Ajker Patrika

তফসিল ঘোষণা দেশকে মহাবিপর্যয়ের দিকে নিয়ে যাবে: ইউপিডিএফ

রাঙামাটি প্রতিনিধি
আপডেট : ১৬ নভেম্বর ২০২৩, ১৯: ১৪
তফসিল ঘোষণা দেশকে মহাবিপর্যয়ের দিকে নিয়ে যাবে: ইউপিডিএফ

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা দেশকে মহাবিপর্যয়ের দিকে নিয়ে যাবে বলে জানিয়েছে পার্বত্য চট্টগ্রামভিত্তিক আঞ্চলিক সংগঠন ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট (ইউপিডিএফ)। গতকাল বৃহস্পতিবার সংগঠনটির প্রচার বিভাগের নিরন চাকমা স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এমনটি জানানো হয়েছে। 

পার্বত্য চট্টগ্রামকে বাদ দিয়ে খণ্ডিতভাবে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা সম্ভব নয় বলেও ওই বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়। 

ইউপিডিএফের সভাপতি প্রসিত খীসার বরাত দিয়ে বিবৃতিতে বলা হয়, চলমান সংঘাতময় পরিস্থিতিতে আগামী দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা দেশকে অনিবার্যভাবে গভীর রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা, অরাজকতা ও মহাবিপর্যয়ের দিকে নিয়ে যাবে। 

পার্বত্য চট্টগ্রাম ও সংখ্যালঘু জাতিসমূহকে বাদ দিয়ে খণ্ডিতভাবে দেশে গণতন্ত্র কায়েম হতে পারে না বলে প্রসিত খীসা বলেন, ‘দেশে বর্তমান সাংবিধানিক সংকট ও গণতন্ত্রহীনতা এ সত্যতার প্রমাণ দেয়।’ 

দেশে বিরাজমান রাজনৈতিক অস্থিরতা ও সহিংসতার মধ্যে সুষ্ঠু, শান্তিপূর্ণ, অংশগ্রহণমূলক ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন হতে পারে না মন্তব্য করে তিনি বলেন, ‘এই সংকট থেকে উত্তরণের জন্য দরকার পার্বত্য চট্টগ্রামে নির্বাচনে অংশ নিয়ে জনগণের আস্থা লাভকারী ক্রিয়াশীল আঞ্চলিক রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিসহ সর্বদলীয় বৈঠক আহ্বান করে একটি অস্থায়ী সরকার গঠন করা, যার দায়িত্ব হবে দেশে সব শ্রেণি ও জাতিসত্তার আশা-আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন ঘটিয়ে একটি প্রকৃত গণতান্ত্রিক সংবিধান রচনা করা।’ 

পার্বত্য চট্টগ্রামে সুষ্ঠু, অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের জন্য শান্তিপূর্ণ, ভয়-ভীতিমুক্ত ও অনুকূল পরিবেশ নেই উল্লেখ করে ইউপিডিএফ নেতা বলেন, ‘যেখানে অঘোষিত অপশাসন ও একটি বিশেষ গোষ্ঠীর মদদপুষ্ট সশস্ত্র ঠ্যাঙাড়ে সন্ত্রাসী বাহিনীর দৌরাত্ম্যে জনগণ অসহায়, যেখানে পাহাড়িদের ন্যূনতম মৌলিক গণতান্ত্রিক অধিকার নির্বাসিত এবং যেখানে ইউপিডিএফসহ পাহাড়িদের রাজনৈতিক দলগুলোর ওপর অবর্ণনীয় রাজনৈতিক দমন-পীড়ন অব্যাহতভাবে চলমান, আনন্দ প্রকাশ চাকমাসহ ইউপিডিএফের নেতা-কর্মী কারাগারে অন্তরীণ, সেখানে সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন কখনোই সম্ভব হতে পারে না।’ 

প্রসিত খীসা সব পক্ষকে সর্বোচ্চ সংযম ও রাজনৈতিক বিচক্ষণতা প্রদর্শন করে গভীর রাজনৈতিক খাদে পতনোন্মুখ অবস্থা থেকে দেশকে উদ্ধার করার আহ্বান জানান।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ওসমান হাদির হত্যাকারীদের গ্রেপ্তারের দাবিতে ঝালকাঠিতে বিক্ষোভ, মহাসড়ক অবরোধ

ঝালকাঠি প্রতিনিধি  
ওসমান হাদির হত্যাকারীদের গ্রেপ্তারের দাবিতে ঝালকাঠিতে বিক্ষোভ। ছবি: আজকের পত্রিকা
ওসমান হাদির হত্যাকারীদের গ্রেপ্তারের দাবিতে ঝালকাঠিতে বিক্ষোভ। ছবি: আজকের পত্রিকা

ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান বিন হাদির হত্যাকারীদের দ্রুত গ্রেপ্তারের দাবিতে তাঁর নিজ জেলা ঝালকাঠিতে আবারও বিক্ষোভ-মিছিল ও মহাসড়ক অবরোধ করেছেন এলাকাবাসী।

আজ শুক্রবার (১৯ ডিসেম্বর) জুমার নামাজ শেষে ঝালকাঠি ঈদগাহ মসজিদ প্রাঙ্গণ থেকে একটি বিক্ষোভ-মিছিল বের হয়। মিছিলটি শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে বরিশাল–খুলনা আঞ্চলিক মহাসড়কের ঝালকাঠি কলেজ মোড়ে এসে রাস্তা অবরোধ করে। এতে ওই সড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।

তবে অবরোধ চলাকালে অ্যাম্বুলেন্স, ফায়ার সার্ভিস, ওষুধ বহনকারী যানসহ জরুরি সেবায় নিয়োজিত যানবাহন চলাচলের সুযোগ দেওয়া হয়।

এ কর্মসূচিতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন, জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি), গণঅধিকার পরিষদ ও বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের নেতা-কর্মীরা অংশগ্রহণ করেন। বিক্ষোভকারীরা বিভিন্ন স্লোগান দিতে থাকেন এবং হত্যাকারীদের দ্রুত আইনের আওতায় আনার দাবি জানান।

মহাসড়ক অবরোধের কারণে সড়কের উভয় পাশে কয়েক কিলোমিটার যানজটের সৃষ্টি হয়। এতে দুর্ভোগে পড়েন যাত্রী ও চালকেরা।

বিক্ষোভকারীরা বলেন, যতক্ষণ পর্যন্ত শরিফ ওসমান বিন হাদির হত্যাকারীদের গ্রেপ্তার করে বিচারের আওতায় আনা না হবে, ততক্ষণ পর্যন্ত তাঁদের আন্দোলন চলমান থাকবে। প্রয়োজনে আরও কঠোর কর্মসূচির ঘোষণা দেওয়া হবে বলেও জানান তাঁরা।

একই ইস্যুতে জেলার নলছিটি উপজেলায়ও জুমার নামাজের পরে বিক্ষোভ-মিছিল করেছেন এলাকাবাসী।

উল্লেখ্য, ওসমান হাদির বাড়ি ঝালকাঠির নলছিটি উপজেলার খাসমহল এলাকায়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

শ্রীপুরে চোর ধরতে গিয়ে পরিত্যক্ত ঘরে মিলল নিখোঁজ ব্যবসায়ীর লাশ

শ্রীপুর (গাজীপুর) প্রতিনিধি  
লাশ উদ্ধারের পর নিহত ব্যক্তির স্বজনেরা কান্নায় ভেঙে পড়েন। ছবি: আজকের পত্রিকা
লাশ উদ্ধারের পর নিহত ব্যক্তির স্বজনেরা কান্নায় ভেঙে পড়েন। ছবি: আজকের পত্রিকা

গাজীপুরের শ্রীপুরে নিখোঁজের আড়াই মাস পর একটি পরিত্যক্ত টিনশেড ঘর থেকে এক ব্যবসায়ীর মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। আজ শুক্রবার (১৯ ডিসেম্বর) দুপুরে উপজেলার রাজাবাড়ি ইউনিয়নের পারুলী নদীর ওপর নির্মিত পরিত্যক্ত বেইলি ব্রিজের নিচে থাকা ওই ঘর থেকে মরদেহটি উদ্ধার করা হয়।

নিহত ব্যবসায়ীর নাম মো. আসাদুজ্জামান সরকার ওরফে আসাদ (৫০)। তিনি রাজাবাড়ি ইউনিয়নের মিটালু গ্রামের মৃত মফিজ উদ্দিনের ছেলে এবং রাজাবাড়ি বাজারে একটি ফার্নিচারের দোকান পরিচালনা করতেন।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ভোরের দিকে রাজাবাড়ি বাজারে চোর প্রবেশ করেছে—এমন খবরে বাজারের ব্যবসায়ী ও স্থানীয় লোকজন চোরকে ধাওয়া দেন। একপর্যায়ে ব্রিজের নিচে পরিত্যক্ত টিনশেড ঘরে চোর খুঁজতে গিয়ে একটি মরদেহ দেখতে পান তাঁরা। পরে পুলিশে খবর দেওয়া হয়।

নিহতের ছেলে জনি সরকার জানান, চলতি বছরের ২৩ সেপ্টেম্বর বিকেলে তাঁর বাবা বাড়ি থেকে দোকানের উদ্দেশে বের হন। রাতে বাড়ি না ফেরায় পরিবারের লোকজন খোঁজাখুঁজি শুরু করেন। মোবাইল ফোন বন্ধ থাকায় পরদিন ২৪ সেপ্টেম্বর শ্রীপুর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করা হয়। এরপর ঢাকাসহ আশপাশের বিভিন্ন এলাকায় খোঁজ করা হলেও কোনো সন্ধান পাওয়া যায়নি।

জনি সরকার বলেন, ‘আজ দুপুরে জানতে পারি বাজারের পাশে একটি পরিত্যক্ত ঘরে মরদেহ পড়ে আছে। এসে বাবার পরনের গেঞ্জি, লুঙ্গি ও দাঁড়ি দেখে মরদেহ শনাক্ত করি। কীভাবে বাবার মৃত্যু হয়েছে বা কে জড়িত—কিছুই বুঝতে পারছি না।’

রাজাবাড়ি বাজারের ব্যবসায়ী লোকমান হোসেন বলেন, ভোর সাড়ে ৪টার দিকে বাজারে চোর ঢুকেছে বলে নিরাপত্তা প্রহরীরা চিৎকার দেন। তখন ব্যবসায়ী ও স্থানীয় লোকজন ধাওয়া দিয়ে পরিত্যক্ত ঘরে ঢুকে মরদেহ দেখতে পান।

শ্রীপুর থানার পরিদর্শক (অপারেশন) সঞ্জয় সাহা বলেন, ‘খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে মরদেহ উদ্ধার করেছে। ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহ গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। মৃত্যুর কারণ এখনো নিশ্চিত হওয়া যায়নি। বিষয়টি তদন্ত করে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

চট্টগ্রামে ভারতীয় হাইকমিশন ও মিডিয়া ভবনে নিরাপত্তা জোরদার

নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম
চট্টগ্রাম নগরীর জাকির হোসেন সড়কের ভারতীয় সহকারী হাইকমিশন কার্যালয়ের সামনে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর অবস্থান, নিরাপত্তাচৌকি। ছবি: আজকের পত্রিকা
চট্টগ্রাম নগরীর জাকির হোসেন সড়কের ভারতীয় সহকারী হাইকমিশন কার্যালয়ের সামনে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর অবস্থান, নিরাপত্তাচৌকি। ছবি: আজকের পত্রিকা

ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদিকে হত্যার প্রতিবাদে গতকাল রাতে চট্টগ্রামে ভারতীয় সহকারী হাইকমিশন কার্যালয়ে ইটপাটকেল নিক্ষেপ ও পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষের ঘটনার পর এলাকাটিতে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। পুলিশের সঙ্গে সেখানে সেনাবাহিনীর সাতটি গাড়ি ঘটনাস্থলে নিরাপত্তার দায়িত্বে নিয়োজিত রয়েছে। একই সঙ্গে মিডিয়াপাড়া হিসেবে পরিচিত নগরের কাজীর দেউড়িতে একটি ভবনসহ প্রেসক্লাবের আশপাশে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। শুক্রবার (১৯ ডিসেম্বর) সকালে খুলশীতে ভারতীয় সহকারী হাইকমিশন অফিস ও নগরের কাজীর দেউড়ি, জামালখানসহ আশপাশে এলাকা ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে।

ভারতীয় হাইকমিশন ও বাসভবনের সামনের এক অংশের সড়কে যানবাহন চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। সেখান থেকে সামান্য দূরে পুলিশের একটি দল সন্দেহজনক গাড়িগুলোকে থামিয়ে তল্লাশি করছে।

এদিকে মিডিয়া ভবনখ্যাত নগরের কাজীর দেউড়িতে অবস্থিত কর্ণফুলী টাওয়ারের সামনেসহ আশপাশে সকাল থেকে পুলিশকে নিরাপত্তা দিতে দেখা গেছে। ওই ভবনে ডেইলি স্টার, আজকের পত্রিকাসহ বিভিন্ন গণমাধ্যম ও টিভি চ্যানেল রয়েছে। ঢাকায় ভাঙচুর ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে এখানকার সাংবাদিকদের মধ্যে আতঙ্ক দেখা গেছে।

এর আগ বৃহস্পতিবার রাতে ওসমান হাদির হত্যার প্রতিবাদে চট্টগ্রামে বিক্ষোভ চলাকালে খুলশীতে ভারতীয় সহকারী হাইকমিশন কার্যালয় লক্ষ্য করে ইটপাটকেল নিক্ষেপের ঘটনা ঘটেছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ লাঠিচার্জের পাশাপাশি টিয়ার শেল ও সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করে। ওই ঘটনায় ১২ জনকে আটক করেছে পুলিশ।

পুলিশ জানায়, একটি পক্ষ বিক্ষোভ শেষ করে চলে যাওয়ার প্রায় পাঁচ মিনিট পর হঠাৎ ৫০ থেকে ৬০ জনের একটি দল মিছিল নিয়ে আবার ওই কার্যালয়ের সামনে এসে অবস্থান নেয়। কিছুক্ষণ পর তারা কার্যালয় লক্ষ্য করে বাইরে থেকে ইটপাটকেল নিক্ষেপ শুরু করে। এতে কার্যালয়ের ভেতরে দায়িত্বে থাকা তিন পুলিশ সদস্য সামান্য আহত হন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

‘কোম্পানির লোকেরাই আমার ভাইকে মৃত্যুর মুখে ঠেলে দিয়েছে’

ময়মনসিংহ প্রতিনিধি
হত্যার শিকার দিপু চন্দ্র দাসের স্বজনেরা আহাজারি করছেন। ছবি: আজকের পত্রিকা
হত্যার শিকার দিপু চন্দ্র দাসের স্বজনেরা আহাজারি করছেন। ছবি: আজকের পত্রিকা

ময়মনসিংহের ভালুকায় ধর্ম অবমাননার অভিযোগে পিটিয়ে ও আগুনে পুড়িয়ে হত্যার শিকার দিপু চন্দ্র দাসের (২৮) পরিবার দাবি করেছে, কোম্পানির লোকজনই তাঁকে মৃত্যুর মুখে ঠেলে দিয়েছে।

নিহত দিপু চন্দ্র দাসের বোন চম্পা দাস বিলাপ করে বলেন, ‘আমার ভাই বিএ পাস। সে সাধারণ বাটন মোবাইল ব্যবহার করত। ধর্ম নিয়ে তার যথেষ্ট জ্ঞান ছিল। নবীকে নিয়ে কটূক্তি করার মতো মানুষ সে নয়। উৎপাদন বাড়ানো নিয়ে শ্রমিক ও মালিকপক্ষের সঙ্গে তার বিরোধ ছিল—এমন কথা শুনেছি। সেই কারণেই হয়তো তাকে মিথ্যা অপবাদ দিয়ে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছে।’

তিনি আরও বলেন, কোম্পানির লোকজন চাইলে তাঁকে জনতার হাতে তুলে না দিয়ে পুলিশের কাছে দিতে পারতেন। তাহলে এমন নির্মম মৃত্যু হতো না।

গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে ভালুকার জামিরদিয়া এলাকায় একটি অভিযোগে দিপু চন্দ্র দাসকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়। পরে তাঁর মরদেহে আগুন দেওয়া হয়। ঘটনার পর ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক প্রায় দুই ঘণ্টা অবরোধ করে রাখে বিক্ষুব্ধ জনতা। পরে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে এবং অর্ধদগ্ধ মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠায়।

নিহত দিপু চন্দ্র দাস জেলার তারাকান্দা উপজেলার মোকামিয়াকান্দা গ্রামের রবি চন্দ্র দাসের ছেলে। তিনি দুই বছর ধরে ভালুকার জামিরদিয়া এলাকার পাইওনিয়ার নিটওয়্যারস বিডি লিমিটেডে কাজ করছিলেন।

কোম্পানির সিকিউরিটি গার্ড ফিরোজ মিয়া দাবি করেন, দিপু চন্দ্র দাস ধর্মীয় বিষয়ে কটূক্তি করেছেন—এমন অভিযোগ ওঠার পর তাঁকে ক্ষমা চাইতে বলা হয়। তিনি ক্ষমা না চাওয়ায় বিষয়টি কোম্পানির ভেতরে ও বাইরে ছড়িয়ে পড়ে। একপর্যায়ে বাইরের লোকজন কারখানার গেটের সামনে জড়ো হয়ে ভাঙচুর চালায়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেলে তাঁকে জনতার হাতে তুলে দিতে বাধ্য হয় কর্তৃপক্ষ।

এরপর বিক্ষুব্ধ জনতা দিপু চন্দ্র দাসকে পিটিয়ে হত্যা করে এবং মরদেহ গাছের ডালের সঙ্গে বেঁধে আগুন ধরিয়ে দেয়। তবে এ বিষয়ে কোম্পানির ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের বক্তব্য জানতে গেটে গিয়ে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও অনুমতি পাওয়া যায়নি।

নিহতের বাবা রবি চন্দ্র দাস বলেন, ‘আমার ছেলে ছিল পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি। ধর্ম নিয়ে কটূক্তি করলে দেশে আইন আছে, আইনের মাধ্যমেই বিচার হতো। আমরা গরিব বলে ছেলের জীবন রক্ষা করতে পারিনি।’

নিহতের স্ত্রী মেঘনা রানী বলেন, ‘আমার একমাত্র সন্তান আজ বাবা-হারা। অভাবের সংসার নিয়ে কোথায় যাব, বুঝতে পারছি না। এই হত্যার বিচার চাই।’

ভালুকা মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাহেদুল ইসলাম বলেন, ‘ধর্ম অবমাননার অভিযোগ তুলে দিপু চন্দ্র দাসকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে। বিপুলসংখ্যক মানুষের কারণে তাৎক্ষণিকভাবে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হয়নি। প্রায় দুই ঘণ্টা চেষ্টা চালিয়ে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করা হয়। পরিবারের পক্ষ থেকে অভিযোগ পেলে মামলা নেওয়া হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত