জাহাঙ্গীর আলম

যদি আকাশে সহস্র সূর্যের প্রভা যুগপৎ উদিত হয়, তাহলে সেই মহাত্মা বিশ্বরূপের প্রভার কিঞ্চিৎ তুল্য হতে পারে—গীতার এই শ্লোক আউরে নিজ হাতে গড়া মারণাস্ত্রের সফল পরীক্ষা উদ্যাপন করেছিলেন ওপেনহাইমার। তাঁর মতো মৃদুভাষি চাপা স্বভাবের জ্ঞানী মানুষ আনন্দিত হলেও নিজের সৃষ্ট তেজস্ক্রিয় বোমার মতো ফেটে পড়েননি। পরক্ষণেই অবশ্য তাঁকে ঘিরে ফেলে অবসাদ, অপরাধবোধে বিদ্ধ বিষণ্ন একা মানুষ হিসেবে বাকি জীবন অতিবাহিত করেছেন। ঘটনার কয়েক বছর পর তিনি বলেছিলেন, ওই সময় গীতার আরেকটি শ্লোক তাঁর মনে পড়েছিল—আমিই মৃত্যু, পৃথিবী ধ্বংসের কারণ! এটি হয়তো তাঁর পরবর্তী উপলব্ধির প্রকাশ।
সে অর্থে ওপেনহাইমার তাঁর সময়ের অন্যতম সেরা মেধাবী এবং অত্যন্ত সংবেদনশীল মানুষ ছিলেন। যদিও তাঁর হাতে গড়া মারণাস্ত্রেই বিশ্ববাসী প্রথম পারমাণবিক বোমার অভূতপূর্ব বিধ্বংসী রূপ দেখেছে। এ নিয়ে ক্রিস্টোফার নোলানের ‘ওপেনহাইমার’ সিনেমাটির উপস্থাপন কৌশলের গুণে ওপেনহাইমারকে চাইলে দুভাবেই বিচার করা যেতে পারে। একজন বিজ্ঞানী হিসেবে ওপেনহাইমার তাঁর অবদানের কারণে প্রশংসিত, পরবর্তীতে মার্কিন রাজনীতিকদের সন্দেহবাতিকতার কারণে অপমানিত একজন হিরো। আবার হলিউডের ‘দায়মুক্তি প্রকল্পের’ অংশ হিসেবেও দেখা যেতে পারে এই সিনেমাকে।
নৈতিক বিচারের আগে ‘ওপেনহাইমার’ সিনেমার একটি সাধারণ পর্যালোচনা করা যাক:
ক্রিস্টোফার নোলানের ‘ওপেনহাইমার’ হলো একটি বিখ্যাত চরিত্রের বিশ্লেষণ এবং এবং ইতিহাসের একটি সুস্পষ্ট বিবরণ। ওপেনহাইমার হলেন সেই অসাধারণ বুদ্ধিদীপ্ত ব্যক্তি যিনি ম্যানহাটন প্রকল্পের নেতৃত্ব দিয়েছিলেন। যেটি ছিল পারমাণবিক বোমা তৈরির প্রকল্প। যেই বোমা দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের অবসান ঘটিয়েছিল।
কিন্তু নোলানের এই দুঃসাহসী মহাকাব্যের সম্ভবত সবচেয়ে বিস্ময়কর উপাদানটি হলো—রাজনৈতিক খেলার যে উত্তেজনাকর দৃশ্যায়ন, শেষ পর্যন্ত সেটি পারমাণবিক অস্ত্রের বিধ্বংসী প্রকৃতিকে আড়াল করে ফেলেছে। বিংশ শতাব্দীর অন্যতম উজ্জ্বল বৈজ্ঞানিক মানস বলা হয় যাকে সেই ওপেনহাইমার শেষ জীবনে আমেরিকার সমর আকাঙ্ক্ষী চিন্তাধারার বিরুদ্ধে নিজের উচ্চকিত কণ্ঠের কারণে সেই সময়ই রাজনীতিকদের দ্বারা নিন্দিত হয়েছেন।
চিসেলিং কাই বার্ড এবং মার্টিন জে শেরম্যান রচিত ওপেনহাইমারের জীবনী ‘আমেরিকান প্রমিথিউস: দ্য ট্রায়াম্ফ অ্যান্ড ট্র্যাজেডি অব জে. রবার্ট ওপেনহাইমার’ অবলম্বনেই এই সিনেমা বানিয়েছেন নোলান। অবশ্য ৭০০–এর বেশি পৃষ্ঠার বইটি থেকে ৩ ঘণ্টার চিত্রনাট্য বানাতে গিয়ে নোলান পুরো প্লটটিকে দর্শকদের সামনে হাজির করতে পারেননি।
সিনেমাটি প্রথমে কোয়ান্টাম পদার্থবিদ্যার মতো জটিল বিষয় নিয়ে গভীর কথাবার্তায় ঠাসা বলে মনে হতে পারে। যেখানে দেখা যায়, বিশ শতকের মাঝামাঝি সময়ের ব্যবসায়িক লেবাসের কিছু পুরুষ অফিস এবং ল্যাবে দাঁড়িয়ে কোয়ান্টাম মেকানিক্স নিয়ে আলোচনা করছেন। পদার্থবিদ্যায় যাদের ধারণা নেই তাদের জন্য সেটি দুর্বোধ্যই। তবে প্রায় এক ঘণ্টার মধ্যে দর্শকদের স্বস্তি দেওয়ার মতো দৃশ্য দেখানো হয়েছে— যখন ফিউশন বোমার উপাদান হিসেবে ইউরেনিয়াম এবং প্লুটোনিয়ামের মধ্যে পার্থক্য দেখানোর জন্য কাচের পাত্রে মার্বেল রেখে ব্যাখ্যা করার চেষ্টা করা হয়।
নোলানের অবশ্য ঘটনা বর্ণনার নিজস্ব পদ্ধতি রয়েছে—তাঁর সিনেমার জটিল উপাদানগুলো ক্রমে স্পষ্ট হয়ে ওঠে। এ সিনেমাতেও তাই হয়েছে। ওয়াশিংটনে ওপেনহাইমারের বিরুদ্ধে শুনানিও এখানে মূল উপজীব্য। পুরো আখ্যানে ছেদ ঘটনায় শুরুর দৃশ্য। অবশ্য শেষ ঘণ্টার পুরোটাই দখল করে আছে সেই শুনানিগুলো।
জে. রবার্ট ওপেনহাইমার হিসেবে কিলিয়ান মারফি এবং অ্যালবার্ট আইনস্টাইনের ভূমিকায় টম কন্টির মধ্যে একটি ব্যক্তিগত কথোপকথন দুর্দান্তভাবে এই দুই মহান বিজ্ঞানীর দৃষ্টিভঙ্গিকে দর্শকদের সামনে তুলে ধরে ভিন্ন মাত্রা যোগ করেছে। এই দৃশ্যে দেখানো হয়েছে, দুই মেধাবী মানুষের ব্যক্তিগত দৃষ্টিভঙ্গি তাঁদের নিজ নিজ শাখার বিজ্ঞানের ব্যাপারে কতটা আলাদা ছিল—সেটিরই এক আবেগঘন দৃশ্যায়ন সেটি।
ফোর–অ্যাক্ট কাঠামোর সিনেমা দেখে যারা অভ্যস্ত তাঁদের জন্য নোলানের ওপেনহাইমার শুরুতে কিছুটা হতাশ করতে পারে। অবশ্য ধৈর্যশীল ও একাগ্র দর্শকদের জন্য পুরস্কার হিসেবে একটি টানটান উত্তেজনার দৃশ্য রাখা হয়েছে— নিউ মেক্সিকোর মরুভূমিতে ১৯৪৫ সালের পরমাণু বোমার প্রথম পরীক্ষা। ওপেনহাইমার যেটির নাম দিয়েছিলেন ‘ট্রিনিটি’। এই বোমায় জাপানের হিরোশিমা এবং নাগাসাকি শহরকে ধুলায় মিশিয়ে দিয়েছিল।
উল্লেখ্য, ঐতিহ্যগতভাবে সিনেমার থ্রি-অ্যাক্ট কাঠামোই বেশি অনুসরণ করা হয়। তবে ১. সেটআপ, ২. দ্বন্দ্ব, ৩. রেজুলেশন বা সমাধান –এর পাশাপাশি ফোর–অ্যাক্ট কাঠামোতে তৃতীয় পর্বে থাকে ‘সংকট’।
১৯৪৫ সালের সেই ঘটনা আধুনিক মানব ইতিহাসের মোড় ঘুরিয়ে দেওয়ার মুহূর্ত। আমেরিকান নায়ক হিসেবে ওপেনহাইমারকে সেই সাফল্যের মুকুট দেওয়া হয়। কিন্তু একই সঙ্গে সিনেমায় কিলিয়ান মারফির অভিব্যক্তিপূর্ণ মুখমণ্ডলজুড়ে নৈতিক পরাজয়ের ক্ষোভ ও বিব্রতবোধ ফুটে উঠেছে অসাধারণ মহিমায়। এরপরেই দর্শকদের সামনে হাজির হয় গা হিম করা উইচ হান্ট—কমিউনিস্ট ধরার অভিযান। যুক্তরাষ্ট্রে ম্যাকার্থি যুগের সবচেয়ে জঘন্য কলাকৌশলগুলোর প্রতিনিধিত্ব করে এই ঘটনা।
ক্রিস্টোফার নোলান স্বভাবসুলভ দক্ষতায় ওপেনহাইমার এবং তাঁর সপ্রতিভ স্ত্রী কিটির (অভিনয়ে এমিলি ব্লান্ট) সেই সময়ের বেদনা এবং অপমানকে দৃশ্যায়িত করেছেন। পাঁচ বছর পর আইজেনহাওয়ার প্রশাসনের বাণিজ্যমন্ত্রী হিসেবে লুইস স্ট্রসকে (অভিনয়ে রবার্ট ডাউনি জুনিয়র) নিয়োগের সিনেট শুনানিতে আবার উঠে আসে ওপেনহাইমারের বিরুদ্ধে তথ্য পাচারের অভিযোগ। আবার শুরু হয় শুনানি।
লুইস স্ট্রসের চরিত্রে রাবর্ট ডাউনি অসাধারণ অভিনয় করেছেন। পরমাণু শক্তি কমিশনের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য এবং পরে চেয়ারম্যান হন স্ট্রস। তাঁর চরিত্রকে অসাধারণভাবে ফুটিয়ে তুলেছেন রবার্ট ডাউনি। স্ট্রসের রাজনৈতিক উচ্চাকাঙ্ক্ষা অহংকারী ওপেনহাইমারের প্রতি প্রতিশোধপরায়ণ করে তুলেছিল। এমন একটি চরিত্রে আয়রন ম্যানের টনি স্টার্ক তাঁর মুনশিয়ানা দেখিয়েছেন।
একজন জুতার বিক্রয়কর্মী হিসেবে স্ট্রসের উত্থানকে রবার্ট ডাউনি নাটকীয়ভাবে উপস্থাপন করেছেন। এই চরিত্র চিত্রায়ণের যে উদ্দেশ্য ছিল নির্মাতার তা স্পষ্ট হয়ে উঠেছে সিনেমার শেষের দিকে। সম্পর্কের ক্ষত এবং ক্রোধের তিক্ত স্রোতে ভেসে যাওয়া একটি চরিত্রকে ডাউনি যেভাবে ফুটিয়ে তুলেছেন তা আজকালকার বড় বাজেটের চোখ ধাঁধানো সুপারহিরোদের কসরত দেখে উল্লাস করা দর্শকেরা বুঝবেন না!
এই সিনেমা আপনাকে ধীরে ধীরে উত্তেজিত করবে। তত্ত্বীয় পদার্থবিদ্যার দুর্বোধ্য আলাপে ধৈর্যচ্যুতি না ঘটলে ক্রমেই চোখের সামনে ভেসে উঠবে—আধো আলোর ক্যাপিটল হিল কনফারেন্স রুম এবং সিনেট চেম্বারের শীতল বৈঠক থেকে শুরু করে প্রতিটি নতুন মোড়, বিশ্বাসঘাতকতা, আনুগত্য, ঘৃণা, ঈর্ষা আপনাকে বাকিটা সময় শ্বাসরুদ্ধ করে রাখবে।
মানুষ এবং বিজ্ঞান, যুদ্ধ এবং ওয়াশিংটনের সুবিধাবাদী চরিত্র—এসবের একটি বুদ্ধিদীপ্ত গল্পের কেন্দ্রীয় ব্যক্তিত্ব হিসেবে কিলিয়ান মারফি নিখুঁতভাবে চরিত্রটিকে ফুটিয়ে তুলেছেন। মৃদুভাষী ওপেনহাইমারের আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িয়ে থাকা জটিলতাগুলো দৃশ্যত চাপা স্বভাবের সংযমী একজন মানুষ হয়ে শুধু মুখভঙ্গিতে ফুটিয়ে তোলা সহজ কথা নয়!
মারফির তীক্ষ্ণ ফ্যাকাশে নীল চোখ পদার্থবিজ্ঞানীর বুদ্ধির দীপ্তি, দৃঢ় সংকল্প এবং যন্ত্রণার একটি জানালা হয়ে উঠেছে। সেটি স্পষ্ট হয়েছে যখন (পৃথিবী ধ্বংসের অস্ত্র বানিয়ে) নিজের নির্বুদ্ধিতা স্বীকার করেন এবং দ্রুতই এর প্রভাব চাক্ষুষ করতে থাকেন। এত বড় একটি কাজ করে বিশ্বকে চমকে দেওয়ার পরিবর্তে তাঁকে ভয়ানক রকম উদ্বিগ্ন করে তুলেছিল। তিনি বুদ্ধিমত্তার সঙ্গে তখনই যেমনটি কল্পনা করেছিলেন—জাপানে বোমা বিস্ফোরণ কেবল স্নায়ুযুদ্ধের দরজাই খুলে দেয়নি, আরও শক্তিশালী পারমাণবিক বোমার ক্রমবর্ধমান হুমকির দিকে পৃথিবীকে ঠেলে দিয়েছে—আজকের যে কোনো সময়ের চেয়ে বেশি তাঁকে আলোড়িত করেছিল।
মেজর লেসলি গ্রোভস (অভিনয়ে ম্যাট ডেমন) যিনি ওপেনহাইমারকে নিয়োগ দিয়েছিলেন। একটি অত্যন্ত গোপন গবেষণা ও উন্নয়ন প্রকল্পের তত্ত্বাবধায়কের দায়িত্বে থাকা এবং সরকার ও বিজ্ঞানীদের মধ্যে যোগাযোগের ব্যবস্থা করার মতো গুরুদায়িত্ব কাঁধে বহন করা একজন সামরিক কর্মকর্তাকে রাশভারী হিসেবেই দেখে অভ্যস্ত আমরা। কিন্তু লেসলি গ্রোভসের চরিত্রটিও দর্শকদের আনন্দ দিতে পেরেছে। সরকারের হয়ে যুদ্ধের পক্ষে কাজ নিঃসন্দেহে একটি ঘৃণ্য পেশা। দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে তাঁকে অনেক সময় কঠোর হতে হয়েছে। কিন্তু ওপেনহাইমারের প্রতিভাকে মনে মনে শ্রদ্ধা করতেন। সেটি ১৯৫৪ সালের শুনানিতে এসে স্পষ্ট হয়। এমন একটি চরিত্রে ম্যাট ডেমন দুর্দান্ত অভিনয় করেছেন।
স্ত্রীর চরিত্রে এমিলি ব্লান্ট, পরীক্ষামূলক পদার্থবিদ চরিত্রে রামি মালেকসহ ছোটখাটো আরও কিছু চরিত্রকে কখনোই অপ্রয়োজনীয় মনে হবে না। আইনস্টাইন, নিলস বোরের মতো বিজ্ঞানীদের উপস্থিতিও চোখে লেগে থাকার মতো।
সেই সঙ্গে নোলানের অসাধারণ পরিমিতিবোধ, জেনিফার লেমের চতুর সম্পাদনা এবং লুডভিগ গোরানসনের সংগীতায়োজন—ওপেনহাইমারের উপাখ্যানটি অন্য মাত্রায় নিয়ে গেছে।
এবার এই সিনেমার আরেকটি দিক বিবেচনা করা যাক:
সাধারণত ভূরাজনীতির খেলায় যুক্তরাষ্ট্রের কিছু অপরাধ সম্পর্কে জনপরিসরের ধারণা পরিবর্তনের কৌশল হিসেবে হলিউডে এ ধরনের সিনেমা বানানো হয়। এর একটি উদাহরণ হতে পারে ‘র্যাম্বো’ সিরিজ। এ ধরনের সিনেমা কখনোই ‘সাম্রাজ্যবাদী যুদ্ধ কিংবা বিশুদ্ধ হত্যার বিরুদ্ধে সচেতন আপত্তি বা বিরোধিতা নয়’। যুদ্ধফেরত ‘কিলিং মেশিনদের’ প্রতি মানুষের সমবেদনা তৈরির প্রকল্প এগুলো।
এ ধরনের সিনেমায় প্রত্যক্ষ খুনিদেরই যুদ্ধের ভিকটিম হিসেবে উপস্থাপন করা হয়। যেন তাঁদের নিজস্ব সত্তা বলতে কিছু নেই। খুবই সুকৌশলে এসব সিনেমায় কখনোই আমেরিকার মারণাস্ত্রের শিকার মানুষদের ভোগান্তির দৃশ্য দেখানো হয় না। যেমনটি হয়নি ওপেনহাইমারেও। যুদ্ধ–বিরোধী কোনো বার্তা দেয় না এসব সিনেমা। বরং যুদ্ধে পরাজয়ের দায় নীতিনির্ধারক বা রাজনীতিকদের ঘাড়ে চাপিয়ে হত্যাকারীদের অপরাধ লঘূকরণের দায়িত্ব নেয় হলিউড। নতুন যুদ্ধের ক্ষেত্র তৈরি করতে খুনিদের প্রতি সহানুভূতি উৎপাদন করা হয়। শেষ পর্যন্ত দেশের সার্বভৌমত্বের বিপরীতে তুচ্ছ ক্ষমতাহীন নাগরিককে দাঁড় করিয়ে দেওয়ার মাধ্যমে যুদ্ধের আসল ভুক্তভোগীদের থেকে দৃষ্টি ফেরানো হয়।
ওপেনহাইমারের গল্প বলার যে কৌশল সেখানেও ক্রিস্টোফার নোলান যুক্তরাষ্ট্রের অপরাধ স্বাভাবিকীকরণ ফরমুলাতেই হেঁটেছেন। অবশ্য একজন গল্পকার, নির্মাতা হিসেবে তিনি তাঁর মুনশিয়ানার পুরোটাই যে আবারও দেখিয়েছেন তাতে কোনো সন্দেহ নেই।

যদি আকাশে সহস্র সূর্যের প্রভা যুগপৎ উদিত হয়, তাহলে সেই মহাত্মা বিশ্বরূপের প্রভার কিঞ্চিৎ তুল্য হতে পারে—গীতার এই শ্লোক আউরে নিজ হাতে গড়া মারণাস্ত্রের সফল পরীক্ষা উদ্যাপন করেছিলেন ওপেনহাইমার। তাঁর মতো মৃদুভাষি চাপা স্বভাবের জ্ঞানী মানুষ আনন্দিত হলেও নিজের সৃষ্ট তেজস্ক্রিয় বোমার মতো ফেটে পড়েননি। পরক্ষণেই অবশ্য তাঁকে ঘিরে ফেলে অবসাদ, অপরাধবোধে বিদ্ধ বিষণ্ন একা মানুষ হিসেবে বাকি জীবন অতিবাহিত করেছেন। ঘটনার কয়েক বছর পর তিনি বলেছিলেন, ওই সময় গীতার আরেকটি শ্লোক তাঁর মনে পড়েছিল—আমিই মৃত্যু, পৃথিবী ধ্বংসের কারণ! এটি হয়তো তাঁর পরবর্তী উপলব্ধির প্রকাশ।
সে অর্থে ওপেনহাইমার তাঁর সময়ের অন্যতম সেরা মেধাবী এবং অত্যন্ত সংবেদনশীল মানুষ ছিলেন। যদিও তাঁর হাতে গড়া মারণাস্ত্রেই বিশ্ববাসী প্রথম পারমাণবিক বোমার অভূতপূর্ব বিধ্বংসী রূপ দেখেছে। এ নিয়ে ক্রিস্টোফার নোলানের ‘ওপেনহাইমার’ সিনেমাটির উপস্থাপন কৌশলের গুণে ওপেনহাইমারকে চাইলে দুভাবেই বিচার করা যেতে পারে। একজন বিজ্ঞানী হিসেবে ওপেনহাইমার তাঁর অবদানের কারণে প্রশংসিত, পরবর্তীতে মার্কিন রাজনীতিকদের সন্দেহবাতিকতার কারণে অপমানিত একজন হিরো। আবার হলিউডের ‘দায়মুক্তি প্রকল্পের’ অংশ হিসেবেও দেখা যেতে পারে এই সিনেমাকে।
নৈতিক বিচারের আগে ‘ওপেনহাইমার’ সিনেমার একটি সাধারণ পর্যালোচনা করা যাক:
ক্রিস্টোফার নোলানের ‘ওপেনহাইমার’ হলো একটি বিখ্যাত চরিত্রের বিশ্লেষণ এবং এবং ইতিহাসের একটি সুস্পষ্ট বিবরণ। ওপেনহাইমার হলেন সেই অসাধারণ বুদ্ধিদীপ্ত ব্যক্তি যিনি ম্যানহাটন প্রকল্পের নেতৃত্ব দিয়েছিলেন। যেটি ছিল পারমাণবিক বোমা তৈরির প্রকল্প। যেই বোমা দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের অবসান ঘটিয়েছিল।
কিন্তু নোলানের এই দুঃসাহসী মহাকাব্যের সম্ভবত সবচেয়ে বিস্ময়কর উপাদানটি হলো—রাজনৈতিক খেলার যে উত্তেজনাকর দৃশ্যায়ন, শেষ পর্যন্ত সেটি পারমাণবিক অস্ত্রের বিধ্বংসী প্রকৃতিকে আড়াল করে ফেলেছে। বিংশ শতাব্দীর অন্যতম উজ্জ্বল বৈজ্ঞানিক মানস বলা হয় যাকে সেই ওপেনহাইমার শেষ জীবনে আমেরিকার সমর আকাঙ্ক্ষী চিন্তাধারার বিরুদ্ধে নিজের উচ্চকিত কণ্ঠের কারণে সেই সময়ই রাজনীতিকদের দ্বারা নিন্দিত হয়েছেন।
চিসেলিং কাই বার্ড এবং মার্টিন জে শেরম্যান রচিত ওপেনহাইমারের জীবনী ‘আমেরিকান প্রমিথিউস: দ্য ট্রায়াম্ফ অ্যান্ড ট্র্যাজেডি অব জে. রবার্ট ওপেনহাইমার’ অবলম্বনেই এই সিনেমা বানিয়েছেন নোলান। অবশ্য ৭০০–এর বেশি পৃষ্ঠার বইটি থেকে ৩ ঘণ্টার চিত্রনাট্য বানাতে গিয়ে নোলান পুরো প্লটটিকে দর্শকদের সামনে হাজির করতে পারেননি।
সিনেমাটি প্রথমে কোয়ান্টাম পদার্থবিদ্যার মতো জটিল বিষয় নিয়ে গভীর কথাবার্তায় ঠাসা বলে মনে হতে পারে। যেখানে দেখা যায়, বিশ শতকের মাঝামাঝি সময়ের ব্যবসায়িক লেবাসের কিছু পুরুষ অফিস এবং ল্যাবে দাঁড়িয়ে কোয়ান্টাম মেকানিক্স নিয়ে আলোচনা করছেন। পদার্থবিদ্যায় যাদের ধারণা নেই তাদের জন্য সেটি দুর্বোধ্যই। তবে প্রায় এক ঘণ্টার মধ্যে দর্শকদের স্বস্তি দেওয়ার মতো দৃশ্য দেখানো হয়েছে— যখন ফিউশন বোমার উপাদান হিসেবে ইউরেনিয়াম এবং প্লুটোনিয়ামের মধ্যে পার্থক্য দেখানোর জন্য কাচের পাত্রে মার্বেল রেখে ব্যাখ্যা করার চেষ্টা করা হয়।
নোলানের অবশ্য ঘটনা বর্ণনার নিজস্ব পদ্ধতি রয়েছে—তাঁর সিনেমার জটিল উপাদানগুলো ক্রমে স্পষ্ট হয়ে ওঠে। এ সিনেমাতেও তাই হয়েছে। ওয়াশিংটনে ওপেনহাইমারের বিরুদ্ধে শুনানিও এখানে মূল উপজীব্য। পুরো আখ্যানে ছেদ ঘটনায় শুরুর দৃশ্য। অবশ্য শেষ ঘণ্টার পুরোটাই দখল করে আছে সেই শুনানিগুলো।
জে. রবার্ট ওপেনহাইমার হিসেবে কিলিয়ান মারফি এবং অ্যালবার্ট আইনস্টাইনের ভূমিকায় টম কন্টির মধ্যে একটি ব্যক্তিগত কথোপকথন দুর্দান্তভাবে এই দুই মহান বিজ্ঞানীর দৃষ্টিভঙ্গিকে দর্শকদের সামনে তুলে ধরে ভিন্ন মাত্রা যোগ করেছে। এই দৃশ্যে দেখানো হয়েছে, দুই মেধাবী মানুষের ব্যক্তিগত দৃষ্টিভঙ্গি তাঁদের নিজ নিজ শাখার বিজ্ঞানের ব্যাপারে কতটা আলাদা ছিল—সেটিরই এক আবেগঘন দৃশ্যায়ন সেটি।
ফোর–অ্যাক্ট কাঠামোর সিনেমা দেখে যারা অভ্যস্ত তাঁদের জন্য নোলানের ওপেনহাইমার শুরুতে কিছুটা হতাশ করতে পারে। অবশ্য ধৈর্যশীল ও একাগ্র দর্শকদের জন্য পুরস্কার হিসেবে একটি টানটান উত্তেজনার দৃশ্য রাখা হয়েছে— নিউ মেক্সিকোর মরুভূমিতে ১৯৪৫ সালের পরমাণু বোমার প্রথম পরীক্ষা। ওপেনহাইমার যেটির নাম দিয়েছিলেন ‘ট্রিনিটি’। এই বোমায় জাপানের হিরোশিমা এবং নাগাসাকি শহরকে ধুলায় মিশিয়ে দিয়েছিল।
উল্লেখ্য, ঐতিহ্যগতভাবে সিনেমার থ্রি-অ্যাক্ট কাঠামোই বেশি অনুসরণ করা হয়। তবে ১. সেটআপ, ২. দ্বন্দ্ব, ৩. রেজুলেশন বা সমাধান –এর পাশাপাশি ফোর–অ্যাক্ট কাঠামোতে তৃতীয় পর্বে থাকে ‘সংকট’।
১৯৪৫ সালের সেই ঘটনা আধুনিক মানব ইতিহাসের মোড় ঘুরিয়ে দেওয়ার মুহূর্ত। আমেরিকান নায়ক হিসেবে ওপেনহাইমারকে সেই সাফল্যের মুকুট দেওয়া হয়। কিন্তু একই সঙ্গে সিনেমায় কিলিয়ান মারফির অভিব্যক্তিপূর্ণ মুখমণ্ডলজুড়ে নৈতিক পরাজয়ের ক্ষোভ ও বিব্রতবোধ ফুটে উঠেছে অসাধারণ মহিমায়। এরপরেই দর্শকদের সামনে হাজির হয় গা হিম করা উইচ হান্ট—কমিউনিস্ট ধরার অভিযান। যুক্তরাষ্ট্রে ম্যাকার্থি যুগের সবচেয়ে জঘন্য কলাকৌশলগুলোর প্রতিনিধিত্ব করে এই ঘটনা।
ক্রিস্টোফার নোলান স্বভাবসুলভ দক্ষতায় ওপেনহাইমার এবং তাঁর সপ্রতিভ স্ত্রী কিটির (অভিনয়ে এমিলি ব্লান্ট) সেই সময়ের বেদনা এবং অপমানকে দৃশ্যায়িত করেছেন। পাঁচ বছর পর আইজেনহাওয়ার প্রশাসনের বাণিজ্যমন্ত্রী হিসেবে লুইস স্ট্রসকে (অভিনয়ে রবার্ট ডাউনি জুনিয়র) নিয়োগের সিনেট শুনানিতে আবার উঠে আসে ওপেনহাইমারের বিরুদ্ধে তথ্য পাচারের অভিযোগ। আবার শুরু হয় শুনানি।
লুইস স্ট্রসের চরিত্রে রাবর্ট ডাউনি অসাধারণ অভিনয় করেছেন। পরমাণু শক্তি কমিশনের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য এবং পরে চেয়ারম্যান হন স্ট্রস। তাঁর চরিত্রকে অসাধারণভাবে ফুটিয়ে তুলেছেন রবার্ট ডাউনি। স্ট্রসের রাজনৈতিক উচ্চাকাঙ্ক্ষা অহংকারী ওপেনহাইমারের প্রতি প্রতিশোধপরায়ণ করে তুলেছিল। এমন একটি চরিত্রে আয়রন ম্যানের টনি স্টার্ক তাঁর মুনশিয়ানা দেখিয়েছেন।
একজন জুতার বিক্রয়কর্মী হিসেবে স্ট্রসের উত্থানকে রবার্ট ডাউনি নাটকীয়ভাবে উপস্থাপন করেছেন। এই চরিত্র চিত্রায়ণের যে উদ্দেশ্য ছিল নির্মাতার তা স্পষ্ট হয়ে উঠেছে সিনেমার শেষের দিকে। সম্পর্কের ক্ষত এবং ক্রোধের তিক্ত স্রোতে ভেসে যাওয়া একটি চরিত্রকে ডাউনি যেভাবে ফুটিয়ে তুলেছেন তা আজকালকার বড় বাজেটের চোখ ধাঁধানো সুপারহিরোদের কসরত দেখে উল্লাস করা দর্শকেরা বুঝবেন না!
এই সিনেমা আপনাকে ধীরে ধীরে উত্তেজিত করবে। তত্ত্বীয় পদার্থবিদ্যার দুর্বোধ্য আলাপে ধৈর্যচ্যুতি না ঘটলে ক্রমেই চোখের সামনে ভেসে উঠবে—আধো আলোর ক্যাপিটল হিল কনফারেন্স রুম এবং সিনেট চেম্বারের শীতল বৈঠক থেকে শুরু করে প্রতিটি নতুন মোড়, বিশ্বাসঘাতকতা, আনুগত্য, ঘৃণা, ঈর্ষা আপনাকে বাকিটা সময় শ্বাসরুদ্ধ করে রাখবে।
মানুষ এবং বিজ্ঞান, যুদ্ধ এবং ওয়াশিংটনের সুবিধাবাদী চরিত্র—এসবের একটি বুদ্ধিদীপ্ত গল্পের কেন্দ্রীয় ব্যক্তিত্ব হিসেবে কিলিয়ান মারফি নিখুঁতভাবে চরিত্রটিকে ফুটিয়ে তুলেছেন। মৃদুভাষী ওপেনহাইমারের আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িয়ে থাকা জটিলতাগুলো দৃশ্যত চাপা স্বভাবের সংযমী একজন মানুষ হয়ে শুধু মুখভঙ্গিতে ফুটিয়ে তোলা সহজ কথা নয়!
মারফির তীক্ষ্ণ ফ্যাকাশে নীল চোখ পদার্থবিজ্ঞানীর বুদ্ধির দীপ্তি, দৃঢ় সংকল্প এবং যন্ত্রণার একটি জানালা হয়ে উঠেছে। সেটি স্পষ্ট হয়েছে যখন (পৃথিবী ধ্বংসের অস্ত্র বানিয়ে) নিজের নির্বুদ্ধিতা স্বীকার করেন এবং দ্রুতই এর প্রভাব চাক্ষুষ করতে থাকেন। এত বড় একটি কাজ করে বিশ্বকে চমকে দেওয়ার পরিবর্তে তাঁকে ভয়ানক রকম উদ্বিগ্ন করে তুলেছিল। তিনি বুদ্ধিমত্তার সঙ্গে তখনই যেমনটি কল্পনা করেছিলেন—জাপানে বোমা বিস্ফোরণ কেবল স্নায়ুযুদ্ধের দরজাই খুলে দেয়নি, আরও শক্তিশালী পারমাণবিক বোমার ক্রমবর্ধমান হুমকির দিকে পৃথিবীকে ঠেলে দিয়েছে—আজকের যে কোনো সময়ের চেয়ে বেশি তাঁকে আলোড়িত করেছিল।
মেজর লেসলি গ্রোভস (অভিনয়ে ম্যাট ডেমন) যিনি ওপেনহাইমারকে নিয়োগ দিয়েছিলেন। একটি অত্যন্ত গোপন গবেষণা ও উন্নয়ন প্রকল্পের তত্ত্বাবধায়কের দায়িত্বে থাকা এবং সরকার ও বিজ্ঞানীদের মধ্যে যোগাযোগের ব্যবস্থা করার মতো গুরুদায়িত্ব কাঁধে বহন করা একজন সামরিক কর্মকর্তাকে রাশভারী হিসেবেই দেখে অভ্যস্ত আমরা। কিন্তু লেসলি গ্রোভসের চরিত্রটিও দর্শকদের আনন্দ দিতে পেরেছে। সরকারের হয়ে যুদ্ধের পক্ষে কাজ নিঃসন্দেহে একটি ঘৃণ্য পেশা। দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে তাঁকে অনেক সময় কঠোর হতে হয়েছে। কিন্তু ওপেনহাইমারের প্রতিভাকে মনে মনে শ্রদ্ধা করতেন। সেটি ১৯৫৪ সালের শুনানিতে এসে স্পষ্ট হয়। এমন একটি চরিত্রে ম্যাট ডেমন দুর্দান্ত অভিনয় করেছেন।
স্ত্রীর চরিত্রে এমিলি ব্লান্ট, পরীক্ষামূলক পদার্থবিদ চরিত্রে রামি মালেকসহ ছোটখাটো আরও কিছু চরিত্রকে কখনোই অপ্রয়োজনীয় মনে হবে না। আইনস্টাইন, নিলস বোরের মতো বিজ্ঞানীদের উপস্থিতিও চোখে লেগে থাকার মতো।
সেই সঙ্গে নোলানের অসাধারণ পরিমিতিবোধ, জেনিফার লেমের চতুর সম্পাদনা এবং লুডভিগ গোরানসনের সংগীতায়োজন—ওপেনহাইমারের উপাখ্যানটি অন্য মাত্রায় নিয়ে গেছে।
এবার এই সিনেমার আরেকটি দিক বিবেচনা করা যাক:
সাধারণত ভূরাজনীতির খেলায় যুক্তরাষ্ট্রের কিছু অপরাধ সম্পর্কে জনপরিসরের ধারণা পরিবর্তনের কৌশল হিসেবে হলিউডে এ ধরনের সিনেমা বানানো হয়। এর একটি উদাহরণ হতে পারে ‘র্যাম্বো’ সিরিজ। এ ধরনের সিনেমা কখনোই ‘সাম্রাজ্যবাদী যুদ্ধ কিংবা বিশুদ্ধ হত্যার বিরুদ্ধে সচেতন আপত্তি বা বিরোধিতা নয়’। যুদ্ধফেরত ‘কিলিং মেশিনদের’ প্রতি মানুষের সমবেদনা তৈরির প্রকল্প এগুলো।
এ ধরনের সিনেমায় প্রত্যক্ষ খুনিদেরই যুদ্ধের ভিকটিম হিসেবে উপস্থাপন করা হয়। যেন তাঁদের নিজস্ব সত্তা বলতে কিছু নেই। খুবই সুকৌশলে এসব সিনেমায় কখনোই আমেরিকার মারণাস্ত্রের শিকার মানুষদের ভোগান্তির দৃশ্য দেখানো হয় না। যেমনটি হয়নি ওপেনহাইমারেও। যুদ্ধ–বিরোধী কোনো বার্তা দেয় না এসব সিনেমা। বরং যুদ্ধে পরাজয়ের দায় নীতিনির্ধারক বা রাজনীতিকদের ঘাড়ে চাপিয়ে হত্যাকারীদের অপরাধ লঘূকরণের দায়িত্ব নেয় হলিউড। নতুন যুদ্ধের ক্ষেত্র তৈরি করতে খুনিদের প্রতি সহানুভূতি উৎপাদন করা হয়। শেষ পর্যন্ত দেশের সার্বভৌমত্বের বিপরীতে তুচ্ছ ক্ষমতাহীন নাগরিককে দাঁড় করিয়ে দেওয়ার মাধ্যমে যুদ্ধের আসল ভুক্তভোগীদের থেকে দৃষ্টি ফেরানো হয়।
ওপেনহাইমারের গল্প বলার যে কৌশল সেখানেও ক্রিস্টোফার নোলান যুক্তরাষ্ট্রের অপরাধ স্বাভাবিকীকরণ ফরমুলাতেই হেঁটেছেন। অবশ্য একজন গল্পকার, নির্মাতা হিসেবে তিনি তাঁর মুনশিয়ানার পুরোটাই যে আবারও দেখিয়েছেন তাতে কোনো সন্দেহ নেই।
জাহাঙ্গীর আলম

যদি আকাশে সহস্র সূর্যের প্রভা যুগপৎ উদিত হয়, তাহলে সেই মহাত্মা বিশ্বরূপের প্রভার কিঞ্চিৎ তুল্য হতে পারে—গীতার এই শ্লোক আউরে নিজ হাতে গড়া মারণাস্ত্রের সফল পরীক্ষা উদ্যাপন করেছিলেন ওপেনহাইমার। তাঁর মতো মৃদুভাষি চাপা স্বভাবের জ্ঞানী মানুষ আনন্দিত হলেও নিজের সৃষ্ট তেজস্ক্রিয় বোমার মতো ফেটে পড়েননি। পরক্ষণেই অবশ্য তাঁকে ঘিরে ফেলে অবসাদ, অপরাধবোধে বিদ্ধ বিষণ্ন একা মানুষ হিসেবে বাকি জীবন অতিবাহিত করেছেন। ঘটনার কয়েক বছর পর তিনি বলেছিলেন, ওই সময় গীতার আরেকটি শ্লোক তাঁর মনে পড়েছিল—আমিই মৃত্যু, পৃথিবী ধ্বংসের কারণ! এটি হয়তো তাঁর পরবর্তী উপলব্ধির প্রকাশ।
সে অর্থে ওপেনহাইমার তাঁর সময়ের অন্যতম সেরা মেধাবী এবং অত্যন্ত সংবেদনশীল মানুষ ছিলেন। যদিও তাঁর হাতে গড়া মারণাস্ত্রেই বিশ্ববাসী প্রথম পারমাণবিক বোমার অভূতপূর্ব বিধ্বংসী রূপ দেখেছে। এ নিয়ে ক্রিস্টোফার নোলানের ‘ওপেনহাইমার’ সিনেমাটির উপস্থাপন কৌশলের গুণে ওপেনহাইমারকে চাইলে দুভাবেই বিচার করা যেতে পারে। একজন বিজ্ঞানী হিসেবে ওপেনহাইমার তাঁর অবদানের কারণে প্রশংসিত, পরবর্তীতে মার্কিন রাজনীতিকদের সন্দেহবাতিকতার কারণে অপমানিত একজন হিরো। আবার হলিউডের ‘দায়মুক্তি প্রকল্পের’ অংশ হিসেবেও দেখা যেতে পারে এই সিনেমাকে।
নৈতিক বিচারের আগে ‘ওপেনহাইমার’ সিনেমার একটি সাধারণ পর্যালোচনা করা যাক:
ক্রিস্টোফার নোলানের ‘ওপেনহাইমার’ হলো একটি বিখ্যাত চরিত্রের বিশ্লেষণ এবং এবং ইতিহাসের একটি সুস্পষ্ট বিবরণ। ওপেনহাইমার হলেন সেই অসাধারণ বুদ্ধিদীপ্ত ব্যক্তি যিনি ম্যানহাটন প্রকল্পের নেতৃত্ব দিয়েছিলেন। যেটি ছিল পারমাণবিক বোমা তৈরির প্রকল্প। যেই বোমা দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের অবসান ঘটিয়েছিল।
কিন্তু নোলানের এই দুঃসাহসী মহাকাব্যের সম্ভবত সবচেয়ে বিস্ময়কর উপাদানটি হলো—রাজনৈতিক খেলার যে উত্তেজনাকর দৃশ্যায়ন, শেষ পর্যন্ত সেটি পারমাণবিক অস্ত্রের বিধ্বংসী প্রকৃতিকে আড়াল করে ফেলেছে। বিংশ শতাব্দীর অন্যতম উজ্জ্বল বৈজ্ঞানিক মানস বলা হয় যাকে সেই ওপেনহাইমার শেষ জীবনে আমেরিকার সমর আকাঙ্ক্ষী চিন্তাধারার বিরুদ্ধে নিজের উচ্চকিত কণ্ঠের কারণে সেই সময়ই রাজনীতিকদের দ্বারা নিন্দিত হয়েছেন।
চিসেলিং কাই বার্ড এবং মার্টিন জে শেরম্যান রচিত ওপেনহাইমারের জীবনী ‘আমেরিকান প্রমিথিউস: দ্য ট্রায়াম্ফ অ্যান্ড ট্র্যাজেডি অব জে. রবার্ট ওপেনহাইমার’ অবলম্বনেই এই সিনেমা বানিয়েছেন নোলান। অবশ্য ৭০০–এর বেশি পৃষ্ঠার বইটি থেকে ৩ ঘণ্টার চিত্রনাট্য বানাতে গিয়ে নোলান পুরো প্লটটিকে দর্শকদের সামনে হাজির করতে পারেননি।
সিনেমাটি প্রথমে কোয়ান্টাম পদার্থবিদ্যার মতো জটিল বিষয় নিয়ে গভীর কথাবার্তায় ঠাসা বলে মনে হতে পারে। যেখানে দেখা যায়, বিশ শতকের মাঝামাঝি সময়ের ব্যবসায়িক লেবাসের কিছু পুরুষ অফিস এবং ল্যাবে দাঁড়িয়ে কোয়ান্টাম মেকানিক্স নিয়ে আলোচনা করছেন। পদার্থবিদ্যায় যাদের ধারণা নেই তাদের জন্য সেটি দুর্বোধ্যই। তবে প্রায় এক ঘণ্টার মধ্যে দর্শকদের স্বস্তি দেওয়ার মতো দৃশ্য দেখানো হয়েছে— যখন ফিউশন বোমার উপাদান হিসেবে ইউরেনিয়াম এবং প্লুটোনিয়ামের মধ্যে পার্থক্য দেখানোর জন্য কাচের পাত্রে মার্বেল রেখে ব্যাখ্যা করার চেষ্টা করা হয়।
নোলানের অবশ্য ঘটনা বর্ণনার নিজস্ব পদ্ধতি রয়েছে—তাঁর সিনেমার জটিল উপাদানগুলো ক্রমে স্পষ্ট হয়ে ওঠে। এ সিনেমাতেও তাই হয়েছে। ওয়াশিংটনে ওপেনহাইমারের বিরুদ্ধে শুনানিও এখানে মূল উপজীব্য। পুরো আখ্যানে ছেদ ঘটনায় শুরুর দৃশ্য। অবশ্য শেষ ঘণ্টার পুরোটাই দখল করে আছে সেই শুনানিগুলো।
জে. রবার্ট ওপেনহাইমার হিসেবে কিলিয়ান মারফি এবং অ্যালবার্ট আইনস্টাইনের ভূমিকায় টম কন্টির মধ্যে একটি ব্যক্তিগত কথোপকথন দুর্দান্তভাবে এই দুই মহান বিজ্ঞানীর দৃষ্টিভঙ্গিকে দর্শকদের সামনে তুলে ধরে ভিন্ন মাত্রা যোগ করেছে। এই দৃশ্যে দেখানো হয়েছে, দুই মেধাবী মানুষের ব্যক্তিগত দৃষ্টিভঙ্গি তাঁদের নিজ নিজ শাখার বিজ্ঞানের ব্যাপারে কতটা আলাদা ছিল—সেটিরই এক আবেগঘন দৃশ্যায়ন সেটি।
ফোর–অ্যাক্ট কাঠামোর সিনেমা দেখে যারা অভ্যস্ত তাঁদের জন্য নোলানের ওপেনহাইমার শুরুতে কিছুটা হতাশ করতে পারে। অবশ্য ধৈর্যশীল ও একাগ্র দর্শকদের জন্য পুরস্কার হিসেবে একটি টানটান উত্তেজনার দৃশ্য রাখা হয়েছে— নিউ মেক্সিকোর মরুভূমিতে ১৯৪৫ সালের পরমাণু বোমার প্রথম পরীক্ষা। ওপেনহাইমার যেটির নাম দিয়েছিলেন ‘ট্রিনিটি’। এই বোমায় জাপানের হিরোশিমা এবং নাগাসাকি শহরকে ধুলায় মিশিয়ে দিয়েছিল।
উল্লেখ্য, ঐতিহ্যগতভাবে সিনেমার থ্রি-অ্যাক্ট কাঠামোই বেশি অনুসরণ করা হয়। তবে ১. সেটআপ, ২. দ্বন্দ্ব, ৩. রেজুলেশন বা সমাধান –এর পাশাপাশি ফোর–অ্যাক্ট কাঠামোতে তৃতীয় পর্বে থাকে ‘সংকট’।
১৯৪৫ সালের সেই ঘটনা আধুনিক মানব ইতিহাসের মোড় ঘুরিয়ে দেওয়ার মুহূর্ত। আমেরিকান নায়ক হিসেবে ওপেনহাইমারকে সেই সাফল্যের মুকুট দেওয়া হয়। কিন্তু একই সঙ্গে সিনেমায় কিলিয়ান মারফির অভিব্যক্তিপূর্ণ মুখমণ্ডলজুড়ে নৈতিক পরাজয়ের ক্ষোভ ও বিব্রতবোধ ফুটে উঠেছে অসাধারণ মহিমায়। এরপরেই দর্শকদের সামনে হাজির হয় গা হিম করা উইচ হান্ট—কমিউনিস্ট ধরার অভিযান। যুক্তরাষ্ট্রে ম্যাকার্থি যুগের সবচেয়ে জঘন্য কলাকৌশলগুলোর প্রতিনিধিত্ব করে এই ঘটনা।
ক্রিস্টোফার নোলান স্বভাবসুলভ দক্ষতায় ওপেনহাইমার এবং তাঁর সপ্রতিভ স্ত্রী কিটির (অভিনয়ে এমিলি ব্লান্ট) সেই সময়ের বেদনা এবং অপমানকে দৃশ্যায়িত করেছেন। পাঁচ বছর পর আইজেনহাওয়ার প্রশাসনের বাণিজ্যমন্ত্রী হিসেবে লুইস স্ট্রসকে (অভিনয়ে রবার্ট ডাউনি জুনিয়র) নিয়োগের সিনেট শুনানিতে আবার উঠে আসে ওপেনহাইমারের বিরুদ্ধে তথ্য পাচারের অভিযোগ। আবার শুরু হয় শুনানি।
লুইস স্ট্রসের চরিত্রে রাবর্ট ডাউনি অসাধারণ অভিনয় করেছেন। পরমাণু শক্তি কমিশনের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য এবং পরে চেয়ারম্যান হন স্ট্রস। তাঁর চরিত্রকে অসাধারণভাবে ফুটিয়ে তুলেছেন রবার্ট ডাউনি। স্ট্রসের রাজনৈতিক উচ্চাকাঙ্ক্ষা অহংকারী ওপেনহাইমারের প্রতি প্রতিশোধপরায়ণ করে তুলেছিল। এমন একটি চরিত্রে আয়রন ম্যানের টনি স্টার্ক তাঁর মুনশিয়ানা দেখিয়েছেন।
একজন জুতার বিক্রয়কর্মী হিসেবে স্ট্রসের উত্থানকে রবার্ট ডাউনি নাটকীয়ভাবে উপস্থাপন করেছেন। এই চরিত্র চিত্রায়ণের যে উদ্দেশ্য ছিল নির্মাতার তা স্পষ্ট হয়ে উঠেছে সিনেমার শেষের দিকে। সম্পর্কের ক্ষত এবং ক্রোধের তিক্ত স্রোতে ভেসে যাওয়া একটি চরিত্রকে ডাউনি যেভাবে ফুটিয়ে তুলেছেন তা আজকালকার বড় বাজেটের চোখ ধাঁধানো সুপারহিরোদের কসরত দেখে উল্লাস করা দর্শকেরা বুঝবেন না!
এই সিনেমা আপনাকে ধীরে ধীরে উত্তেজিত করবে। তত্ত্বীয় পদার্থবিদ্যার দুর্বোধ্য আলাপে ধৈর্যচ্যুতি না ঘটলে ক্রমেই চোখের সামনে ভেসে উঠবে—আধো আলোর ক্যাপিটল হিল কনফারেন্স রুম এবং সিনেট চেম্বারের শীতল বৈঠক থেকে শুরু করে প্রতিটি নতুন মোড়, বিশ্বাসঘাতকতা, আনুগত্য, ঘৃণা, ঈর্ষা আপনাকে বাকিটা সময় শ্বাসরুদ্ধ করে রাখবে।
মানুষ এবং বিজ্ঞান, যুদ্ধ এবং ওয়াশিংটনের সুবিধাবাদী চরিত্র—এসবের একটি বুদ্ধিদীপ্ত গল্পের কেন্দ্রীয় ব্যক্তিত্ব হিসেবে কিলিয়ান মারফি নিখুঁতভাবে চরিত্রটিকে ফুটিয়ে তুলেছেন। মৃদুভাষী ওপেনহাইমারের আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িয়ে থাকা জটিলতাগুলো দৃশ্যত চাপা স্বভাবের সংযমী একজন মানুষ হয়ে শুধু মুখভঙ্গিতে ফুটিয়ে তোলা সহজ কথা নয়!
মারফির তীক্ষ্ণ ফ্যাকাশে নীল চোখ পদার্থবিজ্ঞানীর বুদ্ধির দীপ্তি, দৃঢ় সংকল্প এবং যন্ত্রণার একটি জানালা হয়ে উঠেছে। সেটি স্পষ্ট হয়েছে যখন (পৃথিবী ধ্বংসের অস্ত্র বানিয়ে) নিজের নির্বুদ্ধিতা স্বীকার করেন এবং দ্রুতই এর প্রভাব চাক্ষুষ করতে থাকেন। এত বড় একটি কাজ করে বিশ্বকে চমকে দেওয়ার পরিবর্তে তাঁকে ভয়ানক রকম উদ্বিগ্ন করে তুলেছিল। তিনি বুদ্ধিমত্তার সঙ্গে তখনই যেমনটি কল্পনা করেছিলেন—জাপানে বোমা বিস্ফোরণ কেবল স্নায়ুযুদ্ধের দরজাই খুলে দেয়নি, আরও শক্তিশালী পারমাণবিক বোমার ক্রমবর্ধমান হুমকির দিকে পৃথিবীকে ঠেলে দিয়েছে—আজকের যে কোনো সময়ের চেয়ে বেশি তাঁকে আলোড়িত করেছিল।
মেজর লেসলি গ্রোভস (অভিনয়ে ম্যাট ডেমন) যিনি ওপেনহাইমারকে নিয়োগ দিয়েছিলেন। একটি অত্যন্ত গোপন গবেষণা ও উন্নয়ন প্রকল্পের তত্ত্বাবধায়কের দায়িত্বে থাকা এবং সরকার ও বিজ্ঞানীদের মধ্যে যোগাযোগের ব্যবস্থা করার মতো গুরুদায়িত্ব কাঁধে বহন করা একজন সামরিক কর্মকর্তাকে রাশভারী হিসেবেই দেখে অভ্যস্ত আমরা। কিন্তু লেসলি গ্রোভসের চরিত্রটিও দর্শকদের আনন্দ দিতে পেরেছে। সরকারের হয়ে যুদ্ধের পক্ষে কাজ নিঃসন্দেহে একটি ঘৃণ্য পেশা। দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে তাঁকে অনেক সময় কঠোর হতে হয়েছে। কিন্তু ওপেনহাইমারের প্রতিভাকে মনে মনে শ্রদ্ধা করতেন। সেটি ১৯৫৪ সালের শুনানিতে এসে স্পষ্ট হয়। এমন একটি চরিত্রে ম্যাট ডেমন দুর্দান্ত অভিনয় করেছেন।
স্ত্রীর চরিত্রে এমিলি ব্লান্ট, পরীক্ষামূলক পদার্থবিদ চরিত্রে রামি মালেকসহ ছোটখাটো আরও কিছু চরিত্রকে কখনোই অপ্রয়োজনীয় মনে হবে না। আইনস্টাইন, নিলস বোরের মতো বিজ্ঞানীদের উপস্থিতিও চোখে লেগে থাকার মতো।
সেই সঙ্গে নোলানের অসাধারণ পরিমিতিবোধ, জেনিফার লেমের চতুর সম্পাদনা এবং লুডভিগ গোরানসনের সংগীতায়োজন—ওপেনহাইমারের উপাখ্যানটি অন্য মাত্রায় নিয়ে গেছে।
এবার এই সিনেমার আরেকটি দিক বিবেচনা করা যাক:
সাধারণত ভূরাজনীতির খেলায় যুক্তরাষ্ট্রের কিছু অপরাধ সম্পর্কে জনপরিসরের ধারণা পরিবর্তনের কৌশল হিসেবে হলিউডে এ ধরনের সিনেমা বানানো হয়। এর একটি উদাহরণ হতে পারে ‘র্যাম্বো’ সিরিজ। এ ধরনের সিনেমা কখনোই ‘সাম্রাজ্যবাদী যুদ্ধ কিংবা বিশুদ্ধ হত্যার বিরুদ্ধে সচেতন আপত্তি বা বিরোধিতা নয়’। যুদ্ধফেরত ‘কিলিং মেশিনদের’ প্রতি মানুষের সমবেদনা তৈরির প্রকল্প এগুলো।
এ ধরনের সিনেমায় প্রত্যক্ষ খুনিদেরই যুদ্ধের ভিকটিম হিসেবে উপস্থাপন করা হয়। যেন তাঁদের নিজস্ব সত্তা বলতে কিছু নেই। খুবই সুকৌশলে এসব সিনেমায় কখনোই আমেরিকার মারণাস্ত্রের শিকার মানুষদের ভোগান্তির দৃশ্য দেখানো হয় না। যেমনটি হয়নি ওপেনহাইমারেও। যুদ্ধ–বিরোধী কোনো বার্তা দেয় না এসব সিনেমা। বরং যুদ্ধে পরাজয়ের দায় নীতিনির্ধারক বা রাজনীতিকদের ঘাড়ে চাপিয়ে হত্যাকারীদের অপরাধ লঘূকরণের দায়িত্ব নেয় হলিউড। নতুন যুদ্ধের ক্ষেত্র তৈরি করতে খুনিদের প্রতি সহানুভূতি উৎপাদন করা হয়। শেষ পর্যন্ত দেশের সার্বভৌমত্বের বিপরীতে তুচ্ছ ক্ষমতাহীন নাগরিককে দাঁড় করিয়ে দেওয়ার মাধ্যমে যুদ্ধের আসল ভুক্তভোগীদের থেকে দৃষ্টি ফেরানো হয়।
ওপেনহাইমারের গল্প বলার যে কৌশল সেখানেও ক্রিস্টোফার নোলান যুক্তরাষ্ট্রের অপরাধ স্বাভাবিকীকরণ ফরমুলাতেই হেঁটেছেন। অবশ্য একজন গল্পকার, নির্মাতা হিসেবে তিনি তাঁর মুনশিয়ানার পুরোটাই যে আবারও দেখিয়েছেন তাতে কোনো সন্দেহ নেই।

যদি আকাশে সহস্র সূর্যের প্রভা যুগপৎ উদিত হয়, তাহলে সেই মহাত্মা বিশ্বরূপের প্রভার কিঞ্চিৎ তুল্য হতে পারে—গীতার এই শ্লোক আউরে নিজ হাতে গড়া মারণাস্ত্রের সফল পরীক্ষা উদ্যাপন করেছিলেন ওপেনহাইমার। তাঁর মতো মৃদুভাষি চাপা স্বভাবের জ্ঞানী মানুষ আনন্দিত হলেও নিজের সৃষ্ট তেজস্ক্রিয় বোমার মতো ফেটে পড়েননি। পরক্ষণেই অবশ্য তাঁকে ঘিরে ফেলে অবসাদ, অপরাধবোধে বিদ্ধ বিষণ্ন একা মানুষ হিসেবে বাকি জীবন অতিবাহিত করেছেন। ঘটনার কয়েক বছর পর তিনি বলেছিলেন, ওই সময় গীতার আরেকটি শ্লোক তাঁর মনে পড়েছিল—আমিই মৃত্যু, পৃথিবী ধ্বংসের কারণ! এটি হয়তো তাঁর পরবর্তী উপলব্ধির প্রকাশ।
সে অর্থে ওপেনহাইমার তাঁর সময়ের অন্যতম সেরা মেধাবী এবং অত্যন্ত সংবেদনশীল মানুষ ছিলেন। যদিও তাঁর হাতে গড়া মারণাস্ত্রেই বিশ্ববাসী প্রথম পারমাণবিক বোমার অভূতপূর্ব বিধ্বংসী রূপ দেখেছে। এ নিয়ে ক্রিস্টোফার নোলানের ‘ওপেনহাইমার’ সিনেমাটির উপস্থাপন কৌশলের গুণে ওপেনহাইমারকে চাইলে দুভাবেই বিচার করা যেতে পারে। একজন বিজ্ঞানী হিসেবে ওপেনহাইমার তাঁর অবদানের কারণে প্রশংসিত, পরবর্তীতে মার্কিন রাজনীতিকদের সন্দেহবাতিকতার কারণে অপমানিত একজন হিরো। আবার হলিউডের ‘দায়মুক্তি প্রকল্পের’ অংশ হিসেবেও দেখা যেতে পারে এই সিনেমাকে।
নৈতিক বিচারের আগে ‘ওপেনহাইমার’ সিনেমার একটি সাধারণ পর্যালোচনা করা যাক:
ক্রিস্টোফার নোলানের ‘ওপেনহাইমার’ হলো একটি বিখ্যাত চরিত্রের বিশ্লেষণ এবং এবং ইতিহাসের একটি সুস্পষ্ট বিবরণ। ওপেনহাইমার হলেন সেই অসাধারণ বুদ্ধিদীপ্ত ব্যক্তি যিনি ম্যানহাটন প্রকল্পের নেতৃত্ব দিয়েছিলেন। যেটি ছিল পারমাণবিক বোমা তৈরির প্রকল্প। যেই বোমা দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের অবসান ঘটিয়েছিল।
কিন্তু নোলানের এই দুঃসাহসী মহাকাব্যের সম্ভবত সবচেয়ে বিস্ময়কর উপাদানটি হলো—রাজনৈতিক খেলার যে উত্তেজনাকর দৃশ্যায়ন, শেষ পর্যন্ত সেটি পারমাণবিক অস্ত্রের বিধ্বংসী প্রকৃতিকে আড়াল করে ফেলেছে। বিংশ শতাব্দীর অন্যতম উজ্জ্বল বৈজ্ঞানিক মানস বলা হয় যাকে সেই ওপেনহাইমার শেষ জীবনে আমেরিকার সমর আকাঙ্ক্ষী চিন্তাধারার বিরুদ্ধে নিজের উচ্চকিত কণ্ঠের কারণে সেই সময়ই রাজনীতিকদের দ্বারা নিন্দিত হয়েছেন।
চিসেলিং কাই বার্ড এবং মার্টিন জে শেরম্যান রচিত ওপেনহাইমারের জীবনী ‘আমেরিকান প্রমিথিউস: দ্য ট্রায়াম্ফ অ্যান্ড ট্র্যাজেডি অব জে. রবার্ট ওপেনহাইমার’ অবলম্বনেই এই সিনেমা বানিয়েছেন নোলান। অবশ্য ৭০০–এর বেশি পৃষ্ঠার বইটি থেকে ৩ ঘণ্টার চিত্রনাট্য বানাতে গিয়ে নোলান পুরো প্লটটিকে দর্শকদের সামনে হাজির করতে পারেননি।
সিনেমাটি প্রথমে কোয়ান্টাম পদার্থবিদ্যার মতো জটিল বিষয় নিয়ে গভীর কথাবার্তায় ঠাসা বলে মনে হতে পারে। যেখানে দেখা যায়, বিশ শতকের মাঝামাঝি সময়ের ব্যবসায়িক লেবাসের কিছু পুরুষ অফিস এবং ল্যাবে দাঁড়িয়ে কোয়ান্টাম মেকানিক্স নিয়ে আলোচনা করছেন। পদার্থবিদ্যায় যাদের ধারণা নেই তাদের জন্য সেটি দুর্বোধ্যই। তবে প্রায় এক ঘণ্টার মধ্যে দর্শকদের স্বস্তি দেওয়ার মতো দৃশ্য দেখানো হয়েছে— যখন ফিউশন বোমার উপাদান হিসেবে ইউরেনিয়াম এবং প্লুটোনিয়ামের মধ্যে পার্থক্য দেখানোর জন্য কাচের পাত্রে মার্বেল রেখে ব্যাখ্যা করার চেষ্টা করা হয়।
নোলানের অবশ্য ঘটনা বর্ণনার নিজস্ব পদ্ধতি রয়েছে—তাঁর সিনেমার জটিল উপাদানগুলো ক্রমে স্পষ্ট হয়ে ওঠে। এ সিনেমাতেও তাই হয়েছে। ওয়াশিংটনে ওপেনহাইমারের বিরুদ্ধে শুনানিও এখানে মূল উপজীব্য। পুরো আখ্যানে ছেদ ঘটনায় শুরুর দৃশ্য। অবশ্য শেষ ঘণ্টার পুরোটাই দখল করে আছে সেই শুনানিগুলো।
জে. রবার্ট ওপেনহাইমার হিসেবে কিলিয়ান মারফি এবং অ্যালবার্ট আইনস্টাইনের ভূমিকায় টম কন্টির মধ্যে একটি ব্যক্তিগত কথোপকথন দুর্দান্তভাবে এই দুই মহান বিজ্ঞানীর দৃষ্টিভঙ্গিকে দর্শকদের সামনে তুলে ধরে ভিন্ন মাত্রা যোগ করেছে। এই দৃশ্যে দেখানো হয়েছে, দুই মেধাবী মানুষের ব্যক্তিগত দৃষ্টিভঙ্গি তাঁদের নিজ নিজ শাখার বিজ্ঞানের ব্যাপারে কতটা আলাদা ছিল—সেটিরই এক আবেগঘন দৃশ্যায়ন সেটি।
ফোর–অ্যাক্ট কাঠামোর সিনেমা দেখে যারা অভ্যস্ত তাঁদের জন্য নোলানের ওপেনহাইমার শুরুতে কিছুটা হতাশ করতে পারে। অবশ্য ধৈর্যশীল ও একাগ্র দর্শকদের জন্য পুরস্কার হিসেবে একটি টানটান উত্তেজনার দৃশ্য রাখা হয়েছে— নিউ মেক্সিকোর মরুভূমিতে ১৯৪৫ সালের পরমাণু বোমার প্রথম পরীক্ষা। ওপেনহাইমার যেটির নাম দিয়েছিলেন ‘ট্রিনিটি’। এই বোমায় জাপানের হিরোশিমা এবং নাগাসাকি শহরকে ধুলায় মিশিয়ে দিয়েছিল।
উল্লেখ্য, ঐতিহ্যগতভাবে সিনেমার থ্রি-অ্যাক্ট কাঠামোই বেশি অনুসরণ করা হয়। তবে ১. সেটআপ, ২. দ্বন্দ্ব, ৩. রেজুলেশন বা সমাধান –এর পাশাপাশি ফোর–অ্যাক্ট কাঠামোতে তৃতীয় পর্বে থাকে ‘সংকট’।
১৯৪৫ সালের সেই ঘটনা আধুনিক মানব ইতিহাসের মোড় ঘুরিয়ে দেওয়ার মুহূর্ত। আমেরিকান নায়ক হিসেবে ওপেনহাইমারকে সেই সাফল্যের মুকুট দেওয়া হয়। কিন্তু একই সঙ্গে সিনেমায় কিলিয়ান মারফির অভিব্যক্তিপূর্ণ মুখমণ্ডলজুড়ে নৈতিক পরাজয়ের ক্ষোভ ও বিব্রতবোধ ফুটে উঠেছে অসাধারণ মহিমায়। এরপরেই দর্শকদের সামনে হাজির হয় গা হিম করা উইচ হান্ট—কমিউনিস্ট ধরার অভিযান। যুক্তরাষ্ট্রে ম্যাকার্থি যুগের সবচেয়ে জঘন্য কলাকৌশলগুলোর প্রতিনিধিত্ব করে এই ঘটনা।
ক্রিস্টোফার নোলান স্বভাবসুলভ দক্ষতায় ওপেনহাইমার এবং তাঁর সপ্রতিভ স্ত্রী কিটির (অভিনয়ে এমিলি ব্লান্ট) সেই সময়ের বেদনা এবং অপমানকে দৃশ্যায়িত করেছেন। পাঁচ বছর পর আইজেনহাওয়ার প্রশাসনের বাণিজ্যমন্ত্রী হিসেবে লুইস স্ট্রসকে (অভিনয়ে রবার্ট ডাউনি জুনিয়র) নিয়োগের সিনেট শুনানিতে আবার উঠে আসে ওপেনহাইমারের বিরুদ্ধে তথ্য পাচারের অভিযোগ। আবার শুরু হয় শুনানি।
লুইস স্ট্রসের চরিত্রে রাবর্ট ডাউনি অসাধারণ অভিনয় করেছেন। পরমাণু শক্তি কমিশনের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য এবং পরে চেয়ারম্যান হন স্ট্রস। তাঁর চরিত্রকে অসাধারণভাবে ফুটিয়ে তুলেছেন রবার্ট ডাউনি। স্ট্রসের রাজনৈতিক উচ্চাকাঙ্ক্ষা অহংকারী ওপেনহাইমারের প্রতি প্রতিশোধপরায়ণ করে তুলেছিল। এমন একটি চরিত্রে আয়রন ম্যানের টনি স্টার্ক তাঁর মুনশিয়ানা দেখিয়েছেন।
একজন জুতার বিক্রয়কর্মী হিসেবে স্ট্রসের উত্থানকে রবার্ট ডাউনি নাটকীয়ভাবে উপস্থাপন করেছেন। এই চরিত্র চিত্রায়ণের যে উদ্দেশ্য ছিল নির্মাতার তা স্পষ্ট হয়ে উঠেছে সিনেমার শেষের দিকে। সম্পর্কের ক্ষত এবং ক্রোধের তিক্ত স্রোতে ভেসে যাওয়া একটি চরিত্রকে ডাউনি যেভাবে ফুটিয়ে তুলেছেন তা আজকালকার বড় বাজেটের চোখ ধাঁধানো সুপারহিরোদের কসরত দেখে উল্লাস করা দর্শকেরা বুঝবেন না!
এই সিনেমা আপনাকে ধীরে ধীরে উত্তেজিত করবে। তত্ত্বীয় পদার্থবিদ্যার দুর্বোধ্য আলাপে ধৈর্যচ্যুতি না ঘটলে ক্রমেই চোখের সামনে ভেসে উঠবে—আধো আলোর ক্যাপিটল হিল কনফারেন্স রুম এবং সিনেট চেম্বারের শীতল বৈঠক থেকে শুরু করে প্রতিটি নতুন মোড়, বিশ্বাসঘাতকতা, আনুগত্য, ঘৃণা, ঈর্ষা আপনাকে বাকিটা সময় শ্বাসরুদ্ধ করে রাখবে।
মানুষ এবং বিজ্ঞান, যুদ্ধ এবং ওয়াশিংটনের সুবিধাবাদী চরিত্র—এসবের একটি বুদ্ধিদীপ্ত গল্পের কেন্দ্রীয় ব্যক্তিত্ব হিসেবে কিলিয়ান মারফি নিখুঁতভাবে চরিত্রটিকে ফুটিয়ে তুলেছেন। মৃদুভাষী ওপেনহাইমারের আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িয়ে থাকা জটিলতাগুলো দৃশ্যত চাপা স্বভাবের সংযমী একজন মানুষ হয়ে শুধু মুখভঙ্গিতে ফুটিয়ে তোলা সহজ কথা নয়!
মারফির তীক্ষ্ণ ফ্যাকাশে নীল চোখ পদার্থবিজ্ঞানীর বুদ্ধির দীপ্তি, দৃঢ় সংকল্প এবং যন্ত্রণার একটি জানালা হয়ে উঠেছে। সেটি স্পষ্ট হয়েছে যখন (পৃথিবী ধ্বংসের অস্ত্র বানিয়ে) নিজের নির্বুদ্ধিতা স্বীকার করেন এবং দ্রুতই এর প্রভাব চাক্ষুষ করতে থাকেন। এত বড় একটি কাজ করে বিশ্বকে চমকে দেওয়ার পরিবর্তে তাঁকে ভয়ানক রকম উদ্বিগ্ন করে তুলেছিল। তিনি বুদ্ধিমত্তার সঙ্গে তখনই যেমনটি কল্পনা করেছিলেন—জাপানে বোমা বিস্ফোরণ কেবল স্নায়ুযুদ্ধের দরজাই খুলে দেয়নি, আরও শক্তিশালী পারমাণবিক বোমার ক্রমবর্ধমান হুমকির দিকে পৃথিবীকে ঠেলে দিয়েছে—আজকের যে কোনো সময়ের চেয়ে বেশি তাঁকে আলোড়িত করেছিল।
মেজর লেসলি গ্রোভস (অভিনয়ে ম্যাট ডেমন) যিনি ওপেনহাইমারকে নিয়োগ দিয়েছিলেন। একটি অত্যন্ত গোপন গবেষণা ও উন্নয়ন প্রকল্পের তত্ত্বাবধায়কের দায়িত্বে থাকা এবং সরকার ও বিজ্ঞানীদের মধ্যে যোগাযোগের ব্যবস্থা করার মতো গুরুদায়িত্ব কাঁধে বহন করা একজন সামরিক কর্মকর্তাকে রাশভারী হিসেবেই দেখে অভ্যস্ত আমরা। কিন্তু লেসলি গ্রোভসের চরিত্রটিও দর্শকদের আনন্দ দিতে পেরেছে। সরকারের হয়ে যুদ্ধের পক্ষে কাজ নিঃসন্দেহে একটি ঘৃণ্য পেশা। দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে তাঁকে অনেক সময় কঠোর হতে হয়েছে। কিন্তু ওপেনহাইমারের প্রতিভাকে মনে মনে শ্রদ্ধা করতেন। সেটি ১৯৫৪ সালের শুনানিতে এসে স্পষ্ট হয়। এমন একটি চরিত্রে ম্যাট ডেমন দুর্দান্ত অভিনয় করেছেন।
স্ত্রীর চরিত্রে এমিলি ব্লান্ট, পরীক্ষামূলক পদার্থবিদ চরিত্রে রামি মালেকসহ ছোটখাটো আরও কিছু চরিত্রকে কখনোই অপ্রয়োজনীয় মনে হবে না। আইনস্টাইন, নিলস বোরের মতো বিজ্ঞানীদের উপস্থিতিও চোখে লেগে থাকার মতো।
সেই সঙ্গে নোলানের অসাধারণ পরিমিতিবোধ, জেনিফার লেমের চতুর সম্পাদনা এবং লুডভিগ গোরানসনের সংগীতায়োজন—ওপেনহাইমারের উপাখ্যানটি অন্য মাত্রায় নিয়ে গেছে।
এবার এই সিনেমার আরেকটি দিক বিবেচনা করা যাক:
সাধারণত ভূরাজনীতির খেলায় যুক্তরাষ্ট্রের কিছু অপরাধ সম্পর্কে জনপরিসরের ধারণা পরিবর্তনের কৌশল হিসেবে হলিউডে এ ধরনের সিনেমা বানানো হয়। এর একটি উদাহরণ হতে পারে ‘র্যাম্বো’ সিরিজ। এ ধরনের সিনেমা কখনোই ‘সাম্রাজ্যবাদী যুদ্ধ কিংবা বিশুদ্ধ হত্যার বিরুদ্ধে সচেতন আপত্তি বা বিরোধিতা নয়’। যুদ্ধফেরত ‘কিলিং মেশিনদের’ প্রতি মানুষের সমবেদনা তৈরির প্রকল্প এগুলো।
এ ধরনের সিনেমায় প্রত্যক্ষ খুনিদেরই যুদ্ধের ভিকটিম হিসেবে উপস্থাপন করা হয়। যেন তাঁদের নিজস্ব সত্তা বলতে কিছু নেই। খুবই সুকৌশলে এসব সিনেমায় কখনোই আমেরিকার মারণাস্ত্রের শিকার মানুষদের ভোগান্তির দৃশ্য দেখানো হয় না। যেমনটি হয়নি ওপেনহাইমারেও। যুদ্ধ–বিরোধী কোনো বার্তা দেয় না এসব সিনেমা। বরং যুদ্ধে পরাজয়ের দায় নীতিনির্ধারক বা রাজনীতিকদের ঘাড়ে চাপিয়ে হত্যাকারীদের অপরাধ লঘূকরণের দায়িত্ব নেয় হলিউড। নতুন যুদ্ধের ক্ষেত্র তৈরি করতে খুনিদের প্রতি সহানুভূতি উৎপাদন করা হয়। শেষ পর্যন্ত দেশের সার্বভৌমত্বের বিপরীতে তুচ্ছ ক্ষমতাহীন নাগরিককে দাঁড় করিয়ে দেওয়ার মাধ্যমে যুদ্ধের আসল ভুক্তভোগীদের থেকে দৃষ্টি ফেরানো হয়।
ওপেনহাইমারের গল্প বলার যে কৌশল সেখানেও ক্রিস্টোফার নোলান যুক্তরাষ্ট্রের অপরাধ স্বাভাবিকীকরণ ফরমুলাতেই হেঁটেছেন। অবশ্য একজন গল্পকার, নির্মাতা হিসেবে তিনি তাঁর মুনশিয়ানার পুরোটাই যে আবারও দেখিয়েছেন তাতে কোনো সন্দেহ নেই।

আগামী বছর ২৯ জানুয়ারি নেদারল্যান্ডসের রটারড্যাম শহরে শুরু হবে ইন্টারন্যাশনাল ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল রটারড্যামের ৫৫তম আসর। এই উৎসব দিয়ে যাত্রা শুরু করছে বাংলাদেশে দুই সিনেমা ‘রইদ’ ও ‘মাস্টার’। উৎসবে প্রিমিয়ার হবে সিনেমা দুটির।
৪ ঘণ্টা আগে
ভারতীয় ওটিটি প্ল্যাটফর্ম সনি লিভের ওয়েব সিরিজ ‘জ্যাজ সিটি’তে অভিনয় করেছেন বাংলাদেশের আরিফিন শুভ। এমনটা জানা গিয়েছিল আগেই। গত সেপ্টেম্বরে সনি লিভের প্রমোশনাল ভিডিওতে কয়েক ঝলক দেখা মিলেছিল তাঁর। এবার জানা গেল সিরিজটির মুক্তির তারিখ। গতকাল ট্রেলার প্রকাশ করে ঘোষণা দেওয়া হলো, আগামী বছরের ৬ ফেব্রুয়ারি মু
৪ ঘণ্টা আগে
বান্দরবানের ম্রো শিশু ও সম্প্রদায়ের সদস্যদের অংশগ্রহণে আলিয়ঁস ফ্রঁসেজ দো ঢাকায় আয়োজন করা হয়েছে সপ্তাহব্যাপী সাংস্কৃতিক উৎসব। আজ থেকে শুরু হওয়া ‘পাওমুম পার্বণ ২০২৫’ শীর্ষক এই অনুষ্ঠান চলবে ২৪ ডিসেম্বর পর্যন্ত।
৪ ঘণ্টা আগে
৪০ বছরের বেশি সময় নাটকের দল ঢাকা থিয়েটারের সঙ্গে যুক্ত অভিনেতা ফারুক আহমেদ। অভিনয় করেছেন দলটির অনেক নাটকে। তবে কখনোই দলটির হয়ে নির্দেশনা দেওয়া হয়নি তাঁর। অবশেষে ঢাকা থিয়েটারের নাট্যনির্দেশক হিসেবে হাজির হচ্ছেন ফারুক আহমেদ।
৪ ঘণ্টা আগেবিনোদন প্রতিবেদক, ঢাকা

আগামী বছর ২৯ জানুয়ারি নেদারল্যান্ডসের রটারড্যাম শহরে শুরু হবে ইন্টারন্যাশনাল ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল রটারড্যামের ৫৫তম আসর। এই উৎসব দিয়ে যাত্রা শুরু করছে বাংলাদেশে দুই সিনেমা ‘রইদ’ ও ‘মাস্টার’। উৎসবে প্রিমিয়ার হবে সিনেমা দুটির। রইদ পরিচালনা করেছেন মেজবাউর রহমান সুমন, মাস্টার সিনেমার পরিচালক রেজওয়ান শাহরিয়ার সুমিত। এ ছাড়া আন্তর্জাতিক প্রিমিয়ার হবে গত নভেম্বরে দেশের হলে মুক্তি পাওয়া মোহাম্মদ তাওকীর ইসলামের ‘দেলুপি’।
‘হাওয়া’ দিয়ে চলচ্চিত্র পরিচালক হিসেবে অভিষেক হয় মেজবাউর রহমান সুমনের। প্রথম সিনেমাতেই বাজিমাত করেন তিনি। তিন বছর পর তিনি নিয়ে আসছেন দ্বিতীয় সিনেমা রইদ। গত বছর রইদ সিনেমার শুটিং শুরু করেছিলেন সুমন। এতে অভিনয় করছেন মোস্তাফিজ নূর ইমরান, নাজিফা তুষি, গাজী রাকায়েতসহ অনেকে। নির্মাতা জানিয়েছিলেন, সিনেমার বিস্তারিত জানানো হবে আনুষ্ঠানিক ঘোষণার মাধ্যমে। অবশেষে গতকাল এক অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে ট্রেলার প্রকাশ করে ঘোষণা দেওয়া হলো রইদ সিনেমার। এই সিনেমার প্রদর্শনী শুরু হচ্ছে রটারড্যাম উৎসবে। এরপর মুক্তি দেওয়া হবে দেশের হলে।
রইদ প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবে টাইগার প্রতিযোগিতা (মূল প্রতিযোগিতা) বিভাগে। নির্মাতা জানান, এই প্রথম বাংলাদেশের কোনো পূর্ণদৈর্ঘ্য সিনেমা রটারড্যামের মূল প্রতিযোগিতা বিভাগে আমন্ত্রণ পেয়েছে। এই বিভাগে রইদসহ বিভিন্ন দেশের মোট ১২টি সিনেমা নির্বাচিত হয়েছে। এই সিনেমাগুলো থেকে নির্বাচকেরা বাছাই করবেন উৎসবের সেরা সিনেমা।
রইদ সিনেমার গল্প নিয়ে সুমন বলেন, ‘সাধু, তার পাগল স্ত্রী এবং তাদের বাড়ির পাশের তালগাছকে ঘিরে আবর্তিত এই গল্পে আমরা আদতে আদম ও হাওয়ার আদিম আখ্যানকেই খোঁজার চেষ্টা করেছি। আমরা সেই হাজার বছরের পুরোনো আখ্যানকে বর্তমানে পুনর্নির্মাণ করেছি, তবে সময়ের বর্তমানে নয়, বরং অনুভূতির বর্তমানে। এই সিনেমার প্রতিটি স্তরে জড়িয়ে আছে চিত্রশিল্পী এস এম সুলতানের দেখা গ্রামীণ বাংলার আবহ।’

রইদের গল্প লিখেছেন মেজবাউর রহমান সুমন ও সেলিনা বানু মনি। চিত্রনাট্য করেছেন মেজবাউর রহমান সুমন, জাহিন ফারুক আমিন, সিদ্দিক আহমেদ ও সুকর্ণ শাহেদ ধীমান। সিনেমাটি প্রযোজনা করেছে বঙ্গ, সহপ্রযোজনায় আছে ফেসকার্ড প্রোডাকশন।
এদিকে রাজনৈতিক থ্রিলার ঘরানায় রেজওয়ান শাহরিয়ার সুমিত বানিয়েছেন মাস্টার। গত বছর এপ্রিলে শেষ হয়েছিল সরকারি অনুদানে নির্মিত এই সিনেমার শুটিং। মাস্টারের শুটিং-পরবর্তী কাজ হয়েছে দক্ষিণ কোরিয়ায়। এই প্রক্রিয়ায় যুক্ত ছিলেন পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্তের শিল্পীরা। একটি উপজেলার স্থানীয় রাজনীতি এই সিনেমার প্রেক্ষাপট। সিনেমাটি প্রতিযোগিতা করবে রটারড্যাম উৎসবের বিগ স্ক্রিন কম্পিটিশন বিভাগে
গল্পে দেখা যাবে, জহির আহমেদ নামের এক শিক্ষক সমাজসেবায় এলাকাবাসীর কাছে জনপ্রিয়। ওই এলাকার উপজেলা নির্বাচনের সময় প্রার্থীর অভাব দেখা দেয়। তখন শিক্ষক জহির আহমেদকে প্রার্থী হিসেবে দেখতে চায় এলাকাবাসী। সবার অনুরোধে ভোটে দাঁড়িয়ে যায় জহির। ভোটে জয় পেয়ে চেয়ারম্যানও হয়। উপজেলার চেয়ারম্যান হওয়ার পর বদলে যায় ওই শিক্ষকের জীবন। জহির আহমেদ চরিত্রে অভিনয় করেছেন নাসির উদ্দিন খান। আরও আছেন আজমেরী হক বাঁধন, জাকিয়া বারী মম, ফজলুর রহমান বাবু, লুৎফর রহমান জর্জ, শরিফ সিরাজ প্রমুখ।
এদিকে রটারড্যাম উৎসবের ‘ব্রাইট ফিউচার’ বিভাগে প্রদর্শিত হবে দেলুপি। এই বিভাগে চলচ্চিত্র নির্মাতাদের বানানো প্রথম ও দ্বিতীয় সিনেমা নির্বাচিত হয়। দক্ষিণাঞ্চলের মানুষের জীবনের ঘটনা, বাস্তবতা আর সম্পর্কের গল্প থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে নির্মিত হয়েছে দেলুপি। অভিনয় করেছেন স্থানীয়রা। গত ৭ নভেম্বর খুলনায় মুক্তি পেয়েছিল দেলুপি। পরের সপ্তাহে দেশব্যাপী মুক্তি পায় সিনেমাটি।

আগামী বছর ২৯ জানুয়ারি নেদারল্যান্ডসের রটারড্যাম শহরে শুরু হবে ইন্টারন্যাশনাল ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল রটারড্যামের ৫৫তম আসর। এই উৎসব দিয়ে যাত্রা শুরু করছে বাংলাদেশে দুই সিনেমা ‘রইদ’ ও ‘মাস্টার’। উৎসবে প্রিমিয়ার হবে সিনেমা দুটির। রইদ পরিচালনা করেছেন মেজবাউর রহমান সুমন, মাস্টার সিনেমার পরিচালক রেজওয়ান শাহরিয়ার সুমিত। এ ছাড়া আন্তর্জাতিক প্রিমিয়ার হবে গত নভেম্বরে দেশের হলে মুক্তি পাওয়া মোহাম্মদ তাওকীর ইসলামের ‘দেলুপি’।
‘হাওয়া’ দিয়ে চলচ্চিত্র পরিচালক হিসেবে অভিষেক হয় মেজবাউর রহমান সুমনের। প্রথম সিনেমাতেই বাজিমাত করেন তিনি। তিন বছর পর তিনি নিয়ে আসছেন দ্বিতীয় সিনেমা রইদ। গত বছর রইদ সিনেমার শুটিং শুরু করেছিলেন সুমন। এতে অভিনয় করছেন মোস্তাফিজ নূর ইমরান, নাজিফা তুষি, গাজী রাকায়েতসহ অনেকে। নির্মাতা জানিয়েছিলেন, সিনেমার বিস্তারিত জানানো হবে আনুষ্ঠানিক ঘোষণার মাধ্যমে। অবশেষে গতকাল এক অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে ট্রেলার প্রকাশ করে ঘোষণা দেওয়া হলো রইদ সিনেমার। এই সিনেমার প্রদর্শনী শুরু হচ্ছে রটারড্যাম উৎসবে। এরপর মুক্তি দেওয়া হবে দেশের হলে।
রইদ প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবে টাইগার প্রতিযোগিতা (মূল প্রতিযোগিতা) বিভাগে। নির্মাতা জানান, এই প্রথম বাংলাদেশের কোনো পূর্ণদৈর্ঘ্য সিনেমা রটারড্যামের মূল প্রতিযোগিতা বিভাগে আমন্ত্রণ পেয়েছে। এই বিভাগে রইদসহ বিভিন্ন দেশের মোট ১২টি সিনেমা নির্বাচিত হয়েছে। এই সিনেমাগুলো থেকে নির্বাচকেরা বাছাই করবেন উৎসবের সেরা সিনেমা।
রইদ সিনেমার গল্প নিয়ে সুমন বলেন, ‘সাধু, তার পাগল স্ত্রী এবং তাদের বাড়ির পাশের তালগাছকে ঘিরে আবর্তিত এই গল্পে আমরা আদতে আদম ও হাওয়ার আদিম আখ্যানকেই খোঁজার চেষ্টা করেছি। আমরা সেই হাজার বছরের পুরোনো আখ্যানকে বর্তমানে পুনর্নির্মাণ করেছি, তবে সময়ের বর্তমানে নয়, বরং অনুভূতির বর্তমানে। এই সিনেমার প্রতিটি স্তরে জড়িয়ে আছে চিত্রশিল্পী এস এম সুলতানের দেখা গ্রামীণ বাংলার আবহ।’

রইদের গল্প লিখেছেন মেজবাউর রহমান সুমন ও সেলিনা বানু মনি। চিত্রনাট্য করেছেন মেজবাউর রহমান সুমন, জাহিন ফারুক আমিন, সিদ্দিক আহমেদ ও সুকর্ণ শাহেদ ধীমান। সিনেমাটি প্রযোজনা করেছে বঙ্গ, সহপ্রযোজনায় আছে ফেসকার্ড প্রোডাকশন।
এদিকে রাজনৈতিক থ্রিলার ঘরানায় রেজওয়ান শাহরিয়ার সুমিত বানিয়েছেন মাস্টার। গত বছর এপ্রিলে শেষ হয়েছিল সরকারি অনুদানে নির্মিত এই সিনেমার শুটিং। মাস্টারের শুটিং-পরবর্তী কাজ হয়েছে দক্ষিণ কোরিয়ায়। এই প্রক্রিয়ায় যুক্ত ছিলেন পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্তের শিল্পীরা। একটি উপজেলার স্থানীয় রাজনীতি এই সিনেমার প্রেক্ষাপট। সিনেমাটি প্রতিযোগিতা করবে রটারড্যাম উৎসবের বিগ স্ক্রিন কম্পিটিশন বিভাগে
গল্পে দেখা যাবে, জহির আহমেদ নামের এক শিক্ষক সমাজসেবায় এলাকাবাসীর কাছে জনপ্রিয়। ওই এলাকার উপজেলা নির্বাচনের সময় প্রার্থীর অভাব দেখা দেয়। তখন শিক্ষক জহির আহমেদকে প্রার্থী হিসেবে দেখতে চায় এলাকাবাসী। সবার অনুরোধে ভোটে দাঁড়িয়ে যায় জহির। ভোটে জয় পেয়ে চেয়ারম্যানও হয়। উপজেলার চেয়ারম্যান হওয়ার পর বদলে যায় ওই শিক্ষকের জীবন। জহির আহমেদ চরিত্রে অভিনয় করেছেন নাসির উদ্দিন খান। আরও আছেন আজমেরী হক বাঁধন, জাকিয়া বারী মম, ফজলুর রহমান বাবু, লুৎফর রহমান জর্জ, শরিফ সিরাজ প্রমুখ।
এদিকে রটারড্যাম উৎসবের ‘ব্রাইট ফিউচার’ বিভাগে প্রদর্শিত হবে দেলুপি। এই বিভাগে চলচ্চিত্র নির্মাতাদের বানানো প্রথম ও দ্বিতীয় সিনেমা নির্বাচিত হয়। দক্ষিণাঞ্চলের মানুষের জীবনের ঘটনা, বাস্তবতা আর সম্পর্কের গল্প থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে নির্মিত হয়েছে দেলুপি। অভিনয় করেছেন স্থানীয়রা। গত ৭ নভেম্বর খুলনায় মুক্তি পেয়েছিল দেলুপি। পরের সপ্তাহে দেশব্যাপী মুক্তি পায় সিনেমাটি।

ক্রিস্টোফার নোলানের ‘ওপেনহাইমার’ হলো একটি বিখ্যাত চরিত্রের বিশ্লেষণ এবং এবং ইতিহাসের একটি সুস্পষ্ট বিবরণ। ওপেনহাইমার হলেন সেই অসাধারণ বুদ্ধিদীপ্ত ব্যক্তি যিনি ম্যানহাটন প্রকল্পের নেতৃত্ব দিয়েছিলেন। যেটি ছিল পারমাণবিক বোমা তৈরির প্রকল্প। যেই বোমা দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের অবসান ঘটিয়েছিল।
২৫ জুলাই ২০২৩
ভারতীয় ওটিটি প্ল্যাটফর্ম সনি লিভের ওয়েব সিরিজ ‘জ্যাজ সিটি’তে অভিনয় করেছেন বাংলাদেশের আরিফিন শুভ। এমনটা জানা গিয়েছিল আগেই। গত সেপ্টেম্বরে সনি লিভের প্রমোশনাল ভিডিওতে কয়েক ঝলক দেখা মিলেছিল তাঁর। এবার জানা গেল সিরিজটির মুক্তির তারিখ। গতকাল ট্রেলার প্রকাশ করে ঘোষণা দেওয়া হলো, আগামী বছরের ৬ ফেব্রুয়ারি মু
৪ ঘণ্টা আগে
বান্দরবানের ম্রো শিশু ও সম্প্রদায়ের সদস্যদের অংশগ্রহণে আলিয়ঁস ফ্রঁসেজ দো ঢাকায় আয়োজন করা হয়েছে সপ্তাহব্যাপী সাংস্কৃতিক উৎসব। আজ থেকে শুরু হওয়া ‘পাওমুম পার্বণ ২০২৫’ শীর্ষক এই অনুষ্ঠান চলবে ২৪ ডিসেম্বর পর্যন্ত।
৪ ঘণ্টা আগে
৪০ বছরের বেশি সময় নাটকের দল ঢাকা থিয়েটারের সঙ্গে যুক্ত অভিনেতা ফারুক আহমেদ। অভিনয় করেছেন দলটির অনেক নাটকে। তবে কখনোই দলটির হয়ে নির্দেশনা দেওয়া হয়নি তাঁর। অবশেষে ঢাকা থিয়েটারের নাট্যনির্দেশক হিসেবে হাজির হচ্ছেন ফারুক আহমেদ।
৪ ঘণ্টা আগেবিনোদন প্রতিবেদক, ঢাকা

ভারতীয় ওটিটি প্ল্যাটফর্ম সনি লিভের ওয়েব সিরিজ ‘জ্যাজ সিটি’তে অভিনয় করেছেন বাংলাদেশের আরিফিন শুভ। এমনটা জানা গিয়েছিল আগেই। গত সেপ্টেম্বরে সনি লিভের প্রমোশনাল ভিডিওতে কয়েক ঝলক দেখা মিলেছিল তাঁর। এবার জানা গেল সিরিজটির মুক্তির তারিখ। গতকাল ট্রেলার প্রকাশ করে ঘোষণা দেওয়া হলো, আগামী বছরের ৬ ফেব্রুয়ারি মুক্তি পাবে জ্যাজ সিটি, দেখা যাবে বাংলা, হিন্দি ও ইংরেজি ভাষায়।
জ্যাজ সিটি পরিচালনা করেছেন সৌমিক সেন। সর্বশেষ তিনি যুক্ত ছিলেন গত বছর মুক্তি পাওয়া জনপ্রিয় হিন্দি সিরিজ ‘জুবিলি’র সঙ্গে। বিক্রমাদিত্য মোতওয়ানের সঙ্গে যৌথভাবে সিরিজটির চিত্রনাট্য লিখেছিলেন সৌমিক। প্রেক্ষাপট ছিল চল্লিশের দশকের শেষের দিকের মুম্বাই শহর ও বলিউডের শুরুর দিকের ঘটনা। জুবিলির মতো নতুন এ সিরিজেও সৌমিক পর্দায় তুলে ধরেছেন পুরোনো প্রেক্ষাপট।
২ মিনিট ৩৬ সেকেন্ডের হিন্দি ভাষার ট্রেলারে দেখা গেল, ১৯৭০-৭১ সালের পশ্চিমবঙ্গের প্রেক্ষাপট। রয়েছে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের প্রসঙ্গও। সেই সময়ে ভারত-পাকিস্তানের দ্বন্দ্বই মোটাদাগে তুলে ধরা হয়েছে এতে। ট্রেলার দেখে সহজেই আন্দাজ করা গেল, জ্যাজ সিটির কেন্দ্রীয় চরিত্রেই আছেন শুভ। তাঁর চরিত্রের নাম জিমি রয়। ট্রেলারে শুভকে হিন্দি ভাষাতেও কথা বলতে শোনা যায়, যা তিনি নিজেই ডাবিং করেছেন। শুভর বিপরীতে দেখা যাবে কলকাতার অভিনেত্রী সৌরসেনী মৈত্রকে। এ ছাড়া আরও আছেন কলকাতা ও হিন্দি সিনেমার একাধিক অভিনেতা।
জ্যাজ সিটি পশ্চিমবঙ্গে আরিফিন শুভর তৃতীয় ওয়েব কনটেন্ট। এর আগে তিনি অভিনয় করেছেন অরিন্দম শীলের ‘উনিশে এপ্রিল’ ও রাহুল মুখার্জির ‘লহু’তে। উনিশে এপ্রিল আলোর মুখ দেখলেও আটকে আছে লহু।

ভারতীয় ওটিটি প্ল্যাটফর্ম সনি লিভের ওয়েব সিরিজ ‘জ্যাজ সিটি’তে অভিনয় করেছেন বাংলাদেশের আরিফিন শুভ। এমনটা জানা গিয়েছিল আগেই। গত সেপ্টেম্বরে সনি লিভের প্রমোশনাল ভিডিওতে কয়েক ঝলক দেখা মিলেছিল তাঁর। এবার জানা গেল সিরিজটির মুক্তির তারিখ। গতকাল ট্রেলার প্রকাশ করে ঘোষণা দেওয়া হলো, আগামী বছরের ৬ ফেব্রুয়ারি মুক্তি পাবে জ্যাজ সিটি, দেখা যাবে বাংলা, হিন্দি ও ইংরেজি ভাষায়।
জ্যাজ সিটি পরিচালনা করেছেন সৌমিক সেন। সর্বশেষ তিনি যুক্ত ছিলেন গত বছর মুক্তি পাওয়া জনপ্রিয় হিন্দি সিরিজ ‘জুবিলি’র সঙ্গে। বিক্রমাদিত্য মোতওয়ানের সঙ্গে যৌথভাবে সিরিজটির চিত্রনাট্য লিখেছিলেন সৌমিক। প্রেক্ষাপট ছিল চল্লিশের দশকের শেষের দিকের মুম্বাই শহর ও বলিউডের শুরুর দিকের ঘটনা। জুবিলির মতো নতুন এ সিরিজেও সৌমিক পর্দায় তুলে ধরেছেন পুরোনো প্রেক্ষাপট।
২ মিনিট ৩৬ সেকেন্ডের হিন্দি ভাষার ট্রেলারে দেখা গেল, ১৯৭০-৭১ সালের পশ্চিমবঙ্গের প্রেক্ষাপট। রয়েছে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের প্রসঙ্গও। সেই সময়ে ভারত-পাকিস্তানের দ্বন্দ্বই মোটাদাগে তুলে ধরা হয়েছে এতে। ট্রেলার দেখে সহজেই আন্দাজ করা গেল, জ্যাজ সিটির কেন্দ্রীয় চরিত্রেই আছেন শুভ। তাঁর চরিত্রের নাম জিমি রয়। ট্রেলারে শুভকে হিন্দি ভাষাতেও কথা বলতে শোনা যায়, যা তিনি নিজেই ডাবিং করেছেন। শুভর বিপরীতে দেখা যাবে কলকাতার অভিনেত্রী সৌরসেনী মৈত্রকে। এ ছাড়া আরও আছেন কলকাতা ও হিন্দি সিনেমার একাধিক অভিনেতা।
জ্যাজ সিটি পশ্চিমবঙ্গে আরিফিন শুভর তৃতীয় ওয়েব কনটেন্ট। এর আগে তিনি অভিনয় করেছেন অরিন্দম শীলের ‘উনিশে এপ্রিল’ ও রাহুল মুখার্জির ‘লহু’তে। উনিশে এপ্রিল আলোর মুখ দেখলেও আটকে আছে লহু।

ক্রিস্টোফার নোলানের ‘ওপেনহাইমার’ হলো একটি বিখ্যাত চরিত্রের বিশ্লেষণ এবং এবং ইতিহাসের একটি সুস্পষ্ট বিবরণ। ওপেনহাইমার হলেন সেই অসাধারণ বুদ্ধিদীপ্ত ব্যক্তি যিনি ম্যানহাটন প্রকল্পের নেতৃত্ব দিয়েছিলেন। যেটি ছিল পারমাণবিক বোমা তৈরির প্রকল্প। যেই বোমা দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের অবসান ঘটিয়েছিল।
২৫ জুলাই ২০২৩
আগামী বছর ২৯ জানুয়ারি নেদারল্যান্ডসের রটারড্যাম শহরে শুরু হবে ইন্টারন্যাশনাল ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল রটারড্যামের ৫৫তম আসর। এই উৎসব দিয়ে যাত্রা শুরু করছে বাংলাদেশে দুই সিনেমা ‘রইদ’ ও ‘মাস্টার’। উৎসবে প্রিমিয়ার হবে সিনেমা দুটির।
৪ ঘণ্টা আগে
বান্দরবানের ম্রো শিশু ও সম্প্রদায়ের সদস্যদের অংশগ্রহণে আলিয়ঁস ফ্রঁসেজ দো ঢাকায় আয়োজন করা হয়েছে সপ্তাহব্যাপী সাংস্কৃতিক উৎসব। আজ থেকে শুরু হওয়া ‘পাওমুম পার্বণ ২০২৫’ শীর্ষক এই অনুষ্ঠান চলবে ২৪ ডিসেম্বর পর্যন্ত।
৪ ঘণ্টা আগে
৪০ বছরের বেশি সময় নাটকের দল ঢাকা থিয়েটারের সঙ্গে যুক্ত অভিনেতা ফারুক আহমেদ। অভিনয় করেছেন দলটির অনেক নাটকে। তবে কখনোই দলটির হয়ে নির্দেশনা দেওয়া হয়নি তাঁর। অবশেষে ঢাকা থিয়েটারের নাট্যনির্দেশক হিসেবে হাজির হচ্ছেন ফারুক আহমেদ।
৪ ঘণ্টা আগেবিনোদন প্রতিবেদক, ঢাকা

বান্দরবানের ম্রো শিশু ও সম্প্রদায়ের সদস্যদের অংশগ্রহণে আলিয়ঁস ফ্রঁসেজ দো ঢাকায় আয়োজন করা হয়েছে সপ্তাহব্যাপী সাংস্কৃতিক উৎসব। আজ থেকে শুরু হওয়া ‘পাওমুম পার্বণ ২০২৫’ শীর্ষক এই অনুষ্ঠান চলবে ২৪ ডিসেম্বর পর্যন্ত। এই আয়োজন ম্রো ভাষা, শিল্পকলা, সংগীত ও সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যকে তুলে ধরার পাশাপাশি রাজধানীতে প্রথমবারের মতো আদিবাসী শিশুদের সৃজনশীল কাজ প্রদর্শনের সুযোগ করে দেবে বলে জানিয়েছে আয়োজকেরা।
লামায় অবস্থিত পাওমুম থারক্লা একটি সম্প্রদায়নির্ভর বিদ্যালয়, যা গত ১০ বছরের বেশি সময় ধরে ম্রো ভাষা, সাংস্কৃতিক চর্চা এবং শিশু শিক্ষার উন্নয়নে কাজ করে যাচ্ছে। উৎসবে অংশ নেওয়া অনেক শিশুর জন্য এটিই পাহাড়ের বাইরে জীবনের প্রথম অভিজ্ঞতা।
উৎসবে শিশুদের তৈরি শিল্পকর্ম, বাঁশের কারুশিল্প, ফটোগ্রাফি, বুননের প্রদর্শনী, স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র এবং লাইভ পারফরম্যান্স যেমন ম্রো নৃত্য, গান ও ঐতিহ্যবাহী প্লাং বাঁশি উপস্থাপন করা হবে। এ ছাড়া সপ্তাহজুড়ে বিভিন্ন কর্মশালা, গাইডেড ট্যুর এবং সম্প্রদায়ভিত্তিক সংলাপ অনুষ্ঠিত হবে।
পাওমুম থারক্লার সহপ্রতিষ্ঠাতা শাহরিয়ার পারভেজ বলেন, ‘আমাদের স্কুলটি শুরু হয়েছিল একটি ছোট বাঁশের ঝুপড়িতে, মাত্র কয়েকটি শিশু নিয়ে। গত এক দশকের বেশি সময় ধরে আমরা শিক্ষার মাধ্যমে তাদের ভাষা ও সাংস্কৃতিক পরিচয় রক্ষার কাজ করে যাচ্ছি। পাওমুম পার্বণ ২০২৫ শিশুদের জন্য একটি অনন্য সুযোগ, যাতে তারা পাহাড়ের বাইরে নিজেকে তুলে ধরতে পারে। আমরা সব অংশীদারের প্রতি কৃতজ্ঞ, যারা এই যাত্রাকে সম্ভব করেছেন।’
প্রতিদিন বেলা ৩টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত (রোববার বন্ধ) চলবে এই আয়োজন। উৎসবটি সবার জন্য উন্মুক্ত। দর্শকেরা প্রদর্শনী ঘুরে দেখার পাশাপাশি শিশু ও সম্প্রদায়ের সঙ্গে মিশে ম্রো জনগোষ্ঠীর সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য উপভোগ করতে পারবেন।

বান্দরবানের ম্রো শিশু ও সম্প্রদায়ের সদস্যদের অংশগ্রহণে আলিয়ঁস ফ্রঁসেজ দো ঢাকায় আয়োজন করা হয়েছে সপ্তাহব্যাপী সাংস্কৃতিক উৎসব। আজ থেকে শুরু হওয়া ‘পাওমুম পার্বণ ২০২৫’ শীর্ষক এই অনুষ্ঠান চলবে ২৪ ডিসেম্বর পর্যন্ত। এই আয়োজন ম্রো ভাষা, শিল্পকলা, সংগীত ও সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যকে তুলে ধরার পাশাপাশি রাজধানীতে প্রথমবারের মতো আদিবাসী শিশুদের সৃজনশীল কাজ প্রদর্শনের সুযোগ করে দেবে বলে জানিয়েছে আয়োজকেরা।
লামায় অবস্থিত পাওমুম থারক্লা একটি সম্প্রদায়নির্ভর বিদ্যালয়, যা গত ১০ বছরের বেশি সময় ধরে ম্রো ভাষা, সাংস্কৃতিক চর্চা এবং শিশু শিক্ষার উন্নয়নে কাজ করে যাচ্ছে। উৎসবে অংশ নেওয়া অনেক শিশুর জন্য এটিই পাহাড়ের বাইরে জীবনের প্রথম অভিজ্ঞতা।
উৎসবে শিশুদের তৈরি শিল্পকর্ম, বাঁশের কারুশিল্প, ফটোগ্রাফি, বুননের প্রদর্শনী, স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র এবং লাইভ পারফরম্যান্স যেমন ম্রো নৃত্য, গান ও ঐতিহ্যবাহী প্লাং বাঁশি উপস্থাপন করা হবে। এ ছাড়া সপ্তাহজুড়ে বিভিন্ন কর্মশালা, গাইডেড ট্যুর এবং সম্প্রদায়ভিত্তিক সংলাপ অনুষ্ঠিত হবে।
পাওমুম থারক্লার সহপ্রতিষ্ঠাতা শাহরিয়ার পারভেজ বলেন, ‘আমাদের স্কুলটি শুরু হয়েছিল একটি ছোট বাঁশের ঝুপড়িতে, মাত্র কয়েকটি শিশু নিয়ে। গত এক দশকের বেশি সময় ধরে আমরা শিক্ষার মাধ্যমে তাদের ভাষা ও সাংস্কৃতিক পরিচয় রক্ষার কাজ করে যাচ্ছি। পাওমুম পার্বণ ২০২৫ শিশুদের জন্য একটি অনন্য সুযোগ, যাতে তারা পাহাড়ের বাইরে নিজেকে তুলে ধরতে পারে। আমরা সব অংশীদারের প্রতি কৃতজ্ঞ, যারা এই যাত্রাকে সম্ভব করেছেন।’
প্রতিদিন বেলা ৩টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত (রোববার বন্ধ) চলবে এই আয়োজন। উৎসবটি সবার জন্য উন্মুক্ত। দর্শকেরা প্রদর্শনী ঘুরে দেখার পাশাপাশি শিশু ও সম্প্রদায়ের সঙ্গে মিশে ম্রো জনগোষ্ঠীর সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য উপভোগ করতে পারবেন।

ক্রিস্টোফার নোলানের ‘ওপেনহাইমার’ হলো একটি বিখ্যাত চরিত্রের বিশ্লেষণ এবং এবং ইতিহাসের একটি সুস্পষ্ট বিবরণ। ওপেনহাইমার হলেন সেই অসাধারণ বুদ্ধিদীপ্ত ব্যক্তি যিনি ম্যানহাটন প্রকল্পের নেতৃত্ব দিয়েছিলেন। যেটি ছিল পারমাণবিক বোমা তৈরির প্রকল্প। যেই বোমা দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের অবসান ঘটিয়েছিল।
২৫ জুলাই ২০২৩
আগামী বছর ২৯ জানুয়ারি নেদারল্যান্ডসের রটারড্যাম শহরে শুরু হবে ইন্টারন্যাশনাল ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল রটারড্যামের ৫৫তম আসর। এই উৎসব দিয়ে যাত্রা শুরু করছে বাংলাদেশে দুই সিনেমা ‘রইদ’ ও ‘মাস্টার’। উৎসবে প্রিমিয়ার হবে সিনেমা দুটির।
৪ ঘণ্টা আগে
ভারতীয় ওটিটি প্ল্যাটফর্ম সনি লিভের ওয়েব সিরিজ ‘জ্যাজ সিটি’তে অভিনয় করেছেন বাংলাদেশের আরিফিন শুভ। এমনটা জানা গিয়েছিল আগেই। গত সেপ্টেম্বরে সনি লিভের প্রমোশনাল ভিডিওতে কয়েক ঝলক দেখা মিলেছিল তাঁর। এবার জানা গেল সিরিজটির মুক্তির তারিখ। গতকাল ট্রেলার প্রকাশ করে ঘোষণা দেওয়া হলো, আগামী বছরের ৬ ফেব্রুয়ারি মু
৪ ঘণ্টা আগে
৪০ বছরের বেশি সময় নাটকের দল ঢাকা থিয়েটারের সঙ্গে যুক্ত অভিনেতা ফারুক আহমেদ। অভিনয় করেছেন দলটির অনেক নাটকে। তবে কখনোই দলটির হয়ে নির্দেশনা দেওয়া হয়নি তাঁর। অবশেষে ঢাকা থিয়েটারের নাট্যনির্দেশক হিসেবে হাজির হচ্ছেন ফারুক আহমেদ।
৪ ঘণ্টা আগেবিনোদন প্রতিবেদক, ঢাকা

৪০ বছরের বেশি সময় নাটকের দল ঢাকা থিয়েটারের সঙ্গে যুক্ত অভিনেতা ফারুক আহমেদ। অভিনয় করেছেন দলটির অনেক নাটকে। তবে কখনোই দলটির হয়ে নির্দেশনা দেওয়া হয়নি তাঁর। অবশেষে ঢাকা থিয়েটারের নাট্যনির্দেশক হিসেবে হাজির হচ্ছেন ফারুক আহমেদ। আগামীকাল রাজধানীর বাংলাদেশ মহিলা সমিতির মিলনায়তনে সন্ধ্যা ৭টায় অনুষ্ঠিত হবে তাঁর নির্দেশিত ‘রঙমহাল’ নাটকের উদ্বোধনী প্রদর্শনী। এটি ঢাকা থিয়েটারের ৫৪তম প্রযোজনা।
রঙমহাল নাটকটি রচনা করেছেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক রুবাইয়াৎ আহমেদ। মঞ্চ পরিকল্পনায় আছেন অভিনেতা ও নির্মাতা আফজাল হোসেন। বিভিন্ন চরিত্রে অভিনয় করেছেন নাসরিন নাহার, ফারজানা চুমকি, অনিকেত ইসলাম, তৌকির আলম, রতন, বাদলসহ অনেকে।

রঙমহাল নিয়ে নির্দেশক ফারুক আহমেদ বলেন, ‘খুব ভালো একটা গল্প দেখা যাবে এই নাটকে। একবাক্যে যদি বলি, এটি সমাজের রূপ ও অরূপের আখ্যান। আমি রঙমহাল নাটকটিকে মোরাল প্লে হিসেবে অভিহিত করব। নৈতিক মূল্যবোধের নাটক। দর্শক এ কথার বিচার করবেন। আশা করছি নতুন ও পুরোনোর সম্মিলিত প্রয়াসে রঙমহাল হয়ে উঠবে সাম্প্রতিক সময়ের উল্লেখযোগ্য প্রযোজনা।’
নির্দেশনায় আসতে এত সময় নেওয়ার কারণ জানিয়ে ফারুক আহমেদ বলেন, ‘জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াকালে হলের নাট্যসম্পাদক ছিলাম। বেশ কয়েকটি নাটক নির্দেশনা দিয়েছিলাম। তবে ঢাকা থিয়েটারে এই প্রথম। ঢাকা থিয়েটারে অনেক বড় ও গুণী নির্দেশক ছিলেন এবং আছেন। বাচ্চু ভাই, জামিল ভাই, ফরীদি ভাইয়ের মতো মানুষ এখানে নির্দেশনা দিয়েছেন। তাঁদের অসাধারণ সব নাটকে অভিনয় করেছেন গুণী শিল্পীরা। তা ছাড়া ব্যক্তিগত কারণে অনেক দিন সরাসরি থিয়েটার করতে পারিনি। সমস্ত ধাপ পেরিয়ে এখন নাটক নির্দেশনা দিচ্ছি, এটা অনেক বড় প্রাপ্তি।’

৪০ বছরের বেশি সময় নাটকের দল ঢাকা থিয়েটারের সঙ্গে যুক্ত অভিনেতা ফারুক আহমেদ। অভিনয় করেছেন দলটির অনেক নাটকে। তবে কখনোই দলটির হয়ে নির্দেশনা দেওয়া হয়নি তাঁর। অবশেষে ঢাকা থিয়েটারের নাট্যনির্দেশক হিসেবে হাজির হচ্ছেন ফারুক আহমেদ। আগামীকাল রাজধানীর বাংলাদেশ মহিলা সমিতির মিলনায়তনে সন্ধ্যা ৭টায় অনুষ্ঠিত হবে তাঁর নির্দেশিত ‘রঙমহাল’ নাটকের উদ্বোধনী প্রদর্শনী। এটি ঢাকা থিয়েটারের ৫৪তম প্রযোজনা।
রঙমহাল নাটকটি রচনা করেছেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক রুবাইয়াৎ আহমেদ। মঞ্চ পরিকল্পনায় আছেন অভিনেতা ও নির্মাতা আফজাল হোসেন। বিভিন্ন চরিত্রে অভিনয় করেছেন নাসরিন নাহার, ফারজানা চুমকি, অনিকেত ইসলাম, তৌকির আলম, রতন, বাদলসহ অনেকে।

রঙমহাল নিয়ে নির্দেশক ফারুক আহমেদ বলেন, ‘খুব ভালো একটা গল্প দেখা যাবে এই নাটকে। একবাক্যে যদি বলি, এটি সমাজের রূপ ও অরূপের আখ্যান। আমি রঙমহাল নাটকটিকে মোরাল প্লে হিসেবে অভিহিত করব। নৈতিক মূল্যবোধের নাটক। দর্শক এ কথার বিচার করবেন। আশা করছি নতুন ও পুরোনোর সম্মিলিত প্রয়াসে রঙমহাল হয়ে উঠবে সাম্প্রতিক সময়ের উল্লেখযোগ্য প্রযোজনা।’
নির্দেশনায় আসতে এত সময় নেওয়ার কারণ জানিয়ে ফারুক আহমেদ বলেন, ‘জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াকালে হলের নাট্যসম্পাদক ছিলাম। বেশ কয়েকটি নাটক নির্দেশনা দিয়েছিলাম। তবে ঢাকা থিয়েটারে এই প্রথম। ঢাকা থিয়েটারে অনেক বড় ও গুণী নির্দেশক ছিলেন এবং আছেন। বাচ্চু ভাই, জামিল ভাই, ফরীদি ভাইয়ের মতো মানুষ এখানে নির্দেশনা দিয়েছেন। তাঁদের অসাধারণ সব নাটকে অভিনয় করেছেন গুণী শিল্পীরা। তা ছাড়া ব্যক্তিগত কারণে অনেক দিন সরাসরি থিয়েটার করতে পারিনি। সমস্ত ধাপ পেরিয়ে এখন নাটক নির্দেশনা দিচ্ছি, এটা অনেক বড় প্রাপ্তি।’

ক্রিস্টোফার নোলানের ‘ওপেনহাইমার’ হলো একটি বিখ্যাত চরিত্রের বিশ্লেষণ এবং এবং ইতিহাসের একটি সুস্পষ্ট বিবরণ। ওপেনহাইমার হলেন সেই অসাধারণ বুদ্ধিদীপ্ত ব্যক্তি যিনি ম্যানহাটন প্রকল্পের নেতৃত্ব দিয়েছিলেন। যেটি ছিল পারমাণবিক বোমা তৈরির প্রকল্প। যেই বোমা দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের অবসান ঘটিয়েছিল।
২৫ জুলাই ২০২৩
আগামী বছর ২৯ জানুয়ারি নেদারল্যান্ডসের রটারড্যাম শহরে শুরু হবে ইন্টারন্যাশনাল ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল রটারড্যামের ৫৫তম আসর। এই উৎসব দিয়ে যাত্রা শুরু করছে বাংলাদেশে দুই সিনেমা ‘রইদ’ ও ‘মাস্টার’। উৎসবে প্রিমিয়ার হবে সিনেমা দুটির।
৪ ঘণ্টা আগে
ভারতীয় ওটিটি প্ল্যাটফর্ম সনি লিভের ওয়েব সিরিজ ‘জ্যাজ সিটি’তে অভিনয় করেছেন বাংলাদেশের আরিফিন শুভ। এমনটা জানা গিয়েছিল আগেই। গত সেপ্টেম্বরে সনি লিভের প্রমোশনাল ভিডিওতে কয়েক ঝলক দেখা মিলেছিল তাঁর। এবার জানা গেল সিরিজটির মুক্তির তারিখ। গতকাল ট্রেলার প্রকাশ করে ঘোষণা দেওয়া হলো, আগামী বছরের ৬ ফেব্রুয়ারি মু
৪ ঘণ্টা আগে
বান্দরবানের ম্রো শিশু ও সম্প্রদায়ের সদস্যদের অংশগ্রহণে আলিয়ঁস ফ্রঁসেজ দো ঢাকায় আয়োজন করা হয়েছে সপ্তাহব্যাপী সাংস্কৃতিক উৎসব। আজ থেকে শুরু হওয়া ‘পাওমুম পার্বণ ২০২৫’ শীর্ষক এই অনুষ্ঠান চলবে ২৪ ডিসেম্বর পর্যন্ত।
৪ ঘণ্টা আগে