Ajker Patrika

দাবানল ঠেকাতে ছাগল!

আপডেট : ০৩ অক্টোবর ২০২৩, ১৬: ১৪
দাবানল ঠেকাতে ছাগল!

গৃহপালিত প্রাণী হিসেবে ছাগলের কদর আছে নানা দেশে। কিন্তু যদি শোনেন দাবানল ঠেকাতে ব্যবহার করা হচ্ছে ছাগল, তখন নিশ্চয় অবাক হবেন। লস অ্যাঞ্জেলেসসহ ক্যালিফোর্নিয়ার বিভিন্ন এলাকায় সত্যি এটি করা হচ্ছে। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির এক প্রতিবেদন সূত্রে জানা যায় এ তথ্য।

স্ফটিকের মতো স্বচ্ছ, উজ্জ্বল নীল আকাশের নিচে ঝলমল করছে প্রশান্ত মহাসাগরের জল, চোখ যত দূর যায় মাইলকে মাইল সোনালি বালুকাময় সৈকত, আর পর্বতের চূড়ায় ছাগলের একটি পাল মিলিয়ন মিলিয়ন ডলারের দৃশ্য উপভোগ করছে—এটি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের লস অ্যাঞ্জেলেসের একটি সাধারণ দৃশ্য। তবে এই ছাগলেরা দাবানলের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে ক্যালিফোর্নিয়ার নতুন অস্ত্র। কোনো কোনো দেশে বহু আগ থেকে ব্যবহার করে আসা এই পন্থা কি আসলেই কাজে লাগবে? 

‘যেখানেই আমরা গিয়েছি, অভিভূত করে দেওয়ার মতো ইতিবাচক সারা পেয়েছ।’ বলেন ছাগলপালক মাইকেল চই, ‘এখন পর্যন্ত যতটা দেখছি, এটি সবার জন্য ভালো একটি পদক্ষেপ।’ 

চই ফায়ার গ্রেজারস নামের একটি পারিবারিক ব্যবসা চালান। তাঁদের কাজ হলো বিভিন্ন শহর ও স্কুল কর্তৃপক্ষসহ বেসরকারি নানা সংস্থাকে ছাগল ভাড়া দেওয়া। এই ছাগলদের কাজ হচ্ছে সহজে পৌঁছা যায় না এমন পার্বত্য এলাকাসহ দুর্গম জায়গা থেকে খেয়ে ঝোপ-ঝাড় পরিষ্কার করা। প্রতিষ্ঠানটির ৭০০টি ছাগল রয়েছে। চাহিদা মেটাতে সম্প্রতি তাদের পাল বড় করত হয়েছে। 

‘আমি মনে করি, লোকেরা বিষয়টি সম্পর্কে আরও আগ্রহী এবং এর পরিবেশগত প্রভাব সম্পর্কে সচেতন হবেন। আগাছা পরিষ্কার করতে এবং জমিকে আগুন থেকে রক্ষা করার জন্য কোন পদ্ধতি ব্যবহার করা উচিত, সে সম্পর্কে আরও ভাবনা-চিন্তা করবেন। তবে এর একটি বড় চাহিদা রয়েছে এবং এই পদ্ধতির জনপ্রিয়তা বাড়ছে।’ বলেন মাইকেল চই। 

ক্যালিফোর্নিয়াকে সব সময়ই দাবানলের বিরুদ্ধে লড়াই করতে হচ্ছে। বিশেষ করে ১৯৮০ সাল থেকে এখানে দাবানল নিয়মিত ঘটনায় পরিণত হয়েছে। একই সঙ্গে এটি ধ্বংসাত্মক ও বড় আকারে হচ্ছে। ক্যালিফোর্নিয়া ডিপার্টমেন্ট অব ফরেস্ট্রি অ্যান্ড ফায়ার প্রোটেকশনের (ক্যালফায়ার) তথ্য অনুসারে, ২০২১ সালে ক্যালিফোর্নিয়া নজিরবিহীন দাবানলের মুখোমুখি হয়েছিল। শুধু একটি দাবানলে ৯ লাখ ৬০ হাজারের বেশি একর (৩ হাজার ৮৮৫ বর্গকিলোমিটার) জমি পুড়ে যায়। 

২০২২ সালে দাবানলের মৌসুম সে তুলনায় অতটা বিপজ্জনক ছিল না। এই সময়ে ৩ লাখ একরের (১ হাজার ২১৪ বর্গকিলোমিটার) বেশি এলাকা দাবানলে পোড়ে। এদিকে এ বছরের আগস্ট মাসটা ক্যালিফোর্নিয়ায় গড় থেকে শীতল এবং আর্দ্র ছিল। তার পরও আড়াই লাখ একরের বেশি জায়গা দাবানলে পোড়ে। এ সময় চার জনের মৃত্যু হয়েছে। 

মাইকেল চই ফায়ার গ্রেজারস নামের একটি পারিবারিক ব্যবসা চালান। তাঁরা বিভিন্ন শহর ও স্কুল কর্তৃপক্ষসহ বেসরকারি নানা সংস্থাকে ছাগল ভাড়া দেন। ছবি: মাইকেল চইয়ের সৌজন্যেগবেষণায় দেখা গেছে জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে উষ্ণতা ও শুষ্কতা বাড়ার মতো বিষয়গুলো দাবানলের ঝুঁকি ও তীব্রতা বাড়ানোর বড় কারণ। তবে গবেষণায় এটাও এসেছে, ভূমি ব্যবস্থাপনা দাবানল মোকাবিলায় একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে। কারণ মৃত গাছ ও শুকনো গুল্মগুলো বিপজ্জনক জ্বালানি তৈরি করে, যা বড় ও ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের কারণ হতে পারে। এ সমস্যা সমাধানের টেকসই ও সাশ্রয়ী একটি পদ্ধতি হতে পারে ছাগলের ব্যবহার। 

‘ক্যালিফোর্নিয়া ও ভূমধ্যসাগরীয় অঞ্চলে ছাগলেরা বেশ বড় গুরুত্বপূর্ণ। কারণ এসব এলাকায় জন্মানো ঝোপঝাড়। ছাগলেরা এসব খাওয়ার জন্য খুব ভালোভাবে সজ্জিত, তাদের মুখও খুব কার্যকর।’ বলেন ইউনিভার্সিটি অব আইডাহোর অধ্যাপক ক্যারেঞ্চ লঞ্চবাগ। ভেড়া, ছাগল ও গবাদিপশু চরানোর বিষয়ে একাধিক গবেষণা পরিচালনা করা লঞ্চবাগ আরও বলেন, ‘যেন শুধু ঝোপঝাড়, গুল্ম—এসব খাওয়ার উপযোগী করেই এদের শরীরের নকশা করা।’ 

‘ছাগলের মুখ সরু ও গভীর; যা তাদের বেছে বেছে গুল্ম সংগ্রহ করতে সাহায্য করে। পেছনের পায়ে ভর দিয়ে দাঁড়িয়ে তারা ৬.৭ ফুট (২ মিটার) উচ্চতার কোনো কিছুও খেতে পারে। জিহ্বা ও ঠোঁট ব্যবহারে প্রাণীটি খুব কৌশলী। বিভিন্ন যৌগকে বিষক্রিয়ামুক্ত করার ক্ষমতা আছে তাদের। এমনকি বিষাক্ত গাছপালাও খেতে পারে।’ বলেন লঞ্চবাগ। 

ছাগলের আরেকটি সুবিধা হলো উচ্চ তাপমাত্রা, যেমন—১০০ ডিগ্রি ফারেনহাইটেও অনায়াসে চরে বেড়াতে পারে। শ্রমিকদের জন্য যেসব খাঁড়া পাহাড়ে ওঠা কঠিন, সেখানে অনায়াসে বিচরণ করতে পারে এরা। 

লসঅ্যাঞ্জেলেস কাউন্টির একটি শহর ইন গ্নেনডালে ৩০০ ছাগল দুই সপ্তাহের কিছু বেশি সময়ে ১৪ একর জায়গা পরিষ্কার করেছে। শহরটি দাবানলের জন্য প্রচণ্ড ঝুঁকিপূর্ণ একটি এলাকা। ঝুঁকি কমাতে গ্নেনডালে ফায়ার ডিপার্টমেন্টের কর্মকর্তা পেতি মুন্দ ২০১৮ সাল থেকে মাইকেল চইয়ের প্রতিষ্ঠানের ছাগল ব্যবহার করছেন। উদ্দেশ্য বাড়ি-ঘর ও উন্মুক্ত জায়গার মধ্যে একটি বাফার এলাকা তৈরি। যেন দাবানল সৃষ্টি হলে এখানে এসে এটা নিয়ন্ত্রণে চলে আসে কিংবা পুরোপুরি নিভে যায়।

ক্যালিফোর্নিয়ার ওয়েস্ট সেকরামেনতোতে ২০১৩ সাল থেকেই দাবানল প্রতিরোধের ‘সৃজনশীল ও পরিবেশগতভাবে টেকসই পদ্ধতি’ হিসেবে ছাগলের পাল ব্যবহার করা হচ্ছে বলে জানান শহরের পার্কগুলো দেখভালের দায়িত্বে থাকা জেসন পুয়োপলো। বছরে দুবার শহরে আসে ছাগলের পাল।

ছাগলগুলো যে ভালোমতোই দায়িত্ব পালন করেছে তার প্রমাণ, শহরের ফায়ার সার্ভিস ২০২২ সালে দাবানলের সময় একটি হাউজিং কমপ্লেক্স বাঁচাতে সাহায্য করার জন্য এদের কৃতিত্ব দেয়। ‘আমাদের ফায়ার চিফ বলেছেন, ছাগলগুলো যদি ওই মাঠে আগে না চরত, তাহলে দাবানলের পরিস্থিতি আরও খারাপ হতে পারত।’ পুয়োপলো বলেন ‘যেহেতু ছাগলেরা সম্প্রতি ওই এলাকায় ঝোপঝাড় খেয়ে চার ইঞ্চিতে নামিয়ে আনে, তাই ফায়ার সার্ভিসের কর্মীদের কাজ সহজ হয়।’

ইতালি, গ্রিস ও স্পেনের মতো ইউরোপীয় দেশগুলোয় জমি পরিষ্কার করার জন্য ছাগল ব্যবহার করা একটি শতাব্দীপ্রাচীন রীতি। ভূমধ্যসাগরে ছাগল চরানো আগুন প্রতিরোধে কতটা কার্যকর, তা নিয়ে একটি সমীক্ষায় দেখা যায়, এটি পরিবেশগতভাবে সঠিক ও চমৎকার একটি কৌশল।

ছাগল উচ্চ তাপমাত্রা যেমন এক শ ডিগ্রি ফারেনহাইটেও অনায়াসে চরে বেড়াতে পারে।অবশ্য ক্যালিফোর্নিয়ায় এর ব্যবহার শুরু হয় কেবল বছর দশেক আগে। ২০১৩ সালে ইউএস ফরেস্ট সার্ভিস (ইউএসএফএস) পরীক্ষামূলকভাবে সাউদার্ন ক্যালিফোর্নিয়ার ক্লিভল্যান্ড জাতীয় উদ্যানের ১০০ একর জঙ্গল পাতলা করার জন্য ১ হাজার ৪০০ ছাগল ব্যবহার করে। উদ্দেশ্য ছিল জঙ্গল ও কাছের লোকালয়ের মধ্যে একটি বাফার এলাকা তৈরি করা। এতে একরপ্রতি খরচ হয় ৪০০-৫০০ ডলার, যেখানে শ্রমিক ব্যবহার করা হলে খরচ হতো ১ হাজার ২০০ থেকে ১ হাজার ৫০০ ডলার। 

বনের ছাগলের ব্যবহার সম্পর্কিত একটি সমীক্ষায় দেখা গেছে, এই প্রাণীদের একটি উল্লেখযোগ্য প্রভাব আছে ঝোপঝাড় বা গুল্ম পরিষ্কারে। কোনো এলাকায় এগুলো ৮৭ শতাংশ পর্যন্ত হ্রাস করে এরা। তেমনি উচ্চতা ৯২ শতাংশ কমিয়ে দেয়। ভূমি ব্যবস্থাপনায় ছাগল একমাত্র উপায় হতে পারে না। তবে দাবানলের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের সময় এ ধরনের প্রাণীর ব্যবহার একটি বড় অস্ত্র হতে পারে বলে মনে করেন লঞ্চবাগ। 

কোনো কোনো এলাকার অগ্নিনিয়ন্ত্রণ বিভাগ দাবানল মোকাবিলায় ছাগল কিনেছেও। সান ম্যানুয়েল ফায়ার ডিপার্টমেন্টের যেমন ৩০০ ছাগলের নিজস্ব একটি পাল রয়েছে দাবানল নিয়ন্ত্রণে। বিভাগের সহকারী প্রধান ক্রিস নেলসন জানান, ছাগলেরা ঘাস ও ঝোপঝাড় খেয়ে এই অঞ্চলে দাবানল প্রশমিত করতে তাঁদের সাহায্য করছে। 

এখন দেখার বিষয়, লসঅ্যাঞ্জলেসসহ ক্যালিফোর্নায়ার বিভিন্ন এলাকায় ভবিষ্যতে গৃহপালিত এই প্রাণীরা বড় দাবানল প্রতিরোধে কতটা ভূমিকা রাখে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

‘মেডিকেলে চান্স না পেয়ে’ ৩৩ হাজার ভোল্ট বিদ্যুতের তারে শুয়ে শিক্ষার্থীর আত্মহত্যা, দাবি স্বজনদের

হাদিকে গুলি: সীমান্তে মানুষ পার করা ফিলিপকে খুঁজছে পুলিশ, তাঁর দুই সহযোগী আটক

খালি হাতে বন্দুকধারীকে ঠেকিয়ে নায়ক বনে যাওয়া কে এই আল-আহমেদ

ড. ইউনূস যদি চান, সারা বাংলাদেশকে কারাগার বানাতে পারেন—আদালতে আনিস আলমগীর

একটা লাশ পড়লে আমরাও কিন্তু লাশ নেব, অত সুশীলতা করে লাভ নেই: মাহফুজ আলম

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

লিংকডইনে গার্লফ্রেন্ড চেয়ে বিজ্ঞাপন দেওয়ার পর যা ঘটল

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ১৫ ডিসেম্বর ২০২৫, ১১: ১২
‘গার্লফ্রেন্ড’ বা নারীবন্ধুর খোঁজে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দিয়েছেন ভারতের এক ব্যক্তি। ছবি: লিংকডইন থেকে নেওয়া।
‘গার্লফ্রেন্ড’ বা নারীবন্ধুর খোঁজে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দিয়েছেন ভারতের এক ব্যক্তি। ছবি: লিংকডইন থেকে নেওয়া।

চাকরি খোঁজার জনপ্রিয় প্ল্যাটফর্ম লিংকডইন। সেখানে কর্মীরা চাকরি খোঁজেন এবং অনেক প্রতিষ্ঠান সেখান থেকে কর্মীদের বাছাই করে থাকে। এই প্ল্যাটফর্মে এবার ‘গার্লফ্রেন্ড’ বা নারীবন্ধুর খোঁজে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দিয়েছেন ভারতের এক ব্যক্তি। এ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে চলছে হাসি-ঠাট্টা ও বিদ্রুপ।

ভারতের হরিয়ানার গুরুগ্রামের দীনেশ বৈরাগী। ‘পূর্ণকালীন’ চাকরির অফার দিয়ে নারীবন্ধু খুঁজেছেন লিংকডইনে। ওই বিজ্ঞাপনের বিবরণে সম্ভাব্য ‘গার্লফ্রেন্ড’-এর জন্য প্রয়োজনীয় নানা গুণাবলির কথাও উল্লেখ করেছেন দীনেশ।

টেক মাহিন্দ্রার সাবেক সিনিয়র অ্যাসোসিয়েট দীনেশ চাকরির বিজ্ঞাপনে লিখেছেন, ‘গুরগাঁওয়ে পূর্ণকালীন গার্লফ্রেন্ডের পদ খালি আছে। সরাসরি দেখা করা এবং দূর থেকে দায়িত্ব পালন দুটোই করতে হবে।’

প্রযুক্তিখাতে অভিজ্ঞ এই যুবক চাকরির বিজ্ঞাপনে আরও লিখেছেন, ‘এই ভূমিকায় শক্তিশালী আবেগগত সম্পর্ক গড়ে তোলা ও তা বজায় রাখা, অর্থবহ কথোপকথনে অংশ নেওয়া, সঙ্গ দেওয়া, পারস্পরিক সমর্থন এবং সঙ্গীর সঙ্গে বিভিন্ন কার্যক্রম বা শখে যুক্ত থাকার বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত থাকবে।’

তিনি আরও লেখেন, ‘সক্রিয় যোগাযোগ, পারস্পরিক সম্মান ও বোঝাপড়া এই ভূমিকাটির ভিত্তি হবে। পাশাপাশি যৌথ সিদ্ধান্ত গ্রহণ এবং ইতিবাচক ও সহায়ক সম্পর্কের পরিবেশ গড়ে তোলাও এর অন্তর্ভুক্ত।’

দীনেশ চাকরিপ্রার্থীর যোগ্যতার ক্ষেত্রে উচ্চমাত্রার আবেগগত বুদ্ধিমত্তা, শোনার সক্ষমতা, সহমর্মিতা ও আন্তঃব্যক্তিক দক্ষতার কথা উল্লেখ করেছেন। এ ছাড়া তিনি জানান, এমন একজনকে তিনি খুঁজছেন, যাঁর মধ্যে রসবোধ, দয়া এবং ইতিবাচক মানসিকতা থাকবে।

তিনি আরও যোগ করেন, ‘সম্পর্কের ক্ষেত্রে ব্যক্তিগত ও যৌথ লক্ষ্যগুলোর মধ্যে ভারসাম্য রক্ষা করার সক্ষমতা থাকতে হবে। শখ, কার্যক্রমে আগ্রহ বা একসঙ্গে নতুন অভিজ্ঞতা গড়ে তোলার মানসিকতারও প্রয়োজন রয়েছে। পাশাপাশি সম্পর্কের ভেতরে পারস্পরিক সমর্থন ও বিকাশে আগ্রহী হতে হবে।’

লিংকডইনে দেওয়া এই চাকরি খোঁজার মতো করে গার্লফ্রেন্ড খোঁজার পোস্টটি দ্রুতই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। এটি নিয়ে রসিকতার বন্যা বইয়ে দেন নেটিজেনরা। অনেকেই এই অদ্ভুত চাকরির বিজ্ঞাপন নিয়ে ঠাট্টা–মশকরা করেন, আবার কেউ কেউ সরাসরি পারিশ্রমিক বা বেতন প্যাকেজ সম্পর্কে জানতে চান।

একজন ব্যবহারকারী লিখেছেন, ‘ওহ, এখন সব পরিষ্কার! তাহলে আমার প্রাক্তন আমার সঙ্গে ছয় মাস গার্লফ্রেন্ড হিসেবে ইন্টার্নশিপ করেছিল, এরপর অন্য কোথাও ফুলটাইম গার্লফ্রেন্ডের চাকরি পেয়ে চলে গেছে।’

আরেকজন মন্তব্য করেন, ‘আপনি যদি আসলেই ভারতীয় হন, তাহলে যেকোনো অ্যাপই ডেটিং অ্যাপ বানিয়ে ফেলবেন।’

তৃতীয় একজন লিখেছেন, ‘পদের বিবরণ দেখে বেশ চমকপ্রদই লাগছে, কিন্তু স্যালারি কত?’

একজন ব্যবহারকারী প্রশ্ন করেন, ‘তিনি কি লিংকডইনের পোস্টের মাধ্যমে কোনো পরীক্ষা চালাচ্ছেন?’ উত্তরে দীনেশ বলেন, ‘একেবারেই না। এটি একটি প্রকৃত শূন্যপদ। প্রোফাইলটি ভালোভাবে বোঝার জন্য আমি চাকরির বিবরণ দেখার পরামর্শ দিচ্ছি। এছাড়া কেউ যদি আগ্রহী ও যোগ্য হন, তাদেরও নির্দেশনা দেওয়া যেতে পারে।’

শেষ আপডেট অনুযায়ী দীনেশ জানিয়েছেন, এই ‘চাকরির’ জন্য এরইমধ্যে ২৬ জন আবেদন করেছেন। এখন নতুন কোনো আবেদন গ্রহণ করা হচ্ছে না বলেও জানান তিনি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

‘মেডিকেলে চান্স না পেয়ে’ ৩৩ হাজার ভোল্ট বিদ্যুতের তারে শুয়ে শিক্ষার্থীর আত্মহত্যা, দাবি স্বজনদের

হাদিকে গুলি: সীমান্তে মানুষ পার করা ফিলিপকে খুঁজছে পুলিশ, তাঁর দুই সহযোগী আটক

খালি হাতে বন্দুকধারীকে ঠেকিয়ে নায়ক বনে যাওয়া কে এই আল-আহমেদ

ড. ইউনূস যদি চান, সারা বাংলাদেশকে কারাগার বানাতে পারেন—আদালতে আনিস আলমগীর

একটা লাশ পড়লে আমরাও কিন্তু লাশ নেব, অত সুশীলতা করে লাভ নেই: মাহফুজ আলম

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

অফিসে ঘন ঘন টয়লেটে যাওয়ায় চাকরি হারালেন প্রকৌশলী

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ১৪ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৬: ৪৯
প্রতীকী ছবি। ছবি: পিক্সাবে
প্রতীকী ছবি। ছবি: পিক্সাবে

কাজের মধ্যে ঘন ঘন টয়লেটে যাওয়ার জন্য বিরতি নিয়ে চাকরি খুইয়েছেন এক চীনা প্রকৌশলী। চীনের পূর্বাঞ্চলের জিয়াংসু প্রদেশের ওই প্রকৌশলী ঘন ঘন এবং প্রতিবার এক ঘণ্টার বেশি সময় টয়লেটে কাটাচ্ছিলেন। যদিও তাঁর দাবি ছিল, তিনি অর্শ বা পাইলসের সমস্যায় ভুগছেন।

হংকং থেকে প্রকাশিত ইংরেজি ভাষার দৈনিক সাউথ চায়না মর্নিং পোস্টের খবরে বলা হয়েছে জিয়াংসু প্রদেশের লি নামক ওই ব্যক্তি গত বছর এপ্রিল থেকে মে মাসের মধ্যে এক মাসে ১৪ বার টয়লেটে যাওয়ার জন্য বিরতি নেন। এর মধ্যে একবার তিনি চার ঘণ্টা টয়লেটে কাটান। এর জেরে তাঁকে চাকরি হারাতে হয়।

এই খবর সম্প্রতি সাংহাই ফেডারেশন অব ট্রেড ইউনিয়নসের মাধ্যমে প্রকাশিত হয়।

ওই ব্যক্তি বেআইনিভাবে চুক্তি বাতিলের জন্য কোম্পানির বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করলে বিষয়টি সামনে আসে। লি প্রমাণ হিসেবে গত বছর মে ও জুন মাসে তাঁর সঙ্গীর কেনা অর্শের ওষুধ এবং চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে তাঁর হাসপাতালে ভর্তি ও অস্ত্রোপচারের নথিও পেশ করেন।

এরপর লি ওই কোম্পানির বিরুদ্ধে মামলা করে বেআইনিভাবে চুক্তি বাতিলের দায়ে ৩ লাখ ২০ হাজার ইউয়ান ক্ষতিপূরণ দাবি করেন। অন্যদিকে কোম্পানি লি-এর ঘন ঘন এবং দীর্ঘ সময় ধরে বিরতিতে থাকার প্রমাণস্বরূপ সিসিটিভি ফুটেজ আদালতে জমা দেয়।

আদালতের বিশ্বাস, লি টয়লেটে যে সময় ব্যয় করেছেন, তা তাঁর ‘শারীরিক প্রয়োজনের চেয়ে অনেক বেশি’ ছিল। এ ছাড়া লি যে ডাক্তারি নথি জমা দিয়েছেন, তা তাঁর বহুবার দীর্ঘ পানির বিরতি নেওয়ার পরের সময়ের। চুক্তিতে প্রয়োজন থাকা সত্ত্বেও লি তাঁর অসুস্থতার কথা কোম্পানিকে আগে জানাননি বা অসুস্থতাজনিত ছুটির জন্য আবেদনও করেননি।

কোম্পানি লি-কে তাঁর অনুপস্থিতি লক্ষ্য করে প্রথমে একটি চ্যাট অ্যাপের মাধ্যমে যোগাযোগ করে, কিন্তু কোনো উত্তর পায়নি। লি-এর পদে কাজ করার জন্য তাঁকে সব সময় কাজের অনুরোধে সাড়া দিতে হয়। সিসিটিভি ফুটেজ পরীক্ষা করার পর কোম্পানি তাঁকে বরখাস্ত করে।

লি ২০১০ সালে কোম্পানিতে যোগ দেন এবং ২০১৪ সালে একটি উন্মুক্ত-মেয়াদি চুক্তি নবায়ন করেন। চুক্তি অনুযায়ী, অনুমতি ছাড়া নির্দিষ্ট সময়ের জন্য নিজের কর্মস্থল ত্যাগ করাকে অনুপস্থিতি বলে গণ্য করা হবে এবং ১৮০ দিনের মধ্যে মোট তিন কার্যদিবস অনুপস্থিত থাকলে চুক্তি সঙ্গে সঙ্গে বাতিল হয়ে যাবে।

বরখাস্ত করার আগে কোম্পানি ট্রেড ইউনিয়নের অনুমতিও নিয়েছিল। দুই দফা বিচার পর্বের পর আদালত অবশেষে দুই পক্ষের মধ্যে মধ্যস্থতা করেন এবং লি-এর কোম্পানিতে অবদানের কথা এবং বেকারত্বের পর তাঁর অসুবিধার কথা বিবেচনা করে কোম্পানিকে ৩০ হাজার ইউয়ান ভাতা দিয়ে মামলাটি মিটিয়ে নিতে রাজি করান।

চীনে এ ধরনের বিরতি নিয়ে বিতর্ক এই প্রথম নয়। এর আগে ২০২৩ সালেও জিয়াংসু প্রদেশের আরেক ব্যক্তিকে একই অভিযোগে বরখাস্ত করা হয়েছিল। তাঁর দীর্ঘতম বিরতি ছিল এক দিনে ছয় ঘণ্টা।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

‘মেডিকেলে চান্স না পেয়ে’ ৩৩ হাজার ভোল্ট বিদ্যুতের তারে শুয়ে শিক্ষার্থীর আত্মহত্যা, দাবি স্বজনদের

হাদিকে গুলি: সীমান্তে মানুষ পার করা ফিলিপকে খুঁজছে পুলিশ, তাঁর দুই সহযোগী আটক

খালি হাতে বন্দুকধারীকে ঠেকিয়ে নায়ক বনে যাওয়া কে এই আল-আহমেদ

ড. ইউনূস যদি চান, সারা বাংলাদেশকে কারাগার বানাতে পারেন—আদালতে আনিস আলমগীর

একটা লাশ পড়লে আমরাও কিন্তু লাশ নেব, অত সুশীলতা করে লাভ নেই: মাহফুজ আলম

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

ব্যর্থ ব্যবসায়ী ফুড ডেলিভারি করে লাখপতি

ফিচার ডেস্ক, ঢাকা 
আপডেট : ১২ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৩: ১১
প্রতীকী ছবিটি এআই দিয়ে তৈরি
প্রতীকী ছবিটি এআই দিয়ে তৈরি

সাধারণত অস্থায়ী পেশা হিসেবে ফুড ডেলিভারির চাকরি অনেকেই করেন। কেউ আবার মূল চাকরির ফাঁকে ফুড ডেলিভারি দেন অতিরিক্ত আয়ের জন্য। কিন্তু এ কাজ করেও যে লাখ টাকার মালিক হওয়া যায়, তা দেখিয়ে দিলেন চীনের সাংহাই শহরের ঝাং শুয়েচিয়াং নামের এক তরুণ।

ফুড ডেলিভারি করতে করতে মাত্র পাঁচ বছরে ১১ লাখ ২০ হাজার ইউয়ান সঞ্চয় করেছেন তিনি, যা বাংলাদেশের মুদ্রায় প্রায় ১ কোটি ৯৩ লাখ ৭৬ হাজার টাকার সমান। প্রতিদিন গড়ে ১৪ ঘণ্টা কাজ আর কঠোর মিতব্যয়িতাই তাঁকে লাখপতি বানিয়েছে। সামাজিক মাধ্যমে তাঁকে নিয়ে চলছে ব্যাপক আলোচনা।

ব্যর্থ ব্যবসা, তারপর নতুন শুরু

ঝাংয়ের বাড়ি ফুজিয়ান প্রদেশের ঝাংঝো শহরে। ২০১৯ সালে মাত্র ২০ বছর বয়সে নিজের পায়ে দাঁড়ানোর স্বপ্ন নিয়ে তিনি একটি নাশতার দোকান চালু করেন। শুরুতে কিছুটা আশাব্যঞ্জক হলেও কয়েক মাসের মধ্যেই ব্যবসার অবস্থা হয়ে যায় টালমাটাল। লোকসান দিন দিন বাড়তে থাকে, ক্রেতা কমে যায় এবং প্রতিদিনের খরচ টানতে গিয়ে তিনি চাপের মুখে পড়েন। শেষ পর্যন্ত দোকানটি বন্ধ করতে বাধ্য হন এবং তাঁর কাঁধে চাপে প্রায় ৫০ হাজার ইউয়ানের ঋণ।

চীনের সাংহাই শহরের ঝাং শুয়েচিয়াং। ফুড ডেলিভারি করতে মাত্র পাঁচ বছরে বাংলাদেশের মুদ্রায় প্রায় ১ কোটি ৯৩ লাখ ৭৬ হাজার টাকার সমান আয় করেন। ছবি: এসইটিএন
চীনের সাংহাই শহরের ঝাং শুয়েচিয়াং। ফুড ডেলিভারি করতে মাত্র পাঁচ বছরে বাংলাদেশের মুদ্রায় প্রায় ১ কোটি ৯৩ লাখ ৭৬ হাজার টাকার সমান আয় করেন। ছবি: এসইটিএন

এ ব্যর্থতা তরুণ ঝাংকে মানসিকভাবে দমিয়ে দেয়। কিন্তু তিনি পরিবারকে বিষয়টি বুঝতে দিতে চাননি। তাই সবকিছু গুছিয়ে নিয়ে একাই রওনা দেন সাংহাইয়ের পথে। বড় শহরে গিয়ে নতুন করে শুরু করার সিদ্ধান্ত তাঁর জন্য সহজ ছিল না। তবুও লক্ষ্য ছিল যত দ্রুত সম্ভব ঋণ শোধ করা, আবার উঠে দাঁড়ানোর মতো মূলধন জোগাড় করা এবং নিজের জন্য একটি নতুন পথ তৈরি করা।

১৪ ঘণ্টার কর্মদিবস এবং অবিশ্বাস্য পরিশ্রম

সাংহাইয়ের মিনহাং জেলায় উঝং রোডের একটি ডেলিভারি স্টেশনে তিনি কাজ শুরু করেন। সকাল ১০টা ৪০ থেকে রাত ১টা পর্যন্ত বৃষ্টি, ঠান্ডা কিংবা গরম—সব পরিস্থিতিতেই তিনি মাঠে থাকেন ডেলিভারির কাজে। সবার আগে অর্ডার ধরতে এবং দ্রুত ডেলিভারি দিতে তিনি সব সময় ছুটে চলেন। ডেলিভারি স্টেশনের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ইয়ান বলেন, ‘ছেলেটা খুব কম কথা বলে, কিন্তু কাজ করে অবিশ্বাস্য পরিশ্রম দিয়ে। প্রতিদিনই দেখি সে সময় বাঁচাতে দৌড়াচ্ছে।’

কাজের দক্ষতার কারণে সহকর্মীরা তাঁকে ডাকেন ‘অর্ডারের রাজা’ নামে। টানা দীর্ঘ শিফটের পরও তিনি প্রতিদিন ৮ ঘণ্টার বেশি ঘুম নিশ্চিত করেন, যাতে পরদিন আবার পুরো শক্তিতে কাজ করতে পারেন।

কঠোর মিতব্যয়িতা

ঝাংয়ের সঞ্চয়ের সবচেয়ে বড় রহস্য তাঁর মিতব্যয়ী জীবনযাপন। প্রয়োজন ছাড়া তিনি কোনো খরচ করেন না। বাইরে খাওয়া, বিনোদন, ভ্রমণ—কোনো কিছুতেই ব্যয় করেন না তিনি। এমনকি চন্দ্র নববর্ষেও তিনি বাড়ি যান না। তখন শহরে থেকে উচ্চমূল্যের অর্ডার ডেলিভারি করেন। এই কঠোর জীবনযাপন ও পরিশ্রম মিলিয়ে পাঁচ বছরে তাঁর মোট আয় দাঁড়ায় প্রায় ১৪ লাখ ইউয়ান। প্রয়োজনীয় খরচ বাদ দিয়ে সঞ্চয় হয় ১১ লাখ ২০ হাজার ইউয়ান।

ঝাং জানান, তাঁর পরিবার এখনো জানে না যে তিনি ঋণ শোধ করে বড় অঙ্কের সঞ্চয় করেছেন। তিনি বলেন, ‘একবার ব্যর্থ হয়েছি বলে থেমে থাকব না। ভবিষ্যতে আবার ব্যবসা শুরু করার পুঁজি হিসেবেই এ টাকা জমাচ্ছি।’

চীনের তরুণদের নতুন পেশা হিসেবে ডেলিভারি

অর্থনৈতিক ধাক্কা ও চাকরির বাজারের পরিবর্তনের মধ্যে চীনে ডেলিভারি পেশা দ্রুত জনপ্রিয় হচ্ছে। নিয়োগ প্ল্যাটফর্ম ঝাওপিনের এক প্রতিবেদনে দেখা যায়, দেশটিতে ডেলিভারি কর্মীদের মধ্যে কলেজ বা বিশ্ববিদ্যালয় ডিগ্রিধারীর হার দুই বছরে ১২ শতাংশ থেকে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩৮ শতাংশে। আয়ও অনেক অফিসকর্মীর চেয়ে বেশি। বেইজিং বা সাংহাইয়ের মতো বড় শহরে যেখানে সাধারণ একজন অফিসকর্মী মাসে গড়ে আয় করেন ৬ হাজার ইউয়ান, সেখানে ডেলিভারি ড্রাইভারদের গড় আয় মাসে ৭ হাজার ৩৫০ ইউয়ান পর্যন্ত। ব্যস্ত দিনে ঝাংয়ের মতো পরিশ্রমী ডেলিভারি কর্মীরা দিনে হাজার ইউয়ানের বেশি আয় করতে পারেন।

সূত্র: ভিএন এক্সপ্রেস

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

‘মেডিকেলে চান্স না পেয়ে’ ৩৩ হাজার ভোল্ট বিদ্যুতের তারে শুয়ে শিক্ষার্থীর আত্মহত্যা, দাবি স্বজনদের

হাদিকে গুলি: সীমান্তে মানুষ পার করা ফিলিপকে খুঁজছে পুলিশ, তাঁর দুই সহযোগী আটক

খালি হাতে বন্দুকধারীকে ঠেকিয়ে নায়ক বনে যাওয়া কে এই আল-আহমেদ

ড. ইউনূস যদি চান, সারা বাংলাদেশকে কারাগার বানাতে পারেন—আদালতে আনিস আলমগীর

একটা লাশ পড়লে আমরাও কিন্তু লাশ নেব, অত সুশীলতা করে লাভ নেই: মাহফুজ আলম

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

বিমানের ডানায় আটকে গেল প্যারাস্যুট, অলৌকিকভাবে বাঁচলেন স্কাইডাইভার

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ১২ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৯: ৩৯
বিমানটির ডানায় এভাবেই আটকে গিয়েছিলেন স্কাইডাইভার। ছবি: সংগৃহীত
বিমানটির ডানায় এভাবেই আটকে গিয়েছিলেন স্কাইডাইভার। ছবি: সংগৃহীত

অস্ট্রেলিয়ার ফার নর্থ কুইন্সল্যান্ডে গত ২০ সেপ্টেম্বর ঘটে বিস্ময়কর সেই দুর্ঘটনাটি। সেদিন প্রায় ৪ হাজার ৬০০ মিটার উচ্চতায় মৃত্যুর মুখ থেকে ফিরে আসেন এক স্কাইডাইভার। বৃহস্পতিবার (১১ ডিসেম্বর) প্রকাশিত অস্ট্রেলিয়ান ট্রান্সপোর্ট সেফটি ব্যুরোর চূড়ান্ত প্রতিবেদনে ঘটনাটির বিস্তারিত উঠে এসেছে।

এই বিষয়ে যুক্তরাজ্য-ভিত্তিক ইনডিপেনডেন্ট জানিয়েছে, ফার নর্থ কুইন্সল্যান্ডের টুলি এয়ারপোর্টের আকাশে ১৭ জন প্যারাস্যুটার একটি ‘সিক্সটিন-ওয়ে ফরমেশন জাম্পে’ অংশ নিচ্ছিলেন। তাঁদের মধ্যে প্রথমজন যখন বিমান থেকে বের হচ্ছিলেন, ঠিক তখনই তাঁর রিজার্ভ প্যারাস্যুটের হ্যান্ডেলটি বিমানের উইং ফ্ল্যাপে আটকে যায়। এর ফলে মুহূর্তের মধ্যেই রিজার্ভ প্যারাস্যুট খুলে যায় এবং বাতাসের হঠাৎ টানে পেছনের দিকে ছিটকে গিয়ে বিমানের ডানায় ধাক্কা খান এবং আটকে যান ওই স্কাইডাইভার। এতে বিমানের ডানায় ও স্ট্যাবিলাইজারে গুরুতর ক্ষতি হয়।

প্যারাস্যুটের দড়ি স্ট্যাবিলাইজারের চারপাশে পেঁচিয়ে যাওয়ায় স্কাইডাইভার ঝুলন্ত অবস্থায় অচল হয়ে পড়েন। অন্য প্যারাস্যুটারেরা জাম্প সম্পন্ন করলেও দুজন দরজায় দাঁড়িয়ে পরিস্থিতি দেখছিলেন। ঝুলে থাকা প্যারাস্যুটার জীবন বাঁচাতে তাঁর হুক নাইফ বের করে রিজার্ভ প্যারাস্যুটের ১১টি লাইন কেটে নিজেকে মুক্ত করেন। এরপর তিনি মূল প্যারাস্যুট খুলতে সক্ষম হন, যদিও রিজার্ভ প্যারাস্যুটের কিছু লাইন তখনো তাঁকে জড়িয়ে ছিল।

এদিকে পাইলট হঠাৎ বিমানটিকে ওপরের দিকে ঢলে যেতে এবং গতি কমে যেতে দেখে প্রথমে ভেবেছিলেন বিমানটিতে ত্রুটি হয়েছে। পরে তাঁকে জানানো হয়, একজন স্কাইডাইভার বিমানের পেছনে ডানায় ঝুলে আছেন। এ অবস্থায় পাইলট জরুরি ‘মে ডে’ বার্তা পাঠান এবং প্রয়োজনে নিজেও বেরিয়ে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন।

অবশেষে ২,৫০০ ফুট উচ্চতায় এসে পাইলট বুঝতে পারেন, বিমানটি তাঁর নিয়ন্ত্রণেই আছে। ছোট-খাটো আঘাত নিয়ে নিরাপদেই অবতরণ করেন ওই স্কাইডাইভার এবং পাইলটও ক্ষতিগ্রস্ত বিমানটিকে নিরাপদে অবতরণ করাতে সক্ষম হন।

এই ঘটনার পর স্কাইডাইভারদের প্রতি এক সতর্কবার্তায় ‘অস্ট্রেলিয়ান ট্রান্সপোর্ট সেফটি ব্যুরো’ বলেছে—বিমানের দরজার কাছে প্যারাস্যুটের হ্যান্ডেল সম্পর্কে অতিরিক্ত সতর্ক হতে হবে এবং জরুরি অবস্থার জন্য হুক নাইফ অবশ্যই সঙ্গে রাখতে হবে। ব্যুরো আরও জানিয়েছে, বিমানের ওজন ও ভারসাম্য নির্ণয় স্কাইডাইভিং অভিযানের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কারণ অতীতে এসব কারণে প্রাণঘাতী দুর্ঘটনা ঘটেছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

‘মেডিকেলে চান্স না পেয়ে’ ৩৩ হাজার ভোল্ট বিদ্যুতের তারে শুয়ে শিক্ষার্থীর আত্মহত্যা, দাবি স্বজনদের

হাদিকে গুলি: সীমান্তে মানুষ পার করা ফিলিপকে খুঁজছে পুলিশ, তাঁর দুই সহযোগী আটক

খালি হাতে বন্দুকধারীকে ঠেকিয়ে নায়ক বনে যাওয়া কে এই আল-আহমেদ

ড. ইউনূস যদি চান, সারা বাংলাদেশকে কারাগার বানাতে পারেন—আদালতে আনিস আলমগীর

একটা লাশ পড়লে আমরাও কিন্তু লাশ নেব, অত সুশীলতা করে লাভ নেই: মাহফুজ আলম

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত