মামুনুর রশীদ

মঙ্গলবার রাতে শুধু নয়, বেশ কয়েক রাত ধরে প্রচণ্ড গরমে সাতমসজিদ রোডের বৃক্ষ নিধনযজ্ঞের বিরুদ্ধে বিশালসংখ্যক তরুণ-তরুণী দাঁড়িয়ে প্রতিবাদ জানাচ্ছেন। প্রতিবাদের ভাষা মার্জিত, জনসাধারণের কোনো অসুবিধা সৃষ্টি না করে বেশ কয়েক দিন ধরে তাঁরা কথা বলেই যাচ্ছেন। মানুষের সমর্থন দিনে দিনে বাড়ছে।
ছেলেগুলোকে দেখে আমি স্মৃতিতাড়িত হই এবং ফিরে যাই আমার কৈশোরে। কৈশোরে আমি ছিলাম এক গণ্ডগ্রামে, যেখানে বিদ্যুৎ ছিল না এবং বিদ্যুৎ আসার আপাতত কোনো সম্ভাবনাও ছিল না। রাতে হারিকেন এবং প্রচণ্ড গরমে হাতপাখাই একমাত্র উপায়। কিন্তু এ রকম তাপ কখনো সহ্য করতে হতো না। স্কুলে যেতাম কোনো আমগাছের নিচে দিয়ে, সারি সারি সুপারিগাছের পাশ দিয়ে, তারপর লিচুবাগান এবং সবশেষে স্কুলের পাশে খালটা পেরিয়েই বিশাল বিশাল বৃক্ষ।স্কুলের সামনে নদী। চারদিকে টিনের ঘর, পাতার বেড়া এবং টিনের ঘরের ওপরেই এক সারি আমগাছ।
তারপর ঢাকা শহরে এসেছিলাম। শহরটাও যেন একটা বড় গ্রাম। রমনার একদিকে বিশাল পার্ক, নানা রঙের ফুল, ফলদ গাছ এবং নানা ধরনের বৃক্ষরাজি, মাঝখানে একটা পুকুর, সেখানে পদ্মফুল। অন্য প্রান্তে রেসকোর্সের ময়দান, সেটাও বিশাল। ঘোড়দৌড় তখনো ছিল। বিশ্ববিদ্যালয় এলাকাজুড়ে গাছ আর গাছ, কৃষ্ণচূড়া, পলাশ ফুটে থাকত। এই এলাকাটা তখন নতুন শহর। পুরান ঢাকা বুড়িগঙ্গার পাড়ে দোকানপাট, ব্যবসা-বাণিজ্যকেন্দ্র—এসব থাকার পরেও কিছু বৃক্ষ ছায়া দিত। পথচারীরা বৃক্ষের নিচে দাঁড়িয়ে প্রচণ্ড গরমে একটুখানি নিশ্বাস নিতে পারত। তখনকার ঢাকায় ছিল নির্মল বাতাস। শহরে শীত নামত অক্টোবর মাসে, ফেব্রুয়ারি পার হয়ে গেলেও শীতটা যাই যাই করত। বর্ষায় প্রবল বৃষ্টিতে ভেসে যেত শহর। শহরের পানি গিয়ে নামত ধোলাইখালে। অসংখ্য নৌকার চলাচল সেখানে।
সেই সময়ে আমাদের গ্রামের বাড়ির সামনে মধুপুরের পাহাড়। শাল-গজারির বন পেরিয়ে গভীর অরণ্যে পৌঁছালে বাঘ, বন্য শূকরের ভয়। আর এই অরণ্যরাজিকে পাহারা দিত বন-পাহাড়ের রক্ষক ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর মানুষ, যারা মান্দি হিসেবে পরিচিত। বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার কিছুদিন পরেই ধীরে ধীরে বন উজাড় হতে শুরু করল। মান্দিরা পাহাড় ছেড়ে কোথাও সমতলে চলে যায় অথবা দেশত্যাগী হয় কিংবা জীবিকার সন্ধানে নানা দিকে ছড়িয়ে পড়ে।
অরক্ষিত পাহাড় বন বিভাগের হাতে, তার সঙ্গে আছে রাজনৈতিক প্রভাব। ভুয়া মালিকানা তৈরি করে সমগ্র অরণ্যভূমি ধ্বংস হতে শুরু করল। সেই সঙ্গে পাহাড় কেটে সমতল করার প্রক্রিয়া শুরু হয়। এদিকে ঢাকায়ও গাছ কাটা শুরু হয়। হাইকোর্টের উল্টো দিকে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সামনে শতবর্ষী গাছগুলো কেটে ফেলা হয়। গাছ না থাকলে কী হয়—এ রকম একটা ভাবনা এ দেশের কিছু মানুষের আছে বলেই গাছ নিধনযজ্ঞে তারা একেকজন বড় বড় সেনাপতি।
এবার যে গ্রীষ্মের দাবদাহ, তা গত ৩৪ বছরে দেখা যায়নি। দাবদাহ থেকে রক্ষাকারী গাছগুলো নেই। গাছের পাশ দিয়ে গেলেও যে চমৎকার একটা ঠান্ডা অনুভব আসে, তা-ও হারিয়ে গেছে। পার্বত্য চট্টগ্রাম ও চট্টগ্রাম শহরেও বৃক্ষনিধন চলছে সমানতালে। সাতমসজিদ রোডে তরুণ-তরুণীরা কিছু গাছকে বাঁচানোর আশায় দিন-রাত ক্লান্তিহীন সংগ্রাম করে চলেছেন। আমিও তাঁদের সঙ্গে শরিক হয়েছি এবং প্রেস কনফারেন্স, মানববন্ধনে যোগ দিয়েছি। কিন্তু এখন পর্যন্ত সিটি করপোরেশনের কাছ থেকে কোনো রকম সাড়া পাওয়া যায়নি।
সিটি করপোরেশনের মেয়র আছেন, অনেক কাউন্সিলর আছেন, ঢাকা শহরের কেন্দ্রস্থলে বিশাল অট্টালিকায় হাজার হাজার পৌরকর্মী আছেন। তাঁদের একজনও এসে ব্যাখ্যা করলেন না যে, কী কারণে সাতমসজিদে ৬০০ গাছ কেটে ফেলতে হলো। অথচ ২৭ নম্বর রোডে এবং সীমান্ত স্কয়ার (পূর্বের রাইফেল স্কয়ার) মোড়ে ডিভাইডার ও গাছগুলো এখনো অক্ষত আছে। এর আগেও অনেক জায়গায় বৃক্ষনিধনের পরিকল্পনা হয়েছে। আমরা কোথাও গিয়ে দাঁড়িয়েছি। সরকার কখনো কখনো বিবেচনায় নিয়েছে এবং গাছ কাটা বন্ধ করে দিয়েছে।
এবার কী হলো, বোঝা গেল না। পত্রপত্রিকায় এত লেখালেখি, ইলেকট্রনিক মিডিয়ায় সচিত্র প্রতিবেদন—এ সবই মূল্যহীন হয়ে পড়েছে। প্রতিবাদ গায়ে মাখছে না কর্তৃপক্ষ। এই গাছ কাটাতে কার লাভ হলো? হিসাব করলে দেখা যাবে, লাভ ঠিকাদারের এবং যাঁরা কাজটি করাচ্ছেন তাঁদের। ৯ কোটি টাকা ব্যয়ে শংকর থেকে সীমান্ত স্কয়ার পর্যন্ত ডিভাইডার নির্মাণ করা হচ্ছে! এত টাকাই বা কেন লাগবে? পৌর করপোরেশন বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কাজ করবে এবং করপোরেশনের জনপ্রতিনিধিরা এলাকার মানুষের সঙ্গে সম্পর্ক স্থাপন করে আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে এলাকার উন্নয়ন সাধন করবেন। কোনো একটি নির্মাণকাজের জন্য আজ পর্যন্ত নাগরিকদের কাছ থেকে কোনো গণশুনানির আয়োজনের ব্যবস্থা করা হয়নি। এমনিতেই অনেকে শহরটাকে ভালোবাসে না। যারা ভালোবাসে, তারা সেই ভালোবাসার মূল্য পায় না। সবাই শহরটিকে শুধু জীবিকার উৎস মনে করে। এ যেন শুধুই টাকা উপার্জনের একটা স্থান।
নাগরিকদের নিশ্বাস-প্রশ্বাসের কতটুকু ফাঁকা থাকা দরকার, কতটুকু জলাশয় দরকার, নগরীর ফুসফুস বলে পরিচিত কতগুলো পার্ক দরকার—এসবের হিসাব পৌর করপোরেশনের কাছে থাকা উচিত। নাগরিকদের সুযোগ-সুবিধা দেখার জন্য পৃথিবীতে অসংখ্য পৌরসভা আছে। একেকটা শহর তার নিজস্ব বৈশিষ্ট্য নিয়ে বেড়ে উঠেছে, শহরবাসী শহরটাকে ভালোবেসে আর পৌরসভার যাঁরা নির্বাচিত ও অনির্বাচিত, তাঁরা নগরীর শোভাবর্ধনে নাগরিকদের অবদানকে স্বীকার করে আরও সম্প্রসারণের কাজে হাত দিয়েছেন।
ঢাকা এখন পৃথিবীর অন্যতম বড় শহর, অন্তত জনসংখ্যার দিক থেকে। কিন্তু এখানে নগর-পরিকল্পনাবিদদের কোনো ভূমিকা নেই। মেঠো পথ যেমন একেবারেই অপরিকল্পিতভাবে গড়ে ওঠে, বড় হয়, ছোট হয়; এখানেও তা-ই হয়েছে। ইউরোপের দেশগুলো প্রতিদিন নিত্যনতুন রূপে প্রকাশ পাচ্ছে। এই আধুনিককালে শহর মানেই সবুজে আচ্ছাদিত একটা জনপদ। শহরে ট্রাম, বাস, ট্রেন, গাড়ি সবই আছে, কিন্তু চারদিকে সবুজ থাকা চাই। বিষাক্ত বায়ু শুষে নিয়ে নির্মল অক্সিজেন ফেরত দিচ্ছে সবুজ।
মানুষের সুযোগ-সুবিধা যে একেবারেই দেখা হয় না, তার প্রমাণ শংকর থেকে সীমান্ত স্কয়ার পর্যন্ত নির্মিত ডিভাইডার। মাঝে কোথাও গাড়ি পার হওয়ার ব্যবস্থা নেই। একেবারে দুনিয়া ঘুরেই এক জায়গা থেকে আরেক জায়গায় আসতে হয়। রাস্তার দুই পাশে বাচ্চাদের স্কুল আছে, তারা কীভাবে পারাপার হবে, সেটাও কর্তৃপক্ষ ভুলে যায়। সবচেয়ে শ্বাসরুদ্ধকর অবস্থা হচ্ছে, শহরের বিভিন্ন অলিগলি, সর্বত্রই জনসংখ্যার চাপ। রিকশা, গাড়ি এবং নানান ধরনের যানবাহনের কারণে গলিপথটি সব সময়ই ঠাসা থাকে। গলি সম্প্রসারণ করা সম্ভব হচ্ছে না। এসব জায়গায় গাছ লাগানোর উপায়টা কী? পৌর করপোরেশন যদি এলাকায় গিয়ে নাগরিকদের নিয়ে বসে, বিভিন্ন কাজে নাগরিকদের সংযুক্ত করে, নাগরিকেরা ইচ্ছা করে তার সঙ্গে যুক্ত হয়।
কিন্তু এটি একটি স্বপ্ন। কোনো দিন এলাকার কাউন্সিলররা আসতে পারেন না, জনে জনে গিয়ে তাঁদের পরামর্শ নেওয়ার প্রয়োজন বোধ করেন না। এদের কাছে জনগণ হচ্ছে একটা ভোটের যন্ত্র। নির্বাচনের সময় বাড়ি বাড়ি যাবেন, নানান ধরনের প্রতিশ্রুতি দেবেন, কিন্তু নির্বাচিত হয়েই হাওয়া। এই হাওয়াবাজি অবশ্য সাংসদ, মন্ত্রীরাও করে থাকেন। অধিকাংশ সময়ে শহরে থাকেন, গ্রামে গিয়ে কিছু তয়-তদবিরের কাজ করে আবার ফিরে আসেন। এলাকাটিকে প্রাকৃতিক করার চেষ্টা করেন না; বরং ঢাকায় তদবির, ব্যবসা—এসব করতে ছুটে বেড়ান।
যে বিষয়টি প্রবলভাবে আমাদের জীবনে অবহেলিত দেখেছি, তা হলো সংস্কৃতিচর্চা। এলাকায় একসময় পাঠাগার থাকত, চিত্তবিনোদনের ব্যবস্থা থাকত। পৌরসভার কমিউনিটি সেন্টারে নাটক, গানের আসর বসত—ঈদে, পয়লা বৈশাখে, ষোলোই ডিসেম্বরে, ছাব্বিশে মার্চে। বিশেষ করে একুশে ফেব্রুয়ারিতে নানা ধরনের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন হতো। এখন তা কোথাও কোথাও ইভেন্ট ব্যবস্থাপনায় হয়ে থাকে। একদা বটতলাই ছিল শিল্প-সাহিত্যের প্রাণকেন্দ্র।কলকাতায় ঊনবিংশ শতাব্দীতে বটতলা সাহিত্যের ক্ষেত্রে একটা বড় অবদান রেখেছিল। সেই বটবৃক্ষ আজ কোথায়?
গভীর দুঃখ হয়, যখন দিগন্তব্যাপী বিল্ডিং আকাশকে রুদ্ধ করে দেয়, আমরা সবাই ম্যাচ বাক্সের মধ্যে বসবাস করি, সবুজ দেখতে পাই না। শিশিরভেজা ঘাস দেখতে পাই না, তার জন্য রাষ্ট্র কী আয়োজন রেখেছে? তরুণ-তরুণীরা দিনে প্রখর সূর্যের দাবদাহে এবং রাতে বিনিদ্র রজনী পার করছে এই আশায় যে পৌর করপোরেশনের শুভবুদ্ধির উদয় হোক। হায়! সেই শুভবুদ্ধি কোথায়? কত দূরে?
লেখক: নাট্যব্যক্তিত্ব

মঙ্গলবার রাতে শুধু নয়, বেশ কয়েক রাত ধরে প্রচণ্ড গরমে সাতমসজিদ রোডের বৃক্ষ নিধনযজ্ঞের বিরুদ্ধে বিশালসংখ্যক তরুণ-তরুণী দাঁড়িয়ে প্রতিবাদ জানাচ্ছেন। প্রতিবাদের ভাষা মার্জিত, জনসাধারণের কোনো অসুবিধা সৃষ্টি না করে বেশ কয়েক দিন ধরে তাঁরা কথা বলেই যাচ্ছেন। মানুষের সমর্থন দিনে দিনে বাড়ছে।
ছেলেগুলোকে দেখে আমি স্মৃতিতাড়িত হই এবং ফিরে যাই আমার কৈশোরে। কৈশোরে আমি ছিলাম এক গণ্ডগ্রামে, যেখানে বিদ্যুৎ ছিল না এবং বিদ্যুৎ আসার আপাতত কোনো সম্ভাবনাও ছিল না। রাতে হারিকেন এবং প্রচণ্ড গরমে হাতপাখাই একমাত্র উপায়। কিন্তু এ রকম তাপ কখনো সহ্য করতে হতো না। স্কুলে যেতাম কোনো আমগাছের নিচে দিয়ে, সারি সারি সুপারিগাছের পাশ দিয়ে, তারপর লিচুবাগান এবং সবশেষে স্কুলের পাশে খালটা পেরিয়েই বিশাল বিশাল বৃক্ষ।স্কুলের সামনে নদী। চারদিকে টিনের ঘর, পাতার বেড়া এবং টিনের ঘরের ওপরেই এক সারি আমগাছ।
তারপর ঢাকা শহরে এসেছিলাম। শহরটাও যেন একটা বড় গ্রাম। রমনার একদিকে বিশাল পার্ক, নানা রঙের ফুল, ফলদ গাছ এবং নানা ধরনের বৃক্ষরাজি, মাঝখানে একটা পুকুর, সেখানে পদ্মফুল। অন্য প্রান্তে রেসকোর্সের ময়দান, সেটাও বিশাল। ঘোড়দৌড় তখনো ছিল। বিশ্ববিদ্যালয় এলাকাজুড়ে গাছ আর গাছ, কৃষ্ণচূড়া, পলাশ ফুটে থাকত। এই এলাকাটা তখন নতুন শহর। পুরান ঢাকা বুড়িগঙ্গার পাড়ে দোকানপাট, ব্যবসা-বাণিজ্যকেন্দ্র—এসব থাকার পরেও কিছু বৃক্ষ ছায়া দিত। পথচারীরা বৃক্ষের নিচে দাঁড়িয়ে প্রচণ্ড গরমে একটুখানি নিশ্বাস নিতে পারত। তখনকার ঢাকায় ছিল নির্মল বাতাস। শহরে শীত নামত অক্টোবর মাসে, ফেব্রুয়ারি পার হয়ে গেলেও শীতটা যাই যাই করত। বর্ষায় প্রবল বৃষ্টিতে ভেসে যেত শহর। শহরের পানি গিয়ে নামত ধোলাইখালে। অসংখ্য নৌকার চলাচল সেখানে।
সেই সময়ে আমাদের গ্রামের বাড়ির সামনে মধুপুরের পাহাড়। শাল-গজারির বন পেরিয়ে গভীর অরণ্যে পৌঁছালে বাঘ, বন্য শূকরের ভয়। আর এই অরণ্যরাজিকে পাহারা দিত বন-পাহাড়ের রক্ষক ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর মানুষ, যারা মান্দি হিসেবে পরিচিত। বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার কিছুদিন পরেই ধীরে ধীরে বন উজাড় হতে শুরু করল। মান্দিরা পাহাড় ছেড়ে কোথাও সমতলে চলে যায় অথবা দেশত্যাগী হয় কিংবা জীবিকার সন্ধানে নানা দিকে ছড়িয়ে পড়ে।
অরক্ষিত পাহাড় বন বিভাগের হাতে, তার সঙ্গে আছে রাজনৈতিক প্রভাব। ভুয়া মালিকানা তৈরি করে সমগ্র অরণ্যভূমি ধ্বংস হতে শুরু করল। সেই সঙ্গে পাহাড় কেটে সমতল করার প্রক্রিয়া শুরু হয়। এদিকে ঢাকায়ও গাছ কাটা শুরু হয়। হাইকোর্টের উল্টো দিকে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সামনে শতবর্ষী গাছগুলো কেটে ফেলা হয়। গাছ না থাকলে কী হয়—এ রকম একটা ভাবনা এ দেশের কিছু মানুষের আছে বলেই গাছ নিধনযজ্ঞে তারা একেকজন বড় বড় সেনাপতি।
এবার যে গ্রীষ্মের দাবদাহ, তা গত ৩৪ বছরে দেখা যায়নি। দাবদাহ থেকে রক্ষাকারী গাছগুলো নেই। গাছের পাশ দিয়ে গেলেও যে চমৎকার একটা ঠান্ডা অনুভব আসে, তা-ও হারিয়ে গেছে। পার্বত্য চট্টগ্রাম ও চট্টগ্রাম শহরেও বৃক্ষনিধন চলছে সমানতালে। সাতমসজিদ রোডে তরুণ-তরুণীরা কিছু গাছকে বাঁচানোর আশায় দিন-রাত ক্লান্তিহীন সংগ্রাম করে চলেছেন। আমিও তাঁদের সঙ্গে শরিক হয়েছি এবং প্রেস কনফারেন্স, মানববন্ধনে যোগ দিয়েছি। কিন্তু এখন পর্যন্ত সিটি করপোরেশনের কাছ থেকে কোনো রকম সাড়া পাওয়া যায়নি।
সিটি করপোরেশনের মেয়র আছেন, অনেক কাউন্সিলর আছেন, ঢাকা শহরের কেন্দ্রস্থলে বিশাল অট্টালিকায় হাজার হাজার পৌরকর্মী আছেন। তাঁদের একজনও এসে ব্যাখ্যা করলেন না যে, কী কারণে সাতমসজিদে ৬০০ গাছ কেটে ফেলতে হলো। অথচ ২৭ নম্বর রোডে এবং সীমান্ত স্কয়ার (পূর্বের রাইফেল স্কয়ার) মোড়ে ডিভাইডার ও গাছগুলো এখনো অক্ষত আছে। এর আগেও অনেক জায়গায় বৃক্ষনিধনের পরিকল্পনা হয়েছে। আমরা কোথাও গিয়ে দাঁড়িয়েছি। সরকার কখনো কখনো বিবেচনায় নিয়েছে এবং গাছ কাটা বন্ধ করে দিয়েছে।
এবার কী হলো, বোঝা গেল না। পত্রপত্রিকায় এত লেখালেখি, ইলেকট্রনিক মিডিয়ায় সচিত্র প্রতিবেদন—এ সবই মূল্যহীন হয়ে পড়েছে। প্রতিবাদ গায়ে মাখছে না কর্তৃপক্ষ। এই গাছ কাটাতে কার লাভ হলো? হিসাব করলে দেখা যাবে, লাভ ঠিকাদারের এবং যাঁরা কাজটি করাচ্ছেন তাঁদের। ৯ কোটি টাকা ব্যয়ে শংকর থেকে সীমান্ত স্কয়ার পর্যন্ত ডিভাইডার নির্মাণ করা হচ্ছে! এত টাকাই বা কেন লাগবে? পৌর করপোরেশন বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কাজ করবে এবং করপোরেশনের জনপ্রতিনিধিরা এলাকার মানুষের সঙ্গে সম্পর্ক স্থাপন করে আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে এলাকার উন্নয়ন সাধন করবেন। কোনো একটি নির্মাণকাজের জন্য আজ পর্যন্ত নাগরিকদের কাছ থেকে কোনো গণশুনানির আয়োজনের ব্যবস্থা করা হয়নি। এমনিতেই অনেকে শহরটাকে ভালোবাসে না। যারা ভালোবাসে, তারা সেই ভালোবাসার মূল্য পায় না। সবাই শহরটিকে শুধু জীবিকার উৎস মনে করে। এ যেন শুধুই টাকা উপার্জনের একটা স্থান।
নাগরিকদের নিশ্বাস-প্রশ্বাসের কতটুকু ফাঁকা থাকা দরকার, কতটুকু জলাশয় দরকার, নগরীর ফুসফুস বলে পরিচিত কতগুলো পার্ক দরকার—এসবের হিসাব পৌর করপোরেশনের কাছে থাকা উচিত। নাগরিকদের সুযোগ-সুবিধা দেখার জন্য পৃথিবীতে অসংখ্য পৌরসভা আছে। একেকটা শহর তার নিজস্ব বৈশিষ্ট্য নিয়ে বেড়ে উঠেছে, শহরবাসী শহরটাকে ভালোবেসে আর পৌরসভার যাঁরা নির্বাচিত ও অনির্বাচিত, তাঁরা নগরীর শোভাবর্ধনে নাগরিকদের অবদানকে স্বীকার করে আরও সম্প্রসারণের কাজে হাত দিয়েছেন।
ঢাকা এখন পৃথিবীর অন্যতম বড় শহর, অন্তত জনসংখ্যার দিক থেকে। কিন্তু এখানে নগর-পরিকল্পনাবিদদের কোনো ভূমিকা নেই। মেঠো পথ যেমন একেবারেই অপরিকল্পিতভাবে গড়ে ওঠে, বড় হয়, ছোট হয়; এখানেও তা-ই হয়েছে। ইউরোপের দেশগুলো প্রতিদিন নিত্যনতুন রূপে প্রকাশ পাচ্ছে। এই আধুনিককালে শহর মানেই সবুজে আচ্ছাদিত একটা জনপদ। শহরে ট্রাম, বাস, ট্রেন, গাড়ি সবই আছে, কিন্তু চারদিকে সবুজ থাকা চাই। বিষাক্ত বায়ু শুষে নিয়ে নির্মল অক্সিজেন ফেরত দিচ্ছে সবুজ।
মানুষের সুযোগ-সুবিধা যে একেবারেই দেখা হয় না, তার প্রমাণ শংকর থেকে সীমান্ত স্কয়ার পর্যন্ত নির্মিত ডিভাইডার। মাঝে কোথাও গাড়ি পার হওয়ার ব্যবস্থা নেই। একেবারে দুনিয়া ঘুরেই এক জায়গা থেকে আরেক জায়গায় আসতে হয়। রাস্তার দুই পাশে বাচ্চাদের স্কুল আছে, তারা কীভাবে পারাপার হবে, সেটাও কর্তৃপক্ষ ভুলে যায়। সবচেয়ে শ্বাসরুদ্ধকর অবস্থা হচ্ছে, শহরের বিভিন্ন অলিগলি, সর্বত্রই জনসংখ্যার চাপ। রিকশা, গাড়ি এবং নানান ধরনের যানবাহনের কারণে গলিপথটি সব সময়ই ঠাসা থাকে। গলি সম্প্রসারণ করা সম্ভব হচ্ছে না। এসব জায়গায় গাছ লাগানোর উপায়টা কী? পৌর করপোরেশন যদি এলাকায় গিয়ে নাগরিকদের নিয়ে বসে, বিভিন্ন কাজে নাগরিকদের সংযুক্ত করে, নাগরিকেরা ইচ্ছা করে তার সঙ্গে যুক্ত হয়।
কিন্তু এটি একটি স্বপ্ন। কোনো দিন এলাকার কাউন্সিলররা আসতে পারেন না, জনে জনে গিয়ে তাঁদের পরামর্শ নেওয়ার প্রয়োজন বোধ করেন না। এদের কাছে জনগণ হচ্ছে একটা ভোটের যন্ত্র। নির্বাচনের সময় বাড়ি বাড়ি যাবেন, নানান ধরনের প্রতিশ্রুতি দেবেন, কিন্তু নির্বাচিত হয়েই হাওয়া। এই হাওয়াবাজি অবশ্য সাংসদ, মন্ত্রীরাও করে থাকেন। অধিকাংশ সময়ে শহরে থাকেন, গ্রামে গিয়ে কিছু তয়-তদবিরের কাজ করে আবার ফিরে আসেন। এলাকাটিকে প্রাকৃতিক করার চেষ্টা করেন না; বরং ঢাকায় তদবির, ব্যবসা—এসব করতে ছুটে বেড়ান।
যে বিষয়টি প্রবলভাবে আমাদের জীবনে অবহেলিত দেখেছি, তা হলো সংস্কৃতিচর্চা। এলাকায় একসময় পাঠাগার থাকত, চিত্তবিনোদনের ব্যবস্থা থাকত। পৌরসভার কমিউনিটি সেন্টারে নাটক, গানের আসর বসত—ঈদে, পয়লা বৈশাখে, ষোলোই ডিসেম্বরে, ছাব্বিশে মার্চে। বিশেষ করে একুশে ফেব্রুয়ারিতে নানা ধরনের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন হতো। এখন তা কোথাও কোথাও ইভেন্ট ব্যবস্থাপনায় হয়ে থাকে। একদা বটতলাই ছিল শিল্প-সাহিত্যের প্রাণকেন্দ্র।কলকাতায় ঊনবিংশ শতাব্দীতে বটতলা সাহিত্যের ক্ষেত্রে একটা বড় অবদান রেখেছিল। সেই বটবৃক্ষ আজ কোথায়?
গভীর দুঃখ হয়, যখন দিগন্তব্যাপী বিল্ডিং আকাশকে রুদ্ধ করে দেয়, আমরা সবাই ম্যাচ বাক্সের মধ্যে বসবাস করি, সবুজ দেখতে পাই না। শিশিরভেজা ঘাস দেখতে পাই না, তার জন্য রাষ্ট্র কী আয়োজন রেখেছে? তরুণ-তরুণীরা দিনে প্রখর সূর্যের দাবদাহে এবং রাতে বিনিদ্র রজনী পার করছে এই আশায় যে পৌর করপোরেশনের শুভবুদ্ধির উদয় হোক। হায়! সেই শুভবুদ্ধি কোথায়? কত দূরে?
লেখক: নাট্যব্যক্তিত্ব

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
০৬ অক্টোবর ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫বাসস, ঢাকা

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
আজ সোমবার বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১-এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) মো. আলমগীরের জেরা শুরু করেন রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী আমীর হোসেন। আইনজীবী আমীর হোসেন পলাতক আসামি শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে শুনানি করছেন। এর আগে গত মঙ্গলবার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. আলমগীরের সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন হয়।
এই মামলার শুনানিতে এর আগে গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম প্রতীক শহীদ আবু সাঈদের বাবাসহ স্বজনহারা পরিবারের একাধিক সদস্য সাক্ষ্য দিয়েছেন। এ ছাড়া মামলার গুরুত্বপূর্ণ ‘স্টার উইটনেস’ হিসেবে সাক্ষ্য দেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক এবং জুলাই আন্দোলনের অন্যতম নেতৃত্বদানকারী নাহিদ ইসলাম এবং দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান।
গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে আওয়ামী লীগ সরকার, তাদের দলীয় ক্যাডার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করে বলে অভিযোগ ওঠে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে শেখ হাসিনা, তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং তৎকালীন আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে গত ১০ জুলাই অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল-১।
পরবর্তীকালে, এই মামলার অন্যতম আসামি সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন দোষ স্বীকার করে ঘটনার সত্যতা উদ্ঘাটনে রাজসাক্ষী (অ্যাপ্রোভার) হওয়ার জন্য ট্রাইব্যুনালে আবেদন করেন। ট্রাইব্যুনাল তাঁর আবেদন মঞ্জুর করলে তিনি রাজসাক্ষী হিসেবে এই মামলায় সাক্ষ্য দেন।
মামলার প্রসিকিউশন পক্ষে শুনানি করছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম এবং গাজী এসএইচ তামিম। শুনানিতে তাঁদের সঙ্গে অপর প্রসিকিউটররাও উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদিকে, এই মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের পক্ষে আছেন আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ।
মানবতাবিরোধী অপরাধের এই মামলা ছাড়াও ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আরও দুটি মামলা বিচারাধীন। এর মধ্যে একটি মামলায় আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে সংঘটিত গুম-খুনের ঘটনায় তাঁকে আসামি করা হয়েছে। অন্য মামলাটি হলো রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে হত্যাকাণ্ড নিয়ে। এই তিনটি মামলার বিচারকাজই বর্তমানে দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে চলমান।

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
আজ সোমবার বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১-এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) মো. আলমগীরের জেরা শুরু করেন রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী আমীর হোসেন। আইনজীবী আমীর হোসেন পলাতক আসামি শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে শুনানি করছেন। এর আগে গত মঙ্গলবার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. আলমগীরের সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন হয়।
এই মামলার শুনানিতে এর আগে গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম প্রতীক শহীদ আবু সাঈদের বাবাসহ স্বজনহারা পরিবারের একাধিক সদস্য সাক্ষ্য দিয়েছেন। এ ছাড়া মামলার গুরুত্বপূর্ণ ‘স্টার উইটনেস’ হিসেবে সাক্ষ্য দেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক এবং জুলাই আন্দোলনের অন্যতম নেতৃত্বদানকারী নাহিদ ইসলাম এবং দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান।
গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে আওয়ামী লীগ সরকার, তাদের দলীয় ক্যাডার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করে বলে অভিযোগ ওঠে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে শেখ হাসিনা, তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং তৎকালীন আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে গত ১০ জুলাই অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল-১।
পরবর্তীকালে, এই মামলার অন্যতম আসামি সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন দোষ স্বীকার করে ঘটনার সত্যতা উদ্ঘাটনে রাজসাক্ষী (অ্যাপ্রোভার) হওয়ার জন্য ট্রাইব্যুনালে আবেদন করেন। ট্রাইব্যুনাল তাঁর আবেদন মঞ্জুর করলে তিনি রাজসাক্ষী হিসেবে এই মামলায় সাক্ষ্য দেন।
মামলার প্রসিকিউশন পক্ষে শুনানি করছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম এবং গাজী এসএইচ তামিম। শুনানিতে তাঁদের সঙ্গে অপর প্রসিকিউটররাও উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদিকে, এই মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের পক্ষে আছেন আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ।
মানবতাবিরোধী অপরাধের এই মামলা ছাড়াও ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আরও দুটি মামলা বিচারাধীন। এর মধ্যে একটি মামলায় আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে সংঘটিত গুম-খুনের ঘটনায় তাঁকে আসামি করা হয়েছে। অন্য মামলাটি হলো রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে হত্যাকাণ্ড নিয়ে। এই তিনটি মামলার বিচারকাজই বর্তমানে দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে চলমান।

মঙ্গলবার রাতে শুধু নয়, বেশ কয়েক রাত ধরে প্রচণ্ড গরমে সাতমসজিদ রোডের বৃক্ষ নিধনযজ্ঞের বিরুদ্ধে বিশালসংখ্যক তরুণ-তরুণী দাঁড়িয়ে প্রতিবাদ জানাচ্ছেন। প্রতিবাদের ভাষা মার্জিত, জনসাধারণের কোনো অসুবিধা সৃষ্টি না করে বেশ কয়েক দিন ধরে তাঁরা কথা বলেই যাচ্ছেন। মানুষের সমর্থন দিনে দিনে বাড়ছে।
১১ মে ২০২৩
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর সঙ্গে।
মাছের সুষ্ঠু প্রজনন, উৎপাদন, মৎস্যসম্পদ সংরক্ষণ ও টেকসই মৎস্য আহরণের জন্য সমুদ্রে সব ধরনের মাছ শিকার ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা গতকাল বুধবার দিবাগত মধ্যরাতে শেষ হয়েছে। তাই গতকাল দিনভর ছিল উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে ব্যস্ততা। অনেকে দেখে নিচ্ছিলেন ট্রলার ঠিকঠাক আছে কি না, কেউ জালের ছেঁড়া অংশ সেলাই করছিলেন, কেউ আবার প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রীসহ অন্য সরঞ্জাম গুছিয়ে নিচ্ছিলেন।
বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র এবং ফকিরহাট উপ-মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ঘাটে গতকাল শত শত ট্রলার নোঙর করে রাখা ছিল। জেলেদের উপস্থিতিতে ঘাট এলাকা সরগরম হয়ে ওঠে। ফকিরহাটের মুদি-মনিহারি দোকানগুলোতে জেলেরা কেনাকাটা করতে ভিড় জমান। ফকিরহাট এলাকার বিসমিল্লাহ ট্রলারের মাঝি রহিম মিয়া বলেন, ‘সাগরে মাছ শিকারে যেতে সকল প্রস্তুতি নিয়েছি। নিষেধাজ্ঞার সময় শেষ হওয়ামাত্রই সাগরে নামব।’
জেলে নুরসাইদ ও ফোরকান মিয়া বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞার সময় পরিবার-পরিজন নিয়ে বেশ কষ্টে কেটেছে। ওই সময়ে বেশ টাকা ঋণ করেছি। এখন সাগরে যাব। দেখি আল্লাহ ঋণ পরিশোধ করতে দেন কি না।’
নোয়াখালীর হাতিয়ার সূর্যমুখী, বাংলাবাজার, কাজিরবাজার, পাইতান মার্কেট চেয়ারম্যান ঘাটসহ বেশ কয়েকটি ঘাটে গতকাল জেলেদের ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা গেছে। অনেকে নৌকায় জাল তুলছিলেন, আবার অনেকে জ্বালানি তেল মজুতসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী ট্রলারে নিয়ে যান। সূর্যমুখী ঘাটের এমভি মায়ের দোয়া ট্রলারের মাঝি জাফর উল্যা বলেন, ‘সাগরে ৮-১০ দিন থাকার প্রস্তুতি নিচ্ছি। সন্ধ্যায় সাগরের উদ্দেশে রওনা দেব।’
সূর্যমুখী ঘাট জেলে সমিতির সভাপতি জবিয়ল হক বলেন, ‘সাগরে নামতে প্রস্তুত নোয়াখালীর হাতিয়ার ২০টি ঘাটের লক্ষাধিক জেলে। এসব ঘাটে প্রায় ১০ হাজার ছোট-বড় ফিশিং ট্রলার রয়েছে। প্রতি ট্রলারে ১০ জন হলেও লক্ষাধিক জেলে এই মাছ ধরার সঙ্গে জড়িত। তাঁদের সবাই গত ৫৮ দিন তীরে বেকার ছিলেন।’
পিরোজপুরের ইন্দুরকানি উপজেলার পাড়েরহাট মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের পার্শ্ববর্তী এলাকার জেলেরা গতকাল দিনভর সাগরে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন। এ ছাড়া মঠবাড়িয়া উপজেলার সাপলেজা, খেতাচিড়া, বড়মাছুয়া, ছোটমাছুয়া, ভান্ডারিয়া উপজেলার চরখালী, হেতালিয়া, কাউখালী উপজেলার সোনাকুর এলাকার জেলেরা, সদর উপজেলা এবং নেছারাবাদ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার জেলেরা প্রস্তুতি শেষে গত রাতে বঙ্গোপসাগরে রওনা হন।
কয়েক দিন ধরে কক্সবাজার উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে নৌকা, জাল মেরামতসহ বিভিন্ন প্রস্তুতি সেরেছেন জেলেরা। গতকাল মেরিন ড্রাইভের টেকনাফের খুরেরমুখ, সাবরাং ও বাহারছড়া এলাকায় দেখা গেছে, সড়কে দাঁড় করিয়ে রাখা সারি সারি ট্রলারে জাল ও রসদ তোলেন জেলেরা।
একটি ট্রলারের মাঝি আবু তাহের জানান, এবার ভারতের সঙ্গে মিল রেখে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় কেউ সাগরে মাছ শিকারে নামেনি। এতে উপকূলের কাছাকাছি সাগরে জাল ফেললেই ইলিশসহ অন্য মাছ পাওয়া যাবে বলে আশাবাদী তিনি।
কক্সবাজার শহরের ফিশারি ঘাটের মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির পরিচালক জুলফিকার আলী জানান, কক্সবাজার উপকূলে ছোট-বড় ৭ হাজারের মতো যান্ত্রিক ট্রলার রয়েছে। এসব ট্রলারে প্রায় এক লাখ জেলে ও শ্রমিক নিয়োজিত রয়েছেন। অধিকাংশ ট্রলার নিষেধাজ্ঞা ওঠার সঙ্গে সঙ্গে সাগরে রওনা হবে।
[প্রতিবেদন তৈরিতে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছেন বরগুনা ও আমতলী, পিরোজপুর, কক্সবাজার এবং হাতিয়া প্রতিনিধি]

‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর সঙ্গে।
মাছের সুষ্ঠু প্রজনন, উৎপাদন, মৎস্যসম্পদ সংরক্ষণ ও টেকসই মৎস্য আহরণের জন্য সমুদ্রে সব ধরনের মাছ শিকার ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা গতকাল বুধবার দিবাগত মধ্যরাতে শেষ হয়েছে। তাই গতকাল দিনভর ছিল উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে ব্যস্ততা। অনেকে দেখে নিচ্ছিলেন ট্রলার ঠিকঠাক আছে কি না, কেউ জালের ছেঁড়া অংশ সেলাই করছিলেন, কেউ আবার প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রীসহ অন্য সরঞ্জাম গুছিয়ে নিচ্ছিলেন।
বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র এবং ফকিরহাট উপ-মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ঘাটে গতকাল শত শত ট্রলার নোঙর করে রাখা ছিল। জেলেদের উপস্থিতিতে ঘাট এলাকা সরগরম হয়ে ওঠে। ফকিরহাটের মুদি-মনিহারি দোকানগুলোতে জেলেরা কেনাকাটা করতে ভিড় জমান। ফকিরহাট এলাকার বিসমিল্লাহ ট্রলারের মাঝি রহিম মিয়া বলেন, ‘সাগরে মাছ শিকারে যেতে সকল প্রস্তুতি নিয়েছি। নিষেধাজ্ঞার সময় শেষ হওয়ামাত্রই সাগরে নামব।’
জেলে নুরসাইদ ও ফোরকান মিয়া বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞার সময় পরিবার-পরিজন নিয়ে বেশ কষ্টে কেটেছে। ওই সময়ে বেশ টাকা ঋণ করেছি। এখন সাগরে যাব। দেখি আল্লাহ ঋণ পরিশোধ করতে দেন কি না।’
নোয়াখালীর হাতিয়ার সূর্যমুখী, বাংলাবাজার, কাজিরবাজার, পাইতান মার্কেট চেয়ারম্যান ঘাটসহ বেশ কয়েকটি ঘাটে গতকাল জেলেদের ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা গেছে। অনেকে নৌকায় জাল তুলছিলেন, আবার অনেকে জ্বালানি তেল মজুতসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী ট্রলারে নিয়ে যান। সূর্যমুখী ঘাটের এমভি মায়ের দোয়া ট্রলারের মাঝি জাফর উল্যা বলেন, ‘সাগরে ৮-১০ দিন থাকার প্রস্তুতি নিচ্ছি। সন্ধ্যায় সাগরের উদ্দেশে রওনা দেব।’
সূর্যমুখী ঘাট জেলে সমিতির সভাপতি জবিয়ল হক বলেন, ‘সাগরে নামতে প্রস্তুত নোয়াখালীর হাতিয়ার ২০টি ঘাটের লক্ষাধিক জেলে। এসব ঘাটে প্রায় ১০ হাজার ছোট-বড় ফিশিং ট্রলার রয়েছে। প্রতি ট্রলারে ১০ জন হলেও লক্ষাধিক জেলে এই মাছ ধরার সঙ্গে জড়িত। তাঁদের সবাই গত ৫৮ দিন তীরে বেকার ছিলেন।’
পিরোজপুরের ইন্দুরকানি উপজেলার পাড়েরহাট মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের পার্শ্ববর্তী এলাকার জেলেরা গতকাল দিনভর সাগরে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন। এ ছাড়া মঠবাড়িয়া উপজেলার সাপলেজা, খেতাচিড়া, বড়মাছুয়া, ছোটমাছুয়া, ভান্ডারিয়া উপজেলার চরখালী, হেতালিয়া, কাউখালী উপজেলার সোনাকুর এলাকার জেলেরা, সদর উপজেলা এবং নেছারাবাদ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার জেলেরা প্রস্তুতি শেষে গত রাতে বঙ্গোপসাগরে রওনা হন।
কয়েক দিন ধরে কক্সবাজার উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে নৌকা, জাল মেরামতসহ বিভিন্ন প্রস্তুতি সেরেছেন জেলেরা। গতকাল মেরিন ড্রাইভের টেকনাফের খুরেরমুখ, সাবরাং ও বাহারছড়া এলাকায় দেখা গেছে, সড়কে দাঁড় করিয়ে রাখা সারি সারি ট্রলারে জাল ও রসদ তোলেন জেলেরা।
একটি ট্রলারের মাঝি আবু তাহের জানান, এবার ভারতের সঙ্গে মিল রেখে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় কেউ সাগরে মাছ শিকারে নামেনি। এতে উপকূলের কাছাকাছি সাগরে জাল ফেললেই ইলিশসহ অন্য মাছ পাওয়া যাবে বলে আশাবাদী তিনি।
কক্সবাজার শহরের ফিশারি ঘাটের মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির পরিচালক জুলফিকার আলী জানান, কক্সবাজার উপকূলে ছোট-বড় ৭ হাজারের মতো যান্ত্রিক ট্রলার রয়েছে। এসব ট্রলারে প্রায় এক লাখ জেলে ও শ্রমিক নিয়োজিত রয়েছেন। অধিকাংশ ট্রলার নিষেধাজ্ঞা ওঠার সঙ্গে সঙ্গে সাগরে রওনা হবে।
[প্রতিবেদন তৈরিতে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছেন বরগুনা ও আমতলী, পিরোজপুর, কক্সবাজার এবং হাতিয়া প্রতিনিধি]

মঙ্গলবার রাতে শুধু নয়, বেশ কয়েক রাত ধরে প্রচণ্ড গরমে সাতমসজিদ রোডের বৃক্ষ নিধনযজ্ঞের বিরুদ্ধে বিশালসংখ্যক তরুণ-তরুণী দাঁড়িয়ে প্রতিবাদ জানাচ্ছেন। প্রতিবাদের ভাষা মার্জিত, জনসাধারণের কোনো অসুবিধা সৃষ্টি না করে বেশ কয়েক দিন ধরে তাঁরা কথা বলেই যাচ্ছেন। মানুষের সমর্থন দিনে দিনে বাড়ছে।
১১ মে ২০২৩
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
০৬ অক্টোবর ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
ভারতের নিষেধাজ্ঞার এক দিন পরই গত রোববার লালমনিরহাটের বুড়িমারী ও যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দরসহ বিভিন্ন বন্দরে পণ্যের ট্রাক আটকে দেয় ভারত। সংশ্লিষ্টদের সূত্রে জানা যায়, রোববার ভারতের আমদানি বিধিনিষেধের কারণে বুড়িমারী সীমান্তে প্রাণের ১৭ ট্রাক খাদ্যপণ্য আটকে যায়। এ ছাড়া বেনাপোলে ৩৬টি পোশাক বোঝাই ট্রাকসহ অন্যান্য পণ্যের শতাধিক ট্রাক ঢুকতে পারেনি।
গতকাল সোমবার পর্যন্ত বুড়িমারী থেকে প্রাণের পণ্যবোঝাই ট্রাকগুলোর অর্ধেকের বেশি ফেরত নিয়ে আসে প্রতিষ্ঠানটি। এ ছাড়া বেনাপোলে পোর্টের ভেতরে ২৪টি ট্রাক ছাড়া বাকিগুলো ফেরত চলে যায়।
বেনাপোল বন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. সাজেদুর রহমান গতকাল সোমবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, গতকাল পোর্টের ভেতর ও বাইরে শতাধিক ট্রাক দাঁড়িয়ে ছিল। আজ পোর্টের ভেতরের ২৪টি ছাড়া বাকিগুলো ফেরত নিয়ে গেছেন মালিকেরা। এখন পর্যন্ত মনে হচ্ছে, পোর্টের ভেতরের ট্রাকগুলোও ফেরত নিতে হবে।
জানতে চাইলে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পরিচালক (বিপণন) কামরুজ্জামান কামাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের হাতে ৬ মিলিয়ন ডলারের ক্রয় আদেশ রয়েছে। তার মধ্য থেকে রোববার বুড়িমারী দিয়ে ১৭ ট্রাকবোঝাই পণ্য পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু সেগুলো ঢুকতে পারেনি। ট্রাকগুলো ফেরত আনা হচ্ছে। নতুন করে কাগজপত্র তৈরি করে অন্য পথ দিয়ে পণ্য পাঠাতে হবে।’
বেনাপোল স্থলবন্দর সূত্রে জানা যায়, ওই ২৪টি ট্রাক পোর্টের ভেতরে থাকায় এখনো তারা ভারতে প্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে। তাদের আশা, যেহেতু নিষেধাজ্ঞার আগে এই পণ্যগুলোর এলসি করা হয়েছিল, তাই এগুলো প্রবেশে অনুমতি পাবে। তবে এটি নির্ভর করবে বাংলাদেশ সরকারের আলোচনার ওপর।
এমন পরিস্থিতিতে সরকারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ইতিমধ্যে অনেক রপ্তানিকারক রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সঙ্গে আলোচনা করে সরকারের সহযোগিতা চেয়েছে।
স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে আজ মঙ্গলবার আন্তমন্ত্রণালয়ের সভা ডেকেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে বিকেল ৪টায় আন্তমন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এই সভা অনুষ্ঠিত হবে।
সভায় নৌপরিবহন ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো, জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের প্রতিনিধিদের উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া ব্যবসায়ী প্রতিনিধি হিসেবে এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ, ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রতিনিধিদের উপস্থিতির জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
ভারতের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গত শনিবার হঠাৎ এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি নিষিদ্ধ করে। শুধু ভারতের নবসেবা ও কলকাতা সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করে দেশটির আমদানিকারকেরা বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি করতে পারবেন বলে ওই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। এ ছাড়া বাংলাদেশ থেকে ভারতের আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা ও মিজোরাম, পশ্চিমবঙ্গের চ্যাংড়াবান্দা ও ফুলবাড়ী শুল্ক স্টেশন দিয়ে ফল, ফলের স্বাদযুক্ত পানীয়, কোমল পানীয়, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, প্লাস্টিক পণ্য, সুতা, সুতার উপজাত, আসবাব রপ্তানিও নিষিদ্ধ করা হয় ওই বিজ্ঞপ্তিতে।
আমদানি ও রপ্তানিসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা জানান, দেশের ২৪টি বন্দরের মধ্যে ১৬টি বন্দর দিয়ে ভারতের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়ে থাকে। তবে যোগাযোগব্যবস্থা সহজ হওয়ায় বেনাপোল ও ভারতের পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে সবচেয়ে বেশি আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়। এর পরিমাণ ৮০ শতাংশ। বেনাপোল বন্দর দিয়ে প্রতিদিন ভারতে ২৫০ থেকে ৩০০ ট্রাকে বিভিন্ন ধরনের পণ্য রপ্তানি হয়। এর মধ্যে শতাধিক ট্রাক পণ্য থাকে তৈরি পোশাক।
এর আগে গত ৮ এপ্রিল বাংলাদেশের জন্য ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করে ভারত। ফলে ভারতের বিমানবন্দর ব্যবহার করে তৃতীয় কোনো দেশে তৈরি পোশাক রপ্তানি করতে পারছে না বাংলাদেশ। অন্যদিকে প্রায় এক মাস আগে ভারত থেকে বেনাপোল, ভোমরা, সোনামসজিদ, বাংলাবান্ধা, বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানির সুযোগ বন্ধ করে দেয় বাংলাদেশের জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমানের মতে, এই পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপে তুলনামূলকভাবে বেশি নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বাংলাদেশের ওপর। তাই ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর চেষ্টা অব্যাহত রাখাই সরকারের উচিত বলে মনে করছেন তিনি।
মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আলোচনার মাধ্যমে বাংলাদেশ এবং ভারতের বিরোধপূর্ণ বিষয়সমূহ মিটিয়ে ফেলতে হবে এবং দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এটাই হবে উভয় দেশের জন্য কল্যাণকর।

ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
ভারতের নিষেধাজ্ঞার এক দিন পরই গত রোববার লালমনিরহাটের বুড়িমারী ও যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দরসহ বিভিন্ন বন্দরে পণ্যের ট্রাক আটকে দেয় ভারত। সংশ্লিষ্টদের সূত্রে জানা যায়, রোববার ভারতের আমদানি বিধিনিষেধের কারণে বুড়িমারী সীমান্তে প্রাণের ১৭ ট্রাক খাদ্যপণ্য আটকে যায়। এ ছাড়া বেনাপোলে ৩৬টি পোশাক বোঝাই ট্রাকসহ অন্যান্য পণ্যের শতাধিক ট্রাক ঢুকতে পারেনি।
গতকাল সোমবার পর্যন্ত বুড়িমারী থেকে প্রাণের পণ্যবোঝাই ট্রাকগুলোর অর্ধেকের বেশি ফেরত নিয়ে আসে প্রতিষ্ঠানটি। এ ছাড়া বেনাপোলে পোর্টের ভেতরে ২৪টি ট্রাক ছাড়া বাকিগুলো ফেরত চলে যায়।
বেনাপোল বন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. সাজেদুর রহমান গতকাল সোমবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, গতকাল পোর্টের ভেতর ও বাইরে শতাধিক ট্রাক দাঁড়িয়ে ছিল। আজ পোর্টের ভেতরের ২৪টি ছাড়া বাকিগুলো ফেরত নিয়ে গেছেন মালিকেরা। এখন পর্যন্ত মনে হচ্ছে, পোর্টের ভেতরের ট্রাকগুলোও ফেরত নিতে হবে।
জানতে চাইলে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পরিচালক (বিপণন) কামরুজ্জামান কামাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের হাতে ৬ মিলিয়ন ডলারের ক্রয় আদেশ রয়েছে। তার মধ্য থেকে রোববার বুড়িমারী দিয়ে ১৭ ট্রাকবোঝাই পণ্য পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু সেগুলো ঢুকতে পারেনি। ট্রাকগুলো ফেরত আনা হচ্ছে। নতুন করে কাগজপত্র তৈরি করে অন্য পথ দিয়ে পণ্য পাঠাতে হবে।’
বেনাপোল স্থলবন্দর সূত্রে জানা যায়, ওই ২৪টি ট্রাক পোর্টের ভেতরে থাকায় এখনো তারা ভারতে প্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে। তাদের আশা, যেহেতু নিষেধাজ্ঞার আগে এই পণ্যগুলোর এলসি করা হয়েছিল, তাই এগুলো প্রবেশে অনুমতি পাবে। তবে এটি নির্ভর করবে বাংলাদেশ সরকারের আলোচনার ওপর।
এমন পরিস্থিতিতে সরকারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ইতিমধ্যে অনেক রপ্তানিকারক রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সঙ্গে আলোচনা করে সরকারের সহযোগিতা চেয়েছে।
স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে আজ মঙ্গলবার আন্তমন্ত্রণালয়ের সভা ডেকেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে বিকেল ৪টায় আন্তমন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এই সভা অনুষ্ঠিত হবে।
সভায় নৌপরিবহন ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো, জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের প্রতিনিধিদের উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া ব্যবসায়ী প্রতিনিধি হিসেবে এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ, ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রতিনিধিদের উপস্থিতির জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
ভারতের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গত শনিবার হঠাৎ এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি নিষিদ্ধ করে। শুধু ভারতের নবসেবা ও কলকাতা সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করে দেশটির আমদানিকারকেরা বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি করতে পারবেন বলে ওই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। এ ছাড়া বাংলাদেশ থেকে ভারতের আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা ও মিজোরাম, পশ্চিমবঙ্গের চ্যাংড়াবান্দা ও ফুলবাড়ী শুল্ক স্টেশন দিয়ে ফল, ফলের স্বাদযুক্ত পানীয়, কোমল পানীয়, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, প্লাস্টিক পণ্য, সুতা, সুতার উপজাত, আসবাব রপ্তানিও নিষিদ্ধ করা হয় ওই বিজ্ঞপ্তিতে।
আমদানি ও রপ্তানিসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা জানান, দেশের ২৪টি বন্দরের মধ্যে ১৬টি বন্দর দিয়ে ভারতের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়ে থাকে। তবে যোগাযোগব্যবস্থা সহজ হওয়ায় বেনাপোল ও ভারতের পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে সবচেয়ে বেশি আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়। এর পরিমাণ ৮০ শতাংশ। বেনাপোল বন্দর দিয়ে প্রতিদিন ভারতে ২৫০ থেকে ৩০০ ট্রাকে বিভিন্ন ধরনের পণ্য রপ্তানি হয়। এর মধ্যে শতাধিক ট্রাক পণ্য থাকে তৈরি পোশাক।
এর আগে গত ৮ এপ্রিল বাংলাদেশের জন্য ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করে ভারত। ফলে ভারতের বিমানবন্দর ব্যবহার করে তৃতীয় কোনো দেশে তৈরি পোশাক রপ্তানি করতে পারছে না বাংলাদেশ। অন্যদিকে প্রায় এক মাস আগে ভারত থেকে বেনাপোল, ভোমরা, সোনামসজিদ, বাংলাবান্ধা, বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানির সুযোগ বন্ধ করে দেয় বাংলাদেশের জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমানের মতে, এই পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপে তুলনামূলকভাবে বেশি নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বাংলাদেশের ওপর। তাই ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর চেষ্টা অব্যাহত রাখাই সরকারের উচিত বলে মনে করছেন তিনি।
মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আলোচনার মাধ্যমে বাংলাদেশ এবং ভারতের বিরোধপূর্ণ বিষয়সমূহ মিটিয়ে ফেলতে হবে এবং দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এটাই হবে উভয় দেশের জন্য কল্যাণকর।

মঙ্গলবার রাতে শুধু নয়, বেশ কয়েক রাত ধরে প্রচণ্ড গরমে সাতমসজিদ রোডের বৃক্ষ নিধনযজ্ঞের বিরুদ্ধে বিশালসংখ্যক তরুণ-তরুণী দাঁড়িয়ে প্রতিবাদ জানাচ্ছেন। প্রতিবাদের ভাষা মার্জিত, জনসাধারণের কোনো অসুবিধা সৃষ্টি না করে বেশ কয়েক দিন ধরে তাঁরা কথা বলেই যাচ্ছেন। মানুষের সমর্থন দিনে দিনে বাড়ছে।
১১ মে ২০২৩
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
০৬ অক্টোবর ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
১৮৯৮ সালে ভারতের উত্তর প্রদেশের একটি ধূলিধূসর টিলা খুঁড়ে পাওয়া মূল্যবান এই রত্নগুলো এক শতাব্দীর বেশি সময় ধরে একটি বেসরকারি ব্রিটিশ সংগ্রহাগারে প্রায় দৃষ্টিচক্ষুর আড়ালে ছিল। এখন যেহেতু রত্নগুলোর হাতবদলের সময় এসেছে, তাই নতুন সংগ্রাহকেরা আগ্রহ নিয়ে এগুলো সংগ্রহের জন্য অপেক্ষা করছেন। কিন্তু এখানে একটা অস্বস্তিও তৈরি হয়েছে।
গৌতম বুদ্ধের জন্মস্থান লুম্বিনীর কাছাকাছি, বর্তমানে ভারতের উত্তর প্রদেশে একটি ইটের ঘরের ভেতর থেকে প্রায় ১ হাজার ৮০০টি মুক্তা, রুবি, টোপাজ, নীলা ও নকশা করা সোনার পাত সংগ্রহ করা হয়েছিল। তবে এই রত্নগুলোর সঙ্গে সঙ্গে একটি খোদাই করা পাত্রে হাড়ের টুকরাও পাওয়া যায়, যেগুলোকে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষ বলে শনাক্ত করা হয়। এই আবিষ্কার তখন প্রত্নতত্ত্বের জগতে ব্যাপক আলোড়ন তোলে।
সাদাবি’স এশিয়ার চেয়ারম্যান নিকোলাস চাউ মনে করেন, স্মরণকালের বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর মাঝে এই রত্নসম্ভার অন্যতম। তবে এগুলো নিলামে তোলার কারণে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। আর তা হচ্ছে—ভারতের ইতিহাসের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িয়ে থাকা এবং বৌদ্ধদের কাছে পবিত্র এই সম্পদ বিক্রি করা কি নৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য?
১৮৯৮ সালে ব্রিটিশ এস্টেট ম্যানেজার উইলিয়াম ক্ল্যাক্সটন পেপ্পে লুম্বিনির ঠিক দক্ষিণে পিপ্রাওয়ায় অবস্থিত একটি ঢিবি খনন করেন। সেখান থেকেই প্রায় ২ হাজার বছর আগের ওই নির্দশনগুলো খুঁজে পাওয়া যায়।
ইতিহাসবিদদের মতে, প্রাপ্ত রত্নসম্ভার ও দেহাবশেষ, যা তখনো পর্যন্ত অক্ষত ছিল, সেগুলো গৌতম বুদ্ধের শাক্য বংশের এবং বিশ্বব্যাপী বৌদ্ধদের ঐতিহ্য। হাড়ের নিদর্শনগুলো থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা ও মিয়ানমারের মতো দেশগুলোতে বিতরণ করা হয়েছে। এসব দেশে এখনো সেগুলোর পূজা করা হয়।

আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
১৮৯৮ সালে ভারতের উত্তর প্রদেশের একটি ধূলিধূসর টিলা খুঁড়ে পাওয়া মূল্যবান এই রত্নগুলো এক শতাব্দীর বেশি সময় ধরে একটি বেসরকারি ব্রিটিশ সংগ্রহাগারে প্রায় দৃষ্টিচক্ষুর আড়ালে ছিল। এখন যেহেতু রত্নগুলোর হাতবদলের সময় এসেছে, তাই নতুন সংগ্রাহকেরা আগ্রহ নিয়ে এগুলো সংগ্রহের জন্য অপেক্ষা করছেন। কিন্তু এখানে একটা অস্বস্তিও তৈরি হয়েছে।
গৌতম বুদ্ধের জন্মস্থান লুম্বিনীর কাছাকাছি, বর্তমানে ভারতের উত্তর প্রদেশে একটি ইটের ঘরের ভেতর থেকে প্রায় ১ হাজার ৮০০টি মুক্তা, রুবি, টোপাজ, নীলা ও নকশা করা সোনার পাত সংগ্রহ করা হয়েছিল। তবে এই রত্নগুলোর সঙ্গে সঙ্গে একটি খোদাই করা পাত্রে হাড়ের টুকরাও পাওয়া যায়, যেগুলোকে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষ বলে শনাক্ত করা হয়। এই আবিষ্কার তখন প্রত্নতত্ত্বের জগতে ব্যাপক আলোড়ন তোলে।
সাদাবি’স এশিয়ার চেয়ারম্যান নিকোলাস চাউ মনে করেন, স্মরণকালের বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর মাঝে এই রত্নসম্ভার অন্যতম। তবে এগুলো নিলামে তোলার কারণে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। আর তা হচ্ছে—ভারতের ইতিহাসের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িয়ে থাকা এবং বৌদ্ধদের কাছে পবিত্র এই সম্পদ বিক্রি করা কি নৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য?
১৮৯৮ সালে ব্রিটিশ এস্টেট ম্যানেজার উইলিয়াম ক্ল্যাক্সটন পেপ্পে লুম্বিনির ঠিক দক্ষিণে পিপ্রাওয়ায় অবস্থিত একটি ঢিবি খনন করেন। সেখান থেকেই প্রায় ২ হাজার বছর আগের ওই নির্দশনগুলো খুঁজে পাওয়া যায়।
ইতিহাসবিদদের মতে, প্রাপ্ত রত্নসম্ভার ও দেহাবশেষ, যা তখনো পর্যন্ত অক্ষত ছিল, সেগুলো গৌতম বুদ্ধের শাক্য বংশের এবং বিশ্বব্যাপী বৌদ্ধদের ঐতিহ্য। হাড়ের নিদর্শনগুলো থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা ও মিয়ানমারের মতো দেশগুলোতে বিতরণ করা হয়েছে। এসব দেশে এখনো সেগুলোর পূজা করা হয়।

মঙ্গলবার রাতে শুধু নয়, বেশ কয়েক রাত ধরে প্রচণ্ড গরমে সাতমসজিদ রোডের বৃক্ষ নিধনযজ্ঞের বিরুদ্ধে বিশালসংখ্যক তরুণ-তরুণী দাঁড়িয়ে প্রতিবাদ জানাচ্ছেন। প্রতিবাদের ভাষা মার্জিত, জনসাধারণের কোনো অসুবিধা সৃষ্টি না করে বেশ কয়েক দিন ধরে তাঁরা কথা বলেই যাচ্ছেন। মানুষের সমর্থন দিনে দিনে বাড়ছে।
১১ মে ২০২৩
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
০৬ অক্টোবর ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫