বদিউল আলম মজুমদার

গণতান্ত্রিক শাসন আমাদের সাংবিধানিক অঙ্গীকার। সংবিধানের ১১ অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, ‘প্রজাতন্ত্র হইবে একটি গণতন্ত্র’। এ ছাড়া আমাদের সংবিধানের ৫৯ অনুচ্ছেদে প্রশাসনের সর্বস্তরে জনপ্রতিনিধিদের শাসন প্রতিষ্ঠার নির্দেশনা দেওয়া আছে, যা গণতান্ত্রিক শাসনের অন্যতম পূর্বশর্ত। গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার যাত্রা শুরুই হয় নির্বাচনের মাধ্যমে, যাতে জনগণের সম্মতির শাসন প্রতিষ্ঠিত হয়। তাই সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন আমাদের সংবিধানের মৌলিক কাঠামোর অংশ।
একটি সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠানের ক্ষেত্রে অনেকগুলো গুরুত্বপূর্ণ অংশীজন রয়েছে। এদের মধ্যে সবচেয়ে মুখ্য দায়িত্ব পালন করে থাকে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। এ ছাড়া সরকার তথা প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর নির্বাচনের ক্ষেত্রে অতিগুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। রাজনৈতিক দলের ভূমিকাও সুষ্ঠু নির্বাচনের ক্ষেত্রে অপরিসীম। পাশাপাশি নাগরিক সমাজের সক্রিয়তাও সুষ্ঠু বা গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব রাখতে পারে।
সাংবিধানিকভাবে নির্বাচন কমিশনেরই দায়িত্ব নির্বাচন পরিচালনা করা। সংবিধানের ১১৯ অনুচ্ছেদে নির্বাচন কমিশনকে চারটি গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে, যেগুলো হলো: (১) রাষ্ট্রপতি পদের নির্বাচন, (২) সংসদ নির্বাচন, (৩) নির্বাচনী এলাকার সীমানা নির্ধারণ এবং (৪) ভোটার তালিকা প্রস্তুতকরণ। এসব কার্যক্রমে কমিশনের দায়িত্ব হলো ‘তত্ত্বাবধান, নির্দেশ ও নিয়ন্ত্রণ’। এসব দায়িত্ব সঠিকভাবে পালনের জন্য নির্বাচন কমিশনকে সংবিধানের ১১৮ অনুচ্ছেদের অধীনে স্বাধীন প্রতিষ্ঠান হিসেবে সৃষ্টি করা হয়েছে। তাই বর্তমান আউয়াল কমিশন যদি নিজের সক্ষমতা প্রদর্শনের মাধ্যমে স্বাধীন, নিরপেক্ষ ও সাহসিকতার সঙ্গে কাজ করে, তাহলে সুষ্ঠু নির্বাচনের পথ সুগম হবে।
উল্লিখিত চারটি দায়িত্ব পালনের লক্ষ্যে নির্বাচন কমিশনকে অগাধ ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে। সংবিধানের ১১৯ অনুচ্ছেদের ‘তত্ত্বাবধান, নির্দেশ ও নিয়ন্ত্রণের’ ক্ষমতার ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে আলতাফ হোসেন বনাম আবুল কাসেম মামলার রায়ে বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ নির্বাচন কমিশনের অন্তর্নিহিত ক্ষমতার স্বীকৃতি দিয়ে বলেন, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের স্বার্থে কমিশন আইন ও বিধিবিধানের সঙ্গে সংযোজনও করতে পারে, যে ক্ষমতা সাধারণত নির্বাচিত সংসদের জন্যই নির্ধারিত। এ ছাড়া গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ, ১৯৭২-এ গ্রহণযোগ্য নির্বাচন অনুষ্ঠানের লক্ষ্যে ইসিকে অনেক ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে।
তবে বর্তমান নির্বাচন কমিশন নিয়ে এরই মধ্যে অনেকগুলো প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। প্রধান বিরোধী দল বিএনপিসহ আরও অনেকগুলো রাজনৈতিক দল নির্বাচন কমিশন গঠন প্রক্রিয়ায় অংশ নেয়নি। প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও নির্বাচন কমিশন নিয়োগ আইন, ২০২২-এ স্বচ্ছভাবে নির্বাচন কমিশন গঠনের বিধান থাকলেও বর্তমান কমিশন গঠনের স্বচ্ছতা নিয়েও উঠেছে নানা প্রশ্ন। ফলে বর্তমান কমিশনের প্রতি গুরুতর আস্থার সংকট রয়েছে।
সম্প্রতি অনুষ্ঠিত কুমিল্লা সিটি করপোরেশন নির্বাচন, যেটি ছিল বর্তমান কমিশনের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ টেস্ট কেস, সেখানে তারা কতটুকু সক্ষমতা প্রদর্শন করতে পেরেছে, তা নিয়েও অনেকের মনে সন্দেহ জন্মেছে। এই নির্বাচনে কমিশন সিটি করপোরেশন (নির্বাচন আচরণ) বিধিমালা, ২০১৬ প্রয়োগে ব্যর্থ হয়েছে। বিধিমালার ২২ ধারার অধীনে কমিশন ‘সরকারি সুবিধাভোগী অতিগুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি’ হিসেবে স্থানীয় সংসদ সদস্যকে এলাকা ছাড়ার একটি নির্দেশ দেয়, যাতে তিনি কর্ণপাতও করেননি। বিধিমালার ৩১ ও ৩২ ধারায় আচরণবিধি লঙ্ঘনের শাস্তি জেল-জরিমানা ও প্রার্থিতা বাতিলের বিধান থাকলেও নির্বাচন কমিশন তা প্রয়োগ থেকে বিরত থাকে। শুধু তা-ই নয়, মাননীয় সিইসি দাবি করেন, একজন সংসদ সদস্য এভাবে আচরণবিধি লঙ্ঘন করলেও তাঁদের কিছুই করার নেই। এমনকি একজন নির্বাচন কমিশনার বলেন, ‘সম্মানিত ব্যক্তির সম্মানহানি করা কমিশনের কাজ নয়।’ নির্বাচন-পরবর্তী সময়ে সিইসি কাজী হাবিবুল আউয়াল দাবি করেন, কমিশন সংসদ সদস্যকে এলাকা ত্যাগ করতে বলেনি, সংসদ সদস্যও কমিশনের নির্দেশ অমান্য করেননি এবং কমিশনও ব্যর্থ হয়নি। এসব অসংলগ্ন বক্তব্যের মাধ্যমে একটি গুরুত্বপূর্ণ সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানকে জনসমক্ষে শুধু হেয়প্রতিপন্নই করা হয়নি, বিধিবিধান প্রয়োগের ক্ষেত্রে অপারগতার কারণে কমিশনের সদস্যরা ‘আইন অনুযায়ী ও বিশ্বস্ততার সহিত আমার পদের কর্তব্য পালনে’ও ব্যর্থতা প্রদর্শন করেছেন।
ছোট একটি সিটি করপোরেশনের নির্বাচনের ক্ষেত্রে একজন সংসদ সদস্যের বেলায় নির্বাচন কমিশন তাদের নির্বাচনী বিধিবিধান প্রয়োগে অপারগতা প্রদর্শন করলে জাতীয় নির্বাচন পরিচালনায় তাদের সক্ষমতা নিয়ে প্রশ্ন ওঠাই স্বাভাবিক। কারণ, জাতীয় নির্বাচনে থাকবেন ৩০০ এমপি। পাশাপাশি থাকবেন প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর অসংখ্য কর্মকর্তা, যাঁরা অতীতে নির্বাচনকে প্রভাবিত করেছেন বলে অভিযোগ আছে। এ ছাড়া এতে থাকবেন সব কটি রাজনৈতিক দলের কয়েক হাজার প্রার্থী ও অসংখ্য নেতা-কর্মী। কুমিল্লায় মাত্র একজন সংসদ সদস্যের কাছে আত্মসমর্পণের প্রেক্ষাপটে জাতীয় নির্বাচনে বর্তমান কমিশন এতগুলো শক্তিশালী পক্ষকে কীভাবে সামলাবে, সেই প্রশ্ন থেকেই যায়। তাই আগামী নির্বাচন সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য হবে কি না, তা নিয়ে যথেষ্ট শঙ্কার কারণ রয়েছে।
আগামী নির্বাচনের গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে শঙ্কার আরেকটি কারণ হলো ইভিএম। ইভিএম ব্যবহারে ভোটের বুথে ‘ডাকাত’-এর কথা আমরা শুনেছি। কিন্তু ইভিএমের ক্ষেত্রে আরও অনেক ডাকাত নির্বাচনী ফলাফলকে প্রভাবিত করতে পারে। যেমন কেন্দ্রের প্রিসাইডিং বা পোলিং কর্মকর্তারা তাঁদের ইভিএমকে ওভাররাইড করার ক্ষমতা ব্যবহার করে ফলাফল বদলে দিতে পারেন। যাঁরা ইভিএমের প্রোগ্রামিংয়ের সঙ্গে জড়িত, তাঁরাও কারসাজি করতে পারেন। কুমিল্লার নির্বাচনে অন্তত একটি কেন্দ্রে কারসাজির অভিযোগ উঠেছে, একজন ম্যাজিস্ট্রেট যা তদন্ত করতে বাধাগ্রস্ত হয়েছিলেন। সর্বোপরি ইভিএমকে ওভাররাইড করার ক্ষমতা বাড়িয়ে দিয়ে কমিশনও নির্বাচনী ফলাফল প্রভাবিত করতে পারে। বিবিসি বাংলার এক প্রতিবেদন অনুযায়ী, গত জাতীয় নির্বাচনে ভোটকেন্দ্রের কর্মকর্তাদের ইভিএমের ক্ষেত্রে ২৫ শতাংশ ওভাররাইড করার ক্ষমতা প্রদান করা হয়েছিল। এসব কারণে ইভিএম ব্যবহারের ক্ষেত্রে ডিজিটাল জালিয়াতি হওয়া সম্ভব।
কুমিল্লা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে শেষ চারটি কেন্দ্র, যেখান থেকে ফলাফল সবার পরে এসেছে, সেখানে ইভিএম ডাকাতের কবলে পড়েছিল কি না, তা খতিয়ে দেখা দরকার। ভোট গ্রহণ শেষ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই ইভিএম থেকে ফলাফল পাওয়ার কথা থাকলেও চারটি কেন্দ্র থেকে তা পেতে চার ঘণ্টা দেরি হলো কেন? আর এই চারটি কেন্দ্রের ফলাফল থেকেই সরকারি দলের প্রার্থী অনেকটা অলৌকিকভাবে ৩৪৩ ভোটে জিতে যান, যদিও আগের ১০১টি কেন্দ্রের ঘোষিত ফলাফলে তিনি ৬২৯ ভোটে পিছিয়ে ছিলেন। এ নিয়ে পরাজিত প্রার্থী মনিরুল হক সাক্কু তাঁকে জোর করে হারিয়ে দেওয়ার অভিযোগ তুলেছেন। এই নাটকীয়তা নিয়ে আরও প্রশ্ন জাগে, যখন কমিশনের পক্ষ থেকে শেষ চার কেন্দ্রের ফল প্রকাশে বিলম্ব নিয়ে নানাভাবে ব্যাখ্যা দেওয়ার চেষ্টা করা হয়। কুমিল্লার ফলাফল নাটকীয়ভাবে বদলে যাওয়া নিয়ে যে বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে, তা সুরাহার একমাত্র পথ হলো একটি নিরপেক্ষ তদন্ত। কিন্তু কমিশন সেই পথে হাঁটেনি।
আবার ইভিএমে ভোটার ভেরিফায়েবল পেপার অডিট ট্রেইল (ভিভিপিএটি) নেই, যে দুর্বলতার কারণে নির্বাচন কমিশন কর্তৃক গঠিত কারিগরি কমিটির প্রধান হিসেবে প্রয়াত ড. জামিলুর রেজা চৌধুরী এই ইভিএম কেনার সুপারিশে স্বাক্ষর করেননি। আর এই দুর্বলতার কারণে মনিরুল হকের অভিযোগের সত্য-মিথ্যা, কোনোটাই প্রমাণ করা যাবে না। কারণ, ভিভিপিএটিবিহীন ইভিএমে ভোট পুনর্গণনা বা অডিটের কোনো সুযোগ নেই। এ ক্ষেত্রে কমিশনের প্রদত্ত ফলাফলই চূড়ান্ত।
এসব দুর্বলতা ছাড়াও নির্বাচনে ইভিএমের ব্যবহার মানুষকে ভোটাধিকার থেকে বঞ্চিত করে। যেমন, ২০১৮ সালের জাতীয় নির্বাচনে যে ২৯৪টি আসনে ব্যালট পেপার ব্যবহৃত হয়েছিল, তাতে ভোট পড়ার হার ছিল ৮০ দশমিক ৮০ শতাংশ, তার বিপরীতে ইভিএম ব্যবহৃত ছয়টি আসনে ভোট পড়ার হার ছিল প্রায় ৩০ শতাংশ কম। এমনকি কুমিল্লা সিটি নির্বাচনেও ২০১৭ সালের তুলনায় এবার ভোট পড়ার হার প্রায় ৫ শতাংশ কমেছে। কিন্তু এই ইভিএম ব্যবহার করার জন্যই যেন নির্বাচন কমিশন অত্যন্ত তৎপর হয়ে উঠেছে।
ইভিএমের এসব দুর্বলতা এবং কমিশনের নিজের গঠন নিয়ে বিরোধী দলসমূহের আস্থার ঘাটতি এবং আইনকানুন প্রয়োগে সক্ষমতার অভাবের কারণে আগামী জাতীয় নির্বাচন সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য হবে কি না, তা নিয়ে এরই মধ্যে অনেক নাগরিকের মনে গুরুতর প্রশ্নের জন্ম হয়েছে। নির্বাচনের সময় যদি সরকার তথা প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী নিরপেক্ষ আচরণ না করে, রাজনৈতিক দলগুলো বিশেষত সরকারি দল যদি সদাচরণ না করে এবং গণমাধ্যম ও নাগরিক সমাজ যদি যথার্থ নজরদারি না করতে পারে, তাহলে গ্রহণযোগ্য আগামী নির্বাচনের আশা দুরাশাই থেকে যাবে। এই দুরাশার অবসান না হলে এবং ২০২৩ সালের শেষে একটি সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠিত না হলে জাতি হিসেবে আমরা এক ভয়াবহ দুর্যোগের দিকে ধাবিত হতে পারি।

গণতান্ত্রিক শাসন আমাদের সাংবিধানিক অঙ্গীকার। সংবিধানের ১১ অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, ‘প্রজাতন্ত্র হইবে একটি গণতন্ত্র’। এ ছাড়া আমাদের সংবিধানের ৫৯ অনুচ্ছেদে প্রশাসনের সর্বস্তরে জনপ্রতিনিধিদের শাসন প্রতিষ্ঠার নির্দেশনা দেওয়া আছে, যা গণতান্ত্রিক শাসনের অন্যতম পূর্বশর্ত। গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার যাত্রা শুরুই হয় নির্বাচনের মাধ্যমে, যাতে জনগণের সম্মতির শাসন প্রতিষ্ঠিত হয়। তাই সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন আমাদের সংবিধানের মৌলিক কাঠামোর অংশ।
একটি সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠানের ক্ষেত্রে অনেকগুলো গুরুত্বপূর্ণ অংশীজন রয়েছে। এদের মধ্যে সবচেয়ে মুখ্য দায়িত্ব পালন করে থাকে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। এ ছাড়া সরকার তথা প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর নির্বাচনের ক্ষেত্রে অতিগুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। রাজনৈতিক দলের ভূমিকাও সুষ্ঠু নির্বাচনের ক্ষেত্রে অপরিসীম। পাশাপাশি নাগরিক সমাজের সক্রিয়তাও সুষ্ঠু বা গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব রাখতে পারে।
সাংবিধানিকভাবে নির্বাচন কমিশনেরই দায়িত্ব নির্বাচন পরিচালনা করা। সংবিধানের ১১৯ অনুচ্ছেদে নির্বাচন কমিশনকে চারটি গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে, যেগুলো হলো: (১) রাষ্ট্রপতি পদের নির্বাচন, (২) সংসদ নির্বাচন, (৩) নির্বাচনী এলাকার সীমানা নির্ধারণ এবং (৪) ভোটার তালিকা প্রস্তুতকরণ। এসব কার্যক্রমে কমিশনের দায়িত্ব হলো ‘তত্ত্বাবধান, নির্দেশ ও নিয়ন্ত্রণ’। এসব দায়িত্ব সঠিকভাবে পালনের জন্য নির্বাচন কমিশনকে সংবিধানের ১১৮ অনুচ্ছেদের অধীনে স্বাধীন প্রতিষ্ঠান হিসেবে সৃষ্টি করা হয়েছে। তাই বর্তমান আউয়াল কমিশন যদি নিজের সক্ষমতা প্রদর্শনের মাধ্যমে স্বাধীন, নিরপেক্ষ ও সাহসিকতার সঙ্গে কাজ করে, তাহলে সুষ্ঠু নির্বাচনের পথ সুগম হবে।
উল্লিখিত চারটি দায়িত্ব পালনের লক্ষ্যে নির্বাচন কমিশনকে অগাধ ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে। সংবিধানের ১১৯ অনুচ্ছেদের ‘তত্ত্বাবধান, নির্দেশ ও নিয়ন্ত্রণের’ ক্ষমতার ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে আলতাফ হোসেন বনাম আবুল কাসেম মামলার রায়ে বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ নির্বাচন কমিশনের অন্তর্নিহিত ক্ষমতার স্বীকৃতি দিয়ে বলেন, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের স্বার্থে কমিশন আইন ও বিধিবিধানের সঙ্গে সংযোজনও করতে পারে, যে ক্ষমতা সাধারণত নির্বাচিত সংসদের জন্যই নির্ধারিত। এ ছাড়া গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ, ১৯৭২-এ গ্রহণযোগ্য নির্বাচন অনুষ্ঠানের লক্ষ্যে ইসিকে অনেক ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে।
তবে বর্তমান নির্বাচন কমিশন নিয়ে এরই মধ্যে অনেকগুলো প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। প্রধান বিরোধী দল বিএনপিসহ আরও অনেকগুলো রাজনৈতিক দল নির্বাচন কমিশন গঠন প্রক্রিয়ায় অংশ নেয়নি। প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও নির্বাচন কমিশন নিয়োগ আইন, ২০২২-এ স্বচ্ছভাবে নির্বাচন কমিশন গঠনের বিধান থাকলেও বর্তমান কমিশন গঠনের স্বচ্ছতা নিয়েও উঠেছে নানা প্রশ্ন। ফলে বর্তমান কমিশনের প্রতি গুরুতর আস্থার সংকট রয়েছে।
সম্প্রতি অনুষ্ঠিত কুমিল্লা সিটি করপোরেশন নির্বাচন, যেটি ছিল বর্তমান কমিশনের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ টেস্ট কেস, সেখানে তারা কতটুকু সক্ষমতা প্রদর্শন করতে পেরেছে, তা নিয়েও অনেকের মনে সন্দেহ জন্মেছে। এই নির্বাচনে কমিশন সিটি করপোরেশন (নির্বাচন আচরণ) বিধিমালা, ২০১৬ প্রয়োগে ব্যর্থ হয়েছে। বিধিমালার ২২ ধারার অধীনে কমিশন ‘সরকারি সুবিধাভোগী অতিগুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি’ হিসেবে স্থানীয় সংসদ সদস্যকে এলাকা ছাড়ার একটি নির্দেশ দেয়, যাতে তিনি কর্ণপাতও করেননি। বিধিমালার ৩১ ও ৩২ ধারায় আচরণবিধি লঙ্ঘনের শাস্তি জেল-জরিমানা ও প্রার্থিতা বাতিলের বিধান থাকলেও নির্বাচন কমিশন তা প্রয়োগ থেকে বিরত থাকে। শুধু তা-ই নয়, মাননীয় সিইসি দাবি করেন, একজন সংসদ সদস্য এভাবে আচরণবিধি লঙ্ঘন করলেও তাঁদের কিছুই করার নেই। এমনকি একজন নির্বাচন কমিশনার বলেন, ‘সম্মানিত ব্যক্তির সম্মানহানি করা কমিশনের কাজ নয়।’ নির্বাচন-পরবর্তী সময়ে সিইসি কাজী হাবিবুল আউয়াল দাবি করেন, কমিশন সংসদ সদস্যকে এলাকা ত্যাগ করতে বলেনি, সংসদ সদস্যও কমিশনের নির্দেশ অমান্য করেননি এবং কমিশনও ব্যর্থ হয়নি। এসব অসংলগ্ন বক্তব্যের মাধ্যমে একটি গুরুত্বপূর্ণ সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানকে জনসমক্ষে শুধু হেয়প্রতিপন্নই করা হয়নি, বিধিবিধান প্রয়োগের ক্ষেত্রে অপারগতার কারণে কমিশনের সদস্যরা ‘আইন অনুযায়ী ও বিশ্বস্ততার সহিত আমার পদের কর্তব্য পালনে’ও ব্যর্থতা প্রদর্শন করেছেন।
ছোট একটি সিটি করপোরেশনের নির্বাচনের ক্ষেত্রে একজন সংসদ সদস্যের বেলায় নির্বাচন কমিশন তাদের নির্বাচনী বিধিবিধান প্রয়োগে অপারগতা প্রদর্শন করলে জাতীয় নির্বাচন পরিচালনায় তাদের সক্ষমতা নিয়ে প্রশ্ন ওঠাই স্বাভাবিক। কারণ, জাতীয় নির্বাচনে থাকবেন ৩০০ এমপি। পাশাপাশি থাকবেন প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর অসংখ্য কর্মকর্তা, যাঁরা অতীতে নির্বাচনকে প্রভাবিত করেছেন বলে অভিযোগ আছে। এ ছাড়া এতে থাকবেন সব কটি রাজনৈতিক দলের কয়েক হাজার প্রার্থী ও অসংখ্য নেতা-কর্মী। কুমিল্লায় মাত্র একজন সংসদ সদস্যের কাছে আত্মসমর্পণের প্রেক্ষাপটে জাতীয় নির্বাচনে বর্তমান কমিশন এতগুলো শক্তিশালী পক্ষকে কীভাবে সামলাবে, সেই প্রশ্ন থেকেই যায়। তাই আগামী নির্বাচন সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য হবে কি না, তা নিয়ে যথেষ্ট শঙ্কার কারণ রয়েছে।
আগামী নির্বাচনের গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে শঙ্কার আরেকটি কারণ হলো ইভিএম। ইভিএম ব্যবহারে ভোটের বুথে ‘ডাকাত’-এর কথা আমরা শুনেছি। কিন্তু ইভিএমের ক্ষেত্রে আরও অনেক ডাকাত নির্বাচনী ফলাফলকে প্রভাবিত করতে পারে। যেমন কেন্দ্রের প্রিসাইডিং বা পোলিং কর্মকর্তারা তাঁদের ইভিএমকে ওভাররাইড করার ক্ষমতা ব্যবহার করে ফলাফল বদলে দিতে পারেন। যাঁরা ইভিএমের প্রোগ্রামিংয়ের সঙ্গে জড়িত, তাঁরাও কারসাজি করতে পারেন। কুমিল্লার নির্বাচনে অন্তত একটি কেন্দ্রে কারসাজির অভিযোগ উঠেছে, একজন ম্যাজিস্ট্রেট যা তদন্ত করতে বাধাগ্রস্ত হয়েছিলেন। সর্বোপরি ইভিএমকে ওভাররাইড করার ক্ষমতা বাড়িয়ে দিয়ে কমিশনও নির্বাচনী ফলাফল প্রভাবিত করতে পারে। বিবিসি বাংলার এক প্রতিবেদন অনুযায়ী, গত জাতীয় নির্বাচনে ভোটকেন্দ্রের কর্মকর্তাদের ইভিএমের ক্ষেত্রে ২৫ শতাংশ ওভাররাইড করার ক্ষমতা প্রদান করা হয়েছিল। এসব কারণে ইভিএম ব্যবহারের ক্ষেত্রে ডিজিটাল জালিয়াতি হওয়া সম্ভব।
কুমিল্লা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে শেষ চারটি কেন্দ্র, যেখান থেকে ফলাফল সবার পরে এসেছে, সেখানে ইভিএম ডাকাতের কবলে পড়েছিল কি না, তা খতিয়ে দেখা দরকার। ভোট গ্রহণ শেষ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই ইভিএম থেকে ফলাফল পাওয়ার কথা থাকলেও চারটি কেন্দ্র থেকে তা পেতে চার ঘণ্টা দেরি হলো কেন? আর এই চারটি কেন্দ্রের ফলাফল থেকেই সরকারি দলের প্রার্থী অনেকটা অলৌকিকভাবে ৩৪৩ ভোটে জিতে যান, যদিও আগের ১০১টি কেন্দ্রের ঘোষিত ফলাফলে তিনি ৬২৯ ভোটে পিছিয়ে ছিলেন। এ নিয়ে পরাজিত প্রার্থী মনিরুল হক সাক্কু তাঁকে জোর করে হারিয়ে দেওয়ার অভিযোগ তুলেছেন। এই নাটকীয়তা নিয়ে আরও প্রশ্ন জাগে, যখন কমিশনের পক্ষ থেকে শেষ চার কেন্দ্রের ফল প্রকাশে বিলম্ব নিয়ে নানাভাবে ব্যাখ্যা দেওয়ার চেষ্টা করা হয়। কুমিল্লার ফলাফল নাটকীয়ভাবে বদলে যাওয়া নিয়ে যে বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে, তা সুরাহার একমাত্র পথ হলো একটি নিরপেক্ষ তদন্ত। কিন্তু কমিশন সেই পথে হাঁটেনি।
আবার ইভিএমে ভোটার ভেরিফায়েবল পেপার অডিট ট্রেইল (ভিভিপিএটি) নেই, যে দুর্বলতার কারণে নির্বাচন কমিশন কর্তৃক গঠিত কারিগরি কমিটির প্রধান হিসেবে প্রয়াত ড. জামিলুর রেজা চৌধুরী এই ইভিএম কেনার সুপারিশে স্বাক্ষর করেননি। আর এই দুর্বলতার কারণে মনিরুল হকের অভিযোগের সত্য-মিথ্যা, কোনোটাই প্রমাণ করা যাবে না। কারণ, ভিভিপিএটিবিহীন ইভিএমে ভোট পুনর্গণনা বা অডিটের কোনো সুযোগ নেই। এ ক্ষেত্রে কমিশনের প্রদত্ত ফলাফলই চূড়ান্ত।
এসব দুর্বলতা ছাড়াও নির্বাচনে ইভিএমের ব্যবহার মানুষকে ভোটাধিকার থেকে বঞ্চিত করে। যেমন, ২০১৮ সালের জাতীয় নির্বাচনে যে ২৯৪টি আসনে ব্যালট পেপার ব্যবহৃত হয়েছিল, তাতে ভোট পড়ার হার ছিল ৮০ দশমিক ৮০ শতাংশ, তার বিপরীতে ইভিএম ব্যবহৃত ছয়টি আসনে ভোট পড়ার হার ছিল প্রায় ৩০ শতাংশ কম। এমনকি কুমিল্লা সিটি নির্বাচনেও ২০১৭ সালের তুলনায় এবার ভোট পড়ার হার প্রায় ৫ শতাংশ কমেছে। কিন্তু এই ইভিএম ব্যবহার করার জন্যই যেন নির্বাচন কমিশন অত্যন্ত তৎপর হয়ে উঠেছে।
ইভিএমের এসব দুর্বলতা এবং কমিশনের নিজের গঠন নিয়ে বিরোধী দলসমূহের আস্থার ঘাটতি এবং আইনকানুন প্রয়োগে সক্ষমতার অভাবের কারণে আগামী জাতীয় নির্বাচন সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য হবে কি না, তা নিয়ে এরই মধ্যে অনেক নাগরিকের মনে গুরুতর প্রশ্নের জন্ম হয়েছে। নির্বাচনের সময় যদি সরকার তথা প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী নিরপেক্ষ আচরণ না করে, রাজনৈতিক দলগুলো বিশেষত সরকারি দল যদি সদাচরণ না করে এবং গণমাধ্যম ও নাগরিক সমাজ যদি যথার্থ নজরদারি না করতে পারে, তাহলে গ্রহণযোগ্য আগামী নির্বাচনের আশা দুরাশাই থেকে যাবে। এই দুরাশার অবসান না হলে এবং ২০২৩ সালের শেষে একটি সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠিত না হলে জাতি হিসেবে আমরা এক ভয়াবহ দুর্যোগের দিকে ধাবিত হতে পারি।

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
০৬ অক্টোবর ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫বাসস, ঢাকা

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
আজ সোমবার বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১-এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) মো. আলমগীরের জেরা শুরু করেন রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী আমীর হোসেন। আইনজীবী আমীর হোসেন পলাতক আসামি শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে শুনানি করছেন। এর আগে গত মঙ্গলবার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. আলমগীরের সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন হয়।
এই মামলার শুনানিতে এর আগে গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম প্রতীক শহীদ আবু সাঈদের বাবাসহ স্বজনহারা পরিবারের একাধিক সদস্য সাক্ষ্য দিয়েছেন। এ ছাড়া মামলার গুরুত্বপূর্ণ ‘স্টার উইটনেস’ হিসেবে সাক্ষ্য দেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক এবং জুলাই আন্দোলনের অন্যতম নেতৃত্বদানকারী নাহিদ ইসলাম এবং দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান।
গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে আওয়ামী লীগ সরকার, তাদের দলীয় ক্যাডার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করে বলে অভিযোগ ওঠে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে শেখ হাসিনা, তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং তৎকালীন আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে গত ১০ জুলাই অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল-১।
পরবর্তীকালে, এই মামলার অন্যতম আসামি সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন দোষ স্বীকার করে ঘটনার সত্যতা উদ্ঘাটনে রাজসাক্ষী (অ্যাপ্রোভার) হওয়ার জন্য ট্রাইব্যুনালে আবেদন করেন। ট্রাইব্যুনাল তাঁর আবেদন মঞ্জুর করলে তিনি রাজসাক্ষী হিসেবে এই মামলায় সাক্ষ্য দেন।
মামলার প্রসিকিউশন পক্ষে শুনানি করছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম এবং গাজী এসএইচ তামিম। শুনানিতে তাঁদের সঙ্গে অপর প্রসিকিউটররাও উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদিকে, এই মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের পক্ষে আছেন আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ।
মানবতাবিরোধী অপরাধের এই মামলা ছাড়াও ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আরও দুটি মামলা বিচারাধীন। এর মধ্যে একটি মামলায় আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে সংঘটিত গুম-খুনের ঘটনায় তাঁকে আসামি করা হয়েছে। অন্য মামলাটি হলো রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে হত্যাকাণ্ড নিয়ে। এই তিনটি মামলার বিচারকাজই বর্তমানে দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে চলমান।

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
আজ সোমবার বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১-এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) মো. আলমগীরের জেরা শুরু করেন রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী আমীর হোসেন। আইনজীবী আমীর হোসেন পলাতক আসামি শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে শুনানি করছেন। এর আগে গত মঙ্গলবার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. আলমগীরের সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন হয়।
এই মামলার শুনানিতে এর আগে গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম প্রতীক শহীদ আবু সাঈদের বাবাসহ স্বজনহারা পরিবারের একাধিক সদস্য সাক্ষ্য দিয়েছেন। এ ছাড়া মামলার গুরুত্বপূর্ণ ‘স্টার উইটনেস’ হিসেবে সাক্ষ্য দেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক এবং জুলাই আন্দোলনের অন্যতম নেতৃত্বদানকারী নাহিদ ইসলাম এবং দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান।
গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে আওয়ামী লীগ সরকার, তাদের দলীয় ক্যাডার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করে বলে অভিযোগ ওঠে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে শেখ হাসিনা, তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং তৎকালীন আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে গত ১০ জুলাই অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল-১।
পরবর্তীকালে, এই মামলার অন্যতম আসামি সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন দোষ স্বীকার করে ঘটনার সত্যতা উদ্ঘাটনে রাজসাক্ষী (অ্যাপ্রোভার) হওয়ার জন্য ট্রাইব্যুনালে আবেদন করেন। ট্রাইব্যুনাল তাঁর আবেদন মঞ্জুর করলে তিনি রাজসাক্ষী হিসেবে এই মামলায় সাক্ষ্য দেন।
মামলার প্রসিকিউশন পক্ষে শুনানি করছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম এবং গাজী এসএইচ তামিম। শুনানিতে তাঁদের সঙ্গে অপর প্রসিকিউটররাও উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদিকে, এই মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের পক্ষে আছেন আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ।
মানবতাবিরোধী অপরাধের এই মামলা ছাড়াও ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আরও দুটি মামলা বিচারাধীন। এর মধ্যে একটি মামলায় আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে সংঘটিত গুম-খুনের ঘটনায় তাঁকে আসামি করা হয়েছে। অন্য মামলাটি হলো রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে হত্যাকাণ্ড নিয়ে। এই তিনটি মামলার বিচারকাজই বর্তমানে দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে চলমান।

গণতান্ত্রিক শাসন আমাদের সাংবিধানিক অঙ্গীকার। সংবিধানের ১১ অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, ‘প্রজাতন্ত্র হইবে একটি গণতন্ত্র’। এ ছাড়া আমাদের সংবিধানের ৫৯ অনুচ্ছেদে প্রশাসনের সর্বস্তরে জনপ্রতিনিধিদের শাসন প্রতিষ্ঠার নির্দেশনা দেওয়া আছে....
২৯ জুন ২০২২
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর সঙ্গে।
মাছের সুষ্ঠু প্রজনন, উৎপাদন, মৎস্যসম্পদ সংরক্ষণ ও টেকসই মৎস্য আহরণের জন্য সমুদ্রে সব ধরনের মাছ শিকার ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা গতকাল বুধবার দিবাগত মধ্যরাতে শেষ হয়েছে। তাই গতকাল দিনভর ছিল উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে ব্যস্ততা। অনেকে দেখে নিচ্ছিলেন ট্রলার ঠিকঠাক আছে কি না, কেউ জালের ছেঁড়া অংশ সেলাই করছিলেন, কেউ আবার প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রীসহ অন্য সরঞ্জাম গুছিয়ে নিচ্ছিলেন।
বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র এবং ফকিরহাট উপ-মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ঘাটে গতকাল শত শত ট্রলার নোঙর করে রাখা ছিল। জেলেদের উপস্থিতিতে ঘাট এলাকা সরগরম হয়ে ওঠে। ফকিরহাটের মুদি-মনিহারি দোকানগুলোতে জেলেরা কেনাকাটা করতে ভিড় জমান। ফকিরহাট এলাকার বিসমিল্লাহ ট্রলারের মাঝি রহিম মিয়া বলেন, ‘সাগরে মাছ শিকারে যেতে সকল প্রস্তুতি নিয়েছি। নিষেধাজ্ঞার সময় শেষ হওয়ামাত্রই সাগরে নামব।’
জেলে নুরসাইদ ও ফোরকান মিয়া বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞার সময় পরিবার-পরিজন নিয়ে বেশ কষ্টে কেটেছে। ওই সময়ে বেশ টাকা ঋণ করেছি। এখন সাগরে যাব। দেখি আল্লাহ ঋণ পরিশোধ করতে দেন কি না।’
নোয়াখালীর হাতিয়ার সূর্যমুখী, বাংলাবাজার, কাজিরবাজার, পাইতান মার্কেট চেয়ারম্যান ঘাটসহ বেশ কয়েকটি ঘাটে গতকাল জেলেদের ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা গেছে। অনেকে নৌকায় জাল তুলছিলেন, আবার অনেকে জ্বালানি তেল মজুতসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী ট্রলারে নিয়ে যান। সূর্যমুখী ঘাটের এমভি মায়ের দোয়া ট্রলারের মাঝি জাফর উল্যা বলেন, ‘সাগরে ৮-১০ দিন থাকার প্রস্তুতি নিচ্ছি। সন্ধ্যায় সাগরের উদ্দেশে রওনা দেব।’
সূর্যমুখী ঘাট জেলে সমিতির সভাপতি জবিয়ল হক বলেন, ‘সাগরে নামতে প্রস্তুত নোয়াখালীর হাতিয়ার ২০টি ঘাটের লক্ষাধিক জেলে। এসব ঘাটে প্রায় ১০ হাজার ছোট-বড় ফিশিং ট্রলার রয়েছে। প্রতি ট্রলারে ১০ জন হলেও লক্ষাধিক জেলে এই মাছ ধরার সঙ্গে জড়িত। তাঁদের সবাই গত ৫৮ দিন তীরে বেকার ছিলেন।’
পিরোজপুরের ইন্দুরকানি উপজেলার পাড়েরহাট মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের পার্শ্ববর্তী এলাকার জেলেরা গতকাল দিনভর সাগরে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন। এ ছাড়া মঠবাড়িয়া উপজেলার সাপলেজা, খেতাচিড়া, বড়মাছুয়া, ছোটমাছুয়া, ভান্ডারিয়া উপজেলার চরখালী, হেতালিয়া, কাউখালী উপজেলার সোনাকুর এলাকার জেলেরা, সদর উপজেলা এবং নেছারাবাদ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার জেলেরা প্রস্তুতি শেষে গত রাতে বঙ্গোপসাগরে রওনা হন।
কয়েক দিন ধরে কক্সবাজার উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে নৌকা, জাল মেরামতসহ বিভিন্ন প্রস্তুতি সেরেছেন জেলেরা। গতকাল মেরিন ড্রাইভের টেকনাফের খুরেরমুখ, সাবরাং ও বাহারছড়া এলাকায় দেখা গেছে, সড়কে দাঁড় করিয়ে রাখা সারি সারি ট্রলারে জাল ও রসদ তোলেন জেলেরা।
একটি ট্রলারের মাঝি আবু তাহের জানান, এবার ভারতের সঙ্গে মিল রেখে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় কেউ সাগরে মাছ শিকারে নামেনি। এতে উপকূলের কাছাকাছি সাগরে জাল ফেললেই ইলিশসহ অন্য মাছ পাওয়া যাবে বলে আশাবাদী তিনি।
কক্সবাজার শহরের ফিশারি ঘাটের মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির পরিচালক জুলফিকার আলী জানান, কক্সবাজার উপকূলে ছোট-বড় ৭ হাজারের মতো যান্ত্রিক ট্রলার রয়েছে। এসব ট্রলারে প্রায় এক লাখ জেলে ও শ্রমিক নিয়োজিত রয়েছেন। অধিকাংশ ট্রলার নিষেধাজ্ঞা ওঠার সঙ্গে সঙ্গে সাগরে রওনা হবে।
[প্রতিবেদন তৈরিতে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছেন বরগুনা ও আমতলী, পিরোজপুর, কক্সবাজার এবং হাতিয়া প্রতিনিধি]

‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর সঙ্গে।
মাছের সুষ্ঠু প্রজনন, উৎপাদন, মৎস্যসম্পদ সংরক্ষণ ও টেকসই মৎস্য আহরণের জন্য সমুদ্রে সব ধরনের মাছ শিকার ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা গতকাল বুধবার দিবাগত মধ্যরাতে শেষ হয়েছে। তাই গতকাল দিনভর ছিল উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে ব্যস্ততা। অনেকে দেখে নিচ্ছিলেন ট্রলার ঠিকঠাক আছে কি না, কেউ জালের ছেঁড়া অংশ সেলাই করছিলেন, কেউ আবার প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রীসহ অন্য সরঞ্জাম গুছিয়ে নিচ্ছিলেন।
বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র এবং ফকিরহাট উপ-মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ঘাটে গতকাল শত শত ট্রলার নোঙর করে রাখা ছিল। জেলেদের উপস্থিতিতে ঘাট এলাকা সরগরম হয়ে ওঠে। ফকিরহাটের মুদি-মনিহারি দোকানগুলোতে জেলেরা কেনাকাটা করতে ভিড় জমান। ফকিরহাট এলাকার বিসমিল্লাহ ট্রলারের মাঝি রহিম মিয়া বলেন, ‘সাগরে মাছ শিকারে যেতে সকল প্রস্তুতি নিয়েছি। নিষেধাজ্ঞার সময় শেষ হওয়ামাত্রই সাগরে নামব।’
জেলে নুরসাইদ ও ফোরকান মিয়া বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞার সময় পরিবার-পরিজন নিয়ে বেশ কষ্টে কেটেছে। ওই সময়ে বেশ টাকা ঋণ করেছি। এখন সাগরে যাব। দেখি আল্লাহ ঋণ পরিশোধ করতে দেন কি না।’
নোয়াখালীর হাতিয়ার সূর্যমুখী, বাংলাবাজার, কাজিরবাজার, পাইতান মার্কেট চেয়ারম্যান ঘাটসহ বেশ কয়েকটি ঘাটে গতকাল জেলেদের ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা গেছে। অনেকে নৌকায় জাল তুলছিলেন, আবার অনেকে জ্বালানি তেল মজুতসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী ট্রলারে নিয়ে যান। সূর্যমুখী ঘাটের এমভি মায়ের দোয়া ট্রলারের মাঝি জাফর উল্যা বলেন, ‘সাগরে ৮-১০ দিন থাকার প্রস্তুতি নিচ্ছি। সন্ধ্যায় সাগরের উদ্দেশে রওনা দেব।’
সূর্যমুখী ঘাট জেলে সমিতির সভাপতি জবিয়ল হক বলেন, ‘সাগরে নামতে প্রস্তুত নোয়াখালীর হাতিয়ার ২০টি ঘাটের লক্ষাধিক জেলে। এসব ঘাটে প্রায় ১০ হাজার ছোট-বড় ফিশিং ট্রলার রয়েছে। প্রতি ট্রলারে ১০ জন হলেও লক্ষাধিক জেলে এই মাছ ধরার সঙ্গে জড়িত। তাঁদের সবাই গত ৫৮ দিন তীরে বেকার ছিলেন।’
পিরোজপুরের ইন্দুরকানি উপজেলার পাড়েরহাট মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের পার্শ্ববর্তী এলাকার জেলেরা গতকাল দিনভর সাগরে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন। এ ছাড়া মঠবাড়িয়া উপজেলার সাপলেজা, খেতাচিড়া, বড়মাছুয়া, ছোটমাছুয়া, ভান্ডারিয়া উপজেলার চরখালী, হেতালিয়া, কাউখালী উপজেলার সোনাকুর এলাকার জেলেরা, সদর উপজেলা এবং নেছারাবাদ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার জেলেরা প্রস্তুতি শেষে গত রাতে বঙ্গোপসাগরে রওনা হন।
কয়েক দিন ধরে কক্সবাজার উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে নৌকা, জাল মেরামতসহ বিভিন্ন প্রস্তুতি সেরেছেন জেলেরা। গতকাল মেরিন ড্রাইভের টেকনাফের খুরেরমুখ, সাবরাং ও বাহারছড়া এলাকায় দেখা গেছে, সড়কে দাঁড় করিয়ে রাখা সারি সারি ট্রলারে জাল ও রসদ তোলেন জেলেরা।
একটি ট্রলারের মাঝি আবু তাহের জানান, এবার ভারতের সঙ্গে মিল রেখে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় কেউ সাগরে মাছ শিকারে নামেনি। এতে উপকূলের কাছাকাছি সাগরে জাল ফেললেই ইলিশসহ অন্য মাছ পাওয়া যাবে বলে আশাবাদী তিনি।
কক্সবাজার শহরের ফিশারি ঘাটের মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির পরিচালক জুলফিকার আলী জানান, কক্সবাজার উপকূলে ছোট-বড় ৭ হাজারের মতো যান্ত্রিক ট্রলার রয়েছে। এসব ট্রলারে প্রায় এক লাখ জেলে ও শ্রমিক নিয়োজিত রয়েছেন। অধিকাংশ ট্রলার নিষেধাজ্ঞা ওঠার সঙ্গে সঙ্গে সাগরে রওনা হবে।
[প্রতিবেদন তৈরিতে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছেন বরগুনা ও আমতলী, পিরোজপুর, কক্সবাজার এবং হাতিয়া প্রতিনিধি]

গণতান্ত্রিক শাসন আমাদের সাংবিধানিক অঙ্গীকার। সংবিধানের ১১ অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, ‘প্রজাতন্ত্র হইবে একটি গণতন্ত্র’। এ ছাড়া আমাদের সংবিধানের ৫৯ অনুচ্ছেদে প্রশাসনের সর্বস্তরে জনপ্রতিনিধিদের শাসন প্রতিষ্ঠার নির্দেশনা দেওয়া আছে....
২৯ জুন ২০২২
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
০৬ অক্টোবর ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
ভারতের নিষেধাজ্ঞার এক দিন পরই গত রোববার লালমনিরহাটের বুড়িমারী ও যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দরসহ বিভিন্ন বন্দরে পণ্যের ট্রাক আটকে দেয় ভারত। সংশ্লিষ্টদের সূত্রে জানা যায়, রোববার ভারতের আমদানি বিধিনিষেধের কারণে বুড়িমারী সীমান্তে প্রাণের ১৭ ট্রাক খাদ্যপণ্য আটকে যায়। এ ছাড়া বেনাপোলে ৩৬টি পোশাক বোঝাই ট্রাকসহ অন্যান্য পণ্যের শতাধিক ট্রাক ঢুকতে পারেনি।
গতকাল সোমবার পর্যন্ত বুড়িমারী থেকে প্রাণের পণ্যবোঝাই ট্রাকগুলোর অর্ধেকের বেশি ফেরত নিয়ে আসে প্রতিষ্ঠানটি। এ ছাড়া বেনাপোলে পোর্টের ভেতরে ২৪টি ট্রাক ছাড়া বাকিগুলো ফেরত চলে যায়।
বেনাপোল বন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. সাজেদুর রহমান গতকাল সোমবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, গতকাল পোর্টের ভেতর ও বাইরে শতাধিক ট্রাক দাঁড়িয়ে ছিল। আজ পোর্টের ভেতরের ২৪টি ছাড়া বাকিগুলো ফেরত নিয়ে গেছেন মালিকেরা। এখন পর্যন্ত মনে হচ্ছে, পোর্টের ভেতরের ট্রাকগুলোও ফেরত নিতে হবে।
জানতে চাইলে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পরিচালক (বিপণন) কামরুজ্জামান কামাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের হাতে ৬ মিলিয়ন ডলারের ক্রয় আদেশ রয়েছে। তার মধ্য থেকে রোববার বুড়িমারী দিয়ে ১৭ ট্রাকবোঝাই পণ্য পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু সেগুলো ঢুকতে পারেনি। ট্রাকগুলো ফেরত আনা হচ্ছে। নতুন করে কাগজপত্র তৈরি করে অন্য পথ দিয়ে পণ্য পাঠাতে হবে।’
বেনাপোল স্থলবন্দর সূত্রে জানা যায়, ওই ২৪টি ট্রাক পোর্টের ভেতরে থাকায় এখনো তারা ভারতে প্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে। তাদের আশা, যেহেতু নিষেধাজ্ঞার আগে এই পণ্যগুলোর এলসি করা হয়েছিল, তাই এগুলো প্রবেশে অনুমতি পাবে। তবে এটি নির্ভর করবে বাংলাদেশ সরকারের আলোচনার ওপর।
এমন পরিস্থিতিতে সরকারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ইতিমধ্যে অনেক রপ্তানিকারক রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সঙ্গে আলোচনা করে সরকারের সহযোগিতা চেয়েছে।
স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে আজ মঙ্গলবার আন্তমন্ত্রণালয়ের সভা ডেকেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে বিকেল ৪টায় আন্তমন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এই সভা অনুষ্ঠিত হবে।
সভায় নৌপরিবহন ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো, জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের প্রতিনিধিদের উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া ব্যবসায়ী প্রতিনিধি হিসেবে এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ, ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রতিনিধিদের উপস্থিতির জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
ভারতের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গত শনিবার হঠাৎ এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি নিষিদ্ধ করে। শুধু ভারতের নবসেবা ও কলকাতা সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করে দেশটির আমদানিকারকেরা বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি করতে পারবেন বলে ওই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। এ ছাড়া বাংলাদেশ থেকে ভারতের আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা ও মিজোরাম, পশ্চিমবঙ্গের চ্যাংড়াবান্দা ও ফুলবাড়ী শুল্ক স্টেশন দিয়ে ফল, ফলের স্বাদযুক্ত পানীয়, কোমল পানীয়, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, প্লাস্টিক পণ্য, সুতা, সুতার উপজাত, আসবাব রপ্তানিও নিষিদ্ধ করা হয় ওই বিজ্ঞপ্তিতে।
আমদানি ও রপ্তানিসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা জানান, দেশের ২৪টি বন্দরের মধ্যে ১৬টি বন্দর দিয়ে ভারতের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়ে থাকে। তবে যোগাযোগব্যবস্থা সহজ হওয়ায় বেনাপোল ও ভারতের পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে সবচেয়ে বেশি আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়। এর পরিমাণ ৮০ শতাংশ। বেনাপোল বন্দর দিয়ে প্রতিদিন ভারতে ২৫০ থেকে ৩০০ ট্রাকে বিভিন্ন ধরনের পণ্য রপ্তানি হয়। এর মধ্যে শতাধিক ট্রাক পণ্য থাকে তৈরি পোশাক।
এর আগে গত ৮ এপ্রিল বাংলাদেশের জন্য ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করে ভারত। ফলে ভারতের বিমানবন্দর ব্যবহার করে তৃতীয় কোনো দেশে তৈরি পোশাক রপ্তানি করতে পারছে না বাংলাদেশ। অন্যদিকে প্রায় এক মাস আগে ভারত থেকে বেনাপোল, ভোমরা, সোনামসজিদ, বাংলাবান্ধা, বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানির সুযোগ বন্ধ করে দেয় বাংলাদেশের জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমানের মতে, এই পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপে তুলনামূলকভাবে বেশি নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বাংলাদেশের ওপর। তাই ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর চেষ্টা অব্যাহত রাখাই সরকারের উচিত বলে মনে করছেন তিনি।
মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আলোচনার মাধ্যমে বাংলাদেশ এবং ভারতের বিরোধপূর্ণ বিষয়সমূহ মিটিয়ে ফেলতে হবে এবং দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এটাই হবে উভয় দেশের জন্য কল্যাণকর।

ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
ভারতের নিষেধাজ্ঞার এক দিন পরই গত রোববার লালমনিরহাটের বুড়িমারী ও যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দরসহ বিভিন্ন বন্দরে পণ্যের ট্রাক আটকে দেয় ভারত। সংশ্লিষ্টদের সূত্রে জানা যায়, রোববার ভারতের আমদানি বিধিনিষেধের কারণে বুড়িমারী সীমান্তে প্রাণের ১৭ ট্রাক খাদ্যপণ্য আটকে যায়। এ ছাড়া বেনাপোলে ৩৬টি পোশাক বোঝাই ট্রাকসহ অন্যান্য পণ্যের শতাধিক ট্রাক ঢুকতে পারেনি।
গতকাল সোমবার পর্যন্ত বুড়িমারী থেকে প্রাণের পণ্যবোঝাই ট্রাকগুলোর অর্ধেকের বেশি ফেরত নিয়ে আসে প্রতিষ্ঠানটি। এ ছাড়া বেনাপোলে পোর্টের ভেতরে ২৪টি ট্রাক ছাড়া বাকিগুলো ফেরত চলে যায়।
বেনাপোল বন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. সাজেদুর রহমান গতকাল সোমবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, গতকাল পোর্টের ভেতর ও বাইরে শতাধিক ট্রাক দাঁড়িয়ে ছিল। আজ পোর্টের ভেতরের ২৪টি ছাড়া বাকিগুলো ফেরত নিয়ে গেছেন মালিকেরা। এখন পর্যন্ত মনে হচ্ছে, পোর্টের ভেতরের ট্রাকগুলোও ফেরত নিতে হবে।
জানতে চাইলে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পরিচালক (বিপণন) কামরুজ্জামান কামাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের হাতে ৬ মিলিয়ন ডলারের ক্রয় আদেশ রয়েছে। তার মধ্য থেকে রোববার বুড়িমারী দিয়ে ১৭ ট্রাকবোঝাই পণ্য পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু সেগুলো ঢুকতে পারেনি। ট্রাকগুলো ফেরত আনা হচ্ছে। নতুন করে কাগজপত্র তৈরি করে অন্য পথ দিয়ে পণ্য পাঠাতে হবে।’
বেনাপোল স্থলবন্দর সূত্রে জানা যায়, ওই ২৪টি ট্রাক পোর্টের ভেতরে থাকায় এখনো তারা ভারতে প্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে। তাদের আশা, যেহেতু নিষেধাজ্ঞার আগে এই পণ্যগুলোর এলসি করা হয়েছিল, তাই এগুলো প্রবেশে অনুমতি পাবে। তবে এটি নির্ভর করবে বাংলাদেশ সরকারের আলোচনার ওপর।
এমন পরিস্থিতিতে সরকারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ইতিমধ্যে অনেক রপ্তানিকারক রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সঙ্গে আলোচনা করে সরকারের সহযোগিতা চেয়েছে।
স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে আজ মঙ্গলবার আন্তমন্ত্রণালয়ের সভা ডেকেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে বিকেল ৪টায় আন্তমন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এই সভা অনুষ্ঠিত হবে।
সভায় নৌপরিবহন ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো, জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের প্রতিনিধিদের উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া ব্যবসায়ী প্রতিনিধি হিসেবে এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ, ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রতিনিধিদের উপস্থিতির জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
ভারতের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গত শনিবার হঠাৎ এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি নিষিদ্ধ করে। শুধু ভারতের নবসেবা ও কলকাতা সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করে দেশটির আমদানিকারকেরা বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি করতে পারবেন বলে ওই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। এ ছাড়া বাংলাদেশ থেকে ভারতের আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা ও মিজোরাম, পশ্চিমবঙ্গের চ্যাংড়াবান্দা ও ফুলবাড়ী শুল্ক স্টেশন দিয়ে ফল, ফলের স্বাদযুক্ত পানীয়, কোমল পানীয়, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, প্লাস্টিক পণ্য, সুতা, সুতার উপজাত, আসবাব রপ্তানিও নিষিদ্ধ করা হয় ওই বিজ্ঞপ্তিতে।
আমদানি ও রপ্তানিসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা জানান, দেশের ২৪টি বন্দরের মধ্যে ১৬টি বন্দর দিয়ে ভারতের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়ে থাকে। তবে যোগাযোগব্যবস্থা সহজ হওয়ায় বেনাপোল ও ভারতের পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে সবচেয়ে বেশি আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়। এর পরিমাণ ৮০ শতাংশ। বেনাপোল বন্দর দিয়ে প্রতিদিন ভারতে ২৫০ থেকে ৩০০ ট্রাকে বিভিন্ন ধরনের পণ্য রপ্তানি হয়। এর মধ্যে শতাধিক ট্রাক পণ্য থাকে তৈরি পোশাক।
এর আগে গত ৮ এপ্রিল বাংলাদেশের জন্য ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করে ভারত। ফলে ভারতের বিমানবন্দর ব্যবহার করে তৃতীয় কোনো দেশে তৈরি পোশাক রপ্তানি করতে পারছে না বাংলাদেশ। অন্যদিকে প্রায় এক মাস আগে ভারত থেকে বেনাপোল, ভোমরা, সোনামসজিদ, বাংলাবান্ধা, বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানির সুযোগ বন্ধ করে দেয় বাংলাদেশের জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমানের মতে, এই পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপে তুলনামূলকভাবে বেশি নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বাংলাদেশের ওপর। তাই ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর চেষ্টা অব্যাহত রাখাই সরকারের উচিত বলে মনে করছেন তিনি।
মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আলোচনার মাধ্যমে বাংলাদেশ এবং ভারতের বিরোধপূর্ণ বিষয়সমূহ মিটিয়ে ফেলতে হবে এবং দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এটাই হবে উভয় দেশের জন্য কল্যাণকর।

গণতান্ত্রিক শাসন আমাদের সাংবিধানিক অঙ্গীকার। সংবিধানের ১১ অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, ‘প্রজাতন্ত্র হইবে একটি গণতন্ত্র’। এ ছাড়া আমাদের সংবিধানের ৫৯ অনুচ্ছেদে প্রশাসনের সর্বস্তরে জনপ্রতিনিধিদের শাসন প্রতিষ্ঠার নির্দেশনা দেওয়া আছে....
২৯ জুন ২০২২
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
০৬ অক্টোবর ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
১৮৯৮ সালে ভারতের উত্তর প্রদেশের একটি ধূলিধূসর টিলা খুঁড়ে পাওয়া মূল্যবান এই রত্নগুলো এক শতাব্দীর বেশি সময় ধরে একটি বেসরকারি ব্রিটিশ সংগ্রহাগারে প্রায় দৃষ্টিচক্ষুর আড়ালে ছিল। এখন যেহেতু রত্নগুলোর হাতবদলের সময় এসেছে, তাই নতুন সংগ্রাহকেরা আগ্রহ নিয়ে এগুলো সংগ্রহের জন্য অপেক্ষা করছেন। কিন্তু এখানে একটা অস্বস্তিও তৈরি হয়েছে।
গৌতম বুদ্ধের জন্মস্থান লুম্বিনীর কাছাকাছি, বর্তমানে ভারতের উত্তর প্রদেশে একটি ইটের ঘরের ভেতর থেকে প্রায় ১ হাজার ৮০০টি মুক্তা, রুবি, টোপাজ, নীলা ও নকশা করা সোনার পাত সংগ্রহ করা হয়েছিল। তবে এই রত্নগুলোর সঙ্গে সঙ্গে একটি খোদাই করা পাত্রে হাড়ের টুকরাও পাওয়া যায়, যেগুলোকে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষ বলে শনাক্ত করা হয়। এই আবিষ্কার তখন প্রত্নতত্ত্বের জগতে ব্যাপক আলোড়ন তোলে।
সাদাবি’স এশিয়ার চেয়ারম্যান নিকোলাস চাউ মনে করেন, স্মরণকালের বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর মাঝে এই রত্নসম্ভার অন্যতম। তবে এগুলো নিলামে তোলার কারণে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। আর তা হচ্ছে—ভারতের ইতিহাসের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িয়ে থাকা এবং বৌদ্ধদের কাছে পবিত্র এই সম্পদ বিক্রি করা কি নৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য?
১৮৯৮ সালে ব্রিটিশ এস্টেট ম্যানেজার উইলিয়াম ক্ল্যাক্সটন পেপ্পে লুম্বিনির ঠিক দক্ষিণে পিপ্রাওয়ায় অবস্থিত একটি ঢিবি খনন করেন। সেখান থেকেই প্রায় ২ হাজার বছর আগের ওই নির্দশনগুলো খুঁজে পাওয়া যায়।
ইতিহাসবিদদের মতে, প্রাপ্ত রত্নসম্ভার ও দেহাবশেষ, যা তখনো পর্যন্ত অক্ষত ছিল, সেগুলো গৌতম বুদ্ধের শাক্য বংশের এবং বিশ্বব্যাপী বৌদ্ধদের ঐতিহ্য। হাড়ের নিদর্শনগুলো থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা ও মিয়ানমারের মতো দেশগুলোতে বিতরণ করা হয়েছে। এসব দেশে এখনো সেগুলোর পূজা করা হয়।

আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
১৮৯৮ সালে ভারতের উত্তর প্রদেশের একটি ধূলিধূসর টিলা খুঁড়ে পাওয়া মূল্যবান এই রত্নগুলো এক শতাব্দীর বেশি সময় ধরে একটি বেসরকারি ব্রিটিশ সংগ্রহাগারে প্রায় দৃষ্টিচক্ষুর আড়ালে ছিল। এখন যেহেতু রত্নগুলোর হাতবদলের সময় এসেছে, তাই নতুন সংগ্রাহকেরা আগ্রহ নিয়ে এগুলো সংগ্রহের জন্য অপেক্ষা করছেন। কিন্তু এখানে একটা অস্বস্তিও তৈরি হয়েছে।
গৌতম বুদ্ধের জন্মস্থান লুম্বিনীর কাছাকাছি, বর্তমানে ভারতের উত্তর প্রদেশে একটি ইটের ঘরের ভেতর থেকে প্রায় ১ হাজার ৮০০টি মুক্তা, রুবি, টোপাজ, নীলা ও নকশা করা সোনার পাত সংগ্রহ করা হয়েছিল। তবে এই রত্নগুলোর সঙ্গে সঙ্গে একটি খোদাই করা পাত্রে হাড়ের টুকরাও পাওয়া যায়, যেগুলোকে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষ বলে শনাক্ত করা হয়। এই আবিষ্কার তখন প্রত্নতত্ত্বের জগতে ব্যাপক আলোড়ন তোলে।
সাদাবি’স এশিয়ার চেয়ারম্যান নিকোলাস চাউ মনে করেন, স্মরণকালের বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর মাঝে এই রত্নসম্ভার অন্যতম। তবে এগুলো নিলামে তোলার কারণে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। আর তা হচ্ছে—ভারতের ইতিহাসের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িয়ে থাকা এবং বৌদ্ধদের কাছে পবিত্র এই সম্পদ বিক্রি করা কি নৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য?
১৮৯৮ সালে ব্রিটিশ এস্টেট ম্যানেজার উইলিয়াম ক্ল্যাক্সটন পেপ্পে লুম্বিনির ঠিক দক্ষিণে পিপ্রাওয়ায় অবস্থিত একটি ঢিবি খনন করেন। সেখান থেকেই প্রায় ২ হাজার বছর আগের ওই নির্দশনগুলো খুঁজে পাওয়া যায়।
ইতিহাসবিদদের মতে, প্রাপ্ত রত্নসম্ভার ও দেহাবশেষ, যা তখনো পর্যন্ত অক্ষত ছিল, সেগুলো গৌতম বুদ্ধের শাক্য বংশের এবং বিশ্বব্যাপী বৌদ্ধদের ঐতিহ্য। হাড়ের নিদর্শনগুলো থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা ও মিয়ানমারের মতো দেশগুলোতে বিতরণ করা হয়েছে। এসব দেশে এখনো সেগুলোর পূজা করা হয়।

গণতান্ত্রিক শাসন আমাদের সাংবিধানিক অঙ্গীকার। সংবিধানের ১১ অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, ‘প্রজাতন্ত্র হইবে একটি গণতন্ত্র’। এ ছাড়া আমাদের সংবিধানের ৫৯ অনুচ্ছেদে প্রশাসনের সর্বস্তরে জনপ্রতিনিধিদের শাসন প্রতিষ্ঠার নির্দেশনা দেওয়া আছে....
২৯ জুন ২০২২
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
০৬ অক্টোবর ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫