জাহাঙ্গীর আলম

আজকাল আর পকেটভর্তি নগদ টাকা নিয়ে দূরে ভ্রমণ করার দরকার পড়ে না। মানিব্যাগের একপাশে গুঁজে রাখা ছোট্ট একটি ইলেকট্রনিক চিপ বসানো পলিমারের কার্ড থাকাই যথেষ্ট। দু-একশ থেকে কয়েক লাখ টাকা পর্যন্ত এই কার্ড ঘষেই লেনদেন করা সম্ভব।
সারা বিশ্বে সবচেয়ে জনপ্রিয় ভিসা কার্ড। বাংলাদেশেও তাই। ভিসা কার্ডের সেবাগুলোর মধ্যে রয়েছে- ক্রেডিট কার্ড, ডেবিট কার্ড, প্রিপেইড এবং গিফট কার্ড।
ক্রেডিট কার্ড: আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো গ্রাহকদের যোগ্যতার ভিত্তিতে ক্রেডিট কার্ড ইস্যু করে। প্রতি মাসে নির্দিষ্ট সীমার মধ্যে গ্রাহক কেনাকাটা করতে পারেন। আবার এটিএম বুথ থেকে নগদ অর্থও উত্তোলন করা যায়। তবে এর জন্য ব্যাংক নির্ধারিত হারে সুদ দিতে হয়। নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে (সাধারণত ৪৫ দিন) বিনা সুদ বা মাশুলে সেই অর্থ পরিশোধ করা যায়। সোজা কথা, এটি একপ্রকার ঋণ।
এ ছাড়া বিনা সুদে কিস্তিতে অর্থ পরিশোধ, নগদ অর্থ ফেরত, নির্দিষ্ট খুচরা বিক্রেতার কাছে কেনাকাটা করার সময় বিশেষ সুবিধা ইত্যাদি অফারও থাকে।
ডেবিট কার্ড: ডেবিট কার্ড গ্রাহকদের তাদের সেভিং অ্যাকাউন্ট থেকে লেনদেনের সুযোগ দেয়। ক্রেডিট কার্ডের মতো এখানেও নানা অফার থাকতে পারে। তবে গ্রাহকের অ্যাকাউন্টে অবশ্যই ব্যালেন্স থাকতে হয়।
প্রিপেইড এবং গিফট কার্ড: প্রিপেইড এবং গিফট কার্ড দিয়েও খুচরা বিক্রেতাদের কাছ থেকে কেনাকাটা করা যায়।
প্রিপেইড কার্ডগুলো ডিপোজিট ব্যালেন্স বা ক্রেডিট কার্ড অ্যাকাউন্টের সঙ্গে যুক্ত নয়। এই কার্ডগুলোর বিপরীতে একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ আগে থেকেই ভরা থাকে। এটি ক্রেডিট সীমা হিসাবে কাজ করে। অর্থাৎ কার্ডধারী এই সীমার বেশি খরচ করতে পারেন না।
গিফট কার্ডও একই রকম। তবে সাধারণত নির্দিষ্ট কিছু বিক্রেতার কাছে সুবিধা দিতে এই কার্ড ইস্যু করা হয়।
এসব কার্ড ব্যবহারের জন্য লেনদেন প্রক্রিয়ার পেছনের অভ্যন্তরীণ কর্মকাণ্ড সম্পর্কে গভীর জ্ঞান থাকা কিন্তু মোটেও আবশ্যক নয়। কারণ এক ঘষাতেই লেনদেন সম্পন্ন হয়ে যায়। কার্ডের মালিককে আক্ষরিক অর্থে কিছুই করতে হয় না। কিন্তু বিশেষ করে ক্রেডিট কার্ডের মাধ্যমে লেনদেন প্রক্রিয়া কীভাবে সম্পন্ন হয় সে সম্পর্কে একটা সাধারণ ধারণা থাকা ভালো। কারণ এখানে পুরো সিস্টেমের বিভিন্ন পর্যায়ে ফি কেটে নেওয়া হয়। লেনদেন প্রক্রিয়ার স্তরগুলো সম্পর্কে ধারণা থাকলে কীভাবে এসব কার্ড নেওয়া যায়, কোথায় কীভাবে ব্যবহার করলে সুযোগ-সুবিধাগুলো পাওয়া যাবে এবং ন্যূনতম খরচে এই সেবা পাওয়া যেতে পারে সে সম্পর্কে জানা হবে।
পুরো প্রক্রিয়াটিকে সংক্ষেপে বর্ণনা করলে দাঁড়ায়- ব্যাংক কার্ড নেটওয়ার্কগুলো মার্চেন্ট, প্রসেসর এবং ব্যাংকের মধ্যে শত শত কোটি টাকার লেনদেন করে। মাত্র কয়েক সেকেন্ডের মধ্যে আপনার কার্ডের চিপটি একটি প্রসেসরের কাছে লেনদেনের তথ্য পাঠায়, এরপর কার্ড নেটওয়ার্কের মাধ্যমে অনুমোদনের জন্য ইস্যুকারী ব্যাংকের কাছে পাঠানো হয়। ইস্যুকারী ব্যাংক কার্ড নেটওয়ার্কের মাধ্যমে প্রসেসরের কাছে অনুমোদন পাঠায়। সর্বশেষ চূড়ান্ত ভাবে সেই নির্দেশনা মার্চেন্টের টার্মিনাল বা সফটওয়্যারে পৌঁছায়। আর তখনই লেনদেন সম্পন্ন হয়। ঘটনাটি ঘটে নিমেষের মধ্যে।
পুরো লেনদেন প্রক্রিয়ায় অনুমোদন (অথোরাইজেশন) পাওয়া কেবল প্রথম ধাপ। মার্চেন্টের ব্যাংক অ্যাকাউন্টে চাহিদার অর্থ জমা হওয়ার আগে অনুমোদনগুলো নিষ্পত্তি করতে হয়। ক্রেডিট কার্ড লেনদেন অনুমোদন এবং নিষ্পত্তি এই দুই-ধাপে প্রক্রিয়াটি নিষ্পন্ন হয়। এটি গুরুত্বপূর্ণ কারণ প্রতিটি পর্যায়ে বিভিন্ন পরিমাণে ফি নির্ধারিত থাকে। আর উভয় ধাপে বা আংশিক ব্যর্থতার ফলে খরচ বেড়ে যেতে পারে এবং/অথবা লেনদেন সম্পন্ন নাও হতে পারে।
ক্রেডিট কার্ডের লেনদেন নিষ্পত্তি হয় কীভাবে: মূল ভূমিকা কাদের
অনুমোদন এবং নিষ্পত্তিতে জড়িত মূল পক্ষগুলো হলো- কার্ডধারী, মার্চেন্ট (ব্যবসা প্রতিষ্ঠান), অ্যাকোয়ারিং ব্যাংক (মার্চেন্ট বা ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের ব্যাংক), ইস্যুকারী ব্যাংক (কার্ডধারীর ব্যাংক) এবং কার্ড অ্যাসোসিয়েশন (ভিসা, মাস্টারকার্ড, আমেরিকান এক্সপ্রেস, ডিসকভার ইত্যাদি)।
কার্ডধারী
আপনার যদি একটি ক্রেডিট বা ডেবিট কার্ড থাকে তাহলে আপনি নিশ্চয়ই কার্ডধারীর ভূমিকা সম্পর্কে জানেন। তবে বিস্তারিত বলতে গেলে—একজন কার্ডধারী হলেন এমন একজন যিনি কার্ড প্রদানকারী ব্যাংক থেকে একটি ব্যাংক কার্ড (ক্রেডিট বা ডেবিট) পান। এরপর পণ্য বা পরিষেবার জন্য অর্থ প্রদানের উদ্দেশ্যে লেনদেনের জন্য তিনি কার্ডটি উপস্থাপন করেন।
মার্চেন্ট
মার্চেন্ট বলতে বোঝায় যে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান কোনো পণ্য বা পরিষেবা বিক্রি করে। কিন্তু কার্ডের মাধ্যমে মূল্য পরিশোধের সুযোগ দেয় যারা এখানে শুধু সেই মার্চেন্টের কথা বলা হচ্ছে। যে কোনো ব্যবসা প্রতিষ্ঠান যাদের মার্চেন্ট অ্যাকাউন্ট আছে, যেটির মাধ্যমে তারা ক্রেডিট বা ডেবিট কার্ড গ্রাহকদের পণ্য বা পরিষেবার বিনিময়ে মূল্য পরিশোধের সুযোগ দিতে পারে তারাই মার্চেন্ট। ব্যবসার মালিক হিসেবে আপনি একজন মার্চেন্ট বলে গণ্য হতে পারেন।
অ্যাকোয়ারিং ব্যাংক বা মার্চেন্ট’স ব্যাংক
অ্যাকোয়ারিং ব্যাংক হলো কার্ড অ্যাসোসিয়েশনের (ভিসা বা মাস্টারকার্ড) নিবন্ধিত সদস্য। অ্যাকোয়ারিং ব্যাংককে সাধারণত মার্চেন্ট ব্যাংক বলা হয়। এই ধরনের ব্যাংক এমন একটি অ্যাকাউন্ট (যেটিকে বলে মার্চেন্ট অ্যাকাউন্ট) পরিচালনার জন্য মার্চেন্টদের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ থাকে, যা মার্চেন্টকে ক্রেডিট এবং ডেবিট কার্ড গ্রহণ করার অনুমতি দেয়। অ্যাকোয়ারিং ব্যাংকগুলো মার্চেন্টদের কার্ডের মাধ্যমে মূল্য পরিশোধের জন্য প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম এবং সফটওয়্যার সরবরাহ করে। এ ছাড়া গ্রাহক পরিষেবা এবং কার্ড গ্রহণের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট অন্যান্য প্রয়োজনীয় দিকগুলোও তারা পরিচালনা করে। অ্যাকোয়ারিং ব্যাংক ক্রেডিট কার্ড দিয়ে পরিশোধিত মূল্যের বিপরীতে মার্চেন্ট অ্যাকাউন্টে সেই পরিমাণ ডিপোজিট (তহবিল) জমা করে।
কার্ড ইস্যুকারী ব্যাংক
অবশ্য নাম দেখেই বুঝতে পারার কথা- ইস্যুকারী ব্যাংক গ্রাহকদের ডেবিট বা ক্রেডিট কার্ড ইস্যু করে। ইস্যুকারী ব্যাংক একই সঙ্গে কার্ড অ্যাসোসিয়েশনের (ভিসা এবং মাস্টারকার্ড) সদস্যও।
ইস্যুকারী ব্যাংকগুলো তাদের কার্ডধারীরা যে কেনাকাটা করেন তার জন্য মার্চেন্ট ব্যাংককে অর্থ প্রদান করে। এরপরে কার্ডধারীর দায়িত্ব হয় তাঁদের ক্রেডিট কার্ড চুক্তির শর্তাবলির অধীনে কার্ড ইস্যুকারী ব্যাংককে সেই অর্থ পরিশোধ করা।
কার্ড অ্যাসোসিয়েশন (ভিসা এবং মাস্টারকার্ড)
ভিসা এবং মাস্টারকার্ড কিন্তু কোনো ব্যাংক নয়। তারা ডেবিট-ক্রেডিট কার্ড বা মার্চেন্ট অ্যাকাউন্ট ইস্যু করে না। বরং তারা নিজ নিজ কার্ড ব্র্যান্ডের জন্য অভিভাবক (কাস্টডিয়ান) এবং ক্লিয়ারিং হাউস হিসেবে কাজ করে। তারা ক্রেডিট কার্ড বা ইলেকট্রনিক লেনদেন প্রক্রিয়াকরণে আর্থিক প্রতিষ্ঠান, ইন্ডিপেনডেন্ট সেলস অর্গানাইজেশন (আইএসও) এবং মেম্বারশিপ সার্ভিস প্রভাইডার্সের (এমএসপি) সঙ্গে একটি গভর্নিং বডি হিসেবেও কাজ করে। এখান থেকে ‘কার্ড অ্যাসোসিয়েশন’ নাম এসেছে।
কার্ড অ্যাসোসিয়েশনের প্রাথমিক দায়িত্ব হলো, অ্যাসোসিয়েশনের সদস্যদের পরিচালনা করা। যার মধ্যে রয়েছে ইস্যুকারী এবং মার্চেন্ট ব্যাংকের মধ্যস্থতাকারী হিসেবে বিনিময় ফি এবং যোগ্যতা নির্দেশিকা নির্ধারণ করা, কার্ড নেটওয়ার্ক এবং নিজ ব্র্যান্ডের উন্নয়ন এবং অবশ্যই পুরো প্রক্রিয়া থেকে মুনাফা করা। মুনাফার বিষয়টি এখানে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে, ফলত ভিসা এবং মাস্টারকার্ড এখন পাবলিক কোম্পানি (পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত)।
অ্যাসোসিয়েশনের সদস্যদের মধ্যে তথ্য আদান প্রদানের জন্য ভিসা ব্যবহার করে তাদের নিজস্ব ভিসানেট প্ল্যাটফর্ম। আর এ কাজে মাস্টারকার্ড ব্যবহার করে তাদের ব্যাংকনেট নেটওয়ার্ক।
ক্রেডিট কার্ড অনুমোদন (অথোরাইজেশন) প্রক্রিয়া
অথোরাইজেশন প্রক্রিয়ায় ওপরে উল্লিখিত সব পক্ষই নির্দিষ্ট ভূমিকা পালন করে। নিচে কোন পক্ষের কী ভূমিকা থাকে তা তুলে ধরা হলো:
কার্ডধারী
একজন কার্ডধারী পণ্য বা পরিষেবার জন্য অর্থ পরিশোধ করতে একটি মার্চেন্টের কাছে তাঁর কার্ডটি উপস্থাপন করেন। এরপরই ডেবিট বা ক্রেডিট কার্ডে লেনদেনের সূচনা হয়।
মার্চেন্ট
মার্চেন্ট তাদের ক্রেডিট কার্ড মেশিন, সফটওয়্যার বা গেটওয়ে ব্যবহার করে কার্ডধারীর তথ্য এবং লেনদেনের বিশদ বিবরণ তাদের মার্চেন্ট ব্যাংক বা লেনদেন প্রক্রিয়াকারী ব্যাংকের কাছে পাঠায়।
অ্যাকোয়ারিং বা প্রসেসর
অ্যাকোয়ারিং ব্যাংক (বা এর প্রসেসর) লেনদেনের তথ্য গ্রহণ করে এবং যথাযথ কার্ড নেটওয়ার্কের মাধ্যমে অনুমোদনের জন্য কার্ডধারীর ইস্যুকারী ব্যাংকে পাঠায়।
ভিসা/মাস্টারকার্ড নেটওয়ার্ক
মাস্টারকার্ড লেনদেনের তথ্য তাদের নিজস্ব ব্যাংকনেট নেটওয়ার্কের মাধ্যমে কার্ড ইস্যুকারী ব্যাংক এবং প্রক্রিয়াকারীর (অ্যাকোয়ারিং ব্যাংক বা এর প্রসেসর) মধ্যে বিনিময় করে। আর ভিসা কার্ড লেনদেনের তথ্য তাদের ভিসানেট নেটওয়ার্কের মাধ্যমে এই কাজটি করে।
ইস্যুকারী
ক্রেডিট কার্ড প্রদানকারী ব্যাংক ব্যাংকনেট বা ভিসানেটের মাধ্যমে অ্যাকোয়ারিং ব্যাংকের (বা এর প্রসেসর) কাছ থেকে লেনদেনের তথ্য পায়। এরপর সে লেনদেনের তথ্য যাচাই করে। সেই সঙ্গে লেনদেনটি বৈধ কি-না, কার্ডধারীর যথেষ্ট ব্যালেন্স আছে কি-না সেটি নিশ্চিত হওয়ার পর লেনদেনের অনুমোদন দেয় বা প্রত্যাখ্যান করে তার সিদ্ধান্ত জানিয়ে দেয়।
ভিসা/মাস্টারকার্ড নেটওয়ার্ক
কার্ড প্রদানকারী ব্যাংক যথাযথ নেটওয়ার্কের মাধ্যমে অ্যাকোয়ারিং ব্যাংকে (বা এর প্রসেসর) একটি কোড পাঠায়।
মার্চেন্ট
কোডটি মার্চেন্টের টার্মিনাল, সফটওয়্যার বা গেটওয়েতে পৌঁছায় এবং লেনদেন নিষ্পত্তির অপেক্ষায় থাকা একটি ব্যাচ ফাইলে সংরক্ষণ করা হয়।
ক্লিয়ারিং এবং নিষ্পত্তি যেভাবে সম্পন্ন হয়
ডেবিট বা ক্রেডিট কার্ড লেনদেন যেভাবে কাজ করে সেই প্রক্রিয়ার দ্বিতীয় অংশ হলো ক্লিয়ারিং এবং নিষ্পত্তি (সেটেলমেন্ট)। অনুমোদন প্রক্রিয়া সম্পন্ন ও সঞ্চালিত হওয়ার পরে এটি ঘটে। নিষ্পত্তির জন্য মার্চেন্ট প্রসেসরে অনুমোদনের জন্য একটি ‘ব্যাচ’ পাঠায়। সাধারণত দিনে একবার এই কাজটি হয়। প্রসেসর অনুমোদন প্রক্রিয়ার পুনঃসমন্বয় করে এবং কার্ড অ্যাসোসিয়েশন নেটওয়ার্কে ব্যাচ জমা দেয়। প্রসেসর তখন পণ্য বা সেবা বিক্রয় থেকে প্রাপ্ত তহবিল ব্যবসা প্রতিষ্ঠানটির (পণ্য বা সেবা বিক্রয়কারী মার্চেন্ট) ব্যাংক অ্যাকাউন্টে জমা করে। পাশাপাশি প্রসেসিং ফি কেটে নেয়। এই পর্যায়ে লেনদেনটি সম্পন্ন হয়।
এদিকে কার্ড ইস্যুকারী এবং অ্যাকোয়ারিং ব্যাংক যোগাযোগ এবং অর্থ স্থানান্তর অব্যাহত রাখে। অর্থাৎ ইস্যুকারী ব্যাংক কার্ডধারীর কেনাকাটার অর্থ অ্যাকোয়ারিং ব্যাংকে পাঠায়। অবশেষে কার্ডধারীকে সেই অর্থ সেই কার্ড ইস্যুকারী ব্যাংককেই দিতে হয়। এই পদক্ষেপগুলোর কোনটির সঙ্গেই আসলে কার্ডধারীর কোনো সম্পৃক্ততা লাগে না।
মার্চেন্ট
এবার মার্চেন্ট তাদের অ্যাকোয়ারিং ব্যাংকে (বা ব্যাংকের প্রসেসর) অনুমোদিত অথোরাইজেশনের একটি ব্যাচ পাঠিয়ে নিষ্পত্তি প্রক্রিয়া শুরু করে। অনুমোদনের ব্যাচগুলো সাধারণত প্রতি কার্যদিবসের শেষে পাঠানো হয়। কার্ড থেকে একাধিক লেনদেন হলে সব মিলে একটি ব্যাচ তৈরি হয়।
অ্যাকোয়ারিং ব্যাংক
অ্যাকোয়ারিং ব্যাংক (বা এর প্রসেসর) যথাযথ কার্ড অ্যাসোসিয়েশন নেটওয়ার্কের (ভিসানেট বা ব্যাংকনেট) মাধ্যমে তথ্য বিনিময়ের মাধ্যমে অনুমোদনের ব্যাচগুলো পুনরায় একত্রিত করে এবং পাঠিয়ে দেয়।
অ্যাকোয়ারিং ব্যাংক অটোমেটেড ক্লিয়ারিংহাউসের (এসিএইচ) মাধ্যমে মার্চেন্টের ব্যাংক অ্যাকাউন্টে বিক্রয় থেকে প্রাপ্ত অর্থ জমা করে এবং মার্চেন্টের সঙ্গে চুক্তির ওপর ভিত্তি করে মাসিক, দৈনিক বা উভয় হিসাবে নির্দিষ্ট প্রসেসিং ফি কেটে নেয়।
কার্ড নেটওয়ার্ক
কার্ড অ্যাসোসিয়েশন কার্ড ইস্যুকারী ব্যাংকের অ্যাকাউন্ট থেকে ফি কেটে নেয় এবং অ্যাকোয়ারিং ব্যাংকের অ্যাকাউন্টে তাদের পাওনা পাঠিয়ে দেয়।
ইস্যুকারী
কার্ড ইস্যুকারী ব্যাংক মূলত তার কার্ডধারীর কেনাকাটার জন্য অ্যাকোয়ারিং ব্যাংককে অর্থ প্রদান করে।
কার্ডধারী
কার্ডধারী তার কেনাকাটার জন্য ইস্যুকারী ব্যাংক এবং কার্ড চুক্তির সঙ্গে যুক্ত সুদ এবং ফি পরিশোধের জন্য দায়বদ্ধ থাকেন।
তহবিল এবং ফি
ওপরে নিষ্পত্তি এবং ক্লিয়ারিংয়ের ব্যাখ্যায় উল্লেখ করা হয়েছে যে, প্রসেসর ক্রেডিট কার্ডে বিক্রয় থেকে মার্চেন্টের ব্যাংক অ্যাকাউন্টে তহবিল জমা করবে এবং প্রক্রিয়াকরণ ফি কেটে নেবে। যাইহোক, ঠিক কীভাবে ফি কেটে নেওয়া হয় এবং কখন তহবিল জমা করা হয় তাতে কিছুটা ভিন্নতা রয়েছে।
ক্রেডিট কার্ড ডিপোজিট
আজকাল, বেশির ভাগ প্রসেসর পণ্য কেনার পরের দিন তহবিল জমা করে। এর অর্থ মার্চেন্ট আজকের ক্রেডিট কার্ড লেনদেনের জন্য অ্যাকাউন্টে অর্থ পাবে আগামীকাল।
কিছু ক্ষেত্রে, প্রসেসরেরা মার্চেন্টের তহবিল আটকে দিতে পারে। লেনদেনে জালিয়াতির সন্দেহ বা অন্য কোনো কারণে লেনদেনটি খুব ঝুঁকিপূর্ণ মনে করলে তাৎক্ষণিক তহবিল জমা হবে না। এ ক্ষেত্রে গ্রাহক কার্ড ঘষার সঙ্গে সঙ্গে অ্যাকাউন্টে ডিপোজিট জমা হওয়া দেখতে পাবেন না মার্চেন্ট।

আজকাল আর পকেটভর্তি নগদ টাকা নিয়ে দূরে ভ্রমণ করার দরকার পড়ে না। মানিব্যাগের একপাশে গুঁজে রাখা ছোট্ট একটি ইলেকট্রনিক চিপ বসানো পলিমারের কার্ড থাকাই যথেষ্ট। দু-একশ থেকে কয়েক লাখ টাকা পর্যন্ত এই কার্ড ঘষেই লেনদেন করা সম্ভব।
সারা বিশ্বে সবচেয়ে জনপ্রিয় ভিসা কার্ড। বাংলাদেশেও তাই। ভিসা কার্ডের সেবাগুলোর মধ্যে রয়েছে- ক্রেডিট কার্ড, ডেবিট কার্ড, প্রিপেইড এবং গিফট কার্ড।
ক্রেডিট কার্ড: আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো গ্রাহকদের যোগ্যতার ভিত্তিতে ক্রেডিট কার্ড ইস্যু করে। প্রতি মাসে নির্দিষ্ট সীমার মধ্যে গ্রাহক কেনাকাটা করতে পারেন। আবার এটিএম বুথ থেকে নগদ অর্থও উত্তোলন করা যায়। তবে এর জন্য ব্যাংক নির্ধারিত হারে সুদ দিতে হয়। নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে (সাধারণত ৪৫ দিন) বিনা সুদ বা মাশুলে সেই অর্থ পরিশোধ করা যায়। সোজা কথা, এটি একপ্রকার ঋণ।
এ ছাড়া বিনা সুদে কিস্তিতে অর্থ পরিশোধ, নগদ অর্থ ফেরত, নির্দিষ্ট খুচরা বিক্রেতার কাছে কেনাকাটা করার সময় বিশেষ সুবিধা ইত্যাদি অফারও থাকে।
ডেবিট কার্ড: ডেবিট কার্ড গ্রাহকদের তাদের সেভিং অ্যাকাউন্ট থেকে লেনদেনের সুযোগ দেয়। ক্রেডিট কার্ডের মতো এখানেও নানা অফার থাকতে পারে। তবে গ্রাহকের অ্যাকাউন্টে অবশ্যই ব্যালেন্স থাকতে হয়।
প্রিপেইড এবং গিফট কার্ড: প্রিপেইড এবং গিফট কার্ড দিয়েও খুচরা বিক্রেতাদের কাছ থেকে কেনাকাটা করা যায়।
প্রিপেইড কার্ডগুলো ডিপোজিট ব্যালেন্স বা ক্রেডিট কার্ড অ্যাকাউন্টের সঙ্গে যুক্ত নয়। এই কার্ডগুলোর বিপরীতে একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ আগে থেকেই ভরা থাকে। এটি ক্রেডিট সীমা হিসাবে কাজ করে। অর্থাৎ কার্ডধারী এই সীমার বেশি খরচ করতে পারেন না।
গিফট কার্ডও একই রকম। তবে সাধারণত নির্দিষ্ট কিছু বিক্রেতার কাছে সুবিধা দিতে এই কার্ড ইস্যু করা হয়।
এসব কার্ড ব্যবহারের জন্য লেনদেন প্রক্রিয়ার পেছনের অভ্যন্তরীণ কর্মকাণ্ড সম্পর্কে গভীর জ্ঞান থাকা কিন্তু মোটেও আবশ্যক নয়। কারণ এক ঘষাতেই লেনদেন সম্পন্ন হয়ে যায়। কার্ডের মালিককে আক্ষরিক অর্থে কিছুই করতে হয় না। কিন্তু বিশেষ করে ক্রেডিট কার্ডের মাধ্যমে লেনদেন প্রক্রিয়া কীভাবে সম্পন্ন হয় সে সম্পর্কে একটা সাধারণ ধারণা থাকা ভালো। কারণ এখানে পুরো সিস্টেমের বিভিন্ন পর্যায়ে ফি কেটে নেওয়া হয়। লেনদেন প্রক্রিয়ার স্তরগুলো সম্পর্কে ধারণা থাকলে কীভাবে এসব কার্ড নেওয়া যায়, কোথায় কীভাবে ব্যবহার করলে সুযোগ-সুবিধাগুলো পাওয়া যাবে এবং ন্যূনতম খরচে এই সেবা পাওয়া যেতে পারে সে সম্পর্কে জানা হবে।
পুরো প্রক্রিয়াটিকে সংক্ষেপে বর্ণনা করলে দাঁড়ায়- ব্যাংক কার্ড নেটওয়ার্কগুলো মার্চেন্ট, প্রসেসর এবং ব্যাংকের মধ্যে শত শত কোটি টাকার লেনদেন করে। মাত্র কয়েক সেকেন্ডের মধ্যে আপনার কার্ডের চিপটি একটি প্রসেসরের কাছে লেনদেনের তথ্য পাঠায়, এরপর কার্ড নেটওয়ার্কের মাধ্যমে অনুমোদনের জন্য ইস্যুকারী ব্যাংকের কাছে পাঠানো হয়। ইস্যুকারী ব্যাংক কার্ড নেটওয়ার্কের মাধ্যমে প্রসেসরের কাছে অনুমোদন পাঠায়। সর্বশেষ চূড়ান্ত ভাবে সেই নির্দেশনা মার্চেন্টের টার্মিনাল বা সফটওয়্যারে পৌঁছায়। আর তখনই লেনদেন সম্পন্ন হয়। ঘটনাটি ঘটে নিমেষের মধ্যে।
পুরো লেনদেন প্রক্রিয়ায় অনুমোদন (অথোরাইজেশন) পাওয়া কেবল প্রথম ধাপ। মার্চেন্টের ব্যাংক অ্যাকাউন্টে চাহিদার অর্থ জমা হওয়ার আগে অনুমোদনগুলো নিষ্পত্তি করতে হয়। ক্রেডিট কার্ড লেনদেন অনুমোদন এবং নিষ্পত্তি এই দুই-ধাপে প্রক্রিয়াটি নিষ্পন্ন হয়। এটি গুরুত্বপূর্ণ কারণ প্রতিটি পর্যায়ে বিভিন্ন পরিমাণে ফি নির্ধারিত থাকে। আর উভয় ধাপে বা আংশিক ব্যর্থতার ফলে খরচ বেড়ে যেতে পারে এবং/অথবা লেনদেন সম্পন্ন নাও হতে পারে।
ক্রেডিট কার্ডের লেনদেন নিষ্পত্তি হয় কীভাবে: মূল ভূমিকা কাদের
অনুমোদন এবং নিষ্পত্তিতে জড়িত মূল পক্ষগুলো হলো- কার্ডধারী, মার্চেন্ট (ব্যবসা প্রতিষ্ঠান), অ্যাকোয়ারিং ব্যাংক (মার্চেন্ট বা ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের ব্যাংক), ইস্যুকারী ব্যাংক (কার্ডধারীর ব্যাংক) এবং কার্ড অ্যাসোসিয়েশন (ভিসা, মাস্টারকার্ড, আমেরিকান এক্সপ্রেস, ডিসকভার ইত্যাদি)।
কার্ডধারী
আপনার যদি একটি ক্রেডিট বা ডেবিট কার্ড থাকে তাহলে আপনি নিশ্চয়ই কার্ডধারীর ভূমিকা সম্পর্কে জানেন। তবে বিস্তারিত বলতে গেলে—একজন কার্ডধারী হলেন এমন একজন যিনি কার্ড প্রদানকারী ব্যাংক থেকে একটি ব্যাংক কার্ড (ক্রেডিট বা ডেবিট) পান। এরপর পণ্য বা পরিষেবার জন্য অর্থ প্রদানের উদ্দেশ্যে লেনদেনের জন্য তিনি কার্ডটি উপস্থাপন করেন।
মার্চেন্ট
মার্চেন্ট বলতে বোঝায় যে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান কোনো পণ্য বা পরিষেবা বিক্রি করে। কিন্তু কার্ডের মাধ্যমে মূল্য পরিশোধের সুযোগ দেয় যারা এখানে শুধু সেই মার্চেন্টের কথা বলা হচ্ছে। যে কোনো ব্যবসা প্রতিষ্ঠান যাদের মার্চেন্ট অ্যাকাউন্ট আছে, যেটির মাধ্যমে তারা ক্রেডিট বা ডেবিট কার্ড গ্রাহকদের পণ্য বা পরিষেবার বিনিময়ে মূল্য পরিশোধের সুযোগ দিতে পারে তারাই মার্চেন্ট। ব্যবসার মালিক হিসেবে আপনি একজন মার্চেন্ট বলে গণ্য হতে পারেন।
অ্যাকোয়ারিং ব্যাংক বা মার্চেন্ট’স ব্যাংক
অ্যাকোয়ারিং ব্যাংক হলো কার্ড অ্যাসোসিয়েশনের (ভিসা বা মাস্টারকার্ড) নিবন্ধিত সদস্য। অ্যাকোয়ারিং ব্যাংককে সাধারণত মার্চেন্ট ব্যাংক বলা হয়। এই ধরনের ব্যাংক এমন একটি অ্যাকাউন্ট (যেটিকে বলে মার্চেন্ট অ্যাকাউন্ট) পরিচালনার জন্য মার্চেন্টদের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ থাকে, যা মার্চেন্টকে ক্রেডিট এবং ডেবিট কার্ড গ্রহণ করার অনুমতি দেয়। অ্যাকোয়ারিং ব্যাংকগুলো মার্চেন্টদের কার্ডের মাধ্যমে মূল্য পরিশোধের জন্য প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম এবং সফটওয়্যার সরবরাহ করে। এ ছাড়া গ্রাহক পরিষেবা এবং কার্ড গ্রহণের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট অন্যান্য প্রয়োজনীয় দিকগুলোও তারা পরিচালনা করে। অ্যাকোয়ারিং ব্যাংক ক্রেডিট কার্ড দিয়ে পরিশোধিত মূল্যের বিপরীতে মার্চেন্ট অ্যাকাউন্টে সেই পরিমাণ ডিপোজিট (তহবিল) জমা করে।
কার্ড ইস্যুকারী ব্যাংক
অবশ্য নাম দেখেই বুঝতে পারার কথা- ইস্যুকারী ব্যাংক গ্রাহকদের ডেবিট বা ক্রেডিট কার্ড ইস্যু করে। ইস্যুকারী ব্যাংক একই সঙ্গে কার্ড অ্যাসোসিয়েশনের (ভিসা এবং মাস্টারকার্ড) সদস্যও।
ইস্যুকারী ব্যাংকগুলো তাদের কার্ডধারীরা যে কেনাকাটা করেন তার জন্য মার্চেন্ট ব্যাংককে অর্থ প্রদান করে। এরপরে কার্ডধারীর দায়িত্ব হয় তাঁদের ক্রেডিট কার্ড চুক্তির শর্তাবলির অধীনে কার্ড ইস্যুকারী ব্যাংককে সেই অর্থ পরিশোধ করা।
কার্ড অ্যাসোসিয়েশন (ভিসা এবং মাস্টারকার্ড)
ভিসা এবং মাস্টারকার্ড কিন্তু কোনো ব্যাংক নয়। তারা ডেবিট-ক্রেডিট কার্ড বা মার্চেন্ট অ্যাকাউন্ট ইস্যু করে না। বরং তারা নিজ নিজ কার্ড ব্র্যান্ডের জন্য অভিভাবক (কাস্টডিয়ান) এবং ক্লিয়ারিং হাউস হিসেবে কাজ করে। তারা ক্রেডিট কার্ড বা ইলেকট্রনিক লেনদেন প্রক্রিয়াকরণে আর্থিক প্রতিষ্ঠান, ইন্ডিপেনডেন্ট সেলস অর্গানাইজেশন (আইএসও) এবং মেম্বারশিপ সার্ভিস প্রভাইডার্সের (এমএসপি) সঙ্গে একটি গভর্নিং বডি হিসেবেও কাজ করে। এখান থেকে ‘কার্ড অ্যাসোসিয়েশন’ নাম এসেছে।
কার্ড অ্যাসোসিয়েশনের প্রাথমিক দায়িত্ব হলো, অ্যাসোসিয়েশনের সদস্যদের পরিচালনা করা। যার মধ্যে রয়েছে ইস্যুকারী এবং মার্চেন্ট ব্যাংকের মধ্যস্থতাকারী হিসেবে বিনিময় ফি এবং যোগ্যতা নির্দেশিকা নির্ধারণ করা, কার্ড নেটওয়ার্ক এবং নিজ ব্র্যান্ডের উন্নয়ন এবং অবশ্যই পুরো প্রক্রিয়া থেকে মুনাফা করা। মুনাফার বিষয়টি এখানে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে, ফলত ভিসা এবং মাস্টারকার্ড এখন পাবলিক কোম্পানি (পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত)।
অ্যাসোসিয়েশনের সদস্যদের মধ্যে তথ্য আদান প্রদানের জন্য ভিসা ব্যবহার করে তাদের নিজস্ব ভিসানেট প্ল্যাটফর্ম। আর এ কাজে মাস্টারকার্ড ব্যবহার করে তাদের ব্যাংকনেট নেটওয়ার্ক।
ক্রেডিট কার্ড অনুমোদন (অথোরাইজেশন) প্রক্রিয়া
অথোরাইজেশন প্রক্রিয়ায় ওপরে উল্লিখিত সব পক্ষই নির্দিষ্ট ভূমিকা পালন করে। নিচে কোন পক্ষের কী ভূমিকা থাকে তা তুলে ধরা হলো:
কার্ডধারী
একজন কার্ডধারী পণ্য বা পরিষেবার জন্য অর্থ পরিশোধ করতে একটি মার্চেন্টের কাছে তাঁর কার্ডটি উপস্থাপন করেন। এরপরই ডেবিট বা ক্রেডিট কার্ডে লেনদেনের সূচনা হয়।
মার্চেন্ট
মার্চেন্ট তাদের ক্রেডিট কার্ড মেশিন, সফটওয়্যার বা গেটওয়ে ব্যবহার করে কার্ডধারীর তথ্য এবং লেনদেনের বিশদ বিবরণ তাদের মার্চেন্ট ব্যাংক বা লেনদেন প্রক্রিয়াকারী ব্যাংকের কাছে পাঠায়।
অ্যাকোয়ারিং বা প্রসেসর
অ্যাকোয়ারিং ব্যাংক (বা এর প্রসেসর) লেনদেনের তথ্য গ্রহণ করে এবং যথাযথ কার্ড নেটওয়ার্কের মাধ্যমে অনুমোদনের জন্য কার্ডধারীর ইস্যুকারী ব্যাংকে পাঠায়।
ভিসা/মাস্টারকার্ড নেটওয়ার্ক
মাস্টারকার্ড লেনদেনের তথ্য তাদের নিজস্ব ব্যাংকনেট নেটওয়ার্কের মাধ্যমে কার্ড ইস্যুকারী ব্যাংক এবং প্রক্রিয়াকারীর (অ্যাকোয়ারিং ব্যাংক বা এর প্রসেসর) মধ্যে বিনিময় করে। আর ভিসা কার্ড লেনদেনের তথ্য তাদের ভিসানেট নেটওয়ার্কের মাধ্যমে এই কাজটি করে।
ইস্যুকারী
ক্রেডিট কার্ড প্রদানকারী ব্যাংক ব্যাংকনেট বা ভিসানেটের মাধ্যমে অ্যাকোয়ারিং ব্যাংকের (বা এর প্রসেসর) কাছ থেকে লেনদেনের তথ্য পায়। এরপর সে লেনদেনের তথ্য যাচাই করে। সেই সঙ্গে লেনদেনটি বৈধ কি-না, কার্ডধারীর যথেষ্ট ব্যালেন্স আছে কি-না সেটি নিশ্চিত হওয়ার পর লেনদেনের অনুমোদন দেয় বা প্রত্যাখ্যান করে তার সিদ্ধান্ত জানিয়ে দেয়।
ভিসা/মাস্টারকার্ড নেটওয়ার্ক
কার্ড প্রদানকারী ব্যাংক যথাযথ নেটওয়ার্কের মাধ্যমে অ্যাকোয়ারিং ব্যাংকে (বা এর প্রসেসর) একটি কোড পাঠায়।
মার্চেন্ট
কোডটি মার্চেন্টের টার্মিনাল, সফটওয়্যার বা গেটওয়েতে পৌঁছায় এবং লেনদেন নিষ্পত্তির অপেক্ষায় থাকা একটি ব্যাচ ফাইলে সংরক্ষণ করা হয়।
ক্লিয়ারিং এবং নিষ্পত্তি যেভাবে সম্পন্ন হয়
ডেবিট বা ক্রেডিট কার্ড লেনদেন যেভাবে কাজ করে সেই প্রক্রিয়ার দ্বিতীয় অংশ হলো ক্লিয়ারিং এবং নিষ্পত্তি (সেটেলমেন্ট)। অনুমোদন প্রক্রিয়া সম্পন্ন ও সঞ্চালিত হওয়ার পরে এটি ঘটে। নিষ্পত্তির জন্য মার্চেন্ট প্রসেসরে অনুমোদনের জন্য একটি ‘ব্যাচ’ পাঠায়। সাধারণত দিনে একবার এই কাজটি হয়। প্রসেসর অনুমোদন প্রক্রিয়ার পুনঃসমন্বয় করে এবং কার্ড অ্যাসোসিয়েশন নেটওয়ার্কে ব্যাচ জমা দেয়। প্রসেসর তখন পণ্য বা সেবা বিক্রয় থেকে প্রাপ্ত তহবিল ব্যবসা প্রতিষ্ঠানটির (পণ্য বা সেবা বিক্রয়কারী মার্চেন্ট) ব্যাংক অ্যাকাউন্টে জমা করে। পাশাপাশি প্রসেসিং ফি কেটে নেয়। এই পর্যায়ে লেনদেনটি সম্পন্ন হয়।
এদিকে কার্ড ইস্যুকারী এবং অ্যাকোয়ারিং ব্যাংক যোগাযোগ এবং অর্থ স্থানান্তর অব্যাহত রাখে। অর্থাৎ ইস্যুকারী ব্যাংক কার্ডধারীর কেনাকাটার অর্থ অ্যাকোয়ারিং ব্যাংকে পাঠায়। অবশেষে কার্ডধারীকে সেই অর্থ সেই কার্ড ইস্যুকারী ব্যাংককেই দিতে হয়। এই পদক্ষেপগুলোর কোনটির সঙ্গেই আসলে কার্ডধারীর কোনো সম্পৃক্ততা লাগে না।
মার্চেন্ট
এবার মার্চেন্ট তাদের অ্যাকোয়ারিং ব্যাংকে (বা ব্যাংকের প্রসেসর) অনুমোদিত অথোরাইজেশনের একটি ব্যাচ পাঠিয়ে নিষ্পত্তি প্রক্রিয়া শুরু করে। অনুমোদনের ব্যাচগুলো সাধারণত প্রতি কার্যদিবসের শেষে পাঠানো হয়। কার্ড থেকে একাধিক লেনদেন হলে সব মিলে একটি ব্যাচ তৈরি হয়।
অ্যাকোয়ারিং ব্যাংক
অ্যাকোয়ারিং ব্যাংক (বা এর প্রসেসর) যথাযথ কার্ড অ্যাসোসিয়েশন নেটওয়ার্কের (ভিসানেট বা ব্যাংকনেট) মাধ্যমে তথ্য বিনিময়ের মাধ্যমে অনুমোদনের ব্যাচগুলো পুনরায় একত্রিত করে এবং পাঠিয়ে দেয়।
অ্যাকোয়ারিং ব্যাংক অটোমেটেড ক্লিয়ারিংহাউসের (এসিএইচ) মাধ্যমে মার্চেন্টের ব্যাংক অ্যাকাউন্টে বিক্রয় থেকে প্রাপ্ত অর্থ জমা করে এবং মার্চেন্টের সঙ্গে চুক্তির ওপর ভিত্তি করে মাসিক, দৈনিক বা উভয় হিসাবে নির্দিষ্ট প্রসেসিং ফি কেটে নেয়।
কার্ড নেটওয়ার্ক
কার্ড অ্যাসোসিয়েশন কার্ড ইস্যুকারী ব্যাংকের অ্যাকাউন্ট থেকে ফি কেটে নেয় এবং অ্যাকোয়ারিং ব্যাংকের অ্যাকাউন্টে তাদের পাওনা পাঠিয়ে দেয়।
ইস্যুকারী
কার্ড ইস্যুকারী ব্যাংক মূলত তার কার্ডধারীর কেনাকাটার জন্য অ্যাকোয়ারিং ব্যাংককে অর্থ প্রদান করে।
কার্ডধারী
কার্ডধারী তার কেনাকাটার জন্য ইস্যুকারী ব্যাংক এবং কার্ড চুক্তির সঙ্গে যুক্ত সুদ এবং ফি পরিশোধের জন্য দায়বদ্ধ থাকেন।
তহবিল এবং ফি
ওপরে নিষ্পত্তি এবং ক্লিয়ারিংয়ের ব্যাখ্যায় উল্লেখ করা হয়েছে যে, প্রসেসর ক্রেডিট কার্ডে বিক্রয় থেকে মার্চেন্টের ব্যাংক অ্যাকাউন্টে তহবিল জমা করবে এবং প্রক্রিয়াকরণ ফি কেটে নেবে। যাইহোক, ঠিক কীভাবে ফি কেটে নেওয়া হয় এবং কখন তহবিল জমা করা হয় তাতে কিছুটা ভিন্নতা রয়েছে।
ক্রেডিট কার্ড ডিপোজিট
আজকাল, বেশির ভাগ প্রসেসর পণ্য কেনার পরের দিন তহবিল জমা করে। এর অর্থ মার্চেন্ট আজকের ক্রেডিট কার্ড লেনদেনের জন্য অ্যাকাউন্টে অর্থ পাবে আগামীকাল।
কিছু ক্ষেত্রে, প্রসেসরেরা মার্চেন্টের তহবিল আটকে দিতে পারে। লেনদেনে জালিয়াতির সন্দেহ বা অন্য কোনো কারণে লেনদেনটি খুব ঝুঁকিপূর্ণ মনে করলে তাৎক্ষণিক তহবিল জমা হবে না। এ ক্ষেত্রে গ্রাহক কার্ড ঘষার সঙ্গে সঙ্গে অ্যাকাউন্টে ডিপোজিট জমা হওয়া দেখতে পাবেন না মার্চেন্ট।
জাহাঙ্গীর আলম

আজকাল আর পকেটভর্তি নগদ টাকা নিয়ে দূরে ভ্রমণ করার দরকার পড়ে না। মানিব্যাগের একপাশে গুঁজে রাখা ছোট্ট একটি ইলেকট্রনিক চিপ বসানো পলিমারের কার্ড থাকাই যথেষ্ট। দু-একশ থেকে কয়েক লাখ টাকা পর্যন্ত এই কার্ড ঘষেই লেনদেন করা সম্ভব।
সারা বিশ্বে সবচেয়ে জনপ্রিয় ভিসা কার্ড। বাংলাদেশেও তাই। ভিসা কার্ডের সেবাগুলোর মধ্যে রয়েছে- ক্রেডিট কার্ড, ডেবিট কার্ড, প্রিপেইড এবং গিফট কার্ড।
ক্রেডিট কার্ড: আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো গ্রাহকদের যোগ্যতার ভিত্তিতে ক্রেডিট কার্ড ইস্যু করে। প্রতি মাসে নির্দিষ্ট সীমার মধ্যে গ্রাহক কেনাকাটা করতে পারেন। আবার এটিএম বুথ থেকে নগদ অর্থও উত্তোলন করা যায়। তবে এর জন্য ব্যাংক নির্ধারিত হারে সুদ দিতে হয়। নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে (সাধারণত ৪৫ দিন) বিনা সুদ বা মাশুলে সেই অর্থ পরিশোধ করা যায়। সোজা কথা, এটি একপ্রকার ঋণ।
এ ছাড়া বিনা সুদে কিস্তিতে অর্থ পরিশোধ, নগদ অর্থ ফেরত, নির্দিষ্ট খুচরা বিক্রেতার কাছে কেনাকাটা করার সময় বিশেষ সুবিধা ইত্যাদি অফারও থাকে।
ডেবিট কার্ড: ডেবিট কার্ড গ্রাহকদের তাদের সেভিং অ্যাকাউন্ট থেকে লেনদেনের সুযোগ দেয়। ক্রেডিট কার্ডের মতো এখানেও নানা অফার থাকতে পারে। তবে গ্রাহকের অ্যাকাউন্টে অবশ্যই ব্যালেন্স থাকতে হয়।
প্রিপেইড এবং গিফট কার্ড: প্রিপেইড এবং গিফট কার্ড দিয়েও খুচরা বিক্রেতাদের কাছ থেকে কেনাকাটা করা যায়।
প্রিপেইড কার্ডগুলো ডিপোজিট ব্যালেন্স বা ক্রেডিট কার্ড অ্যাকাউন্টের সঙ্গে যুক্ত নয়। এই কার্ডগুলোর বিপরীতে একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ আগে থেকেই ভরা থাকে। এটি ক্রেডিট সীমা হিসাবে কাজ করে। অর্থাৎ কার্ডধারী এই সীমার বেশি খরচ করতে পারেন না।
গিফট কার্ডও একই রকম। তবে সাধারণত নির্দিষ্ট কিছু বিক্রেতার কাছে সুবিধা দিতে এই কার্ড ইস্যু করা হয়।
এসব কার্ড ব্যবহারের জন্য লেনদেন প্রক্রিয়ার পেছনের অভ্যন্তরীণ কর্মকাণ্ড সম্পর্কে গভীর জ্ঞান থাকা কিন্তু মোটেও আবশ্যক নয়। কারণ এক ঘষাতেই লেনদেন সম্পন্ন হয়ে যায়। কার্ডের মালিককে আক্ষরিক অর্থে কিছুই করতে হয় না। কিন্তু বিশেষ করে ক্রেডিট কার্ডের মাধ্যমে লেনদেন প্রক্রিয়া কীভাবে সম্পন্ন হয় সে সম্পর্কে একটা সাধারণ ধারণা থাকা ভালো। কারণ এখানে পুরো সিস্টেমের বিভিন্ন পর্যায়ে ফি কেটে নেওয়া হয়। লেনদেন প্রক্রিয়ার স্তরগুলো সম্পর্কে ধারণা থাকলে কীভাবে এসব কার্ড নেওয়া যায়, কোথায় কীভাবে ব্যবহার করলে সুযোগ-সুবিধাগুলো পাওয়া যাবে এবং ন্যূনতম খরচে এই সেবা পাওয়া যেতে পারে সে সম্পর্কে জানা হবে।
পুরো প্রক্রিয়াটিকে সংক্ষেপে বর্ণনা করলে দাঁড়ায়- ব্যাংক কার্ড নেটওয়ার্কগুলো মার্চেন্ট, প্রসেসর এবং ব্যাংকের মধ্যে শত শত কোটি টাকার লেনদেন করে। মাত্র কয়েক সেকেন্ডের মধ্যে আপনার কার্ডের চিপটি একটি প্রসেসরের কাছে লেনদেনের তথ্য পাঠায়, এরপর কার্ড নেটওয়ার্কের মাধ্যমে অনুমোদনের জন্য ইস্যুকারী ব্যাংকের কাছে পাঠানো হয়। ইস্যুকারী ব্যাংক কার্ড নেটওয়ার্কের মাধ্যমে প্রসেসরের কাছে অনুমোদন পাঠায়। সর্বশেষ চূড়ান্ত ভাবে সেই নির্দেশনা মার্চেন্টের টার্মিনাল বা সফটওয়্যারে পৌঁছায়। আর তখনই লেনদেন সম্পন্ন হয়। ঘটনাটি ঘটে নিমেষের মধ্যে।
পুরো লেনদেন প্রক্রিয়ায় অনুমোদন (অথোরাইজেশন) পাওয়া কেবল প্রথম ধাপ। মার্চেন্টের ব্যাংক অ্যাকাউন্টে চাহিদার অর্থ জমা হওয়ার আগে অনুমোদনগুলো নিষ্পত্তি করতে হয়। ক্রেডিট কার্ড লেনদেন অনুমোদন এবং নিষ্পত্তি এই দুই-ধাপে প্রক্রিয়াটি নিষ্পন্ন হয়। এটি গুরুত্বপূর্ণ কারণ প্রতিটি পর্যায়ে বিভিন্ন পরিমাণে ফি নির্ধারিত থাকে। আর উভয় ধাপে বা আংশিক ব্যর্থতার ফলে খরচ বেড়ে যেতে পারে এবং/অথবা লেনদেন সম্পন্ন নাও হতে পারে।
ক্রেডিট কার্ডের লেনদেন নিষ্পত্তি হয় কীভাবে: মূল ভূমিকা কাদের
অনুমোদন এবং নিষ্পত্তিতে জড়িত মূল পক্ষগুলো হলো- কার্ডধারী, মার্চেন্ট (ব্যবসা প্রতিষ্ঠান), অ্যাকোয়ারিং ব্যাংক (মার্চেন্ট বা ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের ব্যাংক), ইস্যুকারী ব্যাংক (কার্ডধারীর ব্যাংক) এবং কার্ড অ্যাসোসিয়েশন (ভিসা, মাস্টারকার্ড, আমেরিকান এক্সপ্রেস, ডিসকভার ইত্যাদি)।
কার্ডধারী
আপনার যদি একটি ক্রেডিট বা ডেবিট কার্ড থাকে তাহলে আপনি নিশ্চয়ই কার্ডধারীর ভূমিকা সম্পর্কে জানেন। তবে বিস্তারিত বলতে গেলে—একজন কার্ডধারী হলেন এমন একজন যিনি কার্ড প্রদানকারী ব্যাংক থেকে একটি ব্যাংক কার্ড (ক্রেডিট বা ডেবিট) পান। এরপর পণ্য বা পরিষেবার জন্য অর্থ প্রদানের উদ্দেশ্যে লেনদেনের জন্য তিনি কার্ডটি উপস্থাপন করেন।
মার্চেন্ট
মার্চেন্ট বলতে বোঝায় যে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান কোনো পণ্য বা পরিষেবা বিক্রি করে। কিন্তু কার্ডের মাধ্যমে মূল্য পরিশোধের সুযোগ দেয় যারা এখানে শুধু সেই মার্চেন্টের কথা বলা হচ্ছে। যে কোনো ব্যবসা প্রতিষ্ঠান যাদের মার্চেন্ট অ্যাকাউন্ট আছে, যেটির মাধ্যমে তারা ক্রেডিট বা ডেবিট কার্ড গ্রাহকদের পণ্য বা পরিষেবার বিনিময়ে মূল্য পরিশোধের সুযোগ দিতে পারে তারাই মার্চেন্ট। ব্যবসার মালিক হিসেবে আপনি একজন মার্চেন্ট বলে গণ্য হতে পারেন।
অ্যাকোয়ারিং ব্যাংক বা মার্চেন্ট’স ব্যাংক
অ্যাকোয়ারিং ব্যাংক হলো কার্ড অ্যাসোসিয়েশনের (ভিসা বা মাস্টারকার্ড) নিবন্ধিত সদস্য। অ্যাকোয়ারিং ব্যাংককে সাধারণত মার্চেন্ট ব্যাংক বলা হয়। এই ধরনের ব্যাংক এমন একটি অ্যাকাউন্ট (যেটিকে বলে মার্চেন্ট অ্যাকাউন্ট) পরিচালনার জন্য মার্চেন্টদের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ থাকে, যা মার্চেন্টকে ক্রেডিট এবং ডেবিট কার্ড গ্রহণ করার অনুমতি দেয়। অ্যাকোয়ারিং ব্যাংকগুলো মার্চেন্টদের কার্ডের মাধ্যমে মূল্য পরিশোধের জন্য প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম এবং সফটওয়্যার সরবরাহ করে। এ ছাড়া গ্রাহক পরিষেবা এবং কার্ড গ্রহণের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট অন্যান্য প্রয়োজনীয় দিকগুলোও তারা পরিচালনা করে। অ্যাকোয়ারিং ব্যাংক ক্রেডিট কার্ড দিয়ে পরিশোধিত মূল্যের বিপরীতে মার্চেন্ট অ্যাকাউন্টে সেই পরিমাণ ডিপোজিট (তহবিল) জমা করে।
কার্ড ইস্যুকারী ব্যাংক
অবশ্য নাম দেখেই বুঝতে পারার কথা- ইস্যুকারী ব্যাংক গ্রাহকদের ডেবিট বা ক্রেডিট কার্ড ইস্যু করে। ইস্যুকারী ব্যাংক একই সঙ্গে কার্ড অ্যাসোসিয়েশনের (ভিসা এবং মাস্টারকার্ড) সদস্যও।
ইস্যুকারী ব্যাংকগুলো তাদের কার্ডধারীরা যে কেনাকাটা করেন তার জন্য মার্চেন্ট ব্যাংককে অর্থ প্রদান করে। এরপরে কার্ডধারীর দায়িত্ব হয় তাঁদের ক্রেডিট কার্ড চুক্তির শর্তাবলির অধীনে কার্ড ইস্যুকারী ব্যাংককে সেই অর্থ পরিশোধ করা।
কার্ড অ্যাসোসিয়েশন (ভিসা এবং মাস্টারকার্ড)
ভিসা এবং মাস্টারকার্ড কিন্তু কোনো ব্যাংক নয়। তারা ডেবিট-ক্রেডিট কার্ড বা মার্চেন্ট অ্যাকাউন্ট ইস্যু করে না। বরং তারা নিজ নিজ কার্ড ব্র্যান্ডের জন্য অভিভাবক (কাস্টডিয়ান) এবং ক্লিয়ারিং হাউস হিসেবে কাজ করে। তারা ক্রেডিট কার্ড বা ইলেকট্রনিক লেনদেন প্রক্রিয়াকরণে আর্থিক প্রতিষ্ঠান, ইন্ডিপেনডেন্ট সেলস অর্গানাইজেশন (আইএসও) এবং মেম্বারশিপ সার্ভিস প্রভাইডার্সের (এমএসপি) সঙ্গে একটি গভর্নিং বডি হিসেবেও কাজ করে। এখান থেকে ‘কার্ড অ্যাসোসিয়েশন’ নাম এসেছে।
কার্ড অ্যাসোসিয়েশনের প্রাথমিক দায়িত্ব হলো, অ্যাসোসিয়েশনের সদস্যদের পরিচালনা করা। যার মধ্যে রয়েছে ইস্যুকারী এবং মার্চেন্ট ব্যাংকের মধ্যস্থতাকারী হিসেবে বিনিময় ফি এবং যোগ্যতা নির্দেশিকা নির্ধারণ করা, কার্ড নেটওয়ার্ক এবং নিজ ব্র্যান্ডের উন্নয়ন এবং অবশ্যই পুরো প্রক্রিয়া থেকে মুনাফা করা। মুনাফার বিষয়টি এখানে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে, ফলত ভিসা এবং মাস্টারকার্ড এখন পাবলিক কোম্পানি (পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত)।
অ্যাসোসিয়েশনের সদস্যদের মধ্যে তথ্য আদান প্রদানের জন্য ভিসা ব্যবহার করে তাদের নিজস্ব ভিসানেট প্ল্যাটফর্ম। আর এ কাজে মাস্টারকার্ড ব্যবহার করে তাদের ব্যাংকনেট নেটওয়ার্ক।
ক্রেডিট কার্ড অনুমোদন (অথোরাইজেশন) প্রক্রিয়া
অথোরাইজেশন প্রক্রিয়ায় ওপরে উল্লিখিত সব পক্ষই নির্দিষ্ট ভূমিকা পালন করে। নিচে কোন পক্ষের কী ভূমিকা থাকে তা তুলে ধরা হলো:
কার্ডধারী
একজন কার্ডধারী পণ্য বা পরিষেবার জন্য অর্থ পরিশোধ করতে একটি মার্চেন্টের কাছে তাঁর কার্ডটি উপস্থাপন করেন। এরপরই ডেবিট বা ক্রেডিট কার্ডে লেনদেনের সূচনা হয়।
মার্চেন্ট
মার্চেন্ট তাদের ক্রেডিট কার্ড মেশিন, সফটওয়্যার বা গেটওয়ে ব্যবহার করে কার্ডধারীর তথ্য এবং লেনদেনের বিশদ বিবরণ তাদের মার্চেন্ট ব্যাংক বা লেনদেন প্রক্রিয়াকারী ব্যাংকের কাছে পাঠায়।
অ্যাকোয়ারিং বা প্রসেসর
অ্যাকোয়ারিং ব্যাংক (বা এর প্রসেসর) লেনদেনের তথ্য গ্রহণ করে এবং যথাযথ কার্ড নেটওয়ার্কের মাধ্যমে অনুমোদনের জন্য কার্ডধারীর ইস্যুকারী ব্যাংকে পাঠায়।
ভিসা/মাস্টারকার্ড নেটওয়ার্ক
মাস্টারকার্ড লেনদেনের তথ্য তাদের নিজস্ব ব্যাংকনেট নেটওয়ার্কের মাধ্যমে কার্ড ইস্যুকারী ব্যাংক এবং প্রক্রিয়াকারীর (অ্যাকোয়ারিং ব্যাংক বা এর প্রসেসর) মধ্যে বিনিময় করে। আর ভিসা কার্ড লেনদেনের তথ্য তাদের ভিসানেট নেটওয়ার্কের মাধ্যমে এই কাজটি করে।
ইস্যুকারী
ক্রেডিট কার্ড প্রদানকারী ব্যাংক ব্যাংকনেট বা ভিসানেটের মাধ্যমে অ্যাকোয়ারিং ব্যাংকের (বা এর প্রসেসর) কাছ থেকে লেনদেনের তথ্য পায়। এরপর সে লেনদেনের তথ্য যাচাই করে। সেই সঙ্গে লেনদেনটি বৈধ কি-না, কার্ডধারীর যথেষ্ট ব্যালেন্স আছে কি-না সেটি নিশ্চিত হওয়ার পর লেনদেনের অনুমোদন দেয় বা প্রত্যাখ্যান করে তার সিদ্ধান্ত জানিয়ে দেয়।
ভিসা/মাস্টারকার্ড নেটওয়ার্ক
কার্ড প্রদানকারী ব্যাংক যথাযথ নেটওয়ার্কের মাধ্যমে অ্যাকোয়ারিং ব্যাংকে (বা এর প্রসেসর) একটি কোড পাঠায়।
মার্চেন্ট
কোডটি মার্চেন্টের টার্মিনাল, সফটওয়্যার বা গেটওয়েতে পৌঁছায় এবং লেনদেন নিষ্পত্তির অপেক্ষায় থাকা একটি ব্যাচ ফাইলে সংরক্ষণ করা হয়।
ক্লিয়ারিং এবং নিষ্পত্তি যেভাবে সম্পন্ন হয়
ডেবিট বা ক্রেডিট কার্ড লেনদেন যেভাবে কাজ করে সেই প্রক্রিয়ার দ্বিতীয় অংশ হলো ক্লিয়ারিং এবং নিষ্পত্তি (সেটেলমেন্ট)। অনুমোদন প্রক্রিয়া সম্পন্ন ও সঞ্চালিত হওয়ার পরে এটি ঘটে। নিষ্পত্তির জন্য মার্চেন্ট প্রসেসরে অনুমোদনের জন্য একটি ‘ব্যাচ’ পাঠায়। সাধারণত দিনে একবার এই কাজটি হয়। প্রসেসর অনুমোদন প্রক্রিয়ার পুনঃসমন্বয় করে এবং কার্ড অ্যাসোসিয়েশন নেটওয়ার্কে ব্যাচ জমা দেয়। প্রসেসর তখন পণ্য বা সেবা বিক্রয় থেকে প্রাপ্ত তহবিল ব্যবসা প্রতিষ্ঠানটির (পণ্য বা সেবা বিক্রয়কারী মার্চেন্ট) ব্যাংক অ্যাকাউন্টে জমা করে। পাশাপাশি প্রসেসিং ফি কেটে নেয়। এই পর্যায়ে লেনদেনটি সম্পন্ন হয়।
এদিকে কার্ড ইস্যুকারী এবং অ্যাকোয়ারিং ব্যাংক যোগাযোগ এবং অর্থ স্থানান্তর অব্যাহত রাখে। অর্থাৎ ইস্যুকারী ব্যাংক কার্ডধারীর কেনাকাটার অর্থ অ্যাকোয়ারিং ব্যাংকে পাঠায়। অবশেষে কার্ডধারীকে সেই অর্থ সেই কার্ড ইস্যুকারী ব্যাংককেই দিতে হয়। এই পদক্ষেপগুলোর কোনটির সঙ্গেই আসলে কার্ডধারীর কোনো সম্পৃক্ততা লাগে না।
মার্চেন্ট
এবার মার্চেন্ট তাদের অ্যাকোয়ারিং ব্যাংকে (বা ব্যাংকের প্রসেসর) অনুমোদিত অথোরাইজেশনের একটি ব্যাচ পাঠিয়ে নিষ্পত্তি প্রক্রিয়া শুরু করে। অনুমোদনের ব্যাচগুলো সাধারণত প্রতি কার্যদিবসের শেষে পাঠানো হয়। কার্ড থেকে একাধিক লেনদেন হলে সব মিলে একটি ব্যাচ তৈরি হয়।
অ্যাকোয়ারিং ব্যাংক
অ্যাকোয়ারিং ব্যাংক (বা এর প্রসেসর) যথাযথ কার্ড অ্যাসোসিয়েশন নেটওয়ার্কের (ভিসানেট বা ব্যাংকনেট) মাধ্যমে তথ্য বিনিময়ের মাধ্যমে অনুমোদনের ব্যাচগুলো পুনরায় একত্রিত করে এবং পাঠিয়ে দেয়।
অ্যাকোয়ারিং ব্যাংক অটোমেটেড ক্লিয়ারিংহাউসের (এসিএইচ) মাধ্যমে মার্চেন্টের ব্যাংক অ্যাকাউন্টে বিক্রয় থেকে প্রাপ্ত অর্থ জমা করে এবং মার্চেন্টের সঙ্গে চুক্তির ওপর ভিত্তি করে মাসিক, দৈনিক বা উভয় হিসাবে নির্দিষ্ট প্রসেসিং ফি কেটে নেয়।
কার্ড নেটওয়ার্ক
কার্ড অ্যাসোসিয়েশন কার্ড ইস্যুকারী ব্যাংকের অ্যাকাউন্ট থেকে ফি কেটে নেয় এবং অ্যাকোয়ারিং ব্যাংকের অ্যাকাউন্টে তাদের পাওনা পাঠিয়ে দেয়।
ইস্যুকারী
কার্ড ইস্যুকারী ব্যাংক মূলত তার কার্ডধারীর কেনাকাটার জন্য অ্যাকোয়ারিং ব্যাংককে অর্থ প্রদান করে।
কার্ডধারী
কার্ডধারী তার কেনাকাটার জন্য ইস্যুকারী ব্যাংক এবং কার্ড চুক্তির সঙ্গে যুক্ত সুদ এবং ফি পরিশোধের জন্য দায়বদ্ধ থাকেন।
তহবিল এবং ফি
ওপরে নিষ্পত্তি এবং ক্লিয়ারিংয়ের ব্যাখ্যায় উল্লেখ করা হয়েছে যে, প্রসেসর ক্রেডিট কার্ডে বিক্রয় থেকে মার্চেন্টের ব্যাংক অ্যাকাউন্টে তহবিল জমা করবে এবং প্রক্রিয়াকরণ ফি কেটে নেবে। যাইহোক, ঠিক কীভাবে ফি কেটে নেওয়া হয় এবং কখন তহবিল জমা করা হয় তাতে কিছুটা ভিন্নতা রয়েছে।
ক্রেডিট কার্ড ডিপোজিট
আজকাল, বেশির ভাগ প্রসেসর পণ্য কেনার পরের দিন তহবিল জমা করে। এর অর্থ মার্চেন্ট আজকের ক্রেডিট কার্ড লেনদেনের জন্য অ্যাকাউন্টে অর্থ পাবে আগামীকাল।
কিছু ক্ষেত্রে, প্রসেসরেরা মার্চেন্টের তহবিল আটকে দিতে পারে। লেনদেনে জালিয়াতির সন্দেহ বা অন্য কোনো কারণে লেনদেনটি খুব ঝুঁকিপূর্ণ মনে করলে তাৎক্ষণিক তহবিল জমা হবে না। এ ক্ষেত্রে গ্রাহক কার্ড ঘষার সঙ্গে সঙ্গে অ্যাকাউন্টে ডিপোজিট জমা হওয়া দেখতে পাবেন না মার্চেন্ট।

আজকাল আর পকেটভর্তি নগদ টাকা নিয়ে দূরে ভ্রমণ করার দরকার পড়ে না। মানিব্যাগের একপাশে গুঁজে রাখা ছোট্ট একটি ইলেকট্রনিক চিপ বসানো পলিমারের কার্ড থাকাই যথেষ্ট। দু-একশ থেকে কয়েক লাখ টাকা পর্যন্ত এই কার্ড ঘষেই লেনদেন করা সম্ভব।
সারা বিশ্বে সবচেয়ে জনপ্রিয় ভিসা কার্ড। বাংলাদেশেও তাই। ভিসা কার্ডের সেবাগুলোর মধ্যে রয়েছে- ক্রেডিট কার্ড, ডেবিট কার্ড, প্রিপেইড এবং গিফট কার্ড।
ক্রেডিট কার্ড: আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো গ্রাহকদের যোগ্যতার ভিত্তিতে ক্রেডিট কার্ড ইস্যু করে। প্রতি মাসে নির্দিষ্ট সীমার মধ্যে গ্রাহক কেনাকাটা করতে পারেন। আবার এটিএম বুথ থেকে নগদ অর্থও উত্তোলন করা যায়। তবে এর জন্য ব্যাংক নির্ধারিত হারে সুদ দিতে হয়। নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে (সাধারণত ৪৫ দিন) বিনা সুদ বা মাশুলে সেই অর্থ পরিশোধ করা যায়। সোজা কথা, এটি একপ্রকার ঋণ।
এ ছাড়া বিনা সুদে কিস্তিতে অর্থ পরিশোধ, নগদ অর্থ ফেরত, নির্দিষ্ট খুচরা বিক্রেতার কাছে কেনাকাটা করার সময় বিশেষ সুবিধা ইত্যাদি অফারও থাকে।
ডেবিট কার্ড: ডেবিট কার্ড গ্রাহকদের তাদের সেভিং অ্যাকাউন্ট থেকে লেনদেনের সুযোগ দেয়। ক্রেডিট কার্ডের মতো এখানেও নানা অফার থাকতে পারে। তবে গ্রাহকের অ্যাকাউন্টে অবশ্যই ব্যালেন্স থাকতে হয়।
প্রিপেইড এবং গিফট কার্ড: প্রিপেইড এবং গিফট কার্ড দিয়েও খুচরা বিক্রেতাদের কাছ থেকে কেনাকাটা করা যায়।
প্রিপেইড কার্ডগুলো ডিপোজিট ব্যালেন্স বা ক্রেডিট কার্ড অ্যাকাউন্টের সঙ্গে যুক্ত নয়। এই কার্ডগুলোর বিপরীতে একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ আগে থেকেই ভরা থাকে। এটি ক্রেডিট সীমা হিসাবে কাজ করে। অর্থাৎ কার্ডধারী এই সীমার বেশি খরচ করতে পারেন না।
গিফট কার্ডও একই রকম। তবে সাধারণত নির্দিষ্ট কিছু বিক্রেতার কাছে সুবিধা দিতে এই কার্ড ইস্যু করা হয়।
এসব কার্ড ব্যবহারের জন্য লেনদেন প্রক্রিয়ার পেছনের অভ্যন্তরীণ কর্মকাণ্ড সম্পর্কে গভীর জ্ঞান থাকা কিন্তু মোটেও আবশ্যক নয়। কারণ এক ঘষাতেই লেনদেন সম্পন্ন হয়ে যায়। কার্ডের মালিককে আক্ষরিক অর্থে কিছুই করতে হয় না। কিন্তু বিশেষ করে ক্রেডিট কার্ডের মাধ্যমে লেনদেন প্রক্রিয়া কীভাবে সম্পন্ন হয় সে সম্পর্কে একটা সাধারণ ধারণা থাকা ভালো। কারণ এখানে পুরো সিস্টেমের বিভিন্ন পর্যায়ে ফি কেটে নেওয়া হয়। লেনদেন প্রক্রিয়ার স্তরগুলো সম্পর্কে ধারণা থাকলে কীভাবে এসব কার্ড নেওয়া যায়, কোথায় কীভাবে ব্যবহার করলে সুযোগ-সুবিধাগুলো পাওয়া যাবে এবং ন্যূনতম খরচে এই সেবা পাওয়া যেতে পারে সে সম্পর্কে জানা হবে।
পুরো প্রক্রিয়াটিকে সংক্ষেপে বর্ণনা করলে দাঁড়ায়- ব্যাংক কার্ড নেটওয়ার্কগুলো মার্চেন্ট, প্রসেসর এবং ব্যাংকের মধ্যে শত শত কোটি টাকার লেনদেন করে। মাত্র কয়েক সেকেন্ডের মধ্যে আপনার কার্ডের চিপটি একটি প্রসেসরের কাছে লেনদেনের তথ্য পাঠায়, এরপর কার্ড নেটওয়ার্কের মাধ্যমে অনুমোদনের জন্য ইস্যুকারী ব্যাংকের কাছে পাঠানো হয়। ইস্যুকারী ব্যাংক কার্ড নেটওয়ার্কের মাধ্যমে প্রসেসরের কাছে অনুমোদন পাঠায়। সর্বশেষ চূড়ান্ত ভাবে সেই নির্দেশনা মার্চেন্টের টার্মিনাল বা সফটওয়্যারে পৌঁছায়। আর তখনই লেনদেন সম্পন্ন হয়। ঘটনাটি ঘটে নিমেষের মধ্যে।
পুরো লেনদেন প্রক্রিয়ায় অনুমোদন (অথোরাইজেশন) পাওয়া কেবল প্রথম ধাপ। মার্চেন্টের ব্যাংক অ্যাকাউন্টে চাহিদার অর্থ জমা হওয়ার আগে অনুমোদনগুলো নিষ্পত্তি করতে হয়। ক্রেডিট কার্ড লেনদেন অনুমোদন এবং নিষ্পত্তি এই দুই-ধাপে প্রক্রিয়াটি নিষ্পন্ন হয়। এটি গুরুত্বপূর্ণ কারণ প্রতিটি পর্যায়ে বিভিন্ন পরিমাণে ফি নির্ধারিত থাকে। আর উভয় ধাপে বা আংশিক ব্যর্থতার ফলে খরচ বেড়ে যেতে পারে এবং/অথবা লেনদেন সম্পন্ন নাও হতে পারে।
ক্রেডিট কার্ডের লেনদেন নিষ্পত্তি হয় কীভাবে: মূল ভূমিকা কাদের
অনুমোদন এবং নিষ্পত্তিতে জড়িত মূল পক্ষগুলো হলো- কার্ডধারী, মার্চেন্ট (ব্যবসা প্রতিষ্ঠান), অ্যাকোয়ারিং ব্যাংক (মার্চেন্ট বা ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের ব্যাংক), ইস্যুকারী ব্যাংক (কার্ডধারীর ব্যাংক) এবং কার্ড অ্যাসোসিয়েশন (ভিসা, মাস্টারকার্ড, আমেরিকান এক্সপ্রেস, ডিসকভার ইত্যাদি)।
কার্ডধারী
আপনার যদি একটি ক্রেডিট বা ডেবিট কার্ড থাকে তাহলে আপনি নিশ্চয়ই কার্ডধারীর ভূমিকা সম্পর্কে জানেন। তবে বিস্তারিত বলতে গেলে—একজন কার্ডধারী হলেন এমন একজন যিনি কার্ড প্রদানকারী ব্যাংক থেকে একটি ব্যাংক কার্ড (ক্রেডিট বা ডেবিট) পান। এরপর পণ্য বা পরিষেবার জন্য অর্থ প্রদানের উদ্দেশ্যে লেনদেনের জন্য তিনি কার্ডটি উপস্থাপন করেন।
মার্চেন্ট
মার্চেন্ট বলতে বোঝায় যে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান কোনো পণ্য বা পরিষেবা বিক্রি করে। কিন্তু কার্ডের মাধ্যমে মূল্য পরিশোধের সুযোগ দেয় যারা এখানে শুধু সেই মার্চেন্টের কথা বলা হচ্ছে। যে কোনো ব্যবসা প্রতিষ্ঠান যাদের মার্চেন্ট অ্যাকাউন্ট আছে, যেটির মাধ্যমে তারা ক্রেডিট বা ডেবিট কার্ড গ্রাহকদের পণ্য বা পরিষেবার বিনিময়ে মূল্য পরিশোধের সুযোগ দিতে পারে তারাই মার্চেন্ট। ব্যবসার মালিক হিসেবে আপনি একজন মার্চেন্ট বলে গণ্য হতে পারেন।
অ্যাকোয়ারিং ব্যাংক বা মার্চেন্ট’স ব্যাংক
অ্যাকোয়ারিং ব্যাংক হলো কার্ড অ্যাসোসিয়েশনের (ভিসা বা মাস্টারকার্ড) নিবন্ধিত সদস্য। অ্যাকোয়ারিং ব্যাংককে সাধারণত মার্চেন্ট ব্যাংক বলা হয়। এই ধরনের ব্যাংক এমন একটি অ্যাকাউন্ট (যেটিকে বলে মার্চেন্ট অ্যাকাউন্ট) পরিচালনার জন্য মার্চেন্টদের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ থাকে, যা মার্চেন্টকে ক্রেডিট এবং ডেবিট কার্ড গ্রহণ করার অনুমতি দেয়। অ্যাকোয়ারিং ব্যাংকগুলো মার্চেন্টদের কার্ডের মাধ্যমে মূল্য পরিশোধের জন্য প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম এবং সফটওয়্যার সরবরাহ করে। এ ছাড়া গ্রাহক পরিষেবা এবং কার্ড গ্রহণের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট অন্যান্য প্রয়োজনীয় দিকগুলোও তারা পরিচালনা করে। অ্যাকোয়ারিং ব্যাংক ক্রেডিট কার্ড দিয়ে পরিশোধিত মূল্যের বিপরীতে মার্চেন্ট অ্যাকাউন্টে সেই পরিমাণ ডিপোজিট (তহবিল) জমা করে।
কার্ড ইস্যুকারী ব্যাংক
অবশ্য নাম দেখেই বুঝতে পারার কথা- ইস্যুকারী ব্যাংক গ্রাহকদের ডেবিট বা ক্রেডিট কার্ড ইস্যু করে। ইস্যুকারী ব্যাংক একই সঙ্গে কার্ড অ্যাসোসিয়েশনের (ভিসা এবং মাস্টারকার্ড) সদস্যও।
ইস্যুকারী ব্যাংকগুলো তাদের কার্ডধারীরা যে কেনাকাটা করেন তার জন্য মার্চেন্ট ব্যাংককে অর্থ প্রদান করে। এরপরে কার্ডধারীর দায়িত্ব হয় তাঁদের ক্রেডিট কার্ড চুক্তির শর্তাবলির অধীনে কার্ড ইস্যুকারী ব্যাংককে সেই অর্থ পরিশোধ করা।
কার্ড অ্যাসোসিয়েশন (ভিসা এবং মাস্টারকার্ড)
ভিসা এবং মাস্টারকার্ড কিন্তু কোনো ব্যাংক নয়। তারা ডেবিট-ক্রেডিট কার্ড বা মার্চেন্ট অ্যাকাউন্ট ইস্যু করে না। বরং তারা নিজ নিজ কার্ড ব্র্যান্ডের জন্য অভিভাবক (কাস্টডিয়ান) এবং ক্লিয়ারিং হাউস হিসেবে কাজ করে। তারা ক্রেডিট কার্ড বা ইলেকট্রনিক লেনদেন প্রক্রিয়াকরণে আর্থিক প্রতিষ্ঠান, ইন্ডিপেনডেন্ট সেলস অর্গানাইজেশন (আইএসও) এবং মেম্বারশিপ সার্ভিস প্রভাইডার্সের (এমএসপি) সঙ্গে একটি গভর্নিং বডি হিসেবেও কাজ করে। এখান থেকে ‘কার্ড অ্যাসোসিয়েশন’ নাম এসেছে।
কার্ড অ্যাসোসিয়েশনের প্রাথমিক দায়িত্ব হলো, অ্যাসোসিয়েশনের সদস্যদের পরিচালনা করা। যার মধ্যে রয়েছে ইস্যুকারী এবং মার্চেন্ট ব্যাংকের মধ্যস্থতাকারী হিসেবে বিনিময় ফি এবং যোগ্যতা নির্দেশিকা নির্ধারণ করা, কার্ড নেটওয়ার্ক এবং নিজ ব্র্যান্ডের উন্নয়ন এবং অবশ্যই পুরো প্রক্রিয়া থেকে মুনাফা করা। মুনাফার বিষয়টি এখানে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে, ফলত ভিসা এবং মাস্টারকার্ড এখন পাবলিক কোম্পানি (পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত)।
অ্যাসোসিয়েশনের সদস্যদের মধ্যে তথ্য আদান প্রদানের জন্য ভিসা ব্যবহার করে তাদের নিজস্ব ভিসানেট প্ল্যাটফর্ম। আর এ কাজে মাস্টারকার্ড ব্যবহার করে তাদের ব্যাংকনেট নেটওয়ার্ক।
ক্রেডিট কার্ড অনুমোদন (অথোরাইজেশন) প্রক্রিয়া
অথোরাইজেশন প্রক্রিয়ায় ওপরে উল্লিখিত সব পক্ষই নির্দিষ্ট ভূমিকা পালন করে। নিচে কোন পক্ষের কী ভূমিকা থাকে তা তুলে ধরা হলো:
কার্ডধারী
একজন কার্ডধারী পণ্য বা পরিষেবার জন্য অর্থ পরিশোধ করতে একটি মার্চেন্টের কাছে তাঁর কার্ডটি উপস্থাপন করেন। এরপরই ডেবিট বা ক্রেডিট কার্ডে লেনদেনের সূচনা হয়।
মার্চেন্ট
মার্চেন্ট তাদের ক্রেডিট কার্ড মেশিন, সফটওয়্যার বা গেটওয়ে ব্যবহার করে কার্ডধারীর তথ্য এবং লেনদেনের বিশদ বিবরণ তাদের মার্চেন্ট ব্যাংক বা লেনদেন প্রক্রিয়াকারী ব্যাংকের কাছে পাঠায়।
অ্যাকোয়ারিং বা প্রসেসর
অ্যাকোয়ারিং ব্যাংক (বা এর প্রসেসর) লেনদেনের তথ্য গ্রহণ করে এবং যথাযথ কার্ড নেটওয়ার্কের মাধ্যমে অনুমোদনের জন্য কার্ডধারীর ইস্যুকারী ব্যাংকে পাঠায়।
ভিসা/মাস্টারকার্ড নেটওয়ার্ক
মাস্টারকার্ড লেনদেনের তথ্য তাদের নিজস্ব ব্যাংকনেট নেটওয়ার্কের মাধ্যমে কার্ড ইস্যুকারী ব্যাংক এবং প্রক্রিয়াকারীর (অ্যাকোয়ারিং ব্যাংক বা এর প্রসেসর) মধ্যে বিনিময় করে। আর ভিসা কার্ড লেনদেনের তথ্য তাদের ভিসানেট নেটওয়ার্কের মাধ্যমে এই কাজটি করে।
ইস্যুকারী
ক্রেডিট কার্ড প্রদানকারী ব্যাংক ব্যাংকনেট বা ভিসানেটের মাধ্যমে অ্যাকোয়ারিং ব্যাংকের (বা এর প্রসেসর) কাছ থেকে লেনদেনের তথ্য পায়। এরপর সে লেনদেনের তথ্য যাচাই করে। সেই সঙ্গে লেনদেনটি বৈধ কি-না, কার্ডধারীর যথেষ্ট ব্যালেন্স আছে কি-না সেটি নিশ্চিত হওয়ার পর লেনদেনের অনুমোদন দেয় বা প্রত্যাখ্যান করে তার সিদ্ধান্ত জানিয়ে দেয়।
ভিসা/মাস্টারকার্ড নেটওয়ার্ক
কার্ড প্রদানকারী ব্যাংক যথাযথ নেটওয়ার্কের মাধ্যমে অ্যাকোয়ারিং ব্যাংকে (বা এর প্রসেসর) একটি কোড পাঠায়।
মার্চেন্ট
কোডটি মার্চেন্টের টার্মিনাল, সফটওয়্যার বা গেটওয়েতে পৌঁছায় এবং লেনদেন নিষ্পত্তির অপেক্ষায় থাকা একটি ব্যাচ ফাইলে সংরক্ষণ করা হয়।
ক্লিয়ারিং এবং নিষ্পত্তি যেভাবে সম্পন্ন হয়
ডেবিট বা ক্রেডিট কার্ড লেনদেন যেভাবে কাজ করে সেই প্রক্রিয়ার দ্বিতীয় অংশ হলো ক্লিয়ারিং এবং নিষ্পত্তি (সেটেলমেন্ট)। অনুমোদন প্রক্রিয়া সম্পন্ন ও সঞ্চালিত হওয়ার পরে এটি ঘটে। নিষ্পত্তির জন্য মার্চেন্ট প্রসেসরে অনুমোদনের জন্য একটি ‘ব্যাচ’ পাঠায়। সাধারণত দিনে একবার এই কাজটি হয়। প্রসেসর অনুমোদন প্রক্রিয়ার পুনঃসমন্বয় করে এবং কার্ড অ্যাসোসিয়েশন নেটওয়ার্কে ব্যাচ জমা দেয়। প্রসেসর তখন পণ্য বা সেবা বিক্রয় থেকে প্রাপ্ত তহবিল ব্যবসা প্রতিষ্ঠানটির (পণ্য বা সেবা বিক্রয়কারী মার্চেন্ট) ব্যাংক অ্যাকাউন্টে জমা করে। পাশাপাশি প্রসেসিং ফি কেটে নেয়। এই পর্যায়ে লেনদেনটি সম্পন্ন হয়।
এদিকে কার্ড ইস্যুকারী এবং অ্যাকোয়ারিং ব্যাংক যোগাযোগ এবং অর্থ স্থানান্তর অব্যাহত রাখে। অর্থাৎ ইস্যুকারী ব্যাংক কার্ডধারীর কেনাকাটার অর্থ অ্যাকোয়ারিং ব্যাংকে পাঠায়। অবশেষে কার্ডধারীকে সেই অর্থ সেই কার্ড ইস্যুকারী ব্যাংককেই দিতে হয়। এই পদক্ষেপগুলোর কোনটির সঙ্গেই আসলে কার্ডধারীর কোনো সম্পৃক্ততা লাগে না।
মার্চেন্ট
এবার মার্চেন্ট তাদের অ্যাকোয়ারিং ব্যাংকে (বা ব্যাংকের প্রসেসর) অনুমোদিত অথোরাইজেশনের একটি ব্যাচ পাঠিয়ে নিষ্পত্তি প্রক্রিয়া শুরু করে। অনুমোদনের ব্যাচগুলো সাধারণত প্রতি কার্যদিবসের শেষে পাঠানো হয়। কার্ড থেকে একাধিক লেনদেন হলে সব মিলে একটি ব্যাচ তৈরি হয়।
অ্যাকোয়ারিং ব্যাংক
অ্যাকোয়ারিং ব্যাংক (বা এর প্রসেসর) যথাযথ কার্ড অ্যাসোসিয়েশন নেটওয়ার্কের (ভিসানেট বা ব্যাংকনেট) মাধ্যমে তথ্য বিনিময়ের মাধ্যমে অনুমোদনের ব্যাচগুলো পুনরায় একত্রিত করে এবং পাঠিয়ে দেয়।
অ্যাকোয়ারিং ব্যাংক অটোমেটেড ক্লিয়ারিংহাউসের (এসিএইচ) মাধ্যমে মার্চেন্টের ব্যাংক অ্যাকাউন্টে বিক্রয় থেকে প্রাপ্ত অর্থ জমা করে এবং মার্চেন্টের সঙ্গে চুক্তির ওপর ভিত্তি করে মাসিক, দৈনিক বা উভয় হিসাবে নির্দিষ্ট প্রসেসিং ফি কেটে নেয়।
কার্ড নেটওয়ার্ক
কার্ড অ্যাসোসিয়েশন কার্ড ইস্যুকারী ব্যাংকের অ্যাকাউন্ট থেকে ফি কেটে নেয় এবং অ্যাকোয়ারিং ব্যাংকের অ্যাকাউন্টে তাদের পাওনা পাঠিয়ে দেয়।
ইস্যুকারী
কার্ড ইস্যুকারী ব্যাংক মূলত তার কার্ডধারীর কেনাকাটার জন্য অ্যাকোয়ারিং ব্যাংককে অর্থ প্রদান করে।
কার্ডধারী
কার্ডধারী তার কেনাকাটার জন্য ইস্যুকারী ব্যাংক এবং কার্ড চুক্তির সঙ্গে যুক্ত সুদ এবং ফি পরিশোধের জন্য দায়বদ্ধ থাকেন।
তহবিল এবং ফি
ওপরে নিষ্পত্তি এবং ক্লিয়ারিংয়ের ব্যাখ্যায় উল্লেখ করা হয়েছে যে, প্রসেসর ক্রেডিট কার্ডে বিক্রয় থেকে মার্চেন্টের ব্যাংক অ্যাকাউন্টে তহবিল জমা করবে এবং প্রক্রিয়াকরণ ফি কেটে নেবে। যাইহোক, ঠিক কীভাবে ফি কেটে নেওয়া হয় এবং কখন তহবিল জমা করা হয় তাতে কিছুটা ভিন্নতা রয়েছে।
ক্রেডিট কার্ড ডিপোজিট
আজকাল, বেশির ভাগ প্রসেসর পণ্য কেনার পরের দিন তহবিল জমা করে। এর অর্থ মার্চেন্ট আজকের ক্রেডিট কার্ড লেনদেনের জন্য অ্যাকাউন্টে অর্থ পাবে আগামীকাল।
কিছু ক্ষেত্রে, প্রসেসরেরা মার্চেন্টের তহবিল আটকে দিতে পারে। লেনদেনে জালিয়াতির সন্দেহ বা অন্য কোনো কারণে লেনদেনটি খুব ঝুঁকিপূর্ণ মনে করলে তাৎক্ষণিক তহবিল জমা হবে না। এ ক্ষেত্রে গ্রাহক কার্ড ঘষার সঙ্গে সঙ্গে অ্যাকাউন্টে ডিপোজিট জমা হওয়া দেখতে পাবেন না মার্চেন্ট।

চিঠিতে বলা হয়, বাংলাদেশে চলমান রাজনৈতিক অস্থিরতা ব্যাপক সহিংসতা ও অস্থিতিশীলতার জন্ম দিয়েছে। গণ-অভ্যুত্থানে ১ হাজার ৪০০ জনের বেশি শিক্ষার্থী নিহত ও হাজারো মানুষ আহত হওয়ার পর দেশ এখন একটি নাজুক রাজনৈতিক পালাবদলের মধ্যে আছে। অন্তর্বর্তী সরকার শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনা এবং একটি গ্রহণযোগ্য জাতীয়...
২ ঘণ্টা আগে
দেড় দশকের বেশি সময় ধরে কখনো ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’, আবার কখনো ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’ গড়ার স্লোগান শুনে আসছে দেশের মানুষ। এ নিয়ে ‘অ্যাকসেস টু ইনফরমেশন (এটুআই)’ নামে প্রকল্পও আছে সরকারের। বেসরকারি পর্যায়েও রয়েছে নানা উদ্যোগ। তারপরও দেশের ৪৩ দশমিক ৯৮ শতাংশ পরিবার এখনো ইন্টারনেট সেবার আওতার বাইরে রয়ে গেছে।
৩ দিন আগে
ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বলেন, দেশের ডিজিটাল রূপান্তর এখন আর খণ্ডিত প্রকল্প বা অ্যাপভিত্তিক উদ্যোগে সীমাবদ্ধ রাখা যাবে না। এটি একটি দীর্ঘমেয়াদি ও ভিত্তিমূলক রাষ্ট্রীয় রূপান্তর, যার কেন্দ্রে থাকবে ডেটা গভর্ন্যান্স, সাইবার নিরাপত্তা ও নাগরিক অধিকার। দেশে বহু ডিজিটাল সিস্টেম থাকলেও ইন্টারঅপারেবিলিটির...
৩ দিন আগে
স্মার্টফোন ব্র্যান্ড রিয়েলমি দেশে রিয়েলমি সি৮৫ উন্মোচন করেছে। এই ডিভাইসটির প্রধান আকর্ষণ হলো এর শক্তিশালী ৭০০০ মিলি অ্যাম্পিয়ারের আলট্রা ব্যাটারি ও ৪৫ ওয়াট ফাস্ট চার্জিং সক্ষমতা (যা ১০ ওয়াট রিভার্স চার্জিংও সাপোর্ট করে)।
৩ দিন আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহার করে সন্ত্রাস ও সহিংসতার উসকানিমূলক কনটেন্টের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানিয়ে মেটাকে চিঠি দিয়েছে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি)।
গতকাল শুক্রবার মেটার জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা ও ফেসবুকের দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রতিনিধিদের কাছে ই-মেইলের মাধ্যমে এই চিঠি পাঠানো হয়।
চিঠিতে বলা হয়, বাংলাদেশে চলমান রাজনৈতিক অস্থিরতা ব্যাপক সহিংসতা ও অস্থিতিশীলতার জন্ম দিয়েছে। গণ-অভ্যুত্থানে ১ হাজার ৪০০ জনের বেশি শিক্ষার্থী নিহত ও হাজারো মানুষ আহত হওয়ার পর দেশ এখন একটি নাজুক রাজনৈতিক পালাবদলের মধ্যে আছে। অন্তর্বর্তী সরকার শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনা এবং একটি গ্রহণযোগ্য জাতীয় নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছে।
এই পরিস্থিতিতে বিশেষ করে ফেসবুক ব্যবহার করে বড় ধরনের সহিংসতা, ভীতি প্রদর্শন ও আসন্ন নির্বাচন বানচালের ডাক দেওয়া হচ্ছে, যা জনজীবনে সহিংসতার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে বলে চিঠিতে উল্লেখ করা হয়।
ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক শরিফ ওসমান হাদির মৃত্যুর পর উদ্ভূত পরিস্থিতি নিয়ে চিঠিতে বলা হয়, ভিন্ন মতাদর্শের কিছু ব্যক্তি মতপ্রকাশের স্বাধীনতার নামে প্রকাশ্যে এই মৃত্যুকে সমর্থন জানিয়েছে, যা সবচেয়ে উদ্বেগজনক। আবার কেউ কেউ গণমাধ্যম প্রতিষ্ঠান ও সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে সহিংসতায় উসকানি দিচ্ছে। এসব উসকানিমূলক প্রচারণার পরই দেশের দুটি শীর্ষস্থানীয় সংবাদমাধ্যম দ্য ডেইলি স্টার ও দৈনিক প্রথম আলোসহ বিভিন্ন স্থাপনায় হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে। এতে গণমাধ্যমের স্বাধীনতা চরম হুমকির মুখে পড়ে এবং জনমনে ভীতির সৃষ্টি হয়।
বিটিআরসির অভিযোগ, উসকানিমূলক কনটেন্ট সরাতে বা ব্লক করতে দেরি করছে মেটা। প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে মেটা যে সময় নিচ্ছে, এর মধ্যে ওই সব অ্যাকাউন্ট থেকে আরও সহিংসতা ছড়ানোর সুযোগ তৈরি হচ্ছে।
মেটার কাছে বারবার অভিযোগ জানিয়েও সময়মতো সাড়া পাওয়া যায়নি বলে চিঠিতে অসন্তোষ প্রকাশ করে বিটিআরসি।
একই সঙ্গে কয়েকটি দাবি তুলে ধরা হয় চিঠিতে। এর মধ্যে রয়েছে বাংলাদেশ-সম্পর্কিত কনটেন্টের ক্ষেত্রে কমিউনিটি গাইডলাইন আরও কঠোর, দ্রুত ও প্রাসঙ্গিকভাবে প্রয়োগ করা; বাংলা ভাষার কনটেন্টে নজরদারি জোরদার করা এবং অভিযোগ ওঠা কনটেন্টের বিরুদ্ধে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেওয়া।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহার করে সন্ত্রাস ও সহিংসতার উসকানিমূলক কনটেন্টের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানিয়ে মেটাকে চিঠি দিয়েছে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি)।
গতকাল শুক্রবার মেটার জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা ও ফেসবুকের দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রতিনিধিদের কাছে ই-মেইলের মাধ্যমে এই চিঠি পাঠানো হয়।
চিঠিতে বলা হয়, বাংলাদেশে চলমান রাজনৈতিক অস্থিরতা ব্যাপক সহিংসতা ও অস্থিতিশীলতার জন্ম দিয়েছে। গণ-অভ্যুত্থানে ১ হাজার ৪০০ জনের বেশি শিক্ষার্থী নিহত ও হাজারো মানুষ আহত হওয়ার পর দেশ এখন একটি নাজুক রাজনৈতিক পালাবদলের মধ্যে আছে। অন্তর্বর্তী সরকার শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনা এবং একটি গ্রহণযোগ্য জাতীয় নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছে।
এই পরিস্থিতিতে বিশেষ করে ফেসবুক ব্যবহার করে বড় ধরনের সহিংসতা, ভীতি প্রদর্শন ও আসন্ন নির্বাচন বানচালের ডাক দেওয়া হচ্ছে, যা জনজীবনে সহিংসতার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে বলে চিঠিতে উল্লেখ করা হয়।
ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক শরিফ ওসমান হাদির মৃত্যুর পর উদ্ভূত পরিস্থিতি নিয়ে চিঠিতে বলা হয়, ভিন্ন মতাদর্শের কিছু ব্যক্তি মতপ্রকাশের স্বাধীনতার নামে প্রকাশ্যে এই মৃত্যুকে সমর্থন জানিয়েছে, যা সবচেয়ে উদ্বেগজনক। আবার কেউ কেউ গণমাধ্যম প্রতিষ্ঠান ও সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে সহিংসতায় উসকানি দিচ্ছে। এসব উসকানিমূলক প্রচারণার পরই দেশের দুটি শীর্ষস্থানীয় সংবাদমাধ্যম দ্য ডেইলি স্টার ও দৈনিক প্রথম আলোসহ বিভিন্ন স্থাপনায় হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে। এতে গণমাধ্যমের স্বাধীনতা চরম হুমকির মুখে পড়ে এবং জনমনে ভীতির সৃষ্টি হয়।
বিটিআরসির অভিযোগ, উসকানিমূলক কনটেন্ট সরাতে বা ব্লক করতে দেরি করছে মেটা। প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে মেটা যে সময় নিচ্ছে, এর মধ্যে ওই সব অ্যাকাউন্ট থেকে আরও সহিংসতা ছড়ানোর সুযোগ তৈরি হচ্ছে।
মেটার কাছে বারবার অভিযোগ জানিয়েও সময়মতো সাড়া পাওয়া যায়নি বলে চিঠিতে অসন্তোষ প্রকাশ করে বিটিআরসি।
একই সঙ্গে কয়েকটি দাবি তুলে ধরা হয় চিঠিতে। এর মধ্যে রয়েছে বাংলাদেশ-সম্পর্কিত কনটেন্টের ক্ষেত্রে কমিউনিটি গাইডলাইন আরও কঠোর, দ্রুত ও প্রাসঙ্গিকভাবে প্রয়োগ করা; বাংলা ভাষার কনটেন্টে নজরদারি জোরদার করা এবং অভিযোগ ওঠা কনটেন্টের বিরুদ্ধে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেওয়া।

আজকাল আর পকেটভর্তি নগদ টাকা নিয়ে দূরে ভ্রমণ করার দরকার পড়ে না। মানিব্যাগের একপাশে গুঁজে রাখা ছোট্ট একটি ইলেকট্রনিক চিপ বসানো পলিমারের কার্ড থাকাই যথেষ্ট। দু-একশ থেকে কয়েক লাখ টাকা পর্যন্ত এই কার্ড ঘষেই লেনদেন করা সম্ভব।
২৮ ডিসেম্বর ২০২১
দেড় দশকের বেশি সময় ধরে কখনো ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’, আবার কখনো ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’ গড়ার স্লোগান শুনে আসছে দেশের মানুষ। এ নিয়ে ‘অ্যাকসেস টু ইনফরমেশন (এটুআই)’ নামে প্রকল্পও আছে সরকারের। বেসরকারি পর্যায়েও রয়েছে নানা উদ্যোগ। তারপরও দেশের ৪৩ দশমিক ৯৮ শতাংশ পরিবার এখনো ইন্টারনেট সেবার আওতার বাইরে রয়ে গেছে।
৩ দিন আগে
ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বলেন, দেশের ডিজিটাল রূপান্তর এখন আর খণ্ডিত প্রকল্প বা অ্যাপভিত্তিক উদ্যোগে সীমাবদ্ধ রাখা যাবে না। এটি একটি দীর্ঘমেয়াদি ও ভিত্তিমূলক রাষ্ট্রীয় রূপান্তর, যার কেন্দ্রে থাকবে ডেটা গভর্ন্যান্স, সাইবার নিরাপত্তা ও নাগরিক অধিকার। দেশে বহু ডিজিটাল সিস্টেম থাকলেও ইন্টারঅপারেবিলিটির...
৩ দিন আগে
স্মার্টফোন ব্র্যান্ড রিয়েলমি দেশে রিয়েলমি সি৮৫ উন্মোচন করেছে। এই ডিভাইসটির প্রধান আকর্ষণ হলো এর শক্তিশালী ৭০০০ মিলি অ্যাম্পিয়ারের আলট্রা ব্যাটারি ও ৪৫ ওয়াট ফাস্ট চার্জিং সক্ষমতা (যা ১০ ওয়াট রিভার্স চার্জিংও সাপোর্ট করে)।
৩ দিন আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

দেড় দশকের বেশি সময় ধরে কখনো ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’, আবার কখনো ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’ গড়ার স্লোগান শুনে আসছে দেশের মানুষ। এ নিয়ে ‘অ্যাকসেস টু ইনফরমেশন (এটুআই)’ নামে প্রকল্পও আছে সরকারের। বেসরকারি পর্যায়েও রয়েছে নানা উদ্যোগ। তারপরও দেশের ৪৩ দশমিক ৯৮ শতাংশ পরিবার এখনো ইন্টারনেট সেবার আওতার বাইরে রয়ে গেছে। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) এক জরিপের তথ্য বলছে, বাংলাদেশে এখন ইন্টারনেট ব্যবহার করে ৫৬ দশমিক ২ শতাংশ পরিবারের মানুষ। এই হার গ্রামাঞ্চলে ৫১ দশমিক ৫ শতাংশ এবং শহরে ৬৪ শতাংশ।
‘ব্যক্তি ও খানা পর্যায়ে জেলাভিত্তিক আইসিটি ব্যবহারের সুযোগ ও প্রয়োগ পরিমাপ’ প্রকল্পের আওতায় পাঁচ বছর ও তদূর্ধ্ব বয়সীদের ওপর এই জরিপ পরিচালনা করে বিবিএস। এতে পরিবারগুলোয় মোবাইল ফোন, ফিক্সড ফোন, টেলিভিশন, রেডিও ও কম্পিউটার ব্যবহারের চিত্রও উঠে আসে।
জরিপের তথ্য অনুযায়ী, দেশে ব্যক্তি ও পারিবারিক পর্যায়ে মোবাইল ফোনের ব্যবহার বেড়েছে। একই সঙ্গে বেড়েছে টেলিভিশন, কম্পিউটার ও ইন্টারনেট ব্যবহারের হারও। তবে কমেছে স্মার্টফোন ও রেডিওর ব্যবহার।
‘আইসিটি প্রয়োগ ও ব্যবহার জরিপ’-এ পাঁচ বছর ও তদূর্ধ্ব বয়সী এবং শহর-পল্লি অঞ্চল অনুযায়ী জাতীয় পর্যায়ে আইসিটির সূচকসমূহ ত্রৈমাসিক ভিত্তিতে তৈরি করা হয়। সারা দেশে ২ হাজার ৫৬৮টি নির্বাচিত নমুনা এলাকায় দৈবচয়নের ভিত্তিতে ২৪টি করে মোট ৬১ হাজার ৬৩২টি খানায় ত্রৈমাসিক ভিত্তিতে তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছে।
জরিপের বিষয়ে বিবিএসের মহাপরিচালক মোহাম্মদ মিজানুর রহমান বলেন, জরিপের খানা ও ব্যক্তি পর্যায়ে আইসিটির সূচকগুলো আন্তর্জাতিক টেলিকমিউনিকেশন ইউনিয়নের (আইটিইউ) আলোকে নেওয়া হয়েছে। জরিপে খানায় রেডিও, টেলিভিশন, কম্পিউটার, মোবাইল ফোন, স্মার্টফোন, ইন্টারনেটের এক্সেস এবং ব্যক্তি পর্যায়ে মোবাইল ফোন, কম্পিউটার, ইন্টারনেটের ব্যবহার, মোবাইল ফোনের মালিকানার ফলাফল প্রস্তুত করা হয়েছে বলে জানান তিনি।
বিশ্লেষকেরা বলছেন, দেশের অনেক মানুষ ডিজিটাল সেবার বাইরে। এই জরিপে বিকাশ, নগদসহ মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসে (এমএফএস) এর আওতায় আনা হলে পরিসংখ্যান হয়তো পাল্টাবে।
তথ্যপ্রযুক্তি বিশেষজ্ঞ তানভীর হাসান জোহা আজকের পত্রিকাকে বলেন, সচেতনতার অভাবে এখনো অর্ধেক মানুষ ডিজিটাল সিস্টেমের আওতার বাইরে রয়েছে, যাদের বেশির ভাগ গ্রামাঞ্চল এবং পার্বত্য এলাকার। তারা ডিজিটাল সেবাকে ভয় পায়।
জরিপের তথ্য অনুযায়ী, বর্তমানে দেশে ৯৮ দশমিক ৯ শতাংশ পরিবারে অন্তত একটি মোবাইল ফোন ব্যবহৃত হচ্ছে। এর মধ্যে ৭২ দশমিক ৪ শতাংশ পরিবারে রয়েছে স্মার্টফোন। স্মার্টফোন ব্যবহারে শহরাঞ্চল এগিয়ে। শহরে ৮০ দশমিক ৮ শতাংশ এবং গ্রামে ৬৮ দশমিক ৮ শতাংশ পরিবার স্মার্টফোন ব্যবহার করে। এ ছাড়া ফিক্সড ফোন ব্যবহার করে শূন্য দশমিক ৮ শতাংশ পরিবার। কম্পিউটার ব্যবহার করে ৯ দশমিক ১ শতাংশ পরিবার। আর ৫৬ দশমিক ২ শতাংশ পরিবার ইন্টারনেট ব্যবহার করে।
অন্যদিকে, ৫৮ দশমিক ৯ শতাংশ পরিবারে টেলিভিশন দেখা হয় এবং ১৫ দশমিক ১ শতাংশ পরিবার রেডিও ব্যবহার করে বলে জরিপে উঠে এসেছে। আর বিদ্যুৎ সুবিধা রয়েছে ৯৮ দশমিক ৯ শতাংশ পরিবারে।
এর আগের বছর ২০২৪-২৫ অর্থবছরের জুলাই থেকে সেপ্টেম্বর প্রান্তিকে দেশের ৯৮ দশমিক ৮ শতাংশ পরিবারের অন্তত একজন মোবাইল ফোন ব্যবহার করেছিল। এর মধ্যে স্মার্টফোন ছিল ৭২ দশমিক ৮ শতাংশ। অর্থাৎ এক বছরের ব্যবধানে মোবাইল ফোনের ব্যবহার ১ শতাংশ বাড়লেও স্মার্টফোনের ব্যবহার কমেছে দশমিক ৪ শতাংশ।
২০২৪ সালের প্রথম প্রান্তিকে পারিবারিকভাবে কম্পিউটার ব্যবহারকারীদের সংখ্যা ছিল ১৫ দশমিক ৩ শতাংশ। সেখান থেকে এই হার দশমিক ২ শতাংশ কমে ১৫ দশমিক ১ শতাংশে দাঁড়িয়েছে। গ্রাম-শহরভিত্তিক হিসাবে দেখা যায়, গ্রামাঞ্চলে ১৪ শতাংশ পরিবার রেডিও ব্যবহার করলেও শহরে এই হার ১৭ দশমিক ৭ শতাংশ।
জরিপের ব্যক্তি পর্যায়ের বিশ্লেষণে দেখানো হয়, ২০২৫ সালের জুলাই-সেপ্টেম্বরে ৮০ দশমিক ৬ শতাংশ মানুষ মোবাইল ফোন ব্যবহার করেছে, যা এক বছর আগে ছিল ৭৮ দশমিক ৯ শতাংশ। অর্থাৎ এক বছরে মোবাইল ব্যবহারকারী বেড়েছে ১ দশমিক ৭ শতাংশ। এর মধ্যে পুরুষ ৮০ দশমিক ৯ শতাংশ এবং নারী ৭৮ দশমিক ৮ শতাংশ।
তবে ব্যক্তিমালিকানাধীন মোবাইল ফোনের ব্যবহার কিছুটা কমেছে। ২০২৪ সালে যেখানে এ হার ছিল ৫৭ দশমিক ৫ শতাংশ, ২০২৫ সালে তা কমে দাঁড়িয়েছে ৫৬ দশমিক ৫ শতাংশে। কম্পিউটার ব্যবহারের হারও সামান্য কমে ১০ দশমিক ১ শতাংশ থেকে ১০ শতাংশে নেমেছে। বিপরীতে, ব্যক্তি পর্যায়ে ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর সংখ্যা বেড়েছে। ২০২৪ সালে ৪৭ দশমিক ৮ শতাংশ থেকে ২০২৫ সালে তা বেড়ে হয়েছে ৪৮ দশমিক ৯ শতাংশ। ইন্টারনেট ব্যবহারকারীদের মধ্যে ৫১ দশমিক ২ শতাংশ পুরুষ এবং ৪৬ দশমিক ৩ শতাংশ নারী।
বিবিএস জানায়, এই জরিপের মাধ্যমে প্রাপ্ত তথ্য জাতীয় উন্নয়ন পরিকল্পনা, টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) পরিমাপ এবং আন্তর্জাতিক টেলিকমিউনিকেশন ইউনিয়নের (আইটিইউ) জন্য আইসিটি সূচক সরবরাহে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।

দেড় দশকের বেশি সময় ধরে কখনো ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’, আবার কখনো ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’ গড়ার স্লোগান শুনে আসছে দেশের মানুষ। এ নিয়ে ‘অ্যাকসেস টু ইনফরমেশন (এটুআই)’ নামে প্রকল্পও আছে সরকারের। বেসরকারি পর্যায়েও রয়েছে নানা উদ্যোগ। তারপরও দেশের ৪৩ দশমিক ৯৮ শতাংশ পরিবার এখনো ইন্টারনেট সেবার আওতার বাইরে রয়ে গেছে। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) এক জরিপের তথ্য বলছে, বাংলাদেশে এখন ইন্টারনেট ব্যবহার করে ৫৬ দশমিক ২ শতাংশ পরিবারের মানুষ। এই হার গ্রামাঞ্চলে ৫১ দশমিক ৫ শতাংশ এবং শহরে ৬৪ শতাংশ।
‘ব্যক্তি ও খানা পর্যায়ে জেলাভিত্তিক আইসিটি ব্যবহারের সুযোগ ও প্রয়োগ পরিমাপ’ প্রকল্পের আওতায় পাঁচ বছর ও তদূর্ধ্ব বয়সীদের ওপর এই জরিপ পরিচালনা করে বিবিএস। এতে পরিবারগুলোয় মোবাইল ফোন, ফিক্সড ফোন, টেলিভিশন, রেডিও ও কম্পিউটার ব্যবহারের চিত্রও উঠে আসে।
জরিপের তথ্য অনুযায়ী, দেশে ব্যক্তি ও পারিবারিক পর্যায়ে মোবাইল ফোনের ব্যবহার বেড়েছে। একই সঙ্গে বেড়েছে টেলিভিশন, কম্পিউটার ও ইন্টারনেট ব্যবহারের হারও। তবে কমেছে স্মার্টফোন ও রেডিওর ব্যবহার।
‘আইসিটি প্রয়োগ ও ব্যবহার জরিপ’-এ পাঁচ বছর ও তদূর্ধ্ব বয়সী এবং শহর-পল্লি অঞ্চল অনুযায়ী জাতীয় পর্যায়ে আইসিটির সূচকসমূহ ত্রৈমাসিক ভিত্তিতে তৈরি করা হয়। সারা দেশে ২ হাজার ৫৬৮টি নির্বাচিত নমুনা এলাকায় দৈবচয়নের ভিত্তিতে ২৪টি করে মোট ৬১ হাজার ৬৩২টি খানায় ত্রৈমাসিক ভিত্তিতে তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছে।
জরিপের বিষয়ে বিবিএসের মহাপরিচালক মোহাম্মদ মিজানুর রহমান বলেন, জরিপের খানা ও ব্যক্তি পর্যায়ে আইসিটির সূচকগুলো আন্তর্জাতিক টেলিকমিউনিকেশন ইউনিয়নের (আইটিইউ) আলোকে নেওয়া হয়েছে। জরিপে খানায় রেডিও, টেলিভিশন, কম্পিউটার, মোবাইল ফোন, স্মার্টফোন, ইন্টারনেটের এক্সেস এবং ব্যক্তি পর্যায়ে মোবাইল ফোন, কম্পিউটার, ইন্টারনেটের ব্যবহার, মোবাইল ফোনের মালিকানার ফলাফল প্রস্তুত করা হয়েছে বলে জানান তিনি।
বিশ্লেষকেরা বলছেন, দেশের অনেক মানুষ ডিজিটাল সেবার বাইরে। এই জরিপে বিকাশ, নগদসহ মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসে (এমএফএস) এর আওতায় আনা হলে পরিসংখ্যান হয়তো পাল্টাবে।
তথ্যপ্রযুক্তি বিশেষজ্ঞ তানভীর হাসান জোহা আজকের পত্রিকাকে বলেন, সচেতনতার অভাবে এখনো অর্ধেক মানুষ ডিজিটাল সিস্টেমের আওতার বাইরে রয়েছে, যাদের বেশির ভাগ গ্রামাঞ্চল এবং পার্বত্য এলাকার। তারা ডিজিটাল সেবাকে ভয় পায়।
জরিপের তথ্য অনুযায়ী, বর্তমানে দেশে ৯৮ দশমিক ৯ শতাংশ পরিবারে অন্তত একটি মোবাইল ফোন ব্যবহৃত হচ্ছে। এর মধ্যে ৭২ দশমিক ৪ শতাংশ পরিবারে রয়েছে স্মার্টফোন। স্মার্টফোন ব্যবহারে শহরাঞ্চল এগিয়ে। শহরে ৮০ দশমিক ৮ শতাংশ এবং গ্রামে ৬৮ দশমিক ৮ শতাংশ পরিবার স্মার্টফোন ব্যবহার করে। এ ছাড়া ফিক্সড ফোন ব্যবহার করে শূন্য দশমিক ৮ শতাংশ পরিবার। কম্পিউটার ব্যবহার করে ৯ দশমিক ১ শতাংশ পরিবার। আর ৫৬ দশমিক ২ শতাংশ পরিবার ইন্টারনেট ব্যবহার করে।
অন্যদিকে, ৫৮ দশমিক ৯ শতাংশ পরিবারে টেলিভিশন দেখা হয় এবং ১৫ দশমিক ১ শতাংশ পরিবার রেডিও ব্যবহার করে বলে জরিপে উঠে এসেছে। আর বিদ্যুৎ সুবিধা রয়েছে ৯৮ দশমিক ৯ শতাংশ পরিবারে।
এর আগের বছর ২০২৪-২৫ অর্থবছরের জুলাই থেকে সেপ্টেম্বর প্রান্তিকে দেশের ৯৮ দশমিক ৮ শতাংশ পরিবারের অন্তত একজন মোবাইল ফোন ব্যবহার করেছিল। এর মধ্যে স্মার্টফোন ছিল ৭২ দশমিক ৮ শতাংশ। অর্থাৎ এক বছরের ব্যবধানে মোবাইল ফোনের ব্যবহার ১ শতাংশ বাড়লেও স্মার্টফোনের ব্যবহার কমেছে দশমিক ৪ শতাংশ।
২০২৪ সালের প্রথম প্রান্তিকে পারিবারিকভাবে কম্পিউটার ব্যবহারকারীদের সংখ্যা ছিল ১৫ দশমিক ৩ শতাংশ। সেখান থেকে এই হার দশমিক ২ শতাংশ কমে ১৫ দশমিক ১ শতাংশে দাঁড়িয়েছে। গ্রাম-শহরভিত্তিক হিসাবে দেখা যায়, গ্রামাঞ্চলে ১৪ শতাংশ পরিবার রেডিও ব্যবহার করলেও শহরে এই হার ১৭ দশমিক ৭ শতাংশ।
জরিপের ব্যক্তি পর্যায়ের বিশ্লেষণে দেখানো হয়, ২০২৫ সালের জুলাই-সেপ্টেম্বরে ৮০ দশমিক ৬ শতাংশ মানুষ মোবাইল ফোন ব্যবহার করেছে, যা এক বছর আগে ছিল ৭৮ দশমিক ৯ শতাংশ। অর্থাৎ এক বছরে মোবাইল ব্যবহারকারী বেড়েছে ১ দশমিক ৭ শতাংশ। এর মধ্যে পুরুষ ৮০ দশমিক ৯ শতাংশ এবং নারী ৭৮ দশমিক ৮ শতাংশ।
তবে ব্যক্তিমালিকানাধীন মোবাইল ফোনের ব্যবহার কিছুটা কমেছে। ২০২৪ সালে যেখানে এ হার ছিল ৫৭ দশমিক ৫ শতাংশ, ২০২৫ সালে তা কমে দাঁড়িয়েছে ৫৬ দশমিক ৫ শতাংশে। কম্পিউটার ব্যবহারের হারও সামান্য কমে ১০ দশমিক ১ শতাংশ থেকে ১০ শতাংশে নেমেছে। বিপরীতে, ব্যক্তি পর্যায়ে ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর সংখ্যা বেড়েছে। ২০২৪ সালে ৪৭ দশমিক ৮ শতাংশ থেকে ২০২৫ সালে তা বেড়ে হয়েছে ৪৮ দশমিক ৯ শতাংশ। ইন্টারনেট ব্যবহারকারীদের মধ্যে ৫১ দশমিক ২ শতাংশ পুরুষ এবং ৪৬ দশমিক ৩ শতাংশ নারী।
বিবিএস জানায়, এই জরিপের মাধ্যমে প্রাপ্ত তথ্য জাতীয় উন্নয়ন পরিকল্পনা, টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) পরিমাপ এবং আন্তর্জাতিক টেলিকমিউনিকেশন ইউনিয়নের (আইটিইউ) জন্য আইসিটি সূচক সরবরাহে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।

আজকাল আর পকেটভর্তি নগদ টাকা নিয়ে দূরে ভ্রমণ করার দরকার পড়ে না। মানিব্যাগের একপাশে গুঁজে রাখা ছোট্ট একটি ইলেকট্রনিক চিপ বসানো পলিমারের কার্ড থাকাই যথেষ্ট। দু-একশ থেকে কয়েক লাখ টাকা পর্যন্ত এই কার্ড ঘষেই লেনদেন করা সম্ভব।
২৮ ডিসেম্বর ২০২১
চিঠিতে বলা হয়, বাংলাদেশে চলমান রাজনৈতিক অস্থিরতা ব্যাপক সহিংসতা ও অস্থিতিশীলতার জন্ম দিয়েছে। গণ-অভ্যুত্থানে ১ হাজার ৪০০ জনের বেশি শিক্ষার্থী নিহত ও হাজারো মানুষ আহত হওয়ার পর দেশ এখন একটি নাজুক রাজনৈতিক পালাবদলের মধ্যে আছে। অন্তর্বর্তী সরকার শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনা এবং একটি গ্রহণযোগ্য জাতীয়...
২ ঘণ্টা আগে
ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বলেন, দেশের ডিজিটাল রূপান্তর এখন আর খণ্ডিত প্রকল্প বা অ্যাপভিত্তিক উদ্যোগে সীমাবদ্ধ রাখা যাবে না। এটি একটি দীর্ঘমেয়াদি ও ভিত্তিমূলক রাষ্ট্রীয় রূপান্তর, যার কেন্দ্রে থাকবে ডেটা গভর্ন্যান্স, সাইবার নিরাপত্তা ও নাগরিক অধিকার। দেশে বহু ডিজিটাল সিস্টেম থাকলেও ইন্টারঅপারেবিলিটির...
৩ দিন আগে
স্মার্টফোন ব্র্যান্ড রিয়েলমি দেশে রিয়েলমি সি৮৫ উন্মোচন করেছে। এই ডিভাইসটির প্রধান আকর্ষণ হলো এর শক্তিশালী ৭০০০ মিলি অ্যাম্পিয়ারের আলট্রা ব্যাটারি ও ৪৫ ওয়াট ফাস্ট চার্জিং সক্ষমতা (যা ১০ ওয়াট রিভার্স চার্জিংও সাপোর্ট করে)।
৩ দিন আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তিবিষয়ক বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বলেছেন, ডিজিটাল রূপান্তর মানে শুধু অ্যাপ নয়, রাষ্ট্রের ভিত্তি পুনর্গঠনের প্রক্রিয়া।
রাজধানীর বাংলাদেশ–চীন মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্রে আজ বুধবার ‘বিল্ডিং ট্রাস্ট অ্যান্ড সাসটেইনেবিলিটি থ্রু ডেটা গভর্ন্যান্স’ শীর্ষক সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
বাংলাদেশ সরকারের সহযোগিতায় দ্য ইনস্টিটিউট অব কস্ট অ্যান্ড ম্যানেজমেন্ট অ্যাকাউন্ট্যান্টস অব বাংলাদেশ (আইসিএমএবি) এবং তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগ (ইডিজিই প্রকল্প) এই সম্মেলনের আয়োজন করে।
ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বলেন, দেশের ডিজিটাল রূপান্তর এখন আর খণ্ডিত প্রকল্প বা অ্যাপভিত্তিক উদ্যোগে সীমাবদ্ধ রাখা যাবে না। এটি একটি দীর্ঘমেয়াদি ও ভিত্তিমূলক রাষ্ট্রীয় রূপান্তর, যার কেন্দ্রে থাকবে ডেটা গভর্ন্যান্স, সাইবার নিরাপত্তা ও নাগরিক অধিকার। দেশে বহু ডিজিটাল সিস্টেম থাকলেও ইন্টারঅপারেবিলিটির অভাব বড় বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। ফলে সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে সমস্যা হচ্ছে এবং কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা কার্যকরভাবে ব্যবহার করা যাচ্ছে না।
তৈয়্যব জানান, অন্তর্বর্তী সরকার এরই মধ্যে সাইবার সেফটি, ব্যক্তিগত ডেটা সুরক্ষা ও জাতীয় ডেটা গভর্ন্যান্স—এই তিন আইনি ভিত্তি গড়ে তোলার কাজ শুরু করেছে, যা ভবিষ্যৎ ডিজিটাল পাবলিক ইনফ্রাস্ট্রাকচারের (ডিপিআই) মূল স্তম্ভ হবে। ভবিষ্যতে প্রতিটি নাগরিকের একটি ডিজিটাল ডেটা ওয়ালেট থাকবে; যেখানে জন্ম থেকে মৃত্যু পর্যন্ত তথ্য সুরক্ষিত থাকবে এবং নাগরিকের সম্মতিতেই নির্দিষ্ট সময়ের জন্য ডেটা ব্যবহার করা যাবে।
সম্মেলনে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের সচিব শীষ হায়দার চৌধুরী বলেন, কার্যকর ডেটা গভর্ন্যান্স কেবল নীতিমালা প্রণয়নের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়; এর জন্য প্রয়োজন শক্তিশালী প্রাতিষ্ঠানিক সক্ষমতা, আন্তখাত সমন্বয় এবং সুস্পষ্ট জবাবদিহি কাঠামো। সরকারি ও বেসরকারি খাতে ডিজিটাল সেবার পরিসর বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে দায়িত্বশীল ডেটা ব্যবহার, নিরাপত্তা ও কমপ্লায়েন্স নিশ্চিত করা জনআস্থা অর্জন ও টেকসই ডিজিটাল রূপান্তরের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
সম্মেলনে তিনটি আলাদা অধিবেশনে ডেটা সুরক্ষা নীতিমালার বাস্তব প্রয়োগ, আন্তর্জাতিক মানের সঙ্গে বাংলাদেশের ডেটা ব্যবস্থাপনার তুলনা এবং ডেটা ব্যবস্থাপনায় পেশাদার হিসাববিদদের ভূমিকা নিয়ে আলোচনা হয়।
সম্মেলনে ইন্টারন্যাশনাল ফেডারেশন অব অ্যাকাউন্ট্যান্টসের (আইএফএসি) সভাপতি জ্যঁ বোকু, বিশ্বব্যাংকের বাংলাদেশ ও ভুটান অঞ্চলের ডিভিশন ডিরেক্টর জ্যঁ পেসমেসহ সরকারি নীতিনির্ধারক, আন্তর্জাতিক সংস্থা, পেশাদার হিসাববিদ, আইন ও প্রযুক্তি খাতের বিশেষজ্ঞরা অংশ নেন।

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তিবিষয়ক বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বলেছেন, ডিজিটাল রূপান্তর মানে শুধু অ্যাপ নয়, রাষ্ট্রের ভিত্তি পুনর্গঠনের প্রক্রিয়া।
রাজধানীর বাংলাদেশ–চীন মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্রে আজ বুধবার ‘বিল্ডিং ট্রাস্ট অ্যান্ড সাসটেইনেবিলিটি থ্রু ডেটা গভর্ন্যান্স’ শীর্ষক সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
বাংলাদেশ সরকারের সহযোগিতায় দ্য ইনস্টিটিউট অব কস্ট অ্যান্ড ম্যানেজমেন্ট অ্যাকাউন্ট্যান্টস অব বাংলাদেশ (আইসিএমএবি) এবং তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগ (ইডিজিই প্রকল্প) এই সম্মেলনের আয়োজন করে।
ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বলেন, দেশের ডিজিটাল রূপান্তর এখন আর খণ্ডিত প্রকল্প বা অ্যাপভিত্তিক উদ্যোগে সীমাবদ্ধ রাখা যাবে না। এটি একটি দীর্ঘমেয়াদি ও ভিত্তিমূলক রাষ্ট্রীয় রূপান্তর, যার কেন্দ্রে থাকবে ডেটা গভর্ন্যান্স, সাইবার নিরাপত্তা ও নাগরিক অধিকার। দেশে বহু ডিজিটাল সিস্টেম থাকলেও ইন্টারঅপারেবিলিটির অভাব বড় বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। ফলে সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে সমস্যা হচ্ছে এবং কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা কার্যকরভাবে ব্যবহার করা যাচ্ছে না।
তৈয়্যব জানান, অন্তর্বর্তী সরকার এরই মধ্যে সাইবার সেফটি, ব্যক্তিগত ডেটা সুরক্ষা ও জাতীয় ডেটা গভর্ন্যান্স—এই তিন আইনি ভিত্তি গড়ে তোলার কাজ শুরু করেছে, যা ভবিষ্যৎ ডিজিটাল পাবলিক ইনফ্রাস্ট্রাকচারের (ডিপিআই) মূল স্তম্ভ হবে। ভবিষ্যতে প্রতিটি নাগরিকের একটি ডিজিটাল ডেটা ওয়ালেট থাকবে; যেখানে জন্ম থেকে মৃত্যু পর্যন্ত তথ্য সুরক্ষিত থাকবে এবং নাগরিকের সম্মতিতেই নির্দিষ্ট সময়ের জন্য ডেটা ব্যবহার করা যাবে।
সম্মেলনে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের সচিব শীষ হায়দার চৌধুরী বলেন, কার্যকর ডেটা গভর্ন্যান্স কেবল নীতিমালা প্রণয়নের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়; এর জন্য প্রয়োজন শক্তিশালী প্রাতিষ্ঠানিক সক্ষমতা, আন্তখাত সমন্বয় এবং সুস্পষ্ট জবাবদিহি কাঠামো। সরকারি ও বেসরকারি খাতে ডিজিটাল সেবার পরিসর বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে দায়িত্বশীল ডেটা ব্যবহার, নিরাপত্তা ও কমপ্লায়েন্স নিশ্চিত করা জনআস্থা অর্জন ও টেকসই ডিজিটাল রূপান্তরের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
সম্মেলনে তিনটি আলাদা অধিবেশনে ডেটা সুরক্ষা নীতিমালার বাস্তব প্রয়োগ, আন্তর্জাতিক মানের সঙ্গে বাংলাদেশের ডেটা ব্যবস্থাপনার তুলনা এবং ডেটা ব্যবস্থাপনায় পেশাদার হিসাববিদদের ভূমিকা নিয়ে আলোচনা হয়।
সম্মেলনে ইন্টারন্যাশনাল ফেডারেশন অব অ্যাকাউন্ট্যান্টসের (আইএফএসি) সভাপতি জ্যঁ বোকু, বিশ্বব্যাংকের বাংলাদেশ ও ভুটান অঞ্চলের ডিভিশন ডিরেক্টর জ্যঁ পেসমেসহ সরকারি নীতিনির্ধারক, আন্তর্জাতিক সংস্থা, পেশাদার হিসাববিদ, আইন ও প্রযুক্তি খাতের বিশেষজ্ঞরা অংশ নেন।

আজকাল আর পকেটভর্তি নগদ টাকা নিয়ে দূরে ভ্রমণ করার দরকার পড়ে না। মানিব্যাগের একপাশে গুঁজে রাখা ছোট্ট একটি ইলেকট্রনিক চিপ বসানো পলিমারের কার্ড থাকাই যথেষ্ট। দু-একশ থেকে কয়েক লাখ টাকা পর্যন্ত এই কার্ড ঘষেই লেনদেন করা সম্ভব।
২৮ ডিসেম্বর ২০২১
চিঠিতে বলা হয়, বাংলাদেশে চলমান রাজনৈতিক অস্থিরতা ব্যাপক সহিংসতা ও অস্থিতিশীলতার জন্ম দিয়েছে। গণ-অভ্যুত্থানে ১ হাজার ৪০০ জনের বেশি শিক্ষার্থী নিহত ও হাজারো মানুষ আহত হওয়ার পর দেশ এখন একটি নাজুক রাজনৈতিক পালাবদলের মধ্যে আছে। অন্তর্বর্তী সরকার শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনা এবং একটি গ্রহণযোগ্য জাতীয়...
২ ঘণ্টা আগে
দেড় দশকের বেশি সময় ধরে কখনো ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’, আবার কখনো ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’ গড়ার স্লোগান শুনে আসছে দেশের মানুষ। এ নিয়ে ‘অ্যাকসেস টু ইনফরমেশন (এটুআই)’ নামে প্রকল্পও আছে সরকারের। বেসরকারি পর্যায়েও রয়েছে নানা উদ্যোগ। তারপরও দেশের ৪৩ দশমিক ৯৮ শতাংশ পরিবার এখনো ইন্টারনেট সেবার আওতার বাইরে রয়ে গেছে।
৩ দিন আগে
স্মার্টফোন ব্র্যান্ড রিয়েলমি দেশে রিয়েলমি সি৮৫ উন্মোচন করেছে। এই ডিভাইসটির প্রধান আকর্ষণ হলো এর শক্তিশালী ৭০০০ মিলি অ্যাম্পিয়ারের আলট্রা ব্যাটারি ও ৪৫ ওয়াট ফাস্ট চার্জিং সক্ষমতা (যা ১০ ওয়াট রিভার্স চার্জিংও সাপোর্ট করে)।
৩ দিন আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

স্মার্টফোন ব্র্যান্ড রিয়েলমি দেশে রিয়েলমি সি৮৫ উন্মোচন করেছে। এই ডিভাইসটির প্রধান আকর্ষণ হলো এর শক্তিশালী ৭০০০ মিলি অ্যাম্পিয়ারের আলট্রা ব্যাটারি ও ৪৫ ওয়াট ফাস্ট চার্জিং সক্ষমতা (যা ১০ ওয়াট রিভার্স চার্জিংও সাপোর্ট করে)।
ফোনটিতে গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ড বিজয়ী ইন্ডাস্ট্রির সর্বোচ্চ ওয়াটার অ্যান্ড ডাস্ট প্রোটেকশন স্ট্যান্ডার্ড—আইপি ৬৯ প্রো রেটিং রয়েছে, যা এটিকে ৬০ দিন পর্যন্ত পানির নিচে টিকে থাকতে সাহায্য করে।
এতে রয়েছে ৬.৮ ইঞ্চি অ্যামোলেড ডিসপ্লে, যার রিফ্রেশ রেট সুপার-স্মুথ ১৪৪ হার্জ এবং পিক ব্রাইটনেস ১,২০০ নিট।
ডিভাইসটিতে স্ন্যাপড্রাগন ৬৮৫ ফোরজি প্রসেসর ব্যবহার করা হয়েছে। ফটোগ্রাফির জন্য পেছনে ৫০ মেগাপিক্সেল প্রাইমারি ক্যামেরা এবং সামনে ৮ মেগাপিক্সেল ফ্রন্ট ক্যামেরা রয়েছে।
রিয়েলমি সি৮৫ সোয়ান ব্ল্যাক ও কিংফিশার ব্লু রঙে দুইটি ভ্যারিয়েন্টে পাওয়া যাচ্ছে: ৬ জিবি + ১২৮ জিবি: মূল্য ১৮,৯৯৯ টাকা। ৮ জিবি + ১২৮ জিবি: মূল্য ২০,৯৯৯ টাকা।

স্মার্টফোন ব্র্যান্ড রিয়েলমি দেশে রিয়েলমি সি৮৫ উন্মোচন করেছে। এই ডিভাইসটির প্রধান আকর্ষণ হলো এর শক্তিশালী ৭০০০ মিলি অ্যাম্পিয়ারের আলট্রা ব্যাটারি ও ৪৫ ওয়াট ফাস্ট চার্জিং সক্ষমতা (যা ১০ ওয়াট রিভার্স চার্জিংও সাপোর্ট করে)।
ফোনটিতে গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ড বিজয়ী ইন্ডাস্ট্রির সর্বোচ্চ ওয়াটার অ্যান্ড ডাস্ট প্রোটেকশন স্ট্যান্ডার্ড—আইপি ৬৯ প্রো রেটিং রয়েছে, যা এটিকে ৬০ দিন পর্যন্ত পানির নিচে টিকে থাকতে সাহায্য করে।
এতে রয়েছে ৬.৮ ইঞ্চি অ্যামোলেড ডিসপ্লে, যার রিফ্রেশ রেট সুপার-স্মুথ ১৪৪ হার্জ এবং পিক ব্রাইটনেস ১,২০০ নিট।
ডিভাইসটিতে স্ন্যাপড্রাগন ৬৮৫ ফোরজি প্রসেসর ব্যবহার করা হয়েছে। ফটোগ্রাফির জন্য পেছনে ৫০ মেগাপিক্সেল প্রাইমারি ক্যামেরা এবং সামনে ৮ মেগাপিক্সেল ফ্রন্ট ক্যামেরা রয়েছে।
রিয়েলমি সি৮৫ সোয়ান ব্ল্যাক ও কিংফিশার ব্লু রঙে দুইটি ভ্যারিয়েন্টে পাওয়া যাচ্ছে: ৬ জিবি + ১২৮ জিবি: মূল্য ১৮,৯৯৯ টাকা। ৮ জিবি + ১২৮ জিবি: মূল্য ২০,৯৯৯ টাকা।

আজকাল আর পকেটভর্তি নগদ টাকা নিয়ে দূরে ভ্রমণ করার দরকার পড়ে না। মানিব্যাগের একপাশে গুঁজে রাখা ছোট্ট একটি ইলেকট্রনিক চিপ বসানো পলিমারের কার্ড থাকাই যথেষ্ট। দু-একশ থেকে কয়েক লাখ টাকা পর্যন্ত এই কার্ড ঘষেই লেনদেন করা সম্ভব।
২৮ ডিসেম্বর ২০২১
চিঠিতে বলা হয়, বাংলাদেশে চলমান রাজনৈতিক অস্থিরতা ব্যাপক সহিংসতা ও অস্থিতিশীলতার জন্ম দিয়েছে। গণ-অভ্যুত্থানে ১ হাজার ৪০০ জনের বেশি শিক্ষার্থী নিহত ও হাজারো মানুষ আহত হওয়ার পর দেশ এখন একটি নাজুক রাজনৈতিক পালাবদলের মধ্যে আছে। অন্তর্বর্তী সরকার শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনা এবং একটি গ্রহণযোগ্য জাতীয়...
২ ঘণ্টা আগে
দেড় দশকের বেশি সময় ধরে কখনো ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’, আবার কখনো ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’ গড়ার স্লোগান শুনে আসছে দেশের মানুষ। এ নিয়ে ‘অ্যাকসেস টু ইনফরমেশন (এটুআই)’ নামে প্রকল্পও আছে সরকারের। বেসরকারি পর্যায়েও রয়েছে নানা উদ্যোগ। তারপরও দেশের ৪৩ দশমিক ৯৮ শতাংশ পরিবার এখনো ইন্টারনেট সেবার আওতার বাইরে রয়ে গেছে।
৩ দিন আগে
ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বলেন, দেশের ডিজিটাল রূপান্তর এখন আর খণ্ডিত প্রকল্প বা অ্যাপভিত্তিক উদ্যোগে সীমাবদ্ধ রাখা যাবে না। এটি একটি দীর্ঘমেয়াদি ও ভিত্তিমূলক রাষ্ট্রীয় রূপান্তর, যার কেন্দ্রে থাকবে ডেটা গভর্ন্যান্স, সাইবার নিরাপত্তা ও নাগরিক অধিকার। দেশে বহু ডিজিটাল সিস্টেম থাকলেও ইন্টারঅপারেবিলিটির...
৩ দিন আগে