Ajker Patrika

‘সিন্ডিকেট’ নয়, উন্মুক্ত পদ্ধতিতে মালয়েশিয়ায় কর্মী পাঠানোর আহ্বান

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ২৭ এপ্রিল ২০২২, ১৭: ১৮
‘সিন্ডিকেট’ নয়, উন্মুক্ত পদ্ধতিতে মালয়েশিয়ায় কর্মী পাঠানোর আহ্বান

`সিন্ডিকেট' নয়, উন্মুক্ত পদ্ধতিতে মালয়েশিয়ায় কর্মী পাঠানোর আহ্বান জানিয়েছে অভিবাসন নিয়ে কাজ করে এমন ২০টি সংগঠনের মোর্চা বাংলাদেশ সিভিল সোসাইটি ফর মাইগ্রেন্টস (বিসিএসএম)। বাংলাদেশের অন্যতম শ্রমবাজার মালয়েশিয়ায় কর্মী পাঠানোর প্রক্রিয়ায় নতুন করে সিন্ডিকেটে প্রতিষ্ঠার খবরে উদ্বেগ প্রকাশ করে বিবৃতি দিয়েছে সংগঠনটি। 

বিবৃতিতে জানানো হয়, অভিবাসন নিয়ে কাজ করা সংগঠনগুলোর এই জোটের সদস্যরা আশা করছেন, অতীতে সিন্ডিকেটসহ যেসব কারণে মালয়েশিয়ার শ্রমবাজার বন্ধ হয়েছিল ভবিষ্যতে যেন একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি না ঘটে। এর বদলে উন্মুক্ত ও স্বচ্ছভাবে যেন কর্মী পাঠানো হয় যাতে অভিবাসী শ্রমিকেরা কোনভাবেই ক্ষতিগ্রস্ত না হয়।

মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশি কর্মী পাঠানোর জন্য ২০২১ সালের ১৯ ডিসেম্বর দুই দেশের মধ্যে একটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরের খবর সবাইকে আশাবাদী করেছিল। কিন্তু চার মাস হয়ে গেলেও এখনো কর্মী যাওয়ার প্রক্রিয়া নির্ধারণ হয়নি। এর মধ্যে গত কয়েক মাসে গণমাধ্যমের বিভিন্ন খবরের সূত্রে আমরা জানতে পারছি যে, মালয়েশিয়া ও বাংলাদেশের জনশক্তি ব্যবসায়ীদের একটি ক্ষুদ্র অংশ আগের মতোই সীমিত সংখ্যক রিক্রুটিং এজেন্সি বা সিন্ডিকেটের মাধ্যমে কর্মী পাঠাতে চায়। ২০১৮ সালে যে সিন্ডিকেটের তৎপরতার অভিযোগে বাংলাদেশ থেকে কর্মী পাঠানো বন্ধ হয়েছিল, সেই একই পদ্ধতিতে ফের শ্রমবাজার নিয়ন্ত্রণের চেষ্টার খবর আমাদের ভীষণভাবে উদ্বিগ্ন করেছে।

২০১৬ সালে সিন্ডিকেট গঠনের মাধ্যমে মালয়েশিয়ায় শ্রমিক পাঠানোর ফলে অভিবাসন ব্যয় অত্যধিক বেড়ে গিয়েছিল। বাংলাদেশের মাত্র ১০টি রিক্রুটিং এজেন্সির মাধ্যমে কর্মী পাঠানোর প্রক্রিয়ায় প্রথমে ৩৭ হাজার এবং পরে এক লাখ ৬০ হাজার টাকা অভিবাসন খরচ ধরা হলেও বাস্তবে তিন থেকে চার লাখ টাকা দিতে হয়েছে কর্মীদের। এতে অন্তত পাঁচ হাজার কোটি টাকার দুর্নীতির অভিযোগ তুলে ২০১৮ সালে ক্ষমতায় ফিরে মাহাথির সরকার জিটুজি প্লাস পদ্ধতি বাতিল করে।

গত কয়েক বছর বাংলাদেশের সরকারের বিভিন্ন পর্যায়ের উদ্যোগ গ্রহণের ফলে ফের মালয়েশিয়া শ্রমবাজার চালুর খবর সবাইকে আশাবাদী করেছে। কিন্তু গণমাধ্যমের খবর বলছে, পুরোনো সিন্ডিকেট আবার করতে চাইছে। বিশেষ করে মাত্র ২৫টি রিক্রুটিং এজেন্সির মাধ্যমে কর্মী নেওয়ার জন্য গত ১৪ জানুয়ারি মালয়েশিয়ার মানবসম্পদমন্ত্রী এম সারভান ঢাকায় চিঠি পাঠিয়েছেন বলে জানা গেছে। এটি আমাদের ভীষণ উদ্বিগ্ন করেছে। বাংলাদেশের দেড় হাজারেরও বেশি নিবন্ধটি রিক্রুটিং এজেন্সির মধ্যে ২৫টিকে কর্মী পাঠানোর সুযোগ দেওয়ার প্রস্তাবকে ‘সিন্ডিকেট’ বলে অভিহিত করে ইতিমধ্যে কয়েক দফায় সংবাদ সম্মেলন করেছেন জনশক্তি ব্যবসায়ীরা।

ওই চিঠির প্রত্যুত্তরে বাংলাদেশের প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী ইমরান আহমেদ আইএলও এর সনদ এবং বাংলাদেশের প্রতিযোগিতা আইন ২০১২ এর বরাত দিয়ে ১৮ জানুয়ারি ২০২২ পাল্টা চিঠিতে বলেছেন, বাংলাদেশ সরকার সীমিত সংখ্যক এজেন্সিকে কাজ দিতে পারে না। বাংলাদেশের আইন অনুযায়ী বৈধ লাইসেন্সধারী সব রিক্রুটিং এজেন্সিকে সমান সুযোগ দিতে হবে। চিঠিতে বলা হয়েছে, স্বচ্ছ, অনিয়মমুক্ত এবং নিরাপদ অভিবাসন চায় বাংলাদেশ। পাশাপাশি কর্মী পাঠানোর প্রক্রিয়া ঠিক করার জন্য দুই দেশের যৌথ ওয়ার্কিং কমিটির বৈঠকের প্রস্তাব দিয়েছে বাংলাদেশ।

বাংলাদেশ সরকারের প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রীর এই অবস্থানকে আমরা স্বাগত জানাই। আমরা মনে করি সিন্ডিকেটের বদলে সবাইকে সমান সুযোগ দিয়ে স্বচ্ছ, নিয়মমুক্ত এবং নিরাপদ অভিবাসনের কোন বিকল্প নেই। তবে আমরা দেখছি এই চিঠি দেওয়ার তিন মাস পার হয়ে গেলেও কর্মী পাঠানোর বিষয়ে কোন অগ্রগতি নেই।

আমরা উদ্বেগের সঙ্গে বলতে চাই শুধু এবারই নয় এর আগে ২০১৬ সালে এবং তার আগে ২০০৬ ও ২০০৭ সালে কলিং ভিসায় কর্মী পাঠানোর সময়ও নানা অনিয়মের ঘটনা ঘটেছে। অতীত অভিজ্ঞতা থেকে দেখা যাচ্ছে যে বাংলাদেশ থেকে কর্মী নেওয়ার প্রক্রিয়া এলেই স্বচ্ছতার বদলে নানা অনিয়মের ঘটনা ঘটে। আমরা মনে করি মালয়েশিয়া অন্যান্য দেশ থেকে যেভাবে উন্মুক্ত পদ্ধতিতে কর্মী নেয় বাংলাদেশ থেকেও সেভাবে নেওয়া উচিত। পাশাপাশি কর্মী নিয়োগের অনলাইন পদ্ধতি ও স্বাস্থ্য পরীক্ষার বিষয়ে বাংলাদেশের নিজস্ব পদ্ধতি থাকা উচিত যাতে কোথাও কোন অনিয়ম বা সিন্ডিকেট হতে না পারে।

আমরা সবাইকে মনে করিয়ে দিতে চাই বাংলাদেশ থেকে বিদেশে কর্মী পাঠানোর খরচ এমনিতেই অনেক বেশি। পরিসংখ্যান ব্যুরোর জাতীয় জরিপ অনুযায়ী, একজন বাংলাদেশি কর্মীকে বিদেশ যেতে সাড়ে ১৭ মাসের বেতনের সমপরিমাণ টাকা খরচ করতে হয়, যা বিশ্বে সর্বোচ্চ। কাজেই নতুন করে যে কোন ধরনের অনিয়ম বা সিন্ডিকেটের বদলে সকল রিক্রুটিং এজেন্সিকে নিয়োগ প্রক্রিয়ার ক্ষেত্রে সুযোগ দান করে একটি সুষ্ঠু প্রক্রিয়ায় মাধ্যমে অবিলম্বে মালয়েশিয়ার শ্রমবাজার উন্মুক্ত করার জন্য আমরা মালয়েশিয়া ও বাংলাদেশ সরকারের প্রধানমন্ত্রী, মন্ত্রী, দূতাবাসসহ সবাইকে আহ্বান জানাচ্ছি।

বিবৃতি প্রদান করা ২০টি সংগঠন হলো- 
রিফিউজি অ্যান্ড মাইগ্রেটরি মুভমেন্টস রিসার্চ ইউনিট (রামরু), বাসুগ-ডায়াসপোরা অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট, ওয়ারবে ডেভেলপমেন্ট ফাউন্ডেশন, ব্র্যাক, আইন ও সালিস কেন্দ্র, মানুষের জন্য ফাউন্ডেশন, বাংলাদেশি অভিবাসী মহিলা শ্রমিক অ্যাসোসিয়েশন (বমসা), অভিবাসী কর্মী উন্নয়ন প্রোগ্রাম (ওকাপ), ইমা রিসার্চ ফাউন্ডেশন, ইন্টারন্যাশনাল নেটওয়ার্ক অফ অলটারনেটিভ ফিন্যান্সিয়াল ইনস্টিটিউট (ইনাফি), বাংলাদেশ কন্সট্রাকশন অ্যান্ড উড ওয়ার্কার্স ফেডারেশন (বিসিডাব্লিউডাব্লিউএফ), ইয়াং পাওয়ার ইন সোশ্যাল অ্যাকশন (ইপ্সা), বোয়াফ, বাস্তব, রাইট যশোর, সেন্টার ফর ডেভেলপমেন্ট কমিউনিকেশন (ডেভকম) লিমিটেড, ফিল্মস ফর পিস ফাউন্ডেশন, চেঞ্জ মেকারস, অ্যাসোসিয়েশন ফর কমিউনিটি ডেভেলপমেন্ট (এসিডি), সেন্টার ফর কমিউনিটি ডেভেলপমেন্ট অ্যাসিস্ট্যান্স (সিসিডিএ), কর্মজীবী নারী।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

বাংলাদেশে গণমাধ্যমের ওপর হামলায় মিডিয়া ফ্রিডম কোয়ালিশনের নিন্দা

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
বাংলাদেশে গণমাধ্যমের ওপর হামলায় মিডিয়া ফ্রিডম কোয়ালিশনের নিন্দা

ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান বিন হাদির মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়ার পর রাজধানীর কারওয়ান বাজারে দেশের শীর্ষস্থানীয় দুই সংবাদমাধ্যম দৈনিক প্রথম আলো এবং ইংরেজি দৈনিক ডেইলি স্টার ভবনে হামলা-অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে। বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত পৌনে ১২টার দিকে এ হামলার ঘটনা ঘটে। এ হামলার ঘটনায় গভীর উদ্বেগ ও নিন্দা জানিয়ে একটি বিবৃতি দিয়েছে গণমাধ্যমের স্বাধীনতাবিষয়ক বৈশ্বিক জোট মিডিয়া ফ্রিডম কোয়ালিশন (এমএফসি)।

মিডিয়া ফ্রিডম কোয়ালিশনের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘গত রাতে সাংবাদিক, সম্পাদক এবং সংবাদমাধ্যমের ওপর যে হামলা চালানো হয়েছে—মিডিয়া ফ্রিডম কোয়ালিশন তার কঠোর নিন্দা জানাচ্ছে। এ ধরনের সহিংসতা ও ভীতি প্রদর্শন কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। এটি সংবাদপত্রের স্বাধীনতা এবং জনগণের তথ্য জানার অধিকারে সরাসরি আঘাত।’

মিডিয়া ফ্রিডম কোয়ালিশন হামলায় জড়িতদের জবাবদিহির আওতায় আনতে দ্রুত ও নিরপেক্ষ তদন্তের আহ্বান জানিয়েছে।

বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ‘সকল সংবাদকর্মীর নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। ভয়ভীতি ছাড়া সাংবাদিকদের কাজ করার পরিবেশ তৈরি করে দেওয়া অপরিহার্য। আইনের শাসন, গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ এবং একটি উন্মুক্ত ও তথ্যসমৃদ্ধ সমাজ বিনির্মাণের জন্য সাংবাদিকদের সুরক্ষা দেওয়া অত্যন্ত জরুরি।’

উল্লেখ্য, গত রাতে ঢাকা-৮ আসনের সম্ভাব্য স্বতন্ত্র প্রার্থী ও ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদির মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়ার পর উত্তেজিত একদল লোক কারওয়ান বাজারে অবস্থিত প্রথম আলো ও ডেইলি স্টার ভবনের সামনে জড়ো হয়। একপর্যায়ে ভবনের ভেতরে ভাঙচুর চালানো হয় এবং অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে।

এর আগে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও গণভোটের তফসিল ঘোষণার পরদিন ১২ ডিসেম্বর ঢাকার পুরানা পল্টনের বক্স কালভার্ট রোডে হাদিকে গুলি করা হয়। প্রথমে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও পরে এভারকেয়ার হাসপাতালে তাঁকে চিকিৎসা দেওয়া হয়। অবস্থার অবনতি হলে ১৫ ডিসেম্বর এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে তাঁকে সিঙ্গাপুরে নেওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গতকাল বৃহস্পতিবার রাত পৌনে ১০টার দিকে তিনি মৃত্যুবরণ করেন। তাঁর মৃত্যুকে কেন্দ্র করে উদ্ভূত পরিস্থিতিতে এ হামলার ঘটনা ঘটে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

সিসি ক্যামেরা ফুটেজ দেখে জড়িতদের আইনের আওতায় আনা হচ্ছে: ছায়ানট পরিদর্শন শেষে ফারুকী

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আজ শুক্রবার বেলা আড়াইটার দিকে ধানমন্ডির শংকরে ছায়ানট ভবন পরিদর্শন করেন সংস্কৃতি উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী। ছবি: সংগৃহীত
আজ শুক্রবার বেলা আড়াইটার দিকে ধানমন্ডির শংকরে ছায়ানট ভবন পরিদর্শন করেন সংস্কৃতি উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী। ছবি: সংগৃহীত

ছায়ানট ভবনে হামলা ও লুটপাটের ঘটনায় জড়িত প্রত্যেককে সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ দেখে চিহ্নিত করে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছেন সংস্কৃতি উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী।

আজ শুক্রবার বেলা আড়াইটার দিকে তিনি ধানমন্ডির শংকরে ছায়ানট ভবন পরিদর্শন করেন, ক্ষতিগ্রস্ত হওয়া জায়গাগুলো দেখেন এবং ছায়ানটের সংগঠক পার্থ তানভীর নভেদসহ কয়েকজন কর্মকর্তার সঙ্গে আলোচনা করেন।

পরিদর্শন শেষে সংস্কৃতি উপদেষ্টা সাংবাদিকদের বলেন, ‘সিসি ক্যামেরা ফুটেজ দেখে প্রত্যেককে আইনের আওতায় আনার কাজ চলছে। এই ভবনে হামলা চালানো হয়েছে, অনেক ক্ষতিসাধন হয়েছে। আমি ছায়ানট কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি, ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণ করে যাবতীয় সংস্কার কার্যক্রম শেষ করে প্রতিষ্ঠানটি যেন দ্রুত চালু করা যায়, এ ব্যাপারে আর্থিকসহ সরকার সব ধরনের সহায়তা দেবে। ছায়ানট পরিচালনা কমিটির সদস্যরা নিজেদের মধ্যে আলোচনা করে এ বিষয়ে আমাদের জানাবেন বলে জানিয়েছেন।’

মোস্তফা সরয়ার ফারুকী আরও বলেন, ‘এই ভবনের নিরাপত্তার ব্যাপারে আমরা সর্বোচ্চ ব্যবস্থা নিচ্ছি। ছায়ানটের বাইরে বিজিবি ও পুলিশ কঠোর নিরাপত্তায় নিয়োজিত রয়েছে। আমি উপদেষ্টা পরিষদের অন্যদের সঙ্গেও এ বিষয়ে আলোচনা করেছি।’

এক সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে মোস্তফা সরয়ার ফারুকী বলেন, ‘এটা অবশ্যই নির্বাচন বানচাল করার ষড়যন্ত্র। আজ আমাদের কথা বলার কথা শহীদ ওসমান হাদিকে নিয়ে। আজ আমাদের শোকাতুর হওয়ার কথা। প্রসঙ্গ ঘুরিয়ে দিয়েছে কারা? কারা প্রথম আলো, ডেইলি স্টার, ছায়ানটে হামলা করেছে? যারা করেছে, তারা বাংলাদেশে গণতান্ত্রিক উত্তরণ চায় না।’

সংস্কৃতি উপদেষ্টা আরও বলেন, ‘এই জাতীয় শোকের মুহূর্তে এক শ্রেণির হঠকারী লোক দেশকে অস্থিতিশীল করার লক্ষ্যে সাংস্কৃতিক সংগঠন ছায়ানটে হামলা চালিয়ে ক্ষতিসাধন করেছে। মৃত্যুঞ্জয়ী হাদির মৃত্যুতে কোনো সাংস্কৃতিক সংগঠনে হামলা কেবল একটি ফৌজদারি অপরাধই নয়, জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের চেতনারও পরিপন্থী।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ঢাকায় পৌঁছেছে ওসমান হাদির মরদেহ

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ১৯ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৮: ৪৩
শরিফ ওসমান বিন হাদির মরদেহ ঢাকায় পৌঁছেছে। ছবি: আজকের পত্রিকা
শরিফ ওসমান বিন হাদির মরদেহ ঢাকায় পৌঁছেছে। ছবি: আজকের পত্রিকা

সিঙ্গাপুরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যাওয়া ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান বিন হাদির মরদেহ ঢাকায় পৌঁছেছে। তাঁর মরদেহ বহনকারী বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের ফ্লাইট বিজি-৫৮৫ আজ শুক্রবার (১৯ ডিসেম্বর) বিকেল ৫টা ৪৮ মিনিটের দিকে ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করে।

শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর সূত্র এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।

হাদির মরদেহ দেশে পৌঁছানোর খবরে অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা, বিএনপি ও জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) নেতা-কর্মীরা বিমানবন্দরে যান। বিমানবন্দরে হাদির কফিনের পাশে উপস্থিত ছিলেন শিল্প, গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ, এনসিপির সদস্যসচিব আখতার হোসেন ও দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ এবং ডাকসু ভিপি সাদিক কায়েম। এ সময় তাঁদের কয়েকজনকে কাঁদতে দেখা যায়।

এদিকে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (ডাকসু) মুক্তিযুদ্ধ ও গণতান্ত্রিক আন্দোলনবিষয়ক সম্পাদক ফাতিমা তাসনিম জুমা ফেসবুক পোস্টে জানিয়েছেন, ‘শহিদ ওসমান হাদিকে বহনকারী গাড়ি বিমানবন্দর থেকে হিমাগার এর উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরু করেছে। সেখানে শহিদ ওসমান হাদিকে রেখে ইনকিলাব মঞ্চের কর্মীরা শাহবাগে এসে অবস্থান নিবে। পরিবারের দাবির ভিত্তিতে শহিদ ওসমান হাদিকে কবি নজরুলের পাশে সমাহিত করার এবং মানিক মিয়া অ্যাভিনিউয়ে বাদ জোহর জানাজার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তার প্রেক্ষিতে আজকের পরিবর্তে আগামীকাল মিছিলসহ ভাইকে সেন্ট্রাল মসজিদে আনা হবে।’

ফাতিমা তাসনিম জুমা পোস্টে আরও লেখেন, ‘ছাত্রজনতা আজ ও আগামীকাল শৃঙ্খলার সাথে আন্দোলন জারি রাখবেন যেন কোনো গোষ্ঠি অনুপ্রবেশ ঘটিয়ে আন্দোলন স্তিমিত করতে না পারে একই সাথে সহিংসতা করার সুযোগও না পায়।’

পোস্টে বলা হয়, ‘মরদেহ দেখার কোনো সুযোগ থাকবে না। সকলের নিকট শৃঙ্খলা বজায় রাখার এবং শহিদ ওসমান হাদির জন্য দোয়া পৌঁছানোর অনুরোধ করা হচ্ছে।’

জুলাই অভ্যুত্থান ও আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের আন্দোলনের মধ্য দিয়ে পরিচিতি পাওয়া হাদি ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ঢাকা-৮ আসন থেকে স্বতন্ত্র প্রার্থী হওয়ার ঘোষণা দিয়েছিলেন। রাজধানীর পুরানা পল্টন এলাকায় ১২ ডিসেম্বর চলন্ত মোটরসাইকেল থেকে দুর্বৃত্তরা রিকশায় থাকা হাদিকে গুলি করে। গুলিটি হাদির মাথায় লাগে।

গুরুতর আহত অবস্থায় তাঁকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে অস্ত্রোপচার শেষে রাতেই তাঁকে ঢাকার এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য গত সোমবার দুপুরে এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে করে তাঁকে সিঙ্গাপুরে নেওয়া হয়। গতকাল বৃহস্পতিবার সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

সহিংসতার আশঙ্কায় বাংলাদেশে অবস্থানরত মার্কিন নাগরিকদের জন্য দূতাবাসের সতর্কবার্তা

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
ছবি: ফেসবুক থেকে নেওয়া
ছবি: ফেসবুক থেকে নেওয়া

ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদির জানাজাকে কেন্দ্র করে আগামীকাল শনিবার (২০ ডিসেম্বর) রাজধানী ঢাকাজুড়ে ব্যাপক জনসমাগম ও তীব্র যানজটের আশঙ্কা করছে ঢাকার মার্কিন দূতাবাস। এই প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশে অবস্থানরত মার্কিন নাগরিকদের অতিরিক্ত সতর্ক থাকার এবং বড় ধরনের জনসমাবেশ এড়িয়ে চলার অনুরোধ জানিয়ে একটি সতর্কবার্তা জারি করা হয়েছে।

আজ শুক্রবার দূতাবাসের ওয়েবসাইট ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এ সতর্কবার্তা জারি করা হয়।

মার্কিন দূতাবাসের সতর্কবার্তায় বলা হয়েছে, ‘গণমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুযায়ী, তরুণ নেতা শরিফ ওসমান হাদির মরদেহ আজ শুক্রবার (১৯ ডিসেম্বর) সন্ধ্যা ৬টা ৫ মিনিটে ঢাকায় পৌঁছানোর কথা রয়েছে। তাঁর জানাজা আগামীকাল শনিবার (২০ ডিসেম্বর) জোহরের নামাজের পর জাতীয় সংসদ ভবনের সামনে মানিক মিয়া অ্যাভিনিউয়ে অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। জানাজা উপলক্ষে ওই এলাকা এবং সমগ্র ঢাকাজুড়ে অত্যন্ত ব্যাপক যানজটের সৃষ্টি হতে পারে।’

সম্ভাব্য এ পরিস্থিতিতে বাংলাদেশে অবস্থানরত যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকদের জন্য দূতাবাস কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ নির্দেশনা দিয়েছে—নাগরিকদের যেকোনো বড় জনসমাবেশ বা বিক্ষোভ এড়িয়ে চলতে বলা হয়েছে। সতর্কবার্তায় বলা হয়েছে, শান্তিপূর্ণ উদ্দেশ্যে আয়োজিত সমাবেশও যেকোনো সময় সংঘাতপূর্ণ বা সহিংস হয়ে উঠতে পারে। জনসমাবেশের আশপাশে চলাচলের সময় অতিরিক্ত সতর্কতা অবলম্বন করতে এবং স্থানীয় পরিস্থিতির ওপর নজর রাখতে অনুরোধ করা হয়েছে।

প্রসঙ্গত, ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও গণভোটের তফসিল ঘোষণার পরদিন ১২ ডিসেম্বর ঢাকার পুরানা পল্টনের বক্স কালভার্ট রোডে ঢাকা-৮ আসনের সম্ভাব্য স্বতন্ত্র প্রার্থী ও ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদিকে গুলি করা হয়। প্রথমে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও পরে এভারকেয়ার হাসপাতালে তাঁকে চিকিৎসা দেওয়া হয়। অবস্থার অবনতি হলে ১৫ ডিসেম্বর এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে তাঁকে সিঙ্গাপুরে নেওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গতকাল বৃহস্পতিবার রাত পৌনে ১০টার দিকে তিনি মৃত্যুবরণ করেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত