Ajker Patrika

‘জীবনানন্দের ধানসিঁড়ির খোঁজে আমরা জলঙ্গীর কাছে গিয়েছিলাম’

খায়রুল বাসার নির্ঝর, ঢাকা
আপডেট : ২০ জুন ২০২২, ১৪: ০৯
‘জীবনানন্দের ধানসিঁড়ির খোঁজে আমরা জলঙ্গীর কাছে গিয়েছিলাম’

বায়োপিক বানানোর জন্য অনেকেই তো ছিলেন, যাঁরা তুলনামূলকভাবে বেশি জনপ্রিয় এবং যাঁদের জীবনের গল্প আরও ড্রামাটিক। জীবনানন্দ দাশকে বেছে নেওয়ার নির্দিষ্ট কোনো কারণ আছে?

সায়ন্তন: আমরা যাঁরা বাংলা সাহিত্যের ছাত্র, তাঁদের কাছে জীবনানন্দ তো একজন বাঙালি হিসেবে খুবই এমিনেন্ট ফ্যাক্টর। তাঁকে নিয়ে চিন্তাভাবনাটা ছোটবেলা থেকেই ছিল। কিন্তু ছবি করব, সেটা যখন আমি ম্যাচিউরড হই, তারপর সেই ভাবনাচিন্তাটা গ্রো করে। সিনেমার জগতে যখন ঢুকি, তখন থেকেই এটা আমাকে হন্ট করত। যদি সত্যিই কবির একটা বায়োপিক বানানো যায়! এবং সেটা শুধুমাত্র কবি কখন জন্মেছিলেন, জন্মে এই করেছিলেন, সেই করেছিলেন, লিখেছিলেন, তাঁর এই এই সমস্যা ঘটেছিল… হ্যানাত্যানা না।

জীবনানন্দ চরিত্রের অভিনেতা ব্রাত্য বসুকে দৃশ্য বুঝিয়ে দিচ্ছেন নির্মাতা সায়ন্তনআপনি আরও ব্যাপকভাবে কবিকে ধরতে চেয়েছিলেন চিত্রনাট্যে, সেটা ‘ঝরা পালক’-এর ট্রেলার দেখে বোঝা গেছে। জীবনানন্দকে পর্দায় আনতে গিয়ে কী ধরনের চ্যালেঞ্জ ফেস করতে হয়েছে?

সায়ন্তন: একজন কবির বায়োপিক বানাতে যাওয়ার সবচেয়ে বড় যেটা অবস্ট্রাকল বা সবচেয়ে বড় যে জটিলতা, সেটা হচ্ছে—কবির বায়োপিক তো তাঁর কবিতাও। মানে তাঁর শিল্পজীবন এবং তাঁর যে রিয়েল টাইমলাইন—এই দুটোই তো ইমপর্ট্যান্ট।

একটা গ্যাংস্টারের জীবনী বানাতে গেলে… তিনি কখন জন্মেছিলেন, কার সঙ্গে ঝগড়া হয়েছিল, কাকে কাকে মেরেছিলেন—এসব বললেই হয়ে যায়। কিন্তু একজন কবির জীবনে সেই অর্থে কোনো ড্রামা থাকে না। হ্যাঁ, জীবনানন্দের জীবনে এনাফ ড্রামা ছিল, তাঁর বৈবাহিক জীবন ঘিরে এবং তাঁর প্রেমজীবন ঘিরে। তো যেটা গল্প সেটা হচ্ছে, এটাই সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ ছিল যে, কবির জীবনী এবং কবির এন্টায়ার শিল্পকর্ম—এই দুটোকে কী করে মার্জ করা যায়! কবিতাও তো তাঁর জীবন। সৃষ্টি তাঁর জীবনের চেয়েও বড়; বিশেষ করে জীবনানন্দের মতো একজন শিল্পীর কাছে।

তো এই দুটোকে মার্জ করাটা, আমাদের সিনেমার ল্যাঙ্গুয়েজে, চিত্রনাট্যে এবং এক্সিকিউশনে কীভাবে সেই ভাষাটা খুঁজে পাওয়া যাবে, সেটাই সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ ছিল।

জীবনানন্দ চরিত্রের দুই সময়ের দুই ছবি, অভিনয়ে ব্রাত্য বসু ও রাহুল অরুণোদয় বন্দ্যোপাধ্যায়জীবনানন্দের ‘মাল্যবান’ আপনার সিনেমার মূল সূত্র। এ ছাড়া আর কোনো রিসোর্সের সাহায্য নিয়েছেন চিত্রনাট্য করতে গিয়ে?

সায়ন্তন: জীবনানন্দ দাশকে নিয়ে অনেক বই রয়েছে। দুটো ইমপর্ট্যান্ট বই, যেটা তাঁর লিটারারি বায়োপিক। (একটি) ক্লিনটন বি সিলি বলে একজন লেখক লিখেছেন। তিনিও কবি ছিলেন; দীর্ঘদিন বরিশালে ছিলেন। বাংলা ভাষাটা প্রায় বাঙালির মতোই রপ্ত করছিলেন ক্লিনটন। তাঁর একটা বই ‘আ পোয়েট অ্যাপার্ট’। এবং আপনাদের বাংলাদেশ থেকে প্রকাশিত একটা বই ‘একজন কমলালেবু’, যেটা জয়া আহসান আমাকে এনে দিয়েছিল; ইন্ডিয়াতে পাওয়া যায় না। এই দুটো বই আমাকে অনেক সাহায্য করেছিল চিত্রনাট্য করতে গিয়ে। তা ছাড়া এখানকার এমিনেন্ট জীবনীকার ভূমেন্দ্র গুহর একটা বই আছে জীবনানন্দকে নিয়ে লেখা, ‘আলেখ্য: জীবনানন্দ’ নামে। এবং আরও বেশ কয়েকটি বই আমাকে প্রচণ্ড সাহায্য করেছে ‘ঝরা পালক’ সিনেমার চিত্রনাট্য করতে গিয়ে।

‘ঝরা পালক’ সিনেমার শুটিং স্পটে নির্মাতা ও অভিনয়শিল্পীরা‘ঝরা পালক’-এ জীবনানন্দকে কতখানি ধরেছেন? আমি দেখলাম রাহুল করেছেন তাঁর যুবকবেলার চরিত্রটা। পরিণত বয়সে ব্রাত্য বসু। তার মানে যৌবন থেকে শুরু করে কবির পুরো জীবনটাই থাকছে সিনেমায়?

সায়ন্তন: জীবনানন্দের জীবন এবং তাঁর শিল্পজীবন; এই দুটোই ক্রমাগত মার্জ করতে করতে গেছে পুরো ছবিতে। এবং এই ছবিটা এ কারণে প্লেইন ন্যারেটিভ নয়। একটা রিল টাইম, একটা রিয়েল টাইম এবং তার সঙ্গে রিসেন্ট টাইম; তিনটে সময়ের সংযোগ ঘটেছে চিত্রনাট্যে। ছবিটা দেখলে সেটা বোঝা যাবে। আসলে একজন ফিল্মমেকারের কাছে এ ধরনের একটা ছবি বানিয়ে সেটা নিয়ে বলা খুবই ডিফিকাল্ট।

লাবণ্য চরিত্রে অভিনয় করেছেন জয়া আহসান‘ঝরা পালক’-এর শুটিং কোথায়, কীভাবে হয়েছে? সেই অভিজ্ঞতা নিয়ে কিছু বলেন…

সায়ন্তন: শুটিং আমরা অলমোস্ট (পুরোটাই) কলকাতায় করেছি। কিছুটা শুটিং করেছি বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তে, তেহট্ট থেকে অনেক দূরে গিয়ে। সেখানে জীবনানন্দের রূপসী বাংলার যে চিত্রকল্প, সেগুলো পেয়েছি। বরিশাল যাওয়ার খুব ইচ্ছে ছিল। কিন্তু রাজনৈতিক কারণে সেই সময় যাওয়া সম্ভব হয়ে ওঠেনি। বরিশালের যে অভাব, সেটা খানিকটা বর্ডারের কাছাকাছি গিয়ে ধানসিঁড়ি নদীর বদলে জলঙ্গী নদীকে আমরা ব্যবহার করেছি। জলঙ্গী নদীও জীবনানন্দের কবিতায় ঘুরেফিরে এসেছে। সেটা আমরা ধানসিঁড়ি হিসেবে ট্রিট করেছি। সো দ্যাট ওয়াজ ভেরি উইয়ার্ড এক্সপেরিয়েন্স।

. ‘ঝরা পালক’ সিনেমার দৃশ্যে ব্রাত্য বসু ও জয়া আহসানজলঙ্গী নদীতে শুট করতে গিয়ে মাঝেমধ্যেই আমার, সিনেমাটোগ্রাফার অভিজিৎ নন্দী ও এডিটর প্রদীপ্ত ভট্টাচার্যের কনফিউশন হচ্ছিল, বোধ হয় আমরা ধানসিঁড়িতে আছি। আমরা তিনজনে মিলে গেছিলাম শুটিংয়ে। আমার মনে হয় কোনো এডিটর (এর আগে) শুটিংয়ে গেছে কিনা! এটা যদি কাইন্ডলি লিখেন খুব ভালো হয়। কারণ, প্রদীপ্ত নিজেও একজন ফিল্মমেকার। সে এতটাই ইনভলভ ছিল পুরো ছবিতে! ধানসিঁড়ির খোঁজে আমরা গেছিলাম, সত্যিই আমরা জলঙ্গী নদীটিকে ধানসিঁড়ি হিসেবে ট্রিট করতে পারি কি না! আমাদের ভেতরে সেই প্যাশনটা আছে কি না! সেটা ছবিটা দেখলে আপনারা বুঝতে পারবেন আমরা তার সঙ্গে জাস্টিস করতে পেরেছি কি না।

কলকাতা ফেস্টে তো দেখানো হলো ছবিটা এ বছর…

সায়ন্তন: কলকাতা ফেস্টে দেখানো হয়েছে। দেখে অনেকেই খুব প্রশংসা করেছেন। কবি জয় গোস্বামী ছবিটাকে বাংলা চলচ্চিত্রে এবং ভারতীয় চলচ্চিত্রের একটা ‘এমিনেন্ট পিস অব ওয়ার্ক’ বলে বর্ণনা করেছেন। ছবিটা উনি দুবার দেখেছেন। এ ছাড়া আরও অনেক গুণীজন—সুমন মুখোপাধ্যায়, পরিচালক, যিনি জয়া আহসানকে নিয়ে ‘পুতুল নাচের ইতিকথা’ বলে আরেকটা ছবি করেছেন। তিনি ছবিটা দেখে খুবই উচ্ছ্বসিত। পরিচালক বুদ্ধদেব দাশগুপ্তকে ছবিটা দেখানো হয়েছিল। তিনিও ছবিটা দেখে খুবই প্রশংসা করেছিলেন। কলকাতা ফিল্ম ফেস্টিভ্যালের পরে আমরা ছবিটা নিয়ে আরও বেশি আশাবাদী। ‘ঝরা পালক’ বাংলাদেশেও রিলিজ করার প্ল্যান করছি আমরা।

শুটিং স্পটে দৃশ্য বুঝিয়ে দিচ্ছেন নির্মাতা সায়ন্তন। ছবি: সংগৃহীতকবির স্ত্রী লাবণ্য চরিত্রে জয়া আহসানকে কাস্ট করার কারণ কী?

সায়ন্তন: প্রথম যখন লাবণ্য চরিত্রের ভিজুয়ালাইজেশন শুরু করি, তখন জয়া ছাড়া ইনফ্যাক্ট আর কারও মুখই আমার সামনে আসেনি। এই রকম পানপাতা একটা অদ্ভুত বাঙালি মুখ, যেটা একই সঙ্গে বনলতা সেন, সুরঞ্জনা এবং লাবণ্য। লাবণ্যর সঙ্গে জীবনানন্দ দাশের যে কেমিস্ট্রি ছিল। লাবণ্য অসামান্য বিদুষী এবং সুন্দরী নারী ছিলেন। জীবনানন্দ সারা জীবন বলে গেছেন, তাঁর তুলনায় জীবনানন্দ নিজে তাঁর কাছে খুব অযোগ্য। জীবনানন্দকে ক্রিয়েটিভ সাপোর্ট এবং ফ্যামিলিগতভাবে… এসব নিয়ে অনেক ধরনের গুজব আছে যে, উনাকে অত্যাচার করা হয়েছিল। লাবণ্য উনাকে নিজের ঘরে অবধি ঢুকতে দিতেন না। ‘মাল্যবান’ উপন্যাসে এসব এসেছে। যে জন্য লাবণ্য তাঁর জীবদ্দশায় এই বইটি প্রকাশ করতে খুব দ্বিধাবোধ করেছিলেন।

তো সে ক্ষেত্রে লাবণ্য চরিত্রের যে ব্যক্তিত্ব, যে সৌন্দর্য এবং তাঁর যে বিদূষীয়ানা—এই তিনটির সংমিশ্রণ জয়া আহসান ছাড়া আর কারও কথা আমার মাথায় আসেনি পরিচালক হিসেবে। আরও একটা প্রধান কারণ হচ্ছে বাংলাদেশের মাটি। বাংলাদেশের মাটির যে গন্ধ, সেটা জয়া আহসানের পারফরমেন্সের মধ্য দিয়েই ছবিতে ফুটে উঠেছে। সেটা একটা অমূল্য প্রাপ্তি একজন পরিচালক হিসেবে আমার কাছে। এবং দর্শকের কাছেও সেটা অবশ্যই একটা প্রাপ্তি হবে বলে আশা করছি।

সে কারণে লাবণ্য এবং জয়া আহসান এখানে একাকার হয়ে গেছেন।

জয়া আহসান নিজে এ চরিত্রটা করতে করতে মাঝেমধ্যেই ক্যামেরা এবং ক্যামেরার বাইরে লাবণ্য হয়ে উঠতেন। সেটা আমরা দেখেছি। এবং তাঁর যে ইনভলভমেন্ট, যেটা আমি আগেও বললাম, শুধু অভিনয় দিয়ে নয়, আমাকে বেশ কিছু বই দিয়ে উনি সাহায্য করেছেন। চিত্রনাট্যে উনি অনেক ইনপুট দিয়েছেন একজন নারী হিসেবে নারীর পারস্পেকটিভ।

আমরা প্র্যাকটিক্যালি চেয়েছিলাম, মাল্যবানের একটা অ্যান্টিথিসিস বানাতে। মাল্যবানই তো এই ছবির মূল টেক্সট। কারণ, এটি কবির লেখা আত্মজীবনীমূলক উপন্যাস, যেখানে জীবন এবং শিল্প মিলেমিশে একাকার হয়ে যায়। সেখানে মাল্যবানের অ্যান্টিথিসিস তৈরি করার জন্য লাবণ্যরূপী জয়া আহসান বা জয়া আহসানরূপী লাবণ্য এই ছবিতে একটা মূল্যবান সম্পদ হয়ে আছে।

দেখুন ‘ঝরা পালক’ সিনেমার ট্রেলার:

 

 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

তিন বছর পর বিচ্ছেদের খবর দিলেন বিন্দু

বিনোদন প্রতিবেদক, ঢাকা
বিন্দু। ছবি: সংগৃহীত
বিন্দু। ছবি: সংগৃহীত

২০১৪ সালে ব্যবসায়ী আসিফ সালাহউদ্দিন মালিককে বিয়ে করেন অভিনেত্রী আফসান আরা বিন্দু। বিয়ের পর শোবিজ থেকে পুরোপুরি নিজেকে গুটিয়ে নেন তিনি। অভিনয় ছেড়ে হয়ে ওঠেন সংসারী। বিয়ের চার বছর পর গুঞ্জন রটে, সংসার ভেঙেছে বিন্দুর। তবে বিচ্ছেদ নিয়ে তখন কোনো কথা বলেননি বিন্দু কিংবা তাঁর স্বামী। অবশেষে নিজের বিচ্ছেদের বিষয়টি নিশ্চিত করলেন অভিনেত্রী। সম্প্রতি এক অনুষ্ঠানে বিন্দু জানান, ২০২২ সালে বিচ্ছেদ হয়েছে তাঁর।

২০২২ সালে বিচ্ছেদ হলেও ২০১৭ সাল থেকেই স্বামীর সঙ্গে সেপারেশনে ছিলেন বিন্দু। পাঁচ বছর পর তাঁরা চূড়ান্তভাবে বিচ্ছেদের সিদ্ধান্ত নেন। বিন্দু বলেন, ‘অনেকেই মনে করেন, আমি এখনো বিবাহিত। কিন্তু না, আমার বিচ্ছেদ হয়ে গেছে। আমার সংসারের জার্নিটা অনেক ছোট ছিল।’

বিচ্ছেদের কারণ জানিয়ে বিন্দু বলেন, ‘আলাদা হওয়ার জন্য অনেক সময় বড় কারণ থাকে, বড় ঘটনা ঘটে। অনেক সময় আবার তেমন কোনো কারণও দরকার হয় না। আমার এই জার্নিতে আরও একজন মানুষ জড়িত। তারও ব্যক্তিগত জীবন আছে। বিচ্ছেদ নিয়ে কোনো ব্যাখ্যা দিয়ে তাকে বিব্রতকর পরিস্থিতিতে ফেলতে চাই না।’

২০০৬ সালে লাক্স চ্যানেল আই সুপারস্টার প্রতিযোগিতা দিয়ে শোবিজে যাত্রা শুরু হয় বিন্দুর। অল্প দিনেই হয়ে ওঠেন মিডিয়ার নিয়মিত মুখ। অভিনয় থেকে বিরতি নেওয়ার আগে ২০১৪ সালের শুধু কোরবানির ঈদেই প্রচারিত হয় তাঁর অভিনীত ৫২টি নাটক। ছোট পর্দার পাশাপাশি বিন্দু অভিনয় করেছেন সিনেমাতেও।

ক্যারিয়ারের শুরুতে আরিফিন শুভর সঙ্গে জুটি বেঁধে অনেক নাটকে অভিনয় করেছেন তিনি। পর্দায় তাঁদের জুটি অনেক জনপ্রিয় ছিল। অনস্ক্রিন কেমেস্ট্রির প্রভাব পড়েছিল দুজনের বাস্তব জীবনেও। একসময় শুভর সঙ্গে প্রেমের সম্পর্কে জড়ান বিন্দু। সেই প্রেমের কথা স্বীকারও করেছেন অভিনেত্রী। কেন তাঁদের সম্পর্ক ভেঙে গিয়েছিল? বিন্দুর সংক্ষিপ্ত জবাব, ‘এর উত্তর আমার কাছে নেই। দুটি মানুষের জার্নি যে একসঙ্গে একই গন্তব্যে শেষ হবে, এমন তো কোনো কথা নেই।’

প্রায় এক দশকের বিরতি কাটিয়ে ২০২৩ সালে ‘উনিশ ২০’ ওয়েব ফিল্ম দিয়ে অভিনয়ে ফেরেন বিন্দু। মিজানুর রহমান আরিয়ানের পরিচালনায় এতে বিন্দুর বিপরীতে ছিলেন সেই আরিফিন শুভই। তবে এরপর আর কোনো কাজে দেখা যায়নি বিন্দুকে। তবে তিনি নিয়মিত অভিনয় করতে চান। বিন্দু বলেন, ‘শিল্পী হিসেবে কাজ করতে প্রস্তুত। এখন আমাকে নিয়ে কাজ করার চিন্তা, আমার পেছনে ইনভেস্ট করার বিষয়গুলো ভাবতে হবে। এমন ধরনের কাজ করতে চাই, যেগুলো এখনো করিনি। আমি চাই, নির্মাতারা আমাকে নিয়ে এমনভাবে ভাবুক, যেমনটা আগে ভাবা হয়নি।’

অভিনয় ছেড়ে দিয়ে বছর পাঁচেক আগে ব্যবসার সঙ্গে জড়িয়েছেন বিন্দু। গুলশানে রয়েছে তাঁর একটি বুটিক হাউস। ‘আফসান বিন্দু ডিজাইনার স্টুডিও’ নামের এ ব্র্যান্ডের পোশাক বিন্দু নিজেই ডিজাইন করেন। ২০২০ সালে যখন প্রতিষ্ঠানটি শুরু করেন বিন্দু, তখন তাঁর কর্মীর সংখ্যা ছিল মাত্র একজন। তবে এখন তাঁর সঙ্গে ১৫ জন কাজ করেন বলে জানিয়েছেন অভিনেত্রী।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

‘ইত্যাদি’র নতুন পর্ব এবার চুয়াডাঙ্গায়

বিনোদন প্রতিবেদক, ঢাকা
ম্যাগাজিন অনুষ্ঠান ‘ইত্যাদি’র দৃশ্য
ম্যাগাজিন অনুষ্ঠান ‘ইত্যাদি’র দৃশ্য

নব্বইয়ের দশক থেকে স্টুডিওর চারদেয়ালের বাইরে বেরিয়ে শিকড়ের সন্ধানে দেশের নানা প্রান্তে শুটিং করা হচ্ছে ম্যাগাজিন অনুষ্ঠান ইত্যাদির। তারই ধারাবাহিকতায় ইত্যাদির নতুন পর্ব ধারণ করা হয়েছে ইতিহাস ঐতিহ্যে সমৃদ্ধ প্রাচীন জনপদ চুয়াডাঙ্গায়।

এবারের ইত্যাদির মঞ্চ নির্মাণ করা হয়েছিল ব্রিটিশ আমলে তৈরি শতাধিক বছরের প্রাচীন হাজারদুয়ারি নামে খ্যাত ঐতিহ্যবাহী স্কুল নাটুদা মাধ্যমিক বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে। এবারের পর্বে গান রয়েছে দুটি। একটি গান গেয়েছেন লোকসংগীতশিল্পী বিউটি ও পান্থ কানাই। গানটির কথা লিখেছেন মোহাম্মদ রফিকউজ্জামান, সংগীতায়োজন করেছেন মেহেদী।

এ ছাড়া অনুষ্ঠানের শুরুতে চুয়াডাঙ্গার কৃষ্টিকথা ও ইতিহাসগাথা নিয়ে রয়েছে শাহ আলম সনির কথায় একটি পরিচিতিমূলক গানের সঙ্গে নৃত্য। গানটির সুর করেছেন হানিফ সংকেত, সংগীতায়োজন করেছেন মেহেদী। পরিবেশন করেছেন স্থানীয় নৃত্যশিল্পীরা। এ ছাড়া ইত্যাদির নতুন পর্বে থাকছে চুয়াডাঙ্গা নিয়ে কয়েকটি প্রতিবেদন। রয়েছে চুয়াডাঙ্গা জেলার ইতিহাস-ঐতিহ্যসহ এর বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থান-স্থাপনার ওপর একটি তথ্যভিত্তিক প্রতিবেদন।

ইত্যাদির নিয়মিত আয়োজন চিঠিপত্র পর্বে উঠে এসেছে চুয়াডাঙ্গার একজন ব্যতিক্রমী ছড়াকারের গল্প। আরও রয়েছে সামাজিক অসংগতি ও সমসাময়িক প্রসঙ্গনির্ভর নাটিকা। দানের নামে ফটোসেশন, সংসারের ভারে স্বপ্নভঙ্গ, মিষ্টি নিয়ে অনাসৃষ্টি, ইংরেজির দাপটে অসহায় বাংলা ভাষা, বোঝা না বোঝার বোঝা, স্টাইলিশ আইকনের বিপত্তি, লোম বাছতে কম্বল উজাড়সহ কয়েকটি নাট্যাংশে অভিনয় করেছেন সোলায়মান খোকা, সুভাশিষ ভৌমিক, আবদুল্লাহ রানা, আমিন আজাদ, কাজী আসাদ, মুকিত জাকারিয়া, আনোয়ার শাহী, শাহেদ আলী, জামিল হোসেন, আনন্দ খালেদ, তারিক স্বপন, আবু হেনা রনি প্রমুখ।

ইত্যাদির এই পর্ব দেখা যাবে ২৬ ডিসেম্বর বাংলাদেশ টেলিভিশনে রাত ৮টার বাংলা সংবাদের পর। ইত্যাদি রচনা, পরিচালনা ও উপস্থাপনা করেছেন হানিফ সংকেত। নির্মাণ করেছে ফাগুন অডিও ভিশন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

‘মহাশূন্যে সাইকেল’ নাটকের চার দিনে সাত প্রদর্শনী

বিনোদন প্রতিবেদক, ঢাকা
‘মহাশূন্যে সাইকেল’ নাটকের দৃশ্য
‘মহাশূন্যে সাইকেল’ নাটকের দৃশ্য

গত বছর ডিসেম্বরে মঞ্চে এসেছিল অনুস্বর নাট্যদলের নাটক ‘মহাশূন্যে সাইকেল’। বাংলাদেশ মহিলা সমিতিতে পাঁচ দিনে নাটকটির আটটি প্রদর্শনী হয়েছিল। বছর ঘুরে আবারও মহিলা সমিতির নীলিমা ইব্রাহিম মিলনায়তনে মহাশূন্যে সাইকেল নাটকের প্রদর্শনীর আয়োজন করেছে অনুস্বর। ২৪ থেকে ২৭ ডিসেম্বর টানা চার দিন দেখা যাবে নাটকের সাতটি প্রদর্শনী।

কথাসাহিত্যিক শাহাদুজ্জামানের লেখা একই শিরোনামের গল্প অবলম্বনে এর নাট্যরূপ দিয়েছেন লেখক নিজে। নির্দেশনায় সাইফ সুমন। ২৪ ডিসেম্বর সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় দেখা যাবে মহাশূন্যে সাইকেল। ২৫ থেকে ২৭ ডিসেম্বর প্রতিদিন বিকেল ৫টা ও সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় মঞ্চস্থ হবে আরও ছয়টি প্রদর্শনী।

নাট্যকার শাহাদুজ্জামান বলেন, ‘আমরা কিছু কথা অনেকের সঙ্গে বলি, কিছু কথা নির্দিষ্ট মানুষের সঙ্গে বলি আর কিছু কথা শুধু নিজের সঙ্গে বলি। যেকোনো ক্রান্তির সময় নিজের সঙ্গে এই বোঝাপড়ার মাত্রা এবং ব্যাপ্তি সম্ভবত বেড়ে যায়। মহাশূন্যে সাইকেলের মূল ভাবনাটা এ রকম। গত বছর এই গল্পের নাট্যরূপ দিই। একজন ব্যক্তি নিজেকে দুই ভাগ করে তার এই দুই সত্তার সঙ্গে মঞ্চে কথোপকথন করছে। দর্শক হিসেবে একজন ব্যক্তির এই একান্ত বিভক্ত সত্তার ভেতরে এই কথোপকথন দেখার ভেতরে একটা গোপন কৌতূহল হয়তো আছে। কিংবা নিজের সঙ্গে মিলিয়ে নেওয়ার আনন্দ আছে।’

নির্দেশক সাইফ সুমন বলেন, ‘ভোগবাদিতা আর ব্যক্তিস্বার্থের কারণে মানুষ এখন প্রতিনিয়তই পরস্পর থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যাচ্ছে। পরিবার, বন্ধু, সমাজ থেকে ক্রমেই বিচ্ছিন্ন হচ্ছি আমরা। কখনো কখনো মানুষের মধ্যে বাস্তবের চেয়ে কল্পনা বা অলৌকিক জগৎ গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে। পরিবারের সঙ্গে থেকেও একা অনুভব করে। সেই কথাই বলার চেষ্টা হয়েছে নাটকে।’

মহাশূন্যে সাইকেল নাটকের বিভিন্ন চরিত্রে অভিনয় করেছেন মোহাম্মদ বারী, এস আর সম্পদ, প্রশান্ত হালদার, নুরুজ্জামান সরকার, রীমা প্রমুখ।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

নতুন লুকে চমকে দিলেন কিয়ারা আদভানি

বিনোদন ডেস্ক
কিয়ারা আদভানি। ছবি: সংগৃহীত
কিয়ারা আদভানি। ছবি: সংগৃহীত

‘কেজিএফ’ সিনেমার দুই পর্বের ব্যাপক সাফল্যের পর কন্নড় সুপারস্টার ইয়াশ যুক্ত হয়েছেন মালয়ালম নির্মাতা গিতু মোহনদাসের সিনেমায়। ‘টক্সিক: আ ফেয়ারিটেল ফর গ্রোনআপস’ নামের কন্নড় ভাষার এ সিনেমায় প্রথমবারের মতো ইয়াশের নায়িকা হয়েছেন কিয়ারা আদভানি। টক্সিকে কিয়ারার চরিত্রের নাম নাদিয়া। গতকাল প্রকাশ করা হয়েছে এ সিনেমায় কিয়ারার চরিত্রের লুক।

শোবিজে কিয়ারার এক যুগ হতে চলেছে। ২০১৪ সালে ‘ফুগলি’ দিয়ে যাত্রা শুরুর পর এ পর্যন্ত ২০টির মতো সিনেমায় অভিনয় করেছেন। প্রতিটিতেই দেখা দিয়েছেন বৈচিত্র্যময় চরিত্রে। তবে টক্সিকে কিয়ারার চরিত্রটি যে একেবারেই আলাদা হতে চলেছে, সে আভাস পাওয়া গেল সদ্য মুক্তি পাওয়া ফার্স্ট লুক পোস্টারে। এতে তাঁকে দেখা যাবে একজন সার্কাসশিল্পী হিসেবে।

ফার্স্ট লুক পোস্টারে আলো ঝলমলে সার্কাসের সেটে অফ-শোল্ডার ভেলভেট গাউন পরে দাঁড়িয়ে আছে কিয়ারা অভিনীত নাদিয়া চরিত্রটি। চোখে-মুখে বিষণ্নতা, ক্লান্তির ছাপ। সার্কাসের মঞ্চে জাঁকজমক আবহে নৃত্যরত যে শিল্পীকে দেখা যায় দর্শকের সামনে, তার মনের ভেতরে অনেক সময় চলে দুঃখের দোলাচল। ভেতরে জমাট কষ্ট নিয়েই হাসিমুখে দর্শকের সামনে পারফর্ম করে তারা। টক্সিকের পোস্টারে তেমনটাই ধরা পড়েছে। এমনই এক জটিল চরিত্র নিয়ে দর্শকের সামনে আসবেন কিয়ারা।

ভিএন প্রোডাকশন এবং মনস্টার মাইন্ড ক্রিয়েশনসের ব্যানারে নির্মিত বিগ-বাজেট সিনেমা টক্সিক মুক্তি পাবে ২০২৬ সালের ১৯ মার্চ। দক্ষিণি মেগাস্টার যশ ও কিয়ারার এই নতুন রসায়ন বড় পর্দায় দেখার জন্য এখন থেকেই অপেক্ষায় অনুরাগীরা। এতে আরও অভিনয় করেছেন নয়নতারা, তারা সুতারিয়া, হুমা কুরেশি, অক্ষয় ওবেরয় প্রমুখ।

ইংরেজি ও কন্নড়—দুই ভাষাতেই টক্সিক সিনেমার শুটিং করা হয়েছে। পাশাপাশি হিন্দি, তেলুগু, তামিল, মালয়ালমসহ বিভিন্ন ভাষায় ডাব করা হবে। এতে কিয়ারার পারফরম্যান্স নিয়ে নির্মাতা গিতু মোহনদাস বলেন, ‘কিছু পারফরম্যান্স শুধু পর্দায় নয়, প্রভাব ফেলে শিল্পীর জীবনেও। টক্সিক সিনেমায় কিয়ারা যা করেছে, তার কোনো তুলনা হয় না। সিনেমাটি নিয়ে আমাদের প্রথম আলাপের মুহূর্ত থেকেই তিনি চরিত্রটির প্রতি নিজেকে সম্পূর্ণ সমর্পণ করেছেন। তিনি শুধু নাদিয়া চরিত্রে অভিনয় করেননি, নিজেও চরিত্রটির মতো করেই যাপন করেছেন।’

প্রসঙ্গত, বলিউডের তারকা দম্পতি কিয়ারা আদভানি ও সিদ্ধার্থ মালহোত্রার সংসারে নতুন সদস্য এসেছে গত ১৫ জুলাই। এখন সন্তানকে নিয়েই পুরো সময়টা কাটছে অভিনেত্রীর। আর একটু একটু করে নিচ্ছেন আবার শোবিজে ফেরার প্রস্তুতি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত