Ajker Patrika

ইইউতে আইফোনে পর্নো অ্যাপ ইনস্টল করছে ব্যবহারকারীরা, অ্যাপলের উদ্বেগ

অনলাইন ডেস্ক    
ইইউ–তে এখন আইফোনে বিকল্প অ্যাপ স্টোরগুলোর রাখার অনুমতি দিচ্ছে অ্যাপল। ছবি: পিটার আহর্নস্টেড্ট
ইইউ–তে এখন আইফোনে বিকল্প অ্যাপ স্টোরগুলোর রাখার অনুমতি দিচ্ছে অ্যাপল। ছবি: পিটার আহর্নস্টেড্ট

ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) নতুন ডিজিটাল নীতির পরিপ্রেক্ষিতে আইফোনে প্রথম পর্নোগ্রাফি অ্যাপের উপস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে অ্যাপল। গত সোমবার এক বিবৃতিতে এই উদ্বেগ প্রকাশ করে কোম্পানিটি। বিবৃতিতে বলা হয়, এ ধরনের বিষয় ইউরোপীয় বাজারে গ্রাহকদের আস্থা ও বিশ্বাসের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে।

২০০৮ সালে আইফোনে অ্যাপ স্টোর চালু করার পর থেকে ডিভাইসটিতে অ্যাপ ডাউনলোডের বিষয়টি কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ করেছে অ্যাপল। ২০১০ সালে সাবেক সিইও স্টিভ জবস বলেছিলেন, ‘আইফোন থেকে পর্নোগ্রাফি দূরে রাখা আমাদের নৈতিক দায়িত্ব’ এবং এ বিষয়ে কড়া অবস্থান নেওয়াই অ্যাপলের প্রধান উদ্দেশ্য ছিল।

তবে, ২০২২ সালে ইউরোপীয় ইউনিয়নের ডিজিটাল মার্কেটস অ্যাক্ট (ডিএমএ) চালুর পর অ্যাপলের এই নিয়ন্ত্রণে পরিবর্তন আসে, যার ফলে এখন বিকল্প অ্যাপ স্টোরগুলো রাখার অনুমতি দিতে হচ্ছে কোম্পানিটিকে। এই নতুন নিয়মের আওতায় ‘অ্যাল্টস্টোর’ নামক একটি স্টোর থেকে ‘হট টাব’ নামের একটি পর্নোগ্রাফি অ্যাপ আইফোনে ডাউনলোড করা যাচ্ছে। এই অ্যাপ নিজেকে ‘একটি ব্যক্তিগত, সুরক্ষিত এবং মার্জিত উপায়ে পর্নোগ্রাফি কনটেন্ট ব্রাউজ করার উপায়’ হিসেবে উল্লেখ করে।

বিবৃতিতে অ্যাপল জানায়, ‘আমরা এ ধরনের অ্যাপ ইউরোপীয় ব্যবহারকারীদের জন্য সুরক্ষা ঝুঁকি, বিশেষত শিশুদের জন্য বিপদ সৃষ্টির ব্যাপারে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করছি। এই অ্যাপের মতো অন্যান্য অ্যাপের উপস্থিতি আমাদের ইকোসিস্টেমে গ্রাহকদের আস্থা নষ্ট করবে।’

এর আগে অ্যাপলের বিরুদ্ধে অ্যান্টি ট্রাস্ট অভিযোগ দায়ের করেছে এপিক গেমস, যার মাধ্যমে তারা অ্যাপলের ব্যবসায়িক শর্তাবলি এবং একচেটিয়া শক্তির বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলেছে।

অ্যাল্টস্টোর জানায় যে, তারা ‘ফোর্টনাইট’ ভিডিও গেম নির্মাতা এপিক গেমসের সমর্থন পেয়েছে। এই অর্থ অ্যাপলের ফি পরিশোধে ব্যবহার করেছে অ্যাল্টস্টোর। কারণ বিকল্প অ্যাপ স্টোরগুলো থেকে ফি নেয় অ্যাপল।

অ্যাল্টস্টোর দাবি করেছে, তারা ‘হট টাব’ অ্যাপটি অ্যাপলের দ্বারা নোটারাইজড (প্রমাণিত) করেছে, যার ফলে এটি বিশ্বের প্রথম ‘অ্যাপল অনুমোদিত পর্নোগ্রাফি অ্যাপ’ হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে।

উল্লেখ্য, অ্যাপল যখন কোনো অ্যাপকে ‘নোটারাইজ’ করে, তখন তারা মূলত সেই অ্যাপের নিরাপত্তা ও সাইবার নিরাপত্তা ঝুঁকি যাচাই করে। যেমন: কোনো ম্যালওয়্যার (ভাইরাস বা ক্ষতিকর সফটওয়্যার) থাকছে কি না, সেগুলো পরীক্ষা করা হয়।

তবে, এ ব্যাপারে একেবারে ভিন্ন মত প্রকাশ করে অ্যাপল বলেছে, ‘আমরা এই অ্যাপের অনুমোদন দিইনি এবং কখনোই এটি আমাদের অ্যাপ স্টোরে থাকতে দিতাম না। বর্তমানে ইউরোপীয় কমিশনের নির্দেশের কারণে আমরা এটি আইফোনে রাখার অনুমতি দিতে বাধ্য।’

এক পোস্টে এপিক গেমসের সিইও টিম সুইনি বলেন, তার সংস্থা ডিজিটাল মার্কেটস অ্যাক্টের (ডিএমএ) মতো আইনগুলোর সমর্থন করে। কারণ ‘যখন অ্যাপলকে প্রতিযোগী অ্যাপ এবং স্টোরের নিয়ন্ত্রণের সুযোগ পায়, তখন তারা ওই ক্ষমতার অপব্যবহার করে প্রতিযোগিতাকে ক্ষতিগ্রস্ত করে।

তিনি আরও যোগ করেন, এপিক গেমসের নিজস্ব অ্যাপ স্টোর রয়েছে, যা গত বছর ইউরোপীয় ইউনিয়নে চালু হয়েছে। তবে সেখানে ‘হট টাব’ অ্যাপটি নেই এবং কখনোই পর্নোগ্রাফি সম্পর্কিত কোনো অ্যাপ সেখানে রাখা হয়নি।

তথ্যসূত্র: রয়টার্স

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত