একটি মানহানির মামলায় ভারতের কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধীর দুই বছরের কারাদণ্ড নিয়ে আলোচনার জন্য বিরোধীদলীয় নেতাদের সঙ্গে আজ শুক্রবার বৈঠক ডেকেছে কংগ্রেস। ভারতীয় গণমাধ্যম এনডিটিভি জানিয়েছে, সকাল ১০টায় এ বৈঠক শুরু হওয়ার কথা রয়েছে।
গতকাল বৃহস্পতিবার ৫২ বছর বয়সী রাহুল গান্ধীকে দুই বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন গুজরাটের সুরাটের একটি আদালত। তবে এই মামলায় রাহুলকে ৩০ দিনের জামিন দিয়েছেন আদালত। এর মধ্যে রায়ের বিরুদ্ধে তাঁকে উচ্চ আদালতে আপিল করতে হবে। তা না হলে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হতে পারে।
২০১৯ সালে লোকসভা নির্বাচনের আগে কর্ণাটকের কোলারে একটি সমাবেশে বক্তৃতা করার সময় রাহুল গান্ধী অভিযোগ করে বলেছিলেন, ‘সব চোরের ডাক নাম কীভাবে মোদি হয়!’ তাঁর এই মন্তব্যের পর বিজেপির বিধায়ক ও গুজরাটের সাবেক মন্ত্রী পূর্ণেশ মোদি রাহুলের বিরুদ্ধে মামলা করেন। ওই মামলায় গতকাল কারাদণ্ডাদেশ পান রাহুল গান্ধী।
এই রায়ের পর আজ বৈঠক ডেকেছে কংগ্রেস। দলটির সিনিয়র নেতা জয়রাম রমেশ সাংবাদিকদের বলেন, ‘এটি কেবল একটি আইনি সমস্যা নয়, এটি একটি অত্যন্ত গুরুতর রাজনৈতিক সমস্যাও, যা আমাদের গণতন্ত্রের ভবিষ্যতের সঙ্গে সম্পর্কিত। এটি মোদি সরকারের প্রতিহিংসার রাজনীতি, হুমকির রাজনীতি, ভয় দেখানোর রাজনীতির একটি বড় উদাহরণ।’
জয়রাম রমেশ আরও জানান, দলের করণীয় সম্পর্কে গতকাল সন্ধ্যায় কংগ্রেসের প্রধান মালিকার্জুন খার্গের বাসভবনে একটি বৈঠক হয়েছে। প্রায় দুই ঘণ্টার বৈঠকে নানা বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। কংগ্রেসের প্রধান বলেছেন, সারা দেশের প্রদেশগুলোর কংগ্রেসের প্রধান ও আইনসভার কংগ্রেস নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করে আন্দোলনের পরিকল্পনা করা হবে।
কংগ্রেসের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, আজ বেলা সাড়ে ১১টায় বা দুপুরের দিকে সমস্ত বিরোধী দলের নেতা-কর্মীরা সংসদ থেকে রাষ্ট্রপতি ভবনের দিকে মিছিল নিয়ে যাবেন। তাঁরা প্রেসিডেন্ট দ্রৌপদী মুর্মুর কাছে তাঁদের বক্তব্য তুলে ধরবেন।
আগামী সোমবার থেকে প্রধান বিরোধী দল দিল্লি ও অন্যান্য রাজ্যে বিক্ষোভ করবে বলে জানিয়েছে কংগ্রেস।
জয়রাম রমেশ বলেন, ‘আমরা আইনিভাবেও লড়াই করব। তবে এটি একটি রাজনৈতিক প্রতিযোগিতাও। আমরা সরাসরি লড়াই করব, পিছপা হব না, ভয় পাব না। কারণ এটি একটি বড় রাজনৈতিক সমস্যা।’
এই রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আপিল করা হবে বলেও জানিয়েছেন তিনি।
এদিকে ২০১৩ সালে ভারতের সুপ্রিম কোর্ট এক রায়ে বলেছিল, কোনো সংসদ সদস্য যে মুহূর্তে কোনো অপরাধে দোষী সাব্যস্ত হন এবং কমপক্ষে দুই বছরের সাজাপ্রাপ্ত হন, তখন থেকে তিনি অযোগ্য বলে বিবেচিত হন।
বিশেষজ্ঞদের মতে, গুজরাটের সুরাটের বিচারিক আদালতের আদেশের ভিত্তিতে লোকসভা সচিবালয় রাহুল গান্ধীকে অযোগ্য ঘোষণা করতে পারে এবং তার ওয়ানাড আসনটি শূন্য ঘোষণা করতে পারে। পরে ওই আসনে নির্বাচন ঘোষণা করবে নির্বাচন কমিশন। এমনটি তখনই হবে, যখন উচ্চ আদালতে দোষী সাব্যস্ত হবেন রাহুল।
এদিকে এই রায়ের পর রাহুল গান্ধী এক টুইটার পোস্টে প্রতিক্রিয়া জানিয়ে লিখেছেন, ‘আমার ধর্ম সত্য ও অহিংসার ওপর প্রতিষ্ঠিত। সত্যই আমার ঈশ্বর, অহিংস উপায়েই তাকে পেতে হয়।’
মন্তব্য
ইহাতে মন্তব্য প্রদান বন্ধ রয়েছে