Ajker Patrika

শেষ ভালো হলো না আর

রানা আব্বাস, দুবাই থেকে
শেষ ভালো হলো না আর

দুবাই আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামে গতকাল বৃহস্পতিবার সেই একই দৃশ্য দেখা গেল। মাথা নিচু করে মাঠ ছাড়ছে বাংলাদেশ দল। মাহমুদউল্লাহদের ২০২১ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের শেষটা আরও বাজেভাবে হলো। গতকাল বাংলাদেশ একটা ম্যাচ খেলেছে, যেটিতে দুই দল সব মিলিয়ে খেলেছে ২১.২ ওভার। বাংলাদেশের দেওয়া ৭৪ রানের লক্ষ্য পেরোতে অস্ট্রেলিয়ার লেগেছে মাত্র ৩৮ বল (২ উইকেট হারিয়ে)।

ম্যাচের বর্ণনা দিতে এই তথ্যটুকুই যথেষ্ট! টস হেরে আগে ব্যাটিং করতে নামা বাংলাদেশ দলের ব্যাটাররা গ্যালারিতে দর্শকদের বসারও যেন সুযোগ দিচ্ছিলেন না! যদিও সুপার টুয়েলভে বাংলাদেশ শেষ ম্যাচ দেখতে গ্যালারিতে দর্শক তেমন ছিল না। প্রায় ফাঁকা গ্যালারিতে যাঁরাই এসেছিলেন, তাঁদের আসন খুঁজে বসতে বসতে ৪ উইকেট নেই।

দুবাইয়ে গতকাল বাংলাদেশের এ ব্যাটিং প্রদর্শনী আসলে দেখিয়েছে, দলটার আত্মবিশ্বাস কোথায় নেমেছে। দেখিয়েছে, দেশের ভঙ্গুর ক্রিকেট-ব্যবস্থার অসংখ্য ফাঁকফোকর। ইনিংসের শুরুতে প্যাট কামিন্স-মিচেল স্টার্কদের ঘণ্টায় নিয়মিত ১৪৫ কিলোমিটার গতিতে করা গোলা সামলানোর যেন কোনো উত্তরই ছিল না বাংলাদেশের ব্যাটারদের কাছে। তবে সবচেয়ে বেশি দুর্বোধ্য হয়ে গেলেন অস্ট্রেলিয়ান লেগ স্পিনার অ্যাডাম জাম্পা। নিজেদের দলে নেই একজন ভালো মানের লেগ স্পিনার। মাঝেমধ্যে কোনো লেগ স্পিনার মিললেও তিনি দলে থাকেন তৃতীয় বিশ্বের বাসিন্দার মতো। না হলে কি তরুণ লেগ স্পিনার আমিনুল ইসলাম বিপ্লবকে ওমান থেকে দেশে ফিরিয়ে দেয় টিম ম্যানেজমেন্ট?

গতকাল জাম্পা ভালোভাবেই বাংলাদেশকে বুঝিয়ে দিলেন, বড় মঞ্চে ভালো করতে একজন ভালো মানের লেগ স্পিনার কতটা জরুরি। জাম্পা দৃশ্যপটে আসার আগে শুরুটা করেছিলেন স্টার্ক। তাঁর ঘণ্টায় ১৪৪ কিলোমিটার গতির বল না সামলাতে পেরে ইনিংসের তৃতীয় বলে বোল্ড হলেন লিটন (০)। ১.৬ ওভারে হ্যাজলউডের বলে বোল্ড সৌম্য সরকার (৫)। গ্লেন ম্যাক্সওয়েলের করা তৃতীয় ওভারে পঞ্চম বলে বিভ্রান্ত হয়ে এলবিডব্লিউ মুশফিকুর রহিম (১)। চতুর্থ উইকেটে মোহাম্মদ নাঈম (১৭) আর অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহর (১৬) সামান্য প্রতিরোধও (১৬ বলে ২২ রানের জুটি) খড়কুটোর মতো উড়ে গেল। পাওয়ার প্লেতে ৩২ রান তুলতেই যে দলের ৪ উইকেট হাওয়া—লড়াইয়ের স্কোর মিলবে কীভাবে?

৩৩ রানে ৫ উইকেট পড়ে যাওয়ার পর শামীম পাটোয়ারীকে নিয়ে আরেকবার প্রতিরোধের চেষ্টা করেছিলেন মাহমুদউল্লাহ। ষষ্ঠ উইকেটে যোগ করা ২৮ বলে ২৯ রানের এই জুটিটাই বাংলাদেশের ইনিংসের হাইলাইট। জাম্পার শিকার হয়ে ফেরার আগে এক ছক্কা আর এক চারে ১৮ বলে করা শামীমের ১৯ রানই বাংলাদেশের সর্বোচ্চ। টপ অর্ডার, মিডল অর্ডার যেখানে তাসের ঘরের মতো দ্রুত ধসে পড়েছে, সেখানে লোয়ার মিডল অর্ডার কিংবা লেজের ব্যাটসম্যানরা আর কী করবেন! বাংলাদেশের ব্যাটারদের যাওয়া-আসার মিছিলে জাম্পার হ্যাটট্রিক করার সুযোগও এসেছিল। সেটি না হলেও ৪ ওভারে ১৯ রান দিয়ে ৫ উইকেট নিয়ে একটা রেকর্ড নিজের করে নিয়েছেন অস্ট্রেলিয়ার ২৯ বছর বয়সী এই লেগ স্পিনার। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে অস্ট্রেলিয়ার বোলারদের মধ্যে এটিই এখন সেরা বোলিং ফিগার।

বাংলাদেশ নিজেদের টি-টোয়েন্টি ইতিহাসে দ্বিতীয় সর্বনিম্ন স্কোর ৭৩ রানে অলআউট হওয়ার আগে খেলতে পেরেছে ১৫ ওভার। সেমিফাইনালের আশা জাগিয়ে রাখতে অস্ট্রেলিয়ার সামনে নেট রানরেট ভালো রাখার তাড়া ছিল। সেটি তারা ভালোভাবেই করেছে। বাংলাদেশের বোলারদের যথেচ্ছ পিটিয়ে ৩৮ বলেই লক্ষ্যটা পেরিয়ে যায় অ্যারন ফিঞ্চের দল।

দলের প্রধান কোচ রাসেল ডমিঙ্গো কদিন আগে দক্ষিণ আফ্রিকা ম্যাচের আগেও বলছিলেন, ‘দল ব্যাপক উন্নতি করছে।’ যুক্তি হিসেবে তিনি আগস্ট-সেপ্টেম্বরে দেশের মাঠে টানা দুটি সিরিজ জয়ের পুরস্কার হিসেবে র‌্যাঙ্কিংয়ে উন্নতি করার বিষয়টি সামনে এনেছিলেন। গত কয়েক মাসে বিসিবির শীর্ষ কর্তারাও বড় তৃপ্তি নিয়ে র‌্যাঙ্কিংয়ের উন্নতি, ঘরের মাঠে সিরিজ জয়ের বিষয়গুলো সামনে এনেছেন। কিন্তু যে দল ২০০৭ সালের পর টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের মূল মঞ্চে একটি ম্যাচও জিততে পারেনি, গত ১৪ বছরে কি উন্নতি হয়েছে তাদের—এসব উত্তর বোর্ড কর্তাদের বা কোচের কাছ থেকে মেলেনি।

সংবাদ সম্মেলনে আসা বাংলাদেশ অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ স্বীকার করে নিলেন, ‘টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে এখনো আমরা পায়ের তলায় মাটি খুঁজছি। হয়তো দেশের মাঠে ভালো করছি। বিদেশে দেখেছি নিজেদের অবস্থান কোথায়, শীর্ষ দলগুলোর সঙ্গে ভালো করতে হলে কতটা উন্নতি করতে হবে আমাদের।’

হতাশার এক টুর্নামেন্ট শেষে আজ শুক্রবার দুবাইয়ের সময় সকাল সাড়ে ১০টায় বাংলাদেশ দল দেশে রওনা দেবে। অবশ্য মাহমুদউল্লাহ, মুশফিকুর রহিম ও লিটন দাস পরিবার নিয়ে কটা দিনের জন্য দুবাই থেকে যাবেন। এ অবসরে মনের আয়নায় তাঁরা কি তাকিয়ে দেখবেন ব্যর্থতার খতিয়ান? 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

আজই কি তবে রিশাদদের আরও কাছে ব্রিসবেন

ক্রীড়া ডেস্ক    
এবারের বিগ ব্যাশে এখন পর্যন্ত সর্বোচ্চ ১৯৬ রান করেছেন ব্রিসবেন হিটের ম্যাট রেনশ। ছবি: ক্রিকইনফো
এবারের বিগ ব্যাশে এখন পর্যন্ত সর্বোচ্চ ১৯৬ রান করেছেন ব্রিসবেন হিটের ম্যাট রেনশ। ছবি: ক্রিকইনফো

চার ম্যাচে চার জয়ে আট পয়েন্ট নিয়ে ২০২৫-২৬ মৌসুমের বিগ ব্যাশের পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষে মেলবোর্ন স্টার্স। সমান ৮ পয়েন্ট রিশাদ হোসেনের দল হোবার্ট হারিকেনসেরও। তবে নেট রানরেটের কারণে দুইয়ে হোবার্ট। এক ও দুইয়ে থাকা মেলবোর্ন স্টার্স ও হোবার্টের নেট রানরেট ‍+১.৭৭৯ ও ‍+০.৪৩২। আজ অ্যাডিলেড স্ট্রাইকার্সকে হারালে ব্রিসবেন হিট পাবে ৬ পয়েন্ট। বাংলাদেশ সময় বেলা ২টা ১৫ মিনিটে শুরু হবে অ্যাডিলেড স্টাইকার্স-ব্রিসবেন হিট ম্যাচ। বর্তমানে ৪ পয়েন্ট নিয়ে চারে ব্রিসবেন। সমান ৪ পয়েন্ট নিয়ে তিনে পার্থ স্করচার্স। পাঁচ, ছয়, সাত ও আট নম্বরে থাকা সিডনি সিক্সার্স, অ্যাডিলেড স্ট্রাইকার্স, মেলবোর্ন রেনেগেডস, সিডনি থান্ডার প্রত্যেকেরই ২ পয়েন্ট। দক্ষিণ আফ্রিকার এসএ টোয়েন্টি লিগেরও খেলা রয়েছে আজ। এক নজরে দেখে নিন টিভিতে কী কী খেলা রয়েছে।

ক্রিকেট খেলা সরাসরি

বিগ ব্যাশ লিগ

অ্যাডিলেড স্টাইকার্স-ব্রিসবেন হিট

বেলা ২টা ১৫ মিনিট

সরাসরি

স্টার স্পোর্টস ২

এসএ টোয়েন্টি

ইস্টার্ন কেপ-পার্ল

বিকেল ৫টা

সরাসরি

স্টার স্পোর্টস ১

কেপটাউন-প্রিটোরিয়া

রাত ৯টা ৩০মিনিট

সরাসরি

স্টার স্পোর্টস ২

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

কেন তিন গোলরক্ষক নামিয়েছিল উগান্ডা

ক্রীড়া ডেস্ক    
আপডেট : ৩১ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৩: ১২
নাইজেরিয়ার বিপক্ষে গতকাল তিন গোলরক্ষক নিয়ে খেলেছিল উগান্ডা। ছবি: সংগৃহীত
নাইজেরিয়ার বিপক্ষে গতকাল তিন গোলরক্ষক নিয়ে খেলেছিল উগান্ডা। ছবি: সংগৃহীত

চোটে পড়লে বা কৌশলগত কারণে ফুটবলার পরিবর্তন অহরহ হলেও গোলরক্ষক বদলানো খু্ব একটা দেখা যায় না। ব্যতিক্রমধর্মী এক ঘটনাই গতকাল ঘটাল উগান্ডা। আফ্রিকা কাপ অব নেশনসে নাইজেরিয়ার বিপক্ষে তিন গোলরক্ষক নিয়ে খেলেছে উগান্ডা। যদিও একগাদা গোলরক্ষক খেলিয়েও নাইজেরিয়ার বিপক্ষে হার এড়াতে পারেনি উগান্ডা।

আফ্রিকা কাপ অব নেশনসের গ্রুপ পর্বের নাইজেরিয়া-উগান্ডা ম্যাচ গতকাল হয়েছে ফেজ স্টেডিয়ামে। প্রথমার্ধে গোল হজম করা ছাড়া আর কোনো বিপদে পড়েনি উগান্ডা। দ্বিতীয়ার্ধের খেলা শুরু হতে না হতেই উগান্ডার গোলরক্ষক পরিবর্তনের ঘটনা ঘটতে থাকে। ৪৬ মিনিটে চোটে পড়ে মাঠ ছাড়েন উগান্ডার ৪০ বছর বয়সী গোলরক্ষক ডেনিস ওনিয়াঙ্গো। তাঁর পরিবর্তে নামেন আরেক গোলরক্ষক সালিম মাগুলা। ৫৬ মিনিটে বক্সের অনেক বাইরে গিয়ে নাইজেরিয়ার ফরোয়ার্ড ভিক্টর ওসিমেনের শট ঠেকাতে গিয়ে সরাসরি লাল কার্ড দেখেন মাগুলা। তখন মাঠে নামেন উগান্ডার তৃতীয় গোলরক্ষক নাফিয়ান আলিওনজি। তিনি ফেরায় মাঠ ছেড়েছেন উগান্ডার মিডফিল্ডার বাবা আল হাসান।

ফেজ স্টেডিয়ামে উগান্ডার বিপক্ষে ২৮ মিনিটে গোল করে দলকে এগিয়ে দেন নাইজেরিয়ার ফরোয়ার্ড পল ওনুয়াচুর। প্রথমার্ধ ১-০ গোলে এগিয়ে থেকে শেষ করে নাইজেরিয়া। ৬২ ও ৬৭ মিনিটে মিডফিল্ডার রাফায়েল ওনেয়দিকার জোড়া গোলে নাইজেরিয়া ৩-০ গোলে এগিয়ে যায়। ৭৫ মিনিটে রজার্স মাতোর গোলে ব্যবধান কমায় উগান্ডা। শেষ পর্যন্ত উগান্ডাকে ৩-১ গোলে হারিয়ে ‘সি’ গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হয়েছে নাইজেরিয়া। ৩ ম্যাচে পূর্ণ ৯ পয়েন্ট পেয়েছে ওসিমেনের নাইজেরিয়া।

১ পয়েন্ট নিয়ে উগান্ডা এবারের আফকন শেষ করেছে ‘সি’ গ্রুপের তলানিতে থেকে। ৩ ম্যাচ খেলে হেরেছে ২ ম্যাচ ও ১ ম্যাচ ড্র করেছে দলটি। ৪ ও ২ পয়েন্ট নিয়ে ‘সি’ গ্রুপের দ্বিতীয় ও তৃতীয় দল হিসেবে শেষ ষোলোতে উঠেছে তিউনিসিয়া-তানজানিয়া। প্রিন্স আবদেল্লাহ স্টেডিয়ামে ১-১ গোলে ড্র করেছে তিউনিসিয়া-তানজানিয়া। ৪৩ মিনিটে ইসমাইল ঘারবি পেনাল্টি থেকে গোল করে তিউনিসিয়াকে এগিয়ে নেন। ৪৮ মিনিটে ফয়সাল সালামের গোলে সমতায় ফেরে তানজানিয়া। গ্রুপগুলোর তৃতীয় সেরা দলগুলোর একটা হিসেবে ‘সি’ গ্রুপ থেকে শেষ ষোলোতে উঠেছে তানজানিয়া। নিজেদের ইতিহাসে এবারই প্রথম আফকনের শেষ ষোলোতে উঠেছে তানজানিয়া। নকআউট পর্বে তারা খেলবে মরক্কোর বিপক্ষে।

টাঙ্গিয়ার স্টেডিয়ামে গতকাল ‘ডি’ গ্রুপে বেনিনকে ৩-০ গোলে হারিয়েছে সেনেগাল। ৩ ম্যাচে ৭ পয়েন্ট নিয়ে গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হয়ে শেষ ষোলোয় উঠেছে সেনেগাল। দুইয়ে থাকা ডিআর কঙ্গোর পয়েন্ট ৭ হলেও গোল ব্যবধানের কারণে দুইয়ে এই দলটি। বতসোয়ানাকে ৩-০ গোলে।

ডিআর কঙ্গো। ৩ ম্যাচে ৩ পয়েন্ট নিয়ে ‘ডি’ গ্রুপের তৃতীয় দল হিসেবে শেষ ষোলোয় উঠেছে বেনিন। শেষ ষোলোতে মিসরের বিপক্ষে খেলবে বেনিন। প্রতিপক্ষ মিসর।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ফুটবলে নতুন আশা, ক্রিকেট করেছে হতাশ

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
ফুটবলে ২০২৫ সালে মনে রাখার মতো সময় কাটিয়েছে বাংলাদেশ। ছবি: ফেসবুক
ফুটবলে ২০২৫ সালে মনে রাখার মতো সময় কাটিয়েছে বাংলাদেশ। ছবি: ফেসবুক

দুঃস্মৃতি মানুষ ভুলে যেতে চায়, ব্যর্থতার গ্লানি মুছে ফেলে নতুন করে শুরু করতে চায়; কিন্তু ভোলাভুলির সীমারেখাটা শুধু দুঃস্মৃতিতেই। সুখস্মৃতি রোমান্থন করে উজ্জীবিত হতে চায় মানুষ। প্রেরণাই বলুন কিংবা আত্মবিশ্বাস—ইতিবাচক সব কিছুরই আধার সে সুখস্মৃতি। বিদায়ী ২০২৫ বছরে তেমন সুখস্মৃতি কী আছে আমাদের জন্য?

ফুটবলে বিশেষ করে নারী ফুটবলে বিদায়ী এ বছরটা সাফল্যের আঁচড় কেটেছে দেশের ক্রীড়াঙ্গনে। প্রথমবারের মতো এএফসি মেয়েদের এশিয়া কাপে জায়গা করে নিয়েছেন আফঈদা-ঋতুপর্ণারা। বাংলাদেশের জার্সি গায়ে চড়িয়ে দেশের ফুটবলে জাগরণের জোয়ার এনেছেন ইংলিশ ক্লাব লেস্টার সিটিতে খেলা হামজা চৌধুরী। যে জোয়ারে ভেসে বিশ্বের আনাচে-কানাচে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকা বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত ফুটবলাররাও এসে জাতীয় দলে খেলার আগ্রহ দেখিয়েছেন। মাঠের ফলাফল যেমনই হোক—এসব প্রবাসী ফুটবলারের আগমনে ফুটবল নিয়ে নতুন করে স্বপ্ন দেখছেন দেশের ফুটবলপ্রেমীরা।

sren

শুধু কি ফুটবল! প্রথমবারের মতো জুনিয়র এশিয়া কাপে খেলার সুযোগ পেয়ে চ্যালেঞ্জার ট্রফি জিতে এসেছে বাংলাদেশ। যুব এই হকি প্রতিযোগিতায় কোরিয়ার মতো দলকে হারিয়ে দেওয়ার দুঃসাহসও দেখিয়েছেন বাংলাদেশের যুবারা। বিচ্ছিন্নভাবে সাফল্য এসেছে এশিয়ান কাপ আর্চারি কিংবা ইসলামি সলিডারিটি গেমস টিটিতে।

sren

কিন্তু যে খেলাটা নিয়ে দেশের মানুষের বড় আশা ছিল, সেই ক্রিকেটই হতাশ বেশি করেছে। গত কয়েক বছরের সাফল্যের সূত্র, মনে করা হয় ওয়ানডে ক্রিকেটই বাংলাদেশের প্রিয় সংস্করণ। সেই সংস্করণে নেই সাফল্যের আলো। এ বছর ১১টি ওয়ানডে খেলেছে বাংলাদেশ। যার ৭টিতেই হার। ৩টিতে জয়। আর একটি ম্যাচ হয়েছে টাই। সাফল্যের ক্ষেত্রে অবশ্য এগিয়ে টেস্ট ক্রিকেট। ছয়টি টেস্ট খেলে ৩টিতে জয়। ২টিতে হার, ১টিতে ড্র। আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে ব্যস্ততম বছর কাটিয়েছে বাংলাদেশ। খেলেছে ৩০ ম্যাচ। এর ১৬টি জিতেছেন লিটন-মোস্তাফিজরা। ১৪টিতে পরাজয়। বাকি একটি ম্যাচ পরিত্যক্ত।

নারী ক্রিকেটে পারফরম্যান্সটা আরও শোচনীয়। ৩টি টি-টোয়েন্টি খেলে সব কটিতেই হেরেছেন নিগার সুলতানা জ্যোতিরা। আর ১৫টি ওয়ানডে খেলে জয় ৫টিতে। ৯টিতে হার, ১টিতে ফল হয়নি।

তবে এই ব্যর্থতায় মুষড়ে পড়ার কিছু নেই। মনীষীরা বলেন, ব্যর্থতাই সাফল্যের ভিত গড়ে! সে বিশ্বাস নিয়েই বিদায় জানাতে হচ্ছে ২০২৫ সালকে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

দুই উপদেষ্টার ‘গ্রিন সিগন্যাল’ পেয়েও দেশে আসতে পারেননি সাকিব

ক্রীড়া ডেস্ক    
আপডেট : ৩১ ডিসেম্বর ২০২৫, ১২: ২৯
২০২৪ সালের অক্টোবরের পর বাংলাদেশের হয়ে আর খেলার সুযোগ হয়নি সাকিব আল হাসানের। ছবি: ফাইল ছবি
২০২৪ সালের অক্টোবরের পর বাংলাদেশের হয়ে আর খেলার সুযোগ হয়নি সাকিব আল হাসানের। ছবি: ফাইল ছবি

ক্রিকেটার সাকিব আল হাসানের চেয়ে রাজনীতিবিদ সাকিব আল হাসানের পরিচয়টাই যেন বড় হয়ে উঠেছে। ঘরের মাঠে খেলে বিদায় নেওয়ার কথা তিনি অনেকবার বলেছেন। কিন্তু সেই সুযোগ তাঁর মিলছে না। যদিও গত বছর দুই উপদেষ্টার কাছ থেকে সবুজ সংকেত পেয়েছিলেন বাংলাদেশের তারকা অলরাউন্ডার।

২০২৪ সালের অক্টোবরে মিরপুরেই ক্যারিয়ারের শেষ টেস্ট খেলতে চেয়েছিলেন। তাঁকে নিয়েই দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে মিরপুর টেস্টের দল ঘোষণা করেছিল বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)। তবে যুক্তরাষ্ট্র থেকে দুবাইয়ে এসেও দেশে ফেরা হয়নি তাঁর। তখন আসলে কী ঘটেছিল, সেই ঘটনা নিয়ে আজকের পত্রিকাকে গতকাল দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বাংলাদেশের তারকা অলরাউন্ডার বলেন, ‘আমাকে সরাসরি ক্রীড়া উপদেষ্টা ও আইন উপদেষ্টা গ্রিন সিগন্যাল দিয়েছিলেন। আমি প্লেনে উঠেছি। বিসিবি থেকে আমাকে পুরো নিশ্চিত করা হয়েছে। (যুক্তরাষ্ট্র থেকে) তারপর আমি প্লেনে উঠেছি। দুবাইয়ে নামার পর তাদের সব জায়গা থেকে আবার বলছে, না, তাদের নাকি ১২ ঘণ্টার মধ্যে পরিস্থিতির অনেক পরিবর্তন হয়ে গেছে। যদি না আসি, তাহলে ভালো হয়। আমি আর যাইনি।’

ঘরের মাঠে টেস্ট তো দূরে থাক, গত ১৪ মাসে ঢাকা প্রিমিয়ার লিগ (ডিপিএল), বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগও (বিপিএল) খেলতে পারেননি সাকিব। নতুন বছরের ফেব্রুয়ারি জাতীয় সংসদ নির্বাচনে যদি বিএনপি ক্ষমতায় আসে, তাহলে দেশে ফেরার আশা কতটুকু রয়েছে—এই প্রশ্নের উত্তরে আজকের পত্রিকাকে তিনি বলেন, ‘এখানে রাষ্ট্র, সরকার—এগুলো আসা মানেই তো ক্রিকেট বোর্ডেও স্বচ্ছতা নেই। এখানে সরকারের হস্তক্ষেপ আছে। এগুলো তো বোঝাই যায়। আপনাদের আসলে প্রশ্নগুলো করা উচিত ঠিক জায়গায়, ঠিকভাবে। ভয় না পেয়ে! আপনারাও ওই ঘুরিয়ে-পেঁচিয়ে প্রশ্ন করেন দেখে তারা ওই ঘুরিয়ে উত্তর দিতে পারে। এ প্রশ্ন আমাকে তো করার বিষয় নয়। জিজ্ঞেস করবেন সরকারকে। সরকার আর ক্রিকেট বোর্ডের মুখোমুখি হয়ে।’

ক্রিকেট বোর্ডে সরকারি হস্তক্ষেপের ব্যাপারটা আন্তর্জাতিক ক্রিকেট সংস্থা (আইসিসি) পর্যন্ত যাওয়া উচিত বলে মনে করেন সাকিব। বাংলাদেশের তারকা অলরাউন্ডার বলেন, ‘কথা হচ্ছে ক্রিকেট বোর্ডের সঙ্গে সরকারের কোনো সম্পর্কই থাকার কথা নয়। আর ক্রিকেট বোর্ড যদি সরকারের ওপর চাপিয়ে দেয়, এর মানে, ক্রিকেট বোর্ডে সরকারের হস্তক্ষেপ আছে। এর অর্থ হলো, বিষয়টা আইসিসিতে যাওয়া উচিত। তাদের সঙ্গে সঙ্গে নিষিদ্ধ হয়ে যাওয়া উচিত (হাসি)! আসলে ওই সাবজেক্টেই যাওয়া উচিত নয়। আমাকে যদি ক্রিকেট বোর্ড ফেরত না নিতে পারে (দেশে), এটা তাদের ব্যর্থতা। ঠিক না? আমার কী করার আছে এখানে?’

২০২৪ সালের সেপ্টেম্বর-অক্টোবরে ভারত সফরের মাঝপথেই আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি থেকে অবসরের ঘোষণা দিয়েছিলেন সাকিব। খেলে যেতে চেয়েছিলেন ওয়ানডে ও টেস্ট। তবে গত ১৬ মাসে বাংলাদেশের হয়ে একটা ম্যাচও খেলতে পারেননি তিনি। ভারতের বিপক্ষে কানপুরে গত বছরের অক্টোবরে টেস্ট ম্যাচটাই আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে সাকিবের সবশেষ কোনো ম্যাচ। বাংলাদেশের হয়ে খেলতে না পারলেও বিদেশের বিভিন্ন ফ্র্যাঞ্চাইজি টুর্নামেন্টে নিয়মিত খেলছেন তিনি। বর্তমানে আইএল টি-টোয়েন্টিতে এমআই এমিরেটসের হয়ে খেলছেন সাকিব। গত রাতে তাঁর দল প্রথম কোয়ালিফায়ারে ডেজার্ট ভাইপার্সের কাছে ৪৫ রানে হেরেছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত