Ajker Patrika

রূপগঞ্জে নির্বাচনে ত্রিমুখী লড়াই, পাল্লা ভারী গাজীর

সাইফুল মাসুম, রূপগঞ্জ থেকে
আপডেট : ২৯ ডিসেম্বর ২০২৩, ২১: ৩৯
রূপগঞ্জে নির্বাচনে ত্রিমুখী লড়াই, পাল্লা ভারী গাজীর

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের বাকি আর মাত্র আট দিন। এরই মধ্যে সরগরম হয়ে উঠেছে নারায়ণগঞ্জ-১ (রূপগঞ্জ) আসনের নির্বাচনী মাঠ। আজ শুক্রবার রূপগঞ্জের চনপাড়া, পূর্বগ্রাম, মুড়াপাড়া, ইছাখালী, রূপসা ও বরপা এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, জাতীয় নির্বাচনের পোস্টারে ছেয়ে গেছে পুরো জনপদ।

আসনটিতে এবার নয়জন প্রার্থী থাকলেও ভোটের মাঠে ভালো অবস্থানে রয়েছেন নৌকা প্রতীকে আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী গোলাম দস্তগীর গাজী (বীর প্রতীক), সোনালী আঁশ প্রতীকে তৃণমূল বিএনপির মহাসচিব তৈমূর আলম খন্দকার ও কেটলি প্রতীকে স্বতন্ত্র প্রার্থী রূপগঞ্জ উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মো. শাহজাহান ভূঁইয়া। ভোটারদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, এবারের নির্বাচনে রূপগঞ্জে ত্রিমুখী লড়াই হবে। এতে সংসদ সদস্য, বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজীর পক্ষে সমর্থনের পাল্লাটা ভারী। 

বেলা ১১টায় রূপগঞ্জ উপজেলার বরপা বাসস্ট্যান্ডে নৌকার পোস্টার হাতে শতাধিক মানুষের এক জটলা চোখে পড়ে। কিছু সময় পরে সেখানে আসেন আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকা প্রতীকের প্রার্থী গোলাম দস্তগীর গাজী। তিনি নারায়ণগঞ্জ-১ আসনের তিনবারের নির্বাচিত সংসদ সদস্য। ৭৫ বছর বয়সী আওয়ামী লীগের এই প্রবীণ নেতা আসার পর বাসস্ট্যান্ডে অপেক্ষমাণ মানুষ সরব হয়ে ওঠেন। নৌকার এই প্রার্থীকে সামনে রেখে চলতে থাকে নির্বাচনী প্রচার। মাঝেমধ্যে ‘উন্নয়নের নৌকা, গাজীর নৌকা, শেখ হাসিনার নৌকা’ সমবেত কণ্ঠে এমন স্লোগান দিতে থাকেন ভোটের প্রচারে অংশ নেওয়া কর্মীরা। 

নির্বাচনী প্রচারে অংশ নিয়েছেন বরপা ৬ নম্বর ওয়ার্ড বাসিন্দা মমতাজ বেগম (৪০)। তাঁর কাছে জানতে চাই, তিনি কেন ভোট চাইছেন? মমতাজ বলেন, ‘আমাদের সুবিধা-অসুবিধার কথা এমপির কাছে সহজে বলতে পারি। সপ্তাহের শুক্র-শনিবার তিনি নিয়ম করে এলাকার মানুষকে সময় দেন। এ ছাড়া তিনি এলাকার উন্নয়ন ও কর্মসংস্থানের মাধ্যমে মানুষের জীবনযাত্রার মান উন্নয়নে ভূমিকা রেখেছেন। মমতাজের প্রত্যাশা, গাজী এবার নির্বাচিত হলে রূপগঞ্জবাসীর গ্যাস-সংকটও দূর করবেন।’ 

বরপা লিটল ফ্লাওয়ার স্কুলসংলগ্ন রাস্তায় চলে দস্তগীর গাজীর জনসংযোগ। নৌকার এই প্রার্থী নিজেই লিফলেট বিতরণ করেন শ্রমজীবী, ব্যবসায়ীসহ সর্বস্তরের মানুষের মাঝে। এ সময় তিনি রূপগঞ্জের উন্নয়নচিত্র তুলে ধরে নৌকায় ভোট দেওয়ার অনুরোধ জানান। 

জাতীয় নির্বাচনের পোস্টারে ছেয়ে গেছে অলিগলিরূপগঞ্জের উন্নয়নের বিষয়ে গোলাম দস্তগীর গাজী আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘২০০৮ সালে রূপগঞ্জে টিনের ঘর, বেড়ার ঘর ছাড়া আর কিছুই ছিল না। বিদ্যুৎ, পানি না থাকায় এলাকাটি শিল্প-কারখানা তৈরির উপযোগী ছিল না। আমি নির্বাচিত হয়ে প্রথমে যোগাযোগব্যবস্থা ও বিদ্যুতে হাত দিই। শতভাগ বিদ্যুৎ বাস্তবায়নের ফলে এখন অনেক শিল্প-কারখানা গড়ে উঠেছে। এতে এলাকার তরুণ-যুবকদের পাশাপাশি অন্য অঞ্চলের অনেক মানুষের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা হয়েছে।’ 

বরপা মোল্লাবাড়ি জামে মসজিদে জুমার নামাজ আদায় করেন গোলাম দস্তগীর গাজী। এ সময় এলাকাবাসী ও মুসল্লিদের সঙ্গে কুশল বিনিময় করেন। সেখানে আজকের পত্রিকার প্রতিবেদকের সঙ্গে কথা হয় বরপা এলাকার বাসিন্দা তৃতীয় লিঙ্গের তিনজনের সঙ্গে। তাঁরা হচ্ছেন প্রিয়াঙ্কা, ববি ও জুমকা। তাঁরা বলেন, ‘এমপির কাছে যখন যে কাজে গেছি, তিনি খালি হাতে ফেরাননি।’ 
 
আজ বিকেলে বীর প্রতীক গাজী সেতুসংলগ্ন মুড়াপাড়ার একটি দোকানে চা খেতে খেতে কথা হয় স্থানীয় বাসিন্দা আব্দুল মালেকের সঙ্গে। তিনি রূপসী-কাঞ্চন রোডে অটোরিকশা চালান। মালেক বলেন, আগে মুড়াপাড়া থেকে ইছাখালী পাঁচ টাকা দিয়ে খেয়ানৌকায় শীতলক্ষ্যা নদী পার হতেন। অনেক সময় লাগত, দুর্ঘটনার ঝুঁকি তো ছিলই। কিন্তু গাজী সেতু হওয়ার পর সেসব এখন ইতিহাস। জানা গেছে, ৭৪ কোটি ৯ লাখ টাকা ব্যয়ে তৈরি এই গাজী সেতু ২০২০ সালে চালু হয়েছে। আব্দুল মালেক আরও জানান, ভূলতা ফ্লাইওভার চালু হওয়ায় রূপগঞ্জে এখন কোনো জ্যাম নেই।

ভোটের মাঠে রাজনৈতিক সমীকরণ যেটাই থাকুক, সমর্থনের পাল্লা নৌকার দিকে বেশি বলে মনে করেন রূপগঞ্জের চনপাড়ার ৯ নম্বরের চা বিক্রেতা শাহেদা বেগম। তিনি বলেন, ‘শেখ হাসিনার আমলে রূপগঞ্জের অনেক উন্নয়ন হয়েছে। ইটের রাস্তা পাকা হয়েছে। প্রার্থী ফ্যাক্ট না, বঙ্গবন্ধুর নামেই আমরা নৌকায় ভোট দেব।’ 

রূপগঞ্জ উপজেলা এলজিইডির তথ্য অনুসারে, গত ১৪ বছরে রূপগঞ্জ উপজেলায় সড়ক নির্মাণ করা হয়েছে প্রায় ৩৪৯ কিলোমিটার। কালভার্ট নির্মিত হয়েছে ১৪টি, সড়ক রক্ষণাবেক্ষণ করা হয়েছে ২৩১টি। সড়ক প্রশস্তকরণ করা হয়েছে ৩৮ কিলোমিটার। সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় নির্মাণ করা হয়েছে ৯৭টি। জানা গেছে, ১৯৮৬ সাল থেকে নারায়ণগঞ্জ-১ (রূপগঞ্জ) আসনে জাতীয় পার্টি একবার, বিএনপি তিনবার ও আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী চারবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

মোহাম্মদপুর ট্র্যাজেডি: নাটোরে পৌঁছল মা-মেয়ের মরদেহ, চাবি হারিয়ে উদ্বিগ্ন ছিলেন লায়লা

নাটোর প্রতিনিধি 
হত্যার শিকার মা-মেয়ের মরদেহ আজ সকালে নাটোরে নিজ বাসায় এসে পৌঁছে। ছবি: আজকের পত্রিকা
হত্যার শিকার মা-মেয়ের মরদেহ আজ সকালে নাটোরে নিজ বাসায় এসে পৌঁছে। ছবি: আজকের পত্রিকা

লায়লা আফরোজ তাঁর প্রাণোচ্ছল মেয়ে নাফিসা লাওয়াল বিনতে আজিজকে নিয়ে ফিরলেন নিজ বাসায়; তবে ফ্রিজিং ভ্যানে, লাশ হয়ে। এমন ফিরে আসা কেউই মেনে নিতে পারছেন না। রাজধানীর মোহাম্মদপুরে বাসায় ঢুকে হত্যার শিকার মা-মেয়ের মরদেহ মঙ্গলবার (৯ ডিসেম্বর) সকালে নাটোরে নিজ বাসায় এসে পৌঁছেছে। আজ সকাল ৬টায় লাশবাহী ফ্রিজিং ভ্যানটি নাটোর পৌরসভার দক্ষিণ বড়গাছায় নিজ বাসভবনের সামনে পৌঁছালে কান্নায় ভেঙে পড়েন স্বজনেরা।

নিহত লায়লা আফরোজের ছোট ভাই উত্তরায় বসবাসরত ফরহাদ হোসেন জানান, বড় বোনের সঙ্গে তাঁর যোগাযোগ ছিল সবচেয়ে বেশি। দিনে বেশ কয়েকবার তাঁদের মধ্যে ফোনে কথা হতো। রোববার রাত সাড়ে ১০টার দিকে ভিডিও কল করে লায়লা জানান, তাঁর বাসার চাবি খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। চাবি হারানোর ঘটনায় তাঁকে বেশ উদ্বিগ্ন মনে হচ্ছিল। নতুন কাজের মেয়ে বাসায় কাজ শুরুর পর চাবি হারানো স্বাভাবিকভাবে নেননি তিনি। দু-এক মিনিটের এই কথোপকথনই তাঁদের শেষ কথা ছিল।

ফরহাদ হোসেন বলেন, ‘অনেকটা মানবিকতার খাতিরেই লায়লা গৃহপরিচারিকার কাজ দিয়েছিলেন আয়শাকে। আয়শা তখন জানিয়েছিল, রংপুরে তাদের বাড়িতে আগুন লেগে মা-বাবা মারা গেছে। তার গলা থেকে বুক পর্যন্ত ও হাতের কিছু অংশ আগুনে পোড়া। এ কারণে তাকে কেউ কাজে নিতে চাননি। আয়শার এ কথা লায়লাকে ভীষণভাবে নাড়া দেয়। তখন তাকে বাসায় কাজের জন্য রাখেন লায়লা।’

নাটোরে লায়লার প্রতিবেশী মামুন শিকদার বলেন, ‘লায়লাদের পুরো পরিবারকে আমরা ভালোভাবে চিনি। তাদের পরিবারের কেউ কাউকে কষ্ট দিয়ে কোনো দিন কথা বলেছে, এমনটি শুনিনি। অথচ এমন নৃশংস হত্যাকাণ্ড তাদের সঙ্গেই ঘটল, যা মেনে নেওয়া কঠিন।’

আজ জোহরের নামাজের পর জানাজা শেষে দক্ষিণ বড়গাছা কবরস্থানে দাফন করা হবে লায়লা ও তাঁর কন্যা নাফিসাকে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

পদোন্নতির ডাক পেলেন শেখ হাসিনার সাজা প্রত্যাখ্যান করা শিক্ষক মাসুদ রানা

ময়মনসিংহ প্রতিনিধি
কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের মানব সম্পদ ব্যবস্থাপনা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. মাসুদ রানা। ছবি: সংগৃহীত
কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের মানব সম্পদ ব্যবস্থাপনা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. মাসুদ রানা। ছবি: সংগৃহীত

শেখ হাসিনার সাজা প্রত্যাখ্যান করে স্বাক্ষর দেওয়া জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের মানবসম্পদ ব্যবস্থাপনা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. মাসুদ রানাকে পদোন্নতি দিতে পর্যায়োন্নয়ন কমিটির সভায় আহ্বান করা হয়েছে। গত ৪ ডিসেম্বর বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার ড. মো. মিজানুর রহমান স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়। আগামীকাল বুধবার বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. জাহাঙ্গীর আলমের সভাপতিত্বে পর্যায়োন্নয়ন কমিটির সভা অনুষ্ঠিত হবে। এ নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেতরে-বাইরে হইচই পড়েছে।

জানা যায়, ড. মাসুদ রানা বিশ্ববিদ্যালয়ের আওয়ামীপন্থী শিক্ষক সমিতি নীল দলের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থী ভর্তি পরীক্ষায় জালিয়াতি চক্রের সঙ্গেও তাঁর নাম জড়িয়ে রয়েছে। ২০২৪ সালের ১৭ অক্টোবর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য ড. সৌমিত্র শেখরের বাংলো থেকে বিভিন্ন পরীক্ষার ওএমআর শিট ও এমপির ডিও লেটার উদ্ধার করা হয়। তখন ভর্তি পরীক্ষার ওএমআর কমিটির সদস্যসচিব ছিলেন ড. মাসুদ রানা। ওই ঘটনায় মাসুদ রানাসহ সংশ্লিষ্ট বেশ কয়েকজনকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে। বিষয়টির বিচারপ্রক্রিয়া চলাকালে মানবসম্পদ ব্যবস্থাপনা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক থেকে অধ্যাপক পদে পর্যায়োন্নয়ন সভায় অংশগ্রহণে মাসুদ রানার নাম থাকায় সমালোচনার সৃষ্টি হয়েছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষক বলেন, ‘সহযোগী অধ্যাপক মাসুদ রানা বিগত আওয়ামী সরকারের সময়ে প্রভাব খাটিয়ে, ভিসি সৌমিত্র শেখরকে ব্যবহার করে নানা অপকর্মে জড়িত ছিল। তা বিভিন্ন বিষয়ে স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। ইতিমধ্যে অধ্যাপক হতে তাকে চিঠি দেওয়া হয়েছে। এই সময়ে পদোন্নতি দেওয়া হলে জুলাই শহীদদের রক্তের সঙ্গে বেইমানি করা হবে।’

এ বিষয়ে মানবসম্পদ ব্যবস্থাপনা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. মাসুদ রানা বলেন, ‘সহযোগী অধ্যাপক থেকে অধ্যাপক হতে ৯ মাস আগে আবেদন করেছি। পর্যায়োন্নয়ন কমিটির সভায় অংশগ্রহণের জন্য এখনো কোনো চিঠি পাইনি। পদোন্নতি হয় কি না, তা-ও জানি না।’

বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার ড. মো. মিজানুর রহমান স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তি। ছবি: সংগৃহীত
বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার ড. মো. মিজানুর রহমান স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তি। ছবি: সংগৃহীত

মাসুদ রানা আরও বলেন, ‘ওএমআর কেলেঙ্কারিতে আমার নাম অযথা জড়ানো হয়েছে। শেখ হাসিনার রায় প্রত্যাখ্যান করে যেখানে আমার নাম ব্যবহার করে স্বাক্ষর দেওয়া হয়েছে, বিষয়টি আমি অবগত নই। তবে বিশ্ববিদ্যালয়ের বাইরে থাকায় প্রতিবাদও করতে পারিনি।’

মাসুদ রানাকে পদোন্নতির বিষয়ে জানতে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. জাহাঙ্গীর আলমের সঙ্গে একাধিকবার মোবাইলে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি কল রিসিভ করেননি।

তবে পর্যায়োন্নয়ন কমিটির সভার বিষয়টি নিশ্চিত করে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার ড. মো. মিজানুর রহমান বলেন, ‘মুঠোফোনে এসব বিষয় নিয়ে কথা বলা যায় না। আপনি অফিসে সামনাসামনি আসেন, তারপর কথা বলব।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

গাংনীতে আমনের বাম্পার ফলন, ধান-বিচালির ভালো দামে খুশি চাষিরা

রাকিবুল ইসলাম, গাংনী (মেহেরপুর) 
ধান কাটছেন কৃষকেরা। ছবি: আজকের পত্রিকা
ধান কাটছেন কৃষকেরা। ছবি: আজকের পত্রিকা

মেহেরপুরের গাংনী উপজেলায় এবার আমন ধানের বাম্পার ফলন ও সন্তোষজনক বাজারদর পাওয়ায় কৃষকদের মুখে ফুটেছে আনন্দের হাসি। আবাদ করতে গিয়ে শ্রমিকের মজুরি, সার, কীটনাশকসহ নানা খরচ বেড়ে গেলেও ভালো ফলন ও বাজারদর সেই চাপ অনেকটা কাটিয়ে দিয়েছে। ধানের পাশাপাশি বিচালির দামও এই মৌসুমে ব্যতিক্রমীভাবে বেশি—এক বিঘার বিচালি বিক্রি হচ্ছে ১০ থেকে ১২ হাজার টাকায়।

গাংনীর জোড়পুকুর, তেরাইল, বামন্দী, বালিয়াঘাট, হাড়াভাঙ্গা এলাকার মাঠ ঘুরে দেখা যায়, ধান কাটতে কৃষকদের পাশাপাশি ব্যস্ত সময় পার করছেন পরিবারের নারী সদস্যরাও। চাষিরা জানান, আমনের ফলন এবং দাম—দুই দিক থেকেই তাঁরা সন্তুষ্ট। যদিও কিছু এলাকায় কারেন্ট পোকার আক্রমণে ফলন কিছুটা কমেছে।

তেরাইল এলাকার কৃষক খবির উদ্দিন বলেন, ‘এ বছর বিঘাপ্রতি ১৮ থেকে ২০ মণ ধান পেয়েছি। কারেন্ট পোকার আক্রমণ থাকলেও কীটনাশক ব্যবহার করে তা নিয়ন্ত্রণ করেছি। অধিকাংশ জমির ফলন খুবই ভালো হয়েছে। ধানের দামে আমরা খুশি।’

অন্য কৃষক আলতাব হোসেন বলেন, ‘আল্লাহর রহমতে এবারও ভালো ফলন পেয়েছি। বিঘায় ১৮-১৯ মণ হয়েছে। আমন চাষে বিঘাপ্রতি ১০-১২ হাজার টাকা খরচ হয়, কিন্তু ধান ঘরে তুলতে পারলে সেই খরচ আর মনে থাকে না। তা ছাড়া বিচালির এই যে দাম—এক বিঘায় ১০-১২ হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে, তাতে ভালোই লাভ হচ্ছে।’

ধান ব্যবসায়ী মোহাম্মদ রোকনুজ্জামান বলেন, ‘বর্তমানে ধানের বাজারদর মণপ্রতি ১ হাজার ১০০ টাকা। দাম বাড়বে কি না এখনই বলা যাচ্ছে না।’

গাংনী উপজেলা কৃষি অফিস জানায়, চলতি মৌসুমে উপজেলায় ১৪ হাজার ৫০০ হেক্টর জমিতে আমন ধান চাষ হয়েছে। ফলন ও দাম দুটিতেই কৃষকেরা সন্তুষ্ট।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. ইমরান হোসেন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘গাংনীর কৃষকেরা এই মৌসুমে ভালো ফলন পাচ্ছেন। যেসব জমিতে কারেন্ট পোকা আক্রমণ করেছে, সেখানে কিছু ফলন হ্রাস পেলেও তা বিচালির দামে পুষিয়ে যাচ্ছে। চাষিদের সঙ্গে আমরা সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রাখছি।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

তেঁতুলিয়ায় টানা চার দিন ১০ ডিগ্রির ঘরে পারদ, বাড়ছে শীতজনিত রোগী

পঞ্চগড় প্রতিনিধি 
কুয়াশায় ঢাকা চারপাশ। করতোয়া সেতু এলাকা থেকে আজ সকাল ৭টায় তোলা। ছবি: আজকের পত্রিকা
কুয়াশায় ঢাকা চারপাশ। করতোয়া সেতু এলাকা থেকে আজ সকাল ৭টায় তোলা। ছবি: আজকের পত্রিকা

টানা এক সপ্তাহ দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড হচ্ছে পঞ্চগড়ে। চার দিন ধরে তেঁতুলিয়ায় পারদ ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের ঘরে ঘোরাঘুরি করায় জেলাজুড়ে শীতের তীব্রতা বেড়েই চলেছে। আজ মঙ্গলবার (৯ ডিসেম্বর) সকাল ৬টায় তেঁতুলিয়া আবহাওয়া অফিসে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড হয়েছে ১০ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। বাতাসের আর্দ্রতা ৯৯ শতাংশ।

আবহাওয়া অফিস জানায়, এক সপ্তাহের মধ্যে আজ মঙ্গলবার পঞ্চগড়ে তাপমাত্রা ছিল ১০ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস, গতকাল সোমবার ১০ দশমিক ৬, রোববার ১০ দশমিক ৫, শনিবার ১০ দশমিক ৫, শুক্রবার ১২, বৃহস্পতিবার ১২ দশমিক ৫, বুধবার ১২ দশমিক ২ এবং গত মঙ্গলবার ১১ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। গতকাল দিনের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ২৭ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

দিনমজুর কামাল উদ্দিন বলেন, ‘দিনের বেলা রোদ উঠলে মনে হয় শীত তেমন নেই। কিন্তু রাত হলেই ঠান্ডা এমনভাবে নামতে থাকে যে কাজ শেষে বাড়ি ফিরতে হাত-পা জমে আসে। ভোররাতে বাতাসের ঝাপটা শরীরে লাগলে কাঁপুনি চেপে রাখা যায় না। সকালে সূর্য উঠলেই শরীর গরম হয়, সেলা (তখন) মনে হয় যেন বাঁচা গেল। তবে যত দিন যাচ্ছে, ঠান্ডা আরও বাড়ছে। কয়দিন আগতও এতটা শীত ছিল নাই, এখন তো মনে হচ্ছে সামনত আরও কঠিন শীত পড়িবে।’

জালাসি এলাকার দোকানি শফিকুল বলেন, ‘রাতপাতে অগোতা ঠান্ডাডাহ বাড়ি যায়। দোকান বন্ধ করে বাড়ি যাইতেও হাত-পা বরফ হইয়া যায়। ভোরবেলা ঘুম থাইক্যা উঠলেই দেখি কুয়াশায় রাস্তাঘাট দেখা যায় না, হাওয়া লাগলেই গা কাঁপে। তবে সূর্য মাথাই উঠলেই একটু বাঁচতি। এ বছরে বেশি শীত পড়িবে মনে হয়।’

এদিকে বাড়ছে শীতজনিত রোগীর সংখ্যা। সর্দি-কাশি, জ্বর, অ্যালার্জি ও শ্বাসকষ্টে শিশু ও বৃদ্ধরা বেশি আক্রান্ত হচ্ছেন। ফলে হাসপাতালগুলোতে রোগীর চাপ বৃদ্ধি পেয়েছে।

তেঁতুলিয়া আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জিতেন্দ্রনাথ রায় জানান, আজ তেঁতুলিয়ায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১০ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড হয়েছে। বাতাসে আর্দ্রতা ছিল ৯৯ শতাংশ, যা শীতের অনুভূতি আরও বাড়িয়ে দিচ্ছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত