অরুণ কর্মকার

আমরা পৃথিবীর মানুষ এখন এক অস্থির সময় পার করছি। আমরা দেখছি রাজনীতির ডামাডোল, দীর্ঘস্থায়ী যুদ্ধ এবং আরও নতুন যুদ্ধের আশঙ্কা। ঘটে চলেছে জাতিগত ও আঞ্চলিক সংঘাতের অনেক ঘটনা। রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক আধিপত্য বিস্তারের জটিল-কঠিন কূটনীতি পৃথিবীকে নতুন মেরুকরণের অনিবার্য লক্ষ্যে ধাবিত করেছে।
আমাদের মতো দেশে তো সব সময়ই কম-বেশি অস্থিরতা থাকে। তার ওপর বর্তমান বিশ্ব পরিস্থিতির এই চক্কর এবং সর্বোপরি জাতীয় নির্বাচনকে কেন্দ্র করে উদ্ভূত চাপান-উতোরে সেই অস্থিরতা আরও বহুগুণ বেড়েছে। আমরা এখন অতিশয় ব্যস্ত হয়ে পড়েছি গ্রহণযোগ্য ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন নিশ্চিত করার জন্য। তবে সেখানেও গলদ ষোলো আনা। কারণ গ্রহণযোগ্যতার মানে হয়ে দাঁড়িয়েছে আমার কাছে গ্রহণযোগ্য। আর অংশগ্রহণমূলক মানেও আমার অংশগ্রহণ; অর্থাৎ আমি অংশগ্রহণ করছি কি না।
পৃথিবীর এবং আমাদের দেশের এই পরিস্থিতি নিয়ে লেখালেখি, মতপ্রকাশের কোনো অন্ত নেই। মূল ধারার গণমাধ্যম ছাড়াও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের সব রকম প্ল্যাটফর্মে তা অবিরাম চলেছে। এমন কোনো লোক নেই, যিনি তাঁর মত এবং সমস্যা সমাধানের ব্যবস্থাপত্র দিচ্ছেন না। এটা ভালো। খুবই ভালো। এটাকেও বোধ হয় গণতন্ত্রের একটা সৌন্দর্য বলা যায়।
এই সামগ্রিক অবস্থার মধ্যে যেটা সবচেয়ে বেশি উপেক্ষিত হচ্ছে তা হলো, প্রাকৃতিক পরিবেশ-প্রতিবেশ। সারা পৃথিবীতে এবং আমাদের দেশে তো বটেই—এ বিষয়টি নিয়ে কিছু বলার দরকার মনে করছি এই কারণে যে জাতিসংঘ ঘোষিত বিশ্ব পরিবেশ দিবসের সুবর্ণজয়ন্তী (৫০ বছর পূর্তি) পালিত হলো এ বছর। প্রতিবছর দিবসটি পালনের জন্য ৫ জুন তারিখটি নির্ধারিত। ওই তারিখেই দিবসটি এ বছরও পালিত হয়েছে। তবে সব পর্যায়েই তা ছিল একেবারে নিষ্প্রভ।
আসলে পরিবেশ-প্রতিবেশের অবস্থা যতই সংকটাপন্ন হচ্ছে, বিষয়টির প্রতি উপেক্ষাও ততই বাড়ছে। এ কথা বলছি এই জন্য যে জাতিসংঘ এবং পৃথিবীর দেশে দেশে সরকারগুলোর নীতিনির্ধারণী উঁচুপর্যায়ে যে উদ্যোগ-আলোচনা দেখা যায় তা এখন পর্যন্ত পরিবেশ-প্রতিবেশ সংরক্ষণ বা উন্নয়নে তেমন কোনো ফল দেয়নি। বৈশ্বিক মেরুকরণের নতুন ডামাডোলে অদূর ভবিষ্যতে কোনো ফল দেবে—এমন আশা করারও কোনো কারণ দেখছি না।
পাশাপাশি তৃণমূল পর্যায়ে পরিবেশ-প্রতিবেশ সংরক্ষণের যে কাজ আগে দেখা গেছে, বিশেষ করে আমাদের দেশের অভিজ্ঞতা থেকে বলতে পারি, এখন তাতে অনেকটাই ভাটা পড়েছে। পরিবেশবাদী সংগঠনগুলো এবং অ্যাকটিভিস্টরা কাজ করছেন ঠিকই, তবে কেমন যেন ম্রিয়মাণ। আগে যেমন পরিবেশ বিধ্বংসী কোনো কাজের প্রতিবাদে তৃণমূল পর্যায় পর্যন্ত তাদের আওয়াজ শোনা যেত, এখন আর তা শোনা যায় না। বোধ হয় তাদের কাজের ফোকাস পরিবর্তন হয়েছে।
একইভাবে গণমাধ্যমও পরিবেশ-প্রতিবেশ সুরক্ষার বিষয়ে আগের মতো উচ্চকিত নয়। হ্যাঁ, গণমাধ্যমে এ-সংক্রান্ত খবরাখবর প্রকাশিত হচ্ছে নিয়মিতই।
আগের তুলনায় তা বরং বেশিই হচ্ছে। কিন্তু কেমন যেন দায়সারা গোছের। খবর প্রকাশ গণমাধ্যমের কাজ, সে জন্যই প্রকাশ করা। আর আজ-কালকার পরিবেশ-সংক্রান্ত প্রতিবেদনের মুখ্য বিষয় (ফোকাস) থাকে অব্যবস্থাপনা ও দুর্নীতির ওপর। পরিবেশ সেখানে গৌণ।
একটা সময় ছিল, যখন মূলধারার কোনো কোনো গণমাধ্যম বিষয়টি নিয়ে তোলপাড় শুরু করত। অনেক দিন তেমনটা আর দেখা যাচ্ছে না, কিংবা এমন কোনো গণমাধ্যমকর্মীকেও চিহ্নিত করা কঠিন, যিনি বিষয়টি নিয়ে লেগে আছেন এবং অদূর অতীতে দেশে হইচই ফেলে দেওয়া কোনো প্রতিবেদনের মতো নতুন প্রতিবেদন প্রকাশ করেছেন। আজকাল এ রকম কোনো গণমাধ্যমকর্মীকে খুঁজে পেতে হলে এক দশক আগে যাঁরা এ ধরনের কাজ করেছেন, তাঁদেরই নাম করতে হবে।
আমাদের দেশে পরিবেশ সাংবাদিকদের একটি সংগঠন ছিল। সাবেক অর্থমন্ত্রী এস এ এম এস কিবরিয়া আশির দশকে যখন ইউএন এসকাপের মহাপরিচালক, তখন তাঁর পরামর্শ ও প্রত্যক্ষ সহযোগিতায় গঠিত হয় সেই সংগঠন—বাংলাদেশ পরিবেশ সাংবাদিক ফোরাম (এফইজেবি)। দেশে একটি পরিবেশ মন্ত্রণালয় গঠনের জন্যও এই সংগঠন রাজপথে মিছিল করেছে। দেশে পরিবেশ-সংক্রান্ত যতগুলো নীতিমালা তৈরি হয়েছে তার প্রতিটি ক্ষেত্রে এই সংগঠনের কর্মীরা ভূমিকা রেখেছেন। আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক পরিসরে দেশের পরিবেশ সংরক্ষণ নিয়ে কথা বলা, নেগোসিয়েশনের ক্ষেত্রেও এই সংগঠন ভূমিকা রেখেছে। এফইজেবির নিয়মিত প্রকাশনা ছিল। অথচ প্রায় এক দশক ধরে এই সংগঠন নিষ্ক্রিয়। কিন্তু বাংলাদেশ পরিবেশ-প্রতিবেশ সংরক্ষণের সব মাপকাঠিতেই পিছিয়ে পড়া একটি দেশ। এখানে পরিবেশ নিয়ে সক্রিয় হওয়ার প্রয়োজনীয়তা এখন আগের চেয়েও বেশি।
প্রাকৃতিক পরিবেশের তিনটি মৌলিক বিষয় হলো—মাটি, পানি ও বায়ু। আমাদের দেশে এ তিনটিই ভয়াবহ দূষণের শিকার। এর মধ্যে পানি এবং বায়ুদূষণের ভয়াবহতা সম্পর্কে সাধারণ মানুষও সচেতন। কিন্তু দূষণের প্রতিকার নেই। অন্য অনেক ক্ষেত্রের মতো এ-সংক্রান্তও কঠোর আইন আছে। কিন্তু তার প্রয়োগ নেই। আর মাটিদূষণ নিয়ে কথা খুব কমই হয়। আমাদের সব ধরনের ফসল উৎপাদন বেড়েছে এবং আরও বেড়ে চলেছে। তাতে সাধারণভাবে একটা ধারণা হতে পারে যে আমাদের মাটি ঠিকই আছে। কিন্তু প্রকৃতপক্ষে তা নয়। বেশি ফসল উৎপাদনের মূল কারণ উচ্চফলনশীল বীজ এবং রাসায়নিক সার ও কীটনাশক। এগুলো ছাড়া ফসল উৎপাদনের ক্ষমতা অনেকটাই হারিয়েছে আমাদের মাটি। মৃত্তিকা সম্পদ গবেষণায় এ-সংক্রান্ত তথ্য পাওয়া যায়।
জলবায়ু পরিবর্তন এবং সেই কারণে শীত, গ্রীষ্ম, বর্ষার ধরন (প্যাটার্ন) পরিবর্তন এখন খোলা চোখেই দৃশ্যমান। তাই এ নিয়ে কথা হয় অনেক। কিন্তু পরিবেশ-প্রতিবেশের জন্য মারাত্মক এবং অপেক্ষাকৃত নতুন বিপদ প্লাস্টিক দূষণ নিয়ে এখন পর্যন্ত আমাদের দেশে কোনো স্তরেই তেমন একটা কথাবার্তা হচ্ছে না। আন্তর্জাতিক অঙ্গনে কথা শুরু হয় মহাসমুদ্রগুলো প্লাস্টিক দূষণের শিকার হতে শুরু করার পর। এ বছর বিশ্ব পরিবেশ দিবসের সুবর্ণজয়ন্তীতে জাতিসংঘ অবশ্য প্লাস্টিক দূষণকেই দিবসটির মূল প্রতিপাদ্য করেছিল।
জাতিসংঘের তথ্য হচ্ছে—বর্তমান পৃথিবীতে প্লাস্টিকের বোতল কেনাবেচা হয় প্রতি মিনিটে প্রায় ১০ লাখ। প্রতিবছর প্লাস্টিকের ব্যাগ ব্যবহৃত হয় পাঁচ লাখ কোটি (৫ ট্রিলিয়ন)। পৃথিবীতে মোট উৎপাদিত প্লাস্টিক পণ্যের অর্ধেকেরই ডিজাইন করা হয়েছে শুধু একবার ব্যবহার করার জন্য; অর্থাৎ একবার ব্যবহার করেই এসব প্লাস্টিক পণ্য ফেলে দেওয়া হয়। এই ফেলে দেওয়া পণ্যের শতকরা ৮৫ ভাগই পচনশীল এবং তা বর্জ্য হিসেবে সর্বত্র ছড়িয়ে পড়ছে। প্লাস্টিক পণ্য ব্যবহার শুরু করার পর থেকে এখন পর্যন্ত বর্জ্য তৈরি হয়েছে প্রায় ৭০০ কোটি টন। এর ১০ শতাংশেরও কম রিসাইক্লিং বা পুনরায় ব্যবহারযোগ্য করা হয়েছে।
প্লাস্টিকের ক্ষুদ্রাণুগুলো (মাইক্রো পার্টস) শ্বাস-প্রশ্বাস ও ত্বকের মাধ্যমে মানুষ এবং অন্যান্য প্রাণিদেহে প্রবেশ করে। ইতিমধ্যে অনেক মানুষ এবং অন্যান্য প্রাণীর ফুসফুস, যকৃৎ, প্লীহা এবং কিডনিতে প্লাস্টিকের ক্ষুদ্রাণু পাওয়া গেছে। নবজাতক শিশুর প্লাসেন্টায় (গর্ভফুল) পর্যন্ত এর অস্তিত্ব পাওয়া গেছে। প্লাস্টিকের ক্ষুদ্রাণুর সঙ্গে থাকে প্লাস্টিক উৎপাদনের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট মিথাইল, পারদ, প্লাস্টিকাইজার প্রভৃতি। এগুলোর ক্ষতিকর প্রভাব অভাবনীয়।
আমাদের দেশে প্লাস্টিকের সামগ্রী ব্যবহার-সংক্রান্ত বিস্তারিত তথ্য-উপাত্তের অভাব রয়েছে। তবে বিভিন্ন ধরনের প্লাস্টিকের সামগ্রী যে এখানে যথেচ্ছ ব্যবহার করা হচ্ছে তা তো প্রতিদিনই সবাই দেখছে। পরিবেশ সংরক্ষণ আন্দোলন ও গণমাধ্যমের ভূমিকার কারণে একসময় বাংলাদেশেও প্লাস্টিকের ব্যবহার, বিশেষ করে একবার ব্যবহারের উপযোগী প্লাস্টিকের ব্যাগ ব্যবহার আইন করে নিষিদ্ধ করা হয়েছিল। তখন এর কিছু বিকল্পও বের হয়েছিল। কিন্তু সেই নিষেধাজ্ঞা বেশি দিন টেকেনি। বিকল্প পণ্যগুলোও হারিয়ে গেছে।
এভাবে আমরা আশরাফুল মাখলুকাত মানুষেরা পরিবেশ-প্রতিবেশ সংরক্ষণকে উপেক্ষা করে নিজেদের অস্তিত্ব ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে নিয়ে এসেছি। কিন্তু আজকের পৃথিবীতে কথায় হলেও কাজে কিংবা বাস্তবে পরিবেশ-প্রতিবেশ সংরক্ষণ মূল অ্যাজেন্ডা নয়।
লেখক: জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক

আমরা পৃথিবীর মানুষ এখন এক অস্থির সময় পার করছি। আমরা দেখছি রাজনীতির ডামাডোল, দীর্ঘস্থায়ী যুদ্ধ এবং আরও নতুন যুদ্ধের আশঙ্কা। ঘটে চলেছে জাতিগত ও আঞ্চলিক সংঘাতের অনেক ঘটনা। রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক আধিপত্য বিস্তারের জটিল-কঠিন কূটনীতি পৃথিবীকে নতুন মেরুকরণের অনিবার্য লক্ষ্যে ধাবিত করেছে।
আমাদের মতো দেশে তো সব সময়ই কম-বেশি অস্থিরতা থাকে। তার ওপর বর্তমান বিশ্ব পরিস্থিতির এই চক্কর এবং সর্বোপরি জাতীয় নির্বাচনকে কেন্দ্র করে উদ্ভূত চাপান-উতোরে সেই অস্থিরতা আরও বহুগুণ বেড়েছে। আমরা এখন অতিশয় ব্যস্ত হয়ে পড়েছি গ্রহণযোগ্য ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন নিশ্চিত করার জন্য। তবে সেখানেও গলদ ষোলো আনা। কারণ গ্রহণযোগ্যতার মানে হয়ে দাঁড়িয়েছে আমার কাছে গ্রহণযোগ্য। আর অংশগ্রহণমূলক মানেও আমার অংশগ্রহণ; অর্থাৎ আমি অংশগ্রহণ করছি কি না।
পৃথিবীর এবং আমাদের দেশের এই পরিস্থিতি নিয়ে লেখালেখি, মতপ্রকাশের কোনো অন্ত নেই। মূল ধারার গণমাধ্যম ছাড়াও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের সব রকম প্ল্যাটফর্মে তা অবিরাম চলেছে। এমন কোনো লোক নেই, যিনি তাঁর মত এবং সমস্যা সমাধানের ব্যবস্থাপত্র দিচ্ছেন না। এটা ভালো। খুবই ভালো। এটাকেও বোধ হয় গণতন্ত্রের একটা সৌন্দর্য বলা যায়।
এই সামগ্রিক অবস্থার মধ্যে যেটা সবচেয়ে বেশি উপেক্ষিত হচ্ছে তা হলো, প্রাকৃতিক পরিবেশ-প্রতিবেশ। সারা পৃথিবীতে এবং আমাদের দেশে তো বটেই—এ বিষয়টি নিয়ে কিছু বলার দরকার মনে করছি এই কারণে যে জাতিসংঘ ঘোষিত বিশ্ব পরিবেশ দিবসের সুবর্ণজয়ন্তী (৫০ বছর পূর্তি) পালিত হলো এ বছর। প্রতিবছর দিবসটি পালনের জন্য ৫ জুন তারিখটি নির্ধারিত। ওই তারিখেই দিবসটি এ বছরও পালিত হয়েছে। তবে সব পর্যায়েই তা ছিল একেবারে নিষ্প্রভ।
আসলে পরিবেশ-প্রতিবেশের অবস্থা যতই সংকটাপন্ন হচ্ছে, বিষয়টির প্রতি উপেক্ষাও ততই বাড়ছে। এ কথা বলছি এই জন্য যে জাতিসংঘ এবং পৃথিবীর দেশে দেশে সরকারগুলোর নীতিনির্ধারণী উঁচুপর্যায়ে যে উদ্যোগ-আলোচনা দেখা যায় তা এখন পর্যন্ত পরিবেশ-প্রতিবেশ সংরক্ষণ বা উন্নয়নে তেমন কোনো ফল দেয়নি। বৈশ্বিক মেরুকরণের নতুন ডামাডোলে অদূর ভবিষ্যতে কোনো ফল দেবে—এমন আশা করারও কোনো কারণ দেখছি না।
পাশাপাশি তৃণমূল পর্যায়ে পরিবেশ-প্রতিবেশ সংরক্ষণের যে কাজ আগে দেখা গেছে, বিশেষ করে আমাদের দেশের অভিজ্ঞতা থেকে বলতে পারি, এখন তাতে অনেকটাই ভাটা পড়েছে। পরিবেশবাদী সংগঠনগুলো এবং অ্যাকটিভিস্টরা কাজ করছেন ঠিকই, তবে কেমন যেন ম্রিয়মাণ। আগে যেমন পরিবেশ বিধ্বংসী কোনো কাজের প্রতিবাদে তৃণমূল পর্যায় পর্যন্ত তাদের আওয়াজ শোনা যেত, এখন আর তা শোনা যায় না। বোধ হয় তাদের কাজের ফোকাস পরিবর্তন হয়েছে।
একইভাবে গণমাধ্যমও পরিবেশ-প্রতিবেশ সুরক্ষার বিষয়ে আগের মতো উচ্চকিত নয়। হ্যাঁ, গণমাধ্যমে এ-সংক্রান্ত খবরাখবর প্রকাশিত হচ্ছে নিয়মিতই।
আগের তুলনায় তা বরং বেশিই হচ্ছে। কিন্তু কেমন যেন দায়সারা গোছের। খবর প্রকাশ গণমাধ্যমের কাজ, সে জন্যই প্রকাশ করা। আর আজ-কালকার পরিবেশ-সংক্রান্ত প্রতিবেদনের মুখ্য বিষয় (ফোকাস) থাকে অব্যবস্থাপনা ও দুর্নীতির ওপর। পরিবেশ সেখানে গৌণ।
একটা সময় ছিল, যখন মূলধারার কোনো কোনো গণমাধ্যম বিষয়টি নিয়ে তোলপাড় শুরু করত। অনেক দিন তেমনটা আর দেখা যাচ্ছে না, কিংবা এমন কোনো গণমাধ্যমকর্মীকেও চিহ্নিত করা কঠিন, যিনি বিষয়টি নিয়ে লেগে আছেন এবং অদূর অতীতে দেশে হইচই ফেলে দেওয়া কোনো প্রতিবেদনের মতো নতুন প্রতিবেদন প্রকাশ করেছেন। আজকাল এ রকম কোনো গণমাধ্যমকর্মীকে খুঁজে পেতে হলে এক দশক আগে যাঁরা এ ধরনের কাজ করেছেন, তাঁদেরই নাম করতে হবে।
আমাদের দেশে পরিবেশ সাংবাদিকদের একটি সংগঠন ছিল। সাবেক অর্থমন্ত্রী এস এ এম এস কিবরিয়া আশির দশকে যখন ইউএন এসকাপের মহাপরিচালক, তখন তাঁর পরামর্শ ও প্রত্যক্ষ সহযোগিতায় গঠিত হয় সেই সংগঠন—বাংলাদেশ পরিবেশ সাংবাদিক ফোরাম (এফইজেবি)। দেশে একটি পরিবেশ মন্ত্রণালয় গঠনের জন্যও এই সংগঠন রাজপথে মিছিল করেছে। দেশে পরিবেশ-সংক্রান্ত যতগুলো নীতিমালা তৈরি হয়েছে তার প্রতিটি ক্ষেত্রে এই সংগঠনের কর্মীরা ভূমিকা রেখেছেন। আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক পরিসরে দেশের পরিবেশ সংরক্ষণ নিয়ে কথা বলা, নেগোসিয়েশনের ক্ষেত্রেও এই সংগঠন ভূমিকা রেখেছে। এফইজেবির নিয়মিত প্রকাশনা ছিল। অথচ প্রায় এক দশক ধরে এই সংগঠন নিষ্ক্রিয়। কিন্তু বাংলাদেশ পরিবেশ-প্রতিবেশ সংরক্ষণের সব মাপকাঠিতেই পিছিয়ে পড়া একটি দেশ। এখানে পরিবেশ নিয়ে সক্রিয় হওয়ার প্রয়োজনীয়তা এখন আগের চেয়েও বেশি।
প্রাকৃতিক পরিবেশের তিনটি মৌলিক বিষয় হলো—মাটি, পানি ও বায়ু। আমাদের দেশে এ তিনটিই ভয়াবহ দূষণের শিকার। এর মধ্যে পানি এবং বায়ুদূষণের ভয়াবহতা সম্পর্কে সাধারণ মানুষও সচেতন। কিন্তু দূষণের প্রতিকার নেই। অন্য অনেক ক্ষেত্রের মতো এ-সংক্রান্তও কঠোর আইন আছে। কিন্তু তার প্রয়োগ নেই। আর মাটিদূষণ নিয়ে কথা খুব কমই হয়। আমাদের সব ধরনের ফসল উৎপাদন বেড়েছে এবং আরও বেড়ে চলেছে। তাতে সাধারণভাবে একটা ধারণা হতে পারে যে আমাদের মাটি ঠিকই আছে। কিন্তু প্রকৃতপক্ষে তা নয়। বেশি ফসল উৎপাদনের মূল কারণ উচ্চফলনশীল বীজ এবং রাসায়নিক সার ও কীটনাশক। এগুলো ছাড়া ফসল উৎপাদনের ক্ষমতা অনেকটাই হারিয়েছে আমাদের মাটি। মৃত্তিকা সম্পদ গবেষণায় এ-সংক্রান্ত তথ্য পাওয়া যায়।
জলবায়ু পরিবর্তন এবং সেই কারণে শীত, গ্রীষ্ম, বর্ষার ধরন (প্যাটার্ন) পরিবর্তন এখন খোলা চোখেই দৃশ্যমান। তাই এ নিয়ে কথা হয় অনেক। কিন্তু পরিবেশ-প্রতিবেশের জন্য মারাত্মক এবং অপেক্ষাকৃত নতুন বিপদ প্লাস্টিক দূষণ নিয়ে এখন পর্যন্ত আমাদের দেশে কোনো স্তরেই তেমন একটা কথাবার্তা হচ্ছে না। আন্তর্জাতিক অঙ্গনে কথা শুরু হয় মহাসমুদ্রগুলো প্লাস্টিক দূষণের শিকার হতে শুরু করার পর। এ বছর বিশ্ব পরিবেশ দিবসের সুবর্ণজয়ন্তীতে জাতিসংঘ অবশ্য প্লাস্টিক দূষণকেই দিবসটির মূল প্রতিপাদ্য করেছিল।
জাতিসংঘের তথ্য হচ্ছে—বর্তমান পৃথিবীতে প্লাস্টিকের বোতল কেনাবেচা হয় প্রতি মিনিটে প্রায় ১০ লাখ। প্রতিবছর প্লাস্টিকের ব্যাগ ব্যবহৃত হয় পাঁচ লাখ কোটি (৫ ট্রিলিয়ন)। পৃথিবীতে মোট উৎপাদিত প্লাস্টিক পণ্যের অর্ধেকেরই ডিজাইন করা হয়েছে শুধু একবার ব্যবহার করার জন্য; অর্থাৎ একবার ব্যবহার করেই এসব প্লাস্টিক পণ্য ফেলে দেওয়া হয়। এই ফেলে দেওয়া পণ্যের শতকরা ৮৫ ভাগই পচনশীল এবং তা বর্জ্য হিসেবে সর্বত্র ছড়িয়ে পড়ছে। প্লাস্টিক পণ্য ব্যবহার শুরু করার পর থেকে এখন পর্যন্ত বর্জ্য তৈরি হয়েছে প্রায় ৭০০ কোটি টন। এর ১০ শতাংশেরও কম রিসাইক্লিং বা পুনরায় ব্যবহারযোগ্য করা হয়েছে।
প্লাস্টিকের ক্ষুদ্রাণুগুলো (মাইক্রো পার্টস) শ্বাস-প্রশ্বাস ও ত্বকের মাধ্যমে মানুষ এবং অন্যান্য প্রাণিদেহে প্রবেশ করে। ইতিমধ্যে অনেক মানুষ এবং অন্যান্য প্রাণীর ফুসফুস, যকৃৎ, প্লীহা এবং কিডনিতে প্লাস্টিকের ক্ষুদ্রাণু পাওয়া গেছে। নবজাতক শিশুর প্লাসেন্টায় (গর্ভফুল) পর্যন্ত এর অস্তিত্ব পাওয়া গেছে। প্লাস্টিকের ক্ষুদ্রাণুর সঙ্গে থাকে প্লাস্টিক উৎপাদনের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট মিথাইল, পারদ, প্লাস্টিকাইজার প্রভৃতি। এগুলোর ক্ষতিকর প্রভাব অভাবনীয়।
আমাদের দেশে প্লাস্টিকের সামগ্রী ব্যবহার-সংক্রান্ত বিস্তারিত তথ্য-উপাত্তের অভাব রয়েছে। তবে বিভিন্ন ধরনের প্লাস্টিকের সামগ্রী যে এখানে যথেচ্ছ ব্যবহার করা হচ্ছে তা তো প্রতিদিনই সবাই দেখছে। পরিবেশ সংরক্ষণ আন্দোলন ও গণমাধ্যমের ভূমিকার কারণে একসময় বাংলাদেশেও প্লাস্টিকের ব্যবহার, বিশেষ করে একবার ব্যবহারের উপযোগী প্লাস্টিকের ব্যাগ ব্যবহার আইন করে নিষিদ্ধ করা হয়েছিল। তখন এর কিছু বিকল্পও বের হয়েছিল। কিন্তু সেই নিষেধাজ্ঞা বেশি দিন টেকেনি। বিকল্প পণ্যগুলোও হারিয়ে গেছে।
এভাবে আমরা আশরাফুল মাখলুকাত মানুষেরা পরিবেশ-প্রতিবেশ সংরক্ষণকে উপেক্ষা করে নিজেদের অস্তিত্ব ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে নিয়ে এসেছি। কিন্তু আজকের পৃথিবীতে কথায় হলেও কাজে কিংবা বাস্তবে পরিবেশ-প্রতিবেশ সংরক্ষণ মূল অ্যাজেন্ডা নয়।
লেখক: জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
০৬ অক্টোবর ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫বাসস, ঢাকা

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
আজ সোমবার বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১-এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) মো. আলমগীরের জেরা শুরু করেন রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী আমীর হোসেন। আইনজীবী আমীর হোসেন পলাতক আসামি শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে শুনানি করছেন। এর আগে গত মঙ্গলবার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. আলমগীরের সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন হয়।
এই মামলার শুনানিতে এর আগে গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম প্রতীক শহীদ আবু সাঈদের বাবাসহ স্বজনহারা পরিবারের একাধিক সদস্য সাক্ষ্য দিয়েছেন। এ ছাড়া মামলার গুরুত্বপূর্ণ ‘স্টার উইটনেস’ হিসেবে সাক্ষ্য দেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক এবং জুলাই আন্দোলনের অন্যতম নেতৃত্বদানকারী নাহিদ ইসলাম এবং দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান।
গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে আওয়ামী লীগ সরকার, তাদের দলীয় ক্যাডার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করে বলে অভিযোগ ওঠে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে শেখ হাসিনা, তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং তৎকালীন আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে গত ১০ জুলাই অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল-১।
পরবর্তীকালে, এই মামলার অন্যতম আসামি সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন দোষ স্বীকার করে ঘটনার সত্যতা উদ্ঘাটনে রাজসাক্ষী (অ্যাপ্রোভার) হওয়ার জন্য ট্রাইব্যুনালে আবেদন করেন। ট্রাইব্যুনাল তাঁর আবেদন মঞ্জুর করলে তিনি রাজসাক্ষী হিসেবে এই মামলায় সাক্ষ্য দেন।
মামলার প্রসিকিউশন পক্ষে শুনানি করছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম এবং গাজী এসএইচ তামিম। শুনানিতে তাঁদের সঙ্গে অপর প্রসিকিউটররাও উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদিকে, এই মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের পক্ষে আছেন আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ।
মানবতাবিরোধী অপরাধের এই মামলা ছাড়াও ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আরও দুটি মামলা বিচারাধীন। এর মধ্যে একটি মামলায় আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে সংঘটিত গুম-খুনের ঘটনায় তাঁকে আসামি করা হয়েছে। অন্য মামলাটি হলো রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে হত্যাকাণ্ড নিয়ে। এই তিনটি মামলার বিচারকাজই বর্তমানে দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে চলমান।

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
আজ সোমবার বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১-এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) মো. আলমগীরের জেরা শুরু করেন রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী আমীর হোসেন। আইনজীবী আমীর হোসেন পলাতক আসামি শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে শুনানি করছেন। এর আগে গত মঙ্গলবার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. আলমগীরের সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন হয়।
এই মামলার শুনানিতে এর আগে গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম প্রতীক শহীদ আবু সাঈদের বাবাসহ স্বজনহারা পরিবারের একাধিক সদস্য সাক্ষ্য দিয়েছেন। এ ছাড়া মামলার গুরুত্বপূর্ণ ‘স্টার উইটনেস’ হিসেবে সাক্ষ্য দেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক এবং জুলাই আন্দোলনের অন্যতম নেতৃত্বদানকারী নাহিদ ইসলাম এবং দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান।
গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে আওয়ামী লীগ সরকার, তাদের দলীয় ক্যাডার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করে বলে অভিযোগ ওঠে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে শেখ হাসিনা, তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং তৎকালীন আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে গত ১০ জুলাই অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল-১।
পরবর্তীকালে, এই মামলার অন্যতম আসামি সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন দোষ স্বীকার করে ঘটনার সত্যতা উদ্ঘাটনে রাজসাক্ষী (অ্যাপ্রোভার) হওয়ার জন্য ট্রাইব্যুনালে আবেদন করেন। ট্রাইব্যুনাল তাঁর আবেদন মঞ্জুর করলে তিনি রাজসাক্ষী হিসেবে এই মামলায় সাক্ষ্য দেন।
মামলার প্রসিকিউশন পক্ষে শুনানি করছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম এবং গাজী এসএইচ তামিম। শুনানিতে তাঁদের সঙ্গে অপর প্রসিকিউটররাও উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদিকে, এই মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের পক্ষে আছেন আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ।
মানবতাবিরোধী অপরাধের এই মামলা ছাড়াও ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আরও দুটি মামলা বিচারাধীন। এর মধ্যে একটি মামলায় আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে সংঘটিত গুম-খুনের ঘটনায় তাঁকে আসামি করা হয়েছে। অন্য মামলাটি হলো রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে হত্যাকাণ্ড নিয়ে। এই তিনটি মামলার বিচারকাজই বর্তমানে দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে চলমান।

আমরা পৃথিবীর মানুষ এখন এক অস্থির সময় পার করছি। আমরা দেখছি রাজনীতির ডামাডোল, দীর্ঘস্থায়ী যুদ্ধ এবং আরও নতুন যুদ্ধের আশঙ্কা। ঘটে চলেছে জাতিগত ও আঞ্চলিক সংঘাতের অনেক ঘটনা। রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক আধিপত্য বিস্তারের জটিল-কঠিন কূটনীতি পৃথিবীকে নতুন মেরুকরণের অনিবার্য লক্ষ্যে ধাবিত করেছে।
১৭ জুন ২০২৩
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর সঙ্গে।
মাছের সুষ্ঠু প্রজনন, উৎপাদন, মৎস্যসম্পদ সংরক্ষণ ও টেকসই মৎস্য আহরণের জন্য সমুদ্রে সব ধরনের মাছ শিকার ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা গতকাল বুধবার দিবাগত মধ্যরাতে শেষ হয়েছে। তাই গতকাল দিনভর ছিল উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে ব্যস্ততা। অনেকে দেখে নিচ্ছিলেন ট্রলার ঠিকঠাক আছে কি না, কেউ জালের ছেঁড়া অংশ সেলাই করছিলেন, কেউ আবার প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রীসহ অন্য সরঞ্জাম গুছিয়ে নিচ্ছিলেন।
বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র এবং ফকিরহাট উপ-মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ঘাটে গতকাল শত শত ট্রলার নোঙর করে রাখা ছিল। জেলেদের উপস্থিতিতে ঘাট এলাকা সরগরম হয়ে ওঠে। ফকিরহাটের মুদি-মনিহারি দোকানগুলোতে জেলেরা কেনাকাটা করতে ভিড় জমান। ফকিরহাট এলাকার বিসমিল্লাহ ট্রলারের মাঝি রহিম মিয়া বলেন, ‘সাগরে মাছ শিকারে যেতে সকল প্রস্তুতি নিয়েছি। নিষেধাজ্ঞার সময় শেষ হওয়ামাত্রই সাগরে নামব।’
জেলে নুরসাইদ ও ফোরকান মিয়া বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞার সময় পরিবার-পরিজন নিয়ে বেশ কষ্টে কেটেছে। ওই সময়ে বেশ টাকা ঋণ করেছি। এখন সাগরে যাব। দেখি আল্লাহ ঋণ পরিশোধ করতে দেন কি না।’
নোয়াখালীর হাতিয়ার সূর্যমুখী, বাংলাবাজার, কাজিরবাজার, পাইতান মার্কেট চেয়ারম্যান ঘাটসহ বেশ কয়েকটি ঘাটে গতকাল জেলেদের ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা গেছে। অনেকে নৌকায় জাল তুলছিলেন, আবার অনেকে জ্বালানি তেল মজুতসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী ট্রলারে নিয়ে যান। সূর্যমুখী ঘাটের এমভি মায়ের দোয়া ট্রলারের মাঝি জাফর উল্যা বলেন, ‘সাগরে ৮-১০ দিন থাকার প্রস্তুতি নিচ্ছি। সন্ধ্যায় সাগরের উদ্দেশে রওনা দেব।’
সূর্যমুখী ঘাট জেলে সমিতির সভাপতি জবিয়ল হক বলেন, ‘সাগরে নামতে প্রস্তুত নোয়াখালীর হাতিয়ার ২০টি ঘাটের লক্ষাধিক জেলে। এসব ঘাটে প্রায় ১০ হাজার ছোট-বড় ফিশিং ট্রলার রয়েছে। প্রতি ট্রলারে ১০ জন হলেও লক্ষাধিক জেলে এই মাছ ধরার সঙ্গে জড়িত। তাঁদের সবাই গত ৫৮ দিন তীরে বেকার ছিলেন।’
পিরোজপুরের ইন্দুরকানি উপজেলার পাড়েরহাট মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের পার্শ্ববর্তী এলাকার জেলেরা গতকাল দিনভর সাগরে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন। এ ছাড়া মঠবাড়িয়া উপজেলার সাপলেজা, খেতাচিড়া, বড়মাছুয়া, ছোটমাছুয়া, ভান্ডারিয়া উপজেলার চরখালী, হেতালিয়া, কাউখালী উপজেলার সোনাকুর এলাকার জেলেরা, সদর উপজেলা এবং নেছারাবাদ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার জেলেরা প্রস্তুতি শেষে গত রাতে বঙ্গোপসাগরে রওনা হন।
কয়েক দিন ধরে কক্সবাজার উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে নৌকা, জাল মেরামতসহ বিভিন্ন প্রস্তুতি সেরেছেন জেলেরা। গতকাল মেরিন ড্রাইভের টেকনাফের খুরেরমুখ, সাবরাং ও বাহারছড়া এলাকায় দেখা গেছে, সড়কে দাঁড় করিয়ে রাখা সারি সারি ট্রলারে জাল ও রসদ তোলেন জেলেরা।
একটি ট্রলারের মাঝি আবু তাহের জানান, এবার ভারতের সঙ্গে মিল রেখে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় কেউ সাগরে মাছ শিকারে নামেনি। এতে উপকূলের কাছাকাছি সাগরে জাল ফেললেই ইলিশসহ অন্য মাছ পাওয়া যাবে বলে আশাবাদী তিনি।
কক্সবাজার শহরের ফিশারি ঘাটের মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির পরিচালক জুলফিকার আলী জানান, কক্সবাজার উপকূলে ছোট-বড় ৭ হাজারের মতো যান্ত্রিক ট্রলার রয়েছে। এসব ট্রলারে প্রায় এক লাখ জেলে ও শ্রমিক নিয়োজিত রয়েছেন। অধিকাংশ ট্রলার নিষেধাজ্ঞা ওঠার সঙ্গে সঙ্গে সাগরে রওনা হবে।
[প্রতিবেদন তৈরিতে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছেন বরগুনা ও আমতলী, পিরোজপুর, কক্সবাজার এবং হাতিয়া প্রতিনিধি]

‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর সঙ্গে।
মাছের সুষ্ঠু প্রজনন, উৎপাদন, মৎস্যসম্পদ সংরক্ষণ ও টেকসই মৎস্য আহরণের জন্য সমুদ্রে সব ধরনের মাছ শিকার ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা গতকাল বুধবার দিবাগত মধ্যরাতে শেষ হয়েছে। তাই গতকাল দিনভর ছিল উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে ব্যস্ততা। অনেকে দেখে নিচ্ছিলেন ট্রলার ঠিকঠাক আছে কি না, কেউ জালের ছেঁড়া অংশ সেলাই করছিলেন, কেউ আবার প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রীসহ অন্য সরঞ্জাম গুছিয়ে নিচ্ছিলেন।
বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র এবং ফকিরহাট উপ-মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ঘাটে গতকাল শত শত ট্রলার নোঙর করে রাখা ছিল। জেলেদের উপস্থিতিতে ঘাট এলাকা সরগরম হয়ে ওঠে। ফকিরহাটের মুদি-মনিহারি দোকানগুলোতে জেলেরা কেনাকাটা করতে ভিড় জমান। ফকিরহাট এলাকার বিসমিল্লাহ ট্রলারের মাঝি রহিম মিয়া বলেন, ‘সাগরে মাছ শিকারে যেতে সকল প্রস্তুতি নিয়েছি। নিষেধাজ্ঞার সময় শেষ হওয়ামাত্রই সাগরে নামব।’
জেলে নুরসাইদ ও ফোরকান মিয়া বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞার সময় পরিবার-পরিজন নিয়ে বেশ কষ্টে কেটেছে। ওই সময়ে বেশ টাকা ঋণ করেছি। এখন সাগরে যাব। দেখি আল্লাহ ঋণ পরিশোধ করতে দেন কি না।’
নোয়াখালীর হাতিয়ার সূর্যমুখী, বাংলাবাজার, কাজিরবাজার, পাইতান মার্কেট চেয়ারম্যান ঘাটসহ বেশ কয়েকটি ঘাটে গতকাল জেলেদের ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা গেছে। অনেকে নৌকায় জাল তুলছিলেন, আবার অনেকে জ্বালানি তেল মজুতসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী ট্রলারে নিয়ে যান। সূর্যমুখী ঘাটের এমভি মায়ের দোয়া ট্রলারের মাঝি জাফর উল্যা বলেন, ‘সাগরে ৮-১০ দিন থাকার প্রস্তুতি নিচ্ছি। সন্ধ্যায় সাগরের উদ্দেশে রওনা দেব।’
সূর্যমুখী ঘাট জেলে সমিতির সভাপতি জবিয়ল হক বলেন, ‘সাগরে নামতে প্রস্তুত নোয়াখালীর হাতিয়ার ২০টি ঘাটের লক্ষাধিক জেলে। এসব ঘাটে প্রায় ১০ হাজার ছোট-বড় ফিশিং ট্রলার রয়েছে। প্রতি ট্রলারে ১০ জন হলেও লক্ষাধিক জেলে এই মাছ ধরার সঙ্গে জড়িত। তাঁদের সবাই গত ৫৮ দিন তীরে বেকার ছিলেন।’
পিরোজপুরের ইন্দুরকানি উপজেলার পাড়েরহাট মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের পার্শ্ববর্তী এলাকার জেলেরা গতকাল দিনভর সাগরে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন। এ ছাড়া মঠবাড়িয়া উপজেলার সাপলেজা, খেতাচিড়া, বড়মাছুয়া, ছোটমাছুয়া, ভান্ডারিয়া উপজেলার চরখালী, হেতালিয়া, কাউখালী উপজেলার সোনাকুর এলাকার জেলেরা, সদর উপজেলা এবং নেছারাবাদ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার জেলেরা প্রস্তুতি শেষে গত রাতে বঙ্গোপসাগরে রওনা হন।
কয়েক দিন ধরে কক্সবাজার উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে নৌকা, জাল মেরামতসহ বিভিন্ন প্রস্তুতি সেরেছেন জেলেরা। গতকাল মেরিন ড্রাইভের টেকনাফের খুরেরমুখ, সাবরাং ও বাহারছড়া এলাকায় দেখা গেছে, সড়কে দাঁড় করিয়ে রাখা সারি সারি ট্রলারে জাল ও রসদ তোলেন জেলেরা।
একটি ট্রলারের মাঝি আবু তাহের জানান, এবার ভারতের সঙ্গে মিল রেখে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় কেউ সাগরে মাছ শিকারে নামেনি। এতে উপকূলের কাছাকাছি সাগরে জাল ফেললেই ইলিশসহ অন্য মাছ পাওয়া যাবে বলে আশাবাদী তিনি।
কক্সবাজার শহরের ফিশারি ঘাটের মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির পরিচালক জুলফিকার আলী জানান, কক্সবাজার উপকূলে ছোট-বড় ৭ হাজারের মতো যান্ত্রিক ট্রলার রয়েছে। এসব ট্রলারে প্রায় এক লাখ জেলে ও শ্রমিক নিয়োজিত রয়েছেন। অধিকাংশ ট্রলার নিষেধাজ্ঞা ওঠার সঙ্গে সঙ্গে সাগরে রওনা হবে।
[প্রতিবেদন তৈরিতে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছেন বরগুনা ও আমতলী, পিরোজপুর, কক্সবাজার এবং হাতিয়া প্রতিনিধি]

আমরা পৃথিবীর মানুষ এখন এক অস্থির সময় পার করছি। আমরা দেখছি রাজনীতির ডামাডোল, দীর্ঘস্থায়ী যুদ্ধ এবং আরও নতুন যুদ্ধের আশঙ্কা। ঘটে চলেছে জাতিগত ও আঞ্চলিক সংঘাতের অনেক ঘটনা। রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক আধিপত্য বিস্তারের জটিল-কঠিন কূটনীতি পৃথিবীকে নতুন মেরুকরণের অনিবার্য লক্ষ্যে ধাবিত করেছে।
১৭ জুন ২০২৩
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
০৬ অক্টোবর ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
ভারতের নিষেধাজ্ঞার এক দিন পরই গত রোববার লালমনিরহাটের বুড়িমারী ও যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দরসহ বিভিন্ন বন্দরে পণ্যের ট্রাক আটকে দেয় ভারত। সংশ্লিষ্টদের সূত্রে জানা যায়, রোববার ভারতের আমদানি বিধিনিষেধের কারণে বুড়িমারী সীমান্তে প্রাণের ১৭ ট্রাক খাদ্যপণ্য আটকে যায়। এ ছাড়া বেনাপোলে ৩৬টি পোশাক বোঝাই ট্রাকসহ অন্যান্য পণ্যের শতাধিক ট্রাক ঢুকতে পারেনি।
গতকাল সোমবার পর্যন্ত বুড়িমারী থেকে প্রাণের পণ্যবোঝাই ট্রাকগুলোর অর্ধেকের বেশি ফেরত নিয়ে আসে প্রতিষ্ঠানটি। এ ছাড়া বেনাপোলে পোর্টের ভেতরে ২৪টি ট্রাক ছাড়া বাকিগুলো ফেরত চলে যায়।
বেনাপোল বন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. সাজেদুর রহমান গতকাল সোমবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, গতকাল পোর্টের ভেতর ও বাইরে শতাধিক ট্রাক দাঁড়িয়ে ছিল। আজ পোর্টের ভেতরের ২৪টি ছাড়া বাকিগুলো ফেরত নিয়ে গেছেন মালিকেরা। এখন পর্যন্ত মনে হচ্ছে, পোর্টের ভেতরের ট্রাকগুলোও ফেরত নিতে হবে।
জানতে চাইলে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পরিচালক (বিপণন) কামরুজ্জামান কামাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের হাতে ৬ মিলিয়ন ডলারের ক্রয় আদেশ রয়েছে। তার মধ্য থেকে রোববার বুড়িমারী দিয়ে ১৭ ট্রাকবোঝাই পণ্য পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু সেগুলো ঢুকতে পারেনি। ট্রাকগুলো ফেরত আনা হচ্ছে। নতুন করে কাগজপত্র তৈরি করে অন্য পথ দিয়ে পণ্য পাঠাতে হবে।’
বেনাপোল স্থলবন্দর সূত্রে জানা যায়, ওই ২৪টি ট্রাক পোর্টের ভেতরে থাকায় এখনো তারা ভারতে প্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে। তাদের আশা, যেহেতু নিষেধাজ্ঞার আগে এই পণ্যগুলোর এলসি করা হয়েছিল, তাই এগুলো প্রবেশে অনুমতি পাবে। তবে এটি নির্ভর করবে বাংলাদেশ সরকারের আলোচনার ওপর।
এমন পরিস্থিতিতে সরকারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ইতিমধ্যে অনেক রপ্তানিকারক রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সঙ্গে আলোচনা করে সরকারের সহযোগিতা চেয়েছে।
স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে আজ মঙ্গলবার আন্তমন্ত্রণালয়ের সভা ডেকেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে বিকেল ৪টায় আন্তমন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এই সভা অনুষ্ঠিত হবে।
সভায় নৌপরিবহন ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো, জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের প্রতিনিধিদের উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া ব্যবসায়ী প্রতিনিধি হিসেবে এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ, ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রতিনিধিদের উপস্থিতির জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
ভারতের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গত শনিবার হঠাৎ এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি নিষিদ্ধ করে। শুধু ভারতের নবসেবা ও কলকাতা সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করে দেশটির আমদানিকারকেরা বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি করতে পারবেন বলে ওই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। এ ছাড়া বাংলাদেশ থেকে ভারতের আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা ও মিজোরাম, পশ্চিমবঙ্গের চ্যাংড়াবান্দা ও ফুলবাড়ী শুল্ক স্টেশন দিয়ে ফল, ফলের স্বাদযুক্ত পানীয়, কোমল পানীয়, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, প্লাস্টিক পণ্য, সুতা, সুতার উপজাত, আসবাব রপ্তানিও নিষিদ্ধ করা হয় ওই বিজ্ঞপ্তিতে।
আমদানি ও রপ্তানিসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা জানান, দেশের ২৪টি বন্দরের মধ্যে ১৬টি বন্দর দিয়ে ভারতের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়ে থাকে। তবে যোগাযোগব্যবস্থা সহজ হওয়ায় বেনাপোল ও ভারতের পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে সবচেয়ে বেশি আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়। এর পরিমাণ ৮০ শতাংশ। বেনাপোল বন্দর দিয়ে প্রতিদিন ভারতে ২৫০ থেকে ৩০০ ট্রাকে বিভিন্ন ধরনের পণ্য রপ্তানি হয়। এর মধ্যে শতাধিক ট্রাক পণ্য থাকে তৈরি পোশাক।
এর আগে গত ৮ এপ্রিল বাংলাদেশের জন্য ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করে ভারত। ফলে ভারতের বিমানবন্দর ব্যবহার করে তৃতীয় কোনো দেশে তৈরি পোশাক রপ্তানি করতে পারছে না বাংলাদেশ। অন্যদিকে প্রায় এক মাস আগে ভারত থেকে বেনাপোল, ভোমরা, সোনামসজিদ, বাংলাবান্ধা, বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানির সুযোগ বন্ধ করে দেয় বাংলাদেশের জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমানের মতে, এই পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপে তুলনামূলকভাবে বেশি নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বাংলাদেশের ওপর। তাই ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর চেষ্টা অব্যাহত রাখাই সরকারের উচিত বলে মনে করছেন তিনি।
মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আলোচনার মাধ্যমে বাংলাদেশ এবং ভারতের বিরোধপূর্ণ বিষয়সমূহ মিটিয়ে ফেলতে হবে এবং দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এটাই হবে উভয় দেশের জন্য কল্যাণকর।

ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
ভারতের নিষেধাজ্ঞার এক দিন পরই গত রোববার লালমনিরহাটের বুড়িমারী ও যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দরসহ বিভিন্ন বন্দরে পণ্যের ট্রাক আটকে দেয় ভারত। সংশ্লিষ্টদের সূত্রে জানা যায়, রোববার ভারতের আমদানি বিধিনিষেধের কারণে বুড়িমারী সীমান্তে প্রাণের ১৭ ট্রাক খাদ্যপণ্য আটকে যায়। এ ছাড়া বেনাপোলে ৩৬টি পোশাক বোঝাই ট্রাকসহ অন্যান্য পণ্যের শতাধিক ট্রাক ঢুকতে পারেনি।
গতকাল সোমবার পর্যন্ত বুড়িমারী থেকে প্রাণের পণ্যবোঝাই ট্রাকগুলোর অর্ধেকের বেশি ফেরত নিয়ে আসে প্রতিষ্ঠানটি। এ ছাড়া বেনাপোলে পোর্টের ভেতরে ২৪টি ট্রাক ছাড়া বাকিগুলো ফেরত চলে যায়।
বেনাপোল বন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. সাজেদুর রহমান গতকাল সোমবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, গতকাল পোর্টের ভেতর ও বাইরে শতাধিক ট্রাক দাঁড়িয়ে ছিল। আজ পোর্টের ভেতরের ২৪টি ছাড়া বাকিগুলো ফেরত নিয়ে গেছেন মালিকেরা। এখন পর্যন্ত মনে হচ্ছে, পোর্টের ভেতরের ট্রাকগুলোও ফেরত নিতে হবে।
জানতে চাইলে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পরিচালক (বিপণন) কামরুজ্জামান কামাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের হাতে ৬ মিলিয়ন ডলারের ক্রয় আদেশ রয়েছে। তার মধ্য থেকে রোববার বুড়িমারী দিয়ে ১৭ ট্রাকবোঝাই পণ্য পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু সেগুলো ঢুকতে পারেনি। ট্রাকগুলো ফেরত আনা হচ্ছে। নতুন করে কাগজপত্র তৈরি করে অন্য পথ দিয়ে পণ্য পাঠাতে হবে।’
বেনাপোল স্থলবন্দর সূত্রে জানা যায়, ওই ২৪টি ট্রাক পোর্টের ভেতরে থাকায় এখনো তারা ভারতে প্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে। তাদের আশা, যেহেতু নিষেধাজ্ঞার আগে এই পণ্যগুলোর এলসি করা হয়েছিল, তাই এগুলো প্রবেশে অনুমতি পাবে। তবে এটি নির্ভর করবে বাংলাদেশ সরকারের আলোচনার ওপর।
এমন পরিস্থিতিতে সরকারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ইতিমধ্যে অনেক রপ্তানিকারক রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সঙ্গে আলোচনা করে সরকারের সহযোগিতা চেয়েছে।
স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে আজ মঙ্গলবার আন্তমন্ত্রণালয়ের সভা ডেকেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে বিকেল ৪টায় আন্তমন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এই সভা অনুষ্ঠিত হবে।
সভায় নৌপরিবহন ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো, জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের প্রতিনিধিদের উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া ব্যবসায়ী প্রতিনিধি হিসেবে এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ, ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রতিনিধিদের উপস্থিতির জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
ভারতের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গত শনিবার হঠাৎ এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি নিষিদ্ধ করে। শুধু ভারতের নবসেবা ও কলকাতা সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করে দেশটির আমদানিকারকেরা বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি করতে পারবেন বলে ওই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। এ ছাড়া বাংলাদেশ থেকে ভারতের আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা ও মিজোরাম, পশ্চিমবঙ্গের চ্যাংড়াবান্দা ও ফুলবাড়ী শুল্ক স্টেশন দিয়ে ফল, ফলের স্বাদযুক্ত পানীয়, কোমল পানীয়, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, প্লাস্টিক পণ্য, সুতা, সুতার উপজাত, আসবাব রপ্তানিও নিষিদ্ধ করা হয় ওই বিজ্ঞপ্তিতে।
আমদানি ও রপ্তানিসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা জানান, দেশের ২৪টি বন্দরের মধ্যে ১৬টি বন্দর দিয়ে ভারতের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়ে থাকে। তবে যোগাযোগব্যবস্থা সহজ হওয়ায় বেনাপোল ও ভারতের পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে সবচেয়ে বেশি আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়। এর পরিমাণ ৮০ শতাংশ। বেনাপোল বন্দর দিয়ে প্রতিদিন ভারতে ২৫০ থেকে ৩০০ ট্রাকে বিভিন্ন ধরনের পণ্য রপ্তানি হয়। এর মধ্যে শতাধিক ট্রাক পণ্য থাকে তৈরি পোশাক।
এর আগে গত ৮ এপ্রিল বাংলাদেশের জন্য ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করে ভারত। ফলে ভারতের বিমানবন্দর ব্যবহার করে তৃতীয় কোনো দেশে তৈরি পোশাক রপ্তানি করতে পারছে না বাংলাদেশ। অন্যদিকে প্রায় এক মাস আগে ভারত থেকে বেনাপোল, ভোমরা, সোনামসজিদ, বাংলাবান্ধা, বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানির সুযোগ বন্ধ করে দেয় বাংলাদেশের জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমানের মতে, এই পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপে তুলনামূলকভাবে বেশি নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বাংলাদেশের ওপর। তাই ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর চেষ্টা অব্যাহত রাখাই সরকারের উচিত বলে মনে করছেন তিনি।
মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আলোচনার মাধ্যমে বাংলাদেশ এবং ভারতের বিরোধপূর্ণ বিষয়সমূহ মিটিয়ে ফেলতে হবে এবং দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এটাই হবে উভয় দেশের জন্য কল্যাণকর।

আমরা পৃথিবীর মানুষ এখন এক অস্থির সময় পার করছি। আমরা দেখছি রাজনীতির ডামাডোল, দীর্ঘস্থায়ী যুদ্ধ এবং আরও নতুন যুদ্ধের আশঙ্কা। ঘটে চলেছে জাতিগত ও আঞ্চলিক সংঘাতের অনেক ঘটনা। রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক আধিপত্য বিস্তারের জটিল-কঠিন কূটনীতি পৃথিবীকে নতুন মেরুকরণের অনিবার্য লক্ষ্যে ধাবিত করেছে।
১৭ জুন ২০২৩
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
০৬ অক্টোবর ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
১৮৯৮ সালে ভারতের উত্তর প্রদেশের একটি ধূলিধূসর টিলা খুঁড়ে পাওয়া মূল্যবান এই রত্নগুলো এক শতাব্দীর বেশি সময় ধরে একটি বেসরকারি ব্রিটিশ সংগ্রহাগারে প্রায় দৃষ্টিচক্ষুর আড়ালে ছিল। এখন যেহেতু রত্নগুলোর হাতবদলের সময় এসেছে, তাই নতুন সংগ্রাহকেরা আগ্রহ নিয়ে এগুলো সংগ্রহের জন্য অপেক্ষা করছেন। কিন্তু এখানে একটা অস্বস্তিও তৈরি হয়েছে।
গৌতম বুদ্ধের জন্মস্থান লুম্বিনীর কাছাকাছি, বর্তমানে ভারতের উত্তর প্রদেশে একটি ইটের ঘরের ভেতর থেকে প্রায় ১ হাজার ৮০০টি মুক্তা, রুবি, টোপাজ, নীলা ও নকশা করা সোনার পাত সংগ্রহ করা হয়েছিল। তবে এই রত্নগুলোর সঙ্গে সঙ্গে একটি খোদাই করা পাত্রে হাড়ের টুকরাও পাওয়া যায়, যেগুলোকে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষ বলে শনাক্ত করা হয়। এই আবিষ্কার তখন প্রত্নতত্ত্বের জগতে ব্যাপক আলোড়ন তোলে।
সাদাবি’স এশিয়ার চেয়ারম্যান নিকোলাস চাউ মনে করেন, স্মরণকালের বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর মাঝে এই রত্নসম্ভার অন্যতম। তবে এগুলো নিলামে তোলার কারণে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। আর তা হচ্ছে—ভারতের ইতিহাসের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িয়ে থাকা এবং বৌদ্ধদের কাছে পবিত্র এই সম্পদ বিক্রি করা কি নৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য?
১৮৯৮ সালে ব্রিটিশ এস্টেট ম্যানেজার উইলিয়াম ক্ল্যাক্সটন পেপ্পে লুম্বিনির ঠিক দক্ষিণে পিপ্রাওয়ায় অবস্থিত একটি ঢিবি খনন করেন। সেখান থেকেই প্রায় ২ হাজার বছর আগের ওই নির্দশনগুলো খুঁজে পাওয়া যায়।
ইতিহাসবিদদের মতে, প্রাপ্ত রত্নসম্ভার ও দেহাবশেষ, যা তখনো পর্যন্ত অক্ষত ছিল, সেগুলো গৌতম বুদ্ধের শাক্য বংশের এবং বিশ্বব্যাপী বৌদ্ধদের ঐতিহ্য। হাড়ের নিদর্শনগুলো থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা ও মিয়ানমারের মতো দেশগুলোতে বিতরণ করা হয়েছে। এসব দেশে এখনো সেগুলোর পূজা করা হয়।

আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
১৮৯৮ সালে ভারতের উত্তর প্রদেশের একটি ধূলিধূসর টিলা খুঁড়ে পাওয়া মূল্যবান এই রত্নগুলো এক শতাব্দীর বেশি সময় ধরে একটি বেসরকারি ব্রিটিশ সংগ্রহাগারে প্রায় দৃষ্টিচক্ষুর আড়ালে ছিল। এখন যেহেতু রত্নগুলোর হাতবদলের সময় এসেছে, তাই নতুন সংগ্রাহকেরা আগ্রহ নিয়ে এগুলো সংগ্রহের জন্য অপেক্ষা করছেন। কিন্তু এখানে একটা অস্বস্তিও তৈরি হয়েছে।
গৌতম বুদ্ধের জন্মস্থান লুম্বিনীর কাছাকাছি, বর্তমানে ভারতের উত্তর প্রদেশে একটি ইটের ঘরের ভেতর থেকে প্রায় ১ হাজার ৮০০টি মুক্তা, রুবি, টোপাজ, নীলা ও নকশা করা সোনার পাত সংগ্রহ করা হয়েছিল। তবে এই রত্নগুলোর সঙ্গে সঙ্গে একটি খোদাই করা পাত্রে হাড়ের টুকরাও পাওয়া যায়, যেগুলোকে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষ বলে শনাক্ত করা হয়। এই আবিষ্কার তখন প্রত্নতত্ত্বের জগতে ব্যাপক আলোড়ন তোলে।
সাদাবি’স এশিয়ার চেয়ারম্যান নিকোলাস চাউ মনে করেন, স্মরণকালের বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর মাঝে এই রত্নসম্ভার অন্যতম। তবে এগুলো নিলামে তোলার কারণে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। আর তা হচ্ছে—ভারতের ইতিহাসের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িয়ে থাকা এবং বৌদ্ধদের কাছে পবিত্র এই সম্পদ বিক্রি করা কি নৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য?
১৮৯৮ সালে ব্রিটিশ এস্টেট ম্যানেজার উইলিয়াম ক্ল্যাক্সটন পেপ্পে লুম্বিনির ঠিক দক্ষিণে পিপ্রাওয়ায় অবস্থিত একটি ঢিবি খনন করেন। সেখান থেকেই প্রায় ২ হাজার বছর আগের ওই নির্দশনগুলো খুঁজে পাওয়া যায়।
ইতিহাসবিদদের মতে, প্রাপ্ত রত্নসম্ভার ও দেহাবশেষ, যা তখনো পর্যন্ত অক্ষত ছিল, সেগুলো গৌতম বুদ্ধের শাক্য বংশের এবং বিশ্বব্যাপী বৌদ্ধদের ঐতিহ্য। হাড়ের নিদর্শনগুলো থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা ও মিয়ানমারের মতো দেশগুলোতে বিতরণ করা হয়েছে। এসব দেশে এখনো সেগুলোর পূজা করা হয়।

আমরা পৃথিবীর মানুষ এখন এক অস্থির সময় পার করছি। আমরা দেখছি রাজনীতির ডামাডোল, দীর্ঘস্থায়ী যুদ্ধ এবং আরও নতুন যুদ্ধের আশঙ্কা। ঘটে চলেছে জাতিগত ও আঞ্চলিক সংঘাতের অনেক ঘটনা। রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক আধিপত্য বিস্তারের জটিল-কঠিন কূটনীতি পৃথিবীকে নতুন মেরুকরণের অনিবার্য লক্ষ্যে ধাবিত করেছে।
১৭ জুন ২০২৩
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
০৬ অক্টোবর ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫