ব্যারিস্টার ইফফাত গিয়াস আরেফিন

প্রশ্ন: আমি বাবার বাসায় থাকা অবস্থায় স্বামী আরেকটি বিয়ে করে। সে জানায়, আমাকে ডিভোর্স দিয়েছে। কিন্তু আমি আজ এক বছরেও কোনো নোটিশ পাইনি। তার বিয়ের পরপরই এক পারিবারিক আইনজীবীর সাহায্যে তার বিরুদ্ধে যৌতুকের মামলা করি। আইন ও মামলা বিষয়ে আমার ধারণা না থাকায় আইনজীবী যা বলেছেন, তা-ই করেছি। কোর্ট থেকে ওয়ারেন্ট বের হওয়ার পর তারা আগাম জামিন নিয়েছে, সেটা দুই মাস পর আমি জানতে পেরেছি। সে আমার দেড় বছরের সন্তানের কোনো ভরণপোষণ দেয় না, কোনো খোঁজখবরও রাখে না। আমি এই বয়সে মেয়েটাকে নিয়ে চাকরি করছি। কোথায় যাব, কী করব বুঝতে পারছি না।
আমাদের আইনজীবী কি কোনো ধরনের ছলচাতুরী করেছে? এখন আমাদের কী করা উচিত?
উত্তর: আপনি এক অন্যায় পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে যাচ্ছেন। আপনার বৈবাহিক অবস্থা এখনো বৈধ। মুসলিম পারিবারিক আইন, ১৯৬১, সেকশন ৭ অনুযায়ী তালাক কার্যকর হওয়ার জন্য তিনটি আইনি শর্ত পূরণ করতে হবে। লিখিত তালাকনামা দিতে হবে, ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান কিংবা সিটি করপোরেশনের মেয়রকে লিখিতভাবে অবহিত করতে হবে। এরপর চেয়ারম্যান ৯০ দিনের মধ্যে সালিসি সভা আহ্বান করবেন এবং সে সময়কাল শেষে তালাক কার্যকর হবে।
আপনি যেহেতু কোনো লিখিত নোটিশ পাননি এবং ইউনিয়ন পরিষদ থেকেও কোনো সালিসি সভার নোটিশ পাননি, তাহলে এ ধরনের তথাকথিত ‘ডিভোর্স’ আইনগতভাবে অবৈধ ও অকার্যকর।
অর্থাৎ, আপনি এখনো তাঁর বৈধ স্ত্রী। তিনি অর্থাৎ আপনার স্বামী যদি আপনার অনুমতি ছাড়া দ্বিতীয় বিয়ে করে থাকেন, তাহলে তিনি মুসলিম পারিবারিক আইন, ১৯৬১, সেকশন ৬ অনুযায়ী অপরাধ করেছেন।
সেই অপরাধের জন্য সর্বোচ্চ এক বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড বা জরিমানা কিংবা উভয় দণ্ড হতে পারে।
আপনি এই অভিযোগ স্থানীয় পারিবারিক কোর্ট বা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার মাধ্যমে দাখিল করতে পারেন।
আপনি নিজের এবং আপনার সন্তানের জন্য পারিবারিক কোর্টে ভরণপোষণের মামলা করতে পারেন মুসলিম পারিবারিক আইন, ১৯৬১, সেকশন ৯ অনুসারে। এই মামলায় আপনি দাবি করতে পারবেন—সন্তানের মাসিক খরচ (খাদ্য, চিকিৎসা, শিক্ষা ইত্যাদি), নিজের রক্ষণাবেক্ষণ (যেহেতু বৈধ ডিভোর্স হয়নি) এবং অতীতের বকেয়া ভরণপোষণ।
যে কাগজপত্র প্রয়োজন হবে
আপনার জাতীয় পরিচয়পত্র বা জন্মসনদ, নিকাহনামা (কিংবা বিয়ের সাক্ষী থাকলে তাঁদের বিবৃতি), সন্তানের জন্মসনদ, আপনার স্বামীর ঠিকানা ও পেশার তথ্য, আপনার এবং সন্তানের আনুমানিক মাসিক খরচের হিসাব।
আপনি যৌতুক মামলা ইতিমধ্যে করেছেন বলে জানিয়েছেন। আপনি আদালতে গিয়ে কেস নম্বর এবং পরবর্তী শুনানির তারিখ জেনে নেবেন। যদি দেখেন, আপনার আগের উকিল মামলাটি ইচ্ছাকৃত বিলম্বিত করছেন, তাহলে নতুন উকিল নিয়োগ করে ওকালতনামা পরিবর্তন করুন। নতুন উকিলকে দিয়ে অর্ডার শিট দেখুন। তাতে বোঝা যাবে, মামলার অগ্রগতি কত দূর। আগের উকিল যদি অসততা করে থাকেন, তাহলে আপনি বার কাউন্সিল বা জেলা বার অ্যাসোসিয়েশনে লিখিত অভিযোগ দাখিল করতে পারেন।
আপনার বাবার পাঠানো আসবাব ও দানসামগ্রী আপনার ব্যক্তিগত সম্পত্তি। আপনার স্বামী যদি সেগুলো নিজের দখলে রেখে ব্যবহার করেন, তাহলে আপনি সিভিল কোর্টে স্ত্রীধন রিকভারি মামলা করতে পারেন। এই মামলায় কোর্ট নির্দেশ দিতে পারেন, যেন ওই সব জিনিস আপনাকে ফেরত দেওয়া হয় কিংবা এর আর্থিক মূল্য আপনাকে দেওয়া হয়।
যদি আপনার বা আপনার সন্তানের নিরাপত্তা নিয়ে আশঙ্কা থাকে, তবে অবিলম্বে স্থানীয় থানায় জিডি করুন। যদি মানসিক বা শারীরিক হুমকি থাকে, তাহলে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন, ২০০০ অনুযায়ী মামলা করতে পারেন।
সহায়তা পাওয়ার জন্য জাতীয় মহিলা আইনজীবী সমিতি, বাংলাদেশ লিগ্যাল এইড অ্যান্ড সার্ভিসেস ট্রাস্ট (ব্লাস্ট) অথবা ব্র্যাক লিগ্যাল এইডে আপনি যোগাযোগ করতে পারেন।
পরামর্শ দিয়েছেন
ব্যারিস্টার ইফফাত গিয়াস আরেফিন
অ্যাডভোকেট, বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট

প্রশ্ন: আমি বাবার বাসায় থাকা অবস্থায় স্বামী আরেকটি বিয়ে করে। সে জানায়, আমাকে ডিভোর্স দিয়েছে। কিন্তু আমি আজ এক বছরেও কোনো নোটিশ পাইনি। তার বিয়ের পরপরই এক পারিবারিক আইনজীবীর সাহায্যে তার বিরুদ্ধে যৌতুকের মামলা করি। আইন ও মামলা বিষয়ে আমার ধারণা না থাকায় আইনজীবী যা বলেছেন, তা-ই করেছি। কোর্ট থেকে ওয়ারেন্ট বের হওয়ার পর তারা আগাম জামিন নিয়েছে, সেটা দুই মাস পর আমি জানতে পেরেছি। সে আমার দেড় বছরের সন্তানের কোনো ভরণপোষণ দেয় না, কোনো খোঁজখবরও রাখে না। আমি এই বয়সে মেয়েটাকে নিয়ে চাকরি করছি। কোথায় যাব, কী করব বুঝতে পারছি না।
আমাদের আইনজীবী কি কোনো ধরনের ছলচাতুরী করেছে? এখন আমাদের কী করা উচিত?
উত্তর: আপনি এক অন্যায় পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে যাচ্ছেন। আপনার বৈবাহিক অবস্থা এখনো বৈধ। মুসলিম পারিবারিক আইন, ১৯৬১, সেকশন ৭ অনুযায়ী তালাক কার্যকর হওয়ার জন্য তিনটি আইনি শর্ত পূরণ করতে হবে। লিখিত তালাকনামা দিতে হবে, ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান কিংবা সিটি করপোরেশনের মেয়রকে লিখিতভাবে অবহিত করতে হবে। এরপর চেয়ারম্যান ৯০ দিনের মধ্যে সালিসি সভা আহ্বান করবেন এবং সে সময়কাল শেষে তালাক কার্যকর হবে।
আপনি যেহেতু কোনো লিখিত নোটিশ পাননি এবং ইউনিয়ন পরিষদ থেকেও কোনো সালিসি সভার নোটিশ পাননি, তাহলে এ ধরনের তথাকথিত ‘ডিভোর্স’ আইনগতভাবে অবৈধ ও অকার্যকর।
অর্থাৎ, আপনি এখনো তাঁর বৈধ স্ত্রী। তিনি অর্থাৎ আপনার স্বামী যদি আপনার অনুমতি ছাড়া দ্বিতীয় বিয়ে করে থাকেন, তাহলে তিনি মুসলিম পারিবারিক আইন, ১৯৬১, সেকশন ৬ অনুযায়ী অপরাধ করেছেন।
সেই অপরাধের জন্য সর্বোচ্চ এক বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড বা জরিমানা কিংবা উভয় দণ্ড হতে পারে।
আপনি এই অভিযোগ স্থানীয় পারিবারিক কোর্ট বা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার মাধ্যমে দাখিল করতে পারেন।
আপনি নিজের এবং আপনার সন্তানের জন্য পারিবারিক কোর্টে ভরণপোষণের মামলা করতে পারেন মুসলিম পারিবারিক আইন, ১৯৬১, সেকশন ৯ অনুসারে। এই মামলায় আপনি দাবি করতে পারবেন—সন্তানের মাসিক খরচ (খাদ্য, চিকিৎসা, শিক্ষা ইত্যাদি), নিজের রক্ষণাবেক্ষণ (যেহেতু বৈধ ডিভোর্স হয়নি) এবং অতীতের বকেয়া ভরণপোষণ।
যে কাগজপত্র প্রয়োজন হবে
আপনার জাতীয় পরিচয়পত্র বা জন্মসনদ, নিকাহনামা (কিংবা বিয়ের সাক্ষী থাকলে তাঁদের বিবৃতি), সন্তানের জন্মসনদ, আপনার স্বামীর ঠিকানা ও পেশার তথ্য, আপনার এবং সন্তানের আনুমানিক মাসিক খরচের হিসাব।
আপনি যৌতুক মামলা ইতিমধ্যে করেছেন বলে জানিয়েছেন। আপনি আদালতে গিয়ে কেস নম্বর এবং পরবর্তী শুনানির তারিখ জেনে নেবেন। যদি দেখেন, আপনার আগের উকিল মামলাটি ইচ্ছাকৃত বিলম্বিত করছেন, তাহলে নতুন উকিল নিয়োগ করে ওকালতনামা পরিবর্তন করুন। নতুন উকিলকে দিয়ে অর্ডার শিট দেখুন। তাতে বোঝা যাবে, মামলার অগ্রগতি কত দূর। আগের উকিল যদি অসততা করে থাকেন, তাহলে আপনি বার কাউন্সিল বা জেলা বার অ্যাসোসিয়েশনে লিখিত অভিযোগ দাখিল করতে পারেন।
আপনার বাবার পাঠানো আসবাব ও দানসামগ্রী আপনার ব্যক্তিগত সম্পত্তি। আপনার স্বামী যদি সেগুলো নিজের দখলে রেখে ব্যবহার করেন, তাহলে আপনি সিভিল কোর্টে স্ত্রীধন রিকভারি মামলা করতে পারেন। এই মামলায় কোর্ট নির্দেশ দিতে পারেন, যেন ওই সব জিনিস আপনাকে ফেরত দেওয়া হয় কিংবা এর আর্থিক মূল্য আপনাকে দেওয়া হয়।
যদি আপনার বা আপনার সন্তানের নিরাপত্তা নিয়ে আশঙ্কা থাকে, তবে অবিলম্বে স্থানীয় থানায় জিডি করুন। যদি মানসিক বা শারীরিক হুমকি থাকে, তাহলে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন, ২০০০ অনুযায়ী মামলা করতে পারেন।
সহায়তা পাওয়ার জন্য জাতীয় মহিলা আইনজীবী সমিতি, বাংলাদেশ লিগ্যাল এইড অ্যান্ড সার্ভিসেস ট্রাস্ট (ব্লাস্ট) অথবা ব্র্যাক লিগ্যাল এইডে আপনি যোগাযোগ করতে পারেন।
পরামর্শ দিয়েছেন
ব্যারিস্টার ইফফাত গিয়াস আরেফিন
অ্যাডভোকেট, বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট
ব্যারিস্টার ইফফাত গিয়াস আরেফিন

প্রশ্ন: আমি বাবার বাসায় থাকা অবস্থায় স্বামী আরেকটি বিয়ে করে। সে জানায়, আমাকে ডিভোর্স দিয়েছে। কিন্তু আমি আজ এক বছরেও কোনো নোটিশ পাইনি। তার বিয়ের পরপরই এক পারিবারিক আইনজীবীর সাহায্যে তার বিরুদ্ধে যৌতুকের মামলা করি। আইন ও মামলা বিষয়ে আমার ধারণা না থাকায় আইনজীবী যা বলেছেন, তা-ই করেছি। কোর্ট থেকে ওয়ারেন্ট বের হওয়ার পর তারা আগাম জামিন নিয়েছে, সেটা দুই মাস পর আমি জানতে পেরেছি। সে আমার দেড় বছরের সন্তানের কোনো ভরণপোষণ দেয় না, কোনো খোঁজখবরও রাখে না। আমি এই বয়সে মেয়েটাকে নিয়ে চাকরি করছি। কোথায় যাব, কী করব বুঝতে পারছি না।
আমাদের আইনজীবী কি কোনো ধরনের ছলচাতুরী করেছে? এখন আমাদের কী করা উচিত?
উত্তর: আপনি এক অন্যায় পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে যাচ্ছেন। আপনার বৈবাহিক অবস্থা এখনো বৈধ। মুসলিম পারিবারিক আইন, ১৯৬১, সেকশন ৭ অনুযায়ী তালাক কার্যকর হওয়ার জন্য তিনটি আইনি শর্ত পূরণ করতে হবে। লিখিত তালাকনামা দিতে হবে, ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান কিংবা সিটি করপোরেশনের মেয়রকে লিখিতভাবে অবহিত করতে হবে। এরপর চেয়ারম্যান ৯০ দিনের মধ্যে সালিসি সভা আহ্বান করবেন এবং সে সময়কাল শেষে তালাক কার্যকর হবে।
আপনি যেহেতু কোনো লিখিত নোটিশ পাননি এবং ইউনিয়ন পরিষদ থেকেও কোনো সালিসি সভার নোটিশ পাননি, তাহলে এ ধরনের তথাকথিত ‘ডিভোর্স’ আইনগতভাবে অবৈধ ও অকার্যকর।
অর্থাৎ, আপনি এখনো তাঁর বৈধ স্ত্রী। তিনি অর্থাৎ আপনার স্বামী যদি আপনার অনুমতি ছাড়া দ্বিতীয় বিয়ে করে থাকেন, তাহলে তিনি মুসলিম পারিবারিক আইন, ১৯৬১, সেকশন ৬ অনুযায়ী অপরাধ করেছেন।
সেই অপরাধের জন্য সর্বোচ্চ এক বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড বা জরিমানা কিংবা উভয় দণ্ড হতে পারে।
আপনি এই অভিযোগ স্থানীয় পারিবারিক কোর্ট বা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার মাধ্যমে দাখিল করতে পারেন।
আপনি নিজের এবং আপনার সন্তানের জন্য পারিবারিক কোর্টে ভরণপোষণের মামলা করতে পারেন মুসলিম পারিবারিক আইন, ১৯৬১, সেকশন ৯ অনুসারে। এই মামলায় আপনি দাবি করতে পারবেন—সন্তানের মাসিক খরচ (খাদ্য, চিকিৎসা, শিক্ষা ইত্যাদি), নিজের রক্ষণাবেক্ষণ (যেহেতু বৈধ ডিভোর্স হয়নি) এবং অতীতের বকেয়া ভরণপোষণ।
যে কাগজপত্র প্রয়োজন হবে
আপনার জাতীয় পরিচয়পত্র বা জন্মসনদ, নিকাহনামা (কিংবা বিয়ের সাক্ষী থাকলে তাঁদের বিবৃতি), সন্তানের জন্মসনদ, আপনার স্বামীর ঠিকানা ও পেশার তথ্য, আপনার এবং সন্তানের আনুমানিক মাসিক খরচের হিসাব।
আপনি যৌতুক মামলা ইতিমধ্যে করেছেন বলে জানিয়েছেন। আপনি আদালতে গিয়ে কেস নম্বর এবং পরবর্তী শুনানির তারিখ জেনে নেবেন। যদি দেখেন, আপনার আগের উকিল মামলাটি ইচ্ছাকৃত বিলম্বিত করছেন, তাহলে নতুন উকিল নিয়োগ করে ওকালতনামা পরিবর্তন করুন। নতুন উকিলকে দিয়ে অর্ডার শিট দেখুন। তাতে বোঝা যাবে, মামলার অগ্রগতি কত দূর। আগের উকিল যদি অসততা করে থাকেন, তাহলে আপনি বার কাউন্সিল বা জেলা বার অ্যাসোসিয়েশনে লিখিত অভিযোগ দাখিল করতে পারেন।
আপনার বাবার পাঠানো আসবাব ও দানসামগ্রী আপনার ব্যক্তিগত সম্পত্তি। আপনার স্বামী যদি সেগুলো নিজের দখলে রেখে ব্যবহার করেন, তাহলে আপনি সিভিল কোর্টে স্ত্রীধন রিকভারি মামলা করতে পারেন। এই মামলায় কোর্ট নির্দেশ দিতে পারেন, যেন ওই সব জিনিস আপনাকে ফেরত দেওয়া হয় কিংবা এর আর্থিক মূল্য আপনাকে দেওয়া হয়।
যদি আপনার বা আপনার সন্তানের নিরাপত্তা নিয়ে আশঙ্কা থাকে, তবে অবিলম্বে স্থানীয় থানায় জিডি করুন। যদি মানসিক বা শারীরিক হুমকি থাকে, তাহলে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন, ২০০০ অনুযায়ী মামলা করতে পারেন।
সহায়তা পাওয়ার জন্য জাতীয় মহিলা আইনজীবী সমিতি, বাংলাদেশ লিগ্যাল এইড অ্যান্ড সার্ভিসেস ট্রাস্ট (ব্লাস্ট) অথবা ব্র্যাক লিগ্যাল এইডে আপনি যোগাযোগ করতে পারেন।
পরামর্শ দিয়েছেন
ব্যারিস্টার ইফফাত গিয়াস আরেফিন
অ্যাডভোকেট, বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট

প্রশ্ন: আমি বাবার বাসায় থাকা অবস্থায় স্বামী আরেকটি বিয়ে করে। সে জানায়, আমাকে ডিভোর্স দিয়েছে। কিন্তু আমি আজ এক বছরেও কোনো নোটিশ পাইনি। তার বিয়ের পরপরই এক পারিবারিক আইনজীবীর সাহায্যে তার বিরুদ্ধে যৌতুকের মামলা করি। আইন ও মামলা বিষয়ে আমার ধারণা না থাকায় আইনজীবী যা বলেছেন, তা-ই করেছি। কোর্ট থেকে ওয়ারেন্ট বের হওয়ার পর তারা আগাম জামিন নিয়েছে, সেটা দুই মাস পর আমি জানতে পেরেছি। সে আমার দেড় বছরের সন্তানের কোনো ভরণপোষণ দেয় না, কোনো খোঁজখবরও রাখে না। আমি এই বয়সে মেয়েটাকে নিয়ে চাকরি করছি। কোথায় যাব, কী করব বুঝতে পারছি না।
আমাদের আইনজীবী কি কোনো ধরনের ছলচাতুরী করেছে? এখন আমাদের কী করা উচিত?
উত্তর: আপনি এক অন্যায় পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে যাচ্ছেন। আপনার বৈবাহিক অবস্থা এখনো বৈধ। মুসলিম পারিবারিক আইন, ১৯৬১, সেকশন ৭ অনুযায়ী তালাক কার্যকর হওয়ার জন্য তিনটি আইনি শর্ত পূরণ করতে হবে। লিখিত তালাকনামা দিতে হবে, ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান কিংবা সিটি করপোরেশনের মেয়রকে লিখিতভাবে অবহিত করতে হবে। এরপর চেয়ারম্যান ৯০ দিনের মধ্যে সালিসি সভা আহ্বান করবেন এবং সে সময়কাল শেষে তালাক কার্যকর হবে।
আপনি যেহেতু কোনো লিখিত নোটিশ পাননি এবং ইউনিয়ন পরিষদ থেকেও কোনো সালিসি সভার নোটিশ পাননি, তাহলে এ ধরনের তথাকথিত ‘ডিভোর্স’ আইনগতভাবে অবৈধ ও অকার্যকর।
অর্থাৎ, আপনি এখনো তাঁর বৈধ স্ত্রী। তিনি অর্থাৎ আপনার স্বামী যদি আপনার অনুমতি ছাড়া দ্বিতীয় বিয়ে করে থাকেন, তাহলে তিনি মুসলিম পারিবারিক আইন, ১৯৬১, সেকশন ৬ অনুযায়ী অপরাধ করেছেন।
সেই অপরাধের জন্য সর্বোচ্চ এক বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড বা জরিমানা কিংবা উভয় দণ্ড হতে পারে।
আপনি এই অভিযোগ স্থানীয় পারিবারিক কোর্ট বা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার মাধ্যমে দাখিল করতে পারেন।
আপনি নিজের এবং আপনার সন্তানের জন্য পারিবারিক কোর্টে ভরণপোষণের মামলা করতে পারেন মুসলিম পারিবারিক আইন, ১৯৬১, সেকশন ৯ অনুসারে। এই মামলায় আপনি দাবি করতে পারবেন—সন্তানের মাসিক খরচ (খাদ্য, চিকিৎসা, শিক্ষা ইত্যাদি), নিজের রক্ষণাবেক্ষণ (যেহেতু বৈধ ডিভোর্স হয়নি) এবং অতীতের বকেয়া ভরণপোষণ।
যে কাগজপত্র প্রয়োজন হবে
আপনার জাতীয় পরিচয়পত্র বা জন্মসনদ, নিকাহনামা (কিংবা বিয়ের সাক্ষী থাকলে তাঁদের বিবৃতি), সন্তানের জন্মসনদ, আপনার স্বামীর ঠিকানা ও পেশার তথ্য, আপনার এবং সন্তানের আনুমানিক মাসিক খরচের হিসাব।
আপনি যৌতুক মামলা ইতিমধ্যে করেছেন বলে জানিয়েছেন। আপনি আদালতে গিয়ে কেস নম্বর এবং পরবর্তী শুনানির তারিখ জেনে নেবেন। যদি দেখেন, আপনার আগের উকিল মামলাটি ইচ্ছাকৃত বিলম্বিত করছেন, তাহলে নতুন উকিল নিয়োগ করে ওকালতনামা পরিবর্তন করুন। নতুন উকিলকে দিয়ে অর্ডার শিট দেখুন। তাতে বোঝা যাবে, মামলার অগ্রগতি কত দূর। আগের উকিল যদি অসততা করে থাকেন, তাহলে আপনি বার কাউন্সিল বা জেলা বার অ্যাসোসিয়েশনে লিখিত অভিযোগ দাখিল করতে পারেন।
আপনার বাবার পাঠানো আসবাব ও দানসামগ্রী আপনার ব্যক্তিগত সম্পত্তি। আপনার স্বামী যদি সেগুলো নিজের দখলে রেখে ব্যবহার করেন, তাহলে আপনি সিভিল কোর্টে স্ত্রীধন রিকভারি মামলা করতে পারেন। এই মামলায় কোর্ট নির্দেশ দিতে পারেন, যেন ওই সব জিনিস আপনাকে ফেরত দেওয়া হয় কিংবা এর আর্থিক মূল্য আপনাকে দেওয়া হয়।
যদি আপনার বা আপনার সন্তানের নিরাপত্তা নিয়ে আশঙ্কা থাকে, তবে অবিলম্বে স্থানীয় থানায় জিডি করুন। যদি মানসিক বা শারীরিক হুমকি থাকে, তাহলে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন, ২০০০ অনুযায়ী মামলা করতে পারেন।
সহায়তা পাওয়ার জন্য জাতীয় মহিলা আইনজীবী সমিতি, বাংলাদেশ লিগ্যাল এইড অ্যান্ড সার্ভিসেস ট্রাস্ট (ব্লাস্ট) অথবা ব্র্যাক লিগ্যাল এইডে আপনি যোগাযোগ করতে পারেন।
পরামর্শ দিয়েছেন
ব্যারিস্টার ইফফাত গিয়াস আরেফিন
অ্যাডভোকেট, বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট

প্রতিবাদের অনেক ভাষার অন্যতম কার্টুন। এটি এক অনন্য প্রকাশভঙ্গি। শব্দের সীমাবদ্ধতা পেরিয়ে এটি এমন এক ভাষা, যা চোখে দেখা তো যায়-ই, করা যায় অনুভবও। আমাদের দেশের নারী কার্টুনিস্টরা নারীদের বিরুদ্ধে হওয়া বিভিন্ন বৈষম্য ও অনাচারের বিরুদ্ধে এই শিল্পমাধ্যমকে বেছে নিয়েছেন।
৫ দিন আগে
নিজের পোশাক নিজেই তৈরি করতেন কানন জেনেট গোমেজ। বাহারি নকশা করা সেই পোশাকগুলো দেখে অনেকে তৈরি করে দেওয়ার জন্য অনুরোধ করতেন তাঁকে। শখের বশে একসময় তিনি প্রথমে সবার জন্য পোশাক তৈরি শুরু করেন। পরবর্তী সময়ে কয়েকটি মেলায় অংশ নিয়ে ভালো সাড়া পান।
৫ দিন আগে
রাস্তায় নারীদের হয়রানি করার ঘটনা পৃথিবীতে এতটাই স্বাভাবিক যে তা থেকে রাষ্ট্রপ্রধানও বাদ যাচ্ছেন না! হ্যাঁ, ঠিক শুনেছেন। হয়রানির এই ঘটনা ঘটেছে মেক্সিকোর প্রথম নারী প্রেসিডেন্ট ক্লাউদিয়া শেইনবাউমের সঙ্গে। অবশ্য তাতে টনক নড়েছে পুরো দেশের।
৫ দিন আগে
তাঁকে বলা হয় মাদার অব আমেরিকান মডার্নিজম। তাঁর কর্মজীবন বিস্তৃত ছিল সাত দশক ধরে। তিনি জর্জিয়া টোটো ও’কিফ। জীবনের একপর্যায়ে ম্যাকুলার ডিজেনারেশন রোগে আক্রান্ত হয়ে দৃষ্টিশক্তি কমতে থাকলেও তিনি তাঁর শেষ সহায়তাবিহীন তেলচিত্রটি আঁকেন ১৯৭২ সালে।
৫ দিন আগেকাশফিয়া আলম ঝিলিক, ঢাকা

প্রতিবাদের অনেক ভাষার অন্যতম কার্টুন। এটি এক অনন্য প্রকাশভঙ্গি। শব্দের সীমাবদ্ধতা পেরিয়ে এটি এমন এক ভাষা, যা চোখে দেখা তো যায়-ই, করা যায় অনুভবও। আমাদের দেশের নারী কার্টুনিস্টরা নারীদের বিরুদ্ধে হওয়া বিভিন্ন বৈষম্য ও অনাচারের বিরুদ্ধে এই শিল্পমাধ্যমকে বেছে নিয়েছেন।
‘দেখছেন কেমন জামা পরেছে’, ‘বাচ্চা নিয়ে চাকরি করবে কীভাবে’, ‘আপনার স্বামীর তো অনেক টাকা, আপনি চাকরি করে কী করবেন’...নারীদের উদ্দেশে এমন কথা হরহামেশা বলা হয় আমাদের দেশে। জন্মের পর একটি মেয়েশিশু গোলাপি জামা পরবে কি না, সেটি নির্ধারণ করা থেকে শুরু করে সেই শিশু বড় হয়ে কেমন পোশাক পরবে, কোথায় যাবে, কবে বিয়ে করবে, সন্তান নেবে কি না, চাকরি করবে কি না—এসব আমাদের সমাজ ঠিক করে দেয়। এবং এখনো। তার ওপর আছে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের ঘটনা।
এসব ঘটনার প্রতিবাদ হতে থাকে বিভিন্নভাবে, বিভিন্ন মাধ্যমে। গত সপ্তাহে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমিতে তেমনই এক আয়োজন ছিল। সেখানে গ্যালারিজুড়ে ছিল নারীদের অস্তিত্ব; তাদের অধিকার এবং তাদের ওপর হওয়া সহিংসতা ও নির্যাতনের চিত্র। কেউ সেসব ঘটনা তুলে ধরেছিলেন রংতুলিতে, কেউবা এঁকেছেন প্রযুক্তি ব্যবহার করে। গ্যালারি ঘুরে নিত্য ঘটনাগুলোই বারবার চোখের সামনে ফুটে উঠছিল; গণপরিবহনে নারীদের হেনস্তা, তাদের ভিডিও ধারণ, পোশাক নিয়ে নেতিবাচক আলোচনা আর কটূক্তি। একটি ছবিতে ফুটে উঠেছে এক নারী নভোচারী চাঁদে গিয়ে গবেষণা করছেন। তাঁর পেছনে পৃথিবী থেকে কিছু মুখ উঠে এসেছে, যারা বলছে, ‘ওড়না কোথায়?’ হ্যাঁ, আমাদের সমাজে এটাই এক চরম বাস্তবতা হয়ে ফুটে উঠেছে। গণপরিবহনে একজন বোরকা পরা নারী যেভাবে হেনস্তার শিকার হচ্ছে, জিনস টপ কিংবা কামিজ পরা নারীও সেভাবেই হেনস্তার শিকার হচ্ছে।
কার্টুন চিত্রগুলো একজন নারীর জীবনের খুব অন্ধকার বাস্তবতাকে ফুটিয়ে তুলে ধরছিল। প্রদর্শনীর শেষ দিন গ্যালারি ঘুরে দেখতে দেখতে কথা হলো সৈয়দা আফরিনের সঙ্গে। তিনি এক দর্শনার্থী। বললেন, ‘অনেক সময় নিয়ে সব কাজ দেখলাম। এই চারদেয়ালের প্রতিটি ছবিই যেন একজন নারীর জীবনের বাস্তবতা। বাসে, রাস্তায়, ঘরে আমরা আসলে এভাবেই বেঁচে থাকি সমাজে। এখানে যত ছবি আছে, সেগুলোর মধ্যে ৮০ ভাগ ছবির কর্মকাণ্ড একটা মেয়ে তার জীবনে পেয়েছে।’
বাস্তবতা তো আর বাস্তবেই শেষ হয় না। পিছু ছাড়ে না অনলাইনের বিশাল দুনিয়াতেও। অনলাইনের যেকোনো প্ল্যাটফর্মে নারীদের নিয়ে যা কিছুই বলা বা আঁকা হোক না কেন, ছুটে আসবে ট্যাগিং, সাইবার বুলিং আর বিষাক্ত মন্তব্য।

কার্টুন শিল্পী ও শিক্ষক সামিয়া সাবিহা রিনি সে কথাই জানালেন। বললেন, ‘কোনো কাজে নারীর বিষয়ে কিছু বলতে গেলেই একটা ট্যাগ লাগিয়ে দেওয়া হয়। কোনো মাতৃমূর্তি নিয়ে কাজ করলে, সেটাও মানুষ ভালো চোখে দেখে না। নারীর জন্য যখন প্রতিবাদের কিংবা অধিকার আদায়ের ভাষা হিসেবে নারীর অবয়ব আঁকা হয়, সেখানেও বাজে মন্তব্যের সম্মুখীন হতে হয়। নারীকে নিয়ে আঁকা কার্টুন সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করলে দেখবেন, কত কটূক্তিতে ভরে যায় মন্তব্যের ঘরগুলো। এই ধরনের মানসিকতাটাও তো পরিবর্তন করতে হবে।’
এসব কথাবার্তা যখন চলছে, তখনই চোখে পড়ল একটি কাঠের চাকা। চাকা ঘোরালেই ফুটে উঠছিল নারীর জীবনের গল্প। কীভাবে তার জীবন বদলায়, কীভাবে বিয়ের পর সে একটি পরিবারের ভার বহন করতে করতে নিজেকে একসময় হারিয়ে ফেলে। নারীর কাঁধ থেকে দায়িত্বের বোঝা তখনই নেমে যায়, যখন সে এই পৃথিবীর মায়া ত্যাগ করে। সাবিনা এসব দেখতে দেখতে আনমনা হয়ে বললেন, ‘আমরা ভেবে কথা বলি না। একটা কথা কীভাবে বলব, সেটাও ভাবি না। নারীদের কাজকে অ্যাপ্রিশিয়েট করি না। এটি ভেতর থেকে একজন মানুষকে ভেঙে দেয়।’

প্রদর্শনীর শেষ প্রান্তে ছিল একেবারে ভিন্ন এক চিঠি। যার বাক্যগুলো ফুটিয়ে তোলা হয়েছিল সুই-সুতার মধ্য দিয়ে। নকশিকাঁথার ফোঁড়ে মেয়ে তার মাকে লিখেছিল নিজের মনের কথাগুলো। এই শিল্পকর্মের শিল্পীর নাম নুসরাত লাক্সুমী। তিনি বলেন, ‘আমার মা গান শিখতেন। বিয়ের পর ছেড়ে দিয়েছেন। আমি যখন আম্মুকে কল্পনা করি, ভাবি তিনি লেখাপড়া করছেন, নিজের মতো করে চলছেন, গান করছেন। আমি আমার মায়ের লড়াই দেখেছি। কিন্তু অনেক সময় তাঁর কথা আমাকে আঘাত করে। আমি জানি, তিনি কেন সেসব বলছেন। আমি সেই কথাগুলোই এই চিঠিতে লিখেছি।’ নুসরাতের অন্য একটি কাজে ফুটে উঠেছে সুখী পরিবারের চিত্র। যেখানে পরিবারের মেয়েরা নিজেদের মতো করে সময় কাটাচ্ছে, ঘুরছে, গল্প করছে।

একসময় সংবাদপত্রের পাতায় কার্টুন ছিল স্বতন্ত্র এক সংবাদ। সমাজ বা দেশের বহু বিচিত্র অসুখের লক্ষণ ফুটে উঠত কয়েকটি রেখায়। কিন্তু ডিজিটাল যুগে প্রবেশের পর একসময় যেন হারিয়ে যেতে বসেছিল সেই ধারা। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নানান ধরনের কনটেন্টের ভিড়ে, কার্টুন যেন হারিয়ে গিয়েছিল নিজের জায়গা থেকে। তবে একেবারেই হারিয়ে যায়নি। কার্টুন কোনো সাময়িক শিল্প নয়, বরং এটি সমাজের দর্পণ। অনলাইনে আক্রমণ যতই আসুক, কার্টুনিস্টরা তাঁদের তুলি থামাবেন না। নারীর প্রতি সংবেদনশীলতা এবং সমাজের অসংগতি দূর করার লড়াইয়ে কার্টুন অগ্রণী ভূমিকা পালন করবে। আর সে জন্যই ‘কার্টুন ফর ইকুয়ালিটি-প্রিভেন্ট ভায়োলেন্স অ্যাগেইনস্ট ওমেন অ্যান্ড গার্লস’-এর মতো প্রদর্শনীর আয়োজন হওয়া উচিত নিয়মিত বিরতিতে। এই প্রদর্শনীর পৃষ্ঠপোষকতায় ছিল কানাডা সরকার। আয়োজনে ছিল ইউএন ওমেন বাংলাদেশ, বহ্নিশিখা ও মায়ের দোয়া স্টুডিও।

প্রতিবাদের অনেক ভাষার অন্যতম কার্টুন। এটি এক অনন্য প্রকাশভঙ্গি। শব্দের সীমাবদ্ধতা পেরিয়ে এটি এমন এক ভাষা, যা চোখে দেখা তো যায়-ই, করা যায় অনুভবও। আমাদের দেশের নারী কার্টুনিস্টরা নারীদের বিরুদ্ধে হওয়া বিভিন্ন বৈষম্য ও অনাচারের বিরুদ্ধে এই শিল্পমাধ্যমকে বেছে নিয়েছেন।
‘দেখছেন কেমন জামা পরেছে’, ‘বাচ্চা নিয়ে চাকরি করবে কীভাবে’, ‘আপনার স্বামীর তো অনেক টাকা, আপনি চাকরি করে কী করবেন’...নারীদের উদ্দেশে এমন কথা হরহামেশা বলা হয় আমাদের দেশে। জন্মের পর একটি মেয়েশিশু গোলাপি জামা পরবে কি না, সেটি নির্ধারণ করা থেকে শুরু করে সেই শিশু বড় হয়ে কেমন পোশাক পরবে, কোথায় যাবে, কবে বিয়ে করবে, সন্তান নেবে কি না, চাকরি করবে কি না—এসব আমাদের সমাজ ঠিক করে দেয়। এবং এখনো। তার ওপর আছে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের ঘটনা।
এসব ঘটনার প্রতিবাদ হতে থাকে বিভিন্নভাবে, বিভিন্ন মাধ্যমে। গত সপ্তাহে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমিতে তেমনই এক আয়োজন ছিল। সেখানে গ্যালারিজুড়ে ছিল নারীদের অস্তিত্ব; তাদের অধিকার এবং তাদের ওপর হওয়া সহিংসতা ও নির্যাতনের চিত্র। কেউ সেসব ঘটনা তুলে ধরেছিলেন রংতুলিতে, কেউবা এঁকেছেন প্রযুক্তি ব্যবহার করে। গ্যালারি ঘুরে নিত্য ঘটনাগুলোই বারবার চোখের সামনে ফুটে উঠছিল; গণপরিবহনে নারীদের হেনস্তা, তাদের ভিডিও ধারণ, পোশাক নিয়ে নেতিবাচক আলোচনা আর কটূক্তি। একটি ছবিতে ফুটে উঠেছে এক নারী নভোচারী চাঁদে গিয়ে গবেষণা করছেন। তাঁর পেছনে পৃথিবী থেকে কিছু মুখ উঠে এসেছে, যারা বলছে, ‘ওড়না কোথায়?’ হ্যাঁ, আমাদের সমাজে এটাই এক চরম বাস্তবতা হয়ে ফুটে উঠেছে। গণপরিবহনে একজন বোরকা পরা নারী যেভাবে হেনস্তার শিকার হচ্ছে, জিনস টপ কিংবা কামিজ পরা নারীও সেভাবেই হেনস্তার শিকার হচ্ছে।
কার্টুন চিত্রগুলো একজন নারীর জীবনের খুব অন্ধকার বাস্তবতাকে ফুটিয়ে তুলে ধরছিল। প্রদর্শনীর শেষ দিন গ্যালারি ঘুরে দেখতে দেখতে কথা হলো সৈয়দা আফরিনের সঙ্গে। তিনি এক দর্শনার্থী। বললেন, ‘অনেক সময় নিয়ে সব কাজ দেখলাম। এই চারদেয়ালের প্রতিটি ছবিই যেন একজন নারীর জীবনের বাস্তবতা। বাসে, রাস্তায়, ঘরে আমরা আসলে এভাবেই বেঁচে থাকি সমাজে। এখানে যত ছবি আছে, সেগুলোর মধ্যে ৮০ ভাগ ছবির কর্মকাণ্ড একটা মেয়ে তার জীবনে পেয়েছে।’
বাস্তবতা তো আর বাস্তবেই শেষ হয় না। পিছু ছাড়ে না অনলাইনের বিশাল দুনিয়াতেও। অনলাইনের যেকোনো প্ল্যাটফর্মে নারীদের নিয়ে যা কিছুই বলা বা আঁকা হোক না কেন, ছুটে আসবে ট্যাগিং, সাইবার বুলিং আর বিষাক্ত মন্তব্য।

কার্টুন শিল্পী ও শিক্ষক সামিয়া সাবিহা রিনি সে কথাই জানালেন। বললেন, ‘কোনো কাজে নারীর বিষয়ে কিছু বলতে গেলেই একটা ট্যাগ লাগিয়ে দেওয়া হয়। কোনো মাতৃমূর্তি নিয়ে কাজ করলে, সেটাও মানুষ ভালো চোখে দেখে না। নারীর জন্য যখন প্রতিবাদের কিংবা অধিকার আদায়ের ভাষা হিসেবে নারীর অবয়ব আঁকা হয়, সেখানেও বাজে মন্তব্যের সম্মুখীন হতে হয়। নারীকে নিয়ে আঁকা কার্টুন সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করলে দেখবেন, কত কটূক্তিতে ভরে যায় মন্তব্যের ঘরগুলো। এই ধরনের মানসিকতাটাও তো পরিবর্তন করতে হবে।’
এসব কথাবার্তা যখন চলছে, তখনই চোখে পড়ল একটি কাঠের চাকা। চাকা ঘোরালেই ফুটে উঠছিল নারীর জীবনের গল্প। কীভাবে তার জীবন বদলায়, কীভাবে বিয়ের পর সে একটি পরিবারের ভার বহন করতে করতে নিজেকে একসময় হারিয়ে ফেলে। নারীর কাঁধ থেকে দায়িত্বের বোঝা তখনই নেমে যায়, যখন সে এই পৃথিবীর মায়া ত্যাগ করে। সাবিনা এসব দেখতে দেখতে আনমনা হয়ে বললেন, ‘আমরা ভেবে কথা বলি না। একটা কথা কীভাবে বলব, সেটাও ভাবি না। নারীদের কাজকে অ্যাপ্রিশিয়েট করি না। এটি ভেতর থেকে একজন মানুষকে ভেঙে দেয়।’

প্রদর্শনীর শেষ প্রান্তে ছিল একেবারে ভিন্ন এক চিঠি। যার বাক্যগুলো ফুটিয়ে তোলা হয়েছিল সুই-সুতার মধ্য দিয়ে। নকশিকাঁথার ফোঁড়ে মেয়ে তার মাকে লিখেছিল নিজের মনের কথাগুলো। এই শিল্পকর্মের শিল্পীর নাম নুসরাত লাক্সুমী। তিনি বলেন, ‘আমার মা গান শিখতেন। বিয়ের পর ছেড়ে দিয়েছেন। আমি যখন আম্মুকে কল্পনা করি, ভাবি তিনি লেখাপড়া করছেন, নিজের মতো করে চলছেন, গান করছেন। আমি আমার মায়ের লড়াই দেখেছি। কিন্তু অনেক সময় তাঁর কথা আমাকে আঘাত করে। আমি জানি, তিনি কেন সেসব বলছেন। আমি সেই কথাগুলোই এই চিঠিতে লিখেছি।’ নুসরাতের অন্য একটি কাজে ফুটে উঠেছে সুখী পরিবারের চিত্র। যেখানে পরিবারের মেয়েরা নিজেদের মতো করে সময় কাটাচ্ছে, ঘুরছে, গল্প করছে।

একসময় সংবাদপত্রের পাতায় কার্টুন ছিল স্বতন্ত্র এক সংবাদ। সমাজ বা দেশের বহু বিচিত্র অসুখের লক্ষণ ফুটে উঠত কয়েকটি রেখায়। কিন্তু ডিজিটাল যুগে প্রবেশের পর একসময় যেন হারিয়ে যেতে বসেছিল সেই ধারা। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নানান ধরনের কনটেন্টের ভিড়ে, কার্টুন যেন হারিয়ে গিয়েছিল নিজের জায়গা থেকে। তবে একেবারেই হারিয়ে যায়নি। কার্টুন কোনো সাময়িক শিল্প নয়, বরং এটি সমাজের দর্পণ। অনলাইনে আক্রমণ যতই আসুক, কার্টুনিস্টরা তাঁদের তুলি থামাবেন না। নারীর প্রতি সংবেদনশীলতা এবং সমাজের অসংগতি দূর করার লড়াইয়ে কার্টুন অগ্রণী ভূমিকা পালন করবে। আর সে জন্যই ‘কার্টুন ফর ইকুয়ালিটি-প্রিভেন্ট ভায়োলেন্স অ্যাগেইনস্ট ওমেন অ্যান্ড গার্লস’-এর মতো প্রদর্শনীর আয়োজন হওয়া উচিত নিয়মিত বিরতিতে। এই প্রদর্শনীর পৃষ্ঠপোষকতায় ছিল কানাডা সরকার। আয়োজনে ছিল ইউএন ওমেন বাংলাদেশ, বহ্নিশিখা ও মায়ের দোয়া স্টুডিও।

আমি বাবার বাসায় থাকা অবস্থায় স্বামী আরেকটি বিয়ে করে। সে জানায়, আমাকে ডিভোর্স দিয়েছে। কিন্তু আমি আজ এক বছরেও কোনো নোটিশ পাইনি। তার বিয়ের পরপরই এক পারিবারিক আইনজীবীর সাহায্যে তার বিরুদ্ধে যৌতুকের মামলা করি। আইন ও মামলা বিষয়ে আমার ধারণা না থাকায় আইনজীবী যা বলেছেন, তা-ই করেছি।
১৫ অক্টোবর ২০২৫
নিজের পোশাক নিজেই তৈরি করতেন কানন জেনেট গোমেজ। বাহারি নকশা করা সেই পোশাকগুলো দেখে অনেকে তৈরি করে দেওয়ার জন্য অনুরোধ করতেন তাঁকে। শখের বশে একসময় তিনি প্রথমে সবার জন্য পোশাক তৈরি শুরু করেন। পরবর্তী সময়ে কয়েকটি মেলায় অংশ নিয়ে ভালো সাড়া পান।
৫ দিন আগে
রাস্তায় নারীদের হয়রানি করার ঘটনা পৃথিবীতে এতটাই স্বাভাবিক যে তা থেকে রাষ্ট্রপ্রধানও বাদ যাচ্ছেন না! হ্যাঁ, ঠিক শুনেছেন। হয়রানির এই ঘটনা ঘটেছে মেক্সিকোর প্রথম নারী প্রেসিডেন্ট ক্লাউদিয়া শেইনবাউমের সঙ্গে। অবশ্য তাতে টনক নড়েছে পুরো দেশের।
৫ দিন আগে
তাঁকে বলা হয় মাদার অব আমেরিকান মডার্নিজম। তাঁর কর্মজীবন বিস্তৃত ছিল সাত দশক ধরে। তিনি জর্জিয়া টোটো ও’কিফ। জীবনের একপর্যায়ে ম্যাকুলার ডিজেনারেশন রোগে আক্রান্ত হয়ে দৃষ্টিশক্তি কমতে থাকলেও তিনি তাঁর শেষ সহায়তাবিহীন তেলচিত্রটি আঁকেন ১৯৭২ সালে।
৫ দিন আগেমুহাম্মদ শফিকুর রহমান

নিজের পোশাক নিজেই তৈরি করতেন কানন জেনেট গোমেজ। বাহারি নকশা করা সেই পোশাকগুলো দেখে অনেকে তৈরি করে দেওয়ার জন্য অনুরোধ করতেন তাঁকে। শখের বশে একসময় তিনি প্রথমে সবার জন্য পোশাক তৈরি শুরু করেন। পরবর্তী সময়ে কয়েকটি মেলায় অংশ নিয়ে ভালো সাড়া পান।
এই উৎসাহ থেকে ২০১৯ সালের অক্টোবর মাসে তিনি খুলে ফেলেন নিজের ফেসবুক পেজ জেনেট ক্রিয়েশন। সেখান থেকে শুরু তাঁর পেশাদার উদ্যোক্তা-জীবনের যাত্রা। বর্তমানে তাঁর তৈরি পোশাক শুধু দেশের বাজারেই নয়, একাধিক দেশে রপ্তানি হচ্ছে।
বেড়ে ওঠা
জেনেটের শৈশব কেটেছে গ্রামের বাড়ি গাজীপুরের কালীগঞ্জে। তিনি এসএসসি সম্পন্ন করেন মিশনারিজ স্কুল সেন্ট মেরিস থেকে, তারপর ঢাকার হলিক্রস কলেজ থেকে এইচএসসি পাস করেন। এরপর জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সমাজকর্মে মাস্টার্স সম্পন্ন করেন। অনার্সে পড়াশোনার পাশাপাশি বাফা থেকে চারুকলার ওপর ৫ বছরের কোর্স সম্পন্ন করেন জেনেট। ২০১১ সালে নারী অধিদপ্তর থেকে সরকারিভাবে ব্লক-বাটিকের ওপর তিন মাসের প্রশিক্ষণ নেন তিনি। স্বামী, পুত্রসন্তান ও শাশুড়িকে নিয়ে জেনেটের পরিবার। বসবাস করেন ঢাকার পূর্ব রাজাবাজার এলাকায়।
শুরু যেভাবে
মাত্র ৭ হাজার ৫০০ টাকা নিয়ে প্রয়োজনীয় উপকরণ কিনে শাড়ি ও পোশাক তৈরির কাজ শুরু জেনেটের। তাঁর প্রথম অর্ডার ছিল একটি হ্যান্ডপেইন্টেড শাড়ি। তারপর অর্ডার আসতে শুরু করে। এভাবেই ধীরে ধীরে জেনেটের পরিশ্রম ও সৃজনশীলতায় গড়ে ওঠে জেনেট ক্রিয়েশন। বর্তমানে তাঁর সঙ্গে যুক্ত আছেন ছয়জন কর্মী।
পোশাকের ব্যবসা কেন
পোশাক মানুষের মৌলিক চাহিদার একটি অংশ। বছরব্যাপী এর চাহিদা বিদ্যমান থাকে। পোশাকের নকশার প্রতি ছোটবেলা থেকে একধরনের ভালোবাসা ছিল জেনেটের। ব্যবসা শুরুর আগে নিজের পোশাকের ডিজাইন তিনি নিজেই করতেন।
আর সে কারণেই পোশাকের ব্যবসা শুরু করেন। শাড়ি পরা বেশ পছন্দ জেনেটের। সে কারণে শাড়ি নিয়েই তাঁর কাজ বেশি। এর পাশাপাশি স্বল্প পরিসরে নকশা করা টিপ ও চুড়িও তৈরি করেন তিনি।

বিভিন্ন পণ্যের সমাহার
সুতি, সিল্ক, টাইডাই, হ্যান্ডপেইন্ট, ব্লকপ্রিন্ট ও এমব্রয়ডারি করা পোশাক পাওয়া যায় জেনেট ক্রিয়েশনে। পাশাপাশি রয়েছে শাড়ি, ব্লাউজ, টু-পিস, শাড়ির সঙ্গে মিলিয়ে তৈরি শার্ট, পাঞ্জাবিসহ নানা কিছু।
জেনেট গোমেজের সিগনেচার পণ্য হলো টাইডাই শাড়ি। তবে শৌখিন নারীদের পোশাক বা শাড়ির সঙ্গে মিলিয়ে পরার টিপও তৈরি করেন তিনি। তাঁর এই সূক্ষ্ম রুচি এবং নান্দনিক চিন্তাভাবনাই জেনেট ক্রিয়েশনকে করেছে অনন্য ও জনপ্রিয়।
দেশের বাইরে
আমেরিকা, অস্ট্রেলিয়া, ইতালি, ফ্রান্স ও কানাডায় বেশি যায় জেনেটের পণ্য। প্রবাসীরা দেশে এসে ফিরে যাওয়ার সময় তাঁর পণ্য সঙ্গে নিয়ে যান। আবার কুরিয়ারের মাধ্যমেও ক্রেতাদের পণ্য পাঠানো হয়। গতানুগতিক ধারার বাইরের নকশা এবং গুণগত মান ঠিক রাখেন তিনি। এ কারণে দেশ-বিদেশে তাঁর পোশাকের চাহিদা বেড়েছে।

লাভের হিসাব
জেনেট বর্তমানে প্রতি মাসে ৫০ থেকে ৬০ হাজার টাকা আয় করেন। লাভের কিছু টাকা তিনি আবার ব্যবসায় বিনিয়োগ করেন। সংসারের কাজ সামলে ব্যবসার কাজ চালাতে হয় তাঁকে। তাঁর পণ্যের ফটোশুটে নিজেই মডেল হন জেনেট। ফটোগ্রাফারের কাজ করেন তাঁর স্বামী। ব্যবসাটা পুরো অনলাইনভিত্তিক। বছরে বেশ কিছু মেলায় তিনি অংশ নেন বলে জানান।
নতুনদের জন্য
নতুনদের জন্য জেনেটের পরামর্শ হলো, ব্যবসা শুরু করতে চাইলে অন্য কারও অনুকরণ বা অনুসরণ না করে যে কাজ করতে ভালোবাসেন, ভালো পারেন,
সেই বিষয়ে বাণিজ্যিকভাবে শুরু
করতে পারেন এবং সেই বিষয়ের ওপর প্রাতিষ্ঠানিক জ্ঞান ও দক্ষতা থাকা দরকার।
ভবিষ্যতের ভাবনা
ভবিষ্যতে ছোট আকারে একেবারে নিজের মতো করে একটি স্টুডিও কিংবা শপ তৈরি করার ইচ্ছা জেনেটের; যাতে ক্রেতারা সরাসরি স্পর্শ করে পণ্য কেনার সুযোগ পান।

নিজের পোশাক নিজেই তৈরি করতেন কানন জেনেট গোমেজ। বাহারি নকশা করা সেই পোশাকগুলো দেখে অনেকে তৈরি করে দেওয়ার জন্য অনুরোধ করতেন তাঁকে। শখের বশে একসময় তিনি প্রথমে সবার জন্য পোশাক তৈরি শুরু করেন। পরবর্তী সময়ে কয়েকটি মেলায় অংশ নিয়ে ভালো সাড়া পান।
এই উৎসাহ থেকে ২০১৯ সালের অক্টোবর মাসে তিনি খুলে ফেলেন নিজের ফেসবুক পেজ জেনেট ক্রিয়েশন। সেখান থেকে শুরু তাঁর পেশাদার উদ্যোক্তা-জীবনের যাত্রা। বর্তমানে তাঁর তৈরি পোশাক শুধু দেশের বাজারেই নয়, একাধিক দেশে রপ্তানি হচ্ছে।
বেড়ে ওঠা
জেনেটের শৈশব কেটেছে গ্রামের বাড়ি গাজীপুরের কালীগঞ্জে। তিনি এসএসসি সম্পন্ন করেন মিশনারিজ স্কুল সেন্ট মেরিস থেকে, তারপর ঢাকার হলিক্রস কলেজ থেকে এইচএসসি পাস করেন। এরপর জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সমাজকর্মে মাস্টার্স সম্পন্ন করেন। অনার্সে পড়াশোনার পাশাপাশি বাফা থেকে চারুকলার ওপর ৫ বছরের কোর্স সম্পন্ন করেন জেনেট। ২০১১ সালে নারী অধিদপ্তর থেকে সরকারিভাবে ব্লক-বাটিকের ওপর তিন মাসের প্রশিক্ষণ নেন তিনি। স্বামী, পুত্রসন্তান ও শাশুড়িকে নিয়ে জেনেটের পরিবার। বসবাস করেন ঢাকার পূর্ব রাজাবাজার এলাকায়।
শুরু যেভাবে
মাত্র ৭ হাজার ৫০০ টাকা নিয়ে প্রয়োজনীয় উপকরণ কিনে শাড়ি ও পোশাক তৈরির কাজ শুরু জেনেটের। তাঁর প্রথম অর্ডার ছিল একটি হ্যান্ডপেইন্টেড শাড়ি। তারপর অর্ডার আসতে শুরু করে। এভাবেই ধীরে ধীরে জেনেটের পরিশ্রম ও সৃজনশীলতায় গড়ে ওঠে জেনেট ক্রিয়েশন। বর্তমানে তাঁর সঙ্গে যুক্ত আছেন ছয়জন কর্মী।
পোশাকের ব্যবসা কেন
পোশাক মানুষের মৌলিক চাহিদার একটি অংশ। বছরব্যাপী এর চাহিদা বিদ্যমান থাকে। পোশাকের নকশার প্রতি ছোটবেলা থেকে একধরনের ভালোবাসা ছিল জেনেটের। ব্যবসা শুরুর আগে নিজের পোশাকের ডিজাইন তিনি নিজেই করতেন।
আর সে কারণেই পোশাকের ব্যবসা শুরু করেন। শাড়ি পরা বেশ পছন্দ জেনেটের। সে কারণে শাড়ি নিয়েই তাঁর কাজ বেশি। এর পাশাপাশি স্বল্প পরিসরে নকশা করা টিপ ও চুড়িও তৈরি করেন তিনি।

বিভিন্ন পণ্যের সমাহার
সুতি, সিল্ক, টাইডাই, হ্যান্ডপেইন্ট, ব্লকপ্রিন্ট ও এমব্রয়ডারি করা পোশাক পাওয়া যায় জেনেট ক্রিয়েশনে। পাশাপাশি রয়েছে শাড়ি, ব্লাউজ, টু-পিস, শাড়ির সঙ্গে মিলিয়ে তৈরি শার্ট, পাঞ্জাবিসহ নানা কিছু।
জেনেট গোমেজের সিগনেচার পণ্য হলো টাইডাই শাড়ি। তবে শৌখিন নারীদের পোশাক বা শাড়ির সঙ্গে মিলিয়ে পরার টিপও তৈরি করেন তিনি। তাঁর এই সূক্ষ্ম রুচি এবং নান্দনিক চিন্তাভাবনাই জেনেট ক্রিয়েশনকে করেছে অনন্য ও জনপ্রিয়।
দেশের বাইরে
আমেরিকা, অস্ট্রেলিয়া, ইতালি, ফ্রান্স ও কানাডায় বেশি যায় জেনেটের পণ্য। প্রবাসীরা দেশে এসে ফিরে যাওয়ার সময় তাঁর পণ্য সঙ্গে নিয়ে যান। আবার কুরিয়ারের মাধ্যমেও ক্রেতাদের পণ্য পাঠানো হয়। গতানুগতিক ধারার বাইরের নকশা এবং গুণগত মান ঠিক রাখেন তিনি। এ কারণে দেশ-বিদেশে তাঁর পোশাকের চাহিদা বেড়েছে।

লাভের হিসাব
জেনেট বর্তমানে প্রতি মাসে ৫০ থেকে ৬০ হাজার টাকা আয় করেন। লাভের কিছু টাকা তিনি আবার ব্যবসায় বিনিয়োগ করেন। সংসারের কাজ সামলে ব্যবসার কাজ চালাতে হয় তাঁকে। তাঁর পণ্যের ফটোশুটে নিজেই মডেল হন জেনেট। ফটোগ্রাফারের কাজ করেন তাঁর স্বামী। ব্যবসাটা পুরো অনলাইনভিত্তিক। বছরে বেশ কিছু মেলায় তিনি অংশ নেন বলে জানান।
নতুনদের জন্য
নতুনদের জন্য জেনেটের পরামর্শ হলো, ব্যবসা শুরু করতে চাইলে অন্য কারও অনুকরণ বা অনুসরণ না করে যে কাজ করতে ভালোবাসেন, ভালো পারেন,
সেই বিষয়ে বাণিজ্যিকভাবে শুরু
করতে পারেন এবং সেই বিষয়ের ওপর প্রাতিষ্ঠানিক জ্ঞান ও দক্ষতা থাকা দরকার।
ভবিষ্যতের ভাবনা
ভবিষ্যতে ছোট আকারে একেবারে নিজের মতো করে একটি স্টুডিও কিংবা শপ তৈরি করার ইচ্ছা জেনেটের; যাতে ক্রেতারা সরাসরি স্পর্শ করে পণ্য কেনার সুযোগ পান।

আমি বাবার বাসায় থাকা অবস্থায় স্বামী আরেকটি বিয়ে করে। সে জানায়, আমাকে ডিভোর্স দিয়েছে। কিন্তু আমি আজ এক বছরেও কোনো নোটিশ পাইনি। তার বিয়ের পরপরই এক পারিবারিক আইনজীবীর সাহায্যে তার বিরুদ্ধে যৌতুকের মামলা করি। আইন ও মামলা বিষয়ে আমার ধারণা না থাকায় আইনজীবী যা বলেছেন, তা-ই করেছি।
১৫ অক্টোবর ২০২৫
প্রতিবাদের অনেক ভাষার অন্যতম কার্টুন। এটি এক অনন্য প্রকাশভঙ্গি। শব্দের সীমাবদ্ধতা পেরিয়ে এটি এমন এক ভাষা, যা চোখে দেখা তো যায়-ই, করা যায় অনুভবও। আমাদের দেশের নারী কার্টুনিস্টরা নারীদের বিরুদ্ধে হওয়া বিভিন্ন বৈষম্য ও অনাচারের বিরুদ্ধে এই শিল্পমাধ্যমকে বেছে নিয়েছেন।
৫ দিন আগে
রাস্তায় নারীদের হয়রানি করার ঘটনা পৃথিবীতে এতটাই স্বাভাবিক যে তা থেকে রাষ্ট্রপ্রধানও বাদ যাচ্ছেন না! হ্যাঁ, ঠিক শুনেছেন। হয়রানির এই ঘটনা ঘটেছে মেক্সিকোর প্রথম নারী প্রেসিডেন্ট ক্লাউদিয়া শেইনবাউমের সঙ্গে। অবশ্য তাতে টনক নড়েছে পুরো দেশের।
৫ দিন আগে
তাঁকে বলা হয় মাদার অব আমেরিকান মডার্নিজম। তাঁর কর্মজীবন বিস্তৃত ছিল সাত দশক ধরে। তিনি জর্জিয়া টোটো ও’কিফ। জীবনের একপর্যায়ে ম্যাকুলার ডিজেনারেশন রোগে আক্রান্ত হয়ে দৃষ্টিশক্তি কমতে থাকলেও তিনি তাঁর শেষ সহায়তাবিহীন তেলচিত্রটি আঁকেন ১৯৭২ সালে।
৫ দিন আগেফিচার ডেস্ক

রাস্তায় নারীদের হয়রানি করার ঘটনা পৃথিবীতে এতটাই স্বাভাবিক যে তা থেকে রাষ্ট্রপ্রধানও বাদ যাচ্ছেন না! হ্যাঁ, ঠিক শুনেছেন। হয়রানির এই ঘটনা ঘটেছে মেক্সিকোর প্রথম নারী প্রেসিডেন্ট ক্লাউদিয়া শেইনবাউমের সঙ্গে। অবশ্য তাতে টনক নড়েছে পুরো দেশের। তাই এবার প্রেসিডেন্ট তাঁর দেশের যৌন হয়রানিবিরোধী আইনগুলো খতিয়ে দেখার নির্দেশ দিয়েছেন। ডেটা প্ল্যাটফর্ম স্ট্যাটিস্টার তথ্য অনুসারে, ২০২৪ সালে মেক্সিকোতে লৈঙ্গিকভিত্তিক সহিংসতার কারণে ৭৯৭ জন নারীকে হত্যা করা হয়েছে!
সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হওয়া একটি ভিডিওতে দেখা যায়, একজন মধ্যবয়সী ব্যক্তি ৬৩ বছর বয়সী প্রেসিডেন্টের কাঁধে হাত রেখে তাঁকে চুমু খাওয়ার চেষ্টা করছেন। দেখা যায়, শেইনবাউম লোকটির হাত সরিয়ে দিচ্ছেন। নিরাপত্তাকর্মীরা উপস্থিত না থাকায় অন্য একজন কর্মী এসে লোকটিকে সরিয়ে দেন। এই ঘটনার প্রতিবাদে অভিযোগ করবেন বলে জানিয়েছেন প্রেসিডেন্ট। তাঁর সঙ্গে হওয়া এ ঘটনায় দেশটিতে নারীদের নিরাপত্তা নিয়ে নতুন করে বিতর্ক তৈরি হচ্ছে।
মেক্সিকো দীর্ঘদিন ধরে যৌন হয়রানি ও নারী হত্যার (ফেমিসাইড) সংকটে জর্জরিত। প্রেসিডেন্টের সঙ্গে ঘটে যাওয়া এ ঘটনা দেশটির যৌন হয়রানিবিরোধী আইনগুলো কতটা কার্যকর, সেই প্রশ্নও তুলেছে। জাতিসংঘের তথ্যমতে, মেক্সিকোর ১৫ বছর বা তার বেশি বয়সের প্রায় ৭০ শতাংশ মেয়ে ও নারী জীবনে অন্তত একবার যৌন হয়রানির শিকার হয়ে থাকেন।
মেক্সিকোর নারীবিষয়ক সেক্রেটারি সিতলাল্লি হার্নান্দেজ বলেছেন, ‘এ বছর এ পর্যন্ত ২৫ হাজারের বেশি যৌন হয়রানির অভিযোগ করা হয়েছে।’ তবে সমস্যার মাত্রা পরিসংখ্যানের চেয়ে অনেক বেশি বলে মনে করা হয়। কারণ, অন্য অনেক দেশের মতো মেক্সিকোতেও নারী ভুক্তভোগীকেই সাধারণভাবে দোষারোপ করা হয় কিংবা তাদের অভিযোগ গুরুত্বসহকারে নেওয়া হয় না। এই ভয়ে অভিযোগ করতে দ্বিধা থাকে ভুক্তভোগীদের।
এদিকে নারী হত্যা মেক্সিকোর রাজধানীসহ পুরো দেশে অপরাধ হিসেবে বিবেচিত হয়। তবে যৌন হয়রানি সব রাজ্যে অপরাধ হিসেবে বিবেচিত হয় না। দেশটির ফেডারেল পেনাল কোড অনুসারে, যৌন হয়রানির সংজ্ঞা হলো, এমন ব্যক্তি যে অশ্লীল উদ্দেশ্যে, বারবার যেকোনো লিঙ্গের একজন ব্যক্তিকে হয়রানি করে। মেক্সিকো সিটিসহ মেক্সিকোর ৩১টি রাজ্যের মধ্যে শুধু ১৬টিতে যৌন হয়রানিকে ফৌজদারি অপরাধ হিসেবে গণ্য করা হয়।
ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব স্ট্যাটিস্টিকস অ্যান্ড জিওগ্রাফি প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, ২০২১ সালে ১৫ বছর বা তার বেশি বয়সের কমপক্ষে ৭০ দশমিক ১ শতাংশ মেক্সিকান নারী তাঁদের জীবনকালে অন্তত একবার কোনো না কোনো ধরনের সহিংসতার শিকার হয়েছেন। সেটা হতে পারে যৌন, মনস্তাত্ত্বিক, অর্থনৈতিক কিংবা শারীরিক সহিংসতা। ২০২৩ সালে জাতিসংঘের অর্থনৈতিক কমিশন জানিয়েছে, মেক্সিকোতে প্রত্যেক ১ লাখ নারীর মধ্যে ১ দশমিক ৩টি নারী হত্যার ঘটনা ঘটে। এর অর্থ হলো, ৮৫২ জন নারীকে হত্যা করা হয়েছে। আর দিনের হিসাব করলে প্রতিদিন দুজনের বেশি নারী হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছেন।
নারী হত্যার উচ্চ হারে লাতিন আমেরিকার দেশ হিসেবে মেক্সিকো একা নয়। সেই তালিকায় আছে ব্রাজিল, ডমিনিকান রিপাবলিক ও হন্ডুরাস।
সূত্র: আল জাজিরা, ফ্রান্স টোয়েন্টিফোর

রাস্তায় নারীদের হয়রানি করার ঘটনা পৃথিবীতে এতটাই স্বাভাবিক যে তা থেকে রাষ্ট্রপ্রধানও বাদ যাচ্ছেন না! হ্যাঁ, ঠিক শুনেছেন। হয়রানির এই ঘটনা ঘটেছে মেক্সিকোর প্রথম নারী প্রেসিডেন্ট ক্লাউদিয়া শেইনবাউমের সঙ্গে। অবশ্য তাতে টনক নড়েছে পুরো দেশের। তাই এবার প্রেসিডেন্ট তাঁর দেশের যৌন হয়রানিবিরোধী আইনগুলো খতিয়ে দেখার নির্দেশ দিয়েছেন। ডেটা প্ল্যাটফর্ম স্ট্যাটিস্টার তথ্য অনুসারে, ২০২৪ সালে মেক্সিকোতে লৈঙ্গিকভিত্তিক সহিংসতার কারণে ৭৯৭ জন নারীকে হত্যা করা হয়েছে!
সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হওয়া একটি ভিডিওতে দেখা যায়, একজন মধ্যবয়সী ব্যক্তি ৬৩ বছর বয়সী প্রেসিডেন্টের কাঁধে হাত রেখে তাঁকে চুমু খাওয়ার চেষ্টা করছেন। দেখা যায়, শেইনবাউম লোকটির হাত সরিয়ে দিচ্ছেন। নিরাপত্তাকর্মীরা উপস্থিত না থাকায় অন্য একজন কর্মী এসে লোকটিকে সরিয়ে দেন। এই ঘটনার প্রতিবাদে অভিযোগ করবেন বলে জানিয়েছেন প্রেসিডেন্ট। তাঁর সঙ্গে হওয়া এ ঘটনায় দেশটিতে নারীদের নিরাপত্তা নিয়ে নতুন করে বিতর্ক তৈরি হচ্ছে।
মেক্সিকো দীর্ঘদিন ধরে যৌন হয়রানি ও নারী হত্যার (ফেমিসাইড) সংকটে জর্জরিত। প্রেসিডেন্টের সঙ্গে ঘটে যাওয়া এ ঘটনা দেশটির যৌন হয়রানিবিরোধী আইনগুলো কতটা কার্যকর, সেই প্রশ্নও তুলেছে। জাতিসংঘের তথ্যমতে, মেক্সিকোর ১৫ বছর বা তার বেশি বয়সের প্রায় ৭০ শতাংশ মেয়ে ও নারী জীবনে অন্তত একবার যৌন হয়রানির শিকার হয়ে থাকেন।
মেক্সিকোর নারীবিষয়ক সেক্রেটারি সিতলাল্লি হার্নান্দেজ বলেছেন, ‘এ বছর এ পর্যন্ত ২৫ হাজারের বেশি যৌন হয়রানির অভিযোগ করা হয়েছে।’ তবে সমস্যার মাত্রা পরিসংখ্যানের চেয়ে অনেক বেশি বলে মনে করা হয়। কারণ, অন্য অনেক দেশের মতো মেক্সিকোতেও নারী ভুক্তভোগীকেই সাধারণভাবে দোষারোপ করা হয় কিংবা তাদের অভিযোগ গুরুত্বসহকারে নেওয়া হয় না। এই ভয়ে অভিযোগ করতে দ্বিধা থাকে ভুক্তভোগীদের।
এদিকে নারী হত্যা মেক্সিকোর রাজধানীসহ পুরো দেশে অপরাধ হিসেবে বিবেচিত হয়। তবে যৌন হয়রানি সব রাজ্যে অপরাধ হিসেবে বিবেচিত হয় না। দেশটির ফেডারেল পেনাল কোড অনুসারে, যৌন হয়রানির সংজ্ঞা হলো, এমন ব্যক্তি যে অশ্লীল উদ্দেশ্যে, বারবার যেকোনো লিঙ্গের একজন ব্যক্তিকে হয়রানি করে। মেক্সিকো সিটিসহ মেক্সিকোর ৩১টি রাজ্যের মধ্যে শুধু ১৬টিতে যৌন হয়রানিকে ফৌজদারি অপরাধ হিসেবে গণ্য করা হয়।
ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব স্ট্যাটিস্টিকস অ্যান্ড জিওগ্রাফি প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, ২০২১ সালে ১৫ বছর বা তার বেশি বয়সের কমপক্ষে ৭০ দশমিক ১ শতাংশ মেক্সিকান নারী তাঁদের জীবনকালে অন্তত একবার কোনো না কোনো ধরনের সহিংসতার শিকার হয়েছেন। সেটা হতে পারে যৌন, মনস্তাত্ত্বিক, অর্থনৈতিক কিংবা শারীরিক সহিংসতা। ২০২৩ সালে জাতিসংঘের অর্থনৈতিক কমিশন জানিয়েছে, মেক্সিকোতে প্রত্যেক ১ লাখ নারীর মধ্যে ১ দশমিক ৩টি নারী হত্যার ঘটনা ঘটে। এর অর্থ হলো, ৮৫২ জন নারীকে হত্যা করা হয়েছে। আর দিনের হিসাব করলে প্রতিদিন দুজনের বেশি নারী হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছেন।
নারী হত্যার উচ্চ হারে লাতিন আমেরিকার দেশ হিসেবে মেক্সিকো একা নয়। সেই তালিকায় আছে ব্রাজিল, ডমিনিকান রিপাবলিক ও হন্ডুরাস।
সূত্র: আল জাজিরা, ফ্রান্স টোয়েন্টিফোর

আমি বাবার বাসায় থাকা অবস্থায় স্বামী আরেকটি বিয়ে করে। সে জানায়, আমাকে ডিভোর্স দিয়েছে। কিন্তু আমি আজ এক বছরেও কোনো নোটিশ পাইনি। তার বিয়ের পরপরই এক পারিবারিক আইনজীবীর সাহায্যে তার বিরুদ্ধে যৌতুকের মামলা করি। আইন ও মামলা বিষয়ে আমার ধারণা না থাকায় আইনজীবী যা বলেছেন, তা-ই করেছি।
১৫ অক্টোবর ২০২৫
প্রতিবাদের অনেক ভাষার অন্যতম কার্টুন। এটি এক অনন্য প্রকাশভঙ্গি। শব্দের সীমাবদ্ধতা পেরিয়ে এটি এমন এক ভাষা, যা চোখে দেখা তো যায়-ই, করা যায় অনুভবও। আমাদের দেশের নারী কার্টুনিস্টরা নারীদের বিরুদ্ধে হওয়া বিভিন্ন বৈষম্য ও অনাচারের বিরুদ্ধে এই শিল্পমাধ্যমকে বেছে নিয়েছেন।
৫ দিন আগে
নিজের পোশাক নিজেই তৈরি করতেন কানন জেনেট গোমেজ। বাহারি নকশা করা সেই পোশাকগুলো দেখে অনেকে তৈরি করে দেওয়ার জন্য অনুরোধ করতেন তাঁকে। শখের বশে একসময় তিনি প্রথমে সবার জন্য পোশাক তৈরি শুরু করেন। পরবর্তী সময়ে কয়েকটি মেলায় অংশ নিয়ে ভালো সাড়া পান।
৫ দিন আগে
তাঁকে বলা হয় মাদার অব আমেরিকান মডার্নিজম। তাঁর কর্মজীবন বিস্তৃত ছিল সাত দশক ধরে। তিনি জর্জিয়া টোটো ও’কিফ। জীবনের একপর্যায়ে ম্যাকুলার ডিজেনারেশন রোগে আক্রান্ত হয়ে দৃষ্টিশক্তি কমতে থাকলেও তিনি তাঁর শেষ সহায়তাবিহীন তেলচিত্রটি আঁকেন ১৯৭২ সালে।
৫ দিন আগেফিচার ডেস্ক

তাঁকে বলা হয় মাদার অব আমেরিকান মডার্নিজম। তাঁর কর্মজীবন বিস্তৃত ছিল সাত দশক ধরে। তিনি জর্জিয়া টোটো ও’কিফ। জীবনের একপর্যায়ে ম্যাকুলার ডিজেনারেশন রোগে আক্রান্ত হয়ে দৃষ্টিশক্তি কমতে থাকলেও তিনি তাঁর শেষ সহায়তাবিহীন তেলচিত্রটি আঁকেন ১৯৭২ সালে। ৯০ বছর বয়সে তিনি মন্তব্য করেন, ‘আমি যা আঁকতে চাই, তা দেখতে পাই। যে জিনিসটি আমাকে সৃষ্টি করতে উৎসাহিত করে, তা এখনো আছে।’
ও’কিফ প্রকৃতিকেন্দ্রিক চিত্রকর্ম, বিশেষত ফুল ও মরুভূমি অনুপ্রাণিত ল্যান্ডস্কেপগুলোর জন্য আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি অর্জন করেছিলেন। তাঁর এই চিত্রকর্মগুলো প্রধানত তাঁর
বাড়ি এবং পরিবেশ থেকে অনুপ্রাণিত ছিল। ১৯১৬ সালে শিল্প ব্যবসায়ী ও ফটোগ্রাফার আলফ্রেড স্টিগ্লিটজ ও’কিফ চিত্রকর্মের একটি প্রদর্শনীর আয়োজন করেন। স্টিগ্লিটজের অনুরোধে ১৯১৮ সালে তিনি নিউইয়র্কে চলে আসেন এবং শিল্পী হিসেবে গুরুত্বসহকারে কাজ শুরু করেন। ও’কিফ বিভিন্ন ধরনের বিমূর্ত শিল্প এঁকেছিলেন। সেগুলোর মধ্যে ‘রেড ক্যানা’ শিরোনামের চিত্রকর্ম অন্যতম। তিনি পেরুর পর্বতশৃঙ্গ এবং জাপানের মাউন্ট ফুজির মতো দর্শনীয় স্থানগুলোর ছবি আঁকেন ও স্কেচ করেন।
ও’কিফের ১৯৩২ সালের চিত্রকর্ম ‘জিমসন উইড/হোয়াইট ফ্লাওয়ার নাম্বার ওয়ান’ বিক্রি করা হয় ২০১৪ সালে। বিক্রয়মূল্য ছিল ৪৪ লাখ ৪০ হাজার ৫০০ ডলার। এটি ছিল সেই সময়ে একজন নারী শিল্পীর আঁকা যেকোনো চিত্রকর্মের সর্বোচ্চ বিক্রয়মূল্য। ও’কিফের জন্ম ১৮৮৭ সালের ১৫ নভেম্বর। তিনি মৃত্যুবরণ করেন ১৯৮৬ সালের ৬ মার্চ।

তাঁকে বলা হয় মাদার অব আমেরিকান মডার্নিজম। তাঁর কর্মজীবন বিস্তৃত ছিল সাত দশক ধরে। তিনি জর্জিয়া টোটো ও’কিফ। জীবনের একপর্যায়ে ম্যাকুলার ডিজেনারেশন রোগে আক্রান্ত হয়ে দৃষ্টিশক্তি কমতে থাকলেও তিনি তাঁর শেষ সহায়তাবিহীন তেলচিত্রটি আঁকেন ১৯৭২ সালে। ৯০ বছর বয়সে তিনি মন্তব্য করেন, ‘আমি যা আঁকতে চাই, তা দেখতে পাই। যে জিনিসটি আমাকে সৃষ্টি করতে উৎসাহিত করে, তা এখনো আছে।’
ও’কিফ প্রকৃতিকেন্দ্রিক চিত্রকর্ম, বিশেষত ফুল ও মরুভূমি অনুপ্রাণিত ল্যান্ডস্কেপগুলোর জন্য আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি অর্জন করেছিলেন। তাঁর এই চিত্রকর্মগুলো প্রধানত তাঁর
বাড়ি এবং পরিবেশ থেকে অনুপ্রাণিত ছিল। ১৯১৬ সালে শিল্প ব্যবসায়ী ও ফটোগ্রাফার আলফ্রেড স্টিগ্লিটজ ও’কিফ চিত্রকর্মের একটি প্রদর্শনীর আয়োজন করেন। স্টিগ্লিটজের অনুরোধে ১৯১৮ সালে তিনি নিউইয়র্কে চলে আসেন এবং শিল্পী হিসেবে গুরুত্বসহকারে কাজ শুরু করেন। ও’কিফ বিভিন্ন ধরনের বিমূর্ত শিল্প এঁকেছিলেন। সেগুলোর মধ্যে ‘রেড ক্যানা’ শিরোনামের চিত্রকর্ম অন্যতম। তিনি পেরুর পর্বতশৃঙ্গ এবং জাপানের মাউন্ট ফুজির মতো দর্শনীয় স্থানগুলোর ছবি আঁকেন ও স্কেচ করেন।
ও’কিফের ১৯৩২ সালের চিত্রকর্ম ‘জিমসন উইড/হোয়াইট ফ্লাওয়ার নাম্বার ওয়ান’ বিক্রি করা হয় ২০১৪ সালে। বিক্রয়মূল্য ছিল ৪৪ লাখ ৪০ হাজার ৫০০ ডলার। এটি ছিল সেই সময়ে একজন নারী শিল্পীর আঁকা যেকোনো চিত্রকর্মের সর্বোচ্চ বিক্রয়মূল্য। ও’কিফের জন্ম ১৮৮৭ সালের ১৫ নভেম্বর। তিনি মৃত্যুবরণ করেন ১৯৮৬ সালের ৬ মার্চ।

আমি বাবার বাসায় থাকা অবস্থায় স্বামী আরেকটি বিয়ে করে। সে জানায়, আমাকে ডিভোর্স দিয়েছে। কিন্তু আমি আজ এক বছরেও কোনো নোটিশ পাইনি। তার বিয়ের পরপরই এক পারিবারিক আইনজীবীর সাহায্যে তার বিরুদ্ধে যৌতুকের মামলা করি। আইন ও মামলা বিষয়ে আমার ধারণা না থাকায় আইনজীবী যা বলেছেন, তা-ই করেছি।
১৫ অক্টোবর ২০২৫
প্রতিবাদের অনেক ভাষার অন্যতম কার্টুন। এটি এক অনন্য প্রকাশভঙ্গি। শব্দের সীমাবদ্ধতা পেরিয়ে এটি এমন এক ভাষা, যা চোখে দেখা তো যায়-ই, করা যায় অনুভবও। আমাদের দেশের নারী কার্টুনিস্টরা নারীদের বিরুদ্ধে হওয়া বিভিন্ন বৈষম্য ও অনাচারের বিরুদ্ধে এই শিল্পমাধ্যমকে বেছে নিয়েছেন।
৫ দিন আগে
নিজের পোশাক নিজেই তৈরি করতেন কানন জেনেট গোমেজ। বাহারি নকশা করা সেই পোশাকগুলো দেখে অনেকে তৈরি করে দেওয়ার জন্য অনুরোধ করতেন তাঁকে। শখের বশে একসময় তিনি প্রথমে সবার জন্য পোশাক তৈরি শুরু করেন। পরবর্তী সময়ে কয়েকটি মেলায় অংশ নিয়ে ভালো সাড়া পান।
৫ দিন আগে
রাস্তায় নারীদের হয়রানি করার ঘটনা পৃথিবীতে এতটাই স্বাভাবিক যে তা থেকে রাষ্ট্রপ্রধানও বাদ যাচ্ছেন না! হ্যাঁ, ঠিক শুনেছেন। হয়রানির এই ঘটনা ঘটেছে মেক্সিকোর প্রথম নারী প্রেসিডেন্ট ক্লাউদিয়া শেইনবাউমের সঙ্গে। অবশ্য তাতে টনক নড়েছে পুরো দেশের।
৫ দিন আগে