তুরস্ক ও সিরিয়ায় শক্তিশালী ভূমিকম্পে নিহতের সংখ্যা দেড় হাজার ছাড়িয়ে গেছে। এর মধ্যে বেশি প্রাণহানি ঘটেছে তুরস্কে। আহত কয়েক হাজার মানুষ। ধ্বংসস্তূপের নিচে এখনো আটকা পড়ে আছেন অনেকে।
এসব অসহায় মানুষকে বাঁচাতে উদ্ধারকারীদের সঙ্গে সাহায্য করতে ছুটে আসছেন সাধারণ মানুষও। তাঁদেরই একজন তুরস্কের পূর্বাঞ্চলীয় দিয়ারবাকিরের বাসিন্দা মুহিতিন ওরাক্কি। বার্তা সংস্থা রয়টার্সের তিনি বর্ণনা করেন সেখানকার পরিস্থিতি।
৩০ বছর বয়সী ওরাক্কি বলেন, ‘সর্বত্র চিৎকার শুনছিলাম। আমি নিজেই পাথর সরাতে শুরু করি। আমরা বন্ধুরা মিলে আহতদের বের করে আনি, কিন্তু চিৎকার থামছিল না। পরে উদ্ধারকারী দল আসে।’
ধ্বংসস্তূপে তাঁর পরিবারের সাত সদস্য চাপা পড়েছেন বলেও জানান ওরাক্কি। তিনি বলেন, ‘আমার বোন এবং তাঁর তিন সন্তান ধ্বংসস্তূপের নিচে চাপা পড়েছে। সেই সঙ্গে বোনের স্বামী এবং শ্বশুর-শাশুড়িও।’
স্থানীয় সময় গতকাল সোমবার (৬ ফেব্রুয়ারি) ভোর ৪টা ১৭ মিনিটের দিকে আঘাত হানা ভূমিকম্পটির উৎপত্তিস্থল ছিল তুরস্কের গাজিয়ানটেপ শহরের ১৭ দশমিক ৯ কিলোমিটার গভীরে। তখন বেশির ভাগ মানুষ ঘুমিয়েছিলেন। হঠাৎ ভয়ানক ঝাঁকুনিতে ঘুম ভাঙে গাজিয়ানটেপের বেশির ভাগ বাসিন্দার। এরদেম নামের সেখানকার এক বাসিন্দা বিবিসিকে বলছিলেন সেই মুহূর্তের কথা।
এরদেম বলেন, ‘আমি আমার ৪০ বছরের জীবনে এর আগে এমন কিছু দেখিনি। অন্তত তিনবার খুব জোরে ঝাঁকুনি টের পাই। মনে হচ্ছিল বাচ্চাদের মতো কেউ দোলনায় দোল দিচ্ছে।’
তুরস্কের পশ্চিমাঞ্চলের আদানা শহরের বাসিন্দা নিলুফার আসলান বলেন, ‘যখন আমাদের পাঁচতলার অ্যাপার্টমেন্ট অনেক জোরে কেঁপে ওঠে, আমি ভেবেছিলাম পরিবারের সবাই মারা যাব। তখন পরিবারের অন্য সদস্যদের ডেকে বলি, মরতেই যখন হবে, চলো সবাই একসঙ্গে মরি।
ভূমিকম্প থামলে আসলান বাইরে ছুটে যান। তিনি বলেন, ‘আমি আমার সঙ্গে কিছু নিতে পারিনি, একেবারে খালি হাতেই ছুটে বের হই। এরপর দেখি আমার ভবনটির চারপাশের চারটি ভবন ধসে পড়েছে।’
এদিকে দুপুরের দিকে তুরস্কে আরও একটি ভূমিকম্প হয়। গাজিয়ানটেপ শহরের উত্তরে এলবিস্তান এলাকায় হওয়া ভূমিকম্পটির রিখটার স্কেলে মাত্রা ছিল ৭ দশমিক ৫।
মন্তব্য
ইহাতে মন্তব্য প্রদান বন্ধ রয়েছে