স্বপ্না রেজা

অভিভাবকেরা উৎকণ্ঠিত। দিশাহীন। কোথায় যাবেন, কীভাবে সহজ উপায়ে তাঁদের বিশেষ শিশুরা করোনা ভ্যাকসিন পাবে। অভিভাবকদের কেউ কেউ ইতিমধ্যে আক্রান্ত। সোশ্যাল মিডিয়ায় তাঁরা তাঁদের সেই উৎকণ্ঠার কথা বলেছেন, বলছেন।
সুস্থতা ও সুস্থ হয়ে বেঁচে থাকার তীব্র বাসনা প্রতিটি মানুষের। রাষ্ট্র তার নাগরিকদের সেই বাসনা পূরণে সক্রিয় থাকে। সক্রিয় থাকতে হয়। জাতিকে সুরক্ষিত করতে একটি রাষ্ট্রে নানান উদ্যোগ থাকে। থাকে পরিকল্পনা এবং তার বাস্তবায়ন ও সমন্বয়। বাংলাদেশ উদ্যোগ, পরিকল্পনা গ্রহণ ও বাস্তবায়নে পিছিয়ে নেই। তবে সমন্বয়হীনতা আছে। এই সমন্বয়হীনতা লক্ষ্য পূরণে অন্তরায়; বিশেষ করে অতিমারি করোনার আঘাত থেকে জাতিকে সুরক্ষিত করার লক্ষ্যে বিবিধ পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে, হচ্ছে। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে প্রজ্ঞাপন, বিধিনিষেধ আরোপ করা হচ্ছে। প্রত্যেক নাগরিককে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে বাধ্য করা হচ্ছে; বিশেষ করে কমিউনিটি সংক্রমণ রোধের ওপর জোর দেওয়া হয়েছে, হচ্ছে। সেই সঙ্গে ভ্যাকসিন বা টিকা নিতে সবাইকে উদ্বুদ্ধ করা হয়েছে, হচ্ছে। ভ্যাকসিন দেওয়া হচ্ছে সর্বস্তরে। আমরা দেখেছি, অনেক উন্নয়নশীল দেশের আগেই বাংলাদেশ সরকার জনগণকে ভ্যাকসিন দেওয়ার কাজটি শুরু করেছে, যা প্রশংসার দাবিদার।
২০২০ থেকে শুরু হওয়া অতিমারি করোনা আবার মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে। স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার পাশাপাশি ভ্যাকসিন নেওয়ার বিষয়টিকে নিশ্চিত করার জন্য যেকোনো সামাজিক অনুষ্ঠানসহ হোটেল, রেস্তোরাঁয় খাবার খেতে বসার সময় ভ্যাকসিন গ্রহণের কার্ড সঙ্গে নিতে বলা হয়েছে। মানে হলো, এই ভ্যাকসিনের কার্ড ছাড়া কেউ হোটেল, রেস্তোরাঁসহ কোনো সামাজিক অনুষ্ঠানে যেতে পারবেন না। পরিবহনে চলাচল করতে পারবেন না। এই মুহূর্তে ভ্যাকসিন গ্রহণের সনদ অত্যন্ত জরুরি হয়ে পড়েছে। কিন্তু সব মন্ত্রণালয় একযোগে বাংলাদেশের প্রত্যেক নাগরিকের কথা ভাবছে কি না, প্রশ্ন থেকে যায়। সব পেশা-শ্রেণির মানুষ ভ্যাকসিন গ্রহণের সুযোগ পাচ্ছে কি না, সুযোগের পথ সহজ করা হয়েছে কি না, সংশ্লিষ্ট দায়িত্বশীলরা যত সহজে বলবেন দেওয়া হয়েছে, হচ্ছে; ঠিক তার দ্বিগুণ সহজ করে একটা শ্রেণি বলবে, পাচ্ছে না ভ্যাকসিন। সেই সুযোগ নেই ভ্যাকসিন পাওয়ার। ফলে অতিমারির সময়ে সুস্থতা ও সুস্থ হয়ে বেঁচে থাকার তীব্র বাসনাও যেন স্তিমিত হয়ে আসে এই শ্রেণির মানুষের জীবনে। উৎকণ্ঠা বাড়ে স্বজন আর পরিজনের। জি, আমি বিশেষ জনগোষ্ঠীর কথা বলছি। সমাজ যাঁদের প্রতিবন্ধী ব্যক্তি বলে চিহ্নিত করে থাকে। বাংলাদেশ সরকার প্রতিবন্ধীবান্ধব সরকার, কোনো সংশয় নেই। ‘প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের অধিকার সুরক্ষা আইন ২০১৩’ বর্তমান সরকার কর্তৃক প্রণয়নকৃত একটি আইন, যেখানে নাগরিক হিসেবে প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের সব অধিকার প্রাপ্তি ও ভোগের সুস্পষ্ট কথা বলা হয়েছে।
সুবর্ণ কার্ডও বর্তমান সরকার কর্তৃক প্রদত্ত একধরনের পরিচয়পত্র। প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের রাষ্ট্রের সব ধরনের সুযোগ-সুবিধা ভোগের জন্য এই সুবর্ণ কার্ডের প্রবর্তন। ফলে প্রতিবন্ধী ব্যক্তি ও প্রতিবন্ধী শিশু-কিশোর-যুবক আছেন এমন পরিবারের অভিভাবকেরা সুবর্ণ কার্ড সংগ্রহ করেন এবং আশ্বস্ত হন। ভরসার জায়গা তৈরি হয়। অতিমারি করোনা যেন সেই ভরসার জায়গাকে সংকুচিত করে দিল। সংশয়ে ফেলে দিল। এমন দৃষ্টান্ত কম নয়।
তাহমিনা ইসলাম মুমু বহুমাত্রিক প্রতিবন্ধিতায় আক্রান্ত একজন তরুণী। বয়স ২৬ বছর। করোনায় আক্রান্ত মুমুর মা রাবেয়া ইসলাম নীলা একটি বিশেষ স্কুলের অধ্যক্ষ হিসেবে কর্মরত। দুঃখ নিয়ে বলছিলেন, সরকার যখন করোনাভাইরাস মোকাবিলায় একে একে দেশের সব নাগরিক ভ্যাকসিন পাবে—এই লক্ষ্যে মূলধারার শিক্ষার্থীসহ সিংহভাগ মানুষের বিষয়টি মাথায় রেখেছে, রাখছে, তখন বাদ পড়ে আছে, বাদ পড়ে যাচ্ছে কেবল আমাদের বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিশু ও ব্যক্তিরা; বিশেষ করে নিউরোডেভেলপমেন্টাল ডিসঅর্ডারে আক্রান্ত ব্যক্তিরা। তাঁর ভাষায়, টিকা সুরক্ষা অ্যাপে একটা বড় ফাঁক রয়ে গেছে মনে হচ্ছে। এই অ্যাপে কোনোভাবেই অগ্রাধিকার কিংবা অধিকার পাচ্ছেন না সুবর্ণ কার্ডহোল্ডার এই সব বিশেষ ব্যক্তি। সব ধরনের প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের জাতীয় পরিচয়পত্র নেই। শারীরিক, দৃষ্টি ও বাক্প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের জাতীয় পরিচয় থাকলেও স্নায়ুবিকাশজনিত প্রতিবন্ধিতায় আক্রান্তদের অনেকেরই জাতীয় পরিচয়পত্র নেই। ফলে জাতীয় পরিচয়পত্র না থাকায় শুধু জন্মনিবন্ধন কার্ড দিয়ে তাঁদের রেজিস্ট্রেশন করতে হয়, যেখানে প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের জন্য কোনো অপশনই রাখা হয়নি। তাঁর বিশেষ স্কুলে এমন বেশ কজন বিশেষ শিক্ষার্থী আছেন। যেমন জেমি আক্তার, বয়স ২৪ বছর, ডাউন্স সিনড্রোম, আশরাফুল আলম, ২৭ বছর, সেরিব্রাল পলসি, খুকি আক্তার, ১৮ বছর, ডোয়ার্ফইজম, আবদুল্লাহ, ১৫ বছর—অটিজম আক্রান্ত তারা কেউই করোনার ভ্যাকসিন নামক সুস্থ থাকার সোনার হরিণের দেখা পাননি আজও। এ ছাড়া অনেক প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থী আছেন এই কাতারে।
যেহেতু আগে ঘোষণা দেওয়া হয়েছিল যে বিশেষ ব্যক্তির সুবর্ণ নাগরিক কার্ডটি তাঁর সব রাষ্ট্রীয় অধিকার ভোগের ক্ষেত্রে ভ্যালিড হিসেবে গণ্য করা হবে, তাই অনেক অভিভাবক তাঁদের বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন সন্তানের জন্য নতুন করে জাতীয় পরিচয়পত্র সংগ্রহ করেননি। সংগ্রহ করার কথা চিন্তাও করেননি। প্রতিবন্ধী ব্যক্তি বা বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন সন্তান আছেন পরিবারে, এমন অভিভাবকেরা কোভিডে আক্রান্ত হলে তাঁর সন্তানকে আইসোলেশনে রাখা কঠিন, কষ্টসাধ্য। একই কথা প্রযোজ্য তাঁদের সন্তান কোভিডে আক্রান্ত হলে। আবার এসব বিশেষ ব্যক্তিদের করোনার পরীক্ষা করানোও সহজেই সম্ভব নয়। মুমুর মা দুঃখ করে আরও বলছিলেন, কোভিডে আক্রান্ত মায়ের সান্নিধ্যে থেকে যখন সন্তানের মধ্যে রোগের লক্ষণ দেখা দেয়, তখন নাসারন্ধ্রে টেস্ট কিট প্রবেশ করিয়ে তাঁর ভাইরাসের সংক্রমণ নিশ্চিত হতে চাওয়া তো আমাদের মতো বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন পিতা-মাতার জন্য মস্ত এক কঠিন পরীক্ষা! কে বুঝবেন সেই কষ্ট!
মুমুর মতো অনেক ব্যক্তিই সুবর্ণ নাগরিক কার্ডহোল্ডার হয়েও সুরক্ষা অ্যাপে অধিকারবলে আসেননি, তাঁদের জায়গা হয়নি। সুবর্ণ নাগরিক কার্ডকে সুরক্ষা অ্যাপে আনা হয়নি। কেন আনা হয়নি তার জবাব সংশ্লিষ্টরা ভালো জানেন। সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের এখানে জবাবদিহি থাকতে পারে। তবে এই না আসাটা প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের অধিকার হরণ করেছে। সেই সঙ্গে সুবর্ণ নাগরিক কার্ডের মর্যাদা ক্ষুণ্ন করে কি না, ভাবা দরকার। সুবর্ণ নাগরিক কার্ড আছে এমন প্রতিবন্ধী ব্যক্তির সংখ্যা কিন্তু কম নয়। তাঁদের অগ্রাধিকার পাওয়ার সুযোগ ঘটেনি শুধু জাতীয় পরিচয়পত্র না থাকায়। অভিভাবকদের অভিযোগ, কেন সুরক্ষা অ্যাপে সুবর্ণ নাগরিক কার্ডের বিষয়টিকে আনা হলো না। সুবর্ণ নাগরিক কার্ডহোল্ডার মানেই তো তিনি একজন প্রতিবন্ধী ব্যক্তি এবং এ দেশের একজন নাগরিক। ঝুমুর জন্মনিবন্ধন দিয়ে রেজিস্ট্রেশন করা হয়েছে এক মাস হলো। ভ্যাকসিনের তারিখ আসেনি। সুরক্ষা অ্যাপে সুবর্ণ নাগরিকের কার্ডের অপশন থাকলে হয়তো এই বিশেষ জনগোষ্ঠী ভ্যাকসিন নেওয়ার ক্ষেত্রে অগ্রাধিকার পেতেন। তাতে অভিভাবকদের উৎকণ্ঠা থাকত না। আজ মুমুর মায়ের মতন অনেক মায়ের আকুল আকুতি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে, বিশেষ শিশু-কিশোর-তরুণদের জন্য করোনা ভ্যাকসিন সহজলভ্য করে দিন! অগ্রাধিকার না দিন, অন্তত অধিকার ভোগের সুযোগটুকু দিন!
পরিশেষে বলব, বাংলাদেশে প্রায় দেড় কোটি প্রতিবন্ধী ব্যক্তি আছেন। সঠিক পরিসংখ্যান হলে এই সংখ্যার হয়তোবা পরিবর্তন হবে, বাড়বে। প্রতিবন্ধী শিশু-কিশোর ও যুবকদের জন্য রয়েছে বিশেষ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। যেখানে মূলধারার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের ভ্যাকসিন দেওয়া হচ্ছে, সেখানে বিশেষ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের জন্য কী ব্যবস্থা, এর সদুত্তর কোথায় পাওয়া যাবে—আজকের লেখায় সেই প্রশ্ন রাখছি। নাকি প্রতিবন্ধী ব্যক্তি
বলেই তাঁদের পেছনে রাখা হয়েছে কিংবা তাঁদের কথা মনেই নেই?
সরকারের কাছে আবেদন, ভ্যাকসিন পাওয়ার ক্ষেত্রে সুবর্ণ নাগরিক কার্ডকে কার্যকর করুন। প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের ভ্যাকসিন দেওয়ার ব্যবস্থা করে দৃশ্যমান বৈষম্যকে দূর করুন। আর যদি সুবর্ণ নাগরিক কার্ডহোল্ডারদের করোনা ভ্যাকসিন নেওয়ার সুযোগ থেকেই থাকে, তবে তা প্রচারের ব্যবস্থা করে অভিভাবকদের উৎকণ্ঠা দূর করুন।

অভিভাবকেরা উৎকণ্ঠিত। দিশাহীন। কোথায় যাবেন, কীভাবে সহজ উপায়ে তাঁদের বিশেষ শিশুরা করোনা ভ্যাকসিন পাবে। অভিভাবকদের কেউ কেউ ইতিমধ্যে আক্রান্ত। সোশ্যাল মিডিয়ায় তাঁরা তাঁদের সেই উৎকণ্ঠার কথা বলেছেন, বলছেন।
সুস্থতা ও সুস্থ হয়ে বেঁচে থাকার তীব্র বাসনা প্রতিটি মানুষের। রাষ্ট্র তার নাগরিকদের সেই বাসনা পূরণে সক্রিয় থাকে। সক্রিয় থাকতে হয়। জাতিকে সুরক্ষিত করতে একটি রাষ্ট্রে নানান উদ্যোগ থাকে। থাকে পরিকল্পনা এবং তার বাস্তবায়ন ও সমন্বয়। বাংলাদেশ উদ্যোগ, পরিকল্পনা গ্রহণ ও বাস্তবায়নে পিছিয়ে নেই। তবে সমন্বয়হীনতা আছে। এই সমন্বয়হীনতা লক্ষ্য পূরণে অন্তরায়; বিশেষ করে অতিমারি করোনার আঘাত থেকে জাতিকে সুরক্ষিত করার লক্ষ্যে বিবিধ পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে, হচ্ছে। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে প্রজ্ঞাপন, বিধিনিষেধ আরোপ করা হচ্ছে। প্রত্যেক নাগরিককে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে বাধ্য করা হচ্ছে; বিশেষ করে কমিউনিটি সংক্রমণ রোধের ওপর জোর দেওয়া হয়েছে, হচ্ছে। সেই সঙ্গে ভ্যাকসিন বা টিকা নিতে সবাইকে উদ্বুদ্ধ করা হয়েছে, হচ্ছে। ভ্যাকসিন দেওয়া হচ্ছে সর্বস্তরে। আমরা দেখেছি, অনেক উন্নয়নশীল দেশের আগেই বাংলাদেশ সরকার জনগণকে ভ্যাকসিন দেওয়ার কাজটি শুরু করেছে, যা প্রশংসার দাবিদার।
২০২০ থেকে শুরু হওয়া অতিমারি করোনা আবার মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে। স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার পাশাপাশি ভ্যাকসিন নেওয়ার বিষয়টিকে নিশ্চিত করার জন্য যেকোনো সামাজিক অনুষ্ঠানসহ হোটেল, রেস্তোরাঁয় খাবার খেতে বসার সময় ভ্যাকসিন গ্রহণের কার্ড সঙ্গে নিতে বলা হয়েছে। মানে হলো, এই ভ্যাকসিনের কার্ড ছাড়া কেউ হোটেল, রেস্তোরাঁসহ কোনো সামাজিক অনুষ্ঠানে যেতে পারবেন না। পরিবহনে চলাচল করতে পারবেন না। এই মুহূর্তে ভ্যাকসিন গ্রহণের সনদ অত্যন্ত জরুরি হয়ে পড়েছে। কিন্তু সব মন্ত্রণালয় একযোগে বাংলাদেশের প্রত্যেক নাগরিকের কথা ভাবছে কি না, প্রশ্ন থেকে যায়। সব পেশা-শ্রেণির মানুষ ভ্যাকসিন গ্রহণের সুযোগ পাচ্ছে কি না, সুযোগের পথ সহজ করা হয়েছে কি না, সংশ্লিষ্ট দায়িত্বশীলরা যত সহজে বলবেন দেওয়া হয়েছে, হচ্ছে; ঠিক তার দ্বিগুণ সহজ করে একটা শ্রেণি বলবে, পাচ্ছে না ভ্যাকসিন। সেই সুযোগ নেই ভ্যাকসিন পাওয়ার। ফলে অতিমারির সময়ে সুস্থতা ও সুস্থ হয়ে বেঁচে থাকার তীব্র বাসনাও যেন স্তিমিত হয়ে আসে এই শ্রেণির মানুষের জীবনে। উৎকণ্ঠা বাড়ে স্বজন আর পরিজনের। জি, আমি বিশেষ জনগোষ্ঠীর কথা বলছি। সমাজ যাঁদের প্রতিবন্ধী ব্যক্তি বলে চিহ্নিত করে থাকে। বাংলাদেশ সরকার প্রতিবন্ধীবান্ধব সরকার, কোনো সংশয় নেই। ‘প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের অধিকার সুরক্ষা আইন ২০১৩’ বর্তমান সরকার কর্তৃক প্রণয়নকৃত একটি আইন, যেখানে নাগরিক হিসেবে প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের সব অধিকার প্রাপ্তি ও ভোগের সুস্পষ্ট কথা বলা হয়েছে।
সুবর্ণ কার্ডও বর্তমান সরকার কর্তৃক প্রদত্ত একধরনের পরিচয়পত্র। প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের রাষ্ট্রের সব ধরনের সুযোগ-সুবিধা ভোগের জন্য এই সুবর্ণ কার্ডের প্রবর্তন। ফলে প্রতিবন্ধী ব্যক্তি ও প্রতিবন্ধী শিশু-কিশোর-যুবক আছেন এমন পরিবারের অভিভাবকেরা সুবর্ণ কার্ড সংগ্রহ করেন এবং আশ্বস্ত হন। ভরসার জায়গা তৈরি হয়। অতিমারি করোনা যেন সেই ভরসার জায়গাকে সংকুচিত করে দিল। সংশয়ে ফেলে দিল। এমন দৃষ্টান্ত কম নয়।
তাহমিনা ইসলাম মুমু বহুমাত্রিক প্রতিবন্ধিতায় আক্রান্ত একজন তরুণী। বয়স ২৬ বছর। করোনায় আক্রান্ত মুমুর মা রাবেয়া ইসলাম নীলা একটি বিশেষ স্কুলের অধ্যক্ষ হিসেবে কর্মরত। দুঃখ নিয়ে বলছিলেন, সরকার যখন করোনাভাইরাস মোকাবিলায় একে একে দেশের সব নাগরিক ভ্যাকসিন পাবে—এই লক্ষ্যে মূলধারার শিক্ষার্থীসহ সিংহভাগ মানুষের বিষয়টি মাথায় রেখেছে, রাখছে, তখন বাদ পড়ে আছে, বাদ পড়ে যাচ্ছে কেবল আমাদের বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিশু ও ব্যক্তিরা; বিশেষ করে নিউরোডেভেলপমেন্টাল ডিসঅর্ডারে আক্রান্ত ব্যক্তিরা। তাঁর ভাষায়, টিকা সুরক্ষা অ্যাপে একটা বড় ফাঁক রয়ে গেছে মনে হচ্ছে। এই অ্যাপে কোনোভাবেই অগ্রাধিকার কিংবা অধিকার পাচ্ছেন না সুবর্ণ কার্ডহোল্ডার এই সব বিশেষ ব্যক্তি। সব ধরনের প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের জাতীয় পরিচয়পত্র নেই। শারীরিক, দৃষ্টি ও বাক্প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের জাতীয় পরিচয় থাকলেও স্নায়ুবিকাশজনিত প্রতিবন্ধিতায় আক্রান্তদের অনেকেরই জাতীয় পরিচয়পত্র নেই। ফলে জাতীয় পরিচয়পত্র না থাকায় শুধু জন্মনিবন্ধন কার্ড দিয়ে তাঁদের রেজিস্ট্রেশন করতে হয়, যেখানে প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের জন্য কোনো অপশনই রাখা হয়নি। তাঁর বিশেষ স্কুলে এমন বেশ কজন বিশেষ শিক্ষার্থী আছেন। যেমন জেমি আক্তার, বয়স ২৪ বছর, ডাউন্স সিনড্রোম, আশরাফুল আলম, ২৭ বছর, সেরিব্রাল পলসি, খুকি আক্তার, ১৮ বছর, ডোয়ার্ফইজম, আবদুল্লাহ, ১৫ বছর—অটিজম আক্রান্ত তারা কেউই করোনার ভ্যাকসিন নামক সুস্থ থাকার সোনার হরিণের দেখা পাননি আজও। এ ছাড়া অনেক প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থী আছেন এই কাতারে।
যেহেতু আগে ঘোষণা দেওয়া হয়েছিল যে বিশেষ ব্যক্তির সুবর্ণ নাগরিক কার্ডটি তাঁর সব রাষ্ট্রীয় অধিকার ভোগের ক্ষেত্রে ভ্যালিড হিসেবে গণ্য করা হবে, তাই অনেক অভিভাবক তাঁদের বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন সন্তানের জন্য নতুন করে জাতীয় পরিচয়পত্র সংগ্রহ করেননি। সংগ্রহ করার কথা চিন্তাও করেননি। প্রতিবন্ধী ব্যক্তি বা বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন সন্তান আছেন পরিবারে, এমন অভিভাবকেরা কোভিডে আক্রান্ত হলে তাঁর সন্তানকে আইসোলেশনে রাখা কঠিন, কষ্টসাধ্য। একই কথা প্রযোজ্য তাঁদের সন্তান কোভিডে আক্রান্ত হলে। আবার এসব বিশেষ ব্যক্তিদের করোনার পরীক্ষা করানোও সহজেই সম্ভব নয়। মুমুর মা দুঃখ করে আরও বলছিলেন, কোভিডে আক্রান্ত মায়ের সান্নিধ্যে থেকে যখন সন্তানের মধ্যে রোগের লক্ষণ দেখা দেয়, তখন নাসারন্ধ্রে টেস্ট কিট প্রবেশ করিয়ে তাঁর ভাইরাসের সংক্রমণ নিশ্চিত হতে চাওয়া তো আমাদের মতো বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন পিতা-মাতার জন্য মস্ত এক কঠিন পরীক্ষা! কে বুঝবেন সেই কষ্ট!
মুমুর মতো অনেক ব্যক্তিই সুবর্ণ নাগরিক কার্ডহোল্ডার হয়েও সুরক্ষা অ্যাপে অধিকারবলে আসেননি, তাঁদের জায়গা হয়নি। সুবর্ণ নাগরিক কার্ডকে সুরক্ষা অ্যাপে আনা হয়নি। কেন আনা হয়নি তার জবাব সংশ্লিষ্টরা ভালো জানেন। সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের এখানে জবাবদিহি থাকতে পারে। তবে এই না আসাটা প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের অধিকার হরণ করেছে। সেই সঙ্গে সুবর্ণ নাগরিক কার্ডের মর্যাদা ক্ষুণ্ন করে কি না, ভাবা দরকার। সুবর্ণ নাগরিক কার্ড আছে এমন প্রতিবন্ধী ব্যক্তির সংখ্যা কিন্তু কম নয়। তাঁদের অগ্রাধিকার পাওয়ার সুযোগ ঘটেনি শুধু জাতীয় পরিচয়পত্র না থাকায়। অভিভাবকদের অভিযোগ, কেন সুরক্ষা অ্যাপে সুবর্ণ নাগরিক কার্ডের বিষয়টিকে আনা হলো না। সুবর্ণ নাগরিক কার্ডহোল্ডার মানেই তো তিনি একজন প্রতিবন্ধী ব্যক্তি এবং এ দেশের একজন নাগরিক। ঝুমুর জন্মনিবন্ধন দিয়ে রেজিস্ট্রেশন করা হয়েছে এক মাস হলো। ভ্যাকসিনের তারিখ আসেনি। সুরক্ষা অ্যাপে সুবর্ণ নাগরিকের কার্ডের অপশন থাকলে হয়তো এই বিশেষ জনগোষ্ঠী ভ্যাকসিন নেওয়ার ক্ষেত্রে অগ্রাধিকার পেতেন। তাতে অভিভাবকদের উৎকণ্ঠা থাকত না। আজ মুমুর মায়ের মতন অনেক মায়ের আকুল আকুতি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে, বিশেষ শিশু-কিশোর-তরুণদের জন্য করোনা ভ্যাকসিন সহজলভ্য করে দিন! অগ্রাধিকার না দিন, অন্তত অধিকার ভোগের সুযোগটুকু দিন!
পরিশেষে বলব, বাংলাদেশে প্রায় দেড় কোটি প্রতিবন্ধী ব্যক্তি আছেন। সঠিক পরিসংখ্যান হলে এই সংখ্যার হয়তোবা পরিবর্তন হবে, বাড়বে। প্রতিবন্ধী শিশু-কিশোর ও যুবকদের জন্য রয়েছে বিশেষ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। যেখানে মূলধারার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের ভ্যাকসিন দেওয়া হচ্ছে, সেখানে বিশেষ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের জন্য কী ব্যবস্থা, এর সদুত্তর কোথায় পাওয়া যাবে—আজকের লেখায় সেই প্রশ্ন রাখছি। নাকি প্রতিবন্ধী ব্যক্তি
বলেই তাঁদের পেছনে রাখা হয়েছে কিংবা তাঁদের কথা মনেই নেই?
সরকারের কাছে আবেদন, ভ্যাকসিন পাওয়ার ক্ষেত্রে সুবর্ণ নাগরিক কার্ডকে কার্যকর করুন। প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের ভ্যাকসিন দেওয়ার ব্যবস্থা করে দৃশ্যমান বৈষম্যকে দূর করুন। আর যদি সুবর্ণ নাগরিক কার্ডহোল্ডারদের করোনা ভ্যাকসিন নেওয়ার সুযোগ থেকেই থাকে, তবে তা প্রচারের ব্যবস্থা করে অভিভাবকদের উৎকণ্ঠা দূর করুন।
স্বপ্না রেজা

অভিভাবকেরা উৎকণ্ঠিত। দিশাহীন। কোথায় যাবেন, কীভাবে সহজ উপায়ে তাঁদের বিশেষ শিশুরা করোনা ভ্যাকসিন পাবে। অভিভাবকদের কেউ কেউ ইতিমধ্যে আক্রান্ত। সোশ্যাল মিডিয়ায় তাঁরা তাঁদের সেই উৎকণ্ঠার কথা বলেছেন, বলছেন।
সুস্থতা ও সুস্থ হয়ে বেঁচে থাকার তীব্র বাসনা প্রতিটি মানুষের। রাষ্ট্র তার নাগরিকদের সেই বাসনা পূরণে সক্রিয় থাকে। সক্রিয় থাকতে হয়। জাতিকে সুরক্ষিত করতে একটি রাষ্ট্রে নানান উদ্যোগ থাকে। থাকে পরিকল্পনা এবং তার বাস্তবায়ন ও সমন্বয়। বাংলাদেশ উদ্যোগ, পরিকল্পনা গ্রহণ ও বাস্তবায়নে পিছিয়ে নেই। তবে সমন্বয়হীনতা আছে। এই সমন্বয়হীনতা লক্ষ্য পূরণে অন্তরায়; বিশেষ করে অতিমারি করোনার আঘাত থেকে জাতিকে সুরক্ষিত করার লক্ষ্যে বিবিধ পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে, হচ্ছে। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে প্রজ্ঞাপন, বিধিনিষেধ আরোপ করা হচ্ছে। প্রত্যেক নাগরিককে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে বাধ্য করা হচ্ছে; বিশেষ করে কমিউনিটি সংক্রমণ রোধের ওপর জোর দেওয়া হয়েছে, হচ্ছে। সেই সঙ্গে ভ্যাকসিন বা টিকা নিতে সবাইকে উদ্বুদ্ধ করা হয়েছে, হচ্ছে। ভ্যাকসিন দেওয়া হচ্ছে সর্বস্তরে। আমরা দেখেছি, অনেক উন্নয়নশীল দেশের আগেই বাংলাদেশ সরকার জনগণকে ভ্যাকসিন দেওয়ার কাজটি শুরু করেছে, যা প্রশংসার দাবিদার।
২০২০ থেকে শুরু হওয়া অতিমারি করোনা আবার মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে। স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার পাশাপাশি ভ্যাকসিন নেওয়ার বিষয়টিকে নিশ্চিত করার জন্য যেকোনো সামাজিক অনুষ্ঠানসহ হোটেল, রেস্তোরাঁয় খাবার খেতে বসার সময় ভ্যাকসিন গ্রহণের কার্ড সঙ্গে নিতে বলা হয়েছে। মানে হলো, এই ভ্যাকসিনের কার্ড ছাড়া কেউ হোটেল, রেস্তোরাঁসহ কোনো সামাজিক অনুষ্ঠানে যেতে পারবেন না। পরিবহনে চলাচল করতে পারবেন না। এই মুহূর্তে ভ্যাকসিন গ্রহণের সনদ অত্যন্ত জরুরি হয়ে পড়েছে। কিন্তু সব মন্ত্রণালয় একযোগে বাংলাদেশের প্রত্যেক নাগরিকের কথা ভাবছে কি না, প্রশ্ন থেকে যায়। সব পেশা-শ্রেণির মানুষ ভ্যাকসিন গ্রহণের সুযোগ পাচ্ছে কি না, সুযোগের পথ সহজ করা হয়েছে কি না, সংশ্লিষ্ট দায়িত্বশীলরা যত সহজে বলবেন দেওয়া হয়েছে, হচ্ছে; ঠিক তার দ্বিগুণ সহজ করে একটা শ্রেণি বলবে, পাচ্ছে না ভ্যাকসিন। সেই সুযোগ নেই ভ্যাকসিন পাওয়ার। ফলে অতিমারির সময়ে সুস্থতা ও সুস্থ হয়ে বেঁচে থাকার তীব্র বাসনাও যেন স্তিমিত হয়ে আসে এই শ্রেণির মানুষের জীবনে। উৎকণ্ঠা বাড়ে স্বজন আর পরিজনের। জি, আমি বিশেষ জনগোষ্ঠীর কথা বলছি। সমাজ যাঁদের প্রতিবন্ধী ব্যক্তি বলে চিহ্নিত করে থাকে। বাংলাদেশ সরকার প্রতিবন্ধীবান্ধব সরকার, কোনো সংশয় নেই। ‘প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের অধিকার সুরক্ষা আইন ২০১৩’ বর্তমান সরকার কর্তৃক প্রণয়নকৃত একটি আইন, যেখানে নাগরিক হিসেবে প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের সব অধিকার প্রাপ্তি ও ভোগের সুস্পষ্ট কথা বলা হয়েছে।
সুবর্ণ কার্ডও বর্তমান সরকার কর্তৃক প্রদত্ত একধরনের পরিচয়পত্র। প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের রাষ্ট্রের সব ধরনের সুযোগ-সুবিধা ভোগের জন্য এই সুবর্ণ কার্ডের প্রবর্তন। ফলে প্রতিবন্ধী ব্যক্তি ও প্রতিবন্ধী শিশু-কিশোর-যুবক আছেন এমন পরিবারের অভিভাবকেরা সুবর্ণ কার্ড সংগ্রহ করেন এবং আশ্বস্ত হন। ভরসার জায়গা তৈরি হয়। অতিমারি করোনা যেন সেই ভরসার জায়গাকে সংকুচিত করে দিল। সংশয়ে ফেলে দিল। এমন দৃষ্টান্ত কম নয়।
তাহমিনা ইসলাম মুমু বহুমাত্রিক প্রতিবন্ধিতায় আক্রান্ত একজন তরুণী। বয়স ২৬ বছর। করোনায় আক্রান্ত মুমুর মা রাবেয়া ইসলাম নীলা একটি বিশেষ স্কুলের অধ্যক্ষ হিসেবে কর্মরত। দুঃখ নিয়ে বলছিলেন, সরকার যখন করোনাভাইরাস মোকাবিলায় একে একে দেশের সব নাগরিক ভ্যাকসিন পাবে—এই লক্ষ্যে মূলধারার শিক্ষার্থীসহ সিংহভাগ মানুষের বিষয়টি মাথায় রেখেছে, রাখছে, তখন বাদ পড়ে আছে, বাদ পড়ে যাচ্ছে কেবল আমাদের বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিশু ও ব্যক্তিরা; বিশেষ করে নিউরোডেভেলপমেন্টাল ডিসঅর্ডারে আক্রান্ত ব্যক্তিরা। তাঁর ভাষায়, টিকা সুরক্ষা অ্যাপে একটা বড় ফাঁক রয়ে গেছে মনে হচ্ছে। এই অ্যাপে কোনোভাবেই অগ্রাধিকার কিংবা অধিকার পাচ্ছেন না সুবর্ণ কার্ডহোল্ডার এই সব বিশেষ ব্যক্তি। সব ধরনের প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের জাতীয় পরিচয়পত্র নেই। শারীরিক, দৃষ্টি ও বাক্প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের জাতীয় পরিচয় থাকলেও স্নায়ুবিকাশজনিত প্রতিবন্ধিতায় আক্রান্তদের অনেকেরই জাতীয় পরিচয়পত্র নেই। ফলে জাতীয় পরিচয়পত্র না থাকায় শুধু জন্মনিবন্ধন কার্ড দিয়ে তাঁদের রেজিস্ট্রেশন করতে হয়, যেখানে প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের জন্য কোনো অপশনই রাখা হয়নি। তাঁর বিশেষ স্কুলে এমন বেশ কজন বিশেষ শিক্ষার্থী আছেন। যেমন জেমি আক্তার, বয়স ২৪ বছর, ডাউন্স সিনড্রোম, আশরাফুল আলম, ২৭ বছর, সেরিব্রাল পলসি, খুকি আক্তার, ১৮ বছর, ডোয়ার্ফইজম, আবদুল্লাহ, ১৫ বছর—অটিজম আক্রান্ত তারা কেউই করোনার ভ্যাকসিন নামক সুস্থ থাকার সোনার হরিণের দেখা পাননি আজও। এ ছাড়া অনেক প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থী আছেন এই কাতারে।
যেহেতু আগে ঘোষণা দেওয়া হয়েছিল যে বিশেষ ব্যক্তির সুবর্ণ নাগরিক কার্ডটি তাঁর সব রাষ্ট্রীয় অধিকার ভোগের ক্ষেত্রে ভ্যালিড হিসেবে গণ্য করা হবে, তাই অনেক অভিভাবক তাঁদের বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন সন্তানের জন্য নতুন করে জাতীয় পরিচয়পত্র সংগ্রহ করেননি। সংগ্রহ করার কথা চিন্তাও করেননি। প্রতিবন্ধী ব্যক্তি বা বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন সন্তান আছেন পরিবারে, এমন অভিভাবকেরা কোভিডে আক্রান্ত হলে তাঁর সন্তানকে আইসোলেশনে রাখা কঠিন, কষ্টসাধ্য। একই কথা প্রযোজ্য তাঁদের সন্তান কোভিডে আক্রান্ত হলে। আবার এসব বিশেষ ব্যক্তিদের করোনার পরীক্ষা করানোও সহজেই সম্ভব নয়। মুমুর মা দুঃখ করে আরও বলছিলেন, কোভিডে আক্রান্ত মায়ের সান্নিধ্যে থেকে যখন সন্তানের মধ্যে রোগের লক্ষণ দেখা দেয়, তখন নাসারন্ধ্রে টেস্ট কিট প্রবেশ করিয়ে তাঁর ভাইরাসের সংক্রমণ নিশ্চিত হতে চাওয়া তো আমাদের মতো বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন পিতা-মাতার জন্য মস্ত এক কঠিন পরীক্ষা! কে বুঝবেন সেই কষ্ট!
মুমুর মতো অনেক ব্যক্তিই সুবর্ণ নাগরিক কার্ডহোল্ডার হয়েও সুরক্ষা অ্যাপে অধিকারবলে আসেননি, তাঁদের জায়গা হয়নি। সুবর্ণ নাগরিক কার্ডকে সুরক্ষা অ্যাপে আনা হয়নি। কেন আনা হয়নি তার জবাব সংশ্লিষ্টরা ভালো জানেন। সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের এখানে জবাবদিহি থাকতে পারে। তবে এই না আসাটা প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের অধিকার হরণ করেছে। সেই সঙ্গে সুবর্ণ নাগরিক কার্ডের মর্যাদা ক্ষুণ্ন করে কি না, ভাবা দরকার। সুবর্ণ নাগরিক কার্ড আছে এমন প্রতিবন্ধী ব্যক্তির সংখ্যা কিন্তু কম নয়। তাঁদের অগ্রাধিকার পাওয়ার সুযোগ ঘটেনি শুধু জাতীয় পরিচয়পত্র না থাকায়। অভিভাবকদের অভিযোগ, কেন সুরক্ষা অ্যাপে সুবর্ণ নাগরিক কার্ডের বিষয়টিকে আনা হলো না। সুবর্ণ নাগরিক কার্ডহোল্ডার মানেই তো তিনি একজন প্রতিবন্ধী ব্যক্তি এবং এ দেশের একজন নাগরিক। ঝুমুর জন্মনিবন্ধন দিয়ে রেজিস্ট্রেশন করা হয়েছে এক মাস হলো। ভ্যাকসিনের তারিখ আসেনি। সুরক্ষা অ্যাপে সুবর্ণ নাগরিকের কার্ডের অপশন থাকলে হয়তো এই বিশেষ জনগোষ্ঠী ভ্যাকসিন নেওয়ার ক্ষেত্রে অগ্রাধিকার পেতেন। তাতে অভিভাবকদের উৎকণ্ঠা থাকত না। আজ মুমুর মায়ের মতন অনেক মায়ের আকুল আকুতি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে, বিশেষ শিশু-কিশোর-তরুণদের জন্য করোনা ভ্যাকসিন সহজলভ্য করে দিন! অগ্রাধিকার না দিন, অন্তত অধিকার ভোগের সুযোগটুকু দিন!
পরিশেষে বলব, বাংলাদেশে প্রায় দেড় কোটি প্রতিবন্ধী ব্যক্তি আছেন। সঠিক পরিসংখ্যান হলে এই সংখ্যার হয়তোবা পরিবর্তন হবে, বাড়বে। প্রতিবন্ধী শিশু-কিশোর ও যুবকদের জন্য রয়েছে বিশেষ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। যেখানে মূলধারার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের ভ্যাকসিন দেওয়া হচ্ছে, সেখানে বিশেষ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের জন্য কী ব্যবস্থা, এর সদুত্তর কোথায় পাওয়া যাবে—আজকের লেখায় সেই প্রশ্ন রাখছি। নাকি প্রতিবন্ধী ব্যক্তি
বলেই তাঁদের পেছনে রাখা হয়েছে কিংবা তাঁদের কথা মনেই নেই?
সরকারের কাছে আবেদন, ভ্যাকসিন পাওয়ার ক্ষেত্রে সুবর্ণ নাগরিক কার্ডকে কার্যকর করুন। প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের ভ্যাকসিন দেওয়ার ব্যবস্থা করে দৃশ্যমান বৈষম্যকে দূর করুন। আর যদি সুবর্ণ নাগরিক কার্ডহোল্ডারদের করোনা ভ্যাকসিন নেওয়ার সুযোগ থেকেই থাকে, তবে তা প্রচারের ব্যবস্থা করে অভিভাবকদের উৎকণ্ঠা দূর করুন।

অভিভাবকেরা উৎকণ্ঠিত। দিশাহীন। কোথায় যাবেন, কীভাবে সহজ উপায়ে তাঁদের বিশেষ শিশুরা করোনা ভ্যাকসিন পাবে। অভিভাবকদের কেউ কেউ ইতিমধ্যে আক্রান্ত। সোশ্যাল মিডিয়ায় তাঁরা তাঁদের সেই উৎকণ্ঠার কথা বলেছেন, বলছেন।
সুস্থতা ও সুস্থ হয়ে বেঁচে থাকার তীব্র বাসনা প্রতিটি মানুষের। রাষ্ট্র তার নাগরিকদের সেই বাসনা পূরণে সক্রিয় থাকে। সক্রিয় থাকতে হয়। জাতিকে সুরক্ষিত করতে একটি রাষ্ট্রে নানান উদ্যোগ থাকে। থাকে পরিকল্পনা এবং তার বাস্তবায়ন ও সমন্বয়। বাংলাদেশ উদ্যোগ, পরিকল্পনা গ্রহণ ও বাস্তবায়নে পিছিয়ে নেই। তবে সমন্বয়হীনতা আছে। এই সমন্বয়হীনতা লক্ষ্য পূরণে অন্তরায়; বিশেষ করে অতিমারি করোনার আঘাত থেকে জাতিকে সুরক্ষিত করার লক্ষ্যে বিবিধ পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে, হচ্ছে। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে প্রজ্ঞাপন, বিধিনিষেধ আরোপ করা হচ্ছে। প্রত্যেক নাগরিককে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে বাধ্য করা হচ্ছে; বিশেষ করে কমিউনিটি সংক্রমণ রোধের ওপর জোর দেওয়া হয়েছে, হচ্ছে। সেই সঙ্গে ভ্যাকসিন বা টিকা নিতে সবাইকে উদ্বুদ্ধ করা হয়েছে, হচ্ছে। ভ্যাকসিন দেওয়া হচ্ছে সর্বস্তরে। আমরা দেখেছি, অনেক উন্নয়নশীল দেশের আগেই বাংলাদেশ সরকার জনগণকে ভ্যাকসিন দেওয়ার কাজটি শুরু করেছে, যা প্রশংসার দাবিদার।
২০২০ থেকে শুরু হওয়া অতিমারি করোনা আবার মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে। স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার পাশাপাশি ভ্যাকসিন নেওয়ার বিষয়টিকে নিশ্চিত করার জন্য যেকোনো সামাজিক অনুষ্ঠানসহ হোটেল, রেস্তোরাঁয় খাবার খেতে বসার সময় ভ্যাকসিন গ্রহণের কার্ড সঙ্গে নিতে বলা হয়েছে। মানে হলো, এই ভ্যাকসিনের কার্ড ছাড়া কেউ হোটেল, রেস্তোরাঁসহ কোনো সামাজিক অনুষ্ঠানে যেতে পারবেন না। পরিবহনে চলাচল করতে পারবেন না। এই মুহূর্তে ভ্যাকসিন গ্রহণের সনদ অত্যন্ত জরুরি হয়ে পড়েছে। কিন্তু সব মন্ত্রণালয় একযোগে বাংলাদেশের প্রত্যেক নাগরিকের কথা ভাবছে কি না, প্রশ্ন থেকে যায়। সব পেশা-শ্রেণির মানুষ ভ্যাকসিন গ্রহণের সুযোগ পাচ্ছে কি না, সুযোগের পথ সহজ করা হয়েছে কি না, সংশ্লিষ্ট দায়িত্বশীলরা যত সহজে বলবেন দেওয়া হয়েছে, হচ্ছে; ঠিক তার দ্বিগুণ সহজ করে একটা শ্রেণি বলবে, পাচ্ছে না ভ্যাকসিন। সেই সুযোগ নেই ভ্যাকসিন পাওয়ার। ফলে অতিমারির সময়ে সুস্থতা ও সুস্থ হয়ে বেঁচে থাকার তীব্র বাসনাও যেন স্তিমিত হয়ে আসে এই শ্রেণির মানুষের জীবনে। উৎকণ্ঠা বাড়ে স্বজন আর পরিজনের। জি, আমি বিশেষ জনগোষ্ঠীর কথা বলছি। সমাজ যাঁদের প্রতিবন্ধী ব্যক্তি বলে চিহ্নিত করে থাকে। বাংলাদেশ সরকার প্রতিবন্ধীবান্ধব সরকার, কোনো সংশয় নেই। ‘প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের অধিকার সুরক্ষা আইন ২০১৩’ বর্তমান সরকার কর্তৃক প্রণয়নকৃত একটি আইন, যেখানে নাগরিক হিসেবে প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের সব অধিকার প্রাপ্তি ও ভোগের সুস্পষ্ট কথা বলা হয়েছে।
সুবর্ণ কার্ডও বর্তমান সরকার কর্তৃক প্রদত্ত একধরনের পরিচয়পত্র। প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের রাষ্ট্রের সব ধরনের সুযোগ-সুবিধা ভোগের জন্য এই সুবর্ণ কার্ডের প্রবর্তন। ফলে প্রতিবন্ধী ব্যক্তি ও প্রতিবন্ধী শিশু-কিশোর-যুবক আছেন এমন পরিবারের অভিভাবকেরা সুবর্ণ কার্ড সংগ্রহ করেন এবং আশ্বস্ত হন। ভরসার জায়গা তৈরি হয়। অতিমারি করোনা যেন সেই ভরসার জায়গাকে সংকুচিত করে দিল। সংশয়ে ফেলে দিল। এমন দৃষ্টান্ত কম নয়।
তাহমিনা ইসলাম মুমু বহুমাত্রিক প্রতিবন্ধিতায় আক্রান্ত একজন তরুণী। বয়স ২৬ বছর। করোনায় আক্রান্ত মুমুর মা রাবেয়া ইসলাম নীলা একটি বিশেষ স্কুলের অধ্যক্ষ হিসেবে কর্মরত। দুঃখ নিয়ে বলছিলেন, সরকার যখন করোনাভাইরাস মোকাবিলায় একে একে দেশের সব নাগরিক ভ্যাকসিন পাবে—এই লক্ষ্যে মূলধারার শিক্ষার্থীসহ সিংহভাগ মানুষের বিষয়টি মাথায় রেখেছে, রাখছে, তখন বাদ পড়ে আছে, বাদ পড়ে যাচ্ছে কেবল আমাদের বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিশু ও ব্যক্তিরা; বিশেষ করে নিউরোডেভেলপমেন্টাল ডিসঅর্ডারে আক্রান্ত ব্যক্তিরা। তাঁর ভাষায়, টিকা সুরক্ষা অ্যাপে একটা বড় ফাঁক রয়ে গেছে মনে হচ্ছে। এই অ্যাপে কোনোভাবেই অগ্রাধিকার কিংবা অধিকার পাচ্ছেন না সুবর্ণ কার্ডহোল্ডার এই সব বিশেষ ব্যক্তি। সব ধরনের প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের জাতীয় পরিচয়পত্র নেই। শারীরিক, দৃষ্টি ও বাক্প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের জাতীয় পরিচয় থাকলেও স্নায়ুবিকাশজনিত প্রতিবন্ধিতায় আক্রান্তদের অনেকেরই জাতীয় পরিচয়পত্র নেই। ফলে জাতীয় পরিচয়পত্র না থাকায় শুধু জন্মনিবন্ধন কার্ড দিয়ে তাঁদের রেজিস্ট্রেশন করতে হয়, যেখানে প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের জন্য কোনো অপশনই রাখা হয়নি। তাঁর বিশেষ স্কুলে এমন বেশ কজন বিশেষ শিক্ষার্থী আছেন। যেমন জেমি আক্তার, বয়স ২৪ বছর, ডাউন্স সিনড্রোম, আশরাফুল আলম, ২৭ বছর, সেরিব্রাল পলসি, খুকি আক্তার, ১৮ বছর, ডোয়ার্ফইজম, আবদুল্লাহ, ১৫ বছর—অটিজম আক্রান্ত তারা কেউই করোনার ভ্যাকসিন নামক সুস্থ থাকার সোনার হরিণের দেখা পাননি আজও। এ ছাড়া অনেক প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থী আছেন এই কাতারে।
যেহেতু আগে ঘোষণা দেওয়া হয়েছিল যে বিশেষ ব্যক্তির সুবর্ণ নাগরিক কার্ডটি তাঁর সব রাষ্ট্রীয় অধিকার ভোগের ক্ষেত্রে ভ্যালিড হিসেবে গণ্য করা হবে, তাই অনেক অভিভাবক তাঁদের বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন সন্তানের জন্য নতুন করে জাতীয় পরিচয়পত্র সংগ্রহ করেননি। সংগ্রহ করার কথা চিন্তাও করেননি। প্রতিবন্ধী ব্যক্তি বা বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন সন্তান আছেন পরিবারে, এমন অভিভাবকেরা কোভিডে আক্রান্ত হলে তাঁর সন্তানকে আইসোলেশনে রাখা কঠিন, কষ্টসাধ্য। একই কথা প্রযোজ্য তাঁদের সন্তান কোভিডে আক্রান্ত হলে। আবার এসব বিশেষ ব্যক্তিদের করোনার পরীক্ষা করানোও সহজেই সম্ভব নয়। মুমুর মা দুঃখ করে আরও বলছিলেন, কোভিডে আক্রান্ত মায়ের সান্নিধ্যে থেকে যখন সন্তানের মধ্যে রোগের লক্ষণ দেখা দেয়, তখন নাসারন্ধ্রে টেস্ট কিট প্রবেশ করিয়ে তাঁর ভাইরাসের সংক্রমণ নিশ্চিত হতে চাওয়া তো আমাদের মতো বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন পিতা-মাতার জন্য মস্ত এক কঠিন পরীক্ষা! কে বুঝবেন সেই কষ্ট!
মুমুর মতো অনেক ব্যক্তিই সুবর্ণ নাগরিক কার্ডহোল্ডার হয়েও সুরক্ষা অ্যাপে অধিকারবলে আসেননি, তাঁদের জায়গা হয়নি। সুবর্ণ নাগরিক কার্ডকে সুরক্ষা অ্যাপে আনা হয়নি। কেন আনা হয়নি তার জবাব সংশ্লিষ্টরা ভালো জানেন। সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের এখানে জবাবদিহি থাকতে পারে। তবে এই না আসাটা প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের অধিকার হরণ করেছে। সেই সঙ্গে সুবর্ণ নাগরিক কার্ডের মর্যাদা ক্ষুণ্ন করে কি না, ভাবা দরকার। সুবর্ণ নাগরিক কার্ড আছে এমন প্রতিবন্ধী ব্যক্তির সংখ্যা কিন্তু কম নয়। তাঁদের অগ্রাধিকার পাওয়ার সুযোগ ঘটেনি শুধু জাতীয় পরিচয়পত্র না থাকায়। অভিভাবকদের অভিযোগ, কেন সুরক্ষা অ্যাপে সুবর্ণ নাগরিক কার্ডের বিষয়টিকে আনা হলো না। সুবর্ণ নাগরিক কার্ডহোল্ডার মানেই তো তিনি একজন প্রতিবন্ধী ব্যক্তি এবং এ দেশের একজন নাগরিক। ঝুমুর জন্মনিবন্ধন দিয়ে রেজিস্ট্রেশন করা হয়েছে এক মাস হলো। ভ্যাকসিনের তারিখ আসেনি। সুরক্ষা অ্যাপে সুবর্ণ নাগরিকের কার্ডের অপশন থাকলে হয়তো এই বিশেষ জনগোষ্ঠী ভ্যাকসিন নেওয়ার ক্ষেত্রে অগ্রাধিকার পেতেন। তাতে অভিভাবকদের উৎকণ্ঠা থাকত না। আজ মুমুর মায়ের মতন অনেক মায়ের আকুল আকুতি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে, বিশেষ শিশু-কিশোর-তরুণদের জন্য করোনা ভ্যাকসিন সহজলভ্য করে দিন! অগ্রাধিকার না দিন, অন্তত অধিকার ভোগের সুযোগটুকু দিন!
পরিশেষে বলব, বাংলাদেশে প্রায় দেড় কোটি প্রতিবন্ধী ব্যক্তি আছেন। সঠিক পরিসংখ্যান হলে এই সংখ্যার হয়তোবা পরিবর্তন হবে, বাড়বে। প্রতিবন্ধী শিশু-কিশোর ও যুবকদের জন্য রয়েছে বিশেষ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। যেখানে মূলধারার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের ভ্যাকসিন দেওয়া হচ্ছে, সেখানে বিশেষ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের জন্য কী ব্যবস্থা, এর সদুত্তর কোথায় পাওয়া যাবে—আজকের লেখায় সেই প্রশ্ন রাখছি। নাকি প্রতিবন্ধী ব্যক্তি
বলেই তাঁদের পেছনে রাখা হয়েছে কিংবা তাঁদের কথা মনেই নেই?
সরকারের কাছে আবেদন, ভ্যাকসিন পাওয়ার ক্ষেত্রে সুবর্ণ নাগরিক কার্ডকে কার্যকর করুন। প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের ভ্যাকসিন দেওয়ার ব্যবস্থা করে দৃশ্যমান বৈষম্যকে দূর করুন। আর যদি সুবর্ণ নাগরিক কার্ডহোল্ডারদের করোনা ভ্যাকসিন নেওয়ার সুযোগ থেকেই থাকে, তবে তা প্রচারের ব্যবস্থা করে অভিভাবকদের উৎকণ্ঠা দূর করুন।

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
০৬ অক্টোবর ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫বাসস, ঢাকা

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
আজ সোমবার বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১-এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) মো. আলমগীরের জেরা শুরু করেন রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী আমীর হোসেন। আইনজীবী আমীর হোসেন পলাতক আসামি শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে শুনানি করছেন। এর আগে গত মঙ্গলবার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. আলমগীরের সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন হয়।
এই মামলার শুনানিতে এর আগে গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম প্রতীক শহীদ আবু সাঈদের বাবাসহ স্বজনহারা পরিবারের একাধিক সদস্য সাক্ষ্য দিয়েছেন। এ ছাড়া মামলার গুরুত্বপূর্ণ ‘স্টার উইটনেস’ হিসেবে সাক্ষ্য দেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক এবং জুলাই আন্দোলনের অন্যতম নেতৃত্বদানকারী নাহিদ ইসলাম এবং দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান।
গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে আওয়ামী লীগ সরকার, তাদের দলীয় ক্যাডার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করে বলে অভিযোগ ওঠে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে শেখ হাসিনা, তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং তৎকালীন আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে গত ১০ জুলাই অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল-১।
পরবর্তীকালে, এই মামলার অন্যতম আসামি সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন দোষ স্বীকার করে ঘটনার সত্যতা উদ্ঘাটনে রাজসাক্ষী (অ্যাপ্রোভার) হওয়ার জন্য ট্রাইব্যুনালে আবেদন করেন। ট্রাইব্যুনাল তাঁর আবেদন মঞ্জুর করলে তিনি রাজসাক্ষী হিসেবে এই মামলায় সাক্ষ্য দেন।
মামলার প্রসিকিউশন পক্ষে শুনানি করছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম এবং গাজী এসএইচ তামিম। শুনানিতে তাঁদের সঙ্গে অপর প্রসিকিউটররাও উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদিকে, এই মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের পক্ষে আছেন আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ।
মানবতাবিরোধী অপরাধের এই মামলা ছাড়াও ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আরও দুটি মামলা বিচারাধীন। এর মধ্যে একটি মামলায় আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে সংঘটিত গুম-খুনের ঘটনায় তাঁকে আসামি করা হয়েছে। অন্য মামলাটি হলো রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে হত্যাকাণ্ড নিয়ে। এই তিনটি মামলার বিচারকাজই বর্তমানে দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে চলমান।

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
আজ সোমবার বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১-এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) মো. আলমগীরের জেরা শুরু করেন রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী আমীর হোসেন। আইনজীবী আমীর হোসেন পলাতক আসামি শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে শুনানি করছেন। এর আগে গত মঙ্গলবার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. আলমগীরের সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন হয়।
এই মামলার শুনানিতে এর আগে গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম প্রতীক শহীদ আবু সাঈদের বাবাসহ স্বজনহারা পরিবারের একাধিক সদস্য সাক্ষ্য দিয়েছেন। এ ছাড়া মামলার গুরুত্বপূর্ণ ‘স্টার উইটনেস’ হিসেবে সাক্ষ্য দেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক এবং জুলাই আন্দোলনের অন্যতম নেতৃত্বদানকারী নাহিদ ইসলাম এবং দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান।
গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে আওয়ামী লীগ সরকার, তাদের দলীয় ক্যাডার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করে বলে অভিযোগ ওঠে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে শেখ হাসিনা, তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং তৎকালীন আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে গত ১০ জুলাই অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল-১।
পরবর্তীকালে, এই মামলার অন্যতম আসামি সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন দোষ স্বীকার করে ঘটনার সত্যতা উদ্ঘাটনে রাজসাক্ষী (অ্যাপ্রোভার) হওয়ার জন্য ট্রাইব্যুনালে আবেদন করেন। ট্রাইব্যুনাল তাঁর আবেদন মঞ্জুর করলে তিনি রাজসাক্ষী হিসেবে এই মামলায় সাক্ষ্য দেন।
মামলার প্রসিকিউশন পক্ষে শুনানি করছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম এবং গাজী এসএইচ তামিম। শুনানিতে তাঁদের সঙ্গে অপর প্রসিকিউটররাও উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদিকে, এই মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের পক্ষে আছেন আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ।
মানবতাবিরোধী অপরাধের এই মামলা ছাড়াও ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আরও দুটি মামলা বিচারাধীন। এর মধ্যে একটি মামলায় আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে সংঘটিত গুম-খুনের ঘটনায় তাঁকে আসামি করা হয়েছে। অন্য মামলাটি হলো রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে হত্যাকাণ্ড নিয়ে। এই তিনটি মামলার বিচারকাজই বর্তমানে দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে চলমান।

অভিভাবকেরা উৎকণ্ঠিত। দিশাহীন। কোথায় যাবেন, কীভাবে সহজ উপায়ে তাঁদের বিশেষ শিশুরা করোনা ভ্যাকসিন পাবে। অভিভাবকদের কেউ কেউ ইতিমধ্যে আক্রান্ত। সোশ্যাল মিডিয়ায় তাঁরা তাঁদের সেই উৎকণ্ঠার কথা বলেছেন, বলছেন।
৩১ জানুয়ারি ২০২২
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর সঙ্গে।
মাছের সুষ্ঠু প্রজনন, উৎপাদন, মৎস্যসম্পদ সংরক্ষণ ও টেকসই মৎস্য আহরণের জন্য সমুদ্রে সব ধরনের মাছ শিকার ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা গতকাল বুধবার দিবাগত মধ্যরাতে শেষ হয়েছে। তাই গতকাল দিনভর ছিল উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে ব্যস্ততা। অনেকে দেখে নিচ্ছিলেন ট্রলার ঠিকঠাক আছে কি না, কেউ জালের ছেঁড়া অংশ সেলাই করছিলেন, কেউ আবার প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রীসহ অন্য সরঞ্জাম গুছিয়ে নিচ্ছিলেন।
বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র এবং ফকিরহাট উপ-মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ঘাটে গতকাল শত শত ট্রলার নোঙর করে রাখা ছিল। জেলেদের উপস্থিতিতে ঘাট এলাকা সরগরম হয়ে ওঠে। ফকিরহাটের মুদি-মনিহারি দোকানগুলোতে জেলেরা কেনাকাটা করতে ভিড় জমান। ফকিরহাট এলাকার বিসমিল্লাহ ট্রলারের মাঝি রহিম মিয়া বলেন, ‘সাগরে মাছ শিকারে যেতে সকল প্রস্তুতি নিয়েছি। নিষেধাজ্ঞার সময় শেষ হওয়ামাত্রই সাগরে নামব।’
জেলে নুরসাইদ ও ফোরকান মিয়া বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞার সময় পরিবার-পরিজন নিয়ে বেশ কষ্টে কেটেছে। ওই সময়ে বেশ টাকা ঋণ করেছি। এখন সাগরে যাব। দেখি আল্লাহ ঋণ পরিশোধ করতে দেন কি না।’
নোয়াখালীর হাতিয়ার সূর্যমুখী, বাংলাবাজার, কাজিরবাজার, পাইতান মার্কেট চেয়ারম্যান ঘাটসহ বেশ কয়েকটি ঘাটে গতকাল জেলেদের ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা গেছে। অনেকে নৌকায় জাল তুলছিলেন, আবার অনেকে জ্বালানি তেল মজুতসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী ট্রলারে নিয়ে যান। সূর্যমুখী ঘাটের এমভি মায়ের দোয়া ট্রলারের মাঝি জাফর উল্যা বলেন, ‘সাগরে ৮-১০ দিন থাকার প্রস্তুতি নিচ্ছি। সন্ধ্যায় সাগরের উদ্দেশে রওনা দেব।’
সূর্যমুখী ঘাট জেলে সমিতির সভাপতি জবিয়ল হক বলেন, ‘সাগরে নামতে প্রস্তুত নোয়াখালীর হাতিয়ার ২০টি ঘাটের লক্ষাধিক জেলে। এসব ঘাটে প্রায় ১০ হাজার ছোট-বড় ফিশিং ট্রলার রয়েছে। প্রতি ট্রলারে ১০ জন হলেও লক্ষাধিক জেলে এই মাছ ধরার সঙ্গে জড়িত। তাঁদের সবাই গত ৫৮ দিন তীরে বেকার ছিলেন।’
পিরোজপুরের ইন্দুরকানি উপজেলার পাড়েরহাট মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের পার্শ্ববর্তী এলাকার জেলেরা গতকাল দিনভর সাগরে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন। এ ছাড়া মঠবাড়িয়া উপজেলার সাপলেজা, খেতাচিড়া, বড়মাছুয়া, ছোটমাছুয়া, ভান্ডারিয়া উপজেলার চরখালী, হেতালিয়া, কাউখালী উপজেলার সোনাকুর এলাকার জেলেরা, সদর উপজেলা এবং নেছারাবাদ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার জেলেরা প্রস্তুতি শেষে গত রাতে বঙ্গোপসাগরে রওনা হন।
কয়েক দিন ধরে কক্সবাজার উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে নৌকা, জাল মেরামতসহ বিভিন্ন প্রস্তুতি সেরেছেন জেলেরা। গতকাল মেরিন ড্রাইভের টেকনাফের খুরেরমুখ, সাবরাং ও বাহারছড়া এলাকায় দেখা গেছে, সড়কে দাঁড় করিয়ে রাখা সারি সারি ট্রলারে জাল ও রসদ তোলেন জেলেরা।
একটি ট্রলারের মাঝি আবু তাহের জানান, এবার ভারতের সঙ্গে মিল রেখে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় কেউ সাগরে মাছ শিকারে নামেনি। এতে উপকূলের কাছাকাছি সাগরে জাল ফেললেই ইলিশসহ অন্য মাছ পাওয়া যাবে বলে আশাবাদী তিনি।
কক্সবাজার শহরের ফিশারি ঘাটের মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির পরিচালক জুলফিকার আলী জানান, কক্সবাজার উপকূলে ছোট-বড় ৭ হাজারের মতো যান্ত্রিক ট্রলার রয়েছে। এসব ট্রলারে প্রায় এক লাখ জেলে ও শ্রমিক নিয়োজিত রয়েছেন। অধিকাংশ ট্রলার নিষেধাজ্ঞা ওঠার সঙ্গে সঙ্গে সাগরে রওনা হবে।
[প্রতিবেদন তৈরিতে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছেন বরগুনা ও আমতলী, পিরোজপুর, কক্সবাজার এবং হাতিয়া প্রতিনিধি]

‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর সঙ্গে।
মাছের সুষ্ঠু প্রজনন, উৎপাদন, মৎস্যসম্পদ সংরক্ষণ ও টেকসই মৎস্য আহরণের জন্য সমুদ্রে সব ধরনের মাছ শিকার ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা গতকাল বুধবার দিবাগত মধ্যরাতে শেষ হয়েছে। তাই গতকাল দিনভর ছিল উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে ব্যস্ততা। অনেকে দেখে নিচ্ছিলেন ট্রলার ঠিকঠাক আছে কি না, কেউ জালের ছেঁড়া অংশ সেলাই করছিলেন, কেউ আবার প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রীসহ অন্য সরঞ্জাম গুছিয়ে নিচ্ছিলেন।
বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র এবং ফকিরহাট উপ-মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ঘাটে গতকাল শত শত ট্রলার নোঙর করে রাখা ছিল। জেলেদের উপস্থিতিতে ঘাট এলাকা সরগরম হয়ে ওঠে। ফকিরহাটের মুদি-মনিহারি দোকানগুলোতে জেলেরা কেনাকাটা করতে ভিড় জমান। ফকিরহাট এলাকার বিসমিল্লাহ ট্রলারের মাঝি রহিম মিয়া বলেন, ‘সাগরে মাছ শিকারে যেতে সকল প্রস্তুতি নিয়েছি। নিষেধাজ্ঞার সময় শেষ হওয়ামাত্রই সাগরে নামব।’
জেলে নুরসাইদ ও ফোরকান মিয়া বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞার সময় পরিবার-পরিজন নিয়ে বেশ কষ্টে কেটেছে। ওই সময়ে বেশ টাকা ঋণ করেছি। এখন সাগরে যাব। দেখি আল্লাহ ঋণ পরিশোধ করতে দেন কি না।’
নোয়াখালীর হাতিয়ার সূর্যমুখী, বাংলাবাজার, কাজিরবাজার, পাইতান মার্কেট চেয়ারম্যান ঘাটসহ বেশ কয়েকটি ঘাটে গতকাল জেলেদের ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা গেছে। অনেকে নৌকায় জাল তুলছিলেন, আবার অনেকে জ্বালানি তেল মজুতসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী ট্রলারে নিয়ে যান। সূর্যমুখী ঘাটের এমভি মায়ের দোয়া ট্রলারের মাঝি জাফর উল্যা বলেন, ‘সাগরে ৮-১০ দিন থাকার প্রস্তুতি নিচ্ছি। সন্ধ্যায় সাগরের উদ্দেশে রওনা দেব।’
সূর্যমুখী ঘাট জেলে সমিতির সভাপতি জবিয়ল হক বলেন, ‘সাগরে নামতে প্রস্তুত নোয়াখালীর হাতিয়ার ২০টি ঘাটের লক্ষাধিক জেলে। এসব ঘাটে প্রায় ১০ হাজার ছোট-বড় ফিশিং ট্রলার রয়েছে। প্রতি ট্রলারে ১০ জন হলেও লক্ষাধিক জেলে এই মাছ ধরার সঙ্গে জড়িত। তাঁদের সবাই গত ৫৮ দিন তীরে বেকার ছিলেন।’
পিরোজপুরের ইন্দুরকানি উপজেলার পাড়েরহাট মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের পার্শ্ববর্তী এলাকার জেলেরা গতকাল দিনভর সাগরে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন। এ ছাড়া মঠবাড়িয়া উপজেলার সাপলেজা, খেতাচিড়া, বড়মাছুয়া, ছোটমাছুয়া, ভান্ডারিয়া উপজেলার চরখালী, হেতালিয়া, কাউখালী উপজেলার সোনাকুর এলাকার জেলেরা, সদর উপজেলা এবং নেছারাবাদ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার জেলেরা প্রস্তুতি শেষে গত রাতে বঙ্গোপসাগরে রওনা হন।
কয়েক দিন ধরে কক্সবাজার উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে নৌকা, জাল মেরামতসহ বিভিন্ন প্রস্তুতি সেরেছেন জেলেরা। গতকাল মেরিন ড্রাইভের টেকনাফের খুরেরমুখ, সাবরাং ও বাহারছড়া এলাকায় দেখা গেছে, সড়কে দাঁড় করিয়ে রাখা সারি সারি ট্রলারে জাল ও রসদ তোলেন জেলেরা।
একটি ট্রলারের মাঝি আবু তাহের জানান, এবার ভারতের সঙ্গে মিল রেখে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় কেউ সাগরে মাছ শিকারে নামেনি। এতে উপকূলের কাছাকাছি সাগরে জাল ফেললেই ইলিশসহ অন্য মাছ পাওয়া যাবে বলে আশাবাদী তিনি।
কক্সবাজার শহরের ফিশারি ঘাটের মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির পরিচালক জুলফিকার আলী জানান, কক্সবাজার উপকূলে ছোট-বড় ৭ হাজারের মতো যান্ত্রিক ট্রলার রয়েছে। এসব ট্রলারে প্রায় এক লাখ জেলে ও শ্রমিক নিয়োজিত রয়েছেন। অধিকাংশ ট্রলার নিষেধাজ্ঞা ওঠার সঙ্গে সঙ্গে সাগরে রওনা হবে।
[প্রতিবেদন তৈরিতে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছেন বরগুনা ও আমতলী, পিরোজপুর, কক্সবাজার এবং হাতিয়া প্রতিনিধি]

অভিভাবকেরা উৎকণ্ঠিত। দিশাহীন। কোথায় যাবেন, কীভাবে সহজ উপায়ে তাঁদের বিশেষ শিশুরা করোনা ভ্যাকসিন পাবে। অভিভাবকদের কেউ কেউ ইতিমধ্যে আক্রান্ত। সোশ্যাল মিডিয়ায় তাঁরা তাঁদের সেই উৎকণ্ঠার কথা বলেছেন, বলছেন।
৩১ জানুয়ারি ২০২২
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
০৬ অক্টোবর ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
ভারতের নিষেধাজ্ঞার এক দিন পরই গত রোববার লালমনিরহাটের বুড়িমারী ও যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দরসহ বিভিন্ন বন্দরে পণ্যের ট্রাক আটকে দেয় ভারত। সংশ্লিষ্টদের সূত্রে জানা যায়, রোববার ভারতের আমদানি বিধিনিষেধের কারণে বুড়িমারী সীমান্তে প্রাণের ১৭ ট্রাক খাদ্যপণ্য আটকে যায়। এ ছাড়া বেনাপোলে ৩৬টি পোশাক বোঝাই ট্রাকসহ অন্যান্য পণ্যের শতাধিক ট্রাক ঢুকতে পারেনি।
গতকাল সোমবার পর্যন্ত বুড়িমারী থেকে প্রাণের পণ্যবোঝাই ট্রাকগুলোর অর্ধেকের বেশি ফেরত নিয়ে আসে প্রতিষ্ঠানটি। এ ছাড়া বেনাপোলে পোর্টের ভেতরে ২৪টি ট্রাক ছাড়া বাকিগুলো ফেরত চলে যায়।
বেনাপোল বন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. সাজেদুর রহমান গতকাল সোমবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, গতকাল পোর্টের ভেতর ও বাইরে শতাধিক ট্রাক দাঁড়িয়ে ছিল। আজ পোর্টের ভেতরের ২৪টি ছাড়া বাকিগুলো ফেরত নিয়ে গেছেন মালিকেরা। এখন পর্যন্ত মনে হচ্ছে, পোর্টের ভেতরের ট্রাকগুলোও ফেরত নিতে হবে।
জানতে চাইলে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পরিচালক (বিপণন) কামরুজ্জামান কামাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের হাতে ৬ মিলিয়ন ডলারের ক্রয় আদেশ রয়েছে। তার মধ্য থেকে রোববার বুড়িমারী দিয়ে ১৭ ট্রাকবোঝাই পণ্য পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু সেগুলো ঢুকতে পারেনি। ট্রাকগুলো ফেরত আনা হচ্ছে। নতুন করে কাগজপত্র তৈরি করে অন্য পথ দিয়ে পণ্য পাঠাতে হবে।’
বেনাপোল স্থলবন্দর সূত্রে জানা যায়, ওই ২৪টি ট্রাক পোর্টের ভেতরে থাকায় এখনো তারা ভারতে প্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে। তাদের আশা, যেহেতু নিষেধাজ্ঞার আগে এই পণ্যগুলোর এলসি করা হয়েছিল, তাই এগুলো প্রবেশে অনুমতি পাবে। তবে এটি নির্ভর করবে বাংলাদেশ সরকারের আলোচনার ওপর।
এমন পরিস্থিতিতে সরকারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ইতিমধ্যে অনেক রপ্তানিকারক রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সঙ্গে আলোচনা করে সরকারের সহযোগিতা চেয়েছে।
স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে আজ মঙ্গলবার আন্তমন্ত্রণালয়ের সভা ডেকেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে বিকেল ৪টায় আন্তমন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এই সভা অনুষ্ঠিত হবে।
সভায় নৌপরিবহন ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো, জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের প্রতিনিধিদের উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া ব্যবসায়ী প্রতিনিধি হিসেবে এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ, ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রতিনিধিদের উপস্থিতির জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
ভারতের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গত শনিবার হঠাৎ এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি নিষিদ্ধ করে। শুধু ভারতের নবসেবা ও কলকাতা সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করে দেশটির আমদানিকারকেরা বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি করতে পারবেন বলে ওই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। এ ছাড়া বাংলাদেশ থেকে ভারতের আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা ও মিজোরাম, পশ্চিমবঙ্গের চ্যাংড়াবান্দা ও ফুলবাড়ী শুল্ক স্টেশন দিয়ে ফল, ফলের স্বাদযুক্ত পানীয়, কোমল পানীয়, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, প্লাস্টিক পণ্য, সুতা, সুতার উপজাত, আসবাব রপ্তানিও নিষিদ্ধ করা হয় ওই বিজ্ঞপ্তিতে।
আমদানি ও রপ্তানিসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা জানান, দেশের ২৪টি বন্দরের মধ্যে ১৬টি বন্দর দিয়ে ভারতের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়ে থাকে। তবে যোগাযোগব্যবস্থা সহজ হওয়ায় বেনাপোল ও ভারতের পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে সবচেয়ে বেশি আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়। এর পরিমাণ ৮০ শতাংশ। বেনাপোল বন্দর দিয়ে প্রতিদিন ভারতে ২৫০ থেকে ৩০০ ট্রাকে বিভিন্ন ধরনের পণ্য রপ্তানি হয়। এর মধ্যে শতাধিক ট্রাক পণ্য থাকে তৈরি পোশাক।
এর আগে গত ৮ এপ্রিল বাংলাদেশের জন্য ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করে ভারত। ফলে ভারতের বিমানবন্দর ব্যবহার করে তৃতীয় কোনো দেশে তৈরি পোশাক রপ্তানি করতে পারছে না বাংলাদেশ। অন্যদিকে প্রায় এক মাস আগে ভারত থেকে বেনাপোল, ভোমরা, সোনামসজিদ, বাংলাবান্ধা, বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানির সুযোগ বন্ধ করে দেয় বাংলাদেশের জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমানের মতে, এই পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপে তুলনামূলকভাবে বেশি নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বাংলাদেশের ওপর। তাই ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর চেষ্টা অব্যাহত রাখাই সরকারের উচিত বলে মনে করছেন তিনি।
মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আলোচনার মাধ্যমে বাংলাদেশ এবং ভারতের বিরোধপূর্ণ বিষয়সমূহ মিটিয়ে ফেলতে হবে এবং দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এটাই হবে উভয় দেশের জন্য কল্যাণকর।

ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
ভারতের নিষেধাজ্ঞার এক দিন পরই গত রোববার লালমনিরহাটের বুড়িমারী ও যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দরসহ বিভিন্ন বন্দরে পণ্যের ট্রাক আটকে দেয় ভারত। সংশ্লিষ্টদের সূত্রে জানা যায়, রোববার ভারতের আমদানি বিধিনিষেধের কারণে বুড়িমারী সীমান্তে প্রাণের ১৭ ট্রাক খাদ্যপণ্য আটকে যায়। এ ছাড়া বেনাপোলে ৩৬টি পোশাক বোঝাই ট্রাকসহ অন্যান্য পণ্যের শতাধিক ট্রাক ঢুকতে পারেনি।
গতকাল সোমবার পর্যন্ত বুড়িমারী থেকে প্রাণের পণ্যবোঝাই ট্রাকগুলোর অর্ধেকের বেশি ফেরত নিয়ে আসে প্রতিষ্ঠানটি। এ ছাড়া বেনাপোলে পোর্টের ভেতরে ২৪টি ট্রাক ছাড়া বাকিগুলো ফেরত চলে যায়।
বেনাপোল বন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. সাজেদুর রহমান গতকাল সোমবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, গতকাল পোর্টের ভেতর ও বাইরে শতাধিক ট্রাক দাঁড়িয়ে ছিল। আজ পোর্টের ভেতরের ২৪টি ছাড়া বাকিগুলো ফেরত নিয়ে গেছেন মালিকেরা। এখন পর্যন্ত মনে হচ্ছে, পোর্টের ভেতরের ট্রাকগুলোও ফেরত নিতে হবে।
জানতে চাইলে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পরিচালক (বিপণন) কামরুজ্জামান কামাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের হাতে ৬ মিলিয়ন ডলারের ক্রয় আদেশ রয়েছে। তার মধ্য থেকে রোববার বুড়িমারী দিয়ে ১৭ ট্রাকবোঝাই পণ্য পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু সেগুলো ঢুকতে পারেনি। ট্রাকগুলো ফেরত আনা হচ্ছে। নতুন করে কাগজপত্র তৈরি করে অন্য পথ দিয়ে পণ্য পাঠাতে হবে।’
বেনাপোল স্থলবন্দর সূত্রে জানা যায়, ওই ২৪টি ট্রাক পোর্টের ভেতরে থাকায় এখনো তারা ভারতে প্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে। তাদের আশা, যেহেতু নিষেধাজ্ঞার আগে এই পণ্যগুলোর এলসি করা হয়েছিল, তাই এগুলো প্রবেশে অনুমতি পাবে। তবে এটি নির্ভর করবে বাংলাদেশ সরকারের আলোচনার ওপর।
এমন পরিস্থিতিতে সরকারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ইতিমধ্যে অনেক রপ্তানিকারক রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সঙ্গে আলোচনা করে সরকারের সহযোগিতা চেয়েছে।
স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে আজ মঙ্গলবার আন্তমন্ত্রণালয়ের সভা ডেকেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে বিকেল ৪টায় আন্তমন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এই সভা অনুষ্ঠিত হবে।
সভায় নৌপরিবহন ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো, জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের প্রতিনিধিদের উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া ব্যবসায়ী প্রতিনিধি হিসেবে এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ, ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রতিনিধিদের উপস্থিতির জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
ভারতের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গত শনিবার হঠাৎ এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি নিষিদ্ধ করে। শুধু ভারতের নবসেবা ও কলকাতা সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করে দেশটির আমদানিকারকেরা বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি করতে পারবেন বলে ওই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। এ ছাড়া বাংলাদেশ থেকে ভারতের আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা ও মিজোরাম, পশ্চিমবঙ্গের চ্যাংড়াবান্দা ও ফুলবাড়ী শুল্ক স্টেশন দিয়ে ফল, ফলের স্বাদযুক্ত পানীয়, কোমল পানীয়, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, প্লাস্টিক পণ্য, সুতা, সুতার উপজাত, আসবাব রপ্তানিও নিষিদ্ধ করা হয় ওই বিজ্ঞপ্তিতে।
আমদানি ও রপ্তানিসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা জানান, দেশের ২৪টি বন্দরের মধ্যে ১৬টি বন্দর দিয়ে ভারতের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়ে থাকে। তবে যোগাযোগব্যবস্থা সহজ হওয়ায় বেনাপোল ও ভারতের পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে সবচেয়ে বেশি আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়। এর পরিমাণ ৮০ শতাংশ। বেনাপোল বন্দর দিয়ে প্রতিদিন ভারতে ২৫০ থেকে ৩০০ ট্রাকে বিভিন্ন ধরনের পণ্য রপ্তানি হয়। এর মধ্যে শতাধিক ট্রাক পণ্য থাকে তৈরি পোশাক।
এর আগে গত ৮ এপ্রিল বাংলাদেশের জন্য ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করে ভারত। ফলে ভারতের বিমানবন্দর ব্যবহার করে তৃতীয় কোনো দেশে তৈরি পোশাক রপ্তানি করতে পারছে না বাংলাদেশ। অন্যদিকে প্রায় এক মাস আগে ভারত থেকে বেনাপোল, ভোমরা, সোনামসজিদ, বাংলাবান্ধা, বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানির সুযোগ বন্ধ করে দেয় বাংলাদেশের জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমানের মতে, এই পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপে তুলনামূলকভাবে বেশি নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বাংলাদেশের ওপর। তাই ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর চেষ্টা অব্যাহত রাখাই সরকারের উচিত বলে মনে করছেন তিনি।
মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আলোচনার মাধ্যমে বাংলাদেশ এবং ভারতের বিরোধপূর্ণ বিষয়সমূহ মিটিয়ে ফেলতে হবে এবং দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এটাই হবে উভয় দেশের জন্য কল্যাণকর।

অভিভাবকেরা উৎকণ্ঠিত। দিশাহীন। কোথায় যাবেন, কীভাবে সহজ উপায়ে তাঁদের বিশেষ শিশুরা করোনা ভ্যাকসিন পাবে। অভিভাবকদের কেউ কেউ ইতিমধ্যে আক্রান্ত। সোশ্যাল মিডিয়ায় তাঁরা তাঁদের সেই উৎকণ্ঠার কথা বলেছেন, বলছেন।
৩১ জানুয়ারি ২০২২
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
০৬ অক্টোবর ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
১৮৯৮ সালে ভারতের উত্তর প্রদেশের একটি ধূলিধূসর টিলা খুঁড়ে পাওয়া মূল্যবান এই রত্নগুলো এক শতাব্দীর বেশি সময় ধরে একটি বেসরকারি ব্রিটিশ সংগ্রহাগারে প্রায় দৃষ্টিচক্ষুর আড়ালে ছিল। এখন যেহেতু রত্নগুলোর হাতবদলের সময় এসেছে, তাই নতুন সংগ্রাহকেরা আগ্রহ নিয়ে এগুলো সংগ্রহের জন্য অপেক্ষা করছেন। কিন্তু এখানে একটা অস্বস্তিও তৈরি হয়েছে।
গৌতম বুদ্ধের জন্মস্থান লুম্বিনীর কাছাকাছি, বর্তমানে ভারতের উত্তর প্রদেশে একটি ইটের ঘরের ভেতর থেকে প্রায় ১ হাজার ৮০০টি মুক্তা, রুবি, টোপাজ, নীলা ও নকশা করা সোনার পাত সংগ্রহ করা হয়েছিল। তবে এই রত্নগুলোর সঙ্গে সঙ্গে একটি খোদাই করা পাত্রে হাড়ের টুকরাও পাওয়া যায়, যেগুলোকে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষ বলে শনাক্ত করা হয়। এই আবিষ্কার তখন প্রত্নতত্ত্বের জগতে ব্যাপক আলোড়ন তোলে।
সাদাবি’স এশিয়ার চেয়ারম্যান নিকোলাস চাউ মনে করেন, স্মরণকালের বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর মাঝে এই রত্নসম্ভার অন্যতম। তবে এগুলো নিলামে তোলার কারণে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। আর তা হচ্ছে—ভারতের ইতিহাসের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িয়ে থাকা এবং বৌদ্ধদের কাছে পবিত্র এই সম্পদ বিক্রি করা কি নৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য?
১৮৯৮ সালে ব্রিটিশ এস্টেট ম্যানেজার উইলিয়াম ক্ল্যাক্সটন পেপ্পে লুম্বিনির ঠিক দক্ষিণে পিপ্রাওয়ায় অবস্থিত একটি ঢিবি খনন করেন। সেখান থেকেই প্রায় ২ হাজার বছর আগের ওই নির্দশনগুলো খুঁজে পাওয়া যায়।
ইতিহাসবিদদের মতে, প্রাপ্ত রত্নসম্ভার ও দেহাবশেষ, যা তখনো পর্যন্ত অক্ষত ছিল, সেগুলো গৌতম বুদ্ধের শাক্য বংশের এবং বিশ্বব্যাপী বৌদ্ধদের ঐতিহ্য। হাড়ের নিদর্শনগুলো থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা ও মিয়ানমারের মতো দেশগুলোতে বিতরণ করা হয়েছে। এসব দেশে এখনো সেগুলোর পূজা করা হয়।

আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
১৮৯৮ সালে ভারতের উত্তর প্রদেশের একটি ধূলিধূসর টিলা খুঁড়ে পাওয়া মূল্যবান এই রত্নগুলো এক শতাব্দীর বেশি সময় ধরে একটি বেসরকারি ব্রিটিশ সংগ্রহাগারে প্রায় দৃষ্টিচক্ষুর আড়ালে ছিল। এখন যেহেতু রত্নগুলোর হাতবদলের সময় এসেছে, তাই নতুন সংগ্রাহকেরা আগ্রহ নিয়ে এগুলো সংগ্রহের জন্য অপেক্ষা করছেন। কিন্তু এখানে একটা অস্বস্তিও তৈরি হয়েছে।
গৌতম বুদ্ধের জন্মস্থান লুম্বিনীর কাছাকাছি, বর্তমানে ভারতের উত্তর প্রদেশে একটি ইটের ঘরের ভেতর থেকে প্রায় ১ হাজার ৮০০টি মুক্তা, রুবি, টোপাজ, নীলা ও নকশা করা সোনার পাত সংগ্রহ করা হয়েছিল। তবে এই রত্নগুলোর সঙ্গে সঙ্গে একটি খোদাই করা পাত্রে হাড়ের টুকরাও পাওয়া যায়, যেগুলোকে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষ বলে শনাক্ত করা হয়। এই আবিষ্কার তখন প্রত্নতত্ত্বের জগতে ব্যাপক আলোড়ন তোলে।
সাদাবি’স এশিয়ার চেয়ারম্যান নিকোলাস চাউ মনে করেন, স্মরণকালের বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর মাঝে এই রত্নসম্ভার অন্যতম। তবে এগুলো নিলামে তোলার কারণে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। আর তা হচ্ছে—ভারতের ইতিহাসের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িয়ে থাকা এবং বৌদ্ধদের কাছে পবিত্র এই সম্পদ বিক্রি করা কি নৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য?
১৮৯৮ সালে ব্রিটিশ এস্টেট ম্যানেজার উইলিয়াম ক্ল্যাক্সটন পেপ্পে লুম্বিনির ঠিক দক্ষিণে পিপ্রাওয়ায় অবস্থিত একটি ঢিবি খনন করেন। সেখান থেকেই প্রায় ২ হাজার বছর আগের ওই নির্দশনগুলো খুঁজে পাওয়া যায়।
ইতিহাসবিদদের মতে, প্রাপ্ত রত্নসম্ভার ও দেহাবশেষ, যা তখনো পর্যন্ত অক্ষত ছিল, সেগুলো গৌতম বুদ্ধের শাক্য বংশের এবং বিশ্বব্যাপী বৌদ্ধদের ঐতিহ্য। হাড়ের নিদর্শনগুলো থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা ও মিয়ানমারের মতো দেশগুলোতে বিতরণ করা হয়েছে। এসব দেশে এখনো সেগুলোর পূজা করা হয়।

অভিভাবকেরা উৎকণ্ঠিত। দিশাহীন। কোথায় যাবেন, কীভাবে সহজ উপায়ে তাঁদের বিশেষ শিশুরা করোনা ভ্যাকসিন পাবে। অভিভাবকদের কেউ কেউ ইতিমধ্যে আক্রান্ত। সোশ্যাল মিডিয়ায় তাঁরা তাঁদের সেই উৎকণ্ঠার কথা বলেছেন, বলছেন।
৩১ জানুয়ারি ২০২২
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
০৬ অক্টোবর ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫