে। কারণ কিছুদিন আগে যিনি মাস্টার্স পাস করেছেন, তিনিই আগামীকাল শিক্ষক হিসেবে যোগদান করতে পারেন এবং কোনো রকম প্রশিক্ষণ ছাড়াই তিনি শ্রেণিকক্ষে চলে যাচ্ছেন লেকচার দিতে। আগে এসবের প্রয়োজন না থাকলেও বর্তমানে উদ্ভূত নানা পরিস্থিতিতে ‘ছাত্র-শিক্ষক সম্পর্ক’ কেমন হওয়া উচিত, এ ধরনের ধারণা দেওয়ার জন্য নিয়োগপ্রাপ্ত শিক্ষকদের ট্রেনিংয়ের ব্যবস্থা করা দরকার। তা না হলে একজন নতুন শিক্ষকের কোনো প্রশিক্ষণ হলো না, তিনি শ্রেণিকক্ষে ঢুকে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কী ধরনের ব্যবহার করবেন, ছাত্র-শিক্ষক সম্পর্কের মাঝে পারস্পরিক শ্রদ্ধা বোধ কতটুকু থাকা প্রয়োজন, সম্পর্কের বাউন্ডারি কেমন হতে হবে—এ ব্যাপারগুলো খুব গুরুত্বপূর্ণ।
দ্বিতীয়ত, সমাজে সামগ্রিকভাবে মূল্যবোধের অবক্ষয় হয়েছে। সেটা রোধ করার জন্য সবাইকে কাজ করতে হবে। পরিবার থেকে ছেলেসন্তানকে শেখানো উচিত, একজন নারীকে আসলে কোন দৃষ্টিতে দেখা উচিত, কার সঙ্গে কী ধরনের ব্যবহার করা উচিত—এগুলো খুব গুরুত্বপূর্ণ। পরিবার থেকে না শিখে এলে হঠাৎ করে একজন শিক্ষক যতই উচ্চ শিক্ষিত হোক না কেন, ছাত্র হিসেবে যত ভালোই হোক না কেন, তাকে পশুত্ব থেকে নিবারণ করা যাবে না। তাই বাবা-মায়ের দায়িত্ব হচ্ছে সন্তানকে কেবল লেখাপড়ার দিক দিয়ে নয়, একজন সৎ চরিত্রের অধিকারী এবং সুনাগরিক হিসেবে গড়ে তোলা।

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
০৬ অক্টোবর ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫বাসস, ঢাকা

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
আজ সোমবার বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১-এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) মো. আলমগীরের জেরা শুরু করেন রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী আমীর হোসেন। আইনজীবী আমীর হোসেন পলাতক আসামি শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে শুনানি করছেন। এর আগে গত মঙ্গলবার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. আলমগীরের সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন হয়।
এই মামলার শুনানিতে এর আগে গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম প্রতীক শহীদ আবু সাঈদের বাবাসহ স্বজনহারা পরিবারের একাধিক সদস্য সাক্ষ্য দিয়েছেন। এ ছাড়া মামলার গুরুত্বপূর্ণ ‘স্টার উইটনেস’ হিসেবে সাক্ষ্য দেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক এবং জুলাই আন্দোলনের অন্যতম নেতৃত্বদানকারী নাহিদ ইসলাম এবং দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান।
গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে আওয়ামী লীগ সরকার, তাদের দলীয় ক্যাডার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করে বলে অভিযোগ ওঠে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে শেখ হাসিনা, তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং তৎকালীন আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে গত ১০ জুলাই অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল-১।
পরবর্তীকালে, এই মামলার অন্যতম আসামি সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন দোষ স্বীকার করে ঘটনার সত্যতা উদ্ঘাটনে রাজসাক্ষী (অ্যাপ্রোভার) হওয়ার জন্য ট্রাইব্যুনালে আবেদন করেন। ট্রাইব্যুনাল তাঁর আবেদন মঞ্জুর করলে তিনি রাজসাক্ষী হিসেবে এই মামলায় সাক্ষ্য দেন।
মামলার প্রসিকিউশন পক্ষে শুনানি করছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম এবং গাজী এসএইচ তামিম। শুনানিতে তাঁদের সঙ্গে অপর প্রসিকিউটররাও উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদিকে, এই মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের পক্ষে আছেন আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ।
মানবতাবিরোধী অপরাধের এই মামলা ছাড়াও ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আরও দুটি মামলা বিচারাধীন। এর মধ্যে একটি মামলায় আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে সংঘটিত গুম-খুনের ঘটনায় তাঁকে আসামি করা হয়েছে। অন্য মামলাটি হলো রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে হত্যাকাণ্ড নিয়ে। এই তিনটি মামলার বিচারকাজই বর্তমানে দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে চলমান।

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
আজ সোমবার বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১-এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) মো. আলমগীরের জেরা শুরু করেন রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী আমীর হোসেন। আইনজীবী আমীর হোসেন পলাতক আসামি শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে শুনানি করছেন। এর আগে গত মঙ্গলবার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. আলমগীরের সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন হয়।
এই মামলার শুনানিতে এর আগে গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম প্রতীক শহীদ আবু সাঈদের বাবাসহ স্বজনহারা পরিবারের একাধিক সদস্য সাক্ষ্য দিয়েছেন। এ ছাড়া মামলার গুরুত্বপূর্ণ ‘স্টার উইটনেস’ হিসেবে সাক্ষ্য দেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক এবং জুলাই আন্দোলনের অন্যতম নেতৃত্বদানকারী নাহিদ ইসলাম এবং দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান।
গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে আওয়ামী লীগ সরকার, তাদের দলীয় ক্যাডার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করে বলে অভিযোগ ওঠে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে শেখ হাসিনা, তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং তৎকালীন আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে গত ১০ জুলাই অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল-১।
পরবর্তীকালে, এই মামলার অন্যতম আসামি সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন দোষ স্বীকার করে ঘটনার সত্যতা উদ্ঘাটনে রাজসাক্ষী (অ্যাপ্রোভার) হওয়ার জন্য ট্রাইব্যুনালে আবেদন করেন। ট্রাইব্যুনাল তাঁর আবেদন মঞ্জুর করলে তিনি রাজসাক্ষী হিসেবে এই মামলায় সাক্ষ্য দেন।
মামলার প্রসিকিউশন পক্ষে শুনানি করছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম এবং গাজী এসএইচ তামিম। শুনানিতে তাঁদের সঙ্গে অপর প্রসিকিউটররাও উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদিকে, এই মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের পক্ষে আছেন আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ।
মানবতাবিরোধী অপরাধের এই মামলা ছাড়াও ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আরও দুটি মামলা বিচারাধীন। এর মধ্যে একটি মামলায় আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে সংঘটিত গুম-খুনের ঘটনায় তাঁকে আসামি করা হয়েছে। অন্য মামলাটি হলো রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে হত্যাকাণ্ড নিয়ে। এই তিনটি মামলার বিচারকাজই বর্তমানে দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে চলমান।

রাশেদা রওনক খান গবেষক, লেখক, উপস্থাপক এবং রাজনীতি বিশ্লেষক। ২০২২ সালে যুক্তরাষ্ট্র থেকে নগর রাজনীতির ওপর পিএইচডি সম্পন্ন করেন। সম্প্রতি টেইলর ও ফ্রান্সিস প্রকাশনী থেকে তাঁর ‘ইনক্লুশন অ্যান্ড এক্সক্লুশন অব দ্য আরবান পুওর ইন ঢাকা’ বইটি প্রকাশ পেয়েছে। বর্তমানে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নৃবিজ্ঞান বিভাগে
২৪ মার্চ ২০২৪
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর সঙ্গে।
মাছের সুষ্ঠু প্রজনন, উৎপাদন, মৎস্যসম্পদ সংরক্ষণ ও টেকসই মৎস্য আহরণের জন্য সমুদ্রে সব ধরনের মাছ শিকার ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা গতকাল বুধবার দিবাগত মধ্যরাতে শেষ হয়েছে। তাই গতকাল দিনভর ছিল উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে ব্যস্ততা। অনেকে দেখে নিচ্ছিলেন ট্রলার ঠিকঠাক আছে কি না, কেউ জালের ছেঁড়া অংশ সেলাই করছিলেন, কেউ আবার প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রীসহ অন্য সরঞ্জাম গুছিয়ে নিচ্ছিলেন।
বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র এবং ফকিরহাট উপ-মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ঘাটে গতকাল শত শত ট্রলার নোঙর করে রাখা ছিল। জেলেদের উপস্থিতিতে ঘাট এলাকা সরগরম হয়ে ওঠে। ফকিরহাটের মুদি-মনিহারি দোকানগুলোতে জেলেরা কেনাকাটা করতে ভিড় জমান। ফকিরহাট এলাকার বিসমিল্লাহ ট্রলারের মাঝি রহিম মিয়া বলেন, ‘সাগরে মাছ শিকারে যেতে সকল প্রস্তুতি নিয়েছি। নিষেধাজ্ঞার সময় শেষ হওয়ামাত্রই সাগরে নামব।’
জেলে নুরসাইদ ও ফোরকান মিয়া বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞার সময় পরিবার-পরিজন নিয়ে বেশ কষ্টে কেটেছে। ওই সময়ে বেশ টাকা ঋণ করেছি। এখন সাগরে যাব। দেখি আল্লাহ ঋণ পরিশোধ করতে দেন কি না।’
নোয়াখালীর হাতিয়ার সূর্যমুখী, বাংলাবাজার, কাজিরবাজার, পাইতান মার্কেট চেয়ারম্যান ঘাটসহ বেশ কয়েকটি ঘাটে গতকাল জেলেদের ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা গেছে। অনেকে নৌকায় জাল তুলছিলেন, আবার অনেকে জ্বালানি তেল মজুতসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী ট্রলারে নিয়ে যান। সূর্যমুখী ঘাটের এমভি মায়ের দোয়া ট্রলারের মাঝি জাফর উল্যা বলেন, ‘সাগরে ৮-১০ দিন থাকার প্রস্তুতি নিচ্ছি। সন্ধ্যায় সাগরের উদ্দেশে রওনা দেব।’
সূর্যমুখী ঘাট জেলে সমিতির সভাপতি জবিয়ল হক বলেন, ‘সাগরে নামতে প্রস্তুত নোয়াখালীর হাতিয়ার ২০টি ঘাটের লক্ষাধিক জেলে। এসব ঘাটে প্রায় ১০ হাজার ছোট-বড় ফিশিং ট্রলার রয়েছে। প্রতি ট্রলারে ১০ জন হলেও লক্ষাধিক জেলে এই মাছ ধরার সঙ্গে জড়িত। তাঁদের সবাই গত ৫৮ দিন তীরে বেকার ছিলেন।’
পিরোজপুরের ইন্দুরকানি উপজেলার পাড়েরহাট মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের পার্শ্ববর্তী এলাকার জেলেরা গতকাল দিনভর সাগরে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন। এ ছাড়া মঠবাড়িয়া উপজেলার সাপলেজা, খেতাচিড়া, বড়মাছুয়া, ছোটমাছুয়া, ভান্ডারিয়া উপজেলার চরখালী, হেতালিয়া, কাউখালী উপজেলার সোনাকুর এলাকার জেলেরা, সদর উপজেলা এবং নেছারাবাদ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার জেলেরা প্রস্তুতি শেষে গত রাতে বঙ্গোপসাগরে রওনা হন।
কয়েক দিন ধরে কক্সবাজার উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে নৌকা, জাল মেরামতসহ বিভিন্ন প্রস্তুতি সেরেছেন জেলেরা। গতকাল মেরিন ড্রাইভের টেকনাফের খুরেরমুখ, সাবরাং ও বাহারছড়া এলাকায় দেখা গেছে, সড়কে দাঁড় করিয়ে রাখা সারি সারি ট্রলারে জাল ও রসদ তোলেন জেলেরা।
একটি ট্রলারের মাঝি আবু তাহের জানান, এবার ভারতের সঙ্গে মিল রেখে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় কেউ সাগরে মাছ শিকারে নামেনি। এতে উপকূলের কাছাকাছি সাগরে জাল ফেললেই ইলিশসহ অন্য মাছ পাওয়া যাবে বলে আশাবাদী তিনি।
কক্সবাজার শহরের ফিশারি ঘাটের মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির পরিচালক জুলফিকার আলী জানান, কক্সবাজার উপকূলে ছোট-বড় ৭ হাজারের মতো যান্ত্রিক ট্রলার রয়েছে। এসব ট্রলারে প্রায় এক লাখ জেলে ও শ্রমিক নিয়োজিত রয়েছেন। অধিকাংশ ট্রলার নিষেধাজ্ঞা ওঠার সঙ্গে সঙ্গে সাগরে রওনা হবে।
[প্রতিবেদন তৈরিতে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছেন বরগুনা ও আমতলী, পিরোজপুর, কক্সবাজার এবং হাতিয়া প্রতিনিধি]

‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর সঙ্গে।
মাছের সুষ্ঠু প্রজনন, উৎপাদন, মৎস্যসম্পদ সংরক্ষণ ও টেকসই মৎস্য আহরণের জন্য সমুদ্রে সব ধরনের মাছ শিকার ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা গতকাল বুধবার দিবাগত মধ্যরাতে শেষ হয়েছে। তাই গতকাল দিনভর ছিল উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে ব্যস্ততা। অনেকে দেখে নিচ্ছিলেন ট্রলার ঠিকঠাক আছে কি না, কেউ জালের ছেঁড়া অংশ সেলাই করছিলেন, কেউ আবার প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রীসহ অন্য সরঞ্জাম গুছিয়ে নিচ্ছিলেন।
বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র এবং ফকিরহাট উপ-মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ঘাটে গতকাল শত শত ট্রলার নোঙর করে রাখা ছিল। জেলেদের উপস্থিতিতে ঘাট এলাকা সরগরম হয়ে ওঠে। ফকিরহাটের মুদি-মনিহারি দোকানগুলোতে জেলেরা কেনাকাটা করতে ভিড় জমান। ফকিরহাট এলাকার বিসমিল্লাহ ট্রলারের মাঝি রহিম মিয়া বলেন, ‘সাগরে মাছ শিকারে যেতে সকল প্রস্তুতি নিয়েছি। নিষেধাজ্ঞার সময় শেষ হওয়ামাত্রই সাগরে নামব।’
জেলে নুরসাইদ ও ফোরকান মিয়া বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞার সময় পরিবার-পরিজন নিয়ে বেশ কষ্টে কেটেছে। ওই সময়ে বেশ টাকা ঋণ করেছি। এখন সাগরে যাব। দেখি আল্লাহ ঋণ পরিশোধ করতে দেন কি না।’
নোয়াখালীর হাতিয়ার সূর্যমুখী, বাংলাবাজার, কাজিরবাজার, পাইতান মার্কেট চেয়ারম্যান ঘাটসহ বেশ কয়েকটি ঘাটে গতকাল জেলেদের ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা গেছে। অনেকে নৌকায় জাল তুলছিলেন, আবার অনেকে জ্বালানি তেল মজুতসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী ট্রলারে নিয়ে যান। সূর্যমুখী ঘাটের এমভি মায়ের দোয়া ট্রলারের মাঝি জাফর উল্যা বলেন, ‘সাগরে ৮-১০ দিন থাকার প্রস্তুতি নিচ্ছি। সন্ধ্যায় সাগরের উদ্দেশে রওনা দেব।’
সূর্যমুখী ঘাট জেলে সমিতির সভাপতি জবিয়ল হক বলেন, ‘সাগরে নামতে প্রস্তুত নোয়াখালীর হাতিয়ার ২০টি ঘাটের লক্ষাধিক জেলে। এসব ঘাটে প্রায় ১০ হাজার ছোট-বড় ফিশিং ট্রলার রয়েছে। প্রতি ট্রলারে ১০ জন হলেও লক্ষাধিক জেলে এই মাছ ধরার সঙ্গে জড়িত। তাঁদের সবাই গত ৫৮ দিন তীরে বেকার ছিলেন।’
পিরোজপুরের ইন্দুরকানি উপজেলার পাড়েরহাট মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের পার্শ্ববর্তী এলাকার জেলেরা গতকাল দিনভর সাগরে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন। এ ছাড়া মঠবাড়িয়া উপজেলার সাপলেজা, খেতাচিড়া, বড়মাছুয়া, ছোটমাছুয়া, ভান্ডারিয়া উপজেলার চরখালী, হেতালিয়া, কাউখালী উপজেলার সোনাকুর এলাকার জেলেরা, সদর উপজেলা এবং নেছারাবাদ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার জেলেরা প্রস্তুতি শেষে গত রাতে বঙ্গোপসাগরে রওনা হন।
কয়েক দিন ধরে কক্সবাজার উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে নৌকা, জাল মেরামতসহ বিভিন্ন প্রস্তুতি সেরেছেন জেলেরা। গতকাল মেরিন ড্রাইভের টেকনাফের খুরেরমুখ, সাবরাং ও বাহারছড়া এলাকায় দেখা গেছে, সড়কে দাঁড় করিয়ে রাখা সারি সারি ট্রলারে জাল ও রসদ তোলেন জেলেরা।
একটি ট্রলারের মাঝি আবু তাহের জানান, এবার ভারতের সঙ্গে মিল রেখে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় কেউ সাগরে মাছ শিকারে নামেনি। এতে উপকূলের কাছাকাছি সাগরে জাল ফেললেই ইলিশসহ অন্য মাছ পাওয়া যাবে বলে আশাবাদী তিনি।
কক্সবাজার শহরের ফিশারি ঘাটের মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির পরিচালক জুলফিকার আলী জানান, কক্সবাজার উপকূলে ছোট-বড় ৭ হাজারের মতো যান্ত্রিক ট্রলার রয়েছে। এসব ট্রলারে প্রায় এক লাখ জেলে ও শ্রমিক নিয়োজিত রয়েছেন। অধিকাংশ ট্রলার নিষেধাজ্ঞা ওঠার সঙ্গে সঙ্গে সাগরে রওনা হবে।
[প্রতিবেদন তৈরিতে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছেন বরগুনা ও আমতলী, পিরোজপুর, কক্সবাজার এবং হাতিয়া প্রতিনিধি]

রাশেদা রওনক খান গবেষক, লেখক, উপস্থাপক এবং রাজনীতি বিশ্লেষক। ২০২২ সালে যুক্তরাষ্ট্র থেকে নগর রাজনীতির ওপর পিএইচডি সম্পন্ন করেন। সম্প্রতি টেইলর ও ফ্রান্সিস প্রকাশনী থেকে তাঁর ‘ইনক্লুশন অ্যান্ড এক্সক্লুশন অব দ্য আরবান পুওর ইন ঢাকা’ বইটি প্রকাশ পেয়েছে। বর্তমানে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নৃবিজ্ঞান বিভাগে
২৪ মার্চ ২০২৪
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
০৬ অক্টোবর ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
ভারতের নিষেধাজ্ঞার এক দিন পরই গত রোববার লালমনিরহাটের বুড়িমারী ও যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দরসহ বিভিন্ন বন্দরে পণ্যের ট্রাক আটকে দেয় ভারত। সংশ্লিষ্টদের সূত্রে জানা যায়, রোববার ভারতের আমদানি বিধিনিষেধের কারণে বুড়িমারী সীমান্তে প্রাণের ১৭ ট্রাক খাদ্যপণ্য আটকে যায়। এ ছাড়া বেনাপোলে ৩৬টি পোশাক বোঝাই ট্রাকসহ অন্যান্য পণ্যের শতাধিক ট্রাক ঢুকতে পারেনি।
গতকাল সোমবার পর্যন্ত বুড়িমারী থেকে প্রাণের পণ্যবোঝাই ট্রাকগুলোর অর্ধেকের বেশি ফেরত নিয়ে আসে প্রতিষ্ঠানটি। এ ছাড়া বেনাপোলে পোর্টের ভেতরে ২৪টি ট্রাক ছাড়া বাকিগুলো ফেরত চলে যায়।
বেনাপোল বন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. সাজেদুর রহমান গতকাল সোমবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, গতকাল পোর্টের ভেতর ও বাইরে শতাধিক ট্রাক দাঁড়িয়ে ছিল। আজ পোর্টের ভেতরের ২৪টি ছাড়া বাকিগুলো ফেরত নিয়ে গেছেন মালিকেরা। এখন পর্যন্ত মনে হচ্ছে, পোর্টের ভেতরের ট্রাকগুলোও ফেরত নিতে হবে।
জানতে চাইলে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পরিচালক (বিপণন) কামরুজ্জামান কামাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের হাতে ৬ মিলিয়ন ডলারের ক্রয় আদেশ রয়েছে। তার মধ্য থেকে রোববার বুড়িমারী দিয়ে ১৭ ট্রাকবোঝাই পণ্য পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু সেগুলো ঢুকতে পারেনি। ট্রাকগুলো ফেরত আনা হচ্ছে। নতুন করে কাগজপত্র তৈরি করে অন্য পথ দিয়ে পণ্য পাঠাতে হবে।’
বেনাপোল স্থলবন্দর সূত্রে জানা যায়, ওই ২৪টি ট্রাক পোর্টের ভেতরে থাকায় এখনো তারা ভারতে প্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে। তাদের আশা, যেহেতু নিষেধাজ্ঞার আগে এই পণ্যগুলোর এলসি করা হয়েছিল, তাই এগুলো প্রবেশে অনুমতি পাবে। তবে এটি নির্ভর করবে বাংলাদেশ সরকারের আলোচনার ওপর।
এমন পরিস্থিতিতে সরকারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ইতিমধ্যে অনেক রপ্তানিকারক রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সঙ্গে আলোচনা করে সরকারের সহযোগিতা চেয়েছে।
স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে আজ মঙ্গলবার আন্তমন্ত্রণালয়ের সভা ডেকেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে বিকেল ৪টায় আন্তমন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এই সভা অনুষ্ঠিত হবে।
সভায় নৌপরিবহন ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো, জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের প্রতিনিধিদের উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া ব্যবসায়ী প্রতিনিধি হিসেবে এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ, ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রতিনিধিদের উপস্থিতির জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
ভারতের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গত শনিবার হঠাৎ এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি নিষিদ্ধ করে। শুধু ভারতের নবসেবা ও কলকাতা সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করে দেশটির আমদানিকারকেরা বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি করতে পারবেন বলে ওই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। এ ছাড়া বাংলাদেশ থেকে ভারতের আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা ও মিজোরাম, পশ্চিমবঙ্গের চ্যাংড়াবান্দা ও ফুলবাড়ী শুল্ক স্টেশন দিয়ে ফল, ফলের স্বাদযুক্ত পানীয়, কোমল পানীয়, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, প্লাস্টিক পণ্য, সুতা, সুতার উপজাত, আসবাব রপ্তানিও নিষিদ্ধ করা হয় ওই বিজ্ঞপ্তিতে।
আমদানি ও রপ্তানিসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা জানান, দেশের ২৪টি বন্দরের মধ্যে ১৬টি বন্দর দিয়ে ভারতের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়ে থাকে। তবে যোগাযোগব্যবস্থা সহজ হওয়ায় বেনাপোল ও ভারতের পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে সবচেয়ে বেশি আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়। এর পরিমাণ ৮০ শতাংশ। বেনাপোল বন্দর দিয়ে প্রতিদিন ভারতে ২৫০ থেকে ৩০০ ট্রাকে বিভিন্ন ধরনের পণ্য রপ্তানি হয়। এর মধ্যে শতাধিক ট্রাক পণ্য থাকে তৈরি পোশাক।
এর আগে গত ৮ এপ্রিল বাংলাদেশের জন্য ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করে ভারত। ফলে ভারতের বিমানবন্দর ব্যবহার করে তৃতীয় কোনো দেশে তৈরি পোশাক রপ্তানি করতে পারছে না বাংলাদেশ। অন্যদিকে প্রায় এক মাস আগে ভারত থেকে বেনাপোল, ভোমরা, সোনামসজিদ, বাংলাবান্ধা, বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানির সুযোগ বন্ধ করে দেয় বাংলাদেশের জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমানের মতে, এই পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপে তুলনামূলকভাবে বেশি নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বাংলাদেশের ওপর। তাই ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর চেষ্টা অব্যাহত রাখাই সরকারের উচিত বলে মনে করছেন তিনি।
মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আলোচনার মাধ্যমে বাংলাদেশ এবং ভারতের বিরোধপূর্ণ বিষয়সমূহ মিটিয়ে ফেলতে হবে এবং দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এটাই হবে উভয় দেশের জন্য কল্যাণকর।

ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
ভারতের নিষেধাজ্ঞার এক দিন পরই গত রোববার লালমনিরহাটের বুড়িমারী ও যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দরসহ বিভিন্ন বন্দরে পণ্যের ট্রাক আটকে দেয় ভারত। সংশ্লিষ্টদের সূত্রে জানা যায়, রোববার ভারতের আমদানি বিধিনিষেধের কারণে বুড়িমারী সীমান্তে প্রাণের ১৭ ট্রাক খাদ্যপণ্য আটকে যায়। এ ছাড়া বেনাপোলে ৩৬টি পোশাক বোঝাই ট্রাকসহ অন্যান্য পণ্যের শতাধিক ট্রাক ঢুকতে পারেনি।
গতকাল সোমবার পর্যন্ত বুড়িমারী থেকে প্রাণের পণ্যবোঝাই ট্রাকগুলোর অর্ধেকের বেশি ফেরত নিয়ে আসে প্রতিষ্ঠানটি। এ ছাড়া বেনাপোলে পোর্টের ভেতরে ২৪টি ট্রাক ছাড়া বাকিগুলো ফেরত চলে যায়।
বেনাপোল বন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. সাজেদুর রহমান গতকাল সোমবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, গতকাল পোর্টের ভেতর ও বাইরে শতাধিক ট্রাক দাঁড়িয়ে ছিল। আজ পোর্টের ভেতরের ২৪টি ছাড়া বাকিগুলো ফেরত নিয়ে গেছেন মালিকেরা। এখন পর্যন্ত মনে হচ্ছে, পোর্টের ভেতরের ট্রাকগুলোও ফেরত নিতে হবে।
জানতে চাইলে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পরিচালক (বিপণন) কামরুজ্জামান কামাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের হাতে ৬ মিলিয়ন ডলারের ক্রয় আদেশ রয়েছে। তার মধ্য থেকে রোববার বুড়িমারী দিয়ে ১৭ ট্রাকবোঝাই পণ্য পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু সেগুলো ঢুকতে পারেনি। ট্রাকগুলো ফেরত আনা হচ্ছে। নতুন করে কাগজপত্র তৈরি করে অন্য পথ দিয়ে পণ্য পাঠাতে হবে।’
বেনাপোল স্থলবন্দর সূত্রে জানা যায়, ওই ২৪টি ট্রাক পোর্টের ভেতরে থাকায় এখনো তারা ভারতে প্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে। তাদের আশা, যেহেতু নিষেধাজ্ঞার আগে এই পণ্যগুলোর এলসি করা হয়েছিল, তাই এগুলো প্রবেশে অনুমতি পাবে। তবে এটি নির্ভর করবে বাংলাদেশ সরকারের আলোচনার ওপর।
এমন পরিস্থিতিতে সরকারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ইতিমধ্যে অনেক রপ্তানিকারক রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সঙ্গে আলোচনা করে সরকারের সহযোগিতা চেয়েছে।
স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে আজ মঙ্গলবার আন্তমন্ত্রণালয়ের সভা ডেকেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে বিকেল ৪টায় আন্তমন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এই সভা অনুষ্ঠিত হবে।
সভায় নৌপরিবহন ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো, জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের প্রতিনিধিদের উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া ব্যবসায়ী প্রতিনিধি হিসেবে এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ, ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রতিনিধিদের উপস্থিতির জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
ভারতের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গত শনিবার হঠাৎ এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি নিষিদ্ধ করে। শুধু ভারতের নবসেবা ও কলকাতা সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করে দেশটির আমদানিকারকেরা বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি করতে পারবেন বলে ওই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। এ ছাড়া বাংলাদেশ থেকে ভারতের আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা ও মিজোরাম, পশ্চিমবঙ্গের চ্যাংড়াবান্দা ও ফুলবাড়ী শুল্ক স্টেশন দিয়ে ফল, ফলের স্বাদযুক্ত পানীয়, কোমল পানীয়, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, প্লাস্টিক পণ্য, সুতা, সুতার উপজাত, আসবাব রপ্তানিও নিষিদ্ধ করা হয় ওই বিজ্ঞপ্তিতে।
আমদানি ও রপ্তানিসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা জানান, দেশের ২৪টি বন্দরের মধ্যে ১৬টি বন্দর দিয়ে ভারতের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়ে থাকে। তবে যোগাযোগব্যবস্থা সহজ হওয়ায় বেনাপোল ও ভারতের পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে সবচেয়ে বেশি আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়। এর পরিমাণ ৮০ শতাংশ। বেনাপোল বন্দর দিয়ে প্রতিদিন ভারতে ২৫০ থেকে ৩০০ ট্রাকে বিভিন্ন ধরনের পণ্য রপ্তানি হয়। এর মধ্যে শতাধিক ট্রাক পণ্য থাকে তৈরি পোশাক।
এর আগে গত ৮ এপ্রিল বাংলাদেশের জন্য ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করে ভারত। ফলে ভারতের বিমানবন্দর ব্যবহার করে তৃতীয় কোনো দেশে তৈরি পোশাক রপ্তানি করতে পারছে না বাংলাদেশ। অন্যদিকে প্রায় এক মাস আগে ভারত থেকে বেনাপোল, ভোমরা, সোনামসজিদ, বাংলাবান্ধা, বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানির সুযোগ বন্ধ করে দেয় বাংলাদেশের জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমানের মতে, এই পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপে তুলনামূলকভাবে বেশি নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বাংলাদেশের ওপর। তাই ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর চেষ্টা অব্যাহত রাখাই সরকারের উচিত বলে মনে করছেন তিনি।
মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আলোচনার মাধ্যমে বাংলাদেশ এবং ভারতের বিরোধপূর্ণ বিষয়সমূহ মিটিয়ে ফেলতে হবে এবং দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এটাই হবে উভয় দেশের জন্য কল্যাণকর।

রাশেদা রওনক খান গবেষক, লেখক, উপস্থাপক এবং রাজনীতি বিশ্লেষক। ২০২২ সালে যুক্তরাষ্ট্র থেকে নগর রাজনীতির ওপর পিএইচডি সম্পন্ন করেন। সম্প্রতি টেইলর ও ফ্রান্সিস প্রকাশনী থেকে তাঁর ‘ইনক্লুশন অ্যান্ড এক্সক্লুশন অব দ্য আরবান পুওর ইন ঢাকা’ বইটি প্রকাশ পেয়েছে। বর্তমানে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নৃবিজ্ঞান বিভাগে
২৪ মার্চ ২০২৪
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
০৬ অক্টোবর ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
১৮৯৮ সালে ভারতের উত্তর প্রদেশের একটি ধূলিধূসর টিলা খুঁড়ে পাওয়া মূল্যবান এই রত্নগুলো এক শতাব্দীর বেশি সময় ধরে একটি বেসরকারি ব্রিটিশ সংগ্রহাগারে প্রায় দৃষ্টিচক্ষুর আড়ালে ছিল। এখন যেহেতু রত্নগুলোর হাতবদলের সময় এসেছে, তাই নতুন সংগ্রাহকেরা আগ্রহ নিয়ে এগুলো সংগ্রহের জন্য অপেক্ষা করছেন। কিন্তু এখানে একটা অস্বস্তিও তৈরি হয়েছে।
গৌতম বুদ্ধের জন্মস্থান লুম্বিনীর কাছাকাছি, বর্তমানে ভারতের উত্তর প্রদেশে একটি ইটের ঘরের ভেতর থেকে প্রায় ১ হাজার ৮০০টি মুক্তা, রুবি, টোপাজ, নীলা ও নকশা করা সোনার পাত সংগ্রহ করা হয়েছিল। তবে এই রত্নগুলোর সঙ্গে সঙ্গে একটি খোদাই করা পাত্রে হাড়ের টুকরাও পাওয়া যায়, যেগুলোকে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষ বলে শনাক্ত করা হয়। এই আবিষ্কার তখন প্রত্নতত্ত্বের জগতে ব্যাপক আলোড়ন তোলে।
সাদাবি’স এশিয়ার চেয়ারম্যান নিকোলাস চাউ মনে করেন, স্মরণকালের বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর মাঝে এই রত্নসম্ভার অন্যতম। তবে এগুলো নিলামে তোলার কারণে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। আর তা হচ্ছে—ভারতের ইতিহাসের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িয়ে থাকা এবং বৌদ্ধদের কাছে পবিত্র এই সম্পদ বিক্রি করা কি নৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য?
১৮৯৮ সালে ব্রিটিশ এস্টেট ম্যানেজার উইলিয়াম ক্ল্যাক্সটন পেপ্পে লুম্বিনির ঠিক দক্ষিণে পিপ্রাওয়ায় অবস্থিত একটি ঢিবি খনন করেন। সেখান থেকেই প্রায় ২ হাজার বছর আগের ওই নির্দশনগুলো খুঁজে পাওয়া যায়।
ইতিহাসবিদদের মতে, প্রাপ্ত রত্নসম্ভার ও দেহাবশেষ, যা তখনো পর্যন্ত অক্ষত ছিল, সেগুলো গৌতম বুদ্ধের শাক্য বংশের এবং বিশ্বব্যাপী বৌদ্ধদের ঐতিহ্য। হাড়ের নিদর্শনগুলো থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা ও মিয়ানমারের মতো দেশগুলোতে বিতরণ করা হয়েছে। এসব দেশে এখনো সেগুলোর পূজা করা হয়।

আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
১৮৯৮ সালে ভারতের উত্তর প্রদেশের একটি ধূলিধূসর টিলা খুঁড়ে পাওয়া মূল্যবান এই রত্নগুলো এক শতাব্দীর বেশি সময় ধরে একটি বেসরকারি ব্রিটিশ সংগ্রহাগারে প্রায় দৃষ্টিচক্ষুর আড়ালে ছিল। এখন যেহেতু রত্নগুলোর হাতবদলের সময় এসেছে, তাই নতুন সংগ্রাহকেরা আগ্রহ নিয়ে এগুলো সংগ্রহের জন্য অপেক্ষা করছেন। কিন্তু এখানে একটা অস্বস্তিও তৈরি হয়েছে।
গৌতম বুদ্ধের জন্মস্থান লুম্বিনীর কাছাকাছি, বর্তমানে ভারতের উত্তর প্রদেশে একটি ইটের ঘরের ভেতর থেকে প্রায় ১ হাজার ৮০০টি মুক্তা, রুবি, টোপাজ, নীলা ও নকশা করা সোনার পাত সংগ্রহ করা হয়েছিল। তবে এই রত্নগুলোর সঙ্গে সঙ্গে একটি খোদাই করা পাত্রে হাড়ের টুকরাও পাওয়া যায়, যেগুলোকে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষ বলে শনাক্ত করা হয়। এই আবিষ্কার তখন প্রত্নতত্ত্বের জগতে ব্যাপক আলোড়ন তোলে।
সাদাবি’স এশিয়ার চেয়ারম্যান নিকোলাস চাউ মনে করেন, স্মরণকালের বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর মাঝে এই রত্নসম্ভার অন্যতম। তবে এগুলো নিলামে তোলার কারণে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। আর তা হচ্ছে—ভারতের ইতিহাসের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িয়ে থাকা এবং বৌদ্ধদের কাছে পবিত্র এই সম্পদ বিক্রি করা কি নৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য?
১৮৯৮ সালে ব্রিটিশ এস্টেট ম্যানেজার উইলিয়াম ক্ল্যাক্সটন পেপ্পে লুম্বিনির ঠিক দক্ষিণে পিপ্রাওয়ায় অবস্থিত একটি ঢিবি খনন করেন। সেখান থেকেই প্রায় ২ হাজার বছর আগের ওই নির্দশনগুলো খুঁজে পাওয়া যায়।
ইতিহাসবিদদের মতে, প্রাপ্ত রত্নসম্ভার ও দেহাবশেষ, যা তখনো পর্যন্ত অক্ষত ছিল, সেগুলো গৌতম বুদ্ধের শাক্য বংশের এবং বিশ্বব্যাপী বৌদ্ধদের ঐতিহ্য। হাড়ের নিদর্শনগুলো থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা ও মিয়ানমারের মতো দেশগুলোতে বিতরণ করা হয়েছে। এসব দেশে এখনো সেগুলোর পূজা করা হয়।

রাশেদা রওনক খান গবেষক, লেখক, উপস্থাপক এবং রাজনীতি বিশ্লেষক। ২০২২ সালে যুক্তরাষ্ট্র থেকে নগর রাজনীতির ওপর পিএইচডি সম্পন্ন করেন। সম্প্রতি টেইলর ও ফ্রান্সিস প্রকাশনী থেকে তাঁর ‘ইনক্লুশন অ্যান্ড এক্সক্লুশন অব দ্য আরবান পুওর ইন ঢাকা’ বইটি প্রকাশ পেয়েছে। বর্তমানে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নৃবিজ্ঞান বিভাগে
২৪ মার্চ ২০২৪
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
০৬ অক্টোবর ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫