Ajker Patrika
সাক্ষাৎকার

৫-১০ হাজার মানুষের কর্মসংস্থান তৈরি করব

৫-১০ হাজার মানুষের কর্মসংস্থান তৈরি করব

বাংলাদেশ ক্রিকেটের সবচেয়ে বড় বিজ্ঞাপন সাকিব আল হাসান। এই মুহূর্তে বাঁহাতি অলরাউন্ডার ছুটি কাটাতে আছেন যুক্তরাষ্ট্রে। যুক্তরাষ্ট্রে পরিবারের কাছে যাওয়ার আগে সাকিব সময় দিলেন আজকের পত্রিকাকে। দুই দিন আগে রানা আব্বাসকে দেওয়া দীর্ঘ সাক্ষাৎকারে বাঁহাতি অলরাউন্ডার বললেন খেলা ও খেলার বাইরের অনেক কিছুই।

রানা আব্বাস
আপডেট : ১২ নভেম্বর ২০২৪, ১১: ৫৬

প্রশ্ন: পারিবারিক কারণে ছুটি নেওয়ায় বোর্ডের অনেকে বলেছেন, আপনার জীবনটা একটু কঠিন হয়ে গেছে। বাংলাদেশও এখন আপনার কাছে বিদেশ! দূরে থাকা পরিবার আর খেলার মধ্যে ভারসাম্যটা কীভাবে রাখছেন?

সাকিব আল হাসান: এখনো পর্যন্ত (ভারসাম্য) রাখছি। যেহেতু বছরটা শেষ হয়ে যাচ্ছে, আগামী বছরে বেশ কিছু বড় পরিকল্পনা আছে। সেগুলো যদি ঠিকঠাক বাস্তবায়ন করতে পারি, তাহলে সময়টা হয়তো ঠিকঠাক ম্যানেজ করা সম্ভব হবে।

প্রশ্ন: এটার কারণে কি এখন বেছে বেছে খেলার ভাবনা কাজ করছে?

সাকিব: আমি যে অবস্থায় আছি, বেশি দিন টেস্ট ক্রিকেট ধরে রাখা আমার জন্য কঠিন হবে। এখন আমাকে সিদ্ধান্ত নিতে হবে যে কোন সংস্করণ আমি খেলতে চাই, কোন সংস্করণ খেলতে চাই না। আর টেস্ট ক্রিকেটে যেহেতু সময়টা বেশি যায়, এটাই এক সংস্করণ, যেটা নিয়ে আমাকে খুব ভালোভাবে চিন্তা করতে হবে। বোর্ডের সঙ্গে আলোচনা করে যদি সব ঠিকঠাক থাকে, তাহলে টেস্ট থেকে আপাতত নিজেকে সরিয়ে রাখতে হবে। আর ওয়ানডেতে যদি দেখি পয়েন্টের কোনো ব্যাপার নেই (আইসিসি ওয়ানডে সুপার লিগ), সেই সিরিজ যদি না খেলা লাগে, খেললাম না। আর যেগুলো পয়েন্টের বিষয় আছে, সেগুলো খেললাম। পরিকল্পনাগুলো নিয়ে বোর্ডের সঙ্গে কথা বলতে হবে।

প্রশ্ন: ক্যারিয়ারকে দীর্ঘ করতেই নিশ্চয়ই এই পরিকল্পনা?

সাকিব: ধরুন, ২০২২ বিশ্বকাপের পরের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ ২০২৪ সালে। সেটা খেলতে পারব কি পারব না, তা জানি না। তখন যদি মনে হয় আরেকটা ফরম্যাট পরিবর্তন করে টেস্ট খেলব, সেটাও করতে পারি। এখন বেছে বেছে খেলতে হবে, এটাই আমার বাস্তবতা। 

প্রশ্ন: সামনে নিউজিল্যান্ড সিরিজ। রেকর্ড-পরিসংখ্যানে চোখ রাখলে বলতে হয়, এই দলটা আপনার প্রিয় প্রতিপক্ষ! যে দলের বিপক্ষে টেস্টে আপনার ব্যাটিং গড় ৭৩.৮৫। সেই প্রিয় প্রতিপক্ষের সঙ্গে সিরিজ হাতছাড়া হলে কতটা আফসোস হয়?

সাকিব: আফসোস তো হয়ই। নিউজিল্যান্ড আর ওয়েস্ট ইন্ডিজ—দুটি জায়গা, যেখানে আমি সব সময়ই খেলতে চাই। এ দিয়ে তিনবার (নিউজিল্যান্ড সফর) হাতছাড়া করলাম। একবার বাচ্চা হওয়ার বিষয় ছিল (মার্চ, ২০২১)। একবার বিপিএল (২০১৯) ফাইনালে চোটে পড়েছিলাম। এবার তো ছুটি নিলাম। এটা আমার জন্য অবশ্যই একটু দুঃখজনক, যেখানে আমি সব সময়ই খেলতে যেতে চাই (নিউজিল্যান্ডে)। আমার পাঁচটা টেস্ট সেঞ্চুরির দুটিই ওখানে। আমি ওখানে ব্যাটিং খুব উপভোগ করি। পৃথিবীর যে কয়েকটি জায়গায় ভালো ব্যাটিংয়ের উইকেট মেলে, নিউজিল্যান্ড তার একটা। সেদিক দিয়ে অবশ্যই আমি খুব মিস করি। আর জায়গাটাও আমি অসম্ভব পছন্দ করি ঘুরতে। সব দিক দিয়েই মিস করি। কিন্তু এখন এটাই বাস্তবতা। 

প্রশ্ন: কদিন আগে টেস্টে দ্রুততম ২০০ উইকেট আর ৪০০০ রানের রেকর্ড হলো আপনার। ৫৯ টেস্টেই পরিসংখ্যানটা এমন জায়গায় চলে গেছে, যদি আরও বেশি টেস্ট খেলতে পারতেন, কোনো সংশয় ছাড়াই আপনাকে সর্বকালের সেরা অলরাউন্ডার বলা যেত! রেকর্ড-পরিসংখ্যান নিয়ে আপনার ভাবনটা কী? এসব কতটা ভাবায় আপনাকে?

সাকিব: যেটা বললেন, হ্যাঁ, আরও যদি খেলতে পারতাম, এমন পারফরম্যান্স রাখতে পারতাম, আরও অনেক কিছু করার সুযোগ হতো। ক্যারিয়ারটা আরও সুন্দর দেখাত। সেটা চিন্তা করলে আফসোস করতেই পারি। কিন্তু এগুলো নিয়ে কখনো ভাবিনি যে ক্যারিয়ার শেষে আমার রান কত, উইকেট কত হবে। এখন কত আছে, কোথায় যাব—এসব আসলে কখনো আমার চিন্তার ভেতরে ছিল না। এমনকি ওয়ানডে, টি-টোয়েন্টিতে কত উইকেট পাব, এসব কোনো দিন টার্গেটে ছিল না যে ব্যক্তিগতভাবে এটা, ওটা করতে চাই। এখনো জানি না আমার টেস্ট, ওয়ানডেতে রান বা উইকেট কত।   

প্রশ্ন: এটা নতুন করে মনে করিয়ে দেওয়ার কিছু নেই যে একজন খেলোয়াড় কতটা গ্রেট, সেটি বিচার করা হয় টেস্ট দিয়ে। অথচ সেই সংস্করণ থেকে নিজেকে সরিয়ে রাখার ভাবনা কাজ করছে আপনার মনে। 

সাকিব: সত্যি কথা, আমি তিন সংস্করণই খেলতে চাই। কিন্তু এখন যে পরিস্থিতি দাঁড়িয়েছে, আমাকে কিছু সময় বের করতে হবে। আর এই বয়সে একজন খেলোয়াড়ের পক্ষে তিন সংস্করণ সমান তালে খেলাটাও কঠিন। বিশ্বে এখন যারা খেলছে, তারাও অনেক বিশ্রাম নিয়ে খেলছে। রোটেশন পলিসিতে যাচ্ছে। আমাকেও ওদিকেই যেতে হবে। আমার আর কোনো অপশন নেই। এটা নিয়ে চিন্তা করারও জায়গাটা নেই। 

প্রশ্ন: বিশ্বের সব দলেই সিনিয়র ক্রিকেটারদের আলাদা প্রভাব বা গুরুত্ব থাকে। কিন্তু বাংলাদেশ দলে একটু বেশিই সিনিয়রকেন্দ্রিক দল মনে হয়। যখন কোনো সিরিজে সিনিয়রদের বেশির ভাগ থাকেন না, দলকে অনেক এলোমেলো দেখায়। এটা কি পাইপলাইন সমৃদ্ধ না থাকার কারণে নাকি তরুণ খেলোয়াড়দের সামর্থ্যেই ঘাটতি?

সাকিব: আমার কাছে মনে হয়, আমরা ওদের (তরুণ ক্রিকেটার) সেভাবে প্রমোটই করিনি যে ওরা নিজেদের বড় হিসেবে চিন্তা করবে। আমরা কখনোই ওদের সেই দামটাই দিতে পারিনি, যেখানে ওরা নিজেদের নিয়ে ভাববে যে না আমরাও অনেক কিছু করতে পারব। আমাদের পাঁচজনের দিকে এত বেশি মনোযোগ দিয়েছে সবাই—সেটা সংবাদমাধ্যম বলুন, বোর্ড বলুন কিংবা দর্শক; ওরা (সিনিয়রদের বাইরে) সেভাবে চোখেই পড়েনি। ওরা সেভাবে ফিলই করেনি যে আমিও একজন এই দলের অংশ। হ্যাঁ, দু-এক সময় হয়েছে। কিন্তু যদি সামগ্রিকভাবে দেখেন, সব সময়ই এই কথা। এখনো চলছে। এটা কি সারা জীবন চলতে পারে? শচীন, গাঙ্গুলী, লক্ষ্মণ, দ্রাবিড়, কুম্বলে—এঁরা ভারতীয় দলে একসঙ্গে খেলেছে না? এঁরা যখন বিদায় নিয়েছে, তখন কি ওরা বলেছে, হায়! হায়! আমরা এখন কোথায়? এই পাঁচজন নেই, আমরা তো শেষ! ওরা পরিকল্পনা করেছে, নতুন খেলোয়াড়দের তুলে এনেছে। শূন্যস্থান পূরণ করেছে। হ্যাঁ, বলতে পারেন, নতুন যারা এসেছে তারা তো সেভাবে ভালো করতে পারছে না। আমরা তো তাদের ভালো করার সুযোগই করে দিই না। যখন তারা ওই সুযোগটা পাবে, অবশ্যই তারা ভালো করবে। কথার কথা, আমরা যখন জিম্বাবুয়ে বা শক্তিমত্তায় কিছুটা পিছিয়ে থাকা দলের সঙ্গে খেলি—ভারত এমন অনেক সিরিজ আছে ওদের দ্বিতীয় সারির দল পাঠিয়ে দিয়েছে। ওরা ওই ভয় করেনি যে হারলে সব শেষ হয়ে যাবে। কারণ, ওরা জানে যে প্রক্রিয়াটা কী। শুধুই শিখিয়েছে আর শিখিয়েছে। এমন ১৫ জনের দল পাঠিয়ে দিন, ওরা যখন নেতৃত্ব দেওয়া শিখবে, ওদের ভালো করার সুযোগ থাকবে। কারণ, ওরা তো লিডারশিপ নিতেই পারে না যখন আমরা (সিনিয়ররা) থাকি। আমাদের যেমন ভুল, আমাদের সিস্টেমেরও গলদ। সব সময়ই একটা ছায়ার ভেতর থাকে ওরা। 

প্রশ্ন: লিটন-সৌম্য-সাব্বিরদের মতো প্রতিভাবান ক্রিকেটার বাংলাদেশ দল পেয়েছে, তাঁদের যথেষ্ট সুযোগও দেওয়া হয়েছে। তবু তাঁরা এখনো আস্থার পুরো প্রতিদান দিতে পারেনি। এটার ব্যাখ্যা কী হতে পারে?

সাকিব: হ্যাঁ, তা (প্রতিভাবান ক্রিকেটার) পেয়েছি। ওরা তো কখনো কখনো করে দেখিয়েছে। দেখালেও হয়েছে কী, মনোযোগটা শুধু ওই সময়টাতেই তাদের দিকে দিয়েছি। আমরা (সিনিয়ররা) ভালো-খারাপ খেলি, সব মনোযোগ আমাদের পাঁচজনের ওপরই থেকেছে। আমরা ওই সুযোগটাই ওদের করে দিইনি। বলব না, ওদের কোনো দোষ নেই। ওদেরও অনেক কিছু করার সুযোগ ছিল, দায়িত্ব নেওয়ার জায়গায় আসতে পারত। এমনকি দেখেন প্রিমিয়ার লিগের দলগুলোতেও এই পাঁচজনই পাঁচ দলের অধিনায়ক হবে। যদি এখানে ওই পাঁচজনের পর নতুন পাঁচজন অধিনায়ক হতো, তাদের সঙ্গে নতুন পাঁচ সহ-অধিনায়ক—তাহলে দলটা তৈরি হওয়ার সুযোগ পেত। কোনো সিস্টেমেই যদি তারা না আসতে পারে…। এই যে বিপিএল আসছে, এখানেও ওই পাঁচজনকে (সিনিয়র) নিয়েই সব প্রমোশন। গত কিছুদিনে ধারাবাহিক ভালো খেলছে তাকে ‘এ’ ক্যাটাগরিতে দেওয়া যেত না? দুটো খেলোয়াড়কে যদি দিতেন, তাহলে তারা চিন্তা করত, নাহ, আমিও তাদের মতো একজন। এই চিন্তাগুলো ওদের ভেতর যতক্ষণ প্রবাহিত না করতে পারি, ওরা কীভাবে বড় চিন্তা করবে? 

প্রশ্ন: গত কদিনে সিনিয়র ক্রিকেটারদের সঙ্গে টিম ম্যানেজমেন্টের একধরনের দূরত্বের খবর বেশ এসেছে। এটার কারণ কী মনে হয়?

সাকিব: হয়তো সবার জায়গা থেকে যার যার মতো কথা বলছে। কিংবা খবর আসছে। কেন, ঠিক বলতে পারব না। তবে আমার কাছে আসলে কখনো সমস্যা মনে হয়নি। শুধু এই ম্যানেজমেন্টের সঙ্গেই নয়, কোনো ম্যানেজমেন্টের সঙ্গেই নয়। কেউ বলতে পারবে না আমার সঙ্গে কোনো সমস্যা হয়েছে। এখনো পর্যন্ত কোনো কোচিং স্টাফের সঙ্গে নয়। 

প্রশ্ন: যখন এই দূরত্বের খবর আসে, তখন বিসিবির কর্মকর্তারা কিংবা বোর্ডের বাইরেও অনেকে মনে করেন, বাংলাদেশ দলে আসলে কড়া কোচ দরকার। এটার সঙ্গে আপনি কি একমত?

সাকিব: (অট্ট হাসি) না, সম্পূর্ণ দ্বিমত পোষণ করি। যদি দেখেন স্টিভ রোডসের চেয়ে ভালো রেকর্ড কোনো কোচের নেই বাংলাদেশ ক্রিকেটে। তিনি কি কড়া হেডমাস্টার ছিলেন? তিনি তো আদর করেও খেলোয়াড়দের কাছ থেকে সেরাটা বের করে নিয়েছেন। ওঁর সময়ে বাংলাদেশ ভালো ফল করেছে। রেকর্ড দেখলে ওর চেয়ে ভালো রেকর্ড আর কোনো কোচের নেই। তাঁর জয়ের শতাংশ মনে হয় ৫৩ বা ৫৫; যেখানে হাথুরুসিংহের ৪০-৪১, রাসেল ডমিঙ্গোর ৪৩ বা এমন কিছু। অথচ সে (স্টিভ রোডস) একদিন জোরেও কথা বলেনি। খেলোয়াড়েরা তাঁর ওর ওপর রেগে আছে, তবু তিনি খেলোয়াড়কে আদর করছেন। কীভাবে এটার সঙ্গে একমত হই? 

প্রশ্ন: অনেক সময় এমন শোনা যায়, খেলোয়াড়েরা কথা শুনছেন না…

সাকিব: কে কথা শোনে না, এটা বলুন তো? 

প্রশ্ন: বিসিবির কেন্দ্রীয় চুক্তিতে থাকায় শোনার একটা বাধ্যবাধকতা আছে নিশ্চয়ই

সাকিব: শুনতে বাধ্য ঠিক নয়।  ধরুন, খেলোয়াড় ও কোচের কথা হচ্ছে। দুজনের দুই মত থাকতে পারে। অনেক সময় দুজনের দ্বিমত থাকে। এটার মানে এই নয় যে তাদের মধ্যে ঝগড়া হচ্ছে। দ্বিমত হওয়ার পরও যখন একটা সিদ্ধান্ত হয়, তখন সবাই সেটা মানে। তার মানে এই নয় যে সব সময়ই কোচের কথা শোনে, সব সময়ই খেলোয়াড়ের কথা শোনে। দুটির মিশ্রণও হয়। বিষয়টা হচ্ছে এটাই। এটার মানে এই নয় যে ঝগড়া হচ্ছে। সাধারণত খারাপ কিছু পেলে আমাদের কেউ না কেউ ভিকটিম হয়। হতে পারে এসব সেটারই অংশ। আর বাস্তবতাও অনেক সময় আমরা ফেস করতে চাই না। তখন ব্লেম গেম হয়। দোষ আপনি তখনই দেবেন, যখন আপনার স্বার্থে আঘাত লাগে। যারাই ব্লেম দিচ্ছে, তাদের স্বার্থে কোথাও কখনো আঘাত লেগেছে। 

প্রশ্ন: বাংলাদেশ দলে চারজন সিনিয়র ক্রিকেটার আছেন, যাঁরা ১৫–১৬ বছর একসঙ্গে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলছেন, সে অনুযায়ী জাতীয় দলের বড় কোনো সাফল্য নেই বড় মঞ্চে।

সাকিব: ঠিক, তেমন বড় কোনো সাফল্য নেই। ব্যক্তিগত কিছু বড় অর্জন অবশ্য আছে।  

প্রশ্ন: তিনটা এশিয়া কাপের ফাইনাল খেলেছেন। তবু একটি জায়গায় গিয়ে বাংলাদেশ আটকে গেছে। কারণ কী?

সাকিব: এটা বলা আসলে কঠিন। আমরা দ্বিপক্ষীয় সিরিজ ভালো খেলি, অনেক পরিকল্পনা করি। কিন্তু যখন বড় টুর্নামেন্ট বা ইভেন্টে খেলতে যাই, কখনো প্রত্যাশা অনুযায়ী ভালো করতে পারিনি। চাপ একটা কারণ হতে পারে। মেন্টাল ব্লক আছে যে কখনো পারিনি। এটাও একটা কারণ হতে পারে। তবে প্রকৃত কারণ বের করা আমার পক্ষে কঠিন। 

প্রশ্ন: খেলার বাইরের প্রসঙ্গ, কদিন আগে একটা প্রতিবেদনে পড়ছিলাম, খেলা ছাড়ার ১৩ বছর পরও সৌরভ গাঙ্গুলী ৩৩টা পণ্যের দূত। আপনার ক্ষেত্রে সংখ্যাটা কত? সৌরভকে টপকে যাওয়া সম্ভব?

সাকিব: (হাসি) বাংলাদেশের বাজার অতটা বড় হয়নি। আমাদের ১৮ কোটি মানুষের বাজার। আর ভারতের ১৫০ কোটি মানুষের বাজার। বুঝতেই পারছেন, ওদের বাজার আমাদের তুলনায় কত বড়। একেক রাজ্যেই বিভিন্ন ধরনের পণ্য আছে। কলকাতায় কত ব্র্যান্ড। মুম্বাইভিত্তিক কত ব্র্যান্ড। আর পুরো ভারতে তো আছেই। আসলে ভারতের কোনো কিছুর সঙ্গে তুলনা করা বোকামি। 

প্রশ্ন: কিন্তু বাংলাদেশে পণ্যের দূতিয়ালি বা বিজ্ঞাপনের বাজারে তো আপনার দাপুটে বিচরণ।

সাকিব: আলহামদুলিল্লাহ। এটা মানুষের ভালোবাসা। আমাকে আলাদাভাবে দেখা, সেটা একটা কারণ হতে পারে। 

প্রশ্ন: ইদানীং আপনার ব্যবসায়ী পরিচয়টা বেশ সামনে আছে। ক্রিকেট আর ব্যবসা, দুটিতে সমান মনোযোগ ধরে রাখা কঠিন হয় না?

সাকিব: নিজেকে ব্যবসায়ী হিসেবে ভাবি না। ক্রিকেট ঠিক রেখে একটা ভালো জিনিস যদি করা যায়, সেটা করতে পারলে আমার ভালো লাগবে। আরেকটা জিনিস হচ্ছে, আমার একটা লক্ষ্য আছে। আমি মনে করি সেটা আমার পূরণ করা উচিত। কিংবা মনে হচ্ছে, আমি কখনো না কখনো করতে পারব। সে কারণেই কিছু ব্যবসা শুরু করা। যখন খেলোয়াড়ি জীবন শেষ হয়ে যাবে, এসব আরও বড় আকারে সুন্দর করে করতে পারব। যেখানে অনেক মানুষের কর্মসংস্থান হবে। এটা আমি ফিল করি যে এই কাজটা আমার পক্ষে করা সম্ভব। পাঁচ-দশ হাজার মানুষের কর্মসংস্থান তৈরি করব। সেই কারণেই আসলে এসব শুরু করা। কথার কথা, যদি কোনোভাবে পাঁচ-দশ হাজার মানুষের কর্মসংস্থান করতে পারি তার মানে আপনি পাঁচ-দশ হাজার মানুষের পরিবারের দেখাশোনা করছেন। ওটা অনেক বড় ব্যাপার। দেশের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখা, সমাজে বেকারত্ব দূর করা, ওই সব পরিবারের সদস্যদের ব্যক্তিগত জীবনযাপনে উন্নত করার সুযোগ থাকে। এটা যদি করতে পারি, এর চেয়ে ভালো কাজ মনে হয় না আর আছে। এই উদ্দেশ্যেই ব্যবসাগুলো শুরু করা। জানি না কতটা সফল হব। এগুলো যদি নাও পারি ব্যক্তিগতভাবে নিজে ভালোভাবে চলতে-ফিরতে পারব। তবে আমার মনে হয়, সমাজকে কিছু দেওয়ার মতো অবস্থানে আমি আছি। বাংলাদেশকে কিছু দেওয়ার মতো অবস্থানে আমি আছি। সেটা শুধু ক্রিকেটের মাঠে নয়। যদি সুযোগ থাকে কেন আমি দেব না? যেহেতু আছে, চেষ্টা করছি। দেখা যাক কতটা সফল হতে পারি।

প্রশ্ন: খেলা ছাড়ার পর পুরোপুরি ব্যবসাতেই চলে যাবেন?

সাকিব: জানি না ভবিষ্যতে কী করব বা কী হবে। জীবন নিয়ে অত চিন্তা করি না। তবে এসব করতে পারি, খুব ভালো। না করতে পারলে খারাপ লাগবে এই ভেবে যে ইচ্ছেটা ছিল পূরণ করতে পারিনি। তবে করতে পারলে খুব ভালো লাগবে যে ভালো কাজের সঙ্গে আমি থাকতে পারছি।

প্রশ্ন: ভারত ও পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ডের প্রধান হয়েছেন দুজন ক্রিকেট কিংবদন্তি। আগামী এক দশকে বিসিবিতে এমনটা কি দেখার সুযোগ আছে?

সাকিব: হতেই পারে। অসম্ভব কিছুই নয়। তবে যে প্রক্রিয়ায় আমাদের (ক্রিকেট প্রশাসক) হয়, একজন খেলোয়াড়ের (যিনি এখনো খেলছেন) পক্ষে এটা কঠিন। ধরুন, আমাদের বোর্ডে ১০০-২০০ কাউন্সিলর আছে। একজন খেলোয়াড়ের পক্ষে এই কাউন্সিলরদের রাজি করানো, ওদের সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে ভোট আদায় করা কঠিন। এত সহজ না। যে খেলছে না, সংগঠক বা রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত; তাদের জন্য হয়তো একজন খেলোয়াড়ের তুলনায় একটু সহজ। আরেকটা হয়, যদি খেলোয়াড় রাজনীতির সঙ্গে জড়িয়ে যায় বা সাংগঠনিকভাবে কোনোভাবে জড়িয়ে থাকে। তখন তার পক্ষে এসব জানা-বোঝা একটু সহজ হয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এনসিপি-জামায়াত জোটে যুক্ত হচ্ছে আরেকটি দল, আসন বণ্টন ঘোষণা রাতেই

৮ মিনিট দেরি, মনোনয়নপত্র জমা দিতে না পেরে অঝোরে কাঁদলেন এবি পার্টির প্রার্থী প্রত্যাশী

নির্বাচন না করার ঘোষণা দিলেন আনোয়ার হোসেন মঞ্জু

৪৭ আসনে মনোনয়নপত্র জমা দিল এনসিপি

জেপির মঞ্জুর পর নির্বাচন বর্জন করলেন রুহুল আমিন হাওলাদার ও ফিরোজ রশীদ

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

২০২৬ বিশ্বকাপ দেখতে রেকর্ড ১৫ কোটি টিকিটের আবেদন

ক্রীড়া ডেস্ক    
৪৮ দল নিয়ে আগামী বছর হবে ফুটবল বিশ্বকাপ। ছবি: সংগৃহীত
৪৮ দল নিয়ে আগামী বছর হবে ফুটবল বিশ্বকাপ। ছবি: সংগৃহীত

ছয় মাস পরে ফুটবল বিশ্বকাপ শুরু হলেও এখনই টের পাওয়া যাচ্ছে ‘দ্য গ্রেটেস্ট শো অন আর্থের’ আমেজ। এরই মধ্যে ১৫ কোটিরও বেশি টিকিটের আবেদন জমা পড়েছে। ২৩তম ফুটবল বিশ্বকাপ দেখতে ২০০-এর বেশি দেশের ভক্ত-সমর্থকেরা আবেদন করেছেন।

ফিফা আজ এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিদে জানিয়েছে ২০২৬ ফুটবল বিশ্বকাপের টিকিটের চাহিদার কথা। দ্বৈবচয়ন ড্র টিকিটিং ধাপে অর্ধেক সময় পার হওয়ার আগেই হয়েছে নতুন রেকর্ড। ক্রেডিট কার্ড নম্বরের ভিত্তিতে যাচাইবাছাই করার পর জানা গেছে, ২০২৬ বিশ্বকাপের টিকিটের চাহিদা প্রাপ্যতার চেয়ে ৩০ গুণেরও বেশি। ১৯৩০ সাল থেকে এখন পর্যন্ত ২২ বিশ্বকাপের ৯৬৪ ম্যাচে যে পরিমাণ দর্শক মাঠে বসে খেলা উপভোগ করেছেন, সেই সংখ্যার চেয়েও ২০২৬ বিশ্বকাপে আবেদনকৃত টিকিটের সংখ্যা ৩.৪ গুণ বেশি।

২০২৫ সালের ১১ ডিসেম্বর শুরু হয়েছিল র‍্যান্ডম সিলেকশন টিকিটিংয়ের প্রথম ধাপ। ১৮ দিনের মধ্যে ১৫ কোটিরও বেশি আবেদন জমা পড়ায় ২০২৬ ফুটবল বিশ্বকাপ আগেরবারের সব কিছু ছাড়িয়ে যাবে বলে মনে করেন ফিফা প্রেসিডেন্ট জিয়ান্নি ইনফান্তিনো। ফিফার পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে ইনফান্তিনো বলেন, ‘২০২৬ ফুটবল বিশ্বকাপ হতে যাচ্ছে বিশ্বের সবচেয়ে বড় আয়োজন। মাত্র প্রথম ১৫ দিনেই ১৫ কোটির বেশি টিকিটের আবেদন এসেছে। তাতে করে এই আসরে ৩০ গুণ বেশি ওভারসাবস্ক্রাইবড হয়েছে। ২০০–এর বেশি দেশের সমর্থকদের আগ্রহ দেখেই বোঝা যাচ্ছে।’

দ্বৈবচয়ন ড্র টিকিটিংয়ের ধাপটি ২০২৬ সালের ১৩ জানুয়ারি পর্যন্ত চালু থাকবে। সমর্থকেরা ড্র–তে অংশ নিতে এবং বিস্তারিত তথ্য জানতে ফিফা ডট কম টিকিটস সাইটে যেতে পারেন। এই ধাপ শেষ হওয়ার পর আরেক ড্র অনুষ্ঠিত হবে, যেখানে সবাই সমান সুযোগ পাবেন। যাঁদের নাম আসবে না, তাঁরা পরবর্তী বিক্রয় ধাপগুলোতে অতিরিক্ত টিকিট ছাড়ার সময় আবার আবেদন করার সুযোগ থাকবে।

এই বিক্রয় ধাপজুড়ে টিকিটের দাম অপরিবর্তিত থাকবে। ফাইনালসহ সব ম্যাচের টিকিটের সর্বনিম্ন দাম ধরা হয়েছে ৬০ ডলার। বাংলাদেশি মুদ্রায় সেটা ৭৩৪২ টাকা। যাদের আগে থেকেই আইডি রয়েছে, তারা সেই আইডি ব্যবহার করে লগইন করে দ্বৈবচয়ন ড্রতে অংশ নিতে পারবেন। যাঁদের ফিফা আইডি নেই, তাদের ফিফা ডট কম টিকিটসে অ্যাকাউন্ট খুলতে হবে।

যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা ও মেক্সিকোতে আগামী বছরের ১১ জুন থেকে ১৯ জুলাই পর্যন্ত হবে ২৩তম ফুটবল বিশ্বকাপ। প্রথমবারের মতো এই বিশ্বকাপেই অংশ নিচ্ছে ৪৮ দল। মার্কিন মুলুকে হতে যাওয়া ফুটবল বিশ্বকাপ নতুন ইতিহাস গড়তে যাচ্ছে বলে আশা ইনফান্তিনোর, ‘ভক্ত-সমর্থকদের এমন সাড়া প্রমাণ করে বিশ্বজুড়ে ফুটবলের কী জনপ্রিয়তা রয়েছে।’ ২০২৬ ফুটবল বিশ্বকাপে চ্যাম্পিয়ন দল পাবে ৬১০ কোটি ৬১ লাখ টাকা। রানার্সআপ দল পাবে ৪০৩ কোটি টাকা।গ্রুপ পর্বে বাদ পড়া দলগুলো পাবে ১১০ কোটি টাকা।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এনসিপি-জামায়াত জোটে যুক্ত হচ্ছে আরেকটি দল, আসন বণ্টন ঘোষণা রাতেই

৮ মিনিট দেরি, মনোনয়নপত্র জমা দিতে না পেরে অঝোরে কাঁদলেন এবি পার্টির প্রার্থী প্রত্যাশী

নির্বাচন না করার ঘোষণা দিলেন আনোয়ার হোসেন মঞ্জু

৪৭ আসনে মনোনয়নপত্র জমা দিল এনসিপি

জেপির মঞ্জুর পর নির্বাচন বর্জন করলেন রুহুল আমিন হাওলাদার ও ফিরোজ রশীদ

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

নোয়াখালীকে হ্যাটট্রিক হারের লজ্জা দিল রাজশাহী

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ২৯ ডিসেম্বর ২০২৫, ২২: ৪৮
নোয়াখালী এক্সপ্রেসকে ৬ উইকেটে হারিয়েছে রাজশাহী ওয়ারিয়র্স। ছবি: ফেসবুক
নোয়াখালী এক্সপ্রেসকে ৬ উইকেটে হারিয়েছে রাজশাহী ওয়ারিয়র্স। ছবি: ফেসবুক

প্রথমবারের মতো বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগ (বিপিএল) খেলতে এসে রীতিমতো চোখে সর্ষেফুল দেখছে নোয়াখালী এক্সপ্রেস। এখনো পর্যন্ত টুর্নামেন্টে জয়ের খাতাই খুলতে পারেনি দলটি। সিলেট আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামে আজ নোয়াখালীকে হ্যাটট্রিক হারের লজ্জা উপহার দিল রাজশাহী ওয়ারিয়র্স।

জয়, হার, জয়—১২তম বিপিএলে রাজশাহী ওয়ারিয়র্সের পথচলাটা হচ্ছে এমনই। সিলেট আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামে উদ্বোধনী ম্যাচে স্বাগতিক সিলেট টাইটান্সের বিপক্ষে ১৯১ রান তাড়া করে ৮ উইকেটে জিতেছিল রাজশাহী। ঠিক নিজেদের পরের ম্যাচে রাজশাহী হেরে যায় ঢাকা ক্যাপিটালসের কাছে। আজ সিলেট স্টেডিয়ামে নোয়াখালীকে ৬ উইকেটে হারিয়েছে রাজশাহী। তিন ম্যাচে ৪ পয়েন্ট নিয়ে পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষে উঠে গেল রাজশাহী।

১২৫ রানের লক্ষ্যে নেমে ২ রানেই উদ্বোধনী জুটি ভেঙে যায় রাজশাহীর উদ্বোধনী জুটি। ইনিংসের দ্বিতীয় বলে সাহিবজাদা ফারহানকে (২) বোল্ড করেন হাসান মাহমুদ। দ্বিতীয় উইকেটে এরপর ৩৮ বলে ৬৫ রানের জুটি গড়েন নাজমুল হোসেন শান্ত ও তানজিদ হাসান তামিম। সপ্তম ওভারের চতুর্থ বলে শান্তকে (২৪) ফিরিয়ে জুটি ভাঙেন রেজাউর রহমান রাজা। শান্ত ফেরার পর মুহূর্তেই ৮.৫ ওভারে ৪ উইকেটে ৭৩ রানে পরিণত হয় রাজশাহী। তানজিদ তামিম (২৯) ও হুসেইন তালাতকে (৩) দ্রুত ফেরান জহির খান ও হাসান মাহমুদ।

৮.৫ ওভারে ৪ উইকেটে ৭৩ রানে পরিণত হওয়া রাজশাহীর জয়ের জন্য সামান্যতম শঙ্কা তৈরি হয়েছিল ঠিকই। তবে মুশফিকুর রহিম ও ইয়াসির আলী চৌধুরী রাব্বির দায়িত্বশীল ব্যাটিংয়ে ১৩ বল হাতে রেখেই ৬ উইকেটে জিতেছে রাজশাহী। পঞ্চম উইকেটে ৫৪ বলে ৫২ রানের অবিচ্ছেদ্য জুটি গড়েন মুশফিক-ইয়াসির।

এর আগে টস জিতে ফিল্ডিংয়ের সিদ্ধান্ত নেন রাজশাহী অধিনায়ক শান্ত। আগে ব্যাটিং পাওয়া নোয়াখালী নির্ধারিত ২০ ওভারে ৮ উইকেটে করেছে ১২৪ রান। ইনিংস সর্বোচ্চ ৩৩ রান করে অপরাজিত থাকেন দলটির অধিনায়ক হায়দার আলী। রাজশাহীর রিপন ৪ ওভারে ১৩ রানে নিয়েছেন ৪ উইকেট। এক ওভার মেডেন দিয়েছেন। ম্যাচসেরার পুরস্কারও পেয়েছেন তিনি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এনসিপি-জামায়াত জোটে যুক্ত হচ্ছে আরেকটি দল, আসন বণ্টন ঘোষণা রাতেই

৮ মিনিট দেরি, মনোনয়নপত্র জমা দিতে না পেরে অঝোরে কাঁদলেন এবি পার্টির প্রার্থী প্রত্যাশী

নির্বাচন না করার ঘোষণা দিলেন আনোয়ার হোসেন মঞ্জু

৪৭ আসনে মনোনয়নপত্র জমা দিল এনসিপি

জেপির মঞ্জুর পর নির্বাচন বর্জন করলেন রুহুল আমিন হাওলাদার ও ফিরোজ রশীদ

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

কাঁপাচ্ছেন রিশাদ, উড়ছে হোবার্টও

ক্রীড়া ডেস্ক    
এবারের বিগ ব্যাশে ৫ ম্যাচে ৮ উইকেট নিয়েছেন রিশাদ হোসেন। ছবি: ফেসবুক
এবারের বিগ ব্যাশে ৫ ম্যাচে ৮ উইকেট নিয়েছেন রিশাদ হোসেন। ছবি: ফেসবুক

বিগ ব্যাশে প্রথমবার সুযোগ পেয়েই কাঁপাচ্ছেন রিশাদ হোসেন। লেগস্পিন ভেলকিতে ব্যাটারদের বোকা বানাচ্ছেন বাংলাদেশের তরুণ লেগস্পিনার। তাঁর দল হোবার্ট হারিকেন্সও রীতিমতো উড়ছে। রিশাদ যেমন সর্বোচ্চ উইকেটশিকারীর তালিকায় প্রথম সারিতে আছেন, তাঁর দল হোবার্ট পয়েন্ট টেবিলের সেরা দুইয়ে উঠে এসেছে।

হোবার্টের বেলেরিভ ওভালে আজ মেলবোর্ন রেনেগেডসের বিপক্ষে ৪ ওভারে ৩৪ রানে ২ উইকেট নিয়েছেন রিশাদ। তাতে ২০২৫-২৬ মৌসুমের বিগ ব্যাশে ৫ ম্যাচে হলো ৮ উইকেট। বাংলাদেশের তরুণ লেগস্পিনারের ইকোনমি ৭.৭২। ৮ উইকেট নিয়ে এবারের বিগ ব্যাশে যৌথভাবে সর্বোচ্চ উইকেটশিকারীর তালিকায় যৌথভাবে দুইয়ে রিশাদ। সিডনি সিক্সার্সের জ্যাক এডওয়ার্ডস, ব্রিসবেন হিটের জ্যাক উইলডারমাথ, মেলবোর্ন স্টারসের পিটার সিডল—এই তিন বোলারও পেয়েছেন ৮ উইকেট। ৮ উইকেট নেওয়া চার বোলারের মধ্যে সবচেয়ে কম ইকোনমি সিডলের। তিনি বোলিং করেছেন ৬.১২ ইকোনমিতে। ৯ উইকেট নিয়ে যৌথভাবে শীর্ষে মেলবোর্ন স্টারসের দুই ক্রিকেটার টম কারান ও হারিস রউফ।

রিশাদের দুর্দান্ত বোলিংয়ের দিনে জয় নিয়ে মাঠ ছেড়েছে হোবার্ট হারিকেন্স। টস জিতে আগে ফিল্ডিংয়ের সিদ্ধান্ত নেন হোবার্ট অধিনায়ক নাথান এলিস। নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারাতে থাকা মেলবোর্ন রেনেগেডস ২০ ওভারে ৯ উইকেটে করে ১৬২ রান। ইনিংস সর্বোচ্চ ২৯ রান করেন অলিভার পিক। হারিকেন্স অধিনায়ক এলিস ৪ ওভারে ৩০ রানে নিয়েছেন ৩ উইকেট। ১৬৩ রানের লক্ষ্যে নেমে হারিকেন্স ১৯ ওভারে ৬ উইকেটে ১৬৩ রান করে ফেলে হারিকেন্স। ইনিংস সর্বোচ্চ ৪৩ রান করে অপরাজিত থাকেন উইকেটরক্ষক ম্যাথু ওয়েড। ২০ বলের ইনিংসে ২ চার ও ৪ ছক্কা মেরেছেন। ম্যাচসেরা হয়েছেন এলিস।

৫ ম্যাচে ৪ জয় ও ১ পরাজয়ে ৮ পয়েন্টে হোবার্ট এখন পয়েন্ট তালিকার দুইয়ে। শীর্ষে থাকা মেলবোর্ন স্টারসেরও পয়েন্ট ৮। তারা চার ম্যাচের চারটিতেই জিতেছে। মেলবোর্ন ও হোবার্টের নেট রানরেট ‍+১.৭৭৯ ও ‍+০.৪৩২। হোবার্টের পরের ম্যাচ নতুন বছরের প্রথম দিন। ১ জানুয়ারি বাংলাদেশ সময় বেলা ২টা ১৫ মিনিটে বেলেরিভ ওভালে শুরু হবে হোবার্ট হারিকেন্স-পার্থ স্করচার্স ম্যাচ।

সিলেটে পরশু ১২তম বিপিএল শুরুর দিন নবাগত নোয়াখালী এক্সপ্রেসের বিপক্ষে দাপুটে জয়ে টুর্নামেন্ট শুরু করেছিল চট্টগ্রাম রয়্যালস। ‍+৩.২৫০ নেট রানরেট নিয়ে অনেকটা এগিয়ে থেকে আজ চট্টগ্রাম খেলতে নামে রংপুর রাইডার্সের বিপক্ষে। তবে রংপুরের বিধ্বংসী বোলিংয়ে ম্যাচ অর্ধেকটা হেরে বসে চট্টগ্রাম। ১০৩ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে ৩০ বল হাতে রেখে ৫ উইকেটে জিতেছে রংপুর।

২০২৫-২৬ মৌসুমের বিগ ব্যাশে সর্বোচ্চ উইকেটশিকারী ছয় বোলার

  • উইকেট ইকোনমি দল

টম কারান ৯ ৭.২০ মেলবোর্ন স্টারস

হারিস রউফ ৯ ৭.৯৩ মেলবোর্ন স্টারস

পিটার সিডল ৮ ৬.১২ মেলবোর্ন স্টারস

জ্যাক এডওয়ার্ডস ৮ ৭.৭১ সিডনি সিক্সার্স

রিশাদ হোসেন ৮ ৭.৭২ হোবার্ট হারিকেন্স

জ্যাক উইডারমাথ ৮ ১০.৩১ ব্রিসবেন হিট

*২০২৫ সালের ২৯ ডিসেম্বর হোবার্ট হারিকেন্স-মেলবোর্ন রেনেগেডস ম্যাচ পর্যন্ত

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এনসিপি-জামায়াত জোটে যুক্ত হচ্ছে আরেকটি দল, আসন বণ্টন ঘোষণা রাতেই

৮ মিনিট দেরি, মনোনয়নপত্র জমা দিতে না পেরে অঝোরে কাঁদলেন এবি পার্টির প্রার্থী প্রত্যাশী

নির্বাচন না করার ঘোষণা দিলেন আনোয়ার হোসেন মঞ্জু

৪৭ আসনে মনোনয়নপত্র জমা দিল এনসিপি

জেপির মঞ্জুর পর নির্বাচন বর্জন করলেন রুহুল আমিন হাওলাদার ও ফিরোজ রশীদ

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

বিপিএলে নতুন কোচ নিল ঢাকা

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ২৯ ডিসেম্বর ২০২৫, ২২: ১৫
মাহবুব আলী জাকির (বাঁ পাশে) পরিবর্তে আশিকুর রহমান মজুমদারকে নিল ঢাকা ক্যাপিটালস।ছবি: সংগৃহীত
মাহবুব আলী জাকির (বাঁ পাশে) পরিবর্তে আশিকুর রহমান মজুমদারকে নিল ঢাকা ক্যাপিটালস।ছবি: সংগৃহীত

সিলেট আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামে পরশু হার্ট অ্যাটাক করে না ফেরার দেশে চলে যান মাহবুব আলী জাকি। এবারের বিপিএলে তিনি ছিলেন ঢাকা ক্যাপিটালসের সহকারী কোচের দায়িত্বে। জাকি চলে যাওয়ায় তাঁর স্থলাভিষিক্ত হয়েছেন আশিকুর রহমান মজুমদার।

এক বিবৃতিতে আজ আশিকুরকে সহকারী কোচ হিসেবে নিয়োগ দেওয়ার কথা নিশ্চিত করেছে। ঢাকা প্রিমিয়ার লিগের দল প্রাইম ব্যাংক ক্রিকেট ক্লাবের কোচ ছিলেন তিনি। জাতীয় ক্রিকেট লিগে (এনসিএল) বরিশাল বিভাগের সহকারী কোচের দায়িত্বও পালন করেছেন। পরশু রাজশাহী ওয়ারিয়র্সের বিপক্ষে ম্যাচের আগে মাঠে তাসকিন আহমেদ, শামীম হোসেন পাটোয়ারীর সঙ্গে অনুশীলন করছিলেন জাকি। ম্যাচের ঠিক আগে হার্ট অ্যাটাক করলে অ্যাম্বুলেন্সও চলে এসেছিল মাঠে। হাসপাতালে দ্রুত নেওয়ার পরও বাঁচানো যায়নি জাকিকে।

সিলেট স্টেডিয়ামে পরশু রাজশাহী ওয়ারিয়র্স-ঢাকা ক্যাপিটালস ম্যাচ হয়েছিল জাকির জানাজা। মুশফিকুর রহিমকে কান্নায় ভেঙে পড়তে দেখা গিয়েছিল। কেঁদেছেন শরীফুল ইসলাম, শামীমরাও কেঁদেছিলেন। জাকির সঙ্গে মুশফিকের সম্পর্কটা ২৫ বছরের। অনূর্ধ্ব ১৯ দল, হাই পারফরম্যান্স (এইচপি), একাডেমি থেকে জাতীয় দল—সব জায়গাতেই প্রয়াত এই কোচ ছিলেন মুশফিকের অভিভাবকের মতো। দেশের নামকরা সব ক্রিকেটারের বিপদের দিনে হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন জাকি। তাঁর মৃত্যুর পর সাকিব আল হাসান, তামিম ইকবাল, মাশরাফি বিন মর্তুজারা ফেসবুকে বার্তা দিয়ে শোক প্রকাশ করেছিলেন। সিলেটে পরশু নিজেদের প্রথম ম্যাচে ঢাকা ৫ উইকেটে হারিয়েছিল রাজশাহীকে। আগামীকাল সিলেটে রংপুর রাইডার্সের বিপক্ষে খেলতে নামবে ঢাকা।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এনসিপি-জামায়াত জোটে যুক্ত হচ্ছে আরেকটি দল, আসন বণ্টন ঘোষণা রাতেই

৮ মিনিট দেরি, মনোনয়নপত্র জমা দিতে না পেরে অঝোরে কাঁদলেন এবি পার্টির প্রার্থী প্রত্যাশী

নির্বাচন না করার ঘোষণা দিলেন আনোয়ার হোসেন মঞ্জু

৪৭ আসনে মনোনয়নপত্র জমা দিল এনসিপি

জেপির মঞ্জুর পর নির্বাচন বর্জন করলেন রুহুল আমিন হাওলাদার ও ফিরোজ রশীদ

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত