পাভেল পার্থ

একটা নিদারুণ খবরের পাশাপাশি আরেক আশাজাগানিয়া খবর দিয়ে শুরু হলো ৭ ফেব্রুয়ারির সকাল। তুরস্কে ভয়াবহ ভূমিকম্প এবং কৃষিজমি সুরক্ষায় বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর অঙ্গীকার। নিজ কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত মন্ত্রিসভার বৈঠকে কৃষিজমি সুরক্ষায় আবারও নির্দেশনা দিলেন প্রধানমন্ত্রী। সভা শেষে মন্ত্রিপরিষদ সচিব সংবাদ সম্মেলনে জানান, প্রধানমন্ত্রী স্পষ্ট নির্দেশ দিয়েছেন, তিন ফসলি জমি ধ্বংস করা যাবে না। এ ধরনের জমিতে কোনো প্রকল্প নেওয়া যাবে না; বরং এই জমিগুলো রক্ষা করতে হবে।
তবে এই প্রথম নয়, এর আগে বহুবার, বহু অনুষ্ঠান এবং প্রকল্পের উদ্বোধনে বহু বক্তৃতায় প্রধানমন্ত্রী কৃষিজমি সুরক্ষার ঘোষণা দিয়েছেন। ২০২২ সালের ১৯ ডিসেম্বর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের ২৫তম বিশ্ববিদ্যালয় দিবস ও প্রযুক্তি উদ্বোধনী অনুষ্ঠানেও কৃষিজমি নষ্ট করে যেখানে-সেখানে শিল্পকারখানা না করার কথা বলেন তিনি। একই বছরের ৬ ডিসেম্বর নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজারে বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানেও কৃষিজমি বিনষ্ট করে শিল্পায়ন না করার ঘোষণা দেন তিনি। ২০১৪ সালের ১৮ সেপ্টেম্বর প্রধানমন্ত্রী ভূমি মন্ত্রণালয় পরিদর্শন করে কৃষিজমি সুরক্ষা করে জমি অধিগ্রহণ প্রক্রিয়ার ক্ষেত্রে নির্দেশনা দেন। কৃষিজমি সুরক্ষায় প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য ও ঘোষণা একত্র করলে এই বিবরণ বেশ দীর্ঘ হবে। নির্বাচনী ইশতেহার থেকে শুরু করে নানা কর্মসূচি ও অনুষ্ঠানে দেশের আর কোনো রাজনীতিবিদ কৃষিজমি সুরক্ষায় এত বেশি ঘোষণা করেছেন কি না, জানা নেই। কিন্তু তারপরও কেন দেশে কৃষিজমি সুরক্ষিত থাকছে না? কেন প্রতিদিন বিদীর্ণ, চুরমার, উধাও হচ্ছে দেশের শত সহস্র বছরের কৃষিজমিগুলো? প্রধানমন্ত্রী ছাড়া অন্য কোনো জনপ্রতিনিধি ও রাজনীতিবিদ কেন কৃষিজমি সুরক্ষায় সাহসী অঙ্গীকার করছেন না?
এখনো দেশে কৃষিজমি সুরক্ষায় আইনটি চূড়ান্ত হয়নি। ২০১১ সালে কৃষিজমি সুরক্ষা ও ভূমি ব্যবহার নিয়ে একটি আইনের খসড়া হয়। পরে ‘কৃষিজমি সুরক্ষা ও ভূমি ব্যবহার আইন, ২০১৫’-এর খসড়া তৈরি হয়। পরে ‘কৃষিজমি সুরক্ষা আইন, ২০২১’ শিরোনামে আইনের খসড়া যুগোপযোগীকরণ, সংশোধন, নতুন অনুচ্ছেদ সংযোজন, বিয়োজনের জন্য ভূমি মন্ত্রণালয় ২২ নভেম্বর ২০২১ একটি সভার আয়োজন করে। যদিও সেই সভার সিদ্ধান্ত জানা যায়নি। এমনকি জনগুরুত্বপূর্ণ এই আইন নিয়ে দেশের কৃষকসমাজ, কৃষক সংগঠক, নাগরিক সমাজের কোনো মতামত ও অংশগ্রহণ প্রক্রিয়া এখনো শুরু হয়নি। কৃষিজমি সুরক্ষায় প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণা ও অঙ্গীকারের প্রতি আমরা কোনোভাবেই বিশ্বাস হারাতে চাই না। কিন্তু আমরা বিস্মিত হই, প্রধানমন্ত্রীর বারবার ঘোষণার পরও দেশজুড়ে প্রতিদিন কমছে কৃষিজমি। কৃষিজমি সুরক্ষায় প্রতিদিন সংগ্রাম করতে হচ্ছে পাহাড় কি সমতল, হাওর কি বরেন্দ্র, চর কি বিল, গড় থেকে নদী অববাহিকার গ্রামীণ সমাজকে। কৃষিজমি সুরক্ষায় দেশের গরিষ্ঠ ভাগ নাগরিকের যেন কোনো দায় ও দায়িত্ব নেই। তাহলে কীভাবে আমরা আমাদের কৃষি উৎপাদন, গ্রামীণ অর্থনীতি এবং খাদ্য সুরক্ষার ভিত মজবুত করে দাঁড়াব? আমরা আশা করব, কৃষিজমি সুরক্ষায় প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণাকে সত্য প্রমাণ করবে তাঁর মন্ত্রিপরিষদ। দ্রুত ‘কৃষিজমি সুরক্ষা আইন, ২০২১’ অনুমোদন ও বাস্তবায়ন করবে।
জাতীয় ভূমি ব্যবহার নীতি ২০০১-এর প্রেক্ষাপট অংশে বলা হয়েছে,...বাংলাদেশ কৃষিপ্রধান দেশ। কৃষি হচ্ছে এ দেশের এক-তৃতীয়াংশ জাতীয় আয়ের উৎস এবং দুই-তৃতীয়াংশ মানুষের জীবিকার অবলম্বন। তাই বাংলাদেশের ভূমি ও পানিসম্পদের গুরুত্বও অপরিসীম। ভূমি হচ্ছে মৌলিক প্রাকৃতিক সম্পদ, যা মানুষের নিত্যপ্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রী, শিল্পপণ্য, ভোগবিলাস, স্বাস্থ্য রক্ষার উপকরণ ইত্যাদি সবকিছুরই উৎস। জনসংখ্যা বৃদ্ধির কারণে মাথাপিছু জমির পরিমাণ দিন দিন হ্রাস পাচ্ছে। অর্থনৈতিক অগ্রগতির সঙ্গে সঙ্গে নগরায়ণের প্রবণতা বাড়ছে, শিল্পোন্নয়ন ঘটছে, রাস্তাঘাট, হাসপাতাল ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ইত্যাদির ক্রমাগত সম্প্রসারণ হচ্ছে, ফলে কৃষিজমির পরিমাণ ক্রমেই সংকুচিত হচ্ছে।
বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো ও কৃষি তথ্য সার্ভিসের (২০১৫) সূত্র উল্লেখ করে কৃষি মন্ত্রণালয় তাদের ওয়েব পোর্টালে জানিয়েছে, দেশে মোট আবাদযোগ্য জমি ৮৫০৫২৭৮.১৪ হেক্টর, মোট সেচকৃত জমি ৭১২৪৮৯৫.৪১ হেক্টর, আবাদযোগ্য পতিত জমি ২০৪৩৬৬.২৪ হেক্টর। মৃত্তিকাসম্পদ উন্নয়ন ইনস্টিটিউটের (২০১০) হিসাবে কৃষিজমির পরিমাণ ৯ দশমিক ৫ মিলিয়ন হেক্টর, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (২০১১) হিসাবে ৮ দশমিক ৫২ মিলিয়ন হেক্টর এবং কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের (২০১১) হিসাবে ৯ দশমিক ১ মিলিয়ন হেক্টর। বাংলাদেশ মৃত্তিকাসম্পদ উন্নয়ন ইনস্টিটিউট কর্তৃক প্রকাশিত বাংলাদেশের মাটি ও জমিবিষয়ক পরিসংখ্যান বই, পরিসংখ্যান ব্যুরো এবং কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর প্রকাশিত কৃষি ডায়েরি (২০১১) থেকে দেখা যায়, ১৯৭৬ সালে দেশে কৃষিজমি ছিল ৯ দশমিক ৩৯ মিলিয়ন হেক্টর। ১৯৮০-৮১ সালে ৯ দশমিক ৩৮; ১৯৮৫-৮৬ সালে ৯ দশমিক ৪৪; ১৯৯০-৯১ সালে ৯ দশমিক ৭২; ১৯৯৫-৯৬ সালে ৮ দশমিক ৭২; ২০০০-০১ সালে ৮ দশমিক ৪০; ২০০৫-০৬ সালে ৮ দশমিক ৪২ এবং ২০১০-১১ সালে ৮ দশমিক ৫২ মিলিয়ন হেক্টর। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (২০১৫) তথ্যমতে, দেশে মোট ভূমির পরিমাণ প্রায় ১৪ দশমিক ৪ মিলিয়ন হেক্টর। দেশের মোট ভূমির ১৩ দশমিক ৩ শতাংশজুড়ে বনভূমি, ২০ দশমিক ১ শতাংশে জলাধার, ঘরবাড়ি, শিল্পকারখানা এবং বাকি ৬৬ দশমিক ৬ শতাংশ কৃষিকাজের জন্য ব্যবহার করা হয়। এর ভেতর আবাদযোগ্য জমি ৮৫ লাখ ৫ হাজার ২৭৮ দশমিক ১৪ হেক্টর। সেচকৃত জমি ৭১ লাখ ২৪ হাজার ৮৯৫ দশমিক ৪১ হেক্টর। এ ছাড়া আবাদযোগ্য ‘পতিত’ জমি আছে ২ লাখ ৪৩ হাজার ৬৬ দশমিক ২৪ হেক্টর।
দেশজুড়েই প্রতিদিন কমছে কৃষিজমি। গণমাধ্যমে কৃষিজমি হ্রাস ও বিনষ্টের খবর নিয়মিত প্রকাশিত ও প্রচারিত হয় না। সংবাদ পরিবেশনের ক্ষেত্রে আবাসন, নগরায়ণ, জবরদখল, শিল্পায়ন এসবকেই প্রধান সমস্যা হিসেবে দেখানো হয়। কিন্তু কৃষিজমি হ্রাসের সঙ্গে জড়িত সমাজ ও রাষ্ট্রের নানাবিধ সম্পর্ক এবং দরবারগুলো এ ক্ষেত্রে উপেক্ষিত থাকে। ইউএনডিপির (২০০৩) প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, প্রতিবছর ১ শতাংশ কৃষিজমি হারিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু রহমান ও হাসান (২০০৩) তাঁদের এক গবেষণায় জানিয়েছেন, এর পরিমাণ শূন্য দশমিক ১৩ শতাংশ। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (২০১১) ১৯৭৬-৭৭ থেকে ২০১০-১১ সালের কৃষিজমির তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখিয়েছে, কৃষিজমি হ্রাসের হার শূন্য দশমিক ২৭ শতাংশ। বাংলাদেশ পরিকল্পনা কমিশনের (২০০৯) এক প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, প্রতিবছর ১ শতাংশ কৃষিজমি অকৃষি খাতে চলে যাচ্ছে। রহমান (২০১০) তাঁর এক গবেষণায় জানিয়েছেন, প্রতিবছর শূন্য দশমিক ১ শতাংশ কৃষিজমি গৃহায়ণ, রাস্তাঘাট ও শিল্পাঞ্চলের জন্য ব্যবহৃত হচ্ছে। হাসান ও অন্যরা (২০১৩) বাংলাদেশের কৃষিজমির অবস্থা শীর্ষক এক গবেষণায় দেখিয়েছেন, ১৯৭৬ সালে দেশে কৃষিজমি ছিল ১৩ দশমিক ১ মিলিয়ন হেক্টর, ২০১০ সালে যা কমে দাঁড়ায় ১২ দশমিক ৪৪ মিলিয়ন হেক্টরে। মানে ৩৪ বছরে দেশে শূন্য দশমিক ৬৬ মিলিয়ন হেক্টর কৃষিজমি কমেছে। দেশে সর্বাধিক কৃষিজমি কমেছে চট্টগ্রামে এবং তা বছরে ১৭ হাজার ৯৬৮ হেক্টর। রাজশাহীতে ১৫ হাজার ৯৪৫ হেক্টর, ঢাকায় ১৫ হাজার ১৩১ হেক্টর, রংপুরে ১১ হাজার ৯৬ হেক্টর, খুলনায় ৮ হাজার ৭৮১ হেক্টর এবং বরিশালে ৬ হাজার ৬৬১ হেক্টর।
১৯৯২ সালে ব্রাজিলের রিও ডি জেনিরোতে অনুষ্ঠিত বিশ্ব ধরিত্রী সম্মেলনে টেকসই ভূমি ব্যবস্থাপনার ওপর জোর দেওয়া হয়। মাটি, পানি, প্রাণী, উদ্ভিদসহ মৃত্তিকা সম্পদের কার্যকর ব্যবহার, যা মানুষের চাহিদা মিটিয়ে প্রাণিসম্পদ ও পরিবেশগত সম্পর্ককে এক দীর্ঘমেয়াদি প্রক্রিয়ার ভেতর দিয়ে সংরক্ষণ করার চর্চাকেই টেকসই ভূমি ব্যবস্থাপনা হিসেবে স্বীকার করা হয়েছে। প্রতিদিন কৃষিজমি কমতে থাকা একটি দেশ কীভাবে এত সংকট সামাল দিয়েও সবার সামনে হাজির করছে খাবারভর্তি থালা, তা আসলেই এক বিস্ময়ের বিষয়। কেন, কীভাবে, কী কারণে কতটুকু কৃষিজমি কমছে—এই হিসাব সঠিক ও সুস্পষ্ট হওয়া জরুরি। কৃষিজমি দখল, দূষণ ও বিনষ্টকারীদের চিহ্নিত করে আইন ও বিচারের আওতায় আনা জরুরি। কেবল প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণা নয়; নাগরিক হিসেবে দেশের কৃষিজমি সুরক্ষায় জনতৎপরতা আরও সক্রিয় হওয়া জরুরি।
লেখক: লেখক ও গবেষক

একটা নিদারুণ খবরের পাশাপাশি আরেক আশাজাগানিয়া খবর দিয়ে শুরু হলো ৭ ফেব্রুয়ারির সকাল। তুরস্কে ভয়াবহ ভূমিকম্প এবং কৃষিজমি সুরক্ষায় বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর অঙ্গীকার। নিজ কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত মন্ত্রিসভার বৈঠকে কৃষিজমি সুরক্ষায় আবারও নির্দেশনা দিলেন প্রধানমন্ত্রী। সভা শেষে মন্ত্রিপরিষদ সচিব সংবাদ সম্মেলনে জানান, প্রধানমন্ত্রী স্পষ্ট নির্দেশ দিয়েছেন, তিন ফসলি জমি ধ্বংস করা যাবে না। এ ধরনের জমিতে কোনো প্রকল্প নেওয়া যাবে না; বরং এই জমিগুলো রক্ষা করতে হবে।
তবে এই প্রথম নয়, এর আগে বহুবার, বহু অনুষ্ঠান এবং প্রকল্পের উদ্বোধনে বহু বক্তৃতায় প্রধানমন্ত্রী কৃষিজমি সুরক্ষার ঘোষণা দিয়েছেন। ২০২২ সালের ১৯ ডিসেম্বর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের ২৫তম বিশ্ববিদ্যালয় দিবস ও প্রযুক্তি উদ্বোধনী অনুষ্ঠানেও কৃষিজমি নষ্ট করে যেখানে-সেখানে শিল্পকারখানা না করার কথা বলেন তিনি। একই বছরের ৬ ডিসেম্বর নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজারে বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানেও কৃষিজমি বিনষ্ট করে শিল্পায়ন না করার ঘোষণা দেন তিনি। ২০১৪ সালের ১৮ সেপ্টেম্বর প্রধানমন্ত্রী ভূমি মন্ত্রণালয় পরিদর্শন করে কৃষিজমি সুরক্ষা করে জমি অধিগ্রহণ প্রক্রিয়ার ক্ষেত্রে নির্দেশনা দেন। কৃষিজমি সুরক্ষায় প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য ও ঘোষণা একত্র করলে এই বিবরণ বেশ দীর্ঘ হবে। নির্বাচনী ইশতেহার থেকে শুরু করে নানা কর্মসূচি ও অনুষ্ঠানে দেশের আর কোনো রাজনীতিবিদ কৃষিজমি সুরক্ষায় এত বেশি ঘোষণা করেছেন কি না, জানা নেই। কিন্তু তারপরও কেন দেশে কৃষিজমি সুরক্ষিত থাকছে না? কেন প্রতিদিন বিদীর্ণ, চুরমার, উধাও হচ্ছে দেশের শত সহস্র বছরের কৃষিজমিগুলো? প্রধানমন্ত্রী ছাড়া অন্য কোনো জনপ্রতিনিধি ও রাজনীতিবিদ কেন কৃষিজমি সুরক্ষায় সাহসী অঙ্গীকার করছেন না?
এখনো দেশে কৃষিজমি সুরক্ষায় আইনটি চূড়ান্ত হয়নি। ২০১১ সালে কৃষিজমি সুরক্ষা ও ভূমি ব্যবহার নিয়ে একটি আইনের খসড়া হয়। পরে ‘কৃষিজমি সুরক্ষা ও ভূমি ব্যবহার আইন, ২০১৫’-এর খসড়া তৈরি হয়। পরে ‘কৃষিজমি সুরক্ষা আইন, ২০২১’ শিরোনামে আইনের খসড়া যুগোপযোগীকরণ, সংশোধন, নতুন অনুচ্ছেদ সংযোজন, বিয়োজনের জন্য ভূমি মন্ত্রণালয় ২২ নভেম্বর ২০২১ একটি সভার আয়োজন করে। যদিও সেই সভার সিদ্ধান্ত জানা যায়নি। এমনকি জনগুরুত্বপূর্ণ এই আইন নিয়ে দেশের কৃষকসমাজ, কৃষক সংগঠক, নাগরিক সমাজের কোনো মতামত ও অংশগ্রহণ প্রক্রিয়া এখনো শুরু হয়নি। কৃষিজমি সুরক্ষায় প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণা ও অঙ্গীকারের প্রতি আমরা কোনোভাবেই বিশ্বাস হারাতে চাই না। কিন্তু আমরা বিস্মিত হই, প্রধানমন্ত্রীর বারবার ঘোষণার পরও দেশজুড়ে প্রতিদিন কমছে কৃষিজমি। কৃষিজমি সুরক্ষায় প্রতিদিন সংগ্রাম করতে হচ্ছে পাহাড় কি সমতল, হাওর কি বরেন্দ্র, চর কি বিল, গড় থেকে নদী অববাহিকার গ্রামীণ সমাজকে। কৃষিজমি সুরক্ষায় দেশের গরিষ্ঠ ভাগ নাগরিকের যেন কোনো দায় ও দায়িত্ব নেই। তাহলে কীভাবে আমরা আমাদের কৃষি উৎপাদন, গ্রামীণ অর্থনীতি এবং খাদ্য সুরক্ষার ভিত মজবুত করে দাঁড়াব? আমরা আশা করব, কৃষিজমি সুরক্ষায় প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণাকে সত্য প্রমাণ করবে তাঁর মন্ত্রিপরিষদ। দ্রুত ‘কৃষিজমি সুরক্ষা আইন, ২০২১’ অনুমোদন ও বাস্তবায়ন করবে।
জাতীয় ভূমি ব্যবহার নীতি ২০০১-এর প্রেক্ষাপট অংশে বলা হয়েছে,...বাংলাদেশ কৃষিপ্রধান দেশ। কৃষি হচ্ছে এ দেশের এক-তৃতীয়াংশ জাতীয় আয়ের উৎস এবং দুই-তৃতীয়াংশ মানুষের জীবিকার অবলম্বন। তাই বাংলাদেশের ভূমি ও পানিসম্পদের গুরুত্বও অপরিসীম। ভূমি হচ্ছে মৌলিক প্রাকৃতিক সম্পদ, যা মানুষের নিত্যপ্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রী, শিল্পপণ্য, ভোগবিলাস, স্বাস্থ্য রক্ষার উপকরণ ইত্যাদি সবকিছুরই উৎস। জনসংখ্যা বৃদ্ধির কারণে মাথাপিছু জমির পরিমাণ দিন দিন হ্রাস পাচ্ছে। অর্থনৈতিক অগ্রগতির সঙ্গে সঙ্গে নগরায়ণের প্রবণতা বাড়ছে, শিল্পোন্নয়ন ঘটছে, রাস্তাঘাট, হাসপাতাল ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ইত্যাদির ক্রমাগত সম্প্রসারণ হচ্ছে, ফলে কৃষিজমির পরিমাণ ক্রমেই সংকুচিত হচ্ছে।
বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো ও কৃষি তথ্য সার্ভিসের (২০১৫) সূত্র উল্লেখ করে কৃষি মন্ত্রণালয় তাদের ওয়েব পোর্টালে জানিয়েছে, দেশে মোট আবাদযোগ্য জমি ৮৫০৫২৭৮.১৪ হেক্টর, মোট সেচকৃত জমি ৭১২৪৮৯৫.৪১ হেক্টর, আবাদযোগ্য পতিত জমি ২০৪৩৬৬.২৪ হেক্টর। মৃত্তিকাসম্পদ উন্নয়ন ইনস্টিটিউটের (২০১০) হিসাবে কৃষিজমির পরিমাণ ৯ দশমিক ৫ মিলিয়ন হেক্টর, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (২০১১) হিসাবে ৮ দশমিক ৫২ মিলিয়ন হেক্টর এবং কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের (২০১১) হিসাবে ৯ দশমিক ১ মিলিয়ন হেক্টর। বাংলাদেশ মৃত্তিকাসম্পদ উন্নয়ন ইনস্টিটিউট কর্তৃক প্রকাশিত বাংলাদেশের মাটি ও জমিবিষয়ক পরিসংখ্যান বই, পরিসংখ্যান ব্যুরো এবং কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর প্রকাশিত কৃষি ডায়েরি (২০১১) থেকে দেখা যায়, ১৯৭৬ সালে দেশে কৃষিজমি ছিল ৯ দশমিক ৩৯ মিলিয়ন হেক্টর। ১৯৮০-৮১ সালে ৯ দশমিক ৩৮; ১৯৮৫-৮৬ সালে ৯ দশমিক ৪৪; ১৯৯০-৯১ সালে ৯ দশমিক ৭২; ১৯৯৫-৯৬ সালে ৮ দশমিক ৭২; ২০০০-০১ সালে ৮ দশমিক ৪০; ২০০৫-০৬ সালে ৮ দশমিক ৪২ এবং ২০১০-১১ সালে ৮ দশমিক ৫২ মিলিয়ন হেক্টর। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (২০১৫) তথ্যমতে, দেশে মোট ভূমির পরিমাণ প্রায় ১৪ দশমিক ৪ মিলিয়ন হেক্টর। দেশের মোট ভূমির ১৩ দশমিক ৩ শতাংশজুড়ে বনভূমি, ২০ দশমিক ১ শতাংশে জলাধার, ঘরবাড়ি, শিল্পকারখানা এবং বাকি ৬৬ দশমিক ৬ শতাংশ কৃষিকাজের জন্য ব্যবহার করা হয়। এর ভেতর আবাদযোগ্য জমি ৮৫ লাখ ৫ হাজার ২৭৮ দশমিক ১৪ হেক্টর। সেচকৃত জমি ৭১ লাখ ২৪ হাজার ৮৯৫ দশমিক ৪১ হেক্টর। এ ছাড়া আবাদযোগ্য ‘পতিত’ জমি আছে ২ লাখ ৪৩ হাজার ৬৬ দশমিক ২৪ হেক্টর।
দেশজুড়েই প্রতিদিন কমছে কৃষিজমি। গণমাধ্যমে কৃষিজমি হ্রাস ও বিনষ্টের খবর নিয়মিত প্রকাশিত ও প্রচারিত হয় না। সংবাদ পরিবেশনের ক্ষেত্রে আবাসন, নগরায়ণ, জবরদখল, শিল্পায়ন এসবকেই প্রধান সমস্যা হিসেবে দেখানো হয়। কিন্তু কৃষিজমি হ্রাসের সঙ্গে জড়িত সমাজ ও রাষ্ট্রের নানাবিধ সম্পর্ক এবং দরবারগুলো এ ক্ষেত্রে উপেক্ষিত থাকে। ইউএনডিপির (২০০৩) প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, প্রতিবছর ১ শতাংশ কৃষিজমি হারিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু রহমান ও হাসান (২০০৩) তাঁদের এক গবেষণায় জানিয়েছেন, এর পরিমাণ শূন্য দশমিক ১৩ শতাংশ। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (২০১১) ১৯৭৬-৭৭ থেকে ২০১০-১১ সালের কৃষিজমির তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখিয়েছে, কৃষিজমি হ্রাসের হার শূন্য দশমিক ২৭ শতাংশ। বাংলাদেশ পরিকল্পনা কমিশনের (২০০৯) এক প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, প্রতিবছর ১ শতাংশ কৃষিজমি অকৃষি খাতে চলে যাচ্ছে। রহমান (২০১০) তাঁর এক গবেষণায় জানিয়েছেন, প্রতিবছর শূন্য দশমিক ১ শতাংশ কৃষিজমি গৃহায়ণ, রাস্তাঘাট ও শিল্পাঞ্চলের জন্য ব্যবহৃত হচ্ছে। হাসান ও অন্যরা (২০১৩) বাংলাদেশের কৃষিজমির অবস্থা শীর্ষক এক গবেষণায় দেখিয়েছেন, ১৯৭৬ সালে দেশে কৃষিজমি ছিল ১৩ দশমিক ১ মিলিয়ন হেক্টর, ২০১০ সালে যা কমে দাঁড়ায় ১২ দশমিক ৪৪ মিলিয়ন হেক্টরে। মানে ৩৪ বছরে দেশে শূন্য দশমিক ৬৬ মিলিয়ন হেক্টর কৃষিজমি কমেছে। দেশে সর্বাধিক কৃষিজমি কমেছে চট্টগ্রামে এবং তা বছরে ১৭ হাজার ৯৬৮ হেক্টর। রাজশাহীতে ১৫ হাজার ৯৪৫ হেক্টর, ঢাকায় ১৫ হাজার ১৩১ হেক্টর, রংপুরে ১১ হাজার ৯৬ হেক্টর, খুলনায় ৮ হাজার ৭৮১ হেক্টর এবং বরিশালে ৬ হাজার ৬৬১ হেক্টর।
১৯৯২ সালে ব্রাজিলের রিও ডি জেনিরোতে অনুষ্ঠিত বিশ্ব ধরিত্রী সম্মেলনে টেকসই ভূমি ব্যবস্থাপনার ওপর জোর দেওয়া হয়। মাটি, পানি, প্রাণী, উদ্ভিদসহ মৃত্তিকা সম্পদের কার্যকর ব্যবহার, যা মানুষের চাহিদা মিটিয়ে প্রাণিসম্পদ ও পরিবেশগত সম্পর্ককে এক দীর্ঘমেয়াদি প্রক্রিয়ার ভেতর দিয়ে সংরক্ষণ করার চর্চাকেই টেকসই ভূমি ব্যবস্থাপনা হিসেবে স্বীকার করা হয়েছে। প্রতিদিন কৃষিজমি কমতে থাকা একটি দেশ কীভাবে এত সংকট সামাল দিয়েও সবার সামনে হাজির করছে খাবারভর্তি থালা, তা আসলেই এক বিস্ময়ের বিষয়। কেন, কীভাবে, কী কারণে কতটুকু কৃষিজমি কমছে—এই হিসাব সঠিক ও সুস্পষ্ট হওয়া জরুরি। কৃষিজমি দখল, দূষণ ও বিনষ্টকারীদের চিহ্নিত করে আইন ও বিচারের আওতায় আনা জরুরি। কেবল প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণা নয়; নাগরিক হিসেবে দেশের কৃষিজমি সুরক্ষায় জনতৎপরতা আরও সক্রিয় হওয়া জরুরি।
লেখক: লেখক ও গবেষক

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
০৬ অক্টোবর ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫বাসস, ঢাকা

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
আজ সোমবার বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১-এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) মো. আলমগীরের জেরা শুরু করেন রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী আমীর হোসেন। আইনজীবী আমীর হোসেন পলাতক আসামি শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে শুনানি করছেন। এর আগে গত মঙ্গলবার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. আলমগীরের সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন হয়।
এই মামলার শুনানিতে এর আগে গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম প্রতীক শহীদ আবু সাঈদের বাবাসহ স্বজনহারা পরিবারের একাধিক সদস্য সাক্ষ্য দিয়েছেন। এ ছাড়া মামলার গুরুত্বপূর্ণ ‘স্টার উইটনেস’ হিসেবে সাক্ষ্য দেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক এবং জুলাই আন্দোলনের অন্যতম নেতৃত্বদানকারী নাহিদ ইসলাম এবং দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান।
গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে আওয়ামী লীগ সরকার, তাদের দলীয় ক্যাডার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করে বলে অভিযোগ ওঠে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে শেখ হাসিনা, তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং তৎকালীন আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে গত ১০ জুলাই অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল-১।
পরবর্তীকালে, এই মামলার অন্যতম আসামি সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন দোষ স্বীকার করে ঘটনার সত্যতা উদ্ঘাটনে রাজসাক্ষী (অ্যাপ্রোভার) হওয়ার জন্য ট্রাইব্যুনালে আবেদন করেন। ট্রাইব্যুনাল তাঁর আবেদন মঞ্জুর করলে তিনি রাজসাক্ষী হিসেবে এই মামলায় সাক্ষ্য দেন।
মামলার প্রসিকিউশন পক্ষে শুনানি করছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম এবং গাজী এসএইচ তামিম। শুনানিতে তাঁদের সঙ্গে অপর প্রসিকিউটররাও উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদিকে, এই মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের পক্ষে আছেন আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ।
মানবতাবিরোধী অপরাধের এই মামলা ছাড়াও ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আরও দুটি মামলা বিচারাধীন। এর মধ্যে একটি মামলায় আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে সংঘটিত গুম-খুনের ঘটনায় তাঁকে আসামি করা হয়েছে। অন্য মামলাটি হলো রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে হত্যাকাণ্ড নিয়ে। এই তিনটি মামলার বিচারকাজই বর্তমানে দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে চলমান।

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
আজ সোমবার বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১-এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) মো. আলমগীরের জেরা শুরু করেন রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী আমীর হোসেন। আইনজীবী আমীর হোসেন পলাতক আসামি শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে শুনানি করছেন। এর আগে গত মঙ্গলবার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. আলমগীরের সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন হয়।
এই মামলার শুনানিতে এর আগে গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম প্রতীক শহীদ আবু সাঈদের বাবাসহ স্বজনহারা পরিবারের একাধিক সদস্য সাক্ষ্য দিয়েছেন। এ ছাড়া মামলার গুরুত্বপূর্ণ ‘স্টার উইটনেস’ হিসেবে সাক্ষ্য দেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক এবং জুলাই আন্দোলনের অন্যতম নেতৃত্বদানকারী নাহিদ ইসলাম এবং দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান।
গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে আওয়ামী লীগ সরকার, তাদের দলীয় ক্যাডার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করে বলে অভিযোগ ওঠে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে শেখ হাসিনা, তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং তৎকালীন আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে গত ১০ জুলাই অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল-১।
পরবর্তীকালে, এই মামলার অন্যতম আসামি সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন দোষ স্বীকার করে ঘটনার সত্যতা উদ্ঘাটনে রাজসাক্ষী (অ্যাপ্রোভার) হওয়ার জন্য ট্রাইব্যুনালে আবেদন করেন। ট্রাইব্যুনাল তাঁর আবেদন মঞ্জুর করলে তিনি রাজসাক্ষী হিসেবে এই মামলায় সাক্ষ্য দেন।
মামলার প্রসিকিউশন পক্ষে শুনানি করছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম এবং গাজী এসএইচ তামিম। শুনানিতে তাঁদের সঙ্গে অপর প্রসিকিউটররাও উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদিকে, এই মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের পক্ষে আছেন আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ।
মানবতাবিরোধী অপরাধের এই মামলা ছাড়াও ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আরও দুটি মামলা বিচারাধীন। এর মধ্যে একটি মামলায় আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে সংঘটিত গুম-খুনের ঘটনায় তাঁকে আসামি করা হয়েছে। অন্য মামলাটি হলো রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে হত্যাকাণ্ড নিয়ে। এই তিনটি মামলার বিচারকাজই বর্তমানে দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে চলমান।

একটা নিদারুণ খবরের পাশাপাশি আরেক আশাজাগানিয়া খবর দিয়ে শুরু হলো ৭ ফেব্রুয়ারির সকাল। তুরস্কে ভয়াবহ ভূমিকম্প এবং কৃষিজমি সুরক্ষায় বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর অঙ্গীকার। নিজ কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত মন্ত্রিসভার বৈঠকে কৃষিজমি সুরক্ষায় আবারও নির্দেশনা দিলেন প্রধানমন্ত্রী। সভা শেষে মন্ত্রিপরিষদ সচিব সংবাদ সম্মেলনে
০৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৩
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর সঙ্গে।
মাছের সুষ্ঠু প্রজনন, উৎপাদন, মৎস্যসম্পদ সংরক্ষণ ও টেকসই মৎস্য আহরণের জন্য সমুদ্রে সব ধরনের মাছ শিকার ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা গতকাল বুধবার দিবাগত মধ্যরাতে শেষ হয়েছে। তাই গতকাল দিনভর ছিল উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে ব্যস্ততা। অনেকে দেখে নিচ্ছিলেন ট্রলার ঠিকঠাক আছে কি না, কেউ জালের ছেঁড়া অংশ সেলাই করছিলেন, কেউ আবার প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রীসহ অন্য সরঞ্জাম গুছিয়ে নিচ্ছিলেন।
বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র এবং ফকিরহাট উপ-মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ঘাটে গতকাল শত শত ট্রলার নোঙর করে রাখা ছিল। জেলেদের উপস্থিতিতে ঘাট এলাকা সরগরম হয়ে ওঠে। ফকিরহাটের মুদি-মনিহারি দোকানগুলোতে জেলেরা কেনাকাটা করতে ভিড় জমান। ফকিরহাট এলাকার বিসমিল্লাহ ট্রলারের মাঝি রহিম মিয়া বলেন, ‘সাগরে মাছ শিকারে যেতে সকল প্রস্তুতি নিয়েছি। নিষেধাজ্ঞার সময় শেষ হওয়ামাত্রই সাগরে নামব।’
জেলে নুরসাইদ ও ফোরকান মিয়া বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞার সময় পরিবার-পরিজন নিয়ে বেশ কষ্টে কেটেছে। ওই সময়ে বেশ টাকা ঋণ করেছি। এখন সাগরে যাব। দেখি আল্লাহ ঋণ পরিশোধ করতে দেন কি না।’
নোয়াখালীর হাতিয়ার সূর্যমুখী, বাংলাবাজার, কাজিরবাজার, পাইতান মার্কেট চেয়ারম্যান ঘাটসহ বেশ কয়েকটি ঘাটে গতকাল জেলেদের ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা গেছে। অনেকে নৌকায় জাল তুলছিলেন, আবার অনেকে জ্বালানি তেল মজুতসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী ট্রলারে নিয়ে যান। সূর্যমুখী ঘাটের এমভি মায়ের দোয়া ট্রলারের মাঝি জাফর উল্যা বলেন, ‘সাগরে ৮-১০ দিন থাকার প্রস্তুতি নিচ্ছি। সন্ধ্যায় সাগরের উদ্দেশে রওনা দেব।’
সূর্যমুখী ঘাট জেলে সমিতির সভাপতি জবিয়ল হক বলেন, ‘সাগরে নামতে প্রস্তুত নোয়াখালীর হাতিয়ার ২০টি ঘাটের লক্ষাধিক জেলে। এসব ঘাটে প্রায় ১০ হাজার ছোট-বড় ফিশিং ট্রলার রয়েছে। প্রতি ট্রলারে ১০ জন হলেও লক্ষাধিক জেলে এই মাছ ধরার সঙ্গে জড়িত। তাঁদের সবাই গত ৫৮ দিন তীরে বেকার ছিলেন।’
পিরোজপুরের ইন্দুরকানি উপজেলার পাড়েরহাট মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের পার্শ্ববর্তী এলাকার জেলেরা গতকাল দিনভর সাগরে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন। এ ছাড়া মঠবাড়িয়া উপজেলার সাপলেজা, খেতাচিড়া, বড়মাছুয়া, ছোটমাছুয়া, ভান্ডারিয়া উপজেলার চরখালী, হেতালিয়া, কাউখালী উপজেলার সোনাকুর এলাকার জেলেরা, সদর উপজেলা এবং নেছারাবাদ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার জেলেরা প্রস্তুতি শেষে গত রাতে বঙ্গোপসাগরে রওনা হন।
কয়েক দিন ধরে কক্সবাজার উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে নৌকা, জাল মেরামতসহ বিভিন্ন প্রস্তুতি সেরেছেন জেলেরা। গতকাল মেরিন ড্রাইভের টেকনাফের খুরেরমুখ, সাবরাং ও বাহারছড়া এলাকায় দেখা গেছে, সড়কে দাঁড় করিয়ে রাখা সারি সারি ট্রলারে জাল ও রসদ তোলেন জেলেরা।
একটি ট্রলারের মাঝি আবু তাহের জানান, এবার ভারতের সঙ্গে মিল রেখে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় কেউ সাগরে মাছ শিকারে নামেনি। এতে উপকূলের কাছাকাছি সাগরে জাল ফেললেই ইলিশসহ অন্য মাছ পাওয়া যাবে বলে আশাবাদী তিনি।
কক্সবাজার শহরের ফিশারি ঘাটের মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির পরিচালক জুলফিকার আলী জানান, কক্সবাজার উপকূলে ছোট-বড় ৭ হাজারের মতো যান্ত্রিক ট্রলার রয়েছে। এসব ট্রলারে প্রায় এক লাখ জেলে ও শ্রমিক নিয়োজিত রয়েছেন। অধিকাংশ ট্রলার নিষেধাজ্ঞা ওঠার সঙ্গে সঙ্গে সাগরে রওনা হবে।
[প্রতিবেদন তৈরিতে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছেন বরগুনা ও আমতলী, পিরোজপুর, কক্সবাজার এবং হাতিয়া প্রতিনিধি]

‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর সঙ্গে।
মাছের সুষ্ঠু প্রজনন, উৎপাদন, মৎস্যসম্পদ সংরক্ষণ ও টেকসই মৎস্য আহরণের জন্য সমুদ্রে সব ধরনের মাছ শিকার ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা গতকাল বুধবার দিবাগত মধ্যরাতে শেষ হয়েছে। তাই গতকাল দিনভর ছিল উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে ব্যস্ততা। অনেকে দেখে নিচ্ছিলেন ট্রলার ঠিকঠাক আছে কি না, কেউ জালের ছেঁড়া অংশ সেলাই করছিলেন, কেউ আবার প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রীসহ অন্য সরঞ্জাম গুছিয়ে নিচ্ছিলেন।
বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র এবং ফকিরহাট উপ-মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ঘাটে গতকাল শত শত ট্রলার নোঙর করে রাখা ছিল। জেলেদের উপস্থিতিতে ঘাট এলাকা সরগরম হয়ে ওঠে। ফকিরহাটের মুদি-মনিহারি দোকানগুলোতে জেলেরা কেনাকাটা করতে ভিড় জমান। ফকিরহাট এলাকার বিসমিল্লাহ ট্রলারের মাঝি রহিম মিয়া বলেন, ‘সাগরে মাছ শিকারে যেতে সকল প্রস্তুতি নিয়েছি। নিষেধাজ্ঞার সময় শেষ হওয়ামাত্রই সাগরে নামব।’
জেলে নুরসাইদ ও ফোরকান মিয়া বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞার সময় পরিবার-পরিজন নিয়ে বেশ কষ্টে কেটেছে। ওই সময়ে বেশ টাকা ঋণ করেছি। এখন সাগরে যাব। দেখি আল্লাহ ঋণ পরিশোধ করতে দেন কি না।’
নোয়াখালীর হাতিয়ার সূর্যমুখী, বাংলাবাজার, কাজিরবাজার, পাইতান মার্কেট চেয়ারম্যান ঘাটসহ বেশ কয়েকটি ঘাটে গতকাল জেলেদের ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা গেছে। অনেকে নৌকায় জাল তুলছিলেন, আবার অনেকে জ্বালানি তেল মজুতসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী ট্রলারে নিয়ে যান। সূর্যমুখী ঘাটের এমভি মায়ের দোয়া ট্রলারের মাঝি জাফর উল্যা বলেন, ‘সাগরে ৮-১০ দিন থাকার প্রস্তুতি নিচ্ছি। সন্ধ্যায় সাগরের উদ্দেশে রওনা দেব।’
সূর্যমুখী ঘাট জেলে সমিতির সভাপতি জবিয়ল হক বলেন, ‘সাগরে নামতে প্রস্তুত নোয়াখালীর হাতিয়ার ২০টি ঘাটের লক্ষাধিক জেলে। এসব ঘাটে প্রায় ১০ হাজার ছোট-বড় ফিশিং ট্রলার রয়েছে। প্রতি ট্রলারে ১০ জন হলেও লক্ষাধিক জেলে এই মাছ ধরার সঙ্গে জড়িত। তাঁদের সবাই গত ৫৮ দিন তীরে বেকার ছিলেন।’
পিরোজপুরের ইন্দুরকানি উপজেলার পাড়েরহাট মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের পার্শ্ববর্তী এলাকার জেলেরা গতকাল দিনভর সাগরে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন। এ ছাড়া মঠবাড়িয়া উপজেলার সাপলেজা, খেতাচিড়া, বড়মাছুয়া, ছোটমাছুয়া, ভান্ডারিয়া উপজেলার চরখালী, হেতালিয়া, কাউখালী উপজেলার সোনাকুর এলাকার জেলেরা, সদর উপজেলা এবং নেছারাবাদ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার জেলেরা প্রস্তুতি শেষে গত রাতে বঙ্গোপসাগরে রওনা হন।
কয়েক দিন ধরে কক্সবাজার উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে নৌকা, জাল মেরামতসহ বিভিন্ন প্রস্তুতি সেরেছেন জেলেরা। গতকাল মেরিন ড্রাইভের টেকনাফের খুরেরমুখ, সাবরাং ও বাহারছড়া এলাকায় দেখা গেছে, সড়কে দাঁড় করিয়ে রাখা সারি সারি ট্রলারে জাল ও রসদ তোলেন জেলেরা।
একটি ট্রলারের মাঝি আবু তাহের জানান, এবার ভারতের সঙ্গে মিল রেখে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় কেউ সাগরে মাছ শিকারে নামেনি। এতে উপকূলের কাছাকাছি সাগরে জাল ফেললেই ইলিশসহ অন্য মাছ পাওয়া যাবে বলে আশাবাদী তিনি।
কক্সবাজার শহরের ফিশারি ঘাটের মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির পরিচালক জুলফিকার আলী জানান, কক্সবাজার উপকূলে ছোট-বড় ৭ হাজারের মতো যান্ত্রিক ট্রলার রয়েছে। এসব ট্রলারে প্রায় এক লাখ জেলে ও শ্রমিক নিয়োজিত রয়েছেন। অধিকাংশ ট্রলার নিষেধাজ্ঞা ওঠার সঙ্গে সঙ্গে সাগরে রওনা হবে।
[প্রতিবেদন তৈরিতে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছেন বরগুনা ও আমতলী, পিরোজপুর, কক্সবাজার এবং হাতিয়া প্রতিনিধি]

একটা নিদারুণ খবরের পাশাপাশি আরেক আশাজাগানিয়া খবর দিয়ে শুরু হলো ৭ ফেব্রুয়ারির সকাল। তুরস্কে ভয়াবহ ভূমিকম্প এবং কৃষিজমি সুরক্ষায় বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর অঙ্গীকার। নিজ কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত মন্ত্রিসভার বৈঠকে কৃষিজমি সুরক্ষায় আবারও নির্দেশনা দিলেন প্রধানমন্ত্রী। সভা শেষে মন্ত্রিপরিষদ সচিব সংবাদ সম্মেলনে
০৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৩
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
০৬ অক্টোবর ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
ভারতের নিষেধাজ্ঞার এক দিন পরই গত রোববার লালমনিরহাটের বুড়িমারী ও যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দরসহ বিভিন্ন বন্দরে পণ্যের ট্রাক আটকে দেয় ভারত। সংশ্লিষ্টদের সূত্রে জানা যায়, রোববার ভারতের আমদানি বিধিনিষেধের কারণে বুড়িমারী সীমান্তে প্রাণের ১৭ ট্রাক খাদ্যপণ্য আটকে যায়। এ ছাড়া বেনাপোলে ৩৬টি পোশাক বোঝাই ট্রাকসহ অন্যান্য পণ্যের শতাধিক ট্রাক ঢুকতে পারেনি।
গতকাল সোমবার পর্যন্ত বুড়িমারী থেকে প্রাণের পণ্যবোঝাই ট্রাকগুলোর অর্ধেকের বেশি ফেরত নিয়ে আসে প্রতিষ্ঠানটি। এ ছাড়া বেনাপোলে পোর্টের ভেতরে ২৪টি ট্রাক ছাড়া বাকিগুলো ফেরত চলে যায়।
বেনাপোল বন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. সাজেদুর রহমান গতকাল সোমবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, গতকাল পোর্টের ভেতর ও বাইরে শতাধিক ট্রাক দাঁড়িয়ে ছিল। আজ পোর্টের ভেতরের ২৪টি ছাড়া বাকিগুলো ফেরত নিয়ে গেছেন মালিকেরা। এখন পর্যন্ত মনে হচ্ছে, পোর্টের ভেতরের ট্রাকগুলোও ফেরত নিতে হবে।
জানতে চাইলে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পরিচালক (বিপণন) কামরুজ্জামান কামাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের হাতে ৬ মিলিয়ন ডলারের ক্রয় আদেশ রয়েছে। তার মধ্য থেকে রোববার বুড়িমারী দিয়ে ১৭ ট্রাকবোঝাই পণ্য পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু সেগুলো ঢুকতে পারেনি। ট্রাকগুলো ফেরত আনা হচ্ছে। নতুন করে কাগজপত্র তৈরি করে অন্য পথ দিয়ে পণ্য পাঠাতে হবে।’
বেনাপোল স্থলবন্দর সূত্রে জানা যায়, ওই ২৪টি ট্রাক পোর্টের ভেতরে থাকায় এখনো তারা ভারতে প্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে। তাদের আশা, যেহেতু নিষেধাজ্ঞার আগে এই পণ্যগুলোর এলসি করা হয়েছিল, তাই এগুলো প্রবেশে অনুমতি পাবে। তবে এটি নির্ভর করবে বাংলাদেশ সরকারের আলোচনার ওপর।
এমন পরিস্থিতিতে সরকারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ইতিমধ্যে অনেক রপ্তানিকারক রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সঙ্গে আলোচনা করে সরকারের সহযোগিতা চেয়েছে।
স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে আজ মঙ্গলবার আন্তমন্ত্রণালয়ের সভা ডেকেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে বিকেল ৪টায় আন্তমন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এই সভা অনুষ্ঠিত হবে।
সভায় নৌপরিবহন ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো, জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের প্রতিনিধিদের উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া ব্যবসায়ী প্রতিনিধি হিসেবে এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ, ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রতিনিধিদের উপস্থিতির জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
ভারতের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গত শনিবার হঠাৎ এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি নিষিদ্ধ করে। শুধু ভারতের নবসেবা ও কলকাতা সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করে দেশটির আমদানিকারকেরা বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি করতে পারবেন বলে ওই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। এ ছাড়া বাংলাদেশ থেকে ভারতের আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা ও মিজোরাম, পশ্চিমবঙ্গের চ্যাংড়াবান্দা ও ফুলবাড়ী শুল্ক স্টেশন দিয়ে ফল, ফলের স্বাদযুক্ত পানীয়, কোমল পানীয়, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, প্লাস্টিক পণ্য, সুতা, সুতার উপজাত, আসবাব রপ্তানিও নিষিদ্ধ করা হয় ওই বিজ্ঞপ্তিতে।
আমদানি ও রপ্তানিসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা জানান, দেশের ২৪টি বন্দরের মধ্যে ১৬টি বন্দর দিয়ে ভারতের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়ে থাকে। তবে যোগাযোগব্যবস্থা সহজ হওয়ায় বেনাপোল ও ভারতের পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে সবচেয়ে বেশি আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়। এর পরিমাণ ৮০ শতাংশ। বেনাপোল বন্দর দিয়ে প্রতিদিন ভারতে ২৫০ থেকে ৩০০ ট্রাকে বিভিন্ন ধরনের পণ্য রপ্তানি হয়। এর মধ্যে শতাধিক ট্রাক পণ্য থাকে তৈরি পোশাক।
এর আগে গত ৮ এপ্রিল বাংলাদেশের জন্য ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করে ভারত। ফলে ভারতের বিমানবন্দর ব্যবহার করে তৃতীয় কোনো দেশে তৈরি পোশাক রপ্তানি করতে পারছে না বাংলাদেশ। অন্যদিকে প্রায় এক মাস আগে ভারত থেকে বেনাপোল, ভোমরা, সোনামসজিদ, বাংলাবান্ধা, বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানির সুযোগ বন্ধ করে দেয় বাংলাদেশের জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমানের মতে, এই পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপে তুলনামূলকভাবে বেশি নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বাংলাদেশের ওপর। তাই ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর চেষ্টা অব্যাহত রাখাই সরকারের উচিত বলে মনে করছেন তিনি।
মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আলোচনার মাধ্যমে বাংলাদেশ এবং ভারতের বিরোধপূর্ণ বিষয়সমূহ মিটিয়ে ফেলতে হবে এবং দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এটাই হবে উভয় দেশের জন্য কল্যাণকর।

ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
ভারতের নিষেধাজ্ঞার এক দিন পরই গত রোববার লালমনিরহাটের বুড়িমারী ও যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দরসহ বিভিন্ন বন্দরে পণ্যের ট্রাক আটকে দেয় ভারত। সংশ্লিষ্টদের সূত্রে জানা যায়, রোববার ভারতের আমদানি বিধিনিষেধের কারণে বুড়িমারী সীমান্তে প্রাণের ১৭ ট্রাক খাদ্যপণ্য আটকে যায়। এ ছাড়া বেনাপোলে ৩৬টি পোশাক বোঝাই ট্রাকসহ অন্যান্য পণ্যের শতাধিক ট্রাক ঢুকতে পারেনি।
গতকাল সোমবার পর্যন্ত বুড়িমারী থেকে প্রাণের পণ্যবোঝাই ট্রাকগুলোর অর্ধেকের বেশি ফেরত নিয়ে আসে প্রতিষ্ঠানটি। এ ছাড়া বেনাপোলে পোর্টের ভেতরে ২৪টি ট্রাক ছাড়া বাকিগুলো ফেরত চলে যায়।
বেনাপোল বন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. সাজেদুর রহমান গতকাল সোমবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, গতকাল পোর্টের ভেতর ও বাইরে শতাধিক ট্রাক দাঁড়িয়ে ছিল। আজ পোর্টের ভেতরের ২৪টি ছাড়া বাকিগুলো ফেরত নিয়ে গেছেন মালিকেরা। এখন পর্যন্ত মনে হচ্ছে, পোর্টের ভেতরের ট্রাকগুলোও ফেরত নিতে হবে।
জানতে চাইলে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পরিচালক (বিপণন) কামরুজ্জামান কামাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের হাতে ৬ মিলিয়ন ডলারের ক্রয় আদেশ রয়েছে। তার মধ্য থেকে রোববার বুড়িমারী দিয়ে ১৭ ট্রাকবোঝাই পণ্য পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু সেগুলো ঢুকতে পারেনি। ট্রাকগুলো ফেরত আনা হচ্ছে। নতুন করে কাগজপত্র তৈরি করে অন্য পথ দিয়ে পণ্য পাঠাতে হবে।’
বেনাপোল স্থলবন্দর সূত্রে জানা যায়, ওই ২৪টি ট্রাক পোর্টের ভেতরে থাকায় এখনো তারা ভারতে প্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে। তাদের আশা, যেহেতু নিষেধাজ্ঞার আগে এই পণ্যগুলোর এলসি করা হয়েছিল, তাই এগুলো প্রবেশে অনুমতি পাবে। তবে এটি নির্ভর করবে বাংলাদেশ সরকারের আলোচনার ওপর।
এমন পরিস্থিতিতে সরকারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ইতিমধ্যে অনেক রপ্তানিকারক রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সঙ্গে আলোচনা করে সরকারের সহযোগিতা চেয়েছে।
স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে আজ মঙ্গলবার আন্তমন্ত্রণালয়ের সভা ডেকেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে বিকেল ৪টায় আন্তমন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এই সভা অনুষ্ঠিত হবে।
সভায় নৌপরিবহন ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো, জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের প্রতিনিধিদের উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া ব্যবসায়ী প্রতিনিধি হিসেবে এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ, ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রতিনিধিদের উপস্থিতির জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
ভারতের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গত শনিবার হঠাৎ এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি নিষিদ্ধ করে। শুধু ভারতের নবসেবা ও কলকাতা সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করে দেশটির আমদানিকারকেরা বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি করতে পারবেন বলে ওই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। এ ছাড়া বাংলাদেশ থেকে ভারতের আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা ও মিজোরাম, পশ্চিমবঙ্গের চ্যাংড়াবান্দা ও ফুলবাড়ী শুল্ক স্টেশন দিয়ে ফল, ফলের স্বাদযুক্ত পানীয়, কোমল পানীয়, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, প্লাস্টিক পণ্য, সুতা, সুতার উপজাত, আসবাব রপ্তানিও নিষিদ্ধ করা হয় ওই বিজ্ঞপ্তিতে।
আমদানি ও রপ্তানিসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা জানান, দেশের ২৪টি বন্দরের মধ্যে ১৬টি বন্দর দিয়ে ভারতের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়ে থাকে। তবে যোগাযোগব্যবস্থা সহজ হওয়ায় বেনাপোল ও ভারতের পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে সবচেয়ে বেশি আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়। এর পরিমাণ ৮০ শতাংশ। বেনাপোল বন্দর দিয়ে প্রতিদিন ভারতে ২৫০ থেকে ৩০০ ট্রাকে বিভিন্ন ধরনের পণ্য রপ্তানি হয়। এর মধ্যে শতাধিক ট্রাক পণ্য থাকে তৈরি পোশাক।
এর আগে গত ৮ এপ্রিল বাংলাদেশের জন্য ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করে ভারত। ফলে ভারতের বিমানবন্দর ব্যবহার করে তৃতীয় কোনো দেশে তৈরি পোশাক রপ্তানি করতে পারছে না বাংলাদেশ। অন্যদিকে প্রায় এক মাস আগে ভারত থেকে বেনাপোল, ভোমরা, সোনামসজিদ, বাংলাবান্ধা, বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানির সুযোগ বন্ধ করে দেয় বাংলাদেশের জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমানের মতে, এই পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপে তুলনামূলকভাবে বেশি নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বাংলাদেশের ওপর। তাই ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর চেষ্টা অব্যাহত রাখাই সরকারের উচিত বলে মনে করছেন তিনি।
মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আলোচনার মাধ্যমে বাংলাদেশ এবং ভারতের বিরোধপূর্ণ বিষয়সমূহ মিটিয়ে ফেলতে হবে এবং দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এটাই হবে উভয় দেশের জন্য কল্যাণকর।

একটা নিদারুণ খবরের পাশাপাশি আরেক আশাজাগানিয়া খবর দিয়ে শুরু হলো ৭ ফেব্রুয়ারির সকাল। তুরস্কে ভয়াবহ ভূমিকম্প এবং কৃষিজমি সুরক্ষায় বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর অঙ্গীকার। নিজ কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত মন্ত্রিসভার বৈঠকে কৃষিজমি সুরক্ষায় আবারও নির্দেশনা দিলেন প্রধানমন্ত্রী। সভা শেষে মন্ত্রিপরিষদ সচিব সংবাদ সম্মেলনে
০৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৩
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
০৬ অক্টোবর ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
১৮৯৮ সালে ভারতের উত্তর প্রদেশের একটি ধূলিধূসর টিলা খুঁড়ে পাওয়া মূল্যবান এই রত্নগুলো এক শতাব্দীর বেশি সময় ধরে একটি বেসরকারি ব্রিটিশ সংগ্রহাগারে প্রায় দৃষ্টিচক্ষুর আড়ালে ছিল। এখন যেহেতু রত্নগুলোর হাতবদলের সময় এসেছে, তাই নতুন সংগ্রাহকেরা আগ্রহ নিয়ে এগুলো সংগ্রহের জন্য অপেক্ষা করছেন। কিন্তু এখানে একটা অস্বস্তিও তৈরি হয়েছে।
গৌতম বুদ্ধের জন্মস্থান লুম্বিনীর কাছাকাছি, বর্তমানে ভারতের উত্তর প্রদেশে একটি ইটের ঘরের ভেতর থেকে প্রায় ১ হাজার ৮০০টি মুক্তা, রুবি, টোপাজ, নীলা ও নকশা করা সোনার পাত সংগ্রহ করা হয়েছিল। তবে এই রত্নগুলোর সঙ্গে সঙ্গে একটি খোদাই করা পাত্রে হাড়ের টুকরাও পাওয়া যায়, যেগুলোকে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষ বলে শনাক্ত করা হয়। এই আবিষ্কার তখন প্রত্নতত্ত্বের জগতে ব্যাপক আলোড়ন তোলে।
সাদাবি’স এশিয়ার চেয়ারম্যান নিকোলাস চাউ মনে করেন, স্মরণকালের বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর মাঝে এই রত্নসম্ভার অন্যতম। তবে এগুলো নিলামে তোলার কারণে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। আর তা হচ্ছে—ভারতের ইতিহাসের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িয়ে থাকা এবং বৌদ্ধদের কাছে পবিত্র এই সম্পদ বিক্রি করা কি নৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য?
১৮৯৮ সালে ব্রিটিশ এস্টেট ম্যানেজার উইলিয়াম ক্ল্যাক্সটন পেপ্পে লুম্বিনির ঠিক দক্ষিণে পিপ্রাওয়ায় অবস্থিত একটি ঢিবি খনন করেন। সেখান থেকেই প্রায় ২ হাজার বছর আগের ওই নির্দশনগুলো খুঁজে পাওয়া যায়।
ইতিহাসবিদদের মতে, প্রাপ্ত রত্নসম্ভার ও দেহাবশেষ, যা তখনো পর্যন্ত অক্ষত ছিল, সেগুলো গৌতম বুদ্ধের শাক্য বংশের এবং বিশ্বব্যাপী বৌদ্ধদের ঐতিহ্য। হাড়ের নিদর্শনগুলো থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা ও মিয়ানমারের মতো দেশগুলোতে বিতরণ করা হয়েছে। এসব দেশে এখনো সেগুলোর পূজা করা হয়।

আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
১৮৯৮ সালে ভারতের উত্তর প্রদেশের একটি ধূলিধূসর টিলা খুঁড়ে পাওয়া মূল্যবান এই রত্নগুলো এক শতাব্দীর বেশি সময় ধরে একটি বেসরকারি ব্রিটিশ সংগ্রহাগারে প্রায় দৃষ্টিচক্ষুর আড়ালে ছিল। এখন যেহেতু রত্নগুলোর হাতবদলের সময় এসেছে, তাই নতুন সংগ্রাহকেরা আগ্রহ নিয়ে এগুলো সংগ্রহের জন্য অপেক্ষা করছেন। কিন্তু এখানে একটা অস্বস্তিও তৈরি হয়েছে।
গৌতম বুদ্ধের জন্মস্থান লুম্বিনীর কাছাকাছি, বর্তমানে ভারতের উত্তর প্রদেশে একটি ইটের ঘরের ভেতর থেকে প্রায় ১ হাজার ৮০০টি মুক্তা, রুবি, টোপাজ, নীলা ও নকশা করা সোনার পাত সংগ্রহ করা হয়েছিল। তবে এই রত্নগুলোর সঙ্গে সঙ্গে একটি খোদাই করা পাত্রে হাড়ের টুকরাও পাওয়া যায়, যেগুলোকে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষ বলে শনাক্ত করা হয়। এই আবিষ্কার তখন প্রত্নতত্ত্বের জগতে ব্যাপক আলোড়ন তোলে।
সাদাবি’স এশিয়ার চেয়ারম্যান নিকোলাস চাউ মনে করেন, স্মরণকালের বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর মাঝে এই রত্নসম্ভার অন্যতম। তবে এগুলো নিলামে তোলার কারণে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। আর তা হচ্ছে—ভারতের ইতিহাসের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িয়ে থাকা এবং বৌদ্ধদের কাছে পবিত্র এই সম্পদ বিক্রি করা কি নৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য?
১৮৯৮ সালে ব্রিটিশ এস্টেট ম্যানেজার উইলিয়াম ক্ল্যাক্সটন পেপ্পে লুম্বিনির ঠিক দক্ষিণে পিপ্রাওয়ায় অবস্থিত একটি ঢিবি খনন করেন। সেখান থেকেই প্রায় ২ হাজার বছর আগের ওই নির্দশনগুলো খুঁজে পাওয়া যায়।
ইতিহাসবিদদের মতে, প্রাপ্ত রত্নসম্ভার ও দেহাবশেষ, যা তখনো পর্যন্ত অক্ষত ছিল, সেগুলো গৌতম বুদ্ধের শাক্য বংশের এবং বিশ্বব্যাপী বৌদ্ধদের ঐতিহ্য। হাড়ের নিদর্শনগুলো থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা ও মিয়ানমারের মতো দেশগুলোতে বিতরণ করা হয়েছে। এসব দেশে এখনো সেগুলোর পূজা করা হয়।

একটা নিদারুণ খবরের পাশাপাশি আরেক আশাজাগানিয়া খবর দিয়ে শুরু হলো ৭ ফেব্রুয়ারির সকাল। তুরস্কে ভয়াবহ ভূমিকম্প এবং কৃষিজমি সুরক্ষায় বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর অঙ্গীকার। নিজ কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত মন্ত্রিসভার বৈঠকে কৃষিজমি সুরক্ষায় আবারও নির্দেশনা দিলেন প্রধানমন্ত্রী। সভা শেষে মন্ত্রিপরিষদ সচিব সংবাদ সম্মেলনে
০৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৩
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
০৬ অক্টোবর ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫