Ajker Patrika

সোশ্যাল মিডিয়া ম্যানেজার হতে যা যা দরকার

আরাফাত রহমান
আপডেট : ০৭ ফেব্রুয়ারি ২০২২, ১৫: ৪৯
সোশ্যাল মিডিয়া ম্যানেজার হতে যা যা দরকার

ফেসবুক ব্যবহার করতে গিয়ে বাবা-মায়ের কাছে বকা শোনেনি এমন লোক খুঁজে পাওয়া কঠিন হবে। বলা হয়, সোশ্যাল মিডিয়া বা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের প্ল্যাটফর্মগুলোতে সময়ের অপচয় হয়। কিন্তু এটাই আবার আয়ের মাধ্যম হয়ে উঠছে। বিভিন্ন নামীদামি ব্র্যান্ড থেকে শুরু করে ছোটখাটো ব্যবসা—সবারই প্রচারের মাধ্যম হয়ে উঠেছে সোশ্যাল মিডিয়া। তবে এর জন্য শেখা চাই সঠিক ব্যবস্থাপনা। ব্যবসা বা নিজের উদ্যোগের নামে একটি পেজ করলেই চলে না। সোশ্যাল মিডিয়া থেকে নিজের ব্যবসাকে লাভবান করতে হলে সঠিক ব্যবস্থাপনা শেখা ভীষণ জরুরি। 

সাধারণত বিভিন্ন ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান অনলাইনে নিজেদের প্রচার চালাতে একটি পেজ খুলেই কাজ সারে। এর চেয়ে যারা একটু অগ্রসর, তারা দেখা যায় পেজের প্রচারের জন্য কিছু টাকা ব্যয় করে। এটুকু করেই অনেকে ভাবেন, অনেকটাই করা হলো। এমন যারা ভাবেন, তারা বলতে হয় বোকার স্বর্গে বাস করছেন। কেন? এই প্রশ্নের উত্তরেই সামনে হাজির হয় সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিংয়ের প্রসঙ্গটি। 

সোশ্যাল মিডিয়ায় নিজের ব্যবসাকে প্রতিষ্ঠিত করতে অবশ্যই আপনাকে টার্গেট অডিয়েন্স, কনটেন্ট স্ট্র্যাটেজি, সেলস ফানেল, কাস্টমার জার্নি, সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মের নিজস্ব এলগরিদম ইত্যাদি সম্পর্কে জ্ঞান রাখতে হবে। এ জন্যই বড় বড় ব্র্যান্ড থেকে শুরু করে ছোট ও মাঝারি ব্যবসায়ী—সবাই সোশ্যাল মিডিয়া ম্যানেজমেন্টে পারদর্শী লোক খোঁজে। বলা যায়, সময়ের সঙ্গে এই পেশায় দক্ষ লোকের চাহিদা ক্রমশ বাড়ছে। 

সোশ্যাল মিডিয়া ম্যানেজমেন্টের কাজ
সোশ্যাল মিডিয়া ম্যানেজমেন্টের মূল কাজ হলো একটি ব্যবসাকে অনলাইনে প্রতিষ্ঠা করা। সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রতিনিয়ত লোকজন বিভিন্ন বিজ্ঞাপন দেখে সেগুলো পর্যালোচনা করে এবং পণ্য কেনে। এখানকার মার্কেটিংকে বলা যায় ‘রিয়েল টাইম মার্কেটিং’। তাই একজন সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটারের মূল কাজ হলো—

  • কখন কোন সোশ্যাল মিডিয়ায় (ফেসবুক, টুইটার, ইনস্টাগ্রাম ইত্যাদি) কোন ধরনের কনটেন্ট যাবে, তা নির্বাচন করা
  • সোশ্যাল মিডিয়ার তিন-চারটি প্ল্যাটফর্মে একসঙ্গে ব্যবসার উপস্থিতি নিশ্চিত করা
  • কোন ধরনের অডিয়েন্স কোন প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করে, তার ওপর ভিত্তি করে নিজের পণ্যের বাজার তৈরি
  • পেজের কমেন্ট, মেসেজের উত্তর দেওয়ার মাধ্যমে ব্যবসা ও ভোক্তাদের মধ্যে একটি সম্পর্ক তৈরি
  • ব্র্যান্ডের প্রতিনিধিত্ব করে এবং ব্র্যান্ডের মেসেজ যথাযথভাবে অডিয়েন্সের কাছে যেন পৌঁছায়, সেদিকে খেয়াল রেখে বিপণনের উদ্দেশে প্রচার কার্যক্রমগুলো ডিজাইন করা
  • কনটেন্টগুলো উপযুক্ত অডিয়েন্সের কাছে যাচ্ছে কি না, আপনার কনটেন্ট ক্রেতাদের সিদ্ধান্তে ভূমিকা রাখছে কি না, সেগুলো বিভিন্ন টুলসের মাধ্যমে পরিমাপ করা
  • বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মের ভাইরাল ও ট্রেন্ডি কনটেন্ট পর্যালোচনা করা এবং সেই অনুযায়ী ক্রিয়েটিভ টিমের সঙ্গে আলোচনা করে আকর্ষণীয় কনটেন্ট তৈরি
  • পেইড ও অরগানিক—দুই ধরনের ক্যাম্পেইন ডিজাইন এবং এতে মানুষের সংযোগ বাড়াতে কার্যকর কৌশল গ্রহণ

সোশ্যাল মিডিয়া ম্যানেজমেন্টের মূল কাজ হলো একটি ব্যবসাকে অনলাইনে প্রতিষ্ঠা করাসোশ্যাল মিডিয়া ম্যানেজারের আয়
সোশ্যাল মিডিয়া ম্যানেজমেন্ট যথাযথভাবে শিখতে পারলে দেশের পাশাপাশি বিদেশি কোম্পানিগুলোতেও কাজের সুবিধা পেতে পারেন। সোশ্যাল মিডিয়া বিপণনকর্মী হিসেবে আপনি যেভাবে আয় করতে পারেন, তা হচ্ছে—

ফ্রিল্যান্সিং: ফ্রিল্যান্সিং বর্তমানে আমাদের দেশে ক্রমশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। আপনি ফাইভার, আপওয়ার্ক, ফ্রিল্যান্সের ডটকম, পিপল পার আওয়ারসহ বিভিন্ন সাইটে নিজের প্রোফাইল খুলে পছন্দের কাজে বিড (কাজের বিপরীতে নিজের মজুরি জানিয়ে কার্যাদেশ পাওয়ার আবেদন) করতে পারবেন বা যোগাযোগ করতে পারবেন বায়ার বা ক্রেতার সঙ্গে। একজন মোটামুটি দক্ষতা সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটার প্রতি মাসে ৩০০ ডলার–১০০০ ডলার পর্যন্ত আয় করতে পারেন। 

দেশীয় প্রতিষ্ঠান: বর্তমানে বিভিন্ন ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান ডিজিটাল মার্কেটার নিয়োগ দিচ্ছে। কথায় ডিজিটাল মার্কেটিং হলেও মূল কাজ থাকে সোশ্যাল মিডিয়া ম্যানেজমেন্টের। বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে একজন শিক্ষানবিশ সোশ্যাল মিডিয়া ম্যানেজারের বেতন ১০,০০০ হাজার টাকা থেকে শুরু হয়। নির্বাহী পদে প্রতিষ্ঠান ও চাকরির কাজের পরিধি ভেদে ২০ থেকে ৪০ হাজার টাকা বেতন হয়। বিডিজবসে, ফেসবুকের বিভিন্ন নিয়োগভিত্তিক পেজে নিয়মিত এ ধরনের নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দেখতে পাওয়া যায়। 

বিদেশি প্রতিষ্ঠান: বিদেশি প্রতিষ্ঠানগুলোতে চাকরির জন্য আবেদন করার আগে আপনার একটি পোর্টফোলিও থাকা প্রয়োজন। কারণ, বিদেশি প্রতিষ্ঠানগুলো অভিজ্ঞ লোক নিতে পছন্দ করে। আপনি দেশে বসেই লিংকডইনের মাধ্যমে চাকরির আবেদন করতে পারেন। বিদেশি প্রতিষ্ঠানগুলো ঘণ্টা ভিত্তিতে বা মাসিক চুক্তি—দুভাবেই নিয়োগ করে। ভালো বিদেশি প্রতিষ্ঠানগুলোতে কাজ ও দক্ষতার ভিত্তিতে মাসে ৮০০-১৫০০ ডলার আয়ের সুযোগ রয়েছে। 

সোশ্যাল মিডিয়া ম্যানেজমেন্ট যথাযথভাবে শিখতে পারলে দেশের পাশাপাশি বিদেশি কোম্পানিগুলোতেও কাজের সুবিধা পেতে পারেনসোশ্যাল মিডিয়া ম্যানেজার হতে হলে
একজন দক্ষ সোশ্যাল মিডিয়া ম্যানেজার হতে হলে অবশ্যই আপনাকে কিছু বিষয়ে দক্ষ হতে হবে। এ ক্ষেত্রে যে বিষয়গুলোর দিকে খেয়াল রাখতে হবে—

সোশ্যাল মিডিয়া ম্যানেজমেন্ট কোর্স: বর্তমানে বিভিন্ন আইটি প্রতিষ্ঠান ডিজিটাল মার্কেটিং নিয়ে কোর্স অফার করে। এ ছাড়া সরকারি উদ্যোগেও বিভিন্ন ধরনের কোর্স করানো হচ্ছে। এগুলোর যেকোনো একটিতে ভর্তি হয়ে যেতে পারেন। তবে সোশ্যাল মিডিয়া ম্যানেজমেন্টের জন্য কোর্স করতেই হবে, তা কিন্তু নয়। আপনি চাইলে ইউটিউব, ইউডেমি, কোর্সেরাসহ বিভিন্ন অনলাইন প্ল্যাটফর্মেও কোর্সটি করতে পারবেন। 

পোর্টফোলিও তৈরি করুন ও কনটেন্ট শেয়ার করুন: ডিজিটাল মার্কেটিংয়ের দুনিয়ায় নিজের অবস্থান তৈরির জন্য একটি ভালো পোর্টফোলিও খুবই দরকার। প্রথম দিকে কাজ পাওয়া সত্যিই কষ্টসাধ্য। শুরুটা ঠিকঠাক করতে হলে যা করতে পারেন—

*কাজ শেখার প্রথমদিকে বিভিন্ন ছোটখাটো ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যুক্ত হয়ে কয়েক মাসের জন্য তাদের বিনা মূল্যে সেবা দিতে পারেন। কারণ, প্রথম দিকে আপনার পোর্টফোলিও তৈরি করাটাই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। এই সময়টাকে আপনার বিনিয়োগ হিসেবে ধরতে পারেন। এমনও হতে পারে, আপনি যে ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের হয়ে কাজ করছেন, তারাই আপনাকে পরে নিয়োগ দিতে পারে। 
*বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে ডিজিটাল মার্কেটিংয়ের জন্য ইন্টার্ন নিয়োগ করে। ইন্টার্নশিপের জন্য সাধারণত ৮০০০-১০,০০০ টাকা দেওয়া হয়। এই ধরনের ইন্টার্নশিপগুলোতে কাজের চাপ থাকে। ফলে আপনার বিভিন্ন প্ল্যাটফর্ম নিয়ে কাজ করার অভিজ্ঞতাটা হয়ে যাবে। 
*বিভিন্ন প্ল্যাটফর্মে নিজের অ্যাকাউন্ট/পেজ/চ্যানেল খুলে কনটেন্ট শেয়ার করতে পারেন এবং অরগানিকভাবে ফলোয়ার বাড়াতে পারেন। ফলে বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মের ব্যাপারে আপনার ব্যবহারিক অভিজ্ঞতা হবে। তা ছাড়া আপনার কনটেন্ট মার্কেটিং নিয়ে ভালো ধারণা হয়ে যাবে। 

ফ্রিল্যান্সিং বর্তমানে আমাদের দেশে ক্রমশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছেযে দক্ষতাগুলো জরুরি
সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিংয়ে ক্যারিয়ার গড়তে হলে কিছু বিষয়ে দক্ষ হয়ে উঠতে হবে। এর মধ্যে শুরুতে থাকে লেখার বিষয়টি। এর সঙ্গে ডিজাইন সম্পর্কিত জ্ঞান থাকলে প্রাথমিক কাজটা ভালোভাবে চালিয়ে নেওয়া যায়। মোটাদাগে বেশ কিছু বিষয়ে দক্ষ হয়ে উঠলে তবেই এ পেশায় ভালো করা যায়। এর মধ্যে রয়েছে—

কপি রাইটিং: সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পণ্য ও সেবা বিপণনে দক্ষ ব্যবস্থাপক হয়ে উঠতে হলে লেখালেখির অভ্যাস থাকাটা ভীষণ জরুরি। সোশ্যাল মিডিয়ায় চোখের সামনে ঘোরা এবং আকর্ষণীয় বিভিন্ন বিজ্ঞাপনের ছবি বা ভিডিওর সঙ্গে দেখবেন কিছু লেখা রয়েছে। এই ক্যাপশনগুলোই কিন্তু পাঠক ও দর্শককে আকৃষ্ট করে। এর ওপরই নির্ভর করে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিটি ওই বিজ্ঞাপনের ভেতরে ঢুকবেন কিনা। মানুষকে আপনার বিজ্ঞাপনের সঙ্গে যুক্ত করতে হলে চাই আকর্ষণীয় ক্যাপশন। ক্যাপশন ভালো ও আকর্ষণীয় হলেই মানুষ পণ্যটি কিনতে বেশি আগ্রহী হবে। তাই একজন দক্ষ সোশ্যাল মিডিয়া ম্যানেজারকে বিজ্ঞাপনী ভাষা রপ্ত করতে হবে। এই কপি রাইটিং ভালোমতো আয়ত্ত করতে সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মে বিভিন্ন নামী ব্র্যান্ডের পেজ ও গ্রুপগুলো ফলো করতে পারেন। তা ছাড়া নিজের মতো করে একটা কপি লিখে আশপাশের মানুষকে দেখাতে পারেন এবং তাঁদের মতামত নিতে পারেন। কারণ, আপনার চারপাশে থাকা মানুষদের একজনই আপনার পণ্যটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম থেকে কিনবেন। 

গ্রাফিক ডিজাইন: সোশ্যাল মিডিয়াতে ছবি ও ভিডিও কনটেন্ট হিসেবে খুব গুরুত্বপূর্ণ রাখে। বলা হয়, মানুষের মস্তিষ্কে অন্য কিছুর চেয়ে ছবি ৫০০০ গুণ দ্রুত প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করে। তাই আপনার যদি গ্রাফিক ডিজাইন নিয়ে ধারণা থাকে ও আকর্ষণীয় সোশ্যাল মিডিয়া পোস্ট তৈরি করতে পারেন, তাহলে খুব দ্রুতই একজন সোশ্যাল মিডিয়া ম্যানেজার হিসেবে আপনি সফল হতে পারবেন। প্রাথমিকভাবে আপনি ক্যানভা (Canva) দিয়ে শুরু করতে পারেন। পরে এডোবি ফটোশপ ও ইলাস্ট্রেটর শিখে নিতে পারেন। 

কাস্টোমার সাপোর্ট বা কমিউনিটি ম্যানেজমেন্টে দক্ষতা: সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভোক্তারা বিভিন্ন সময় ফেসবুক পেজের ইনবক্সে মেসেজ দেন। তাঁদের সঙ্গে কথা বলে তাঁদের কাছে পণ্য বা সেবা বিক্রি ও বিক্রয়-পরবর্তী সেবা নিশ্চিত করতে পারাটা একজন সোশ্যাল মিডিয়া ম্যানেজারের গুরুত্বপূর্ণ দক্ষতা। 

বিপণন কৌশল: সোশ্যাল মিডিয়া ম্যানেজমেন্টে দক্ষ হতে হলে আপনার সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং স্ট্র্যাটেজি বা বিপণন কৌশল নিয়ে ভালো ধারণা রাখতে হবে। সোশ্যাল মিডিয়াতে একজন ভোক্তাকে সেলস ফানেলের ভেতর দিয়ে নিয়ে যেতে হয়। সেলস ফানেলের ওপরের দিকে থাকে ব্র্যান্ড অ্যাওয়ারনেস। এই ধাপে আপনি ক্রেতাদের আপনাদের পণ্যের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেবেন। তার পরবর্তী ধাপে থাকে ব্র্যান্ড কনসিডারেশন। এই ধাপে আপনি ক্রেতাদের পণ্যটি ক্রয়ে আগ্রহী করে তুলবেন। আর শেষ ধাপটি হচ্ছে কনভারশন। এই ধাপে এসে একজন সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহারকারী চূড়ান্তভাবে আপনার পণ্যের ক্রেতায় পরিণত হবে। 

সেলস ফানেল ছাড়াও কোন ধরনের চ্যানেলে কোন ধরনের অডিয়েন্স পাওয়া যায়, সেদিকেও খেয়াল রাখতে হবে। যেমন তরুণ প্রজন্মের অধিকাংশ ইনস্টাগ্রাম, টিকটক ব্যবহার করে। আবার ফেসবুকে আপনি সব শ্রেণি ও বয়সের লোকেদের পাবেন। ইউটিউবে ইন্টারেস্টভিত্তিক অডিয়েন্সের উপস্থিতি আবার বেশি। তাই আপনার পণ্যের প্রকরণ বুঝে প্ল্যাটফর্ম নির্বাচন করতে হবে। এ ছাড়া কোন সময় আপনি আপনার কনটেন্ট আপলোড করবেন, কোন সময় মানুষ বেশি সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহার করছে—এসব সম্পর্কেও সম্যক ধারণা রাখতে হবে। 

বিশ্লেষণ: সোশ্যাল মিডিয়া ম্যানেজমেন্টে দক্ষ হতে হলে আপনাকে অবশ্যই বিভিন্ন ধরনের বিশ্লেষণী বা অ্যানালিটিক্যাল টুলস ব্যবহার করতে জানতে হবে। আপনি যদি একজন সোশ্যাল মিডিয়া ম্যানেজার হন, তাহলে অবশ্যই আপনাকে বিভিন্ন রিপোর্ট তৈরি করতে হবে। সোশ্যাল মিডিয়াতে কী ধরনের পোস্ট আপনি শেয়ার করছেন, সেগুলো কতজন মানুষের কাছে পৌঁছাল, কতজন পোস্টটির সঙ্গে যুক্ত হলো, পোস্টটির ফলে কতজন মানুষ আপনার ওয়েবসাইটে এসেছে, কোন পণ্যটি অর্ডার করেছে, কখন ক্রেতারা বেশি সক্রিয় থাকে—এই বিষয়গুলো বিশ্লেষণ করে প্ল্যাটফর্মগুলোয় আপনার কার্যক্রম সাজাতে হবে। এ জন্য সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মগুলোর নিজস্ব অ্যানালিটিকস আছে। যেগুলোর বিভিন্ন মেট্রিক্স নিয়ে আপনার অবশ্যই ধারণা থাকতে হবে। 

ব্যয় নির্ধারণ: সোশ্যাল মিডিয়াতে ব্যবসার পেইড মার্কেটিং করতে হয়। অর্থাৎ আপনার ব্যবসা বা পণ্যকে মানুষের কাছে পৌঁছে দিতে ফেসবুকের মতো সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের প্ল্যাটফর্মগুলোকে নির্দিষ্ট অঙ্কের টাকা দিতে হবে। অবশ্যই এই বিনিময় হবে ডলারে। আর বিভিন্ন ক্রিয়েটিভ তৈরি, টুলস কেনাসহ নানা খরচ তো আছেই। সে ক্ষেত্রে বিজ্ঞাপন প্রচারের মাধ্যমে যেন আপনার বিনিয়োগ উঠে আসে, সে হিসাব করা এবং এর বাজেট নির্ধারণ করা একটি গুরুত্বপূর্ণ দক্ষতা। 

সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিংয়ে ক্যারিয়ার গড়তে হলে কিছু বিষয়ে দক্ষ হয়ে উঠতে হবেকোন কোন প্ল্যাটফর্মে কাজ করা শিখবেন
সোশ্যাল মিডিয়া ম্যানেজমেন্ট শিখতে হলে প্রথমে আপনাকে কয়েকটি সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মকে চিহ্নিত করতে হবে, যেগুলোর আপনি কাজ করবেন। প্রধানত ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম, লিংকডিন, টুইটার, পিন্টারেস্ট, টিকটক, কোরা—এই সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মগুলো সম্পর্কে ভালো ধারণা রাখাটা বাঞ্ছনীয়। কারণ, এই প্ল্যাটফর্মগুলোতেই অধিকাংশ ব্যবহারকারীরা থাকে। ভিডিও নিয়ে কাজ করলে অবশ্যই ইউটিউব সম্পর্কে ভালো ধারণা রাখতে হবে। এই প্ল্যাটফর্মগুলো কিন্তু আবার একটি থেকে অন্যটি আলাদা। ফলে এগুলোয় কাজের জন্য চাই আলাদা আলাদা প্রস্তুতি। একেক প্ল্যাটফর্মে একেক বয়স, শ্রেণি ও পেশার লোকেরা থাকে। আবার ভিন্ন ভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মের কনটেন্টের ভিন্নতাও পাওয়া যায়। যেমন ইনস্টাগ্রাম বর্তমানে ছবিনির্ভর, আবার ইউটিউব পুরোপুরি ভিডিওনির্ভর। আবার টিকটক ভিডিওনির্ভর হলেও সেখানকার ভিডিওগুলোর দৈর্ঘ্য কম। কম দৈর্ঘ্যের ভিডিওর ফিচার নিয়ে অবশ্য ইউটিউব, ফেসবুকের মতো প্ল্যাটফর্মগুলোও হাজির হয়েছে। তাই বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম এবং এসবের নতুন নতুন সব ফিচার সম্পর্কে অবশ্যই ধারণা থাকা বাঞ্ছনীয়। 

বর্তমান সময়কে বলা হয় চতুর্থ শিল্প-বিপ্লবের যুগ। এই সময় গতানুগতিক চাকরির পেছনে না ছুটে দক্ষতা অর্জন করলে খুব সহজেই সম্মানজনকভাবে আয় করতে পারবেন। আর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের ব্যবহার উত্তরোত্তর বাড়ছে; সামনে আরও বাড়বে। ফেসবুক নিজেদের মূল কোম্পানির নাম এরই মধ্যে ‘মেটা’ রেখেছে। তারা মেটাভার্সের কথা বলছে। অন্য প্রতিষ্ঠানগুলোও বসে নেই। মেটাভার্সের যে বাস্তবতা আসছে সামনে, তাতে ব্যবসা বা যে কোনো ধরনের উদ্যোগকে এগিয়ে নিতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের প্ল্যাটফর্মগুলোকে কাজে লাগানোর কোনো বিকল্প নেই। তাই এই খাতে দক্ষ জনবলের চাহিদা দিন দিন বাড়বে। ফলে নতুন এই দুনিয়ায় নিজেকে একজন দক্ষ কর্মী হিসেবে গড়ে তুলতে এখন থেকেই লেগে পড়ুন। 

প্রযুক্তি সম্পর্কিত আরও পড়ুন:

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

শিক্ষকদের ঢুকতে না দিয়ে পরীক্ষা নিলেন অভিভাবকেরা

এনসিপি, এবি পার্টি ও রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলন মিলে ‘গণতান্ত্রিক সংস্কার জোট’, মুখপাত্র নাহিদ ইসলাম

সাংবাদিক শওকত মাহমুদকে বাসার সামনে থেকে তুলে নিয়ে গেল ডিবি

২০৯৮ পর্যন্ত কবে কোন দেশ বিশ্বকাপ নেবে—ভবিষ্যদ্বাণী করল গ্রোক এআই

বরিশালে ব্যারিস্টার ফুয়াদের সঙ্গে বিএনপি নেতা-কর্মীদের বাগ্‌বিতণ্ডা, ‘ভুয়া’ ‘ভুয়া’ স্লোগানে ধাওয়া

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

১০ ঘণ্টা পর বিটিআরসির অবরোধ তুলে নিলেন মোবাইল ফোন ব্যবসায়ীরা

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ০৭ ডিসেম্বর ২০২৫, ২৩: ২১
মোবাইল ফোন ব্যবসায়ীরা সড়ক ছেড়ে দিয়েছেন। ছবি: সংগৃহীত
মোবাইল ফোন ব্যবসায়ীরা সড়ক ছেড়ে দিয়েছেন। ছবি: সংগৃহীত

বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি) ভবনের সামনের সড়ক ছেড়ে দিয়েছেন মোবাইল ফোন ব্যবসায়ীরা। অবরোধের প্রায় ১০ ঘণ্টা পর আজ রোববার (৭ ডিসেম্বর) রাত ৯টার দিকে সড়ক ছাড়েন তাঁরা।

এ বিষয়ে মোবাইল বিজনেস কমিউনিটি বাংলাদেশের (এমবিসিবি) জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি শামীম মোল্লা রাত সোয়া ৯টায় আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমরা রাস্তা ছেড়ে দিয়েছি। তবে আমাদের শাট ডাউন কর্মসূচি চলবে। সারা দেশে মোবাইল বিক্রির দোকান বন্ধ থাকবে। আগামী মঙ্গলবার বিটিআরসি আমাদের সঙ্গে বৈঠকে বসবে। তারা যদি আমাদের দাবি মেনে নেয়, তাহলে আমরা দোকান খুলব। না হলে আমাদের কর্মসূচি চলবে।’

এর আগে, ন্যাশনাল ইকুইপমেন্ট আইডেনটিটি রেজিস্ট্রার (এনইআইআর) সংস্কারসহ বেশ কয়েকটি দাবিতে আজ সকাল সাড়ে ১০টার দিকে আগারগাঁওয়ে বিটিআরসি ভবনের সামনে এমবিসিবির ব্যানারে জড়ো হন ব্যবসায়ীরা। এতে ভবনের সামনের সড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। ওই এলাকায় একাধিক হাসপাতাল থাকায় ভোগান্তিতে পড়ে সাধারণ মানুষ।

ব্যবসায়ীদের মূল দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে, এনইআইআর সংস্কার, সিন্ডিকেট প্রথা বাতিল এবং মোবাইল ফোন আমদানির সুযোগ উন্মুক্ত করা।

ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, এনইআইআর বাস্তবায়ন হলে লাখ লাখ ব্যবসায়ী ও তাঁদের পরিবার ক্ষতিগ্রস্ত হবে। নতুন এই নিয়মের ফলে বিশেষ একটি গোষ্ঠী লাভবান হবে এবং বাড়তি করের চাপে গ্রাহক পর্যায়ে মোবাইলের দাম বেড়ে যাবে।

১৬ ডিসেম্বর থেকে এনইআইআর কার্যকরের ঘোষণা দিয়েছে সরকার। বিটিআরসি আশা করছে, এনইআইআর কার্যকর হলে অবৈধভাবে দেশে আসা মোবাইল ফোনের ব্যবহার বন্ধ হবে। একই সঙ্গে সরকারের রাজস্ব আয় বাড়বে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

শিক্ষকদের ঢুকতে না দিয়ে পরীক্ষা নিলেন অভিভাবকেরা

এনসিপি, এবি পার্টি ও রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলন মিলে ‘গণতান্ত্রিক সংস্কার জোট’, মুখপাত্র নাহিদ ইসলাম

সাংবাদিক শওকত মাহমুদকে বাসার সামনে থেকে তুলে নিয়ে গেল ডিবি

২০৯৮ পর্যন্ত কবে কোন দেশ বিশ্বকাপ নেবে—ভবিষ্যদ্বাণী করল গ্রোক এআই

বরিশালে ব্যারিস্টার ফুয়াদের সঙ্গে বিএনপি নেতা-কর্মীদের বাগ্‌বিতণ্ডা, ‘ভুয়া’ ‘ভুয়া’ স্লোগানে ধাওয়া

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

২০৯৮ পর্যন্ত কবে কোন দেশ বিশ্বকাপ নেবে—ভবিষ্যদ্বাণী করল গ্রোক এআই

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ০৭ ডিসেম্বর ২০২৫, ২২: ৩০
ফিফা বিশ্বকাপের ট্রফি। ছবি: সংগৃহীত
ফিফা বিশ্বকাপের ট্রফি। ছবি: সংগৃহীত

এক সাহসী ভবিষ্যদ্বাণী করেছে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ‘গ্রোক এআই’। এই ভবিষ্যদ্বাণীতে ২০২৬ সাল থেকে শুরু করে ২০৯৮ সাল পর্যন্ত ফিফা বিশ্বকাপে কোন কোন দেশ চ্যাম্পিয়ন হবে সেই তালিকা তুলে ধরা হয়েছে। অ্যালগরিদম-ভিত্তিক এই পূর্বাভাসে রয়েছে বহু চমক।

ভবিষ্যদ্বাণী অনুযায়ী, আগামী বছর (২০২৬ সাল) যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা ও মেক্সিকোতে অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া বিশ্বকাপের শিরোপা জয় করবে স্পেন। ফাইনালে দেশটি বর্তমান চ্যাম্পিয়ন আর্জেন্টিনাকে ২–১ গোলে হারাবে। এর পরের বিশ্বকাপেই অর্থাৎ ২০৩০ সালে ‘হেক্সা’ জয়ের লক্ষ্য পূরণ করবে ব্রাজিল। ফাইনালে ফ্রান্সকে ৩-১ গোলের ব্যবধানে হারিয়ে বিশ্বকাপের শিরোপা নিয়ে যাবে দেশটি। ১৯৯৮ সালের ফাইনালে ফরাসিদের কাছে ৩–০ গোলে হারের প্রতিশোধ হিসেবে আখ্যায়িত করা হবে ওই ম্যাচটিকে।

২০৩৪ সালে শিরোপা উঠবে ফ্রান্সের হাতে। ফাইনালে তারা জার্মানিকে ২–০ গোলে হারাবে। আর ২০৩৮ সালে ব্রাজিলকে ১–০ ব্যবধানে পরাজিত করে দ্বিতীয়বারের মতো বিশ্বকাপ জিতবে ইংল্যান্ড।

সবচেয়ে চমকপ্রদ পূর্বাভাস আসে ২০৪২ সালে। গ্রোক এআই বলছে—প্রথম আফ্রিকান দেশ হিসেবে সেবার বিশ্বকাপ জয় করবে নাইজেরিয়া। ফাইনালে তারা আর্জেন্টিনাকে ২–১ গোলে হারিয়ে দেবে। এর পরের বিশ্বকাপ অর্থাৎ ২০৪৬ সালে স্পেনকে ৩–২ ব্যবধানে হারিয়ে বিশ্বকাপ নেবে জার্মানি।

২০৫০ সালে আবারও বিশ্বকাপ জয় করে ২৮ বছরের খরা দূর করবে বর্তমান চ্যাম্পিয়ন আর্জেন্টিনা। এই বিশ্বকাপ নিয়ে এক রসিক ব্যাখ্যায় গ্রোক বলেছে—ফাইনালে দেখা যাবে ৬৩ বছর বয়সী লিওনেল মেসি এবং ৬৫ বছরের রোনালদোকে। তাঁরা থাকবেন গ্যালারিতে।

২০৫৪ সালে যুক্তরাষ্ট্র প্রথমবারের মতো বিশ্বকাপ জয় করবে মেক্সিকোকে হারিয়ে। ২০৫৮ সালে এশিয়ার দেশ হিসেবে প্রথমবারের মতো বিশ্বকাপ জয় করবে জাপান। ফ্রান্সকে তারা ১–০ গোলের ব্যবধানে হারাবে।

এভাবে ২০৬৬ সালে মরক্কো হবে প্রথম আরব চ্যাম্পিয়ন। ২০৭৪ সালে অস্ট্রেলিয়া প্রথম শিরোপা জিতবে। আর ২০৮২ সালে সেনেগাল হবে বিশ্বচ্যাম্পিয়ন। এ ছাড়া ২০৯০ সালে মেক্সিকো, ২০৯৪ সালে ব্রাজিলকে পেনাল্টিতে হারিয়ে শিরোপা জয় করবে ভারত। ২০৯৮ সালে অবশ্য শিরোপা ইউরোপের দখলেই থাকবে। সেবার বিশ্বকাপ জয় করবে জার্মানি।

বিশ্ব ফুটবলে বাস্তবে এই পূর্বাভাস আদৌ সত্য হবে কিনা, তা সময়ই বলে দেবে। তবে গ্রোক এআই-এর এই দীর্ঘমেয়াদি ভবিষ্যদ্বাণী ইতিমধ্যেই ফুটবলভক্তদের মধ্যে ব্যাপক আলোড়ন তুলেছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

শিক্ষকদের ঢুকতে না দিয়ে পরীক্ষা নিলেন অভিভাবকেরা

এনসিপি, এবি পার্টি ও রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলন মিলে ‘গণতান্ত্রিক সংস্কার জোট’, মুখপাত্র নাহিদ ইসলাম

সাংবাদিক শওকত মাহমুদকে বাসার সামনে থেকে তুলে নিয়ে গেল ডিবি

২০৯৮ পর্যন্ত কবে কোন দেশ বিশ্বকাপ নেবে—ভবিষ্যদ্বাণী করল গ্রোক এআই

বরিশালে ব্যারিস্টার ফুয়াদের সঙ্গে বিএনপি নেতা-কর্মীদের বাগ্‌বিতণ্ডা, ‘ভুয়া’ ‘ভুয়া’ স্লোগানে ধাওয়া

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

বিটিআরসি ভবনে অবরুদ্ধ শতাধিক কর্মকর্তা-কর্মচারী, সমস্যা সমাধানে চলছে বৈঠক

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
রাজধানীর আগারগাঁওয়ে রোববার বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি) ভবনের সামনে সড়ক অবরোধ করেন ব্যবসায়ীরা। ছবি: আজকের পত্রিকা
রাজধানীর আগারগাঁওয়ে রোববার বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি) ভবনের সামনে সড়ক অবরোধ করেন ব্যবসায়ীরা। ছবি: আজকের পত্রিকা

ন্যাশনাল ইকুইপমেন্ট আইডেন্টিটি রেজিস্টার (এনইআইআর) সংস্কার, একচেটিয়া সিন্ডিকেট বিলোপ এবং মোবাইল ফোনের উন্মুক্ত আমদানির সুযোগ সৃষ্টির দাবিতে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি) ভবন ঘেরাও করে রেখেছেন মোবাইল ফোন ব্যবসায়ীরা। এর ফলে বিকেল ৫টায় অফিস সময় শেষ হলেও ভবন থেকে বের থেকে পারছেন না বিটিআরসির শতাধিক কর্মকর্তা-কর্মচারী।

রাজধানীর আগারগাঁওয়ে আজ রোববার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে মোবাইল বিজনেস কমিউনিটি বাংলাদেশের (এমবিসিবি) ব্যানারে বিটিআরসি ভবনের সামনে জড়ো হন ব্যবসায়ীরা। এতে ভবনের সামনের সড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। ওই এলাকায় একাধিক হাসপাতাল থাকায় ভোগান্তিতে পড়ে সাধারণ মানুষ।

সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত ব্যবসায়ীদের অবরোধ চলছে।

সমস্যা সমাধানে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যানের সঙ্গে বিটিআরসি চেয়ারম্যান ভার্চুয়ালি বৈঠক করছেন বলে জানা গেছে। বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টার ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি-বিষয়ক বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব ও মন্ত্রণালয়ের সচিব রয়েছেন।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিটিআরসির এক কর্মকর্তা বলেন, ‘আমরা এখনো অবরুদ্ধ। অফিস ছুটির আগেই কৌশলে নারী কর্মীদের একটি অংশকে বাড়ি ফেরার ব্যবস্থা করা হয়েছে। সমস্যা সমাধানে মিটিং চলছে।’

বিটিআরসি ভবনের নিরাপত্তায় সতর্ক অবস্থানে রয়েছেন সেনাবাহিনীর সদস্যরা।

আজ দুপুরে বিটিআরসি চেয়ারম্যানের সঙ্গে পূর্বনির্ধারিত বৈঠক করেন এমবিসিবির নেতারা। বৈঠক শেষে এমবিসিবির সভাপতি মোহাম্মদ আসলাম জানান, বৈঠকে এনইআইআর সিস্টেম চালুর সময় এক বছর পেছানোর দাবি জানান তাঁরা। এতে বিটিআরসি কোনো সাড়া দেয়নি। দাবি না মানা পর্যন্ত আন্দোলন চলবে।

১৬ ডিসেম্বর থেকে এনইআইআর কার্যকরের ঘোষণা দিয়েছে সরকার। বিটিআরসি আশা করছে, এনইআইআর কার্যকর হলে অবৈধভাবে দেশে আসা মোবাইল ফোনের ব্যবহার বন্ধ হবে। একই সঙ্গে সরকারের রাজস্ব আয় বাড়বে।

তবে মোবাইল ফোন বিক্রেতারা বলছেন, এনইআইআর চালু হলে তাঁদের ব্যবসা বন্ধ হয়ে যাবে।

মোবাইল ফোন ব্যবসায়ী নেতারা বলেন, ‘দেশের মোবাইল ফোন ব্যবসার মার্কেট শেয়ার যাদের ৭০ শতাংশের বেশি, তাদের সঙ্গে বসে আলোচনা করে এনইআইআর চালু করতে হবে। আমরা কোনোভাবেই এনইআইআরের বিরুদ্ধে না। তবে এই প্রক্রিয়ার কিছু সংস্কার, ন্যায্য করনীতি প্রণয়ন, একচেটিয়া সিন্ডিকেট বিলোপ এবং মুক্ত বাণিজ্যের স্বার্থে সবার জন্য সমান সুযোগ নিশ্চিতে আমাদের কিছু দাবি ও প্রস্তাব রয়েছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

শিক্ষকদের ঢুকতে না দিয়ে পরীক্ষা নিলেন অভিভাবকেরা

এনসিপি, এবি পার্টি ও রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলন মিলে ‘গণতান্ত্রিক সংস্কার জোট’, মুখপাত্র নাহিদ ইসলাম

সাংবাদিক শওকত মাহমুদকে বাসার সামনে থেকে তুলে নিয়ে গেল ডিবি

২০৯৮ পর্যন্ত কবে কোন দেশ বিশ্বকাপ নেবে—ভবিষ্যদ্বাণী করল গ্রোক এআই

বরিশালে ব্যারিস্টার ফুয়াদের সঙ্গে বিএনপি নেতা-কর্মীদের বাগ্‌বিতণ্ডা, ‘ভুয়া’ ‘ভুয়া’ স্লোগানে ধাওয়া

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

রোবটকে ঘুষি ও ‘শ্বাসরোধের’ চেষ্টা, ইউটিউবারের বিরুদ্ধে মামলা

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ০৭ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৭: ০৩
জনপ্রিয় ইউটিউবার ড্যারেন জেসন ওয়াটকিনস জুনিয়র ওরফে আইশোস্পিড। ছবি: সংগৃহীত
জনপ্রিয় ইউটিউবার ড্যারেন জেসন ওয়াটকিনস জুনিয়র ওরফে আইশোস্পিড। ছবি: সংগৃহীত

গত সেপ্টেম্বরে জনপ্রিয় ইউটিউবার আইশোস্পিড লাইভস্ট্রিম করেছিলেন তাঁর সঙ্গে ভাইরাল হিউম্যানয়েড ইনফ্লুয়েন্সার রিজবটের সাক্ষাৎ।

রিজবটের বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে রয়েছে ১০ লাখের বেশি অনুসারী। রিজবট পরিচিত কৌতুকপূর্ণ ব্যঙ্গ এবং মাঝেমধ্যে মানুষকে মধ্যমা দেখানোর জন্য। অন্যদিকে আইশোস্পিড বা স্পিড (বিভিন্ন প্ল্যাটফর্মে যার পাঁচ কোটি অনুসারী) লাইভস্ট্রিমে নাটকীয় আচরণের জন্য বিখ্যাত।

দুই পক্ষের ওই সাক্ষাতে কী হয়েছিল—সেটিই এখন একটি মামলার বিষয়। রিজবটের নির্মাতা প্রতিষ্ঠান সোশ্যাল রোবোটিকস গত নভেম্বরে স্পিড (আসল নাম ড্যারেন জেসন ওয়াটকিনস জুনিয়র), তাঁর ম্যানেজমেন্ট কোম্পানি মিক্সড ম্যানেজমেন্ট এবং সেদিন তাঁর সঙ্গে থাকা এক প্রযোজকের বিরুদ্ধে মামলা করে।

মামলার অভিযোগে বলা হয় এবং লাইভস্ট্রিম ভিডিওতেও দেখা যায়, স্পিড বারবার রিজবটের মুখে ঘুষি মারেন। একপর্যায়ে সোফায় ফেলে এর গলা চেপে ধরেন এবং মাটিতে ছুড়ে ফেলেন।

অভিযোগে বলা হয়, রিজবটের ‘অপূরণীয় ক্ষতি’ করেছেন স্পিড। তিনি ভালোভাবেই জানতেন, একটি অত্যাধুনিক রোবটের সঙ্গে এমন আচরণ করা ঠিক নয়। তিনি জানতেন, এ ধরনের আচরণ রিজবটের অপূরণীয় ক্ষতির কারণ হতে পারে। তাঁর এসব কার্যকলাপের ফলে রোবটের কার্যক্ষমতা সম্পূর্ণ নষ্ট হয়ে গেছে এবং এর মুখ-গলায় গুরুতর ক্ষতি হয়েছে।

স্পিডের ম্যানেজমেন্ট টিম টেকক্রাঞ্চের মন্তব্যের অনুরোধে সাড়া দেয়নি।

সোশ্যাল রোবোটিকসের আইনজীবী জোয়েল লেভাইন জানান, রোবটের ক্ষতিপূরণ নিয়ে স্পিডের টিমের সঙ্গে আলোচনা ব্যর্থ হওয়ায় বাধ্য হয়ে তারা মামলা করেছেন।

তিনি টেকক্রাঞ্চকে বলেন, ‘এটি লাইভস্ট্রিমে হওয়া ঘটনা। তাই তথ্য নিয়ে খুব বেশি অস্পষ্টতা নেই। আমরা শুধু এর জবাবদিহি চাই।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

শিক্ষকদের ঢুকতে না দিয়ে পরীক্ষা নিলেন অভিভাবকেরা

এনসিপি, এবি পার্টি ও রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলন মিলে ‘গণতান্ত্রিক সংস্কার জোট’, মুখপাত্র নাহিদ ইসলাম

সাংবাদিক শওকত মাহমুদকে বাসার সামনে থেকে তুলে নিয়ে গেল ডিবি

২০৯৮ পর্যন্ত কবে কোন দেশ বিশ্বকাপ নেবে—ভবিষ্যদ্বাণী করল গ্রোক এআই

বরিশালে ব্যারিস্টার ফুয়াদের সঙ্গে বিএনপি নেতা-কর্মীদের বাগ্‌বিতণ্ডা, ‘ভুয়া’ ‘ভুয়া’ স্লোগানে ধাওয়া

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত