প্রযুক্তি ডেস্ক

হ্যাকিং বলতে বোঝায় ডিজিটাল সম্পত্তিতে (পিসি, সার্ভার, মোবাইল, আইওটি ইত্যাদি) অননুমোদিত প্রবেশ বা পুরো সিস্টেম অবৈধভাবে নিয়ন্ত্রণে নেওয়া। কম্পিউটার সিস্টেম এবং নেটওয়ার্কের নিরাপত্তা দুর্বলতাকে কাজে লাগিয়ে এই কাজ করা হয়। ব্যক্তিগত বা অন্য কারও হয়ে স্বার্থ হাসিলের উদ্দেশ্যে অবৈধভাবে কম্পিউটার সিস্টেম বা নেটওয়ার্কের দুর্বলতা শনাক্ত করা, সিস্টেমে ঢুকে ডেটা চুরি বা পরিবর্তন করা অথবা ভবিষ্যৎ নিয়ন্ত্রণের জন্য সিস্টেমে ম্যালওয়্যার রেখে দেওয়া ইত্যাদি এই হ্যাকিং কার্যক্রমের মধ্যে পড়ে।
চৌকস প্রযুক্তিগত জ্ঞান, সমস্যা সমাধানের দক্ষতা, সৃজনশীলতা ও অধ্যবসায়—এসব মিলিয়েই একজন ব্যক্তি দক্ষ হ্যাকার হয়ে উঠতে পারেন। একটি প্রতিষ্ঠানের নিরাপত্তাব্যবস্থা বাইপাস করা এবং ব্যক্তিগত তথ্য বা সুরক্ষিত ডেটাবেইসে প্রবেশ করতে পারা কিন্তু সহজ কথা নয়। অবশ্য ‘হোয়াইট হ্যাট’ হ্যাকিংয়ে সিস্টেমের নিরাপত্তার উন্নতির জন্য বৈধভাবে প্রবেশাধিকার নেওয়া হয়। এ ধরনের হ্যাকিংয়ের মাধ্যমে সংবেদনশীল ডেটা চুরি, ভাইরাস এবং ম্যালওয়্যার আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি নিরসনের কৌশল নির্ধারণ করা হয়।
‘হ্যাকার’ এবং ‘সাইবার আক্রমণকারী’
‘হ্যাকার’ এবং ‘সাইবার আক্রমণকারী’ দুটি কিন্তু আলাদা বিষয়। অনেকে এটি গুলিয়ে ফেলেন। ‘হ্যাকার’ বলতে বোঝায় ব্যক্তিগত আর্থিক লাভ, তথ্য হাতিয়ে নেওয়া, কোনো বিষয়ে প্রতিবাদ জানানো, বিবৃতি দেওয়া অথবা শুধুই শখের বশে যাঁরা অন্যের সিস্টেমে অনুপ্রবেশ করেন তাঁদের বোঝায়।
অপর পক্ষে সাইবার আক্রমণকারীদের লক্ষ্য থাকে নেটওয়ার্ক এবং কম্পিউটারে অননুমোদিতভাবে প্রবেশ করে আর্থিক লাভ বা গুপ্তচরবৃত্তি করা। এরা সিস্টেমের দুর্বলতাকে ব্যবহার করে শুধুই ব্যক্তিগত লাভ বা ক্ষতি করার জন্য।
বিভিন্ন ধরনের হ্যাকার
এথিক্যাল হ্যাকার (হোয়াইট হ্যাট)
এরা মূলত সিকিউরিটি হ্যাকার। কোনো সিস্টেম বা সফটওয়্যারের দুর্বলতাগুলো চিহ্নিত ও ঠিক করার জন্য তাঁরা সিস্টেমে প্রবেশাধিকার নেন। সিস্টেমে অনুপ্রবেশ করা যায় কি না, সেটি পরীক্ষা এবং দুর্বলতা মূল্যায়ন করেন তাঁরা।
ব্ল্যাক হ্যাট হ্যাকার
ক্র্যাকার (ব্ল্যাক হ্যাট) এমন হ্যাকার যিনি ব্যক্তিগত লাভের জন্য কম্পিউটার সিস্টেমে অবৈধভাবে প্রবেশ করেন। সাধারণত করপোরেট ডেটা চুরি, গোপনীয়তার অধিকার লঙ্ঘন, ব্যাংক অ্যাকাউন্ট থেকে তহবিল স্থানান্তর ইত্যাদি অপরাধমূলক কাজ করেন তাঁরা।
গ্রে হ্যাট হ্যাকার
এ ধরনের হ্যাকাররা এথিক্যাল এবং ব্ল্যাক হ্যাট হ্যাকারদের মাঝামাঝি ক্যাটাগরিতে পড়ে। দুর্বলতা শনাক্ত করতে অবৈধভাবেই সিস্টেমে প্রবেশ করেন। এরপর মালিকের কাছে সেগুলো প্রকাশ করেন। কিন্তু কাজ করার আগে কখনো অনুমতি নেন না।
স্ক্রিপ্ট কিডিস
এঁরা অদক্ষ হ্যাকার। বিভিন্ন প্ল্যাটফর্ম থেকে বিনা মূল্যে বা টাকা দিয়ে কেনা হ্যাকিং সরঞ্জাম ব্যবহার করে অন্যের কম্পিউটার সিস্টেমে অবৈধভাবে প্রবেশ করেন।
হ্যাকটিভিস্ট
এ ধরনের হ্যাকার তাঁর হ্যাকিং দক্ষতা ব্যবহার করে সামাজিক, ধর্মীয় বা রাজনৈতিক বার্তা ছড়িয়ে দিতে চান। তাঁরা সাধারণত একটি ওয়েবসাইট হাইজ্যাক করেন, অর্থাৎ নিয়ন্ত্রণে নিয়ে নেন। এরপর সেই ওয়েবসাইটে নিজেদের বার্তাসংবলিত ব্যানার ঝুলিয়ে দেন।
বাংলাদেশে প্রায়ই এ ধরনের হ্যাকিংয়ের ঘটনা ঘটে। আগামী ১৫ আগস্ট জাতীয় শোক দিবসে দেশে সাইবার হামলার হুমকি দিয়েছে একটি হ্যাকার গ্রুপ। তারাও নিজেদের হ্যাকটিভিস্ট বলে দাবি করেছে।
ফ্রেকার
এ ধরনের হ্যাকাররা কম্পিউটারের পরিবর্তে টেলিফোনের নিরাপত্তা দুর্বলতা চিহ্নিত করেন এবং সেটি কাজে লাগিয়ে উদ্দেশ্য হাসিল করে।
হ্যাকিংয়ের ধরন এবং কৌশল
কম্পিউটার এবং নেটওয়ার্ক হ্যাকিংগুলো বিভিন্নভাবে করা হয়। অত্যন্ত কার্যকর এবং মারাত্মক এসকিউএল ইনজেকশন আক্রমণ থেকে শুরু করে অতি সাধারণ ডিনায়াল অব সার্ভিস অ্যাটাক পর্যন্ত বিভিন্ন ধরনের হ্যাকিং রয়েছে। হ্যাকিং কৌশলগুলোর কিছু কিছুর সঙ্গে সাইবার-আক্রমণের সাধারণ কৌশলগুলোর মিল রয়েছে। হ্যাকিংয়ের সবচেয়ে প্রচলিত কৌশলগুলো নিচে দেওয়া হলো:
ম্যালওয়্যার আক্রমণ
ক্ষতিকর সফটওয়্যার, এটিই ম্যালওয়্যার নামে পরিচিত। এ ধরনের সফটওয়্যার একটি সিস্টেমকে সংক্রমিত করে। ব্যবহারকারীর অজ্ঞাতে অথবা তাঁর সম্মতি ছাড়া পুরো সিস্টেমে এটি ছড়িয়ে পড়ে। এরপর সিস্টেমে রক্ষিত ফাইলের ক্ষতি করে, ডেটা চুরি করে বা অত্যন্ত স্পর্শকাতর তথ্যভান্ডারে অনুপ্রবেশ করে।
র্যানসামওয়্যার আক্রমণ
র্যানসামওয়্যার হলো ম্যালওয়্যারের একটি উন্নত রূপ। এটি আক্রান্তের ডেটা এনক্রিপ্ট করে। অর্থাৎ ব্যবহারকারী তাঁর নিজের ডেটাই আর পড়তে পারেন না। এসব ফাইল পড়তে বা সিস্টেমে প্রবেশাধিকার পুনরুদ্ধার করতে এই হ্যাকাররা মুক্তিপণ দাবি করেন। ব্যাংক অ্যাকাউন্ট, ই-মেইল বা ফেসবুক অ্যাকাউন্ট হ্যাক করে মুক্তিপণ আদায় করাও এ ধরনের হ্যাকিং।
ফিশিং আক্রমণ
ই-মেইল, মোবাইল ফোন বা ওয়েবসাইটের মাধ্যমে বৈধ বা বিশ্বস্ত কনটেন্ট হিসেবে উপস্থাপনের ভান করা হয়—এটি ফিশিং। বন্ধুর নামে ই-মেইল আসা, ই-মেইলে প্রয়োজনীয় লিংক পাঠানো, একটি প্রয়োজনীয় ওয়েবসাইটের মতো ওয়েবসাইটে প্রবেশ করতে প্রলুব্ধ করা, আবার মোটা অঙ্কের লটারি জেতার ই-মেইল করাও এর মধ্যে পড়ে। এসব লিংক বা ওয়েবসাইটে ঢুকলে আপনার সংবেদনশীল তথ্য (যেমন: পাসওয়ার্ড, লগইন সার্টিফিকেট বা আর্থিক ডেটা) হ্যাকাররা হাতিয়ে নিতে পারেন।
ব্রুট ফোর্স অ্যাটাক
ব্রুট ফোর্স অ্যাটাক হলো একটি ট্রায়াল-অ্যান্ড-এরর পদ্ধতি। এ ক্ষেত্রে হ্যাকাররা কোনো ব্যক্তির ব্যবহৃত পাসওয়ার্ড বা এনক্রিপশন কী ক্র্যাক করার জন্য বিভিন্ন সন্নিবেশ বা বিন্যাস দিয়ে চেষ্টা করতে থাকেন। লাখ লাখ বিন্যাস চেষ্টা করার পর হয়তো সফল হন। এ কারণে এটি অত্যন্ত সময়সাপেক্ষ হ্যাকিং। সাধারণত যাঁরা দুর্বল বা পরিচিত পাসওয়ার্ড ব্যবহার করেন, তাঁদের বিরুদ্ধে এটি কার্যকর।
ম্যান-ইন-দ্য-মিডল অ্যাটাক
ডেটা ইভসড্রপিং নামেও পরিচিত। সংবেদনশীল ডেটা বা গোপনীয় তথ্য চুরি করতে বা ক্ষতি করতে এখানে দুটি পক্ষ কাজ করে। একটি পক্ষ প্রত্যক্ষভাবে টার্গেটের সঙ্গে সম্পর্কিত থাকে। আরেকটি পক্ষ তার কাছ থেকে প্রয়োজনীয় তথ্য নেয়।
এসকিউএল ইনজেকশন
যেসব সিস্টেমে এসকিউএল (SQL) ডেটাবেইস ব্যবহার করা হয়, সেগুলোর নিরাপত্তা দুর্বলতাকে ব্যবহার করতে এই কৌশল অবলম্বন করেন হ্যাকাররা। তাঁরা একটি ক্ষতিকর এসকিউএল স্টেটমেন্ট সিস্টেমে প্রবেশ করান। এরপর ডেটাবেইসের নিয়ন্ত্রণ তাঁদের কাছে চলে আসে।
ডিস্ট্রিবিউটেড ডিনায়াল-অব-সার্ভিস অ্যাটাক (ডি-ডস)
এটি সাধারণত ডি-ডস (DDoS) আক্রমণ নামেই পরিচিত। এই কৌশলে টার্গেট সিস্টেম (সার্ভার) বা নেটওয়ার্কে তার সক্ষমতার বেশি ভুয়া ট্রাফিক বা রিকোয়েস্ট পাঠানো হয়। এ কারণে সার্ভার ডাউনের ঘটনা ঘটে। পরিষেবা ব্যাহত বা বিভ্রাটের সৃষ্টি হয়। বাংলাদেশে এই ধরনের সাইবার আক্রমণের ঘটনাই বেশি ঘটে।
আগামী ১৫ আগস্ট জাতীয় শোক দিবসে বাংলাদেশে এ ধরনের সাইবার হামলার হুমকিই দিয়েছে একটি হ্যাকার গ্রুপ।
জিরো-ডে এক্সপ্লোয়েট
ব্যবহারকারী বা সেবাদানকারীর অজ্ঞাতে সফটওয়্যার অ্যাপ্লিকেশন বা কম্পিউটার সিস্টেমের দুর্বলতার সুযোগে অনুপ্রবেশ করা এবং ক্ষতিসাধন করা।
ক্রস-সাইট স্ক্রিপ্টিং (XSS) আক্রমণ
ব্যবহারকারী কোনো ওয়েবপেজ ভিজিট করলে সেখান থেকেই হ্যাকারের কবলে পড়তে পারেন। তাঁর বিভিন্ন অ্যাকাউন্ট এবং কম্পিউটার হ্যাকারের দখলে চলে যেতে পারে। হ্যাকাররা ওই ওয়েব অ্যাপের নিরাপত্তা দুর্বলতার সুযোগ সেখানে ক্ষতিকর স্ক্রিপ্ট রেখে দেওয়ার মাধ্যমে এটি করেন।
সেশন হাইজ্যাকিং
ম্যান-ইন-দ্য-মিডল অ্যাটাক আক্রমণের মতোই, সেশন হাইজ্যাকিংয়ে একটি সক্রিয় সেশন টোকেন বা কুকি চুরি করে ব্যবহারকারীর অ্যাকাউন্ট বা কম্পিউটার সিস্টেমে প্রবেশ করেন হ্যাকার।
ক্রেডেনশিয়াল রিইউজ অ্যাটাক
অন্য কোনো হ্যাকারের মাধ্যমে বা ত্রুটির কারণে চুরি যাওয়া বা ফাঁস হওয়া লগইন ক্রেডেনশিয়াল (নাম, জন্মতারিখ, পাসওয়ার্ড ইত্যাদি) ব্যবহার করে তথ্য চুরি বা কম্পিউটার সিস্টেমের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে ফেলেন হ্যাকার।
DNS টানেলিং
সুরক্ষা ব্যবস্থাগুলোকে বাইপাস করতে এবং নেটওয়ার্ক থেকে ডেটা হাতিয়ে নিতে ডোমেইন নেটওয়ার্ক সিস্টেম (DNS) প্রোটোকল ব্যবহার করেন হ্যাকাররা।
কোন ডিভাইসগুলো সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ
ল্যাপটপ, ব্যক্তিগত কম্পিউটারের মতো সাধারণ কম্পিউটার সিস্টেমগুলো হ্যাকারদের প্রধান লক্ষ্য। এ ছাড়া স্মার্টফোন, ট্যাবলেট, ইন্টারনেট অব থিংস (IoT) ডিভাইস যেমন: স্মার্ট হোম অ্যাপ্লায়েন্স, সিকিউরিটি ক্যামেরা, মেডিকেল ডিভাইস; নেটওয়ার্ক রাউটার, ওয়াই-ফাই সিগন্যাল ডিস্ট্রিবিউটর, ব্যাংকের এটিএম, নিরাপত্তা ক্যামেরা, আইপি ক্যামেরা, স্মার্ট টিভি, স্মার্ট অ্যাপ্লায়েন্স ইত্যাদি ডিভাইস টার্গেট করেন হ্যাকাররা।
হ্যাকারদের কবল থেকে সুরক্ষার উপায়

হ্যাকিং বলতে বোঝায় ডিজিটাল সম্পত্তিতে (পিসি, সার্ভার, মোবাইল, আইওটি ইত্যাদি) অননুমোদিত প্রবেশ বা পুরো সিস্টেম অবৈধভাবে নিয়ন্ত্রণে নেওয়া। কম্পিউটার সিস্টেম এবং নেটওয়ার্কের নিরাপত্তা দুর্বলতাকে কাজে লাগিয়ে এই কাজ করা হয়। ব্যক্তিগত বা অন্য কারও হয়ে স্বার্থ হাসিলের উদ্দেশ্যে অবৈধভাবে কম্পিউটার সিস্টেম বা নেটওয়ার্কের দুর্বলতা শনাক্ত করা, সিস্টেমে ঢুকে ডেটা চুরি বা পরিবর্তন করা অথবা ভবিষ্যৎ নিয়ন্ত্রণের জন্য সিস্টেমে ম্যালওয়্যার রেখে দেওয়া ইত্যাদি এই হ্যাকিং কার্যক্রমের মধ্যে পড়ে।
চৌকস প্রযুক্তিগত জ্ঞান, সমস্যা সমাধানের দক্ষতা, সৃজনশীলতা ও অধ্যবসায়—এসব মিলিয়েই একজন ব্যক্তি দক্ষ হ্যাকার হয়ে উঠতে পারেন। একটি প্রতিষ্ঠানের নিরাপত্তাব্যবস্থা বাইপাস করা এবং ব্যক্তিগত তথ্য বা সুরক্ষিত ডেটাবেইসে প্রবেশ করতে পারা কিন্তু সহজ কথা নয়। অবশ্য ‘হোয়াইট হ্যাট’ হ্যাকিংয়ে সিস্টেমের নিরাপত্তার উন্নতির জন্য বৈধভাবে প্রবেশাধিকার নেওয়া হয়। এ ধরনের হ্যাকিংয়ের মাধ্যমে সংবেদনশীল ডেটা চুরি, ভাইরাস এবং ম্যালওয়্যার আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি নিরসনের কৌশল নির্ধারণ করা হয়।
‘হ্যাকার’ এবং ‘সাইবার আক্রমণকারী’
‘হ্যাকার’ এবং ‘সাইবার আক্রমণকারী’ দুটি কিন্তু আলাদা বিষয়। অনেকে এটি গুলিয়ে ফেলেন। ‘হ্যাকার’ বলতে বোঝায় ব্যক্তিগত আর্থিক লাভ, তথ্য হাতিয়ে নেওয়া, কোনো বিষয়ে প্রতিবাদ জানানো, বিবৃতি দেওয়া অথবা শুধুই শখের বশে যাঁরা অন্যের সিস্টেমে অনুপ্রবেশ করেন তাঁদের বোঝায়।
অপর পক্ষে সাইবার আক্রমণকারীদের লক্ষ্য থাকে নেটওয়ার্ক এবং কম্পিউটারে অননুমোদিতভাবে প্রবেশ করে আর্থিক লাভ বা গুপ্তচরবৃত্তি করা। এরা সিস্টেমের দুর্বলতাকে ব্যবহার করে শুধুই ব্যক্তিগত লাভ বা ক্ষতি করার জন্য।
বিভিন্ন ধরনের হ্যাকার
এথিক্যাল হ্যাকার (হোয়াইট হ্যাট)
এরা মূলত সিকিউরিটি হ্যাকার। কোনো সিস্টেম বা সফটওয়্যারের দুর্বলতাগুলো চিহ্নিত ও ঠিক করার জন্য তাঁরা সিস্টেমে প্রবেশাধিকার নেন। সিস্টেমে অনুপ্রবেশ করা যায় কি না, সেটি পরীক্ষা এবং দুর্বলতা মূল্যায়ন করেন তাঁরা।
ব্ল্যাক হ্যাট হ্যাকার
ক্র্যাকার (ব্ল্যাক হ্যাট) এমন হ্যাকার যিনি ব্যক্তিগত লাভের জন্য কম্পিউটার সিস্টেমে অবৈধভাবে প্রবেশ করেন। সাধারণত করপোরেট ডেটা চুরি, গোপনীয়তার অধিকার লঙ্ঘন, ব্যাংক অ্যাকাউন্ট থেকে তহবিল স্থানান্তর ইত্যাদি অপরাধমূলক কাজ করেন তাঁরা।
গ্রে হ্যাট হ্যাকার
এ ধরনের হ্যাকাররা এথিক্যাল এবং ব্ল্যাক হ্যাট হ্যাকারদের মাঝামাঝি ক্যাটাগরিতে পড়ে। দুর্বলতা শনাক্ত করতে অবৈধভাবেই সিস্টেমে প্রবেশ করেন। এরপর মালিকের কাছে সেগুলো প্রকাশ করেন। কিন্তু কাজ করার আগে কখনো অনুমতি নেন না।
স্ক্রিপ্ট কিডিস
এঁরা অদক্ষ হ্যাকার। বিভিন্ন প্ল্যাটফর্ম থেকে বিনা মূল্যে বা টাকা দিয়ে কেনা হ্যাকিং সরঞ্জাম ব্যবহার করে অন্যের কম্পিউটার সিস্টেমে অবৈধভাবে প্রবেশ করেন।
হ্যাকটিভিস্ট
এ ধরনের হ্যাকার তাঁর হ্যাকিং দক্ষতা ব্যবহার করে সামাজিক, ধর্মীয় বা রাজনৈতিক বার্তা ছড়িয়ে দিতে চান। তাঁরা সাধারণত একটি ওয়েবসাইট হাইজ্যাক করেন, অর্থাৎ নিয়ন্ত্রণে নিয়ে নেন। এরপর সেই ওয়েবসাইটে নিজেদের বার্তাসংবলিত ব্যানার ঝুলিয়ে দেন।
বাংলাদেশে প্রায়ই এ ধরনের হ্যাকিংয়ের ঘটনা ঘটে। আগামী ১৫ আগস্ট জাতীয় শোক দিবসে দেশে সাইবার হামলার হুমকি দিয়েছে একটি হ্যাকার গ্রুপ। তারাও নিজেদের হ্যাকটিভিস্ট বলে দাবি করেছে।
ফ্রেকার
এ ধরনের হ্যাকাররা কম্পিউটারের পরিবর্তে টেলিফোনের নিরাপত্তা দুর্বলতা চিহ্নিত করেন এবং সেটি কাজে লাগিয়ে উদ্দেশ্য হাসিল করে।
হ্যাকিংয়ের ধরন এবং কৌশল
কম্পিউটার এবং নেটওয়ার্ক হ্যাকিংগুলো বিভিন্নভাবে করা হয়। অত্যন্ত কার্যকর এবং মারাত্মক এসকিউএল ইনজেকশন আক্রমণ থেকে শুরু করে অতি সাধারণ ডিনায়াল অব সার্ভিস অ্যাটাক পর্যন্ত বিভিন্ন ধরনের হ্যাকিং রয়েছে। হ্যাকিং কৌশলগুলোর কিছু কিছুর সঙ্গে সাইবার-আক্রমণের সাধারণ কৌশলগুলোর মিল রয়েছে। হ্যাকিংয়ের সবচেয়ে প্রচলিত কৌশলগুলো নিচে দেওয়া হলো:
ম্যালওয়্যার আক্রমণ
ক্ষতিকর সফটওয়্যার, এটিই ম্যালওয়্যার নামে পরিচিত। এ ধরনের সফটওয়্যার একটি সিস্টেমকে সংক্রমিত করে। ব্যবহারকারীর অজ্ঞাতে অথবা তাঁর সম্মতি ছাড়া পুরো সিস্টেমে এটি ছড়িয়ে পড়ে। এরপর সিস্টেমে রক্ষিত ফাইলের ক্ষতি করে, ডেটা চুরি করে বা অত্যন্ত স্পর্শকাতর তথ্যভান্ডারে অনুপ্রবেশ করে।
র্যানসামওয়্যার আক্রমণ
র্যানসামওয়্যার হলো ম্যালওয়্যারের একটি উন্নত রূপ। এটি আক্রান্তের ডেটা এনক্রিপ্ট করে। অর্থাৎ ব্যবহারকারী তাঁর নিজের ডেটাই আর পড়তে পারেন না। এসব ফাইল পড়তে বা সিস্টেমে প্রবেশাধিকার পুনরুদ্ধার করতে এই হ্যাকাররা মুক্তিপণ দাবি করেন। ব্যাংক অ্যাকাউন্ট, ই-মেইল বা ফেসবুক অ্যাকাউন্ট হ্যাক করে মুক্তিপণ আদায় করাও এ ধরনের হ্যাকিং।
ফিশিং আক্রমণ
ই-মেইল, মোবাইল ফোন বা ওয়েবসাইটের মাধ্যমে বৈধ বা বিশ্বস্ত কনটেন্ট হিসেবে উপস্থাপনের ভান করা হয়—এটি ফিশিং। বন্ধুর নামে ই-মেইল আসা, ই-মেইলে প্রয়োজনীয় লিংক পাঠানো, একটি প্রয়োজনীয় ওয়েবসাইটের মতো ওয়েবসাইটে প্রবেশ করতে প্রলুব্ধ করা, আবার মোটা অঙ্কের লটারি জেতার ই-মেইল করাও এর মধ্যে পড়ে। এসব লিংক বা ওয়েবসাইটে ঢুকলে আপনার সংবেদনশীল তথ্য (যেমন: পাসওয়ার্ড, লগইন সার্টিফিকেট বা আর্থিক ডেটা) হ্যাকাররা হাতিয়ে নিতে পারেন।
ব্রুট ফোর্স অ্যাটাক
ব্রুট ফোর্স অ্যাটাক হলো একটি ট্রায়াল-অ্যান্ড-এরর পদ্ধতি। এ ক্ষেত্রে হ্যাকাররা কোনো ব্যক্তির ব্যবহৃত পাসওয়ার্ড বা এনক্রিপশন কী ক্র্যাক করার জন্য বিভিন্ন সন্নিবেশ বা বিন্যাস দিয়ে চেষ্টা করতে থাকেন। লাখ লাখ বিন্যাস চেষ্টা করার পর হয়তো সফল হন। এ কারণে এটি অত্যন্ত সময়সাপেক্ষ হ্যাকিং। সাধারণত যাঁরা দুর্বল বা পরিচিত পাসওয়ার্ড ব্যবহার করেন, তাঁদের বিরুদ্ধে এটি কার্যকর।
ম্যান-ইন-দ্য-মিডল অ্যাটাক
ডেটা ইভসড্রপিং নামেও পরিচিত। সংবেদনশীল ডেটা বা গোপনীয় তথ্য চুরি করতে বা ক্ষতি করতে এখানে দুটি পক্ষ কাজ করে। একটি পক্ষ প্রত্যক্ষভাবে টার্গেটের সঙ্গে সম্পর্কিত থাকে। আরেকটি পক্ষ তার কাছ থেকে প্রয়োজনীয় তথ্য নেয়।
এসকিউএল ইনজেকশন
যেসব সিস্টেমে এসকিউএল (SQL) ডেটাবেইস ব্যবহার করা হয়, সেগুলোর নিরাপত্তা দুর্বলতাকে ব্যবহার করতে এই কৌশল অবলম্বন করেন হ্যাকাররা। তাঁরা একটি ক্ষতিকর এসকিউএল স্টেটমেন্ট সিস্টেমে প্রবেশ করান। এরপর ডেটাবেইসের নিয়ন্ত্রণ তাঁদের কাছে চলে আসে।
ডিস্ট্রিবিউটেড ডিনায়াল-অব-সার্ভিস অ্যাটাক (ডি-ডস)
এটি সাধারণত ডি-ডস (DDoS) আক্রমণ নামেই পরিচিত। এই কৌশলে টার্গেট সিস্টেম (সার্ভার) বা নেটওয়ার্কে তার সক্ষমতার বেশি ভুয়া ট্রাফিক বা রিকোয়েস্ট পাঠানো হয়। এ কারণে সার্ভার ডাউনের ঘটনা ঘটে। পরিষেবা ব্যাহত বা বিভ্রাটের সৃষ্টি হয়। বাংলাদেশে এই ধরনের সাইবার আক্রমণের ঘটনাই বেশি ঘটে।
আগামী ১৫ আগস্ট জাতীয় শোক দিবসে বাংলাদেশে এ ধরনের সাইবার হামলার হুমকিই দিয়েছে একটি হ্যাকার গ্রুপ।
জিরো-ডে এক্সপ্লোয়েট
ব্যবহারকারী বা সেবাদানকারীর অজ্ঞাতে সফটওয়্যার অ্যাপ্লিকেশন বা কম্পিউটার সিস্টেমের দুর্বলতার সুযোগে অনুপ্রবেশ করা এবং ক্ষতিসাধন করা।
ক্রস-সাইট স্ক্রিপ্টিং (XSS) আক্রমণ
ব্যবহারকারী কোনো ওয়েবপেজ ভিজিট করলে সেখান থেকেই হ্যাকারের কবলে পড়তে পারেন। তাঁর বিভিন্ন অ্যাকাউন্ট এবং কম্পিউটার হ্যাকারের দখলে চলে যেতে পারে। হ্যাকাররা ওই ওয়েব অ্যাপের নিরাপত্তা দুর্বলতার সুযোগ সেখানে ক্ষতিকর স্ক্রিপ্ট রেখে দেওয়ার মাধ্যমে এটি করেন।
সেশন হাইজ্যাকিং
ম্যান-ইন-দ্য-মিডল অ্যাটাক আক্রমণের মতোই, সেশন হাইজ্যাকিংয়ে একটি সক্রিয় সেশন টোকেন বা কুকি চুরি করে ব্যবহারকারীর অ্যাকাউন্ট বা কম্পিউটার সিস্টেমে প্রবেশ করেন হ্যাকার।
ক্রেডেনশিয়াল রিইউজ অ্যাটাক
অন্য কোনো হ্যাকারের মাধ্যমে বা ত্রুটির কারণে চুরি যাওয়া বা ফাঁস হওয়া লগইন ক্রেডেনশিয়াল (নাম, জন্মতারিখ, পাসওয়ার্ড ইত্যাদি) ব্যবহার করে তথ্য চুরি বা কম্পিউটার সিস্টেমের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে ফেলেন হ্যাকার।
DNS টানেলিং
সুরক্ষা ব্যবস্থাগুলোকে বাইপাস করতে এবং নেটওয়ার্ক থেকে ডেটা হাতিয়ে নিতে ডোমেইন নেটওয়ার্ক সিস্টেম (DNS) প্রোটোকল ব্যবহার করেন হ্যাকাররা।
কোন ডিভাইসগুলো সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ
ল্যাপটপ, ব্যক্তিগত কম্পিউটারের মতো সাধারণ কম্পিউটার সিস্টেমগুলো হ্যাকারদের প্রধান লক্ষ্য। এ ছাড়া স্মার্টফোন, ট্যাবলেট, ইন্টারনেট অব থিংস (IoT) ডিভাইস যেমন: স্মার্ট হোম অ্যাপ্লায়েন্স, সিকিউরিটি ক্যামেরা, মেডিকেল ডিভাইস; নেটওয়ার্ক রাউটার, ওয়াই-ফাই সিগন্যাল ডিস্ট্রিবিউটর, ব্যাংকের এটিএম, নিরাপত্তা ক্যামেরা, আইপি ক্যামেরা, স্মার্ট টিভি, স্মার্ট অ্যাপ্লায়েন্স ইত্যাদি ডিভাইস টার্গেট করেন হ্যাকাররা।
হ্যাকারদের কবল থেকে সুরক্ষার উপায়
প্রযুক্তি ডেস্ক

হ্যাকিং বলতে বোঝায় ডিজিটাল সম্পত্তিতে (পিসি, সার্ভার, মোবাইল, আইওটি ইত্যাদি) অননুমোদিত প্রবেশ বা পুরো সিস্টেম অবৈধভাবে নিয়ন্ত্রণে নেওয়া। কম্পিউটার সিস্টেম এবং নেটওয়ার্কের নিরাপত্তা দুর্বলতাকে কাজে লাগিয়ে এই কাজ করা হয়। ব্যক্তিগত বা অন্য কারও হয়ে স্বার্থ হাসিলের উদ্দেশ্যে অবৈধভাবে কম্পিউটার সিস্টেম বা নেটওয়ার্কের দুর্বলতা শনাক্ত করা, সিস্টেমে ঢুকে ডেটা চুরি বা পরিবর্তন করা অথবা ভবিষ্যৎ নিয়ন্ত্রণের জন্য সিস্টেমে ম্যালওয়্যার রেখে দেওয়া ইত্যাদি এই হ্যাকিং কার্যক্রমের মধ্যে পড়ে।
চৌকস প্রযুক্তিগত জ্ঞান, সমস্যা সমাধানের দক্ষতা, সৃজনশীলতা ও অধ্যবসায়—এসব মিলিয়েই একজন ব্যক্তি দক্ষ হ্যাকার হয়ে উঠতে পারেন। একটি প্রতিষ্ঠানের নিরাপত্তাব্যবস্থা বাইপাস করা এবং ব্যক্তিগত তথ্য বা সুরক্ষিত ডেটাবেইসে প্রবেশ করতে পারা কিন্তু সহজ কথা নয়। অবশ্য ‘হোয়াইট হ্যাট’ হ্যাকিংয়ে সিস্টেমের নিরাপত্তার উন্নতির জন্য বৈধভাবে প্রবেশাধিকার নেওয়া হয়। এ ধরনের হ্যাকিংয়ের মাধ্যমে সংবেদনশীল ডেটা চুরি, ভাইরাস এবং ম্যালওয়্যার আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি নিরসনের কৌশল নির্ধারণ করা হয়।
‘হ্যাকার’ এবং ‘সাইবার আক্রমণকারী’
‘হ্যাকার’ এবং ‘সাইবার আক্রমণকারী’ দুটি কিন্তু আলাদা বিষয়। অনেকে এটি গুলিয়ে ফেলেন। ‘হ্যাকার’ বলতে বোঝায় ব্যক্তিগত আর্থিক লাভ, তথ্য হাতিয়ে নেওয়া, কোনো বিষয়ে প্রতিবাদ জানানো, বিবৃতি দেওয়া অথবা শুধুই শখের বশে যাঁরা অন্যের সিস্টেমে অনুপ্রবেশ করেন তাঁদের বোঝায়।
অপর পক্ষে সাইবার আক্রমণকারীদের লক্ষ্য থাকে নেটওয়ার্ক এবং কম্পিউটারে অননুমোদিতভাবে প্রবেশ করে আর্থিক লাভ বা গুপ্তচরবৃত্তি করা। এরা সিস্টেমের দুর্বলতাকে ব্যবহার করে শুধুই ব্যক্তিগত লাভ বা ক্ষতি করার জন্য।
বিভিন্ন ধরনের হ্যাকার
এথিক্যাল হ্যাকার (হোয়াইট হ্যাট)
এরা মূলত সিকিউরিটি হ্যাকার। কোনো সিস্টেম বা সফটওয়্যারের দুর্বলতাগুলো চিহ্নিত ও ঠিক করার জন্য তাঁরা সিস্টেমে প্রবেশাধিকার নেন। সিস্টেমে অনুপ্রবেশ করা যায় কি না, সেটি পরীক্ষা এবং দুর্বলতা মূল্যায়ন করেন তাঁরা।
ব্ল্যাক হ্যাট হ্যাকার
ক্র্যাকার (ব্ল্যাক হ্যাট) এমন হ্যাকার যিনি ব্যক্তিগত লাভের জন্য কম্পিউটার সিস্টেমে অবৈধভাবে প্রবেশ করেন। সাধারণত করপোরেট ডেটা চুরি, গোপনীয়তার অধিকার লঙ্ঘন, ব্যাংক অ্যাকাউন্ট থেকে তহবিল স্থানান্তর ইত্যাদি অপরাধমূলক কাজ করেন তাঁরা।
গ্রে হ্যাট হ্যাকার
এ ধরনের হ্যাকাররা এথিক্যাল এবং ব্ল্যাক হ্যাট হ্যাকারদের মাঝামাঝি ক্যাটাগরিতে পড়ে। দুর্বলতা শনাক্ত করতে অবৈধভাবেই সিস্টেমে প্রবেশ করেন। এরপর মালিকের কাছে সেগুলো প্রকাশ করেন। কিন্তু কাজ করার আগে কখনো অনুমতি নেন না।
স্ক্রিপ্ট কিডিস
এঁরা অদক্ষ হ্যাকার। বিভিন্ন প্ল্যাটফর্ম থেকে বিনা মূল্যে বা টাকা দিয়ে কেনা হ্যাকিং সরঞ্জাম ব্যবহার করে অন্যের কম্পিউটার সিস্টেমে অবৈধভাবে প্রবেশ করেন।
হ্যাকটিভিস্ট
এ ধরনের হ্যাকার তাঁর হ্যাকিং দক্ষতা ব্যবহার করে সামাজিক, ধর্মীয় বা রাজনৈতিক বার্তা ছড়িয়ে দিতে চান। তাঁরা সাধারণত একটি ওয়েবসাইট হাইজ্যাক করেন, অর্থাৎ নিয়ন্ত্রণে নিয়ে নেন। এরপর সেই ওয়েবসাইটে নিজেদের বার্তাসংবলিত ব্যানার ঝুলিয়ে দেন।
বাংলাদেশে প্রায়ই এ ধরনের হ্যাকিংয়ের ঘটনা ঘটে। আগামী ১৫ আগস্ট জাতীয় শোক দিবসে দেশে সাইবার হামলার হুমকি দিয়েছে একটি হ্যাকার গ্রুপ। তারাও নিজেদের হ্যাকটিভিস্ট বলে দাবি করেছে।
ফ্রেকার
এ ধরনের হ্যাকাররা কম্পিউটারের পরিবর্তে টেলিফোনের নিরাপত্তা দুর্বলতা চিহ্নিত করেন এবং সেটি কাজে লাগিয়ে উদ্দেশ্য হাসিল করে।
হ্যাকিংয়ের ধরন এবং কৌশল
কম্পিউটার এবং নেটওয়ার্ক হ্যাকিংগুলো বিভিন্নভাবে করা হয়। অত্যন্ত কার্যকর এবং মারাত্মক এসকিউএল ইনজেকশন আক্রমণ থেকে শুরু করে অতি সাধারণ ডিনায়াল অব সার্ভিস অ্যাটাক পর্যন্ত বিভিন্ন ধরনের হ্যাকিং রয়েছে। হ্যাকিং কৌশলগুলোর কিছু কিছুর সঙ্গে সাইবার-আক্রমণের সাধারণ কৌশলগুলোর মিল রয়েছে। হ্যাকিংয়ের সবচেয়ে প্রচলিত কৌশলগুলো নিচে দেওয়া হলো:
ম্যালওয়্যার আক্রমণ
ক্ষতিকর সফটওয়্যার, এটিই ম্যালওয়্যার নামে পরিচিত। এ ধরনের সফটওয়্যার একটি সিস্টেমকে সংক্রমিত করে। ব্যবহারকারীর অজ্ঞাতে অথবা তাঁর সম্মতি ছাড়া পুরো সিস্টেমে এটি ছড়িয়ে পড়ে। এরপর সিস্টেমে রক্ষিত ফাইলের ক্ষতি করে, ডেটা চুরি করে বা অত্যন্ত স্পর্শকাতর তথ্যভান্ডারে অনুপ্রবেশ করে।
র্যানসামওয়্যার আক্রমণ
র্যানসামওয়্যার হলো ম্যালওয়্যারের একটি উন্নত রূপ। এটি আক্রান্তের ডেটা এনক্রিপ্ট করে। অর্থাৎ ব্যবহারকারী তাঁর নিজের ডেটাই আর পড়তে পারেন না। এসব ফাইল পড়তে বা সিস্টেমে প্রবেশাধিকার পুনরুদ্ধার করতে এই হ্যাকাররা মুক্তিপণ দাবি করেন। ব্যাংক অ্যাকাউন্ট, ই-মেইল বা ফেসবুক অ্যাকাউন্ট হ্যাক করে মুক্তিপণ আদায় করাও এ ধরনের হ্যাকিং।
ফিশিং আক্রমণ
ই-মেইল, মোবাইল ফোন বা ওয়েবসাইটের মাধ্যমে বৈধ বা বিশ্বস্ত কনটেন্ট হিসেবে উপস্থাপনের ভান করা হয়—এটি ফিশিং। বন্ধুর নামে ই-মেইল আসা, ই-মেইলে প্রয়োজনীয় লিংক পাঠানো, একটি প্রয়োজনীয় ওয়েবসাইটের মতো ওয়েবসাইটে প্রবেশ করতে প্রলুব্ধ করা, আবার মোটা অঙ্কের লটারি জেতার ই-মেইল করাও এর মধ্যে পড়ে। এসব লিংক বা ওয়েবসাইটে ঢুকলে আপনার সংবেদনশীল তথ্য (যেমন: পাসওয়ার্ড, লগইন সার্টিফিকেট বা আর্থিক ডেটা) হ্যাকাররা হাতিয়ে নিতে পারেন।
ব্রুট ফোর্স অ্যাটাক
ব্রুট ফোর্স অ্যাটাক হলো একটি ট্রায়াল-অ্যান্ড-এরর পদ্ধতি। এ ক্ষেত্রে হ্যাকাররা কোনো ব্যক্তির ব্যবহৃত পাসওয়ার্ড বা এনক্রিপশন কী ক্র্যাক করার জন্য বিভিন্ন সন্নিবেশ বা বিন্যাস দিয়ে চেষ্টা করতে থাকেন। লাখ লাখ বিন্যাস চেষ্টা করার পর হয়তো সফল হন। এ কারণে এটি অত্যন্ত সময়সাপেক্ষ হ্যাকিং। সাধারণত যাঁরা দুর্বল বা পরিচিত পাসওয়ার্ড ব্যবহার করেন, তাঁদের বিরুদ্ধে এটি কার্যকর।
ম্যান-ইন-দ্য-মিডল অ্যাটাক
ডেটা ইভসড্রপিং নামেও পরিচিত। সংবেদনশীল ডেটা বা গোপনীয় তথ্য চুরি করতে বা ক্ষতি করতে এখানে দুটি পক্ষ কাজ করে। একটি পক্ষ প্রত্যক্ষভাবে টার্গেটের সঙ্গে সম্পর্কিত থাকে। আরেকটি পক্ষ তার কাছ থেকে প্রয়োজনীয় তথ্য নেয়।
এসকিউএল ইনজেকশন
যেসব সিস্টেমে এসকিউএল (SQL) ডেটাবেইস ব্যবহার করা হয়, সেগুলোর নিরাপত্তা দুর্বলতাকে ব্যবহার করতে এই কৌশল অবলম্বন করেন হ্যাকাররা। তাঁরা একটি ক্ষতিকর এসকিউএল স্টেটমেন্ট সিস্টেমে প্রবেশ করান। এরপর ডেটাবেইসের নিয়ন্ত্রণ তাঁদের কাছে চলে আসে।
ডিস্ট্রিবিউটেড ডিনায়াল-অব-সার্ভিস অ্যাটাক (ডি-ডস)
এটি সাধারণত ডি-ডস (DDoS) আক্রমণ নামেই পরিচিত। এই কৌশলে টার্গেট সিস্টেম (সার্ভার) বা নেটওয়ার্কে তার সক্ষমতার বেশি ভুয়া ট্রাফিক বা রিকোয়েস্ট পাঠানো হয়। এ কারণে সার্ভার ডাউনের ঘটনা ঘটে। পরিষেবা ব্যাহত বা বিভ্রাটের সৃষ্টি হয়। বাংলাদেশে এই ধরনের সাইবার আক্রমণের ঘটনাই বেশি ঘটে।
আগামী ১৫ আগস্ট জাতীয় শোক দিবসে বাংলাদেশে এ ধরনের সাইবার হামলার হুমকিই দিয়েছে একটি হ্যাকার গ্রুপ।
জিরো-ডে এক্সপ্লোয়েট
ব্যবহারকারী বা সেবাদানকারীর অজ্ঞাতে সফটওয়্যার অ্যাপ্লিকেশন বা কম্পিউটার সিস্টেমের দুর্বলতার সুযোগে অনুপ্রবেশ করা এবং ক্ষতিসাধন করা।
ক্রস-সাইট স্ক্রিপ্টিং (XSS) আক্রমণ
ব্যবহারকারী কোনো ওয়েবপেজ ভিজিট করলে সেখান থেকেই হ্যাকারের কবলে পড়তে পারেন। তাঁর বিভিন্ন অ্যাকাউন্ট এবং কম্পিউটার হ্যাকারের দখলে চলে যেতে পারে। হ্যাকাররা ওই ওয়েব অ্যাপের নিরাপত্তা দুর্বলতার সুযোগ সেখানে ক্ষতিকর স্ক্রিপ্ট রেখে দেওয়ার মাধ্যমে এটি করেন।
সেশন হাইজ্যাকিং
ম্যান-ইন-দ্য-মিডল অ্যাটাক আক্রমণের মতোই, সেশন হাইজ্যাকিংয়ে একটি সক্রিয় সেশন টোকেন বা কুকি চুরি করে ব্যবহারকারীর অ্যাকাউন্ট বা কম্পিউটার সিস্টেমে প্রবেশ করেন হ্যাকার।
ক্রেডেনশিয়াল রিইউজ অ্যাটাক
অন্য কোনো হ্যাকারের মাধ্যমে বা ত্রুটির কারণে চুরি যাওয়া বা ফাঁস হওয়া লগইন ক্রেডেনশিয়াল (নাম, জন্মতারিখ, পাসওয়ার্ড ইত্যাদি) ব্যবহার করে তথ্য চুরি বা কম্পিউটার সিস্টেমের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে ফেলেন হ্যাকার।
DNS টানেলিং
সুরক্ষা ব্যবস্থাগুলোকে বাইপাস করতে এবং নেটওয়ার্ক থেকে ডেটা হাতিয়ে নিতে ডোমেইন নেটওয়ার্ক সিস্টেম (DNS) প্রোটোকল ব্যবহার করেন হ্যাকাররা।
কোন ডিভাইসগুলো সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ
ল্যাপটপ, ব্যক্তিগত কম্পিউটারের মতো সাধারণ কম্পিউটার সিস্টেমগুলো হ্যাকারদের প্রধান লক্ষ্য। এ ছাড়া স্মার্টফোন, ট্যাবলেট, ইন্টারনেট অব থিংস (IoT) ডিভাইস যেমন: স্মার্ট হোম অ্যাপ্লায়েন্স, সিকিউরিটি ক্যামেরা, মেডিকেল ডিভাইস; নেটওয়ার্ক রাউটার, ওয়াই-ফাই সিগন্যাল ডিস্ট্রিবিউটর, ব্যাংকের এটিএম, নিরাপত্তা ক্যামেরা, আইপি ক্যামেরা, স্মার্ট টিভি, স্মার্ট অ্যাপ্লায়েন্স ইত্যাদি ডিভাইস টার্গেট করেন হ্যাকাররা।
হ্যাকারদের কবল থেকে সুরক্ষার উপায়

হ্যাকিং বলতে বোঝায় ডিজিটাল সম্পত্তিতে (পিসি, সার্ভার, মোবাইল, আইওটি ইত্যাদি) অননুমোদিত প্রবেশ বা পুরো সিস্টেম অবৈধভাবে নিয়ন্ত্রণে নেওয়া। কম্পিউটার সিস্টেম এবং নেটওয়ার্কের নিরাপত্তা দুর্বলতাকে কাজে লাগিয়ে এই কাজ করা হয়। ব্যক্তিগত বা অন্য কারও হয়ে স্বার্থ হাসিলের উদ্দেশ্যে অবৈধভাবে কম্পিউটার সিস্টেম বা নেটওয়ার্কের দুর্বলতা শনাক্ত করা, সিস্টেমে ঢুকে ডেটা চুরি বা পরিবর্তন করা অথবা ভবিষ্যৎ নিয়ন্ত্রণের জন্য সিস্টেমে ম্যালওয়্যার রেখে দেওয়া ইত্যাদি এই হ্যাকিং কার্যক্রমের মধ্যে পড়ে।
চৌকস প্রযুক্তিগত জ্ঞান, সমস্যা সমাধানের দক্ষতা, সৃজনশীলতা ও অধ্যবসায়—এসব মিলিয়েই একজন ব্যক্তি দক্ষ হ্যাকার হয়ে উঠতে পারেন। একটি প্রতিষ্ঠানের নিরাপত্তাব্যবস্থা বাইপাস করা এবং ব্যক্তিগত তথ্য বা সুরক্ষিত ডেটাবেইসে প্রবেশ করতে পারা কিন্তু সহজ কথা নয়। অবশ্য ‘হোয়াইট হ্যাট’ হ্যাকিংয়ে সিস্টেমের নিরাপত্তার উন্নতির জন্য বৈধভাবে প্রবেশাধিকার নেওয়া হয়। এ ধরনের হ্যাকিংয়ের মাধ্যমে সংবেদনশীল ডেটা চুরি, ভাইরাস এবং ম্যালওয়্যার আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি নিরসনের কৌশল নির্ধারণ করা হয়।
‘হ্যাকার’ এবং ‘সাইবার আক্রমণকারী’
‘হ্যাকার’ এবং ‘সাইবার আক্রমণকারী’ দুটি কিন্তু আলাদা বিষয়। অনেকে এটি গুলিয়ে ফেলেন। ‘হ্যাকার’ বলতে বোঝায় ব্যক্তিগত আর্থিক লাভ, তথ্য হাতিয়ে নেওয়া, কোনো বিষয়ে প্রতিবাদ জানানো, বিবৃতি দেওয়া অথবা শুধুই শখের বশে যাঁরা অন্যের সিস্টেমে অনুপ্রবেশ করেন তাঁদের বোঝায়।
অপর পক্ষে সাইবার আক্রমণকারীদের লক্ষ্য থাকে নেটওয়ার্ক এবং কম্পিউটারে অননুমোদিতভাবে প্রবেশ করে আর্থিক লাভ বা গুপ্তচরবৃত্তি করা। এরা সিস্টেমের দুর্বলতাকে ব্যবহার করে শুধুই ব্যক্তিগত লাভ বা ক্ষতি করার জন্য।
বিভিন্ন ধরনের হ্যাকার
এথিক্যাল হ্যাকার (হোয়াইট হ্যাট)
এরা মূলত সিকিউরিটি হ্যাকার। কোনো সিস্টেম বা সফটওয়্যারের দুর্বলতাগুলো চিহ্নিত ও ঠিক করার জন্য তাঁরা সিস্টেমে প্রবেশাধিকার নেন। সিস্টেমে অনুপ্রবেশ করা যায় কি না, সেটি পরীক্ষা এবং দুর্বলতা মূল্যায়ন করেন তাঁরা।
ব্ল্যাক হ্যাট হ্যাকার
ক্র্যাকার (ব্ল্যাক হ্যাট) এমন হ্যাকার যিনি ব্যক্তিগত লাভের জন্য কম্পিউটার সিস্টেমে অবৈধভাবে প্রবেশ করেন। সাধারণত করপোরেট ডেটা চুরি, গোপনীয়তার অধিকার লঙ্ঘন, ব্যাংক অ্যাকাউন্ট থেকে তহবিল স্থানান্তর ইত্যাদি অপরাধমূলক কাজ করেন তাঁরা।
গ্রে হ্যাট হ্যাকার
এ ধরনের হ্যাকাররা এথিক্যাল এবং ব্ল্যাক হ্যাট হ্যাকারদের মাঝামাঝি ক্যাটাগরিতে পড়ে। দুর্বলতা শনাক্ত করতে অবৈধভাবেই সিস্টেমে প্রবেশ করেন। এরপর মালিকের কাছে সেগুলো প্রকাশ করেন। কিন্তু কাজ করার আগে কখনো অনুমতি নেন না।
স্ক্রিপ্ট কিডিস
এঁরা অদক্ষ হ্যাকার। বিভিন্ন প্ল্যাটফর্ম থেকে বিনা মূল্যে বা টাকা দিয়ে কেনা হ্যাকিং সরঞ্জাম ব্যবহার করে অন্যের কম্পিউটার সিস্টেমে অবৈধভাবে প্রবেশ করেন।
হ্যাকটিভিস্ট
এ ধরনের হ্যাকার তাঁর হ্যাকিং দক্ষতা ব্যবহার করে সামাজিক, ধর্মীয় বা রাজনৈতিক বার্তা ছড়িয়ে দিতে চান। তাঁরা সাধারণত একটি ওয়েবসাইট হাইজ্যাক করেন, অর্থাৎ নিয়ন্ত্রণে নিয়ে নেন। এরপর সেই ওয়েবসাইটে নিজেদের বার্তাসংবলিত ব্যানার ঝুলিয়ে দেন।
বাংলাদেশে প্রায়ই এ ধরনের হ্যাকিংয়ের ঘটনা ঘটে। আগামী ১৫ আগস্ট জাতীয় শোক দিবসে দেশে সাইবার হামলার হুমকি দিয়েছে একটি হ্যাকার গ্রুপ। তারাও নিজেদের হ্যাকটিভিস্ট বলে দাবি করেছে।
ফ্রেকার
এ ধরনের হ্যাকাররা কম্পিউটারের পরিবর্তে টেলিফোনের নিরাপত্তা দুর্বলতা চিহ্নিত করেন এবং সেটি কাজে লাগিয়ে উদ্দেশ্য হাসিল করে।
হ্যাকিংয়ের ধরন এবং কৌশল
কম্পিউটার এবং নেটওয়ার্ক হ্যাকিংগুলো বিভিন্নভাবে করা হয়। অত্যন্ত কার্যকর এবং মারাত্মক এসকিউএল ইনজেকশন আক্রমণ থেকে শুরু করে অতি সাধারণ ডিনায়াল অব সার্ভিস অ্যাটাক পর্যন্ত বিভিন্ন ধরনের হ্যাকিং রয়েছে। হ্যাকিং কৌশলগুলোর কিছু কিছুর সঙ্গে সাইবার-আক্রমণের সাধারণ কৌশলগুলোর মিল রয়েছে। হ্যাকিংয়ের সবচেয়ে প্রচলিত কৌশলগুলো নিচে দেওয়া হলো:
ম্যালওয়্যার আক্রমণ
ক্ষতিকর সফটওয়্যার, এটিই ম্যালওয়্যার নামে পরিচিত। এ ধরনের সফটওয়্যার একটি সিস্টেমকে সংক্রমিত করে। ব্যবহারকারীর অজ্ঞাতে অথবা তাঁর সম্মতি ছাড়া পুরো সিস্টেমে এটি ছড়িয়ে পড়ে। এরপর সিস্টেমে রক্ষিত ফাইলের ক্ষতি করে, ডেটা চুরি করে বা অত্যন্ত স্পর্শকাতর তথ্যভান্ডারে অনুপ্রবেশ করে।
র্যানসামওয়্যার আক্রমণ
র্যানসামওয়্যার হলো ম্যালওয়্যারের একটি উন্নত রূপ। এটি আক্রান্তের ডেটা এনক্রিপ্ট করে। অর্থাৎ ব্যবহারকারী তাঁর নিজের ডেটাই আর পড়তে পারেন না। এসব ফাইল পড়তে বা সিস্টেমে প্রবেশাধিকার পুনরুদ্ধার করতে এই হ্যাকাররা মুক্তিপণ দাবি করেন। ব্যাংক অ্যাকাউন্ট, ই-মেইল বা ফেসবুক অ্যাকাউন্ট হ্যাক করে মুক্তিপণ আদায় করাও এ ধরনের হ্যাকিং।
ফিশিং আক্রমণ
ই-মেইল, মোবাইল ফোন বা ওয়েবসাইটের মাধ্যমে বৈধ বা বিশ্বস্ত কনটেন্ট হিসেবে উপস্থাপনের ভান করা হয়—এটি ফিশিং। বন্ধুর নামে ই-মেইল আসা, ই-মেইলে প্রয়োজনীয় লিংক পাঠানো, একটি প্রয়োজনীয় ওয়েবসাইটের মতো ওয়েবসাইটে প্রবেশ করতে প্রলুব্ধ করা, আবার মোটা অঙ্কের লটারি জেতার ই-মেইল করাও এর মধ্যে পড়ে। এসব লিংক বা ওয়েবসাইটে ঢুকলে আপনার সংবেদনশীল তথ্য (যেমন: পাসওয়ার্ড, লগইন সার্টিফিকেট বা আর্থিক ডেটা) হ্যাকাররা হাতিয়ে নিতে পারেন।
ব্রুট ফোর্স অ্যাটাক
ব্রুট ফোর্স অ্যাটাক হলো একটি ট্রায়াল-অ্যান্ড-এরর পদ্ধতি। এ ক্ষেত্রে হ্যাকাররা কোনো ব্যক্তির ব্যবহৃত পাসওয়ার্ড বা এনক্রিপশন কী ক্র্যাক করার জন্য বিভিন্ন সন্নিবেশ বা বিন্যাস দিয়ে চেষ্টা করতে থাকেন। লাখ লাখ বিন্যাস চেষ্টা করার পর হয়তো সফল হন। এ কারণে এটি অত্যন্ত সময়সাপেক্ষ হ্যাকিং। সাধারণত যাঁরা দুর্বল বা পরিচিত পাসওয়ার্ড ব্যবহার করেন, তাঁদের বিরুদ্ধে এটি কার্যকর।
ম্যান-ইন-দ্য-মিডল অ্যাটাক
ডেটা ইভসড্রপিং নামেও পরিচিত। সংবেদনশীল ডেটা বা গোপনীয় তথ্য চুরি করতে বা ক্ষতি করতে এখানে দুটি পক্ষ কাজ করে। একটি পক্ষ প্রত্যক্ষভাবে টার্গেটের সঙ্গে সম্পর্কিত থাকে। আরেকটি পক্ষ তার কাছ থেকে প্রয়োজনীয় তথ্য নেয়।
এসকিউএল ইনজেকশন
যেসব সিস্টেমে এসকিউএল (SQL) ডেটাবেইস ব্যবহার করা হয়, সেগুলোর নিরাপত্তা দুর্বলতাকে ব্যবহার করতে এই কৌশল অবলম্বন করেন হ্যাকাররা। তাঁরা একটি ক্ষতিকর এসকিউএল স্টেটমেন্ট সিস্টেমে প্রবেশ করান। এরপর ডেটাবেইসের নিয়ন্ত্রণ তাঁদের কাছে চলে আসে।
ডিস্ট্রিবিউটেড ডিনায়াল-অব-সার্ভিস অ্যাটাক (ডি-ডস)
এটি সাধারণত ডি-ডস (DDoS) আক্রমণ নামেই পরিচিত। এই কৌশলে টার্গেট সিস্টেম (সার্ভার) বা নেটওয়ার্কে তার সক্ষমতার বেশি ভুয়া ট্রাফিক বা রিকোয়েস্ট পাঠানো হয়। এ কারণে সার্ভার ডাউনের ঘটনা ঘটে। পরিষেবা ব্যাহত বা বিভ্রাটের সৃষ্টি হয়। বাংলাদেশে এই ধরনের সাইবার আক্রমণের ঘটনাই বেশি ঘটে।
আগামী ১৫ আগস্ট জাতীয় শোক দিবসে বাংলাদেশে এ ধরনের সাইবার হামলার হুমকিই দিয়েছে একটি হ্যাকার গ্রুপ।
জিরো-ডে এক্সপ্লোয়েট
ব্যবহারকারী বা সেবাদানকারীর অজ্ঞাতে সফটওয়্যার অ্যাপ্লিকেশন বা কম্পিউটার সিস্টেমের দুর্বলতার সুযোগে অনুপ্রবেশ করা এবং ক্ষতিসাধন করা।
ক্রস-সাইট স্ক্রিপ্টিং (XSS) আক্রমণ
ব্যবহারকারী কোনো ওয়েবপেজ ভিজিট করলে সেখান থেকেই হ্যাকারের কবলে পড়তে পারেন। তাঁর বিভিন্ন অ্যাকাউন্ট এবং কম্পিউটার হ্যাকারের দখলে চলে যেতে পারে। হ্যাকাররা ওই ওয়েব অ্যাপের নিরাপত্তা দুর্বলতার সুযোগ সেখানে ক্ষতিকর স্ক্রিপ্ট রেখে দেওয়ার মাধ্যমে এটি করেন।
সেশন হাইজ্যাকিং
ম্যান-ইন-দ্য-মিডল অ্যাটাক আক্রমণের মতোই, সেশন হাইজ্যাকিংয়ে একটি সক্রিয় সেশন টোকেন বা কুকি চুরি করে ব্যবহারকারীর অ্যাকাউন্ট বা কম্পিউটার সিস্টেমে প্রবেশ করেন হ্যাকার।
ক্রেডেনশিয়াল রিইউজ অ্যাটাক
অন্য কোনো হ্যাকারের মাধ্যমে বা ত্রুটির কারণে চুরি যাওয়া বা ফাঁস হওয়া লগইন ক্রেডেনশিয়াল (নাম, জন্মতারিখ, পাসওয়ার্ড ইত্যাদি) ব্যবহার করে তথ্য চুরি বা কম্পিউটার সিস্টেমের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে ফেলেন হ্যাকার।
DNS টানেলিং
সুরক্ষা ব্যবস্থাগুলোকে বাইপাস করতে এবং নেটওয়ার্ক থেকে ডেটা হাতিয়ে নিতে ডোমেইন নেটওয়ার্ক সিস্টেম (DNS) প্রোটোকল ব্যবহার করেন হ্যাকাররা।
কোন ডিভাইসগুলো সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ
ল্যাপটপ, ব্যক্তিগত কম্পিউটারের মতো সাধারণ কম্পিউটার সিস্টেমগুলো হ্যাকারদের প্রধান লক্ষ্য। এ ছাড়া স্মার্টফোন, ট্যাবলেট, ইন্টারনেট অব থিংস (IoT) ডিভাইস যেমন: স্মার্ট হোম অ্যাপ্লায়েন্স, সিকিউরিটি ক্যামেরা, মেডিকেল ডিভাইস; নেটওয়ার্ক রাউটার, ওয়াই-ফাই সিগন্যাল ডিস্ট্রিবিউটর, ব্যাংকের এটিএম, নিরাপত্তা ক্যামেরা, আইপি ক্যামেরা, স্মার্ট টিভি, স্মার্ট অ্যাপ্লায়েন্স ইত্যাদি ডিভাইস টার্গেট করেন হ্যাকাররা।
হ্যাকারদের কবল থেকে সুরক্ষার উপায়

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহার করে সন্ত্রাস ও সহিংসতায় উসকানিমূলক কনটেন্টের (আধেয়) বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার। এসব কনটেন্ট বন্ধ করতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিচ্ছে সংশ্লিষ্ট দপ্তর ও সংস্থাগুলো।
১ দিন আগে
চিঠিতে বলা হয়, বাংলাদেশে চলমান রাজনৈতিক অস্থিরতা ব্যাপক সহিংসতা ও অস্থিতিশীলতার জন্ম দিয়েছে। গণ-অভ্যুত্থানে ১ হাজার ৪০০ জনের বেশি শিক্ষার্থী নিহত ও হাজারো মানুষ আহত হওয়ার পর দেশ এখন একটি নাজুক রাজনৈতিক পালাবদলের মধ্যে আছে। অন্তর্বর্তী সরকার শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনা এবং একটি গ্রহণযোগ্য জাতীয়...
২ দিন আগে
দেড় দশকের বেশি সময় ধরে কখনো ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’, আবার কখনো ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’ গড়ার স্লোগান শুনে আসছে দেশের মানুষ। এ নিয়ে ‘অ্যাকসেস টু ইনফরমেশন (এটুআই)’ নামে প্রকল্পও আছে সরকারের। বেসরকারি পর্যায়েও রয়েছে নানা উদ্যোগ। তারপরও দেশের ৪৩ দশমিক ৯৮ শতাংশ পরিবার এখনো ইন্টারনেট সেবার আওতার বাইরে রয়ে গেছে।
৪ দিন আগে
ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বলেন, দেশের ডিজিটাল রূপান্তর এখন আর খণ্ডিত প্রকল্প বা অ্যাপভিত্তিক উদ্যোগে সীমাবদ্ধ রাখা যাবে না। এটি একটি দীর্ঘমেয়াদি ও ভিত্তিমূলক রাষ্ট্রীয় রূপান্তর, যার কেন্দ্রে থাকবে ডেটা গভর্ন্যান্স, সাইবার নিরাপত্তা ও নাগরিক অধিকার। দেশে বহু ডিজিটাল সিস্টেম থাকলেও ইন্টারঅপারেবিলিটির...
৪ দিন আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহার করে সন্ত্রাস ও সহিংসতায় উসকানিমূলক কনটেন্টের (আধেয়) বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার। এসব কনটেন্ট বন্ধ করতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিচ্ছে সংশ্লিষ্ট দপ্তর ও সংস্থাগুলো। এরই মধ্যে ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম ও হোয়াটসঅ্যাপের মূল সংস্থা মেটাকে চিঠি দিয়েছে জাতীয় সাইবার নিরাপত্তা এজেন্সি ও বাংলাদেশ টেলিকমিউনিকেশন নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি)। পাশাপাশি উসকানিমূলক পোস্টের বিষয়ে অভিযোগ নিতে হোয়াটসঅ্যাপ ও ইমেইল আইডি চালু করা হয়েছে।
এ বিষয়ে প্রধান উপদেষ্টার ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তিবিষয়ক বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব জানান, হেট স্পিচ—যা সরাসরি সহিংসতা ঘটায় কিংবা সহিংসতার ডাক দেয়; সেটা জাতীয় সাইবার সুরক্ষা অধ্যাদেশ, ২০২৫ মতে দণ্ডনীয় অপরাধ। সন্ত্রাস ও সহিংসতার আহ্বানসংবলিত সোশ্যাল মিডিয়া পোস্টের বিষয়ে মেটাকে চিঠি দেওয়া হয়েছে। এ ধরনের পোস্ট সম্পর্কে সরাসরি রিপোর্ট করতে হবে। এ জন্য হোয়াটসঅ্যাপ ও ইমেইল চালু করা হয়েছে।
আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পরদিন ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র ও ঢাকা-৮ আসনের সম্ভাব্য প্রার্থী শরিফ ওসমান হাদিকে গুলি করে দুর্বৃত্তরা। চিকিৎসাধীন অবস্থায় ১৮ ডিসেম্বর তিনি মারা যান। ওসমান হাদির মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়ার পর বৃহস্পতিবার রাতে দেশের শীর্ষস্থানীয় দুটি সংবাদমাধ্যম ও সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠানসহ বিভিন্ন স্থাপনায় হামলা ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে। অন্তর্বর্তী সরকার মনে করছে, নির্বাচনের আগে ওসমান হাদির মৃত্যুকে কেন্দ্র করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে উসকানি দিয়ে মানুষকে সহিংসতায় উদ্বুদ্ধ করা হয়েছে। তারই ফলে এসব হামলা ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে।
এসব ঘটনা তুলে ধরে শুক্রবার মেটার ভাইস প্রেসিডেন্ট (পাবলিক পলিসি) সাইমন মিলনার, আঞ্চলিক কার্যালয়ের পরিচালক (পাবলিক পলিসি) সারিম আজিজ ও মানবাধিকার নীতি প্রধান ফ্রেডরিক রাউস্কিকে চিঠি দেয় জাতীয় সাইবার সুরক্ষা এজেন্সি ও বিটিআরসি। ওই চিঠিতে সহিংসতা উসকে দিয়ে নির্বাচন বানচালের চেষ্টা এবং সংবাদমাধ্যমের ওপর হামলায় উসকানি দেওয়া কনটেন্টের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে মেটাকে আহ্বান জানানো হয়।
বর্তমানে দেশে জাতীয় নির্বাচনের প্রস্তুতি গ্রহণের কাজ চলছে জানিয়ে চিঠিতে বলা হয়, ‘দুঃখজনকভাবে, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম বিশেষ করে, ফেসবুক ব্যাপক সহিংসতা উসকে দেওয়া, ভীতি প্রদর্শন এবং আসন্ন নির্বাচন ব্যাহত করার আহ্বানের প্ল্যাটফর্মে পরিণত হয়েছে। গণতান্ত্রিক রূপান্তরের পথে থাকা বাংলাদেশে মেটার প্ল্যাটফর্মগুলোকে সহিংসতা উসকে দিতে ব্যবহার করা হচ্ছে। এর ফলে উত্তেজনা আরও বেড়েছে এবং বাস্তবে সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে। এর মধ্যে রয়েছে গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিত্ব উসমান হাদির মর্মান্তিক মৃত্যু এবং বিভিন্ন গণমাধ্যম প্রতিষ্ঠানের ওপর হামলা।’
অন্তর্বর্তী সরকার মনে করে, বিগত সরকারের সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা এবং আরেকটি গোষ্ঠী দেশকে অস্থিতিশীল করার চেষ্টা করছে। তারা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমকে তাদের উদ্দেশ্য হাসিলের হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করছে। বিগত সরকারের সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের অ্যাকাউন্ট, পেজ ও চ্যানেল নিষ্ক্রিয় করতে এর আগে একাধিকবার মেটাকে অনুরোধ জানিয়েছিল বিটিআরসি। কিন্তু মেটা সে সব অ্যাকাউন্ট নিষ্ক্রিয় করেনি। শুক্রবার পাঠানো চিঠিতে সে বিষয়েও অসন্তোষ প্রকাশ করা হয়।
চিঠির সঙ্গে সহিংসতা ও হামলার আহ্বান জানানো কিছু ফেসবুক পোস্টের তালিকা সংযুক্ত করা হয়। একই সঙ্গে অভিযোগ করে বলা হয়, এসব কনটেন্ট সম্পর্কে যথাযথ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে রিপোর্ট করা হলেও, ‘কমিউনিটি স্ট্যান্ডার্ড’ সময়মতো বা কার্যকরভাবে প্রয়োগ করা হয়নি। এসব পোস্টের অব্যাহত উপস্থিতি ও বিস্তার সহিংসতায় ভূমিকা রেখেছে, যার মধ্যে গণমাধ্যম ভবন ধ্বংস ও অগ্নিসংযোগের ঘটনাও রয়েছে।
সরকার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের কোনো পোস্ট বা অ্যাকাউন্ট ডাউন করতে, অর্থাৎ সরিয়ে দিতে পারে না। সরকার শুধু যৌক্তিক কারণ তুলে ধরে সহিংসতার সঙ্গে সম্পর্কিত পোস্টগুলো সংশ্লিষ্ট প্ল্যাটফর্মের কাছে তুলে ধরতে পারে। তাই সরকার সহিংসতার উসকানিমূলক পোস্টের তথ্য দিতে ইমেইল ও হোয়াটসঅ্যাপ নম্বর চালু করেছে। এখন থেকে ০১৩০৮৩৩২৫৯২ হোয়াটসঅ্যাপ নম্বরে এবং [email protected] ই-মেইলে উসকানিমূলক পোস্টের তথ্য দেওয়া যাবে। এসব তথ্য বিটিআরসির মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট প্ল্যাটফর্মে পাঠানো হবে।
তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের সচিব শীষ হায়দার চৌধুরী আজকের পত্রিকাকে বলেন, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমকে একটা পক্ষ ভিন্ন উদ্দেশ্যে ব্যবহার করছে। বিভিন্ন পোস্ট দিয়ে মানুষকে সহিংসতায় উসকানি দেওয়া হচ্ছে। দেশকে অস্থিতিশীল করার একধরনের প্রচেষ্টা আমরা দেখতে পাচ্ছি। এগুলোর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহার করে সন্ত্রাস ও সহিংসতায় উসকানিমূলক কনটেন্টের (আধেয়) বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার। এসব কনটেন্ট বন্ধ করতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিচ্ছে সংশ্লিষ্ট দপ্তর ও সংস্থাগুলো। এরই মধ্যে ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম ও হোয়াটসঅ্যাপের মূল সংস্থা মেটাকে চিঠি দিয়েছে জাতীয় সাইবার নিরাপত্তা এজেন্সি ও বাংলাদেশ টেলিকমিউনিকেশন নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি)। পাশাপাশি উসকানিমূলক পোস্টের বিষয়ে অভিযোগ নিতে হোয়াটসঅ্যাপ ও ইমেইল আইডি চালু করা হয়েছে।
এ বিষয়ে প্রধান উপদেষ্টার ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তিবিষয়ক বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব জানান, হেট স্পিচ—যা সরাসরি সহিংসতা ঘটায় কিংবা সহিংসতার ডাক দেয়; সেটা জাতীয় সাইবার সুরক্ষা অধ্যাদেশ, ২০২৫ মতে দণ্ডনীয় অপরাধ। সন্ত্রাস ও সহিংসতার আহ্বানসংবলিত সোশ্যাল মিডিয়া পোস্টের বিষয়ে মেটাকে চিঠি দেওয়া হয়েছে। এ ধরনের পোস্ট সম্পর্কে সরাসরি রিপোর্ট করতে হবে। এ জন্য হোয়াটসঅ্যাপ ও ইমেইল চালু করা হয়েছে।
আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পরদিন ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র ও ঢাকা-৮ আসনের সম্ভাব্য প্রার্থী শরিফ ওসমান হাদিকে গুলি করে দুর্বৃত্তরা। চিকিৎসাধীন অবস্থায় ১৮ ডিসেম্বর তিনি মারা যান। ওসমান হাদির মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়ার পর বৃহস্পতিবার রাতে দেশের শীর্ষস্থানীয় দুটি সংবাদমাধ্যম ও সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠানসহ বিভিন্ন স্থাপনায় হামলা ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে। অন্তর্বর্তী সরকার মনে করছে, নির্বাচনের আগে ওসমান হাদির মৃত্যুকে কেন্দ্র করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে উসকানি দিয়ে মানুষকে সহিংসতায় উদ্বুদ্ধ করা হয়েছে। তারই ফলে এসব হামলা ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে।
এসব ঘটনা তুলে ধরে শুক্রবার মেটার ভাইস প্রেসিডেন্ট (পাবলিক পলিসি) সাইমন মিলনার, আঞ্চলিক কার্যালয়ের পরিচালক (পাবলিক পলিসি) সারিম আজিজ ও মানবাধিকার নীতি প্রধান ফ্রেডরিক রাউস্কিকে চিঠি দেয় জাতীয় সাইবার সুরক্ষা এজেন্সি ও বিটিআরসি। ওই চিঠিতে সহিংসতা উসকে দিয়ে নির্বাচন বানচালের চেষ্টা এবং সংবাদমাধ্যমের ওপর হামলায় উসকানি দেওয়া কনটেন্টের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে মেটাকে আহ্বান জানানো হয়।
বর্তমানে দেশে জাতীয় নির্বাচনের প্রস্তুতি গ্রহণের কাজ চলছে জানিয়ে চিঠিতে বলা হয়, ‘দুঃখজনকভাবে, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম বিশেষ করে, ফেসবুক ব্যাপক সহিংসতা উসকে দেওয়া, ভীতি প্রদর্শন এবং আসন্ন নির্বাচন ব্যাহত করার আহ্বানের প্ল্যাটফর্মে পরিণত হয়েছে। গণতান্ত্রিক রূপান্তরের পথে থাকা বাংলাদেশে মেটার প্ল্যাটফর্মগুলোকে সহিংসতা উসকে দিতে ব্যবহার করা হচ্ছে। এর ফলে উত্তেজনা আরও বেড়েছে এবং বাস্তবে সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে। এর মধ্যে রয়েছে গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিত্ব উসমান হাদির মর্মান্তিক মৃত্যু এবং বিভিন্ন গণমাধ্যম প্রতিষ্ঠানের ওপর হামলা।’
অন্তর্বর্তী সরকার মনে করে, বিগত সরকারের সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা এবং আরেকটি গোষ্ঠী দেশকে অস্থিতিশীল করার চেষ্টা করছে। তারা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমকে তাদের উদ্দেশ্য হাসিলের হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করছে। বিগত সরকারের সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের অ্যাকাউন্ট, পেজ ও চ্যানেল নিষ্ক্রিয় করতে এর আগে একাধিকবার মেটাকে অনুরোধ জানিয়েছিল বিটিআরসি। কিন্তু মেটা সে সব অ্যাকাউন্ট নিষ্ক্রিয় করেনি। শুক্রবার পাঠানো চিঠিতে সে বিষয়েও অসন্তোষ প্রকাশ করা হয়।
চিঠির সঙ্গে সহিংসতা ও হামলার আহ্বান জানানো কিছু ফেসবুক পোস্টের তালিকা সংযুক্ত করা হয়। একই সঙ্গে অভিযোগ করে বলা হয়, এসব কনটেন্ট সম্পর্কে যথাযথ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে রিপোর্ট করা হলেও, ‘কমিউনিটি স্ট্যান্ডার্ড’ সময়মতো বা কার্যকরভাবে প্রয়োগ করা হয়নি। এসব পোস্টের অব্যাহত উপস্থিতি ও বিস্তার সহিংসতায় ভূমিকা রেখেছে, যার মধ্যে গণমাধ্যম ভবন ধ্বংস ও অগ্নিসংযোগের ঘটনাও রয়েছে।
সরকার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের কোনো পোস্ট বা অ্যাকাউন্ট ডাউন করতে, অর্থাৎ সরিয়ে দিতে পারে না। সরকার শুধু যৌক্তিক কারণ তুলে ধরে সহিংসতার সঙ্গে সম্পর্কিত পোস্টগুলো সংশ্লিষ্ট প্ল্যাটফর্মের কাছে তুলে ধরতে পারে। তাই সরকার সহিংসতার উসকানিমূলক পোস্টের তথ্য দিতে ইমেইল ও হোয়াটসঅ্যাপ নম্বর চালু করেছে। এখন থেকে ০১৩০৮৩৩২৫৯২ হোয়াটসঅ্যাপ নম্বরে এবং [email protected] ই-মেইলে উসকানিমূলক পোস্টের তথ্য দেওয়া যাবে। এসব তথ্য বিটিআরসির মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট প্ল্যাটফর্মে পাঠানো হবে।
তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের সচিব শীষ হায়দার চৌধুরী আজকের পত্রিকাকে বলেন, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমকে একটা পক্ষ ভিন্ন উদ্দেশ্যে ব্যবহার করছে। বিভিন্ন পোস্ট দিয়ে মানুষকে সহিংসতায় উসকানি দেওয়া হচ্ছে। দেশকে অস্থিতিশীল করার একধরনের প্রচেষ্টা আমরা দেখতে পাচ্ছি। এগুলোর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।

চৌকস প্রযুক্তিগত জ্ঞান, সমস্যা সমাধানের দক্ষতা, সৃজনশীলতা ও অধ্যবসায়—এসব মিলিয়েই একজন ব্যক্তি দক্ষ হ্যাকার হয়ে উঠতে পারেন। একটি প্রতিষ্ঠানের নিরাপত্তাব্যবস্থা বাইপাস করা এবং ব্যক্তিগত তথ্য বা সুরক্ষিত ডেটাবেইসে প্রবেশ করতে পারা কিন্তু সহজ কথা নয়। অবশ্য ‘হোয়াইট হ্যাট’ হ্যাকিংয়ে সিস্টেমের নিরাপত্তার উ
০৪ আগস্ট ২০২৩
চিঠিতে বলা হয়, বাংলাদেশে চলমান রাজনৈতিক অস্থিরতা ব্যাপক সহিংসতা ও অস্থিতিশীলতার জন্ম দিয়েছে। গণ-অভ্যুত্থানে ১ হাজার ৪০০ জনের বেশি শিক্ষার্থী নিহত ও হাজারো মানুষ আহত হওয়ার পর দেশ এখন একটি নাজুক রাজনৈতিক পালাবদলের মধ্যে আছে। অন্তর্বর্তী সরকার শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনা এবং একটি গ্রহণযোগ্য জাতীয়...
২ দিন আগে
দেড় দশকের বেশি সময় ধরে কখনো ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’, আবার কখনো ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’ গড়ার স্লোগান শুনে আসছে দেশের মানুষ। এ নিয়ে ‘অ্যাকসেস টু ইনফরমেশন (এটুআই)’ নামে প্রকল্পও আছে সরকারের। বেসরকারি পর্যায়েও রয়েছে নানা উদ্যোগ। তারপরও দেশের ৪৩ দশমিক ৯৮ শতাংশ পরিবার এখনো ইন্টারনেট সেবার আওতার বাইরে রয়ে গেছে।
৪ দিন আগে
ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বলেন, দেশের ডিজিটাল রূপান্তর এখন আর খণ্ডিত প্রকল্প বা অ্যাপভিত্তিক উদ্যোগে সীমাবদ্ধ রাখা যাবে না। এটি একটি দীর্ঘমেয়াদি ও ভিত্তিমূলক রাষ্ট্রীয় রূপান্তর, যার কেন্দ্রে থাকবে ডেটা গভর্ন্যান্স, সাইবার নিরাপত্তা ও নাগরিক অধিকার। দেশে বহু ডিজিটাল সিস্টেম থাকলেও ইন্টারঅপারেবিলিটির...
৪ দিন আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহার করে সন্ত্রাস ও সহিংসতার উসকানিমূলক কনটেন্টের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানিয়ে মেটাকে চিঠি দিয়েছে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি)।
গতকাল শুক্রবার মেটার জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা ও ফেসবুকের দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রতিনিধিদের কাছে ই-মেইলের মাধ্যমে এই চিঠি পাঠানো হয়।
চিঠিতে বলা হয়, বাংলাদেশে চলমান রাজনৈতিক অস্থিরতা ব্যাপক সহিংসতা ও অস্থিতিশীলতার জন্ম দিয়েছে। গণ-অভ্যুত্থানে ১ হাজার ৪০০ জনের বেশি শিক্ষার্থী নিহত ও হাজারো মানুষ আহত হওয়ার পর দেশ এখন একটি নাজুক রাজনৈতিক পালাবদলের মধ্যে আছে। অন্তর্বর্তী সরকার শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনা এবং একটি গ্রহণযোগ্য জাতীয় নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছে।
এই পরিস্থিতিতে বিশেষ করে ফেসবুক ব্যবহার করে বড় ধরনের সহিংসতা, ভীতি প্রদর্শন ও আসন্ন নির্বাচন বানচালের ডাক দেওয়া হচ্ছে, যা জনজীবনে সহিংসতার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে বলে চিঠিতে উল্লেখ করা হয়।
ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক শরিফ ওসমান হাদির মৃত্যুর পর উদ্ভূত পরিস্থিতি নিয়ে চিঠিতে বলা হয়, ভিন্ন মতাদর্শের কিছু ব্যক্তি মতপ্রকাশের স্বাধীনতার নামে প্রকাশ্যে এই মৃত্যুকে সমর্থন জানিয়েছে, যা সবচেয়ে উদ্বেগজনক। আবার কেউ কেউ গণমাধ্যম প্রতিষ্ঠান ও সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে সহিংসতায় উসকানি দিচ্ছে। এসব উসকানিমূলক প্রচারণার পরই দেশের দুটি শীর্ষস্থানীয় সংবাদমাধ্যম দ্য ডেইলি স্টার ও দৈনিক প্রথম আলোসহ বিভিন্ন স্থাপনায় হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে। এতে গণমাধ্যমের স্বাধীনতা চরম হুমকির মুখে পড়ে এবং জনমনে ভীতির সৃষ্টি হয়।
বিটিআরসির অভিযোগ, উসকানিমূলক কনটেন্ট সরাতে বা ব্লক করতে দেরি করছে মেটা। প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে মেটা যে সময় নিচ্ছে, এর মধ্যে ওই সব অ্যাকাউন্ট থেকে আরও সহিংসতা ছড়ানোর সুযোগ তৈরি হচ্ছে।
মেটার কাছে বারবার অভিযোগ জানিয়েও সময়মতো সাড়া পাওয়া যায়নি বলে চিঠিতে অসন্তোষ প্রকাশ করে বিটিআরসি।
একই সঙ্গে কয়েকটি দাবি তুলে ধরা হয় চিঠিতে। এর মধ্যে রয়েছে বাংলাদেশ-সম্পর্কিত কনটেন্টের ক্ষেত্রে কমিউনিটি গাইডলাইন আরও কঠোর, দ্রুত ও প্রাসঙ্গিকভাবে প্রয়োগ করা; বাংলা ভাষার কনটেন্টে নজরদারি জোরদার করা এবং অভিযোগ ওঠা কনটেন্টের বিরুদ্ধে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেওয়া।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহার করে সন্ত্রাস ও সহিংসতার উসকানিমূলক কনটেন্টের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানিয়ে মেটাকে চিঠি দিয়েছে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি)।
গতকাল শুক্রবার মেটার জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা ও ফেসবুকের দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রতিনিধিদের কাছে ই-মেইলের মাধ্যমে এই চিঠি পাঠানো হয়।
চিঠিতে বলা হয়, বাংলাদেশে চলমান রাজনৈতিক অস্থিরতা ব্যাপক সহিংসতা ও অস্থিতিশীলতার জন্ম দিয়েছে। গণ-অভ্যুত্থানে ১ হাজার ৪০০ জনের বেশি শিক্ষার্থী নিহত ও হাজারো মানুষ আহত হওয়ার পর দেশ এখন একটি নাজুক রাজনৈতিক পালাবদলের মধ্যে আছে। অন্তর্বর্তী সরকার শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনা এবং একটি গ্রহণযোগ্য জাতীয় নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছে।
এই পরিস্থিতিতে বিশেষ করে ফেসবুক ব্যবহার করে বড় ধরনের সহিংসতা, ভীতি প্রদর্শন ও আসন্ন নির্বাচন বানচালের ডাক দেওয়া হচ্ছে, যা জনজীবনে সহিংসতার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে বলে চিঠিতে উল্লেখ করা হয়।
ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক শরিফ ওসমান হাদির মৃত্যুর পর উদ্ভূত পরিস্থিতি নিয়ে চিঠিতে বলা হয়, ভিন্ন মতাদর্শের কিছু ব্যক্তি মতপ্রকাশের স্বাধীনতার নামে প্রকাশ্যে এই মৃত্যুকে সমর্থন জানিয়েছে, যা সবচেয়ে উদ্বেগজনক। আবার কেউ কেউ গণমাধ্যম প্রতিষ্ঠান ও সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে সহিংসতায় উসকানি দিচ্ছে। এসব উসকানিমূলক প্রচারণার পরই দেশের দুটি শীর্ষস্থানীয় সংবাদমাধ্যম দ্য ডেইলি স্টার ও দৈনিক প্রথম আলোসহ বিভিন্ন স্থাপনায় হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে। এতে গণমাধ্যমের স্বাধীনতা চরম হুমকির মুখে পড়ে এবং জনমনে ভীতির সৃষ্টি হয়।
বিটিআরসির অভিযোগ, উসকানিমূলক কনটেন্ট সরাতে বা ব্লক করতে দেরি করছে মেটা। প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে মেটা যে সময় নিচ্ছে, এর মধ্যে ওই সব অ্যাকাউন্ট থেকে আরও সহিংসতা ছড়ানোর সুযোগ তৈরি হচ্ছে।
মেটার কাছে বারবার অভিযোগ জানিয়েও সময়মতো সাড়া পাওয়া যায়নি বলে চিঠিতে অসন্তোষ প্রকাশ করে বিটিআরসি।
একই সঙ্গে কয়েকটি দাবি তুলে ধরা হয় চিঠিতে। এর মধ্যে রয়েছে বাংলাদেশ-সম্পর্কিত কনটেন্টের ক্ষেত্রে কমিউনিটি গাইডলাইন আরও কঠোর, দ্রুত ও প্রাসঙ্গিকভাবে প্রয়োগ করা; বাংলা ভাষার কনটেন্টে নজরদারি জোরদার করা এবং অভিযোগ ওঠা কনটেন্টের বিরুদ্ধে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেওয়া।

চৌকস প্রযুক্তিগত জ্ঞান, সমস্যা সমাধানের দক্ষতা, সৃজনশীলতা ও অধ্যবসায়—এসব মিলিয়েই একজন ব্যক্তি দক্ষ হ্যাকার হয়ে উঠতে পারেন। একটি প্রতিষ্ঠানের নিরাপত্তাব্যবস্থা বাইপাস করা এবং ব্যক্তিগত তথ্য বা সুরক্ষিত ডেটাবেইসে প্রবেশ করতে পারা কিন্তু সহজ কথা নয়। অবশ্য ‘হোয়াইট হ্যাট’ হ্যাকিংয়ে সিস্টেমের নিরাপত্তার উ
০৪ আগস্ট ২০২৩
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহার করে সন্ত্রাস ও সহিংসতায় উসকানিমূলক কনটেন্টের (আধেয়) বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার। এসব কনটেন্ট বন্ধ করতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিচ্ছে সংশ্লিষ্ট দপ্তর ও সংস্থাগুলো।
১ দিন আগে
দেড় দশকের বেশি সময় ধরে কখনো ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’, আবার কখনো ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’ গড়ার স্লোগান শুনে আসছে দেশের মানুষ। এ নিয়ে ‘অ্যাকসেস টু ইনফরমেশন (এটুআই)’ নামে প্রকল্পও আছে সরকারের। বেসরকারি পর্যায়েও রয়েছে নানা উদ্যোগ। তারপরও দেশের ৪৩ দশমিক ৯৮ শতাংশ পরিবার এখনো ইন্টারনেট সেবার আওতার বাইরে রয়ে গেছে।
৪ দিন আগে
ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বলেন, দেশের ডিজিটাল রূপান্তর এখন আর খণ্ডিত প্রকল্প বা অ্যাপভিত্তিক উদ্যোগে সীমাবদ্ধ রাখা যাবে না। এটি একটি দীর্ঘমেয়াদি ও ভিত্তিমূলক রাষ্ট্রীয় রূপান্তর, যার কেন্দ্রে থাকবে ডেটা গভর্ন্যান্স, সাইবার নিরাপত্তা ও নাগরিক অধিকার। দেশে বহু ডিজিটাল সিস্টেম থাকলেও ইন্টারঅপারেবিলিটির...
৪ দিন আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

দেড় দশকের বেশি সময় ধরে কখনো ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’, আবার কখনো ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’ গড়ার স্লোগান শুনে আসছে দেশের মানুষ। এ নিয়ে ‘অ্যাকসেস টু ইনফরমেশন (এটুআই)’ নামে প্রকল্পও আছে সরকারের। বেসরকারি পর্যায়েও রয়েছে নানা উদ্যোগ। তারপরও দেশের ৪৩ দশমিক ৯৮ শতাংশ পরিবার এখনো ইন্টারনেট সেবার আওতার বাইরে রয়ে গেছে। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) এক জরিপের তথ্য বলছে, বাংলাদেশে এখন ইন্টারনেট ব্যবহার করে ৫৬ দশমিক ২ শতাংশ পরিবারের মানুষ। এই হার গ্রামাঞ্চলে ৫১ দশমিক ৫ শতাংশ এবং শহরে ৬৪ শতাংশ।
‘ব্যক্তি ও খানা পর্যায়ে জেলাভিত্তিক আইসিটি ব্যবহারের সুযোগ ও প্রয়োগ পরিমাপ’ প্রকল্পের আওতায় পাঁচ বছর ও তদূর্ধ্ব বয়সীদের ওপর এই জরিপ পরিচালনা করে বিবিএস। এতে পরিবারগুলোয় মোবাইল ফোন, ফিক্সড ফোন, টেলিভিশন, রেডিও ও কম্পিউটার ব্যবহারের চিত্রও উঠে আসে।
জরিপের তথ্য অনুযায়ী, দেশে ব্যক্তি ও পারিবারিক পর্যায়ে মোবাইল ফোনের ব্যবহার বেড়েছে। একই সঙ্গে বেড়েছে টেলিভিশন, কম্পিউটার ও ইন্টারনেট ব্যবহারের হারও। তবে কমেছে স্মার্টফোন ও রেডিওর ব্যবহার।
‘আইসিটি প্রয়োগ ও ব্যবহার জরিপ’-এ পাঁচ বছর ও তদূর্ধ্ব বয়সী এবং শহর-পল্লি অঞ্চল অনুযায়ী জাতীয় পর্যায়ে আইসিটির সূচকসমূহ ত্রৈমাসিক ভিত্তিতে তৈরি করা হয়। সারা দেশে ২ হাজার ৫৬৮টি নির্বাচিত নমুনা এলাকায় দৈবচয়নের ভিত্তিতে ২৪টি করে মোট ৬১ হাজার ৬৩২টি খানায় ত্রৈমাসিক ভিত্তিতে তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছে।
জরিপের বিষয়ে বিবিএসের মহাপরিচালক মোহাম্মদ মিজানুর রহমান বলেন, জরিপের খানা ও ব্যক্তি পর্যায়ে আইসিটির সূচকগুলো আন্তর্জাতিক টেলিকমিউনিকেশন ইউনিয়নের (আইটিইউ) আলোকে নেওয়া হয়েছে। জরিপে খানায় রেডিও, টেলিভিশন, কম্পিউটার, মোবাইল ফোন, স্মার্টফোন, ইন্টারনেটের এক্সেস এবং ব্যক্তি পর্যায়ে মোবাইল ফোন, কম্পিউটার, ইন্টারনেটের ব্যবহার, মোবাইল ফোনের মালিকানার ফলাফল প্রস্তুত করা হয়েছে বলে জানান তিনি।
বিশ্লেষকেরা বলছেন, দেশের অনেক মানুষ ডিজিটাল সেবার বাইরে। এই জরিপে বিকাশ, নগদসহ মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসে (এমএফএস) এর আওতায় আনা হলে পরিসংখ্যান হয়তো পাল্টাবে।
তথ্যপ্রযুক্তি বিশেষজ্ঞ তানভীর হাসান জোহা আজকের পত্রিকাকে বলেন, সচেতনতার অভাবে এখনো অর্ধেক মানুষ ডিজিটাল সিস্টেমের আওতার বাইরে রয়েছে, যাদের বেশির ভাগ গ্রামাঞ্চল এবং পার্বত্য এলাকার। তারা ডিজিটাল সেবাকে ভয় পায়।
জরিপের তথ্য অনুযায়ী, বর্তমানে দেশে ৯৮ দশমিক ৯ শতাংশ পরিবারে অন্তত একটি মোবাইল ফোন ব্যবহৃত হচ্ছে। এর মধ্যে ৭২ দশমিক ৪ শতাংশ পরিবারে রয়েছে স্মার্টফোন। স্মার্টফোন ব্যবহারে শহরাঞ্চল এগিয়ে। শহরে ৮০ দশমিক ৮ শতাংশ এবং গ্রামে ৬৮ দশমিক ৮ শতাংশ পরিবার স্মার্টফোন ব্যবহার করে। এ ছাড়া ফিক্সড ফোন ব্যবহার করে শূন্য দশমিক ৮ শতাংশ পরিবার। কম্পিউটার ব্যবহার করে ৯ দশমিক ১ শতাংশ পরিবার। আর ৫৬ দশমিক ২ শতাংশ পরিবার ইন্টারনেট ব্যবহার করে।
অন্যদিকে, ৫৮ দশমিক ৯ শতাংশ পরিবারে টেলিভিশন দেখা হয় এবং ১৫ দশমিক ১ শতাংশ পরিবার রেডিও ব্যবহার করে বলে জরিপে উঠে এসেছে। আর বিদ্যুৎ সুবিধা রয়েছে ৯৮ দশমিক ৯ শতাংশ পরিবারে।
এর আগের বছর ২০২৪-২৫ অর্থবছরের জুলাই থেকে সেপ্টেম্বর প্রান্তিকে দেশের ৯৮ দশমিক ৮ শতাংশ পরিবারের অন্তত একজন মোবাইল ফোন ব্যবহার করেছিল। এর মধ্যে স্মার্টফোন ছিল ৭২ দশমিক ৮ শতাংশ। অর্থাৎ এক বছরের ব্যবধানে মোবাইল ফোনের ব্যবহার ১ শতাংশ বাড়লেও স্মার্টফোনের ব্যবহার কমেছে দশমিক ৪ শতাংশ।
২০২৪ সালের প্রথম প্রান্তিকে পারিবারিকভাবে কম্পিউটার ব্যবহারকারীদের সংখ্যা ছিল ১৫ দশমিক ৩ শতাংশ। সেখান থেকে এই হার দশমিক ২ শতাংশ কমে ১৫ দশমিক ১ শতাংশে দাঁড়িয়েছে। গ্রাম-শহরভিত্তিক হিসাবে দেখা যায়, গ্রামাঞ্চলে ১৪ শতাংশ পরিবার রেডিও ব্যবহার করলেও শহরে এই হার ১৭ দশমিক ৭ শতাংশ।
জরিপের ব্যক্তি পর্যায়ের বিশ্লেষণে দেখানো হয়, ২০২৫ সালের জুলাই-সেপ্টেম্বরে ৮০ দশমিক ৬ শতাংশ মানুষ মোবাইল ফোন ব্যবহার করেছে, যা এক বছর আগে ছিল ৭৮ দশমিক ৯ শতাংশ। অর্থাৎ এক বছরে মোবাইল ব্যবহারকারী বেড়েছে ১ দশমিক ৭ শতাংশ। এর মধ্যে পুরুষ ৮০ দশমিক ৯ শতাংশ এবং নারী ৭৮ দশমিক ৮ শতাংশ।
তবে ব্যক্তিমালিকানাধীন মোবাইল ফোনের ব্যবহার কিছুটা কমেছে। ২০২৪ সালে যেখানে এ হার ছিল ৫৭ দশমিক ৫ শতাংশ, ২০২৫ সালে তা কমে দাঁড়িয়েছে ৫৬ দশমিক ৫ শতাংশে। কম্পিউটার ব্যবহারের হারও সামান্য কমে ১০ দশমিক ১ শতাংশ থেকে ১০ শতাংশে নেমেছে। বিপরীতে, ব্যক্তি পর্যায়ে ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর সংখ্যা বেড়েছে। ২০২৪ সালে ৪৭ দশমিক ৮ শতাংশ থেকে ২০২৫ সালে তা বেড়ে হয়েছে ৪৮ দশমিক ৯ শতাংশ। ইন্টারনেট ব্যবহারকারীদের মধ্যে ৫১ দশমিক ২ শতাংশ পুরুষ এবং ৪৬ দশমিক ৩ শতাংশ নারী।
বিবিএস জানায়, এই জরিপের মাধ্যমে প্রাপ্ত তথ্য জাতীয় উন্নয়ন পরিকল্পনা, টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) পরিমাপ এবং আন্তর্জাতিক টেলিকমিউনিকেশন ইউনিয়নের (আইটিইউ) জন্য আইসিটি সূচক সরবরাহে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।

দেড় দশকের বেশি সময় ধরে কখনো ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’, আবার কখনো ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’ গড়ার স্লোগান শুনে আসছে দেশের মানুষ। এ নিয়ে ‘অ্যাকসেস টু ইনফরমেশন (এটুআই)’ নামে প্রকল্পও আছে সরকারের। বেসরকারি পর্যায়েও রয়েছে নানা উদ্যোগ। তারপরও দেশের ৪৩ দশমিক ৯৮ শতাংশ পরিবার এখনো ইন্টারনেট সেবার আওতার বাইরে রয়ে গেছে। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) এক জরিপের তথ্য বলছে, বাংলাদেশে এখন ইন্টারনেট ব্যবহার করে ৫৬ দশমিক ২ শতাংশ পরিবারের মানুষ। এই হার গ্রামাঞ্চলে ৫১ দশমিক ৫ শতাংশ এবং শহরে ৬৪ শতাংশ।
‘ব্যক্তি ও খানা পর্যায়ে জেলাভিত্তিক আইসিটি ব্যবহারের সুযোগ ও প্রয়োগ পরিমাপ’ প্রকল্পের আওতায় পাঁচ বছর ও তদূর্ধ্ব বয়সীদের ওপর এই জরিপ পরিচালনা করে বিবিএস। এতে পরিবারগুলোয় মোবাইল ফোন, ফিক্সড ফোন, টেলিভিশন, রেডিও ও কম্পিউটার ব্যবহারের চিত্রও উঠে আসে।
জরিপের তথ্য অনুযায়ী, দেশে ব্যক্তি ও পারিবারিক পর্যায়ে মোবাইল ফোনের ব্যবহার বেড়েছে। একই সঙ্গে বেড়েছে টেলিভিশন, কম্পিউটার ও ইন্টারনেট ব্যবহারের হারও। তবে কমেছে স্মার্টফোন ও রেডিওর ব্যবহার।
‘আইসিটি প্রয়োগ ও ব্যবহার জরিপ’-এ পাঁচ বছর ও তদূর্ধ্ব বয়সী এবং শহর-পল্লি অঞ্চল অনুযায়ী জাতীয় পর্যায়ে আইসিটির সূচকসমূহ ত্রৈমাসিক ভিত্তিতে তৈরি করা হয়। সারা দেশে ২ হাজার ৫৬৮টি নির্বাচিত নমুনা এলাকায় দৈবচয়নের ভিত্তিতে ২৪টি করে মোট ৬১ হাজার ৬৩২টি খানায় ত্রৈমাসিক ভিত্তিতে তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছে।
জরিপের বিষয়ে বিবিএসের মহাপরিচালক মোহাম্মদ মিজানুর রহমান বলেন, জরিপের খানা ও ব্যক্তি পর্যায়ে আইসিটির সূচকগুলো আন্তর্জাতিক টেলিকমিউনিকেশন ইউনিয়নের (আইটিইউ) আলোকে নেওয়া হয়েছে। জরিপে খানায় রেডিও, টেলিভিশন, কম্পিউটার, মোবাইল ফোন, স্মার্টফোন, ইন্টারনেটের এক্সেস এবং ব্যক্তি পর্যায়ে মোবাইল ফোন, কম্পিউটার, ইন্টারনেটের ব্যবহার, মোবাইল ফোনের মালিকানার ফলাফল প্রস্তুত করা হয়েছে বলে জানান তিনি।
বিশ্লেষকেরা বলছেন, দেশের অনেক মানুষ ডিজিটাল সেবার বাইরে। এই জরিপে বিকাশ, নগদসহ মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসে (এমএফএস) এর আওতায় আনা হলে পরিসংখ্যান হয়তো পাল্টাবে।
তথ্যপ্রযুক্তি বিশেষজ্ঞ তানভীর হাসান জোহা আজকের পত্রিকাকে বলেন, সচেতনতার অভাবে এখনো অর্ধেক মানুষ ডিজিটাল সিস্টেমের আওতার বাইরে রয়েছে, যাদের বেশির ভাগ গ্রামাঞ্চল এবং পার্বত্য এলাকার। তারা ডিজিটাল সেবাকে ভয় পায়।
জরিপের তথ্য অনুযায়ী, বর্তমানে দেশে ৯৮ দশমিক ৯ শতাংশ পরিবারে অন্তত একটি মোবাইল ফোন ব্যবহৃত হচ্ছে। এর মধ্যে ৭২ দশমিক ৪ শতাংশ পরিবারে রয়েছে স্মার্টফোন। স্মার্টফোন ব্যবহারে শহরাঞ্চল এগিয়ে। শহরে ৮০ দশমিক ৮ শতাংশ এবং গ্রামে ৬৮ দশমিক ৮ শতাংশ পরিবার স্মার্টফোন ব্যবহার করে। এ ছাড়া ফিক্সড ফোন ব্যবহার করে শূন্য দশমিক ৮ শতাংশ পরিবার। কম্পিউটার ব্যবহার করে ৯ দশমিক ১ শতাংশ পরিবার। আর ৫৬ দশমিক ২ শতাংশ পরিবার ইন্টারনেট ব্যবহার করে।
অন্যদিকে, ৫৮ দশমিক ৯ শতাংশ পরিবারে টেলিভিশন দেখা হয় এবং ১৫ দশমিক ১ শতাংশ পরিবার রেডিও ব্যবহার করে বলে জরিপে উঠে এসেছে। আর বিদ্যুৎ সুবিধা রয়েছে ৯৮ দশমিক ৯ শতাংশ পরিবারে।
এর আগের বছর ২০২৪-২৫ অর্থবছরের জুলাই থেকে সেপ্টেম্বর প্রান্তিকে দেশের ৯৮ দশমিক ৮ শতাংশ পরিবারের অন্তত একজন মোবাইল ফোন ব্যবহার করেছিল। এর মধ্যে স্মার্টফোন ছিল ৭২ দশমিক ৮ শতাংশ। অর্থাৎ এক বছরের ব্যবধানে মোবাইল ফোনের ব্যবহার ১ শতাংশ বাড়লেও স্মার্টফোনের ব্যবহার কমেছে দশমিক ৪ শতাংশ।
২০২৪ সালের প্রথম প্রান্তিকে পারিবারিকভাবে কম্পিউটার ব্যবহারকারীদের সংখ্যা ছিল ১৫ দশমিক ৩ শতাংশ। সেখান থেকে এই হার দশমিক ২ শতাংশ কমে ১৫ দশমিক ১ শতাংশে দাঁড়িয়েছে। গ্রাম-শহরভিত্তিক হিসাবে দেখা যায়, গ্রামাঞ্চলে ১৪ শতাংশ পরিবার রেডিও ব্যবহার করলেও শহরে এই হার ১৭ দশমিক ৭ শতাংশ।
জরিপের ব্যক্তি পর্যায়ের বিশ্লেষণে দেখানো হয়, ২০২৫ সালের জুলাই-সেপ্টেম্বরে ৮০ দশমিক ৬ শতাংশ মানুষ মোবাইল ফোন ব্যবহার করেছে, যা এক বছর আগে ছিল ৭৮ দশমিক ৯ শতাংশ। অর্থাৎ এক বছরে মোবাইল ব্যবহারকারী বেড়েছে ১ দশমিক ৭ শতাংশ। এর মধ্যে পুরুষ ৮০ দশমিক ৯ শতাংশ এবং নারী ৭৮ দশমিক ৮ শতাংশ।
তবে ব্যক্তিমালিকানাধীন মোবাইল ফোনের ব্যবহার কিছুটা কমেছে। ২০২৪ সালে যেখানে এ হার ছিল ৫৭ দশমিক ৫ শতাংশ, ২০২৫ সালে তা কমে দাঁড়িয়েছে ৫৬ দশমিক ৫ শতাংশে। কম্পিউটার ব্যবহারের হারও সামান্য কমে ১০ দশমিক ১ শতাংশ থেকে ১০ শতাংশে নেমেছে। বিপরীতে, ব্যক্তি পর্যায়ে ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর সংখ্যা বেড়েছে। ২০২৪ সালে ৪৭ দশমিক ৮ শতাংশ থেকে ২০২৫ সালে তা বেড়ে হয়েছে ৪৮ দশমিক ৯ শতাংশ। ইন্টারনেট ব্যবহারকারীদের মধ্যে ৫১ দশমিক ২ শতাংশ পুরুষ এবং ৪৬ দশমিক ৩ শতাংশ নারী।
বিবিএস জানায়, এই জরিপের মাধ্যমে প্রাপ্ত তথ্য জাতীয় উন্নয়ন পরিকল্পনা, টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) পরিমাপ এবং আন্তর্জাতিক টেলিকমিউনিকেশন ইউনিয়নের (আইটিইউ) জন্য আইসিটি সূচক সরবরাহে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।

চৌকস প্রযুক্তিগত জ্ঞান, সমস্যা সমাধানের দক্ষতা, সৃজনশীলতা ও অধ্যবসায়—এসব মিলিয়েই একজন ব্যক্তি দক্ষ হ্যাকার হয়ে উঠতে পারেন। একটি প্রতিষ্ঠানের নিরাপত্তাব্যবস্থা বাইপাস করা এবং ব্যক্তিগত তথ্য বা সুরক্ষিত ডেটাবেইসে প্রবেশ করতে পারা কিন্তু সহজ কথা নয়। অবশ্য ‘হোয়াইট হ্যাট’ হ্যাকিংয়ে সিস্টেমের নিরাপত্তার উ
০৪ আগস্ট ২০২৩
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহার করে সন্ত্রাস ও সহিংসতায় উসকানিমূলক কনটেন্টের (আধেয়) বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার। এসব কনটেন্ট বন্ধ করতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিচ্ছে সংশ্লিষ্ট দপ্তর ও সংস্থাগুলো।
১ দিন আগে
চিঠিতে বলা হয়, বাংলাদেশে চলমান রাজনৈতিক অস্থিরতা ব্যাপক সহিংসতা ও অস্থিতিশীলতার জন্ম দিয়েছে। গণ-অভ্যুত্থানে ১ হাজার ৪০০ জনের বেশি শিক্ষার্থী নিহত ও হাজারো মানুষ আহত হওয়ার পর দেশ এখন একটি নাজুক রাজনৈতিক পালাবদলের মধ্যে আছে। অন্তর্বর্তী সরকার শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনা এবং একটি গ্রহণযোগ্য জাতীয়...
২ দিন আগে
ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বলেন, দেশের ডিজিটাল রূপান্তর এখন আর খণ্ডিত প্রকল্প বা অ্যাপভিত্তিক উদ্যোগে সীমাবদ্ধ রাখা যাবে না। এটি একটি দীর্ঘমেয়াদি ও ভিত্তিমূলক রাষ্ট্রীয় রূপান্তর, যার কেন্দ্রে থাকবে ডেটা গভর্ন্যান্স, সাইবার নিরাপত্তা ও নাগরিক অধিকার। দেশে বহু ডিজিটাল সিস্টেম থাকলেও ইন্টারঅপারেবিলিটির...
৪ দিন আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তিবিষয়ক বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বলেছেন, ডিজিটাল রূপান্তর মানে শুধু অ্যাপ নয়, রাষ্ট্রের ভিত্তি পুনর্গঠনের প্রক্রিয়া।
রাজধানীর বাংলাদেশ–চীন মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্রে আজ বুধবার ‘বিল্ডিং ট্রাস্ট অ্যান্ড সাসটেইনেবিলিটি থ্রু ডেটা গভর্ন্যান্স’ শীর্ষক সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
বাংলাদেশ সরকারের সহযোগিতায় দ্য ইনস্টিটিউট অব কস্ট অ্যান্ড ম্যানেজমেন্ট অ্যাকাউন্ট্যান্টস অব বাংলাদেশ (আইসিএমএবি) এবং তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগ (ইডিজিই প্রকল্প) এই সম্মেলনের আয়োজন করে।
ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বলেন, দেশের ডিজিটাল রূপান্তর এখন আর খণ্ডিত প্রকল্প বা অ্যাপভিত্তিক উদ্যোগে সীমাবদ্ধ রাখা যাবে না। এটি একটি দীর্ঘমেয়াদি ও ভিত্তিমূলক রাষ্ট্রীয় রূপান্তর, যার কেন্দ্রে থাকবে ডেটা গভর্ন্যান্স, সাইবার নিরাপত্তা ও নাগরিক অধিকার। দেশে বহু ডিজিটাল সিস্টেম থাকলেও ইন্টারঅপারেবিলিটির অভাব বড় বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। ফলে সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে সমস্যা হচ্ছে এবং কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা কার্যকরভাবে ব্যবহার করা যাচ্ছে না।
তৈয়্যব জানান, অন্তর্বর্তী সরকার এরই মধ্যে সাইবার সেফটি, ব্যক্তিগত ডেটা সুরক্ষা ও জাতীয় ডেটা গভর্ন্যান্স—এই তিন আইনি ভিত্তি গড়ে তোলার কাজ শুরু করেছে, যা ভবিষ্যৎ ডিজিটাল পাবলিক ইনফ্রাস্ট্রাকচারের (ডিপিআই) মূল স্তম্ভ হবে। ভবিষ্যতে প্রতিটি নাগরিকের একটি ডিজিটাল ডেটা ওয়ালেট থাকবে; যেখানে জন্ম থেকে মৃত্যু পর্যন্ত তথ্য সুরক্ষিত থাকবে এবং নাগরিকের সম্মতিতেই নির্দিষ্ট সময়ের জন্য ডেটা ব্যবহার করা যাবে।
সম্মেলনে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের সচিব শীষ হায়দার চৌধুরী বলেন, কার্যকর ডেটা গভর্ন্যান্স কেবল নীতিমালা প্রণয়নের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়; এর জন্য প্রয়োজন শক্তিশালী প্রাতিষ্ঠানিক সক্ষমতা, আন্তখাত সমন্বয় এবং সুস্পষ্ট জবাবদিহি কাঠামো। সরকারি ও বেসরকারি খাতে ডিজিটাল সেবার পরিসর বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে দায়িত্বশীল ডেটা ব্যবহার, নিরাপত্তা ও কমপ্লায়েন্স নিশ্চিত করা জনআস্থা অর্জন ও টেকসই ডিজিটাল রূপান্তরের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
সম্মেলনে তিনটি আলাদা অধিবেশনে ডেটা সুরক্ষা নীতিমালার বাস্তব প্রয়োগ, আন্তর্জাতিক মানের সঙ্গে বাংলাদেশের ডেটা ব্যবস্থাপনার তুলনা এবং ডেটা ব্যবস্থাপনায় পেশাদার হিসাববিদদের ভূমিকা নিয়ে আলোচনা হয়।
সম্মেলনে ইন্টারন্যাশনাল ফেডারেশন অব অ্যাকাউন্ট্যান্টসের (আইএফএসি) সভাপতি জ্যঁ বোকু, বিশ্বব্যাংকের বাংলাদেশ ও ভুটান অঞ্চলের ডিভিশন ডিরেক্টর জ্যঁ পেসমেসহ সরকারি নীতিনির্ধারক, আন্তর্জাতিক সংস্থা, পেশাদার হিসাববিদ, আইন ও প্রযুক্তি খাতের বিশেষজ্ঞরা অংশ নেন।

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তিবিষয়ক বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বলেছেন, ডিজিটাল রূপান্তর মানে শুধু অ্যাপ নয়, রাষ্ট্রের ভিত্তি পুনর্গঠনের প্রক্রিয়া।
রাজধানীর বাংলাদেশ–চীন মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্রে আজ বুধবার ‘বিল্ডিং ট্রাস্ট অ্যান্ড সাসটেইনেবিলিটি থ্রু ডেটা গভর্ন্যান্স’ শীর্ষক সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
বাংলাদেশ সরকারের সহযোগিতায় দ্য ইনস্টিটিউট অব কস্ট অ্যান্ড ম্যানেজমেন্ট অ্যাকাউন্ট্যান্টস অব বাংলাদেশ (আইসিএমএবি) এবং তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগ (ইডিজিই প্রকল্প) এই সম্মেলনের আয়োজন করে।
ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বলেন, দেশের ডিজিটাল রূপান্তর এখন আর খণ্ডিত প্রকল্প বা অ্যাপভিত্তিক উদ্যোগে সীমাবদ্ধ রাখা যাবে না। এটি একটি দীর্ঘমেয়াদি ও ভিত্তিমূলক রাষ্ট্রীয় রূপান্তর, যার কেন্দ্রে থাকবে ডেটা গভর্ন্যান্স, সাইবার নিরাপত্তা ও নাগরিক অধিকার। দেশে বহু ডিজিটাল সিস্টেম থাকলেও ইন্টারঅপারেবিলিটির অভাব বড় বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। ফলে সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে সমস্যা হচ্ছে এবং কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা কার্যকরভাবে ব্যবহার করা যাচ্ছে না।
তৈয়্যব জানান, অন্তর্বর্তী সরকার এরই মধ্যে সাইবার সেফটি, ব্যক্তিগত ডেটা সুরক্ষা ও জাতীয় ডেটা গভর্ন্যান্স—এই তিন আইনি ভিত্তি গড়ে তোলার কাজ শুরু করেছে, যা ভবিষ্যৎ ডিজিটাল পাবলিক ইনফ্রাস্ট্রাকচারের (ডিপিআই) মূল স্তম্ভ হবে। ভবিষ্যতে প্রতিটি নাগরিকের একটি ডিজিটাল ডেটা ওয়ালেট থাকবে; যেখানে জন্ম থেকে মৃত্যু পর্যন্ত তথ্য সুরক্ষিত থাকবে এবং নাগরিকের সম্মতিতেই নির্দিষ্ট সময়ের জন্য ডেটা ব্যবহার করা যাবে।
সম্মেলনে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের সচিব শীষ হায়দার চৌধুরী বলেন, কার্যকর ডেটা গভর্ন্যান্স কেবল নীতিমালা প্রণয়নের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়; এর জন্য প্রয়োজন শক্তিশালী প্রাতিষ্ঠানিক সক্ষমতা, আন্তখাত সমন্বয় এবং সুস্পষ্ট জবাবদিহি কাঠামো। সরকারি ও বেসরকারি খাতে ডিজিটাল সেবার পরিসর বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে দায়িত্বশীল ডেটা ব্যবহার, নিরাপত্তা ও কমপ্লায়েন্স নিশ্চিত করা জনআস্থা অর্জন ও টেকসই ডিজিটাল রূপান্তরের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
সম্মেলনে তিনটি আলাদা অধিবেশনে ডেটা সুরক্ষা নীতিমালার বাস্তব প্রয়োগ, আন্তর্জাতিক মানের সঙ্গে বাংলাদেশের ডেটা ব্যবস্থাপনার তুলনা এবং ডেটা ব্যবস্থাপনায় পেশাদার হিসাববিদদের ভূমিকা নিয়ে আলোচনা হয়।
সম্মেলনে ইন্টারন্যাশনাল ফেডারেশন অব অ্যাকাউন্ট্যান্টসের (আইএফএসি) সভাপতি জ্যঁ বোকু, বিশ্বব্যাংকের বাংলাদেশ ও ভুটান অঞ্চলের ডিভিশন ডিরেক্টর জ্যঁ পেসমেসহ সরকারি নীতিনির্ধারক, আন্তর্জাতিক সংস্থা, পেশাদার হিসাববিদ, আইন ও প্রযুক্তি খাতের বিশেষজ্ঞরা অংশ নেন।

চৌকস প্রযুক্তিগত জ্ঞান, সমস্যা সমাধানের দক্ষতা, সৃজনশীলতা ও অধ্যবসায়—এসব মিলিয়েই একজন ব্যক্তি দক্ষ হ্যাকার হয়ে উঠতে পারেন। একটি প্রতিষ্ঠানের নিরাপত্তাব্যবস্থা বাইপাস করা এবং ব্যক্তিগত তথ্য বা সুরক্ষিত ডেটাবেইসে প্রবেশ করতে পারা কিন্তু সহজ কথা নয়। অবশ্য ‘হোয়াইট হ্যাট’ হ্যাকিংয়ে সিস্টেমের নিরাপত্তার উ
০৪ আগস্ট ২০২৩
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহার করে সন্ত্রাস ও সহিংসতায় উসকানিমূলক কনটেন্টের (আধেয়) বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার। এসব কনটেন্ট বন্ধ করতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিচ্ছে সংশ্লিষ্ট দপ্তর ও সংস্থাগুলো।
১ দিন আগে
চিঠিতে বলা হয়, বাংলাদেশে চলমান রাজনৈতিক অস্থিরতা ব্যাপক সহিংসতা ও অস্থিতিশীলতার জন্ম দিয়েছে। গণ-অভ্যুত্থানে ১ হাজার ৪০০ জনের বেশি শিক্ষার্থী নিহত ও হাজারো মানুষ আহত হওয়ার পর দেশ এখন একটি নাজুক রাজনৈতিক পালাবদলের মধ্যে আছে। অন্তর্বর্তী সরকার শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনা এবং একটি গ্রহণযোগ্য জাতীয়...
২ দিন আগে
দেড় দশকের বেশি সময় ধরে কখনো ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’, আবার কখনো ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’ গড়ার স্লোগান শুনে আসছে দেশের মানুষ। এ নিয়ে ‘অ্যাকসেস টু ইনফরমেশন (এটুআই)’ নামে প্রকল্পও আছে সরকারের। বেসরকারি পর্যায়েও রয়েছে নানা উদ্যোগ। তারপরও দেশের ৪৩ দশমিক ৯৮ শতাংশ পরিবার এখনো ইন্টারনেট সেবার আওতার বাইরে রয়ে গেছে।
৪ দিন আগে