Ajker Patrika

আফগানরা ১৪ বছরে যা পেরেছে, বাংলাদেশ ১৮ বছরেও পারেনি

রানা আব্বাস,  নিউইয়র্ক থেকে
আপডেট : ২৬ জুন ২০২৪, ০৯: ৪৫
আফগানরা ১৪ বছরে যা পেরেছে, বাংলাদেশ ১৮ বছরেও পারেনি

একটা দলের নিজেদের শেষ ম্যাচের আগেই টুর্নামেন্ট থেকে বিদায়ঘণ্টা প্রায় বেজে গিয়েছিল। দৈবক্রমে তাদের সামনে আবার দপ করে জ্বলে ওঠে সেমিফাইনালের আশা। প্রকৃতি আর প্রতিপক্ষ দলগুলো নিজেদের অজান্তে সেমিফাইনালের দরজা খুলে দিয়েছিল বাংলাদেশের সামনে।

টুর্নামেন্ট জুড়ে বোলিং আর ফিল্ডিং ভালো করলেও বাংলাদেশ যে ধারাবাহিক বাজে ব্যাটিং করেছে, অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত যেভাবে ব্যর্থ হয়েছেন, টিম ম্যানেজমেন্ট প্রশ্নবিদ্ধ সিদ্ধান্ত নিয়েছে, দুই সিনিয়র সাকিব আল হাসান ও মাহমুদউল্লাহ যেভাবে ধারাবাহিক নিষ্প্রভ ছিলেন; তাতে বাংলাদেশ যে শুধুই সমীকরণের জটিল মারপ্যাঁচে একটা দলের নিজেদের শেষ ম্যাচের আগেই টুর্নামেন্ট থেকে বিদায়ঘণ্টা প্রায় বেজে গিয়েছিল। দৈবক্রমে তাদের সামনে আবার দপ করে জ্বলে ওঠে সেমিফাইনালের আশা। প্রকৃতি আর প্রতিপক্ষ দলগুলো নিজেদের অজান্তে সেমিফাইনালের দরজা খুলে দিয়েছিল বাংলাদেশের সামনে। 

টুর্নামেন্ট জুড়ে বোলিং আর ফিল্ডিং ভালো করলেও বাংলাদেশ যে ধারাবাহিক বাজে ব্যাটিং করেছে, অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত যেভাবে ব্যর্থ হয়েছেন, টিম ম্যানেজমেন্ট প্রশ্নবিদ্ধ সিদ্ধান্ত নিয়েছে, দুই সিনিয়র সাকিব আল হাসান ও মাহমুদউল্লাহ যেভাবে ধারাবাহিক নিষ্প্রভ ছিল; তাতে বাংলাদেশ যে শুধুই সমীকরণের জটিল মারপ্যাঁচের বদান্যতায় সেমিফাইনালে ওঠার যোগ্য নয়, আফগানিস্তান সেটি সেন্ট ভিনসেন্টে ইতিহাস গড়ে সবাইকে বুঝিয়ে দিয়েছে। 

ডিএলএসে বাংলাদেশকে ৮ রানে হারিয়ে প্রথমবারের মতো আইসিসির কোনো টুর্নামেন্টের সেমিফাইনালে উঠে আফগানরা উঁচু স্বরে বার্তা দিয়েছেন, বিশ্বমঞ্চে ছড়ি ঘোরানোর দক্ষতা তাঁরা অর্জন করে ফেলেছেন। এই বিশাল সাফল্যে তাঁরা শুধুই কাবুল থেকে কান্দাহারে উৎসবের রং ছড়াননি, তাঁরা অযুত-নিযুত আফগান যুবা-কিশোরের মনে শ্রেষ্ঠত্বের মঞ্চে রশিদ খানদের মতো নায়ক হওয়ার বীজও বুনে দিয়েছেন।

আফগানরা যখন আর্নস ভেলের বৃষ্টিভেজা রাতে উৎসবে মেতেছেন, বাংলাদেশ দল তখন রূপ নিয়েছে বিধ্বস্ত জনপদে। সুপার এইটের রোমাঞ্চে ঠাসা শেষ দিনের দুপুরেই ভারত অস্ট্রেলিয়াকে হারিয়ে তিন দলের ভাগ্য সুতোয় ঝুলিয়ে দিয়েছিল। রাতে সেন্ট ভিনসেন্টের ম্যাচের দিকে তাকিয়ে তিন দেশ—বাংলাদেশ, অস্ট্রেলিয়া আর আফগানিস্তান। টস জিতে আফগানিস্তান আগে ব্যাটিং নিলে বাংলাদেশের বোলাররা এই ম্যাচেও নিজেদের সবটা নিংড়ে দিলেন। 

তানজিম সাকিব কাল খারাপ করলেও অসাধারণ বোলিং করে সেটি পুষিয়ে দিলেন তাসকিন আহমেদ। আর রিশাদ হোসেন-মোস্তাফিজুর রহমান আর্নস ভেলের মন্থর, ঘূর্ণি উইকেটে আবারও দুর্দান্ত। ২০২৪ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে বাংলাদেশেরে সবচেয়ে বড় প্রাপ্তি রিশাদ ২৬ রানে পেলেন ৩ উইকেট। এই বিশ্বকাপে ওপেনিং জুটিগুলোর মধ্যে সবচেয়ে সফল আফগানিস্তানের উদ্বোধনী জুটি। কালও কঠিন উইকেটে রহমানউল্লাহ গুরবাজ আর ইবরাহিম জাদরানের গড়ে দেওয়া ৫৯ রানের জুটি আর শেষ দিকে রশিদ খানের ১০ বলে ১৯ রান বাংলাদেশের সামনে ১১৬ রানের লক্ষ্য ছুড়ে দেন আফগানরা। 

আফগানিস্তানের ইনিংস শেষ হতেই বৃষ্টি। বৃষ্টি থামলেও তখনো ওভার কাটা হয়নি। সেমিফাইনালে যেতে বাংলাদেশকে ১২.১ ওভারে ম্যাচটা জিততে হবে। বাংলাদেশ ব্যাটিং শুরু করেছিল কঠিন সমীকরণ মিলিয়ে ফেলার লক্ষ্যেই। বিশেষ করে লিটন দাস এগোচ্ছিলেন পুরো টুর্নামেন্টে নিজের সব ব্যর্থতা ভুলিয়ে দিতে। 

প্রথম ওভারেই ১৩ রান তুলে ফেলা বাংলাদেশ প্রথম ধাক্কা খায় নাভিন-উল-হকের করা তৃতীয় ওভারে পরপর দুই বলে নাজমুল হোসেন শান্ত আর সাকিব ফিরে যাওয়ায়। পাওয়ার-প্লে শেষ না হতেই আবার বৃষ্টি। দ্রুত কিছু উইকেট-পতনে বৃষ্টি থামার পর বাংলাদেশ সরে আসে সেমিফাইনালে যাওয়ার লক্ষ্য থেকে। পরে তারা চেষ্টা করেছে কোনোভাবে ম্যাচটা জিতে ফিরতে। কিন্তু ভঙ্গুর ব্যাটিংয়ে সেই চাওয়াও পূরণ হয়নি। ম্লান হয়েছে লিটনের অপরাজিত ফিফটি। বারবার বৃষ্টিবাধা আর নানা নাটকীয় ঘটনা পেরিয়ে আফগানরা ইতিহাস গড়েছেন, তাঁদের চোখে আর্নস ভেলের রাতে চিকচিক করেছে আনন্দাশ্রু। 

সাদা বলে আফগানিস্তান যে ক্রমেই দুর্দান্ত দল হয়ে উঠছে, গত ওয়ানডে বিশ্বকাপেই শ্রীলঙ্কা-পাকিস্তানকে হারিয়ে সেই বার্তা দিয়ে রেখেছিল তারা। এবার আফগানিস্তান টুর্নামেন্ট শুরু করেছে নিউজিল্যান্ডকে হারিয়ে। সুপার এইটে অস্ট্রেলিয়ার পর বাংলাদেশকে হারিয়ে শেষ চারে দক্ষিণ আফ্রিকার মুখোমুখি তারা। 

২০১০ সালে আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি খেলা শুরু করা আফগানরা ১৪ বছরের মধ্যে বিশ্বকাপের সেমিফাইনালিস্ট হয়ে গেল। আর ২০০৬ থেকে এই ফর‍ম্যাট শুরু করা বাংলাদেশের বলার মতো উন্নতি নেই। ২০০৭ সালে তারা প্রথম টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ খেলতে গিয়েছিল সুপার এইটে ওঠার লক্ষ্য নিয়ে। ১৭ বছর পরও সেই একই জায়গায় দাঁড়িয়ে, সাকিবরা তৃপ্তির ঢেকুর তুলেছেন সেরা আটে উঠেই। আফগানরা যেখানে রূপকথা লেখে, বাংলাদেশ সেখানে লেখে শুধু হৃদয়ভাঙার গল্প। 

গত এক দশকে দেশের সবচেয়ে ধনী ক্রীড়া সংস্থা বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি) শুধু অর্থবিত্তই গড়েছে; তাদের ক্রিকেটার তৈরির কাঠামো ও ক্রিকেট-সংস্কৃতি কতটা দুর্বল, সেটি এসব বৈশ্বিক আসরে এলে বোঝা যায়। বিশ্বমঞ্চে দলের ধারাবাহিক ব্যর্থতায় উন্মুক্ত হয়ে পড়ে দেশের ক্রিকেটের ভগ্নচিত্রও। বিসিবি এ সময়ে একটু অস্বস্তিতে পড়লেও তাতে তারা খুব যে বিচলিত হয়, তা নয়। সামনে আবার মিরপুরের ‘ধানখেততুল্য’ উইকেটে র‍্যাঙ্কিংয়ের ওপরের কোনো দলকে হারিয়ে ঢেকে দেবে যাবতীয় ব্যর্থতা, অসংগতি। এভাবেই চলছে দেশের ক্রিকেট।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

তাহলে কি বাংলাদেশ-ভারত ফাইনাল

ক্রীড়া ডেস্ক    
সেমিফাইনাল পরিত্যক্ত হলে বাংলাদেশ উঠে যাবে ফাইনালে। ছবি: এসিসি
সেমিফাইনাল পরিত্যক্ত হলে বাংলাদেশ উঠে যাবে ফাইনালে। ছবি: এসিসি

এতক্ষণে অনূর্ধ্ব-১৯ এশিয়া কাপের দুই সেমিফাইনালেরই প্রথম ইনিংসের খেলা শেষ হয়ে যেত। সেটা না হলেও কমপক্ষে ৪০ ওভার তো হতোই। কিন্তু দুবাইয়ে সাত সকালে বৃষ্টির বাগড়ায় ম্যাচ শুরু হওয়া তো দূরের কথা, টসই হতে পারেনি। আদৌ দুই সেমিফাইনাল মাঠে গড়ায় কি না, তা নিয়ে যথেষ্ট শঙ্কা রয়েছে।

বাংলাদেশ সময় সকাল ১১টায় দ্য সেভেন্স স্টেডিয়ামে শুরু হওয়ার কথা ছিল বাংলাদেশ-পাকিস্তান অনূর্ধ্ব-১৯ দলের সেমিফাইনাল। সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে একই সময়ে শুরু হতো ভারত-শ্রীলঙ্কা অনূর্ধ্ব-১৯ দলের সেমিফাইনালও। কিন্তু সকালে বৃষ্টির পর আউটফিল্ড এতটাই অবস্থা যে ম্যাচ শুরুর মতো অবস্থা নেই। যদি বাংলাদেশ-পাকিস্তান ম্যাচ পরিত্যক্ত হয়, তাহলে বাংলাদেশ উঠে যাবে ফাইনালে। কারণ, ‘বি’ গ্রুপ থেকে আজিজুল হাকিম তামিমের বাংলাদেশ গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হয়ে সেমিফাইনালের টিকিট কেটেছে। একই কথা ভারত-শ্রীলঙ্কা ম্যাচের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য। ভারত যেহেতু ‘এ’ গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন, তাহলে সেমিফাইনাল পরিত্যক্ত হলে তারা শিরোপা নির্ধারণী ফাইনালে উঠে যাবে।

সেমিফাইনালের জন্য কোনো রিজার্ভ ডে রাখা হয়নি। ফল দেখার জন্য কমপক্ষে ২০ ওভারের ম্যাচ চালু হওয়ার জন্য অপেক্ষা করতে হবে, সেজন্য বাংলাদেশ সময় বিকাল ৪টা পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে। কখনো কখনো সুখবরের আভাস মিললেও দুই সেমিফাইনাল চালু করার মতো অবস্থা এখনো আসেনি। আউটফিল্ডে গর্ত সৃষ্টির কারণে খেলোয়াড়দের চোটে পড়ার ঝুঁকি বেশি। মূলত সেই কারণেই খেলা চালু করতে আম্পায়াররা অপেক্ষা করছেন।

আফগানিস্তানের বিপক্ষে ৩ উইকেটের জয় দিয়ে এবারের এশিয়া কাপ মিশন শুরু করেছিল বাংলাদেশ। নেপালকে রীতিমতো উড়িয়ে দিয়েছিল তামিমের দল। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ব্যাটিং ব্যর্থতা বাংলাদেশ পুষিয়ে দিয়েছিল বোলিংয়ে। লঙ্কানদের ৩৯ রানে হারিয়েই মূলত ‘বি’ গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হয়ে তামিমের দল সেমিতে উঠেছে। এর আগে বৃষ্টি হানা দিয়েছিল ভারত-পাকিস্তান ম্যাচেও। সেকারণে ৪৯ ওভারে খেলা নামানো হয়েছিল। সেই ম্যাচে পাকিস্তানকে ৯০ রানে হারিয়েছিল ভারত। ‘এ’ গ্রুপের অপর দুই দল সংযুক্ত আরব আমিরাত, মালয়েশিয়া রীতিমতো অসহায় আত্মসমর্পণ করেছিল ভারত-পাকিস্তানের কাছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

হেডের সেঞ্চুরিতে বড় লিডের পথে অস্ট্রেলিয়া

ক্রীড়া ডেস্ক    
১৪২ রানে অপরাজিত আছেন হেড। ছবি: ক্রিকইনফো
১৪২ রানে অপরাজিত আছেন হেড। ছবি: ক্রিকইনফো

তৃতীয় দিনের খেলা শেষে বেশ হাসিমুখেই মাঠ ছাড়লেন ট্রাভিস হেড। সেঞ্চুরি করে অপরাজিত আছেন তিনি। তাঁর মুখে হাসি শোভা পাবে সেটাই তো স্বাভাবিক। হেডের সঙ্গী অ্যালেক্স ক্যারির মুখেও দেখা গেল চওড়া হাসি। দিনের খেলা শেষে এই দুই ব্যাটারের হাসি মুখই এখন অ্যাডিলেড টেস্টে অস্ট্রেলিয়ার প্রতিচ্ছবি। ইংল্যান্ডকে বড় লিড ছুঁড়ে দেওয়ার পথে স্বাগতিকেরা।

দ্বিতীয় ইনিংসে ৪ উইকেট হারিয়ে অস্ট্রেলিয়ার সংগ্রহ ২৭১ রান। প্রথম ইনিংসে ৮৫ রানে এগিয়ে থাকায় তাদের লিড দাঁড়িয়েছে ৩৫৬ রান। অতি নাটকীয় কিছু নাহলে ৬ উইকেট হাতে থাকায় ইংল্যান্ডের সামনে লিডটা বেশ বড়ই হবে সেটা বলা বাহুল্য।

প্রথম ইনিংসে অস্ট্রেলিয়া থামে ৩৭১ রানে। জবাবে দ্বিতীয় দিন শেষে ৮ উইকেট হারিয়ে ইংল্যান্ডের সংগ্রহ ছিল ২১৩ রান। অধিনায়ক বেন স্টোকসের ৮৩ রান এবং জফরা আর্চারের ৫১ রানের ইনিংসের সুবাদে শেষ পর্যন্ত ২৮৬ রান করেছে সফরকারী দল। এগিয়ে থাকলেও দ্বিতীয় ইনিংসে অস্ট্রেলিয়ার শুরুটা ভালো হয়নি। দলীয় ৮ রানে জ্যাক ওয়েদারাল্ডকে হারায় তারা। মারনাস লাবুশেন ফিরলে ৫৩ রানে ২ উইকেটের দলে পরিণত হয় স্বাগতিকেরা।

শুরুর ধাক্কা সামলে হেডের সেঞ্চুরি ও ক্যারির ফিফটিতে ঘুরে দাঁড়িয়েছে অস্ট্রেলিয়া। তৃতীয় উইকেটে ৮৬ রান যোগ করেন উসমান খাজা ও হেড। ৪০ রান করে উইল জ্যাকসের শিকার হন খাজা। অল্প সময়ের ব্যবধানে ক্যামরুন গ্রিনও ফিরে যান।

অবিচ্ছিন্ন থেকে দিনের বাকিটা সময় পার করে দেন হেড ও ক্যারি। ১২২ রানের জুটি গড়েছেন তাঁরা। ১৩ চার ও ২ ছক্কায় ১৪২ রানে অপরাজিত আছেন খাজার চোটে ওপেনিংয়ে সুযোগ পাওয়া হেড। তাঁর সঙ্গী ক্যারি ৫২ রান নিয়ে চতুর্থ দিনের খেলা শুরু করবেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

লুসাইলে ফিরল আর্জেন্টিনার স্মৃতি, মরক্কোকে রাষ্ট্র প্রধানের অভিনন্দন

ক্রীড়া ডেস্ক    
অতিরিক্ত সময়ের গোলে বাজিমাত করেছে মরক্কানরা। ছবি: সংগৃহীত
অতিরিক্ত সময়ের গোলে বাজিমাত করেছে মরক্কানরা। ছবি: সংগৃহীত

কাতারের লুসাইল স্টেডিয়ামে যেন ঠিক ৩ বছর আগের স্মৃতির পুনরাবৃত্তিই হলো। ২০২২ সালের ১৮ ডিসেম্বর এই ভেন্যুতে শ্বাসরুদ্ধকর লড়াই শেষে ফ্রান্সকে টাইব্রেকারে হারিয়ে তৃতীয়বারের মতো বিশ্বকাপের সোনালী ট্রফি উঁচিয়ে ধরেছিল আর্জেন্টিনা। লিওনেল মেসিদের সেই স্মৃতি এবার ফিরে এল মরক্কোর হাত ধরে।

সবশেষ বিশ্বকাপের ফাইনালে নির্ধারিত এবং অতিরিক্ত সময়ের খেলা শেষে ৩-৩ সমতায় ছিল আর্জেন্টিনা ও ফ্রান্স। ভাগ্য নির্ধারণ প্রক্রিয়ায় এমিলিয়ানো মার্তিনেজের দুটি দারুণ সেভে বাজিমাত করে লা আলবিসেলেস্তেরা। ফিফা আরব কাপের ফাইনালে মরক্কো ও জর্ডানের ম্যাচ টাইব্রেকারে না গড়ালেও উত্তেজনার কোনো কমতি ছিল না। নাটকীয় লড়াই শেষে ৩-২ গোলে জিতে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে মরক্কো।

লুসাইল স্টেডিয়ামে শুরুতেই এগিয়ে যায় মরক্কো। চতুর্থ মিনিটে ৩৫ গজ দূর থেকে তান্নানের নেওয়া গতিময় শট জর্ডানের জাল খুঁজে নেয়। লিড নিয়ে বিরতিতে যায় মরক্কো। দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেই আলী ওলওয়ানের কল্যাণে ম্যাচে ফেরে জর্ডান। ৬৮ মিনিটে তাঁর স্পট কিক থেকে প্রথমবার এগিয়ে যায় দলটি। এই গোলে ভর দিয়ে প্রায় জিতেই যাচ্ছিল জর্ডান। কিন্তু নির্ধারিত সময়ের ৩ মিনিট আগে আব্দেররাজ্জাক মরক্কোকে সমতায় ফেরান।

২-২ সমতায় নির্ধারিত সময়ের খেলা শেষ হয়। অতিরিক্ত সময়ে মরক্কোর হয়ে ব্যবধান গড়ে দেওয়া গোলটি করেন আব্দেররাজ্জাক। বাকি সময়ে আর ম্যাচে ফেরা হয়নি জর্ডানের।

মরক্কোর জাতীয় ফুটবল দলকে অভিনন্দন জানিয়েছেন মরক্কো রাজা ষষ্ঠ মোহাম্মদ। এই সাফল্য দেশের ফুটবলকে আন্তর্জাতিক স্তরে সম্মানজনক স্থানে নিয়ে গেছে বলে মনে করেন তিনি। খেলোয়াড়দের ধারাবাহিক পারফরম্যান্স খুশি ষষ্ঠ মোহাম্মদ। বিভিন্ন আঞ্চলিক, মহাদেশীয় এবং আন্তর্জাতিক টুর্নামেন্টে জাতীয় পতাকাকে উঁচুতে তোলার জন্য খেলোয়াড়দের ধারাবাহিক এবং টেকসই প্রচেষ্টার প্রশংসা করেছেন। পাশাপাশি ফুটবলপ্রমীদের প্রত্যাশা পূরণের জন্য কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন তিনি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

কনওয়ের ডাবল সেঞ্চুরি, মাউন্ট মঙ্গানুইতে ব্যাটারদের দাপট

ক্রীড়া ডেস্ক    
আপডেট : ১৯ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৩: ০৪
২২৭ রান করেছেন কনওয়ে। ছবি: ক্রিকইনফো
২২৭ রান করেছেন কনওয়ে। ছবি: ক্রিকইনফো

মাউন্ট মঙ্গানুই টেস্টের দ্বিতীয় দিনেও আধিপত্য দেখিয়েছে ব্যাটাররা। সবচেয়ে বেশি আলো কেড়েছেন ডেভন কনওয়ে। ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় ডাবল সেঞ্চুরি তুলে নিয়েছেন এই ওপেনার। তাঁর দ্বি-শতকে রান পাহাড় গড়ছে নিউজিল্যান্ড। জবাবে ওয়েস্ট ইন্ডিজের শুরুটাও হয়েছে উড়ন্ত।

৫৭৫ রানে ৮ উইকেট হারিয়ে প্রথম ইনিংস ঘোষণা করেছে নিউজিল্যান্ড। প্রথম দিনের খেলা শেষে ১ উইকেট হারিয়ে স্বাগতিকেদের সংগ্রহ ছিল ৩৩৪ রান। ১৭৮ রানে অপরাজিত ছিলেন কনওয়ে। তাঁর সঙ্গী ডাফি ব্যাট করতে নামেন ৯ রান নিয়ে। আগের দিনের সঙ্গে আর মাত্র ৮ রান যোগ করে ফিরে যান ডাফি। তাঁর মতো বাজে অভিজ্ঞতা হয়নি কনওয়ের। প্রথম সেশনেই ডাবল সেঞ্চুরির দেখা পান তিনি। জাস্টিন গ্রিভসের করা ১২১ তম ওভারের শেষ বলে এলবিডব্লু হওয়ার আগে ক্যারিয়ারসেরা ২২৭ রান করেন এই ব্যাটার। ৩১ চারে সাজানো তাঁর ৩৬৭ বলের ইনিংস।

১৫ চার ও ১ ছক্কায় দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ১৩৭ রান এনে দেন টম লাথাম। রাচিন রবীন্দ্রর অবদান ৭২ রান। এছাড়া কেউন উইলিয়ামসন ৩১ ও এজাজ প্যাটেল করেন ৩০ রান। ওয়েস্ট ইন্ডিজের হয়ে জেডন সিলস, অ্যান্ডারসন ফিলিপ ও গ্রিভস দুটি করে উইকেট নেন।

রান তাড়া করতে নেমে বিনা উইকেটে ১১০ রান করে দিনের খেলা শেষ করেছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। ব্র্যান্ডন কিং ৫৫ ও জন ক্যাম্পবেল ৪৫ রান নিয়ে তৃতীয় দিনের খেলা শুরু করবেন। এখনো ৪৬৫ রানে পিছিয়ে আছে সফরকারী দল। বে ওভালে প্রথম দিনের চেয়ে আজ আরও বেশি রান হয়েছে। এদিন দুই দল মিল করেছে ৩৫১ রান। প্রথম দুই দিনের পরিস্থিতিই বলে দিচ্ছে রান বন্যায় ভেসে যাবে মাউন্ট মঙ্গানুই টেস্ট।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত