ইয়াসিন আরাফাত, ঢাকা

গত বছরের শেষদিকে যুক্তরাষ্ট্রের মসনদে পরিবর্তনের হাওয়া বয়। মার্কিন নির্বাচনে নানা নাটকীয়তার পর ডোনাল্ড ট্রাম্পের অধোগতি সুনিশ্চিত হয়েছে বটে; তবে নতুন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের মনে ক্ষমতার শুরুর দিকের স্বস্তি আর নেই। বরং রাশিয়া-চীনে কিছুটা অস্বস্তিতেই আছেন তিনি।
২০২০ সালের শেষের দিকে সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের পরাজয় নিশ্চিত হওয়া যায়। মার্কিন নির্বাচনে বাইডেনের বিজয়কে নস্যাৎ এবং সে সময় মার্কিন কংগ্রেসের যৌথ অধিবেশন বানচাল করার লক্ষ্যেই গত ৬ জানুয়ারি ক্যাপিটল হিলে হামলা চালান ট্রাম্পের উগ্র সমর্থকেরা। নজিরবিহীন ওই সহিংসতায় পাঁচজনের মৃত্যু হয়। যুক্তরাষ্ট্রের ক্যাপিটল হিলে দাঙ্গায় উসকানিমূলক পোস্ট দেওয়ার কারণে ট্রাম্পকে অনির্দিষ্টকালের জন্য নিষিদ্ধ করে ফেসবুক ও টুইটার। ফেসবুক কর্তৃপক্ষ জানায়, ট্রাম্প ২০২৩ সাল পর্যন্ত ফেসবুক ও ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করতে পারবেন না।
এত হুলুস্থুলের পরও ক্ষমতায় নির্দিষ্ট সময়ের বেশি থাকতে পারেননি ট্রাম্প। চলতি বছরের ২০ জানুয়ারি তিনি হোয়াইট হাউস ছাড়েন। যাওয়ার আগে বাইডেনের নাম উল্লেখ না করে ট্রাম্প বলেন, ‘আমি তাঁকে স্বাগত জানাচ্ছি। দেশে নতুন একটি সরকার আসতে চলেছে। নিরাপদ ও সমৃদ্ধ আমেরিকা গড়ার লক্ষ্যে আমি সেই সরকারের সাফল্য কামনা করছি।’
ট্রাম্প হোয়াইট হাউস ছাড়ার পরদিন অর্থাৎ ২১ জানুয়ারি ৪৬তম মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নেন জো বাইডেন। ওই শপথ অনুষ্ঠানে অংশ নেননি ট্রাম্প। মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএন জানায়, ১৮৬৯ সালে অ্যান্ড্রু জনসনের পর থেকে এই প্রথম কোনো মার্কিন প্রেসিডেন্ট তাঁর উত্তরসূরির অভিষেক অনুষ্ঠানে যোগদান থেকে বিরত থাকেন।
তবে উপস্থিত ছিলেন বিদায়ী ভাইস প্রেসিডেন্ট মাইক পেন্স। অন্যদের মধ্যে ছিলেন সাবেক প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা, জর্জ ডব্লিউ বুশ ও বিল ক্লিনটন এবং সাবেক ফার্স্ট লেডি মিশেল ওবামা, লরা বুশ ও হিলারি ক্লিনটন।
প্রথা অনুযায়ী প্রথমে ভাইস প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নেন কমলা হ্যারিস। যুক্তরাষ্ট্রের প্রথম নারী, প্রথম কৃষ্ণাঙ্গ আমেরিকান ও প্রথম দক্ষিণ এশীয় হিসেবে এই পদে অধিষ্ঠিত হন কমলা। এরপর শপথ গ্রহণ করেন জো বাইডেন। শপথের পর তুমুল করতালি ও হর্ষধ্বনিতে অভিনন্দন জানানো হয় এ দুজনকে।
শপথ নেওয়ার পর প্রথম দিনেই ট্রাম্পের বিতর্কিত ১৫ পদক্ষেপ ও আদেশ বাতিল করেন জো বাইডেন। এদিন তিনি ১৫টি নির্বাহী আদেশ ও দুটি দাপ্তরিক নথিতে সই করেন।
বিশ্লেষকদের মতে, নির্বাহী আদেশে স্বাক্ষরের মধ্য দিয়ে বাইডেন বুঝিয়ে দিয়েছিলেন, ট্রাম্পের নীতি পাল্টে দিতে তিনি দেরি করতে রাজি নন। ক্ষমতায় আসার এক মাস না পেরোতেই গত ২০ ফেব্রুয়ারি যুক্তরাষ্ট্রকে প্যারিস জলবায়ু চুক্তিতে ফেরান বাইডেন। এই চুক্তি থেকে বের হয়ে গিয়েছিলেন ট্রাম্প। যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে মাস্ক ব্যবহার বাধ্যতামূলক-সংক্রান্ত নির্বাহী আদেশে সই করেন বাইডেন। সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বাধ্যতামূলক মাস্ক পরার বিরোধী ছিলেন। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা থেকে যুক্তরাষ্ট্রকে প্রত্যাহার করার যে প্রক্রিয়া ট্রাম্প শুরু করেছিলেন, তা-ও থামিয়ে দেন বাইডেন।
বাইডেন আমলে চলতি বছরের অন্যতম একটি বড় ঘটনা ছিল আফগানিস্তান থেকে মার্কিন সেনা প্রত্যাহার। গত ৩১ আগস্ট আফগানিস্তান থেকে যুক্তরাষ্ট্রসহ তার সব মিত্রদেশ সেনা প্রত্যাহার করে নেয়। শেষ হয় ২০ বছরের যুদ্ধ। এর মধ্যেই ত্বরিতগতিতে আফগানিস্তানের ক্ষমতা দখল করে তালেবান। আফগানিস্তান ছাড়ার আগে রাজধানী কাবুলে বোমা হামলায় ১৩ জন মার্কিন সেনা নিহত হয়। এসব ঘটনায় যুক্তরাষ্ট্রের বিরোধী রিপাবলিকান পার্টির নেতাদের তোপের মুখে পড়েছিলেন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। রিপাবলিকান আইনপ্রণেতাদের কেউ কেউ তো বাইডেনের পদত্যাগও দাবি করে বসেন তখন।
আফগানিস্তান থেকে মার্কিন সেনা পুরোপুরি প্রত্যাহারের বিষয়ে ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারিতে চুক্তি করেছিল যুক্তরাষ্ট্র। সে সময় যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ছিলেন ট্রাম্প। সেনা প্রত্যাহারের সমালোচনার জবাবে বাইডেন বলেছিলেন, ট্রাম্পের করা চুক্তি বাস্তবায়ন করতে গিয়েই তাঁকে ৩১ আগস্টের মধ্যে আফগানিস্তান থেকে সব মার্কিন সেনা প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নিতে হয়েছে।
এদিকে ইরাক থেকেও সেনা প্রত্যাহার করার ঘোষণা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। আগামী বছরের ৩১ জানুয়ারির মধ্যে ইরাক থেকে সেনা প্রত্যাহার করবে দেশটি। এমনটি হলে সেখানেও ১৯ বছরের মার্কিন সেনা উপস্থিতির অবসান ঘটবে।
তবে বাইডেন ট্রাম্পের অনেক নীতির বিরোধিতা করলেও চীন ও রাশিয়া নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের মনোভাব আগের মতোই আছে। প্রেসিডেন্ট বাইডেনের আমলে গত মার্চে প্রথম যুক্তরাষ্ট্র ও পরে চীনের মধ্যে উচ্চপর্যায়ের আলোচনা শুরু হয়। সেখানে দুই পক্ষই পরস্পরকে তীব্র ভাষায় তিরস্কার করে।
আলাস্কার অ্যাংকোরেজ শহরে এই আলোচনায় যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিনকেন এবং জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জেইক সুলিভান। চীনের পক্ষে আলোচনায় যোগ দেন দেশটির পররাষ্ট্রনীতিবিষয়ক সবচেয়ে সিনিয়র কর্মকর্তা ইয়াং জিয়েচি ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই।
আলোচনার শুরুতেই উদ্বোধনী বিবৃতিতে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মিস্টার ব্লিনকেন একদম সোজাসাপ্টা ভাষায় বলেন, ‘চীনের বিভিন্ন পদক্ষেপের ব্যাপারে যুক্তরাষ্ট্র তার গভীর উদ্বেগ এই আলোচনায় আনবে, বিশেষ করে শিনজিয়াং, হংকং, তাইওয়ান, যুক্তরাষ্ট্রে সাইবার হামলা এবং মার্কিন মিত্রদের ওপর অর্থনৈতিক চাপ প্রয়োগের বিষয়গুলো।’
আর এর জবাবে চীনা পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই অভিযোগ করেন এই বলে যে, ওয়াশিংটন তার সামরিক পরাক্রম এবং অর্থনৈতিক শক্তিকে কাজে লাগাচ্ছে অন্য দেশকে দমিয়ে রাখতে। এত দিন বাণিজ্য ও উইঘুরদের মানবাধিকার ইস্যুতে বিরোধ থাকলেও এ বছর তাইওয়ান এবং দক্ষিণ চীন সাগরে মার্কিন কর্মকাণ্ড নিয়ে বেইজিং ও ওয়াশিংটনের বিরোধ আরও তীব্র হয়। এহেন পরিস্থিতিতে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক কিছুটা স্বাভাবিক করার উদ্দেশ্যে সোমবার চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিন পিংয়ের সঙ্গে গত ১৬ নভেম্বর ভার্চুয়াল বৈঠকে বসেন জো বাইডেন। বৈঠকে দুই দেশের মধ্যে সংঘাত থামাতে নীতিগত সীমারেখা তৈরির প্রস্তাব দেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। আর বেইজিং থেকে বাইডেনকে ‘পুরোনো বন্ধু’ বলে উষ্ণ সম্বোধন করেন চীনা প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং।
তবে যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যে বন্ধুত্বের বদলে বিরোধের আবহই এখন পর্যন্ত প্রাধান্য বিস্তার করে আছে। সর্বশেষ মুসলিম জনগোষ্ঠীর ওপর অবৈধ নজরদারির অভিযোগে দেশটির একটি জৈবপ্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানকে কালো তালিকাভুক্ত করেছে যুক্তরাষ্ট্র। ওই চীনা প্রতিষ্ঠানের ওপর রপ্তানি নিষেধাজ্ঞাও দিয়েছে মার্কিন বাণিজ্য বিভাগ।
এর আগে ১০ ডিসেম্বর আন্তর্জাতিক মানবাধিকার দিবসে যুক্তরাষ্ট্রের রাজস্ব বিভাগের অফিস অব ফরেন অ্যাসেট কন্ট্রোল (ওএফএসি) সংশ্লিষ্ট অন্যান্য দপ্তরের সঙ্গে মিলে বিভিন্ন দেশের ১৫ ব্যক্তি ও ১০ প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে। এর মধ্যে চীনের স্টার্ট-আপ সেন্সটাইম গ্রুপের নামও ছিল।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকেরা বলছেন, নতুন করে নিষেধাজ্ঞার ঘোষণা চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে সম্পর্ক আরও খারাপ করে তুলবে।
ক্ষমতা নেওয়ার পর চলতি বছরের ১৭ জুন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে বৈঠকে বসেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। মার্কিন কূটনীতিকদের বরাতে জানা যায়, সেখানে আমেরিকার প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে রাশিয়ার হস্তক্ষেপ, সাইবার হামলা, রাশিয়ার জেলবন্দী বিরোধী নেতা অ্যালেক্সেই নাভালনির মুক্তির বিষয়ের পাশাপাশি রাশিয়ায় ‘বন্দী’ আমেরিকানদের বিষয়েও কথা তোলেন। দেড় ঘণ্টার ওই বৈঠকের পর পুতিন বলেন, সেই বৈঠক ছিল পুরোপুরি গঠনমূলক। সাইবার নিরাপত্তা নিয়ে আলোচনায় সম্মত হয়েছে দুই দেশই। তবে এ নিয়ে কোনো দেশই আনুষ্ঠানিক সংবাদ সম্মেলন করেনি।
চীনের মতোই রাশিয়ার সঙ্গে ও যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্ক নিয়ত উত্থান-পতনের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়ার মধ্যে আবারও উত্তেজনা দেখা দেয়। এবারের ইস্যুটি হলো ইউক্রেন। এ নিয়ে ৮ ডিসেম্বর মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ও রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের এক বৈঠক হয়। বৈঠকে পুতিনকে কড়া হুঁশিয়ারি দেন বাইডেন। মার্কিন প্রেসিডেন্ট জানান, ইউক্রেনে রুশ অভিযানের আশঙ্কার প্রেক্ষাপটে ‘কড়া অর্থনৈতিক ও অন্যান্য ব্যবস্থা’ নেওয়ার প্রস্তুতি চলছে।
ইউক্রেন সীমান্তের কাছে ৯০ হাজারেরও বেশি রুশ সৈন্য মোতায়েন করা হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। আশঙ্কা আছে, আগামী বছরের শুরুতেই ইউক্রেনে হামলা চালাতে পারে রাশিয়া। তবে রাশিয়ার পক্ষ থেকে এসব অভিযোগ অস্বীকার করা হয়েছে।
শেষটা করা যাক ট্রাম্পকে দিয়ে। সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এরই মধ্যে জানিয়েছেন, ২০২৪ সালের মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে তিনি আবার অংশ নেবেন। এদিকে ফেসবুক-টুইটার থেকে নিষিদ্ধ হওয়ার পর গত অক্টোবরে ট্রুথ সোশ্যাল নামে এবার নতুন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম চালুর ঘোষণা দিয়ে রেখেছেন ট্রাম্প।
নতুন প্ল্যাটফর্মটি ‘বড় প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানগুলোর নিপীড়নের বিরুদ্ধে দাঁড়াবে’ বলে মন্তব্য করেছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। তাঁর অভিযোগ, প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানগুলো যুক্তরাষ্ট্রে বিরোধী মতকে ‘চুপ করিয়ে দিচ্ছে’।
প্রেসিডেন্ট আমলে সংগতি ও অসংগতিপূর্ণ নানা ধরনের কাজ করে সমালোচিত ট্রাম্প চলতি বছর প্রেসিডেন্ট না হয়েও এগুলো বলে মার্কিন গণমাধ্যমের শিরোনাম হয়েছেন। ট্রাম্পের জন্য আরেকটি খারাপ খবর হলো—এবার ফোর্বস সাময়িকীর ৪০০ মার্কিন ধনীর তালিকায় তিনি নেই। বলা হচ্ছে, মহামারি করোনা শুরু হওয়ার পর তাঁর সম্পদ কমেছে ৬০ কোটি মার্কিন ডলার।
সব মিলিয়ে বলা যায়, মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসেবে সাবেক হওয়ার পর থেকেই পাদপ্রদীপের আলো থেকে বাধ্য হয়েই সরে যেতে হয়েছে ডোনাল্ড ট্রাম্পকে। নতুন প্রেসিডেন্ট হিসেবে জো বাইডেন আসায় বিশ্ববাসী কিছুটা স্বস্তি পেলেও বর্তমান মার্কিন প্রেসিডেন্ট পুরোপুরি সুবিধাজনক অবস্থানে নেই। কারণ, সেই চীন-রাশিয়া। নতুন বছরে পুতিন-সি চিন পিংয়ের সঙ্গে বাইডেনের সম্পর্ক কেমন থাকে, তা-ই এখন দেখার।
তথ্যসূত্র: বিবিসি, রয়টার্স, ফোর্বস, এএফপি ও সিএনএন

গত বছরের শেষদিকে যুক্তরাষ্ট্রের মসনদে পরিবর্তনের হাওয়া বয়। মার্কিন নির্বাচনে নানা নাটকীয়তার পর ডোনাল্ড ট্রাম্পের অধোগতি সুনিশ্চিত হয়েছে বটে; তবে নতুন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের মনে ক্ষমতার শুরুর দিকের স্বস্তি আর নেই। বরং রাশিয়া-চীনে কিছুটা অস্বস্তিতেই আছেন তিনি।
২০২০ সালের শেষের দিকে সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের পরাজয় নিশ্চিত হওয়া যায়। মার্কিন নির্বাচনে বাইডেনের বিজয়কে নস্যাৎ এবং সে সময় মার্কিন কংগ্রেসের যৌথ অধিবেশন বানচাল করার লক্ষ্যেই গত ৬ জানুয়ারি ক্যাপিটল হিলে হামলা চালান ট্রাম্পের উগ্র সমর্থকেরা। নজিরবিহীন ওই সহিংসতায় পাঁচজনের মৃত্যু হয়। যুক্তরাষ্ট্রের ক্যাপিটল হিলে দাঙ্গায় উসকানিমূলক পোস্ট দেওয়ার কারণে ট্রাম্পকে অনির্দিষ্টকালের জন্য নিষিদ্ধ করে ফেসবুক ও টুইটার। ফেসবুক কর্তৃপক্ষ জানায়, ট্রাম্প ২০২৩ সাল পর্যন্ত ফেসবুক ও ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করতে পারবেন না।
এত হুলুস্থুলের পরও ক্ষমতায় নির্দিষ্ট সময়ের বেশি থাকতে পারেননি ট্রাম্প। চলতি বছরের ২০ জানুয়ারি তিনি হোয়াইট হাউস ছাড়েন। যাওয়ার আগে বাইডেনের নাম উল্লেখ না করে ট্রাম্প বলেন, ‘আমি তাঁকে স্বাগত জানাচ্ছি। দেশে নতুন একটি সরকার আসতে চলেছে। নিরাপদ ও সমৃদ্ধ আমেরিকা গড়ার লক্ষ্যে আমি সেই সরকারের সাফল্য কামনা করছি।’
ট্রাম্প হোয়াইট হাউস ছাড়ার পরদিন অর্থাৎ ২১ জানুয়ারি ৪৬তম মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নেন জো বাইডেন। ওই শপথ অনুষ্ঠানে অংশ নেননি ট্রাম্প। মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএন জানায়, ১৮৬৯ সালে অ্যান্ড্রু জনসনের পর থেকে এই প্রথম কোনো মার্কিন প্রেসিডেন্ট তাঁর উত্তরসূরির অভিষেক অনুষ্ঠানে যোগদান থেকে বিরত থাকেন।
তবে উপস্থিত ছিলেন বিদায়ী ভাইস প্রেসিডেন্ট মাইক পেন্স। অন্যদের মধ্যে ছিলেন সাবেক প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা, জর্জ ডব্লিউ বুশ ও বিল ক্লিনটন এবং সাবেক ফার্স্ট লেডি মিশেল ওবামা, লরা বুশ ও হিলারি ক্লিনটন।
প্রথা অনুযায়ী প্রথমে ভাইস প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নেন কমলা হ্যারিস। যুক্তরাষ্ট্রের প্রথম নারী, প্রথম কৃষ্ণাঙ্গ আমেরিকান ও প্রথম দক্ষিণ এশীয় হিসেবে এই পদে অধিষ্ঠিত হন কমলা। এরপর শপথ গ্রহণ করেন জো বাইডেন। শপথের পর তুমুল করতালি ও হর্ষধ্বনিতে অভিনন্দন জানানো হয় এ দুজনকে।
শপথ নেওয়ার পর প্রথম দিনেই ট্রাম্পের বিতর্কিত ১৫ পদক্ষেপ ও আদেশ বাতিল করেন জো বাইডেন। এদিন তিনি ১৫টি নির্বাহী আদেশ ও দুটি দাপ্তরিক নথিতে সই করেন।
বিশ্লেষকদের মতে, নির্বাহী আদেশে স্বাক্ষরের মধ্য দিয়ে বাইডেন বুঝিয়ে দিয়েছিলেন, ট্রাম্পের নীতি পাল্টে দিতে তিনি দেরি করতে রাজি নন। ক্ষমতায় আসার এক মাস না পেরোতেই গত ২০ ফেব্রুয়ারি যুক্তরাষ্ট্রকে প্যারিস জলবায়ু চুক্তিতে ফেরান বাইডেন। এই চুক্তি থেকে বের হয়ে গিয়েছিলেন ট্রাম্প। যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে মাস্ক ব্যবহার বাধ্যতামূলক-সংক্রান্ত নির্বাহী আদেশে সই করেন বাইডেন। সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বাধ্যতামূলক মাস্ক পরার বিরোধী ছিলেন। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা থেকে যুক্তরাষ্ট্রকে প্রত্যাহার করার যে প্রক্রিয়া ট্রাম্প শুরু করেছিলেন, তা-ও থামিয়ে দেন বাইডেন।
বাইডেন আমলে চলতি বছরের অন্যতম একটি বড় ঘটনা ছিল আফগানিস্তান থেকে মার্কিন সেনা প্রত্যাহার। গত ৩১ আগস্ট আফগানিস্তান থেকে যুক্তরাষ্ট্রসহ তার সব মিত্রদেশ সেনা প্রত্যাহার করে নেয়। শেষ হয় ২০ বছরের যুদ্ধ। এর মধ্যেই ত্বরিতগতিতে আফগানিস্তানের ক্ষমতা দখল করে তালেবান। আফগানিস্তান ছাড়ার আগে রাজধানী কাবুলে বোমা হামলায় ১৩ জন মার্কিন সেনা নিহত হয়। এসব ঘটনায় যুক্তরাষ্ট্রের বিরোধী রিপাবলিকান পার্টির নেতাদের তোপের মুখে পড়েছিলেন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। রিপাবলিকান আইনপ্রণেতাদের কেউ কেউ তো বাইডেনের পদত্যাগও দাবি করে বসেন তখন।
আফগানিস্তান থেকে মার্কিন সেনা পুরোপুরি প্রত্যাহারের বিষয়ে ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারিতে চুক্তি করেছিল যুক্তরাষ্ট্র। সে সময় যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ছিলেন ট্রাম্প। সেনা প্রত্যাহারের সমালোচনার জবাবে বাইডেন বলেছিলেন, ট্রাম্পের করা চুক্তি বাস্তবায়ন করতে গিয়েই তাঁকে ৩১ আগস্টের মধ্যে আফগানিস্তান থেকে সব মার্কিন সেনা প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নিতে হয়েছে।
এদিকে ইরাক থেকেও সেনা প্রত্যাহার করার ঘোষণা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। আগামী বছরের ৩১ জানুয়ারির মধ্যে ইরাক থেকে সেনা প্রত্যাহার করবে দেশটি। এমনটি হলে সেখানেও ১৯ বছরের মার্কিন সেনা উপস্থিতির অবসান ঘটবে।
তবে বাইডেন ট্রাম্পের অনেক নীতির বিরোধিতা করলেও চীন ও রাশিয়া নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের মনোভাব আগের মতোই আছে। প্রেসিডেন্ট বাইডেনের আমলে গত মার্চে প্রথম যুক্তরাষ্ট্র ও পরে চীনের মধ্যে উচ্চপর্যায়ের আলোচনা শুরু হয়। সেখানে দুই পক্ষই পরস্পরকে তীব্র ভাষায় তিরস্কার করে।
আলাস্কার অ্যাংকোরেজ শহরে এই আলোচনায় যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিনকেন এবং জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জেইক সুলিভান। চীনের পক্ষে আলোচনায় যোগ দেন দেশটির পররাষ্ট্রনীতিবিষয়ক সবচেয়ে সিনিয়র কর্মকর্তা ইয়াং জিয়েচি ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই।
আলোচনার শুরুতেই উদ্বোধনী বিবৃতিতে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মিস্টার ব্লিনকেন একদম সোজাসাপ্টা ভাষায় বলেন, ‘চীনের বিভিন্ন পদক্ষেপের ব্যাপারে যুক্তরাষ্ট্র তার গভীর উদ্বেগ এই আলোচনায় আনবে, বিশেষ করে শিনজিয়াং, হংকং, তাইওয়ান, যুক্তরাষ্ট্রে সাইবার হামলা এবং মার্কিন মিত্রদের ওপর অর্থনৈতিক চাপ প্রয়োগের বিষয়গুলো।’
আর এর জবাবে চীনা পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই অভিযোগ করেন এই বলে যে, ওয়াশিংটন তার সামরিক পরাক্রম এবং অর্থনৈতিক শক্তিকে কাজে লাগাচ্ছে অন্য দেশকে দমিয়ে রাখতে। এত দিন বাণিজ্য ও উইঘুরদের মানবাধিকার ইস্যুতে বিরোধ থাকলেও এ বছর তাইওয়ান এবং দক্ষিণ চীন সাগরে মার্কিন কর্মকাণ্ড নিয়ে বেইজিং ও ওয়াশিংটনের বিরোধ আরও তীব্র হয়। এহেন পরিস্থিতিতে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক কিছুটা স্বাভাবিক করার উদ্দেশ্যে সোমবার চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিন পিংয়ের সঙ্গে গত ১৬ নভেম্বর ভার্চুয়াল বৈঠকে বসেন জো বাইডেন। বৈঠকে দুই দেশের মধ্যে সংঘাত থামাতে নীতিগত সীমারেখা তৈরির প্রস্তাব দেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। আর বেইজিং থেকে বাইডেনকে ‘পুরোনো বন্ধু’ বলে উষ্ণ সম্বোধন করেন চীনা প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং।
তবে যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যে বন্ধুত্বের বদলে বিরোধের আবহই এখন পর্যন্ত প্রাধান্য বিস্তার করে আছে। সর্বশেষ মুসলিম জনগোষ্ঠীর ওপর অবৈধ নজরদারির অভিযোগে দেশটির একটি জৈবপ্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানকে কালো তালিকাভুক্ত করেছে যুক্তরাষ্ট্র। ওই চীনা প্রতিষ্ঠানের ওপর রপ্তানি নিষেধাজ্ঞাও দিয়েছে মার্কিন বাণিজ্য বিভাগ।
এর আগে ১০ ডিসেম্বর আন্তর্জাতিক মানবাধিকার দিবসে যুক্তরাষ্ট্রের রাজস্ব বিভাগের অফিস অব ফরেন অ্যাসেট কন্ট্রোল (ওএফএসি) সংশ্লিষ্ট অন্যান্য দপ্তরের সঙ্গে মিলে বিভিন্ন দেশের ১৫ ব্যক্তি ও ১০ প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে। এর মধ্যে চীনের স্টার্ট-আপ সেন্সটাইম গ্রুপের নামও ছিল।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকেরা বলছেন, নতুন করে নিষেধাজ্ঞার ঘোষণা চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে সম্পর্ক আরও খারাপ করে তুলবে।
ক্ষমতা নেওয়ার পর চলতি বছরের ১৭ জুন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে বৈঠকে বসেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। মার্কিন কূটনীতিকদের বরাতে জানা যায়, সেখানে আমেরিকার প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে রাশিয়ার হস্তক্ষেপ, সাইবার হামলা, রাশিয়ার জেলবন্দী বিরোধী নেতা অ্যালেক্সেই নাভালনির মুক্তির বিষয়ের পাশাপাশি রাশিয়ায় ‘বন্দী’ আমেরিকানদের বিষয়েও কথা তোলেন। দেড় ঘণ্টার ওই বৈঠকের পর পুতিন বলেন, সেই বৈঠক ছিল পুরোপুরি গঠনমূলক। সাইবার নিরাপত্তা নিয়ে আলোচনায় সম্মত হয়েছে দুই দেশই। তবে এ নিয়ে কোনো দেশই আনুষ্ঠানিক সংবাদ সম্মেলন করেনি।
চীনের মতোই রাশিয়ার সঙ্গে ও যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্ক নিয়ত উত্থান-পতনের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়ার মধ্যে আবারও উত্তেজনা দেখা দেয়। এবারের ইস্যুটি হলো ইউক্রেন। এ নিয়ে ৮ ডিসেম্বর মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ও রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের এক বৈঠক হয়। বৈঠকে পুতিনকে কড়া হুঁশিয়ারি দেন বাইডেন। মার্কিন প্রেসিডেন্ট জানান, ইউক্রেনে রুশ অভিযানের আশঙ্কার প্রেক্ষাপটে ‘কড়া অর্থনৈতিক ও অন্যান্য ব্যবস্থা’ নেওয়ার প্রস্তুতি চলছে।
ইউক্রেন সীমান্তের কাছে ৯০ হাজারেরও বেশি রুশ সৈন্য মোতায়েন করা হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। আশঙ্কা আছে, আগামী বছরের শুরুতেই ইউক্রেনে হামলা চালাতে পারে রাশিয়া। তবে রাশিয়ার পক্ষ থেকে এসব অভিযোগ অস্বীকার করা হয়েছে।
শেষটা করা যাক ট্রাম্পকে দিয়ে। সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এরই মধ্যে জানিয়েছেন, ২০২৪ সালের মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে তিনি আবার অংশ নেবেন। এদিকে ফেসবুক-টুইটার থেকে নিষিদ্ধ হওয়ার পর গত অক্টোবরে ট্রুথ সোশ্যাল নামে এবার নতুন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম চালুর ঘোষণা দিয়ে রেখেছেন ট্রাম্প।
নতুন প্ল্যাটফর্মটি ‘বড় প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানগুলোর নিপীড়নের বিরুদ্ধে দাঁড়াবে’ বলে মন্তব্য করেছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। তাঁর অভিযোগ, প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানগুলো যুক্তরাষ্ট্রে বিরোধী মতকে ‘চুপ করিয়ে দিচ্ছে’।
প্রেসিডেন্ট আমলে সংগতি ও অসংগতিপূর্ণ নানা ধরনের কাজ করে সমালোচিত ট্রাম্প চলতি বছর প্রেসিডেন্ট না হয়েও এগুলো বলে মার্কিন গণমাধ্যমের শিরোনাম হয়েছেন। ট্রাম্পের জন্য আরেকটি খারাপ খবর হলো—এবার ফোর্বস সাময়িকীর ৪০০ মার্কিন ধনীর তালিকায় তিনি নেই। বলা হচ্ছে, মহামারি করোনা শুরু হওয়ার পর তাঁর সম্পদ কমেছে ৬০ কোটি মার্কিন ডলার।
সব মিলিয়ে বলা যায়, মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসেবে সাবেক হওয়ার পর থেকেই পাদপ্রদীপের আলো থেকে বাধ্য হয়েই সরে যেতে হয়েছে ডোনাল্ড ট্রাম্পকে। নতুন প্রেসিডেন্ট হিসেবে জো বাইডেন আসায় বিশ্ববাসী কিছুটা স্বস্তি পেলেও বর্তমান মার্কিন প্রেসিডেন্ট পুরোপুরি সুবিধাজনক অবস্থানে নেই। কারণ, সেই চীন-রাশিয়া। নতুন বছরে পুতিন-সি চিন পিংয়ের সঙ্গে বাইডেনের সম্পর্ক কেমন থাকে, তা-ই এখন দেখার।
তথ্যসূত্র: বিবিসি, রয়টার্স, ফোর্বস, এএফপি ও সিএনএন

গত বছর রোমে অনুষ্ঠিত ইউরোপীয় অ্যাকুয়াটিক্স চ্যাম্পিয়নশিপে ১০ মিটার সিঙ্ক্রো ইভেন্টে সোনা জেতেন ইউক্রেনীয় ডাইভার সোফিয়া লাইসকুন (২৩)। তবে সম্প্রতি আকস্মিকভাবে রাশিয়ার প্রতি আনুগত্য দেখানোর পর তাঁকে চরম শাস্তির মুখে পড়তে হলো। ইউক্রেনীয় ডাইভিং ফেডারেশন (ইউডিএফ) ফেডারেশনের অধীনে পাওয়া তাঁর সমস্ত...
৪৩ মিনিট আগে
পাকিস্তানের তিন বাহিনীর প্রথম প্রধান বা চিফ অব ডিফেন্স ফোর্সেস (সিডিএফ) ফিল্ড মার্শাল সৈয়দ আসিম মুনির নতুন দায়িত্ব গ্রহণের পর বলেছেন, পাকিস্তান এখন অনন্য উচ্চতায় পৌঁছে যাবে। পাকিস্তানের প্রেসিডেন্টের কার্যালয় আওয়াইন-ই-সদরে সাংবাদিকদের সঙ্গে এক ঘরোয়া আলাপে তিনি এসব কথা বলেন।
২ ঘণ্টা আগে
আগামী বছরের অর্থাৎ, ২০২৬ সালের ইউরোভিশন গানের প্রতিযোগিতা বয়কট করবে আয়ারল্যান্ড, স্পেন, নেদারল্যান্ডস ও স্লোভেনিয়া। কারণ আয়োজকেরা ইসরায়েলকে প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে দিয়েছে। দেশগুলোর অভিযোগ, গাজায় গণহত্যা চালানো ইসরায়েলকে এই প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে দেওয়া ঠিক হয়নি।
৩ ঘণ্টা আগে
ভারত ও রাশিয়ার মধ্যে কৌশলগত সম্পর্ক আরও মজবুত করার লক্ষ্যে যখন ভ্লাদিমির পুতিনের ৪-৫ ডিসেম্বরের রাষ্ট্রীয় সফর ও ২৩ তম বার্ষিক শীর্ষ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হচ্ছে, তখন কূটনৈতিক আলোচনার বাইরেও একটি বিষয় নজর কেড়েছে—রুশ প্রেসিডেন্টের খাবার সংক্রান্ত অভূতপূর্ব নিরাপত্তা ব্যবস্থা।
৩ ঘণ্টা আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

গত বছর রোমে অনুষ্ঠিত ইউরোপীয় অ্যাকুয়াটিক্স চ্যাম্পিয়নশিপে ১০ মিটার সিঙ্ক্রো ইভেন্টে সোনা জেতেন ইউক্রেনীয় ডাইভার সোফিয়া লাইসকুন (২৩)। তবে সম্প্রতি আকস্মিকভাবে রাশিয়ার প্রতি আনুগত্য দেখানোর পর তাঁকে চরম শাস্তির মুখে পড়তে হলো। ইউক্রেনীয় ডাইভিং ফেডারেশন (ইউডিএফ) ফেডারেশনের অধীনে পাওয়া তাঁর সমস্ত খেতাব, পদক ও পুরস্কার প্রত্যাহার করার দাবি জানিয়েছে।
ইউডিএফ জানিয়েছে, লাইসকুন দেশের ক্রীড়া মহলের কোনো পক্ষকেই তাঁর এই সিদ্ধান্তের কথা জানাননি। তিনি এই গুরুত্বপূর্ণ দলবদলের বিষয়ে ফেডারেশন, কোচিং স্টাফ এমনকি ইউক্রেনের যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়কেও অবগত করেননি। তাঁর এই অপ্রত্যাশিত দলবদলের ঘটনায় ফেডারেশন ‘তীব্র ক্ষোভ ও নিন্দা’ জানিয়েছে।
ফেডারেশনের পক্ষ থেকে প্রকাশিত এক বিবৃতিতে অত্যন্ত কঠোর ভাষায় বলা হয়েছে: ‘এই ধরনের পদক্ষেপ শুধু চূড়ান্তভাবে অগ্রহণযোগ্যই নয়, এগুলো জাতীয় দল এবং ইউক্রেনের মর্যাদার ওপর সরাসরি আঘাত। যে মুহূর্তে পুরো ইউক্রেনীয় দল আন্তর্জাতিক মঞ্চে আমাদের দেশের প্রতিনিধিত্ব করার অধিকারের জন্য নিঃস্বার্থভাবে লড়াই করছে, ঠিক তখনই একজন চ্যাম্পিয়নের এমন পদক্ষেপ পুরো প্রচেষ্টাকেই হেয় করে।’
ইউক্রেনীয় ফেডারেশনের এই সমালোচনার বিপরীতে লাইসকুন তাঁর সিদ্ধান্তের পক্ষে যুক্তি দিয়েছেন। রাশিয়ার সংবাদপত্র ইজভেস্তিয়াকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি অভিযোগ করেন, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ইউক্রেনে তিনি তাঁর কোচদের অধীনে আর পেশাদারভাবে ‘উন্নতি’ করতে পারছিলেন না।
লাইসকুন অভিযোগ করেন, তাঁর ইউক্রেনীয় কোচিং স্টাফে যাঁরা ছিলেন, তাঁরা ‘সবাই জিমন্যাস্ট বা ট্রাম্পোলিন ক্রীড়াবিদ ছিলেন’, এটি আন্তর্জাতিক ডাইভিং-এর মতো বিশেষায়িত খেলার জন্য অনুকূল ছিল না। তাঁর মতে, উপযুক্ত বিশেষজ্ঞের অভাবই তাঁকে দলবদলে উৎসাহিত করেছে।
লাইসকুনের দলবদলের পর ইউক্রেনীয় ডাইভিং ফেডারেশনের নির্বাহী কমিটির এক জরুরি বৈঠক বসে। সেখানে সর্বসম্মতিক্রমে তাৎক্ষণিকভাবে তাঁকে ইউক্রেন জাতীয় দল থেকে আজীবন বহিষ্কার করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
এর পাশাপাশি, ফেডারেশনের অধীনে সোফিয়া লাইসকুনের অর্জিত সমস্ত খেতাব ও পুরস্কার বাতিল করার মতো কঠিন পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে। ফেডারেশন জানিয়েছে, তারা আন্তর্জাতিক ক্রীড়া সংস্থাগুলোর কাছে আনুষ্ঠানিক আবেদন জানাবে, যাতে বর্তমান আন্তর্জাতিক মানদণ্ড অনুযায়ী এই ক্রীড়াবিদের ওপর ‘স্পোর্টস কোয়ারেন্টাইন’ আরোপ করা হয়। এর অর্থ হলো, ইউক্রেন চাচ্ছে, লাইসকুন যেন কিছু নির্দিষ্ট সময়ের জন্য আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে না পারে।
উল্লেখ্য, ২০২২ সালে ইউক্রেনে রাশিয়ার আক্রমণের পর রাশিয়া এবং বেলারুশের ক্রীড়াবিদদের ওয়ার্ল্ড অ্যাকুয়াটিক্স ইভেন্টগুলোতে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করা নিষিদ্ধ ছিল। তবে সেই বিধিনিষেধগুলো সম্প্রতি শিথিল করা হয়েছে। বর্তমানে রুশ এবং বেলারুশীয় ক্রীড়াবিদদের তাঁদের জাতীয় পতাকা বা প্রতীক ছাড়াই নিরপেক্ষ ক্রীড়াবিদ হিসেবে ব্যক্তিগত ইভেন্টগুলোতে অংশগ্রহণের অনুমতি দেওয়া হচ্ছে। আগামী জানুয়ারি থেকে তাঁরা দলগত ইভেন্টেও নিরপেক্ষ ক্রীড়াবিদ হিসেবে অংশ নিতে পারবেন। লাইসকুন-এর এই দলবদল এমন এক সময়ে ঘটল, যখন রাশিয়ার ক্রীড়াবিদেরা ধীরে ধীরে আন্তর্জাতিক ক্রীড়া মঞ্চে ফেরার সুযোগ পাচ্ছেন।

গত বছর রোমে অনুষ্ঠিত ইউরোপীয় অ্যাকুয়াটিক্স চ্যাম্পিয়নশিপে ১০ মিটার সিঙ্ক্রো ইভেন্টে সোনা জেতেন ইউক্রেনীয় ডাইভার সোফিয়া লাইসকুন (২৩)। তবে সম্প্রতি আকস্মিকভাবে রাশিয়ার প্রতি আনুগত্য দেখানোর পর তাঁকে চরম শাস্তির মুখে পড়তে হলো। ইউক্রেনীয় ডাইভিং ফেডারেশন (ইউডিএফ) ফেডারেশনের অধীনে পাওয়া তাঁর সমস্ত খেতাব, পদক ও পুরস্কার প্রত্যাহার করার দাবি জানিয়েছে।
ইউডিএফ জানিয়েছে, লাইসকুন দেশের ক্রীড়া মহলের কোনো পক্ষকেই তাঁর এই সিদ্ধান্তের কথা জানাননি। তিনি এই গুরুত্বপূর্ণ দলবদলের বিষয়ে ফেডারেশন, কোচিং স্টাফ এমনকি ইউক্রেনের যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়কেও অবগত করেননি। তাঁর এই অপ্রত্যাশিত দলবদলের ঘটনায় ফেডারেশন ‘তীব্র ক্ষোভ ও নিন্দা’ জানিয়েছে।
ফেডারেশনের পক্ষ থেকে প্রকাশিত এক বিবৃতিতে অত্যন্ত কঠোর ভাষায় বলা হয়েছে: ‘এই ধরনের পদক্ষেপ শুধু চূড়ান্তভাবে অগ্রহণযোগ্যই নয়, এগুলো জাতীয় দল এবং ইউক্রেনের মর্যাদার ওপর সরাসরি আঘাত। যে মুহূর্তে পুরো ইউক্রেনীয় দল আন্তর্জাতিক মঞ্চে আমাদের দেশের প্রতিনিধিত্ব করার অধিকারের জন্য নিঃস্বার্থভাবে লড়াই করছে, ঠিক তখনই একজন চ্যাম্পিয়নের এমন পদক্ষেপ পুরো প্রচেষ্টাকেই হেয় করে।’
ইউক্রেনীয় ফেডারেশনের এই সমালোচনার বিপরীতে লাইসকুন তাঁর সিদ্ধান্তের পক্ষে যুক্তি দিয়েছেন। রাশিয়ার সংবাদপত্র ইজভেস্তিয়াকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি অভিযোগ করেন, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ইউক্রেনে তিনি তাঁর কোচদের অধীনে আর পেশাদারভাবে ‘উন্নতি’ করতে পারছিলেন না।
লাইসকুন অভিযোগ করেন, তাঁর ইউক্রেনীয় কোচিং স্টাফে যাঁরা ছিলেন, তাঁরা ‘সবাই জিমন্যাস্ট বা ট্রাম্পোলিন ক্রীড়াবিদ ছিলেন’, এটি আন্তর্জাতিক ডাইভিং-এর মতো বিশেষায়িত খেলার জন্য অনুকূল ছিল না। তাঁর মতে, উপযুক্ত বিশেষজ্ঞের অভাবই তাঁকে দলবদলে উৎসাহিত করেছে।
লাইসকুনের দলবদলের পর ইউক্রেনীয় ডাইভিং ফেডারেশনের নির্বাহী কমিটির এক জরুরি বৈঠক বসে। সেখানে সর্বসম্মতিক্রমে তাৎক্ষণিকভাবে তাঁকে ইউক্রেন জাতীয় দল থেকে আজীবন বহিষ্কার করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
এর পাশাপাশি, ফেডারেশনের অধীনে সোফিয়া লাইসকুনের অর্জিত সমস্ত খেতাব ও পুরস্কার বাতিল করার মতো কঠিন পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে। ফেডারেশন জানিয়েছে, তারা আন্তর্জাতিক ক্রীড়া সংস্থাগুলোর কাছে আনুষ্ঠানিক আবেদন জানাবে, যাতে বর্তমান আন্তর্জাতিক মানদণ্ড অনুযায়ী এই ক্রীড়াবিদের ওপর ‘স্পোর্টস কোয়ারেন্টাইন’ আরোপ করা হয়। এর অর্থ হলো, ইউক্রেন চাচ্ছে, লাইসকুন যেন কিছু নির্দিষ্ট সময়ের জন্য আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে না পারে।
উল্লেখ্য, ২০২২ সালে ইউক্রেনে রাশিয়ার আক্রমণের পর রাশিয়া এবং বেলারুশের ক্রীড়াবিদদের ওয়ার্ল্ড অ্যাকুয়াটিক্স ইভেন্টগুলোতে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করা নিষিদ্ধ ছিল। তবে সেই বিধিনিষেধগুলো সম্প্রতি শিথিল করা হয়েছে। বর্তমানে রুশ এবং বেলারুশীয় ক্রীড়াবিদদের তাঁদের জাতীয় পতাকা বা প্রতীক ছাড়াই নিরপেক্ষ ক্রীড়াবিদ হিসেবে ব্যক্তিগত ইভেন্টগুলোতে অংশগ্রহণের অনুমতি দেওয়া হচ্ছে। আগামী জানুয়ারি থেকে তাঁরা দলগত ইভেন্টেও নিরপেক্ষ ক্রীড়াবিদ হিসেবে অংশ নিতে পারবেন। লাইসকুন-এর এই দলবদল এমন এক সময়ে ঘটল, যখন রাশিয়ার ক্রীড়াবিদেরা ধীরে ধীরে আন্তর্জাতিক ক্রীড়া মঞ্চে ফেরার সুযোগ পাচ্ছেন।

গত বছরের শেষদিকে যুক্তরাষ্ট্রের মসনদে পরিবর্তনের হাওয়া বয়। মার্কিন নির্বাচনে নানা নাটকীয়তার পর ডোনাল্ড ট্রাম্পের অধোগতি সুনিশ্চিত হয়েছে বটে; তবে নতুন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের মনে ক্ষমতার শুরুর দিকের স্বস্তি আর নেই। বরং রাশিয়া-চীনে কিছুটা অস্বস্তিতেই আছেন তিনি।
২৯ ডিসেম্বর ২০২১
পাকিস্তানের তিন বাহিনীর প্রথম প্রধান বা চিফ অব ডিফেন্স ফোর্সেস (সিডিএফ) ফিল্ড মার্শাল সৈয়দ আসিম মুনির নতুন দায়িত্ব গ্রহণের পর বলেছেন, পাকিস্তান এখন অনন্য উচ্চতায় পৌঁছে যাবে। পাকিস্তানের প্রেসিডেন্টের কার্যালয় আওয়াইন-ই-সদরে সাংবাদিকদের সঙ্গে এক ঘরোয়া আলাপে তিনি এসব কথা বলেন।
২ ঘণ্টা আগে
আগামী বছরের অর্থাৎ, ২০২৬ সালের ইউরোভিশন গানের প্রতিযোগিতা বয়কট করবে আয়ারল্যান্ড, স্পেন, নেদারল্যান্ডস ও স্লোভেনিয়া। কারণ আয়োজকেরা ইসরায়েলকে প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে দিয়েছে। দেশগুলোর অভিযোগ, গাজায় গণহত্যা চালানো ইসরায়েলকে এই প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে দেওয়া ঠিক হয়নি।
৩ ঘণ্টা আগে
ভারত ও রাশিয়ার মধ্যে কৌশলগত সম্পর্ক আরও মজবুত করার লক্ষ্যে যখন ভ্লাদিমির পুতিনের ৪-৫ ডিসেম্বরের রাষ্ট্রীয় সফর ও ২৩ তম বার্ষিক শীর্ষ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হচ্ছে, তখন কূটনৈতিক আলোচনার বাইরেও একটি বিষয় নজর কেড়েছে—রুশ প্রেসিডেন্টের খাবার সংক্রান্ত অভূতপূর্ব নিরাপত্তা ব্যবস্থা।
৩ ঘণ্টা আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

পাকিস্তানের তিন বাহিনীর প্রথম প্রধান বা চিফ অব ডিফেন্স ফোর্সেস (সিডিএফ) ফিল্ড মার্শাল সৈয়দ আসিম মুনির নতুন দায়িত্ব গ্রহণের পর বলেছেন, পাকিস্তান এখন অনন্য উচ্চতায় পৌঁছে যাবে। পাকিস্তানের প্রেসিডেন্টের কার্যালয় আওয়াইন-ই-সদরে সাংবাদিকদের সঙ্গে এক ঘরোয়া আলাপে তিনি এসব কথা বলেন।
আসিম মুনির বলেন, ‘সবই তো ঠিক আছে, আপনাদের চোখের সামনেই তো সব। অবস্থার উন্নতি হচ্ছে, আর এখন থেকে পাকিস্তান আরও অনন্য উচ্চতায় পৌঁছাবে।’ তাঁর এই মন্তব্য এল ঠিক এমন এক সময়ে, যখন প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ একটি নোট প্রেসিডেন্ট আসিফ আলী জারদারির কাছে পাঠিয়েছিলেন। তাতে সেনাপ্রধান মুনিরকে পাকিস্তানের প্রথম চিফ অব ডিফেন্স ফোর্সেস (সিডিএফ) হিসেবে নিয়োগ করার সুপারিশ করা হয়। এরপরই প্রেসিডেন্ট এই অনুমোদন দেন।
সত্তরের দশকের পর দেশটির সামরিক কমান্ডে এটি হলো সবচেয়ে বড় ও ব্যাপক পরিবর্তন। প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফের পরামর্শক্রমে প্রেসিডেন্ট আসিফ আলী জারদারি এই নিয়োগে অনুমোদন দেন। খবর দ্য ডনের
পাকিস্তানের প্রেসিডেন্টের কার্যালয় এক বিবৃতিতে জানায়, ‘প্রেসিডেন্ট আসিফ আলী জারদারি ফিল্ড মার্শাল সৈয়দ আসিম মুনিরকে পাঁচ বছরের জন্য সেনাপ্রধানের (সিওএএস) সঙ্গে সমান্তরালভাবে সিডিএফ হিসেবেও নিয়োগে অনুমোদন দিয়েছেন।’ এই বিবৃতি বহুদিনের জল্পনা-কল্পনার অবসান ঘটাল। এর আগে গতকাল সন্ধ্যায় প্রধানমন্ত্রী শাহবাজই প্রেসিডেন্টকে এই নতুন দ্বৈত দায়িত্বপ্রাপ্ত পদে ফিল্ড মার্শাল মুনিরকে নিয়োগের পরামর্শ দিয়েছিলেন।
প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর থেকে বলা হয়, ‘প্রধানমন্ত্রী ফিল্ড মার্শাল সৈয়দ আসিম মুনিরকে সেনাবাহিনীর প্রধান এবং চিফ অব ডিফেন্স ফোর্সেস হিসেবে নিয়োগের সারসংক্ষেপ প্রেসিডেন্ট কার্যালয়ে পাঠিয়েছেন।’
এই নতুন ব্যবস্থা পাকিস্তানের সংবিধানের ২৭তম সংশোধনীতে ২৪৩ অনুচ্ছেদের পরিবর্তনের মাধ্যমে তৈরি করা হয়েছে। যার ফলে একটি অফিসের অধীনে সশস্ত্র বাহিনীর অপারেশনাল, প্রশাসনিক ও কৌশলগত ক্ষমতাকে একত্র করা হয়েছে। সংশোধিত ২৪৩ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী, প্রধানমন্ত্রীর পরামর্শক্রমে প্রেসিডেন্ট সেনাপ্রধানকে নিয়োগ করবেন, যিনি একই সঙ্গে চিফ অব ডিফেন্স ফোর্সেস হিসেবেও কাজ করবেন।
এই সংশোধনীর মাধ্যমে ১৯৭৬ সাল থেকে চালু থাকা তিন বাহিনীর সমন্বয় ব্যবস্থা—চেয়ারম্যান জয়েন্ট চিফস অব স্টাফ কমিটির (সিজেসিএসসি) অফিস বিলুপ্ত করা হয়। এর ফলে যৌথ কমান্ডের ইন্টিগ্রেশন সিডিএফের হাতে চলে এল।
সাংবিধানিক এই আমূল পরিবর্তনকে সামরিক বাহিনীর আইনি কাঠামোর মধ্যে আনার জন্য সরকার ২৭তম সংশোধনীর পরপরই ১৯৫২ সালের পাকিস্তান আর্মি অ্যাক্টেও (পিএএ) সংশোধন আনে। পিএএর ৮এ অনুচ্ছেদের উপধারা (১) এখন জানাচ্ছে, ‘প্রথমবারের মতো সেনাবাহিনীর প্রধান যিনি একই সঙ্গে চিফ অব ডিফেন্স ফোর্সেস হবেন [...], তাঁর মেয়াদ এই ধারার অধীনে ওই পদের বিজ্ঞপ্তির তারিখ থেকে শুরু হবে।’
আরও বলা হয়েছে, এই প্রথম সিওএএসসহ-সিডিএফের বিজ্ঞপ্তি জারি হলে ‘বর্তমান সেনাপ্রধানের বিদ্যমান মেয়াদ ওই বিজ্ঞপ্তির তারিখ থেকে পুনরায় শুরু হয়েছে বলে গণ্য হবে।’ ৮এ অনুচ্ছেদের উপধারা (৩) অনুযায়ী, সিওএএস যিনি একই সঙ্গে সিডিএফেরও দায়িত্বে থাকবেন, তাঁর ‘শর্তাবলি ও নিয়ম’ প্রধানমন্ত্রীর পরামর্শক্রমে প্রেসিডেন্ট স্থির করবেন।
ফিল্ড মার্শাল মুনির ২০২২ সালের ২৯ নভেম্বর ১৭তম সেনাপ্রধান হিসেবে দায়িত্ব নিয়েছিলেন। ২০২৪ সালের নভেম্বরে সরকার পিএএ-তে পরিবর্তন আনে, যেখানে সিজেসিএসসির মেয়াদ তিন বছর অপরিবর্তিত রেখে বাকি তিন বাহিনীর প্রধানদের মেয়াদ তিন থেকে বাড়িয়ে পাঁচ বছর করা হয়। একই সংশোধনীতে সার্ভিস চিফদের পুনর্নিয়োগ বা তাঁদের মেয়াদ পাঁচ বছর পর্যন্ত বাড়ানোর সুযোগ রাখা হয়, যা আগে সর্বোচ্চ তিন বছর ছিল।

পাকিস্তানের তিন বাহিনীর প্রথম প্রধান বা চিফ অব ডিফেন্স ফোর্সেস (সিডিএফ) ফিল্ড মার্শাল সৈয়দ আসিম মুনির নতুন দায়িত্ব গ্রহণের পর বলেছেন, পাকিস্তান এখন অনন্য উচ্চতায় পৌঁছে যাবে। পাকিস্তানের প্রেসিডেন্টের কার্যালয় আওয়াইন-ই-সদরে সাংবাদিকদের সঙ্গে এক ঘরোয়া আলাপে তিনি এসব কথা বলেন।
আসিম মুনির বলেন, ‘সবই তো ঠিক আছে, আপনাদের চোখের সামনেই তো সব। অবস্থার উন্নতি হচ্ছে, আর এখন থেকে পাকিস্তান আরও অনন্য উচ্চতায় পৌঁছাবে।’ তাঁর এই মন্তব্য এল ঠিক এমন এক সময়ে, যখন প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ একটি নোট প্রেসিডেন্ট আসিফ আলী জারদারির কাছে পাঠিয়েছিলেন। তাতে সেনাপ্রধান মুনিরকে পাকিস্তানের প্রথম চিফ অব ডিফেন্স ফোর্সেস (সিডিএফ) হিসেবে নিয়োগ করার সুপারিশ করা হয়। এরপরই প্রেসিডেন্ট এই অনুমোদন দেন।
সত্তরের দশকের পর দেশটির সামরিক কমান্ডে এটি হলো সবচেয়ে বড় ও ব্যাপক পরিবর্তন। প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফের পরামর্শক্রমে প্রেসিডেন্ট আসিফ আলী জারদারি এই নিয়োগে অনুমোদন দেন। খবর দ্য ডনের
পাকিস্তানের প্রেসিডেন্টের কার্যালয় এক বিবৃতিতে জানায়, ‘প্রেসিডেন্ট আসিফ আলী জারদারি ফিল্ড মার্শাল সৈয়দ আসিম মুনিরকে পাঁচ বছরের জন্য সেনাপ্রধানের (সিওএএস) সঙ্গে সমান্তরালভাবে সিডিএফ হিসেবেও নিয়োগে অনুমোদন দিয়েছেন।’ এই বিবৃতি বহুদিনের জল্পনা-কল্পনার অবসান ঘটাল। এর আগে গতকাল সন্ধ্যায় প্রধানমন্ত্রী শাহবাজই প্রেসিডেন্টকে এই নতুন দ্বৈত দায়িত্বপ্রাপ্ত পদে ফিল্ড মার্শাল মুনিরকে নিয়োগের পরামর্শ দিয়েছিলেন।
প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর থেকে বলা হয়, ‘প্রধানমন্ত্রী ফিল্ড মার্শাল সৈয়দ আসিম মুনিরকে সেনাবাহিনীর প্রধান এবং চিফ অব ডিফেন্স ফোর্সেস হিসেবে নিয়োগের সারসংক্ষেপ প্রেসিডেন্ট কার্যালয়ে পাঠিয়েছেন।’
এই নতুন ব্যবস্থা পাকিস্তানের সংবিধানের ২৭তম সংশোধনীতে ২৪৩ অনুচ্ছেদের পরিবর্তনের মাধ্যমে তৈরি করা হয়েছে। যার ফলে একটি অফিসের অধীনে সশস্ত্র বাহিনীর অপারেশনাল, প্রশাসনিক ও কৌশলগত ক্ষমতাকে একত্র করা হয়েছে। সংশোধিত ২৪৩ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী, প্রধানমন্ত্রীর পরামর্শক্রমে প্রেসিডেন্ট সেনাপ্রধানকে নিয়োগ করবেন, যিনি একই সঙ্গে চিফ অব ডিফেন্স ফোর্সেস হিসেবেও কাজ করবেন।
এই সংশোধনীর মাধ্যমে ১৯৭৬ সাল থেকে চালু থাকা তিন বাহিনীর সমন্বয় ব্যবস্থা—চেয়ারম্যান জয়েন্ট চিফস অব স্টাফ কমিটির (সিজেসিএসসি) অফিস বিলুপ্ত করা হয়। এর ফলে যৌথ কমান্ডের ইন্টিগ্রেশন সিডিএফের হাতে চলে এল।
সাংবিধানিক এই আমূল পরিবর্তনকে সামরিক বাহিনীর আইনি কাঠামোর মধ্যে আনার জন্য সরকার ২৭তম সংশোধনীর পরপরই ১৯৫২ সালের পাকিস্তান আর্মি অ্যাক্টেও (পিএএ) সংশোধন আনে। পিএএর ৮এ অনুচ্ছেদের উপধারা (১) এখন জানাচ্ছে, ‘প্রথমবারের মতো সেনাবাহিনীর প্রধান যিনি একই সঙ্গে চিফ অব ডিফেন্স ফোর্সেস হবেন [...], তাঁর মেয়াদ এই ধারার অধীনে ওই পদের বিজ্ঞপ্তির তারিখ থেকে শুরু হবে।’
আরও বলা হয়েছে, এই প্রথম সিওএএসসহ-সিডিএফের বিজ্ঞপ্তি জারি হলে ‘বর্তমান সেনাপ্রধানের বিদ্যমান মেয়াদ ওই বিজ্ঞপ্তির তারিখ থেকে পুনরায় শুরু হয়েছে বলে গণ্য হবে।’ ৮এ অনুচ্ছেদের উপধারা (৩) অনুযায়ী, সিওএএস যিনি একই সঙ্গে সিডিএফেরও দায়িত্বে থাকবেন, তাঁর ‘শর্তাবলি ও নিয়ম’ প্রধানমন্ত্রীর পরামর্শক্রমে প্রেসিডেন্ট স্থির করবেন।
ফিল্ড মার্শাল মুনির ২০২২ সালের ২৯ নভেম্বর ১৭তম সেনাপ্রধান হিসেবে দায়িত্ব নিয়েছিলেন। ২০২৪ সালের নভেম্বরে সরকার পিএএ-তে পরিবর্তন আনে, যেখানে সিজেসিএসসির মেয়াদ তিন বছর অপরিবর্তিত রেখে বাকি তিন বাহিনীর প্রধানদের মেয়াদ তিন থেকে বাড়িয়ে পাঁচ বছর করা হয়। একই সংশোধনীতে সার্ভিস চিফদের পুনর্নিয়োগ বা তাঁদের মেয়াদ পাঁচ বছর পর্যন্ত বাড়ানোর সুযোগ রাখা হয়, যা আগে সর্বোচ্চ তিন বছর ছিল।

গত বছরের শেষদিকে যুক্তরাষ্ট্রের মসনদে পরিবর্তনের হাওয়া বয়। মার্কিন নির্বাচনে নানা নাটকীয়তার পর ডোনাল্ড ট্রাম্পের অধোগতি সুনিশ্চিত হয়েছে বটে; তবে নতুন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের মনে ক্ষমতার শুরুর দিকের স্বস্তি আর নেই। বরং রাশিয়া-চীনে কিছুটা অস্বস্তিতেই আছেন তিনি।
২৯ ডিসেম্বর ২০২১
গত বছর রোমে অনুষ্ঠিত ইউরোপীয় অ্যাকুয়াটিক্স চ্যাম্পিয়নশিপে ১০ মিটার সিঙ্ক্রো ইভেন্টে সোনা জেতেন ইউক্রেনীয় ডাইভার সোফিয়া লাইসকুন (২৩)। তবে সম্প্রতি আকস্মিকভাবে রাশিয়ার প্রতি আনুগত্য দেখানোর পর তাঁকে চরম শাস্তির মুখে পড়তে হলো। ইউক্রেনীয় ডাইভিং ফেডারেশন (ইউডিএফ) ফেডারেশনের অধীনে পাওয়া তাঁর সমস্ত...
৪৩ মিনিট আগে
আগামী বছরের অর্থাৎ, ২০২৬ সালের ইউরোভিশন গানের প্রতিযোগিতা বয়কট করবে আয়ারল্যান্ড, স্পেন, নেদারল্যান্ডস ও স্লোভেনিয়া। কারণ আয়োজকেরা ইসরায়েলকে প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে দিয়েছে। দেশগুলোর অভিযোগ, গাজায় গণহত্যা চালানো ইসরায়েলকে এই প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে দেওয়া ঠিক হয়নি।
৩ ঘণ্টা আগে
ভারত ও রাশিয়ার মধ্যে কৌশলগত সম্পর্ক আরও মজবুত করার লক্ষ্যে যখন ভ্লাদিমির পুতিনের ৪-৫ ডিসেম্বরের রাষ্ট্রীয় সফর ও ২৩ তম বার্ষিক শীর্ষ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হচ্ছে, তখন কূটনৈতিক আলোচনার বাইরেও একটি বিষয় নজর কেড়েছে—রুশ প্রেসিডেন্টের খাবার সংক্রান্ত অভূতপূর্ব নিরাপত্তা ব্যবস্থা।
৩ ঘণ্টা আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

আগামী বছরের অর্থাৎ, ২০২৬ সালের ইউরোভিশন গানের প্রতিযোগিতা বয়কট করবে আয়ারল্যান্ড, স্পেন, নেদারল্যান্ডস ও স্লোভেনিয়া। কারণ আয়োজকেরা ইসরায়েলকে প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে দিয়েছে। দেশগুলোর অভিযোগ, গাজায় গণহত্যা চালানো ইসরায়েলকে এই প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে দেওয়া ঠিক হয়নি।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির খবরে বলা হয়েছে, গাজায় যুদ্ধ এবং নির্বাচনে অনিয়মের অভিযোগ তুলে এসব দেশ ইসরায়েলকে বাদ দেওয়ার দাবি করেছিল। জেনেভায় এক বৈঠকে গোপন ভোটের দাবি তোলে স্পেনের সম্প্রচার সংস্থা আরটিভিই। তারা জানায়, আয়োজনকারীরা সেই দাবি মানেনি। এতে উৎসবের প্রতি তাদের অবিশ্বাস আরও বেড়েছে।
আয়ারল্যান্ডের সংবাদমাধ্যম আরটিই জানায়, গাজার ভয়াবহ প্রাণহানি এবং চলমান মানবিক সংকটের সময়ে প্রতিযোগিতায় অংশ নেওয়া তাদের কাছে অগ্রহণযোগ্য। স্পেন ইউরোভিশনের ‘বিগ ফাইভ’ দেশের একটি। ফ্রান্স, জার্মানি, ইতালি ও যুক্তরাজ্যের সঙ্গে স্পেনের শিল্পীরা সরাসরি ফাইনালে ওঠে। কারণ এসব দেশের সম্প্রচার সংস্থা ইবিইউকে সবচেয়ে বেশি অর্থ দেয়। গতকাল বৃহস্পতিবার প্রায় ৫০টি সম্প্রচার সংস্থা—যার মধ্যে বিবিসিও আছে—ইউরোপিয়ান ব্রডকাস্টিং ইউনিয়নের (ইবিইউ) বৈঠকে যোগ দেয়। প্রতিবছর ১৫ কোটির বেশি দর্শক এই প্রতিযোগিতা দেখে, তাই ভবিষ্যৎ নিয়ে আলোচনা হয়। ইসরায়েল তাদের অংশগ্রহণকারী ইউভাল রাফায়েলের পক্ষে ভোট বাড়াতে অন্যদের সাহায্য নিয়েছে, এমন অভিযোগের পর সরকার ও তৃতীয় পক্ষের প্রভাব ঠেকাতে নতুন নিয়মে সম্মতি চাইছিল ইবিইউ।
বিবিসি জানায়, এই নিয়ম মানার ভোটের সঙ্গে একটি শর্ত জুড়ে দেওয়া হয়। সদস্যরা রাজি হলে ইসরায়েলকে নিয়ে আর কোনো ভোট হবে না। ইবিইউ জানায়, যারা নতুন নিয়ম মানতে সম্মত, তারা ইউরোভিশন ২০২৬-এ অংশ নিতে পারবে। ইউরোভিশন পরিচালক মার্টিন গ্রিন বলেন, সদস্যরা ইসরায়েলের অংশগ্রহণ নিয়ে খোলামেলা বিতর্কের সুযোগ পেয়েছে। ভোটে দেখা গেছে, অধিকাংশই চায় এই প্রতিযোগিতা রাজনৈতিক মঞ্চ না হোক, নিরপেক্ষতা বজায় থাকুক।
ইসরায়েলের প্রেসিডেন্ট আইজ্যাক হেরজগ সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানান। তিনি বলেন, এটি সংহতি, বন্ধুত্ব ও সহযোগিতার প্রতীক। ইসরায়েল বিশ্বমঞ্চে প্রতিনিধিত্ব পাওয়ার যোগ্য। ইসরায়েলের সম্প্রচার সংস্থা কান–এর প্রধান গলান ইয়োখপাজ বলেন, ইসরায়েলকে সরাতে চাওয়া সংস্কৃতিগত বয়কট ছাড়া কিছু নয়। আজ বয়কট শুরু হলে কাল অন্যদেরও ক্ষতি হতে পারে। ইউরোভিশনের ৭০ তম বছরে কি এমন স্মৃতি আমরা চাই?
যুক্তরাজ্যে ইউরোভিশন দেখায় বিবিসি। তারা জানায়, ইবিইউর নিয়ম কার্যকরে তারা সম্মিলিত সিদ্ধান্তকে সমর্থন করে। তবে এই সিদ্ধান্ত ইউরোভিশন সম্প্রদায়ের ভেতর বড় বিভাজন তৈরি করেছে। ডাচ সম্প্রচার সংস্থা অ্যাভরোট্রস জানায়, বর্তমান পরিস্থিতিতে অংশগ্রহণ তাদের মূল মূল্যবোধের সঙ্গে যায় না।
স্পেনের আরটিভিই জানায়, গত সেপ্টেম্বরেই তারা সিদ্ধান্ত নিয়েছিল—ইসরায়েল থাকলে স্পেন ইউরোভিশন থেকে সরে দাঁড়াবে। এই কারণে ২০২৬ সালের ফাইনাল ও সেমিফাইনাল তারা সম্প্রচারও করবে না। স্লোভেনিয়ার আরটিভিও জানায়, তাদের অবস্থান অপরিবর্তিত। নিয়ম বদলালেও মত বদলায়নি। ন্যায়নীতি রক্ষা করা তাদের দায়িত্ব। বেলজিয়ামের সম্প্রচার সংস্থা বলেছে, তারা কয়েক দিনের মধ্যে অবস্থান জানাবে।
অন্যদিকে নরওয়ে, সুইডেন, ফিনল্যান্ড, ডেনমার্ক ও আইসল্যান্ডসহ নর্ডিক দেশগুলো নিয়ম সংশোধনকে সমর্থন করেছে। তবে আইসল্যান্ড এখনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়নি। জার্মানি, যারা আগে বলেছিল ইসরায়েল বাদ গেলে তারাও সরে দাঁড়াবে, সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছে। তাদের সংস্থা এআরডি জানায়, তারা পরের বছর অংশ নিতে আগ্রহী এবং বৈচিত্র্য ও সংহতির উৎসব হিসেবে এটিকে দেখে। তবে যারা সরে দাঁড়িয়েছে, তাদের সিদ্ধান্তকে তারা সম্মান করে।

আগামী বছরের অর্থাৎ, ২০২৬ সালের ইউরোভিশন গানের প্রতিযোগিতা বয়কট করবে আয়ারল্যান্ড, স্পেন, নেদারল্যান্ডস ও স্লোভেনিয়া। কারণ আয়োজকেরা ইসরায়েলকে প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে দিয়েছে। দেশগুলোর অভিযোগ, গাজায় গণহত্যা চালানো ইসরায়েলকে এই প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে দেওয়া ঠিক হয়নি।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির খবরে বলা হয়েছে, গাজায় যুদ্ধ এবং নির্বাচনে অনিয়মের অভিযোগ তুলে এসব দেশ ইসরায়েলকে বাদ দেওয়ার দাবি করেছিল। জেনেভায় এক বৈঠকে গোপন ভোটের দাবি তোলে স্পেনের সম্প্রচার সংস্থা আরটিভিই। তারা জানায়, আয়োজনকারীরা সেই দাবি মানেনি। এতে উৎসবের প্রতি তাদের অবিশ্বাস আরও বেড়েছে।
আয়ারল্যান্ডের সংবাদমাধ্যম আরটিই জানায়, গাজার ভয়াবহ প্রাণহানি এবং চলমান মানবিক সংকটের সময়ে প্রতিযোগিতায় অংশ নেওয়া তাদের কাছে অগ্রহণযোগ্য। স্পেন ইউরোভিশনের ‘বিগ ফাইভ’ দেশের একটি। ফ্রান্স, জার্মানি, ইতালি ও যুক্তরাজ্যের সঙ্গে স্পেনের শিল্পীরা সরাসরি ফাইনালে ওঠে। কারণ এসব দেশের সম্প্রচার সংস্থা ইবিইউকে সবচেয়ে বেশি অর্থ দেয়। গতকাল বৃহস্পতিবার প্রায় ৫০টি সম্প্রচার সংস্থা—যার মধ্যে বিবিসিও আছে—ইউরোপিয়ান ব্রডকাস্টিং ইউনিয়নের (ইবিইউ) বৈঠকে যোগ দেয়। প্রতিবছর ১৫ কোটির বেশি দর্শক এই প্রতিযোগিতা দেখে, তাই ভবিষ্যৎ নিয়ে আলোচনা হয়। ইসরায়েল তাদের অংশগ্রহণকারী ইউভাল রাফায়েলের পক্ষে ভোট বাড়াতে অন্যদের সাহায্য নিয়েছে, এমন অভিযোগের পর সরকার ও তৃতীয় পক্ষের প্রভাব ঠেকাতে নতুন নিয়মে সম্মতি চাইছিল ইবিইউ।
বিবিসি জানায়, এই নিয়ম মানার ভোটের সঙ্গে একটি শর্ত জুড়ে দেওয়া হয়। সদস্যরা রাজি হলে ইসরায়েলকে নিয়ে আর কোনো ভোট হবে না। ইবিইউ জানায়, যারা নতুন নিয়ম মানতে সম্মত, তারা ইউরোভিশন ২০২৬-এ অংশ নিতে পারবে। ইউরোভিশন পরিচালক মার্টিন গ্রিন বলেন, সদস্যরা ইসরায়েলের অংশগ্রহণ নিয়ে খোলামেলা বিতর্কের সুযোগ পেয়েছে। ভোটে দেখা গেছে, অধিকাংশই চায় এই প্রতিযোগিতা রাজনৈতিক মঞ্চ না হোক, নিরপেক্ষতা বজায় থাকুক।
ইসরায়েলের প্রেসিডেন্ট আইজ্যাক হেরজগ সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানান। তিনি বলেন, এটি সংহতি, বন্ধুত্ব ও সহযোগিতার প্রতীক। ইসরায়েল বিশ্বমঞ্চে প্রতিনিধিত্ব পাওয়ার যোগ্য। ইসরায়েলের সম্প্রচার সংস্থা কান–এর প্রধান গলান ইয়োখপাজ বলেন, ইসরায়েলকে সরাতে চাওয়া সংস্কৃতিগত বয়কট ছাড়া কিছু নয়। আজ বয়কট শুরু হলে কাল অন্যদেরও ক্ষতি হতে পারে। ইউরোভিশনের ৭০ তম বছরে কি এমন স্মৃতি আমরা চাই?
যুক্তরাজ্যে ইউরোভিশন দেখায় বিবিসি। তারা জানায়, ইবিইউর নিয়ম কার্যকরে তারা সম্মিলিত সিদ্ধান্তকে সমর্থন করে। তবে এই সিদ্ধান্ত ইউরোভিশন সম্প্রদায়ের ভেতর বড় বিভাজন তৈরি করেছে। ডাচ সম্প্রচার সংস্থা অ্যাভরোট্রস জানায়, বর্তমান পরিস্থিতিতে অংশগ্রহণ তাদের মূল মূল্যবোধের সঙ্গে যায় না।
স্পেনের আরটিভিই জানায়, গত সেপ্টেম্বরেই তারা সিদ্ধান্ত নিয়েছিল—ইসরায়েল থাকলে স্পেন ইউরোভিশন থেকে সরে দাঁড়াবে। এই কারণে ২০২৬ সালের ফাইনাল ও সেমিফাইনাল তারা সম্প্রচারও করবে না। স্লোভেনিয়ার আরটিভিও জানায়, তাদের অবস্থান অপরিবর্তিত। নিয়ম বদলালেও মত বদলায়নি। ন্যায়নীতি রক্ষা করা তাদের দায়িত্ব। বেলজিয়ামের সম্প্রচার সংস্থা বলেছে, তারা কয়েক দিনের মধ্যে অবস্থান জানাবে।
অন্যদিকে নরওয়ে, সুইডেন, ফিনল্যান্ড, ডেনমার্ক ও আইসল্যান্ডসহ নর্ডিক দেশগুলো নিয়ম সংশোধনকে সমর্থন করেছে। তবে আইসল্যান্ড এখনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়নি। জার্মানি, যারা আগে বলেছিল ইসরায়েল বাদ গেলে তারাও সরে দাঁড়াবে, সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছে। তাদের সংস্থা এআরডি জানায়, তারা পরের বছর অংশ নিতে আগ্রহী এবং বৈচিত্র্য ও সংহতির উৎসব হিসেবে এটিকে দেখে। তবে যারা সরে দাঁড়িয়েছে, তাদের সিদ্ধান্তকে তারা সম্মান করে।

গত বছরের শেষদিকে যুক্তরাষ্ট্রের মসনদে পরিবর্তনের হাওয়া বয়। মার্কিন নির্বাচনে নানা নাটকীয়তার পর ডোনাল্ড ট্রাম্পের অধোগতি সুনিশ্চিত হয়েছে বটে; তবে নতুন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের মনে ক্ষমতার শুরুর দিকের স্বস্তি আর নেই। বরং রাশিয়া-চীনে কিছুটা অস্বস্তিতেই আছেন তিনি।
২৯ ডিসেম্বর ২০২১
গত বছর রোমে অনুষ্ঠিত ইউরোপীয় অ্যাকুয়াটিক্স চ্যাম্পিয়নশিপে ১০ মিটার সিঙ্ক্রো ইভেন্টে সোনা জেতেন ইউক্রেনীয় ডাইভার সোফিয়া লাইসকুন (২৩)। তবে সম্প্রতি আকস্মিকভাবে রাশিয়ার প্রতি আনুগত্য দেখানোর পর তাঁকে চরম শাস্তির মুখে পড়তে হলো। ইউক্রেনীয় ডাইভিং ফেডারেশন (ইউডিএফ) ফেডারেশনের অধীনে পাওয়া তাঁর সমস্ত...
৪৩ মিনিট আগে
পাকিস্তানের তিন বাহিনীর প্রথম প্রধান বা চিফ অব ডিফেন্স ফোর্সেস (সিডিএফ) ফিল্ড মার্শাল সৈয়দ আসিম মুনির নতুন দায়িত্ব গ্রহণের পর বলেছেন, পাকিস্তান এখন অনন্য উচ্চতায় পৌঁছে যাবে। পাকিস্তানের প্রেসিডেন্টের কার্যালয় আওয়াইন-ই-সদরে সাংবাদিকদের সঙ্গে এক ঘরোয়া আলাপে তিনি এসব কথা বলেন।
২ ঘণ্টা আগে
ভারত ও রাশিয়ার মধ্যে কৌশলগত সম্পর্ক আরও মজবুত করার লক্ষ্যে যখন ভ্লাদিমির পুতিনের ৪-৫ ডিসেম্বরের রাষ্ট্রীয় সফর ও ২৩ তম বার্ষিক শীর্ষ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হচ্ছে, তখন কূটনৈতিক আলোচনার বাইরেও একটি বিষয় নজর কেড়েছে—রুশ প্রেসিডেন্টের খাবার সংক্রান্ত অভূতপূর্ব নিরাপত্তা ব্যবস্থা।
৩ ঘণ্টা আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

ভারত ও রাশিয়ার মধ্যে কৌশলগত সম্পর্ক আরও মজবুত করার লক্ষ্যে যখন ভ্লাদিমির পুতিনের ৪-৫ ডিসেম্বরের রাষ্ট্রীয় সফর ও ২৩ তম বার্ষিক শীর্ষ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হচ্ছে, তখন কূটনৈতিক আলোচনার বাইরেও একটি বিষয় নজর কেড়েছে—রুশ প্রেসিডেন্টের খাবার সংক্রান্ত অভূতপূর্ব নিরাপত্তা ব্যবস্থা। অন্য বিশ্বনেতাদের মতো তিনিও আনুষ্ঠানিক ভোজসভায় অংশ নেন, তবে তাঁর খাবার সবচেয়ে কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রিত।
পুতিন হোটেল বা আয়োজক দেশের কর্মীদের তৈরি খাবার গ্রহণ করেন না। তাঁর খাবারের জন্য বিশেষ নিরাপত্তা প্রোটোকল অনুসরণ করা হয়।
বিদেশ সফরে পুতিনের খাদ্য ব্যবস্থাপনা প্রায় সামরিক নির্ভুলতার সঙ্গে নিয়ন্ত্রিত হয়। এই কঠোরতার মূল কারণ হলো নিরাপত্তা—বিশেষজ্ঞদের মতে, সম্ভাব্য বিষক্রিয়া বা গুপ্তহত্যার চেষ্টা এড়াতে এই ব্যবস্থা অপরিহার্য। পুতিনের জন্য খাবার পরিবেশনের আগে যেসব প্রক্রিয়া অনুসরণ করা হয়:
বিশেষ শেফ ও লজিস্টিকস: প্রশিক্ষিত রুশ শেফ, পুষ্টিবিদ এবং সহযোগী কর্মীরা তাঁর সঙ্গে ফ্লাইটে আসেন। তাঁরাই বিশেষভাবে নিয়ন্ত্রিত রান্নাঘরে পুতিনের খাবার তৈরি করেন।
মোবাইল পরীক্ষাগার: তিনি ভ্রমণের সময় একটি অত্যাধুনিক মোবাইল খাদ্য পরীক্ষাগারও সঙ্গে রাখেন। এই ল্যাব পরিবেশনের আগে প্রতিটি খাদ্য এবং পানীয়ের উপাদান দ্রুত পরীক্ষা করে সম্ভাব্য বিষ বা ক্ষতিকারক বস্তুর উপস্থিতি যাচাই করে।
নিয়ন্ত্রিত উপাদান: খাবারের উপাদান হয় সরাসরি রাশিয়া থেকে আনা হয়, নতুবা আয়োজক দেশে দীর্ঘ পরীক্ষার মাধ্যমে এর নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হয়। শুধু অনুমোদিত এবং পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে যাচাই করা উপাদানই তাঁর রান্নাঘরে প্রবেশাধিকার পায়।
বিশেষ পরিবেশন: আনুষ্ঠানিক ভোজসভার ক্ষেত্রেও এই সতর্কতা বজায় থাকে। যদিও তিনি উপস্থিত থাকেন, কিন্তু সাধারণত তাঁর প্লেটে পরিবেশিত খাবারটি নিজস্ব শেফদের দ্বারা পৃথকভাবে প্রস্তুতকৃত হয়। খাদ্য পরিবেশনের আগে প্রশিক্ষিত পরীক্ষকদের দ্বারা চূড়ান্ত যাচাই করা হয়। এই প্রক্রিয়া মস্কো এবং বিদেশে উভয় ক্ষেত্রেই অনুসরণ করা হয়।
পুতিনের দৈনন্দিন খাদ্যাভ্যাস
খাবারের ব্যবস্থা নিয়ে এত কড়াকড়ি থাকলেও, পুতিনের দৈনন্দিন খাদ্যতালিকা কিন্তু বেশ সাধারণ। তাঁর জীবনযাপনও সুশৃঙ্খল। তিনি জমকালো ভোজের পরিবর্তে পুষ্টিকর ও সহজলভ্য খাবার পছন্দ করেন।
সকালের নাশতা: তাঁর সকাল শুরু হয় উচ্চ-প্রোটিন এবং কম-চিনিযুক্ত খাবার দিয়ে। সাধারণত মধুসহ ভরোগ (Tvorog, রুশ কটেজ চিজ) অথবা পরিজ (স্টার্চ ও পানি বা দুধ সহযোগে তৈরি) প্রধান খাদ্য। এ ছাড়া তিনি তাজা ফলের রস এবং মাঝে মাঝে কাঁচা কোয়েলের ডিম বা অমলেট গ্রহণ করেন। তাঁর খাদ্যাভ্যাসে অতিরিক্ত মিষ্টি বা চর্বিযুক্ত খাবারের স্থান নেই।
দুপুরের ও রাতের খাবার: পুতিন লাল মাংসের চেয়ে মাছ বেশি পছন্দ করেন, বিশেষত গ্রিলড বা স্মোকড মাছের পদ। ভেড়ার মাংসও তাঁর প্রিয়। তবে অতিরিক্ত মসলাযুক্ত রান্না তিনি এড়িয়ে চলেন। তাঁর বেশির ভাগ খাবারেই টমেটো, শসা এবং অন্যান্য সাধারণ সবজির সালাদ বাধ্যতামূলক। এই সবজিগুলো ভিটামিন এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্টের জোগান দেয়।
পানীয় ও ডেজার্ট: পুতিন মিষ্টি বেক করা সামগ্রী, কেক বা বাটারি পেস্ট্রি একদম পছন্দ করেন না। পানীয়ের ক্ষেত্রে তাজা জুস, সাধারণ ভেষজ পানীয় এবং কেফির (এক প্রকার ফার্মেন্টেড দুগ্ধজাত পানীয়) পান করেন। তবে তাঁর সুশৃঙ্খল রুটিনের মাঝেও একটি ছোট দুর্বলতা রয়েছে—তা হলো পেস্তা আইসক্রিম!
বিশেষজ্ঞরা বলেন, পুতিনের এই খাদ্যাভ্যাস তাঁর রাজনৈতিক ভাবমূর্তির সঙ্গে পুরোপুরি সামঞ্জস্যপূর্ণ: সংযত, শৃঙ্খলাবদ্ধ এবং ঐতিহ্যমুখী। পুষ্টি, প্রোটিন এবং সহজলভ্যতা ওপর তাঁর এই জোর, তাঁর দীর্ঘ ও অনিয়মিত কর্মঘণ্টার জন্য প্রয়োজনীয় স্থিতিশীল ক্যালরির জোগান নিশ্চিত করতে সাহায্য করে।

ভারত ও রাশিয়ার মধ্যে কৌশলগত সম্পর্ক আরও মজবুত করার লক্ষ্যে যখন ভ্লাদিমির পুতিনের ৪-৫ ডিসেম্বরের রাষ্ট্রীয় সফর ও ২৩ তম বার্ষিক শীর্ষ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হচ্ছে, তখন কূটনৈতিক আলোচনার বাইরেও একটি বিষয় নজর কেড়েছে—রুশ প্রেসিডেন্টের খাবার সংক্রান্ত অভূতপূর্ব নিরাপত্তা ব্যবস্থা। অন্য বিশ্বনেতাদের মতো তিনিও আনুষ্ঠানিক ভোজসভায় অংশ নেন, তবে তাঁর খাবার সবচেয়ে কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রিত।
পুতিন হোটেল বা আয়োজক দেশের কর্মীদের তৈরি খাবার গ্রহণ করেন না। তাঁর খাবারের জন্য বিশেষ নিরাপত্তা প্রোটোকল অনুসরণ করা হয়।
বিদেশ সফরে পুতিনের খাদ্য ব্যবস্থাপনা প্রায় সামরিক নির্ভুলতার সঙ্গে নিয়ন্ত্রিত হয়। এই কঠোরতার মূল কারণ হলো নিরাপত্তা—বিশেষজ্ঞদের মতে, সম্ভাব্য বিষক্রিয়া বা গুপ্তহত্যার চেষ্টা এড়াতে এই ব্যবস্থা অপরিহার্য। পুতিনের জন্য খাবার পরিবেশনের আগে যেসব প্রক্রিয়া অনুসরণ করা হয়:
বিশেষ শেফ ও লজিস্টিকস: প্রশিক্ষিত রুশ শেফ, পুষ্টিবিদ এবং সহযোগী কর্মীরা তাঁর সঙ্গে ফ্লাইটে আসেন। তাঁরাই বিশেষভাবে নিয়ন্ত্রিত রান্নাঘরে পুতিনের খাবার তৈরি করেন।
মোবাইল পরীক্ষাগার: তিনি ভ্রমণের সময় একটি অত্যাধুনিক মোবাইল খাদ্য পরীক্ষাগারও সঙ্গে রাখেন। এই ল্যাব পরিবেশনের আগে প্রতিটি খাদ্য এবং পানীয়ের উপাদান দ্রুত পরীক্ষা করে সম্ভাব্য বিষ বা ক্ষতিকারক বস্তুর উপস্থিতি যাচাই করে।
নিয়ন্ত্রিত উপাদান: খাবারের উপাদান হয় সরাসরি রাশিয়া থেকে আনা হয়, নতুবা আয়োজক দেশে দীর্ঘ পরীক্ষার মাধ্যমে এর নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হয়। শুধু অনুমোদিত এবং পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে যাচাই করা উপাদানই তাঁর রান্নাঘরে প্রবেশাধিকার পায়।
বিশেষ পরিবেশন: আনুষ্ঠানিক ভোজসভার ক্ষেত্রেও এই সতর্কতা বজায় থাকে। যদিও তিনি উপস্থিত থাকেন, কিন্তু সাধারণত তাঁর প্লেটে পরিবেশিত খাবারটি নিজস্ব শেফদের দ্বারা পৃথকভাবে প্রস্তুতকৃত হয়। খাদ্য পরিবেশনের আগে প্রশিক্ষিত পরীক্ষকদের দ্বারা চূড়ান্ত যাচাই করা হয়। এই প্রক্রিয়া মস্কো এবং বিদেশে উভয় ক্ষেত্রেই অনুসরণ করা হয়।
পুতিনের দৈনন্দিন খাদ্যাভ্যাস
খাবারের ব্যবস্থা নিয়ে এত কড়াকড়ি থাকলেও, পুতিনের দৈনন্দিন খাদ্যতালিকা কিন্তু বেশ সাধারণ। তাঁর জীবনযাপনও সুশৃঙ্খল। তিনি জমকালো ভোজের পরিবর্তে পুষ্টিকর ও সহজলভ্য খাবার পছন্দ করেন।
সকালের নাশতা: তাঁর সকাল শুরু হয় উচ্চ-প্রোটিন এবং কম-চিনিযুক্ত খাবার দিয়ে। সাধারণত মধুসহ ভরোগ (Tvorog, রুশ কটেজ চিজ) অথবা পরিজ (স্টার্চ ও পানি বা দুধ সহযোগে তৈরি) প্রধান খাদ্য। এ ছাড়া তিনি তাজা ফলের রস এবং মাঝে মাঝে কাঁচা কোয়েলের ডিম বা অমলেট গ্রহণ করেন। তাঁর খাদ্যাভ্যাসে অতিরিক্ত মিষ্টি বা চর্বিযুক্ত খাবারের স্থান নেই।
দুপুরের ও রাতের খাবার: পুতিন লাল মাংসের চেয়ে মাছ বেশি পছন্দ করেন, বিশেষত গ্রিলড বা স্মোকড মাছের পদ। ভেড়ার মাংসও তাঁর প্রিয়। তবে অতিরিক্ত মসলাযুক্ত রান্না তিনি এড়িয়ে চলেন। তাঁর বেশির ভাগ খাবারেই টমেটো, শসা এবং অন্যান্য সাধারণ সবজির সালাদ বাধ্যতামূলক। এই সবজিগুলো ভিটামিন এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্টের জোগান দেয়।
পানীয় ও ডেজার্ট: পুতিন মিষ্টি বেক করা সামগ্রী, কেক বা বাটারি পেস্ট্রি একদম পছন্দ করেন না। পানীয়ের ক্ষেত্রে তাজা জুস, সাধারণ ভেষজ পানীয় এবং কেফির (এক প্রকার ফার্মেন্টেড দুগ্ধজাত পানীয়) পান করেন। তবে তাঁর সুশৃঙ্খল রুটিনের মাঝেও একটি ছোট দুর্বলতা রয়েছে—তা হলো পেস্তা আইসক্রিম!
বিশেষজ্ঞরা বলেন, পুতিনের এই খাদ্যাভ্যাস তাঁর রাজনৈতিক ভাবমূর্তির সঙ্গে পুরোপুরি সামঞ্জস্যপূর্ণ: সংযত, শৃঙ্খলাবদ্ধ এবং ঐতিহ্যমুখী। পুষ্টি, প্রোটিন এবং সহজলভ্যতা ওপর তাঁর এই জোর, তাঁর দীর্ঘ ও অনিয়মিত কর্মঘণ্টার জন্য প্রয়োজনীয় স্থিতিশীল ক্যালরির জোগান নিশ্চিত করতে সাহায্য করে।

গত বছরের শেষদিকে যুক্তরাষ্ট্রের মসনদে পরিবর্তনের হাওয়া বয়। মার্কিন নির্বাচনে নানা নাটকীয়তার পর ডোনাল্ড ট্রাম্পের অধোগতি সুনিশ্চিত হয়েছে বটে; তবে নতুন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের মনে ক্ষমতার শুরুর দিকের স্বস্তি আর নেই। বরং রাশিয়া-চীনে কিছুটা অস্বস্তিতেই আছেন তিনি।
২৯ ডিসেম্বর ২০২১
গত বছর রোমে অনুষ্ঠিত ইউরোপীয় অ্যাকুয়াটিক্স চ্যাম্পিয়নশিপে ১০ মিটার সিঙ্ক্রো ইভেন্টে সোনা জেতেন ইউক্রেনীয় ডাইভার সোফিয়া লাইসকুন (২৩)। তবে সম্প্রতি আকস্মিকভাবে রাশিয়ার প্রতি আনুগত্য দেখানোর পর তাঁকে চরম শাস্তির মুখে পড়তে হলো। ইউক্রেনীয় ডাইভিং ফেডারেশন (ইউডিএফ) ফেডারেশনের অধীনে পাওয়া তাঁর সমস্ত...
৪৩ মিনিট আগে
পাকিস্তানের তিন বাহিনীর প্রথম প্রধান বা চিফ অব ডিফেন্স ফোর্সেস (সিডিএফ) ফিল্ড মার্শাল সৈয়দ আসিম মুনির নতুন দায়িত্ব গ্রহণের পর বলেছেন, পাকিস্তান এখন অনন্য উচ্চতায় পৌঁছে যাবে। পাকিস্তানের প্রেসিডেন্টের কার্যালয় আওয়াইন-ই-সদরে সাংবাদিকদের সঙ্গে এক ঘরোয়া আলাপে তিনি এসব কথা বলেন।
২ ঘণ্টা আগে
আগামী বছরের অর্থাৎ, ২০২৬ সালের ইউরোভিশন গানের প্রতিযোগিতা বয়কট করবে আয়ারল্যান্ড, স্পেন, নেদারল্যান্ডস ও স্লোভেনিয়া। কারণ আয়োজকেরা ইসরায়েলকে প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে দিয়েছে। দেশগুলোর অভিযোগ, গাজায় গণহত্যা চালানো ইসরায়েলকে এই প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে দেওয়া ঠিক হয়নি।
৩ ঘণ্টা আগে