বিভুরঞ্জন সরকার

আগামী নির্বাচন সামনে রেখে রাজনৈতিক দলগুলোর প্রস্তুতি শুরু হয়েছে। যারা ক্ষমতায় আছে তারা আরেক দফা ক্ষমতায় থাকার জন্য ছক কষছে। আর যারা ক্ষমতায় যেতে চায়, তারাও পরিকল্পনা করছে মিত্র বাড়িয়ে নিজেদের শক্তি দেখানোর। টানা তিন মেয়াদে ক্ষমতায় আছে আওয়ামী লীগ। দীর্ঘ প্রতীক্ষার অবসান ঘটিয়ে ক্ষমতায় যেতে চায় বিএনপি। এই দুটি দলই দেশে ভোটের রাজনীতির বড় ফ্যাক্টর। এর বাইরে কিছু ভোট আছে জাতীয় পার্টি ও জামায়াতে ইসলামীর। জাতীয় পার্টি এত দিন আওয়ামী লীগের সঙ্গে ছিল, এবার সিদ্ধান্তহীন আছে। হাওয়া বুঝে লাঙল চালাবে। আওয়ামী লীগের সঙ্গে থাকবে, না নতুন মিত্র খুঁজবে—তা এখনই পরিষ্কার করছে না। আর জামায়াতের অবস্থানও রহস্যঘেরা। দলটির নিবন্ধন নেই। বিএনপির জোটে জামায়াত আছে, আবার নেইও। বিএনপি ও জামায়াতের সম্পর্ক নিয়ে গুজব-গুঞ্জন যা-ই থাক, এরা কেউ কাউকে ছাড়বে বলে মনে হয় না।
বিএনপি পুরোনো মিত্রদের শুধু সঙ্গে রাখতে চায় না, সরকার পতনের আন্দোলনে এবং নির্বাচনের পরে ‘জাতীয় সরকার’ গঠনের লক্ষ্যে নতুন মিত্রের সন্ধানেও আছে।
নড়বড়ে অবস্থান হলেও বিএনপির একটি ২০-দলীয় জোট আছে। এই জোটের কেউ কেউ ঘোষণা দিয়ে জোট ছেড়েছে, আবার তাদের একাংশ জোটে আছেও; অর্থাৎ ২০-দলীয় জোটে প্রকৃতপক্ষে কয়টি দল কিংবা দলাংশ আছে, তা গুনে-বেছে বলা খুব সহজ কাজ নয়। এ অবস্থাতেই বৃহত্তর ঐক্যের ডাক দিয়েছে বিএনপি। এ জন্য কিছু ছোট দলের কয়েকজন বড় নেতাকে সঙ্গে নিয়ে যুগপৎ আন্দোলন শুরু করতে চায় দলটি। একই সঙ্গে দল গোছানোর কাজও নাকি শুরু হয়েছে। আগামী তিন মাসে বিভাগীয় পর্যায়ে ১০টি সমাবেশ করার পরিকল্পনা করেছে বিএনপি। এই সমাবেশগুলো সফল করার লক্ষ্যে দেশের আট বিভাগ ও দলের দুই সাংগঠনিক বিভাগের নেতাদের সঙ্গে ধারাবাহিক মতবিনিময় সভা করেছেন বিএনপির নেতারা।
সংবাদপত্রে প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী, এসব সভা থেকে বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাদের বলা হয়েছে, এখন ক্রান্তিকাল চলছে। এ অবস্থায় দ্বন্দ্ব-বিরোধ ভুলে সবাইকে একসঙ্গে কাজ করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। বিএনপির নীতিনির্ধারকেরা এটা স্বীকার করে নিয়েছেন যে দলের মধ্যে দ্বন্দ্ব-বিরোধ আছে। এটা ভালো লক্ষণ। বালুতে মুখ গুঁজে থাকলে তো আর প্রলয় বন্ধ থাকে না! প্রশ্ন হলো, নেতারা বলবেন আর দলের দ্বন্দ্ব-বিরোধের অবসান হবে, সেটা আশা করা কি ঠিক? বাংলাদেশের রাজনৈতিক দলগুলোতে দ্বন্দ্ব-বিরোধ একটি সাধারণ ঘটনা। একসময় মনে করা হতো, সিপিবিতে নেতৃত্বের বিরোধ তুলনামূলকভাবে কম। কিন্তু এখন শোনা যাচ্ছে, সেই সিপিবিতেও দ্বন্দ্ব-বিরোধ কম নয়। এক পক্ষ অন্য পক্ষকে কাবু করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।
বিএনপি নামক দলটি যেহেতু একক নেতৃত্বে পরিচালিত হয় না, সেহেতু কোনো নেতা বললেই দলের ভেতরের মতপার্থক্যের অবসান হবে না। দলের শীর্ষ নেতা হিসেবে পরিচিত সবারই আছে নিজস্ব সমর্থক গোষ্ঠী। ফলে মাঠপর্যায়ে কোন নেতা কার পরামর্শ অনুযায়ী চলেন, তা বলা মুশকিল। দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর যা বলেন, সেটাই দলের শেষ কথা—তিনি নিজেও তা জোর দিয়ে বলতে পারবেন কি?
অবশ্য কেউ কেউ এটাও বলতে পারেন যে আওয়ামী লীগের মধ্যে কি এ সমস্যা নেই? অবশ্যই আছে এবং এখন হয়তো বেশি মাত্রায় আছে। ৩ অক্টোবর ঢাকেশ্বরী পূজামণ্ডপে গিয়ে দলীয় নেতা-কর্মীদের উচ্ছৃঙ্খল আচরণে প্রকাশ্যে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। কার কত শক্তি আছে, তা দেখানোর প্রতিযোগিতায় নামলে তাঁদের ভবিষ্যতে দলীয় মনোনয়ন দেওয়া হবে না বলেও সতর্ক করে তিনি বলেছেন, ‘আপনাদের শোডাউন দেখতে আমি আসিনি। আমি ঢুকতেই পারছিলাম না। যারা এসব শোডাউন থেকে সংশোধন না হবে, আগামী নির্বাচনে নতুন লোককে মনোনয়ন দেব।...আমি এখানে এসেছি হিন্দুধর্মাবলম্বীদের শারদীয় শুভেচ্ছা জানাতে। কারও লাল গোলাপ শুভেচ্ছা নিতে আসিনি।’
আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের এসিআর যেমন নীতিনির্ধারকদের কাছে আছে, তেমনটা বিএনপির ক্ষেত্রেও আছে বলে ধরে নেওয়া যায়। কিন্তু এই এসিআরের ভয় দেখিয়ে কি কোনো দলের নিজ নিজ কর্মী-সমর্থকদের নিবৃত্ত করা যাচ্ছে? বিএনপির বিভাগওয়ারি মতবিনিময় সভাগুলোতে দ্বন্দ্ব-বিরোধ ভোলার আহ্বান জানানো হলেও কীভাবে তা নিষ্পত্তি হবে, তার কোনো কৌশল কি বের হয়েছে? একটি জেলা কমিটিও কি আছে, যেটাতে বিরোধ নেই? একজন নেতার নেতৃত্ব মেনে চলার বাস্তবতা কোথাও আছে বলে মনে হয় না। কোথাও একটি কমিটির ঘোষণা দিলেই তো ক্ষোভ-অসন্তোষ ছড়িয়ে পড়তে দেখা যায়।
এ অবস্থায় ঐকমত্যের ভিত্তিতে যুগপৎ আন্দোলনের কর্মসূচি ঘোষণা করার কথা ভাবছে বিএনপি। বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর জানিয়েছেন, জনগণের দাবি আদায়ে দেশের গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক দলগুলো নিয়ে ‘বৃহত্তর ঐক্য’ গড়ে তুলতে বেশ কিছুদিন ধরে সংলাপ চলছে। সংলাপে সব দলই দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনে না যাওয়া ও যুগপৎ আন্দোলনের বিষয়ে ঐকমত্যে পৌঁছেছে। যে ১০-১১টি বিষয় সামনে রেখে বিএনপি ও সমমনা দলগুলো আন্দোলনের কথা ভাবছে, এর মধ্যে আছে বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার নিঃশর্ত মুক্তি, বর্তমান সরকারের পদত্যাগ, নিরপেক্ষ বা অন্তর্বর্তীকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা বাস্তবায়ন, নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠন, ইভিএম বাতিল, আরপিও সংশোধন, দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি রোধ, জ্বালানি ও বিদ্যুতের সংকটের সমাধান, শেয়ারবাজার ও ব্যাংকে লুটপাট বন্ধ করা, রাজনৈতিক বন্দীদের মামলা প্রত্যাহার ও মুক্তি, ডিজিটাল আইনসহ ১৯৭৪ সালের কিছু আইন বাতিল ইত্যাদি।
যুগপৎ আন্দোলনের লক্ষ্যে বিএনপির সঙ্গে যেসব দল সংলাপ করছে, সেগুলোর বেশির ভাগই খুচরা দল হিসেবে পরিচিত। এর সবগুলো দলের প্রধান নেতাও হয়তো জাতীয়ভাবে রাজনীতিতে পরিচিত নন। কোনো কোনো দলে দু-একজন পরিচিত মুখ থাকলেও সক্রিয় নেতা-কর্মী নেই বললেই চলে। দলগুলোর পূর্ণাঙ্গ কেন্দ্রীয় কমিটিও হয়তো নেই।
এসব হোন্ডা পার্টি বা খুচরো দল নিয়ে যুগপৎ আন্দোলনে গিয়ে ভোটের মাঠে বিএনপি কতটা ফায়দা নিতে পারবে, তা নিয়েও সংশয় প্রকাশ করেছেন অনেকেই। এমনকি শরিক দলের কেউ কেউ বিএনপির এমন উদ্যোগ নিয়ে দ্বিধায় রয়েছেন। তাঁরা মনে করছেন, অনেক দল আছে, যারা নামসর্বস্ব, জোটে কিংবা রাজনীতির মাঠে তাদের ভূমিকা রাখার কোনো সক্ষমতা নেই।
বিএনপি জোটের অন্যতম শীর্ষ নেতা এলডিপির প্রধান কর্নেল (অব.) অলি আহমদই বলেছেন, বিএনপির জোটে বেশির ভাগ দলই নামসর্বস্ব। কোনো কোনোটা আছে স্বামী-স্ত্রীর দল। তাই এসব দলের সঙ্গে বসলে রাজনৈতিকভাবে লাভবান হওয়ার সম্ভাবনা কম। সময় নষ্ট করা হবে। অলি আহমদ বরং জামায়াতে ইসলামীকে সঙ্গে নিয়ে চলার পক্ষে। তাঁর মতে, জামায়াত একটি পুরোনো রাজনৈতিক দল, ভোটের মাঠে তাদের এখনো আবেদন কম নয়। তা ছাড়া, এখনকার যারা জামায়াতে আছে, তাদের মধ্যে তো যুদ্ধাপরাধী নেই। কিন্তু জামায়াতকে সঙ্গে নিলে বিএনপির সঙ্গে ভিড়তে চাইবে না বাম ট্যাগ লাগানো দলাংশগুলো।
বিএনপির বৃহত্তর ঐক্য পরিকল্পনায় বড় সমস্যা হলো নেতা। কার নেতৃত্বে আন্দোলন হবে এবং ভবিষ্যৎ সরকারপ্রধান কে হবেন, সেটা স্পষ্ট না হলে মানুষের মধ্যে আশাবাদ তৈরি হওয়া কঠিন। গত নির্বাচনের আগে ঐক্যফ্রন্ট গঠন করে ড. কামাল হোসেনকে প্রধান নেতা নির্বাচন করে তাঁর নেতৃত্বে নির্বাচনে অংশ নিয়ে বিএনপিকে নানা জটিলতা ও সমালোচনার মুখে পড়তে হয়েছিল। ক্ষমতায় গেলে কে হবেন সরকারপ্রধান—ভোটের আগে তা স্পষ্ট করতে না পারার ভুল এবার এড়াতে চান বিএনপির নেতারা। তাই এবারের বৃহৎ ঐক্যের প্রধান নেতা নির্বাচনের বিষয়ে বেশ সতর্ক আলোচনা শুরু হয়েছে দলটির ভেতরে। বিষয়টি স্পর্শকাতর হলেও বর্তমান পরিস্থিতিতে তা স্পষ্ট করে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম ৩ অক্টোবর বলেছেন, সরকার হটানোর ‘যুগপৎ আন্দোলন’ খালেদা জিয়ার নেতৃত্বেই হবে। তিনি বলেছেন, ‘আমাদের নেতৃত্ব বা নেতা আগেই ঘোষণা করেছি; খালেদা জিয়া আমাদের নেত্রী। তাঁর অবর্তমানে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান আমাদের নেতা।’
মির্জা ফখরুল ইসলামের এই ঘোষণার পর খোদ বিএনপিতেই ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনা তৈরি হয়েছে বলে মনে হয় না। বিএনপির সঙ্গে ঐক্যের প্রশ্নে যাঁরা ইতিবাচক মনোভাব দেখাচ্ছেন, তাঁরাও তারেক রহমানকে যুগপৎ আন্দোলনের নেতা হিসেবে মানতে দ্বিধাগ্রস্ত বলেই বিএনপির মহাসচিব ফলাও করে খালেদা জিয়ার নাম ঘোষণা করেছেন। কিন্তু খালেদা জিয়ার নামেও আর ঝাঁপিয়ে পড়ার পরিস্থিতি আছে কি না, সেটাই এখন বিলিয়ন ডলারের প্রশ্ন হয়ে ঘুরছে।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকেরা বরং জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জি এম কাদেরের একটি বক্তব্যকে গুরুত্বপূর্ণ মনে করছেন। জি এম কাদের বলেছেন, রাজনীতিতে ভবিষ্যতে অনেক টানাপোড়েন হবে, অনেক উত্থান-পতন হবে, অনেক ধরনের মেরুকরণ হবে। এগুলো না দেখে এখনই কোনো সিদ্ধান্ত নিলে সেটা সঠিক সিদ্ধান্ত না-ও হতে পারে।
লেখক: জ্যেষ্ঠ সহকারী সম্পাদক, আজকের পত্রিকা

আগামী নির্বাচন সামনে রেখে রাজনৈতিক দলগুলোর প্রস্তুতি শুরু হয়েছে। যারা ক্ষমতায় আছে তারা আরেক দফা ক্ষমতায় থাকার জন্য ছক কষছে। আর যারা ক্ষমতায় যেতে চায়, তারাও পরিকল্পনা করছে মিত্র বাড়িয়ে নিজেদের শক্তি দেখানোর। টানা তিন মেয়াদে ক্ষমতায় আছে আওয়ামী লীগ। দীর্ঘ প্রতীক্ষার অবসান ঘটিয়ে ক্ষমতায় যেতে চায় বিএনপি। এই দুটি দলই দেশে ভোটের রাজনীতির বড় ফ্যাক্টর। এর বাইরে কিছু ভোট আছে জাতীয় পার্টি ও জামায়াতে ইসলামীর। জাতীয় পার্টি এত দিন আওয়ামী লীগের সঙ্গে ছিল, এবার সিদ্ধান্তহীন আছে। হাওয়া বুঝে লাঙল চালাবে। আওয়ামী লীগের সঙ্গে থাকবে, না নতুন মিত্র খুঁজবে—তা এখনই পরিষ্কার করছে না। আর জামায়াতের অবস্থানও রহস্যঘেরা। দলটির নিবন্ধন নেই। বিএনপির জোটে জামায়াত আছে, আবার নেইও। বিএনপি ও জামায়াতের সম্পর্ক নিয়ে গুজব-গুঞ্জন যা-ই থাক, এরা কেউ কাউকে ছাড়বে বলে মনে হয় না।
বিএনপি পুরোনো মিত্রদের শুধু সঙ্গে রাখতে চায় না, সরকার পতনের আন্দোলনে এবং নির্বাচনের পরে ‘জাতীয় সরকার’ গঠনের লক্ষ্যে নতুন মিত্রের সন্ধানেও আছে।
নড়বড়ে অবস্থান হলেও বিএনপির একটি ২০-দলীয় জোট আছে। এই জোটের কেউ কেউ ঘোষণা দিয়ে জোট ছেড়েছে, আবার তাদের একাংশ জোটে আছেও; অর্থাৎ ২০-দলীয় জোটে প্রকৃতপক্ষে কয়টি দল কিংবা দলাংশ আছে, তা গুনে-বেছে বলা খুব সহজ কাজ নয়। এ অবস্থাতেই বৃহত্তর ঐক্যের ডাক দিয়েছে বিএনপি। এ জন্য কিছু ছোট দলের কয়েকজন বড় নেতাকে সঙ্গে নিয়ে যুগপৎ আন্দোলন শুরু করতে চায় দলটি। একই সঙ্গে দল গোছানোর কাজও নাকি শুরু হয়েছে। আগামী তিন মাসে বিভাগীয় পর্যায়ে ১০টি সমাবেশ করার পরিকল্পনা করেছে বিএনপি। এই সমাবেশগুলো সফল করার লক্ষ্যে দেশের আট বিভাগ ও দলের দুই সাংগঠনিক বিভাগের নেতাদের সঙ্গে ধারাবাহিক মতবিনিময় সভা করেছেন বিএনপির নেতারা।
সংবাদপত্রে প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী, এসব সভা থেকে বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাদের বলা হয়েছে, এখন ক্রান্তিকাল চলছে। এ অবস্থায় দ্বন্দ্ব-বিরোধ ভুলে সবাইকে একসঙ্গে কাজ করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। বিএনপির নীতিনির্ধারকেরা এটা স্বীকার করে নিয়েছেন যে দলের মধ্যে দ্বন্দ্ব-বিরোধ আছে। এটা ভালো লক্ষণ। বালুতে মুখ গুঁজে থাকলে তো আর প্রলয় বন্ধ থাকে না! প্রশ্ন হলো, নেতারা বলবেন আর দলের দ্বন্দ্ব-বিরোধের অবসান হবে, সেটা আশা করা কি ঠিক? বাংলাদেশের রাজনৈতিক দলগুলোতে দ্বন্দ্ব-বিরোধ একটি সাধারণ ঘটনা। একসময় মনে করা হতো, সিপিবিতে নেতৃত্বের বিরোধ তুলনামূলকভাবে কম। কিন্তু এখন শোনা যাচ্ছে, সেই সিপিবিতেও দ্বন্দ্ব-বিরোধ কম নয়। এক পক্ষ অন্য পক্ষকে কাবু করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।
বিএনপি নামক দলটি যেহেতু একক নেতৃত্বে পরিচালিত হয় না, সেহেতু কোনো নেতা বললেই দলের ভেতরের মতপার্থক্যের অবসান হবে না। দলের শীর্ষ নেতা হিসেবে পরিচিত সবারই আছে নিজস্ব সমর্থক গোষ্ঠী। ফলে মাঠপর্যায়ে কোন নেতা কার পরামর্শ অনুযায়ী চলেন, তা বলা মুশকিল। দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর যা বলেন, সেটাই দলের শেষ কথা—তিনি নিজেও তা জোর দিয়ে বলতে পারবেন কি?
অবশ্য কেউ কেউ এটাও বলতে পারেন যে আওয়ামী লীগের মধ্যে কি এ সমস্যা নেই? অবশ্যই আছে এবং এখন হয়তো বেশি মাত্রায় আছে। ৩ অক্টোবর ঢাকেশ্বরী পূজামণ্ডপে গিয়ে দলীয় নেতা-কর্মীদের উচ্ছৃঙ্খল আচরণে প্রকাশ্যে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। কার কত শক্তি আছে, তা দেখানোর প্রতিযোগিতায় নামলে তাঁদের ভবিষ্যতে দলীয় মনোনয়ন দেওয়া হবে না বলেও সতর্ক করে তিনি বলেছেন, ‘আপনাদের শোডাউন দেখতে আমি আসিনি। আমি ঢুকতেই পারছিলাম না। যারা এসব শোডাউন থেকে সংশোধন না হবে, আগামী নির্বাচনে নতুন লোককে মনোনয়ন দেব।...আমি এখানে এসেছি হিন্দুধর্মাবলম্বীদের শারদীয় শুভেচ্ছা জানাতে। কারও লাল গোলাপ শুভেচ্ছা নিতে আসিনি।’
আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের এসিআর যেমন নীতিনির্ধারকদের কাছে আছে, তেমনটা বিএনপির ক্ষেত্রেও আছে বলে ধরে নেওয়া যায়। কিন্তু এই এসিআরের ভয় দেখিয়ে কি কোনো দলের নিজ নিজ কর্মী-সমর্থকদের নিবৃত্ত করা যাচ্ছে? বিএনপির বিভাগওয়ারি মতবিনিময় সভাগুলোতে দ্বন্দ্ব-বিরোধ ভোলার আহ্বান জানানো হলেও কীভাবে তা নিষ্পত্তি হবে, তার কোনো কৌশল কি বের হয়েছে? একটি জেলা কমিটিও কি আছে, যেটাতে বিরোধ নেই? একজন নেতার নেতৃত্ব মেনে চলার বাস্তবতা কোথাও আছে বলে মনে হয় না। কোথাও একটি কমিটির ঘোষণা দিলেই তো ক্ষোভ-অসন্তোষ ছড়িয়ে পড়তে দেখা যায়।
এ অবস্থায় ঐকমত্যের ভিত্তিতে যুগপৎ আন্দোলনের কর্মসূচি ঘোষণা করার কথা ভাবছে বিএনপি। বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর জানিয়েছেন, জনগণের দাবি আদায়ে দেশের গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক দলগুলো নিয়ে ‘বৃহত্তর ঐক্য’ গড়ে তুলতে বেশ কিছুদিন ধরে সংলাপ চলছে। সংলাপে সব দলই দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনে না যাওয়া ও যুগপৎ আন্দোলনের বিষয়ে ঐকমত্যে পৌঁছেছে। যে ১০-১১টি বিষয় সামনে রেখে বিএনপি ও সমমনা দলগুলো আন্দোলনের কথা ভাবছে, এর মধ্যে আছে বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার নিঃশর্ত মুক্তি, বর্তমান সরকারের পদত্যাগ, নিরপেক্ষ বা অন্তর্বর্তীকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা বাস্তবায়ন, নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠন, ইভিএম বাতিল, আরপিও সংশোধন, দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি রোধ, জ্বালানি ও বিদ্যুতের সংকটের সমাধান, শেয়ারবাজার ও ব্যাংকে লুটপাট বন্ধ করা, রাজনৈতিক বন্দীদের মামলা প্রত্যাহার ও মুক্তি, ডিজিটাল আইনসহ ১৯৭৪ সালের কিছু আইন বাতিল ইত্যাদি।
যুগপৎ আন্দোলনের লক্ষ্যে বিএনপির সঙ্গে যেসব দল সংলাপ করছে, সেগুলোর বেশির ভাগই খুচরা দল হিসেবে পরিচিত। এর সবগুলো দলের প্রধান নেতাও হয়তো জাতীয়ভাবে রাজনীতিতে পরিচিত নন। কোনো কোনো দলে দু-একজন পরিচিত মুখ থাকলেও সক্রিয় নেতা-কর্মী নেই বললেই চলে। দলগুলোর পূর্ণাঙ্গ কেন্দ্রীয় কমিটিও হয়তো নেই।
এসব হোন্ডা পার্টি বা খুচরো দল নিয়ে যুগপৎ আন্দোলনে গিয়ে ভোটের মাঠে বিএনপি কতটা ফায়দা নিতে পারবে, তা নিয়েও সংশয় প্রকাশ করেছেন অনেকেই। এমনকি শরিক দলের কেউ কেউ বিএনপির এমন উদ্যোগ নিয়ে দ্বিধায় রয়েছেন। তাঁরা মনে করছেন, অনেক দল আছে, যারা নামসর্বস্ব, জোটে কিংবা রাজনীতির মাঠে তাদের ভূমিকা রাখার কোনো সক্ষমতা নেই।
বিএনপি জোটের অন্যতম শীর্ষ নেতা এলডিপির প্রধান কর্নেল (অব.) অলি আহমদই বলেছেন, বিএনপির জোটে বেশির ভাগ দলই নামসর্বস্ব। কোনো কোনোটা আছে স্বামী-স্ত্রীর দল। তাই এসব দলের সঙ্গে বসলে রাজনৈতিকভাবে লাভবান হওয়ার সম্ভাবনা কম। সময় নষ্ট করা হবে। অলি আহমদ বরং জামায়াতে ইসলামীকে সঙ্গে নিয়ে চলার পক্ষে। তাঁর মতে, জামায়াত একটি পুরোনো রাজনৈতিক দল, ভোটের মাঠে তাদের এখনো আবেদন কম নয়। তা ছাড়া, এখনকার যারা জামায়াতে আছে, তাদের মধ্যে তো যুদ্ধাপরাধী নেই। কিন্তু জামায়াতকে সঙ্গে নিলে বিএনপির সঙ্গে ভিড়তে চাইবে না বাম ট্যাগ লাগানো দলাংশগুলো।
বিএনপির বৃহত্তর ঐক্য পরিকল্পনায় বড় সমস্যা হলো নেতা। কার নেতৃত্বে আন্দোলন হবে এবং ভবিষ্যৎ সরকারপ্রধান কে হবেন, সেটা স্পষ্ট না হলে মানুষের মধ্যে আশাবাদ তৈরি হওয়া কঠিন। গত নির্বাচনের আগে ঐক্যফ্রন্ট গঠন করে ড. কামাল হোসেনকে প্রধান নেতা নির্বাচন করে তাঁর নেতৃত্বে নির্বাচনে অংশ নিয়ে বিএনপিকে নানা জটিলতা ও সমালোচনার মুখে পড়তে হয়েছিল। ক্ষমতায় গেলে কে হবেন সরকারপ্রধান—ভোটের আগে তা স্পষ্ট করতে না পারার ভুল এবার এড়াতে চান বিএনপির নেতারা। তাই এবারের বৃহৎ ঐক্যের প্রধান নেতা নির্বাচনের বিষয়ে বেশ সতর্ক আলোচনা শুরু হয়েছে দলটির ভেতরে। বিষয়টি স্পর্শকাতর হলেও বর্তমান পরিস্থিতিতে তা স্পষ্ট করে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম ৩ অক্টোবর বলেছেন, সরকার হটানোর ‘যুগপৎ আন্দোলন’ খালেদা জিয়ার নেতৃত্বেই হবে। তিনি বলেছেন, ‘আমাদের নেতৃত্ব বা নেতা আগেই ঘোষণা করেছি; খালেদা জিয়া আমাদের নেত্রী। তাঁর অবর্তমানে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান আমাদের নেতা।’
মির্জা ফখরুল ইসলামের এই ঘোষণার পর খোদ বিএনপিতেই ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনা তৈরি হয়েছে বলে মনে হয় না। বিএনপির সঙ্গে ঐক্যের প্রশ্নে যাঁরা ইতিবাচক মনোভাব দেখাচ্ছেন, তাঁরাও তারেক রহমানকে যুগপৎ আন্দোলনের নেতা হিসেবে মানতে দ্বিধাগ্রস্ত বলেই বিএনপির মহাসচিব ফলাও করে খালেদা জিয়ার নাম ঘোষণা করেছেন। কিন্তু খালেদা জিয়ার নামেও আর ঝাঁপিয়ে পড়ার পরিস্থিতি আছে কি না, সেটাই এখন বিলিয়ন ডলারের প্রশ্ন হয়ে ঘুরছে।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকেরা বরং জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জি এম কাদেরের একটি বক্তব্যকে গুরুত্বপূর্ণ মনে করছেন। জি এম কাদের বলেছেন, রাজনীতিতে ভবিষ্যতে অনেক টানাপোড়েন হবে, অনেক উত্থান-পতন হবে, অনেক ধরনের মেরুকরণ হবে। এগুলো না দেখে এখনই কোনো সিদ্ধান্ত নিলে সেটা সঠিক সিদ্ধান্ত না-ও হতে পারে।
লেখক: জ্যেষ্ঠ সহকারী সম্পাদক, আজকের পত্রিকা

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
০৬ অক্টোবর ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫বাসস, ঢাকা

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
আজ সোমবার বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১-এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) মো. আলমগীরের জেরা শুরু করেন রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী আমীর হোসেন। আইনজীবী আমীর হোসেন পলাতক আসামি শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে শুনানি করছেন। এর আগে গত মঙ্গলবার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. আলমগীরের সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন হয়।
এই মামলার শুনানিতে এর আগে গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম প্রতীক শহীদ আবু সাঈদের বাবাসহ স্বজনহারা পরিবারের একাধিক সদস্য সাক্ষ্য দিয়েছেন। এ ছাড়া মামলার গুরুত্বপূর্ণ ‘স্টার উইটনেস’ হিসেবে সাক্ষ্য দেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক এবং জুলাই আন্দোলনের অন্যতম নেতৃত্বদানকারী নাহিদ ইসলাম এবং দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান।
গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে আওয়ামী লীগ সরকার, তাদের দলীয় ক্যাডার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করে বলে অভিযোগ ওঠে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে শেখ হাসিনা, তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং তৎকালীন আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে গত ১০ জুলাই অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল-১।
পরবর্তীকালে, এই মামলার অন্যতম আসামি সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন দোষ স্বীকার করে ঘটনার সত্যতা উদ্ঘাটনে রাজসাক্ষী (অ্যাপ্রোভার) হওয়ার জন্য ট্রাইব্যুনালে আবেদন করেন। ট্রাইব্যুনাল তাঁর আবেদন মঞ্জুর করলে তিনি রাজসাক্ষী হিসেবে এই মামলায় সাক্ষ্য দেন।
মামলার প্রসিকিউশন পক্ষে শুনানি করছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম এবং গাজী এসএইচ তামিম। শুনানিতে তাঁদের সঙ্গে অপর প্রসিকিউটররাও উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদিকে, এই মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের পক্ষে আছেন আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ।
মানবতাবিরোধী অপরাধের এই মামলা ছাড়াও ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আরও দুটি মামলা বিচারাধীন। এর মধ্যে একটি মামলায় আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে সংঘটিত গুম-খুনের ঘটনায় তাঁকে আসামি করা হয়েছে। অন্য মামলাটি হলো রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে হত্যাকাণ্ড নিয়ে। এই তিনটি মামলার বিচারকাজই বর্তমানে দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে চলমান।

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
আজ সোমবার বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১-এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) মো. আলমগীরের জেরা শুরু করেন রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী আমীর হোসেন। আইনজীবী আমীর হোসেন পলাতক আসামি শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে শুনানি করছেন। এর আগে গত মঙ্গলবার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. আলমগীরের সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন হয়।
এই মামলার শুনানিতে এর আগে গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম প্রতীক শহীদ আবু সাঈদের বাবাসহ স্বজনহারা পরিবারের একাধিক সদস্য সাক্ষ্য দিয়েছেন। এ ছাড়া মামলার গুরুত্বপূর্ণ ‘স্টার উইটনেস’ হিসেবে সাক্ষ্য দেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক এবং জুলাই আন্দোলনের অন্যতম নেতৃত্বদানকারী নাহিদ ইসলাম এবং দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান।
গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে আওয়ামী লীগ সরকার, তাদের দলীয় ক্যাডার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করে বলে অভিযোগ ওঠে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে শেখ হাসিনা, তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং তৎকালীন আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে গত ১০ জুলাই অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল-১।
পরবর্তীকালে, এই মামলার অন্যতম আসামি সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন দোষ স্বীকার করে ঘটনার সত্যতা উদ্ঘাটনে রাজসাক্ষী (অ্যাপ্রোভার) হওয়ার জন্য ট্রাইব্যুনালে আবেদন করেন। ট্রাইব্যুনাল তাঁর আবেদন মঞ্জুর করলে তিনি রাজসাক্ষী হিসেবে এই মামলায় সাক্ষ্য দেন।
মামলার প্রসিকিউশন পক্ষে শুনানি করছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম এবং গাজী এসএইচ তামিম। শুনানিতে তাঁদের সঙ্গে অপর প্রসিকিউটররাও উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদিকে, এই মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের পক্ষে আছেন আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ।
মানবতাবিরোধী অপরাধের এই মামলা ছাড়াও ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আরও দুটি মামলা বিচারাধীন। এর মধ্যে একটি মামলায় আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে সংঘটিত গুম-খুনের ঘটনায় তাঁকে আসামি করা হয়েছে। অন্য মামলাটি হলো রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে হত্যাকাণ্ড নিয়ে। এই তিনটি মামলার বিচারকাজই বর্তমানে দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে চলমান।

আগামী নির্বাচন সামনে রেখে রাজনৈতিক দলগুলোর প্রস্তুতি শুরু হয়েছে। যারা ক্ষমতায় আছে তারা আরেক দফা ক্ষমতায় থাকার জন্য ছক কষছে। আর যারা ক্ষমতায় যেতে চায়, তারাও পরিকল্পনা করছে মিত্র বাড়িয়ে নিজেদের শক্তি দেখানোর।
০৯ অক্টোবর ২০২২
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর সঙ্গে।
মাছের সুষ্ঠু প্রজনন, উৎপাদন, মৎস্যসম্পদ সংরক্ষণ ও টেকসই মৎস্য আহরণের জন্য সমুদ্রে সব ধরনের মাছ শিকার ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা গতকাল বুধবার দিবাগত মধ্যরাতে শেষ হয়েছে। তাই গতকাল দিনভর ছিল উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে ব্যস্ততা। অনেকে দেখে নিচ্ছিলেন ট্রলার ঠিকঠাক আছে কি না, কেউ জালের ছেঁড়া অংশ সেলাই করছিলেন, কেউ আবার প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রীসহ অন্য সরঞ্জাম গুছিয়ে নিচ্ছিলেন।
বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র এবং ফকিরহাট উপ-মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ঘাটে গতকাল শত শত ট্রলার নোঙর করে রাখা ছিল। জেলেদের উপস্থিতিতে ঘাট এলাকা সরগরম হয়ে ওঠে। ফকিরহাটের মুদি-মনিহারি দোকানগুলোতে জেলেরা কেনাকাটা করতে ভিড় জমান। ফকিরহাট এলাকার বিসমিল্লাহ ট্রলারের মাঝি রহিম মিয়া বলেন, ‘সাগরে মাছ শিকারে যেতে সকল প্রস্তুতি নিয়েছি। নিষেধাজ্ঞার সময় শেষ হওয়ামাত্রই সাগরে নামব।’
জেলে নুরসাইদ ও ফোরকান মিয়া বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞার সময় পরিবার-পরিজন নিয়ে বেশ কষ্টে কেটেছে। ওই সময়ে বেশ টাকা ঋণ করেছি। এখন সাগরে যাব। দেখি আল্লাহ ঋণ পরিশোধ করতে দেন কি না।’
নোয়াখালীর হাতিয়ার সূর্যমুখী, বাংলাবাজার, কাজিরবাজার, পাইতান মার্কেট চেয়ারম্যান ঘাটসহ বেশ কয়েকটি ঘাটে গতকাল জেলেদের ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা গেছে। অনেকে নৌকায় জাল তুলছিলেন, আবার অনেকে জ্বালানি তেল মজুতসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী ট্রলারে নিয়ে যান। সূর্যমুখী ঘাটের এমভি মায়ের দোয়া ট্রলারের মাঝি জাফর উল্যা বলেন, ‘সাগরে ৮-১০ দিন থাকার প্রস্তুতি নিচ্ছি। সন্ধ্যায় সাগরের উদ্দেশে রওনা দেব।’
সূর্যমুখী ঘাট জেলে সমিতির সভাপতি জবিয়ল হক বলেন, ‘সাগরে নামতে প্রস্তুত নোয়াখালীর হাতিয়ার ২০টি ঘাটের লক্ষাধিক জেলে। এসব ঘাটে প্রায় ১০ হাজার ছোট-বড় ফিশিং ট্রলার রয়েছে। প্রতি ট্রলারে ১০ জন হলেও লক্ষাধিক জেলে এই মাছ ধরার সঙ্গে জড়িত। তাঁদের সবাই গত ৫৮ দিন তীরে বেকার ছিলেন।’
পিরোজপুরের ইন্দুরকানি উপজেলার পাড়েরহাট মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের পার্শ্ববর্তী এলাকার জেলেরা গতকাল দিনভর সাগরে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন। এ ছাড়া মঠবাড়িয়া উপজেলার সাপলেজা, খেতাচিড়া, বড়মাছুয়া, ছোটমাছুয়া, ভান্ডারিয়া উপজেলার চরখালী, হেতালিয়া, কাউখালী উপজেলার সোনাকুর এলাকার জেলেরা, সদর উপজেলা এবং নেছারাবাদ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার জেলেরা প্রস্তুতি শেষে গত রাতে বঙ্গোপসাগরে রওনা হন।
কয়েক দিন ধরে কক্সবাজার উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে নৌকা, জাল মেরামতসহ বিভিন্ন প্রস্তুতি সেরেছেন জেলেরা। গতকাল মেরিন ড্রাইভের টেকনাফের খুরেরমুখ, সাবরাং ও বাহারছড়া এলাকায় দেখা গেছে, সড়কে দাঁড় করিয়ে রাখা সারি সারি ট্রলারে জাল ও রসদ তোলেন জেলেরা।
একটি ট্রলারের মাঝি আবু তাহের জানান, এবার ভারতের সঙ্গে মিল রেখে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় কেউ সাগরে মাছ শিকারে নামেনি। এতে উপকূলের কাছাকাছি সাগরে জাল ফেললেই ইলিশসহ অন্য মাছ পাওয়া যাবে বলে আশাবাদী তিনি।
কক্সবাজার শহরের ফিশারি ঘাটের মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির পরিচালক জুলফিকার আলী জানান, কক্সবাজার উপকূলে ছোট-বড় ৭ হাজারের মতো যান্ত্রিক ট্রলার রয়েছে। এসব ট্রলারে প্রায় এক লাখ জেলে ও শ্রমিক নিয়োজিত রয়েছেন। অধিকাংশ ট্রলার নিষেধাজ্ঞা ওঠার সঙ্গে সঙ্গে সাগরে রওনা হবে।
[প্রতিবেদন তৈরিতে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছেন বরগুনা ও আমতলী, পিরোজপুর, কক্সবাজার এবং হাতিয়া প্রতিনিধি]

‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর সঙ্গে।
মাছের সুষ্ঠু প্রজনন, উৎপাদন, মৎস্যসম্পদ সংরক্ষণ ও টেকসই মৎস্য আহরণের জন্য সমুদ্রে সব ধরনের মাছ শিকার ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা গতকাল বুধবার দিবাগত মধ্যরাতে শেষ হয়েছে। তাই গতকাল দিনভর ছিল উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে ব্যস্ততা। অনেকে দেখে নিচ্ছিলেন ট্রলার ঠিকঠাক আছে কি না, কেউ জালের ছেঁড়া অংশ সেলাই করছিলেন, কেউ আবার প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রীসহ অন্য সরঞ্জাম গুছিয়ে নিচ্ছিলেন।
বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র এবং ফকিরহাট উপ-মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ঘাটে গতকাল শত শত ট্রলার নোঙর করে রাখা ছিল। জেলেদের উপস্থিতিতে ঘাট এলাকা সরগরম হয়ে ওঠে। ফকিরহাটের মুদি-মনিহারি দোকানগুলোতে জেলেরা কেনাকাটা করতে ভিড় জমান। ফকিরহাট এলাকার বিসমিল্লাহ ট্রলারের মাঝি রহিম মিয়া বলেন, ‘সাগরে মাছ শিকারে যেতে সকল প্রস্তুতি নিয়েছি। নিষেধাজ্ঞার সময় শেষ হওয়ামাত্রই সাগরে নামব।’
জেলে নুরসাইদ ও ফোরকান মিয়া বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞার সময় পরিবার-পরিজন নিয়ে বেশ কষ্টে কেটেছে। ওই সময়ে বেশ টাকা ঋণ করেছি। এখন সাগরে যাব। দেখি আল্লাহ ঋণ পরিশোধ করতে দেন কি না।’
নোয়াখালীর হাতিয়ার সূর্যমুখী, বাংলাবাজার, কাজিরবাজার, পাইতান মার্কেট চেয়ারম্যান ঘাটসহ বেশ কয়েকটি ঘাটে গতকাল জেলেদের ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা গেছে। অনেকে নৌকায় জাল তুলছিলেন, আবার অনেকে জ্বালানি তেল মজুতসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী ট্রলারে নিয়ে যান। সূর্যমুখী ঘাটের এমভি মায়ের দোয়া ট্রলারের মাঝি জাফর উল্যা বলেন, ‘সাগরে ৮-১০ দিন থাকার প্রস্তুতি নিচ্ছি। সন্ধ্যায় সাগরের উদ্দেশে রওনা দেব।’
সূর্যমুখী ঘাট জেলে সমিতির সভাপতি জবিয়ল হক বলেন, ‘সাগরে নামতে প্রস্তুত নোয়াখালীর হাতিয়ার ২০টি ঘাটের লক্ষাধিক জেলে। এসব ঘাটে প্রায় ১০ হাজার ছোট-বড় ফিশিং ট্রলার রয়েছে। প্রতি ট্রলারে ১০ জন হলেও লক্ষাধিক জেলে এই মাছ ধরার সঙ্গে জড়িত। তাঁদের সবাই গত ৫৮ দিন তীরে বেকার ছিলেন।’
পিরোজপুরের ইন্দুরকানি উপজেলার পাড়েরহাট মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের পার্শ্ববর্তী এলাকার জেলেরা গতকাল দিনভর সাগরে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন। এ ছাড়া মঠবাড়িয়া উপজেলার সাপলেজা, খেতাচিড়া, বড়মাছুয়া, ছোটমাছুয়া, ভান্ডারিয়া উপজেলার চরখালী, হেতালিয়া, কাউখালী উপজেলার সোনাকুর এলাকার জেলেরা, সদর উপজেলা এবং নেছারাবাদ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার জেলেরা প্রস্তুতি শেষে গত রাতে বঙ্গোপসাগরে রওনা হন।
কয়েক দিন ধরে কক্সবাজার উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে নৌকা, জাল মেরামতসহ বিভিন্ন প্রস্তুতি সেরেছেন জেলেরা। গতকাল মেরিন ড্রাইভের টেকনাফের খুরেরমুখ, সাবরাং ও বাহারছড়া এলাকায় দেখা গেছে, সড়কে দাঁড় করিয়ে রাখা সারি সারি ট্রলারে জাল ও রসদ তোলেন জেলেরা।
একটি ট্রলারের মাঝি আবু তাহের জানান, এবার ভারতের সঙ্গে মিল রেখে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় কেউ সাগরে মাছ শিকারে নামেনি। এতে উপকূলের কাছাকাছি সাগরে জাল ফেললেই ইলিশসহ অন্য মাছ পাওয়া যাবে বলে আশাবাদী তিনি।
কক্সবাজার শহরের ফিশারি ঘাটের মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির পরিচালক জুলফিকার আলী জানান, কক্সবাজার উপকূলে ছোট-বড় ৭ হাজারের মতো যান্ত্রিক ট্রলার রয়েছে। এসব ট্রলারে প্রায় এক লাখ জেলে ও শ্রমিক নিয়োজিত রয়েছেন। অধিকাংশ ট্রলার নিষেধাজ্ঞা ওঠার সঙ্গে সঙ্গে সাগরে রওনা হবে।
[প্রতিবেদন তৈরিতে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছেন বরগুনা ও আমতলী, পিরোজপুর, কক্সবাজার এবং হাতিয়া প্রতিনিধি]

আগামী নির্বাচন সামনে রেখে রাজনৈতিক দলগুলোর প্রস্তুতি শুরু হয়েছে। যারা ক্ষমতায় আছে তারা আরেক দফা ক্ষমতায় থাকার জন্য ছক কষছে। আর যারা ক্ষমতায় যেতে চায়, তারাও পরিকল্পনা করছে মিত্র বাড়িয়ে নিজেদের শক্তি দেখানোর।
০৯ অক্টোবর ২০২২
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
০৬ অক্টোবর ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
ভারতের নিষেধাজ্ঞার এক দিন পরই গত রোববার লালমনিরহাটের বুড়িমারী ও যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দরসহ বিভিন্ন বন্দরে পণ্যের ট্রাক আটকে দেয় ভারত। সংশ্লিষ্টদের সূত্রে জানা যায়, রোববার ভারতের আমদানি বিধিনিষেধের কারণে বুড়িমারী সীমান্তে প্রাণের ১৭ ট্রাক খাদ্যপণ্য আটকে যায়। এ ছাড়া বেনাপোলে ৩৬টি পোশাক বোঝাই ট্রাকসহ অন্যান্য পণ্যের শতাধিক ট্রাক ঢুকতে পারেনি।
গতকাল সোমবার পর্যন্ত বুড়িমারী থেকে প্রাণের পণ্যবোঝাই ট্রাকগুলোর অর্ধেকের বেশি ফেরত নিয়ে আসে প্রতিষ্ঠানটি। এ ছাড়া বেনাপোলে পোর্টের ভেতরে ২৪টি ট্রাক ছাড়া বাকিগুলো ফেরত চলে যায়।
বেনাপোল বন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. সাজেদুর রহমান গতকাল সোমবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, গতকাল পোর্টের ভেতর ও বাইরে শতাধিক ট্রাক দাঁড়িয়ে ছিল। আজ পোর্টের ভেতরের ২৪টি ছাড়া বাকিগুলো ফেরত নিয়ে গেছেন মালিকেরা। এখন পর্যন্ত মনে হচ্ছে, পোর্টের ভেতরের ট্রাকগুলোও ফেরত নিতে হবে।
জানতে চাইলে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পরিচালক (বিপণন) কামরুজ্জামান কামাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের হাতে ৬ মিলিয়ন ডলারের ক্রয় আদেশ রয়েছে। তার মধ্য থেকে রোববার বুড়িমারী দিয়ে ১৭ ট্রাকবোঝাই পণ্য পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু সেগুলো ঢুকতে পারেনি। ট্রাকগুলো ফেরত আনা হচ্ছে। নতুন করে কাগজপত্র তৈরি করে অন্য পথ দিয়ে পণ্য পাঠাতে হবে।’
বেনাপোল স্থলবন্দর সূত্রে জানা যায়, ওই ২৪টি ট্রাক পোর্টের ভেতরে থাকায় এখনো তারা ভারতে প্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে। তাদের আশা, যেহেতু নিষেধাজ্ঞার আগে এই পণ্যগুলোর এলসি করা হয়েছিল, তাই এগুলো প্রবেশে অনুমতি পাবে। তবে এটি নির্ভর করবে বাংলাদেশ সরকারের আলোচনার ওপর।
এমন পরিস্থিতিতে সরকারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ইতিমধ্যে অনেক রপ্তানিকারক রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সঙ্গে আলোচনা করে সরকারের সহযোগিতা চেয়েছে।
স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে আজ মঙ্গলবার আন্তমন্ত্রণালয়ের সভা ডেকেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে বিকেল ৪টায় আন্তমন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এই সভা অনুষ্ঠিত হবে।
সভায় নৌপরিবহন ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো, জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের প্রতিনিধিদের উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া ব্যবসায়ী প্রতিনিধি হিসেবে এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ, ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রতিনিধিদের উপস্থিতির জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
ভারতের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গত শনিবার হঠাৎ এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি নিষিদ্ধ করে। শুধু ভারতের নবসেবা ও কলকাতা সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করে দেশটির আমদানিকারকেরা বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি করতে পারবেন বলে ওই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। এ ছাড়া বাংলাদেশ থেকে ভারতের আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা ও মিজোরাম, পশ্চিমবঙ্গের চ্যাংড়াবান্দা ও ফুলবাড়ী শুল্ক স্টেশন দিয়ে ফল, ফলের স্বাদযুক্ত পানীয়, কোমল পানীয়, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, প্লাস্টিক পণ্য, সুতা, সুতার উপজাত, আসবাব রপ্তানিও নিষিদ্ধ করা হয় ওই বিজ্ঞপ্তিতে।
আমদানি ও রপ্তানিসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা জানান, দেশের ২৪টি বন্দরের মধ্যে ১৬টি বন্দর দিয়ে ভারতের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়ে থাকে। তবে যোগাযোগব্যবস্থা সহজ হওয়ায় বেনাপোল ও ভারতের পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে সবচেয়ে বেশি আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়। এর পরিমাণ ৮০ শতাংশ। বেনাপোল বন্দর দিয়ে প্রতিদিন ভারতে ২৫০ থেকে ৩০০ ট্রাকে বিভিন্ন ধরনের পণ্য রপ্তানি হয়। এর মধ্যে শতাধিক ট্রাক পণ্য থাকে তৈরি পোশাক।
এর আগে গত ৮ এপ্রিল বাংলাদেশের জন্য ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করে ভারত। ফলে ভারতের বিমানবন্দর ব্যবহার করে তৃতীয় কোনো দেশে তৈরি পোশাক রপ্তানি করতে পারছে না বাংলাদেশ। অন্যদিকে প্রায় এক মাস আগে ভারত থেকে বেনাপোল, ভোমরা, সোনামসজিদ, বাংলাবান্ধা, বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানির সুযোগ বন্ধ করে দেয় বাংলাদেশের জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমানের মতে, এই পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপে তুলনামূলকভাবে বেশি নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বাংলাদেশের ওপর। তাই ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর চেষ্টা অব্যাহত রাখাই সরকারের উচিত বলে মনে করছেন তিনি।
মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আলোচনার মাধ্যমে বাংলাদেশ এবং ভারতের বিরোধপূর্ণ বিষয়সমূহ মিটিয়ে ফেলতে হবে এবং দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এটাই হবে উভয় দেশের জন্য কল্যাণকর।

ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
ভারতের নিষেধাজ্ঞার এক দিন পরই গত রোববার লালমনিরহাটের বুড়িমারী ও যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দরসহ বিভিন্ন বন্দরে পণ্যের ট্রাক আটকে দেয় ভারত। সংশ্লিষ্টদের সূত্রে জানা যায়, রোববার ভারতের আমদানি বিধিনিষেধের কারণে বুড়িমারী সীমান্তে প্রাণের ১৭ ট্রাক খাদ্যপণ্য আটকে যায়। এ ছাড়া বেনাপোলে ৩৬টি পোশাক বোঝাই ট্রাকসহ অন্যান্য পণ্যের শতাধিক ট্রাক ঢুকতে পারেনি।
গতকাল সোমবার পর্যন্ত বুড়িমারী থেকে প্রাণের পণ্যবোঝাই ট্রাকগুলোর অর্ধেকের বেশি ফেরত নিয়ে আসে প্রতিষ্ঠানটি। এ ছাড়া বেনাপোলে পোর্টের ভেতরে ২৪টি ট্রাক ছাড়া বাকিগুলো ফেরত চলে যায়।
বেনাপোল বন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. সাজেদুর রহমান গতকাল সোমবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, গতকাল পোর্টের ভেতর ও বাইরে শতাধিক ট্রাক দাঁড়িয়ে ছিল। আজ পোর্টের ভেতরের ২৪টি ছাড়া বাকিগুলো ফেরত নিয়ে গেছেন মালিকেরা। এখন পর্যন্ত মনে হচ্ছে, পোর্টের ভেতরের ট্রাকগুলোও ফেরত নিতে হবে।
জানতে চাইলে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পরিচালক (বিপণন) কামরুজ্জামান কামাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের হাতে ৬ মিলিয়ন ডলারের ক্রয় আদেশ রয়েছে। তার মধ্য থেকে রোববার বুড়িমারী দিয়ে ১৭ ট্রাকবোঝাই পণ্য পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু সেগুলো ঢুকতে পারেনি। ট্রাকগুলো ফেরত আনা হচ্ছে। নতুন করে কাগজপত্র তৈরি করে অন্য পথ দিয়ে পণ্য পাঠাতে হবে।’
বেনাপোল স্থলবন্দর সূত্রে জানা যায়, ওই ২৪টি ট্রাক পোর্টের ভেতরে থাকায় এখনো তারা ভারতে প্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে। তাদের আশা, যেহেতু নিষেধাজ্ঞার আগে এই পণ্যগুলোর এলসি করা হয়েছিল, তাই এগুলো প্রবেশে অনুমতি পাবে। তবে এটি নির্ভর করবে বাংলাদেশ সরকারের আলোচনার ওপর।
এমন পরিস্থিতিতে সরকারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ইতিমধ্যে অনেক রপ্তানিকারক রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সঙ্গে আলোচনা করে সরকারের সহযোগিতা চেয়েছে।
স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে আজ মঙ্গলবার আন্তমন্ত্রণালয়ের সভা ডেকেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে বিকেল ৪টায় আন্তমন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এই সভা অনুষ্ঠিত হবে।
সভায় নৌপরিবহন ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো, জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের প্রতিনিধিদের উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া ব্যবসায়ী প্রতিনিধি হিসেবে এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ, ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রতিনিধিদের উপস্থিতির জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
ভারতের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গত শনিবার হঠাৎ এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি নিষিদ্ধ করে। শুধু ভারতের নবসেবা ও কলকাতা সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করে দেশটির আমদানিকারকেরা বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি করতে পারবেন বলে ওই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। এ ছাড়া বাংলাদেশ থেকে ভারতের আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা ও মিজোরাম, পশ্চিমবঙ্গের চ্যাংড়াবান্দা ও ফুলবাড়ী শুল্ক স্টেশন দিয়ে ফল, ফলের স্বাদযুক্ত পানীয়, কোমল পানীয়, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, প্লাস্টিক পণ্য, সুতা, সুতার উপজাত, আসবাব রপ্তানিও নিষিদ্ধ করা হয় ওই বিজ্ঞপ্তিতে।
আমদানি ও রপ্তানিসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা জানান, দেশের ২৪টি বন্দরের মধ্যে ১৬টি বন্দর দিয়ে ভারতের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়ে থাকে। তবে যোগাযোগব্যবস্থা সহজ হওয়ায় বেনাপোল ও ভারতের পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে সবচেয়ে বেশি আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়। এর পরিমাণ ৮০ শতাংশ। বেনাপোল বন্দর দিয়ে প্রতিদিন ভারতে ২৫০ থেকে ৩০০ ট্রাকে বিভিন্ন ধরনের পণ্য রপ্তানি হয়। এর মধ্যে শতাধিক ট্রাক পণ্য থাকে তৈরি পোশাক।
এর আগে গত ৮ এপ্রিল বাংলাদেশের জন্য ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করে ভারত। ফলে ভারতের বিমানবন্দর ব্যবহার করে তৃতীয় কোনো দেশে তৈরি পোশাক রপ্তানি করতে পারছে না বাংলাদেশ। অন্যদিকে প্রায় এক মাস আগে ভারত থেকে বেনাপোল, ভোমরা, সোনামসজিদ, বাংলাবান্ধা, বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানির সুযোগ বন্ধ করে দেয় বাংলাদেশের জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমানের মতে, এই পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপে তুলনামূলকভাবে বেশি নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বাংলাদেশের ওপর। তাই ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর চেষ্টা অব্যাহত রাখাই সরকারের উচিত বলে মনে করছেন তিনি।
মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আলোচনার মাধ্যমে বাংলাদেশ এবং ভারতের বিরোধপূর্ণ বিষয়সমূহ মিটিয়ে ফেলতে হবে এবং দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এটাই হবে উভয় দেশের জন্য কল্যাণকর।

আগামী নির্বাচন সামনে রেখে রাজনৈতিক দলগুলোর প্রস্তুতি শুরু হয়েছে। যারা ক্ষমতায় আছে তারা আরেক দফা ক্ষমতায় থাকার জন্য ছক কষছে। আর যারা ক্ষমতায় যেতে চায়, তারাও পরিকল্পনা করছে মিত্র বাড়িয়ে নিজেদের শক্তি দেখানোর।
০৯ অক্টোবর ২০২২
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
০৬ অক্টোবর ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
১৮৯৮ সালে ভারতের উত্তর প্রদেশের একটি ধূলিধূসর টিলা খুঁড়ে পাওয়া মূল্যবান এই রত্নগুলো এক শতাব্দীর বেশি সময় ধরে একটি বেসরকারি ব্রিটিশ সংগ্রহাগারে প্রায় দৃষ্টিচক্ষুর আড়ালে ছিল। এখন যেহেতু রত্নগুলোর হাতবদলের সময় এসেছে, তাই নতুন সংগ্রাহকেরা আগ্রহ নিয়ে এগুলো সংগ্রহের জন্য অপেক্ষা করছেন। কিন্তু এখানে একটা অস্বস্তিও তৈরি হয়েছে।
গৌতম বুদ্ধের জন্মস্থান লুম্বিনীর কাছাকাছি, বর্তমানে ভারতের উত্তর প্রদেশে একটি ইটের ঘরের ভেতর থেকে প্রায় ১ হাজার ৮০০টি মুক্তা, রুবি, টোপাজ, নীলা ও নকশা করা সোনার পাত সংগ্রহ করা হয়েছিল। তবে এই রত্নগুলোর সঙ্গে সঙ্গে একটি খোদাই করা পাত্রে হাড়ের টুকরাও পাওয়া যায়, যেগুলোকে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষ বলে শনাক্ত করা হয়। এই আবিষ্কার তখন প্রত্নতত্ত্বের জগতে ব্যাপক আলোড়ন তোলে।
সাদাবি’স এশিয়ার চেয়ারম্যান নিকোলাস চাউ মনে করেন, স্মরণকালের বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর মাঝে এই রত্নসম্ভার অন্যতম। তবে এগুলো নিলামে তোলার কারণে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। আর তা হচ্ছে—ভারতের ইতিহাসের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িয়ে থাকা এবং বৌদ্ধদের কাছে পবিত্র এই সম্পদ বিক্রি করা কি নৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য?
১৮৯৮ সালে ব্রিটিশ এস্টেট ম্যানেজার উইলিয়াম ক্ল্যাক্সটন পেপ্পে লুম্বিনির ঠিক দক্ষিণে পিপ্রাওয়ায় অবস্থিত একটি ঢিবি খনন করেন। সেখান থেকেই প্রায় ২ হাজার বছর আগের ওই নির্দশনগুলো খুঁজে পাওয়া যায়।
ইতিহাসবিদদের মতে, প্রাপ্ত রত্নসম্ভার ও দেহাবশেষ, যা তখনো পর্যন্ত অক্ষত ছিল, সেগুলো গৌতম বুদ্ধের শাক্য বংশের এবং বিশ্বব্যাপী বৌদ্ধদের ঐতিহ্য। হাড়ের নিদর্শনগুলো থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা ও মিয়ানমারের মতো দেশগুলোতে বিতরণ করা হয়েছে। এসব দেশে এখনো সেগুলোর পূজা করা হয়।

আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
১৮৯৮ সালে ভারতের উত্তর প্রদেশের একটি ধূলিধূসর টিলা খুঁড়ে পাওয়া মূল্যবান এই রত্নগুলো এক শতাব্দীর বেশি সময় ধরে একটি বেসরকারি ব্রিটিশ সংগ্রহাগারে প্রায় দৃষ্টিচক্ষুর আড়ালে ছিল। এখন যেহেতু রত্নগুলোর হাতবদলের সময় এসেছে, তাই নতুন সংগ্রাহকেরা আগ্রহ নিয়ে এগুলো সংগ্রহের জন্য অপেক্ষা করছেন। কিন্তু এখানে একটা অস্বস্তিও তৈরি হয়েছে।
গৌতম বুদ্ধের জন্মস্থান লুম্বিনীর কাছাকাছি, বর্তমানে ভারতের উত্তর প্রদেশে একটি ইটের ঘরের ভেতর থেকে প্রায় ১ হাজার ৮০০টি মুক্তা, রুবি, টোপাজ, নীলা ও নকশা করা সোনার পাত সংগ্রহ করা হয়েছিল। তবে এই রত্নগুলোর সঙ্গে সঙ্গে একটি খোদাই করা পাত্রে হাড়ের টুকরাও পাওয়া যায়, যেগুলোকে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষ বলে শনাক্ত করা হয়। এই আবিষ্কার তখন প্রত্নতত্ত্বের জগতে ব্যাপক আলোড়ন তোলে।
সাদাবি’স এশিয়ার চেয়ারম্যান নিকোলাস চাউ মনে করেন, স্মরণকালের বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর মাঝে এই রত্নসম্ভার অন্যতম। তবে এগুলো নিলামে তোলার কারণে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। আর তা হচ্ছে—ভারতের ইতিহাসের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িয়ে থাকা এবং বৌদ্ধদের কাছে পবিত্র এই সম্পদ বিক্রি করা কি নৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য?
১৮৯৮ সালে ব্রিটিশ এস্টেট ম্যানেজার উইলিয়াম ক্ল্যাক্সটন পেপ্পে লুম্বিনির ঠিক দক্ষিণে পিপ্রাওয়ায় অবস্থিত একটি ঢিবি খনন করেন। সেখান থেকেই প্রায় ২ হাজার বছর আগের ওই নির্দশনগুলো খুঁজে পাওয়া যায়।
ইতিহাসবিদদের মতে, প্রাপ্ত রত্নসম্ভার ও দেহাবশেষ, যা তখনো পর্যন্ত অক্ষত ছিল, সেগুলো গৌতম বুদ্ধের শাক্য বংশের এবং বিশ্বব্যাপী বৌদ্ধদের ঐতিহ্য। হাড়ের নিদর্শনগুলো থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা ও মিয়ানমারের মতো দেশগুলোতে বিতরণ করা হয়েছে। এসব দেশে এখনো সেগুলোর পূজা করা হয়।

আগামী নির্বাচন সামনে রেখে রাজনৈতিক দলগুলোর প্রস্তুতি শুরু হয়েছে। যারা ক্ষমতায় আছে তারা আরেক দফা ক্ষমতায় থাকার জন্য ছক কষছে। আর যারা ক্ষমতায় যেতে চায়, তারাও পরিকল্পনা করছে মিত্র বাড়িয়ে নিজেদের শক্তি দেখানোর।
০৯ অক্টোবর ২০২২
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
০৬ অক্টোবর ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫