ফ্যাক্টচেক ডেস্ক

বাংলাদেশে চলতি বছর প্রথম, দ্বিতীয়, ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণিতে নতুন পাঠ্যক্রম বাস্তবায়ন করা হয়েছে। এই পাঠ্যক্রম নিয়ে সংবাদমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নানা আলোচনা–সমালোচনা চলছে। ফেসবুকে নতুন কারিকুলামের কার্যক্রম দাবি করে বিভিন্ন ভিডিও প্রচার করা হচ্ছে। যেসব ভিডিওতে দাবি করা হচ্ছে, এগুলো নতুন কারিকুলামের ভিত্তিতে শিক্ষকদের প্রশিক্ষণের দৃশ্য।
এর মধ্যে ঘাসফুল নামের একটি ফেসবুক পেজে গত শুক্রবার (১ ডিসেম্বর) পোস্ট করা একটি ভিডিও আজ সোমবার (৪ ডিসেম্বর) বেলা ১২টা পর্যন্ত প্রায় ১৫ লাখ বার দেখা হয়েছে। ভিডিওটিতে একটি কক্ষে একজন ব্যক্তিকে ‘টিলিং টিলিং সাইকেল চলাই, ফেরিওয়ালা যায়’ ছড়া কেটে নেচে গেয়ে অভিনয় করতে দেখা যাচ্ছে। এই ভিডিওতে প্রতিক্রিয়া পড়েছে ৬৩ হাজার, এর মধ্যে হা হা প্রতিক্রিয়াই পড়েছে ৩২ হাজার, রাগের প্রতিক্রিয়া পড়েছে ১০ হাজার। ভিডিওটি শেয়ার হয়েছে ১৬ হাজার বারের বেশি, মন্তব্য পড়েছে প্রায় ১৫ হাজার।
ভিডিওটি দেখুন এখানে।
ফ্রলিক জাকির নামের আরেকটি পেজ থেকে শিক্ষকদের নতুন কারিকুলাম বিষয়ক প্রশিক্ষণ দাবিতে আরেকটি ভিডিও প্রচার হতে দেখা যাচ্ছে। গত ৩০ নভেম্বর প্রচারিত ভিডিওটি আজ সোমবার (৪ ডিসেম্বর) বেলা ১২টা পর্যন্ত প্রায় ১৩ লাখ বার দেখা হয়েছে। ভিডিওটিতে একটি শ্রেণিকক্ষে কিছু ব্যক্তিকে ‘প্যাক প্যাক’ শব্দ করে বিভিন্ন অঙ্গভঙ্গি করতে দেখা যাচ্ছে। এ ভিডিওটিতে প্রতিক্রিয়া পড়েছে ৯ হাজারের বেশি, এর মধ্যে হা হা প্রতিক্রিয়া পড়েছে প্রায় সাড়ে ৬ হাজার, দুঃখের প্রতিক্রিয়া পড়েছে ১ হাজার। ভিডিওটি শেয়ার হয়েছে ১৭ হাজার বারের বেশি, মন্তব্য পড়েছে প্রায় ২ হাজারের বেশি।
ভিডিওটি দেখুন এখানে।
এসব ভিডিওটিতে নেটিজেনরা এমন প্রশিক্ষণ ও নতুন কারিকুলামের সমালোচনা করে বিভিন্ন মন্তব্য করেছেন।
অনুসন্ধানে দেখা যায়, ভিডিওগুলোর সঙ্গে দেশে চলতি বছর শুরু হওয়া নতুন শিক্ষা কারিকুলামের কোনো সম্পর্ক নেই।
ভিডিও যাচাই ১:
ফেসবুকে ভাইরাল ‘টিলিং টিলিং সাইকেল চলাই, ফেরিওয়ালা যায়’ ভিডিওটি নিয়ে ওপেন সোর্স অনুসন্ধানে এস তানজিম নামে এক ব্যক্তির ফেসবুক অ্যাকাউন্টে গত রোবরাব (৩ ডিসেম্বর ) রাত সাড়ে ১১টার দিকে করা একটি পোস্ট খুঁজে পাওয়া যায়। এস তানজিমের প্রোফাইলে লেখা রয়েছে, অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের স্বেচ্ছাসেবক ও ব্যাঙের ছাতার বিজ্ঞান নামে একটি ফেসবুক গ্রুপের সদস্য। তিনি ‘টিলিং টিলিং সাইকেল চলাই, ফেরিওয়ালা যায়’ ভিডিওটি শেয়ার করে লিখেছেন, ‘এই যে ভিডিওটা ভাইরাল হইছে, এইটা বাংলাদেশের ভিডিওই না। এই শিক্ষক ভারতের আসামের এবং ঘটনাও ভারতের। আপনারা যারা সারাদিন এই ভিডিওকে আমাদের দেশের কারিকুলামের প্রশিক্ষণ হিসেবে প্রচার করেছেন তাদের জন্য এক বালতি সমবেদনা। এই সেই ‘‘সাইকেল চালাই’’ এর অরিজিনাল ভিডিও।’
এস তানজিমের এ পোস্টের সূত্রে রতন লাল সাহা নামের একটি পেজ খুঁজে পাওয়া যায়। পেজটি ভারতের আসাম রাজ্যের ফকিরগঞ্জের ধুবরি থেকে পরিচালিত হয়। পেজটির পরিচালনাকারীর পেশা দেওয়া রয়েছে শিক্ষকতা। রতন লাল সাহা গত রোবরাব (৩ ডিসেম্বর) ‘টিলিং টিলিং সাইকেল চলাই, ফেরিওয়ালা যায়’ ভাইরাল ভিডিওটি শেয়ার করে লিখেছেন, ‘টিলিং টিলিং সাইক্লিং, যা ২০২২ সালে আসামে ভাইরাল হয়েছিল। এবার বাংলাদেশেও ভাইরাল।’
পেজটি ঘুরে আরও দেখা যায়, গত ১৭ নভেম্বর রতন লাল সাহা ‘এফএলএন ট্রেনিং অন পয়েম পোস্টার ফর ওরাল ল্যাঙ্গুয়েজ ডেভেলপমেন্ট’ ক্যাপশনে ভিডিওটি প্রথম পোস্ট করেন।
পরবর্তীতে ভিডিওটি সম্পর্কে জানতে রতন লাল সাহার ফেসবুক পেজে দেওয়া নম্বরে তাঁর সঙ্গে হোয়াটসঅ্যাপে আজকের পত্রিকার পক্ষ থেকে থেকে যোগাযোগ করা হয়। রতন লাল সাহা আজকের পত্রিকাকে জানান, তিনি আসামের আম্বারি শিশু কল্যাণ এলপি স্কুলের সহকারী শিক্ষক। পাশাপাশি তিনি শিক্ষকদের প্রশিক্ষক হিসেবেও কাজ করেন। বাংলাদেশের শিক্ষকদের প্রশিক্ষণের দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটিতে প্রশিক্ষক হিসেবে তাঁকেই দেখা যাচ্ছে। এটি শিশুদের জন্য ভারত সরকারের জয়ফুল লার্নিং বা আনন্দদায়ক শিক্ষণ কার্যক্রমের এফএলএন ট্রেনিং বা ফান্ডামেন্টাল লিটারেসি অ্যান্ড নিউমেরাসি প্রশিক্ষণের অংশ। এখানে যে ছড়াটি আবৃত্তি করা হয়েছে, সেটি আসামের প্রথম শ্রেণির অঙ্কুরণ নামের একটি বইয়ে রয়েছে। বইটির ৪২ নম্বর পৃষ্ঠায় ছড়াটি রয়েছে। এ কবিতা রতন লালের মাধ্যমে ২০২২ সালেও আসামে ভাইরাল হয়েছিল। ওই বছরের ১৭ আগস্ট তিনি এ ছড়ার মাধ্যমে পাঠদান দিয়ে ডিস্ট্রিক্ট অ্যাওয়ার্ডও পান।
রতন লাল সাহা আরও বলেন, ‘এ ধরনের প্রশিক্ষণ ও পাঠ্যক্রম শিশুদের জন্য অনেক উপকারী। শিশুরা এর মাধ্যমে আনন্দের সঙ্গে জ্ঞান অর্জন করতে পারে।’ তাঁর স্কুলে তিনি এ প্রশিক্ষণের ভালো ফল পেয়েছেন। স্কুলটিতে শিক্ষার্থীদের শতভাগ উপস্থিতি থাকে। এমনও হয়েছে, তিনি কোনো দিন ক্লাস না নিলে শিশুরা মিডডে মিল (মিডডে মিল ভারতে স্কুল খাবার প্রোগ্রাম, যা দেশব্যাপী স্কুলগামী শিশুদের পুষ্টির অবস্থাকে আরও উন্নত করার জন্য ডিজাইন করা হয়েছে) নেওয়া থেকে বিরত থাকে। পরবর্তীতে তিনি ক্লাস নেবেন এমন আশ্বাস দিয়ে শিশুদের মিডডে মিল খাইয়েছেন— এমন দাবি রতন লালের।
এ ছাড়া ফেসবুকে ভাইরাল ভিডিওটি ভালোভাবে পর্যবেক্ষণ করলে দেখা যায়, যে কক্ষে ভিডিওটি ধারণ করা হয়েছে সেখানে ঝোলানো ব্যানারেও ধুবরি, আসাম শব্দগুলো রয়েছে।
ওপরের আলোচনা থেকে স্পষ্ট, ‘টিলিং টিলিং সাইকেল চলাই, ফেরিওয়ালা যায়’ ভিডিওটি বাংলাদেশের শিক্ষকদের নতুন কারিকুলামের ওপর প্রশিক্ষণের কোনো ভিডিও নয়।
ভিডিও যাচাই ২:
এ ভিডিওটি নিয়ে অনুসন্ধানে দেখা যায়, ভিডিওটি যে শ্রেণিকক্ষে ধারণ করা হয়েছে, সেখানে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের বিষয়ভিত্তিক (গণিত) প্রশিক্ষণ শীর্ষক একটি ব্যানার। ব্যানারে আরও লেখা রয়েছে, ‘৬ দিনব্যাপী গণিত অলিম্পিয়াড কৌশল ব্যবহার করে’। ব্যানারটির ওপরে ডান কোণায় মুজিব বর্ষের ও বাম কোণায় প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের লোগো দেখা যায়। এ ব্যানারটির সূত্রে কি–ওয়ার্ড অনুসন্ধানে গাজীপুর সিটি (Gazipur City) নামের একটি ফেসবুক পেজে ২০২২ সালের ১১ মার্চ পোস্ট করা একই ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। ভিডিওটির ক্যাপশনে লেখা আছে, ‘প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের বিষয় ভিত্তিক (গণিত) প্রশিক্ষণ চলছে।’ পোস্টটিতে বিস্তারিত আর কোনো তথ্য নেই।
তবে প্রাসঙ্গিক কি–ওয়ার্ড অনুসন্ধানে সে সময় দেশের বিভিন্ন স্থানে ৬ দিনব্যাপী গণিত অলিম্পিয়াড কৌশল ব্যবহার করে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের বিষয়ভিত্তিক (গণিত) প্রশিক্ষণ কার্যক্রমের তথ্য খুঁজে পাওয়া যায়। দিনাজপুরের খানসামা উপজেলার প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের এ প্রশিক্ষণ সম্পর্কিত সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন দেখুন এখানে।
ভিডিওটি নিয়ে ওই সময়ও ফেসবুকে আলোচনা–সমালোচনা হতে দেখা যায়। যেমন, ভিডিওটির সমর্থনে টেকনাফের একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক নূর মোহাম্মদ লেখেন, ‘সারা দেশে উপজেলা রিসোর্স সেন্টারগুলোতে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের ৬ (ছয়) দিনব্যাপী অলিম্পিয়াড কৌশল ব্যবহার করে বিষয় ভিত্তিক ‘‘গণিত’’ প্রশিক্ষণ চলছে। প্রশিক্ষণটির ব্যানারে শিরা ভাগেই লেখা আছে “আনন্দে গণিত শিখি”। কোমলমতি শিশুদের গণিত–ভীতি দূর করা এবং আনন্দদায়ক পরিবেশে বিভিন্ন গেমের মাধ্যমে গণিতের জটিল বিষয়গুলো শিক্ষার্থীদের কাছে সহজভাবে উপস্থাপনের জন্য প্রশিক্ষণটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই প্রশিক্ষণের একটি অংশে দশমিক ভগ্নাংশের ধারণা দেওয়া জন্য মা ও বাচ্চা হাঁসের একটি গেম রোল প্লে করা হয়েছে। যার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ায় কিছু অসুস্থ প্রকৃতির মানুষ বিষয়টি না বুঝেই প্রাথমিক শিক্ষকদের নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ট্রল করছে, যা খুবই দুঃখজনক। ভাইরাল রোগে আক্রান্ত এসব নোংরা মানসিকতার মানুষগুলো দেশে কিছু একটা হলেই বাছবিচার না করেই ট্রলের প্রতিযোগিতায় নেমে যান। অনেকের ট্রলের ভাষা এতই দুর্গন্ধযুক্ত যে, যা দেখলে তাদেরকে রুচিবোধ সম্পন্ন মানুষ বলে প্রতীয়মান হয় না।’
আবার ভিডিওটির সমালোচনা করে কুষ্টিয়ায় অবস্থিত রবীন্দ্র মৈত্রী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রভাষক মুফরাদ হোসাইন অলিন্দ ফেসবুকে লিখেছেন, ‘আমার ঠিক জানা নেই, বাংলাদেশ প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ এভাবেই হয় কিনা!? যদি হয়েও থাকে তাহলে ধরে নিতে হবে আমরা কোমায় চলে গিয়েছি। এভাবে হতে পারে না! আবর্জনা দিয়ে ভরে যাওয়া সিস্টেম আবর্জনা দিয়েই পরিষ্কার করার কথা ভাবাটা বাতুলতা। কারা করে এই ট্রেনিং ডিজাইন? এটা বোধগম্য হচ্ছে না। কতটা কেয়ারলেস ফুল হলে মাস এডুকেশন নিয়ে এ রকম করা যায়! এই শিক্ষকদের জন্য আমার সিম্প্যাথি আসছে। ভীষণ বিব্রত বোধ করছি।’
বদলগাছি তরুণ শিক্ষক নামের একটি ফেসবুক গ্রুপে একই বছরের ৬ অক্টোবর একটি পোস্ট খুঁজে পায়। এতে উল্লেখিত তথ্যানুযায়ী, পোস্টটি ৬ দিনব্যাপী গণিত অলিম্পিয়াড কৌশল ব্যবহার করে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের বিষয়–ভিত্তিক (গণিত) প্রশিক্ষণ সম্পর্কিত। এ প্রশিক্ষণ নওগাঁর বদলগাছি উপজেলা রিসোর্স সেন্টারে অনুষ্ঠিত হয়। এ পোস্টে সংযুক্ত ভিডিওতে প্রশিক্ষণে অংশ নেওয়া শিক্ষকদের বিভিন্ন কার্যক্রমে অংশ নিতে দেখা যায়। তবে আলোচিত ভিডিওটি সেখানে পাওয়া যায়নি। পোস্টে সংযুক্ত একটি ছবিতে ভাইরাল ভিডিওতে থাকা ব্যানারটি দেখা যায়। ব্যানারটি থেকে জানা যায়, প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর এ প্রশিক্ষণ কার্যক্রম বাস্তবায়ন করেছে।
এসব পোস্ট থেকে নিশ্চিত হওয়া যায়, বাংলাদেশের শিক্ষকদের নতুন কারিকুলামের ওপর প্রশিক্ষণের দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটির সঙ্গে নতুন কারিকুলামের কোনো সম্পর্ক নেই। বরং ভিডিওটি প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের উদ্যোগে বাস্তবায়িত ৬ দিনব্যাপী গণিত অলিম্পিয়াড কৌশল ব্যবহার করে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের বিষয়ভিত্তিক (গণিত) প্রশিক্ষণ কার্যক্রমের সময়ে ধারণকৃত।
নতুন শিক্ষাক্রম নিয়ে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের (এনসিটিবি) বক্তব্য
গত রোববার (৩ ডিসেম্বর) এনসিটিবির সচিব মোসা. নাজমা আখতার স্বাক্ষরিত একটি সতর্কীকরণ বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়। তাতে বলা হয়, নতুন শিক্ষাক্রম নিয়ে অপপ্রচার করলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেবে এনসিটিবি। একই সঙ্গে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে মিথ্যা প্রচার সংবলিত কনটেন্ট আপলোড, শেয়ার বা মন্তব্য করা থেকে বিরত থাকার অনুরোধ জানানো হয়েছে। হিন্দি গানের সঙ্গে স্কুলের পোশাক পরা কিছু ছেলেমেয়ে ও ব্যক্তির অশ্লীল নাচ আপলোড করে বলা হচ্ছে, শিক্ষাক্রমের নির্দেশনা, যা মিথ্যা। কিছু লোক ব্যাঙের লাফ বা হাঁসের ডাক দিচ্ছে—এমন ভিডিও আপলোড করে বলা হচ্ছে, এটি নতুন শিক্ষাক্রমের শিক্ষক প্রশিক্ষণের অংশ, যা সম্পূর্ণ মিথ্যাচার।
এনসিটিবির এই বিজ্ঞপ্তির খবর আজকের পত্রিকাসহ দেশের প্রায় গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে।
সিদ্ধান্ত
বাংলাদেশে চলতি বছর প্রথম, দ্বিতীয়, ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণিতে নতুন পাঠ্যক্রম বাস্তবায়ন করা হয়েছে। আগামী বছর বাস্তবায়ন করা হবে তৃতীয়, চতুর্থ, অষ্টম ও নবম শ্রেণিতে। এ নতুন পাঠ্যক্রম বিষয়ে শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে দাবি করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অন্তত দুটি ভিডিও প্রচার করা হচ্ছে। অনুসন্ধানে দেখা গেছে, ভিডিওগুলোর সঙ্গে নতুন কারিকুলামের কোনো সম্পর্ক নেই। এর একটি ভিডিও ভারতের আসামের শিক্ষকদের প্রশিক্ষণের এবং অন্যটি ২০২২ সালের প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের উদ্যোগে বাস্তবায়িত ৬ দিনব্যাপী গণিত অলিম্পিয়াড কৌশল ব্যবহার করে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের বিষয়ভিত্তিক (গণিত) প্রশিক্ষণ কার্যক্রমের অংশ।

বাংলাদেশে চলতি বছর প্রথম, দ্বিতীয়, ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণিতে নতুন পাঠ্যক্রম বাস্তবায়ন করা হয়েছে। এই পাঠ্যক্রম নিয়ে সংবাদমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নানা আলোচনা–সমালোচনা চলছে। ফেসবুকে নতুন কারিকুলামের কার্যক্রম দাবি করে বিভিন্ন ভিডিও প্রচার করা হচ্ছে। যেসব ভিডিওতে দাবি করা হচ্ছে, এগুলো নতুন কারিকুলামের ভিত্তিতে শিক্ষকদের প্রশিক্ষণের দৃশ্য।
এর মধ্যে ঘাসফুল নামের একটি ফেসবুক পেজে গত শুক্রবার (১ ডিসেম্বর) পোস্ট করা একটি ভিডিও আজ সোমবার (৪ ডিসেম্বর) বেলা ১২টা পর্যন্ত প্রায় ১৫ লাখ বার দেখা হয়েছে। ভিডিওটিতে একটি কক্ষে একজন ব্যক্তিকে ‘টিলিং টিলিং সাইকেল চলাই, ফেরিওয়ালা যায়’ ছড়া কেটে নেচে গেয়ে অভিনয় করতে দেখা যাচ্ছে। এই ভিডিওতে প্রতিক্রিয়া পড়েছে ৬৩ হাজার, এর মধ্যে হা হা প্রতিক্রিয়াই পড়েছে ৩২ হাজার, রাগের প্রতিক্রিয়া পড়েছে ১০ হাজার। ভিডিওটি শেয়ার হয়েছে ১৬ হাজার বারের বেশি, মন্তব্য পড়েছে প্রায় ১৫ হাজার।
ভিডিওটি দেখুন এখানে।
ফ্রলিক জাকির নামের আরেকটি পেজ থেকে শিক্ষকদের নতুন কারিকুলাম বিষয়ক প্রশিক্ষণ দাবিতে আরেকটি ভিডিও প্রচার হতে দেখা যাচ্ছে। গত ৩০ নভেম্বর প্রচারিত ভিডিওটি আজ সোমবার (৪ ডিসেম্বর) বেলা ১২টা পর্যন্ত প্রায় ১৩ লাখ বার দেখা হয়েছে। ভিডিওটিতে একটি শ্রেণিকক্ষে কিছু ব্যক্তিকে ‘প্যাক প্যাক’ শব্দ করে বিভিন্ন অঙ্গভঙ্গি করতে দেখা যাচ্ছে। এ ভিডিওটিতে প্রতিক্রিয়া পড়েছে ৯ হাজারের বেশি, এর মধ্যে হা হা প্রতিক্রিয়া পড়েছে প্রায় সাড়ে ৬ হাজার, দুঃখের প্রতিক্রিয়া পড়েছে ১ হাজার। ভিডিওটি শেয়ার হয়েছে ১৭ হাজার বারের বেশি, মন্তব্য পড়েছে প্রায় ২ হাজারের বেশি।
ভিডিওটি দেখুন এখানে।
এসব ভিডিওটিতে নেটিজেনরা এমন প্রশিক্ষণ ও নতুন কারিকুলামের সমালোচনা করে বিভিন্ন মন্তব্য করেছেন।
অনুসন্ধানে দেখা যায়, ভিডিওগুলোর সঙ্গে দেশে চলতি বছর শুরু হওয়া নতুন শিক্ষা কারিকুলামের কোনো সম্পর্ক নেই।
ভিডিও যাচাই ১:
ফেসবুকে ভাইরাল ‘টিলিং টিলিং সাইকেল চলাই, ফেরিওয়ালা যায়’ ভিডিওটি নিয়ে ওপেন সোর্স অনুসন্ধানে এস তানজিম নামে এক ব্যক্তির ফেসবুক অ্যাকাউন্টে গত রোবরাব (৩ ডিসেম্বর ) রাত সাড়ে ১১টার দিকে করা একটি পোস্ট খুঁজে পাওয়া যায়। এস তানজিমের প্রোফাইলে লেখা রয়েছে, অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের স্বেচ্ছাসেবক ও ব্যাঙের ছাতার বিজ্ঞান নামে একটি ফেসবুক গ্রুপের সদস্য। তিনি ‘টিলিং টিলিং সাইকেল চলাই, ফেরিওয়ালা যায়’ ভিডিওটি শেয়ার করে লিখেছেন, ‘এই যে ভিডিওটা ভাইরাল হইছে, এইটা বাংলাদেশের ভিডিওই না। এই শিক্ষক ভারতের আসামের এবং ঘটনাও ভারতের। আপনারা যারা সারাদিন এই ভিডিওকে আমাদের দেশের কারিকুলামের প্রশিক্ষণ হিসেবে প্রচার করেছেন তাদের জন্য এক বালতি সমবেদনা। এই সেই ‘‘সাইকেল চালাই’’ এর অরিজিনাল ভিডিও।’
এস তানজিমের এ পোস্টের সূত্রে রতন লাল সাহা নামের একটি পেজ খুঁজে পাওয়া যায়। পেজটি ভারতের আসাম রাজ্যের ফকিরগঞ্জের ধুবরি থেকে পরিচালিত হয়। পেজটির পরিচালনাকারীর পেশা দেওয়া রয়েছে শিক্ষকতা। রতন লাল সাহা গত রোবরাব (৩ ডিসেম্বর) ‘টিলিং টিলিং সাইকেল চলাই, ফেরিওয়ালা যায়’ ভাইরাল ভিডিওটি শেয়ার করে লিখেছেন, ‘টিলিং টিলিং সাইক্লিং, যা ২০২২ সালে আসামে ভাইরাল হয়েছিল। এবার বাংলাদেশেও ভাইরাল।’
পেজটি ঘুরে আরও দেখা যায়, গত ১৭ নভেম্বর রতন লাল সাহা ‘এফএলএন ট্রেনিং অন পয়েম পোস্টার ফর ওরাল ল্যাঙ্গুয়েজ ডেভেলপমেন্ট’ ক্যাপশনে ভিডিওটি প্রথম পোস্ট করেন।
পরবর্তীতে ভিডিওটি সম্পর্কে জানতে রতন লাল সাহার ফেসবুক পেজে দেওয়া নম্বরে তাঁর সঙ্গে হোয়াটসঅ্যাপে আজকের পত্রিকার পক্ষ থেকে থেকে যোগাযোগ করা হয়। রতন লাল সাহা আজকের পত্রিকাকে জানান, তিনি আসামের আম্বারি শিশু কল্যাণ এলপি স্কুলের সহকারী শিক্ষক। পাশাপাশি তিনি শিক্ষকদের প্রশিক্ষক হিসেবেও কাজ করেন। বাংলাদেশের শিক্ষকদের প্রশিক্ষণের দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটিতে প্রশিক্ষক হিসেবে তাঁকেই দেখা যাচ্ছে। এটি শিশুদের জন্য ভারত সরকারের জয়ফুল লার্নিং বা আনন্দদায়ক শিক্ষণ কার্যক্রমের এফএলএন ট্রেনিং বা ফান্ডামেন্টাল লিটারেসি অ্যান্ড নিউমেরাসি প্রশিক্ষণের অংশ। এখানে যে ছড়াটি আবৃত্তি করা হয়েছে, সেটি আসামের প্রথম শ্রেণির অঙ্কুরণ নামের একটি বইয়ে রয়েছে। বইটির ৪২ নম্বর পৃষ্ঠায় ছড়াটি রয়েছে। এ কবিতা রতন লালের মাধ্যমে ২০২২ সালেও আসামে ভাইরাল হয়েছিল। ওই বছরের ১৭ আগস্ট তিনি এ ছড়ার মাধ্যমে পাঠদান দিয়ে ডিস্ট্রিক্ট অ্যাওয়ার্ডও পান।
রতন লাল সাহা আরও বলেন, ‘এ ধরনের প্রশিক্ষণ ও পাঠ্যক্রম শিশুদের জন্য অনেক উপকারী। শিশুরা এর মাধ্যমে আনন্দের সঙ্গে জ্ঞান অর্জন করতে পারে।’ তাঁর স্কুলে তিনি এ প্রশিক্ষণের ভালো ফল পেয়েছেন। স্কুলটিতে শিক্ষার্থীদের শতভাগ উপস্থিতি থাকে। এমনও হয়েছে, তিনি কোনো দিন ক্লাস না নিলে শিশুরা মিডডে মিল (মিডডে মিল ভারতে স্কুল খাবার প্রোগ্রাম, যা দেশব্যাপী স্কুলগামী শিশুদের পুষ্টির অবস্থাকে আরও উন্নত করার জন্য ডিজাইন করা হয়েছে) নেওয়া থেকে বিরত থাকে। পরবর্তীতে তিনি ক্লাস নেবেন এমন আশ্বাস দিয়ে শিশুদের মিডডে মিল খাইয়েছেন— এমন দাবি রতন লালের।
এ ছাড়া ফেসবুকে ভাইরাল ভিডিওটি ভালোভাবে পর্যবেক্ষণ করলে দেখা যায়, যে কক্ষে ভিডিওটি ধারণ করা হয়েছে সেখানে ঝোলানো ব্যানারেও ধুবরি, আসাম শব্দগুলো রয়েছে।
ওপরের আলোচনা থেকে স্পষ্ট, ‘টিলিং টিলিং সাইকেল চলাই, ফেরিওয়ালা যায়’ ভিডিওটি বাংলাদেশের শিক্ষকদের নতুন কারিকুলামের ওপর প্রশিক্ষণের কোনো ভিডিও নয়।
ভিডিও যাচাই ২:
এ ভিডিওটি নিয়ে অনুসন্ধানে দেখা যায়, ভিডিওটি যে শ্রেণিকক্ষে ধারণ করা হয়েছে, সেখানে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের বিষয়ভিত্তিক (গণিত) প্রশিক্ষণ শীর্ষক একটি ব্যানার। ব্যানারে আরও লেখা রয়েছে, ‘৬ দিনব্যাপী গণিত অলিম্পিয়াড কৌশল ব্যবহার করে’। ব্যানারটির ওপরে ডান কোণায় মুজিব বর্ষের ও বাম কোণায় প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের লোগো দেখা যায়। এ ব্যানারটির সূত্রে কি–ওয়ার্ড অনুসন্ধানে গাজীপুর সিটি (Gazipur City) নামের একটি ফেসবুক পেজে ২০২২ সালের ১১ মার্চ পোস্ট করা একই ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। ভিডিওটির ক্যাপশনে লেখা আছে, ‘প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের বিষয় ভিত্তিক (গণিত) প্রশিক্ষণ চলছে।’ পোস্টটিতে বিস্তারিত আর কোনো তথ্য নেই।
তবে প্রাসঙ্গিক কি–ওয়ার্ড অনুসন্ধানে সে সময় দেশের বিভিন্ন স্থানে ৬ দিনব্যাপী গণিত অলিম্পিয়াড কৌশল ব্যবহার করে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের বিষয়ভিত্তিক (গণিত) প্রশিক্ষণ কার্যক্রমের তথ্য খুঁজে পাওয়া যায়। দিনাজপুরের খানসামা উপজেলার প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের এ প্রশিক্ষণ সম্পর্কিত সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন দেখুন এখানে।
ভিডিওটি নিয়ে ওই সময়ও ফেসবুকে আলোচনা–সমালোচনা হতে দেখা যায়। যেমন, ভিডিওটির সমর্থনে টেকনাফের একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক নূর মোহাম্মদ লেখেন, ‘সারা দেশে উপজেলা রিসোর্স সেন্টারগুলোতে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের ৬ (ছয়) দিনব্যাপী অলিম্পিয়াড কৌশল ব্যবহার করে বিষয় ভিত্তিক ‘‘গণিত’’ প্রশিক্ষণ চলছে। প্রশিক্ষণটির ব্যানারে শিরা ভাগেই লেখা আছে “আনন্দে গণিত শিখি”। কোমলমতি শিশুদের গণিত–ভীতি দূর করা এবং আনন্দদায়ক পরিবেশে বিভিন্ন গেমের মাধ্যমে গণিতের জটিল বিষয়গুলো শিক্ষার্থীদের কাছে সহজভাবে উপস্থাপনের জন্য প্রশিক্ষণটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই প্রশিক্ষণের একটি অংশে দশমিক ভগ্নাংশের ধারণা দেওয়া জন্য মা ও বাচ্চা হাঁসের একটি গেম রোল প্লে করা হয়েছে। যার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ায় কিছু অসুস্থ প্রকৃতির মানুষ বিষয়টি না বুঝেই প্রাথমিক শিক্ষকদের নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ট্রল করছে, যা খুবই দুঃখজনক। ভাইরাল রোগে আক্রান্ত এসব নোংরা মানসিকতার মানুষগুলো দেশে কিছু একটা হলেই বাছবিচার না করেই ট্রলের প্রতিযোগিতায় নেমে যান। অনেকের ট্রলের ভাষা এতই দুর্গন্ধযুক্ত যে, যা দেখলে তাদেরকে রুচিবোধ সম্পন্ন মানুষ বলে প্রতীয়মান হয় না।’
আবার ভিডিওটির সমালোচনা করে কুষ্টিয়ায় অবস্থিত রবীন্দ্র মৈত্রী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রভাষক মুফরাদ হোসাইন অলিন্দ ফেসবুকে লিখেছেন, ‘আমার ঠিক জানা নেই, বাংলাদেশ প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ এভাবেই হয় কিনা!? যদি হয়েও থাকে তাহলে ধরে নিতে হবে আমরা কোমায় চলে গিয়েছি। এভাবে হতে পারে না! আবর্জনা দিয়ে ভরে যাওয়া সিস্টেম আবর্জনা দিয়েই পরিষ্কার করার কথা ভাবাটা বাতুলতা। কারা করে এই ট্রেনিং ডিজাইন? এটা বোধগম্য হচ্ছে না। কতটা কেয়ারলেস ফুল হলে মাস এডুকেশন নিয়ে এ রকম করা যায়! এই শিক্ষকদের জন্য আমার সিম্প্যাথি আসছে। ভীষণ বিব্রত বোধ করছি।’
বদলগাছি তরুণ শিক্ষক নামের একটি ফেসবুক গ্রুপে একই বছরের ৬ অক্টোবর একটি পোস্ট খুঁজে পায়। এতে উল্লেখিত তথ্যানুযায়ী, পোস্টটি ৬ দিনব্যাপী গণিত অলিম্পিয়াড কৌশল ব্যবহার করে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের বিষয়–ভিত্তিক (গণিত) প্রশিক্ষণ সম্পর্কিত। এ প্রশিক্ষণ নওগাঁর বদলগাছি উপজেলা রিসোর্স সেন্টারে অনুষ্ঠিত হয়। এ পোস্টে সংযুক্ত ভিডিওতে প্রশিক্ষণে অংশ নেওয়া শিক্ষকদের বিভিন্ন কার্যক্রমে অংশ নিতে দেখা যায়। তবে আলোচিত ভিডিওটি সেখানে পাওয়া যায়নি। পোস্টে সংযুক্ত একটি ছবিতে ভাইরাল ভিডিওতে থাকা ব্যানারটি দেখা যায়। ব্যানারটি থেকে জানা যায়, প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর এ প্রশিক্ষণ কার্যক্রম বাস্তবায়ন করেছে।
এসব পোস্ট থেকে নিশ্চিত হওয়া যায়, বাংলাদেশের শিক্ষকদের নতুন কারিকুলামের ওপর প্রশিক্ষণের দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটির সঙ্গে নতুন কারিকুলামের কোনো সম্পর্ক নেই। বরং ভিডিওটি প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের উদ্যোগে বাস্তবায়িত ৬ দিনব্যাপী গণিত অলিম্পিয়াড কৌশল ব্যবহার করে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের বিষয়ভিত্তিক (গণিত) প্রশিক্ষণ কার্যক্রমের সময়ে ধারণকৃত।
নতুন শিক্ষাক্রম নিয়ে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের (এনসিটিবি) বক্তব্য
গত রোববার (৩ ডিসেম্বর) এনসিটিবির সচিব মোসা. নাজমা আখতার স্বাক্ষরিত একটি সতর্কীকরণ বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়। তাতে বলা হয়, নতুন শিক্ষাক্রম নিয়ে অপপ্রচার করলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেবে এনসিটিবি। একই সঙ্গে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে মিথ্যা প্রচার সংবলিত কনটেন্ট আপলোড, শেয়ার বা মন্তব্য করা থেকে বিরত থাকার অনুরোধ জানানো হয়েছে। হিন্দি গানের সঙ্গে স্কুলের পোশাক পরা কিছু ছেলেমেয়ে ও ব্যক্তির অশ্লীল নাচ আপলোড করে বলা হচ্ছে, শিক্ষাক্রমের নির্দেশনা, যা মিথ্যা। কিছু লোক ব্যাঙের লাফ বা হাঁসের ডাক দিচ্ছে—এমন ভিডিও আপলোড করে বলা হচ্ছে, এটি নতুন শিক্ষাক্রমের শিক্ষক প্রশিক্ষণের অংশ, যা সম্পূর্ণ মিথ্যাচার।
এনসিটিবির এই বিজ্ঞপ্তির খবর আজকের পত্রিকাসহ দেশের প্রায় গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে।
সিদ্ধান্ত
বাংলাদেশে চলতি বছর প্রথম, দ্বিতীয়, ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণিতে নতুন পাঠ্যক্রম বাস্তবায়ন করা হয়েছে। আগামী বছর বাস্তবায়ন করা হবে তৃতীয়, চতুর্থ, অষ্টম ও নবম শ্রেণিতে। এ নতুন পাঠ্যক্রম বিষয়ে শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে দাবি করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অন্তত দুটি ভিডিও প্রচার করা হচ্ছে। অনুসন্ধানে দেখা গেছে, ভিডিওগুলোর সঙ্গে নতুন কারিকুলামের কোনো সম্পর্ক নেই। এর একটি ভিডিও ভারতের আসামের শিক্ষকদের প্রশিক্ষণের এবং অন্যটি ২০২২ সালের প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের উদ্যোগে বাস্তবায়িত ৬ দিনব্যাপী গণিত অলিম্পিয়াড কৌশল ব্যবহার করে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের বিষয়ভিত্তিক (গণিত) প্রশিক্ষণ কার্যক্রমের অংশ।

সম্প্রতি আজকের পত্রিকার নাম ও ফটোকার্ড ব্যবহার করে ‘হরেকৃষ্ণ হরিবোল, দাঁড়িপাল্লা টেনে তোলঃ পরওয়ার’ শিরোনামে একটি ভুয়া ফটোকার্ড সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়েছে।
০৩ নভেম্বর ২০২৫
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সম্প্রতি ভাইরাল একটি ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, রাতের রাস্তার মাঝখানে এক মধ্যবয়সী ব্যক্তি এক হাতে একটি স্বচ্ছ বোতল, অপর হাতে বাঘের মাথায় হাত বুলিয়ে দিচ্ছেন। এমনকি বাঘটির মুখে বোতল গুঁজে দিতেও দেখা যায় তাঁকে।
০২ নভেম্বর ২০২৫
বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস পাকিস্তানের যৌথবাহিনীর চেয়ারম্যানকে ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চল যুক্ত বাংলাদেশের মানচিত্রসংবলিত পতাকা উপহার দিয়েছেন বলে ভারতের সংবাদমাধ্যম ইন্ডিয়া টুডের দাবি সম্পূর্ণ অসত্য ও কল্পনাপ্রসূত বলে জানিয়েছে সিএ (প্রধান উপদেষ্টা) ফ্যাক্ট চেক।
২৮ অক্টোবর ২০২৫
একটি মেরিন পার্কে এক নারী প্রশিক্ষককে চুবিয়ে হত্যা করেছে অরকা বা কিলার তিমি। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এমন একটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছে।
১৩ আগস্ট ২০২৫আজকের পত্রিকা ডেস্ক

সম্প্রতি আজকের পত্রিকার নাম ও ফটোকার্ড ব্যবহার করে ‘হরেকৃষ্ণ হরিবোল, দাঁড়িপাল্লা টেনে তোলঃ পরওয়ার’ শিরোনামে একটি ভুয়া ফটোকার্ড সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়েছে। এটি একটি সম্পূর্ণ ভুয়া ফটোকার্ড।
আজকের পত্রিকা কর্তৃপক্ষ নিশ্চিত করছে, এই ধরনের কোনো খবর আজকের পত্রিকাতে কখনোই প্রকাশিত হয়নি। ফটোকার্ডটিতে আজকের পত্রিকার লোগো ব্যবহার করা হলেও এর ভেতরের খবর ও শিরোনাম সম্পূর্ণ মিথ্যা ও বানোয়াট।
আজকের পত্রিকা সর্বদা সত্য ও বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ পরিবেশনে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ।
বর্তমান সময়ে এ ধরনের ভুয়া ফটোকার্ড ও খবর নিয়ে পাঠকদের সচেতনতা জরুরি। যেকোনো সন্দেহজনক খবর যাচাই করার জন্য অনুরোধ রইল।

সম্প্রতি আজকের পত্রিকার নাম ও ফটোকার্ড ব্যবহার করে ‘হরেকৃষ্ণ হরিবোল, দাঁড়িপাল্লা টেনে তোলঃ পরওয়ার’ শিরোনামে একটি ভুয়া ফটোকার্ড সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়েছে। এটি একটি সম্পূর্ণ ভুয়া ফটোকার্ড।
আজকের পত্রিকা কর্তৃপক্ষ নিশ্চিত করছে, এই ধরনের কোনো খবর আজকের পত্রিকাতে কখনোই প্রকাশিত হয়নি। ফটোকার্ডটিতে আজকের পত্রিকার লোগো ব্যবহার করা হলেও এর ভেতরের খবর ও শিরোনাম সম্পূর্ণ মিথ্যা ও বানোয়াট।
আজকের পত্রিকা সর্বদা সত্য ও বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ পরিবেশনে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ।
বর্তমান সময়ে এ ধরনের ভুয়া ফটোকার্ড ও খবর নিয়ে পাঠকদের সচেতনতা জরুরি। যেকোনো সন্দেহজনক খবর যাচাই করার জন্য অনুরোধ রইল।

বাংলাদেশে চলতি বছর প্রথম, দ্বিতীয়, ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণিতে নতুন পাঠ্যক্রম বাস্তবায়ন করা হয়েছে। এই পাঠ্যক্রম নিয়ে সংবাদমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নানা আলোচনা–সমালোচনা চলছে। ফেসবুকে নতুন কারিকুলামের কার্যক্রম দাবি করে বিভিন্ন ভিডিও প্রচার করা হচ্ছে। যেসব ভিডিওতে দাবি করা হচ্ছে, এগুলো নতুন কারিকুলা
০৪ ডিসেম্বর ২০২৩
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সম্প্রতি ভাইরাল একটি ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, রাতের রাস্তার মাঝখানে এক মধ্যবয়সী ব্যক্তি এক হাতে একটি স্বচ্ছ বোতল, অপর হাতে বাঘের মাথায় হাত বুলিয়ে দিচ্ছেন। এমনকি বাঘটির মুখে বোতল গুঁজে দিতেও দেখা যায় তাঁকে।
০২ নভেম্বর ২০২৫
বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস পাকিস্তানের যৌথবাহিনীর চেয়ারম্যানকে ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চল যুক্ত বাংলাদেশের মানচিত্রসংবলিত পতাকা উপহার দিয়েছেন বলে ভারতের সংবাদমাধ্যম ইন্ডিয়া টুডের দাবি সম্পূর্ণ অসত্য ও কল্পনাপ্রসূত বলে জানিয়েছে সিএ (প্রধান উপদেষ্টা) ফ্যাক্ট চেক।
২৮ অক্টোবর ২০২৫
একটি মেরিন পার্কে এক নারী প্রশিক্ষককে চুবিয়ে হত্যা করেছে অরকা বা কিলার তিমি। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এমন একটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছে।
১৩ আগস্ট ২০২৫ফ্যাক্টচেক ডেস্ক

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সম্প্রতি ভাইরাল একটি ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, রাতে রাস্তার মাঝখানে এক মধ্যবয়সী ব্যক্তি এক হাতে একটি স্বচ্ছ বোতল, অপর হাতে বাঘের মাথায় হাত বুলিয়ে দিচ্ছেন। এমনকি বাঘটির মুখে বোতল গুঁজে দিতেও দেখা যায় তাঁকে।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অনেকে এই ভিডিও শেয়ার করে দাবি করছেন, একটি সিসিটিভি ফুটেজ। ক্যাপশনে লেখা হয়েছে, ঘটনাটি ভারতের মধ্যপ্রদেশের পেঞ্চ এলাকার। ওই ব্যক্তি দেশীয় মদ পান করে মাতাল হয়ে রাস্তায় বেরিয়েছিলেন। তিনি এতটা মাতাল ছিলেন যে বাঘকেও মদ খাওয়ানোর চেষ্টা করেন। বাঘ অবশ্য তাঁর হাতে মদ্যপানে রাজি হয়নি! পরে ওই বাঘটিকে উদ্ধার করে বন বিভাগ। বাঘটি ওই ব্যক্তির কোনো ক্ষতি করেনি।

ভিডিওটি দেখে অনেকেই বিস্মিত ও উদ্বিগ্ন—কেউ বিশ্বাস করেছেন, এটি বাস্তব কোনো ঘটনা; কেউ আবার মনে করছেন, এটি নিছকই কৃত্রিম ভিডিও। কিন্তু সত্যিটা কী? দ্য কুইন্টের সাংবাদিক অভিষেক আনন্দ ও ফ্যাক্টচেকিং সংস্থা বুম বিষয়টি অনুসন্ধান করে প্রকৃত ঘটনা প্রকাশ করেছে।
বুম ভিডিওটি নিয়ে বিভিন্ন কিওয়ার্ড দিয়ে এ-সম্পর্কিত প্রতিবেদন অনুসন্ধান করেছে, কিন্তু কোনো নির্ভরযোগ্য সূত্রে এমন ঘটনার খবর পাওয়া যায়নি। এরপর তারা সরাসরি মধ্যপ্রদেশের সেওনি জেলার পুলিশ কন্ট্রোল রুমে যোগাযোগ করে। দ্য কুইন্ট ও বুমকে সেওনি জেলার পুলিশ সুপারের দপ্তর থেকে স্পষ্ট জানানো হয়—তাদের জানামতে এমন কোনো ঘটনা ঘটেনি।
পেঞ্চ টাইগার রিজার্ভের উপপরিচালক রাজনীশ সিংহের সঙ্গে যোগাযোগ করে বিষয়টি যাচাই করা হয়। তিনি বলেন, ভিডিওটির সঙ্গে পেঞ্চ এলাকার কোনো সম্পর্ক নেই। তিনি আরও ব্যাখ্যা দেন, বনের বাঘের সঙ্গে এমন ঘনিষ্ঠভাবে মানুষের যোগাযোগ সম্ভব নয়, যদি না বাঘটিকে বন্দী করে দীর্ঘদিন ধরে পোষ মানানো হয়। তাঁর ভাষায়, ‘বনের বাঘ কখনো এমন আচরণ করে না, এটা বাস্তবে সম্ভব নয়।’
ভিডিওর সন্দেহজনক দিক বা ভিজ্যুয়াল অসংগতি
বুম ভিডিওটির একটি উচ্চমানের সংস্করণ সংগ্রহ করে তাতে কিছু অস্বাভাবিক দিক লক্ষ করে। দেখা যায়, ভিডিওটির পটভূমির দৃশ্যে কিছু অস্পষ্ট বস্তু নড়াচড়া করছে, যা বাস্তব ভিডিওর মতো স্বাভাবিক নয়।
বাঘের মাথায় হাত রাখা ব্যক্তির আঙুলগুলো বিকৃতভাবে বাঁকানো, যেন সফটওয়্যারে তৈরি কৃত্রিম ছায়া। এমনকি হাতে থাকা বোতলের মুখ কখনো দেখা যায়, আবার মিলিয়ে যায়—এই ভিজ্যুয়াল অসংগতিগুলো ইঙ্গিত দেয়, এটি ধারণকৃত কোনো ফুটেজ নয়। সব মিলিয়ে ভিডিওটির একাধিক ফ্রেমে গ্রাফিক বিকৃতি স্পষ্ট।
কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তানির্ভর বিশ্লেষণ
এরপর ভিডিওটি পরীক্ষা করা হয় ডিপফেক-ও-মিটার নামের একটি উন্নত টুলে। এটি তৈরি করেছে ইউনিভার্সিটি অব বাফেলোর মিডিয়া ফরেনসিকস ল্যাব। এই টুল ভিডিওটির বিভিন্ন অংশ বিশ্লেষণ করে দেখায়, এতে ‘উল্লেখযোগ্য মাত্রায় কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাভিত্তিক নির্মাণের চিহ্ন’ রয়েছে।

এরপর বুম তাদের অংশীদার ডিপফেক অ্যানালাইসিস ইউনিটের সাহায্য নেয়। তারা ভিডিওটি পরীক্ষা করে ‘Is It AI’ এবং ‘AI Or Not’—নামক দুটি আলাদা টুলে। উভয় টুলের বিশ্লেষণে দেখা যায়, ভিডিওটি এআই দিয়ে নির্মিত হওয়ার সম্ভাবনা প্রায় ৬৯ শতাংশ।
এই ফলাফল অনুযায়ী বিশেষজ্ঞরা বলেন, ভিডিওর মানুষের সঙ্গে প্রাণীর মিথস্ক্রিয়া এবং আলো-ছায়ার ত্রুটি স্পষ্ট করে দিচ্ছে এটি আসল নয়, বরং জেনারেটিভ এআই প্রযুক্তি ব্যবহার করে বানানো একটি দৃশ্য।
ভিডিওটি ছড়িয়ে পড়ার পর বহু ব্যবহারকারী এটিকে সত্যি বলে বিশ্বাস করেছেন। কিছু পোস্টে দাবি করা হয়েছে, ভিডিওর ওই ব্যক্তির নাম রাজু পাতিল। ৫২ বছর বয়সী ওই ব্যক্তি একজন দিনমজুর। তিনি নেশাগ্রস্ত অবস্থায় রাস্তায় বাঘটিকে আদর করছিলেন এবং আশ্চর্যজনকভাবে অক্ষত অবস্থায় রয়ে গেছেন।
একাধিক কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা শনাক্তকরণ টুলের ফলাফল এবং প্রশাসনিক যাচাই মিলিয়ে নিশ্চিতভাবে বলা যায়—ভিডিওটি বাস্তব নয়, বরং এআই প্রযুক্তি দিয়ে তৈরি একটি কৃত্রিম দৃশ্য। পেঞ্চ টাইগার রিজার্ভের উপপরিচালক রাজনীশ সিংহও সংবাদমাধ্যমকে বলেছেন, ‘এই ভিডিওর কোনো অংশই পেঞ্চের নয়। এটি সম্পূর্ণ ভুয়া।’

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সম্প্রতি ভাইরাল একটি ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, রাতে রাস্তার মাঝখানে এক মধ্যবয়সী ব্যক্তি এক হাতে একটি স্বচ্ছ বোতল, অপর হাতে বাঘের মাথায় হাত বুলিয়ে দিচ্ছেন। এমনকি বাঘটির মুখে বোতল গুঁজে দিতেও দেখা যায় তাঁকে।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অনেকে এই ভিডিও শেয়ার করে দাবি করছেন, একটি সিসিটিভি ফুটেজ। ক্যাপশনে লেখা হয়েছে, ঘটনাটি ভারতের মধ্যপ্রদেশের পেঞ্চ এলাকার। ওই ব্যক্তি দেশীয় মদ পান করে মাতাল হয়ে রাস্তায় বেরিয়েছিলেন। তিনি এতটা মাতাল ছিলেন যে বাঘকেও মদ খাওয়ানোর চেষ্টা করেন। বাঘ অবশ্য তাঁর হাতে মদ্যপানে রাজি হয়নি! পরে ওই বাঘটিকে উদ্ধার করে বন বিভাগ। বাঘটি ওই ব্যক্তির কোনো ক্ষতি করেনি।

ভিডিওটি দেখে অনেকেই বিস্মিত ও উদ্বিগ্ন—কেউ বিশ্বাস করেছেন, এটি বাস্তব কোনো ঘটনা; কেউ আবার মনে করছেন, এটি নিছকই কৃত্রিম ভিডিও। কিন্তু সত্যিটা কী? দ্য কুইন্টের সাংবাদিক অভিষেক আনন্দ ও ফ্যাক্টচেকিং সংস্থা বুম বিষয়টি অনুসন্ধান করে প্রকৃত ঘটনা প্রকাশ করেছে।
বুম ভিডিওটি নিয়ে বিভিন্ন কিওয়ার্ড দিয়ে এ-সম্পর্কিত প্রতিবেদন অনুসন্ধান করেছে, কিন্তু কোনো নির্ভরযোগ্য সূত্রে এমন ঘটনার খবর পাওয়া যায়নি। এরপর তারা সরাসরি মধ্যপ্রদেশের সেওনি জেলার পুলিশ কন্ট্রোল রুমে যোগাযোগ করে। দ্য কুইন্ট ও বুমকে সেওনি জেলার পুলিশ সুপারের দপ্তর থেকে স্পষ্ট জানানো হয়—তাদের জানামতে এমন কোনো ঘটনা ঘটেনি।
পেঞ্চ টাইগার রিজার্ভের উপপরিচালক রাজনীশ সিংহের সঙ্গে যোগাযোগ করে বিষয়টি যাচাই করা হয়। তিনি বলেন, ভিডিওটির সঙ্গে পেঞ্চ এলাকার কোনো সম্পর্ক নেই। তিনি আরও ব্যাখ্যা দেন, বনের বাঘের সঙ্গে এমন ঘনিষ্ঠভাবে মানুষের যোগাযোগ সম্ভব নয়, যদি না বাঘটিকে বন্দী করে দীর্ঘদিন ধরে পোষ মানানো হয়। তাঁর ভাষায়, ‘বনের বাঘ কখনো এমন আচরণ করে না, এটা বাস্তবে সম্ভব নয়।’
ভিডিওর সন্দেহজনক দিক বা ভিজ্যুয়াল অসংগতি
বুম ভিডিওটির একটি উচ্চমানের সংস্করণ সংগ্রহ করে তাতে কিছু অস্বাভাবিক দিক লক্ষ করে। দেখা যায়, ভিডিওটির পটভূমির দৃশ্যে কিছু অস্পষ্ট বস্তু নড়াচড়া করছে, যা বাস্তব ভিডিওর মতো স্বাভাবিক নয়।
বাঘের মাথায় হাত রাখা ব্যক্তির আঙুলগুলো বিকৃতভাবে বাঁকানো, যেন সফটওয়্যারে তৈরি কৃত্রিম ছায়া। এমনকি হাতে থাকা বোতলের মুখ কখনো দেখা যায়, আবার মিলিয়ে যায়—এই ভিজ্যুয়াল অসংগতিগুলো ইঙ্গিত দেয়, এটি ধারণকৃত কোনো ফুটেজ নয়। সব মিলিয়ে ভিডিওটির একাধিক ফ্রেমে গ্রাফিক বিকৃতি স্পষ্ট।
কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তানির্ভর বিশ্লেষণ
এরপর ভিডিওটি পরীক্ষা করা হয় ডিপফেক-ও-মিটার নামের একটি উন্নত টুলে। এটি তৈরি করেছে ইউনিভার্সিটি অব বাফেলোর মিডিয়া ফরেনসিকস ল্যাব। এই টুল ভিডিওটির বিভিন্ন অংশ বিশ্লেষণ করে দেখায়, এতে ‘উল্লেখযোগ্য মাত্রায় কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাভিত্তিক নির্মাণের চিহ্ন’ রয়েছে।

এরপর বুম তাদের অংশীদার ডিপফেক অ্যানালাইসিস ইউনিটের সাহায্য নেয়। তারা ভিডিওটি পরীক্ষা করে ‘Is It AI’ এবং ‘AI Or Not’—নামক দুটি আলাদা টুলে। উভয় টুলের বিশ্লেষণে দেখা যায়, ভিডিওটি এআই দিয়ে নির্মিত হওয়ার সম্ভাবনা প্রায় ৬৯ শতাংশ।
এই ফলাফল অনুযায়ী বিশেষজ্ঞরা বলেন, ভিডিওর মানুষের সঙ্গে প্রাণীর মিথস্ক্রিয়া এবং আলো-ছায়ার ত্রুটি স্পষ্ট করে দিচ্ছে এটি আসল নয়, বরং জেনারেটিভ এআই প্রযুক্তি ব্যবহার করে বানানো একটি দৃশ্য।
ভিডিওটি ছড়িয়ে পড়ার পর বহু ব্যবহারকারী এটিকে সত্যি বলে বিশ্বাস করেছেন। কিছু পোস্টে দাবি করা হয়েছে, ভিডিওর ওই ব্যক্তির নাম রাজু পাতিল। ৫২ বছর বয়সী ওই ব্যক্তি একজন দিনমজুর। তিনি নেশাগ্রস্ত অবস্থায় রাস্তায় বাঘটিকে আদর করছিলেন এবং আশ্চর্যজনকভাবে অক্ষত অবস্থায় রয়ে গেছেন।
একাধিক কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা শনাক্তকরণ টুলের ফলাফল এবং প্রশাসনিক যাচাই মিলিয়ে নিশ্চিতভাবে বলা যায়—ভিডিওটি বাস্তব নয়, বরং এআই প্রযুক্তি দিয়ে তৈরি একটি কৃত্রিম দৃশ্য। পেঞ্চ টাইগার রিজার্ভের উপপরিচালক রাজনীশ সিংহও সংবাদমাধ্যমকে বলেছেন, ‘এই ভিডিওর কোনো অংশই পেঞ্চের নয়। এটি সম্পূর্ণ ভুয়া।’

বাংলাদেশে চলতি বছর প্রথম, দ্বিতীয়, ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণিতে নতুন পাঠ্যক্রম বাস্তবায়ন করা হয়েছে। এই পাঠ্যক্রম নিয়ে সংবাদমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নানা আলোচনা–সমালোচনা চলছে। ফেসবুকে নতুন কারিকুলামের কার্যক্রম দাবি করে বিভিন্ন ভিডিও প্রচার করা হচ্ছে। যেসব ভিডিওতে দাবি করা হচ্ছে, এগুলো নতুন কারিকুলা
০৪ ডিসেম্বর ২০২৩
সম্প্রতি আজকের পত্রিকার নাম ও ফটোকার্ড ব্যবহার করে ‘হরেকৃষ্ণ হরিবোল, দাঁড়িপাল্লা টেনে তোলঃ পরওয়ার’ শিরোনামে একটি ভুয়া ফটোকার্ড সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়েছে।
০৩ নভেম্বর ২০২৫
বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস পাকিস্তানের যৌথবাহিনীর চেয়ারম্যানকে ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চল যুক্ত বাংলাদেশের মানচিত্রসংবলিত পতাকা উপহার দিয়েছেন বলে ভারতের সংবাদমাধ্যম ইন্ডিয়া টুডের দাবি সম্পূর্ণ অসত্য ও কল্পনাপ্রসূত বলে জানিয়েছে সিএ (প্রধান উপদেষ্টা) ফ্যাক্ট চেক।
২৮ অক্টোবর ২০২৫
একটি মেরিন পার্কে এক নারী প্রশিক্ষককে চুবিয়ে হত্যা করেছে অরকা বা কিলার তিমি। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এমন একটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছে।
১৩ আগস্ট ২০২৫ফ্যাক্টচেক ডেস্ক

বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস পাকিস্তানের যৌথবাহিনীর চেয়ারম্যানকে ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চল যুক্ত বাংলাদেশের মানচিত্রসংবলিত পতাকা উপহার দিয়েছেন বলে ভারতের সংবাদমাধ্যম ইন্ডিয়া টুডের দাবি সম্পূর্ণ অসত্য ও কল্পনাপ্রসূত বলে জানিয়েছে সিএ (প্রধান উপদেষ্টা) ফ্যাক্ট চেক।
ভারতের সংবাদমাধ্যমটি গতকাল এক প্রতিবেদনে দাবি করে, পাকিস্তানের যৌথবাহিনীর চেয়ারম্যান জেনারেল সাহির শামশাদ মির্জাকে এমন একটি পতাকা উপহার দিয়েছেন অধ্যাপক ইউনূস, যেখানে ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চল বাংলাদেশের মানচিত্রের সঙ্গে যুক্ত করা হয়েছে।
সিএ ফ্যাক্ট চেক জানায়, প্রকৃতপক্ষে অধ্যাপক ইউনূস উপহার দিয়েছেন ‘দ্য আর্ট অব ট্রায়াম্ফ’ নামে একটি চিত্রসংকলন—যেখানে জুলাই গণঅভ্যুত্থানের সময় ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে শিক্ষার্থীদের আঁকা রঙিন গ্রাফিতি ও দেয়ালচিত্র সংকলিত হয়েছে।
‘দ্য আর্ট অব ট্রায়াম্ফ’ জুলাই স্মৃতি ফাউন্ডেশন প্রকাশিত একটি সচিত্র দলিল, যেখানে ছাত্র-জনতার আত্মত্যাগে অর্জিত বিপ্লবের ইতিহাস ফুটে উঠেছে।
গ্রাফিতি সংকলনের প্রচ্ছদে জুলাই গণঅভ্যুত্থানের শহীদ আবু সাইদের পিছনে রক্তরাঙ্গা বাংলাদেশের মানচিত্র প্রদর্শিত হয়েছে।
প্রচ্ছদে দৃশ্যমান মানচিত্রটি গ্রাফিতি হিসেবে অঙ্কিত হওয়ায় বাংলাদেশের মূল মানচিত্রের পরিমাপের কিছুটা হেরফের হয়েছে বলে কারো কাছে মনে হতে পারে। কিন্তু ভারতের উত্তর পূর্বাঞ্চলের কোনো অংশ গ্রাফিতি মানচিত্রটিতে অন্তর্ভুক্ত হয়েছে বলে দাবি করাটা সম্পূর্ণ অসত্য এবং কল্পনাপ্রসূত। বাংলাদেশের মানচিত্রের সাথে উল্লেখিত গ্রাফিতিতে দৃশ্যমান মানচিত্রের তুলনামূলক বিশ্লেষণে দেখা যাচ্ছে, অঙ্কিত মানচিত্রটিতে বাংলাদেশের প্রকৃত মানচিত্র প্রায় হুবহুভাবেই প্রতিফলিত হয়েছে।
প্রধান উপদেষ্টা এর আগেও একই গ্রাফিতি সংকলন ‘দ্য আর্ট অব ট্রায়াম্ফ’ জাতিসংঘের মহাসচিব, সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন এবং কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডোসহ বিশ্ব নেতাদের উপহার দিয়েছেন।

বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস পাকিস্তানের যৌথবাহিনীর চেয়ারম্যানকে ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চল যুক্ত বাংলাদেশের মানচিত্রসংবলিত পতাকা উপহার দিয়েছেন বলে ভারতের সংবাদমাধ্যম ইন্ডিয়া টুডের দাবি সম্পূর্ণ অসত্য ও কল্পনাপ্রসূত বলে জানিয়েছে সিএ (প্রধান উপদেষ্টা) ফ্যাক্ট চেক।
ভারতের সংবাদমাধ্যমটি গতকাল এক প্রতিবেদনে দাবি করে, পাকিস্তানের যৌথবাহিনীর চেয়ারম্যান জেনারেল সাহির শামশাদ মির্জাকে এমন একটি পতাকা উপহার দিয়েছেন অধ্যাপক ইউনূস, যেখানে ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চল বাংলাদেশের মানচিত্রের সঙ্গে যুক্ত করা হয়েছে।
সিএ ফ্যাক্ট চেক জানায়, প্রকৃতপক্ষে অধ্যাপক ইউনূস উপহার দিয়েছেন ‘দ্য আর্ট অব ট্রায়াম্ফ’ নামে একটি চিত্রসংকলন—যেখানে জুলাই গণঅভ্যুত্থানের সময় ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে শিক্ষার্থীদের আঁকা রঙিন গ্রাফিতি ও দেয়ালচিত্র সংকলিত হয়েছে।
‘দ্য আর্ট অব ট্রায়াম্ফ’ জুলাই স্মৃতি ফাউন্ডেশন প্রকাশিত একটি সচিত্র দলিল, যেখানে ছাত্র-জনতার আত্মত্যাগে অর্জিত বিপ্লবের ইতিহাস ফুটে উঠেছে।
গ্রাফিতি সংকলনের প্রচ্ছদে জুলাই গণঅভ্যুত্থানের শহীদ আবু সাইদের পিছনে রক্তরাঙ্গা বাংলাদেশের মানচিত্র প্রদর্শিত হয়েছে।
প্রচ্ছদে দৃশ্যমান মানচিত্রটি গ্রাফিতি হিসেবে অঙ্কিত হওয়ায় বাংলাদেশের মূল মানচিত্রের পরিমাপের কিছুটা হেরফের হয়েছে বলে কারো কাছে মনে হতে পারে। কিন্তু ভারতের উত্তর পূর্বাঞ্চলের কোনো অংশ গ্রাফিতি মানচিত্রটিতে অন্তর্ভুক্ত হয়েছে বলে দাবি করাটা সম্পূর্ণ অসত্য এবং কল্পনাপ্রসূত। বাংলাদেশের মানচিত্রের সাথে উল্লেখিত গ্রাফিতিতে দৃশ্যমান মানচিত্রের তুলনামূলক বিশ্লেষণে দেখা যাচ্ছে, অঙ্কিত মানচিত্রটিতে বাংলাদেশের প্রকৃত মানচিত্র প্রায় হুবহুভাবেই প্রতিফলিত হয়েছে।
প্রধান উপদেষ্টা এর আগেও একই গ্রাফিতি সংকলন ‘দ্য আর্ট অব ট্রায়াম্ফ’ জাতিসংঘের মহাসচিব, সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন এবং কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডোসহ বিশ্ব নেতাদের উপহার দিয়েছেন।

বাংলাদেশে চলতি বছর প্রথম, দ্বিতীয়, ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণিতে নতুন পাঠ্যক্রম বাস্তবায়ন করা হয়েছে। এই পাঠ্যক্রম নিয়ে সংবাদমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নানা আলোচনা–সমালোচনা চলছে। ফেসবুকে নতুন কারিকুলামের কার্যক্রম দাবি করে বিভিন্ন ভিডিও প্রচার করা হচ্ছে। যেসব ভিডিওতে দাবি করা হচ্ছে, এগুলো নতুন কারিকুলা
০৪ ডিসেম্বর ২০২৩
সম্প্রতি আজকের পত্রিকার নাম ও ফটোকার্ড ব্যবহার করে ‘হরেকৃষ্ণ হরিবোল, দাঁড়িপাল্লা টেনে তোলঃ পরওয়ার’ শিরোনামে একটি ভুয়া ফটোকার্ড সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়েছে।
০৩ নভেম্বর ২০২৫
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সম্প্রতি ভাইরাল একটি ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, রাতের রাস্তার মাঝখানে এক মধ্যবয়সী ব্যক্তি এক হাতে একটি স্বচ্ছ বোতল, অপর হাতে বাঘের মাথায় হাত বুলিয়ে দিচ্ছেন। এমনকি বাঘটির মুখে বোতল গুঁজে দিতেও দেখা যায় তাঁকে।
০২ নভেম্বর ২০২৫
একটি মেরিন পার্কে এক নারী প্রশিক্ষককে চুবিয়ে হত্যা করেছে অরকা বা কিলার তিমি। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এমন একটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছে।
১৩ আগস্ট ২০২৫ফ্যাক্টচেক ডেস্ক

একটি মেরিন পার্কে এক নারী প্রশিক্ষককে চুবিয়ে হত্যা করেছে অরকা বা কিলার তিমি। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এমন একটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছে। মর্মান্তিক ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়েছে। ভিডিওতে দাবি করা হয়, প্যাসিফিক ব্লু মেরিন পার্কে ‘জেসিকা র্যাডক্লিফ’ নামে একজন প্রশিক্ষককে একটি অরকা আক্রমণ করে হত্যা করেছে।
ভিডিওটি টিকটক, ফেসবুক এবং এক্সে ভাইরাল হয়েছে। তবে, একাধিক ফ্যাক্ট-চেকিং সংস্থা নিশ্চিত করেছে যে, এই ভিডিওটি সম্পূর্ণ বানোয়াট এবং এর কোনো বাস্তব ভিত্তি নেই।
ভিডিওতে যা দেখানো হয়েছে
ভাইরাল হওয়া ক্লিপটিতে দেখা যায়, একজন তরুণী একটি অরকার পিঠে দাঁড়িয়ে নাচছেন। দর্শকেরা তখন উল্লাস করছিল। কিন্তু কিছুক্ষণ পর হঠাৎ অরকাটি ওই তরুণীকে আক্রমণ করে পানির নিচে টেনে নিয়ে যায়। ভিডিওটি শেয়ার করা অনেক ব্যবহারকারী দাবি করেছেন, পানির নিচে নিয়ে যাওয়ার কয়েক মিনিটের মধ্যেই ওই তরুণীর মৃত্যু হয়।
ঘটনা বা প্রশিক্ষকের কোনো প্রমাণ নেই
ভিডিওটি ব্যাপকভাবে শেয়ার হওয়া সত্ত্বেও, জেসিকা র্যাডক্লিফ নামে একজন প্রশিক্ষক অরকার আক্রমণে মারা গেছেন—এই দাবির পক্ষে কোনো বিশ্বাসযোগ্য প্রমাণ পাওয়া যায়নি। কর্তৃপক্ষ, মেরিন পার্ক এবং প্রতিষ্ঠিত সংবাদমাধ্যমগুলো জেসিকা র্যাডক্লিফের অস্তিত্ব বা এমন কোনো ঘটনার রেকর্ড খুঁজে পায়নি। দ্য স্টার পত্রিকার মতে, ভিডিওটি কাল্পনিক; এমনকি ভিডিওতে থাকা কণ্ঠস্বরগুলোও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার মাধ্যমে তৈরি বলে মনে করা হচ্ছে।
অন্যান্য প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে, এমন দুর্ঘটনার ক্ষেত্রে সাধারণত যে ধরনের আনুষ্ঠানিক বিবৃতি দেওয়া হয়, এই ঘটনায় তার কোনোটিই পাওয়া যায়নি। ফরেনসিক বিশ্লেষণ অনুসারে, ভিডিওর মধ্যে পানির অস্বাভাবিক গতিবিধি এবং অদ্ভুত বিরতিও নিশ্চিত করে যে এটি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার মাধ্যমে তৈরি করা হয়েছে। এমনকি ভিডিওতে যে পার্কের নাম বলা হয়েছে, সেটিও ভুয়া।

সম্পূর্ণভাবে এআই-নির্মিত
ফোর্বস ম্যাগাজিন ক্লিপটিকে ‘একটি প্রতারণা’ বলে চিহ্নিত করেছে। তারা উল্লেখ করেছে, এমন একটি মর্মান্তিক ঘটনা যদি সত্যিই ঘটতো, তাহলে তা আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমে শিরোনাম হতো। ভিডিওর দৃশ্য এবং শব্দ সম্ভবত চাঞ্চল্যকর প্রভাব তৈরির জন্য কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা টুল দিয়ে সাজানো হয়েছে। দ্য ইকোনমিক টাইমস উল্লেখ করেছে, এই গল্পের চরিত্র এবং নাম কোনো যাচাইযোগ্য রেকর্ডের সঙ্গে মেলে না। ফলে বলা যেতে পারে যে, পুরো গল্পটি বানোয়াট।
সত্যিকারের দুর্ঘটনার সঙ্গে মিল
এই ধরনের প্রতারণামূলক ভিডিওগুলোতে কিছুটা সত্যের ওপর ভিত্তি করে বিশ্বাসযোগ্যতা অর্জনের চেষ্টা করা হয়। ভিডিওটি ২০১০ সালে সি ওয়ার্ল্ডে ডন ব্রাঞ্চেউ এবং ২০০৯ সালে অ্যালেক্সিস মার্টিনেজ-এর বাস্তব জীবনের মৃত্যুর ঘটনা স্মরণ করিয়ে দেয়। উভয় প্রশিক্ষকই অরকার আক্রমণে মারা যান। কিন্তু এই ঘটনাগুলো জেসিকা র্যাডক্লিফের গল্পের মতো নয়, কারণ সেগুলো নথিভুক্ত এবং কর্তৃপক্ষের তরফে নিশ্চিত করা হয়েছে।
কেন এই ধরনের প্রতারণা ভাইরাল হয়
বিশেষজ্ঞরা বলেন, একটি ভিডিওর আবেগপূর্ণ তীব্রতা এবং বাস্তবসম্মত উৎপাদন কৌশল এটি ভাইরাল হতে সাহায্য করে। এই ধরনের ক্লিপগুলো বুদ্ধিমান সামুদ্রিক স্তন্যপায়ী প্রাণীদের বন্দী করে রাখার নৈতিকতা নিয়ে মানুষের গভীর উদ্বেগগুলোকে কাজে লাগায়। একই সঙ্গে, এগুলো চাঞ্চল্যকর বিষয়বস্তু ব্যবহার করে দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। পরবর্তীতে ফ্যাক্টচেকিং হলেও ততক্ষণে অনেক দেরি হয়ে যায়।
কথিত জেসিকা র্যাডক্লিফকে নিয়ে অরকার আক্রমণের ভিডিওটি একটি সম্পূর্ণ বানোয়াট। এমন কোনো ঘটনাই ঘটেনি। এই নামে কোনো প্রশিক্ষকের অস্তিত্বেরও কোনো প্রমাণ নেই।

একটি মেরিন পার্কে এক নারী প্রশিক্ষককে চুবিয়ে হত্যা করেছে অরকা বা কিলার তিমি। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এমন একটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছে। মর্মান্তিক ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়েছে। ভিডিওতে দাবি করা হয়, প্যাসিফিক ব্লু মেরিন পার্কে ‘জেসিকা র্যাডক্লিফ’ নামে একজন প্রশিক্ষককে একটি অরকা আক্রমণ করে হত্যা করেছে।
ভিডিওটি টিকটক, ফেসবুক এবং এক্সে ভাইরাল হয়েছে। তবে, একাধিক ফ্যাক্ট-চেকিং সংস্থা নিশ্চিত করেছে যে, এই ভিডিওটি সম্পূর্ণ বানোয়াট এবং এর কোনো বাস্তব ভিত্তি নেই।
ভিডিওতে যা দেখানো হয়েছে
ভাইরাল হওয়া ক্লিপটিতে দেখা যায়, একজন তরুণী একটি অরকার পিঠে দাঁড়িয়ে নাচছেন। দর্শকেরা তখন উল্লাস করছিল। কিন্তু কিছুক্ষণ পর হঠাৎ অরকাটি ওই তরুণীকে আক্রমণ করে পানির নিচে টেনে নিয়ে যায়। ভিডিওটি শেয়ার করা অনেক ব্যবহারকারী দাবি করেছেন, পানির নিচে নিয়ে যাওয়ার কয়েক মিনিটের মধ্যেই ওই তরুণীর মৃত্যু হয়।
ঘটনা বা প্রশিক্ষকের কোনো প্রমাণ নেই
ভিডিওটি ব্যাপকভাবে শেয়ার হওয়া সত্ত্বেও, জেসিকা র্যাডক্লিফ নামে একজন প্রশিক্ষক অরকার আক্রমণে মারা গেছেন—এই দাবির পক্ষে কোনো বিশ্বাসযোগ্য প্রমাণ পাওয়া যায়নি। কর্তৃপক্ষ, মেরিন পার্ক এবং প্রতিষ্ঠিত সংবাদমাধ্যমগুলো জেসিকা র্যাডক্লিফের অস্তিত্ব বা এমন কোনো ঘটনার রেকর্ড খুঁজে পায়নি। দ্য স্টার পত্রিকার মতে, ভিডিওটি কাল্পনিক; এমনকি ভিডিওতে থাকা কণ্ঠস্বরগুলোও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার মাধ্যমে তৈরি বলে মনে করা হচ্ছে।
অন্যান্য প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে, এমন দুর্ঘটনার ক্ষেত্রে সাধারণত যে ধরনের আনুষ্ঠানিক বিবৃতি দেওয়া হয়, এই ঘটনায় তার কোনোটিই পাওয়া যায়নি। ফরেনসিক বিশ্লেষণ অনুসারে, ভিডিওর মধ্যে পানির অস্বাভাবিক গতিবিধি এবং অদ্ভুত বিরতিও নিশ্চিত করে যে এটি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার মাধ্যমে তৈরি করা হয়েছে। এমনকি ভিডিওতে যে পার্কের নাম বলা হয়েছে, সেটিও ভুয়া।

সম্পূর্ণভাবে এআই-নির্মিত
ফোর্বস ম্যাগাজিন ক্লিপটিকে ‘একটি প্রতারণা’ বলে চিহ্নিত করেছে। তারা উল্লেখ করেছে, এমন একটি মর্মান্তিক ঘটনা যদি সত্যিই ঘটতো, তাহলে তা আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমে শিরোনাম হতো। ভিডিওর দৃশ্য এবং শব্দ সম্ভবত চাঞ্চল্যকর প্রভাব তৈরির জন্য কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা টুল দিয়ে সাজানো হয়েছে। দ্য ইকোনমিক টাইমস উল্লেখ করেছে, এই গল্পের চরিত্র এবং নাম কোনো যাচাইযোগ্য রেকর্ডের সঙ্গে মেলে না। ফলে বলা যেতে পারে যে, পুরো গল্পটি বানোয়াট।
সত্যিকারের দুর্ঘটনার সঙ্গে মিল
এই ধরনের প্রতারণামূলক ভিডিওগুলোতে কিছুটা সত্যের ওপর ভিত্তি করে বিশ্বাসযোগ্যতা অর্জনের চেষ্টা করা হয়। ভিডিওটি ২০১০ সালে সি ওয়ার্ল্ডে ডন ব্রাঞ্চেউ এবং ২০০৯ সালে অ্যালেক্সিস মার্টিনেজ-এর বাস্তব জীবনের মৃত্যুর ঘটনা স্মরণ করিয়ে দেয়। উভয় প্রশিক্ষকই অরকার আক্রমণে মারা যান। কিন্তু এই ঘটনাগুলো জেসিকা র্যাডক্লিফের গল্পের মতো নয়, কারণ সেগুলো নথিভুক্ত এবং কর্তৃপক্ষের তরফে নিশ্চিত করা হয়েছে।
কেন এই ধরনের প্রতারণা ভাইরাল হয়
বিশেষজ্ঞরা বলেন, একটি ভিডিওর আবেগপূর্ণ তীব্রতা এবং বাস্তবসম্মত উৎপাদন কৌশল এটি ভাইরাল হতে সাহায্য করে। এই ধরনের ক্লিপগুলো বুদ্ধিমান সামুদ্রিক স্তন্যপায়ী প্রাণীদের বন্দী করে রাখার নৈতিকতা নিয়ে মানুষের গভীর উদ্বেগগুলোকে কাজে লাগায়। একই সঙ্গে, এগুলো চাঞ্চল্যকর বিষয়বস্তু ব্যবহার করে দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। পরবর্তীতে ফ্যাক্টচেকিং হলেও ততক্ষণে অনেক দেরি হয়ে যায়।
কথিত জেসিকা র্যাডক্লিফকে নিয়ে অরকার আক্রমণের ভিডিওটি একটি সম্পূর্ণ বানোয়াট। এমন কোনো ঘটনাই ঘটেনি। এই নামে কোনো প্রশিক্ষকের অস্তিত্বেরও কোনো প্রমাণ নেই।

বাংলাদেশে চলতি বছর প্রথম, দ্বিতীয়, ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণিতে নতুন পাঠ্যক্রম বাস্তবায়ন করা হয়েছে। এই পাঠ্যক্রম নিয়ে সংবাদমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নানা আলোচনা–সমালোচনা চলছে। ফেসবুকে নতুন কারিকুলামের কার্যক্রম দাবি করে বিভিন্ন ভিডিও প্রচার করা হচ্ছে। যেসব ভিডিওতে দাবি করা হচ্ছে, এগুলো নতুন কারিকুলা
০৪ ডিসেম্বর ২০২৩
সম্প্রতি আজকের পত্রিকার নাম ও ফটোকার্ড ব্যবহার করে ‘হরেকৃষ্ণ হরিবোল, দাঁড়িপাল্লা টেনে তোলঃ পরওয়ার’ শিরোনামে একটি ভুয়া ফটোকার্ড সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়েছে।
০৩ নভেম্বর ২০২৫
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সম্প্রতি ভাইরাল একটি ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, রাতের রাস্তার মাঝখানে এক মধ্যবয়সী ব্যক্তি এক হাতে একটি স্বচ্ছ বোতল, অপর হাতে বাঘের মাথায় হাত বুলিয়ে দিচ্ছেন। এমনকি বাঘটির মুখে বোতল গুঁজে দিতেও দেখা যায় তাঁকে।
০২ নভেম্বর ২০২৫
বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস পাকিস্তানের যৌথবাহিনীর চেয়ারম্যানকে ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চল যুক্ত বাংলাদেশের মানচিত্রসংবলিত পতাকা উপহার দিয়েছেন বলে ভারতের সংবাদমাধ্যম ইন্ডিয়া টুডের দাবি সম্পূর্ণ অসত্য ও কল্পনাপ্রসূত বলে জানিয়েছে সিএ (প্রধান উপদেষ্টা) ফ্যাক্ট চেক।
২৮ অক্টোবর ২০২৫