Ajker Patrika

এমন সমীকরণে কেন পড়তে হলো তামিম-মাহমুদউল্লাহদের

অয়ন রায়,ঢাকা
আপডেট : ২১ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ১৮: ৫৬
এমন সমীকরণে কেন পড়তে হলো তামিম-মাহমুদউল্লাহদের

২০২৪ বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগ (বিপিএল) শেষের পথে। লিগ পর্বের ৪২ ম্যাচের মধ্যে শেষ ৪০ ম্যাচ। বাকি রয়েছে দুই ম্যাচ। রংপুর রাইডার্স, কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ানস, চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স—তিনটা দল এরই মধ্যে প্লে অফ নিশ্চিত করে ফেলেছে। 

সাত দলের মধ্যে চার দল খেলবে প্লে অফ। টুর্নামেন্টের মাঝামাঝি পর্যায়ে এসে হিসেব নিকাশের বাইরে চলে গেছে দুর্দান্ত ঢাকা, সিলেট স্ট্রাইকার্স এই দুই ফ্র্যাঞ্চাইজি। চতুর্থ দল কে হবে—তা নিয়ে লড়াই চলছে খুলনা টাইগার্স ও ফরচুন বরিশালের মধ্যে। ১২ পয়েন্ট নিয়ে এখন চারে বরিশাল। পাঁচ নম্বরে থাকা খুলনার পয়েন্ট ১০। মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে পরশু বেলা দেড়টায় বরিশাল খেলবে কুমিল্লার বিপক্ষে। একই দিন, একই মাঠে সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টার ম্যাচে খুলনার প্রতিপক্ষ সিলেট। 

বাংলাদেশের বড় দুই তারকা ক্রিকেটার তামিম ইকবাল ও মুশফিকুর রহিম বিপিএল ইতিহাসে পূর্ণ করেছেন ৩০০০ রান। সেই তামিম-মুশফিকসহ মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ, মেহেদী হাসান মিরাজ, শোয়েব মালিকের মতো তারকা ক্রিকেটারদের নিয়ে এবারের বিপিএলে দল গড়ে বরিশাল। দলটির নেতৃত্বভার তামিমের কাঁধে। তারকাসম্পন্ন বরিশালকে এখন প্লে অফে ওঠা নিয়ে দুশ্চিন্তা করতে হচ্ছে। লিগ পর্বের শেষ ম্যাচে প্রতিপক্ষ যখন সর্বশেষ দুই আসরের চ্যাম্পিয়ন কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ানস, সেখানে বড় ব্যবধানে হেরে গেলে প্লে অফ নাও খেলা হতে পারে বরিশালের। 

টুর্নামেন্টের শুরুতে অবশ্য তামিম-মুশফিকের মধ্যে প্রতিযোগিতা বেশ জমে ওঠে। একবার সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহকে মুশফিক ওপরে ওঠেন তো পরে সেই জায়গা দখল করেন তামিম। এবার সেখানে রানের ব্যবধান বেড়ে গেছে দুই ক্রিকেটারের মধ্যে। নিজের সর্বশেষ পাঁচ ম্যাচের মধ্যে ফিফটি পেরিয়েছেন একবার, বাকি চার ম্যাচে আউট হয়েছেন দুই অঙ্কে পৌঁছানোর আগেই। 

উইকেট নেওয়ার পর এভাবেই উল্লাসে মেতেছে ফরচুন বরিশাল। তবে একের পর এক ম্যাচ হেরে এভাবে উচ্ছ্বাসটা থাকছে না তাদের। ছবি: সৌজন্য ছবি ছন্দ হারিয়েছেন মাহমুদউল্লাহও। নিজের সর্বশেষ তিন ম্যাচে করেছেন ১৩,১২ ও ৯ রান। শেষ তিন ম্যাচে তাঁর স্ট্রাইকরেট ১০৯.৬৪। যা টি-টোয়েন্টির সঙ্গে মানানসই নয়। অথচ এবারের বিপিএলের শুরুতে মাহমুদউল্লাহ ব্যাটিং করছিলেন টি-টোয়েন্টির চাহিদা অনুযায়ী। সিলেট স্ট্রাইকার্সের বিপক্ষে ২৩ বলে ফিফটি করেছেন। দুর্দান্ত ঢাকার বিপক্ষেও করেছেন ৪৭ বলে ৭৩ রানের বিধ্বংসী ইনিংস। মাহমুদউল্লাহর জ্বলে ওঠার এই দুই ম্যাচে সিলেট, ঢাকা—দুই দলের বিপক্ষেই বরিশাল জিতেছে ৪০ বা তার বেশি রানের ব্যবধানে। মাহমুদউল্লাহর এমন দারুণ ইনিংস দেখে তাঁকে টি-টোয়েন্টির ‘অটোমেটিক চয়েস’ বলেন বিসিবির ক্রিকেট পরিচালনা বিভাগের প্রধান জালাল ইউনুস।   
 
এছাড়া তামিম ৩২৫ রান করে এবারের বিপিএলে সর্বোচ্চ রানসংগ্রাহকদের তালিকায় আছেন ৪ নম্বরে। তবে তাঁর খেলার ধরন বরিশালে কতটা ইম্প্যাক্ট রাখতে পারছে সেটাও একটা ব্যাপার। ব্যাটিং করেছেন ১২৪.০৪ স্ট্রাইক রেটে। যার মধ্যে ঝোড়ো ইনিংস খেলেছেন ঢাকার বিপক্ষে ১৪ ফেব্রুয়ারি বিশ্ব ভালোবাসা দিবসের দিন। চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে ৪৫ বলে করেছেন ৭১ রান। যে ঢাকা টুর্নামেন্টের তলানিতে থেকে এবারের বিপিএল শেষ করেছে। এমনকি তাঁর তুলনামূলক ধীরগতির ব্যাটিংয়ের কারণে বরিশালকে একটা সহজ ম্যাচও হারতে হয়েছে। 

৪৫ বলে ৭১ রানের ইনিংস খেলে ম্যাচসেরা তামিম ইকবাল। তবে এমন ইনিংস বরিশাল তাঁর থেকে কমই পেয়েছে। ছবি: সৌজন্য ছবিতামিম, মাহমুদউল্লাহ, মুশফিকের ব্যাটিংয়ের কথা তো বলা হলোই। বরিশাল দলের আরেক তারকা ব্যাটার সৌম্য সরকার হতাশ করেছেন। এবারের বিপিএলে বাজেভাবে ব্যর্থ ঢাকার বিপক্ষে ৪৮ বলে ৭৫ রানের ইনিংস ছাড়া বলার মতো কিছুই নেই।  দুটি ম্যাচে তিনি ডাক মেরেছেন। অন্যদিকে রংপুর, কুমিল্লা—টুর্নামেন্টের প্রথম দুইয়ে থেকে বিপিএলের প্লে অফ নিশ্চিত করেছে, তাদের সঙ্গে তুলনা করলেই বরিশালের পার্থক্যটা স্পষ্ট হবে। টুর্নামেন্টের প্রথম দিকে রংপুর যেখানে পেয়েছিল শুধু বোলার সাকিব আল হাসানকে, সেই সাকিবও জ্বলে উঠেছেন ব্যাটিংয়ে। ১৬৮.২৪ স্ট্রাইকরেটে এখনো পর্যন্ত করেছেন ২৪৯ রান, যার মধ্যে রয়েছে খুলনা টাইগার্সের বিপক্ষে ৩১ বলে ৬৯ রানের বিধ্বংসী ইনিংস। রংপুরের আরেক ক্রিকেটার জিমি নিশাম টুর্নামেন্টে প্রথম ম্যাচ খেলতে এসেই অলরাউন্ড পারফরম্যান্সে জিতেছেন ম্যাচসেরার পুরস্কার। গত রাতে আন্দ্রে রাসেলের ১২ বলে ৪৩ রানের বিধ্বংসী ইনিংসের ঘটনা তো সবারই জানা। প্রথম ৫ বলে তাঁর স্কোর ছিল ৭ রান। পরের ৭ বলে চারটি ছক্কা ও তিনটি চারে ৩৬ রান করে কুমিল্লাকে অনায়াসের এক জয় এনে দিয়েছেন। রংপুর রাইডার্সের বোলারদের চেয়ে চেয়ে দেখা ছাড়া সেদিন কোনো উপায়ই ছিল না। 
 
২০২৪ বিপিএলের শেষ চারের সূচি যেমন হতে পারে। গ্রাফিকস:আজকের পত্রিকাযে কুমিল্লার বিপক্ষে  পরশু দ্বিতীয়বারের ম্যাচ খেলতে নামবে বরিশাল, সেই কুমিল্লার কাছে লিগ পর্বে প্রথম ম্যাচ হেরেছে তারা (বরিশাল)। সেবার বরিশালের কাছ থেকে ম্যাচ কেড়ে নেন ওয়েস্ট ইন্ডিজের ব্যাটার ম্যাথু ফোর্ড। সেখানে কুমিল্লার বিপক্ষে জিততে তাই একটু বেগ পেতে হবে বরিশালকে। তবে বরিশালকে আশা জাগাচ্ছে তাদের নেট রানরেট। এই মুহূর্তে তাদের নেট রানরেট +০.৪৩৪। অন্যদিকে খুলনার নেট রানরেট-০.৪০০। শেষ ম্যাচ বরিশাল হারলে ১২ পয়েন্টেই থেকে যাবে। অন্যদিকে সিলেটকে হারালে খুলনারও হবে ১২ পয়েন্ট। নেট রানরেটের সমীকরণে বরিশালকে টপকে যেতে খুলনার অনেক কঠিন পথ পাড়ি দিতে হবে। শুক্রবার লিগ পর্বের শেষ দিনে দুপুরের ম্যাচে বরিশালের ভক্ত-সমর্থকদের একটু চিন্তায় থাকতে হচ্ছে। 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ভারত ম্যাচে দেরি করায় বাফুফেকে দেড় লাখ টাকা জরিমানা

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
মোরসালিনের গোলে ২২ বছর পর ভারতকে হারায় বাংলাদেশ। ছবি: আজকের পত্রিকা
মোরসালিনের গোলে ২২ বছর পর ভারতকে হারায় বাংলাদেশ। ছবি: আজকের পত্রিকা

এশিয়ান কাপ বাছাইয়ের ম্যাচ আয়োজন করে আরও একবার জরিমানার মুখে পড়ল বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন (বাফুফে)। বাংলাদেশ-ভারত ম্যাচের দ্বিতীয়ার্ধের খেলা ১ মিনিট ৪৩ সেকেন্ড দেরিতে শুরু হওয়ায় বাফুফেকে ১২৫০ ডলার জরিমানা করেছে এশিয়ান ফুটবল কনফেডারেশন (এএফসি)। বাংলাদেশি মুদ্রায় যা প্রায় ১ লাখ ৫৩ হাজার টাকা। গত ১৭ ডিসেম্বর এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে এএফসির শৃঙ্খলা ও নীতি কমিটি।

গত ১৮ নভেম্বর জাতীয় স্টেডিয়ামে ভারতকে ১-০ গোলে হারিয়েছে বাংলাদেশ। এশিয়ান কাপ বাছাইয়ের ম্যাচটি নিয়মরক্ষার হলেও উন্মাদনার কমতি ছিল না। ২২ বছর পর ভারতকে হারানোর স্বাদ পেয়েছে বাংলাদেশ৷ একমাত্র জয়সূচক গোলটি আসে ম্যাচের প্রথমার্ধে শেখ মোরসালিনের পা থেকে। কিন্তু দ্বিতীয়ার্ধে সময়মতো খেলা মাঠে গড়াতে পারেননি রেফারি।

একই কারণে সর্বভারতীয় ফুটবল ফেডারেশনকেও এক হাজার ডলার জরিমানা করা হয়েছে। নির্দিষ্ট সময়ের ভেতর এই অপরাধ দুবার করায় বাংলাদেশের জরিমানার অঙ্ক বেশি ধরা হয়েছে। এর আগে গত জুনে ঘরের মাঠে সিঙ্গাপুরের বিপক্ষে ম্যাচের দ্বিতীয়ার্ধের খেলা শুরু হতে দুই মিনিট বিলম্ব হওয়ায় দেড় হাজার ডলার জরিমানা করা হয়।

এএফসির শৃঙ্খলা নীতিমালার ১১.৩ ধারা অনুযায়ী, ৩০ দিনের মধ্যে জরিমানার টাকা পরিশোধ করতে হবে দুই ফেডারেশনের। এশিয়ান কাপ বাছাইয়ে বাংলাদেশের শেষ ম্যাচ ৩১ মার্চ সিঙ্গাপুরের বিপক্ষে। সিঙ্গাপুর ইতোমধ্যে ১১ পয়েন্ট নিয়ে এশিয়ান কাপে খেলা নিশ্চিত করেছে। ৫ পয়েন্ট নিয়ে চার দলের মধ্যে ‘সি’ গ্রুপে বাংলাদেশের অবস্থান তিনে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

মোস্তাফিজদের বিপক্ষে খরুচে বোলিংয়ে তাসকিনের ৩ উইকেট

ক্রীড়া ডেস্ক    
মোস্তাফিজুর রহমানের দু্বাই ক্যাপিটালসের বিপক্ষে তাসকিন আহমেদ ৪ ওভারে ৪০ রানে নিয়েছেন ৩ উইকেট। ছবি: ফেসবুক
মোস্তাফিজুর রহমানের দু্বাই ক্যাপিটালসের বিপক্ষে তাসকিন আহমেদ ৪ ওভারে ৪০ রানে নিয়েছেন ৩ উইকেট। ছবি: ফেসবুক

সংযুক্ত আরব আমিরাতের আন্তর্জাতিক লিগ টি-টোয়েন্টি যেন বাংলাদেশ ক্রিকেটারদের মিলনমেলা। সাকিব আল হাসান, মোস্তাফিজুর রহমান, তাসকিন আহমেদ—বাংলাদেশের তিন তারকা ক্রিকেটার খেলছেন এখন আমিরাতের এই লিগে। কদিন আগে সাকিব-মোস্তাফিজের একটি ছবি ‘দ্য বাংলা’ ক্যাপশনে পোস্ট করেছিল সাকিবের দল এমআই এমিরেটস। আজ দুবাই আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামে মুখোমুখি হয়েছেন তাসকিন-মোস্তাফিজ।

বাংলাদেশের তিন তারকা সাকিব, তাসকিন, মোস্তাফিজ এবারই প্রথমবারের মতো আইএল টি-টোয়েন্টিতে খেলছেন। এই তিন বাংলাদেশির মধ্যে মোস্তাফিজ নিয়মিত বিরতিতে উইকেট নিচ্ছেন। এদিকে তাসকিন উইকেট তেমন পাচ্ছেন না। উপরন্তু মুক্ত হস্তে রান বিলিয়ে দিচ্ছেন। দুবাইয়ে আজ মোস্তাফিজের দুবাই ক্যাপিটালসের বিপক্ষে তাসকিন ৩ উইকেট হলেও ১০ ইকোনমিতে বোলিং করেছেন।

দুবাই ক্যাপিটালসের বিপক্ষে টস জিতে ফিল্ডিংয়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন শারজা ওয়ারিয়র্সের অধিনায়ক সিকান্দার রাজা। দলীয় ৩ রানে ভেঙে যায় দুবাই ক্যাপিটালসের উদ্বোধনী জুটি। ইনিংসের পঞ্চম বলে দুবাইয়ের ওপেনার শায়ান জাহাঙ্গীরকে (১) এলবিডব্লিউর ফাঁদে ফেলেন রাজা। দ্বিতীয় উইকেটে এরপর ৩১ বলে ৪৭ রানের জুটি গড়েন জর্ডান কক্স ও সেদিকউল্লাহ আতাল। ষষ্ঠ ওভারের শেষ বলে কক্সকে (২৮) ফিরিয়ে জুটি ভাঙেন তাসকিন।

দুবাই ক্যাপিটালসের ইনিংস সর্বোচ্চ ৪৭ রানের জুটি গড়েছেন কক্স ও আতাল। আরেকটি চল্লিশোর্ধ্ব রানের জুটিতেও অবদান রয়েছে আতালের। চতুর্থ উইকেটে আফগানিস্তান দলের সতীর্থ মোহাম্মদ নবির সঙ্গে ২৬ বলে ৪২ রানের জুটি গড়তে অবদান রেখেছেন আতাল। ওপেনিংয়ে নামা আতাল আউট হয়েছেন পঞ্চম ব্যাটার হিসেবে। ১৮তম ওভারের দ্বিতীয় বলে আতালের উইকেট নিয়েছেন তাসকিন। ৪৪ বলে ২ চার ও ৩ ছক্কায় ৬৬ রানের ইনিংস খেলেছেন আফগান এই ব্যাটার। নির্ধারিত ২০ ওভারে ৬ উইকেটে ১৮০ রান করে দুবাই ক্যাপিটালস। দুবাইয়ের ইনিংস সর্বোচ্চ ৬৬ রান এসেছে আতালের ব্যাট থেকে।

শারজা ওয়ারিয়র্সের তাসকিন ৪ ওভারে ৪০ রানে নিয়েছেন ৪ উইকেট। যার মধ্যে ইনিংসের শেষ ওভারে ১২ রান খরচ করে পেয়েছেন ১ উইকেট। একটি করে উইকেট পেয়েছেন রাজা, মাথিসা পাতিরানা ও আদিল রশিদ।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

কলম্বিয়ায় ফুটবল ম্যাচে সহিংসতায় আহত ৫৯

ক্রীড়া ডেস্ক    
আপডেট : ১৯ ডিসেম্বর ২০২৫, ২২: ৩৭
কোপা কলম্বিয়ার ফাইনালের দ্বিতীয় লেগে সংঘর্ষের ঘটনায় ৫৯ জন আহত হয়েছেন। ছবি: এএফপি
কোপা কলম্বিয়ার ফাইনালের দ্বিতীয় লেগে সংঘর্ষের ঘটনায় ৫৯ জন আহত হয়েছেন। ছবি: এএফপি

লাতিন আমেরিকার ফুটবলে সহিংসতা নতুন কিছু নয়। মহাদেশীয় শ্রেষ্ঠত্বের টুর্নামেন্ট কোপা আমেরিকাতেই ঘটে মারামারির ঘটনা। স্থানীয় টুর্নামেন্টে সহিংসতার কারণে তো প্রায়ই খবরের শিরোনামে আসে লাতিন আমেরিকার ফুটবল। কলম্বিয়ায় এক ফুটবল টুর্নামেন্টের ফাইনালে ভয়াবহ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে।

কলম্বিয়ার মেডেলিন শহরের আতানাসিও জিরারদোত স্টেডিয়ামে পরশু রাতে কোপা কলম্বিয়ার ফাইনালের দ্বিতীয় লেগে মুখোমুখি হয়েছিল দেপোর্তিভো ইন্দিপেন্দিয়েন্তে-আতলেতিকো ন্যাশনাল। ১-০ গোলে আতলেতিকো ন্যাশনালের জয়ের পরই ভক্ত-সমর্থকেরা মাঠে ঢুকে তাণ্ডব শুরু করেন। আতশবাজি-আগুন নিয়ে এমনভাবে হামলা চালিয়েছিলেন ভক্তরা, যেটা সামাল দিতে দাঙ্গা পুলিশ মোতায়েন করতে হয়েছে। সাত পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন। কলম্বিয়ার স্থানীয় পত্রিকা এল কলোম্বিয়ানোর এক প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে, মাঠের কিছু অংশে আগুন ধরানো হয়েছে। উপড়ে ফেলা হয়েছে অনেক আসন। গ্যালারিতে আতশবাজির ধোঁয়ার কারণে ম্যাচ শুরু হতেও দেরি হয় ১৪ মিনিট।

মেডেলিনের মেয়র ফেদেরিকো গুতিয়েরেস কোপা কলম্বিয়ার ফাইনালে সহিংস ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন। গুতিয়েরেস বলেন, ‘যারা স্টেডিয়ামে হামলা, ধ্বংসযজ্ঞ বা ভীতি ছড়ানোর চেষ্টা করেছে, তাদের প্রত্যেককেই আইনের আওতায় আনা হবে। সবাই মাঠে বসে খেলা উপভোগ করতে পারবেন। হাতে গোনা কয়েকজনের জন্য পরিবেশ নষ্ট হবে, এমনটা তো হতে দেওয়া যাবে না। বছরের পর বছর ধরে আমরা পুরো লাতিন আমেরিকায় শান্তিপূর্ণ ফুটবলের মডেল হিসেবে পরিচিতি পেয়েছি।’ পুলিশ কমান্ডার উইলিয়াম কাস্তানো বলেন, স্টেডিয়ামে দর্শকদের কাছ থেকে অস্ত্র ও আতশবাজি জব্দ করা হয়েছে। ১২০ কেজির বেশি পাইরোটেকনিক (বিস্ফোরণের প্রভাব তৈরির মতো রাসায়নিক বস্তু) ছিল সেখানে।

দেপোর্তিভো ইন্দিপেন্দিয়েন্তে-আতলেতিকো ন্যাশনাল কলম্বিয়া কাপ ফাইনালের প্রথম লেগ গোলশূন্য ড্র হয়েছে। পরশু রাতে দ্বিতীয় লেগটা হয়ে যায় শিরোপা নির্ধারণী। দুই লেগ মিলিয়ে ১-০ গোলে শিরোপা জিতেছে আতলেতিকো ন্যাশনাল। কিন্তু মেডেলিন শহরের আতানাসিও জিরারদোত স্টেডিয়ামে ভয়াবহ সংঘর্ষের ঘটনায় আতলেতিকো ন্যাশনালের ম্যাচপরবর্তী পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠান, শিরোপা নিয়ে উদ্‌যাপন—কিছুই করা সম্ভব হয়নি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

আন্তর্জাতিক ব্যাডমিন্টনে সোনার লড়াইয়ে বাংলাদেশের জুমার-ঊর্মি

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
মিশ্র দ্বৈতে ফাইনালে উঠেছেন জুমার-ঊর্মি। ছবি: ব্যাডমিন্টন ফেডারেশন
মিশ্র দ্বৈতে ফাইনালে উঠেছেন জুমার-ঊর্মি। ছবি: ব্যাডমিন্টন ফেডারেশন

ইউনেক্স-সানরাইজ বাংলাদেশ ইন্টারন্যাশনাল চ্যালেঞ্জ টুর্নামেন্টে মিশ্র দ্বৈত বিভাগে ফাইনালে উঠেছেন বাংলাদেশের আল আমিন জুমার ও ঊর্মি আক্তার। আজ সেমিফাইনালে থাইল্যান্ডের কুনলাপাথ লোথোং ও সারিসা জানপেং জুটিকে হারিয়েছেন ২১-১১ ও ২১-১৪ গেমে। পদক তো নিশ্চিত হয়েছে আগে, জুমার-ঊর্মি এবার দেখাচ্ছেন সোনা জয়ের ঝিলিকও। ফাইনালে কাল মালয়েশিয়ার দাতু আনিফ ইসাক দাতু আসরা ও ক্লারিসা সানের মুখোমুখি হবেন তারা।

পল্টনের শহীদ তাজউদ্দিন ইনডোর স্টেডিয়ামে সকালটাও অন্যরকম ছিল জুমার-ঊর্মির। কোয়ার্টার ফাইনালে ভারতের স্বস্তিক মাথারাসান-কীর্তি মাঞ্চালাকে তিন সেটের লড়াইয়ে হারিয়েছেন ২১-১৬, ১৯-২১ ও ২১-১৮ গেমে। প্রথম সেট খানিকটা সহজে জিতলেও দ্বিতীয় সেটে হারতে হয়। তৃতীয় সেটে দারুণ প্রতিদ্বন্দ্বিতা শেষে নিশ্চিত করেন ব্রোঞ্জ পদক।

রাতে সেমিফাইনালে থাইল্যান্ডের জুটিকে পাত্তাই দিলেন না জুমার-ঊর্মি। প্রথম সেটে একটা সময় অবশ্য পিছিয়ে ছিলেন ৫-৩ পয়েন্টে। সেখান থেকে অনবরত পয়েন্ট তুলতে থাকেন জুমার। শেষ দিকে ঊর্মিও দেখান তাঁর দাপট। দ্বিতীয় সেটে শুরুতেই আধিপত্য দেখাতে থাকে বাংলাদেশের জুটি। নিয়ে নেন বড় ব্যবধানের লিড। যা পরে আর ছোট করতে পারেননি থাইল্যান্ডের শাটলাররা।

ফাইনালে উঠে জুমার বলেন, ‘ফাইনাল নিয়ে প্রত্যাশা অবশ্যই ভালো খেলার চেষ্টা করব। বাকিটা আল্লাহ ভরসা, জানিনা কি হবে। দেখা যাক। আগে যে রেজাল্টগুলো আমরা আশাও করতে পারতাম না, এখন বাংলাদেশ অন্যান্য বারের মতো হচ্ছে না যে মানে বাংলাদেশ আসছে আর হেরে যাচ্ছে—এরকম হচ্ছে না। প্রত্যেকটা টিমই আমাদের লড়াই করে হেরেছে।’

জুমারের সঙ্গে বোঝাপড়া নিয়ে ঊর্মি বলেন, ‘সকালেই আমি বলেছিলাম, আমরা চ্যাম্পিয়ন হতে চাই। সেই লক্ষ্যের দিকে এগিয়ে যাচ্ছি। ফাইনাল নিশ্চিত করেছি। এবার সোনা জিততে চাই। জুমারের সঙ্গে ছয়-সাত বছর ধরে জুটি বেঁধে খেলছি। যেহেতু অনেকদিন ধরে খেলছি, সেহেতু আমাদের মধ্যে বোঝাপড়াটা ভালো। আমরা এর আগেও আন্তর্জাতিক টুর্নামেন্টে পদক জিতেছি।’

এর আগে একক ইভেন্টে কেবল হতাশাই উপহার দিয়েছেন বাংলাদেশের শাটলাররা। দ্বৈতে গতকাল কোয়ার্টার ফাইনালে কেউই জয়ের হাসি হাসতে পারেননি। মিশ্র দ্বৈতে জুমার-ঊর্মি ফুটলেন আশার আলো হয়ে। রুপা নিশ্চিত করে লক্ষ্য এবার সোনার পদক গলায় ঝুলানো।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত